অস্তিত্ব মানস কুমার সেনগুপ্ত ' আপনাকে এই জানা আমার ফুরাবে না, সেই জানারই সঙ্গে সঙ্গে তোমায় চেনা।' কবিগুরুর এই গানের বাণীকে আশ্রয় করে আত্ম উপলব্ধির এক নিরন্তর অনুসন্ধানে চেয়েছি নিজের অস্তিত্বকে খুঁজতে। আমি কে? এই প্রশ্নের কোনো উত্তর আছে কি? অথচ আমি, আমার এই বৃত্তের মাঝে আমরা নিরন্তর ঘুরে চলেছি বিষয়-আশয় সর্বস্ব জীবনে। সাধক রামপ্রসাদ সেন যখন তার এক গানের বাণীতে বলেন 'ভেবে দেখ মন কেউ কারও নয় ', তখন আত্ম-উপলব্ধির এক অপার্থিব জগতে পৌঁছতে চায় মন। কারণ, নিমীলিত নয়নে জীবনের শেষ যাত্রায় আত্মীয়-স্বজন, বিষয় - আশয় সব কিছু ছেড়ে আমরা পঞ্চভূতে বিলীন হয়ে যাই। যা কিছু বা যাদের ছেড়ে চলে যাই সবই মায়ার বাঁধনে বাঁধা পড়ে ছিল এতদিন। আসলে আমিত্ব থেকে উত্তরণের সাধনা যদি কেউ করতে পারেন, তবে অনেক পার্থিব চাওয়া পাওয়ার জগত থেকে নিজেকে মুক্ত করতে পারবেন। আমাদের মতো সাধারণ মানুষের পক্ষে সে বড় কঠিন কাজ। তবে আত্ম-উপলব্ধির সেই জগতে পৌঁছতে চাই কবিগুরুর এক গানের বানীকে আশ্রয় করে। 'কাঁদাও যদি কাঁদাও এবার, সুখের গ্লানি সয়না যে আর।' সুখের আবার গ্লানি হতে পারে, সে কথা ...
জাতিস্মর আশীষ কুমার বিশ্বাস গল্পের শুরুটা প্রায় ষাট বছর আগের কথা । যার নাম গৌতম, ডাক নাম ছিল বাবু । তার বছর তখন ছয়-সাত হবে । আমরা বা আমি তখন একটু বড় । এক সাথেই চলতো খেলা । গোল্লা ছুট, দাঁড়িয়া বান্দা, চোর-পুলিশ । যে মাঝে মাঝে খেলা থেকে বিরত থাকতো ; সে-ই জাতিস্মর । মাঠের পাশেই ছিল একটা খেঁজুর গাছ । তাতে হাত রেখে দূরের এক গ্রামের দিকে এক মনে তাঁকিয়ে থাকতো "বাবু" । গ্রামটির নাম "বিনয় পল্লী " । মাঝে বড়ো মাঠ । হাঁটা শুরু করলে তিরিশ - চল্লিশ মিনিট লাগবে । মাঝে জলে ভরপুর দেখে কখনো যাওয়া হয়নি । বাবু কে যখন বলতাম, ওপারে কি দেখছিস? ও বলতো, ওখানে আমার ছোট মা থাকে, দিদি থাকে, আমার ভুলু কুকুর থাকে । এ কথা আমাদের বিশ্বাস হতো না । আবার খেলায় ফিরে যেতাম, খেলতাম । কিন্তু ও বসে বসে , ওপারের গাছ পালা , বাড়ি ঘর দেখতো । কাছে গেলে বলতো , ওই যে সবুজ ,কচি কলাপাতা রঙের দালান বাড়ি, ওটাই আমাদের বাড়ি ! এই ভাবে মাস ছয়, বছর গড়াতে লাগলো । মনে প্রশ্ন জাগতে লাগলো, এ টা কি মন গড়া , বা বানিয়ে বানিয়ে বলছে? সত্যি প্রকাশ হোল এক দিন । সে বাড়িতে কিছু ...