Skip to main content

ভৌতিক গল্প ।। পাঁচ ভূতের প্রতিশোধ ।। মিঠুন মুখার্জী


পাঁচ ভূতের প্রতিশোধ

মিঠুন মুখার্জী 


বহু বছর আগের এক ঘটনা। বর্ধমানের শক্তিগড়ের কাছেই সেই গ্ৰামটি। তখন জনসংখ্যা খুবই কম ছিল ।দুটি বাড়ির মধ্যে একশো গজ দূরত্ব। একজনের ঘরের খবর অন্যজন জানতে পারতেন না। গ্ৰামে কারেন্ট ছিল না। সন্ধ্যার পর সারা গ্ৰামের ঘরে ঘরে টেমি ও হ্যারিকেন জ্বলত। কারো বাড়িতে কোনো অনুষ্ঠান হলে হ্যাচাকলাইট জ্বালানো হতো। একটু সচ্ছল পরিবারে জেনারেটর ভাড়া নিতেন। কেউ মরে গেলে নদীর পাড়ে পুড়াতে যেত। সঙ্গে যাওয়ার জন্য খুব বেশি লোক পাওয়া যেত না। ঐ গ্ৰাম থেকে বাজারের দূরত্ব তিন কিলোমিটার হবে। বাজারে সন্ধ্যার পর জেনারেটরের লাইন ভাড়া নিয়ে সকলে লাইট জ্বালাত ও ফ্যান চালাত। বাজারে যাওয়ার সময় একটা বিরাট মাঠ পার হতে হত। যে মাঠের পুরোটা একজায়গায় দাঁড়িয়ে দেখা যেত না। গ্ৰামের মানুষেরা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করত, সন্ধ্যার পর এই মাঠে ভূতেদের আখরা বসে। তারা অনেকেই রাত্রি বেলা ওই মাঠে ভূতেদের দাঁড়িয়ে কখনো বসে জটলা পাকাতে দেখেছে। এই মাঠের উত্তর দিকে একটি বিশাল তেঁতুল গাছ ছিল। এই গাছ থেকেই ভূতেরা মাঠে নেমে আসত নিজেদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করার জন্য। তাদের আলোচনার বিষয় ছিল--- কে কিভাবে মরার পর ভূত হয়েছে। পাঁচটি ভূত থাকত ঐ তেঁতুল গাছটিতে। একদিন রাত দশটার সময় পাঁচটি ভূত মাঠে বসে নিজেদের মানুষ জীবন নিয়ে আলোচনা করছিল।নান্টু,জগা,বিল্টু,লুল্লু ও ভজা নামে এই পাঁচজন ভূত ছিল সেখানে। সবার প্রথমে নান্টু নিজের মানুষ জীবন নিয়ে বলতে গিয়ে কেঁদেই ফেলে। সে বলে --- "জানো তো ভাই সকল, আমি একজন কৃষক ছিলাম। নিজের আড়াই বিঘা জমিতে চাষাবাদ করে ভালোই দিন কাটত আমার। পঁচিশ বছর বয়সে বাবা এক চাষীর কন্যার সাথে বিয়ে দিয়েছিলেন। বিয়ের পর গিন্নিকে নিয়ে কী সুখেই না ছিলাম। সংসারে কোনো অশান্তি ছিল না। দুবছরের মাথায় যমজ মেয়ে সন্তান হয়েছিল আমাদের। দেখতে দেখতে তাদের বয়স দশ পেড়িয়ে যায়। একদিন রঞ্জিত মহাজন আমায় বললেন --- 'নান্টু আমার টাকাটা সুদে-আসলে দুদিনের মধ্যে মিটিয়ে দিস। আর আমি ফেলে রাখতে পারব না।' আমি চাষের জন্য ওনার কাছ থেকে সুদে দুহাজার টাকা নিয়েছিলাম। মহাজনকে বলি-- 'বাবু আর মাসখানেক সময় দিন আমায়‌। আমার মেয়ে দুটোর শরীর খারাপের জন্য আপনাকে দেওয়ার জন্য তুলে রাখা টাকা খরচ হয়ে গেছে।' কিছুতেই আমার কথা শোনেন না রঞ্জিত মহাজন। তিনি আবার বলেন --- 'দ্যাখ টাকাতো আমায় দিতেই হবে। নতুবা তোর জমিখান আমায় দে। আমার টাকা বাদ দিয়ে তোর যা প্রাপ্য তা আমি তোকে দিয়ে দিচ্ছি।' আমি রাজি হই না। হাত দুটো জোড় করে মহাজনকে বললাম--- ' বাবু, আপনার তো অনেক আছে, এটুকুতে নজর দেবেন না। আমি কথা দিচ্ছি একমাসের মধ্যে আপনার টাকা সুদ সমেত পরিশোধ করে দেব। না পারলে তখন জমি নিয়ে নেবেন। এটুকু দয়া করুন মাই বাপ।' কোনো কথাই শোনেননি মহাজন। দুই দিনেই টাকা পরিশোধ করার কথা বলে গজগজ করতে করতে তিনি চলে যান। টেনশনে ঠিকঠাক ঘুম আসে না আমার। দুই দিন পার হয়ে যায়। মহাজন তাঁর লেঠেলদের নিয়ে আমার জমি দখল করতে আসেন। আমি বাঁধা দিতে গেলে তার লেঠেন বাহিনী আমায় লাঠি দিয়ে খুব মার মারে। জমিতে খুটো পুঁতে দিয়ে চলে যায়। বলে --- 'আজ থেকে এই জমি আমার।' আমি আধমড়া হয়ে পড়ে থাকায় নকল দলিল বানিয়ে তাতে আমার টিপসই দিয়ে নেন। এই শোকে ও লেঠেলদের মারের গুঁতোয় তিন দিন পর আমি মারা যাই। আমার বউ ও দুই মেয়ে মহাজনের জন্য পথে বসে।"
          নান্টুর মানুষ জীবনের এই গল্প শুনে অন্য ভূতেরা খুব কষ্ট পায়। বিল্টু বলে --- "মানুষেরা খুব নিষ্ঠুর। আপনজনের পেটে ছুরি বসাতে এরা দুবার ভাবে না। লোভ-হিংসা-অহংকার এদের মধ্যে ঈশ্বর ভরে ভরে দিয়েছে। এগুলো যার মধ্যে যত আছে তার চলার পথ ততই কঠিন। সাময়িক ভালো থাকলেও এর ফল ভোগ করতে হয় তাদের।" এরপর জগা ভূত বলে --- "আমার মানুষ জীবনের কথা আর কী বলব ভাই। আমি এক সৎ মানুষ ছিলাম। একটা গেঞ্জির কারখানায় কাজ করতাম। অন্যায় দুচোখে সহ্য করতে পারতাম না। নিজে কোনো দিন অন্যায় করি নি, কেউ করলে ছেড়ে দিতাম না। বাবা-মা আমায় অনেক বকাবকি করতেন। বাবা বলতেন --- 'তোর কি দরকার অন্যায়ের প্রতিবাদ করার। আজ প্রত্যেক মানুষ নিজেরটা নিয়ে ভাবে। অন্যের কী হল না হল কারো মাথা ব্যথা নেই। তবে তোর এতো মাথা ব্যথা কেন? নিজের ভুলে বিপদ ডেকে আনছিস তুই। এরজন্য শুধু তোকে নয়, আমাদের পরিবারকেও ঝুঁকি পোহাতে হবে। তোর ঘরে একটা আয়বুড়ো বোন আছে,সে চিন্তা তোর আছে। ওর যদি কিছু হয়ে যায় তবে আমরা লোকের সামনে মুখ দেখাবো কি করে? নিজেকে শুধরে নে এখনো সময় আছে।' বাবার কথাগুলি অনুচিত ছিল না। কিন্তু আমি কিছুতেই আমার মধ্যে থাকা এই প্রতিবাদী ভাবটা দূর করতে পারি নি। একদিন আমি সকাল দশটার সময় মার হাতের গরম গরম রুটি খেয়ে কারখানায় যাচ্ছিলাম। হঠাৎ দেখি একটা ছেলেকে কয়েকজন মিলে খুব মারছে। আমার সহ্য হয় নি। ভেবেছিলাম কোনো কথা বলব না। বাবার কথাগুলো আমার কানে তখন বাজছিল। আমি পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ ওই ছেলেটা এসে আমার পা জড়িয়ে ধরে বাঁচানোর কথা বলে। তবুও আমি তাকে কিছু না বলে চলে যেতে থাকি। তারা এসে ছেলেটাকে ধরে নিয়ে গিয়ে লাইটপোষ্টে বাঁধে। আমার কাছে এবার বিষরটা বাড়াবাড়ি মনে হয়। দেখি একজন বন্দুক বার করছে। যখন ছেলেটাকে গুলি করতে যাবে,তখন আমি আর সহ্য করতে পারলাম না। দৌড়ে গিয়ে যে বন্দুক ধরেছিল তার হাতে একটি লাথি মারি। বন্দুকটা ছিটকে অনেক দূরে চলে যায়। এরপর ছেলে গুলো আমার উপর চড়াও হয়। আমি প্রচন্ড মার খাই তাদের কাছে। অন্য একজন তার কোমড় থেকে বন্দুক বার করে ওই ছেলেটিকে যখন গুলি করে,তখন আমি ওকে বাঁচাতে গিয়ে আমার বুকে গুলি লাগে। চিৎকার করে আমি মাটিতে পড়ে যাই। আমার চিৎকার ও গুলির শব্দ শুনে আসে পাশের মানুষজন জড় হলে গুন্ডাগোছের ছেলেগুলো পালিয়ে যায়। ছেলেটি এযাত্রা বেঁচে গেলেও আমি মরে যাই। স্থানীয় লোকজন আমাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও বাঁচাতে পারে নি। এই খবর পেয়ে আমার বাবার হার্ট অ্যাটাক হয় ও মা পাগল হয়ে যায়।
         সকল ভূতেরা  জগার মানুষ জীবনের গল্প শুনে খুব দুঃখ পায়। লুল্লু ভূত বলে --- " আগেকার দিনের মতো মানুষ আর নেই। নিজের স্বার্থের জন্য এখন নিজের মানুষদেরও হত্যা করছে তারা। সবার মধ্যেই এখন একা খাব একা পড়ব ভাব। অন্যেরও যে পেট আছে,সেও যে মানুষ-- তা তারা ভাবে না। এর পরিনতিও ভালো হবে না। বিপদের সময় কারোকে পাবে না। একজন অন্যের বিপদে এগিয়ে আসুক তা অনেকেই চান না।" সকল ভূতেরা লুল্লু ভূতের বক্তব্যকে সমর্থন করে বলে --- "তুই ঠিক বলেছিস লুল্লু, ঠিক বলেছিস।"
         এরপর বিল্টু ভূত তার মানুষ জীবনের হাড় হিম করা গল্প বলে। সে বলে --- "আমি একজন মুরগি বিক্রেতা ছিলাম। মুরগির মাংস বিক্রি করতাম। খুচরো ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পাইকারি দরে মাংস দিতাম। সংসারে বাবা-মা ছাড়াও দুই বোন ছিল আমার। তাদের বিয়ে দিয়ে আমি বিয়ে করবো ভেবেছিলাম। আমার বয়স ত্রিশ বছর এবং বোনেদের একুশ ও চব্বিশ। আমি মুরগির মাংস বিক্রি করলেও মানুষকে কখনো মুরগি করতাম না। তাই আমার দোকানে বাজারের অন্যান্য দোকানের তুলনায় একটু বেশি ভিড় থাকত। আমার সাহায্যের জন্য বোনদের দোকানে নিয়ে যেতে বলতেন মা। কিন্তু আমি নিতাম না। কারণ মানুষের চোখ ভালো না। বিপদ বাড়ার সম্ভাবনা প্রবল থাকে।
        একদিন খুব বিপদে পড়েছিলাম আমি। এক বিয়ে বাড়িতে দেড় কুইন্টাল মাংস দেওয়ার কথা ছিল আমার। যিনি বরাত দিয়েছিলেন, তিনি একটু দাদা গোছের লোক। অনেকেই এই বরাতটি আমায় নিতে বারণ করেছিল। কিন্তু সংসারের দিকে তাকিয়ে আমি তাকে ফিরিয়ে দিই নি। আমি মনে মনে ভেবেছিলাম, ঠিক সময়ের মধ্যে ম্যানেজ করে নেব। একজন লোক নিলে দুজনে মিলে ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু বিয়ের দিন সকালে আমার দোকানে মুরগি আসে বেলা দুটোর সময়। বারোটার সময় মাংস দেওয়ার কথা ছিল। সেই মাংস যায় বিকেল চারটের সময়। আমার মনের ভিতর কু-ডাকতে থাকে। আমি বুঝতে পারি আমার কাল কপালে আছে। টাকা পাওয়া নিয়ে সমস্যা হবেই। তখন মনে হয় এই বরাতটা না ধরলেই পারতাম। কথায় বলে 'চোর পালালে বুদ্ধি বাড়ে'।
     সেই মাংস রান্না করতে রাত আটটা বেজে যায়। গোধূলি লগ্নে বিয়ে ছিল। তাছাড়া অনেকে দূরে যাবার কারনে সন্ধ্যা ছটায় খাবার ব্যাচ বসাতে হয়েছিল। অনেকেই মাংস না খেয়ে চলে গিয়েছিল। যাওয়ার সময় কয়েকজন মেয়ের বাবাকে বলেছিলেন --- "এভাবে অনুষ্ঠান নাও করতে পারতেন। মেনু কার্ডে মাংস লেখা অথচ আমরা কেউ মাংস পেলাম না। এভাবে লোক ঠকাবেন না।" এই কথাগুলো শুনে মেয়ের বাবা হাউ হাউ করে কেঁদে দেন। যে আমার কাছে মাংসের বরাত দিয়েছিল,সে মেয়ের কাকা। দাদার এই অপমান দেখে সে রাগে আগুন হয়ে যায়। বিয়ের দিন রাগ চেপে রেখে পরদিন আমার দোকানে আসেন। মাংস দেড়িতে দেওয়া নিয়ে দু-এক কথায় দুজনের মধ্যে ঝগড়া বেঁধে যায়। রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে মুরগি কাঁটারি নিয়ে আমার গলায় কোপ মারে। মুরগির রক্ত আর আমার রক্ত মিলে মিশে একাকার হয়ে যায়। পা দাপাতে দাপাতে আমি মারা যাই। আমার সংসার জলে ভেসে যায়। বোন দুটোর আর বিয়ে হয় না। আমার মৃত্যুর খবর পেয়ে বাবাও মারা যান। শয়তান বিভাস টাকা দিয়ে কেসটা চাপা দিয়ে দেন। গরিবের পাশে দাঁড়ানোর মতো আজকের সমাজে কোনো মানুষ নেই।
     বিল্টু ভূতের মৃত্যুর কাহিনী শুনে সকলে খুব হতাশ হন। ভজা ভূত বলে --- "আমার তো মনে হয় মানুষের থেকে আমরা ভালো। আমাদের মধ্যে একতা আছে। তাছাড়া আমাদের ক্ষতি না করলে , আমরা সহজে কারো ক্ষতি করতে চাই না।" ভজা ভূতের এই কথা শুনে সকল ভূতেরা বলে--"ঠিক বলেছ ভায়া, একশো শতাংশ খাঁটি কথা। এখন আর মানুষের মনুষ্যত্ব নেই।"
        লুল্লু ভূতের মানুষ জীবন ছিল একটু অন্যরকম। লুল্লু ভূত বলে --- "তখন আমার আঠাস বছর বয়স। ষোলো বছরের এক রাজকুমারীকে ভালো বেসেছিলাম আমি। তার বাবা ছিলেন কোটিপতি। তাঁর মেয়ে দিব্যা প্রতিদিন একটি সুন্দর এসি গাড়ি করে স্কুলে যেত। অভাবের কারণে আমি বেশিদূর পর্যন্ত পড়াশোনা করতে পারিনি। তাই আইসক্রিমের দোকান দিয়েছিলাম। দিব্যা প্রতিদিন স্কুল যাওয়ার সময় আমার দোকান থেকে বিভিন্ন দামি দামি আইসক্রিম কিনত। ওর টানা টানা চোখ, অসাধারণ ঠোঁট আমায় পাগল করে তুলেছিল । আমি ওর প্রেমে পরে যাই। মনে মনে ভাবি---' ওইরকম বড়লোকের মেয়ে আমার মতো অভাবী ছেলেকে কখনো মেনে নেবে না। আমার মনের কথা বললে ও যদি ওর বাবাকে বলে দেয়, তবে আমার অবস্থা খারাপ হয়ে যাবে।দরকার নেই বলার। নিজের এক্তিয়ারের মধ্যে থাকাই ভালো।' ফলে বেশি দূর আমি এগোই না। পরের দিন মেয়েটি আমার দোকানে আইসক্রীম খেতে আসে নি। আমি ভাবি আজ স্কুলে হয়তো যায় নি। কিন্তু আমি ভুল ছিলাম। ওর এক বান্ধবীও ওর কাছে শুনে আমার দোকানে আইসক্রীম খেতে আসত। তাকে জিজ্ঞাসা করে জানতে পারি মেয়েটির প্রচন্ড শরীর খারাপের কারণে  স্কুলে যাচ্ছে না। আমি খুবই কষ্ট পেয়েছিলেন। কোনো কিছুই ভালো লাগত না। মেয়েটির নাম যে দিব্যা তা আমি ওর বান্ধবীর কাছ থেকেই জেনেছিলাম।
       একসপ্তাহ পর সে আবার আমার দোকানে আসে। সেদিন আমি নিজেকে সংযত করতে না পেরে মনের কথা সব ওকে বলে দিই। আমার কোনো অসৎ উদ্দেশ্যে ছিল না। আমি কোনো দিন ওর ক্ষতি চাই নি। ও কোনো কথা না বলে মাথা নত করে চলে গিয়েছিল। পরদিন থেকে ও আর আমার দোকানে আসে নি। দিন দিন আমি ওকে পাবার জন্য পাগল হয়ে উঠি। একদিন হিতাহিত জ্ঞান ভুলে কয়েকজন  বন্ধুকে নিয়ে রাত্রি বেলায় দিব্যার বাড়ি যাই। তখন রাত একটা। বাড়ির কার্নিশ বেয়ে আমি এবং আমার এক বন্ধু দোতলায় যেঘরে দিব্যা ঘুমায় সে ঘরে ঢুকি। সেই সময় দিব্যা ঘুমিয়ে ছিল। মুখ চেপে আমরা ওখান থেকে তাকে নামিয়ে নিয়ে আসি। তারপর নিয়ে যাই আমার এক বন্ধুর বাড়িতে, যার বাবা-মা এক মাসের জন্য বেনারস ঘুরতে গিয়েছিলেন।বন্ধুদের একটি ঘরে মুখে রুমাল বেঁধে দিব্যাকে আটকে রাখি। আমি যে তাকে ভালবাসি তা তাকে বোঝানোর চেষ্টা করি। কিন্তু সে শুধু আমাকে অস্বীকার করে এবং কান্না করে। এদিকে মেয়েকে পাওয়া না যাওয়ায় দিব্যার বাবা পুলিশকে সব জানান। বড়লোকের মেয়ে হওয়ায় পুলিশ বিষয়টি খুবই গুরুত্ব দেন। অবশেষে আমার একটি ভুলে আমি পুলিশের কাছে ধরা পড়ে যাই। থানায় নিয়ে গিয়ে খুব মারে আমায়। শেষমেষ আমি দিব্যা কোথায় আছে বলে দিই। পুরো দোষটা আমি নিজের কাঁধে নিয়ে নিই। এদিকে আমার বন্ধুরা জানতে পেরে দিব্যাকে বাড়িতে দিয়ে আসে। আমায়  কিডনাপ কেস দিয়ে দেয়। পাঁচ বছর জেল হয়ে যায় আমার। জেল থেকে বেরিয়ে শুনি দিব্যা একটি দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছে। সেই শোকে আমি পাগল হয়ে যাই। নিজের থেকেও বেশি ভালো বাসতাম ওকে। একদিন রাস্তার উপর দাঁড়িয়ে লোক দেখছিলাম। একটি মেয়ের মধ্যে আমার দিব্যাকে দেখেছিলেম। দৌড়ে তাঁর কাছে যাওয়ার সময় দিব্যার বাবা ইচ্ছা করে আমায় পিষে দিয়ে যায়। পথ দুর্ঘটনা বলে কেসটা চাপা দিয়ে দেয়।
লুল্লু ভূতের মানুষ জীবনের কথা শুনে সকল ভূতেরা খুব রেগে যায়। নান্টু ভূত বলে--- মানুষদের এরকম অত্যাচার মেনে নেওয়া যায় না। এর একটা প্রতিশোধ আমাদের সকলেরই নেওয়া দরকার। না হলে এই শয়তানেরা মানুষের উপর আরো অন্যায় করবে। খারাপ মানুষেরা কখনো ভালো হয় না। শত চেষ্টা করলেও এদের বদলানো যায় না। কি বলছো তোমরা? এরপর সকল ভূতেরা বলে--- "তুমি ঠিক বলেছ নান্টু। আর সহ্য করা যাচ্ছে না।"
এরপর নান্টু ভূত ভজা ভূতকে বলে---"আরে ভজা, তোমার মানুষ জীবনের কাহিনী বল। তারপর আমরা সকলে মিলে যারা আমাদের অকালে অস্বাভাবিক মৃত্যু দিয়েছে তাদেরও ভবলীলা সাঙ্গ করার অভিযান চালাব।" নান্টু ভূতের এই কথা শুনে ভজা ভূত বলে --- "আমি একজন জেলে ছিলাম। নদীতে নৌকা নিয়ে মাছ ধরতাম। যখন মাছ পেতাম না তখন মাঝি হয়ে লোক পারাপার করতাম। আমার বউ সেই মাছ হাটে নিয়ে বিক্রি করত। আমাদের কোনো সন্তান ছিল না। মনের মধ্যে দুজনারি খুব কষ্ট ছিল। আমাদের মনের কষ্ট আমরা কাউকে বুঝতে দিতাম না। অনেক কষ্টে আমি বউকে একটি সোনার চেইন গড়িয়ে দিয়েছিলাম। সেই সময় আমাদের ওখানে খুব ছিনতাই হচ্ছিল। বিশেষ করে মেয়েদের ও বউদের গলার চেইন, কানের দুল, মোবাইল ইত্যাদি। একদিন আমি আমার বউকে নিয়ে বাজার থেকে ফিরছিলাম, তখন হঠাৎ মুখে রুমাল বাঁধা দুজন ছেলে মটরসাইকেল করে এসে গলার চেইন ধরে টান মারে। বউ রাস্তায় পড়ে যায়। সোনার চেইন ছিঁড়ে ছেলেটির হাতে চলে যায়। আমি তখন ঐ ছেলেটির হাত ধরে টান মারলে সে মটর সাইকেল থেকে পড়ে যায়। আমি দৌড়ে গিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরতেই সে একটি বেলেট দিয়ে আমার গলার নলি কেটে দিয়ে চেইন নিয়ে পালিয়ে যায়। মিনিট দুয়েকের মধ্যে আমি মারা যাই। আমার বউ কাঁদতে কাঁদতে অজ্ঞান হয়ে যায়। সে এখন সম্পূর্ণ একা। অন্যের বাড়িতে কাজ করে।"
ভজা ভূতের করুণ কাহিনী শুনে লুল্লু ভূত বলে -- "আর সহ্য নয়, এতদিন অনেক সহ্য করেছি। এবার চলো, সবাই মিলে হত্যালীলায় মাতি । তারা কি ভেবেছে, ভূতেদের কোনো ক্ষমতা নেই। সকলে লুল্লুকে সমর্থন করে বলে-- 'চলো, তাই হোক'।
সকল ভূতেরা প্রথমে রঞ্জিত মহাজনের এলাকায় যায়। তারা দেখে মহাজন দুজন লেঠেল নিয়ে বাজার করে একটা বাগানের ভিতর দিয়ে বাড়ি ফিরছে। এক লেঠেলের হাতে হ্যাচাক লাইট। হঠাৎ নান্টু ভূত বলে --- কিরে মহাজন কেমন আছিস? আমায় চিনতে পারছিস? নান্টুর গলা পেয়ে মহাজন ভয় পেয়ে যান। বলে -- 'কে রে তুই? সাহস থাকলে আমার সামনে আয়।' এই কথা শুনে সকল ভূতেরা রঞ্জিত মহাজনের সামনে উপস্থিত হয়। লেঠেল দুজন হ্যাচাক রেখে পালিয়ে যায়। মহাজন রাম নাম করতে করতে কাঁপতে থাকে। নান্টু ভূতকে বলে --- 'আমায় ছেড়ে দে নান্টু,আমায় মারিস না। তুই আমার সব সম্পত্তি নিয়ে নে। আমার প্রান ভিক্ষা দে।" নান্টু ভূত বলে --- 'আপনি কি আমায় ছেড়েছিলেন? নিজের কৃতকর্মের জন্য আজ আপনাকে মরতেই হবে।' এরপর পাঁচজন ভূত মিলে মহাজনকে নৃশংস মৃত্যু দান করে। ঘাঁড় মুড়িয়ে দেয়, হাত দুটো ভেঙে দেয়। অবশেষে গাছের ডালে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলিয়ে দেয়।
এরপরের পালা আসে জগা ভূতকে যে ছেলেটি গুলি চালিয়েছিল তার। চায়ের দোকানে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা মেরে ছেলেটি একা একা নির্জন রাস্তা দিয়ে বাড়ি ফিরছিল। একটু মদ পড়েছিল পেটে। হঠাৎ দেখে তার সামনে জগা দাঁড়িয়ে আছে। বুকে গুলির চিহ্ন ও রক্তাক্ত সারা দেহ। জগাকে চিনতে পেরে সেই ছেলেটি কিছুটা ভয় পেয়ে যায়। কোমড় থেকে বন্দুক বের করে জগা ভূতকে গুলি করে। কিছুই হচ্ছে না দেখে বুঝতে পারে এ ভূত। বাবাগো-মাগো বলে পিছনে দৌঁড়াতে যায়। হঠাৎ ছেলেটি দেখে আরও চারটি ভূত রাস্তার উপর দাঁড়িয়ে। প্রত্যেকের মুখে রক্ত। এরপর ছেলেটি কাঁপতে কাঁপতে বলে --- " আমাকে তোমরা ছেড়ে দাও। আমি আর কখনো মানুষ খুন করব না। আজ থেকে আমি এই পথ ছেড়ে দেব।" ছেলেটির কথা শুনে জগা ভূত বলে --- " মরার আগে সবাই এই কথাই বলে। মানুষদের মারার আগে এগুলো মনে ছিল না। এবার নিজে মরে দেখ কেমন কষ্ট।" এরপর পাঁচজন ভূত মিলে ছেলেটিকে নিয়ে একটা বড় আমগাছের উপর চলে যায় এবং সেখান থেকে তাকে ফেলে দেয়।
বিল্টু ভূতের হত্যাকারী বিল্টুকে হত্যা করে বাংলাদেশে পালিয়ে গিয়েছিল। মাসখানেক হলো গ্ৰামে ফিরেছে। ওই শয়তানের উপর বিল্টু ভূতের প্রচন্ড রাগ। তাকে হত্যা করতে না পারলে সে শান্তি পায় না। তাঁরা পাঁচ ভূত মাঝরাতে যখন তাকে মারতে আসে তখন ঐ বিভাস নিজের ঘরে একা একা ঘুমিয়েছিল। বউ বাপের বাড়ি গেছে। বিল্টু ভূত দরজার কড়া নেড়ে কেঁদে কেঁদে বলে -- " বিভাস দা দরজাটা একটু খোলো না। তোমার খুব বিপদ। এখনি দরজা খোলো।" নিজের বিপদের কথা শুনে বিভাস দরজা খুলে দেখে কেউ নেই। মনের ভূল মনে করে দরজা দিয়ে দেখে খাটে বসে আছে পাঁচ ভূত। তারমধ্যে গলায় কোপ খাওয়া বিল্টুও আছে। বিভাস ভয় পেয়ে দরজা খুলতে গেলে দেখে দরজা খোলা যাচ্ছে না। এরপর প্রানভিক্ষা করে কান্না কাটি জুড়ে দেয়। বিল্টু ভূত বলে --- আমার সেদিনের লঘু পাপে তুই গুরু দন্ড দিয়েছিলি মনে আছে। আমার পরিবারের কথা একবারও ভেবেছিলি পাষন্ড। আজ মৃত্যুকে সামনে থেকে দেখে প্রানভিক্ষা চাইছিস। আজ বটি দিয়ে তোর গলাটা ধর থেকে আলাদা করে দেব। বুঝবি কেমন মজা। এরপর চারজন ভূত বিভাসের হাত পা ধরে রাখে আর বিল্টু ভূত রান্না ঘর থেকে ধারাল বটি এনে এককোপে তার গলা ধর থেকে আলাদা করে দেয়।
দিব্যার বাবার জন্যই লুল্লু ভূত দিব্যাকে পায় নি ও প্রান গিয়েছিল। তাই তাকে তার কৃতকর্মের জন্য শাস্তি দেবে বলে সে ঠিক করেছিল। কিন্তু সুযোগের অপেক্ষায় ছিল। অফিসের কাজ সেরে একদিন রাত বারোটার সময় বাড়ি ফিরছিলেন। হঠাৎ গাড়ির স্টার্ট বন্ধ হয়ে যায়। ড্রাইভার চুপচাপ গাড়ির মধ্যে বসে ছিল। তাকে গাড়ি ঠিক করার জন্য দিব্যার বাবা নামতে বললে সে নামে না। যেই ড্রাইভারের কাঁধে হাত দেন দিব্যার বাবা সেই মাথা ঘুরিয়ে তার দিকে তাকায় লুল্লু ভূত। লুল্লুকে চিনতে পরে ভয় পেয়ে চিৎকার করতে করতে গাড়ি থেকে বেরিয়ে দৌড়াতে লাগে সে। দেখে রাস্তার বিভিন্ন স্থানে আরো ভূতেরা দাঁড়িয়ে আছে। প্রানে বাঁচার জন্য কি করবে বুঝতে পারেন না। এমন সময় তার নিজের গাড়ি এসে একটা গাছের সঙ্গে তাকে পিষে দেয়। লুল্লুর আত্মা শান্তি পায়।
এরপর ভজা ভূতের প্রতিশোধ নেওয়ার পালা। যে ছেলেটি ভজার গলায় ব্লেট মেরেছিল সেই ছেলেটি ভজা মারা যাওয়ার পরও প্রচুর মানুষের ক্ষতি করে। পরিবর্তন হয় নি তার। তাই তার ভয়ংকর মৃত্যু দিয়েছিল পাঁচ ভূত। একটা ভাঙা পুরনো ঘরে ছেলেটি মদ খেয়ে সেদিনকার রোজগার হিসাব করছিল। সঙ্গে যে থাকে সে অনেক আগেই বাড়ি চলে যায়। ভজারা পাঁচজন সেই ছেলেটির ঘরে ঢুকে ভৌতিক তান্ডব চালায়। প্রথমে গলা টিপে হত্যা করে। তারপর ব্লেট দিয়ে গলার নলি কাটে। হাতদুটো ভেঙে দেয়। পরের জন্মে যাতে কোনো মানুষের ক্ষতি করতে না পারে। তারপর লাশটা জ্বালিয়ে দেয়।
পুনরায় পাঁচ ভূত সেই তেঁতুল গাছে ফিরে যায়। প্রতিশোধ নিয়ে সকলের হৃদয় শান্ত হয়। সকলে প্রতিজ্ঞা করে কারো প্রতি অন্যায় হলে তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে আমরা উপকার করবই। ভূতেদের সম্পর্কে মানুষের যে সব ধারনা আছে তা আমরা সবাই মিলে পাল্টে দেব।

=================

মিঠুন মুখার্জী
             গ্ৰাম - নবজীবন পল্লী
             পোস্ট + থানা - গোবরডাঙ্গা
             জেলা - উত্তর ২৪ পরগনা
             পিন - ৭৪৩২৫২
















         



           

Comments

বিধিবদ্ধ স্বীকার্য :

লেখার বক্তব্যের দায়িত্ব লেখকের, পত্রিকার নয়। আমরা বহু মতের প্রকাশক মাত্র।

মতামত/লেখা এখানে জমা দিন

Name

Email *

Message *

সাম্প্রতিক বাছাই

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬

  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠালে  অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে হলে ভালো। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # ...

গল্প ।। জাতিস্মর ।। আশীষ কুমার বিশ্বাস

    জাতিস্মর   আশীষ  কুমার   বিশ্বাস    গল্পের শুরুটা প্রায় ষাট বছর আগের কথা । যার নাম গৌতম, ডাক নাম ছিল বাবু ।  তার বছর তখন ছয়-সাত হবে । আমরা বা আমি তখন একটু বড় । এক সাথেই চলতো খেলা । গোল্লা ছুট, দাঁড়িয়া বান্দা, চোর-পুলিশ । যে মাঝে মাঝে খেলা থেকে বিরত থাকতো ; সে-ই জাতিস্মর । মাঠের পাশেই ছিল একটা খেঁজুর গাছ । তাতে হাত রেখে দূরের এক গ্রামের দিকে এক মনে তাঁকিয়ে থাকতো "বাবু" । গ্রামটির নাম "বিনয় পল্লী " । মাঝে বড়ো মাঠ । হাঁটা শুরু করলে তিরিশ - চল্লিশ মিনিট লাগবে । মাঝে জলে ভরপুর দেখে কখনো যাওয়া হয়নি । বাবু কে যখন বলতাম, ওপারে কি দেখছিস? ও বলতো, ওখানে আমার ছোট মা থাকে, দিদি থাকে, আমার ভুলু কুকুর থাকে । এ কথা আমাদের বিশ্বাস হতো না । আবার খেলায় ফিরে যেতাম, খেলতাম ।  কিন্তু ও বসে বসে , ওপারের গাছ পালা , বাড়ি ঘর দেখতো । কাছে গেলে বলতো , ওই যে সবুজ ,কচি কলাপাতা রঙের দালান বাড়ি, ওটাই আমাদের বাড়ি !  এই ভাবে মাস ছয়, বছর গড়াতে লাগলো । মনে প্রশ্ন জাগতে লাগলো, এ টা কি মন গড়া , বা বানিয়ে বানিয়ে বলছে? সত্যি প্রকাশ হোল এক দিন ।  সে বাড়িতে কিছু ...

কবিতা ।। মনোজকুমার রায়

জল সিঁড়ি চেক বইয়ের পাতা ফুরিয়ে যেতে থাকে -- ঝরে পড়ে বৃদ্ধ গাছটির পত্রমুকুল কাঁচা গন্ধ বেয়ে চলে সময়ের স্রোতে  সারা ভোর জেগে থাকি ঘুমের টলে তাড়া দেয় একগ্রাস অবিশ্বাসী বায়ু দিন ফুরনো লাল সূর্যের টানে নেমে আসে পাড় ছোঁয়া জল সিঁড়ি ================= মনোজকুমার রায় দঃ ঝাড় আলতা ডাউকিমারী, ধূপগুড়ি জলপাইগুড়ি -৭৩৫২১০ মো ৭৭৯৭৯৩৭৫৬৬

কবিতা ।। ভাষার জন্য লড়াই ।। চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু

ভাষার জন্য লড়াই চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু মুখের ভাষা বাংলা ভাষা মাকে ডাকি মা, সারা বিশ্বে তোমার মাগো নেই তো তুলনা। তোমার মুখের প্রথম ভাষা আমার মনের সকল আশা তোমার ভাষায় বলবো মাগো আমার মনের কথা, এই ভাষাতেই জড়িয়ে আছে সকল স্বাধীনতা।  এই ভাষাকে আনতে গিয়ে তাজা বুকের রক্ত দিয়ে রাজপথে সব লড়াই হলো করলো লড়াই কারা, আমার মায়ের দামাল ছেলে রক্ত পলাশ যারা।  তোমার ছেলে লড়াই করে আনলো ভাষা ঘরে ঘরে সেদিন থেকে শহীদ মিনার সাজাই ফুলে ফুলে, বীর শহীদের ত্যাগের কথা যাইনি আজও ভুলে।    ++++++++++++++++++++++++++++++++    চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু শহীদ আবুল কাশেম সড়ক, বড় বাজার, চুয়াডাঙ্গা, বাংলাদেশ।

চিরকুটের কবিতা

নতুন পৃথিবী আজ সকালে রোদ্দুর নামুক ভেজা বর্ষার মতো গা ধুয়ে কিছুটা পবিত্র হবো যত জীর্ণ মলিন দ্বেষ বিলীন হোক সব সময়ের তটে গা ভাসিয়ে কিছুটা বিলাসী হবো যা ছিল অতীত যা ছিল কষ্ট সবকিছু ভুলে নবীনে ব্রতী হবো আসুক ধেয়ে সতেজ হাওয়া দূর হোক যত কুণ্ঠা ব্যথা পুরানো যত বিবাদ ভুলে ভালোবাসার আবার বেড়া দেবো কিছুটা আশাবাদী কিছুটা কর্মঠ কিছুটা জেদি কিছুটা শপথ আসুক ছুঁয়ে বাঁচার আলো হাতে হাত রেখেই বিশ্বাসের ঘরে আবার নতুন দীপ জ্বালাবো

উন্মুক্ত পাগলামি ।। আশরাফুল মণ্ডল

উন্মুক্ত পাগলামি আশরাফুল মণ্ডল আহা, অপরূপ নিজস্বতার দাহ! কুঁকড়ে যায় আবহমান, সজনে পাতার বোঁটায়! ভাপওঠা ভাতের কাছে মাছি সত্তায় কী নিপুণ! তবুও ঘোর লাগা বসন্তের ডাক, হাঁকে! খেদিয়ে দেয় পা দোলানো প্রস্তাব, ওই ধুনুরি চোখ! রাংতায় মোড়া ডাকের সাজ, দে দোল দোল! হুইসেল বাজিয়ে কে রুখে দ্যায় সেই নাকছাবির রুদালি কাঁপন! খালবিল ছেঁচে পাঁচসিকের  মানত কুড়িয়ে আনে, বাংলা বাজার। ঠ্যাং নাচানো সুরে চোখ মারছে, দ্যাখো ভ্যানতারা! মুখ খোলা মানেই পাঁজরের স্রোত ভাবা যেন উগরানো টালমাটাল! ঢিল মারা প্রশ্নের রোয়াকে বক্রচোখে যেন মেধাবী কবিতা! মুছে দিও তবে লাজুক গুপ্ত রোগ, দিনরাত্রি! ভালো থেকো তোমরা বাছাধন, রং মাস সে আর কতদিন... ================    ASRAFUL MANDAL Chandidas Avenue, B-zone, Durgapur, Paschim Bardhaman, Pin - 713205,  

কবিতা ।। রঙ ।। ইউসুফ মোল্লা

  রঙ  ইউসুফ মোল্লা সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি,  পৃথিবী নানা রঙে সেজে উঠেছে।  ধূসর বাদামী রঙ তোমার দেহ,  মাথায় সবুজ রঙের বাবরি চুল,  তাতে গুঁজে রেখেছো লাল-নীল ফুল।  নববধূর মতো সিঁথিতে দিয়েছো সিঁদুর,  চোখে দিয়েছো কাজল।  দিগন্তভরা আকাশ তোমাকে নীল উপহার দিল,  সূর্যের লাল আলো তোমাকে সুন্দর করেছে।  তুমি তাদের ফিরিয়ে দিলে, বুকভরা ভালোবাসা আর স্নেহ।  মাঝে মাঝে এইভাবে হোলি আসে,  আমার মনকে রাঙিয়ে দিতে। ------------------    ইউসুফ মোল্লা উত্তর অঙ্গদ বেড়িয়া, ট্যাংরাখালী, ক্যানিং,  দক্ষিণ ২৪ পরগনা, ৭৪৩৩২৯

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯৩তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩২ নভেম্বর ২০২৫

সূচিপত্র বস্তু, চেতনা এবং কবি ।। সজল চক্রবর্তী দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত ।। রণেশ রায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট ও সন্নিহিত অঞ্চলের কথ্য শব্দ ।। অরবিন্দ পুরকাইত চাঁদে জীবন ।। শমীক সমাদ্দার অসমাপ্তি ।। মহুয়া হুই গ্যালাক্সির শব্দে ।। জাসমিনা খাতুন তিনটি কবিতা ।। দিবাকর সেন অপূর্ণতার শেষ অধ্যায় ।। সুপ্রিয় সাহা হাফ ডজন ছড়া ।। স্বপনকুমার পাহাড়ী স্বাপ্নিক অমলের ঘুৃম ।। সঞ্জয় দেওয়ান দুটি কবিতা ।। সৌমিত্র উপাধ্যায় পথ চলতি ✍️পার্থ প্রতিম দাস হেমন্তের বিষাদ ছুঁয়ে ।। শক্তিপদ পাঠক রাই আর বাবা ।। অদিতি চ্যাটার্জি স্থিতিশীল ।। রঞ্জিত মুখোপাধ্যায় হৃদয়ের শূন্য কোড ।। লিপিকা পিঙ্কি দে অমানিশা ।। সৌভিক মুখার্জী দৃষ্টিগত ।। শামীম নওরোজ জ্যান্ত ভূতের গপ্পো ।। পার্থ সারথি চট্টোপাধ্যায় ধুতরা ফুলের ঘ্রাণ ।। মজনু মিয়া তারা খসার আলোয় ।। তীর্থঙ্কর সুমিত উত্তরণে অন্তরায় ।। সমীর কুমার দত্ত প্রেম মুদ্রা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ধারা ।। লালন চাঁদ অন্যের ব্যথায় ব্যথি ।। জগদীশ মণ্ডল গর্ভ ।। শাশ্বত বোস ভ্রমণ বিষয়ক স্মৃতিকথা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত শাপে বর ।। সাইফুল ইসলাম রবিবার ।। সঙ্ঘমিত্রা দাস দুটি ...

চন্দন সুরভি নন্দর কবিতা

টাকার মেশিন                      মায়ের ওষুধ নিয়ে শহর থেকে ফিরল রতন সবে সন্ধ্যা নেমেছে  রাস্তায় আলো কম হাসপাতাল অনেক দূরে  অদৃশ্য যম খেলাকরে  মৃত্যুর সীমান্তে শায়িত মা   শেষ রক্ষা হল না  আস্তে আস্তে ভোরের আলো ফোটে রাতের আঁধারে ঘরের দেওয়াল গুলো রাঙিয়ে গেছে কারা  তুলেছে রং বেরং এর তোরন  এসেছে নির্বাচন  শোনাযায় এবার নাকি এ টি এম চিহ্নে দাঁড়িয়েছে একজন! টাকার মেশিন........  জিতলে সবাইকে দেওয়া হবে! সামনে বসে উল্লাসে ফেটে পড়া রোবট গুলো মানুষ কবে হবে?  ====================== Chandansuravi Nanda Revenue Office  BL&LRO,Manbazar-ll Boro Purulia PIN-723131 Phone-9163332432

ছোটগল্প ।। নীলিমার আত্মজাগরণ ।। পরেশ চন্দ্র মাহাত

নীলিমার আত্মজাগরণ পরেশ চন্দ্র মাহাত নীলিমা মাহাত, বয়স পঁচিশ প্লাস —তার বাবা মায়ের পঞ্চম তথা শেষ সন্তান। দুই দাদা —বড়দাদা শঙ্কর ও ছোটদাদা বিজয়। বড় দাদা শঙ্কর আর দুই দিদি তাদের কিন্তু বিয়ে হয়ে গেছে। একমাত্র নীলিমা আপাতত স্বামীর কোমল হাতের স্পর্শ ও সহানুভূতি থেকে বঞ্চিত এবং আদৌ কবে অথবা সেই সৌভাগ্য আসবে সেটা ঈশ্বরের নিকটই একমাত্র জ্ঞাত। সেই সঙ্গে দুবছরের সিনিয়র ছোটদাদা বিজয়েরও নীলিমার মতো অবস্থা। তারও জীবনসঙ্গিনী জুটেনি। মোট সাতজন সদস্য নিয়ে গঠিত সংসার নীলিমাদের পরিবার। মধ্যবিত্ত পরিবার —মধ্যবিত্ত পরিবার না বলে যদি নিম্নবিত্ত বলা হয় তবুও কোনো অত্যুক্তি করা হয় না। বাবার প্রত্যেকদিনের আয়ের উপর ভিত্তি করেই চলে সংসার। এই কঠোর এবং কঠিন পরিস্থিতিতেও নীলিমার মা শ্রীমতী মেনকা‚ সংসার সামলে তার ছেলেমেয়েদের পড়াশুনার প্রতি যথেষ্ট তৎপর ও সহানুভূতিশীল। তাদের পড়াশুনায় কোনো খামতি রাখেননি। যথা সময়ে তাদেরকে বিদ্যালয়ের মুখ দেখিয়েছে – টিউশনের বন্দোবস্ত করেছে। তাদের জীবন যাতে সুখকর হয় সেটাই প্রতিদিন ভগবানের কাছে প্রার্থনা করেছে। পাঁচ-পাঁচটি ছেলেমেয়ের মধ্যে সবাইকে উচ্চশিক্ষিত করে তোলা একপ...

জনপ্রিয় লেখা

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ -- "ত্রয়ী কাব্য" ------------------------------------------------------------------------------ সুনন্দ মন্ডল নবীনচন্দ্র সেন সাহিত্যে তথা বাংলা কবিতার জগতে এক অবিস্মরণীয় নাম। তিনি চট্টগ্রাম জেলার নওয়াপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ১৮৪৭ সালে তাঁর জন্ম এবং মত্যু ১৯০৯ সালে। বঙ্কিমচন্দ্র তাঁকে 'বাংলার বায়রন' বলেছেন। ‎জীবৎকালীন যুগে আত্মপ্রত্যয়ের মধ্যে জাতীয় চরিত্র আত্মস্থ করে নতুন সংস্কারে প্রয়াসী হয়ে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখেছেন।মধুসূদন-হেমচন্দ্র-নবীনচন্দ্র--এই তিন কবি বাংলা কাব্যধারায় প্রাণ সঞ্চার করেছিলেন। বিশেষত মহাকাব্য লেখার দুঃসাহস দেখিয়েছিলেন। এদিক থেকে মধুসূদন দত্ত একজন সফল মহাকাব্যিক। তাঁর 'মেঘনাদ বধ' কাব্যের মত গভীর ও ব্যঞ্জনাময় না হলেও নবীনচন্দ্র সেনের 'ত্রয়ী' কাব্য বিশেষ মর্যাদা দাবি করতেই পারে। তাছাড়া 'ত্রয়ী' কাব্যে ধর্মীয় ভাবধারার আবেগ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ‎ ‎নবীনচন্দ্র সেন বহু কাব্য লিখেছেন। যেমন- 'অবকাশরঞ্জিনী','পলাশীর যুদ্ধ', 'ক্লিওপেট্রা', 'রঙ্গমতী', 'খ্রীষ্ট', ...

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা শ্রীজিৎ জানা "সময় চলিয়া যায় নদীর স্রোতের প্রায়"। স্রোতের ধারা তার দু'প্রান্তে রেখে যায় ভাঙাগড়ার চিহ্ন। কালের দৃশ্যপটেও পরিবর্তনের ছবি অনিবার্যভাবেই চোখে পড়ে। সমাজ সময়ের ছাঁচে নিজেকে গড়ে নেয় প্রতিনিয়ত।  সেখানে মনে নেওয়ায় বাধা থাকলেও,মেনে নেওয়ার গাজোয়ারি চলে না। ফলত কাল বদলের গাণিতিক হিসেবে জীবন ও জীবিকার যে রদবদল,তাকেই বোধকরি সংগ্রাম বলা যায়। জীবন সংগ্রাম অথবা টিকে থাকার সংগ্রাম।  মানুষের জীবনযাপনের ক্ষেত্রে আজকে যা অত্যাবশ্যকীয় কাল তার বিকল্প রূপ পেতে পারে অথবা তা অনাবশ্যক হওয়াও স্বাভাবিক। সেক্ষেত্রে উক্ত বিষয়টির পরিষেবা দানকারী মানুষদের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হওয়া অস্বাভাবিক নয়। এক কালে গাঁয়ে কত ধরনের পেশার মানুষদের চোখে পোড়তো। কোন পেশা ছিল সম্বৎসরের,আবার কোন পেশা এককালীন।  সব পেশার লোকেরাই কত নিষ্ঠা ভরে গাঁয়ে  তাদের পরিষেবা দিত। বিনিময়ে সামান্য আয় হত তাদের। আর সেই আয়টুকুই ছিল  তাদের সংসার নির্বাহের একমাত্র উপায়। কালে কালান্তরে সেই সব পেশা,সেই সব সমাজবন্ধুরা হারিয়ে গ্যাছে। শুধুমাত্র তারা বেঁচে আছে অগ্রজের গল্পকথায়,আর বিভিন...

গ্রন্থ আলোচনা: শর্মিষ্ঠা দেবনাথ

প্রতিবাদ যখন অগ্নিবাণী বাংলাদেশে নারীমুক্তি ও নারী আন্দোলনের পুরোধা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ১৯৯তম জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদিত হল " আসিফা এবং.." কাব্য সংকলনটির মধ্যদিয়ে।সংকলনটির বিশেষত্ব হল,এটি উৎসর্গ করা হয়েছে নারীর সম্মান রক্ষার আন্দোলনের যোগ্যতম ব্যক্তি শহীদ শিক্ষক বরুন বিশ্বাসকে। সংকলক প্রকাশক সন্দীপ সাহু নিজে এবং বিশিষ্ট কবি সাহিত্যিকদের দিয়ে লিখিয়ে নিয়েছেন এমন কিছু কবিতা, যা শুধুমাত্র শব্দ ও ছন্দের অনুবন্ধ নয়, এক একটি অগ্নিবাণী।আসলে জীবনকে দেখার স্বাতন্ত্র‍্যে কবিরা সব সময়ই অগ্রগণ্য এবং অনন্য।যুগ ও জীবন দ্বন্দ্বের কণ্ঠস্বরকে আশ্রয় করে,একদিকে মনের প্রবল দাহ ও অন্যদিকে  নির্যাতিতা শিশুকন্যা ও নারীর প্রতি মনের গভীর আকুলতা থেকে প্রকাশ পেয়েছে "আসিফা এবং" এর  কবিতাগুলি।এক অন্ধকার সময়ের মুখোমুখি আমরা,সেই অন্ধকার আমাদের নিয়ে এসেছে সামাজিক অবক্ষয়ের শেষধাপে যেখানে নৈতিকতা,পাপবোধ,গ্লানিকে সরিয়ে রেখে, সমাজের বানানো নিয়মকে তোয়াক্কা না করে,অনায়াস দক্ষতায় ও ক্ষিপ্রতায় নিজেরই ধর্মচেতনাকে জলাঞ্জলি দিয়ে কিছু মানুষ তার পশুত্বের পরিচয় দিয়েছে ধর্ষণ ও ন...

শ্যামাপদ মালাকারের কবিতা

চোখ """"""" নদী, অরণ্য, রাতের ফালি চাঁদ- সবেই তো আমার...স্বর্ণপিঁড়িটাও!। সেদিন, শুকতারাটার গা' মাপতে গিয়ে মনে হল, --ওরা আমার চেয়েও সুখী? দেখিনা একবার গাইতি-শাবল চালিয়ে... চালালাম। জল-মাটি ভেজা একটা 'চোখ' কুড়িয়ে ফিরলাম! সেই চোখদিয়ে দেখি-- শেষ বিকেলের নিরন্ন আঁচে ঝলসানো বুকে নীড়ে ফিরছে ধূলিমাখা কত কাল পা, কি শান্তি - কি তৃষ্ণা! পাতাক্ষোয়া কোদালেরর মাথায় ঝরেপড়া ললাটের ঘামে, কারা যেন জীবন শাণ দেয়! রুক্ষঠোঁটের আবরণে এক সময় নেমে আসে শিশিরস্নাত কালনিশি-- মাঝের ব্যবধান মুছে দেয় প্রতিশ্রুতির ভীড়- - পূর্বজনমের নিদর্শনচুম্বন শেষে হেরে যায় কার মমতাজ-- ম্লান হয়ে যায় কত পিঁড়ি! ... ম্লান হয়ে যায় কত পিঁড়ি! ... ম্লা...

কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা: এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায় ।। পার্থ সারথি চক্রবর্তী

  কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা : এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায়  পার্থ সারথি চক্রবর্তী  কথায় বলে বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। রাজার শহর কোচবিহারের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা আরো অনেক বেশি। দুর্গাপূজা আর দীপাবলির মতো দু'দুটো বিরাট মাপের উৎসবের রেশ কাটতে না কাটতেই, এ শহর ভাসে রাস উৎসবের উন্মাদনায়। মদনমোহন ঠাকুর কোচবিহারের প্রাণের ঠাকুর। তাঁকে নিয়ে সবার আবেগ আর শ্রদ্ধা ও ভালবাসা এখানে বাঁধনছাড়া। এক অপূর্ব মিলনোৎসবের চেহারা নেওয়া এই উৎসব ঐতিহ্যবাহী ও ঐতিহাসিক। জন, মত, সম্প্রদায়ের উর্ধে এই উৎসবের গ্রহণযোগ্যতা। সময়ের কষ্টি পাথরে পরীক্ষিত! এক প্রাণের উৎসব, যা বহুদিন ধরেই গোটা উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ উৎসবে পর্যবসিত।কোচবিহারের এই রাস উৎসবকে কেন্দ্র করে যে মেলা হয় তাও সময়ের হাত ধরে অনেক বদলে গেছে। এসেছে আধুনিকতার ছোঁয়া! শৈশবে বাবার হাত ধরে যে মেলা দেখেছি তা চরিত্র ও আকৃতি দু'দিক থেকেই বদলে গেছে। গত পঁচিশ বছর ধরে খুব কাছে থেকে এই উৎসব ও মেলা দেখা, অনুভব করার সুযোগ হয়েছে। যা দিনদিন অভিজ্ঞতা ও প্রাপ্তির ঝুলিকে সমৃদ্ধ করে গেছে প্রতি ক্ষেত্রেই।  খুব সংক্ষেপে এই উৎসবের ইতিহাস না জানাটা কিন্তু অবিচারই ...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো,  তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) য...

মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা 2024 সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি (লেখক ও সম্পাদকীয় দপ্তরের কথোপকথন আকারে) --কী পত্রিকা? --নবপ্রভাত। --মুদ্রিত না অনলাইন? --মুদ্রিত। --কোন সংখ্যা হবে এটা? --বইমেলা 2024। --কোন কোন ধরনের লেখা থাকবে? --প্রবন্ধ-নিবন্ধ, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া। --বিশেষ কোন বিষয় আছে? --না। যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে। --শব্দ বা লাইন সংখ্যার কোন বাঁধন আছে? --না। নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো (যেমন, কবিতা 12-14 লাইনের মধ্যে, অণুগল্প কমবেশি 200/250শব্দে)। তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়। --ক'টি লেখা পাঠাতে হবে? --মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। --ফেসবুক বা অন্য কোন প্লাটফর্মে প্রকাশিত লেখা কি পাঠানো যাবে? --না। সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। --পত্রিকা কোন সময়ে প্রকাশিত হবে? --জানুয়ারি 2024-এর দ্বিতীয় সপ্তাহে। --লেখা পাঠানোর শেষতারিখ কত? -- 17 ডিসেম্বর 2023। --কীভাবে পাঠাতে হবে? --মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। --লেখার সঙ্গে কী কী দিতে হবে? --নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) --বিশেষ সতর্কতা কিছু ? --১)মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন '...

উৎসবের সৌন্দর্য: সেকালে ও একালে।। সৌরভ পুরকাইত

  উৎসবের সৌন্দর্য:  সেকালে ও একালে   সৌরভ পুরকাইত বাংলার উৎসব বাংলার প্রাণ। প্রতিদিনের জীবনযাপনের মধ্যে যখন মন ক্লান্ত হয়ে পড়ে তখন তাকে বেঁচে থাকার রসদ যোগায় এই উৎসব। কথায় বলে 'বারো মাসে তেরো পার্বণ'।মন আনন্দই চায়।তাই তাকে সজীবতা দিতে,পরিবারের,সমাজের ভালো-মন্দের কথা মাথায় রেখে মানুষ নিজেই সৃষ্টি করে নিয়েছে নানাবিধ উৎসবগুলিকে। একেবারে প্রাচীন কাল থেকে আজ পর্যন্ত মানুষ কখনোই উৎসব বিমুখ ছিল না।উৎসবই তাকে ঘর থেকে বাইরে টেনে এনেছে,চিনতে শিখিয়েছে আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার আনন্দকে। উৎসব আসলে প্রাণের সাথে প্রাণের যোগ, হৃদয়ের সাথে হৃদয়ের যোগ।রবীন্দ্রনাথ বলেছেন 'সত্য যেখানেই সুন্দর হয়ে প্রকাশ পায় সেইখানেই উৎসব'।হৃদয়ের সেই সুকোমল বৃত্তির জাগরণ যেন ফুটে ওঠা ফুলেরই মতো সত্য ও সুন্দর।এই জাগরণই উৎসব। তাই নানা কিছুর মধ্য দিয়ে,নানা উপলক্ষ্যে এই উৎসব প্রকাশ পায়। প্রাচীনকালে মানুষের হাতে না ছিল পসার, না ছিল পসরা।ছিল মনের আন্তরিকতা,মানুষকে কাছে টেনে নেবার ক্ষমতা।সেটাই ছিল উৎসবের সৌন্দর্য। তাই সেদিনের উৎসবে ক্ষুদ্র,তুচ্ছ উপকরণও প্রাণের উচ্ছ্বাসে মহৎ হয়ে উঠত।সেকালের উৎসবে লোক দেখানো ব্যাপার কিছু ...

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

বসন্তের কোকিল তুমি   বিচিত্র কুমার                      (০১) তোমার দু-আঁখির গহীন অরণ্যে একটা স্বপ্নের বহমান নদী রয়েছে, তারই রেশ ধরে আমি হেঁটে চলি অজানা বসন্তের পথে নীর উদ্দেশ্যে। সে চলার কোন শেষ সীমা নেই তাই আমার বিষণ্ণ একতারা সন্ন্যাস খুঁজে ফিরে , কবে তুমি বুঝবে অনুশ্রী মনের পর্দা খুলে একুশ বসন্ত তোমার রঙ ছিটিয়ে যাচ্ছে অচিনপুরে। এদিকে আমার দেহের প্রতিটি শিরা ধমনীতে প্রবাহিত হচ্ছে তোমার ভালোবাসার একটু উষ্ণতা পাবার জন্যে, শুধু অনুভবে তাণ্ডব উচ্ছাসিত হচ্ছে--- যেদিকে তাকাই --- ফুলে ফুলে ভ্রমর গুনগুনিয়ে উড়ে উড়ে পরে বসন্তের কোকিল গান গায় নব বসন্তে, তোমার দুই চোখে আমার একই ছায়া রয়ে যায় উতলা ভালোবাসার সীমান্তে।                 (০২)        এক রক্তাক্ত বসন্তের স্মৃতি কোন এক উতলা বসন্তের সকালে পুষ্পবনে ফুটেছিল একটি টকটকে লাল গোলাপ, তার সাথে হয়েছিলো দেখা প্রথম ফাগুনে হয়েছিল দুজনার এ জীবনের আলাপ।  তারপর প্র...

অনুভবে, অনুধ্যানে অনালোকিত কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী ।। সুপ্রিয় গঙ্গোপাধ্যায়

"এ কালে একটু লেখাপড়া জানা থাকাতে, এবং বঙ্গভাষায় অনেক গুলি পাঠ্য পুস্তক হওয়াতে কেবল পরনিন্দা করিয়া সময় কাটাইতে তাঁহাদের আবশ্যকও হয় না, প্রবৃত্তিও হয় না। …নিতান্ত সখ্যতা বা আত্মীয়তা না থাকিলে, সকল পেটের কথা খুলিয়া নিঃশ্বাস ছাড়িয়া তৃপ্তিলাভ করা, এ কালের মেয়েরা পছন্দ করেন না। তাঁহারা বইখানি, কার্পেটটুকু, নিজের স্বামী পুত্র লইয়া দিন যাপন করিতে বা একেলা থাকিতে কষ্ট বোধ করেন না।" —শরৎকুমারী চৌধুরাণীর এই লেখা (ভারতী ও বালক/ আশ্বিন কার্তিক, মাঘ/ ১২৯৮) দেখে বুঝতে অসুবিধা হয় না উনিশ শতকে নারীর লেখাপড়া শেখার উদ্দেশ্য ছিল মূলত আত্মমুক্তির জন্য। শুধু লেখাপড়া শেখা নয়, সাহিত্য সৃষ্টিতেও ছয়'এর দশক (উনিশ শতকের) থেকে নারীরা যে ধারা সূত্রপাত করেছিল তা নারীর আত্মমুক্তির পথকেই প্রসারিত করেছিল। ছয়'এর দশকের পূর্বেই ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে প্রথম ছাপার হরফে নারী রচিত কাব্য 'চিত্তবিলাসিনী' প্রকাশিত হয়। লেখেন কৃষ্ণকামিনী দাসী। ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে কবি ঠাকুরাণী দাসীর নাম উঠে আসতে থাকে, যিনি কবিতার পাশাপাশি গদ্যও লিখতেন। ঠিক সেই বছরই জন্মগ্রহণ করেন কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী, যাঁর কবিতা লেখা আত্মমুক্...

বছরের বাছাই

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৪তম সংখ্যা ।। ফাল্গুন ১৪৩১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

  এই সংখ্যায় একটি গ্রন্থ আলোচনা ও একটি ধারাবাহিক রচনা ছাড়া সব লেখাই ভাষা দিবস, মাতৃভাষা, ভাষাচেতনা ও ভাষা সমস্যা বিষয়ক রচনা। লেখাগুলি এই সংখ্যাকে অনেকটাই সমৃদ্ধ করেছে। পড়ুন। শেয়ার করুন। মতামত জানান। লেখকগণ নিজের নিজের লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন যতখুশি, যে মাধ্যমে খুশি। কিন্তু স্ক্রিনশট শেয়ার নৈব নৈব চ!  অন্য বিষয়ের লেখাগুলি আগামী সংখ্যার জন্য রইল।  সকলকে ধন্যবাদ, অভিনন্দন। ভালো থাকুন।   --সম্পাদক, নবপ্রভাত। ==  সূ  চি  প  ত্র  == প্রবন্ধ-নিবন্ধ অমর ২১শে ফেব্রুয়ারি বাঙ্গালীর বাংলা ভাষা দুর্জয় দিবস।। বটু কৃষ্ণ হালদার ভাষা শহীদদের পঁচাত্তর বছর।। অনিন্দ্য পাল একুশে ফেব্রুয়ারি : বাঙালির শ্রেষ্ঠ অশ্রুবিন্দু।। জীবনকুমার সরকার কবিগানের সাহিত্যিক ও সমাজতাত্ত্বিক মূল্য।। বারিদ বরন গুপ্ত বিপন্ন মাতৃভাষা ও সংস্কৃতি।। শ্যামল হুদাতী মায়ের দুধ আর মাতৃভাষা।। প্রদীপ কুমার দে একুশে ফেব্রুয়ারি : কিছু কথা।। বনশ্রী গোপ বাংলায় কথা বাংলায় কাজ।। চন্দন দাশগুপ্ত বিপন্ন মাতৃভাষা ও তার মুক্তির পথ।। মিঠুন মুখার্জী. হে অমর একুশে, তোমায় ভুলিনি, ভুলব না।। মহম্মদ মফিজুল ইসলা...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৭তম সংখ্যা ।। জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ মে ২০২৫

  প্রচ্ছদ চিত্র: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সূচিপত্র রবীন্দ্রনাথ এবং কয়েকজন নারী ।। অনিন্দ্য পাল পরাবাস্তববাদ ও বাংলায় জীবনানন্দের কাব্যচর্চা ।। রণেশ রায় প্রতীক্ষা ।। চন্দন দাশগুপ্ত আশ্রয় ।। সায়নী সাহা বয়স্ক শিক্ষাকেন্দ্র ।। দেবাংশু সরকার প্রণামের প্রভু ।। সুপ্রভাত মেট্যা দুর্ভাগ্যের সম্মুখ সমরে ।। সমীর কুমার দত্ত আচমকা শরৎ ।। অর্ণব সামন্ত প্রতিধ্বনি ✍️ সুবীর কুমার ঘোষ জীবন যেখানে যেমন ।। আরজু মুন জারিন বছর সীমান্তে হিসেব নিকেশ ।। রানা জামান চারটি কবিতা ।। বিবেকানন্দ নস্কর আমরা আছি ।। লালন চাঁদ চাওয়া ।। মাথুর দাস কাগজ ফুলে ।। সফিউল মল্লিক সময়ের স্রোত ।। দুর্গাদাস মিদ্যা তুমি মানুষ ।। বদরুল বোরহান দিঘার সমুদ্র ।। মাখনলাল প্রধান পুস্তক-আলোচনা ।। অরবিন্দ পুরকাইত সংযম ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত  চেনা প্রতিবেশী (প্রথম পর্ব) ।। দীপক পাল খেলার মাঠ ।। তূয়া নূর বন্ধু শ্যামলকান্তি ।। শংকর ব্রহ্ম তুমি তোমার মতো থাকলে ।। সত্যেন্দ্রনাথ বেরা গ্রীষ্মে খুবই হিংস্র রবি ।। জগবন্ধু হালদার স্বপ্ন দর্শন ✍️ পার্থ প্রতিম দাস মৌন মুখরতা ।। মুসা মন্ডল রুদ্র বৈশাখ ।। দীনেশ সরকার চিহ্নিত পদযুগ পদাঘাত ।। দেবাশীষ...

প্রচ্ছদ।। ৮৩তম সংখ্যা ।। মাঘ ১৪৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ।। প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র

  বিঃ দ্রঃ আগামী ফেব্রুয়ারি সংখ্যার জন্য ভাষা দিবসের কথা মাথায় রেখে লেখা পাঠান। email: nabapravatblog@gmail.com  সূচিপত্র ফিচার।। গোপাল ভাঁড়ের অজানা সত্য ।। লোকনাথ পাল প্রবন্ধ ।। মসুয়ার রায় পরিবার এবং বঙ্গসংস্কৃতি ।... প্রবন্ধ ।। সুধীন্দ্রনাথ দত্ত: কাব্যের দার্শনিক ও ন... কবিতায় সেতুবন্ধন (তৃতীয় অংশ) শিল্পবিপ্লবোত্তর কাল... রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর বিদ্রোহী প্রেমের কবিতা: ... কবিতা ।। এই মন ভালো নেই দিনে ।। সুপ্রভাত মেট্যা কবিতা ।। জোছনা আলোর স্বপ্ন ।। তুষার ভট্টাচাৰ্য কবিতা ।। নিঃস্ব হবো ।। লালন চাঁদ কবিতা ।। ভালোলাগা  ।। আজিজ উন নেসা  গল্প ।। স্বীকারোক্তি ।। চন্দন দাশগুপ্ত কবিতা ।। শীতের দিন ।। প্রশান্ত কুমার মন্ডল কবিতা ।। শীতকাল ।। অঙ্কিতা পাল নাসির ওয়াদেনের দুটি কবিতা ভূতের লেখা ছড়া ।। বদরুল বোরহান কবিতা ।। ব্যস্ত ।। আলাপন রায় চৌধুরী ছোটগল্প ।। লম্বুর স্বপ্নপূরণ ।। পরেশ চন্দ্র মাহাত কবিতা ।। সৎকার ।। সুমিত মোদক কবিতা।। শীত বৈচিত্র্য ।। সুমিতা চৌধুরী পুস্তক-আলোচনা ।। নিউটনের আপেল ও প্রেমিকা ।। অরবিন্... গল্প।। শান্তির পথে …...।। বন্দনা সেনগুপ্ত কবিতা ।। মা...

সূচিপত্র ।। ৮৯তম সংখ্যা ।। শ্রাবণ ১৪৩২ জুলাই ২০২৫

সূচিপত্র   প্রবন্ধ ।। বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় ।। মাখনলাল প্রধান প্রবন্ধ ।। শ্রমিকের অধিকার ।। চন্দন দাশগুপ্ত প্রবন্ধ ।। ভিনগ্রহীদের সন্ধানে ।। শ্যামল হুদাতী প্রবন্ধ ।। নারীমর্যাদা ও অধিকার ।। হিমাদ্রি শেখর দাস কবিতা ।। মশালের রং তুলি ।। তূণীর আচার্য কবিতা ।। জললিপি ।। রূপক চট্টোপাধ্যায় গুচ্ছকবিতা || শিশির আজম নিবন্ধ ।। পূনর্জন্ম ।। শংকর ব্রহ্ম মুক্তভাবনা ।। কোলাহল তো বারণ হলো ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত গল্প ।। গানের হাড় ।। শুভজিৎ দত্তগুপ্ত গল্প ।। শিকড়ের খোঁজে ।। সমীর কুমার দত্ত সুপ্রভাত মেট্যার পাঁচটি কবিতা গ্রন্থ-আলোচনা ।। আবদুস সালামের কাব্যগ্রন্থ 'অলীক রঙের বিশ্বাস'।। তৈমুর খান অণুগল্প ।। হরিবোল বুড়ো ।। সুমিত মোদক রম্যরচনা ।। গোয়েন্দা গোলাপচন্দ আর প্রেমের ভুল ঠিকানা ।। রাজদীপ মজুমদার দুটি গল্প ।। মুহাম্মদ ফজলুল হক দুটি কবিতা ।। তীর্থঙ্কর সুমিত কবিতা ।। মেঘমুক্তি ।। বন্দনা পাত্র কবিতা ।। ব্যবচ্ছিন্ন শরীর ।। কৌশিক চক্রবর্ত্তী কবিতা ।। শমনচিহ্ন ।। দীপঙ্কর সরকার কবিতা ।। ভালোবাসার দাগ ।। জয়শ্রী ব্যানার্জী কবিতা ।। ফণীমনসা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ছড়া ।। আজও যদি ।। বদ্রীন...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬

  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠালে  অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে হলে ভালো। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # ...

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ৮৬তম সংখ্যা ।। বৈশাখ ১৪৩২ এপ্রিল ২০২৫

সম্পাদকীয় এই সংখ্যাটি বাংলা নববর্ষ বিষয়ক সংখ্যা। নৱৰ্ষকেন্দ্রিক বহু তথ্যপূর্ণ লেখা এই সংখ্যাটিকে সমৃদ্ধ করেছে। বাংলা নববর্ষ উদযাপনের ইতিহাস, রীতিনীতি, উৎসব, পার্বন, লোকাচার, রূপান্তর বহুবিধ বিষয় প্রকাশিত হয়েছে এই সংখ্যার লেখাগুলিতে। এই সংখ্যার বাছাই কিছু লেখার সঙ্গে আগামীতে আরও কিছু লেখা সংযুক্ত করে বাংলা নববর্ষ বিষয়ক একটি মুদ্রিত সংখ্যা প্রকাশ করার ইচ্ছে রইল।  সকলকে নববর্ষের আন্তরিক শুভকামনা জানাই। উৎসবে আনন্দে থাকুন, হানাহানিতে নয়। ধর্ম-ব্যবসায়ীদের চক্রান্ত ব্যর্থ করে সহনাগরিকের পাশে থাকুন। মনে রাখুন, ধর্মকে মানুষই সৃষ্টি করেছে। ঈশ্বর আল্লা গড ইত্যাদির জন্মদাতা মানুষই। মানুষকে ভালোবাসুন। মানুষের পাশে থাকুন।  নিরাশাহরণ নস্কর  সম্পাদক, নবপ্রভাত।  সূচিপত্র প্রবন্ধ-নিবন্ধ-স্মৃতিকথা পয়লা বৈশাখ ।। সিদ্ধার্থ সিংহ নববর্ষকেন্দ্রিক মেলা, পার্বন, উত্সব, লোকাচার ।। সবিতা রায় বিশ্বাস নববর্ষ আবাহন ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে এবং বিভিন্ন দেশে ।। তুষার ভট্টাচার্য নববর্ষের সেকাল ও একাল ।। হিমাদ্রি শেখর দাস নববর্ষের হাল-হকিকৎ ।। শংকর ব্রহ্ম বোশেখি বাঙালি নাকি পোশাকি বাঙালি? ।। দিব্যেন্দু...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। নবপ্রভাত ৮৫ ।। চৈত্র ১৪৩১ মার্চ ২০২৫

  সূচিপত্র নিবন্ধ ।। মরিয়ম মির্জাখানি: এক অনন্য গণিতসূর্য ।। ... নিবন্ধ ।। নারী দিবসে যা ভাবা উচিত ।। বিশ্বনাথ পাল প্রবন্ধ ।। প্রাচীনকাল থেকে নারীরা অবহেলিত, বঞ্চিত,... নিবন্ধ ।। আমার চোখে আদর্শ নারী ।। জয়শ্রী বন্দ্... ফিচার।। এই মুহূর্তে বাংলা সাহিত্যে নারীদের লেখালেখ... আফ্রিকার লোককথা ।। করোটিকে বিয়ে করা অবাধ্য মেয়েটি ... ছোটগল্প ।। মানবী ।। ভুবনেশ্বর মন্ডল নিবন্ধ ।। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে অন্যতম নারী মু... নিবন্ধ ।। প্রিয় মহিলা সাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবী ।। ... গল্প ।। উই ওয়ান্ট জাস্টিস ।। রবীন বসু প্রবন্ধ ।। নিপীড়িতা ।। শ্যামল হুদাতী ফিচার ।। রমণী রতন ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত প্রবন্ধ ।। নারী সমাজ : তখন-এখন ।। তপন মাইতি নিবন্ধ ।। বহমান কালের ধারায় নারী ।। দীপক পাল গল্প ।। আমার দুর্গা ।। অঞ্জনা গোড়িয়া (সাউ) গল্প ।। যোগ্য জবাব ।। সমীর কুমার দত্ত ছোটগল্প ।। আমি দুর্গাকে দেখেছি।। চন্দন দাশগুপ্ত গল্প ।। সম্পর্ক ।। গৌতম সমাজদার কবিতা।। নারী মানে ।। গোবিন্দ মোদক কবিতা।। নারী ।। সমর আচার্য্য ছড়া ।। নারী অসামান্যা ।। সৌমিত্র মজুমদার কবিতা ।। নারী দিবসে ।। বিবেকানন্দ নস্কর কবিতা ।। না...

প্রবন্ধ ।। বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় ।। মাখনলাল প্রধান

বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় মাখনলাল প্রধান বাংলার শিল্প-সংস্কৃতির জগতে যাত্রা শিল্প তথা নাট‍্যশিল্পে মড়ক নেমে এসেছে । যাত্রা শিল্পের মড়কে শুধু কোভিড নয় তার বহুপূর্ব থেকেই অর্থনৈতিক বিপর্যয় , শিক্ষাক্ষেত্রে বন্ধ‍্যাত্ব এবং গ্ৰাম বাংলার পটপরিবর্তন শেষ পেরেক ঠুকে দিয়েছে। যাত্রা-শিল্পের লীলাভূমি ছিল গ্ৰাম বাংলা। গ্ৰামে প্রচুর যাত্রাপালা হত নানা উৎসবকে কেন্দ্র করে । জমিদারি ব‍্যবস্থা লুপ্ত হওয়ার পর গ্ৰামীণ মানুষের উদ‍্যোগে শীতলা পূজা,  কালীপূজা, দুর্গাপূজা, কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা, চড়ক ইত‍্যাদিকে উপলক্ষ‍্য করে যাত্রাপালার আয়োজন না হলে কেমন যেন ম‍্যাড়ম‍্যাড়ে লাগতো। সেই সঙ্গে কলকাতার বড়বড় কোম্পানির যাত্রাপালা ঘটা করে, টিকিট সেল করে হত মাঠে। খুব বড় মাপের খেলার মাঠ যেখানে ছিল না সেখানে ধানের মাঠ নেওয়া হত ‌। ত্রিশ-চল্লিশ হাজার মানুষ দেখতে আসত। স্পেশাল বাস পাঠাত  আয়োজক কর্তৃপক্ষ। বিনা ভাড়ায় বাসে যাতায়াত করত যাত্রার দর্শকেরা। কিন্তু বিকল্প ধানচাষ শুরু হলে জমিগুলো সময় মতো ফাঁকা পাওয়া গেল না । প্রথম দিকে ব‍্যাপকহারে ধান শুরু না হওয়ায় খুব একটা অসুবিধা হত না। বহুক্ষেত্রে  ধান কা...

প্রবন্ধ ।। ভিনগ্রহীদের সন্ধানে ।। শ্যামল হুদাতী

ভিনগ্রহীদের সন্ধানে  শ্যামল হুদাতী  ইতিহাসের শুরু থেকে বারবার মানুষকে একটা প্রশ্ন কুঁড়ে কুঁড়ে খায় – এই মহাবিশ্বে আমরা কি একা? পৃথিবীর মতো আরও গ্রহ রয়েছে, যেখানে মানুষের মতো বুদ্ধিমান প্রাণীরা বাস করে – এই সম্ভাবনা বরাবর মানুষকে মুগ্ধ করেছে। আমাদের প্রত্যেকের জীবনের কখনও না কখনও এই ভাবনা এসেছে। দীর্ঘ কয়েক দশকের গবেষণার পরও, এই বিষয়ে কোনও নিশ্চয়তা দিতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। জেমস ওয়েব মহাকাশ টেলিস্কোপ, বহু দূরের এমন কিছু গ্রহের সন্ধান দিয়েছে, যেগুলিতে প্রাণ থাকতেই পারে। তবে, নিশ্চিত কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে, আমেরিকার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাম্প্রতিক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, ভিনগ্রহীদের খুঁজতে বহু দূরে যাওয়ার কোনও দরকার নেই। তারা এই পৃথিবীতেই মানুষের ছদ্মবেশে মানুষের মধ্যেই বসবাস করতে পারে। আমরা ভিনগ্রহীদের যেমন কল্পনা করি, এরা তার থেকে আলাদা। এরা অনেকটাই, দেবদূতদের মতো। মানব জগতের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক প্রযুক্তিগত নয়, বরং জাদুকরি। মহাকাশে সৌরজগতের গ্রহ পৃথিবী ছাড়া অন্য কোথায় প্রাণ রয়েছে কি না তা নিয়ে চলছে বিস্তর গবেষণা। একই সঙ্গে পৃথিবী ছাড়া অন্য কোনো গ্রহে মানুষ বসবাস ক...

প্রবন্ধ ।। নারীমর্যাদা ও অধিকার ।। হিমাদ্রি শেখর দাস

নারীমর্যাদা ও অধিকার হিমাদ্রি শেখর দাস  নারীর মর্যাদা বলতে বোঝায় নারীর সম্মান, অধিকার, এবং তার ব্যক্তিগত স্বাধীনতা। এটি সমাজে নারীর অবস্থান এবং তার প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গিকে নির্দেশ করে। নারীর প্রতি সম্মানজনক আচরণ করা হয় এবং তাদের অধিকার গুলি সুরক্ষিত থাকে। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে এই শ্রেণি সংগ্রাম শুরু হয়েছিল অনেক আগে।  একদিকে শ্রেণী বৈষম্য অপরদিকে নারী পুরুষের বৈষম্য এই দুটি ছিল শ্রেণীবিভক্ত সমাজের অন্যতম দুটি মূল ভিত। নারীর অধিকারহীনতা বা দাসত্ব শুরু হয় পরিবার ও সম্পত্তির উদ্ভাবনের ফলে। বহু যুগ ধরে নারী সমাজকে পারিবারিক ও সামাজিক দাসত্বের বোঝা বহন করতে হয়েছে বিনা প্রতিবাদে। সভ্যতার ক্রম বিকাশের সাথে সাথে নিপীড়ন ও নির্যাতনের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে - দাস সমাজব্যবস্থা এবং সামন্ততান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় নারীরা পুরুষ ও পরিবারের অধীনতা স্বীকার করে নিতে বাধ্য হয়েছে। সামাজিক উৎপাদনের কাজে নারীদের বঞ্চিত রেখেই তাদের পরাধীন জীবন যাপনের মধ্যে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। নারীর অধিকারহীনতার বিরুদ্ধে সংগ্রামের সূচনা হয় ইংল্যান্ডের শিল্প বিপ্লবের পরবর্তী সময়ে। নতুন করে নারীদের সামাজিক উৎপাদনের কাজে ...

মাসের বাছাই

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯৩তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩২ নভেম্বর ২০২৫

সূচিপত্র বস্তু, চেতনা এবং কবি ।। সজল চক্রবর্তী দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত ।। রণেশ রায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট ও সন্নিহিত অঞ্চলের কথ্য শব্দ ।। অরবিন্দ পুরকাইত চাঁদে জীবন ।। শমীক সমাদ্দার অসমাপ্তি ।। মহুয়া হুই গ্যালাক্সির শব্দে ।। জাসমিনা খাতুন তিনটি কবিতা ।। দিবাকর সেন অপূর্ণতার শেষ অধ্যায় ।। সুপ্রিয় সাহা হাফ ডজন ছড়া ।। স্বপনকুমার পাহাড়ী স্বাপ্নিক অমলের ঘুৃম ।। সঞ্জয় দেওয়ান দুটি কবিতা ।। সৌমিত্র উপাধ্যায় পথ চলতি ✍️পার্থ প্রতিম দাস হেমন্তের বিষাদ ছুঁয়ে ।। শক্তিপদ পাঠক রাই আর বাবা ।। অদিতি চ্যাটার্জি স্থিতিশীল ।। রঞ্জিত মুখোপাধ্যায় হৃদয়ের শূন্য কোড ।। লিপিকা পিঙ্কি দে অমানিশা ।। সৌভিক মুখার্জী দৃষ্টিগত ।। শামীম নওরোজ জ্যান্ত ভূতের গপ্পো ।। পার্থ সারথি চট্টোপাধ্যায় ধুতরা ফুলের ঘ্রাণ ।। মজনু মিয়া তারা খসার আলোয় ।। তীর্থঙ্কর সুমিত উত্তরণে অন্তরায় ।। সমীর কুমার দত্ত প্রেম মুদ্রা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ধারা ।। লালন চাঁদ অন্যের ব্যথায় ব্যথি ।। জগদীশ মণ্ডল গর্ভ ।। শাশ্বত বোস ভ্রমণ বিষয়ক স্মৃতিকথা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত শাপে বর ।। সাইফুল ইসলাম রবিবার ।। সঙ্ঘমিত্রা দাস দুটি ...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬

  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠালে  অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে হলে ভালো। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # ...

গল্প ।। জাতিস্মর ।। আশীষ কুমার বিশ্বাস

    জাতিস্মর   আশীষ  কুমার   বিশ্বাস    গল্পের শুরুটা প্রায় ষাট বছর আগের কথা । যার নাম গৌতম, ডাক নাম ছিল বাবু ।  তার বছর তখন ছয়-সাত হবে । আমরা বা আমি তখন একটু বড় । এক সাথেই চলতো খেলা । গোল্লা ছুট, দাঁড়িয়া বান্দা, চোর-পুলিশ । যে মাঝে মাঝে খেলা থেকে বিরত থাকতো ; সে-ই জাতিস্মর । মাঠের পাশেই ছিল একটা খেঁজুর গাছ । তাতে হাত রেখে দূরের এক গ্রামের দিকে এক মনে তাঁকিয়ে থাকতো "বাবু" । গ্রামটির নাম "বিনয় পল্লী " । মাঝে বড়ো মাঠ । হাঁটা শুরু করলে তিরিশ - চল্লিশ মিনিট লাগবে । মাঝে জলে ভরপুর দেখে কখনো যাওয়া হয়নি । বাবু কে যখন বলতাম, ওপারে কি দেখছিস? ও বলতো, ওখানে আমার ছোট মা থাকে, দিদি থাকে, আমার ভুলু কুকুর থাকে । এ কথা আমাদের বিশ্বাস হতো না । আবার খেলায় ফিরে যেতাম, খেলতাম ।  কিন্তু ও বসে বসে , ওপারের গাছ পালা , বাড়ি ঘর দেখতো । কাছে গেলে বলতো , ওই যে সবুজ ,কচি কলাপাতা রঙের দালান বাড়ি, ওটাই আমাদের বাড়ি !  এই ভাবে মাস ছয়, বছর গড়াতে লাগলো । মনে প্রশ্ন জাগতে লাগলো, এ টা কি মন গড়া , বা বানিয়ে বানিয়ে বলছে? সত্যি প্রকাশ হোল এক দিন ।  সে বাড়িতে কিছু ...

কবিতা ।। ভাষার জন্য লড়াই ।। চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু

ভাষার জন্য লড়াই চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু মুখের ভাষা বাংলা ভাষা মাকে ডাকি মা, সারা বিশ্বে তোমার মাগো নেই তো তুলনা। তোমার মুখের প্রথম ভাষা আমার মনের সকল আশা তোমার ভাষায় বলবো মাগো আমার মনের কথা, এই ভাষাতেই জড়িয়ে আছে সকল স্বাধীনতা।  এই ভাষাকে আনতে গিয়ে তাজা বুকের রক্ত দিয়ে রাজপথে সব লড়াই হলো করলো লড়াই কারা, আমার মায়ের দামাল ছেলে রক্ত পলাশ যারা।  তোমার ছেলে লড়াই করে আনলো ভাষা ঘরে ঘরে সেদিন থেকে শহীদ মিনার সাজাই ফুলে ফুলে, বীর শহীদের ত্যাগের কথা যাইনি আজও ভুলে।    ++++++++++++++++++++++++++++++++    চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু শহীদ আবুল কাশেম সড়ক, বড় বাজার, চুয়াডাঙ্গা, বাংলাদেশ।

চিরকুটের কবিতা

নতুন পৃথিবী আজ সকালে রোদ্দুর নামুক ভেজা বর্ষার মতো গা ধুয়ে কিছুটা পবিত্র হবো যত জীর্ণ মলিন দ্বেষ বিলীন হোক সব সময়ের তটে গা ভাসিয়ে কিছুটা বিলাসী হবো যা ছিল অতীত যা ছিল কষ্ট সবকিছু ভুলে নবীনে ব্রতী হবো আসুক ধেয়ে সতেজ হাওয়া দূর হোক যত কুণ্ঠা ব্যথা পুরানো যত বিবাদ ভুলে ভালোবাসার আবার বেড়া দেবো কিছুটা আশাবাদী কিছুটা কর্মঠ কিছুটা জেদি কিছুটা শপথ আসুক ছুঁয়ে বাঁচার আলো হাতে হাত রেখেই বিশ্বাসের ঘরে আবার নতুন দীপ জ্বালাবো

কবিতা ।। অরণ্যকন্যা ।। অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়

  অরণ্যকন্যা অরিন্দম চট্টোপাধ্যায় অরণ্যকন্যার দৃষ্টির ভেতর বিষাদ বিন্দু ফোঁটা ফোঁটা জলের মতো গড়িয়ে যায়, হয়ে যায় কোন নদীপথ দৃষ্টি ভেঙে ভেঙে চলে যায় কোন এক শূন্য পথে অরণ্যকন্যার হৃদয়ের ভেতর ভাঙে যতো বৃক্ষপত্র নতুন পত্র পুষ্পের খোঁজ নেই ঠোঁট জুড়ে সমুদ্রকাঁপন বুদবুদের মতো অস্ফুট হয়ে উচ্চারিত হয় কোন অক্ষর শব্দ আর তাঁর শরীর থেকে ছড়িয়ে যায় হয়ে যায় একটা অদৃশ্য কবিতা...    ================== @ অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়,  বেহালা, কলকাতা -৭০০০৬০,  

কবিতা ।। মনোজকুমার রায়

জল সিঁড়ি চেক বইয়ের পাতা ফুরিয়ে যেতে থাকে -- ঝরে পড়ে বৃদ্ধ গাছটির পত্রমুকুল কাঁচা গন্ধ বেয়ে চলে সময়ের স্রোতে  সারা ভোর জেগে থাকি ঘুমের টলে তাড়া দেয় একগ্রাস অবিশ্বাসী বায়ু দিন ফুরনো লাল সূর্যের টানে নেমে আসে পাড় ছোঁয়া জল সিঁড়ি ================= মনোজকুমার রায় দঃ ঝাড় আলতা ডাউকিমারী, ধূপগুড়ি জলপাইগুড়ি -৭৩৫২১০ মো ৭৭৯৭৯৩৭৫৬৬

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯২তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩২ অক্টোবর ২০২৫

—: সম্পাদকীয় দপ্তর থেকে :— এই সংখ্যার জন্য লেখা এসেছিল প্রায় ১৮০টা। কিন্তু গুণগত মানে দুর্বল লেখার সংখ্যা বহু। আমরা নবপ্রভাতে নতুনদের কথা ভেবে বেশ কিছু দুর্বল লেখাও রাখি। কিন্তু সবসময় একই লোকের দুর্বল লেখা প্রকাশ করা অনুচিত বলে মনে করি। শেষ পর্যন্ত ৯৯ জনের লেখা রাখা গেল। যাদের লেখা প্রকাশিত হল না, তারা লেখাগুলি অন্য যেখানে খুশি পাঠাতে পারেন। বিশেষ কারণে এই সংখ্যার মুদ্রিত সংস্করণ প্রকাশিত হচ্ছে না। আমরা দুঃখিত। তবে মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি শীঘ্রই আসছে। সঙ্গে থাকুন। সকলকে উৎসবমুখর বর্ণময় শুভেচ্ছাসহ— —নিরাশাহরণ নস্কর, সম্পাদক, নবপ্রভাত। অনুরোধ : প্রকাশিত লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন, ছবি/স্ক্রীনশট নয়।  == সূচিপত্র == পড়া-লেখার ইতিহাস অনুসন্ধান।। তপন তরফদার উৎসব : মানুষের চিরন্তন আত্মপ্রকাশ।। কৃশানু ব্যানার্জি বাংলা : সভ্যতা ও সংস্কৃতির জন্মভূমি।। শ্যামল হুদাতী সমুদ্র আর অস্তিত্ব ।। সুব্রত চৌধুরী রাজা ছিলেন জুবিন গর্গ ।। গঙ্গা 'অনু'   আদ্যাশক্তি মহামায়ার বাংলা বারো মাসের বারো রূপ ।। অর্হণ জানা মেধাদাদুর আসর ।। রণেশ রায় বৈজ্ঞানিক মা...

উন্মুক্ত পাগলামি ।। আশরাফুল মণ্ডল

উন্মুক্ত পাগলামি আশরাফুল মণ্ডল আহা, অপরূপ নিজস্বতার দাহ! কুঁকড়ে যায় আবহমান, সজনে পাতার বোঁটায়! ভাপওঠা ভাতের কাছে মাছি সত্তায় কী নিপুণ! তবুও ঘোর লাগা বসন্তের ডাক, হাঁকে! খেদিয়ে দেয় পা দোলানো প্রস্তাব, ওই ধুনুরি চোখ! রাংতায় মোড়া ডাকের সাজ, দে দোল দোল! হুইসেল বাজিয়ে কে রুখে দ্যায় সেই নাকছাবির রুদালি কাঁপন! খালবিল ছেঁচে পাঁচসিকের  মানত কুড়িয়ে আনে, বাংলা বাজার। ঠ্যাং নাচানো সুরে চোখ মারছে, দ্যাখো ভ্যানতারা! মুখ খোলা মানেই পাঁজরের স্রোত ভাবা যেন উগরানো টালমাটাল! ঢিল মারা প্রশ্নের রোয়াকে বক্রচোখে যেন মেধাবী কবিতা! মুছে দিও তবে লাজুক গুপ্ত রোগ, দিনরাত্রি! ভালো থেকো তোমরা বাছাধন, রং মাস সে আর কতদিন... ================    ASRAFUL MANDAL Chandidas Avenue, B-zone, Durgapur, Paschim Bardhaman, Pin - 713205,  

কবিতা ।। সোনালি অতীত ।। প্রবোধ কুমার মৃধা

সোনালি অতীত  প্রবোধ কুমার মৃধা   সুশীতল ছায়াঘেরা স্নেহময়ী মাটি মা।   সে আমার জন্মভূমি সপ্তপুরুষের গাঁ।   প্রকৃতির বুক থেকে প্রাণের রসদ নিয়ে।   ফিরিতাম নদীতীরে হৃদয়ের গান গেয়ে।   সন্ধ্যাতারা উঁকি দিত গোধূলি লগনে।   প্রত্যুষে ভাঙিত ঘুম বিহঙ্গ কূজনে ।   আষাঢ়ের নব মেঘে ঘিরিত গগন।   বাদলের ছায়া ঢাকা কদম্ব কানন।   দলবেঁধে মাঠে-বাটে বেতালা-বেছন্দে।   কেটে যেত সারাদিন ভালো কভু মন্দে।   ডাক দেয় শিশুকাল, বাল্য ও কৈশোর।   অফুরন্ত প্রাণোচ্ছ্বল, আনন্দে বিভোর।   করমের স্রোতে ভেসে সংসারের হাটে।   ভিড়িল জীবনতরী নগরের ঘাটে।   ফিরিবার সাধ্য নাই ফেলে আসা পথে।   বাল্য রোমন্থন করি অতীত স্মৃতিতে।                    __________