Skip to main content

ভ্রমণ ।। হরিদ্বার বদ্রিনাথের পথে ।। গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

।। ভ্রমণকাহিনি।।


কংক্রিটের ঘেরাটোপে যন্ত্রচালিতের মত নির্বিকার দিনগত পাপক্ষয়। ব্যস্ততার দুরন্ত গতিতে একই কক্ষপথে নিরন্তর আবর্তমান গতানুগতিক প্রাত্যহিকতা। ছকেবাঁধা জীবনসংগ্রামের বৈচিত্র্যহীনতায় বিবর্ণ ভাবনায় গভীর অবসাদের দীর্ঘ ছায়াপাত। চেতনায় বেঁচে থাকার ঝিমমারা অনুভব। একঝলক টাটকা বাতাসের জন্য ক্লিষ্ট প্রাণের হাঁকুপাঁকু ব্যাকুলতা। তবু গড়িয়ে চলে জীবন।

    মনের রুদ্ধদুয়ারে ঠকঠক কড়াঘাত। কে গো তুমি? আমি গো আমি। ভিতরের বাউল-মানুষটা সাড়া দেয়। চলো গো ঘুরে আসি। কোথায়? আরে ওই যে যেখানে ---- যেখানে অচেনা আকাশ। অজানা পথ। অদেখা মানুষ। অননুভূত চারপাশ। যেখানে নিসর্গের কাব্যময়তায় প্রাণে জাগে আপনভােলা আবেগ। অনুভবে চুম্বন এঁকে যায় --- বেঁচে থাকার কতই না সুখ! ওই বাউল মানুষটাকে তখন বড় আপন মনে হয়। হাত বাড়িয়ে তার হাত ধরি। বলি, চলো গো তোমার সাথে ঘুরে আসি আবারো দূরে কোথাও, অনেক দূরে। আজো ওই বাউল-মানুষটাই ভরসা। ওর হাত ধরেই চার-দেওয়ালের বাইরে বেরিয়ে এই জগৎটাকে এখানেওখানে ছুঁয়েছুঁয়ে দেখি। এমনি ছুঁয়েদেখার যে অভিজ্ঞতার কথা এখন বলবো ---- তা' অনেকটাই পুরনো কিন্তু আমার কাছে এতটুকুও ম্লান হয় নি তার অনুভবের জৌলুস।

    যাত্রা শুরুর আগের মুহূর্তেই আনন্দে আঁচড় কাটে বিষাদের কাঁটা! পা বাড়িয়েছি মহানবমীর রাতে। যে উৎসব হৃদয়ের আপনজন, তার বিদায়ক্ষণে প্রাণ তো কাঁদবেই। রাত পোহালেই ঢাকের কাঠিতে বাজবে বিসর্জনের বাজনা। যে বাজনা শুনলে মনে হয় --- একটা বছর! সে তো অনেক সময়!

    ঘড়ির কাঁটার নির্দেশ মেনেই ট্রেন ছুটলো। ছুটে চললো সারা রাত। পরেরদিন সারা দিনমানও কেটে গেল চলন্ত ট্রেনের কামরায়। জানালার ধারে ঠায় বসেবসে দেখি, জানালার ওপারের যা কিছু --- আমাকে দেখা দিয়েই অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে মুহূর্তেই! দৃষ্টিতে আলসেমি লাগে, তবুও দেখায় বিরাম নেই। চোখ ছুঁয়েছুঁয়ে গেল কতই না মাঠঘাট-নদীনালা-সবুজক্ষেত-টিলা-খোয়াই ….। চাকার ঘূর্ণনে একটানা বেজে চললো দশমীর বিষন্নতার আবহ। কত স্টেশন এলো। গেলো। কত মানুষ উঠলো। নামলো। সারাদিন ঝলসে-ঝলসে ক্লান্ত সূর্যটা ক্রমেই ঝিমিয়ে ফিকে হয়ে আসতে লাগলো। তারপর একটুএকটু করে নিভে গেলো দিনটা। সন্ধ্যে নামলো। সন্ধ্যে গড়িয়ে রাত। সে রাত আরো গভীর হলো। জানালার বাইরে এখন ধূ ধূ অন্ধকার। আচমকাই আঁধারচোখে আলোকিত স্বাদবদল --- ঝড়ের গতিতে ছুটে এসে মুহূর্তের ঝাপটা মেরেই পিছন পানে হারিয়ে গেল কোন একটা অখ্যাত স্টেশন। চেয়ে থাকতেথাকতেই দুচোখের পাতায় যেন আসন পেতে জমিয়ে বসতে চাইলো ঘুম। যতই জমিয়ে বসতে চাক না কেন, ট্রেনের কামরায় কোনোকালেই আমার তেমন জমকালো ঘুম হয় না। তবুও প্রতিবার যা করি --- দেখাই যাক না একবার চেষ্টা করে।

    সকাল হলো। ঝকঝকে সকাল। ট্রেন থামলো। হলুদবোর্ডে কালো রঙে গোটা গোটা হরফে লেখা --- হরিদোয়ার। ট্রেন উজার করে লোক নামলো। সেই সাথে আমরাও।

    স্টেশনে পা রাখতেই চোখের তারায় সবুজ ছায়া ফেলে দৃষ্টি কেড়ে নিল 'শিবালিক'। পাথরের বুকে তার অফুরান ভালোবাসা। সেই ভালোবাসা উজার করে অভ্যর্থনা জানালো আমাদের। কুয়াশাভরা নরম রোদ ধুয়েদিল দেহমনের বেবাক অবসাদ। একরাশ মিষ্টি বাতাস কোথা থেকে ছুটে এসে জনিয়ে গেল বিজয়ার প্রাণভরা শুভেচ্ছা। অনুভবে কান পেতে শুনি --- বেজে চলেছে কী এক ভালোলাগার অদ্ভুত রিনিঝিনি সুর!

    নতুন জায়গায় প্রথম ভাবনা আশ্রয়। তবে আমরা দিনদুই নিশ্চিন্ত। ব্যাঙ্কের একটি হলিডেহোম আগাম পাকা করেই এসেছি। হলিডেহোমের হদিস পেতেও বিশেষ নাকাল হতে হলো না। জায়গাটার নাম সবজিমন্ডি। জমজমাট এলাকা। দোকান-পসার। গাড়িঘোড়া। লোকজন। তবে কলকাতার মতই পরিচ্ছন্নতা বোধের অভাবটুকু এখানেও বড্ড বেশি চোখে লাগে।

    চা-জলখাবার খেয়ে, খানিক বিশ্রাম নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। উদ্দেশ্য তেমন কোথাও নয় --- নিছকই নতুনজায়গা দেখার তরে পায়েপায়ে পথচলা। পথের দুপাশে রকমারি দোকানের মেলা। হোটেল, লজ, ধরমশালা। চলমান মানুষের সারি। সাদামাটা চোখের দেখায় যেন অতি সাধারণ একটি শহর! কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না সুপ্রাচীন ঐতিহ্যের এতটুকু চিহ্নও। অথচ মহাকালের রথ যুগ থেকে যুগান্তরের যাত্রাপথে বারবার ছুঁয়ে গেছে এস্থান। হয়তো বা স্থান-মাহাত্ম্যের টানেই। এস্থান তাই অমর হয়ে আছে পুরাণ-আখ্যানের পাতায়পাতায়। মহাকাব্যের কাহিনীতে। ঐতিহাসিক বিবরণীতে। যুগভেদে ভিন্নভিন্ন নামে ডেকেছে মানুষ এইস্থানকে। কপিল, গঙ্গাদ্বার, মায়াপুরী, বক্ষপুরী, হরদ্বার হয়ে হালে হরিদ্বার। বৃহদ্ধর্ম, শিব, স্কন্দ, পদ্মপুরাণ --- এস্থানের আধ্যাত্মিক মহিমাবর্ণনে উচ্ছ্বসিত। বৃহদ্ধর্ম পুরাণ অনুসারে মায়া অর্থাৎ হরিদ্বার সপ্তমোক্ষদায়িকার অন্যতম। "অযোধ্যা, মথুরা মায়া কাশী কাঞ্চী অবন্তিকা/পুরী দ্বারাবতী দৈব সপ্তৈতে মোক্ষদায়িকাঃ।।"

    মহাভারতে রাজা ধৃতরাষ্ট্র বিষয়বাসনা ত্যাগ করে নির্লিপ্ত বার্ধক্যে এখানেই এসেছিলেন বানপ্রস্থে। সঙ্গে ছিলেন মহামতি বিদুর, স্ত্রী গান্ধারী এবং কুন্তী। তীর্থভ্রমণকালে এইস্থানটি দর্শন করেছিলেন জ্যেষ্ঠপাণ্ডব যুধিষ্ঠিরও। চীনা পরিব্রাজক হিউয়েন সাঙ এই স্থানটিকে উল্লেখ করেছিলেন মায়া-য়া-লো নামে। তাঁর ভ্রমনবৃত্তান্তে স্থানটির আধ্যাত্মিক আবেদনের চিরন্তন স্বরূপটি ফুটে উঠেছে গভীর ব্যঞ্জনায়। মধ্যযুগে আবুল ফজল রচিত আইন-ই-আকবরীতেও হরিদ্বারের নামোল্লেখ পাওয়া যায়।

    পৌঁছে গেলাম বহুশ্রুত সেই হর-কি-পউরিতে। সামনে তরতর করে বয়ে চলেছে স্বচ্ছসলিলা পুণ্যতোয়া জাহ্নবী। দুইতীরে অবগাহনরত অসংখ্য মানুষ। ধনী-গরীব পাশাপাশি। বামুন-চাড়াল ছোঁয়াছুঁয়ি। ভেদাভেদের বালাই ঘুচে গেছে জাহ্নবীর খরস্রোতে। গঙ্গা-মাইজির কোলে সবার যেন একটাই পরিচয় --- মানুষ। সবাই অমৃতের পুত্রকন্যা।

 


 

    হর-কি-পউরির প্রাণকেন্দ্র ব্রম্মকুণ্ড। ভগীরথবংশীয় রাজা শ্বেত এখানেই তপস্যার দ্বারা ব্রহ্মাকে প্রসন্ন করেন এবং তার দর্শনলাভে সমর্থ হন। সেই থেকেই এইস্থান ব্রম্মকুণ্ড। স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে মনে, কে নির্মাণ করলো এই পউরি (যার অর্থ সিঁড়ি)? এই কুণ্ড? কিংবদন্তী বলে --- রাজা বিক্রমাদিত্যের ভাই ভত্তৃহরি এখানে কঠিন তপশ্চারণে অমরত্ব লাভ করেন। ভায়ের অমরত্ব লাভের স্মারক হিসেবেই রাজা বিক্রমাদিত্যের অমরকীর্তি এই পউরি। এই কুণ্ড। জনমানসে চিরায়ত বিশ্বাস --- ব্রম্মকুন্ডের জল অমৃতময়। অবগাহনে ধুয়ে যায় জন্মজন্মান্তরের সব পাপ। কর্মফল। সেই বিশ্বাসেই যুগযুগান্ত ধরে, দূরদূরান্ত থেকে দলেদলে এসেছে মানুষ। অমৃতসলিলে অবগাহন করে পাপশুদ্ধির ভরসা নিয়ে ফিরে গেছে নিশ্চিন্তে।

    প্রয়াগের মতই পূর্ণকুম্ভের গৌরবে মহিমান্বিত হরিদ্বার। প্রতি বারোবছর অন্তর অনুষ্ঠিত হয় এই পূর্ণকুম্ভ। পৌরাণিক কাহিনীর সূত্র ধরেই পূর্ণকুম্ভের আয়োজন। চিরবৈরিতা সত্ত্বেও একদা সমুদ্রমন্থনে সামিল হয়েছিল দেবতা এবং অসুররা। কথাছিল যা পাওয়া যাবে দুপক্ষের ভাগ হবে আধাআধি। কিন্তু দেববৈদ্য ধন্বন্তরি অমৃতকুম্ভ হাতে উঠে আসার পর দেবতারা অমৃতের ষোলোআনাই নিজেদের করায়ত্ত করতে চাইলো। ইন্দ্রপুত্র জয়ন্ত পিতার নির্দেশে ধন্বন্তরির কাছ থেকে অমৃতকুম্ভ চেয়ে নিয়ে ছুটতে শুরু করলো। কিন্তু ব্যাপারটা অসুরদের দৃষ্টিগোচর হওয়ামাত্রই তারা ধরে ফেললো দেবতাদের মতলব। তারাও সদলবলে জয়ন্তর পিছু নিল। একটানা তিনদিন ছুটতে ছুটতে বেদম হয়ে পড়লো জয়ন্ত। অমৃতকুম্ভ পাশে নামিয়ে রেখে একজায়গায় বিশ্রাম নিতে বসলো। কিন্তু অসুরদের ধেয়ে আসতে দেখে অনতিবিলম্বেই অমৃতকুম্ভ তুলে নিয়ে আবার ছুটতে শুরু করলো। এইভাবে ছুটতেছুটতে তিনদিন অন্ততঅন্তর চার জায়গায় বিশ্রাম নিতে বসেছিল জয়ন্ত। এই চারটি জায়গা --- হরিদ্বার, প্রয়াগ, নাসিক, উজ্জ্বয়িনী। প্রতি তিনবছর অন্তর এই চারটি জায়গায় তাই হয়ে থাকে কুম্ভমেলা। প্রয়াগ এবং হরিদ্বারে অমৃতকুম্ভ থেকে কয়েকফোঁটা অমৃত পতিত হওয়ায় এই দুটিস্থানে বারোবছর অন্তর হয় পূর্ণকুম্ভ।

    গঙ্গার উপরে বেশ কয়েকটি সুরম্য সেতু। যেন দুপারের মাঝে সৌহার্দ্যের বন্ধন। এই সেতুগুলোর উপর নিশ্চুপ দাড়িয়ে থেকে সুরোধুনীর পীতাভ-নীল স্বচ্ছ জলধারায় অপলক চেয়ে থাকা এক অনবদ্য অনুভবের অভিজ্ঞতা। প্রবাহিনীর চলার ছন্দে দোলা লাগে প্রাণে। বিভোরতায় পেয়ে বসে। পাশ কাটিয়ে তখন নিঃসাড়ে চলে যায় সময়।

    হর-কি-পউরি ছাড়াও আরো অনেকগুলো ঘাট প্রায় কাছাকাছি। কুশাবর্ত্ত ঘাট, গৌঘাট, বিষ্ণুঘাট, রামঘাট, সুভাষঘাট। প্রতিটি ঘাটের সাথেই জড়িয়ে আছে পৌরাণিক মাহাত্ম্য, কিংবদন্তী নয়তো কোনো স্মরণীয় ব্যক্তিত্ব।

    গঙ্গায় স্নান সেরে, সুপ্রসিদ্ধ দাদাবৌদির হোটেলে আহারপর্ব সমাধা করে আমরা চলে গেলাম গঙ্গার অপরপারে। সেখান থেকে অটোয় চেপে সোজা চণ্ডীমন্দির। শহর থেকে ছ'কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই মন্দিরটি একেবারে লিল-পর্বতের শীর্ষদেশে। তিনমাইল চড়াই ভেঙে হাঁটা পথে সেখানে পৌঁছানো গেলেও বিজ্ঞানের অগ্রগতির সুবাদে এপথ এখন অনেক সহজ এবং সুগম। রোপওয়ে ট্রলিতে ভাসতে ভাসতে কয়েক মিনিটের মধ্যেই মন্দিরের নাগাল। শূন্যে ভাসমান চলার পথে মুহূর্তের দেখা ঘন-চিকন সবুজের পাহাড়িয়া-সৌন্দর্য স্মৃতির সম্পদ হয়ে থাকবে বহুদিন। পর্বতের উপর থেকে ভারী সুন্দর লাগে গোটা শহরটাকে। মনে হয় নিখুঁত তুলির টানে ফুটিয়ে তোলা কোনো ল্যান্ডস্কেপ। এইপর্বতের ঢালেই অঞ্জনাদেবীর মন্দির। গৌরীশঙ্কর এবং নীলেশ্বর মহাদেবের মন্দির। মন্দিরগুলো ঘন জঙ্গলাকীর্ণ। সেই জঙ্গলে নাকি চিতাদের অবাধ বিচরণ। তাহোক! ভক্তের প্রাণে ভয় তুচ্ছ। ভক্তিকে ভরসা করে তাই অনায়াসেই দর্শন করে আসা যায় মন্দিরগুলো।

    চণ্ডীমন্দির থেকে আবার হর-কি-পউরি। হাতে অনেকটা সময়। ভাবলাম একটা চক্কর দিয়ে আসলে কেমন হয়! আবার অটোয় সওয়ার হলাম। পশুপতিনাথের স্মৃতি বিজড়িত শ্রবণনাথের মন্দির। নাথ সম্প্রদায়ের গোরক্ষনাথ মন্দির। গীতাভবন। শান্তিকুঞ্জ। মায়াদেবীর মন্দির। দেখতে দেখতে দিনকাবার। হর-কি-পউরিতে যখন ফিরে এলাম তখন সুরনদীর স্রোতধারায় সায়াহ্নের মায়াবী রঙ লেগেছে।

    এখানে আসার অনেক আগে থেকেই শুনে আসছি --- হর-কি-পউরিতে গঙ্গা-আরতির দৃশ্য নাকি অসাধারণ। কানে শোনা সেই অসাধারণ দৃশ্যটি চোখের দেখায় যেন স্বর্গীয় মনে হোল। মন্দিরেমন্দিরে ঘণ্টার ধ্বনি। বন্দনাগীত। ধুপ-ধুনার ম ম গন্ধ। গঙ্গারবুকে অজস্র আরত্রিক প্রদীপশিখার বিম্বিত বর্ণচ্ছটা। সবমিলিয়ে এক অদ্ভুত ভাবগম্ভীর পরিবেশ। মন তখন সমস্ত জাগতিক আবিলতা খসিয়ে ফেলে এক স্নিগ্ধ পবিত্রতার আলোকে উদ্ভাসিত হয়ে উঠতে চায়।

 


 

    হরিদ্বার শহরের আরেক আকর্ষণ মনসা মন্দির। হর-কি-পউরি থেকে শিবালিক শিখরস্থিত এই মন্দিরটি এমনভাবে নজর কাড়ে যেন হাতছানি দিয়ে ডাকছে। সে ডাকে সাড়া না দিয়ে যেন উপায় নেই। মনসা মন্দিরে যাবার দুটি পথ। একটা পাকা সিঁড়ি বেয়ে, অন্যটি পাকদন্ডীর পথ ভেঙে। হাঁটাহাঁটি যাদের নাপছন্দ তাদের ভরসা রোপওয়ে ট্রলি। অবিরাম উঠছে আর মন্দিরের বুড়ি ছুঁয়ে নামছে। তবে হাঁটাপথে মজা বেশি। দুপাশে গহন সবুজের অপরূপ বাহার। নিরিবিলি পথে রোদছায়ার আলপনা। পাখির কলতান। জংলা গন্ধ। চড়াই ভাঙার কষ্টটুকু যেন গায়েই লাগে না।

    মন্দিরের অধিষ্ঠাত্রী দেবী মনসা। ভক্তের মনোবাঞ্ছা পূরণ করেন বলেই তিনি মনসা। দূর্গার প্রতিরূপ। দেবী ত্রি-আননা।

    পরেরদিন মনসা মন্দির দর্শন সেরে চলে গেলাম কনখল। হরিদ্বার থেকে মাত্র দুমাইল। এখানে পতিব্রতা সতীর আত্মাহুতির বেদনার্ত কাহিনী অমর হয়ে আছে কালের বুকে। সতীকুন্ডের অনলশিখা আজো অনির্বাণ। কনখলে দর্শনীয় স্থান বলতে সতীকুন্ড, সতীঘাট, দক্ষেশ্বরের মন্দির, নির্মল সন্তপুরা, আনন্দময়ী আশ্রম, অবধূত মন্ডল। অটোয় চুক্তি করে নিলে ঘণ্টা চার পাঁচেকের মধ্যেই সব ঘুরে দেখে নেওয়া যায়।

    ঠিক ছিল পরেরদিন চলে যাব হৃষিকেশে। হরিদ্বার-হৃষিকেশ-দেরাদুন-মুসৌরি। মোটামুটি এইছিল এবারকার সফরসূচি। কিন্তু ঘটনা ঘটলো অন্যরকম। বোধহয় এইরকমই ঘটে থাকে। আর ঘটে বলেই জীবন-মাঝারে এত বিস্ময়! এত বৈচিত্র্য! যিনি অতর্কিতে এমন ঘটালেন তার সাথে কয়েকমুহূর্তের আলাপচারিতায় পরিচয় হয়েছিল কোনো একসময়ে। প্রতিদিনকার জীবনে কত মুখেরই তো আনাগোনা! সেইসব অজস্র মুখের মিছিলে কবেই হারিয়ে গিয়েছিল ওই মানুষটার মুখও। তাই যখন মানুষটা জানতে চায় --- আপনাকে কোথায় দেখেছি বলুনতো? আমি নির্দ্বিধায় বলি, "আমি কিন্তু আপনাকে কখনো দেখিনি।" মানুষটা চিন্তান্বিত গলায় বলে, "উঁহু, নির্ঘাত কোথাও না কোথাও দেখেছি…" নিঝুম হয়ে মানুষটা ভাবে কিছুক্ষণ। তারপর সহসা বলে ওঠে, "মনে পড়েছে, ভূত বাংলোর ছাদে …. শিমুলতলায় …. অনেকদিন আগেরকথা …."

    স্মৃতির উপর থেকে ধূসর আস্তরণটা সরে যায়। একটুএকটু করে মনে করতে পারি যেন।

    "হ্যাঁ হ্যাঁ, ঠিক ঠিক। আপনার সঙ্গে আপনার স্ত্রী ছিল। আর একটা ছোট্ট বাচ্চা …"

    জমে গেলাম কথায়। একথা সেকথা কতকথা! একসময় এসে পড়লো এবারের ভ্রমণপ্রসঙ্গ।

    "সে কী মশাই, হরিদ্বারে এসেও কেদার-বদ্রী যাবেন না? বলেন কী? এই তো আমরা ঘুরে আসলাম।"

    বললাম, "আগেথেকে ঠিক করে আসি নি। হাতে সময়ও কম। সঙ্গে বয়স্ক মানুষও রয়েছেন দু-একজন।"

    মানুষটা উড়িয়ে দেবার মত করে বললো, "ওগুলো কোনো ধর্তব্যের মধ্যেই আসে না। কেদার-বদ্রি ঘুরে আসতে বড়জোর তিন-চার দিন সময় লাগবে। তারপরেও আপনি মুসৌরি-দেরাদুন ঘুরে নিতে পারবেন। দেরাদুনে দেখার তো ওই সহস্রধারা। আর মুসৌরিতে তো সৃষ্টিছাড়া খরচ! মাছভাত বাদ দিন, সব্জিভাতের একটা মিলের দাম শুনলেও তড়াক করে লাফিয়ে উঠতে হবে। যেমনতেমন একটা লজে থাকার খরচও ধরাছোঁয়ার বাইরে। তবে বলতেই হবে, জায়গাটা অসাধারণ। তবে ওখানে না থেকে দিনেদিনে ঘুরে আসাই ভালো। যা বলছিলাম --- কেদার যদি না-ও যেতে পারেন বদ্রিটা ঘুরে আসুন।"

    প্রস্তাবটা মনে দাগ কাটলো। সাথীদের জানালাম। সানন্দে সায় দিল সবাই। তবু স্মরণ করিয়ে দিলাম --- ঠান্ডা কিন্তু মাইনাসে। ওদের ভাব কুচপরোয়া নেহি! তবে আর বেরিয়ে পড়তে বাঁধা কোথায়? প্রবীণেরা বলেন -- তীর্থে না টানলে নাকি যাওয়া যায় না! বোধহয় একেই বলে সেই টান।

    খোঁজখবর নিয়ে জানা গেল, গাড়োয়াল বিকাশ নিগমের বাস সোজা চলে যাচ্ছে বদ্রিনাথ। বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্সির অল্পসিটের ছোটছোট বাসেও যাওয়া যেতে পারে। আর আছে নিজেদের সুবিধা অনুযায়ী ভাড়া করে যাওয়ার জন্য বিভিন্নরকমের যানবাহন। আমরা সেরকমই একটাকে কথা বলে ঠিক করলাম। যদিও দক্ষিণাটা ঈষৎ বেশি --- টেনেটুনে কোনোভাবেই তাকে সাধ্যের পরিসীমার মধ্যে বিবেচনা করা সম্ভব নয়! শুধু কী তাই --  পথে টোল-ট্যাক্সের যত দায় সব নিজেদেরকেই নিতে হবে। স্বভাবতই খরচে খচখচ করে ওঠে মন! মধ্যবিত্তের স্বভাবদোষ আর যাবে কোথায়? ভিতরের বাউল-মানুষটা মুচকিমুচকি হাসে। কৌতুকে বেজে উঠে বলে, "ওহে বাপু, নিক্তিমাপা নৈমিত্তিক জীবনের বাইরে এসে এমন বেহিসেবি হওয়াটাই ভ্রমণের অন্য এক আনন্দ! মুঠো খোলো হে মুঠো খোলো।"

    পরেরদিন সকাল নটা নাগাদ আমাদের গাড়ি ছুটলো বদ্রীনাথের পথে। হরিদ্বার থেকে বদ্রিনাথ তিনশো-বাইশ কিলোমিটার। উচ্চতা ১০৪০০ ফুট। হৃষিকেশ ছুঁতেই হিমালয়ের মুখোমুখি। যেন চোখের সামনে কোনো মৌনমূর্তি প্রকান্ড সুন্দরের আত্মপ্রকাশ ঘটলো। হিমালয় যেন এখানে গড়িয়ে এসে হারিয়ে ফেলেছে নিজেকে। চোখে ঘোর লাগে। দেখার সেই মুগ্ধতা কাটতে না কাটতেই দেখি আমার চারপাশে শুধুই হিমালয় আর হিমালয়! উদ্ধত। সুগম্ভীর। আহা! কী সুন্দর ওই অভ্রংলিহ হিমালয়কে পরম মমতায় জড়িয়ে থাকা শ্যামলিমা নিসর্গের অপরূপ প্রাণোচ্ছ্বাস! যেন সবুজে-সবুজে নিজেকে বিছিয়ে দিয়েছে স্বয়ং নগাধিরাজের সম্পূর্ণতা জুড়ে। পাহাড়-সবুজের বিহ্বলকরা অমন সৌন্দর্যকে দৃষ্টির গভীরতায় আরো নিবিড় করে আনতে বিভোর হয়ে উঠলো মন!

 


 

    দুর্গম হিমালয়ের বুকে পিচঢালা পথ। কালের বুকে হালের গৌরব! চোখে বিস্ময় লাগে। মানুষের অসাধ্যসাধনের কীর্তিতে স্ফীত হয়ে ওঠে বুক। পাশাপাশি মনেরমাঝে কোথাও যেন খচখচ করে। এপথ তো সে পথ নয়! যে পথে ধর্মেরটানে কৃচ্ছ্যসাধ্য পদযাত্রায় যুগে যুগে সামিল হয়েছে কত সহস্র তীর্থকামি মানুষ! কত রক্ত ঝরেছে। প্রাণ নিঁভেছে। তবু ভক্তি টলে নি এতটুকুও। ভক্তপ্রাণের সর্বকালীন বিশ্বাস --- এপথ ধরেই মোক্ষের সন্ধান। তাই সকল বিঘ্ন তুচ্ছ করে দুরত্যয় পথ ভেঙেছে মানুষ। কিন্তু আজ আর কোথায় সেই মহাপ্রস্থানের প্রাচীন পথচিহ্ন! ঢেকে গেছে ঘন জঙ্গলে। এপথ তার আধুনিক সংস্করণ! যার উপর দিয়ে ঝাঁ-চকচক চক্রযানের অহরহ মসৃণ আনাগোনা। যুগান্তরে পথ বদলেছে মানুষ। দুটি পা-কে ছুটি দিয়ে আজ নিশ্চিন্তে কণ্ঠলগ্ন যন্ত্রসভ্যতার। কিন্তু প্রাগৈতিহাসিক হিমালয়? বদলায় নি এতটুকুও। তেমনি অনাহত তার রঙ-রূপ-গন্ধের বিচিত্র সম্ভার। তাই আজো টেনে আনে মানুষকে। পাগল করে। বিহ্বল করে। বিভোর করে।

    গাড়ি এসে থামলো বেয়াসিতে। চোখ জুড়িয়ে গেল। হিমালয়ের পেলব সবুজে সোনালীরোদের ঝলমলে সোহাগ। আকাশের নীলসাগরে অলস ভাসমান শ্বেতহংস মেঘের দল। হিমালয়ের কানেকানে চুপিচুপি কি যেন বলে যায় তারা গোপনকথা। ভারী মনোরম স্থানটি। চারদিক অদ্ভুত শান্ত। নিরালা। শুধু আত্মভোলা বাতাস কী যেন সুর ভাঁজে আপনমনে। সহসা দুটিচোখ ওই আকাশ-পাহাড়-সবুজের মাঝে যেথাখুশি হারিয়ে যাওয়ার বাসনায় চঞ্চল হয়ে ওঠে!

    গরম চায়ে গলা ভিজিয়ে আবার চলা শুরু। দেখতেদেখতে চলা। একপাশে পাহাড়ি অরণ্য। অন্যপাশে গভীর খাদ। সমতলের মত মোটেও সরলসোজা নয় এপথের রকমসকম। একটার পর একটা টার্নিং। প্রতিটি টার্নিংয়ের পাশে পাথরের বুকে লেখা হুঁশিয়ারি --- ব্লো হর্ন। শুনশান পথ। দু-একজন মানুষ। স্থানেস্থানে পথজুড়ে বসে থাকা হনুমানের দল। মাঝেমাঝে বিপরীত দিক থেকে আসা হঠাৎ কোনো গাড়ির মন্থর পাশ কাটিয়ে চলে যাওয়া।

    দেবপ্রয়াগে আবার যাত্রাবিরতি। হৃষিকেশ থেকে যার দূরত্ব সত্তর কিলোমিটার। প্রয়াগ অর্থে সঙ্গম। এখানে ভাগীরথী মিলেছে অলকনন্দার সাথে। দুয়ের মিলিজুলি রূপ গঙ্গা। নেমে এসেছে হরিদ্বারে। এই দেবপ্রয়াগেই রাবণবধের কারণে ব্রহ্মহত্যার পাপস্খলনের উদ্দেশ্যে তপস্যা করেছিলেন  শ্রীরামচন্দ্র। বহুপ্রাচীন এখানকার রামচন্দ্রের মন্দিরটি।

    সকালে তাড়া থাকায় সামান্য কিছু মুখে দিয়েই বেরিয়ে পড়তে হয়েছিল। এখন শূন্যউদরের  অগ্নিজ্বালায় যেন ঝালাপালা হয়ে উঠলাম। দ্বিপ্রাহরিক আহারপর্বটা তাই এখানেই সেরে নিতে হলো। দেবলোকের গোটাপথে আমিষ নিষিদ্ধ। নিরামিষ সবজিভাতও মোটেও উপাদেয় নয়। তবু খিদের মুখে সবই অমৃত।

    লতার মত পাহাড় পেঁচিয়ে উঠেগেছে পথ। সেপথ এক পাহাড় থেকে অন্য পাহাড়ে। মাঝেমাঝে ছোটছোট সেতুতে পাহাড়েপাহাড়ে মেলবন্ধন। আমাদের পাশেপাশে কলস্বনা অলকনন্দা। উপলখণ্ডের সাথে সুতীব্র অভিঘাতে তার সফেদ ফেনা টুকরোটুকরো হয়ে ছড়িয়ে দিচ্ছে অজস্র মুক্তোরাশি। দৃষ্টির সীমানাজুড়ে কেবল পাহাড় আর পাহাড়। বিচিত্র আকারে। বিন্যাসে। বর্ণসুষমায়। কোনোটা ঢাল। কোনোটা খাঁড়াই। কোনোটা সবুজ মখমলে ঢাকা -- যেন চাবাগানের উদ্ভিন্নযৌবনার কোমল লাবণ্যময়তায় উদ্ভাসিত। কোনোটা আবার পাথরকাটা মেহনতি শ্রমিকের কঠিন মুখাবয়বের মত রুক্ষ। কর্কশ। হিমালয়ের এই বর্ণাঢ্য বৈচিত্র্যের ছোঁয়ায় মনের মগ্ন আবেশে জেগে ওঠে এক অনন্ত সুন্দরের অপার্থিব অনুভব। হিমালয়ের পথে এটাই বুঝি সবথেকে বড় পাওনা। শুনেছি মোক্ষের বাসনায় নাকি তীর্থের পথ ভাঙে মানুষ। সেই মোক্ষ কে কবে কোথায় পেয়েছে --- আমার জানা নেই। হিমালয়ের পথে যেতেযেতে, দুচোখ ভরে দেখতেদেখতে বারবার মনে হয়েছে, যদি কোথাও সেই মোক্ষ থেকে থাকে তবে তা' বুঝি পাওয়া যাবে এপথেরই দুপাশে, যা কিছু আঁক কেটে যায় দর্শনে-চিন্তায়-অনুভবে -- তারই মাঝে কোথাও কোনোখানে! কবির ভাষায় বললে --- "পথের প্রান্তে আমার তীর্থ নয়,/পথের দুধারে আছে মোর দেবালয়।"

    আরো পয়ঁত্রিশ কিলোমিটার পথ উজিয়ে গাড়োয়াল-শ্রীনগর। প্রশান্ত-গম্ভীর পাহাড়-প্রকৃতি ভোল পাল্টে হঠাৎই মেতে উঠলো ভিড়ের হট্টগোলে। তাজ্জব বনতে হলো দু-হাজার ফুট উচ্চে পাহাড় অধিত্যকায় এমন একটি নিটোল প্রাণবন্ত শহর দেখে। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়, অফিস-আদালত, হাসপাতাল --- কী নেই এখানে! ভিড়ঠাসা শহরের লোকজন, গাড়িঘোড়া কাটিয়ে কাটিয়ে দক্ষ ফরোয়ার্ডের মত আমাদের গাড়িটা একসময় পেরিয়ে এল শহরটাকে। সভ্যতার খোলস ছেড়ে বেরিয়ে এসে আপনস্বরূপে আবার নিজেকে মেলে ধরলো হিমালয়। পাশেপাশে ছায়াসঙ্গিনী চঞ্চলা অলকনন্দা।


    চলতেচলতেই কানে এসে বাজে চপলা নির্ঝরের চকিত সঙ্গীত। চেয়ে দেখি, পাহাড় থেকে হামাগুড়ি দিয়ে নেমে, পথ ভিজিয়ে, ঝাঁপ দিয়েছে পাশের খাদে। হঠাৎ থমকে গেল গাড়ির গতি। কী ব্যাপার, না সামনে মেষবাহিনীর লম্বা মিছিল! হর্ন শুনে বিরক্তি বোধ করে। তবু পথ ছেড়ে দেয়। কাঠেরবোঝা পিঠে নিয়ে ন্যুব্জ দেহে ছন্দের তালেতালে এগিয়ে চলে গাড়োয়ালি স্ত্রী-পুরুষ। অদূরের পাহাড়ে প্রাণময় জীবনের টুকরোটুকরো ছবি। ছোটছোট গ্রাম। ধাপচাষ। ফসলের ক্ষেত। সহজ-সরল মুখ। সেইমুখে কঠিন জীবনসংগ্রামে বেঁচে থাকার সফল হাসি।

    "চা পিয়েগা?" ড্রাইভার শর্মাজির প্রস্তাবে এককথায় রাজি। মন্দ কী!

    "হিঁয়াপর বহুত আচ্ছা চা মিলেগা।" বলেই গাড়িটা ঘ্যাঁচ করে রূখে দিল শর্মাজি।

    একেবারে ফাঁকা জায়গায়, রাস্তার ধারে ছোট্ট নিঃসঙ্গ চায়ের দোকান। দোকানের পাশে গাছের ছায়ায় গুটিকতক চেয়ারটেবিল পাতা। লোকজন নেই। একপাশে পাহাড়ের ঢালে বেশকিছু ঘরবাড়ি। অন্যপাশে অনেকদূরে নীলআকাশের গোটা অঙ্গনজুড়ে ঢেউ তুলেছে পর্বতশ্রেণী। চারপাশে অকৃপণ সবুজের সমারোহ। দারুণ জায়গা। শর্মাজিকে মনেমনে ধন্যবাদ জানালাম।

    কী নাম স্থানটির? গুলাবরাই। উসখুস করে ওঠে স্মৃতি। নামটা যেন কোথায় শুনেছিলাম … কোথায় শুনেছিলাম …!! মনে পড়েছে। শুনি নি, পড়েছিলাম --- জিম করবেটের রচনায়। এই সেই গুলাবরাই? যেন বিশ্বাস হয় না -- এই সেই গুলাবরাই, যেখানে এক ভয়ানক নরখাদক চিতার অন্তিম পরিণতি ইতিহাস হয়ে আছে কালেরবুকে।। ১৯১৮ থেকে ১৯২৬। রুদ্রপ্রয়াগের জনজীবনে দুরাত্মা নরখাদকটি ছিল এক দুর্ধর্ষ বিভীষিকা। যার উৎপাতে অতিষ্ট হয়ে উঠেছিল গোটা অঞ্চলের মানুষ। কেড়ে নিয়েছিল রাতের ঘুম। শিকার হয়েছিল একশো-পঁচিশটা প্রাণ। অবশেষে সন্ত্রস্ত কালযাপনের অবসান ঘটে একদিন। আতঙ্কিত মানুষ হাঁফ ছেড়ে বাঁচে। দিনটা ছিল, ১৯২৬-এর পয়লা মে। করবেট-সাহেবের মাত্র একটি গুলিতেই ভবলীলা সাঙ্গ হয়েছিল ভয়ঙ্কর সেই নরঘাতকের। সেই কবেকার কথা! কতবছর কেটে গেছে তারপর! কিন্তু এখনো এদিগরের মানুষজন কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করে করবেট-সাহেবের নাম।

    পাহাড়ের জঙ্গলে আজো আছে চিতার দল। তবে তারা নরখাদক নয়। মাঝেমধ্যে নেমে আসে। পথেঘাটেও তাদের ঘুরে বেড়াতে দেখে কেউকেউ। কখনোসখনো দুএকটা ছাগল-বাছুর মারে। আবার ফিরে যায়।

    গুলাবরাই থেকে সামান্য পথ রুদ্রপ্রয়াগ। গাড়োয়াল-শ্রীনগর থেকে যার দূরত্ব চৌত্রিশ কিলোমিটার। আর হৃষিকেশ থেকে একশো ঊনচল্লিশ কিলোমিটার। উচ্চতা ছ'শ দশ মিটার। এখানে অলকনন্দার বুকে হারিয়ে গেছে মন্দাকিনী। রুদ্রনাথের প্রাচীন মন্দিরটিও এখানকার অন্যতম দ্রষ্টব্য।

    পঞ্চপ্রয়াগের অন্যতম কর্ণপ্রয়াগ। রুদ্রপ্ৰয়াগ থেকে মাত্র একত্রিশ কিলোমিটার। কর্ণপ্রয়াগে পিনারি হিমবাহ থেকে উৎসারিত পিন্ডারগঙ্গা একাত্ম হয়েছে অলকনন্দার সাথে। এখানে অলকনন্দা সগর্জনে রুদ্ররূপিনী। কর্ণপ্রয়াগ ছাড়িয়ে এগিয়ে চললাম আরো সামনে। অপরাহ্নের নিরুত্তাপ আলোয় যেন বিধুর রং লেগেছে পাহাড়িয়া নিসর্গে। সকাল গড়িয়ে দুপুর, দুপুর গড়িয়ে অপরাহ্ন। সময় থেকে সময়ান্তরে দিনের ঘন ঘন রংবদল। সেই রঙে নিজেকে রাঙিয়ে ক্ষণেক্ষণে রূপান্তরে অপরূপ হয়ে ওঠে হিমালয়।

 


 

    যান্ত্রিক আর্তনাদ তুলে হঠাৎই স্তব্ধ হয়ে গেল আমাদের গাড়িটা।

    --- কী ব্যাপার?

    একহাত জিব বার করে বসলো ড্রাইভার শর্মাজি।

    --- টায়ার পাংচার হো গিয়া।

    --- সর্বনাশ! সন্ধ্যে যে হয় হয়! তারউপর একেবারে পথের মাঝখানে! চারপাশেও তো দেখছি জনবসতির চিহ্নমাত্র নেই! যেতেও  তো হবে আরো অনেকটা পথ ...

    আমার এহেন ভাবনার মাঝেই শর্মাজি তার মাতৃভাষায় আশ্বস্ত করলো। যার বাংলা তর্জমা --- " ভগবানের কাছে যাবার এপথে ভয় পাবার কিছু নেই। চোরডাকাত এপথ মাড়ায় না। জঙ্গলে বাঘ আছে বটে। মানুষ তাকে ভয় খেলেও সে খামোকা মানুষকে ভয় দেখায় না …."

    না দেখালেই ভালো। মনেমনে ভাবলাম।

   শর্মাজি আবার বললো, "আপনারা বরং এক কাজ করুন, নির্ভয়ে হাঁটতে হাঁটতে এগিয়ে যান। খুব ভালো লাগবে। আমি টায়ার বদলে আপনাদের ধরে নেব।"

    আর সকলে উৎসাহ না দেখালেও প্রস্তাবটা মনে ধরলো আমার।

    সূর্য তখন অস্তাচলে। একটা মস্ত বড় লাল টুকটুকে বল যেন মন্থর গড়িয়ে নামছে পর্বতের ঢাল বেয়ে। মুঠোমুঠো লাল আবির ছড়িয়ে দিয়ে কে যেন রাঙিয়ে দিয়েছে পশ্চিমাকাশ। ঠিকরে পড়া রক্তিমাভায় হিমালয়কে মনে হলো -- ঠিক যেন কোনো এক রক্তবসন ধ্যানমৌন যোগী। অরণ্যের গহনেও শুরু হয়েছে রাত্রির আয়োজন। বেজে উঠেছে নৈশ-কনসার্টের একটানা সুর। প্রকৃতির বিষন্নতায় দিনান্তের বেদনা। বিচ্ছেদকাতর দিবস আসন্ন সন্ধ্যার কাছে রেখে যাবে তার আজিকার শেষ নিবেদনটুকু --- "হে মোর সন্ধ্যা যাহা কিছু ছিল সাথে/ রাখি তোমার অঞ্চলতলে ঢাকি।"

    হাঁটতে হাঁটতে কখন দাড়িয়ে গিয়েছিলাম জানিনা। হঠাৎ শুনি শর্মাজির গলা -- "উঠিয়ে।"

    নন্দপ্রয়াগ পেরিয়ে পিপুলকোটিতে যখন পৌঁছালাম তখন এই পাহাড়দেশে একপ্রহর রাত। এখানেই রাত্রিবাস। শর্মাজি জানিয়ে দিয়েছে, কাল দিনের আলো ফোটার আগেই আবার বেরিয়ে পড়তে হবে। বদ্রিনাথ এখান থেকে আরো ঊনআশি কিলোমিটার। সে রাতে কালিকমলি ধরমশালায় থাকার ব্যবস্থা হলো। শর্মাজি নিজেই উপযাচক হয়ে সব বন্দোবস্ত করে দিল। শুধু তাই নয়, কোন হোটেলের খাবার "মন্দের ভালো" --- সঙ্গে করে নিয়ে গিয়ে দেখিয়েও দিল। যাওয়ার আগে আবার বলে গেল, "ভোর চারটের আগে রেডি হয়ে থাকবেন। আমি এসে ডেকে নিয়ে যাব।" মুগ্ধ হলাম মানুষটার নিখাদ আন্তরিকতায়।

    পরেরদিন আবার যখন রওনা দিলাম রাত তখনো চরাচরের কোলে গভীর ঘুমে অচেতন। পিপুলকোটিতেই বেশ ঠান্ডা পেয়েছিলাম, এখন যতই এগোতে লাগলাম ততই "হি-হি" তীব্র হতে লাগলো।

    পুবেরআকাশে আঁকিবুকি কাটে দিনের রং। তরল হয়ে ঝরে পড়ে বিভাবরী। অস্ফুট আলোয় আবছা ধরা দেয় তরঙ্গায়িত পর্বতরেখা। একসময়ে রাত মুছে ঝিকমিকিয়ে ওঠে নতুনদিনের ঝকঝকে আলো।  সেই আলোকের কোমল আভায় সদ্যস্নাতা পূজারিনির পবিত্রতায় মূর্ত হয়ে ওঠে পর্বতশোভিতা অপরূপা বসুন্ধরা। জেগে ওঠে আকাশস্পর্শী ভয়ঙ্কর সুন্দর হিমালয়। পাশের গভীর খাদে চেয়ে থাকা যায় না। রক্ত যেন হিম হয়ে আসে।

    সূর্যের প্রথম কিরণ চুম্বন এঁকে যায় উত্তুঙ্গ তুষারশৃঙ্গে। ঝিকমিকিয়ে ওঠে নন্দাদেবীর তুষারশৃঙ্গ। নীলকন্ঠের গা বেয়ে নামে গলানো রূপো। অনেক নীচে নিঃসীম নীরবতাকে রোমাঞ্চিত করে ছুটে চলে অলকনন্দা। এখানে নদীর রোষান্বিত আত্মপ্রকাশ! যেমন উত্তাল গর্জন, তেমনি দুর্বার গতি! একঝলক নিচের দিকে তাকিয়ে দেখলেই বুক যেন শুকিয়ে আসে! চারপাশের শান্ত-সমাহিত নিসর্গ কী অদ্ভুত মায়াবী! প্রকৃতির রঙ-রূপ-ধ্বনির এমন অনিন্দ্যসুন্দর ব্যঞ্জনা যেন দুচোখের অনুভবে এক অপার্থিব বিস্ময়! চিত্ত বিহ্বল হয়। কিন্তু যা দেখি তাকে যে ভাষায় ব্যক্ত করি --- এমন সাধ্য কোথায়?

    চমৎকৃত চেতনায় তখন সময়ের, পথের কোনো সাড়া ছিল না! তাই টেরও পাই নি, পেরিয়ে এসেছি আরো একত্রিশ কিলোমিটার পথ। গাড়ি থামলো যোশীমঠে। উচ্চতা প্রায় ৬২০০ ফুট। শোনা যায় --- এখানে বহুবছর আগে কল্পবৃক্ষতলে গভীর তপস্যায় সিদ্ধি লাভ করেছিলেন অদিগুরু শঙ্করাচার্য। এটিই তার প্রতিষ্ঠিত প্রথম মঠ। শীতকালে মূলমন্দির তুষারপাতের কারণে বন্ধ হয়ে গেলে এখানেই পূজিত হন বদ্রিনাথ। থাকার সুব্যবস্থা থাকায় এখানেও অনেকে রাত্রিবাস করে।

    যোশিমঠ ছাড়িয়ে আরো দশ কিলোমিটার এগোলে বিষ্ণুপ্রয়াগ। এখানে ধৌলিগঙ্গাকে বুকে টেনে নিয়েছে অলকনন্দা। উন্মত্ত অলকনন্দা এখানে আরো বেপরোয়া। আরো ভীষণ-ভয়ানক। বিষ্ণুপ্রয়াগের পর পান্ডুকেশর। জনশ্রুতি --- জীবনের শেষ ক'টাদিন এখানেই অতিবাহিত করেছিলেন রাজা পান্ডু। পাণ্ডবদের স্বর্গযাত্রাও নাকি এখানথেকেই।

    বদ্রিযাত্রার শেষপথটুকু চড়াই-উৎরাইয়ের বেশ দাপট। গাড়ি একবার ওঠে। আবার নামে। আবার ওঠে। মনে হয় --- হিমালয়ের পথে যেন জীবনের রঙ্গ দেখি। বেশ লাগে। নিচেরদিকে তাকিয়ে দেখি --- পাকদন্ডীর পথ  ঘুরে উঠে আসছে আরো অনেক গাড়ি। এত উপর থেকে রঙবেরঙের গাড়িগুলোকে দেখতে কী ভালোই না লাগে! ঠিক যেন খেলনা গাড়ির মত এতটুকুন! এপথের বেশ খানিকটা দূরত্ব খুবই সংকীর্ণ। বিপদসঙ্কুলও বটে। তাই ওই পথটুকুতে যান চলাচলে রাস টানতে হয়েছে নিয়ন্ত্রণের শক্ত রশি দিয়েই। গাড়ির গতি সব একমুখী। একদল উঠে গেলে আরেকদল নামবে।

    বদলে গেছে হিমালয়। সবুজবসন পরিহার করে, পাথুরে-নগ্নতায় এখন তার রুক্ষ-গাম্ভীর্য। মাথায় তুষারমুকুট। সূর্যকিরণে ঝলকে উঠছে রাশিরাশি হিরে-মুক্তো-চুনি-পান্না। চোখ ঝলসে যায় সেই ঐশী আলোর বিচ্ছুরণে। তবু চোখ ফেরে না!

 


 

হনুমানচটি পেরিয়ে এলাম। শর্মাজি জানালো --- আর মাত্র সাত কিলোমিটার দূরে বদ্রিনাথ। এই সাত কিলোমিটার আর কতটুকুই বা পথ! দেখতে দেখতেই শেষ হয়ে যাবে। তারপর দৃষ্টির সীমানায় ধরা দেবে উত্তরাখণ্ডের সেই দুর্গম পর্বততীর্থ। যার পৌরাণিক মাহাত্ম্য আসমুদ্র-হিমাচলের কোটিকোটি ধর্মপ্রাণের ভক্তির উচ্ছ্বাসে এক চিরন্তন ব্যাকুলতা। তাই মুনি-ঋষি-সাধু-সন্ন্যাসী থেকে শুরু করে কালের স্রোতে এসেছে কতশত মানুষ। মানুষের ভক্তির কাছে হার মেনেছে দুর্লঙ্ঘ্য পথের প্রতিকূলতা। বিশ্বাসের আবেগের কাছে তুচ্ছ হয়ে গেছে দেহমনের সকল কষ্ট, সকল ক্লান্তি। এই সেই মহাতীর্থ!

  

    তীর্থের দেবতা পদ্মাসনা। ধ্যানস্থ। শালগ্রাম শিলা নির্মিত মূর্তিটি খ্রিষ্টীয় অষ্টম শতকে নারদকুণ্ড থেকে উদ্ধার করে মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করেন শঙ্করাচার্য। মন্দিরটি অতীব সুদৃশ্য। মন্দিরের স্বর্ণচূড়া ইন্দোরের রানী অহল্যাবাঈয়ের বিনম্র ভক্তির এক অক্ষয়কীর্তি। মন্দিরের নীচেই তপ্তকুণ্ড। যার উষ্ণসলিলে অবগাহনে নাকি ধুয়ে সাফ হয়ে যায় জন্মজন্মান্তরের যত পাপ। এসবই বিশ্বাসের কথা। বলে তারাই --- যারা আসে তীর্থের টানে! আমি তো সে টানে আসি নি। এসেছি পথের টানে। আরেকটু গিয়েই সেপথে লম্বা দাঁড়ি টানা হবে। চলার শেষ! দর্শন-ব্যাকুলতায় তীর্থকামির অস্থিরপ্রাণ যখন আনন্দে উথালপাথাল, আমার প্রাণে শুধুই বিষাদের সুর। আসলে তীর্থের বাসনা নিয়ে তো আসি নি যে পুণ্যের হিসেব কষে আত্মপ্রসাদ লাভ করবো। এসেছি অচেনা পথের অজানা আনন্দের স্বাদ নিতে আর দুচোখ ভরে দেখে নিজেকে পরিপূর্ণ করতে। কিন্তু না মিটলো মনের স্বাদ, না দুচোখের পিপাসা! আসলে হিমালয়কে দেখেদেখেও যেন আশ মেটে না! কী জানি, হয়তো এই অতৃপ্তিই হিমালয়ের চিরন্তন আকর্ষণ। তাকে একবার দেখা দিলে, সে তোমাকে বারবার টানবে। জানিনা সে টানেই ব্যস্তজীবনের টানাপোড়েন কাটিয়ে, পথের রেস্ত জোগাড় করে আবার কখনো আসা হবে কিনা! তবে হোক আর নাই হোক, এটুকু নিশ্চিত জানি, শিমুলতলায় পরিচয় হওয়া সত্ত্বেও হরিদ্বারে যাকে আমি চিনতে পারি নি --- তাকে আর নতুনকরে কখনোই চিনতে ভুল করেবো না। কারণ বদ্রিনাথের পথে হিমালয়ের স্মৃতি কোনোদিনই ভোলার নয়।।

 =======================================

 


 

 

 

 

 

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়, হৃদয়পুর, উত্তর ২৪ পরগণা।

 

 

 

 

 

 

 

Comments

বিধিবদ্ধ স্বীকার্য :

লেখার বক্তব্যের দায়িত্ব লেখকের, পত্রিকার নয়। আমরা বহু মতের প্রকাশক মাত্র।

মতামত/লেখা এখানে জমা দিন

Name

Email *

Message *

সাম্প্রতিক বাছাই

ছড়া ।। প্রেম নদীর মাঝি ।। গোবিন্দ মোদক

  প্রেম নদীর মাঝি  গোবিন্দ মোদক  প্রেম নদীতে ভাসাই ডিঙি উথাল পাথাল জল,  ছোট্ট আমার তরীখানি করছে যে টলমল! জলের উপর ফুটে আছে কতো মোহন ফুল,  ফুলের বোঁটা জড়িয়ে আছে তোমার মাথার চুল!  জলের ভেতর আরো যে জল, টল-মল-টল করে,  বিদেশ থেকে আসছে চিঠি বিরহিনীর ঘরে!  জলের নিচে লুকিয়ে আছে রহস্য অজানা,  সাধুজনে বারণ করেন যাওয়া নাকি মানা!  প্রেমিক মন চায় যে যেতে সেই অচিনপুরে,  সারা জীবন বৈঠা বেয়েও থেকে যায় দূরে!  কিন্তু প্রেমিক শোনে নাকো সাধুজনের বারণ,  সাধ করে তাই ডেকে আনে অতৃপ্তিটার কারণ!  অবশেষে হালে পানি না পেয়ে সে কাঁদে,  বিশ্বভুবন সারা জীবন পড়ছে ঘুঘুর ফাঁদে!  তবুও তো প্রেম নদীতে সবাই ভাসায় তরী,  প্রেম যমুনা উথাল-পাথাল কি যে এবার করি! মন রে মনে মতি রাখো করো সাধুসঙ্গ,   প্রেম নদীতে ভাসিয়ে তরী দেখো আজব রঙ্গ!!   ____________________   গোবিন্দ মোদক।  রাধানগর, কৃষ্ণনগর, নদিয়া।  পশ্চিমবঙ্গ --- 741103

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯১তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পাদকীয় দপ্তর থেকে এই সংখ্যায়  'শিক্ষা ও শিক্ষক' বিষয়ক বেশ কিছু লেখার পাশাপাশি রয়েছে বিচিত্র বিষয়ের আরও কিছু লেখা। সব মিলিয়ে সংখ্যাটি আপনাদের সমৃদ্ধ করবে, আপ্লুত করবে — এ বিষয়ে আমরা আশাবাদী। আপনাদের মতামত অবশ্যই জানাবেন। আমরা প্রতীক্ষিত।            আগামী অক্টোবর ২০২৫ সংখ্যা 'উৎসব সংখ্যা' হিসাবে প্রকাশিত হবে। ওয়েব সংখ্যার পাশাপাশি নির্বাচিত লেখাগুলি নিয়ে একটি pdf এবং তার মুদ্রিত সংস্করণও প্রকাশিত হবে। তাই অপ্রকাশিত ভালো লেখা পাঠান। বিশেষ কোনও বিষয় নেই। প্রবন্ধ-নিবন্ধ-ফিচার ২০০০ শব্দ, গল্প ১২০০ শব্দ, অণুগল্প ৫০০ শব্দ, কবিতা-ছড়া ২৪ লাইনের মধ্যে হলে ভালো। ইমেলঃ nabapravatblog@gmail.com           বিস্তারিত বিজ্ঞপ্তি আসবে। সামাজিক মাধ্যমে আমদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন। সময় মতো সব সংবাদ পেয়ে যাবেন।  শারদ উৎসবের দিনগুলি সকলের আনন্দে কাটুক এই কামনা করি। —নিরাশাহরণ নস্কর সম্পাদক: নবপ্রভাত মোঃ ৯৪৩৩৩৯৩৫৫৬ Whatsapp Group:  https://chat.whatsapp.com/ AIpj98JKbloFSpeqMcpr6j Facebook Page:  https://www.facebook.com/ share...

যুগান্তরে -- আগমনীর সুরে সুরে ।। গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

যুগান্তরে -- আগমনীর সুরে সুরে গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় নিশাবসানের সাথে সাথে জেগে ওঠে ধরণী। জেগে ওঠে নতুন প্রাত্যহিকতার আরো একটি স্বপ্ন নিয়ে --- চিরন্তনের নিত্যনিয়মে। একটু একটু করে প্রভাতআভায় পরিস্ফুট হয়ে ওঠে দিবসনিসর্গ। ঋতুচক্রে আবারো নতুন মোড়! শারদীয়ার রঙ লেগেছে আজ প্রকৃতির অঙ্গজুড়ে। ঘাসের ডগায় ডগায় কুয়াশার অন্তরঙ্গ স্পর্শ! সুখাবহ অনুভূতির সবটুকুজুড়ে তাই ভিজেভিজে কেমন একটা হিমেল রোমাঞ্চ। টুপটাপ ঝরে পড়ছে ডাগর যুবতীর মতো শিউলী। অবিরাম আলতো ছোঁয়ায় ভিজেমাটিতে শিহরণ লাগে। স্মৃতিমেদুর হয়ে ওঠে মন। ভাবনায় ভেসে ওঠে ফেলে আসা আরো কত আশ্বিনের ভালোলাগা! দিনেরআলো আরো চেকনাই হয়ে ওঠে। নদীর দুধার বরাবর বিছিয়ে থাকা কাশবনের বেসামাল আবেগ দুলেদুলে গড়িয়ে পড়ে। তাকে সামনে রেখেই, উৎসবের বল্গাহীন আনন্দ উদ্বেলিত হয়ে ওঠে ধরার বুকে। মাথার উপরে তখন ঝকঝকে নীলাকাশ। কারোর যেন খেয়ালই নেই --- যার অনাবিল বিস্তারে, অসীম স্বচ্ছতায় চিত্রবৎ প্রতিবিম্বিত হয়েছে পৃথিবীরই উচ্ছ্বাস। ওই দেখ --- অলস ভেসে চলেছে সফেদ ফেনার মতো নিরম্বু মেঘের দল। আদিগন্ত নীলিমায় --- এপ্রান্ত থেকে সেপ্রান্তে। প্রকারান্তরে যেন প্রত...

চিরকুটের কবিতা

নতুন পৃথিবী আজ সকালে রোদ্দুর নামুক ভেজা বর্ষার মতো গা ধুয়ে কিছুটা পবিত্র হবো যত জীর্ণ মলিন দ্বেষ বিলীন হোক সব সময়ের তটে গা ভাসিয়ে কিছুটা বিলাসী হবো যা ছিল অতীত যা ছিল কষ্ট সবকিছু ভুলে নবীনে ব্রতী হবো আসুক ধেয়ে সতেজ হাওয়া দূর হোক যত কুণ্ঠা ব্যথা পুরানো যত বিবাদ ভুলে ভালোবাসার আবার বেড়া দেবো কিছুটা আশাবাদী কিছুটা কর্মঠ কিছুটা জেদি কিছুটা শপথ আসুক ছুঁয়ে বাঁচার আলো হাতে হাত রেখেই বিশ্বাসের ঘরে আবার নতুন দীপ জ্বালাবো

পাপান ও নূতন মিস ।। গোপা সোম

পাপান ও নূতন মিস গোপা সোম       পাপান যে বিদ্যালয়ে পড়ে, সেই বিদ্যালয়টি বিশাল বড়, অনেকখানি জায়গা জুড়ে অবস্থিত। বিদ্যালয়ে অনেক শ্রেণী কক্ষ রয়েছে, কারণ, প্রত্যেক শ্রেণীতে তিনটি করে বিভাগ রয়েছে। প্রত্যেক বিভাগে কম বেশী ত্রিশ জন ছাত্র-ছাত্রী। এক কথায়, শহরের বুকে এক অন্যতম গৌরবময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সেই বিদ্যালয়ে অনেক সংখ্যক মাস্টারমশাই দিদিমণি আছেন। পড়াশোনায় ও বিদ্যালয়টির বেশ সুনাম আছে। রেজাল্ট খুবই ভাল হয়।        সম্প্রতি বিদ্যালয়ের অঙ্কের মাস্টারমশাই অবসর নিয়েছেন, তাঁর স্থানে একজন নূতন মিস এসেছেন। নূতন মিস কয়েকদিনের মধ্যেই ছাত্র-ছাত্রী সবার খুব প্রিয়জন হয়ে উঠেছেন। সবসময় লাল পেড়ে শাড়ি পরে আসেন, এছাড়া আর কোনো পোষাকে মিসকে বিদ্যালয়ে দেখা যায়নি। নূতন মিস পাপানদের অঙ্ক ও পদার্থবিদ্যা পড়ান, এত সুন্দর বোঝান, পাপানের খুব ভালো লাগে মিসের পড়ানো। নূতন মিস বলতে পাপান অজ্ঞান। আর নূতন মিসও পাপানকে খুব স্নেহ করেন। নূতন মিসের কাছ থেকে পাপান অনেক কিছু শিখতে পেরেছে।        নূতন মিস খুব নিয়মানুবর্তী, উনি সময় দেখে ক্লাসে আসেন, এবং তাঁর পড়ানোর ভাগ পুরোপুরি...

অভিমান ।। তন্ময় পালধী

অভিমান তন্ময় পালধী   গত কয়েকদিন ধরেই একটানা বৃষ্টি চলছেই। আকাশ ঘন অন্ধকারে ঢাকা। বিকেলে বারান্দায় বসে অনুভাদেবী সবে খবরের কাগজ খুলেছেন, ঝমঝমিয়ে আবার বৃষ্টি নামল। একটানা বৃষ্টিতে মন খারাপ হলেও আজ আর বারান্দা ছেড়ে উঠে যেতে ইচ্ছে করলো না। ইজিচেয়ারে হেলান দিয়ে ডুব দিলেন অতীতে। স্মৃতির ক্যানভাসে জীবন্ত হয়ে উঠলো পুরানো দিনগুলি। কদিন ধরেই চরম ব্যস্ততা বালিয়াল পরিবারে। বাড়ির ছোটমেয়ে অনুভার বিয়ে। সবে ম্যাট্রিক দিয়েছে। তার ইচ্ছা আরও পড়ার, বাবার ও তাই ইচ্ছে। কিন্তু সমাজ! তখনকার রীতিতে মেয়ের বয়স পনেরো ষোল হলেই দিয়ে দাও বিয়ে। অগত্যা বাবা আর কি করেন। টিচার্স ট্রেনিং কলেজে সিলেকশন হয়েও তাই ভর্তি হওয়া হলো না। বিষণ্ণতা নিয়েই বিয়েতে রাজি হয়ে গেলেন। সেদিনও বিকেল থেকে প্রচন্ড বৃষ্টি। আকাশভাঙা বৃষ্টিতে যেন চারিদিক ভেসে যাবে। সকলে চিন্তিত হয়ে পড়লেন।সাড়ে আটটায় লগন। মুহূর্তগুলো যেন কাটতেই চায় না। এক একটা মিনিট ঘন্টাখানেক বলে মনে হচ্ছে। চিরকালই অন্তর্মুখী সে। তার মনে যে কি ঝড় চলছে কেউই বুঝতে পারছে না। অথচ বিপরীতমুখী একটা আশাবাদিতা তাকে স্থির অবিচল রেখে দিয়েছে। মনের গতিপ্রকৃতি...

মেধাদাদুর আসর ।। রণেশ রায়

মেধা দাদুর আসর লেখক:  রণেশ রায় সহযোগিতায়:  কৃত্রিম মেধা ভূমিকা আমি আমার সাহিত্য চর্চা নিয়ে বিশেষ করে কবিতা নিয়ে কৃত্রিম মেধাকে (Artificial Intelligence) বিশেষ বন্ধু হিসেবে পেয়েছি। তার সঙ্গে আলাপচারিতায় দিনে রাতে আমার ঘন্টার পর ঘন্টা কাটে। তাকে আমার লেখা পাঠালে তা নিয়ে আলোচনায় আমি বিশেষ উপকৃত হই। আমার কবিতার বানান, গতিচিহ্ন বা শব্দ চয়ন সম্পাদনা করে দিয়ে আমাকে সে বিশেষ সাহায্য করে। যে কোন লেখা পাঠালে তা নিয়ে আমরা মত বিনিময় করি। সম্পাদণার কিছু কাজ বন্ধুবান্ধব বা ছাপাখানার লোক করতেন। সেটা যথেষ্ট সময় সাপেক্ষ ছিল। কিন্তু কৃত্রিম মেধা বন্ধু এ সব ব্যাপারগুলো মুহূর্তের মধ্যে করে দেয়। সেটা দেখে নিতে আমার যা সময় লাগে। আর আমি অন লাইনে লেখায় একেবারেই অর্বাচীন। এত অল্প সময়ে তার এই কাজ কী করে সম্ভব তা আমার কাছে বিস্ময়। সেটা প্রযুক্তির ব্যাপার যার আমি কিছুই বুঝি না। তাই তা বিস্ময়ই থেকে যায়।  আমার আজের এই প্রতিবেদনে আমাদের দুজনের মধ্যে আলাপচারিতার কিছু অংশ তুলে ধরে দেখাবো এতে আমি কিভাবে উপকৃত হই, আবার সাবধানে এই বন্ধুত্বকে কাজে লাগাতে না পারলে কী বিপদ হতে পারে। আগেই বলে রাখি আমার নিজের ল...

শিক্ষক—আলোর দিশারী ।। অর্পিতা মল্লিক

শিক্ষক—আলোর দিশারী অর্পিতা মল্লিক শিক্ষা এমন এক শক্তিশালী অস্ত্র যা দিয়ে পৃথিবীকে বদলে দেওয়া যায়। শিক্ষার আলোয় আলোকিত হলে জাতির উন্নতি হয়। কাউকে অপমান করতে যোগ্যতা না লাগলেও সন্মান করতে যোগ্যতা লাগে আর প্রকৃত শিক্ষাই সেই যোগ্যতা তৈরি করে। 'শিক্ষা হলো জাতির মেরুদণ্ড '... প্রকৃত শিক্ষা শুধু অক্ষরজ্ঞান দেয় না, মনুষ্যত্ব শেখায় , অজ্ঞানতা থেকে মুক্ত করে। আমাদের জীবনের প্রথম শিক্ষক বাবা মা। শিশু জন্মের পর বাবা মায়ের থেকে প্রাথমিক আচার আচরণ শেখে। ছোট থেকে অন্যর সাথে নিজের বাচ্চাকে তুলনা করা উচিত নয় -- এতে বাচ্চার হীনমন্যতা তৈরি হয়। প্রত্যেক বাচ্চার‌ই নিজস্বতা থাকে। বাবা মায়ের উচিত প্রতিযোগিতায় না ঠেলে নিজস্বতা বিকাশে সাহায্য করা।  প্রকৃত শিক্ষা পুঁথিগত শিক্ষাতে আবদ্ধ নয় বরং এটি একটি নিরন্তর প্রক্রিয়া—যা মানুষকে ঠিক ভুল বিচার করতে শেখায় , সুন্দর ও সুস্থ সমাজ গঠনে সাহায্য করে। সত্যিকার অর্থে শিক্ষিত ব্যক্তি সে ,যে জ্ঞানকে ব্যবহার করে শুধু নিজেকে নয় সমাজকেও উন্নতির পথে নিয়ে যায়। শিক্ষা প্রসারের প্রধান ভিত্তি হলো শিক্ষক।'গুরু বিনা জ্ঞান নাই'...শিক্ষক ছাত্র ছাত্রী...

শিক্ষা ও শিক্ষক বিষয়ক গুচ্ছকবিতা ।। অভিজিৎ হালদার

গুচ্ছকবিতা ।। অভিজিৎ হালদার  আলোর দিশারি শিক্ষক তুমি অন্ধকারে আলো, তুমি পথ দেখাও অচেনা কালো। ছাত্রের চোখে স্বপ্নের বাতি, তুমি জ্বালাও প্রতিদিন রাতে। তোমার কথায় জেগে ওঠে প্রাণ, পথ চলা শিখি, মুছে যায় জ্ঞানহীন ধ্যান। তুমি হৃদয়ের দর্পণ স্বচ্ছ, যত শিখি ততই হই স্পষ্ট। ছাত্র যদি হয় কচি চারাগাছ, শিক্ষক তারে দেন শেকড়ের রস। শক্তি জোগাও, ভরাও সাহসে, স্বপ্ন সাজাও অন্তরের গহনে। তুমি আকাশ, আমরা তার তারা, তুমি ছাড়া চলতে পারি না সারা। যতদিন বাঁচি থাকবে মনে, শিক্ষকের ঋণ লেখা রবে গগনে। শ্রদ্ধার পাঠশালা চকের দাগে কালো বোর্ডে, লিখে চলে শিক্ষক দিনরাতে। ছাত্র বসে মন ভরে শোনে, সত্যের পথ শেখে তার সনে। শ্রদ্ধা আর ভালোবাসার মিলন, তাতেই গড়ে শিক্ষা ক্ষেত্রের সৃজন। বইয়ের পাতায় প্রাণের ছোঁয়া, শিক্ষক দেন জ্ঞানের বীজ বোনা। ভুল করলে ধমক দেন স্নেহে, আবার হাসেন বুক ভরা প্রাণে। ছাত্রের চোখে দেবদূত তুমি, ভুলের অন্ধকারে করো আলোকধ্বনি। শিক্ষা নয় কেবল কাগজের লেখা, শিক্ষক শেখান বাঁচার দেখা। এই তো জীবনের সত্যি মানে, ছাত্র–শিক্ষক একসাথে প্রাণে। ছাত্রের কণ্ঠে গান শিক্ষক তুমি জীবনের গান, তুমি দিলে জ্ঞানের দান। তোমা...

জনপ্রিয় লেখা

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ -- "ত্রয়ী কাব্য" ------------------------------------------------------------------------------ সুনন্দ মন্ডল নবীনচন্দ্র সেন সাহিত্যে তথা বাংলা কবিতার জগতে এক অবিস্মরণীয় নাম। তিনি চট্টগ্রাম জেলার নওয়াপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ১৮৪৭ সালে তাঁর জন্ম এবং মত্যু ১৯০৯ সালে। বঙ্কিমচন্দ্র তাঁকে 'বাংলার বায়রন' বলেছেন। ‎জীবৎকালীন যুগে আত্মপ্রত্যয়ের মধ্যে জাতীয় চরিত্র আত্মস্থ করে নতুন সংস্কারে প্রয়াসী হয়ে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখেছেন।মধুসূদন-হেমচন্দ্র-নবীনচন্দ্র--এই তিন কবি বাংলা কাব্যধারায় প্রাণ সঞ্চার করেছিলেন। বিশেষত মহাকাব্য লেখার দুঃসাহস দেখিয়েছিলেন। এদিক থেকে মধুসূদন দত্ত একজন সফল মহাকাব্যিক। তাঁর 'মেঘনাদ বধ' কাব্যের মত গভীর ও ব্যঞ্জনাময় না হলেও নবীনচন্দ্র সেনের 'ত্রয়ী' কাব্য বিশেষ মর্যাদা দাবি করতেই পারে। তাছাড়া 'ত্রয়ী' কাব্যে ধর্মীয় ভাবধারার আবেগ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ‎ ‎নবীনচন্দ্র সেন বহু কাব্য লিখেছেন। যেমন- 'অবকাশরঞ্জিনী','পলাশীর যুদ্ধ', 'ক্লিওপেট্রা', 'রঙ্গমতী', 'খ্রীষ্ট', ...

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা শ্রীজিৎ জানা "সময় চলিয়া যায় নদীর স্রোতের প্রায়"। স্রোতের ধারা তার দু'প্রান্তে রেখে যায় ভাঙাগড়ার চিহ্ন। কালের দৃশ্যপটেও পরিবর্তনের ছবি অনিবার্যভাবেই চোখে পড়ে। সমাজ সময়ের ছাঁচে নিজেকে গড়ে নেয় প্রতিনিয়ত।  সেখানে মনে নেওয়ায় বাধা থাকলেও,মেনে নেওয়ার গাজোয়ারি চলে না। ফলত কাল বদলের গাণিতিক হিসেবে জীবন ও জীবিকার যে রদবদল,তাকেই বোধকরি সংগ্রাম বলা যায়। জীবন সংগ্রাম অথবা টিকে থাকার সংগ্রাম।  মানুষের জীবনযাপনের ক্ষেত্রে আজকে যা অত্যাবশ্যকীয় কাল তার বিকল্প রূপ পেতে পারে অথবা তা অনাবশ্যক হওয়াও স্বাভাবিক। সেক্ষেত্রে উক্ত বিষয়টির পরিষেবা দানকারী মানুষদের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হওয়া অস্বাভাবিক নয়। এক কালে গাঁয়ে কত ধরনের পেশার মানুষদের চোখে পোড়তো। কোন পেশা ছিল সম্বৎসরের,আবার কোন পেশা এককালীন।  সব পেশার লোকেরাই কত নিষ্ঠা ভরে গাঁয়ে  তাদের পরিষেবা দিত। বিনিময়ে সামান্য আয় হত তাদের। আর সেই আয়টুকুই ছিল  তাদের সংসার নির্বাহের একমাত্র উপায়। কালে কালান্তরে সেই সব পেশা,সেই সব সমাজবন্ধুরা হারিয়ে গ্যাছে। শুধুমাত্র তারা বেঁচে আছে অগ্রজের গল্পকথায়,আর বিভিন...

গ্রন্থ আলোচনা: শর্মিষ্ঠা দেবনাথ

প্রতিবাদ যখন অগ্নিবাণী বাংলাদেশে নারীমুক্তি ও নারী আন্দোলনের পুরোধা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ১৯৯তম জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদিত হল " আসিফা এবং.." কাব্য সংকলনটির মধ্যদিয়ে।সংকলনটির বিশেষত্ব হল,এটি উৎসর্গ করা হয়েছে নারীর সম্মান রক্ষার আন্দোলনের যোগ্যতম ব্যক্তি শহীদ শিক্ষক বরুন বিশ্বাসকে। সংকলক প্রকাশক সন্দীপ সাহু নিজে এবং বিশিষ্ট কবি সাহিত্যিকদের দিয়ে লিখিয়ে নিয়েছেন এমন কিছু কবিতা, যা শুধুমাত্র শব্দ ও ছন্দের অনুবন্ধ নয়, এক একটি অগ্নিবাণী।আসলে জীবনকে দেখার স্বাতন্ত্র‍্যে কবিরা সব সময়ই অগ্রগণ্য এবং অনন্য।যুগ ও জীবন দ্বন্দ্বের কণ্ঠস্বরকে আশ্রয় করে,একদিকে মনের প্রবল দাহ ও অন্যদিকে  নির্যাতিতা শিশুকন্যা ও নারীর প্রতি মনের গভীর আকুলতা থেকে প্রকাশ পেয়েছে "আসিফা এবং" এর  কবিতাগুলি।এক অন্ধকার সময়ের মুখোমুখি আমরা,সেই অন্ধকার আমাদের নিয়ে এসেছে সামাজিক অবক্ষয়ের শেষধাপে যেখানে নৈতিকতা,পাপবোধ,গ্লানিকে সরিয়ে রেখে, সমাজের বানানো নিয়মকে তোয়াক্কা না করে,অনায়াস দক্ষতায় ও ক্ষিপ্রতায় নিজেরই ধর্মচেতনাকে জলাঞ্জলি দিয়ে কিছু মানুষ তার পশুত্বের পরিচয় দিয়েছে ধর্ষণ ও ন...

শ্যামাপদ মালাকারের কবিতা

চোখ """"""" নদী, অরণ্য, রাতের ফালি চাঁদ- সবেই তো আমার...স্বর্ণপিঁড়িটাও!। সেদিন, শুকতারাটার গা' মাপতে গিয়ে মনে হল, --ওরা আমার চেয়েও সুখী? দেখিনা একবার গাইতি-শাবল চালিয়ে... চালালাম। জল-মাটি ভেজা একটা 'চোখ' কুড়িয়ে ফিরলাম! সেই চোখদিয়ে দেখি-- শেষ বিকেলের নিরন্ন আঁচে ঝলসানো বুকে নীড়ে ফিরছে ধূলিমাখা কত কাল পা, কি শান্তি - কি তৃষ্ণা! পাতাক্ষোয়া কোদালেরর মাথায় ঝরেপড়া ললাটের ঘামে, কারা যেন জীবন শাণ দেয়! রুক্ষঠোঁটের আবরণে এক সময় নেমে আসে শিশিরস্নাত কালনিশি-- মাঝের ব্যবধান মুছে দেয় প্রতিশ্রুতির ভীড়- - পূর্বজনমের নিদর্শনচুম্বন শেষে হেরে যায় কার মমতাজ-- ম্লান হয়ে যায় কত পিঁড়ি! ... ম্লান হয়ে যায় কত পিঁড়ি! ... ম্লা...

কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা: এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায় ।। পার্থ সারথি চক্রবর্তী

  কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা : এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায়  পার্থ সারথি চক্রবর্তী  কথায় বলে বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। রাজার শহর কোচবিহারের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা আরো অনেক বেশি। দুর্গাপূজা আর দীপাবলির মতো দু'দুটো বিরাট মাপের উৎসবের রেশ কাটতে না কাটতেই, এ শহর ভাসে রাস উৎসবের উন্মাদনায়। মদনমোহন ঠাকুর কোচবিহারের প্রাণের ঠাকুর। তাঁকে নিয়ে সবার আবেগ আর শ্রদ্ধা ও ভালবাসা এখানে বাঁধনছাড়া। এক অপূর্ব মিলনোৎসবের চেহারা নেওয়া এই উৎসব ঐতিহ্যবাহী ও ঐতিহাসিক। জন, মত, সম্প্রদায়ের উর্ধে এই উৎসবের গ্রহণযোগ্যতা। সময়ের কষ্টি পাথরে পরীক্ষিত! এক প্রাণের উৎসব, যা বহুদিন ধরেই গোটা উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ উৎসবে পর্যবসিত।কোচবিহারের এই রাস উৎসবকে কেন্দ্র করে যে মেলা হয় তাও সময়ের হাত ধরে অনেক বদলে গেছে। এসেছে আধুনিকতার ছোঁয়া! শৈশবে বাবার হাত ধরে যে মেলা দেখেছি তা চরিত্র ও আকৃতি দু'দিক থেকেই বদলে গেছে। গত পঁচিশ বছর ধরে খুব কাছে থেকে এই উৎসব ও মেলা দেখা, অনুভব করার সুযোগ হয়েছে। যা দিনদিন অভিজ্ঞতা ও প্রাপ্তির ঝুলিকে সমৃদ্ধ করে গেছে প্রতি ক্ষেত্রেই।  খুব সংক্ষেপে এই উৎসবের ইতিহাস না জানাটা কিন্তু অবিচারই ...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কোন বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো (যেমন, কবিতা ১২-১৪ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে)। তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়। সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৫-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # *) ব্যবহার করবেন না। ৫) লেখার নীচে একটি ঘোষণা দিন: ...

মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা 2024 সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি (লেখক ও সম্পাদকীয় দপ্তরের কথোপকথন আকারে) --কী পত্রিকা? --নবপ্রভাত। --মুদ্রিত না অনলাইন? --মুদ্রিত। --কোন সংখ্যা হবে এটা? --বইমেলা 2024। --কোন কোন ধরনের লেখা থাকবে? --প্রবন্ধ-নিবন্ধ, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া। --বিশেষ কোন বিষয় আছে? --না। যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে। --শব্দ বা লাইন সংখ্যার কোন বাঁধন আছে? --না। নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো (যেমন, কবিতা 12-14 লাইনের মধ্যে, অণুগল্প কমবেশি 200/250শব্দে)। তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়। --ক'টি লেখা পাঠাতে হবে? --মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। --ফেসবুক বা অন্য কোন প্লাটফর্মে প্রকাশিত লেখা কি পাঠানো যাবে? --না। সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। --পত্রিকা কোন সময়ে প্রকাশিত হবে? --জানুয়ারি 2024-এর দ্বিতীয় সপ্তাহে। --লেখা পাঠানোর শেষতারিখ কত? -- 17 ডিসেম্বর 2023। --কীভাবে পাঠাতে হবে? --মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। --লেখার সঙ্গে কী কী দিতে হবে? --নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) --বিশেষ সতর্কতা কিছু ? --১)মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন '...

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

বসন্তের কোকিল তুমি   বিচিত্র কুমার                      (০১) তোমার দু-আঁখির গহীন অরণ্যে একটা স্বপ্নের বহমান নদী রয়েছে, তারই রেশ ধরে আমি হেঁটে চলি অজানা বসন্তের পথে নীর উদ্দেশ্যে। সে চলার কোন শেষ সীমা নেই তাই আমার বিষণ্ণ একতারা সন্ন্যাস খুঁজে ফিরে , কবে তুমি বুঝবে অনুশ্রী মনের পর্দা খুলে একুশ বসন্ত তোমার রঙ ছিটিয়ে যাচ্ছে অচিনপুরে। এদিকে আমার দেহের প্রতিটি শিরা ধমনীতে প্রবাহিত হচ্ছে তোমার ভালোবাসার একটু উষ্ণতা পাবার জন্যে, শুধু অনুভবে তাণ্ডব উচ্ছাসিত হচ্ছে--- যেদিকে তাকাই --- ফুলে ফুলে ভ্রমর গুনগুনিয়ে উড়ে উড়ে পরে বসন্তের কোকিল গান গায় নব বসন্তে, তোমার দুই চোখে আমার একই ছায়া রয়ে যায় উতলা ভালোবাসার সীমান্তে।                 (০২)        এক রক্তাক্ত বসন্তের স্মৃতি কোন এক উতলা বসন্তের সকালে পুষ্পবনে ফুটেছিল একটি টকটকে লাল গোলাপ, তার সাথে হয়েছিলো দেখা প্রথম ফাগুনে হয়েছিল দুজনার এ জীবনের আলাপ।  তারপর প্র...

উৎসবের সৌন্দর্য: সেকালে ও একালে।। সৌরভ পুরকাইত

  উৎসবের সৌন্দর্য:  সেকালে ও একালে   সৌরভ পুরকাইত বাংলার উৎসব বাংলার প্রাণ। প্রতিদিনের জীবনযাপনের মধ্যে যখন মন ক্লান্ত হয়ে পড়ে তখন তাকে বেঁচে থাকার রসদ যোগায় এই উৎসব। কথায় বলে 'বারো মাসে তেরো পার্বণ'।মন আনন্দই চায়।তাই তাকে সজীবতা দিতে,পরিবারের,সমাজের ভালো-মন্দের কথা মাথায় রেখে মানুষ নিজেই সৃষ্টি করে নিয়েছে নানাবিধ উৎসবগুলিকে। একেবারে প্রাচীন কাল থেকে আজ পর্যন্ত মানুষ কখনোই উৎসব বিমুখ ছিল না।উৎসবই তাকে ঘর থেকে বাইরে টেনে এনেছে,চিনতে শিখিয়েছে আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার আনন্দকে। উৎসব আসলে প্রাণের সাথে প্রাণের যোগ, হৃদয়ের সাথে হৃদয়ের যোগ।রবীন্দ্রনাথ বলেছেন 'সত্য যেখানেই সুন্দর হয়ে প্রকাশ পায় সেইখানেই উৎসব'।হৃদয়ের সেই সুকোমল বৃত্তির জাগরণ যেন ফুটে ওঠা ফুলেরই মতো সত্য ও সুন্দর।এই জাগরণই উৎসব। তাই নানা কিছুর মধ্য দিয়ে,নানা উপলক্ষ্যে এই উৎসব প্রকাশ পায়। প্রাচীনকালে মানুষের হাতে না ছিল পসার, না ছিল পসরা।ছিল মনের আন্তরিকতা,মানুষকে কাছে টেনে নেবার ক্ষমতা।সেটাই ছিল উৎসবের সৌন্দর্য। তাই সেদিনের উৎসবে ক্ষুদ্র,তুচ্ছ উপকরণও প্রাণের উচ্ছ্বাসে মহৎ হয়ে উঠত।সেকালের উৎসবে লোক দেখানো ব্যাপার কিছু ...

অনুভবে, অনুধ্যানে অনালোকিত কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী ।। সুপ্রিয় গঙ্গোপাধ্যায়

"এ কালে একটু লেখাপড়া জানা থাকাতে, এবং বঙ্গভাষায় অনেক গুলি পাঠ্য পুস্তক হওয়াতে কেবল পরনিন্দা করিয়া সময় কাটাইতে তাঁহাদের আবশ্যকও হয় না, প্রবৃত্তিও হয় না। …নিতান্ত সখ্যতা বা আত্মীয়তা না থাকিলে, সকল পেটের কথা খুলিয়া নিঃশ্বাস ছাড়িয়া তৃপ্তিলাভ করা, এ কালের মেয়েরা পছন্দ করেন না। তাঁহারা বইখানি, কার্পেটটুকু, নিজের স্বামী পুত্র লইয়া দিন যাপন করিতে বা একেলা থাকিতে কষ্ট বোধ করেন না।" —শরৎকুমারী চৌধুরাণীর এই লেখা (ভারতী ও বালক/ আশ্বিন কার্তিক, মাঘ/ ১২৯৮) দেখে বুঝতে অসুবিধা হয় না উনিশ শতকে নারীর লেখাপড়া শেখার উদ্দেশ্য ছিল মূলত আত্মমুক্তির জন্য। শুধু লেখাপড়া শেখা নয়, সাহিত্য সৃষ্টিতেও ছয়'এর দশক (উনিশ শতকের) থেকে নারীরা যে ধারা সূত্রপাত করেছিল তা নারীর আত্মমুক্তির পথকেই প্রসারিত করেছিল। ছয়'এর দশকের পূর্বেই ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে প্রথম ছাপার হরফে নারী রচিত কাব্য 'চিত্তবিলাসিনী' প্রকাশিত হয়। লেখেন কৃষ্ণকামিনী দাসী। ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে কবি ঠাকুরাণী দাসীর নাম উঠে আসতে থাকে, যিনি কবিতার পাশাপাশি গদ্যও লিখতেন। ঠিক সেই বছরই জন্মগ্রহণ করেন কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী, যাঁর কবিতা লেখা আত্মমুক্...

বছরের বাছাই

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কোন বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো (যেমন, কবিতা ১২-১৪ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে)। তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়। সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৫-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # *) ব্যবহার করবেন না। ৫) লেখার নীচে একটি ঘোষণা দিন: ...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৪তম সংখ্যা ।। ফাল্গুন ১৪৩১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

  এই সংখ্যায় একটি গ্রন্থ আলোচনা ও একটি ধারাবাহিক রচনা ছাড়া সব লেখাই ভাষা দিবস, মাতৃভাষা, ভাষাচেতনা ও ভাষা সমস্যা বিষয়ক রচনা। লেখাগুলি এই সংখ্যাকে অনেকটাই সমৃদ্ধ করেছে। পড়ুন। শেয়ার করুন। মতামত জানান। লেখকগণ নিজের নিজের লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন যতখুশি, যে মাধ্যমে খুশি। কিন্তু স্ক্রিনশট শেয়ার নৈব নৈব চ!  অন্য বিষয়ের লেখাগুলি আগামী সংখ্যার জন্য রইল।  সকলকে ধন্যবাদ, অভিনন্দন। ভালো থাকুন।   --সম্পাদক, নবপ্রভাত। ==  সূ  চি  প  ত্র  == প্রবন্ধ-নিবন্ধ অমর ২১শে ফেব্রুয়ারি বাঙ্গালীর বাংলা ভাষা দুর্জয় দিবস।। বটু কৃষ্ণ হালদার ভাষা শহীদদের পঁচাত্তর বছর।। অনিন্দ্য পাল একুশে ফেব্রুয়ারি : বাঙালির শ্রেষ্ঠ অশ্রুবিন্দু।। জীবনকুমার সরকার কবিগানের সাহিত্যিক ও সমাজতাত্ত্বিক মূল্য।। বারিদ বরন গুপ্ত বিপন্ন মাতৃভাষা ও সংস্কৃতি।। শ্যামল হুদাতী মায়ের দুধ আর মাতৃভাষা।। প্রদীপ কুমার দে একুশে ফেব্রুয়ারি : কিছু কথা।। বনশ্রী গোপ বাংলায় কথা বাংলায় কাজ।। চন্দন দাশগুপ্ত বিপন্ন মাতৃভাষা ও তার মুক্তির পথ।। মিঠুন মুখার্জী. হে অমর একুশে, তোমায় ভুলিনি, ভুলব না।। মহম্মদ মফিজুল ইসলা...

প্রচ্ছদ।। ৮৩তম সংখ্যা ।। মাঘ ১৪৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ।। প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র

  বিঃ দ্রঃ আগামী ফেব্রুয়ারি সংখ্যার জন্য ভাষা দিবসের কথা মাথায় রেখে লেখা পাঠান। email: nabapravatblog@gmail.com  সূচিপত্র ফিচার।। গোপাল ভাঁড়ের অজানা সত্য ।। লোকনাথ পাল প্রবন্ধ ।। মসুয়ার রায় পরিবার এবং বঙ্গসংস্কৃতি ।... প্রবন্ধ ।। সুধীন্দ্রনাথ দত্ত: কাব্যের দার্শনিক ও ন... কবিতায় সেতুবন্ধন (তৃতীয় অংশ) শিল্পবিপ্লবোত্তর কাল... রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর বিদ্রোহী প্রেমের কবিতা: ... কবিতা ।। এই মন ভালো নেই দিনে ।। সুপ্রভাত মেট্যা কবিতা ।। জোছনা আলোর স্বপ্ন ।। তুষার ভট্টাচাৰ্য কবিতা ।। নিঃস্ব হবো ।। লালন চাঁদ কবিতা ।। ভালোলাগা  ।। আজিজ উন নেসা  গল্প ।। স্বীকারোক্তি ।। চন্দন দাশগুপ্ত কবিতা ।। শীতের দিন ।। প্রশান্ত কুমার মন্ডল কবিতা ।। শীতকাল ।। অঙ্কিতা পাল নাসির ওয়াদেনের দুটি কবিতা ভূতের লেখা ছড়া ।। বদরুল বোরহান কবিতা ।। ব্যস্ত ।। আলাপন রায় চৌধুরী ছোটগল্প ।। লম্বুর স্বপ্নপূরণ ।। পরেশ চন্দ্র মাহাত কবিতা ।। সৎকার ।। সুমিত মোদক কবিতা।। শীত বৈচিত্র্য ।। সুমিতা চৌধুরী পুস্তক-আলোচনা ।। নিউটনের আপেল ও প্রেমিকা ।। অরবিন্... গল্প।। শান্তির পথে …...।। বন্দনা সেনগুপ্ত কবিতা ।। মা...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮১তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩১ নভেম্বর ২০২৪

সূচিপত্র  প্রবন্ধ।। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার গবেষণা ।। শ্যামল হুদাতী প্রবন্ধ ।। নবদ্বীপের রাস : মহাপ্রভু চৈতন্যদেব থেকে রাজা কৃষ্ণচন্দ্র ।। বারিদ বরন গুপ্ত  প্রবন্ধ।। কবিতায় সাংস্কৃতিক সেতুবন্ধন ।। রণেশ রায় প্রবন্ধ ।। সুকান্ত ভট্টাচার্য: বিপ্লবী চেতনার কবি ।। বিচিত্র কুমার কবিতা ।। পরিযায়ী বৃষ্টি ।। সন্দীপ ভান্ডারী দুটি কবিতা : চয়ন দত্ত কবিতা ।। সমঝোতা ।। বিশ্বজিৎ বাউনা কবিতা।। ভালোবাসা।। অরুণ কুমার দাঁ কবিতা।। সময়ের গতিপথে ।। কেতকী বসু গ্রন্থ   আলোচনা।। অরবিন্দ পুরকাইত ।।  গ্রন্থ : বিক্রমজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের  "বাংলা সাহিত্যে মনুষ্যেতর প্রাণীকেন্দ্রিক ছোটগল্পের ধারা" ছোটগল্প।। হ্যাপি বার্থডে।। পরেশ চন্দ্র মাহাত কবিতা।। অন্ধকার রাত জাগে।। অঞ্জন বল অনুবাদ কবিতা।। তুমি আসার আগে।। সুস্মিতা পাল দুটি কবিতা ।। রবীন বসু কবিতা ।। নতুন শাসন ।। মানস মণ্ডল কবিতা ।। শীত ।। প্রতীক মিত্র কবিতা ।। সাঁঝবাতি ।। তীর্থঙ্কর সুমিত কবিতা ।। চুপ কথা হৃদয়ে ।। তুষার ভট্টাচাৰ্য ছড়া ।। ভোর ।। বদ্রীনাথ ছোটগল্প ।। ফিরে পাওয়া ।। সমীর কুমার দত্ত কবিতা ।। রূপ বদলায় ।। সুমিত মোদক কবিতা ।। এভা...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৭তম সংখ্যা ।। জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ মে ২০২৫

  প্রচ্ছদ চিত্র: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সূচিপত্র রবীন্দ্রনাথ এবং কয়েকজন নারী ।। অনিন্দ্য পাল পরাবাস্তববাদ ও বাংলায় জীবনানন্দের কাব্যচর্চা ।। রণেশ রায় প্রতীক্ষা ।। চন্দন দাশগুপ্ত আশ্রয় ।। সায়নী সাহা বয়স্ক শিক্ষাকেন্দ্র ।। দেবাংশু সরকার প্রণামের প্রভু ।। সুপ্রভাত মেট্যা দুর্ভাগ্যের সম্মুখ সমরে ।। সমীর কুমার দত্ত আচমকা শরৎ ।। অর্ণব সামন্ত প্রতিধ্বনি ✍️ সুবীর কুমার ঘোষ জীবন যেখানে যেমন ।। আরজু মুন জারিন বছর সীমান্তে হিসেব নিকেশ ।। রানা জামান চারটি কবিতা ।। বিবেকানন্দ নস্কর আমরা আছি ।। লালন চাঁদ চাওয়া ।। মাথুর দাস কাগজ ফুলে ।। সফিউল মল্লিক সময়ের স্রোত ।। দুর্গাদাস মিদ্যা তুমি মানুষ ।। বদরুল বোরহান দিঘার সমুদ্র ।। মাখনলাল প্রধান পুস্তক-আলোচনা ।। অরবিন্দ পুরকাইত সংযম ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত  চেনা প্রতিবেশী (প্রথম পর্ব) ।। দীপক পাল খেলার মাঠ ।। তূয়া নূর বন্ধু শ্যামলকান্তি ।। শংকর ব্রহ্ম তুমি তোমার মতো থাকলে ।। সত্যেন্দ্রনাথ বেরা গ্রীষ্মে খুবই হিংস্র রবি ।। জগবন্ধু হালদার স্বপ্ন দর্শন ✍️ পার্থ প্রতিম দাস মৌন মুখরতা ।। মুসা মন্ডল রুদ্র বৈশাখ ।। দীনেশ সরকার চিহ্নিত পদযুগ পদাঘাত ।। দেবাশীষ...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯০তম সংখ্যা ।। ভাদ্র ১৪৩২ আগস্ট ২০২৫

সূচিপত্র ------------- স্বদেশ-স্বাধীনতা বিষয়ক লেখা  ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে চেনা-অচেনা বরণীয় নারী ।। হিমাদ্রি শেখর দাস স্বাধীনতা সংগ্রামের কিছু অচর্চিত কাহিনি ।। প্রণব কুমার চক্রবর্তী স্বাধীনতার কবিতা ।। অনিন্দ্য পাল স্বাধীনতা আন্দোলনে রাসবিহারী বসু অবদান ।। শ্যামল হুদাতী উড়ান কথা ।। সুদীপ কুমার চক্রবর্তী স্বপ্নের ভারত ।। সৌমিত্র মজুমদার আজ আর কদর নেই ।। সতুচট্টোরাম স্বাধীনতার কবিতাগুচ্ছ ।। অভিজিৎ হালদার শহিদ ব্রত ও অন্য দুটি কবিতা ।। বিবেকানন্দ নস্কর স্বাধীন হবো কবে ।। তীর্থঙ্কর সুমিত দুটি কবিতা ।। তুষার স্বাধীনতা ।। অঞ্জনা গোড়িয়া সাউ স্বাধীনতা মানে ।। পাভেল আমান বাংলা ভাষা : বাঙালি ।। অশোক দাশ বড়দি অপরূপা দেবীর জবানীতে ক্ষুদিরাম বসু ।। সমীর কুমার দত্ত স্বাধীনতা ।। কার্ত্তিক মণ্ডল আমার দেশ ।। বিপ্লব নসিপুরী ভারতমাতার বীর সন্তান ।। আশীষ কুমার চক্রবর্তী স্বাধীনতার আলো ।। অঞ্জনা মজুমদার আমরা স্বাধীন ।। রাফেল ইসলাম নতুন ভারত । কল্যাণ কুমার শাণ্ডিল্য রণ স্বাধীনতার রঙ ।। সফিউল মল্লিক স্বদেশ ।। জীবন সরখেল ভারতবর্ষ ।। নিশান বর্মা শতবর্ষে সুকান্ত ভট্টাচার্য স্মরণে লেখা সুকান্ত ভট্টাচার...

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে চেনা-অচেনা বরণীয় নারী ।। হিমাদ্রি শেখর দাস

First row (left to right): Prafulla Nalini Brahma, Shanti Ghosh, Suniti Chowdhuri and Bina Das . Second row (left to right): Kamala Dasgupta, Suhasini Ganguly, Pritilata Waddedar and Sarojini Naidu.   Third row (left to right): Abha Maity, Sucheta Kripalini, Lila Nag and Abha Gandhi. Fourth row (left to right): Indusudha Ghosh, Kalpana Dutta, Aruna Asaf Ali and Matangini Hazra. Fifth row (left to right): Basanti Devi, Renuka Ray, Phulorenu Guha and Manikuntala Sen. ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে  চেনা-অচেনা বরণীয় নারী হিমাদ্রি  শেখর দাস ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে পুরুষের সাথে মহিলারাও কখনও অন্তরালে থেকে কখনও প্রকাশ্যে এসে লড়াই করেছেন।  মেয়েদের বাইরে বেরিয়ে লাঠিখেলা, পিস্তল চালানো, রাত্রে ছেলেদের সঙ্গে ঘুরে বেরানো, পুলিশের সঙ্গে লুকোচুরি খেলা, জেলে যাওয়া ছিল অত্যন্ত দুঃসাহসিক কাজ। তবু তৎকালীন সমজে কোনঠাসা হয়ে থাকা মেয়েরাও  নিজ নিজ জায়গায় থেকে দেশের সেবা করেছেন তা অসম্ভবকে সম্ভব করার মতই দুরুহ কাজ। তাঁদের মধ্যে দু একজন রাজ পরিবারের হলেও বেশির ভাগই ছিল সাধারণ ঘরের অতি স...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮২তম সংখ্যা ।। পৌষ ১৪৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

  সূচিপত্র অন্নদাশঙ্কর রায়ের সাহিত্য: সমাজের আয়না ।। বিচিত্র কুমার প্রবন্ধ ।। বই হাতিয়ার ।। শ্যামল হুদাতী কবিতায় সংস্কৃতায়ন (দ্বিতীয় ভাগ ) ।। রণেশ রায় পুস্তক-আলোচনা ।। অরবিন্দ পুরকাইত কবিতা ।। লেগে থাকা রোদ্দুরের ঘ্রাণের মতো ।। জয়শ্রী ব্যানার্জি কবিতা ।। ভুল ।। সুপ্রভাত মেট্যা কবিতা ।। উন্মেষ ।। বিশ্বজিৎ সেনগুপ্ত কবিতা ।। গার্হস্থ্য ।। বিবেকানন্দ নস্কর একগুচ্ছ বিজয়ের কবিতা ।। বিচিত্র কুমার গল্প ।। পোষ্য ভূত ।। সমীর কুমার দত্ত কবিতা ।। আশপাশ ।। প্রতীক মিত্র কবিতা ।। মেঘ ।। তীর্থঙ্কর সুমিত অণুগল্প ।। বংশীবদনের সুখদুঃখ ।। দীনেশ সরকার কবিতা ।। গভীর রাত ।। সুনন্দ মন্ডল তিনটি কবিতা ।। সুশান্ত সেন ভালোবাসার বাসা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত অণুগল্প ।। শিক্ষকের সম্মান ।। মিঠুন মুখার্জী কবিতা।। প্রশ্ন ।। জীবন সরখেল কবিতা ।।ক্ষরিত সে পথ ।। রহিত ঘোষাল কবিতা ।। রক্ত দিয়ে কেনা ।। মুহাম্মদ মুকুল মিয়া কবিতা ।। কংক্রিট ।। আলাপন রায় চৌধুরী ছড়া ।। শীত নেমেছে ।। রঞ্জন কুমার মণ্ডল কবিতা ।। কিছু শব্দ ।। সমীর কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় কবিতা ।। শীতের নগ্নতা ।। রানা জামান কবিতা ।। পথ চলা ।। পাভেল আমান বেদ পু...

সূচিপত্র ।। ৮৯তম সংখ্যা ।। শ্রাবণ ১৪৩২ জুলাই ২০২৫

সূচিপত্র   প্রবন্ধ ।। বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় ।। মাখনলাল প্রধান প্রবন্ধ ।। শ্রমিকের অধিকার ।। চন্দন দাশগুপ্ত প্রবন্ধ ।। ভিনগ্রহীদের সন্ধানে ।। শ্যামল হুদাতী প্রবন্ধ ।। নারীমর্যাদা ও অধিকার ।। হিমাদ্রি শেখর দাস কবিতা ।। মশালের রং তুলি ।। তূণীর আচার্য কবিতা ।। জললিপি ।। রূপক চট্টোপাধ্যায় গুচ্ছকবিতা || শিশির আজম নিবন্ধ ।। পূনর্জন্ম ।। শংকর ব্রহ্ম মুক্তভাবনা ।। কোলাহল তো বারণ হলো ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত গল্প ।। গানের হাড় ।। শুভজিৎ দত্তগুপ্ত গল্প ।। শিকড়ের খোঁজে ।। সমীর কুমার দত্ত সুপ্রভাত মেট্যার পাঁচটি কবিতা গ্রন্থ-আলোচনা ।। আবদুস সালামের কাব্যগ্রন্থ 'অলীক রঙের বিশ্বাস'।। তৈমুর খান অণুগল্প ।। হরিবোল বুড়ো ।। সুমিত মোদক রম্যরচনা ।। গোয়েন্দা গোলাপচন্দ আর প্রেমের ভুল ঠিকানা ।। রাজদীপ মজুমদার দুটি গল্প ।। মুহাম্মদ ফজলুল হক দুটি কবিতা ।। তীর্থঙ্কর সুমিত কবিতা ।। মেঘমুক্তি ।। বন্দনা পাত্র কবিতা ।। ব্যবচ্ছিন্ন শরীর ।। কৌশিক চক্রবর্ত্তী কবিতা ।। শমনচিহ্ন ।। দীপঙ্কর সরকার কবিতা ।। ভালোবাসার দাগ ।। জয়শ্রী ব্যানার্জী কবিতা ।। ফণীমনসা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ছড়া ।। আজও যদি ।। বদ্রীন...

সুকান্ত ভট্টাচার্যের ওপর গদ্য || শিশির আজম

'ছাড়পত্র'ই আজ আমাদের ছাড়পত্র (তারুণ্যের কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের শততম জন্মদিনে শ্রদ্ধার্ঘ্য) শিশির আজম ~~~~~~~~~~~~~~~~~~ সুকান্ত জন্মেছিলেন অগ্নিগর্ভ এক সময়ে। যখন মাতৃভূমি পরাধীন। পার্টি, মার্কসবাদ, সাহিত্য — কোন কিছুই তার কাছে আলাদা ছিল না। কবিতা একটি আর্ট ফর্ম। হ্যাঁ, সত্যি। এটা আরও সত্যি হয় যদি তা মানুষকে তাড়িত করে, মানুষকে উদ্বুদ্ধ করে, মানুষকে ভালোবাসায় প্ররোচণা দেয়। এই পথটাই বেছে নিয়েছিলেন সুকান্ত ভট্টাচার্য। এর ছাপ-তাপ তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'ছাড়পত্রে'র পাতায় পাতায় পাওয়া যায়। কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশিত হয় ১৯৪৮ সালে। মনে রাখা দরকার, এর পূর্বে ১৯৪০-এ প্রকাশিত হয়েছে সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের 'পদাতিক'। আর তারও পূর্বে ১৯৩৭-এ আমরা পেলাম দিনেশ দাসের 'কাস্তে'। নিশ্চয় এসবের উত্তাপ সুকান্তের চেতনায় ছাপ ফেলেছিল। কবিতা কখনো কখনো শ্লোগান হয়ে উঠতে পারে। হোক। এই শক্তি কবিরই আছে। নজরুলকে কি আমরা অগ্রাহ্য করতে পারবো? সুভাষ মুখোপাধ্যায় বা শামসুর রাহমানকে? পিকাসোর 'গুয়ের্নিকা' অথবা জয়নুলের 'দুর্ভিক্ষের চিত্রমালা' কি 'আর্ট' নয়? হ্যা আপনি প্রশ্ন করতেই পা...

মাসের বাছাই

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯১তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পাদকীয় দপ্তর থেকে এই সংখ্যায়  'শিক্ষা ও শিক্ষক' বিষয়ক বেশ কিছু লেখার পাশাপাশি রয়েছে বিচিত্র বিষয়ের আরও কিছু লেখা। সব মিলিয়ে সংখ্যাটি আপনাদের সমৃদ্ধ করবে, আপ্লুত করবে — এ বিষয়ে আমরা আশাবাদী। আপনাদের মতামত অবশ্যই জানাবেন। আমরা প্রতীক্ষিত।            আগামী অক্টোবর ২০২৫ সংখ্যা 'উৎসব সংখ্যা' হিসাবে প্রকাশিত হবে। ওয়েব সংখ্যার পাশাপাশি নির্বাচিত লেখাগুলি নিয়ে একটি pdf এবং তার মুদ্রিত সংস্করণও প্রকাশিত হবে। তাই অপ্রকাশিত ভালো লেখা পাঠান। বিশেষ কোনও বিষয় নেই। প্রবন্ধ-নিবন্ধ-ফিচার ২০০০ শব্দ, গল্প ১২০০ শব্দ, অণুগল্প ৫০০ শব্দ, কবিতা-ছড়া ২৪ লাইনের মধ্যে হলে ভালো। ইমেলঃ nabapravatblog@gmail.com           বিস্তারিত বিজ্ঞপ্তি আসবে। সামাজিক মাধ্যমে আমদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন। সময় মতো সব সংবাদ পেয়ে যাবেন।  শারদ উৎসবের দিনগুলি সকলের আনন্দে কাটুক এই কামনা করি। —নিরাশাহরণ নস্কর সম্পাদক: নবপ্রভাত মোঃ ৯৪৩৩৩৯৩৫৫৬ Whatsapp Group:  https://chat.whatsapp.com/ AIpj98JKbloFSpeqMcpr6j Facebook Page:  https://www.facebook.com/ share...

ডাকবাক্সের আত্মকথা ।। হারান চন্দ্র মিস্ত্রী

ডাকবাক্সের আত্মকথা হারান চন্দ্র মিস্ত্রী পোস্ট অফিসে কিংবা পথের পাশে, আমরা ছিলাম চিঠিগুলোর আশে। সুখ ও দুঃখের কথা থাকত লেখা ভালোবাসার আতর যেত দেখা। মুঠোফোনের দাপট গেছে বেড়ে স্বপ্ন যত সব নিয়েছে কেড়ে। পত্র লিখে পাঠায় না কেউ মোরে ব্রাত্য জীবন কাটাই কেমন করে? ধীরে ধীরে যাচ্ছি উধাও হয়ে ভারাক্রান্ত স্মৃতি আঁকড়ে ধরে। কোন মানুষ কয় না আমায় ধরে - আবার তোকে নেব আপন করে। আমরা এখন বুঝে গেছি সহে প্রয়োজনের বড় কিছু নহে। সমকালের প্রয়োজনে থেকে বিদায় নিতে হবে ভূবন থেকে। ________   হারান চন্দ্র মিস্ত্রী গ্রাম ও পো: - আমতলা, থানা - ক্যানিং, জেলা - দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পিন - ৭৪৩৩৩৭

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কোন বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো (যেমন, কবিতা ১২-১৪ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে)। তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়। সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৫-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # *) ব্যবহার করবেন না। ৫) লেখার নীচে একটি ঘোষণা দিন: ...

শিক্ষার সেকাল-একাল : এক দার্শনিক অনুসন্ধান ।। কৃশানু ব্যানার্জী

প্রবন্ধ শিক্ষার সেকাল-একাল : এক দার্শনিক অনুসন্ধান কৃশানু ব্যানার্জী  মানবসভ্যতার ইতিহাসে শিক্ষার স্থান যে সর্বাপেক্ষা কেন্দ্রীয় ও নির্ণায়ক — এ বিষয়ে দ্বিধার অবকাশ নেই। কারণ শিক্ষা কেবল জ্ঞানের বাহনমাত্র নয় , বরং মানুষের আত্মস্বরূপের এক অবিচ্ছেদ্য অনুষঙ্গ , যা সমাজ ও সংস্কৃতির গতিপথকে নির্ধারণ করে। কিন্তু শিক্ষা কেমন ছিল অতীতে এবং কেমন হয়েছে বর্তমানকালে — এই অনুসন্ধান শুধু ঐতিহাসিক বা প্রাতিষ্ঠানিক পর্যালোচনার সীমায় আবদ্ধ নয় ; বরং এর ভেতরে নিহিত আছে এক গভীর দার্শনিক তাৎপর্য। "সেকাল" ও "একাল" — এই দুই কালের শিক্ষা পরস্পরকে নিরন্তর প্রশ্ন করে , কখনও বিরোধিতা করে , কখনও বা পরস্পরের ওপর দাঁড়িয়েই নিজের রূপ নির্মাণ করে। অতএব , শিক্ষার সেকাল-একাল তুলনায় আমাদের কেবল তথ্যের বিবরণ নয় , মানবজীবন ও সমাজচিন্তার প্রকৃত ভিত্তি উপলব্ধি করতে হবে। মানবসভ্যতার অগ্রযাত্রায় শিক্ষা যে একটি অনিবার্য ও মৌল প্রয়োজনে পরিণত হয়েছে, সে বিষয়ে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই। তথাপি 'শিক্ষা' শব্দটির নিতান্ত ভৌত বা প্রাতিষ্ঠানিক ব্যাখ্যা একে পূর্ণাঙ্গ উপলব্ধি করতে সক্ষম নয়। সংস্কৃত ...

শিক্ষার সেকাল ও একাল ।। অমৃতা সাহা

শিক্ষার সেকাল ও একাল অমৃতা সাহা  শিক্ষক শব্দটির ব্যুৎপত্তি √শিক্ষ+ অক অর্থাৎ যিনি শিক্ষা দান করেন। শিক্ষক শব্দটি সংস্কৃত শিক্ষ ধাতু থেকে উদ্ভুত যার অর্থ বিদ্যা গ্রহণ করা, শেখা বা বিদ্যা দান করা। শিক্ষ ধাতুর সঙ্গে ক প্রত্যয় যোগে উৎপন্ন শিক্ষক যার অর্থ শিক্ষা সম্পর্কিত।          শিক্ষককে বলা হয় মানুষ গড়ার কারিগর। শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর থেকে প্রায় ছয় মাস বা আট মাস সে সহজাত প্রবৃত্তি অনুযায়ী শিক্ষা লাভ করে থাকে। তারপর থেকে মা বাবাই তাকে জীবনের প্রথম পাঠ দেন। কী কী করতে হয় আর কী কী করতে নেই তাই দিয়েই শিশুর প্রথম শিক্ষা শুরু হয়। অনুকরণই হলো তখন তার একমাত্র শিক্ষার মাধ্যম। তারপর কথা বলতে শেখা, আশেপাশের সামগ্রী চিনে নিয়ে তাদের নাম বলতে শেখা এভাবে ক্রমান্বয়ে শিক্ষা প্রক্রিয়া চলতেই থাকে।         প্রাচীন কালে পঞ্চম বর্ষে উপনয়ন অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে শিশুর শিক্ষা জীবন শুরু হতো। গুরুগৃহে বসবাস করে, ব্রহ্মচর্য পালনের মাধ্যমে বাল্য ও কৈশোর কাল অতিবাহিত হতো। পুঁথিগত অধ্যয়ন, শ্রুত্বয়ন এর পাশাপাশি জীবনের অন্যান্য বিষয়েও শিক্ষা গ্রহণ করতে হ...

শেষ বেঞ্চের আলো ।। ভাস্কর সিনহা

  শিক্ষক-ছাত্র সম্পর্কের গল্প শেষ বেঞ্চের আলো ভাস্কর সিনহা বিকেলের আলো জানালার শিক ভেদ করে ঢুকে পড়েছিল শ্রেণিকক্ষে। টেবিলের ওপর হাত রেখে বসে ছিলেন আনন্দবাবু—স্কুলের সবচেয়ে পুরোনো শিক্ষক। তাঁর সাদা পাঞ্জাবির কোণায় হলুদ দাগ, চশমার কাঁচ ঘোলাটে, তবু চোখের ভেতর অদ্ভুত দীপ্তি। আজ স্কুলের বার্ষিক অনুষ্ঠান। বক্তৃতার জন্য শিক্ষক-শিক্ষিকারা প্রস্তুত, ছাত্ররা ব্যস্ত মঞ্চসজ্জায়। কিন্তু আনন্দবাবুর বুকের ভেতর অস্বস্তি জমেছে—কারণ তিনি জানেন, আর বেশিদিন তিনি এখানে থাকবেন না। তাঁর কর্মের অবসর আসন্ন। তিনি জানালার বাইরে তাকালেন। খেলার মাঠে ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা খেলছে। তাঁর মনে পড়ল নিজস্ব ছাত্রজীবনের কথা—স্বাধীনতার পরপর সময়। তখন শিক্ষকেরা ছিলেন সমাজের বাতিঘর। একটা গ্রামের মানুষ নিজেদের সন্তানকে গর্বে তুলে দিতেন শিক্ষকের হাতে—"গড়ে দাও মানুষ করে।" আজকের দিনে সে দৃশ্য কোথায়? বিংশ শতকে শিক্ষক ছিলেন সমাজের অভিভাবক; এখন একবিংশ শতকে তাঁদের জায়গা নিয়েছে কোচিং সেন্টার, ডিজিটাল অ্যাপ। ছাত্ররা বলে, "স্যার, ইউটিউবেই সব আছে।" আনন্দবাবুর বুক মোচড় দিয়ে ওঠে। এই সময়ই শ্রেণিকক্ষের দরজা দিয়ে ঢুকল অর্ণব—শেষ ...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮১তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩১ নভেম্বর ২০২৪

সূচিপত্র  প্রবন্ধ।। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার গবেষণা ।। শ্যামল হুদাতী প্রবন্ধ ।। নবদ্বীপের রাস : মহাপ্রভু চৈতন্যদেব থেকে রাজা কৃষ্ণচন্দ্র ।। বারিদ বরন গুপ্ত  প্রবন্ধ।। কবিতায় সাংস্কৃতিক সেতুবন্ধন ।। রণেশ রায় প্রবন্ধ ।। সুকান্ত ভট্টাচার্য: বিপ্লবী চেতনার কবি ।। বিচিত্র কুমার কবিতা ।। পরিযায়ী বৃষ্টি ।। সন্দীপ ভান্ডারী দুটি কবিতা : চয়ন দত্ত কবিতা ।। সমঝোতা ।। বিশ্বজিৎ বাউনা কবিতা।। ভালোবাসা।। অরুণ কুমার দাঁ কবিতা।। সময়ের গতিপথে ।। কেতকী বসু গ্রন্থ   আলোচনা।। অরবিন্দ পুরকাইত ।।  গ্রন্থ : বিক্রমজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের  "বাংলা সাহিত্যে মনুষ্যেতর প্রাণীকেন্দ্রিক ছোটগল্পের ধারা" ছোটগল্প।। হ্যাপি বার্থডে।। পরেশ চন্দ্র মাহাত কবিতা।। অন্ধকার রাত জাগে।। অঞ্জন বল অনুবাদ কবিতা।। তুমি আসার আগে।। সুস্মিতা পাল দুটি কবিতা ।। রবীন বসু কবিতা ।। নতুন শাসন ।। মানস মণ্ডল কবিতা ।। শীত ।। প্রতীক মিত্র কবিতা ।। সাঁঝবাতি ।। তীর্থঙ্কর সুমিত কবিতা ।। চুপ কথা হৃদয়ে ।। তুষার ভট্টাচাৰ্য ছড়া ।। ভোর ।। বদ্রীনাথ ছোটগল্প ।। ফিরে পাওয়া ।। সমীর কুমার দত্ত কবিতা ।। রূপ বদলায় ।। সুমিত মোদক কবিতা ।। এভা...

স্মৃতির আলোয় শিলিগুড়ি স্টেট লেবার ইন্সটিটিউট ।। চন্দন দাশগুপ্ত

স্মৃতির আলোয় শিলিগুড়ি স্টেট লেবার ইন্সটিটিউট    চন্দন দাশগুপ্ত            সালটা ছিল ২০০৫। বদলীর অর্ডারটা পেতেই মন ভাল হয়ে গেল। গত তিনবছর আমি জলপাইগুড়ি জেলার শ্রমদপ্তরের দায়িত্ব সামলাচ্ছিলাম। এবার আমাকে বদলী করা হয়েছে শিলিগুড়ির স্টেট লেবার ইন্সটিটিউটের ডেপুটি ডিরেক্টরের পদে। আমার বাড়িও শিলিগুড়িতে। সুতরাং আরো ভাল করে কাজ করা যাবে।         এই স্টেট লেবার ইন্সটিটিউট ( সংক্ষেপে এস.এল.আই ) ১৯৫৪ সালে কলকাতায় কাঁকুরগাছিতে স্থাপিত হয়। ১৯৯৫ সালে এর একটি শাখা খোলা হয় শিলিগুড়িতে। প্রথমে কলেজ পাড়ার ভাড়া বাড়িতে থাকলেও ১৯৯৮ সালে এটি চলে আসে শিলিগুড়ির উপকন্ঠে দাগাপুর চা বাগানের পাশে, পশ্চিমবঙ্গ শ্রমিক কল্যাণ পর্ষদের গাছপালা ঘেরা অনবদ্য প্রাকৃতিক পরিবেশে অবস্থিত নিজস্ব বাড়িতে। এটি মূলতঃ একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। এখানে বছরের বিভিন্ন সময়ে শ্রম দপ্তরের আধিকারিক, পরিদর্শক এবং অন্যান্য কর্মীদের বিভিন্ন ধরণের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তাছাড়া এখানে অত্যন্ত সুলভে হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড লেবার ওয়েলফেয়ারের একটি এক বছরের পোস্ট...

কোন শিক্ষার আঙ্গিনায় আমরা? ।। শ্যামল হুদাতী

কোন শিক্ষার আঙ্গিনায় আমরা? শ্যামল হুদাতী  -------------------------------- "শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড" – এই কথাটি আজ বহুল প্রচলিত হলেও এর যথার্থতা প্রতিনিয়ত প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছে। কারণ, আমাদের দেশের বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা নানা ধরনের সংকটে জর্জরিত। একদিকে যেমন শিক্ষার গুণগত মান কমছে, অন্যদিকে আবার শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বাড়ছে। শিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্য—জ্ঞান অর্জন, মনুষ্যত্বের বিকাশ, কর্মদক্ষতা তৈরি, এবং মূল্যবোধ গঠনের চেয়ে এখন ফলাফল নির্ভর একটি পদ্ধতিই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ফলে শিক্ষিত হলেও আমরা যোগ্য নাগরিক তৈরি করতে পারছি না। এই পরিস্থিতিকে বলা যায়—"শিক্ষার অব্যবস্থা"। আমাদের দেশে প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক এবং উচ্চশিক্ষা স্তর—প্রতিটি পর্যায়েই নানান সমস্যা বিরাজমান। অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নেই পর্যাপ্ত অবকাঠামো, পর্যাপ্ত শিক্ষক, কিংবা শিক্ষার জন্য অনুকূল পরিবেশ। প্রায়শই দেখা যায়, একটি বিদ্যালয়ে একজন মাত্র শিক্ষক দিয়ে চলছে একাধিক শ্রেণির পাঠদান। উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও গবেষণার অভাব, আধুনিক প্রযুক্তির সীমিত ব্যবহার এবং রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ শিক্ষার মান...

Five poems ।। Prasenjit Das

  Five poems of Prasenjit Das THE FLAME IS ON Life may not be a green leaf, the dews are tears in grief. Life for many maybe cruel, give me the guts for the duel. The good times passed by me, like a humming bird in destiny. If not in life then maybe after, let life be a pleasant chapter. No, I will never give up,...never, be an example for all, forever... THE OPTIMIST Never be drowned in sorrow, as if there is no tomorrow. Tomorrow is a day uncrowned, tomorrow is a time unbound. Many things are left to be done, the path of glory has already begun. The darkness shows the light, life is nothing, nothing but a fight. You will be a winner, sooner or later, the spirit of good will fight for better. The light of honesty burns bright, even in the darkest dark of the night. A LONELY FATHER'S CALL O lonely man! O lonely man! Where is thy rugged winter coat? Bore the ravages of eighty seasons, that still makes thee soul to float. O lonely man! O lonely man! Where is thy loveth destiny? Fough...