Skip to main content

Posts

Showing posts with the label অণুগল্প

পথ চলতি ✍️পার্থ প্রতিম দাস

🌼পথ চলতি 🌼 ✍️পার্থ প্রতিম দাস      সব সময় ভাবুক মন দুঃখের তাল কেটে বেরিয়ে যেতে চায় নিরুদ্দেশের পথে। তাইতো আকাশে উড়োজাহাজের শব্দ শুনতে পেলেই, চোখ তুলে ওপরের দিকে খোলা শূন্যের দিকে তাকায়। আকাশকে শূন্য বলাটাও ভুল। অসংখ্য গ্রহ নক্ষত্রের বাস সেখানে। সেখানেও আছে আইনের রাজত্ব। ভৌতবিজ্ঞানের নিয়ম নীতি সেখানে বিপুল পরিমাণে কাজ করে। ছোটবেলা থেকে সূজয় এইসব পড়েছে। এখন তার হাতে বাজারের থলে। বাজারে গিয়ে সে ঠিক করে দরদাম করতে পারে না। দর কষাকষি যে একটা আর্ট, সেই ব্যপারটা তার সিলেবাসে নাই।      আগে বাজার করে ফিরলে মায়ের কাছে বকা খেত। এখন স্ত্রীর মুখে বকা শুনে। ছেলে মেয়ে গুলো বড় হচ্ছে। প্রতিদিন কথা শুনতে তার ভীষণ আত্মসম্মানে লাগে। মোড়ের দোকানের সামনে টোটো দাঁড় করিয়ে সে একটা সিগারেট ধরায়। এক রাউন্ড ধোঁয়া ছেড়ে দোকানের পল্টুদাকে বলল, "তোমার খুব ভাগ্য ভালো। দোকানের হিসেব পত্র কত সুন্দর করছো। আমি আর হিসেবটা শিখতে পারলাম না।"    এতো লম্বা চওড়া প্রশংসা শুনে পল্টুদা হেব্বি খুশি হয়ে গেল। জামার কলার তুলে বলল, "হিসেব করাটাই আসল বিদ্যা। আর সব তো ছাইপাশ। টিউশনি নিতে আসিস। ফ...

গর্ভ ।। শাশ্বত বোস

গর্ভ শাশ্বত বোস নদীটার নির্দিষ্ট কোন নাম নেই! ওপারের পদ্মার চরের শেষ মাথা থেকে বেরিয়ে আবার এ দেশে এসে ঢুকেছে! এঁকে বেঁকে গিয়ে মিশেছে ভৈরব নদীতে। স্মৃতির পিঠে স্মৃতি জড়িয়ে গিয়ে, একটা ঝিমধরা বিষন্নতার বোধ নিয়ে, ওকে সবাই চেনে 'পদ্মার শাখানদী' নামে। ঘোর বর্ষায় ওর বুকে পেটে এখন জল থৈ থৈ! রোজ সন্ধ্যেবেলা ছেদু কাকার ঘাটে মাছের বাজার বসে। নিতান্ত ছোট্ট গ্রাম্য একটা বাজার! ওই শাখা নদীতে জাল দিয়ে যা যা মাছ ওঠে, তাই কাঁটা হয় এই বাজারে। রুই, কাতলা, পার্সে, ট্যাংরা, ভাঙ্গর, কাজলী আর বর্ষার মরশুমে কখনো সখনো ইলিশ! চওড়া বুক জুড়ে যেন রুপোর ক্যানভাস! পিঠের দিকটা সবুজ! নাকের কাছে খাবলা করে হলুদ আর সিঁদুর মাখানো যেন! যেন পদ্মার গর্ভে ভেসে আসা সৃষ্টির আদিকালের আদুরে সন্তান! এই শাখা নদী যেন পেট দেয় মাছেদের। এ পেট গর্ভের নিশ্চিন্ত আশ্রয়! এই শাখানদীর মিষ্টি জলে, পদ্মার স্রোতের বিপরীতে ভেসে আসা মাছেরা ঘর বাঁধে। আবার এই মাছেরাই পেট চালায় রাণীনগর ব্লক ২ এরিয়ার এই কয়েক ঘর ধীবরের! 'অজগর আলী মন্ডল' এদেরই একজন! এপারে ওর নাম অজগর আবার বর্ডার ক্রস করে ওপারে গেলেই হয়ে যায় 'বাহারুদ্দিন শেখ'! আজ স...

শাপে বর ।। সাইফুল ইসলাম

শাপে বর সাইফুল ইসলাম বড় বড় ফাটল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা খড়ের ছাউনি দেওয়া মাটির বাড়িটির পিছন দিকের দেয়াল ঘেঁষে একখানা কামার শালা। পঞ্চাশোর্ধ পবিত্র ও তার স্ত্রী রাধারানী ছোট ছেলেকে নিয়ে সেই বাড়িতেই থাকে। কামারশালায় হাতুড়ি পেটানোর শব্দ শুরু হয় সকাল সকাল, চলে দিনভর। সারাদিনের আগুনের আঁচে শরীরখানা যেন কয়লা। সেদিন পাড়ার অনেকে জুটেছে পবিত্রর কামারশালায়। কাজ করতে করতে সে হঠাৎ ধুলোয় শুয়ে ছটফট করছে। সবাই মিলে ডাক্তার-খানা নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছে। "আমাকে নিয়ে যেতে হবে না। এমনটা আমার প্রায়ই হয় "- বলে হাত বাড়িয়ে একটা প্লাস্টিকের কৌটো থেকে কি যেন নিয়ে মুখে পুরে বলল - একটু জল দাও। কিছুক্ষণ বাদে উঠে আবার কাজ শুরু করলো। ওটা তুমি কি খেলে? -প্রশ্ন ছুঁড়ল কেউ। খাবার সোডা। কে তোমাকে এসব খাওয়ার যুক্তি দিয়েছে? কেউ না। আমি রোগী, আমিই ডাক্তার। খাবার সোডা নামটা শুনেই সকলেই মুখ চাওয়া-চাওয়ি শুরু করল। পবিত্র বলল -ডাক্তার একটা পেটের ছবি করতে বলেছে। টাকা পয়সার অভাবে তা পারিনি। --বলেই হাপর টানতে শুরু করল। লোকের ভিড় কমে গেছে। গরম লোহা হাতুড়ির ঘা খেয়ে রূপ বদলাতে শুরু করেছে। প...

আদিম ক্ষুধা ।। আনন্দ গোপাল গরাই

আদিম ক্ষুধা আনন্দ গোপাল গরাই স্বাতীকে একা পেয়ে তার পিছু নিয়েছে দুজন ষন্ডামার্কা ছেলে। সম্ভ্রম বাঁচাবার জন্যে প্রাণপণে ছুটতে থাকে সে। ছেলে দুটোও ওকে ধরার জন্যে ছুটতে থাকে ওর পিছু পিছু। অতিরিক্ত নেশা করার কারণে পা টলতে থাকে তাদের। হঠাৎ আবছা অন্ধকারে স্বাতী দেখতে পায় এক মাঝবয়সী ভদ্রলোককে। প্রাণপণে দৌড়তে দৌড়তে তার কাছে এসে সাহায্য প্রার্থনা করে সে। ততক্ষণে মাতাল ছেলেদুটোও তার কাছাকাছি এসে গেছে। একজন তো ওর হাতটা ধরব ধরব করছে। তা দেখে ভদ্রলোক গর্জন করে বললেন--" আর এক পা এগোবার চেষ্টা করবি না।" কথাটা বলেই যে ছেলেটা কাছাকাছি এসেছিল তাকে সজোরে মারলেন এক লাথি। রাস্তার উপর চিৎ হয়ে উল্টে পড়লো সে। সঙ্গী ছেলেটা একটা চকচকে ছোরা বের করে মারতে গেলো ভদ্রলোককে। তাই দেখে পকেট থেকে পিস্তল বের করলেন ভদ্রলোক। পিস্তল তাক করতেই প্রাণভয়ে একটা ঘিঞ্জি গলির দিকে ছুটে পালালো ওরা। ভদ্রলোকের সঙ্গে স্বাতী গিয়ে হাজির হলো এক প্রাসাদোপম বাড়িতে। ভদ্রলোক তাকে বসতে দিলেন একটা ঝাঁ চকচকে রুমে। এতক্ষণে একটি নিরাপদ আশ্রয়ে এসে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো স্বাতী। ভদ্রলোক না থাকলে ওর যে কী অবস...

সময় বড় কম ।। গৌতম সমাজদার

সময় বড় কম গৌতম সমাজদার  ছা-পোষা মানুষ নির্মলবাবু। অতি সরলতা অঞ্চলের মানুষকে মুগ্ধ করত। নির্মলবাবু খুবই জনপ্রিয় মানুষ গ্রামে। যাতায়াতের পথে সবার সাথে কুশল বিনিময় করেন। গ্রামের সবার বিপদে পাশে থাকেন। বৌ কমলা মাঝে মাঝেই বলেন, "ঘরের খেয়ে পরের মোষ তাড়াও। ঘরে সময় দাও। তাতে সংসারটাও ভাল থাকবে, তোমার শরীরও ভাল থাকবে।" কিন্তু চোরা না শোনে ধর্মের কাহিনী। নির্মলবাবু অবিচল থাকেন। নিজের স্বল্প আয়ে যথাসাধ্য চেষ্টা করেন সংসার ভাল করে চালাতে। এজন্য নিজেও অনেক আত্মত্যাগ করেন। অতি সাধারণভাবে নিজের জীবন কাটান। পরিবারের চাহিদা মেটাতে সদা তৎপর। তবু চাহিদা তো আজকের জীবনে মেটানো বেশ কঠিন। বিজ্ঞাপনের শিকার হয়ে পরিবারের সব সাধ মেটাতে পারেন না। নিজেও তাতে দুঃখ পান। তবে তাতে পরিবারের বন্ধন কম নেই। কখনো দূরত্ব সৃষ্টি হলেও একটা টান সবাই সবার জন্য বোধ করে। স্ত্রী তার সাধ্যমতো পরিবারকে ভাল রাখার জন্য প্রচুর দায় দায়িত্ব পালন করে। বিয়ের পরপর কিছু সময় ভাল কাটলেও পরের দিকে চাহিদা মেটানোর ঘাটতিতে অশান্তি যে হত না তা নয়। নির্মলবাবু নিজে কষ্ট করেও পরিবারের জন্য সঞ্চয় করেন। একদিন নির্মলের খুব ইচ্ছে...

নি:সঙ্গতা ।। মাখনলাল প্রধান

  নি:সঙ্গতা মাখনলাল প্রধান শীতার্ত এই শহরটিতে প্রায়ই শোনা যায়, প্রতিটি বন্ধুর মুখ থেকে নাকি ভোরের আগে ঝরে পড়ে একেকটা অকল্পনীয় অদৃশ্য ভাষা, যেগুলো কেবল ধোঁয়ার ভিতরেই চলাফেরা করে। বন্ধুরা গোল হয়ে দাঁড়ায়, হাতে থাকে ফাল্গুনীর তৈরি চায়ের ভাঁড়, সারা রক্ষিতের মোড় আলোয় হাঁটে আর ভাঁড় থেকে উঠে আসা চায়ের গন্ধে ভেসে ওঠে শৈশবের হারানো দুপুরগুলো। যারা সেই চা খায়, তারা নাকি কিছুক্ষণের জন্য নিজেদের জন্মদিন ভুলে যায়। বন্ধুরা হাসতে হাসতে পটেক হাতড়ে বিড়ি বের করে। ধোঁয়ার মধ্যে ভেসে ওঠে অলৌকিক জালের মতো ছবি—কেউ দেখে বাঁকুড়ার টেরাকোটা ঘোড়া পুলওমা হয়ে ছুটে যাচ্ছে, কেউ দেখে  আরজিকরের  পেছন দিয়ে বয়ে যাওয়া একটা রক্তের ধারাকে কয়েকজন লাথি মেরে বন্ধ করার চেষ্টা করছে, কেউ আবার বেনিয়াটোলার ছোটো ছাপাখানার অক্ষরগুলোকে ডানা মেলে ভারতনাট‍্যম করতে দেখে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, বাজ পড়া কোনো গাছকে নিয়ে এখানে কেউ কবিতা লেখে না; কারণ বিশ্বাস করা হয়, সেই কবিতা লিখতে গেলেই তারা মাটিতে নেমে এসে মানুষের কানে কানে গোপন মৃত্যুবার্তা ফিসফিস করে দেবে। এই শহরের একমাত্র কবি—আমি—যখন অটোতে চড়ে গড়িয়া যাই, যখন ফুটপাত ধরে হাঁট...

বন্ধু ।। রবীন বসু

  অণুগল্প    বন্ধু রবীন বসু     অয়ন আমার কলেজবন্ধু ছিল। যাকে বলে হরিহর আত্মা। সেমেস্টারে আমার রেজাল্ট ওর থেকে ভাল থাকত। হতাশ হয়ে বলত, তোকে আর টপকাতে পারলাম না‌।   কিন্তু সেই বন্ধুত্বে একদিন ফাটল এল তৃণাকে নিয়ে। তৃণা আমাদের কমন বান্ধবী। সেই বন্ধুত্ব আমরা দু'জনেই প্রণয়ে রূপান্তরিত করতে সচেষ্ট হই । আর গোল বাধল সেখান থেকেই। যেন দুই প্রতিপক্ষ যোদ্ধা। তৃণা মজা পেত। হাসতে হাসতে বলত, বাবা! বান্ধবীরা যেখানে একটা প্রেমিক জোটাতে পারছে না, আমার সেখানে দু' দুটো। তবে আমার বাপু একটা শর্ত আছে। আমি একটা স্বয়ম্বর সভার ব্যবস্থা করব। সেখানে তোমাদের ডুয়েল লড়তে হবে। যে জিতবে মালা তার গলায়।          অবশ্য শেষ পর্যন্ত অয়নের সঙ্গে আমার ডুয়েল লড়া হয়নি। ত্রিশঙ্কু ঝুলে থেকে তৃণার মন না- পেয়ে স্কলারশিপ নিয়ে আমি চলে যাই আমেরিকার মিশিগান শহরে। তারপর রিসার্চ, চাকরি নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। রাগে আর  মনের দুঃখে তৃণাকে ফোনে, হোয়াটসঅ্যাপে, ফেসবুকে ব্লক করে দিই। তাই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। প্রায় দশ বছর পর দেশে ফিরে অয়নকে ফো...

দৌড় প্রতিযোগিতা ।। মুক্তি দাশ

  দৌড় প্রতিযোগিতা  মুক্তি দাশ  মা মরে যাওয়ার পর লালু ভীষণ একা হয়ে গেল। একেবারে একা। বাপ তো অনেক আগেই পরপারে। এই বিশাল পৃথিবীতে এখন সে একদম একা। সারাদিন রাস্তায় রাস্তায়, কখনো বা বাস-স্ট্যান্ডে, কখনো স্টেশন চত্বরে ঘুরে বেড়ায়। ভিক্ষে করে কোনোরকমে দিন গুজরান হয়। রাত্তিরে ফুটপাতে মড়ার মতো ঘুমোয়। সেদিন রাস্তার ধারে বসে সে চেয়ে-চিন্তে পাওয়া বাসি পাউরুটি ছিঁড়ে ছিঁড়ে খাচ্ছিল, হঠাৎ ভুলুর সংগে দেখা। ভুলুকে সে কাছে ডাকল। নিজের ভাগের পাউরুটি ছিঁড়ে এক টুকরো দিল ভুলুকে। ভুলু তাতেই খুশি। ব্যস্। সেই থেকে দু'জনের বন্ধুত্ব। বন্ধুত্ব ধীরে ধীরে গাঢ় থেকে গাঢ়তর হল। এখন ওরা যেখানেই যায়, দু'জনে একসংগে। লোকে বলে, মাণিকজোড়। সেদিন ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই লালু উঠে বসল। তারপর হঠাৎ কী মনে পড়ায় ছুটতে শুরু করেছে। পেছন পেছন ভুলুও। রীতিমতো  দৌড়-প্রতিযোগিতা। টার্গেট ডাস্টবিন। গতরাতে মজুমদার বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল। পরিত্যক্ত খাবারের এঁটোকাঁটায় উপচে পড়ছে ডাস্টবিন। প্রতিযোগী মাত্র দু'জন। লালু আর ভুলু। দু'জনেই প্রাণপণে ছুটছে। শেষপর্যন্ত লালু জিততে পারল না অবশ্য। বেচারা! ততক্ষণে ভুলু একেব...

জয় হিন্দ ।। দীনেশ সরকার

  জয় হিন্দ   দীনেশ সরকার   রায় পরিবারে কারও মন ভালো নেই। একটা দুশ্চিন্তার কালো মেঘ ক্রমশঃ তাদের পরিবারের উপর ছায়া বিস্তার করছে। পরিবারের সবেধন নীলমণি বংশধর বাবুসোনা প্রায় তিন বছর হতে চলল কিন্তু তার মুখে সেভাবে কথা ফুটল না। "ই-ই, উ-উ" ছাড়া তেমন কোন কথা তার মুখ থেকে বের হয় না।   অথচ ওই বয়সের শিশুরা   মোটামুটি কথা বলতে শেখে। এইটাই পরিবারের দুশ্চিন্তার কারণ। বাবুসোনার বাবা-মা, দাদু, ঠাম্মি, কাকাইয়েরও মন খুব খারাপ। বাবুসোনা কথা বলতে পারবে তো! ডাক্তারবাবুর কাছে নিয়ে গেলে   ডাক্তারবাবু অবশ্য অভয়বাণী শুনিয়েছেন, 'এখনই অধৈর্য হওয়ার মতো কিছু ঘটেনি। সব বাচ্চার একসময়ে বোল ফোটে না। কারও কারও ক্ষেত্রে দেরীতে বোল ফোটে। তাই এখনই হতাশ হওয়ার কোন কারণ নেই।' ডাক্তারবাবু যতই অভয়বাণী শোনাক, মন তো মানে না। রায় পরিবারের মনে তাই দুশ্চিন্তার মেঘ ভেসে বেড়াচ্ছে।                  দিনটা ছিল ১৫ই আগস্ট স্বাধীনতা দিবস। ক্লাব প্রাঙ্গনে দিনটি উদযাপনের আয়োজন করা হয়েছে। ভাষণ হবে, পতাকা উত্তোলন...

বৃষ্টি থামার শেষে ।। সঙ্ঘমিত্রা দাস

  বৃষ্টি থামার শেষে সঙ্ঘমিত্রা দাস  দমদম নাগেরবাজারে মুখোমুখি মেসবাড়ি। সুতপা অফিস ফেরত চা নিয়ে জানলায় বসলেই সামনের ঘরে  বিনয়ের অস্তিত্ব টের পায়। গান চলছে, ল্যপটপে কাজে ব্যস্ত। সুঠাম গড়ন, সুপুরুষ চেহারা। সুতপার মনে প্রেমের জোয়ার। কাজের ফাঁকে আড় চোখে সুতপাকে দেখে বিনয়ও। রোজ একটা অপেক্ষা থাকে, সামনে এলেই পর্দার আড়াল খোঁজে দুজনে। লাজুক চোখ, লুকাই লুকাই ভাব। এভাবে গভীর হয় প্রেম, আগুনে পোড়ে মন। নীরব  দুই জোড়া  চোখ নিশ্চুপে ভালোবাসে। অঝোর বৃষ্টিতে দুজনেই আটকে আছে স্টেশনে সেডের নীচে। বারবার চোখে চোখ মিলছে।  বৃষ্টিটা  কমতেই বিনয় ব্যাগ থেকে ছাতা বের করে,  প্রথম বাক্যালাপ  "মনে হয় তাড়াতাড়ি থামবে না। ছাতা আছে, চলে যাই চলুন"। সুতপা, বিনয় একছাতায়। মাথা বাঁচলেও  শরীর ভিজছে। আরো কাছে ঘেঁষে আসছে ওরা। একে অপরের স্পর্শ অনুভব করছে। বুকের ধুকপুকানি বাড়ছে। দুজনেই রিমঝিম প্রেমে আকুল। সুতপা ব্যাগটা শক্ত করে আড়ালে টেনে রেখেছে। ওর ব্যাগেও যে ছাতা আছে কিছুতেই বিনয় যেন টের না পায়। ছোট মিথ্যার আশ্রয়, ও যে আরো একটু বিনয়ের কাছে থাকতে চায়। ===...

নবাবী নুপুর ✍️ পার্থ প্রতিম দাস

  নবাবী নুপুর ✍️পার্থ প্রতিম দাস      ভারত স্বাধীন হওয়ার পর রাজা ও নবাবী শেষ হয়ে প্রজাতন্ত্রের উন্মেষ ঘটেছে। সেই প্রাচীন প্রাসাদগুলো এখন প্রায় অভিজাত হোটেলে পরিণত হয়েছে। দেশ বিদেশ থেকে পর্যটকরা আসে ইতিহাস ও ঐতিহ্য দেখার জন্য। তখন তারা সেই হোটেলগুলোতে থাকে। সেই বঙ্কিমের যুগ থেকে ইতিহাসের প্রতি বাঙালীর আকর্ষণ তীব্র রয়েছে।              অশ্বিনী, সে বহুজাতিক সংস্থায় কর্মচারী। তার মতে রোজগার করো আর ছুটির দিনে বেরিয়ে পড়ো ভারত দর্শনে। এই খামখেয়ালী মনোভাবের জন্য অশ্বিনী চিরকুমার থেকে গেছে। তাতে কি হয়েছে? তার সেই অভাব পূরণ করে দিয়েছে পাহাড়, সমুদ্র, ঝর্ণা, নদী, গুহা ভাস্কর্য, ভারতের প্রাচীন ইতিহাস ও লোকসংস্কৃতি।      এবারের পুজোর ছুটিতে অশ্বিনী বেরিয়ে পড়লো আরাবল্লীর কোলে মরুস্থলির ইতিহাস দেখার জন্য। প্রাসাদ হোটেলে একটা রুম বুক করে পুজোর ছুটিটা কাটাচ্ছে। সারাদিন উটের পিঠে চেপে, হরিন ময়ূরের ছবি তুলে ফিরে আসে হোটেলে। প্রতি রাতে শুনতে পায় নূপুরের মিস্টি ধ্বনি। সকালে উঠে খুঁজতে থাকে কোথা থেকে নূপুরের ধ্বনি আসছিল! কর্মচারীদের জি...

মুরোদ ।। রানা জামান

  মুরোদ রানা জামান     মাজেদার চিৎকারে ব্যথিত হতে থাকে আকাশ বাতাশ। মেয়ে দুটোকে বাবা ছাইদুল ধরে রেখেছে কোলে। মনে মনে বলছে: পরপর দুইটা মাইয়া দিছো আল্লাহ, বংশ রক্ষার জন্য এইবার একটা পোলা দেও। মাজেদার ছোটবোন সাজেদা এসে বললো, বুবুর খুব কষ্ট হইতাছে। হেরে কুনু ক্লিনিকে নিয়া চলেন দুলাভাই। ছাইদুল বললো, ক্লিনিকে নেয়ার মতো ট্যাকা নাই। এর আগেও তোমার বুবুর দুইটা নরমাল ডেলিভারি হইছে। এইবারও নরমাল ডেলিভারি হইবো ইনশাআল্লাহ। আপনের মতো কঞ্জুস ছাড়া আর কেউ দাই ডাকে না ডেলিভারির লাইগা। তখন মাজেদার গগনবিদারী চিৎকারের সাথে সাথে নবজাতকের চিৎকারও শোনা গেলে সাজেদা ছুটে চলে গেলো আঁতুড়ঘরে।  ছাইদুল দুই মেয়েকে বললো, শুইন্যা আহো তোমাদের ভাই হইছে না বইন হইছে। মেয়েরা আঁতুড়ঘরের দরজায় গিয়ে দাঁড়ালে মাজেদা হাত ইশারায় ভেতরে ঢুকতে বললে ওরা ভেতরে ঢুকে তাকিয়ে রইলো নবজাতকের দিকে। মাজেদা বললো, তোগো আরেকটা বইন হইছে। তোগো বাপরে গিয়া জানা। কিন্তু ছাইদুলকে কোথাও খুঁজে পাওয়া গেলো না। আধাঘণ্টা পরে ছাইদুল মাজেদাকে ফোনে বললো, তোরে একটা পুলা দিতে কইছিলাম। ...

আত্মত্যাগ ।। কৃষ্ণা সরকার

    অণুগল্প আত্মত্যাগ  কৃষ্ণা সরকার  ক্লাসে ঢুকে হেডমাস্টার অখিল বাবু বললেন, এবার তোমাদের পড়াশোনায় আরো মনোযোগ দিতে হবে, সামনে মাধ্যমিক, ইস্কুলের মান রাখতে হবে তো ? সবাই  সমস্বরে বললো হ্যাঁ স্যার। সূর্য ইস্কুলের ফাস্ট বয় — তাকে ডেকে  বললেন কি সূর্য? আমাদের ইস্কুলের মুখ উজ্বল করতে পারবে তো ! হ্যাঁ স্যার, আমি যথা সম্ভব চেষ্টা করব। এরপর ঋজুকে বললেন তুমি একটু পড়াশোনায় মন দাও ঋজু? স্যার আপনি একদম ভাববেন না, আমার বাবা আছেতো। অখিলবাবু জানেন ঋজু ধনী বাপের বখে যাওয়া  আদরের দুলাল, তার উপর বাবা  বিজনবিহারী একজন এম এল এ। ছেলেটির পড়াশোনায় একদম মন নেই, সারাদিন বন্ধুদের সাথে আড্ডা মারা, তাসখেলা, সিগারেট খাওয়া সব কিছুতেই হাত পাকিয়ে ফেলেছে, ওকে বিশেষ কিছু বলে লাভ নেই । ইস্কুলের হেডস্যার অখিলবাবু, অত্যন্ত বিনয়ী, ভদ্র ছাত্রদের নিজের পুত্রসম চোখে দেখেন। সূর্য, অখিলবাবুকে যথেষ্ট ভক্তি শ্রদ্ধা করে সময় - অসময়ে বাড়িতে গিয়ে পড়াশোনা বুঝে আসে। সেদিন সূর্য ইস্কুল থেকে বাড়ি ফিরছিল হঠাৎ দেখে বড় বট গাছের নিচে হেড মাস্টার আর ঋজুর বাবা বিনোদ বিহারীবাবু কি যেন কথাবার্তা  বলছে,...

দোষ ।। আশরাফুল মণ্ডল

অণুগল্প দোষ আশরাফুল মণ্ডল মদন বাউড়ি কলকাতায় এসেছিল ছাদ ঢালাইয়ের কাজে। হরিণঘাটার লোক। গায়ের রং কালো। মুখে দাড়ির রেখা। চোখে সরলতা। সেদিন সন্ধ্যায় কাজ থেকে ফেরার পর জানা গেল তার মালিকের ছেলের নাকি দামি মোবাইল হারিয়েছে। পুলিশ এল। সব লেবারকে এক লাইনে দাঁড় করানো হল। একজন বলল, "ওই কালো ছেলেটা নতুন এসেছে না? ওর ব্যাগটা খোলো।" মদনের ব্যাগে মোবাইল পাওয়া গেল না। তবু তাকে নিয়ে যাওয়া হল থানায়। জামিন হল না। "ক্লাস ফোর ড্রপআউট। জাত বাউড়ি। ঠিকানা নেই" - এসব কারণ দেখিয়ে তাকে ভবিষ্যতের চোর হিসেবে রেখে দেওয়া হল আট দিন। জেল থেকে ছাড়ার পর সে বাড়ি ফিরল। মা বলল — "তোর দোষ কী রে বাপ্? তু কী করেছিলি?" মদন বিড়বিড় করে বলল - "আমার দোষ আমি নিচুজাত। গরীব। অশিক্ষিত। আর আমার গায়ের রং কালো।" ================== ASRAFUL MANDAL "BIDISHA", 4/17 CHANDIDAS AVENUE, B-ZONE, DURGAPUR, PASCHIM BARDHAMAN - 713205,  

বহুরূপীর জীবন ।। মিঠুন মুখার্জী

বহুরূপীর জীবন মিঠুন মুখার্জী এবারের দুর্গাপুজোয় 'আমরা কজন' ক্লাবের পক্ষ থেকে সেরা বিউটি কম্পিটিশনের আয়োজন করা হয়েছিল। যাদের বয়স কুড়ির ভিতর তারাই এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন। মোট ত্রিশজন অংশগ্রহণ করেছিলেন এই প্রতিযোগিতায়। একটা লম্বা স্টেজ করা হয়েছিল সুন্দরীদের প্রর্দশনীর জন্য। বলা হয়েছিল সবদিক থেকে যারা সুন্দরী হবেন তারাই প্রথম দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকার করবে। এই সুযোগটা জীবনপল্লী গ্ৰামের কেষ্ট দা হাতছাড়া করেন নি। অল্প বয়সে কত মেয়ে যে তার প্রেমে পড়েছিল তার হিসেব নেই। পেশায় কেষ্টদা একজন বহুরূপী। নানান রূপ সেজে মানুষদের আনন্দ দিয়ে পয়সা উপার্জন করাই তার কাজ। সে একজন সুন্দরী সেজে ওই প্রতিযোগিতায় উপস্থিত হয়েছিলেন। যারা বিচারকের আসনে ছিলেন তাদেরকেও কেষ্টদা একেবারে ঘোল খাইয়ে দিয়েছিলেন। বিচারকরা তিন জন এক মুহূর্তের জন্য বুঝতে পারেন নি যে, এই সুন্দরী আসলে কোনও মেয়ে নয় ছেলে। সকল সুন্দরীদের দেখার পর যখন কেষ্টদা সুন্দরী নারীর রূপ নিয়ে মঞ্চে ওঠেন, তখন সকলে তার রূপেরকলা দেখে অভিভূত হয়ে যান। মনে হয় পনেরো-ষোলো বছরের কোনো অপ্সরা। তিনি যা যা করছিলেন বিচারকদের...

অণুগল্প 🌼 খোকা ফিরে আয় 🌼 পার্থ প্রতিম দাস

খোকা ফিরে আয়  ✍️পার্থ প্রতিম দাস    অনেক বছর হলো তার খোকা চলে গেছে। কোথায় গেছে কেউ জানে না। বিধবা মায়ের একমাত্র সম্বল হারিয়ে গেছে। কাঁদতে কাঁদতে মায়ের চোখের জল শুকিয়ে গেছে।      সময় বদলেছে। ইলেকট্রিক এসেছে,সবার হাতে মোবাইল ফোন। কিন্তু খোকা এলো না। মায়ের উপর এতো রাগ।      বিধবা মা জানে না, এখন চিঠির সময় নাই। এখন ইমেল, মোবাইলের যুগ। বাড়িতে রাখা পুরাতন পোষ্ট কার্ডে বৃদ্ধা কাঁপা কাঁপা হাতে লিখলেন, "আর কতদিন রাগ করে থাকবি বাপ? আমি একা একা আর পারছি না। খোকা ফিরে আয়। তোর হাতের আগুন কি পাবো না?"     তারপর একাকী মা কঠিন অসুখে পড়ে। মৃত্যু শয্যায় ছেলের মুখ দেখার জন্য তাকিয়ে থাকে। কিন্তু তার নাড়ি কাটা ধন, আদরের খোকা কোনো দিন এলো না। মায়ের মৃত্যু হলো।           এখন কয়দিন ধরে পোষ্ট অফিস তার পুরাতন স্থান ছেড়ে নতুন স্থানে সিফ্ট হচ্ছে।পোষ্টমাস্টারের নজর গেল পোষ্ট বক্সের দিকে। পুরাতন পোষ্ট বক্স খুলে পোষ্ট মাস্টার দেখে বুড়ি মায়ের চিঠিটা তখনো বক্সের মধ্যে পড়ে আছে।       বুড়ি মা তার ছেলের ঠিকানা জানতো ন...

অণুগল্প ।। অন্তরা ।। অগ্নিমিত্র

  অন্তরা  অগ্নিমিত্র   অন্তরার উপস্থিতির কথা বুঝেছি অনেকবার। আমি কিছু ভুল কাজ করতে গেলেই অন্তরা বাধা দেয়। আমার ভুল ধরিয়ে দেয়। কিন্তু ধরা দেয় না অন্তরা। তার কন্ঠ শুনি, যেন তার সুঘ্রাণও পাই। তবে তাকে দেখি না।    আমার বন্ধুদের অন্তরার কথা বলিনি। তারা বুঝবে না। নলিনীকে শুধু বলেছিলাম। সে শুনে মনে মনে জ্বলে পুড়ে গিয়েছিল। বলেছিল-' এই অন্তরা কে? দেখিও তো আমাকে। লজ্জা করে না একসাথে দুটো মেয়েকে ঘোরাতে?'    অনেক চেষ্টার পরেও আমি অন্তরাকে দেখাতে পারিনি। কী করে দেখাবো, আমি তো নিজেই দেখিনি।...   এই নিয়ে অনেক ঝামেলা হয়েছে। নলিনী আমাকে এক মনোবিদের কাছে নিয়ে যায়।  সে বলে যে আমার মতো সবারই নাকি দ্বৈত সত্তা থাকে। এর বেশি কিছু বলেনি সে ।...   আজকাল চোখ বুজলে যেন অন্তরাকে আবছা আবছা দেখি।..    পরশু বিয়ে করছি নলিনীকে। নলিনী বলেছে যে আমি আধ-পাগল ও এটা জেনেও সে আমাকে বিয়ে করছে। এটা যেন আমি মনে রাখি।...  অন্তরা বলল-' নলিনী ভালো মেয়ে। তোমার ভালো চাকরি হয়েওছে তো। ভালোই হবে সব। '   বিয়ের আগের দিন আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে যেন অন...

স্বপ্ন দর্শন ✍️ পার্থ প্রতিম দাস

অণুগল্প স্বপ্ন দর্শন  ✍️পার্থ প্রতিম দাস      আজকাল অনিক কোলকাতা থেকে এম এড পড়ছে। কোলকাতায় গাড়িঘোড়া, লোকজন, কলকারখানার শব্দে ও বিপুল সিলেবাসের চাপে যেন মাঝে মাঝে হাঁপিয়ে ওঠে। বাড়ি ফিরতে তার খুব মন চায়। নিঃতরঙ্গ গ্রাম্য জীবন যেন তাকে হাতছানি দিয়ে ডাকে।     বসন্ত আর থাকতে পারলো না। ফিরলো বাড়িতে। সবুজ গাছপালার মাঝে ছোট্ট এক শান্তির নীড়। বাড়ির উঠানের ধারে ফুল ফুটে আছে গন্ধরাজ ও জবা। পুকুরের জলে হাস গুলো ডুবে ডুবে গুগলি তুলছে। হাত পা ধুয়ে কিছু খেয়ে নিয়ে অনিক বেরিয়ে পড়লো। পাখির ডাক আর শীতল হাওয়া যেন তার জন্য অপেক্ষা করছিল।      যখন সূর্যটা ঠিক মাথার উপর উঠলো। ছায়ায় বাঁধা গরুরা শুয়ে জাবর কাটছে। অনিক তখন বাড়িতে এসে নামলো পুকুরে। স্নান করে ভাত খেয়ে অনিক বিছানায় গিয়ে শুয়েছে। তার রুমের দেওয়ালে একটা ক্যালেন্ডার ফ্যানের হাওয়ায় দুলছে। ক্যালেন্ডারে এক সুন্দর ছবি আঁকা। বধূর বেশে বাচ্চা মেয়ের ছবি।      অনিক ওই ছবিটার দিকে এক দৃষ্টিতে দেখতে দেখতে কখন ঘুমিয়ে পড়েছে।       অনিক স্বপ্নে দেখছে, তার বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠান হচ্ছে...

অণুগল্প।। জীবন সংগ্রাম ।। দীপক পাল

জীবন সংগ্রাম দীপক পাল            বাড়ি থেকে বেরিয়ে হাঁটতে হাঁটতে দমদম ঘুঘুডাঙগার দিকে যাচ্ছিলাম কোনো একটা বিশেষ কাজে । দমদম স্টেশনের নিচের আন্ডার পাসটা পেরিয়ে একটু এগিয়ে যেতেই হঠাৎ বৃষ্টি নামলো ।  স্ত্রী ছাতা নিয়ে যাওয়ার কথা বললেও তাড়াতাড়ি বেরোতে গিয়ে ঠিক সেটা ভুলে গেলাম । তার ফল তো ভুগতে হবেই এখন । কোনোমতে দমদম রোড পেরিয়ে গিয়ে বাসস্ট্যান্ডের shade এর তলায় গিয়ে  দাঁড়ালাম । সেখানে খুব ভিড় । দুটো বাস স্ট্যান্ডে এসে দাঁড়াল । এরপরে আমি একটু ভালোভাবে সামনের দিকে দাঁড়াতে পারলাম । বৃষ্টিটা ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে । পুরোটা না থামা পর্যন্ত আমি এ জায়গা ছেড়ে কোথাও যাচ্ছি না । হঠাৎ এমন একটা আশ্চর্য ব্যাপার দেখলাম যে চোখ সে জায়গায় স্থির হয়ে গেল । একটা অতি ক্ষুদ্র, ইঁদুর বাচ্চা রাস্তার কিছু বৃষ্টির জল ভরা গর্তের মধ্যে সবচেয়ে ছোট্ট গর্তটার মধ্য থেকে খালি মুখটা বাড়িয়ে ভয়ে এদি...

বিধিবদ্ধ স্বীকার্য :

লেখার বক্তব্যের দায়িত্ব লেখকের, পত্রিকার নয়। আমরা বহু মতের প্রকাশক মাত্র।

মতামত/লেখা এখানে জমা দিন

Name

Email *

Message *

সাম্প্রতিক বাছাই

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯৩তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩২ নভেম্বর ২০২৫

সূচিপত্র বস্তু, চেতনা এবং কবি ।। সজল চক্রবর্তী দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত ।। রণেশ রায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট ও সন্নিহিত অঞ্চলের কথ্য শব্দ ।। অরবিন্দ পুরকাইত চাঁদে জীবন ।। শমীক সমাদ্দার অসমাপ্তি ।। মহুয়া হুই গ্যালাক্সির শব্দে ।। জাসমিনা খাতুন তিনটি কবিতা ।। দিবাকর সেন অপূর্ণতার শেষ অধ্যায় ।। সুপ্রিয় সাহা হাফ ডজন ছড়া ।। স্বপনকুমার পাহাড়ী স্বাপ্নিক অমলের ঘুৃম ।। সঞ্জয় দেওয়ান দুটি কবিতা ।। সৌমিত্র উপাধ্যায় পথ চলতি ✍️পার্থ প্রতিম দাস হেমন্তের বিষাদ ছুঁয়ে ।। শক্তিপদ পাঠক রাই আর বাবা ।। অদিতি চ্যাটার্জি স্থিতিশীল ।। রঞ্জিত মুখোপাধ্যায় হৃদয়ের শূন্য কোড ।। লিপিকা পিঙ্কি দে অমানিশা ।। সৌভিক মুখার্জী দৃষ্টিগত ।। শামীম নওরোজ জ্যান্ত ভূতের গপ্পো ।। পার্থ সারথি চট্টোপাধ্যায় ধুতরা ফুলের ঘ্রাণ ।। মজনু মিয়া তারা খসার আলোয় ।। তীর্থঙ্কর সুমিত উত্তরণে অন্তরায় ।। সমীর কুমার দত্ত প্রেম মুদ্রা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ধারা ।। লালন চাঁদ অন্যের ব্যথায় ব্যথি ।। জগদীশ মণ্ডল গর্ভ ।। শাশ্বত বোস ভ্রমণ বিষয়ক স্মৃতিকথা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত শাপে বর ।। সাইফুল ইসলাম রবিবার ।। সঙ্ঘমিত্রা দাস দুটি ...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬

  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠালে  অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে হলে ভালো। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # ...

রেজাল্ট ।। সৈকত মাজী

রেজাল্ট সৈকত মাজী শুভ্রাংশু বিছানতে শুয়ে শুয়ে বিরক্ত হয়ে উঠল। মনে মনে নিজের শরীরটাকে আচ্ছা করে শুনিয়ে দিলো দু- চারটে কথা, দেবে নাই বা কেন, কয়দিন ধরে এতো কাঠ খড় পুড়িয়ে সব বন্ধুরা মিলে রথটা বানালো, কত কি প্ল্যান করলো, আর এই শরীরটার জন্যই তো সব ভেস্তে গেলো। মনে মনে ভাবলো একটা যা হোক শরীর হয়েছে ওর প্রতি মাসে তিন - চার বার করে জ্বর হচ্ছেই। হবি তো হ আর একটা দিন পরে হলে কি এমন ক্ষতি হতো, এই রথের দিনেই হতে হলো। ওর বিরক্তিটা বেড়ে গেলো আরো কয়েক ঘর।    " মা ও মা...মাআআআআ...." জোরে হাঁক  দিলো শুভ্রাংশু।    " কি হয়েছে বাবু? আবার জ্বরটা বেড়েছে? মাথা ব্যথা করছে?" ব্যস্ত হয়ে উঠলেন মালতিদেবী।     " ওসব কিছু নয়, ও মা বলছি এখন তো খুব কম জ্বর আছে যাই না মা একবার বাইরে, সবাই কতো ফুর্তি করছে বলো"  কাতর ভাবে বলল শুভ্রাংশু।      " না বাবু, এখনই আমরা ডাক্তারের কাছে যাব, বাবা তৈরী হয়ে গেছেন, আমরা বিকেলে তখন মেলা দেখতে যাব কেমন, এখন উঠে জামা কাপড় পরে নাও"  মালতিদেবী জামা কাপড় গুলো এগিয়ে দিলেন।      শুভ্রাংশু...

রাই আর বাবা ।। অদিতি চ্যাটার্জি

রাই আর বাবা অদিতি চ্যাটার্জি রাই-র জীবনে বেশ কিছু ভালো লাগা আছে তার মধ্যে একটা হলো সন্ধ্যার সময় তিন তলার বারান্দায় দাঁড়িয়ে রাস্তা দেখতে দেখতে কফি কাপে চুমুক দেওয়া ।" আজ যশোদা মিষ্টান্ন ভান্ডারের সামনে বেশ ভিড়,নির্ঘাত 'তেলে ভাজা ' প্রেমীরা।" আপন মনেই ভাবে ও, কিন্তু বসার ঘরে সুমন আর আঁখি এতো জোরে 'হল্লা গোল্লা ' করছে তালতলার জমজমাট রাস্তার দিকে আর মন দিতে পারছে না রাই।  পায়ে পায়ে ঘরে এসে দাঁড়ায় রাই, দেখে ক্লাস ফোরের মেয়ে এতোটা ঝগড়া করছে সুমনের সাথে , "বাপ রে, কবে এতোটা কথা শিখলো মেয়ে! কিভাবে কথা বলছে?? কোঁকড়া চুল ঝাঁঝিয়ে,গোলগাল হাত নেড়ে " ...মেয়ে কে দেখে থতমত খেয়ে যায় রাই। এদিকে আঁখি বলছে, "ধুত্ বাপী তুমি কিচ্ছু পারো না, তুতাই-র বাবা, পিসাই, মামু সবাই কত ভালো করে খেলতে পারে , না আমি তোমার সাথে খেলবো না।" কাতর চোখে মেয়ের দিকে একবার তাকিয়ে সুমন বলে ,"আচ্ছা তুই আমাকে শেখা, দ্যাখ আমি কার জন্য আলিপুরদুয়ার থেকে পনেরো দিন পর পর কলকাতায় আসি বল!"  ঐ টুকু মেয়ে কথা প্রায় না শুনেই ঘরে চলে গেল রাই-র চোখের সামনে, সুমন একবার হেসে বাথরুমের দিকে এগো...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯২তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩২ অক্টোবর ২০২৫

—: সম্পাদকীয় দপ্তর থেকে :— এই সংখ্যার জন্য লেখা এসেছিল প্রায় ১৮০টা। কিন্তু গুণগত মানে দুর্বল লেখার সংখ্যা বহু। আমরা নবপ্রভাতে নতুনদের কথা ভেবে বেশ কিছু দুর্বল লেখাও রাখি। কিন্তু সবসময় একই লোকের দুর্বল লেখা প্রকাশ করা অনুচিত বলে মনে করি। শেষ পর্যন্ত ৯৯ জনের লেখা রাখা গেল। যাদের লেখা প্রকাশিত হল না, তারা লেখাগুলি অন্য যেখানে খুশি পাঠাতে পারেন। বিশেষ কারণে এই সংখ্যার মুদ্রিত সংস্করণ প্রকাশিত হচ্ছে না। আমরা দুঃখিত। তবে মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি শীঘ্রই আসছে। সঙ্গে থাকুন। সকলকে উৎসবমুখর বর্ণময় শুভেচ্ছাসহ— —নিরাশাহরণ নস্কর, সম্পাদক, নবপ্রভাত। অনুরোধ : প্রকাশিত লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন, ছবি/স্ক্রীনশট নয়।  == সূচিপত্র == পড়া-লেখার ইতিহাস অনুসন্ধান।। তপন তরফদার উৎসব : মানুষের চিরন্তন আত্মপ্রকাশ।। কৃশানু ব্যানার্জি বাংলা : সভ্যতা ও সংস্কৃতির জন্মভূমি।। শ্যামল হুদাতী সমুদ্র আর অস্তিত্ব ।। সুব্রত চৌধুরী রাজা ছিলেন জুবিন গর্গ ।। গঙ্গা 'অনু'   আদ্যাশক্তি মহামায়ার বাংলা বারো মাসের বারো রূপ ।। অর্হণ জানা মেধাদাদুর আসর ।। রণেশ রায় বৈজ্ঞানিক মা...

বস্তু, চেতনা এবং কবি ।। সজল চক্রবর্তী

বস্তু, চেতনা এবং  কবি সজল চক্রবর্তী  "যেখানে পৌঁছায় না রবি,, সেখানে পৌঁছে যান কবি।" এই ছোট্ট কবিতা টি অনেক পুরনো  এবং বহু পরিচিত, তথাপি এর তাৎপর্য এখনো হারায় নি। তবে, কথা হ'চ্ছে -আমরা তো  রবি-কবিকে একত্রেই পেয়ে যাই আমাদের ঋষি-প্রতিম কবি রবীন্দ্রনাথের মধ্যে। আর তখনই জেনে যাই উপরোক্ত ছোট কবিতার প্রণিধানযোগ্যতা ।  ... এবার শুনে নেয়া যাক, ঋষি-প্রতিম কবির মুখ নিঃসৃত বাণী:- "তোমার অসীমে প্রাণমন লয়ে যত দূরে আমি যাই ...." অর্থাৎ আমাদের প্রিয়তম কবি অনায়াসে পৌঁছে যান সৃষ্টির অসীমে , যা আমাদের পক্ষে আদৌ সম্ভব নয়। এখানে কবির চেতনা সুদূর প্রসারী! ... প্রকৃত প্রস্তাবে কবি অতিন্দ্রীয় জগতের এক নাগরিক। তাঁর কাছে তাই চেতনা বা চৈতন্যেরই প্রাধান্য। ...এখন আসছি, বস্তু এবং চেতনার মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে।  ... আমি একজন অতি সাধারন মানুষ, তাই এই ব্যাপারটাকে কবিদের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার চেষ্টা ক'রছি। তবে আমার সামান্য জ্ঞান থেকে একটা সাধারণ কথা সেরে নি'। আমরা সাধারণত ব'লে থাকি-- সূর্য পূর্বদিকে ওঠে। প্রকৃত অর্থে কি তাই ? আসলে সূর্য যেদিকে ওঠে ,আমরা  সেই দিকটাকে নামাঙ্কিত ক...

দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট ও সন্নিহিত অঞ্চলের কথ্য শব্দ, উচ্চারণ, বাগ্্ধারা ইত্যাদি ।। অরবিন্দ পুরকাইত

স্থানীয় কিছু কথ্যশব্দ, উচ্চারণ, বাগধারা ইত্যাদি  (পর্ব—সাত) অরবিন্দ পুরকাইত স্থানীয় কিছু কথ্যশব্দ, উচ্চারণ, বাগ্্ধারা ইত্যাদির সংগ্রহ প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল রামচন্দ্র নস্কর সম্পাদিত 'চর্যা' পত্রিকায়, ২০১৬ সালে। সে সংগ্রহ যায় নিজের 'গাঁ-ঘরের কথা' পুস্তকে, ১৪২৩ সনে। পরে এই ব্লগজিনেও কিছু সংগ্রহ প্রকাশিত হয় ১৪২৮ সনের আশ্বিন মাসে, পৌষ ১৪২৯-এ, আষাঢ় ১৪৩০, নববর্ষ ১৪৩১ ও কার্তিক ১৪৩১ সংখ্যায়। তার পরেও ধীরে ধীরে আরও কিছু সংগৃহীত হয়েছে, সেগুলিই এখানে রাখা হল। নিজের আগের সংগ্রহে এসে-যাওয়া শব্দ যদি এখানে এসে থাকে, তা বাড়তি বা ভিন্ন কিছু বলার প্রয়োজনেই। নিজের আগের সংগ্রহ খুব ভাল করে যে মিলিয়েছি তা নয়, পুরো সংগ্রহ একত্র করার সময় তা করা যাবে যতটা সম্ভব নিখুঁত করে। আগে আগে সংগ্রহ প্রসঙ্গে কিছু কথা বলা হয়েছে, বিশেষত প্রথম প্রকাশের সময় একটু বিশদভাবে। এখানে আর কিছু বলা নয়, কেবল সংগ্রহটাই তুলে ধরা গেল। অখেজো/অখেজে — অকেজো থেকে। আদরের তিরস্কার হিসাবেই মূলত প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। পাজি। অচিমিতি — (উচ্চারণ ওচিমিতি) আচমকা, হঠাৎ। অদীয় — প্রচুর, অজস্র। অদ্বিতীয় থেকে ক...

কবিতা ।। অরণ্যকন্যা ।। অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়

  অরণ্যকন্যা অরিন্দম চট্টোপাধ্যায় অরণ্যকন্যার দৃষ্টির ভেতর বিষাদ বিন্দু ফোঁটা ফোঁটা জলের মতো গড়িয়ে যায়, হয়ে যায় কোন নদীপথ দৃষ্টি ভেঙে ভেঙে চলে যায় কোন এক শূন্য পথে অরণ্যকন্যার হৃদয়ের ভেতর ভাঙে যতো বৃক্ষপত্র নতুন পত্র পুষ্পের খোঁজ নেই ঠোঁট জুড়ে সমুদ্রকাঁপন বুদবুদের মতো অস্ফুট হয়ে উচ্চারিত হয় কোন অক্ষর শব্দ আর তাঁর শরীর থেকে ছড়িয়ে যায় হয়ে যায় একটা অদৃশ্য কবিতা...    ================== @ অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়,  বেহালা, কলকাতা -৭০০০৬০,  

দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত ।। রণেশ রায়

দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত রণেশ রায় ভূমিকা দর্শনের ইতিহাসে বস্তু ও চেতনার সম্পর্ক মানবচিন্তার গভীরতম প্রশ্ন। অধিবিদ্যা ভাবকে মুখ্য ধরে, বস্তুকে গৌণ বলে মনে করে। বিপরীতে মার্কস ও এঙ্গেলস বলেছেন—বস্তুই মুখ্য এবং চেতনা তার প্রতিবিম্ব। মানুষ যখন প্রথম আলোর মুখ দেখেছিল, তখনই সে বিস্ময়ে প্রশ্ন করেছিল—আমি কে, কোথা থেকে এলাম, আর এই দৃশ্যমান জগতের বাইরে কিছু আছে কি? এই প্রশ্ন থেকেই জন্ম নিয়েছিল দর্শনের দুই বিপরীত স্রোত—ভাববাদ আর বস্তুবাদ। ভাববাদ বলেছিল—"ভাবই প্রথম," আর মার্কস বললেন—"না, বস্তুই প্রথম।" এই দুই প্রান্তের মাঝখানে আমি দেখি এক সেতুবন্ধন, যেখানে বস্তু, স্নায়ু ও চেতনা একে অপরকে গড়ে তোলে, আর তাদের এই ত্রিত্বের নৃত্যেই সৃষ্টি হয় জীবন ও কল্পনার জগৎ। ভাবববাদ এক সর্বশক্তিমান শক্তির কল্পনা করে যা এই বস্তুজগতের স্রষ্টা। আর এখান থেকে ধর্ম ও ধর্মীয় ভাবধারার সৃষ্টি। আমার এই প্রবন্ধে আমি মার্কসীয় দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদকে আধুনিক বৈজ্ঞানিক আলোকে বোঝার চেষ্টা করেছি। আমি দেখাবার চেষ্টা করবো কিভাবে ইন্দ্রিয় এবং স্নায়ুজগৎ বস্তু ও চেতনাকে সংযুক্ত করে এবং কল্পলোকের জন্ম দেয়...

চাঁদে জীবন ।। শমীক সমাদ্দার

চাঁদে জীবন  শমীক সমাদ্দার                           চন্দ্রযান দুরন্ত তৈরি, রকেটের উপর ভর করে চন্দ্রযান চাঁদে অবতরণ করবে। মাধ্যাকর্ষণ শক্তি পেরিয়ে মহাকাশযান চাঁদের কক্ষপথে  স্থাপন করা হয়েছে। চন্দ্রাযান চাঁদের মাটিতে পা রাখবে সময়ের কাউন্ট ডাউন চলছে। সমস্ত নিয়ন্ত্রণ স্পেসস্কাই গাবেষণা কেন্দ্র কতৃক নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে প্রযুক্তি বিজ্ঞান অতল গভীরতায় বাসা বাঁধে। পরিচয়টা দিয়ে দিলাম এই স্পেসসিপে রয়েছে তিনজন নভোচর, একজনের নাম সাইমন আর এক জনের নাম রেমন্ড, আর এদের সঙ্গে একজন মহিলা আছে তার নাম মেরিনা। চন্দ্রযান চন্দ্রপৃষ্ঠে সফলভাবে অবতরণ করেছে। চন্দযান দুরন্ত চাঁদের পূর্ব -পশ্চিম অক্ষরেখা বরাবর অবতরণ করেছে। আলো আঁধারের গভীরতায় বড় বড় পাথরের পিণ্ড, চাঁদের সার্ফেসের উপরে পাথর জল দেখা যায়। জমাট বাঁধা অক্সিজেন আর কার্বনডাই অক্সাইড। ওরা এখানে এসেছে এক রহস্য উদ্ঘাটন করতে। যে স্থানে ওরা অবতরণ করেছে সেখানে ১০ বছর আগে ওরা এসেছিলো। রুশ সরকার ওদের দেশের ছাত্র ছাত্রী কে মহাকাশে চাঁদে পাঠাতে চায়। ওরা কেন এসেছে সেটা এখনো অধরা। সাইমনের বর্...

বছরের বাছাই

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৪তম সংখ্যা ।। ফাল্গুন ১৪৩১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

  এই সংখ্যায় একটি গ্রন্থ আলোচনা ও একটি ধারাবাহিক রচনা ছাড়া সব লেখাই ভাষা দিবস, মাতৃভাষা, ভাষাচেতনা ও ভাষা সমস্যা বিষয়ক রচনা। লেখাগুলি এই সংখ্যাকে অনেকটাই সমৃদ্ধ করেছে। পড়ুন। শেয়ার করুন। মতামত জানান। লেখকগণ নিজের নিজের লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন যতখুশি, যে মাধ্যমে খুশি। কিন্তু স্ক্রিনশট শেয়ার নৈব নৈব চ!  অন্য বিষয়ের লেখাগুলি আগামী সংখ্যার জন্য রইল।  সকলকে ধন্যবাদ, অভিনন্দন। ভালো থাকুন।   --সম্পাদক, নবপ্রভাত। ==  সূ  চি  প  ত্র  == প্রবন্ধ-নিবন্ধ অমর ২১শে ফেব্রুয়ারি বাঙ্গালীর বাংলা ভাষা দুর্জয় দিবস।। বটু কৃষ্ণ হালদার ভাষা শহীদদের পঁচাত্তর বছর।। অনিন্দ্য পাল একুশে ফেব্রুয়ারি : বাঙালির শ্রেষ্ঠ অশ্রুবিন্দু।। জীবনকুমার সরকার কবিগানের সাহিত্যিক ও সমাজতাত্ত্বিক মূল্য।। বারিদ বরন গুপ্ত বিপন্ন মাতৃভাষা ও সংস্কৃতি।। শ্যামল হুদাতী মায়ের দুধ আর মাতৃভাষা।। প্রদীপ কুমার দে একুশে ফেব্রুয়ারি : কিছু কথা।। বনশ্রী গোপ বাংলায় কথা বাংলায় কাজ।। চন্দন দাশগুপ্ত বিপন্ন মাতৃভাষা ও তার মুক্তির পথ।। মিঠুন মুখার্জী. হে অমর একুশে, তোমায় ভুলিনি, ভুলব না।। মহম্মদ মফিজুল ইসলা...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৭তম সংখ্যা ।। জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ মে ২০২৫

  প্রচ্ছদ চিত্র: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সূচিপত্র রবীন্দ্রনাথ এবং কয়েকজন নারী ।। অনিন্দ্য পাল পরাবাস্তববাদ ও বাংলায় জীবনানন্দের কাব্যচর্চা ।। রণেশ রায় প্রতীক্ষা ।। চন্দন দাশগুপ্ত আশ্রয় ।। সায়নী সাহা বয়স্ক শিক্ষাকেন্দ্র ।। দেবাংশু সরকার প্রণামের প্রভু ।। সুপ্রভাত মেট্যা দুর্ভাগ্যের সম্মুখ সমরে ।। সমীর কুমার দত্ত আচমকা শরৎ ।। অর্ণব সামন্ত প্রতিধ্বনি ✍️ সুবীর কুমার ঘোষ জীবন যেখানে যেমন ।। আরজু মুন জারিন বছর সীমান্তে হিসেব নিকেশ ।। রানা জামান চারটি কবিতা ।। বিবেকানন্দ নস্কর আমরা আছি ।। লালন চাঁদ চাওয়া ।। মাথুর দাস কাগজ ফুলে ।। সফিউল মল্লিক সময়ের স্রোত ।। দুর্গাদাস মিদ্যা তুমি মানুষ ।। বদরুল বোরহান দিঘার সমুদ্র ।। মাখনলাল প্রধান পুস্তক-আলোচনা ।। অরবিন্দ পুরকাইত সংযম ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত  চেনা প্রতিবেশী (প্রথম পর্ব) ।। দীপক পাল খেলার মাঠ ।। তূয়া নূর বন্ধু শ্যামলকান্তি ।। শংকর ব্রহ্ম তুমি তোমার মতো থাকলে ।। সত্যেন্দ্রনাথ বেরা গ্রীষ্মে খুবই হিংস্র রবি ।। জগবন্ধু হালদার স্বপ্ন দর্শন ✍️ পার্থ প্রতিম দাস মৌন মুখরতা ।। মুসা মন্ডল রুদ্র বৈশাখ ।। দীনেশ সরকার চিহ্নিত পদযুগ পদাঘাত ।। দেবাশীষ...

প্রচ্ছদ।। ৮৩তম সংখ্যা ।। মাঘ ১৪৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ।। প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র

  বিঃ দ্রঃ আগামী ফেব্রুয়ারি সংখ্যার জন্য ভাষা দিবসের কথা মাথায় রেখে লেখা পাঠান। email: nabapravatblog@gmail.com  সূচিপত্র ফিচার।। গোপাল ভাঁড়ের অজানা সত্য ।। লোকনাথ পাল প্রবন্ধ ।। মসুয়ার রায় পরিবার এবং বঙ্গসংস্কৃতি ।... প্রবন্ধ ।। সুধীন্দ্রনাথ দত্ত: কাব্যের দার্শনিক ও ন... কবিতায় সেতুবন্ধন (তৃতীয় অংশ) শিল্পবিপ্লবোত্তর কাল... রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর বিদ্রোহী প্রেমের কবিতা: ... কবিতা ।। এই মন ভালো নেই দিনে ।। সুপ্রভাত মেট্যা কবিতা ।। জোছনা আলোর স্বপ্ন ।। তুষার ভট্টাচাৰ্য কবিতা ।। নিঃস্ব হবো ।। লালন চাঁদ কবিতা ।। ভালোলাগা  ।। আজিজ উন নেসা  গল্প ।। স্বীকারোক্তি ।। চন্দন দাশগুপ্ত কবিতা ।। শীতের দিন ।। প্রশান্ত কুমার মন্ডল কবিতা ।। শীতকাল ।। অঙ্কিতা পাল নাসির ওয়াদেনের দুটি কবিতা ভূতের লেখা ছড়া ।। বদরুল বোরহান কবিতা ।। ব্যস্ত ।। আলাপন রায় চৌধুরী ছোটগল্প ।। লম্বুর স্বপ্নপূরণ ।। পরেশ চন্দ্র মাহাত কবিতা ।। সৎকার ।। সুমিত মোদক কবিতা।। শীত বৈচিত্র্য ।। সুমিতা চৌধুরী পুস্তক-আলোচনা ।। নিউটনের আপেল ও প্রেমিকা ।। অরবিন্... গল্প।। শান্তির পথে …...।। বন্দনা সেনগুপ্ত কবিতা ।। মা...

সূচিপত্র ।। ৮৯তম সংখ্যা ।। শ্রাবণ ১৪৩২ জুলাই ২০২৫

সূচিপত্র   প্রবন্ধ ।। বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় ।। মাখনলাল প্রধান প্রবন্ধ ।। শ্রমিকের অধিকার ।। চন্দন দাশগুপ্ত প্রবন্ধ ।। ভিনগ্রহীদের সন্ধানে ।। শ্যামল হুদাতী প্রবন্ধ ।। নারীমর্যাদা ও অধিকার ।। হিমাদ্রি শেখর দাস কবিতা ।। মশালের রং তুলি ।। তূণীর আচার্য কবিতা ।। জললিপি ।। রূপক চট্টোপাধ্যায় গুচ্ছকবিতা || শিশির আজম নিবন্ধ ।। পূনর্জন্ম ।। শংকর ব্রহ্ম মুক্তভাবনা ।। কোলাহল তো বারণ হলো ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত গল্প ।। গানের হাড় ।। শুভজিৎ দত্তগুপ্ত গল্প ।। শিকড়ের খোঁজে ।। সমীর কুমার দত্ত সুপ্রভাত মেট্যার পাঁচটি কবিতা গ্রন্থ-আলোচনা ।। আবদুস সালামের কাব্যগ্রন্থ 'অলীক রঙের বিশ্বাস'।। তৈমুর খান অণুগল্প ।। হরিবোল বুড়ো ।। সুমিত মোদক রম্যরচনা ।। গোয়েন্দা গোলাপচন্দ আর প্রেমের ভুল ঠিকানা ।। রাজদীপ মজুমদার দুটি গল্প ।। মুহাম্মদ ফজলুল হক দুটি কবিতা ।। তীর্থঙ্কর সুমিত কবিতা ।। মেঘমুক্তি ।। বন্দনা পাত্র কবিতা ।। ব্যবচ্ছিন্ন শরীর ।। কৌশিক চক্রবর্ত্তী কবিতা ।। শমনচিহ্ন ।। দীপঙ্কর সরকার কবিতা ।। ভালোবাসার দাগ ।। জয়শ্রী ব্যানার্জী কবিতা ।। ফণীমনসা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ছড়া ।। আজও যদি ।। বদ্রীন...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো,  তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) য...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮২তম সংখ্যা ।। পৌষ ১৪৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

  সূচিপত্র অন্নদাশঙ্কর রায়ের সাহিত্য: সমাজের আয়না ।। বিচিত্র কুমার প্রবন্ধ ।। বই হাতিয়ার ।। শ্যামল হুদাতী কবিতায় সংস্কৃতায়ন (দ্বিতীয় ভাগ ) ।। রণেশ রায় পুস্তক-আলোচনা ।। অরবিন্দ পুরকাইত কবিতা ।। লেগে থাকা রোদ্দুরের ঘ্রাণের মতো ।। জয়শ্রী ব্যানার্জি কবিতা ।। ভুল ।। সুপ্রভাত মেট্যা কবিতা ।। উন্মেষ ।। বিশ্বজিৎ সেনগুপ্ত কবিতা ।। গার্হস্থ্য ।। বিবেকানন্দ নস্কর একগুচ্ছ বিজয়ের কবিতা ।। বিচিত্র কুমার গল্প ।। পোষ্য ভূত ।। সমীর কুমার দত্ত কবিতা ।। আশপাশ ।। প্রতীক মিত্র কবিতা ।। মেঘ ।। তীর্থঙ্কর সুমিত অণুগল্প ।। বংশীবদনের সুখদুঃখ ।। দীনেশ সরকার কবিতা ।। গভীর রাত ।। সুনন্দ মন্ডল তিনটি কবিতা ।। সুশান্ত সেন ভালোবাসার বাসা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত অণুগল্প ।। শিক্ষকের সম্মান ।। মিঠুন মুখার্জী কবিতা।। প্রশ্ন ।। জীবন সরখেল কবিতা ।।ক্ষরিত সে পথ ।। রহিত ঘোষাল কবিতা ।। রক্ত দিয়ে কেনা ।। মুহাম্মদ মুকুল মিয়া কবিতা ।। কংক্রিট ।। আলাপন রায় চৌধুরী ছড়া ।। শীত নেমেছে ।। রঞ্জন কুমার মণ্ডল কবিতা ।। কিছু শব্দ ।। সমীর কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় কবিতা ।। শীতের নগ্নতা ।। রানা জামান কবিতা ।। পথ চলা ।। পাভেল আমান বেদ পু...

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ৮৬তম সংখ্যা ।। বৈশাখ ১৪৩২ এপ্রিল ২০২৫

সম্পাদকীয় এই সংখ্যাটি বাংলা নববর্ষ বিষয়ক সংখ্যা। নৱৰ্ষকেন্দ্রিক বহু তথ্যপূর্ণ লেখা এই সংখ্যাটিকে সমৃদ্ধ করেছে। বাংলা নববর্ষ উদযাপনের ইতিহাস, রীতিনীতি, উৎসব, পার্বন, লোকাচার, রূপান্তর বহুবিধ বিষয় প্রকাশিত হয়েছে এই সংখ্যার লেখাগুলিতে। এই সংখ্যার বাছাই কিছু লেখার সঙ্গে আগামীতে আরও কিছু লেখা সংযুক্ত করে বাংলা নববর্ষ বিষয়ক একটি মুদ্রিত সংখ্যা প্রকাশ করার ইচ্ছে রইল।  সকলকে নববর্ষের আন্তরিক শুভকামনা জানাই। উৎসবে আনন্দে থাকুন, হানাহানিতে নয়। ধর্ম-ব্যবসায়ীদের চক্রান্ত ব্যর্থ করে সহনাগরিকের পাশে থাকুন। মনে রাখুন, ধর্মকে মানুষই সৃষ্টি করেছে। ঈশ্বর আল্লা গড ইত্যাদির জন্মদাতা মানুষই। মানুষকে ভালোবাসুন। মানুষের পাশে থাকুন।  নিরাশাহরণ নস্কর  সম্পাদক, নবপ্রভাত।  সূচিপত্র প্রবন্ধ-নিবন্ধ-স্মৃতিকথা পয়লা বৈশাখ ।। সিদ্ধার্থ সিংহ নববর্ষকেন্দ্রিক মেলা, পার্বন, উত্সব, লোকাচার ।। সবিতা রায় বিশ্বাস নববর্ষ আবাহন ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে এবং বিভিন্ন দেশে ।। তুষার ভট্টাচার্য নববর্ষের সেকাল ও একাল ।। হিমাদ্রি শেখর দাস নববর্ষের হাল-হকিকৎ ।। শংকর ব্রহ্ম বোশেখি বাঙালি নাকি পোশাকি বাঙালি? ।। দিব্যেন্দু...

প্রবন্ধ ।। বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় ।। মাখনলাল প্রধান

বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় মাখনলাল প্রধান বাংলার শিল্প-সংস্কৃতির জগতে যাত্রা শিল্প তথা নাট‍্যশিল্পে মড়ক নেমে এসেছে । যাত্রা শিল্পের মড়কে শুধু কোভিড নয় তার বহুপূর্ব থেকেই অর্থনৈতিক বিপর্যয় , শিক্ষাক্ষেত্রে বন্ধ‍্যাত্ব এবং গ্ৰাম বাংলার পটপরিবর্তন শেষ পেরেক ঠুকে দিয়েছে। যাত্রা-শিল্পের লীলাভূমি ছিল গ্ৰাম বাংলা। গ্ৰামে প্রচুর যাত্রাপালা হত নানা উৎসবকে কেন্দ্র করে । জমিদারি ব‍্যবস্থা লুপ্ত হওয়ার পর গ্ৰামীণ মানুষের উদ‍্যোগে শীতলা পূজা,  কালীপূজা, দুর্গাপূজা, কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা, চড়ক ইত‍্যাদিকে উপলক্ষ‍্য করে যাত্রাপালার আয়োজন না হলে কেমন যেন ম‍্যাড়ম‍্যাড়ে লাগতো। সেই সঙ্গে কলকাতার বড়বড় কোম্পানির যাত্রাপালা ঘটা করে, টিকিট সেল করে হত মাঠে। খুব বড় মাপের খেলার মাঠ যেখানে ছিল না সেখানে ধানের মাঠ নেওয়া হত ‌। ত্রিশ-চল্লিশ হাজার মানুষ দেখতে আসত। স্পেশাল বাস পাঠাত  আয়োজক কর্তৃপক্ষ। বিনা ভাড়ায় বাসে যাতায়াত করত যাত্রার দর্শকেরা। কিন্তু বিকল্প ধানচাষ শুরু হলে জমিগুলো সময় মতো ফাঁকা পাওয়া গেল না । প্রথম দিকে ব‍্যাপকহারে ধান শুরু না হওয়ায় খুব একটা অসুবিধা হত না। বহুক্ষেত্রে  ধান কা...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। নবপ্রভাত ৮৫ ।। চৈত্র ১৪৩১ মার্চ ২০২৫

  সূচিপত্র নিবন্ধ ।। মরিয়ম মির্জাখানি: এক অনন্য গণিতসূর্য ।। ... নিবন্ধ ।। নারী দিবসে যা ভাবা উচিত ।। বিশ্বনাথ পাল প্রবন্ধ ।। প্রাচীনকাল থেকে নারীরা অবহেলিত, বঞ্চিত,... নিবন্ধ ।। আমার চোখে আদর্শ নারী ।। জয়শ্রী বন্দ্... ফিচার।। এই মুহূর্তে বাংলা সাহিত্যে নারীদের লেখালেখ... আফ্রিকার লোককথা ।। করোটিকে বিয়ে করা অবাধ্য মেয়েটি ... ছোটগল্প ।। মানবী ।। ভুবনেশ্বর মন্ডল নিবন্ধ ।। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে অন্যতম নারী মু... নিবন্ধ ।। প্রিয় মহিলা সাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবী ।। ... গল্প ।। উই ওয়ান্ট জাস্টিস ।। রবীন বসু প্রবন্ধ ।। নিপীড়িতা ।। শ্যামল হুদাতী ফিচার ।। রমণী রতন ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত প্রবন্ধ ।। নারী সমাজ : তখন-এখন ।। তপন মাইতি নিবন্ধ ।। বহমান কালের ধারায় নারী ।। দীপক পাল গল্প ।। আমার দুর্গা ।। অঞ্জনা গোড়িয়া (সাউ) গল্প ।। যোগ্য জবাব ।। সমীর কুমার দত্ত ছোটগল্প ।। আমি দুর্গাকে দেখেছি।। চন্দন দাশগুপ্ত গল্প ।। সম্পর্ক ।। গৌতম সমাজদার কবিতা।। নারী মানে ।। গোবিন্দ মোদক কবিতা।। নারী ।। সমর আচার্য্য ছড়া ।। নারী অসামান্যা ।। সৌমিত্র মজুমদার কবিতা ।। নারী দিবসে ।। বিবেকানন্দ নস্কর কবিতা ।। না...

প্রবন্ধ ।। ভিনগ্রহীদের সন্ধানে ।। শ্যামল হুদাতী

ভিনগ্রহীদের সন্ধানে  শ্যামল হুদাতী  ইতিহাসের শুরু থেকে বারবার মানুষকে একটা প্রশ্ন কুঁড়ে কুঁড়ে খায় – এই মহাবিশ্বে আমরা কি একা? পৃথিবীর মতো আরও গ্রহ রয়েছে, যেখানে মানুষের মতো বুদ্ধিমান প্রাণীরা বাস করে – এই সম্ভাবনা বরাবর মানুষকে মুগ্ধ করেছে। আমাদের প্রত্যেকের জীবনের কখনও না কখনও এই ভাবনা এসেছে। দীর্ঘ কয়েক দশকের গবেষণার পরও, এই বিষয়ে কোনও নিশ্চয়তা দিতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। জেমস ওয়েব মহাকাশ টেলিস্কোপ, বহু দূরের এমন কিছু গ্রহের সন্ধান দিয়েছে, যেগুলিতে প্রাণ থাকতেই পারে। তবে, নিশ্চিত কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে, আমেরিকার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাম্প্রতিক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, ভিনগ্রহীদের খুঁজতে বহু দূরে যাওয়ার কোনও দরকার নেই। তারা এই পৃথিবীতেই মানুষের ছদ্মবেশে মানুষের মধ্যেই বসবাস করতে পারে। আমরা ভিনগ্রহীদের যেমন কল্পনা করি, এরা তার থেকে আলাদা। এরা অনেকটাই, দেবদূতদের মতো। মানব জগতের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক প্রযুক্তিগত নয়, বরং জাদুকরি। মহাকাশে সৌরজগতের গ্রহ পৃথিবী ছাড়া অন্য কোথায় প্রাণ রয়েছে কি না তা নিয়ে চলছে বিস্তর গবেষণা। একই সঙ্গে পৃথিবী ছাড়া অন্য কোনো গ্রহে মানুষ বসবাস ক...

মাসের বাছাই

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬

  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠালে  অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে হলে ভালো। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # ...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯২তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩২ অক্টোবর ২০২৫

—: সম্পাদকীয় দপ্তর থেকে :— এই সংখ্যার জন্য লেখা এসেছিল প্রায় ১৮০টা। কিন্তু গুণগত মানে দুর্বল লেখার সংখ্যা বহু। আমরা নবপ্রভাতে নতুনদের কথা ভেবে বেশ কিছু দুর্বল লেখাও রাখি। কিন্তু সবসময় একই লোকের দুর্বল লেখা প্রকাশ করা অনুচিত বলে মনে করি। শেষ পর্যন্ত ৯৯ জনের লেখা রাখা গেল। যাদের লেখা প্রকাশিত হল না, তারা লেখাগুলি অন্য যেখানে খুশি পাঠাতে পারেন। বিশেষ কারণে এই সংখ্যার মুদ্রিত সংস্করণ প্রকাশিত হচ্ছে না। আমরা দুঃখিত। তবে মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি শীঘ্রই আসছে। সঙ্গে থাকুন। সকলকে উৎসবমুখর বর্ণময় শুভেচ্ছাসহ— —নিরাশাহরণ নস্কর, সম্পাদক, নবপ্রভাত। অনুরোধ : প্রকাশিত লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন, ছবি/স্ক্রীনশট নয়।  == সূচিপত্র == পড়া-লেখার ইতিহাস অনুসন্ধান।। তপন তরফদার উৎসব : মানুষের চিরন্তন আত্মপ্রকাশ।। কৃশানু ব্যানার্জি বাংলা : সভ্যতা ও সংস্কৃতির জন্মভূমি।। শ্যামল হুদাতী সমুদ্র আর অস্তিত্ব ।। সুব্রত চৌধুরী রাজা ছিলেন জুবিন গর্গ ।। গঙ্গা 'অনু'   আদ্যাশক্তি মহামায়ার বাংলা বারো মাসের বারো রূপ ।। অর্হণ জানা মেধাদাদুর আসর ।। রণেশ রায় বৈজ্ঞানিক মা...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯৩তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩২ নভেম্বর ২০২৫

সূচিপত্র বস্তু, চেতনা এবং কবি ।। সজল চক্রবর্তী দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত ।। রণেশ রায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট ও সন্নিহিত অঞ্চলের কথ্য শব্দ ।। অরবিন্দ পুরকাইত চাঁদে জীবন ।। শমীক সমাদ্দার অসমাপ্তি ।। মহুয়া হুই গ্যালাক্সির শব্দে ।। জাসমিনা খাতুন তিনটি কবিতা ।। দিবাকর সেন অপূর্ণতার শেষ অধ্যায় ।। সুপ্রিয় সাহা হাফ ডজন ছড়া ।। স্বপনকুমার পাহাড়ী স্বাপ্নিক অমলের ঘুৃম ।। সঞ্জয় দেওয়ান দুটি কবিতা ।। সৌমিত্র উপাধ্যায় পথ চলতি ✍️পার্থ প্রতিম দাস হেমন্তের বিষাদ ছুঁয়ে ।। শক্তিপদ পাঠক রাই আর বাবা ।। অদিতি চ্যাটার্জি স্থিতিশীল ।। রঞ্জিত মুখোপাধ্যায় হৃদয়ের শূন্য কোড ।। লিপিকা পিঙ্কি দে অমানিশা ।। সৌভিক মুখার্জী দৃষ্টিগত ।। শামীম নওরোজ জ্যান্ত ভূতের গপ্পো ।। পার্থ সারথি চট্টোপাধ্যায় ধুতরা ফুলের ঘ্রাণ ।। মজনু মিয়া তারা খসার আলোয় ।। তীর্থঙ্কর সুমিত উত্তরণে অন্তরায় ।। সমীর কুমার দত্ত প্রেম মুদ্রা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ধারা ।। লালন চাঁদ অন্যের ব্যথায় ব্যথি ।। জগদীশ মণ্ডল গর্ভ ।। শাশ্বত বোস ভ্রমণ বিষয়ক স্মৃতিকথা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত শাপে বর ।। সাইফুল ইসলাম রবিবার ।। সঙ্ঘমিত্রা দাস দুটি ...

দিদৃক্ষা ।। রাজেশ কে. চক্রবর্ত্তী

  দিদৃক্ষা রাজেশ কে. চক্রবর্ত্তী 'কাল একবার দেখা হতে পারে?' দশমীর দুপুরে খাটে আধশোয়া হয়ে নিজের ফোনটা ঘাঁটছিল দেবমাল্য; হোয়াট্‌সঅ্যাপের সার্চ বক্সে  র‍্যান্ডম সিক্যুয়েন্সে ক'খানা ডিজিট ইনপুট করতেই বিস্মৃতির অতল থেকে অপ্রত্যাশিতভাবে যে নামটা স্ক্রিনের সারফেসে ভেসে উঠল, এককালে দেবমাল্যের প্রায়োরিটি লিস্টে সবথেকে ওপরে পিন্‌ করা থাকতো এই অ্যাকাউন্টটা। 'অহনা দাশগুপ্ত'—গ্রেয়েড-আউট ডিপিটার ডানদিকে, নামটার তলায় নিস্প্রভ হরফে ভেসে থাকা ওর এই লাস্ট মেসেজটা বেশ ক'বছরের পুরনো, কিন্তু দেবমাল্যর স্মৃতির প্যান্ডোরা বাক্সটি উলটে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল। আরেকবার আপাদমস্তক শিহরিত হয় সে। প্রোফাইলটা খুলে ওপরে-নীচে স্ক্রল্‌ করে দেখে, ওদের পুরনো চ্যাটগুলো তেমনি আড়ষ্ট হয়ে পড়ে আছে, ওর মেসেজগুলোর পাশে ডাবল টিকগুলো এখনও জাজ্বল্যমান সবুজে ছোপানো, যেন এইমাত্র 'সিন্‌' করে রেখেছে অহনা! যেন এখুনি আবার হাত বোলালেই অহনা এসে খানিকটা রাগত ভঙ্গিতে চ্যাট করতে লেগে যাবে। দেবমাল্যের বুক ছাপিয়ে একটা নীরব দীর্ঘশ্বাস উঠে আসে! ছুটির এই আমেজটা লক্ষ্মীপুজো অব্দি গড়াবে—অফিস খুললেই তো আবার দমফাটা ব্য...

গুচ্ছকবিতা || শিশির আজম

  গুচ্ছকবিতা || শিশির আজম হুইসেল (মুরাকামি থেকে অনুপ্রাণিত) ♦ 'গভীর রাতে একটা হুইসেল কতটা গভীর হতে পারে তুমি কল্পনাও করতে পারো না,' ছেলেটা বললো, 'আশ্চর্য ঐ হুইসেলের মতো আমি ভালবাসি তোমাকে।' কিন্তু গভীর রাতে অন্ধকারে কখনও তো ঘুম ভেঙে যায়নি মেয়েটার, কখনও ও বিচ্ছিন্ন আর একা হয়ে যায়নি। ও কীভাবে অনুভব করবে গভীর রাতে ট্রেনের হুইসেল কতটা গভীর! নিউজ এজেন্সি ♦ একসময় আমরা খবর শুনতাম এখন দেখি স্বীকার করতে হবে খবর শোনার চেয়ে দেখার আনন্দ বেশি আলাদা উত্তেজনা নিউজ এজেন্সিগুলো এব্যাপারে তৎপর আর প্রতিযোগিতাপূর্ণ কোনটা নিউজ সেটা ওরাই ঠিক করে যেটা ওদের দরকার আর সেটাই আমাদের দেখানো হয় ধারাবাহিকভাবে সুচারু জ্যামিতিকতায় বিভিন্ন পদ মিশিয়ে খাওয়ানো হয় নতুন বাস্তবতা নির্মাণে যে বাস্তবতায় জায়গা নেই আমাদের ইতিহাস অন্বেষা স্বাধীনতার সমৃদ্ধি আর স্বাধীনতার কথা বলেই ওরা আমার ক্ষেতখামার পাহাড় আর নদীর দখল নিয়েছে তাহলে টিভিতে যে হাসিখুশি প্রাণবন্ত আমাদেরকে দেখানো হয় ওরা কারা এই প্রশ্ন করো নিজের কাছে আগুন নিয়ে খেলা ♦ আজও পুকুরে ছিপ ফেলে বসবো আমি ধীরে চুপ সূর্য আমার ঘাড়ে শ্বাস ফেলবে সারারাত ঘরের ভেতর ল্যাং...

বিদায়ের স্রোত ।। চয়ন মন্ডল

  বিদায়ের স্রোত চয়ন মন্ডল "বিজয়া দশমী—আনন্দের দিন, কারও কাছে যা হয়ে উঠল চিরন্তন বিদায়।" আজ বিজয়া দশমী। শিউলি ফুলের গন্ধে ভোরটা অন্যরকম। পাড়ার প্যান্ডেলে অদ্ভুত এক কোলাহল—মায়ের বিদায় যে আজ। শঙ্খধ্বনি, ঢাকের বাজনা আর উলুধ্বনিতে গমগম করছে চারদিক। একদিকে মা দুর্গার বিদায়ের বেদনা, অন্যদিকে আনন্দ ও মিলনমেলা। সারা বছরের অপেক্ষা শেষে এই দিনটিতে প্যান্ডেল ভরে উঠেছে মানুষের ভিড়ে। সকালের পূজার্চনা শেষ হতেই শুরু হয়েছে সিঁদুর খেলা। মহিলারা মায়ের প্রতিমাকে সিঁদুর পরিয়ে একে অপরের কপালে, গালে রাঙিয়ে দিচ্ছেন। ঢাকের তালে আর শাঁখ বাজনার আবেশে ভেসে যাচ্ছে পাড়া। শুরু হয়েছে প্রতিমা বিসর্জনের প্রস্তুতি। কিন্তু এসবের মধ্যে নেই অনুরাধা। কেউ তার বা মিনির খোঁজ রাখেনি। মুখার্জিদের দোতলা বাড়ির কোণের ঘরে বসে সে চোখের জল ফেলছে। সবার বাড়িতে আলোর রোশনাই, ভোগের গন্ধ, হাসি—শুধু তাদের ঘরটিতে নিস্তব্ধতা। গতবছর এই দিনেই তো অন্যরকম ছিল সবকিছু। অনুরাধা, সুজয় আর তাদের তিন বছরের মেয়ে মিনি পাড়ার প্যান্ডেলে ঢাকের তালে নেচেছিল, সিঁদুর খেলায় রঙে ভেসেছিল। বিকেলের দিকে প্রতিমা বিসর্জনের মিছিলে শামিল ...

কবিতা ।। অরণ্যকন্যা ।। অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়

  অরণ্যকন্যা অরিন্দম চট্টোপাধ্যায় অরণ্যকন্যার দৃষ্টির ভেতর বিষাদ বিন্দু ফোঁটা ফোঁটা জলের মতো গড়িয়ে যায়, হয়ে যায় কোন নদীপথ দৃষ্টি ভেঙে ভেঙে চলে যায় কোন এক শূন্য পথে অরণ্যকন্যার হৃদয়ের ভেতর ভাঙে যতো বৃক্ষপত্র নতুন পত্র পুষ্পের খোঁজ নেই ঠোঁট জুড়ে সমুদ্রকাঁপন বুদবুদের মতো অস্ফুট হয়ে উচ্চারিত হয় কোন অক্ষর শব্দ আর তাঁর শরীর থেকে ছড়িয়ে যায় হয়ে যায় একটা অদৃশ্য কবিতা...    ================== @ অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়,  বেহালা, কলকাতা -৭০০০৬০,  

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯১তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পাদকীয় দপ্তর থেকে এই সংখ্যায়  'শিক্ষা ও শিক্ষক' বিষয়ক বেশ কিছু লেখার পাশাপাশি রয়েছে বিচিত্র বিষয়ের আরও কিছু লেখা। সব মিলিয়ে সংখ্যাটি আপনাদের সমৃদ্ধ করবে, আপ্লুত করবে — এ বিষয়ে আমরা আশাবাদী। আপনাদের মতামত অবশ্যই জানাবেন। আমরা প্রতীক্ষিত।            আগামী অক্টোবর ২০২৫ সংখ্যা 'উৎসব সংখ্যা' হিসাবে প্রকাশিত হবে। ওয়েব সংখ্যার পাশাপাশি নির্বাচিত লেখাগুলি নিয়ে একটি pdf এবং তার মুদ্রিত সংস্করণও প্রকাশিত হবে। তাই অপ্রকাশিত ভালো লেখা পাঠান। বিশেষ কোনও বিষয় নেই। প্রবন্ধ-নিবন্ধ-ফিচার ২০০০ শব্দ, গল্প ১২০০ শব্দ, অণুগল্প ৫০০ শব্দ, কবিতা-ছড়া ২৪ লাইনের মধ্যে হলে ভালো। ইমেলঃ nabapravatblog@gmail.com           বিস্তারিত বিজ্ঞপ্তি আসবে। সামাজিক মাধ্যমে আমদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন। সময় মতো সব সংবাদ পেয়ে যাবেন।  শারদ উৎসবের দিনগুলি সকলের আনন্দে কাটুক এই কামনা করি। —নিরাশাহরণ নস্কর সম্পাদক: নবপ্রভাত মোঃ ৯৪৩৩৩৯৩৫৫৬ Whatsapp Group:  https://chat.whatsapp.com/ AIpj98JKbloFSpeqMcpr6j Facebook Page:  https://www.facebook.com/ share...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো,  তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) য...

শেষ বিকেলের আলো ।। সৈকত প্রসাদ রায়

  শেষ বিকেলের আলো সৈকত প্রসাদ রায় রানাঘাট শহরের প্রান্তে ছোট্ট এক পাড়া বিশ্বাসপাড়া। সেই পাড়ার পুরোনো ভাঙাচোরা বাড়িটায় থাকেন পুষ্পরাণী ভট্টাচার্য— বয়স পঁয়ষট্টির কোঠায়। সবাই তাকে "পুষ্পদি" বলেই চেনে। একসময় প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতা করতেন, এখন অবসর নিয়েছেন। প্রতিদিন বিকেলে পুষ্পদি বারান্দায় বসে চা খান। ছোট একটা টেবিল, কয়েকটা পুরোনো বই, আর একখানা নীল কাঁচের ফুলদানি — তার নিত্যসঙ্গী। বারান্দার সামনেই একটা গলি, যেখান দিয়ে প্রতিদিনই স্কুল ছুটির পরে বাচ্চারা হইচই করে ছুটে যায়। পুষ্পদির একমাত্র ছেলে অনিরুদ্ধ — কলকাতায় চাকরি করে। ছেলেটা আধুনিক, নিজের সংসার আছে, স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ব্যস্ত। বছরে হয়তো একবার আসে, তাও কিছুক্ষণ বসে আবার চলে যায়। পুষ্পদি মুখে কিছু বলেন না, কিন্তু বুকের ভেতরে একটা কষ্ট জমে থাকে। সেই বিকেলটা অন্যরকম ছিল। আকাশে ধুলো, গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা। হঠাৎ পুষ্পদির চোখে পড়ে — রাস্তায় এক কিশোর বসে আছে। বয়স বারো-তেরোর বেশি নয়। মলিন জামা, পায়ে ছেঁড়া চটি। ছেলেটা একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে পুষ্পদির বাড়ির গেটে ঝুলে থাকা পুরোনো নোটিশবোর্ডটার দিকে, যেখানে একসময় লেখা ছিল — "পুষ্পরাণী ভ...