Skip to main content

উপন্যাসিকা ।। উদয় ।। তপন তরফদার

(উপন্যাসিকা)  

uday

উদয়

পন  তরফদার

 

কলকাতার অনেক জায়গা বিভিন্ন কারনে প্রসিদ্ধ হয়ে যায় ডেকার্স লেন নাম শুনেই চোখ বুঁজে বলে দেওয়া যায় ওখানে প্রসিদ্ধ ডেকরেটারদের আস্থানা ডাঁহা ভুল ওটার  অঘোষিত অথচ সর্বজনবিদিত নাম -খাও গলি কলকাতার অফিস পাড়ার অফিস বাবুদের পেটপূজার বা ভুড়িভোজের সর্বোত্তম তীর্থ ক্ষেত্র এই ডেকার্স লেন অফিসের এক ঘেয়েমির যন্ত্রণা, এটুঁলি পোকার মত সর্বক্ষণ লেগে থাকা বুক চিন চিন করার একঘেয়েমি ভাবনায় কিছুক্ষণের জন্য বিশুদ্ধ অক্সিজেনের যোগান দেয় এই খাবার বিক্রেতারা দোকানের কোনো সাইনবোর্ডের দরকার হয়না চকচকে সবুজ কলাপাতায় লুচি,ডাল, ক্ষীরের শিঙাড়া দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তৃপ্তি করে খায় আর তাকিয়ে থাকে গণেশ ঘোষের দোকানের ক্যাশবাক্সে বসে কে বসে গণেশের বড় ছেলে অসীম এই অসীম সিনেমায় অভিনয় করবে বলে স্টুডিয়ো পাড়ায় ঘুরঘুর করতো ভাগ্যে শিকে ছিঁড়ে যায় পরিচালক তপন সিংহ ওকে পছন্দ করে ভিলেনের ভূমিকায় ব্যাস, এক কোপেতেই ঠান্ডা ক্ষীরের শিঙড়ার সঙ্গে  চর্মচক্ষে দেখতে পাওয়া পর্দার মানুষকে উপরি পাওনা হয়ে যেতে পারে অসীমের সঙ্গে কথা বলতে আসা তাবড় তাবড় তারার জগতের নায়ক শিল্পীদের সঙ্গে

      এই গণেশর দোকান সহ অগুনতি দোকানের জন্য প্রয়োজন অনেক অনেক কর্মচারী শুধুমাত্র খাবার  তৈরি করলেই হবেনা খাবার পরিবেশন করাসঠিকভাবে মনে রাখা কে কি খাচ্ছেখেয়ে পয়সা ঠিকমতো দিচ্ছে কিনা তারও নজরদারি করতে হয়এই দোকানগুলো  বেশ কয়েকজন চাল চুলোহীন কিশোর কাজ করে মানবাধিকার নিয়ে সোচ্চার মানুষেরাও আসে উদরপুর্তি করতে মানুষের খিদের সময় খিদে ছাড়া আর কিছুই মনে থাকেনাতাই এদেরকে নিয়ে  ওদের মালিকের কাছে কোনো উচ্চ বাচ্চা কেউই করে না

        এই ছেলেরা কলকাতারই আশপাশের বস্তিতে থাকেকলকাতার বড় রাস্তার পাশের ছোট রাস্তা ধরে এগোলেই গলির রাস্তা নজরে আসবেএই গলির তস্য কানাগলির ভিতর কতযে বস্তি আছে কলকাতা কর্পোরেশন ও হিসাবে রাখতে পারে নাচওড়া নর্দমার উপরেই কাঠের পাটাতন ফেলে দর্মার বেড়া, মাথায় প্লাস্টিকের ছাউনি দিয়ে ঘর বেধেছেওরা যদি এইভাবে বসবাস না করতো শহরের অনেকের বাড়ি অন্ধকার হয়ে যেতঝি, রাঁধুনি পাওয়া যেতনাবাড়ির কি অবস্থা হত কল্পনা করুনএকদিন কামাই করলেই বাড়িতে সকাল থেকেই কাক-পক্ষীরা ধারে কাছে ঘেঁষতে পারেনাআসলে সমাজের চলাচলের জন্য আপনা আপনিই একটা অলিখিত সামঞ্জস্য তৈরী হয়ে যায়ছেলেরা আসে কাজ করে ডেরায় চলে যায় এই ডেরায় থাকার সুযোগ ও কারো কারো থাকেনাপ্রকৃত অর্থে পথশিশুএরা তিন -চার বছর বয়সেই মা-বাবা ছাড়াকি ভাবে যে এগারো -বারো বছরে পৌঁছায় তার অনুসন্ধান করলে যে কোনো মর্মস্পর্শী আখ্যান জোলো হয়ে যাবেএরকমই এক কিশোর যাকে সবাই ফালতু বলে ডাকে নজরে পড়ে যায় কাস্টমস অফিসের আরদালি নির্মলের চোখেনির্মল প্রতিদিন খেতে আসে এখানেবাড়ি থেকে না খেয়েই আসতে হয়, তাই পেট ভরে খেতে সময় লাগে__নির্মল মালের মাঝারি উচ্চতাবয়স অনুপাতে মাথায় কাঁচাপাকা চুল বেশিচুলগুলো এলোমেলোচওড়া কপাল নাকটা টিকলোডানদিকের গালে, মেয়েরা যেমন  কপালে টিপ পরে ঠিক সেই ধরনের গোল টিপের সাইজে একটা কালো আঁচিলতোবড়ানো গালে খোঁচা খোঁচা দাড়ি, কিন্তু  চোখটা উজ্জ্বলবড় বড় চোখ দিয়ে নির্মল মাল ফালতুকে লক্ষ করে যায় ছেলেটা কবে থেকে উদয় হলো কে জানেছেলেটা যেন হাওয়ার উপর হেঁটে বেড়ায়আরও নজরে এসে যায় গত বুধবার এক খদ্দেরের পার্সটা পকেটে ঠিকমতো ঢোকাতে না পারার ফলে রাস্তায় পড়ে যায়খদ্দের দ্রুত পা চালিয়ে এগিয়ে যায়ফালতুর নজরে যখন আসে  খদ্দের তখন বড় রাস্তায়ফালতু  ফড়িংয়ের মতো উড়ে গিয়ে মানিব্যাগটা দিয়ে আসেনির্মলের নিজের ছেলের কথা মনের অন্দরে ভেসে ওঠে। 

 

()

       নির্মলের সুখের সংসার একদিনেই কালো অমাবস্যায় ঢেকে গেল আজ পূর্ণিমার আলোয় অবগাহন করে তুরীয় আনন্দ উপভোগ করছি কাল কি হবে কেউ বলতে পারেনা তিথি অনুযায়ী চাঁদের আলো বাড়বে বা কমবে, বিঞ্জানকে অনুসরণ করে বলতে পারি কিন্তু  ব্যক্তিগত ভাবে মানুষের জীবনে কাল কি হবে কেউই বলতে পারেনা যত দিন যাচ্ছে আমরা বিঞ্জান মনস্ক হচ্ছি সত্যকি তাই এখন খবরের কাগজ খুললেই দেখা যাবে স্বয়ং ঈশ্বরের থেকেও শক্তিশালী ওই জ্যোতিশরা বেশ কয়েকটি টিভি  চ্যানেল ওই ভবিষ্যতের ফলাফল জানিয়ে গাদাগাদা টাকা পকেটে পুড়ছে  এখনো মানুষের হুঁশ হচ্ছেনা উড়িষ্যার বালাসোরে করোমন্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় এতগুলো লোকজনের  কি একই রকমের শনির দশা ছিল তা কি জ্যোতিশরা বলেছিল নির্মল মনে করে সবচেয়ে খারাপ জীবিকা ওই ভবিষ্যতের কথা বলে, ভাঁওতা দিয়ে উপার্জন করা

         মিকি বিড়লা হাই স্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্র মিকি নির্মলের একমাত্র সন্তানলেখা পড়ায় যেমন ভালো  খেলা ধুলায়ও তেমন ভালোবিশ্ববিদ্যালয়ে যখন পড়াশুনা করবে মিকি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্লু হবেই হবেকলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা লেখাপড়ার সঙ্গে খেলাধূলায় বিশেষ দক্ষতার সঙ্গে পুরস্কারজয়ী  হলে  তাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের "ব্লু" স্বীকৃতি দেওয়া হয়স্কুলের বাৎসরিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় রেকর্ড সংখক প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়ে হিন্দু  হাই স্কুলের সর্বকালের রেকর্ড স্থাপন করেছেআনন্দ আর আনন্দমিকির হাতে শ্রেষ্ঠ অ্যাথলিটের ট্রফিমা মমতার হাতেও কয়েকটি পুরস্কার কলকাতার এরিয়ান ক্লাবের মাঠ থেকে  তাড়াতাড়ি পাড়ায় ফিরতে হবে পাড়ার লোকজনকে পুরস্কারগুলো দেখাতে হবে ওদের ঘর এ্ন্টালিতে ফিরতে হবে গেটের সামনেই একটা বাস দাঁড়িয়েরাস্তার বাঁদিক দিয়ে দেখা যাচ্ছে এন্টালি যাওয়ার এস নাইন মিনিবাসটা আসছে রাস্তার ওপাশে দাঁড়াবেঐই বাস চলে গেলে কম করে আধঘন্টা তীর্থের কাকের মত দাঁড়িয়ে থাকতে হবেমা, ছেলে দুজনেই দৌড়ে রাস্তার ওপাশে যেতে চায়রাস্তা পার হচ্ছে ওরা সেই সময়েই দ্রতগামী এক টাটাসুমো চোখের পলকে ওদের পিষে দিয়ে  হাওয়ায় মিলিয়ে গেলমিকির মাথা ফেটে চৌচির হয়ে ডিমের কুসুমের মতো মানব দেহের ঘিলু কালো পিচের উপরে লেপটে রয়েছেহাতে ধরা আছে শ্রেষ্ঠ স্পোষর্ম্যানের ট্রফিটামমতার হাতে শক্ত করে ধরা অন্যান্য পুরস্কার সামনের চাকা ছেলের মাথাকে খেয়েছে পিছনের চাকা  মমতার কোমর গুড়িয়ে দিয়ে চলে গেল এক ঘন্টা আগেও মিকি, মমতা জানতে পারিনি ওদের ভাগ্যে কি ঘটতে চলেছে

           মমতার হৃদপিন্ড ধিক ধিক করে চলছে প্রাণে বাঁচলেও বাঁচার কোন অর্থ হয়নাবিছানায় শয্যাশায়ীপ্রথমে মনে হয়ে ছিল স্মৃতি শক্তি ফিরে পাবেনাধীরে ধীরে স্মৃতি ফিরে পেলেও মমতা নিজের বিষন্ন মন নিয়ে নিজেই বলে যায় বাঁচার থেকে মরে যাওয়া অনেক ভালনির্মল সকালে মমতাকে চান করিয়ে দুধ মুড়ি খাইয়ে অফিসে চলে আসে।। দুপুর একটার পরে বুড়ি সবিতা মাসি সব বাড়ির কাজ শেষ করে এখানে এসে চান করে এদের চাট্টি ভাত ফুটিয়ে দিয়ে নিজেও খায়, মমতাকে খাওয়ায় রাতের জন্য কিছু  ডাল-ভাত ঢাকা দিয়ে  রেখে যায় নির্মল-মমতার জন্যএইভাবে ধুঁকে ধুঁকে দিনক্ষয় করে নির্মলের সংসার চলছে

 

()

       নির্মল অন্য একজনের থেকে খোঁজ নিয়ে জেনেছে, ফালতুর মা,বাবা আত্মীয় স্বজন নেইশিয়ালদাহ স্টেশনের তেরো নম্বর প্যাল্টফরমের শেষে  রেলের পরিতক্ত সিগন্যাল হাউসে কয়েকজন ভবঘুরের সঙ্গে থাকেনির্মলের ছেলেটাকে খুব ভালো লাগেবিশেষ করে সেদিনের ওই মানিব্যাগ ফেরত দেওয়ার ঘটনাটা চোখে ভাসছেছেলেটার শরীরে ভালো মানুষের রক্তই বইছে।  ওর মা হয়তো ওর পিতৃত্বের পরিচয় দিতে পারেনি বলেই অন্ধকার জগতে ফেলে রেখে পালিয়েছেএমন একটি ছেলেকে যদি ঘরে রাখা যায় দুপক্ষেরই মঙ্গলছেলেটাকে পরিচিতি দিয়ে সমাজের মূল স্রোতে ফিরিয়ে এনে প্রতিষ্ঠিত করা যেতে পারেনির্মল রবিবারে ওই খাবারের  দোকান বন্ধের দিনে খুঁজে খুঁজে রেল লাইন পেরিয়ে হাজির ওদের ডেরায়ডেরাটা দেখে আরো কষ্ট পেল নির্মলছেলেটা এখনো কি করে ভালো আছে তাই ভেবেই ভয় পেয়ে যায় নির্মলবেশ কয়েকজন গোল হয়ে বসে  নেশা করছে এখন এক নতুন নেশা বাজারে এসেছে "ইয়াবা"হেরোইনের মতো করেই নেশা করতে হয় ইয়াবারঅ্যালুমিনিয়ামের  ফয়েলের উপর ইয়াবা ট্যাবলেটটা রেখে নিচ থেকে তাপ দিয়ে ওটাকে গলাতে হয়গলানোর ফলে যে ধোঁয়া বেরোয় তা একটা  নলের মাধ্যমে মুখ দিয়ে টানতে হয়ধোঁয়া তত্ক্ষণাত সরাসরি স্নায়ুতন্ত্রকে উজ্জীবিত করে ফেলে এই ইয়াবা  ট্যাবলেট কে বলা হয় "আপার ড্রাগ" কারণ এটার প্রথম টানেই শারীরিক মানসিক একটা  ঝটকা লাগে যার ফলে সব কিছু  চাঙ্গা হয়ে ওঠে

          পাঁচ-ছজন ছেলে গোল হয়ে বসে আছে ঠিক মাঝখানে কাগজ পুড়িয়ে অ্যালুমিনিয়ামের  ফয়েলে তাপ দিয়ে ধোঁয়া গিলছেনির্মলকে দেখেই  ঝটপট সবাই এধার ওধারে সটকে গেলফালতু  ফ্যাল ফ্যাল করে নির্মলের দিকে তাকিয়ে থাকেফালতু  নির্মলকে চেনেকতদিন খাবার তুলে দিয়েছেচুপচাপ বসে খাবার খেয়ে চলে যায়তেমন মনে রাখার মতো কোনো ঘটনা ফালতুর মনে পড়েনানির্মল সিধে এগিয়ে এসে আন্তরিক গলায় বলে, আমি তোর কাছেই এসেছিফালতু  অবাক হয়ে বলে আমার কাছেআমি তো কোনো খারাপ কাজ আপনার সঙ্গে করিনি আমার সঙ্গে কি দরকার নির্মল বলে, না না আমি তোকে খারাপ বলছিনা ফালতু  বলে, ওদের সঙ্গে  আমাকে মেশাবেন না পারত পক্ষে  আমি ওদের সঙ্গে মিশিনাআমি ভালো ছেলেদের মতো বাঁচতে চাই আমি মানুষের মতো বাঁচতে চাই আমার মা ভদ্রলোকের মেয়ে আমি মায়ের মাথায় হাত রেখে শপথ নিয়েছি, আমি চুরি-চামারি, নেশা, কোনো অসৎকাজ করবোনামা বলেছে আমার বাবা ভদ্র ঘরের ছেলে ভালো মানুষভাগ্যের ফেরে আমার আজ এই অবস্থা বাড়ির অমতে আমার বাবা বিয়ে করে আমার মা নিচু জাতের মেয়ে বলে, দাদু, জ্যাঠারা আমার বাবাকে তাড়িয়ে দেয় বাবা রাগে দুঃখে  মা কে নিয়ে  এক কাপড়ে ঘর ত্যাগ করে সংসার পাতেন সংসার ভালোই চলছিল আমার তখন পাঁচ বছরের সব কিছু  উলোটপালট হয়ে যায় এক দুর্ঘটনার জন্য বাবা বাস ধরার জন্য দাঁড়িয়ে ছিলেন বাসের ব্রেক ঠিক মতো কাজ না করার জন্য এক্সাইড মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা লোকজনকে পিষে দেয়  নির্মলের  পুরানো ক্ষতটা মনের মাঝে ভেসে উঠে যন্ত্রণাটা সহ্য করে নিয়ে বলে, হাঁ ঘটনাটা খবরের কাগজে পড়েছিলাম মা অনেক চেষ্টা করেছিল আমাকে নিয়ে  বাঁচতে বস্তির একটা ঘরে ঠাঁই পেয়েছিলাম প্রতি রাতেই বিশুমামা যে ঘরটা যোগাড় করে দিয়েছিল সে প্রতি রাত্রেই  ঝামেলা করতো মায়ের সঙ্গে  বস্তিতে কিছু  ভালো মনের মানুষ থাকে ওরাই বলে বিশু ভালো লোক  নয় তোমাকে  নষ্ট করে দিয়ে  মেয়ে পাচারকারীদের কাছে  বিক্রি করে দেবে তোমরা পালিয়ে যাও  নির্মল জানতে চায় তোর মায়ের আর কোনো খবর পেয়েছিসফালতু ঝরঝর করে কাঁদতে থাকেনির্মল অপ্রস্তুত হয়ে পড়েনিজেই ওর পিঠে হাত বোলাতে বোলাতে সান্ত্বনা দিতে থাকে ফালতু বলে, আমি জানি মা সবারই সব সময় থাকেনাছোট্ট ফালতু যে এমন বড়দের মতো কথা বলবে নির্মলের ধারণাই ছিলনাফালতু বলে উঠে মা মরেনি গুণ্ডারা আমার মাকে ধরে নিয়ে গেছে ওদের  কথামত  বস্তির ঘর ছেড়ে আমরা স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে থাকতে শুরু  করি গভীর রাতআমি আর মা পাল্টফরমে শুয়ে আছি ধ্বসাতাধ্বস্তির আওয়াজে ঘুম ভেঙে গিয়ে দেখি মাকে চ্যংদোলা করে নিয়ে যাচ্ছেআমি মায়ের শাড়ি ধরে আছিআমাকে এক থাপ্পড় মেরে ফেলে দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেনে তুলে নিয়ে যায়মায়ের সেই কান্না এখনো আমার চোখের সামনে ভাসেআমাকে মানুষের মত মানুষ হতে হবে নির্মল এত কিছু  শুনবে আশা করেনিফালতুর মাথায় হাত বোলায়, বলে শান্ত হওআমি না বুঝে জিজ্ঞাসা করেছিলামআমার পরিবারেও এক অঘটনের ফলে আমাদের সব থেকেও কিছু  নেইনির্মল সব ঘটনা ফালতু কে বলেদুজনের মধ্যে এক অন্তরঙ্গ পরিবেশের সৃষ্টি হয়সেই  মোক্ষম সময়েই নির্মল বলে, তুই আমার সঙ্গে চলতুই আমার বাড়িতে আমাদের ছেলে হয়ে থাকবিফালতু  কোনো কিছু না ভেবেই রাজি হয়ে যায়

 

()

            ফালতু  নিজের মায়ের সেবা করতে পারেনি, মমতাকে মনপ্রাণ উজার করে সেবা করেমমতা, নির্মল  জ্যোতিষে বিশ্বাস  না করলেও  ঈশ্বরের প্রতি আস্থা রাখে মনে করে ঈশ্বর সৎমানুষের সঙ্গে থাকে নির্মল, মমতা, ওরা মনে করে তাদের ছেলে কে ঈশ্বরই ফেরত দিয়েছেনিজের ছেলে হয়ে যায় ফালতু ফালতুর নাম বদলে রাখা হয়  উদয়

             নির্মল পাড়ার ক্লাবের ছেলেদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয় ক্লাবের বাৎসরিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় সবাই হতবাক হয়ে যায়,বলতে থাকে এ কোথা থেকে উদয় হলো সবকটা দৌড় প্রতিযোগিতায় অবিশ্বাস্য কম সময়ে দৌড়ে প্রথম হয়ে যাচ্ছে মাঠের লোকজন জেনে গেল ছেলেটার নাম উদয় আমাদের পাড়ার নির্মল বাবুর বাড়িতে থাকে কেউ রটিয়ে দিল ওনার  দুরসর্ম্পকের আত্মীয় কেউ  কেউ  বলতে লাগলো  নির্মলবাবু দত্তক নিয়েছে ফালতু দৌড়  কোনো অংশে ভারতের গর্ব মিলখা সিং এর  থেকে কম নয় আর উদয়  মানে  আর্বিভাব এক নতুন অধ্যায়ের শুরু  করলো উদয় নতুন নতুন রেকর্ডের সৃষ্টি হবে এই উদয়ের দৌলতে ছেলেটা ভালো দৌড়ায়ক্লাবের ছেলেরা বলতে লাগল, আমাদের মিলখা সিংহ সুযোগ পেলে ও ভালো দৌড়বীর হতে পারেনির্মল  ওই জ্যোর্তময়ীর  রানার কোচিং সেন্টারে   উদয়ের ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করে দিল  মমতা  শুয়ে শুয়েই ওকে লেখাপড়া করাতে লাগলপাড়ার সবাইকে  অবাক করে দিয়ে প্রাইভেটে ভালো নম্বর পেয়ে মাধ্যমিক  পাশ করলো উদয় পড়াশুনার সঙ্গে দৌড়াদৌড়ি, খেলাধুলা নিষ্ঠার সঙ্গে চালিয়ে যায়

            মাঠের  ট্রেনিং শেষ করে কাস্টমস অফিসে নির্মলের সঙ্গে কিছুটা সময় কাটিয়ে বাড়িতে ফেরে এই সময়ে অফিসের অনেকের ফাইফরমাশ হাসিমুখেই করে দেয়অফিসের অনেকেই ভালোবাসে, পছন্দ করে উদয়কে যে পরিশ্রমী হয়, মানুষের উপকারের জন সচেষ্ট তাকে সবাই ভালোবাসে, সে সহজেই মানুষের মনে স্থান করে নিতে পারে   সেদিনটা ছিল নভেম্বরের কোনো একদিনসব বামপন্থী দল মিলিত হয়ে দ্রব্য মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে মিছিলের ডাক দিয়েছিলপুলিশের সঙ্গে খন্ড যুদ্ধ বেঁধে যায়পুলিশ গুলি  চালায়প্রতিবাদীরা যানবাহন বন্ধ করে দেয় শহর অচল হয়ে যায়সেই সময়েই অফিসে ফোন আসলো একটা জরুরি ফাইল সুপারিনটে্ন্ডন নিয়ে যেতে ভুলে গেছেনবস দিল্লী যাচ্ছেন রাজধানী এক্সপ্রেসেশিয়ালদহ থেকে ট্রেন ছেড়ে যাবে বিশ মিনিট পরেইবড়বাবু ফ্যাকাশে মুখে বলছে কি করে এই সময়ের মধ্যে এই পরিস্থিতিতে শিয়ালদহ যাবোউনিতো এসব মানবেননাআমাকেই বলবেন অপদার্থ কোনো কাজের নয়নির্মলের খারাপ লাগেঅফিসের সবাই নিরীহ পৌঢ় বড়বাবুকে ভালোবাসেকি করা যায়উদয় সব শুনছেমাথা নিচু করেই বলে, আমি একবার চেষ্টা করবোনির্মল বলে কি করে যাবি সব বন্ধউদয় বলে বন্ধ বলেইতো সুবিধা হবেআমি দৌড়ে স্টেশনের পিছনের রেল লাইন ধরে প্ল্যাটফর্মে পৌঁছে যাবো তোমারা উনাকে ফোন করে বলে দাও হলদে হাফশার্ট পরা, লম্বা একটা ছেলে যার নাম উদয় সে ফাইলটা নিয়ে  যাচ্ছে

          উদয় স্ট্রান্ড রোডের দিকে দৌড় শুরু  করে হাতে চকচকে রেক্সিনে বাঁধানো ফাইলকলকাতার লোক না বুঝেই পরোপকারও করতে ওস্তাদদুজন লোক, চোর চোর বলে উদয়ের পিছনে দৌড়াচ্ছেনা পিছনে তাকিয়ে সময় নষ্টের সময় এখন নয়কে যেন ওর কানে কানে বলছে, "ভাগ উদয় ভাগ।" জীবন যতদিন থাকবে যন্ত্রণাও ততদিন থাকবেউদয় হেড পোষ্টঅফিসের গোলবাড়ির  পিছনের সুলভ শৌচাগারে ঢুকে  লাফিয়ে পিছনের পাঁচিলে উঠে পড়ে পাঁচিল থেকে লাফ দিয়ে নেমে বাঁ দিকে ছুটে ঢুকে পড়ে  ডেভিড লেনেউদয় বাস্তবের ধাক্কা খেয়ে বুঝে গেছে  আনপাড় পাবলিককে কি ভাবে বোকা বানাতে বা বোঝাতে হয়উদয় দৌড়াতে  দৌড়াতে বলছে, আমাকে ট্রেন ধরতেই হবে, আমাকে ট্রেন ধরতেই হবেউদয়ের চিৎকারে পাবলিক ভয়ে বা ভক্তিতে  রাস্তা ছেড়ে দিচ্ছেকেউ মনে করছে পাগল কেউ মনে করছে ক্ষেপা কুকুরের মোতো দৌড়াচ্ছে, সরে যাওয়াই ভালোগায়ে পড়লে বিপদ  এই কানাগলি শর্টকাটে বাগরী মার্কেট মিশেছেওখান থেকে যায় কাশি দত্ত লেনে যা মেডিক্যাল কলেজে মিশেছে মেডিক্যাল কলেজের বাঁ পাশের  হ্যাারিসন রোড ধরে সুভাষ ইন্সটিউ্টকে  পিছনে ফেলে রেললাইনটা ধরে পনেরো মিনিটেই পৌঁছে যায় রাজধানী এক্সপ্রেসেবশ গুলারিয়া শাহ সাদা রুমাল দিয়ে ঘেমো টাক, মুখ মুছেই চলেছেউদয়ের হাতে ফাইলটা দেখেই ধড়ে প্রাণ আসেবাবারও বাবা থাকেদিল্লীর কর্তা যা মধুর বাণী শুনাতো তাতে একটা প্যান্টের পাছা হলদে হয়ে যাওয়ার পক্ষে যথেষ্টকড়কড়ে একশো টাকার নোট এগিয়ে দেয় উদয়ের দিকেউদয় বলে, সাহেব আমার বাবা ওখানে কাজ করে আপনাদের নুন খাইআমারও দায়িত্ব, সুযোগ পেলে আপনাদের  সাহায্য করা আজ গুলারিয়া সাহেবের সব কিছু  গুলিয়ে যাচ্ছেএই প্রথম একজনকে দেখলো টাকা না নিয়ে খুশী গদগদ হয়ে বলে, আমি দিল্লী থেকে ফিরে তোমার একটা ব্যবস্থা করে দেবো উদয় কোনো কথা বলে না, মনে মনে হাসে ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছে বড়রা বিপদ থেকে উদ্ধার হতে বা হয়ে প্রতিশ্রুতি দিতে কার্পণ্য করেনা, এবং ভুলে যেতেও ভোলেনা

          গুলারিয়া সাহেব এক সপ্তাহ হলো ফিরেছেবড়োবাবুকে বলেছে ওই ফাইলটা না নিয়ে গেলে সর্বনাশ হয়ে যেতোবড়বাবুর উপস্থিত বুদ্ধির ও প্রশংসা করেছেকালের নিয়মেই ঝড় থেমে গেছে, অফিস শান্ত হয়ে আগের মতই গতানুগতিক চলছে অফিসে নতুন কোনো ঝঞ্ঝাটের  উদয় হয়নি তাই স্বাভাবিক কারনেই উদয়ের খোঁজ পড়েনিবৃহস্পতিবারের বারবেলায়  অফিসে ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়লোদিল্লী থেকে খবর এসেছে এইবারের অল ইন্ডিয়া কাস্টমস স্পোর্টস মিট কলকাতায় হবে সব কিছুর ব্যবস্থা এই অফিসকে করতে হবেগুলারিয়া সাহেব বড়োবাবুকে ডেকে রুমাল দিয়ে টাক, মুখ মুছেই চলেছেন বড়বাবু মাখন সমাদ্দার কে সামনে বসিয়ে সব কথা খুলেই  বলেন, বড়বাবু বলেন, সাহেব ঘাবড়াবেন নাওরা বাজেট করে যা টাকা দেবে সেই অনুযায়ী "ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ঠিকাদার" কে বরাত দিয়ে দেবো বলেই ঠোঁটের পাশে মুচকি হাসিএই হাসির অর্থ গুলারিয়ার মর্মে মর্মে গাথাঠিকাদারের থেকে কমিশন পাওয়া যাবেগুলারিয়া এক ফ্যাকাশে মুখ করে বলে লেকিন স্পোর্টসমে  হামারা অফিস কা কেয়া পজিশন হোগাবিপদে পড়লে মাতৃভাষা অজান্তেই পেট থেকে বেরিয়ে আসেগুলারিয়া সাহেবের কোন দোষ নেইসারা ভারতের সব অফিসের সব কর্মচারিবৃন্দর এই প্রতিযোগিতাকলকাতার শাখা যদি কোনো পদক না পায় তাহলে কলকাতার বদনামের  থেকে গুলারিয়ার অযোগ্যতাই বেশি প্রমাণিত হবেকেউ বুঝবানা কত দিন হলো নতুন লোকজন নেওয়া হয় নি স্পোর্টস কোটার কোনো কর্মচারী এই অফিসে কাজ করেনাসমাদ্দার বাবু বলেন, নিয়ে  চিন্তা করবেন নাআপনি অস্থায়ী হিসাবে উদয় কে আমাদের দফতরে ঝাড়ুদার হিসাবে  নিয়োগ করে নিন।  সিনেমার পর্দায় যেমন দেখায় কড়াৎ করে বাজ পড়ার আওয়াজ আর পুরানো সব কথা মনে পরে যায়প্রথম কথাটাই বলে, "আমি কোথায়।" গুলারিয়া টাকে রুমাল ঘষতে ঘষতে মনে পড়ে যায় শিয়ালদা স্টেশনের ঘটনা গুলারিয়া মুখে চুক চুক আওয়াজ তুলে বলে, ভুলে গিয়েছিলাম, লেড়কা বহুত তেজি হ্যায় আচ্ছা হ্যায়

          কাস্টমস অফিসে সাজসাজ রবকেউ হাঁটার রেসে নাম দেবে বলে বাস ছেড়ে দিয়ে হেঁটে অফিসে ঢুকছেকিছুই বলতে পারছেনা গুলারিয়াটিফিন টাইম পাস করে সবাই "প্রাক্টিসে যাচ্ছি" বলে হাওয়া হয়ে যাচ্ছেগুলারিয়ার টাক আরও চওড়া হচ্ছেদিল্লী থেকে হোমড়া চোমড়ারা আসবেশোনা যাচ্ছে শুল্ক বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জ্ঞান সিং আসতে পারে  

       ২৩শে জানুয়ারি মোক্ষম দিনেই অনুষ্ঠানএই দিনে সব পক্ষই এক হয়ে কে কত দেশকে ভালোবাসে নেতাজী অন্ত প্রাণ প্রমাণ করে ছাড়েতেরঙ্গা পতাকা তুলে  জ্ঞান সিং জ্ঞান বিতরণ করতে শুরু  করলেনথামার কোন লক্ষণ নেইসেই কথায় বলে না, যার কেউ নেই তার ভগবান আছেএখানে ভগবান লোড শেডিং করে দিলেনসবাই স্বস্তির নিঃশাস ফেলল আশাতীত দর্শক উপস্থিত হয়েছেকর্মী বর্গের প্রত্যকেই পরিবার পরিজনবর্গ নিয়ে হাজিরফ্রি চা বিস্কুটজম্পেশ লাঞ্চ প্যাকেট পাওয়া যাবে

          হুইসেল বাজিয়ে শুরু হলো প্রতিযোগিতাপ্রতিযোগীরা সর্বোচ্চ কটি বিষয়ে অংশগ্রহণ করতে পারবে তার কোনো সীমা বেঁধে দেওয়া হয়নিদুটি -তিনটির বেশি বিষয়ে লড়তে গেলে যে দমের দরকার তা কজনের আছেতাছাড়াও যত বেশি প্রতিযোগী থাকবে তত ভালো হবে ফাঁকা ফাঁকা লাগবেনাএকেই বলে কপালের নাম গোপাল উদয়ের কপাল ফুলে কলাগাছপ্রত্যেকটি বিষয়ে  সে একশ মিটার থেকে দুহাজার মিটার দৌড়লং জাম্প থেকে হাই জাম্পসব বিষয়েই প্রথম মন্ত্রী জ্ঞান সিং খুব খুশিহামারা ডিপার্টমেন্ট কি আদমী হামকো বহুত খুশ কিয়াগুলারিয়া কানে কানে মন্ত্রীকে বলে, আমাদের কর্মচারী নয়কয়েক দিনের জন্য ক্যজুয়াল লেবার হিসাবে নিয়েছিমন্ত্রী বলে, আপনাদের এই বুদ্ধি নিয়ে কি করে ডিপার্টমেন্ট চালানওকে স্পোর্টস কোটায় চাকরির জন্য পাঠান, আমি সই করে দেবোগুলারিয়া বড়বাবুকে সাক্ষী রাখতে খোঁজ করলো, পেলোনা।  গুলারিয়া জানে পরের উপকার করবে নিজের ক্ষতি করে নয়চিঠি লিখলে  পাল্টি খেয়ে ওর ঘাড়েই যেন বন্দুক না চাপিয়ে দেয়

          এই সব অনুষ্ঠানে শেষ হয় "গো এজ ইয়ু লাইক" দিয়েপ্রতিযোগীরা যেমন খুশী সেজে আসেকিস্তিমাত করে দিলেন বড়বাবু "মুঝে প্যায়র হোগায়া, মুঝে প্যায়র হো হো গেয়া গান গেয়ে, লুঙ্গি  ড্যন্স, লুঙ্গি ড্যন্সের কায়দায় নেচে সবাইকে ডেকে ওনার সঙ্গে নাচতে অনুরোধ করলেন অনুরোধ কেউ  উপেক্ষা করলোনা ওনার সঙ্গে সবাই নাচতে শুরু  করে দিলমধুরেণুয়তে সমাপ্ত হলো

()

       উদয়কে চাকরি দেওয়া হয়েছেকোনো কাজ করতে হয়না বলে ক্ষোভকবে দৌড় প্রতিযোগিতা হবে তখন দৌড়াবেউদয়কে বলে "রেইড" করতে ওই দলের সঙ্গে পথেঘাটে যাবে ডিউটি করবে উদয় দেখে লরি ভর্তি ফুডর্কপোরেশনের গম রবীন্দ্র সেতুতে উঠেছে ড্রাইভার পকেট থেকে তাসের মতো কি একটা দেখিয়ে স্পীডে সেতুতে উঠে গেলউদয় দৌড়ে লাফ দিয়ে ড্রাইভারের দরজা ধরে টান মেরে বলে, 'রোকো' চোরাই মাল পাচার হচ্ছেশোরগোল বেঁধে যায়খবরের কাগজের লোক, টিভির লোক শকুনের মতো ঘিরে ধরে ছবি তুলতে থাকেকতৃপক্ষ বাধ্য হলো অ্যরেষ্ট করতেরাতেই পুলিশ কমিশনারের ফোন গুরালিয়াকে। "কি ব্যাপারওরা কমিশন দিয়েছে, আপনাকেও কমিশন দেওয়া হয়েছে তাও কেন ধরা হলোআমি জানতে পারলাম ড্রাইভার "পাঞ্জা" দেখানোর পরও ধরা হয়েছেগুলারিয়া টাকে হাত বুলাতে বোলাতে বলে টাকা পেয়েছিকিন্তু বিপদ হয়েছে ওই উদয় ওকে বলা যাচ্ছেনা আমরাই কমিশন খেয়ে ওদের কে ছেড়ে দিই

            কয়েক মাস পেরিয়ে গেছে উদয়ের নাম অনেকেই জেনে গেছে রাত বারোটায় ডন দাউদ মিঁয়া ফোন করে গুলারিয়াকে বলে, হচ্ছেটা কিএকটা লোককে কনট্রোল করতে পারছেন নাগুলারিয়া বলে, আমি শাঁখের করাতে পরে গেছি ওকে তো এখন ডিউটি থেকে  সরাতে পারিনা ওকে সরালেই কাগজে কাগজে  লেখা লেখি হবে আমার সাত গুষ্ঠি ঘুষখোর প্রমাণ করে দেবে ও যদি নিজে থেকে বলে যাবেনা তবেই সবার মঙ্গল দাউদ বলে আপনাদের মাথায় গোবর ও নেই যত সব ভূষিমালের দল গুলারিয়া সাহেব, ওকে বদলি করে দিন যে কোনো জংলী জায়গায় গুলারিয়া দাউদ মিঙাকে নিজের  বিবির থেকেও বেশি ভয় পায় বিবিরা মুখে টাইট দেবে প্রাণে মারবেনা দাউদের মতো দাউদকে বলবেনা  বলবনা মনে করেও বলে ফেলে, বদলি করলে, এখানে  কর্মচারীদের ইউনিয়ন ঘেরাও করে কাজকর্ম বন্ধ করে বগল বাজাবে টিভির লোকজন দের ডেকে এমন গরমাগরম বক্তৃতা দেবে যা শুনে পাবলিক আমাকে তো ভিলেন বানাবেই সঙ্গে সরকারকে জড়িয়ে রগরগে গল্পকথন শুরু করে দেবে দাউদ  এবার শোলের গব্বরের সেই ডায়লগটা স্মরণ করিয়ে বলে, আব তেরা কেয়া হোগা কালিয়া গুলারিয়া সাহেব বাথরুমে যাওয়ার সময় পেলোনা প্যান্টেই হয়ে গেল ফোনে বলেই ফেলে উষকো প্রমোশন দেখে ভাগায়াঙ্গে বড়বাবু এই সময়েই ঘরে ঢুকে কথাটা শুনেই চেপে ধরে গুলারিয়াকে গুলারিয়া গড়গড় করে সব উগলে দেয় বড়বাবু উদয়ের বিষয়ে উদ্বিগ্ন পুরো অফিসের বদনাম হয়ে যাবে বড়বাবু বুদ্ধি দেয় ওকে ডেপুটেশনে উত্তর বঙ্গ পাঠিয়ে দিন ওখানকার লোকজন দের কয়েক মাস সাহায্য করতে যাবে গুলারিয়া মনে মনে বলে এই জন্যই বড়বাবুকে শকুন বলে

 

()

         উদয়  পাঠিয়ে দেওয়া হলো উত্তর বঙ্গের ুলবাড়ি অফিসে এই অঞ্চলে  কাঠ মাফিয়া দের রাজত্ব পুরানো অনেক গাছ আছে যার সন্ধানে আন্তর্জাতিক মাফিয়ারা প্রচুর পরিমাণে টাকা  খরচ করে কোনো এক গাছের কাঠের টুকরো এক রাত্রি জলে ভিজিয়ে খেলে মধুমেহ অর্থাৎ ডায়াবেটিস রোগ  সেরে যায় সারা পৃথিবীতে অগুনতি কোটি কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে  এই রোগের  জন্য সামান্য  জলে ভিজিয়ে জলপান করলেই যদি রোগ সেরে যায়  তার মূল্য হিরের থেকেও কম দামি নয় এই অঞ্চলের বনে অনেক প্রাচীন মূল্যবান গাছ আছে  যা দুস্প্রাপ্য স্বাভাবিক কারনেই তার মূল্য অনেক  অনেক সমগ্র চোরাচালানিরা উত্তর বঙ্গের এই রাস্তা ধরেই চোরাচালান   করে

       উদয়ের সঙ্গে  আরো তিনজন  আছে ডিউটিতে উদয় ছাড়া তিন জনেরই বয়স ষাটের কাছাকাছি এই অঞ্চলের বাসিন্দা, অবসরের শেষ পর্যায় সবাই বাড়িতে থাকতেই বেশি ভালোবাসে তেমাথার ঢালে দাঁড়িয়ে  দাঁড়িয়ে ডিউটি দিচ্ছে ওরা সাধারণত সন্ধ্যা নামলেই পাহাড়িরা তাড়াতাড়ি  শুয়ে পড়তো এখন টিভির দৌলতে সবাই ঘরে বসেই টিভি দেখে, যার ফলে  যতদূর চোখ  যায় দুর থেকে মনে হয় বড় আকার বিশিষ্ট জোনাকিরা পাহাড়ের ধাপে  ধাপে জ্বলছে

       পাহাড়ি এলাকায় কখন বৃষ্টি নামবে কেউ জানে না হঠাৎ আকাশ মেঘাচ্ছন্ন সমস্ত প্রকৃতি যেন রুদ্ধ-শ্বাসে প্রলয়ের প্রতীক্ষায় একটা বিদুৎ আকাশকে এফোঁড় ওফোঁড়ে দীর্ণ-বিদীর্ণ করে দেবার পরই প্রচণ্ড শব্দ করে বজ্রপাত হল তারপর আবার সব চুপচাপ কয়েক পল পরেই সোঁ সোঁ শব্দের ঝড় এলো কামান গর্জনের সঙ্গে সঙ্গে যেন যুদ্ধ আরম্ভ হলো গাছগুলো  হাহাকার আওয়াজ তুলে আর্তনাদ করতে লাগলো পাখিরা বিভ্রান্ত হয়ে  উড়তে লাগল বৃষ্টি নামল বেশ মুষলধারে ঝড় বৃষ্টি দুটোই সমানে চলতে লাগল গাছের ডালপালা ভেঙে ছড়িয়ে পড়তে লাগল, মনে হলো মৃত সৈনিকদের দেহ আছড়ে পড়ছে ঝড়,বৃষ্টি আর অরণ্যের সমন্বয়ে  এক বৈচিত্র্যময় শব্দের সৃষ্টি করলো কখনও মনে হচ্ছে কেউ যেন  অট্টহাসি  হাসছে, পরক্ষণেই মনে হচ্ছিল  কেউ যেন কাঁদছে কান্নার আর্তনাদের সঙ্গে  খিকখিক হাসি মিশিয়ে দেওয়া হচ্ছে এক অসহনীয় আতঙ্কর পরিবেশ

      উদয়রা  ওয়াটার প্রুফটা পড়ে  নিয়ে ডিউটি দিচ্ছে।। উদয়ই রাস্তার ধারে একটা জীপ মাঝামাঝি গতিতে চলে গেল উদয় বুঝতে পারলো এই জীপ আগে আগে রেইকি করে মোবাইলে খবর দিয়ে দিচ্ছে "রাস্তা ক্লিয়ার" উদয় ওদেরকে বলে রাস্তায় আসতে পাখি ধরতে হবে ওরা এগিয়ে আসলোনা একটা লড়ি সোঁ সোঁ করে এগিয়ে আসছে উদয় হাত দেখিয়ে থামাতে বলে লরি না থেমে ওর গা ঘেঁষে এগিয়ে  যায় উদয় রির পাশাপাশি দৌড়াতে থাকে লরির নাগালের বাইরে, পিছন দিক থেকে আর একটা  জিপ জোরে ধাক্কা মারে রাস্তা  থেকে  ছিটকে এক গভীর খাদে পড়ার আগেই দুস্প্রাপ্য পাহাড়ি গাছ  "সোনালু" ডালের এক খাঁজে বাঁ হাতের পাঞ্জ্যা আটকে  যায় ভাগ্যিস ডালে হাতটা আটকে গিয়েছিল তা নাহলে পাঁচশো মিটার নিচের খাদে পাইনের বনে আছড়ে পড়তো  ঝুলতে থাকে উদয়, হাত ফসকালেই অতল খাদে লরিটা এঁকে বেঁকে এগোচ্ছে চড়াই রাস্তা টপ গিয়ারে কচ্ছপের গতি উদয় ঝুলন্ত অবস্থায়  ডান হাতে অত্যাআধুনিক  নাইন এম এম পিস্তলটা টিপ করে ট্রিগার টিপে বলে, কালো বাজারিদের নিকেশ করবই গুলিটা সিধে  লরির ডিজেল ট্যাংকে জ্বলন্ত লরিটা পাহাড়ের অতলস্পর্শ খাদে ঝাঁপিয়ে পড়ে

      উদয়ে ামহাতে পাঞ্জা সোনালু গাছের দুটি ডালের ফ্যঁকরার মাঝখানে আটকে গেছে শরীর ঝুলছে হাত খুলে গেলে  নিচে আছড়ে পরতে হবে ভোর হতে এখনো কয়েক ঘন্টা বাকি কিছু  অধিবাসি বুঝতে পেরেছে কিছু  একটা হয়েছে উদয়ের সঙ্গে  আরো যারা  ডিউটি করছিল তারা ছুটে এসেছে দু-তিনটে লরি মজা দেখার জন্য দাঁড়িয়ে গেছে ড্রাইভাররা মনে মনে বলছে বেশ  হয়েছে আমাদের ধরার ফল হাতেনাতে পেলি  সহকর্মীরা উপর তলায়  ফোন করে দিয়েছে রাত শেষ  হয়ে  আসছে অহনার আলো বুঝিয়ে দিচ্ছে সূর্য দেবতার উদয় আসন্ন উপর তলার আধিকারিকরা  এখনো ঠিক করতে পারছেনা  উদয়কে বাঁচতে টিম পাঠাবে কি পাঠাবেনা সূর্যদেব উদিত হয়ে উদয়ের মুখেই পড়ছে ওদিকে জ্ঞান হারিয়ে  ঝুলতেই থাকে উদয়

      দর্শকদের একান্ত প্রার্থনা স্বমহিমায় আবার সমাজে ফিরে আসুক উদয়

 

==============

 

 


Comments

বিধিবদ্ধ স্বীকার্য :

লেখার বক্তব্যের দায়িত্ব লেখকের, পত্রিকার নয়। আমরা বহু মতের প্রকাশক মাত্র।

মতামত/লেখা এখানে জমা দিন

Name

Email *

Message *

সাম্প্রতিক বাছাই

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬

  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠালে  অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে হলে ভালো। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # ...

গল্প ।। জাতিস্মর ।। আশীষ কুমার বিশ্বাস

    জাতিস্মর   আশীষ  কুমার   বিশ্বাস    গল্পের শুরুটা প্রায় ষাট বছর আগের কথা । যার নাম গৌতম, ডাক নাম ছিল বাবু ।  তার বছর তখন ছয়-সাত হবে । আমরা বা আমি তখন একটু বড় । এক সাথেই চলতো খেলা । গোল্লা ছুট, দাঁড়িয়া বান্দা, চোর-পুলিশ । যে মাঝে মাঝে খেলা থেকে বিরত থাকতো ; সে-ই জাতিস্মর । মাঠের পাশেই ছিল একটা খেঁজুর গাছ । তাতে হাত রেখে দূরের এক গ্রামের দিকে এক মনে তাঁকিয়ে থাকতো "বাবু" । গ্রামটির নাম "বিনয় পল্লী " । মাঝে বড়ো মাঠ । হাঁটা শুরু করলে তিরিশ - চল্লিশ মিনিট লাগবে । মাঝে জলে ভরপুর দেখে কখনো যাওয়া হয়নি । বাবু কে যখন বলতাম, ওপারে কি দেখছিস? ও বলতো, ওখানে আমার ছোট মা থাকে, দিদি থাকে, আমার ভুলু কুকুর থাকে । এ কথা আমাদের বিশ্বাস হতো না । আবার খেলায় ফিরে যেতাম, খেলতাম ।  কিন্তু ও বসে বসে , ওপারের গাছ পালা , বাড়ি ঘর দেখতো । কাছে গেলে বলতো , ওই যে সবুজ ,কচি কলাপাতা রঙের দালান বাড়ি, ওটাই আমাদের বাড়ি !  এই ভাবে মাস ছয়, বছর গড়াতে লাগলো । মনে প্রশ্ন জাগতে লাগলো, এ টা কি মন গড়া , বা বানিয়ে বানিয়ে বলছে? সত্যি প্রকাশ হোল এক দিন ।  সে বাড়িতে কিছু ...

কবিতা ।। মনোজকুমার রায়

জল সিঁড়ি চেক বইয়ের পাতা ফুরিয়ে যেতে থাকে -- ঝরে পড়ে বৃদ্ধ গাছটির পত্রমুকুল কাঁচা গন্ধ বেয়ে চলে সময়ের স্রোতে  সারা ভোর জেগে থাকি ঘুমের টলে তাড়া দেয় একগ্রাস অবিশ্বাসী বায়ু দিন ফুরনো লাল সূর্যের টানে নেমে আসে পাড় ছোঁয়া জল সিঁড়ি ================= মনোজকুমার রায় দঃ ঝাড় আলতা ডাউকিমারী, ধূপগুড়ি জলপাইগুড়ি -৭৩৫২১০ মো ৭৭৯৭৯৩৭৫৬৬

কবিতা ।। ভাষার জন্য লড়াই ।। চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু

ভাষার জন্য লড়াই চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু মুখের ভাষা বাংলা ভাষা মাকে ডাকি মা, সারা বিশ্বে তোমার মাগো নেই তো তুলনা। তোমার মুখের প্রথম ভাষা আমার মনের সকল আশা তোমার ভাষায় বলবো মাগো আমার মনের কথা, এই ভাষাতেই জড়িয়ে আছে সকল স্বাধীনতা।  এই ভাষাকে আনতে গিয়ে তাজা বুকের রক্ত দিয়ে রাজপথে সব লড়াই হলো করলো লড়াই কারা, আমার মায়ের দামাল ছেলে রক্ত পলাশ যারা।  তোমার ছেলে লড়াই করে আনলো ভাষা ঘরে ঘরে সেদিন থেকে শহীদ মিনার সাজাই ফুলে ফুলে, বীর শহীদের ত্যাগের কথা যাইনি আজও ভুলে।    ++++++++++++++++++++++++++++++++    চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু শহীদ আবুল কাশেম সড়ক, বড় বাজার, চুয়াডাঙ্গা, বাংলাদেশ।

চিরকুটের কবিতা

নতুন পৃথিবী আজ সকালে রোদ্দুর নামুক ভেজা বর্ষার মতো গা ধুয়ে কিছুটা পবিত্র হবো যত জীর্ণ মলিন দ্বেষ বিলীন হোক সব সময়ের তটে গা ভাসিয়ে কিছুটা বিলাসী হবো যা ছিল অতীত যা ছিল কষ্ট সবকিছু ভুলে নবীনে ব্রতী হবো আসুক ধেয়ে সতেজ হাওয়া দূর হোক যত কুণ্ঠা ব্যথা পুরানো যত বিবাদ ভুলে ভালোবাসার আবার বেড়া দেবো কিছুটা আশাবাদী কিছুটা কর্মঠ কিছুটা জেদি কিছুটা শপথ আসুক ছুঁয়ে বাঁচার আলো হাতে হাত রেখেই বিশ্বাসের ঘরে আবার নতুন দীপ জ্বালাবো

উন্মুক্ত পাগলামি ।। আশরাফুল মণ্ডল

উন্মুক্ত পাগলামি আশরাফুল মণ্ডল আহা, অপরূপ নিজস্বতার দাহ! কুঁকড়ে যায় আবহমান, সজনে পাতার বোঁটায়! ভাপওঠা ভাতের কাছে মাছি সত্তায় কী নিপুণ! তবুও ঘোর লাগা বসন্তের ডাক, হাঁকে! খেদিয়ে দেয় পা দোলানো প্রস্তাব, ওই ধুনুরি চোখ! রাংতায় মোড়া ডাকের সাজ, দে দোল দোল! হুইসেল বাজিয়ে কে রুখে দ্যায় সেই নাকছাবির রুদালি কাঁপন! খালবিল ছেঁচে পাঁচসিকের  মানত কুড়িয়ে আনে, বাংলা বাজার। ঠ্যাং নাচানো সুরে চোখ মারছে, দ্যাখো ভ্যানতারা! মুখ খোলা মানেই পাঁজরের স্রোত ভাবা যেন উগরানো টালমাটাল! ঢিল মারা প্রশ্নের রোয়াকে বক্রচোখে যেন মেধাবী কবিতা! মুছে দিও তবে লাজুক গুপ্ত রোগ, দিনরাত্রি! ভালো থেকো তোমরা বাছাধন, রং মাস সে আর কতদিন... ================    ASRAFUL MANDAL Chandidas Avenue, B-zone, Durgapur, Paschim Bardhaman, Pin - 713205,  

কবিতা ।। রঙ ।। ইউসুফ মোল্লা

  রঙ  ইউসুফ মোল্লা সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি,  পৃথিবী নানা রঙে সেজে উঠেছে।  ধূসর বাদামী রঙ তোমার দেহ,  মাথায় সবুজ রঙের বাবরি চুল,  তাতে গুঁজে রেখেছো লাল-নীল ফুল।  নববধূর মতো সিঁথিতে দিয়েছো সিঁদুর,  চোখে দিয়েছো কাজল।  দিগন্তভরা আকাশ তোমাকে নীল উপহার দিল,  সূর্যের লাল আলো তোমাকে সুন্দর করেছে।  তুমি তাদের ফিরিয়ে দিলে, বুকভরা ভালোবাসা আর স্নেহ।  মাঝে মাঝে এইভাবে হোলি আসে,  আমার মনকে রাঙিয়ে দিতে। ------------------    ইউসুফ মোল্লা উত্তর অঙ্গদ বেড়িয়া, ট্যাংরাখালী, ক্যানিং,  দক্ষিণ ২৪ পরগনা, ৭৪৩৩২৯

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯৩তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩২ নভেম্বর ২০২৫

সূচিপত্র বস্তু, চেতনা এবং কবি ।। সজল চক্রবর্তী দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত ।। রণেশ রায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট ও সন্নিহিত অঞ্চলের কথ্য শব্দ ।। অরবিন্দ পুরকাইত চাঁদে জীবন ।। শমীক সমাদ্দার অসমাপ্তি ।। মহুয়া হুই গ্যালাক্সির শব্দে ।। জাসমিনা খাতুন তিনটি কবিতা ।। দিবাকর সেন অপূর্ণতার শেষ অধ্যায় ।। সুপ্রিয় সাহা হাফ ডজন ছড়া ।। স্বপনকুমার পাহাড়ী স্বাপ্নিক অমলের ঘুৃম ।। সঞ্জয় দেওয়ান দুটি কবিতা ।। সৌমিত্র উপাধ্যায় পথ চলতি ✍️পার্থ প্রতিম দাস হেমন্তের বিষাদ ছুঁয়ে ।। শক্তিপদ পাঠক রাই আর বাবা ।। অদিতি চ্যাটার্জি স্থিতিশীল ।। রঞ্জিত মুখোপাধ্যায় হৃদয়ের শূন্য কোড ।। লিপিকা পিঙ্কি দে অমানিশা ।। সৌভিক মুখার্জী দৃষ্টিগত ।। শামীম নওরোজ জ্যান্ত ভূতের গপ্পো ।। পার্থ সারথি চট্টোপাধ্যায় ধুতরা ফুলের ঘ্রাণ ।। মজনু মিয়া তারা খসার আলোয় ।। তীর্থঙ্কর সুমিত উত্তরণে অন্তরায় ।। সমীর কুমার দত্ত প্রেম মুদ্রা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ধারা ।। লালন চাঁদ অন্যের ব্যথায় ব্যথি ।। জগদীশ মণ্ডল গর্ভ ।। শাশ্বত বোস ভ্রমণ বিষয়ক স্মৃতিকথা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত শাপে বর ।। সাইফুল ইসলাম রবিবার ।। সঙ্ঘমিত্রা দাস দুটি ...

চন্দন সুরভি নন্দর কবিতা

টাকার মেশিন                      মায়ের ওষুধ নিয়ে শহর থেকে ফিরল রতন সবে সন্ধ্যা নেমেছে  রাস্তায় আলো কম হাসপাতাল অনেক দূরে  অদৃশ্য যম খেলাকরে  মৃত্যুর সীমান্তে শায়িত মা   শেষ রক্ষা হল না  আস্তে আস্তে ভোরের আলো ফোটে রাতের আঁধারে ঘরের দেওয়াল গুলো রাঙিয়ে গেছে কারা  তুলেছে রং বেরং এর তোরন  এসেছে নির্বাচন  শোনাযায় এবার নাকি এ টি এম চিহ্নে দাঁড়িয়েছে একজন! টাকার মেশিন........  জিতলে সবাইকে দেওয়া হবে! সামনে বসে উল্লাসে ফেটে পড়া রোবট গুলো মানুষ কবে হবে?  ====================== Chandansuravi Nanda Revenue Office  BL&LRO,Manbazar-ll Boro Purulia PIN-723131 Phone-9163332432

ছোটগল্প ।। নীলিমার আত্মজাগরণ ।। পরেশ চন্দ্র মাহাত

নীলিমার আত্মজাগরণ পরেশ চন্দ্র মাহাত নীলিমা মাহাত, বয়স পঁচিশ প্লাস —তার বাবা মায়ের পঞ্চম তথা শেষ সন্তান। দুই দাদা —বড়দাদা শঙ্কর ও ছোটদাদা বিজয়। বড় দাদা শঙ্কর আর দুই দিদি তাদের কিন্তু বিয়ে হয়ে গেছে। একমাত্র নীলিমা আপাতত স্বামীর কোমল হাতের স্পর্শ ও সহানুভূতি থেকে বঞ্চিত এবং আদৌ কবে অথবা সেই সৌভাগ্য আসবে সেটা ঈশ্বরের নিকটই একমাত্র জ্ঞাত। সেই সঙ্গে দুবছরের সিনিয়র ছোটদাদা বিজয়েরও নীলিমার মতো অবস্থা। তারও জীবনসঙ্গিনী জুটেনি। মোট সাতজন সদস্য নিয়ে গঠিত সংসার নীলিমাদের পরিবার। মধ্যবিত্ত পরিবার —মধ্যবিত্ত পরিবার না বলে যদি নিম্নবিত্ত বলা হয় তবুও কোনো অত্যুক্তি করা হয় না। বাবার প্রত্যেকদিনের আয়ের উপর ভিত্তি করেই চলে সংসার। এই কঠোর এবং কঠিন পরিস্থিতিতেও নীলিমার মা শ্রীমতী মেনকা‚ সংসার সামলে তার ছেলেমেয়েদের পড়াশুনার প্রতি যথেষ্ট তৎপর ও সহানুভূতিশীল। তাদের পড়াশুনায় কোনো খামতি রাখেননি। যথা সময়ে তাদেরকে বিদ্যালয়ের মুখ দেখিয়েছে – টিউশনের বন্দোবস্ত করেছে। তাদের জীবন যাতে সুখকর হয় সেটাই প্রতিদিন ভগবানের কাছে প্রার্থনা করেছে। পাঁচ-পাঁচটি ছেলেমেয়ের মধ্যে সবাইকে উচ্চশিক্ষিত করে তোলা একপ...

জনপ্রিয় লেখা

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ -- "ত্রয়ী কাব্য" ------------------------------------------------------------------------------ সুনন্দ মন্ডল নবীনচন্দ্র সেন সাহিত্যে তথা বাংলা কবিতার জগতে এক অবিস্মরণীয় নাম। তিনি চট্টগ্রাম জেলার নওয়াপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ১৮৪৭ সালে তাঁর জন্ম এবং মত্যু ১৯০৯ সালে। বঙ্কিমচন্দ্র তাঁকে 'বাংলার বায়রন' বলেছেন। ‎জীবৎকালীন যুগে আত্মপ্রত্যয়ের মধ্যে জাতীয় চরিত্র আত্মস্থ করে নতুন সংস্কারে প্রয়াসী হয়ে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখেছেন।মধুসূদন-হেমচন্দ্র-নবীনচন্দ্র--এই তিন কবি বাংলা কাব্যধারায় প্রাণ সঞ্চার করেছিলেন। বিশেষত মহাকাব্য লেখার দুঃসাহস দেখিয়েছিলেন। এদিক থেকে মধুসূদন দত্ত একজন সফল মহাকাব্যিক। তাঁর 'মেঘনাদ বধ' কাব্যের মত গভীর ও ব্যঞ্জনাময় না হলেও নবীনচন্দ্র সেনের 'ত্রয়ী' কাব্য বিশেষ মর্যাদা দাবি করতেই পারে। তাছাড়া 'ত্রয়ী' কাব্যে ধর্মীয় ভাবধারার আবেগ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ‎ ‎নবীনচন্দ্র সেন বহু কাব্য লিখেছেন। যেমন- 'অবকাশরঞ্জিনী','পলাশীর যুদ্ধ', 'ক্লিওপেট্রা', 'রঙ্গমতী', 'খ্রীষ্ট', ...

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা শ্রীজিৎ জানা "সময় চলিয়া যায় নদীর স্রোতের প্রায়"। স্রোতের ধারা তার দু'প্রান্তে রেখে যায় ভাঙাগড়ার চিহ্ন। কালের দৃশ্যপটেও পরিবর্তনের ছবি অনিবার্যভাবেই চোখে পড়ে। সমাজ সময়ের ছাঁচে নিজেকে গড়ে নেয় প্রতিনিয়ত।  সেখানে মনে নেওয়ায় বাধা থাকলেও,মেনে নেওয়ার গাজোয়ারি চলে না। ফলত কাল বদলের গাণিতিক হিসেবে জীবন ও জীবিকার যে রদবদল,তাকেই বোধকরি সংগ্রাম বলা যায়। জীবন সংগ্রাম অথবা টিকে থাকার সংগ্রাম।  মানুষের জীবনযাপনের ক্ষেত্রে আজকে যা অত্যাবশ্যকীয় কাল তার বিকল্প রূপ পেতে পারে অথবা তা অনাবশ্যক হওয়াও স্বাভাবিক। সেক্ষেত্রে উক্ত বিষয়টির পরিষেবা দানকারী মানুষদের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হওয়া অস্বাভাবিক নয়। এক কালে গাঁয়ে কত ধরনের পেশার মানুষদের চোখে পোড়তো। কোন পেশা ছিল সম্বৎসরের,আবার কোন পেশা এককালীন।  সব পেশার লোকেরাই কত নিষ্ঠা ভরে গাঁয়ে  তাদের পরিষেবা দিত। বিনিময়ে সামান্য আয় হত তাদের। আর সেই আয়টুকুই ছিল  তাদের সংসার নির্বাহের একমাত্র উপায়। কালে কালান্তরে সেই সব পেশা,সেই সব সমাজবন্ধুরা হারিয়ে গ্যাছে। শুধুমাত্র তারা বেঁচে আছে অগ্রজের গল্পকথায়,আর বিভিন...

গ্রন্থ আলোচনা: শর্মিষ্ঠা দেবনাথ

প্রতিবাদ যখন অগ্নিবাণী বাংলাদেশে নারীমুক্তি ও নারী আন্দোলনের পুরোধা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ১৯৯তম জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদিত হল " আসিফা এবং.." কাব্য সংকলনটির মধ্যদিয়ে।সংকলনটির বিশেষত্ব হল,এটি উৎসর্গ করা হয়েছে নারীর সম্মান রক্ষার আন্দোলনের যোগ্যতম ব্যক্তি শহীদ শিক্ষক বরুন বিশ্বাসকে। সংকলক প্রকাশক সন্দীপ সাহু নিজে এবং বিশিষ্ট কবি সাহিত্যিকদের দিয়ে লিখিয়ে নিয়েছেন এমন কিছু কবিতা, যা শুধুমাত্র শব্দ ও ছন্দের অনুবন্ধ নয়, এক একটি অগ্নিবাণী।আসলে জীবনকে দেখার স্বাতন্ত্র‍্যে কবিরা সব সময়ই অগ্রগণ্য এবং অনন্য।যুগ ও জীবন দ্বন্দ্বের কণ্ঠস্বরকে আশ্রয় করে,একদিকে মনের প্রবল দাহ ও অন্যদিকে  নির্যাতিতা শিশুকন্যা ও নারীর প্রতি মনের গভীর আকুলতা থেকে প্রকাশ পেয়েছে "আসিফা এবং" এর  কবিতাগুলি।এক অন্ধকার সময়ের মুখোমুখি আমরা,সেই অন্ধকার আমাদের নিয়ে এসেছে সামাজিক অবক্ষয়ের শেষধাপে যেখানে নৈতিকতা,পাপবোধ,গ্লানিকে সরিয়ে রেখে, সমাজের বানানো নিয়মকে তোয়াক্কা না করে,অনায়াস দক্ষতায় ও ক্ষিপ্রতায় নিজেরই ধর্মচেতনাকে জলাঞ্জলি দিয়ে কিছু মানুষ তার পশুত্বের পরিচয় দিয়েছে ধর্ষণ ও ন...

শ্যামাপদ মালাকারের কবিতা

চোখ """"""" নদী, অরণ্য, রাতের ফালি চাঁদ- সবেই তো আমার...স্বর্ণপিঁড়িটাও!। সেদিন, শুকতারাটার গা' মাপতে গিয়ে মনে হল, --ওরা আমার চেয়েও সুখী? দেখিনা একবার গাইতি-শাবল চালিয়ে... চালালাম। জল-মাটি ভেজা একটা 'চোখ' কুড়িয়ে ফিরলাম! সেই চোখদিয়ে দেখি-- শেষ বিকেলের নিরন্ন আঁচে ঝলসানো বুকে নীড়ে ফিরছে ধূলিমাখা কত কাল পা, কি শান্তি - কি তৃষ্ণা! পাতাক্ষোয়া কোদালেরর মাথায় ঝরেপড়া ললাটের ঘামে, কারা যেন জীবন শাণ দেয়! রুক্ষঠোঁটের আবরণে এক সময় নেমে আসে শিশিরস্নাত কালনিশি-- মাঝের ব্যবধান মুছে দেয় প্রতিশ্রুতির ভীড়- - পূর্বজনমের নিদর্শনচুম্বন শেষে হেরে যায় কার মমতাজ-- ম্লান হয়ে যায় কত পিঁড়ি! ... ম্লান হয়ে যায় কত পিঁড়ি! ... ম্লা...

কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা: এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায় ।। পার্থ সারথি চক্রবর্তী

  কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা : এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায়  পার্থ সারথি চক্রবর্তী  কথায় বলে বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। রাজার শহর কোচবিহারের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা আরো অনেক বেশি। দুর্গাপূজা আর দীপাবলির মতো দু'দুটো বিরাট মাপের উৎসবের রেশ কাটতে না কাটতেই, এ শহর ভাসে রাস উৎসবের উন্মাদনায়। মদনমোহন ঠাকুর কোচবিহারের প্রাণের ঠাকুর। তাঁকে নিয়ে সবার আবেগ আর শ্রদ্ধা ও ভালবাসা এখানে বাঁধনছাড়া। এক অপূর্ব মিলনোৎসবের চেহারা নেওয়া এই উৎসব ঐতিহ্যবাহী ও ঐতিহাসিক। জন, মত, সম্প্রদায়ের উর্ধে এই উৎসবের গ্রহণযোগ্যতা। সময়ের কষ্টি পাথরে পরীক্ষিত! এক প্রাণের উৎসব, যা বহুদিন ধরেই গোটা উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ উৎসবে পর্যবসিত।কোচবিহারের এই রাস উৎসবকে কেন্দ্র করে যে মেলা হয় তাও সময়ের হাত ধরে অনেক বদলে গেছে। এসেছে আধুনিকতার ছোঁয়া! শৈশবে বাবার হাত ধরে যে মেলা দেখেছি তা চরিত্র ও আকৃতি দু'দিক থেকেই বদলে গেছে। গত পঁচিশ বছর ধরে খুব কাছে থেকে এই উৎসব ও মেলা দেখা, অনুভব করার সুযোগ হয়েছে। যা দিনদিন অভিজ্ঞতা ও প্রাপ্তির ঝুলিকে সমৃদ্ধ করে গেছে প্রতি ক্ষেত্রেই।  খুব সংক্ষেপে এই উৎসবের ইতিহাস না জানাটা কিন্তু অবিচারই ...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো,  তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) য...

মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা 2024 সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি (লেখক ও সম্পাদকীয় দপ্তরের কথোপকথন আকারে) --কী পত্রিকা? --নবপ্রভাত। --মুদ্রিত না অনলাইন? --মুদ্রিত। --কোন সংখ্যা হবে এটা? --বইমেলা 2024। --কোন কোন ধরনের লেখা থাকবে? --প্রবন্ধ-নিবন্ধ, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া। --বিশেষ কোন বিষয় আছে? --না। যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে। --শব্দ বা লাইন সংখ্যার কোন বাঁধন আছে? --না। নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো (যেমন, কবিতা 12-14 লাইনের মধ্যে, অণুগল্প কমবেশি 200/250শব্দে)। তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়। --ক'টি লেখা পাঠাতে হবে? --মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। --ফেসবুক বা অন্য কোন প্লাটফর্মে প্রকাশিত লেখা কি পাঠানো যাবে? --না। সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। --পত্রিকা কোন সময়ে প্রকাশিত হবে? --জানুয়ারি 2024-এর দ্বিতীয় সপ্তাহে। --লেখা পাঠানোর শেষতারিখ কত? -- 17 ডিসেম্বর 2023। --কীভাবে পাঠাতে হবে? --মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। --লেখার সঙ্গে কী কী দিতে হবে? --নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) --বিশেষ সতর্কতা কিছু ? --১)মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন '...

উৎসবের সৌন্দর্য: সেকালে ও একালে।। সৌরভ পুরকাইত

  উৎসবের সৌন্দর্য:  সেকালে ও একালে   সৌরভ পুরকাইত বাংলার উৎসব বাংলার প্রাণ। প্রতিদিনের জীবনযাপনের মধ্যে যখন মন ক্লান্ত হয়ে পড়ে তখন তাকে বেঁচে থাকার রসদ যোগায় এই উৎসব। কথায় বলে 'বারো মাসে তেরো পার্বণ'।মন আনন্দই চায়।তাই তাকে সজীবতা দিতে,পরিবারের,সমাজের ভালো-মন্দের কথা মাথায় রেখে মানুষ নিজেই সৃষ্টি করে নিয়েছে নানাবিধ উৎসবগুলিকে। একেবারে প্রাচীন কাল থেকে আজ পর্যন্ত মানুষ কখনোই উৎসব বিমুখ ছিল না।উৎসবই তাকে ঘর থেকে বাইরে টেনে এনেছে,চিনতে শিখিয়েছে আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার আনন্দকে। উৎসব আসলে প্রাণের সাথে প্রাণের যোগ, হৃদয়ের সাথে হৃদয়ের যোগ।রবীন্দ্রনাথ বলেছেন 'সত্য যেখানেই সুন্দর হয়ে প্রকাশ পায় সেইখানেই উৎসব'।হৃদয়ের সেই সুকোমল বৃত্তির জাগরণ যেন ফুটে ওঠা ফুলেরই মতো সত্য ও সুন্দর।এই জাগরণই উৎসব। তাই নানা কিছুর মধ্য দিয়ে,নানা উপলক্ষ্যে এই উৎসব প্রকাশ পায়। প্রাচীনকালে মানুষের হাতে না ছিল পসার, না ছিল পসরা।ছিল মনের আন্তরিকতা,মানুষকে কাছে টেনে নেবার ক্ষমতা।সেটাই ছিল উৎসবের সৌন্দর্য। তাই সেদিনের উৎসবে ক্ষুদ্র,তুচ্ছ উপকরণও প্রাণের উচ্ছ্বাসে মহৎ হয়ে উঠত।সেকালের উৎসবে লোক দেখানো ব্যাপার কিছু ...

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

বসন্তের কোকিল তুমি   বিচিত্র কুমার                      (০১) তোমার দু-আঁখির গহীন অরণ্যে একটা স্বপ্নের বহমান নদী রয়েছে, তারই রেশ ধরে আমি হেঁটে চলি অজানা বসন্তের পথে নীর উদ্দেশ্যে। সে চলার কোন শেষ সীমা নেই তাই আমার বিষণ্ণ একতারা সন্ন্যাস খুঁজে ফিরে , কবে তুমি বুঝবে অনুশ্রী মনের পর্দা খুলে একুশ বসন্ত তোমার রঙ ছিটিয়ে যাচ্ছে অচিনপুরে। এদিকে আমার দেহের প্রতিটি শিরা ধমনীতে প্রবাহিত হচ্ছে তোমার ভালোবাসার একটু উষ্ণতা পাবার জন্যে, শুধু অনুভবে তাণ্ডব উচ্ছাসিত হচ্ছে--- যেদিকে তাকাই --- ফুলে ফুলে ভ্রমর গুনগুনিয়ে উড়ে উড়ে পরে বসন্তের কোকিল গান গায় নব বসন্তে, তোমার দুই চোখে আমার একই ছায়া রয়ে যায় উতলা ভালোবাসার সীমান্তে।                 (০২)        এক রক্তাক্ত বসন্তের স্মৃতি কোন এক উতলা বসন্তের সকালে পুষ্পবনে ফুটেছিল একটি টকটকে লাল গোলাপ, তার সাথে হয়েছিলো দেখা প্রথম ফাগুনে হয়েছিল দুজনার এ জীবনের আলাপ।  তারপর প্র...

অনুভবে, অনুধ্যানে অনালোকিত কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী ।। সুপ্রিয় গঙ্গোপাধ্যায়

"এ কালে একটু লেখাপড়া জানা থাকাতে, এবং বঙ্গভাষায় অনেক গুলি পাঠ্য পুস্তক হওয়াতে কেবল পরনিন্দা করিয়া সময় কাটাইতে তাঁহাদের আবশ্যকও হয় না, প্রবৃত্তিও হয় না। …নিতান্ত সখ্যতা বা আত্মীয়তা না থাকিলে, সকল পেটের কথা খুলিয়া নিঃশ্বাস ছাড়িয়া তৃপ্তিলাভ করা, এ কালের মেয়েরা পছন্দ করেন না। তাঁহারা বইখানি, কার্পেটটুকু, নিজের স্বামী পুত্র লইয়া দিন যাপন করিতে বা একেলা থাকিতে কষ্ট বোধ করেন না।" —শরৎকুমারী চৌধুরাণীর এই লেখা (ভারতী ও বালক/ আশ্বিন কার্তিক, মাঘ/ ১২৯৮) দেখে বুঝতে অসুবিধা হয় না উনিশ শতকে নারীর লেখাপড়া শেখার উদ্দেশ্য ছিল মূলত আত্মমুক্তির জন্য। শুধু লেখাপড়া শেখা নয়, সাহিত্য সৃষ্টিতেও ছয়'এর দশক (উনিশ শতকের) থেকে নারীরা যে ধারা সূত্রপাত করেছিল তা নারীর আত্মমুক্তির পথকেই প্রসারিত করেছিল। ছয়'এর দশকের পূর্বেই ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে প্রথম ছাপার হরফে নারী রচিত কাব্য 'চিত্তবিলাসিনী' প্রকাশিত হয়। লেখেন কৃষ্ণকামিনী দাসী। ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে কবি ঠাকুরাণী দাসীর নাম উঠে আসতে থাকে, যিনি কবিতার পাশাপাশি গদ্যও লিখতেন। ঠিক সেই বছরই জন্মগ্রহণ করেন কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী, যাঁর কবিতা লেখা আত্মমুক্...

বছরের বাছাই

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৪তম সংখ্যা ।। ফাল্গুন ১৪৩১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

  এই সংখ্যায় একটি গ্রন্থ আলোচনা ও একটি ধারাবাহিক রচনা ছাড়া সব লেখাই ভাষা দিবস, মাতৃভাষা, ভাষাচেতনা ও ভাষা সমস্যা বিষয়ক রচনা। লেখাগুলি এই সংখ্যাকে অনেকটাই সমৃদ্ধ করেছে। পড়ুন। শেয়ার করুন। মতামত জানান। লেখকগণ নিজের নিজের লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন যতখুশি, যে মাধ্যমে খুশি। কিন্তু স্ক্রিনশট শেয়ার নৈব নৈব চ!  অন্য বিষয়ের লেখাগুলি আগামী সংখ্যার জন্য রইল।  সকলকে ধন্যবাদ, অভিনন্দন। ভালো থাকুন।   --সম্পাদক, নবপ্রভাত। ==  সূ  চি  প  ত্র  == প্রবন্ধ-নিবন্ধ অমর ২১শে ফেব্রুয়ারি বাঙ্গালীর বাংলা ভাষা দুর্জয় দিবস।। বটু কৃষ্ণ হালদার ভাষা শহীদদের পঁচাত্তর বছর।। অনিন্দ্য পাল একুশে ফেব্রুয়ারি : বাঙালির শ্রেষ্ঠ অশ্রুবিন্দু।। জীবনকুমার সরকার কবিগানের সাহিত্যিক ও সমাজতাত্ত্বিক মূল্য।। বারিদ বরন গুপ্ত বিপন্ন মাতৃভাষা ও সংস্কৃতি।। শ্যামল হুদাতী মায়ের দুধ আর মাতৃভাষা।। প্রদীপ কুমার দে একুশে ফেব্রুয়ারি : কিছু কথা।। বনশ্রী গোপ বাংলায় কথা বাংলায় কাজ।। চন্দন দাশগুপ্ত বিপন্ন মাতৃভাষা ও তার মুক্তির পথ।। মিঠুন মুখার্জী. হে অমর একুশে, তোমায় ভুলিনি, ভুলব না।। মহম্মদ মফিজুল ইসলা...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৭তম সংখ্যা ।। জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ মে ২০২৫

  প্রচ্ছদ চিত্র: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সূচিপত্র রবীন্দ্রনাথ এবং কয়েকজন নারী ।। অনিন্দ্য পাল পরাবাস্তববাদ ও বাংলায় জীবনানন্দের কাব্যচর্চা ।। রণেশ রায় প্রতীক্ষা ।। চন্দন দাশগুপ্ত আশ্রয় ।। সায়নী সাহা বয়স্ক শিক্ষাকেন্দ্র ।। দেবাংশু সরকার প্রণামের প্রভু ।। সুপ্রভাত মেট্যা দুর্ভাগ্যের সম্মুখ সমরে ।। সমীর কুমার দত্ত আচমকা শরৎ ।। অর্ণব সামন্ত প্রতিধ্বনি ✍️ সুবীর কুমার ঘোষ জীবন যেখানে যেমন ।। আরজু মুন জারিন বছর সীমান্তে হিসেব নিকেশ ।। রানা জামান চারটি কবিতা ।। বিবেকানন্দ নস্কর আমরা আছি ।। লালন চাঁদ চাওয়া ।। মাথুর দাস কাগজ ফুলে ।। সফিউল মল্লিক সময়ের স্রোত ।। দুর্গাদাস মিদ্যা তুমি মানুষ ।। বদরুল বোরহান দিঘার সমুদ্র ।। মাখনলাল প্রধান পুস্তক-আলোচনা ।। অরবিন্দ পুরকাইত সংযম ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত  চেনা প্রতিবেশী (প্রথম পর্ব) ।। দীপক পাল খেলার মাঠ ।। তূয়া নূর বন্ধু শ্যামলকান্তি ।। শংকর ব্রহ্ম তুমি তোমার মতো থাকলে ।। সত্যেন্দ্রনাথ বেরা গ্রীষ্মে খুবই হিংস্র রবি ।। জগবন্ধু হালদার স্বপ্ন দর্শন ✍️ পার্থ প্রতিম দাস মৌন মুখরতা ।। মুসা মন্ডল রুদ্র বৈশাখ ।। দীনেশ সরকার চিহ্নিত পদযুগ পদাঘাত ।। দেবাশীষ...

প্রচ্ছদ।। ৮৩তম সংখ্যা ।। মাঘ ১৪৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ।। প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র

  বিঃ দ্রঃ আগামী ফেব্রুয়ারি সংখ্যার জন্য ভাষা দিবসের কথা মাথায় রেখে লেখা পাঠান। email: nabapravatblog@gmail.com  সূচিপত্র ফিচার।। গোপাল ভাঁড়ের অজানা সত্য ।। লোকনাথ পাল প্রবন্ধ ।। মসুয়ার রায় পরিবার এবং বঙ্গসংস্কৃতি ।... প্রবন্ধ ।। সুধীন্দ্রনাথ দত্ত: কাব্যের দার্শনিক ও ন... কবিতায় সেতুবন্ধন (তৃতীয় অংশ) শিল্পবিপ্লবোত্তর কাল... রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর বিদ্রোহী প্রেমের কবিতা: ... কবিতা ।। এই মন ভালো নেই দিনে ।। সুপ্রভাত মেট্যা কবিতা ।। জোছনা আলোর স্বপ্ন ।। তুষার ভট্টাচাৰ্য কবিতা ।। নিঃস্ব হবো ।। লালন চাঁদ কবিতা ।। ভালোলাগা  ।। আজিজ উন নেসা  গল্প ।। স্বীকারোক্তি ।। চন্দন দাশগুপ্ত কবিতা ।। শীতের দিন ।। প্রশান্ত কুমার মন্ডল কবিতা ।। শীতকাল ।। অঙ্কিতা পাল নাসির ওয়াদেনের দুটি কবিতা ভূতের লেখা ছড়া ।। বদরুল বোরহান কবিতা ।। ব্যস্ত ।। আলাপন রায় চৌধুরী ছোটগল্প ।। লম্বুর স্বপ্নপূরণ ।। পরেশ চন্দ্র মাহাত কবিতা ।। সৎকার ।। সুমিত মোদক কবিতা।। শীত বৈচিত্র্য ।। সুমিতা চৌধুরী পুস্তক-আলোচনা ।। নিউটনের আপেল ও প্রেমিকা ।। অরবিন্... গল্প।। শান্তির পথে …...।। বন্দনা সেনগুপ্ত কবিতা ।। মা...

সূচিপত্র ।। ৮৯তম সংখ্যা ।। শ্রাবণ ১৪৩২ জুলাই ২০২৫

সূচিপত্র   প্রবন্ধ ।। বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় ।। মাখনলাল প্রধান প্রবন্ধ ।। শ্রমিকের অধিকার ।। চন্দন দাশগুপ্ত প্রবন্ধ ।। ভিনগ্রহীদের সন্ধানে ।। শ্যামল হুদাতী প্রবন্ধ ।। নারীমর্যাদা ও অধিকার ।। হিমাদ্রি শেখর দাস কবিতা ।। মশালের রং তুলি ।। তূণীর আচার্য কবিতা ।। জললিপি ।। রূপক চট্টোপাধ্যায় গুচ্ছকবিতা || শিশির আজম নিবন্ধ ।। পূনর্জন্ম ।। শংকর ব্রহ্ম মুক্তভাবনা ।। কোলাহল তো বারণ হলো ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত গল্প ।। গানের হাড় ।। শুভজিৎ দত্তগুপ্ত গল্প ।। শিকড়ের খোঁজে ।। সমীর কুমার দত্ত সুপ্রভাত মেট্যার পাঁচটি কবিতা গ্রন্থ-আলোচনা ।। আবদুস সালামের কাব্যগ্রন্থ 'অলীক রঙের বিশ্বাস'।। তৈমুর খান অণুগল্প ।। হরিবোল বুড়ো ।। সুমিত মোদক রম্যরচনা ।। গোয়েন্দা গোলাপচন্দ আর প্রেমের ভুল ঠিকানা ।। রাজদীপ মজুমদার দুটি গল্প ।। মুহাম্মদ ফজলুল হক দুটি কবিতা ।। তীর্থঙ্কর সুমিত কবিতা ।। মেঘমুক্তি ।। বন্দনা পাত্র কবিতা ।। ব্যবচ্ছিন্ন শরীর ।। কৌশিক চক্রবর্ত্তী কবিতা ।। শমনচিহ্ন ।। দীপঙ্কর সরকার কবিতা ।। ভালোবাসার দাগ ।। জয়শ্রী ব্যানার্জী কবিতা ।। ফণীমনসা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ছড়া ।। আজও যদি ।। বদ্রীন...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬

  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠালে  অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে হলে ভালো। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # ...

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ৮৬তম সংখ্যা ।। বৈশাখ ১৪৩২ এপ্রিল ২০২৫

সম্পাদকীয় এই সংখ্যাটি বাংলা নববর্ষ বিষয়ক সংখ্যা। নৱৰ্ষকেন্দ্রিক বহু তথ্যপূর্ণ লেখা এই সংখ্যাটিকে সমৃদ্ধ করেছে। বাংলা নববর্ষ উদযাপনের ইতিহাস, রীতিনীতি, উৎসব, পার্বন, লোকাচার, রূপান্তর বহুবিধ বিষয় প্রকাশিত হয়েছে এই সংখ্যার লেখাগুলিতে। এই সংখ্যার বাছাই কিছু লেখার সঙ্গে আগামীতে আরও কিছু লেখা সংযুক্ত করে বাংলা নববর্ষ বিষয়ক একটি মুদ্রিত সংখ্যা প্রকাশ করার ইচ্ছে রইল।  সকলকে নববর্ষের আন্তরিক শুভকামনা জানাই। উৎসবে আনন্দে থাকুন, হানাহানিতে নয়। ধর্ম-ব্যবসায়ীদের চক্রান্ত ব্যর্থ করে সহনাগরিকের পাশে থাকুন। মনে রাখুন, ধর্মকে মানুষই সৃষ্টি করেছে। ঈশ্বর আল্লা গড ইত্যাদির জন্মদাতা মানুষই। মানুষকে ভালোবাসুন। মানুষের পাশে থাকুন।  নিরাশাহরণ নস্কর  সম্পাদক, নবপ্রভাত।  সূচিপত্র প্রবন্ধ-নিবন্ধ-স্মৃতিকথা পয়লা বৈশাখ ।। সিদ্ধার্থ সিংহ নববর্ষকেন্দ্রিক মেলা, পার্বন, উত্সব, লোকাচার ।। সবিতা রায় বিশ্বাস নববর্ষ আবাহন ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে এবং বিভিন্ন দেশে ।। তুষার ভট্টাচার্য নববর্ষের সেকাল ও একাল ।। হিমাদ্রি শেখর দাস নববর্ষের হাল-হকিকৎ ।। শংকর ব্রহ্ম বোশেখি বাঙালি নাকি পোশাকি বাঙালি? ।। দিব্যেন্দু...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। নবপ্রভাত ৮৫ ।। চৈত্র ১৪৩১ মার্চ ২০২৫

  সূচিপত্র নিবন্ধ ।। মরিয়ম মির্জাখানি: এক অনন্য গণিতসূর্য ।। ... নিবন্ধ ।। নারী দিবসে যা ভাবা উচিত ।। বিশ্বনাথ পাল প্রবন্ধ ।। প্রাচীনকাল থেকে নারীরা অবহেলিত, বঞ্চিত,... নিবন্ধ ।। আমার চোখে আদর্শ নারী ।। জয়শ্রী বন্দ্... ফিচার।। এই মুহূর্তে বাংলা সাহিত্যে নারীদের লেখালেখ... আফ্রিকার লোককথা ।। করোটিকে বিয়ে করা অবাধ্য মেয়েটি ... ছোটগল্প ।। মানবী ।। ভুবনেশ্বর মন্ডল নিবন্ধ ।। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে অন্যতম নারী মু... নিবন্ধ ।। প্রিয় মহিলা সাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবী ।। ... গল্প ।। উই ওয়ান্ট জাস্টিস ।। রবীন বসু প্রবন্ধ ।। নিপীড়িতা ।। শ্যামল হুদাতী ফিচার ।। রমণী রতন ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত প্রবন্ধ ।। নারী সমাজ : তখন-এখন ।। তপন মাইতি নিবন্ধ ।। বহমান কালের ধারায় নারী ।। দীপক পাল গল্প ।। আমার দুর্গা ।। অঞ্জনা গোড়িয়া (সাউ) গল্প ।। যোগ্য জবাব ।। সমীর কুমার দত্ত ছোটগল্প ।। আমি দুর্গাকে দেখেছি।। চন্দন দাশগুপ্ত গল্প ।। সম্পর্ক ।। গৌতম সমাজদার কবিতা।। নারী মানে ।। গোবিন্দ মোদক কবিতা।। নারী ।। সমর আচার্য্য ছড়া ।। নারী অসামান্যা ।। সৌমিত্র মজুমদার কবিতা ।। নারী দিবসে ।। বিবেকানন্দ নস্কর কবিতা ।। না...

প্রবন্ধ ।। বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় ।। মাখনলাল প্রধান

বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় মাখনলাল প্রধান বাংলার শিল্প-সংস্কৃতির জগতে যাত্রা শিল্প তথা নাট‍্যশিল্পে মড়ক নেমে এসেছে । যাত্রা শিল্পের মড়কে শুধু কোভিড নয় তার বহুপূর্ব থেকেই অর্থনৈতিক বিপর্যয় , শিক্ষাক্ষেত্রে বন্ধ‍্যাত্ব এবং গ্ৰাম বাংলার পটপরিবর্তন শেষ পেরেক ঠুকে দিয়েছে। যাত্রা-শিল্পের লীলাভূমি ছিল গ্ৰাম বাংলা। গ্ৰামে প্রচুর যাত্রাপালা হত নানা উৎসবকে কেন্দ্র করে । জমিদারি ব‍্যবস্থা লুপ্ত হওয়ার পর গ্ৰামীণ মানুষের উদ‍্যোগে শীতলা পূজা,  কালীপূজা, দুর্গাপূজা, কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা, চড়ক ইত‍্যাদিকে উপলক্ষ‍্য করে যাত্রাপালার আয়োজন না হলে কেমন যেন ম‍্যাড়ম‍্যাড়ে লাগতো। সেই সঙ্গে কলকাতার বড়বড় কোম্পানির যাত্রাপালা ঘটা করে, টিকিট সেল করে হত মাঠে। খুব বড় মাপের খেলার মাঠ যেখানে ছিল না সেখানে ধানের মাঠ নেওয়া হত ‌। ত্রিশ-চল্লিশ হাজার মানুষ দেখতে আসত। স্পেশাল বাস পাঠাত  আয়োজক কর্তৃপক্ষ। বিনা ভাড়ায় বাসে যাতায়াত করত যাত্রার দর্শকেরা। কিন্তু বিকল্প ধানচাষ শুরু হলে জমিগুলো সময় মতো ফাঁকা পাওয়া গেল না । প্রথম দিকে ব‍্যাপকহারে ধান শুরু না হওয়ায় খুব একটা অসুবিধা হত না। বহুক্ষেত্রে  ধান কা...

প্রবন্ধ ।। ভিনগ্রহীদের সন্ধানে ।। শ্যামল হুদাতী

ভিনগ্রহীদের সন্ধানে  শ্যামল হুদাতী  ইতিহাসের শুরু থেকে বারবার মানুষকে একটা প্রশ্ন কুঁড়ে কুঁড়ে খায় – এই মহাবিশ্বে আমরা কি একা? পৃথিবীর মতো আরও গ্রহ রয়েছে, যেখানে মানুষের মতো বুদ্ধিমান প্রাণীরা বাস করে – এই সম্ভাবনা বরাবর মানুষকে মুগ্ধ করেছে। আমাদের প্রত্যেকের জীবনের কখনও না কখনও এই ভাবনা এসেছে। দীর্ঘ কয়েক দশকের গবেষণার পরও, এই বিষয়ে কোনও নিশ্চয়তা দিতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। জেমস ওয়েব মহাকাশ টেলিস্কোপ, বহু দূরের এমন কিছু গ্রহের সন্ধান দিয়েছে, যেগুলিতে প্রাণ থাকতেই পারে। তবে, নিশ্চিত কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে, আমেরিকার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাম্প্রতিক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, ভিনগ্রহীদের খুঁজতে বহু দূরে যাওয়ার কোনও দরকার নেই। তারা এই পৃথিবীতেই মানুষের ছদ্মবেশে মানুষের মধ্যেই বসবাস করতে পারে। আমরা ভিনগ্রহীদের যেমন কল্পনা করি, এরা তার থেকে আলাদা। এরা অনেকটাই, দেবদূতদের মতো। মানব জগতের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক প্রযুক্তিগত নয়, বরং জাদুকরি। মহাকাশে সৌরজগতের গ্রহ পৃথিবী ছাড়া অন্য কোথায় প্রাণ রয়েছে কি না তা নিয়ে চলছে বিস্তর গবেষণা। একই সঙ্গে পৃথিবী ছাড়া অন্য কোনো গ্রহে মানুষ বসবাস ক...

প্রবন্ধ ।। নারীমর্যাদা ও অধিকার ।। হিমাদ্রি শেখর দাস

নারীমর্যাদা ও অধিকার হিমাদ্রি শেখর দাস  নারীর মর্যাদা বলতে বোঝায় নারীর সম্মান, অধিকার, এবং তার ব্যক্তিগত স্বাধীনতা। এটি সমাজে নারীর অবস্থান এবং তার প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গিকে নির্দেশ করে। নারীর প্রতি সম্মানজনক আচরণ করা হয় এবং তাদের অধিকার গুলি সুরক্ষিত থাকে। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে এই শ্রেণি সংগ্রাম শুরু হয়েছিল অনেক আগে।  একদিকে শ্রেণী বৈষম্য অপরদিকে নারী পুরুষের বৈষম্য এই দুটি ছিল শ্রেণীবিভক্ত সমাজের অন্যতম দুটি মূল ভিত। নারীর অধিকারহীনতা বা দাসত্ব শুরু হয় পরিবার ও সম্পত্তির উদ্ভাবনের ফলে। বহু যুগ ধরে নারী সমাজকে পারিবারিক ও সামাজিক দাসত্বের বোঝা বহন করতে হয়েছে বিনা প্রতিবাদে। সভ্যতার ক্রম বিকাশের সাথে সাথে নিপীড়ন ও নির্যাতনের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে - দাস সমাজব্যবস্থা এবং সামন্ততান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় নারীরা পুরুষ ও পরিবারের অধীনতা স্বীকার করে নিতে বাধ্য হয়েছে। সামাজিক উৎপাদনের কাজে নারীদের বঞ্চিত রেখেই তাদের পরাধীন জীবন যাপনের মধ্যে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। নারীর অধিকারহীনতার বিরুদ্ধে সংগ্রামের সূচনা হয় ইংল্যান্ডের শিল্প বিপ্লবের পরবর্তী সময়ে। নতুন করে নারীদের সামাজিক উৎপাদনের কাজে ...

মাসের বাছাই

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯৩তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩২ নভেম্বর ২০২৫

সূচিপত্র বস্তু, চেতনা এবং কবি ।। সজল চক্রবর্তী দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত ।। রণেশ রায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট ও সন্নিহিত অঞ্চলের কথ্য শব্দ ।। অরবিন্দ পুরকাইত চাঁদে জীবন ।। শমীক সমাদ্দার অসমাপ্তি ।। মহুয়া হুই গ্যালাক্সির শব্দে ।। জাসমিনা খাতুন তিনটি কবিতা ।। দিবাকর সেন অপূর্ণতার শেষ অধ্যায় ।। সুপ্রিয় সাহা হাফ ডজন ছড়া ।। স্বপনকুমার পাহাড়ী স্বাপ্নিক অমলের ঘুৃম ।। সঞ্জয় দেওয়ান দুটি কবিতা ।। সৌমিত্র উপাধ্যায় পথ চলতি ✍️পার্থ প্রতিম দাস হেমন্তের বিষাদ ছুঁয়ে ।। শক্তিপদ পাঠক রাই আর বাবা ।। অদিতি চ্যাটার্জি স্থিতিশীল ।। রঞ্জিত মুখোপাধ্যায় হৃদয়ের শূন্য কোড ।। লিপিকা পিঙ্কি দে অমানিশা ।। সৌভিক মুখার্জী দৃষ্টিগত ।। শামীম নওরোজ জ্যান্ত ভূতের গপ্পো ।। পার্থ সারথি চট্টোপাধ্যায় ধুতরা ফুলের ঘ্রাণ ।। মজনু মিয়া তারা খসার আলোয় ।। তীর্থঙ্কর সুমিত উত্তরণে অন্তরায় ।। সমীর কুমার দত্ত প্রেম মুদ্রা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ধারা ।। লালন চাঁদ অন্যের ব্যথায় ব্যথি ।। জগদীশ মণ্ডল গর্ভ ।। শাশ্বত বোস ভ্রমণ বিষয়ক স্মৃতিকথা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত শাপে বর ।। সাইফুল ইসলাম রবিবার ।। সঙ্ঘমিত্রা দাস দুটি ...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬

  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠালে  অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে হলে ভালো। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # ...

গল্প ।। জাতিস্মর ।। আশীষ কুমার বিশ্বাস

    জাতিস্মর   আশীষ  কুমার   বিশ্বাস    গল্পের শুরুটা প্রায় ষাট বছর আগের কথা । যার নাম গৌতম, ডাক নাম ছিল বাবু ।  তার বছর তখন ছয়-সাত হবে । আমরা বা আমি তখন একটু বড় । এক সাথেই চলতো খেলা । গোল্লা ছুট, দাঁড়িয়া বান্দা, চোর-পুলিশ । যে মাঝে মাঝে খেলা থেকে বিরত থাকতো ; সে-ই জাতিস্মর । মাঠের পাশেই ছিল একটা খেঁজুর গাছ । তাতে হাত রেখে দূরের এক গ্রামের দিকে এক মনে তাঁকিয়ে থাকতো "বাবু" । গ্রামটির নাম "বিনয় পল্লী " । মাঝে বড়ো মাঠ । হাঁটা শুরু করলে তিরিশ - চল্লিশ মিনিট লাগবে । মাঝে জলে ভরপুর দেখে কখনো যাওয়া হয়নি । বাবু কে যখন বলতাম, ওপারে কি দেখছিস? ও বলতো, ওখানে আমার ছোট মা থাকে, দিদি থাকে, আমার ভুলু কুকুর থাকে । এ কথা আমাদের বিশ্বাস হতো না । আবার খেলায় ফিরে যেতাম, খেলতাম ।  কিন্তু ও বসে বসে , ওপারের গাছ পালা , বাড়ি ঘর দেখতো । কাছে গেলে বলতো , ওই যে সবুজ ,কচি কলাপাতা রঙের দালান বাড়ি, ওটাই আমাদের বাড়ি !  এই ভাবে মাস ছয়, বছর গড়াতে লাগলো । মনে প্রশ্ন জাগতে লাগলো, এ টা কি মন গড়া , বা বানিয়ে বানিয়ে বলছে? সত্যি প্রকাশ হোল এক দিন ।  সে বাড়িতে কিছু ...

কবিতা ।। ভাষার জন্য লড়াই ।। চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু

ভাষার জন্য লড়াই চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু মুখের ভাষা বাংলা ভাষা মাকে ডাকি মা, সারা বিশ্বে তোমার মাগো নেই তো তুলনা। তোমার মুখের প্রথম ভাষা আমার মনের সকল আশা তোমার ভাষায় বলবো মাগো আমার মনের কথা, এই ভাষাতেই জড়িয়ে আছে সকল স্বাধীনতা।  এই ভাষাকে আনতে গিয়ে তাজা বুকের রক্ত দিয়ে রাজপথে সব লড়াই হলো করলো লড়াই কারা, আমার মায়ের দামাল ছেলে রক্ত পলাশ যারা।  তোমার ছেলে লড়াই করে আনলো ভাষা ঘরে ঘরে সেদিন থেকে শহীদ মিনার সাজাই ফুলে ফুলে, বীর শহীদের ত্যাগের কথা যাইনি আজও ভুলে।    ++++++++++++++++++++++++++++++++    চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু শহীদ আবুল কাশেম সড়ক, বড় বাজার, চুয়াডাঙ্গা, বাংলাদেশ।

চিরকুটের কবিতা

নতুন পৃথিবী আজ সকালে রোদ্দুর নামুক ভেজা বর্ষার মতো গা ধুয়ে কিছুটা পবিত্র হবো যত জীর্ণ মলিন দ্বেষ বিলীন হোক সব সময়ের তটে গা ভাসিয়ে কিছুটা বিলাসী হবো যা ছিল অতীত যা ছিল কষ্ট সবকিছু ভুলে নবীনে ব্রতী হবো আসুক ধেয়ে সতেজ হাওয়া দূর হোক যত কুণ্ঠা ব্যথা পুরানো যত বিবাদ ভুলে ভালোবাসার আবার বেড়া দেবো কিছুটা আশাবাদী কিছুটা কর্মঠ কিছুটা জেদি কিছুটা শপথ আসুক ছুঁয়ে বাঁচার আলো হাতে হাত রেখেই বিশ্বাসের ঘরে আবার নতুন দীপ জ্বালাবো

কবিতা ।। অরণ্যকন্যা ।। অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়

  অরণ্যকন্যা অরিন্দম চট্টোপাধ্যায় অরণ্যকন্যার দৃষ্টির ভেতর বিষাদ বিন্দু ফোঁটা ফোঁটা জলের মতো গড়িয়ে যায়, হয়ে যায় কোন নদীপথ দৃষ্টি ভেঙে ভেঙে চলে যায় কোন এক শূন্য পথে অরণ্যকন্যার হৃদয়ের ভেতর ভাঙে যতো বৃক্ষপত্র নতুন পত্র পুষ্পের খোঁজ নেই ঠোঁট জুড়ে সমুদ্রকাঁপন বুদবুদের মতো অস্ফুট হয়ে উচ্চারিত হয় কোন অক্ষর শব্দ আর তাঁর শরীর থেকে ছড়িয়ে যায় হয়ে যায় একটা অদৃশ্য কবিতা...    ================== @ অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়,  বেহালা, কলকাতা -৭০০০৬০,  

কবিতা ।। মনোজকুমার রায়

জল সিঁড়ি চেক বইয়ের পাতা ফুরিয়ে যেতে থাকে -- ঝরে পড়ে বৃদ্ধ গাছটির পত্রমুকুল কাঁচা গন্ধ বেয়ে চলে সময়ের স্রোতে  সারা ভোর জেগে থাকি ঘুমের টলে তাড়া দেয় একগ্রাস অবিশ্বাসী বায়ু দিন ফুরনো লাল সূর্যের টানে নেমে আসে পাড় ছোঁয়া জল সিঁড়ি ================= মনোজকুমার রায় দঃ ঝাড় আলতা ডাউকিমারী, ধূপগুড়ি জলপাইগুড়ি -৭৩৫২১০ মো ৭৭৯৭৯৩৭৫৬৬

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯২তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩২ অক্টোবর ২০২৫

—: সম্পাদকীয় দপ্তর থেকে :— এই সংখ্যার জন্য লেখা এসেছিল প্রায় ১৮০টা। কিন্তু গুণগত মানে দুর্বল লেখার সংখ্যা বহু। আমরা নবপ্রভাতে নতুনদের কথা ভেবে বেশ কিছু দুর্বল লেখাও রাখি। কিন্তু সবসময় একই লোকের দুর্বল লেখা প্রকাশ করা অনুচিত বলে মনে করি। শেষ পর্যন্ত ৯৯ জনের লেখা রাখা গেল। যাদের লেখা প্রকাশিত হল না, তারা লেখাগুলি অন্য যেখানে খুশি পাঠাতে পারেন। বিশেষ কারণে এই সংখ্যার মুদ্রিত সংস্করণ প্রকাশিত হচ্ছে না। আমরা দুঃখিত। তবে মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি শীঘ্রই আসছে। সঙ্গে থাকুন। সকলকে উৎসবমুখর বর্ণময় শুভেচ্ছাসহ— —নিরাশাহরণ নস্কর, সম্পাদক, নবপ্রভাত। অনুরোধ : প্রকাশিত লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন, ছবি/স্ক্রীনশট নয়।  == সূচিপত্র == পড়া-লেখার ইতিহাস অনুসন্ধান।। তপন তরফদার উৎসব : মানুষের চিরন্তন আত্মপ্রকাশ।। কৃশানু ব্যানার্জি বাংলা : সভ্যতা ও সংস্কৃতির জন্মভূমি।। শ্যামল হুদাতী সমুদ্র আর অস্তিত্ব ।। সুব্রত চৌধুরী রাজা ছিলেন জুবিন গর্গ ।। গঙ্গা 'অনু'   আদ্যাশক্তি মহামায়ার বাংলা বারো মাসের বারো রূপ ।। অর্হণ জানা মেধাদাদুর আসর ।। রণেশ রায় বৈজ্ঞানিক মা...

উন্মুক্ত পাগলামি ।। আশরাফুল মণ্ডল

উন্মুক্ত পাগলামি আশরাফুল মণ্ডল আহা, অপরূপ নিজস্বতার দাহ! কুঁকড়ে যায় আবহমান, সজনে পাতার বোঁটায়! ভাপওঠা ভাতের কাছে মাছি সত্তায় কী নিপুণ! তবুও ঘোর লাগা বসন্তের ডাক, হাঁকে! খেদিয়ে দেয় পা দোলানো প্রস্তাব, ওই ধুনুরি চোখ! রাংতায় মোড়া ডাকের সাজ, দে দোল দোল! হুইসেল বাজিয়ে কে রুখে দ্যায় সেই নাকছাবির রুদালি কাঁপন! খালবিল ছেঁচে পাঁচসিকের  মানত কুড়িয়ে আনে, বাংলা বাজার। ঠ্যাং নাচানো সুরে চোখ মারছে, দ্যাখো ভ্যানতারা! মুখ খোলা মানেই পাঁজরের স্রোত ভাবা যেন উগরানো টালমাটাল! ঢিল মারা প্রশ্নের রোয়াকে বক্রচোখে যেন মেধাবী কবিতা! মুছে দিও তবে লাজুক গুপ্ত রোগ, দিনরাত্রি! ভালো থেকো তোমরা বাছাধন, রং মাস সে আর কতদিন... ================    ASRAFUL MANDAL Chandidas Avenue, B-zone, Durgapur, Paschim Bardhaman, Pin - 713205,  

কবিতা ।। সোনালি অতীত ।। প্রবোধ কুমার মৃধা

সোনালি অতীত  প্রবোধ কুমার মৃধা   সুশীতল ছায়াঘেরা স্নেহময়ী মাটি মা।   সে আমার জন্মভূমি সপ্তপুরুষের গাঁ।   প্রকৃতির বুক থেকে প্রাণের রসদ নিয়ে।   ফিরিতাম নদীতীরে হৃদয়ের গান গেয়ে।   সন্ধ্যাতারা উঁকি দিত গোধূলি লগনে।   প্রত্যুষে ভাঙিত ঘুম বিহঙ্গ কূজনে ।   আষাঢ়ের নব মেঘে ঘিরিত গগন।   বাদলের ছায়া ঢাকা কদম্ব কানন।   দলবেঁধে মাঠে-বাটে বেতালা-বেছন্দে।   কেটে যেত সারাদিন ভালো কভু মন্দে।   ডাক দেয় শিশুকাল, বাল্য ও কৈশোর।   অফুরন্ত প্রাণোচ্ছ্বল, আনন্দে বিভোর।   করমের স্রোতে ভেসে সংসারের হাটে।   ভিড়িল জীবনতরী নগরের ঘাটে।   ফিরিবার সাধ্য নাই ফেলে আসা পথে।   বাল্য রোমন্থন করি অতীত স্মৃতিতে।                    __________