Skip to main content

উৎসব : মানুষের চিরন্তন আত্মপ্রকাশ ।। কৃশানু ব্যানার্জী

NABAPRAVAT cover utsab 2025

উৎসব : মানুষের চিরন্তন আত্মপ্রকাশ

কৃশানু ব্যানার্জী 



মানুষের জীবনে উৎসব কেবল এক দিনের ক্ষণস্থায়ী আনন্দোচ্ছ্বাস নয়; এটি অস্তিত্বের গভীরতম অনুরণন, যেখানে জীবনের নিজস্ব সুর ও ছন্দ আত্মপ্রকাশ করে মহাজাগতিক ঐক্যের প্রেক্ষিতে। সভ্যতার আদিম প্রভাতে মানুষ যখন প্রথমবার নিজের ক্ষুদ্র জীবনকে অনন্তের সঙ্গে যুক্ত করার চেষ্টা করেছিল, তখনই উৎসবের জন্ম। এটি কেবল একটি সামাজিক আচার নয়, বরং মানবচেতনার গভীরতম স্তরে নিহিত এক প্রতীকি উন্মোচন—যেখানে জীবন মৃত্যুকে অতিক্রম করে, ক্ষণ অনন্তের সঙ্গে মিলিত হয়, এবং ব্যক্তি সমাজের সঙ্গে একাকার হয় এক মহা-সৃষ্টির তালে।

উৎসব আসলে মানুষের আত্মস্বরের বহিঃপ্রকাশ—তার অন্তর্গত অস্তিত্বের সংগীত, যা কালের প্রবাহে কখনও ধর্মীয়, কখনও সামাজিক, কখনও সাংস্কৃতিক রূপ ধারণ করেছে। মানুষ যখন অনুভব করে যে জীবন কেবল পরিশ্রম, সংগ্রাম ও বেঁচে থাকার যান্ত্রিক প্রক্রিয়া নয়, তখনই সে সৃষ্টি করে উৎসব—যেখানে সে নিজের সত্তাকে মুক্ত করে দেয়, দুঃখের মধ্যেও আনন্দের, মৃত্যুর মধ্যেও জীবনের সুর খুঁজে পায়। এই মুক্তি কেবল বাহ্যিক নয়; এটি আত্মার অন্তর্গত উল্লাস, যা মানুষকে তার সীমিত সত্তা থেকে উর্ধ্বে তুলে আনে।

উৎসব মানে কেবল গান-বাজনা, সাজসজ্জা বা ভোজন-বিলাস নয়; উৎসব মানে মানুষের চেতনায় লুকিয়ে থাকা ঐক্যের চিরন্তন আকাঙ্ক্ষা—যেখানে ব্যক্তি ও সমষ্টি, নশ্বরতা ও অনন্ত, মানব ও প্রকৃতি মিলেমিশে যায় এক অবিনশ্বর সংলাপে। এটি মানুষকে শেখায়, যে জীবন কখনও নিছক ভোগ নয়, আবার নিছক ত্যাগও নয়—জীবন আসলে সমবায়ের, সহাবস্থানের, এবং সৃষ্টির আনন্দে পরিপূর্ণ এক দার্শনিক যাত্রা।

উৎসব মানবসভ্যতার ইতিহাসে এক চিরন্তন আত্মপ্রকাশ—যেখানে মানুষ নিজেকে খুঁজে পায়, আবার হারায়ও বৃহতের বুকে। উৎসব মানুষকে বারবার স্মরণ করায়, যে তার অস্তিত্বের পরম অর্থ নিহিত আছে মিলনের মধ্যেই, বিভেদের নয়; আলোকের আকাঙ্ক্ষায়, অন্ধকারের নয়; আর সেই চিরন্তন মিলনের মুহূর্তেই জীবন তার প্রকৃত ব্যাখ্যা লাভ করে—উৎসব হয়ে।


দর্শনের দৃষ্টিতে উৎসব কেবল একটি সামাজিক পর্ব বা ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়; এটি মানবচেতনার উল্লম্ফন—দৈনন্দিনতার যান্ত্রিক সীমা অতিক্রম করে এক পরাবাস্তব আনন্দসন্ধানের পথে যাত্রা। মানুষ যখন প্রতিদিনের জীবনচক্রে—শ্রম, দুঃখ, ক্লান্তি ও সংগ্রামের অবিরাম পুনরাবৃত্তিতে—নিজের অস্তিত্বের অন্তর্গত সুর হারিয়ে ফেলে, তখন উৎসব আসে সেই জীর্ণ ছন্দকে ভেঙে দিয়ে প্রাণে নব উচ্ছ্বাসের সঞ্চার ঘটাতে। উৎসব যেন মানুষের সত্তার অন্তর্লীন স্পন্দনের এক দার্শনিক বিদ্রোহ—যেখানে অস্তিত্ব আবার নিজের অর্থ উদ্ধার করে আনন্দের মধ্য দিয়ে।

ফ্রিডরিখ নীৎসে এই উল্লম্ফনকেই মানবজীবনের অপরিহার্য শর্ত হিসেবে দেখেছিলেন। তাঁর ভাষায়, "Life without festival is a mistake." নীৎসের ধারণায়, উৎসবই মানুষকে অ্যাপোলোনীয় শৃঙ্খলা ও যুক্তির শুষ্ক কাঠামো থেকে মুক্ত করে ডায়োনিসীয় উন্মাদনায় প্রবেশ করায়—যেখানে মানুষ কেবল চিন্তাশীল সত্তা নয়, অনুভবশীল ও সৃষ্টিশীল প্রাণী হিসেবেও আত্মপ্রকাশ করে। উৎসব তাই যুক্তির একঘেয়েমি থেকে মুক্তির প্রতীক; এটি মানুষকে স্মরণ করিয়ে দেয় যে বুদ্ধির বাইরে আরেকটি বৃহত্তর ক্ষেত্র আছে—যেখানে জীবন নৃত্য করে, রক্তে আলো জ্বলে, আর অস্তিত্ব হয়ে ওঠে সংগীত।

ভারতীয় দর্শন এই পশ্চিমা ভাবনাকে অন্যরূপে, কিন্তু অধিক গভীরতায় প্রকাশ করেছে। উপনিষদের উক্তি—"আনন্দাদ্ভূতানি ভূতানি জায়ন্তে"—অর্থাৎ, এই সমগ্র সৃষ্টির মূল উৎসই আনন্দ। ব্রহ্মান্ডের আদিম স্ফুরণ এক ধরনের ঐশ্বরিক আনন্দের প্রকাশ, এবং মানুষ, সেই সৃষ্টির উত্তরসূরি হিসেবে, নিজের অস্তিত্বেও সেই আনন্দের অনুপ্রবাহ অনুভব করে। তাই উৎসব কেবল বাহ্যিক আচার বা সামাজিক প্রথা নয়; এটি সেই সৃষ্টির অনিবার্য প্রতিফলন, যার মধ্যে দিয়ে মানুষ নিজেকে ও বিশ্বকে একীভূত করে।

মানুষ যেমন সৃষ্টি করে, তেমনি উদযাপন করে। সৃষ্টি ও উদযাপন—দুটি একই চেতনার দুই প্রান্ত। সৃষ্টিতে মানুষ নিজেকে প্রকাশ করে, আর উদযাপনে সেই প্রকাশের আনন্দকে অনুভব করে। উৎসব এই দ্বন্দ্বের মিলনবিন্দু—যেখানে মানুষ কেবল বলে না "আমি আছি," বরং ঘোষণা করে, "আমি আছি, তাই আনন্দিত।" এই ঘোষণাই মানুষের চিরন্তন আত্মস্বীকৃতি—যা তাকে দৈনন্দিনতার ক্লান্ত নিরসতা থেকে তুলে আনে আত্মজাগরণের উচ্চতর স্তরে।

অতএব, উৎসবের দার্শনিক পরিক্রমা আসলে মানবচেতনার বিবর্তনের ইতিহাস। এটি সেই বিন্দু, যেখানে বেদনার অন্তরাল থেকে জন্ম নেয় সৃষ্টির আনন্দ, আর সীমার ভেতর থেকেই উদ্ভাসিত হয় অনন্তের সুর। উৎসব সেই অনন্তেরই মানবীয় প্রতিধ্বনি—অস্তিত্বের গভীরতম সংগীত, যা মানুষ যুগে যুগে নতুন রূপে, নতুন ভাষায়, নতুন বিশ্বাসে পুনরায় আবিষ্কার করে চলেছে।

মানুষের ইতিহাস আসলে উৎসবের ইতিহাস। প্রাগৈতিহাসিক যুগে যখন মানুষ প্রথম কৃষিকাজ শিখল, তখনই সে প্রথম উৎসবের স্বপ্ন দেখল—ফসল তোলার পর মাটির প্রতি, সূর্যের প্রতি, জলের প্রতি কৃতজ্ঞতার প্রকাশ ঘটল। এই কৃতজ্ঞতা থেকেই জন্ম নিল নববর্ষ, পঞ্চমী, পৌষ-পার্বণ।
সভ্যতা যত উন্নত হয়েছে, উৎসবের প্রকৃতি ততই রূপান্তরিত হয়েছে। তবে মূল লক্ষ্য অপরিবর্তিত—মানুষের মধ্যে যে প্রাকৃতিক, সামাজিক ও আধ্যাত্মিক সুর রয়েছে, তাকে একত্রীকরণ করা। একদিকে যেমন সমাজের অভ্যন্তরীণ বন্ধন দৃঢ় হয়, অন্যদিকে ব্যক্তির মনেও জাগে অনন্তের অনুভূতি।
উৎসব তাই সামাজিক ঐক্যের রসায়ন। গ্রামবাংলার দোল, নবান্ন, বর্ষাবরণ—সবই কৃষির সঙ্গে জড়িত; আবার দুর্গাপূজা, কালীপূজা, ঈদ, বড়দিন—সবই মানবসম্পর্কের উৎসব। সমাজতাত্ত্বিক এমিল দুর্খাইম বলেছিলেন যে,- ভেতরকার শক্তিগুলিকে একত্রিত করে, নতুন করে প্রাণসঞ্চার করে উৎসব।

উৎসব প্রায়ই ধর্মের ছত্রচ্ছায়ায় বিকশিত হয়েছে, কিন্তু তার পরিসর ধর্মের সীমানা ছাড়িয়ে গেছে। ধর্মের মূল উদ্দেশ্য যেমন মানবাত্মাকে দেবত্বের সঙ্গে যুক্ত করা, তেমনি উৎসবের লক্ষ্যও সেই ঐক্যকে অনুভব করা।
দুর্গাপূজা, উদাহরণস্বরূপ, কেবল দেবী আরাধনা নয়—এটি এক মানবিক নাট্যমঞ্চ, যেখানে সৃষ্টির, সংহারের ও পুনরুত্থানের প্রতীকী ভাষ্য মেলে। মহালয়ার ভোর থেকে শুরু হয়ে বিজয়ার বিকেল পর্যন্ত এই উৎসব মানুষকে বারবার স্মরণ করায়—ধ্বংসই শেষ নয়, ধ্বংস থেকেই জন্ম নেয় পুনর্গঠন।
তেমনি দীপাবলি অন্ধকারে আলোর প্রতীক, ঈদ মিলন ও মমত্বের, বড়দিন করুণার। এইসব উৎসব মানবচেতনার সেই গভীর স্থানে পৌঁছায়, যেখানে ব্যক্তি আর সমাজ, ধর্ম আর মানবতা একে অপরের পরিপূরক হয়ে ওঠে।
সুতরাং বলা যায়, উৎসব ধর্মের বাহন হলেও, তার প্রকৃত তাৎপর্য ধর্মোত্তর—অর্থাৎ, মানবতার সার্বজনীন উৎসবে মিলিত হওয়া।

মানুষ জানে সে মরণশীল, জানে প্রতিটি দিন তাকে ক্ষয়ের দিকে টেনে নিচ্ছে। কিন্তু তবুও সে নাচে, গায়, সাজে—এই বিপরীতধর্মী আচরণের দার্শনিক অর্থ গভীর। উৎসব আসলে মৃত্যুভীতির বিরুদ্ধে মানুষের প্রতিরোধ।
ঋতুপরিবর্তনের সঙ্গে যেমন প্রকৃতি নবজন্ম পায়, তেমনি মানুষ উৎসবের মাধ্যমে নিজের নবজন্ম ঘটায়। এক অর্থে উৎসব হল সময়কে অস্বীকার করা, মুহূর্তকে অনন্তের সঙ্গে যুক্ত করা।
দার্শনিক মার্টিন হাইডেগার বলেছিলেন—মানুষই একমাত্র সত্তা যে "Being-toward-death" বা মৃত্যুর দিকে এগিয়ে চলে। উৎসব সেই ভয়কে রূপান্তরিত করে আনন্দে। মৃৎশিল্পীর তৈরি দুর্গামূর্তি যেমন দশমীতে বিলীন হয় জলে, কিন্তু পরের বছর আবার ফিরে আসে—এই পুনরাবৃত্তিই জীবনের দার্শনিক উপমা। মৃত্যু এখানে অন্ত নয়, বরং পুনরারম্ভ।

বর্তমান ভোগবাদী সমাজে উৎসবের চেহারা বদলে গেছে। ধর্মীয় বা সামাজিক আবেগের জায়গায় এসেছে বিপণন, সাজসজ্জা ও প্রতিযোগিতা। উৎসব এখন অর্থনীতির চালিকাশক্তি—শপিং মল, অনলাইন সেল, সেলিব্রিটি প্রচার, ফ্যাশন শো।
তবু এই রূপান্তরকে কেবল অবক্ষয় বলে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। আধুনিক মানুষ, যতই প্রযুক্তির জালে বন্দি হোক, তার অন্তরে উৎসবের তৃষ্ণা রয়ে গেছে। কৃত্রিম আলোর মধ্যেও সে খুঁজে ফেরে প্রকৃত আলোকের স্পর্শ।
তবে এই রূপান্তর এক বিপদের ইঙ্গিতও বহন করে। উৎসব যখন সম্পূর্ণভাবে পণ্যে পরিণত হয়, তখন তার আত্মা হারিয়ে যায়। আনন্দ তখন ক্রয়যোগ্য দ্রব্য হয়ে দাঁড়ায়। উৎসব তখন আর জীবনোৎসব নয়, প্রদর্শনের কার্নিভাল।
অতএব, আজকের মানবসভ্যতার কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ—উৎসবকে পুনরায় তার অন্তর্গত মানবিকতা ফিরিয়ে দেওয়া।

সমাজতাত্ত্বিকভাবে দেখলে, উৎসব সামাজিক সংহতির অনিবার্য অঙ্গ। সমাজ যতই জটিল ও বিভক্ত হোক, উৎসব সেই বিভাজনকে অতিক্রম করে মানুষকে এক করে।
পাড়ার দুর্গাপূজা হোক বা ঈদের নামাজ, সকলেই একে অপরের অংশীদার হয়। মানুষ হঠাৎ ভুলে যায় জাতপাত, ধর্ম, অর্থ—সব সীমা। একে অপরের মুখে হাসি ফোটানো, দুঃখের মাঝেও আনন্দ ভাগ করে নেওয়া—এই মানবিক বন্ধনই সমাজের প্রকৃত মেরুদণ্ড।
উৎসব তাই সামাজিক নিরাময় প্রক্রিয়ার মতো। বছরের পর বছর কাজ, প্রতিযোগিতা, হিংসা, বিচ্ছিন্নতা মানুষের মনকে ক্লান্ত করে তোলে। উৎসব এসে তাকে পুনরায় মেরামত করে।
যেমন সঙ্গীত মানুষের স্নায়ুকে শান্ত করে, তেমনি উৎসব সমাজের স্নায়ুকে সঞ্জীবিত করে।
তবে এই সামাজিক ঐক্য তখনই অর্থবহ, যখন তা কৃত্রিম প্রদর্শনের বদলে সহানুভূতির ভিত্তিতে দাঁড়ায়। অন্যথায় উৎসব পরিণত হয় কেবল আড়ম্বরের প্রদর্শনীতে।

উৎসবের সঙ্গে শিল্পের সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য। আসলে শিল্পই উৎসবের ভাষা। রঙ, সঙ্গীত, নৃত্য, আলোকসজ্জা—সবই মানুষকে এক অদৃশ্য নন্দনবোধে যুক্ত করে।
দুর্গোৎসবকে যদি শিল্পের মহাসংগীত বলা যায়, তবে প্রতিটি প্যান্ডেল এক একটি নাট্যমঞ্চ, প্রতিটি মূর্তি এক একটি দার্শনিক প্রতীক। এইসব শিল্পপ্রয়াসে সাধারণ মানুষই হয়ে ওঠে স্রষ্টা।
শিল্প ও উৎসবের এই সমন্বয় মানুষকে শেখায়—সৌন্দর্যই মুক্তি, রূপের মধ্য দিয়েই চেতনা জাগ্রত হয়। যখন সমাজের প্রতিটি মানুষ নিজের মধ্যে সেই শিল্পবোধ জাগায়, তখনই উৎসব সত্যিকার অর্থে জীবনের উদযাপনে পরিণত হয়।

মানুষ কেবল ভিড়ের অংশ নয়; সে একক সত্তাও। কিন্তু একাকিত্বের মধ্যেই সে প্রায়ই নিজেকে হারায়। উৎসব সেই হারানো সত্তাকে খুঁজে পাওয়ার মুহূর্ত।
যখন মানুষ গান গায়, নাচে, প্রদীপ জ্বালে, তখন আসলে সে নিজের অস্তিত্বের সাক্ষ্য দেয়। উৎসব এইভাবে আত্ম-অভিজ্ঞতার এক রূপান্তরমূলক মাধ্যম।
হিন্দু দর্শনের 'লীলা' ধারণা এই অর্থে গভীর—ঈশ্বর যেমন লীলার মাধ্যমে সৃষ্টিকে প্রকাশ করেন, মানুষও তেমন লীলার মাধ্যমে নিজের জীবনের মানে খুঁজে পায়। উৎসব সেই লীলারই মানবিক রূপ।
অতএব, উৎসবের চূড়ান্ত অর্থ আত্ম-আবিষ্কার—আমি কে, আমি কেন, আমি কীভাবে অস্তিত্বের সঙ্গে যুক্ত—এই প্রশ্নগুলির উত্তর উৎসবের আনন্দের মধ্যে লুকিয়ে থাকে।

উৎসব কখনও নিরপেক্ষ নয়। এর ভেতর দিয়ে সমাজের রাজনৈতিক প্রবণতাও প্রতিফলিত হয়। ইতিহাস সাক্ষী, অনেক সময় উৎসবই জনমানসকে সংগঠিত করেছে।
বাংলার দুর্গাপূজা একসময় নবাবি রাজনীতির পৃষ্ঠপোষকতায় অভিজাতদের আড়ম্বর ছিল, কিন্তু উনবিংশ শতাব্দীতে সেটি পরিণত হয়েছিল জাতীয় জাগরণের প্রতীকে। সার্বজনীন পূজার মাধ্যমে মানুষ অনুভব করেছিল ঐক্যের শক্তি।
তেমনি বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসবও বহু সময়ে রাজনৈতিক প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে—কখনও ঐক্যের নামে, কখনও বিভেদের।
অতএব, উৎসবকে শুধু সাংস্কৃতিক পরিসরে সীমাবদ্ধ ভাবা ভুল। এটি সমাজের মনস্তত্ত্ব ও রাজনীতির অদৃশ্য মানচিত্রও তৈরি করে।

প্রশ্ন এখন একটাই—এই প্রলয়গতির প্রযুক্তিনির্ভর সভ্যতায় উৎসবের ভবিষ্যৎ কোন পথে গমন করছে? মানুষ ক্রমশ যখন ভার্চুয়াল বাস্তবতার অদৃশ্য জালে নিজেকে আবদ্ধ করছে, তখন কি উৎসবের আত্মা, সেই প্রাচীন মানবিক উল্লাস ও মিলনের সত্তা, নিঃশেষ হয়ে যাবে? নাকি সে নতুন কোনো আকারে, নতুন কোনো অস্তিত্ববোধে, আবারও আত্মপ্রকাশ করবে—যেমন চাঁদ কালো মেঘ ভেদ করে আবার জেগে ওঠে?

সম্ভবত ভবিষ্যতের উৎসব আর রাস্তায়, মেলায়, প্রাঙ্গণে সীমাবদ্ধ থাকবে না; বরং মেটাভার্সের কল্পিত নগরীতে, হলোগ্রাফিক দীপ্তির মধ্যে, ডিজিটাল আলোকরেখায় সাজানো হবে আনন্দের মহাযজ্ঞ। মানুষ একে অপরের সঙ্গে হাত না মিলিয়ে 'অ্যাভাটার'-এর মাধ্যমে মিলিত হবে; প্রসাদ বা ভোগ নয়, বরং 'ডেটা' ও 'ইমোশনাল ট্রান্সমিশন'-এর মাধ্যমে আদানপ্রদান হবে শুভেচ্ছা ও প্রীতি। কিন্তু এর মধ্যেও প্রশ্ন থেকে যায়—যখন উৎসবের আলোকসজ্জা বাস্তব বাতির নয়, বরং আলোকরশ্মির সিমুলেশন, তখন কি তার দীপ্তি সত্যিই মানুষের হৃদয় স্পর্শ করতে পারবে?

মানুষের ভেতরের উৎসববোধ, অর্থাৎ আনন্দের সামাজিক রূপ ও করুণার সম্মিলন, কোনো যান্ত্রিক অগ্রগতি দ্বারা নিঃশেষিত হয় না। কারণ উৎসবের মূলভিত্তি মানুষের অন্তঃসত্ত্ব মানবিকতা—যে মানবিকতা যুগে যুগে তার রূপ পাল্টে নিলেও নশ্বর হয়নি। সভ্যতার প্রতিটি নব পর্বেই মানুষ যন্ত্রের মুখে হাসির পরশ এনে দিয়েছে—এই প্রাণস্পন্দনই উৎসবের চিরন্তন উৎস।

তবুও আমাদের এক গভীর দায় রয়ে যায়—উৎসবকে পুনরায় মানবিক করা, তাকে প্রযুক্তির আবরণমুক্ত করে অনুভূতির গভীরে ফিরিয়ে আনা। এখনকার যুগে উৎসব ক্রমশ পণ্যের মেলা, বাণিজ্যের উপাসনাক্ষেত্র, বিজ্ঞাপনের রঙিন মুখোশে রূপান্তরিত হচ্ছে। অর্থ ও প্রভুত্বের মোহে আমরা ভুলে যাচ্ছি যে, উৎসবের সত্যিকারের সার্থকতা নিহিত আছে সহানুভূতির ঐক্যে, সমভাগ্যের আনন্দে।

ভবিষ্যতের উৎসব কেমন হবে, তা নির্ভর করছে আমাদের এই নৈতিক সিদ্ধান্তের ওপর—আমরা কি উৎসবকে আবার হৃদয়ের উপাসনালয়ে ফিরিয়ে আনব, নাকি তাকে প্রযুক্তির প্রদর্শনীতে বিলিয়ে দেব? যখন শিশুর মুখে নির্দোষ হাসি ফুটবে, বৃদ্ধের চোখে শান্তির দীপ্তি জ্বলবে, দরিদ্রের কণ্ঠে ক্লান্তিহীন প্রার্থনা মিলবে আশার সুরে—সেই দিনই আমরা বলতে পারব, উৎসব এখনো বেঁচে আছে।

কারণ উৎসব মানে কেবল নিজের আনন্দে নিমগ্ন থাকা নয়, বরং অন্যের সুখে অংশ নেওয়া; উৎসব মানে বিভেদের সীমানা অতিক্রম করে মিলনের অভ্যুদয়। তাই উৎসবের ভবিষ্যৎ আমাদের হাতে—যতদিন আমরা ভালোবাসা, দয়া ও অংশগ্রহণের পথ থেকে সরে না যাই, ততদিন কোনো মেটাভার্সই উৎসবের আত্মাকে নিঃশেষ করতে পারবে না।

চিরন্তন সত্য এই—উৎসব কেবল ক্যালেন্ডারের তারিখ নয়, এটি মানবতার শ্বাসপ্রশ্বাস; আর যতদিন মানুষ নিঃশ্বাস নেবে, ততদিন উৎসব তার সঙ্গে বাঁচবে, রূপান্তরিত হবে, কিন্তু মরবে না।

উৎসবের দার্শনিক তাৎপর্য এক কথায় বলা যায়—এটি মানুষের অস্তিত্বের সংগীত। জীবনের অন্তর্গত ছন্দ, সময়ের প্রবাহ, প্রকৃতির অনন্ত রূপান্তর এবং সমাজের সম্মিলিত স্পন্দনের মধ্যে মানুষ যখন নিজের ক্ষুদ্র সত্তাকে বৃহতের সঙ্গে একাকার করতে পারে, তখনই উৎসবের জন্ম হয়। উৎসব আসলে মানুষের সত্তার মহা-প্রতিধ্বনি—যেখানে আনন্দ, বেদনা, মৃত্যু, জন্ম, মিলন ও বিচ্ছেদ—সবকিছু মিলেমিশে তৈরি করে এক চিরন্তন সুর।

উৎসব মানুষকে শেখায়, জীবন কেবল বেঁচে থাকার নাম নয়। জীবন মানে সৃজনের আনন্দ, মিলনের উল্লাস, এবং ভাগাভাগির পরম তৃপ্তি। যে মানুষ কেবল নিজের জন্য বাঁচে, সে উৎসবের অর্থ বোঝে না; কারণ উৎসব ব্যক্তির নয়, এটি সমষ্টির আত্মপ্রকাশ। এখানে মানুষ নিজের সীমানা ভেঙে অন্যের সঙ্গে একাকার হয়—গৃহ থেকে সমাজে, সমাজ থেকে মহাবিশ্বে বিস্তৃত হয় তার চেতনা।

এই পৃথিবী যতই বিভক্ত হোক—জাতি, ধর্ম, ভাষা কিংবা রাজনীতির নামে—যুদ্ধের আগুন, হিংসার অন্ধকার, অনিশ্চয়তার ঘনছায়া যতই গভীর হোক না কেন, উৎসবের আলোকরেখা বারবার মানুষকে ফিরিয়ে আনে তার মানবিক মর্মে। কারণ উৎসবের মূল সুরটাই মানবতা; এটি মানুষকে মনে করিয়ে দেয় যে, অস্তিত্বের গভীরে আমরা সবাই এক।

উৎসব তাই কেবল ক্যালেন্ডারের কোনও দিন নয়, এটি এক চিরন্তন অনুভব—অস্তিত্বের অন্তরঙ্গ সংগীত, যা মানুষকে পুনর্জন্ম দেয় প্রত্যেক বছর, প্রত্যেক ঋতুতে, প্রত্যেক প্রার্থনায়। উৎসবের মাধ্যমে মানুষ নিজেকে আবার নতুন করে চিনে নিতে শেখে, নিজের আত্মাকে পুনরায় সংজ্ঞায়িত করে আনন্দের আলোকবিন্দুর মধ্যে।

অতএব, উৎসব চিরকাল থাকবে—কারণ যতদিন মানুষ থাকবে, তার হৃদয়ের গভীরে ধ্বনিত হবে সেই অনন্ত সুর- মানুষ সর্বদা আনন্দের মধ্যেই নিজের আত্মাকে খোঁজে। উৎসব সেই অনুসন্ধানেরই নাম—যেখানে মানুষের মন, সমাজ, প্রকৃতি ও সময় মিলেমিশে একাকার হয়ে ওঠে আনন্দের অবিচ্ছেদ্য সিম্ফনিতে—অস্তিত্বের সংগীতে।

====================

কৃশানু ব্যানার্জী 
শশীনাড়া, মেমারী, পূর্ব বর্ধমান, ৭১৩১৪৬

Comments

বিধিবদ্ধ স্বীকার্য :

লেখার বক্তব্যের দায়িত্ব লেখকের, পত্রিকার নয়। আমরা বহু মতের প্রকাশক মাত্র।

মতামত/লেখা এখানে জমা দিন

Name

Email *

Message *

সাম্প্রতিক বাছাই

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬

  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠালে  অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে হলে ভালো। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # ...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯২তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩২ অক্টোবর ২০২৫

—: সম্পাদকীয় দপ্তর থেকে :— এই সংখ্যার জন্য লেখা এসেছিল প্রায় ১৮০টা। কিন্তু গুণগত মানে দুর্বল লেখার সংখ্যা বহু। আমরা নবপ্রভাতে নতুনদের কথা ভেবে বেশ কিছু দুর্বল লেখাও রাখি। কিন্তু সবসময় একই লোকের দুর্বল লেখা প্রকাশ করা অনুচিত বলে মনে করি। শেষ পর্যন্ত ৯৯ জনের লেখা রাখা গেল। যাদের লেখা প্রকাশিত হল না, তারা লেখাগুলি অন্য যেখানে খুশি পাঠাতে পারেন। বিশেষ কারণে এই সংখ্যার মুদ্রিত সংস্করণ প্রকাশিত হচ্ছে না। আমরা দুঃখিত। তবে মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি শীঘ্রই আসছে। সঙ্গে থাকুন। সকলকে উৎসবমুখর বর্ণময় শুভেচ্ছাসহ— —নিরাশাহরণ নস্কর, সম্পাদক, নবপ্রভাত। অনুরোধ : প্রকাশিত লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন, ছবি/স্ক্রীনশট নয়।  == সূচিপত্র == পড়া-লেখার ইতিহাস অনুসন্ধান।। তপন তরফদার উৎসব : মানুষের চিরন্তন আত্মপ্রকাশ।। কৃশানু ব্যানার্জি বাংলা : সভ্যতা ও সংস্কৃতির জন্মভূমি।। শ্যামল হুদাতী সমুদ্র আর অস্তিত্ব ।। সুব্রত চৌধুরী রাজা ছিলেন জুবিন গর্গ ।। গঙ্গা 'অনু'   আদ্যাশক্তি মহামায়ার বাংলা বারো মাসের বারো রূপ ।। অর্হণ জানা মেধাদাদুর আসর ।। রণেশ রায় বৈজ্ঞানিক মা...

বৃষ্টি থামার শেষে ।। সঙ্ঘমিত্রা দাস

  বৃষ্টি থামার শেষে সঙ্ঘমিত্রা দাস  দমদম নাগেরবাজারে মুখোমুখি মেসবাড়ি। সুতপা অফিস ফেরত চা নিয়ে জানলায় বসলেই সামনের ঘরে  বিনয়ের অস্তিত্ব টের পায়। গান চলছে, ল্যপটপে কাজে ব্যস্ত। সুঠাম গড়ন, সুপুরুষ চেহারা। সুতপার মনে প্রেমের জোয়ার। কাজের ফাঁকে আড় চোখে সুতপাকে দেখে বিনয়ও। রোজ একটা অপেক্ষা থাকে, সামনে এলেই পর্দার আড়াল খোঁজে দুজনে। লাজুক চোখ, লুকাই লুকাই ভাব। এভাবে গভীর হয় প্রেম, আগুনে পোড়ে মন। নীরব  দুই জোড়া  চোখ নিশ্চুপে ভালোবাসে। অঝোর বৃষ্টিতে দুজনেই আটকে আছে স্টেশনে সেডের নীচে। বারবার চোখে চোখ মিলছে।  বৃষ্টিটা  কমতেই বিনয় ব্যাগ থেকে ছাতা বের করে,  প্রথম বাক্যালাপ  "মনে হয় তাড়াতাড়ি থামবে না। ছাতা আছে, চলে যাই চলুন"। সুতপা, বিনয় একছাতায়। মাথা বাঁচলেও  শরীর ভিজছে। আরো কাছে ঘেঁষে আসছে ওরা। একে অপরের স্পর্শ অনুভব করছে। বুকের ধুকপুকানি বাড়ছে। দুজনেই রিমঝিম প্রেমে আকুল। সুতপা ব্যাগটা শক্ত করে আড়ালে টেনে রেখেছে। ওর ব্যাগেও যে ছাতা আছে কিছুতেই বিনয় যেন টের না পায়। ছোট মিথ্যার আশ্রয়, ও যে আরো একটু বিনয়ের কাছে থাকতে চায়। ===...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো,  তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) য...

গুচ্ছকবিতা || শিশির আজম

  গুচ্ছকবিতা || শিশির আজম হুইসেল (মুরাকামি থেকে অনুপ্রাণিত) ♦ 'গভীর রাতে একটা হুইসেল কতটা গভীর হতে পারে তুমি কল্পনাও করতে পারো না,' ছেলেটা বললো, 'আশ্চর্য ঐ হুইসেলের মতো আমি ভালবাসি তোমাকে।' কিন্তু গভীর রাতে অন্ধকারে কখনও তো ঘুম ভেঙে যায়নি মেয়েটার, কখনও ও বিচ্ছিন্ন আর একা হয়ে যায়নি। ও কীভাবে অনুভব করবে গভীর রাতে ট্রেনের হুইসেল কতটা গভীর! নিউজ এজেন্সি ♦ একসময় আমরা খবর শুনতাম এখন দেখি স্বীকার করতে হবে খবর শোনার চেয়ে দেখার আনন্দ বেশি আলাদা উত্তেজনা নিউজ এজেন্সিগুলো এব্যাপারে তৎপর আর প্রতিযোগিতাপূর্ণ কোনটা নিউজ সেটা ওরাই ঠিক করে যেটা ওদের দরকার আর সেটাই আমাদের দেখানো হয় ধারাবাহিকভাবে সুচারু জ্যামিতিকতায় বিভিন্ন পদ মিশিয়ে খাওয়ানো হয় নতুন বাস্তবতা নির্মাণে যে বাস্তবতায় জায়গা নেই আমাদের ইতিহাস অন্বেষা স্বাধীনতার সমৃদ্ধি আর স্বাধীনতার কথা বলেই ওরা আমার ক্ষেতখামার পাহাড় আর নদীর দখল নিয়েছে তাহলে টিভিতে যে হাসিখুশি প্রাণবন্ত আমাদেরকে দেখানো হয় ওরা কারা এই প্রশ্ন করো নিজের কাছে আগুন নিয়ে খেলা ♦ আজও পুকুরে ছিপ ফেলে বসবো আমি ধীরে চুপ সূর্য আমার ঘাড়ে শ্বাস ফেলবে সারারাত ঘরের ভেতর ল্যাং...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯১তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পাদকীয় দপ্তর থেকে এই সংখ্যায়  'শিক্ষা ও শিক্ষক' বিষয়ক বেশ কিছু লেখার পাশাপাশি রয়েছে বিচিত্র বিষয়ের আরও কিছু লেখা। সব মিলিয়ে সংখ্যাটি আপনাদের সমৃদ্ধ করবে, আপ্লুত করবে — এ বিষয়ে আমরা আশাবাদী। আপনাদের মতামত অবশ্যই জানাবেন। আমরা প্রতীক্ষিত।            আগামী অক্টোবর ২০২৫ সংখ্যা 'উৎসব সংখ্যা' হিসাবে প্রকাশিত হবে। ওয়েব সংখ্যার পাশাপাশি নির্বাচিত লেখাগুলি নিয়ে একটি pdf এবং তার মুদ্রিত সংস্করণও প্রকাশিত হবে। তাই অপ্রকাশিত ভালো লেখা পাঠান। বিশেষ কোনও বিষয় নেই। প্রবন্ধ-নিবন্ধ-ফিচার ২০০০ শব্দ, গল্প ১২০০ শব্দ, অণুগল্প ৫০০ শব্দ, কবিতা-ছড়া ২৪ লাইনের মধ্যে হলে ভালো। ইমেলঃ nabapravatblog@gmail.com           বিস্তারিত বিজ্ঞপ্তি আসবে। সামাজিক মাধ্যমে আমদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন। সময় মতো সব সংবাদ পেয়ে যাবেন।  শারদ উৎসবের দিনগুলি সকলের আনন্দে কাটুক এই কামনা করি। —নিরাশাহরণ নস্কর সম্পাদক: নবপ্রভাত মোঃ ৯৪৩৩৩৯৩৫৫৬ Whatsapp Group:  https://chat.whatsapp.com/ AIpj98JKbloFSpeqMcpr6j Facebook Page:  https://www.facebook.com/ share...

দিদৃক্ষা ।। রাজেশ কে. চক্রবর্ত্তী

  দিদৃক্ষা রাজেশ কে. চক্রবর্ত্তী 'কাল একবার দেখা হতে পারে?' দশমীর দুপুরে খাটে আধশোয়া হয়ে নিজের ফোনটা ঘাঁটছিল দেবমাল্য; হোয়াট্‌সঅ্যাপের সার্চ বক্সে  র‍্যান্ডম সিক্যুয়েন্সে ক'খানা ডিজিট ইনপুট করতেই বিস্মৃতির অতল থেকে অপ্রত্যাশিতভাবে যে নামটা স্ক্রিনের সারফেসে ভেসে উঠল, এককালে দেবমাল্যের প্রায়োরিটি লিস্টে সবথেকে ওপরে পিন্‌ করা থাকতো এই অ্যাকাউন্টটা। 'অহনা দাশগুপ্ত'—গ্রেয়েড-আউট ডিপিটার ডানদিকে, নামটার তলায় নিস্প্রভ হরফে ভেসে থাকা ওর এই লাস্ট মেসেজটা বেশ ক'বছরের পুরনো, কিন্তু দেবমাল্যর স্মৃতির প্যান্ডোরা বাক্সটি উলটে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল। আরেকবার আপাদমস্তক শিহরিত হয় সে। প্রোফাইলটা খুলে ওপরে-নীচে স্ক্রল্‌ করে দেখে, ওদের পুরনো চ্যাটগুলো তেমনি আড়ষ্ট হয়ে পড়ে আছে, ওর মেসেজগুলোর পাশে ডাবল টিকগুলো এখনও জাজ্বল্যমান সবুজে ছোপানো, যেন এইমাত্র 'সিন্‌' করে রেখেছে অহনা! যেন এখুনি আবার হাত বোলালেই অহনা এসে খানিকটা রাগত ভঙ্গিতে চ্যাট করতে লেগে যাবে। দেবমাল্যের বুক ছাপিয়ে একটা নীরব দীর্ঘশ্বাস উঠে আসে! ছুটির এই আমেজটা লক্ষ্মীপুজো অব্দি গড়াবে—অফিস খুললেই তো আবার দমফাটা ব্য...

গ্রামের বিদ্রোহ ।। আর. এম. কারিমুল্লাহ

গ্রামের বিদ্রোহ আর. এম. কারিমুল্লাহ গ্রামটার নাম মঙ্গলপুর,গ্রামের ঠিক প্রান্তে, নদীর কোলঘেঁষে বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে এক প্রকাণ্ড মাঠ। মাঠটির ঠিক মাঝখানে নয় তবে রাস্তা থেকে খানিক ভেতরেই দাঁড়িয়ে আছে কয়েকটি ছোট্ট ছোট্ট পরিবার কে নিয়ে গ্রামটি । গাছের ডালপালা মেলে ছায়া দিতে দিতে সে ভুলেই গেছল বোধহয় সে এদের কেউ নয়! সেই ছায়ার গভীরে জন্ম নিত কত শত নাম না জানা পাখির বাসা, কাঠবিড়ালির সংসার, আর কত না অদেখা প্রাণীর স্বর্গ।  গ্রামের মোড়ল সুবীর বাবু, সবাই তাকে বড়ো বাবু বলে ডাকে, লোকে যেমন ভয় পাই তেমনি সম্মান ও করে , কিন্তু যেখানে অন্যায় খারাপ কাজ দেখে সেখানে প্রাণ পনে ছুটে যাই, খুব একটি সাদা সিধে জীবন যাপন করে, সব সময় পরনে সাদা পাঞ্জাবি নীল পায়জামা, পায়ে সবুজ রঙের মোজা, হাঁটুর উপরে ফিতা দিয়ে বাঁধা।     সক্কাল সক্কাল- মাহমুদুল এর বাড়ি গিয়ে বলল- তোরা নাকি গ্রাম ছেড়ে চলে যাবি?  _ হ্যাঁ বড়ো বাবু... _ গ্রাম ছাড়তে মায়া হয় না! _ হয় বই কি? খুউব হয় , কিন্তু কি করবো বড়ো বাবু? পেটের জ্বালায় দু মুঠো ভাতের জন্য যেতে হচ্ছে...।  _ আমাদের ভুলে যাবি না তো? _ না না বড়ো বাবু , কি যে বলেন! সব...

উৎসব শেষে ।। উৎপলেন্দু দাস

  উৎসব শেষে  উৎপলেন্দু দাস উৎসব শেষ হয় জানি কিন্তু মানে না অবুঝ হৃদয় আকাশ মেঘলা করে আসে ঝরে পড়ে বাদলধারায়, বোঝাতে পারি না তাকে। কত সুর ভেসে আসে দূর থেকে কত কথা কবিতা হওয়ার অপেক্ষায়  অপরিমেয় ঋণের ভার ক্লিষ্ট করে আমাকে। চলে যেতে চাই নিঃশব্দে জানবেনা কেউ বাতাসেও উঠবেনা ঢেউ আকাশ বলবে চলে এসো বিনা হাঁক ডাকে । হালকা হিমেল কার্তিক মাসে উৎসব শেষ হলে হেঁটে যাবো একা একা শিশির ভেজা সকালে তুমিও না হয় দু ফোঁটা জল জমা রেখো পথের শেষ বাঁকে ।  ============== ডাঃ উৎপলেন্দু দাস ২৭/৫১, ক্ষেত্র মোহন নস্কর রোড কলকাতা ৭০০০৪০  

স্মৃতিকথা ।। ৺বিজয়ার চিঠি ।। ভাস্কর চৌধুরী

উৎসব শেষের শূন্যতা এখন গ্রাস করে আছে আদিগন্ত। হঠাৎ ভেসে আসা ছাতিম ফুলের গন্ধ যেমন মাতাল করে দেয় ঠিক তেমনই মন আচ্ছন্ন হয়ে থাকে এক না ছুঁতে পাওয়া আলোর পিপাসায়। উৎসব শেষের নিভে যাওয়া সন্ধ্যেবেলার আলোয় ম্লান হয়ে আসে জীবনের টুকরো টুকরো খুশির আমেজ।  বিসর্জনের শেষে ছেলেবেলায় গোটা গোটা অক্ষরে হলদে রঙা পোস্টকার্ড আর নীলচে-সবুজ ইনল্যান্ড লেটারে দূরের সব্বাইকে পাঠাতে হতো ৺বিজয়ার চিঠি! বয়ান মোটামুটি ওই একই ― বড়দের শুভ ৺বিজয়ার প্রনাম আর যেহেতু আমরা তখন ছোট তাই আশীর্বাদ জানানোর কেউ থাকতো না। তবুও কুঁচোকাঁচা ছোট ভাইবোনদের মনের আদর কলমের ডগায় উগড়ে দিতুম সে চিঠিতে!  ৺বিজয়ার চিঠি আসলে পুজোর ছুটির শেষে হাতের লেখা করিয়ে নেবার এক অলৌকিক ষড়যন্ত্র! ইচ্ছে নেই তবুও জোর করে ওই হাতের লেখা শুধু নয়, বানান, বাক্যগঠন সব কিছু সুকৌশলে করিয়ে নেওয়ার ফন্দি। এটা বুঝেছি অনেক পরে। আর যখন বুঝতে পেরেছি তখন কিন্তু সেই চিঠি পাঠানোর মানুষগুলো মনের মধ্যে গেঁথে গেছে। তখন যেন সত্যি সত্যি মন বলতো হোক না ওই পোস্টকার্ড বা ইনল্যান্ড লেটারের একচিলতে জমি, আমার খাস দখল তো থাকবে তাতে! জানেন, এখন আর কেউ ৺বিজয়ার চিঠি পাঠায় না! পুজো ...

জনপ্রিয় লেখা

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ -- "ত্রয়ী কাব্য" ------------------------------------------------------------------------------ সুনন্দ মন্ডল নবীনচন্দ্র সেন সাহিত্যে তথা বাংলা কবিতার জগতে এক অবিস্মরণীয় নাম। তিনি চট্টগ্রাম জেলার নওয়াপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ১৮৪৭ সালে তাঁর জন্ম এবং মত্যু ১৯০৯ সালে। বঙ্কিমচন্দ্র তাঁকে 'বাংলার বায়রন' বলেছেন। ‎জীবৎকালীন যুগে আত্মপ্রত্যয়ের মধ্যে জাতীয় চরিত্র আত্মস্থ করে নতুন সংস্কারে প্রয়াসী হয়ে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখেছেন।মধুসূদন-হেমচন্দ্র-নবীনচন্দ্র--এই তিন কবি বাংলা কাব্যধারায় প্রাণ সঞ্চার করেছিলেন। বিশেষত মহাকাব্য লেখার দুঃসাহস দেখিয়েছিলেন। এদিক থেকে মধুসূদন দত্ত একজন সফল মহাকাব্যিক। তাঁর 'মেঘনাদ বধ' কাব্যের মত গভীর ও ব্যঞ্জনাময় না হলেও নবীনচন্দ্র সেনের 'ত্রয়ী' কাব্য বিশেষ মর্যাদা দাবি করতেই পারে। তাছাড়া 'ত্রয়ী' কাব্যে ধর্মীয় ভাবধারার আবেগ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ‎ ‎নবীনচন্দ্র সেন বহু কাব্য লিখেছেন। যেমন- 'অবকাশরঞ্জিনী','পলাশীর যুদ্ধ', 'ক্লিওপেট্রা', 'রঙ্গমতী', 'খ্রীষ্ট', ...

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা শ্রীজিৎ জানা "সময় চলিয়া যায় নদীর স্রোতের প্রায়"। স্রোতের ধারা তার দু'প্রান্তে রেখে যায় ভাঙাগড়ার চিহ্ন। কালের দৃশ্যপটেও পরিবর্তনের ছবি অনিবার্যভাবেই চোখে পড়ে। সমাজ সময়ের ছাঁচে নিজেকে গড়ে নেয় প্রতিনিয়ত।  সেখানে মনে নেওয়ায় বাধা থাকলেও,মেনে নেওয়ার গাজোয়ারি চলে না। ফলত কাল বদলের গাণিতিক হিসেবে জীবন ও জীবিকার যে রদবদল,তাকেই বোধকরি সংগ্রাম বলা যায়। জীবন সংগ্রাম অথবা টিকে থাকার সংগ্রাম।  মানুষের জীবনযাপনের ক্ষেত্রে আজকে যা অত্যাবশ্যকীয় কাল তার বিকল্প রূপ পেতে পারে অথবা তা অনাবশ্যক হওয়াও স্বাভাবিক। সেক্ষেত্রে উক্ত বিষয়টির পরিষেবা দানকারী মানুষদের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হওয়া অস্বাভাবিক নয়। এক কালে গাঁয়ে কত ধরনের পেশার মানুষদের চোখে পোড়তো। কোন পেশা ছিল সম্বৎসরের,আবার কোন পেশা এককালীন।  সব পেশার লোকেরাই কত নিষ্ঠা ভরে গাঁয়ে  তাদের পরিষেবা দিত। বিনিময়ে সামান্য আয় হত তাদের। আর সেই আয়টুকুই ছিল  তাদের সংসার নির্বাহের একমাত্র উপায়। কালে কালান্তরে সেই সব পেশা,সেই সব সমাজবন্ধুরা হারিয়ে গ্যাছে। শুধুমাত্র তারা বেঁচে আছে অগ্রজের গল্পকথায়,আর বিভিন...

গ্রন্থ আলোচনা: শর্মিষ্ঠা দেবনাথ

প্রতিবাদ যখন অগ্নিবাণী বাংলাদেশে নারীমুক্তি ও নারী আন্দোলনের পুরোধা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ১৯৯তম জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদিত হল " আসিফা এবং.." কাব্য সংকলনটির মধ্যদিয়ে।সংকলনটির বিশেষত্ব হল,এটি উৎসর্গ করা হয়েছে নারীর সম্মান রক্ষার আন্দোলনের যোগ্যতম ব্যক্তি শহীদ শিক্ষক বরুন বিশ্বাসকে। সংকলক প্রকাশক সন্দীপ সাহু নিজে এবং বিশিষ্ট কবি সাহিত্যিকদের দিয়ে লিখিয়ে নিয়েছেন এমন কিছু কবিতা, যা শুধুমাত্র শব্দ ও ছন্দের অনুবন্ধ নয়, এক একটি অগ্নিবাণী।আসলে জীবনকে দেখার স্বাতন্ত্র‍্যে কবিরা সব সময়ই অগ্রগণ্য এবং অনন্য।যুগ ও জীবন দ্বন্দ্বের কণ্ঠস্বরকে আশ্রয় করে,একদিকে মনের প্রবল দাহ ও অন্যদিকে  নির্যাতিতা শিশুকন্যা ও নারীর প্রতি মনের গভীর আকুলতা থেকে প্রকাশ পেয়েছে "আসিফা এবং" এর  কবিতাগুলি।এক অন্ধকার সময়ের মুখোমুখি আমরা,সেই অন্ধকার আমাদের নিয়ে এসেছে সামাজিক অবক্ষয়ের শেষধাপে যেখানে নৈতিকতা,পাপবোধ,গ্লানিকে সরিয়ে রেখে, সমাজের বানানো নিয়মকে তোয়াক্কা না করে,অনায়াস দক্ষতায় ও ক্ষিপ্রতায় নিজেরই ধর্মচেতনাকে জলাঞ্জলি দিয়ে কিছু মানুষ তার পশুত্বের পরিচয় দিয়েছে ধর্ষণ ও ন...

শ্যামাপদ মালাকারের কবিতা

চোখ """"""" নদী, অরণ্য, রাতের ফালি চাঁদ- সবেই তো আমার...স্বর্ণপিঁড়িটাও!। সেদিন, শুকতারাটার গা' মাপতে গিয়ে মনে হল, --ওরা আমার চেয়েও সুখী? দেখিনা একবার গাইতি-শাবল চালিয়ে... চালালাম। জল-মাটি ভেজা একটা 'চোখ' কুড়িয়ে ফিরলাম! সেই চোখদিয়ে দেখি-- শেষ বিকেলের নিরন্ন আঁচে ঝলসানো বুকে নীড়ে ফিরছে ধূলিমাখা কত কাল পা, কি শান্তি - কি তৃষ্ণা! পাতাক্ষোয়া কোদালেরর মাথায় ঝরেপড়া ললাটের ঘামে, কারা যেন জীবন শাণ দেয়! রুক্ষঠোঁটের আবরণে এক সময় নেমে আসে শিশিরস্নাত কালনিশি-- মাঝের ব্যবধান মুছে দেয় প্রতিশ্রুতির ভীড়- - পূর্বজনমের নিদর্শনচুম্বন শেষে হেরে যায় কার মমতাজ-- ম্লান হয়ে যায় কত পিঁড়ি! ... ম্লান হয়ে যায় কত পিঁড়ি! ... ম্লা...

কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা: এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায় ।। পার্থ সারথি চক্রবর্তী

  কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা : এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায়  পার্থ সারথি চক্রবর্তী  কথায় বলে বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। রাজার শহর কোচবিহারের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা আরো অনেক বেশি। দুর্গাপূজা আর দীপাবলির মতো দু'দুটো বিরাট মাপের উৎসবের রেশ কাটতে না কাটতেই, এ শহর ভাসে রাস উৎসবের উন্মাদনায়। মদনমোহন ঠাকুর কোচবিহারের প্রাণের ঠাকুর। তাঁকে নিয়ে সবার আবেগ আর শ্রদ্ধা ও ভালবাসা এখানে বাঁধনছাড়া। এক অপূর্ব মিলনোৎসবের চেহারা নেওয়া এই উৎসব ঐতিহ্যবাহী ও ঐতিহাসিক। জন, মত, সম্প্রদায়ের উর্ধে এই উৎসবের গ্রহণযোগ্যতা। সময়ের কষ্টি পাথরে পরীক্ষিত! এক প্রাণের উৎসব, যা বহুদিন ধরেই গোটা উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ উৎসবে পর্যবসিত।কোচবিহারের এই রাস উৎসবকে কেন্দ্র করে যে মেলা হয় তাও সময়ের হাত ধরে অনেক বদলে গেছে। এসেছে আধুনিকতার ছোঁয়া! শৈশবে বাবার হাত ধরে যে মেলা দেখেছি তা চরিত্র ও আকৃতি দু'দিক থেকেই বদলে গেছে। গত পঁচিশ বছর ধরে খুব কাছে থেকে এই উৎসব ও মেলা দেখা, অনুভব করার সুযোগ হয়েছে। যা দিনদিন অভিজ্ঞতা ও প্রাপ্তির ঝুলিকে সমৃদ্ধ করে গেছে প্রতি ক্ষেত্রেই।  খুব সংক্ষেপে এই উৎসবের ইতিহাস না জানাটা কিন্তু অবিচারই ...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো,  তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) য...

মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা 2024 সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি (লেখক ও সম্পাদকীয় দপ্তরের কথোপকথন আকারে) --কী পত্রিকা? --নবপ্রভাত। --মুদ্রিত না অনলাইন? --মুদ্রিত। --কোন সংখ্যা হবে এটা? --বইমেলা 2024। --কোন কোন ধরনের লেখা থাকবে? --প্রবন্ধ-নিবন্ধ, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া। --বিশেষ কোন বিষয় আছে? --না। যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে। --শব্দ বা লাইন সংখ্যার কোন বাঁধন আছে? --না। নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো (যেমন, কবিতা 12-14 লাইনের মধ্যে, অণুগল্প কমবেশি 200/250শব্দে)। তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়। --ক'টি লেখা পাঠাতে হবে? --মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। --ফেসবুক বা অন্য কোন প্লাটফর্মে প্রকাশিত লেখা কি পাঠানো যাবে? --না। সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। --পত্রিকা কোন সময়ে প্রকাশিত হবে? --জানুয়ারি 2024-এর দ্বিতীয় সপ্তাহে। --লেখা পাঠানোর শেষতারিখ কত? -- 17 ডিসেম্বর 2023। --কীভাবে পাঠাতে হবে? --মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। --লেখার সঙ্গে কী কী দিতে হবে? --নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) --বিশেষ সতর্কতা কিছু ? --১)মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন '...

উৎসবের সৌন্দর্য: সেকালে ও একালে।। সৌরভ পুরকাইত

  উৎসবের সৌন্দর্য:  সেকালে ও একালে   সৌরভ পুরকাইত বাংলার উৎসব বাংলার প্রাণ। প্রতিদিনের জীবনযাপনের মধ্যে যখন মন ক্লান্ত হয়ে পড়ে তখন তাকে বেঁচে থাকার রসদ যোগায় এই উৎসব। কথায় বলে 'বারো মাসে তেরো পার্বণ'।মন আনন্দই চায়।তাই তাকে সজীবতা দিতে,পরিবারের,সমাজের ভালো-মন্দের কথা মাথায় রেখে মানুষ নিজেই সৃষ্টি করে নিয়েছে নানাবিধ উৎসবগুলিকে। একেবারে প্রাচীন কাল থেকে আজ পর্যন্ত মানুষ কখনোই উৎসব বিমুখ ছিল না।উৎসবই তাকে ঘর থেকে বাইরে টেনে এনেছে,চিনতে শিখিয়েছে আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার আনন্দকে। উৎসব আসলে প্রাণের সাথে প্রাণের যোগ, হৃদয়ের সাথে হৃদয়ের যোগ।রবীন্দ্রনাথ বলেছেন 'সত্য যেখানেই সুন্দর হয়ে প্রকাশ পায় সেইখানেই উৎসব'।হৃদয়ের সেই সুকোমল বৃত্তির জাগরণ যেন ফুটে ওঠা ফুলেরই মতো সত্য ও সুন্দর।এই জাগরণই উৎসব। তাই নানা কিছুর মধ্য দিয়ে,নানা উপলক্ষ্যে এই উৎসব প্রকাশ পায়। প্রাচীনকালে মানুষের হাতে না ছিল পসার, না ছিল পসরা।ছিল মনের আন্তরিকতা,মানুষকে কাছে টেনে নেবার ক্ষমতা।সেটাই ছিল উৎসবের সৌন্দর্য। তাই সেদিনের উৎসবে ক্ষুদ্র,তুচ্ছ উপকরণও প্রাণের উচ্ছ্বাসে মহৎ হয়ে উঠত।সেকালের উৎসবে লোক দেখানো ব্যাপার কিছু ...

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

বসন্তের কোকিল তুমি   বিচিত্র কুমার                      (০১) তোমার দু-আঁখির গহীন অরণ্যে একটা স্বপ্নের বহমান নদী রয়েছে, তারই রেশ ধরে আমি হেঁটে চলি অজানা বসন্তের পথে নীর উদ্দেশ্যে। সে চলার কোন শেষ সীমা নেই তাই আমার বিষণ্ণ একতারা সন্ন্যাস খুঁজে ফিরে , কবে তুমি বুঝবে অনুশ্রী মনের পর্দা খুলে একুশ বসন্ত তোমার রঙ ছিটিয়ে যাচ্ছে অচিনপুরে। এদিকে আমার দেহের প্রতিটি শিরা ধমনীতে প্রবাহিত হচ্ছে তোমার ভালোবাসার একটু উষ্ণতা পাবার জন্যে, শুধু অনুভবে তাণ্ডব উচ্ছাসিত হচ্ছে--- যেদিকে তাকাই --- ফুলে ফুলে ভ্রমর গুনগুনিয়ে উড়ে উড়ে পরে বসন্তের কোকিল গান গায় নব বসন্তে, তোমার দুই চোখে আমার একই ছায়া রয়ে যায় উতলা ভালোবাসার সীমান্তে।                 (০২)        এক রক্তাক্ত বসন্তের স্মৃতি কোন এক উতলা বসন্তের সকালে পুষ্পবনে ফুটেছিল একটি টকটকে লাল গোলাপ, তার সাথে হয়েছিলো দেখা প্রথম ফাগুনে হয়েছিল দুজনার এ জীবনের আলাপ।  তারপর প্র...

অনুভবে, অনুধ্যানে অনালোকিত কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী ।। সুপ্রিয় গঙ্গোপাধ্যায়

"এ কালে একটু লেখাপড়া জানা থাকাতে, এবং বঙ্গভাষায় অনেক গুলি পাঠ্য পুস্তক হওয়াতে কেবল পরনিন্দা করিয়া সময় কাটাইতে তাঁহাদের আবশ্যকও হয় না, প্রবৃত্তিও হয় না। …নিতান্ত সখ্যতা বা আত্মীয়তা না থাকিলে, সকল পেটের কথা খুলিয়া নিঃশ্বাস ছাড়িয়া তৃপ্তিলাভ করা, এ কালের মেয়েরা পছন্দ করেন না। তাঁহারা বইখানি, কার্পেটটুকু, নিজের স্বামী পুত্র লইয়া দিন যাপন করিতে বা একেলা থাকিতে কষ্ট বোধ করেন না।" —শরৎকুমারী চৌধুরাণীর এই লেখা (ভারতী ও বালক/ আশ্বিন কার্তিক, মাঘ/ ১২৯৮) দেখে বুঝতে অসুবিধা হয় না উনিশ শতকে নারীর লেখাপড়া শেখার উদ্দেশ্য ছিল মূলত আত্মমুক্তির জন্য। শুধু লেখাপড়া শেখা নয়, সাহিত্য সৃষ্টিতেও ছয়'এর দশক (উনিশ শতকের) থেকে নারীরা যে ধারা সূত্রপাত করেছিল তা নারীর আত্মমুক্তির পথকেই প্রসারিত করেছিল। ছয়'এর দশকের পূর্বেই ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে প্রথম ছাপার হরফে নারী রচিত কাব্য 'চিত্তবিলাসিনী' প্রকাশিত হয়। লেখেন কৃষ্ণকামিনী দাসী। ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে কবি ঠাকুরাণী দাসীর নাম উঠে আসতে থাকে, যিনি কবিতার পাশাপাশি গদ্যও লিখতেন। ঠিক সেই বছরই জন্মগ্রহণ করেন কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী, যাঁর কবিতা লেখা আত্মমুক্...

বছরের বাছাই

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৪তম সংখ্যা ।। ফাল্গুন ১৪৩১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

  এই সংখ্যায় একটি গ্রন্থ আলোচনা ও একটি ধারাবাহিক রচনা ছাড়া সব লেখাই ভাষা দিবস, মাতৃভাষা, ভাষাচেতনা ও ভাষা সমস্যা বিষয়ক রচনা। লেখাগুলি এই সংখ্যাকে অনেকটাই সমৃদ্ধ করেছে। পড়ুন। শেয়ার করুন। মতামত জানান। লেখকগণ নিজের নিজের লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন যতখুশি, যে মাধ্যমে খুশি। কিন্তু স্ক্রিনশট শেয়ার নৈব নৈব চ!  অন্য বিষয়ের লেখাগুলি আগামী সংখ্যার জন্য রইল।  সকলকে ধন্যবাদ, অভিনন্দন। ভালো থাকুন।   --সম্পাদক, নবপ্রভাত। ==  সূ  চি  প  ত্র  == প্রবন্ধ-নিবন্ধ অমর ২১শে ফেব্রুয়ারি বাঙ্গালীর বাংলা ভাষা দুর্জয় দিবস।। বটু কৃষ্ণ হালদার ভাষা শহীদদের পঁচাত্তর বছর।। অনিন্দ্য পাল একুশে ফেব্রুয়ারি : বাঙালির শ্রেষ্ঠ অশ্রুবিন্দু।। জীবনকুমার সরকার কবিগানের সাহিত্যিক ও সমাজতাত্ত্বিক মূল্য।। বারিদ বরন গুপ্ত বিপন্ন মাতৃভাষা ও সংস্কৃতি।। শ্যামল হুদাতী মায়ের দুধ আর মাতৃভাষা।। প্রদীপ কুমার দে একুশে ফেব্রুয়ারি : কিছু কথা।। বনশ্রী গোপ বাংলায় কথা বাংলায় কাজ।। চন্দন দাশগুপ্ত বিপন্ন মাতৃভাষা ও তার মুক্তির পথ।। মিঠুন মুখার্জী. হে অমর একুশে, তোমায় ভুলিনি, ভুলব না।। মহম্মদ মফিজুল ইসলা...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৭তম সংখ্যা ।। জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ মে ২০২৫

  প্রচ্ছদ চিত্র: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সূচিপত্র রবীন্দ্রনাথ এবং কয়েকজন নারী ।। অনিন্দ্য পাল পরাবাস্তববাদ ও বাংলায় জীবনানন্দের কাব্যচর্চা ।। রণেশ রায় প্রতীক্ষা ।। চন্দন দাশগুপ্ত আশ্রয় ।। সায়নী সাহা বয়স্ক শিক্ষাকেন্দ্র ।। দেবাংশু সরকার প্রণামের প্রভু ।। সুপ্রভাত মেট্যা দুর্ভাগ্যের সম্মুখ সমরে ।। সমীর কুমার দত্ত আচমকা শরৎ ।। অর্ণব সামন্ত প্রতিধ্বনি ✍️ সুবীর কুমার ঘোষ জীবন যেখানে যেমন ।। আরজু মুন জারিন বছর সীমান্তে হিসেব নিকেশ ।। রানা জামান চারটি কবিতা ।। বিবেকানন্দ নস্কর আমরা আছি ।। লালন চাঁদ চাওয়া ।। মাথুর দাস কাগজ ফুলে ।। সফিউল মল্লিক সময়ের স্রোত ।। দুর্গাদাস মিদ্যা তুমি মানুষ ।। বদরুল বোরহান দিঘার সমুদ্র ।। মাখনলাল প্রধান পুস্তক-আলোচনা ।। অরবিন্দ পুরকাইত সংযম ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত  চেনা প্রতিবেশী (প্রথম পর্ব) ।। দীপক পাল খেলার মাঠ ।। তূয়া নূর বন্ধু শ্যামলকান্তি ।। শংকর ব্রহ্ম তুমি তোমার মতো থাকলে ।। সত্যেন্দ্রনাথ বেরা গ্রীষ্মে খুবই হিংস্র রবি ।। জগবন্ধু হালদার স্বপ্ন দর্শন ✍️ পার্থ প্রতিম দাস মৌন মুখরতা ।। মুসা মন্ডল রুদ্র বৈশাখ ।। দীনেশ সরকার চিহ্নিত পদযুগ পদাঘাত ।। দেবাশীষ...

প্রচ্ছদ।। ৮৩তম সংখ্যা ।। মাঘ ১৪৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ।। প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র

  বিঃ দ্রঃ আগামী ফেব্রুয়ারি সংখ্যার জন্য ভাষা দিবসের কথা মাথায় রেখে লেখা পাঠান। email: nabapravatblog@gmail.com  সূচিপত্র ফিচার।। গোপাল ভাঁড়ের অজানা সত্য ।। লোকনাথ পাল প্রবন্ধ ।। মসুয়ার রায় পরিবার এবং বঙ্গসংস্কৃতি ।... প্রবন্ধ ।। সুধীন্দ্রনাথ দত্ত: কাব্যের দার্শনিক ও ন... কবিতায় সেতুবন্ধন (তৃতীয় অংশ) শিল্পবিপ্লবোত্তর কাল... রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর বিদ্রোহী প্রেমের কবিতা: ... কবিতা ।। এই মন ভালো নেই দিনে ।। সুপ্রভাত মেট্যা কবিতা ।। জোছনা আলোর স্বপ্ন ।। তুষার ভট্টাচাৰ্য কবিতা ।। নিঃস্ব হবো ।। লালন চাঁদ কবিতা ।। ভালোলাগা  ।। আজিজ উন নেসা  গল্প ।। স্বীকারোক্তি ।। চন্দন দাশগুপ্ত কবিতা ।। শীতের দিন ।। প্রশান্ত কুমার মন্ডল কবিতা ।। শীতকাল ।। অঙ্কিতা পাল নাসির ওয়াদেনের দুটি কবিতা ভূতের লেখা ছড়া ।। বদরুল বোরহান কবিতা ।। ব্যস্ত ।। আলাপন রায় চৌধুরী ছোটগল্প ।। লম্বুর স্বপ্নপূরণ ।। পরেশ চন্দ্র মাহাত কবিতা ।। সৎকার ।। সুমিত মোদক কবিতা।। শীত বৈচিত্র্য ।। সুমিতা চৌধুরী পুস্তক-আলোচনা ।। নিউটনের আপেল ও প্রেমিকা ।। অরবিন্... গল্প।। শান্তির পথে …...।। বন্দনা সেনগুপ্ত কবিতা ।। মা...

সূচিপত্র ।। ৮৯তম সংখ্যা ।। শ্রাবণ ১৪৩২ জুলাই ২০২৫

সূচিপত্র   প্রবন্ধ ।। বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় ।। মাখনলাল প্রধান প্রবন্ধ ।। শ্রমিকের অধিকার ।। চন্দন দাশগুপ্ত প্রবন্ধ ।। ভিনগ্রহীদের সন্ধানে ।। শ্যামল হুদাতী প্রবন্ধ ।। নারীমর্যাদা ও অধিকার ।। হিমাদ্রি শেখর দাস কবিতা ।। মশালের রং তুলি ।। তূণীর আচার্য কবিতা ।। জললিপি ।। রূপক চট্টোপাধ্যায় গুচ্ছকবিতা || শিশির আজম নিবন্ধ ।। পূনর্জন্ম ।। শংকর ব্রহ্ম মুক্তভাবনা ।। কোলাহল তো বারণ হলো ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত গল্প ।। গানের হাড় ।। শুভজিৎ দত্তগুপ্ত গল্প ।। শিকড়ের খোঁজে ।। সমীর কুমার দত্ত সুপ্রভাত মেট্যার পাঁচটি কবিতা গ্রন্থ-আলোচনা ।। আবদুস সালামের কাব্যগ্রন্থ 'অলীক রঙের বিশ্বাস'।। তৈমুর খান অণুগল্প ।। হরিবোল বুড়ো ।। সুমিত মোদক রম্যরচনা ।। গোয়েন্দা গোলাপচন্দ আর প্রেমের ভুল ঠিকানা ।। রাজদীপ মজুমদার দুটি গল্প ।। মুহাম্মদ ফজলুল হক দুটি কবিতা ।। তীর্থঙ্কর সুমিত কবিতা ।। মেঘমুক্তি ।। বন্দনা পাত্র কবিতা ।। ব্যবচ্ছিন্ন শরীর ।। কৌশিক চক্রবর্ত্তী কবিতা ।। শমনচিহ্ন ।। দীপঙ্কর সরকার কবিতা ।। ভালোবাসার দাগ ।। জয়শ্রী ব্যানার্জী কবিতা ।। ফণীমনসা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ছড়া ।। আজও যদি ।। বদ্রীন...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮২তম সংখ্যা ।। পৌষ ১৪৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

  সূচিপত্র অন্নদাশঙ্কর রায়ের সাহিত্য: সমাজের আয়না ।। বিচিত্র কুমার প্রবন্ধ ।। বই হাতিয়ার ।। শ্যামল হুদাতী কবিতায় সংস্কৃতায়ন (দ্বিতীয় ভাগ ) ।। রণেশ রায় পুস্তক-আলোচনা ।। অরবিন্দ পুরকাইত কবিতা ।। লেগে থাকা রোদ্দুরের ঘ্রাণের মতো ।। জয়শ্রী ব্যানার্জি কবিতা ।। ভুল ।। সুপ্রভাত মেট্যা কবিতা ।। উন্মেষ ।। বিশ্বজিৎ সেনগুপ্ত কবিতা ।। গার্হস্থ্য ।। বিবেকানন্দ নস্কর একগুচ্ছ বিজয়ের কবিতা ।। বিচিত্র কুমার গল্প ।। পোষ্য ভূত ।। সমীর কুমার দত্ত কবিতা ।। আশপাশ ।। প্রতীক মিত্র কবিতা ।। মেঘ ।। তীর্থঙ্কর সুমিত অণুগল্প ।। বংশীবদনের সুখদুঃখ ।। দীনেশ সরকার কবিতা ।। গভীর রাত ।। সুনন্দ মন্ডল তিনটি কবিতা ।। সুশান্ত সেন ভালোবাসার বাসা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত অণুগল্প ।। শিক্ষকের সম্মান ।। মিঠুন মুখার্জী কবিতা।। প্রশ্ন ।। জীবন সরখেল কবিতা ।।ক্ষরিত সে পথ ।। রহিত ঘোষাল কবিতা ।। রক্ত দিয়ে কেনা ।। মুহাম্মদ মুকুল মিয়া কবিতা ।। কংক্রিট ।। আলাপন রায় চৌধুরী ছড়া ।। শীত নেমেছে ।। রঞ্জন কুমার মণ্ডল কবিতা ।। কিছু শব্দ ।। সমীর কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় কবিতা ।। শীতের নগ্নতা ।। রানা জামান কবিতা ।। পথ চলা ।। পাভেল আমান বেদ পু...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো,  তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) য...

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ৮৬তম সংখ্যা ।। বৈশাখ ১৪৩২ এপ্রিল ২০২৫

সম্পাদকীয় এই সংখ্যাটি বাংলা নববর্ষ বিষয়ক সংখ্যা। নৱৰ্ষকেন্দ্রিক বহু তথ্যপূর্ণ লেখা এই সংখ্যাটিকে সমৃদ্ধ করেছে। বাংলা নববর্ষ উদযাপনের ইতিহাস, রীতিনীতি, উৎসব, পার্বন, লোকাচার, রূপান্তর বহুবিধ বিষয় প্রকাশিত হয়েছে এই সংখ্যার লেখাগুলিতে। এই সংখ্যার বাছাই কিছু লেখার সঙ্গে আগামীতে আরও কিছু লেখা সংযুক্ত করে বাংলা নববর্ষ বিষয়ক একটি মুদ্রিত সংখ্যা প্রকাশ করার ইচ্ছে রইল।  সকলকে নববর্ষের আন্তরিক শুভকামনা জানাই। উৎসবে আনন্দে থাকুন, হানাহানিতে নয়। ধর্ম-ব্যবসায়ীদের চক্রান্ত ব্যর্থ করে সহনাগরিকের পাশে থাকুন। মনে রাখুন, ধর্মকে মানুষই সৃষ্টি করেছে। ঈশ্বর আল্লা গড ইত্যাদির জন্মদাতা মানুষই। মানুষকে ভালোবাসুন। মানুষের পাশে থাকুন।  নিরাশাহরণ নস্কর  সম্পাদক, নবপ্রভাত।  সূচিপত্র প্রবন্ধ-নিবন্ধ-স্মৃতিকথা পয়লা বৈশাখ ।। সিদ্ধার্থ সিংহ নববর্ষকেন্দ্রিক মেলা, পার্বন, উত্সব, লোকাচার ।। সবিতা রায় বিশ্বাস নববর্ষ আবাহন ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে এবং বিভিন্ন দেশে ।। তুষার ভট্টাচার্য নববর্ষের সেকাল ও একাল ।। হিমাদ্রি শেখর দাস নববর্ষের হাল-হকিকৎ ।। শংকর ব্রহ্ম বোশেখি বাঙালি নাকি পোশাকি বাঙালি? ।। দিব্যেন্দু...

প্রবন্ধ ।। বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় ।। মাখনলাল প্রধান

বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় মাখনলাল প্রধান বাংলার শিল্প-সংস্কৃতির জগতে যাত্রা শিল্প তথা নাট‍্যশিল্পে মড়ক নেমে এসেছে । যাত্রা শিল্পের মড়কে শুধু কোভিড নয় তার বহুপূর্ব থেকেই অর্থনৈতিক বিপর্যয় , শিক্ষাক্ষেত্রে বন্ধ‍্যাত্ব এবং গ্ৰাম বাংলার পটপরিবর্তন শেষ পেরেক ঠুকে দিয়েছে। যাত্রা-শিল্পের লীলাভূমি ছিল গ্ৰাম বাংলা। গ্ৰামে প্রচুর যাত্রাপালা হত নানা উৎসবকে কেন্দ্র করে । জমিদারি ব‍্যবস্থা লুপ্ত হওয়ার পর গ্ৰামীণ মানুষের উদ‍্যোগে শীতলা পূজা,  কালীপূজা, দুর্গাপূজা, কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা, চড়ক ইত‍্যাদিকে উপলক্ষ‍্য করে যাত্রাপালার আয়োজন না হলে কেমন যেন ম‍্যাড়ম‍্যাড়ে লাগতো। সেই সঙ্গে কলকাতার বড়বড় কোম্পানির যাত্রাপালা ঘটা করে, টিকিট সেল করে হত মাঠে। খুব বড় মাপের খেলার মাঠ যেখানে ছিল না সেখানে ধানের মাঠ নেওয়া হত ‌। ত্রিশ-চল্লিশ হাজার মানুষ দেখতে আসত। স্পেশাল বাস পাঠাত  আয়োজক কর্তৃপক্ষ। বিনা ভাড়ায় বাসে যাতায়াত করত যাত্রার দর্শকেরা। কিন্তু বিকল্প ধানচাষ শুরু হলে জমিগুলো সময় মতো ফাঁকা পাওয়া গেল না । প্রথম দিকে ব‍্যাপকহারে ধান শুরু না হওয়ায় খুব একটা অসুবিধা হত না। বহুক্ষেত্রে  ধান কা...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। নবপ্রভাত ৮৫ ।। চৈত্র ১৪৩১ মার্চ ২০২৫

  সূচিপত্র নিবন্ধ ।। মরিয়ম মির্জাখানি: এক অনন্য গণিতসূর্য ।। ... নিবন্ধ ।। নারী দিবসে যা ভাবা উচিত ।। বিশ্বনাথ পাল প্রবন্ধ ।। প্রাচীনকাল থেকে নারীরা অবহেলিত, বঞ্চিত,... নিবন্ধ ।। আমার চোখে আদর্শ নারী ।। জয়শ্রী বন্দ্... ফিচার।। এই মুহূর্তে বাংলা সাহিত্যে নারীদের লেখালেখ... আফ্রিকার লোককথা ।। করোটিকে বিয়ে করা অবাধ্য মেয়েটি ... ছোটগল্প ।। মানবী ।। ভুবনেশ্বর মন্ডল নিবন্ধ ।। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে অন্যতম নারী মু... নিবন্ধ ।। প্রিয় মহিলা সাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবী ।। ... গল্প ।। উই ওয়ান্ট জাস্টিস ।। রবীন বসু প্রবন্ধ ।। নিপীড়িতা ।। শ্যামল হুদাতী ফিচার ।। রমণী রতন ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত প্রবন্ধ ।। নারী সমাজ : তখন-এখন ।। তপন মাইতি নিবন্ধ ।। বহমান কালের ধারায় নারী ।। দীপক পাল গল্প ।। আমার দুর্গা ।। অঞ্জনা গোড়িয়া (সাউ) গল্প ।। যোগ্য জবাব ।। সমীর কুমার দত্ত ছোটগল্প ।। আমি দুর্গাকে দেখেছি।। চন্দন দাশগুপ্ত গল্প ।। সম্পর্ক ।। গৌতম সমাজদার কবিতা।। নারী মানে ।। গোবিন্দ মোদক কবিতা।। নারী ।। সমর আচার্য্য ছড়া ।। নারী অসামান্যা ।। সৌমিত্র মজুমদার কবিতা ।। নারী দিবসে ।। বিবেকানন্দ নস্কর কবিতা ।। না...

প্রবন্ধ ।। ভিনগ্রহীদের সন্ধানে ।। শ্যামল হুদাতী

ভিনগ্রহীদের সন্ধানে  শ্যামল হুদাতী  ইতিহাসের শুরু থেকে বারবার মানুষকে একটা প্রশ্ন কুঁড়ে কুঁড়ে খায় – এই মহাবিশ্বে আমরা কি একা? পৃথিবীর মতো আরও গ্রহ রয়েছে, যেখানে মানুষের মতো বুদ্ধিমান প্রাণীরা বাস করে – এই সম্ভাবনা বরাবর মানুষকে মুগ্ধ করেছে। আমাদের প্রত্যেকের জীবনের কখনও না কখনও এই ভাবনা এসেছে। দীর্ঘ কয়েক দশকের গবেষণার পরও, এই বিষয়ে কোনও নিশ্চয়তা দিতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। জেমস ওয়েব মহাকাশ টেলিস্কোপ, বহু দূরের এমন কিছু গ্রহের সন্ধান দিয়েছে, যেগুলিতে প্রাণ থাকতেই পারে। তবে, নিশ্চিত কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে, আমেরিকার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাম্প্রতিক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, ভিনগ্রহীদের খুঁজতে বহু দূরে যাওয়ার কোনও দরকার নেই। তারা এই পৃথিবীতেই মানুষের ছদ্মবেশে মানুষের মধ্যেই বসবাস করতে পারে। আমরা ভিনগ্রহীদের যেমন কল্পনা করি, এরা তার থেকে আলাদা। এরা অনেকটাই, দেবদূতদের মতো। মানব জগতের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক প্রযুক্তিগত নয়, বরং জাদুকরি। মহাকাশে সৌরজগতের গ্রহ পৃথিবী ছাড়া অন্য কোথায় প্রাণ রয়েছে কি না তা নিয়ে চলছে বিস্তর গবেষণা। একই সঙ্গে পৃথিবী ছাড়া অন্য কোনো গ্রহে মানুষ বসবাস ক...

মাসের বাছাই

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬

  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠালে  অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে হলে ভালো। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # ...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯২তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩২ অক্টোবর ২০২৫

—: সম্পাদকীয় দপ্তর থেকে :— এই সংখ্যার জন্য লেখা এসেছিল প্রায় ১৮০টা। কিন্তু গুণগত মানে দুর্বল লেখার সংখ্যা বহু। আমরা নবপ্রভাতে নতুনদের কথা ভেবে বেশ কিছু দুর্বল লেখাও রাখি। কিন্তু সবসময় একই লোকের দুর্বল লেখা প্রকাশ করা অনুচিত বলে মনে করি। শেষ পর্যন্ত ৯৯ জনের লেখা রাখা গেল। যাদের লেখা প্রকাশিত হল না, তারা লেখাগুলি অন্য যেখানে খুশি পাঠাতে পারেন। বিশেষ কারণে এই সংখ্যার মুদ্রিত সংস্করণ প্রকাশিত হচ্ছে না। আমরা দুঃখিত। তবে মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি শীঘ্রই আসছে। সঙ্গে থাকুন। সকলকে উৎসবমুখর বর্ণময় শুভেচ্ছাসহ— —নিরাশাহরণ নস্কর, সম্পাদক, নবপ্রভাত। অনুরোধ : প্রকাশিত লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন, ছবি/স্ক্রীনশট নয়।  == সূচিপত্র == পড়া-লেখার ইতিহাস অনুসন্ধান।। তপন তরফদার উৎসব : মানুষের চিরন্তন আত্মপ্রকাশ।। কৃশানু ব্যানার্জি বাংলা : সভ্যতা ও সংস্কৃতির জন্মভূমি।। শ্যামল হুদাতী সমুদ্র আর অস্তিত্ব ।। সুব্রত চৌধুরী রাজা ছিলেন জুবিন গর্গ ।। গঙ্গা 'অনু'   আদ্যাশক্তি মহামায়ার বাংলা বারো মাসের বারো রূপ ।। অর্হণ জানা মেধাদাদুর আসর ।। রণেশ রায় বৈজ্ঞানিক মা...

দিদৃক্ষা ।। রাজেশ কে. চক্রবর্ত্তী

  দিদৃক্ষা রাজেশ কে. চক্রবর্ত্তী 'কাল একবার দেখা হতে পারে?' দশমীর দুপুরে খাটে আধশোয়া হয়ে নিজের ফোনটা ঘাঁটছিল দেবমাল্য; হোয়াট্‌সঅ্যাপের সার্চ বক্সে  র‍্যান্ডম সিক্যুয়েন্সে ক'খানা ডিজিট ইনপুট করতেই বিস্মৃতির অতল থেকে অপ্রত্যাশিতভাবে যে নামটা স্ক্রিনের সারফেসে ভেসে উঠল, এককালে দেবমাল্যের প্রায়োরিটি লিস্টে সবথেকে ওপরে পিন্‌ করা থাকতো এই অ্যাকাউন্টটা। 'অহনা দাশগুপ্ত'—গ্রেয়েড-আউট ডিপিটার ডানদিকে, নামটার তলায় নিস্প্রভ হরফে ভেসে থাকা ওর এই লাস্ট মেসেজটা বেশ ক'বছরের পুরনো, কিন্তু দেবমাল্যর স্মৃতির প্যান্ডোরা বাক্সটি উলটে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল। আরেকবার আপাদমস্তক শিহরিত হয় সে। প্রোফাইলটা খুলে ওপরে-নীচে স্ক্রল্‌ করে দেখে, ওদের পুরনো চ্যাটগুলো তেমনি আড়ষ্ট হয়ে পড়ে আছে, ওর মেসেজগুলোর পাশে ডাবল টিকগুলো এখনও জাজ্বল্যমান সবুজে ছোপানো, যেন এইমাত্র 'সিন্‌' করে রেখেছে অহনা! যেন এখুনি আবার হাত বোলালেই অহনা এসে খানিকটা রাগত ভঙ্গিতে চ্যাট করতে লেগে যাবে। দেবমাল্যের বুক ছাপিয়ে একটা নীরব দীর্ঘশ্বাস উঠে আসে! ছুটির এই আমেজটা লক্ষ্মীপুজো অব্দি গড়াবে—অফিস খুললেই তো আবার দমফাটা ব্য...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯১তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পাদকীয় দপ্তর থেকে এই সংখ্যায়  'শিক্ষা ও শিক্ষক' বিষয়ক বেশ কিছু লেখার পাশাপাশি রয়েছে বিচিত্র বিষয়ের আরও কিছু লেখা। সব মিলিয়ে সংখ্যাটি আপনাদের সমৃদ্ধ করবে, আপ্লুত করবে — এ বিষয়ে আমরা আশাবাদী। আপনাদের মতামত অবশ্যই জানাবেন। আমরা প্রতীক্ষিত।            আগামী অক্টোবর ২০২৫ সংখ্যা 'উৎসব সংখ্যা' হিসাবে প্রকাশিত হবে। ওয়েব সংখ্যার পাশাপাশি নির্বাচিত লেখাগুলি নিয়ে একটি pdf এবং তার মুদ্রিত সংস্করণও প্রকাশিত হবে। তাই অপ্রকাশিত ভালো লেখা পাঠান। বিশেষ কোনও বিষয় নেই। প্রবন্ধ-নিবন্ধ-ফিচার ২০০০ শব্দ, গল্প ১২০০ শব্দ, অণুগল্প ৫০০ শব্দ, কবিতা-ছড়া ২৪ লাইনের মধ্যে হলে ভালো। ইমেলঃ nabapravatblog@gmail.com           বিস্তারিত বিজ্ঞপ্তি আসবে। সামাজিক মাধ্যমে আমদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন। সময় মতো সব সংবাদ পেয়ে যাবেন।  শারদ উৎসবের দিনগুলি সকলের আনন্দে কাটুক এই কামনা করি। —নিরাশাহরণ নস্কর সম্পাদক: নবপ্রভাত মোঃ ৯৪৩৩৩৯৩৫৫৬ Whatsapp Group:  https://chat.whatsapp.com/ AIpj98JKbloFSpeqMcpr6j Facebook Page:  https://www.facebook.com/ share...

বিদায়ের স্রোত ।। চয়ন মন্ডল

  বিদায়ের স্রোত চয়ন মন্ডল "বিজয়া দশমী—আনন্দের দিন, কারও কাছে যা হয়ে উঠল চিরন্তন বিদায়।" আজ বিজয়া দশমী। শিউলি ফুলের গন্ধে ভোরটা অন্যরকম। পাড়ার প্যান্ডেলে অদ্ভুত এক কোলাহল—মায়ের বিদায় যে আজ। শঙ্খধ্বনি, ঢাকের বাজনা আর উলুধ্বনিতে গমগম করছে চারদিক। একদিকে মা দুর্গার বিদায়ের বেদনা, অন্যদিকে আনন্দ ও মিলনমেলা। সারা বছরের অপেক্ষা শেষে এই দিনটিতে প্যান্ডেল ভরে উঠেছে মানুষের ভিড়ে। সকালের পূজার্চনা শেষ হতেই শুরু হয়েছে সিঁদুর খেলা। মহিলারা মায়ের প্রতিমাকে সিঁদুর পরিয়ে একে অপরের কপালে, গালে রাঙিয়ে দিচ্ছেন। ঢাকের তালে আর শাঁখ বাজনার আবেশে ভেসে যাচ্ছে পাড়া। শুরু হয়েছে প্রতিমা বিসর্জনের প্রস্তুতি। কিন্তু এসবের মধ্যে নেই অনুরাধা। কেউ তার বা মিনির খোঁজ রাখেনি। মুখার্জিদের দোতলা বাড়ির কোণের ঘরে বসে সে চোখের জল ফেলছে। সবার বাড়িতে আলোর রোশনাই, ভোগের গন্ধ, হাসি—শুধু তাদের ঘরটিতে নিস্তব্ধতা। গতবছর এই দিনেই তো অন্যরকম ছিল সবকিছু। অনুরাধা, সুজয় আর তাদের তিন বছরের মেয়ে মিনি পাড়ার প্যান্ডেলে ঢাকের তালে নেচেছিল, সিঁদুর খেলায় রঙে ভেসেছিল। বিকেলের দিকে প্রতিমা বিসর্জনের মিছিলে শামিল ...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো,  তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) য...

আদ্যাশক্তি মহামায়ার বাংলা বারো মাসের বারো রূপ ।। অর্হণ জানা

  মহাশক্তি আসলে এক এবং অদ্বিতীয়  অর্হণ জানা হিন্দুধর্ম অনুযায়ী জগতের স্রষ্টা ব্রহ্ম, আবার তিনিই পুরুষ ও প্রকৃতিতে দ্বিধাবিভক্ত। পুরুষ পুংশক্তি, আর নারীশক্তি হল প্রকৃতি। আর এই অপরূপ প্রকৃতিই পরমব্রহ্মের শক্তি।  হিন্দু শাস্ত্রমতে, এই নারী শক্তিই আদিশক্তি বা আদ্যাশক্তি মহামায়া। শক্তির মূল উৎস শক্তিমান ব্রহ্ম, এবং এই মাতৃশক্তি তাঁরই প্রকাশ।  সে জন্য তাঁকে বলা হয় ব্রহ্মারূপিণী। হিন্দু শাক্ত অনুসারীগণ তাঁকে বিভিন্ন নামে পুজো করেন। পরমাশক্তি, মহাশক্তি, মহাগৌরী, মহাদেবী, মহালক্ষ্মী, চামুণ্ডা, কালী, তারা, দুর্গা, জগদম্বা, সীতা, রাধা, ইত্যাদি।  আদিশক্তির বিভিন্ন রূপ হিন্দু পুরাণে আদ্যাশক্তি বা মহাশক্তির বিভিন্ন রূপের বর্ণনা পাওয়া যায়। তার মধ্যে বাংলা বারো মাসের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে আদিশক্তির বারোটি রূপ বাঙালি শাক্ত অনুসারীদের মধ্যে প্রচলিত আছে। এগুলি হল--- গন্ধেশ্বরী, ফলহারিণী, কামাক্ষ্যা, শাকম্ভরী, পার্বতী, দুর্গা, জগদ্ধাত্রী, কাত্যায়নী, পৌষকালী, রটন্তীকালী, সঙ্কটনাশিনী ও বাসন্তী। এখানে সেই বারোটি রূপ সম্পর্কে আলোচনা করা হল। গন্ধেশ্বরী  বাং...

জুবিন গর্গ স্মরণে ।। আজিজ উন নেসা

জুবিন গর্গ স্মরণে  আজিজ উন নেসা  অনেককিছু দিয়ে গেলেন আমাদের অজস্র গান, অসংখ্য স্মৃতি ছোটদের বড় হয়ে ওঠাটাকে স্মৃতি দিয়ে সাজিয়ে দিয়ে গেলেন..... এত করুণ রস, নিজেকে উজাড় করে....   কী যেন একটা চাপা কান্না, কী আহাজারি হাহাকার ওঁর গায়কীতে! বুকে জমাট বাঁধা কষ্টগুলো অবলম্বন পায় সূক্ষ্ম ছিদ্র দিয়ে ঢোকে সপ্তবর্ণের আলো  মুক্তির পথ খোঁজে জমাট বাঁধা কষ্ট শীতল ক্ষীণ ধারা প্রবাহিত হয় ধীরে ধীরে অন্তঃসলীলা উৎকীর্ণ সুমধুর ঝর্ণায়..... "ও বন্ধু রে......." "পিয়া রে   পিয়া রে....." ============ Ajij Un Nesa  9 Circus Range, Beck bagan  Kolkata- 19

গুচ্ছকবিতা || শিশির আজম

  গুচ্ছকবিতা || শিশির আজম হুইসেল (মুরাকামি থেকে অনুপ্রাণিত) ♦ 'গভীর রাতে একটা হুইসেল কতটা গভীর হতে পারে তুমি কল্পনাও করতে পারো না,' ছেলেটা বললো, 'আশ্চর্য ঐ হুইসেলের মতো আমি ভালবাসি তোমাকে।' কিন্তু গভীর রাতে অন্ধকারে কখনও তো ঘুম ভেঙে যায়নি মেয়েটার, কখনও ও বিচ্ছিন্ন আর একা হয়ে যায়নি। ও কীভাবে অনুভব করবে গভীর রাতে ট্রেনের হুইসেল কতটা গভীর! নিউজ এজেন্সি ♦ একসময় আমরা খবর শুনতাম এখন দেখি স্বীকার করতে হবে খবর শোনার চেয়ে দেখার আনন্দ বেশি আলাদা উত্তেজনা নিউজ এজেন্সিগুলো এব্যাপারে তৎপর আর প্রতিযোগিতাপূর্ণ কোনটা নিউজ সেটা ওরাই ঠিক করে যেটা ওদের দরকার আর সেটাই আমাদের দেখানো হয় ধারাবাহিকভাবে সুচারু জ্যামিতিকতায় বিভিন্ন পদ মিশিয়ে খাওয়ানো হয় নতুন বাস্তবতা নির্মাণে যে বাস্তবতায় জায়গা নেই আমাদের ইতিহাস অন্বেষা স্বাধীনতার সমৃদ্ধি আর স্বাধীনতার কথা বলেই ওরা আমার ক্ষেতখামার পাহাড় আর নদীর দখল নিয়েছে তাহলে টিভিতে যে হাসিখুশি প্রাণবন্ত আমাদেরকে দেখানো হয় ওরা কারা এই প্রশ্ন করো নিজের কাছে আগুন নিয়ে খেলা ♦ আজও পুকুরে ছিপ ফেলে বসবো আমি ধীরে চুপ সূর্য আমার ঘাড়ে শ্বাস ফেলবে সারারাত ঘরের ভেতর ল্যাং...

শেষ বিকেলের আলো ।। সৈকত প্রসাদ রায়

  শেষ বিকেলের আলো সৈকত প্রসাদ রায় রানাঘাট শহরের প্রান্তে ছোট্ট এক পাড়া বিশ্বাসপাড়া। সেই পাড়ার পুরোনো ভাঙাচোরা বাড়িটায় থাকেন পুষ্পরাণী ভট্টাচার্য— বয়স পঁয়ষট্টির কোঠায়। সবাই তাকে "পুষ্পদি" বলেই চেনে। একসময় প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতা করতেন, এখন অবসর নিয়েছেন। প্রতিদিন বিকেলে পুষ্পদি বারান্দায় বসে চা খান। ছোট একটা টেবিল, কয়েকটা পুরোনো বই, আর একখানা নীল কাঁচের ফুলদানি — তার নিত্যসঙ্গী। বারান্দার সামনেই একটা গলি, যেখান দিয়ে প্রতিদিনই স্কুল ছুটির পরে বাচ্চারা হইচই করে ছুটে যায়। পুষ্পদির একমাত্র ছেলে অনিরুদ্ধ — কলকাতায় চাকরি করে। ছেলেটা আধুনিক, নিজের সংসার আছে, স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ব্যস্ত। বছরে হয়তো একবার আসে, তাও কিছুক্ষণ বসে আবার চলে যায়। পুষ্পদি মুখে কিছু বলেন না, কিন্তু বুকের ভেতরে একটা কষ্ট জমে থাকে। সেই বিকেলটা অন্যরকম ছিল। আকাশে ধুলো, গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা। হঠাৎ পুষ্পদির চোখে পড়ে — রাস্তায় এক কিশোর বসে আছে। বয়স বারো-তেরোর বেশি নয়। মলিন জামা, পায়ে ছেঁড়া চটি। ছেলেটা একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে পুষ্পদির বাড়ির গেটে ঝুলে থাকা পুরোনো নোটিশবোর্ডটার দিকে, যেখানে একসময় লেখা ছিল — "পুষ্পরাণী ভ...