Skip to main content

নিবন্ধ ।। নোবেলের সাতকাহন ।। পুলকরঞ্জন চক্রবর্তী

nabapravat

নোবেলের সাত কাহন

পুলকরঞ্জন চক্রবর্তী 


এক.

নোবেল পুরষ্কার নিঃসেন্দহে বিশ্বের অন্যতম একটি সম্মানিত পুরষ্কার । প্রতি বছর অক্টোবর মাস এলেই প্রথম শ্রেণীর বিজ্ঞানীদের সাথে সাধারণ মানুষও উদগ্রীব হয়ে থাকেন নোবেল পুরস্কারের ঘোষণার দিকে । পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন , চিকিৎসার সঙ্গে সাহিত্য, শান্তি এবং অর্থনীতির মতো ছ'টি ক্ষেত্রে অসাধারণ অবদান রেখেছেন এমন ব্যক্তি ও সংস্থাকে এই পুরস্কার দেওয়ার কথা ঘোষিত হয় । ডিনামাইটের আবিষ্কারক আলফ্রেড নোবেলের স্মরণে প্রতিষ্ঠিত নোবেল পুরষ্কার মানব কৃতিত্বের সর্বোচ্চ সম্মানের প্রতীক হিসেবেই স্বীকৃতি পেয়েছে ।
এই পুরষ্কারগুলি এমন ব্যক্তিদের স্বীকৃতি দেয় যাদের কাজ মানুষের জীবন আরও উন্নত ও সুন্দর করে তোলে । বছরের পর বছর ধরে, নোবেল পুরষ্কারগুলি শ্রেষ্ঠত্ব,ও উদ্ভাবনের গুরুত্ব মানুষকে মনে করিয়ে দেয় নিষ্ঠা, সৃজনশীলতা এবং করুণা বিশ্বকে আরও ভালো কিছুর জন্য পরিবর্তন করতে পারে। এই ভাবনা থেকেই নোবেল পুরস্কার হয়ে উঠেছে সবচেয়ে অর্থবহ বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতিগুলির মধ্যে অন্যতম একটি পুরস্কার ।
নোবেল পুরস্কার কেবলমাত্র বিজ্ঞান, সাহিত্য, শান্তি এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের অগ্রগতিকেই উৎসাহিত করে না, এই পুরষ্কার অন্যদেরও মানবতার সেবা করার জন্য অনুপ্রাণিত করে। আজও , তাই নোবেল পুরষ্কারকে "বিজ্ঞানের এভারেস্ট " হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে ।
আলফ্রেড নোবেল তার বেশিরভাগ সম্পদই , নোবেল পুরস্কারের জন্য রেখে গিয়েছিলেন। তিনি নিশ্চিত করতে চেয়েছিলেন এই অর্থ যেন মানবজাতির সর্বশ্রেষ্ঠ কল্যাণের জন্য প্রদান করা হয়। তাঁর ইচ্ছা অনুসারে, তাঁর মৃত্যুর পরে এই পুরস্কার দেওয়ার প্রচলন শুরু হয়েছিল ।

দুই .

তাঁর পুরো নাম ছিল আলফ্রেড বারনাড নোবেল। ১৮৩৩ সালের ২১শে অক্টোবর সুইডেনের স্টকহোমে জন্ম হয়েছিল আলফ্রেডের । নোবেলের দাদা ছিলেন একজন সেনা সার্জেন এবং তার বাবা ইমানুয়েল টেকনিক্যাল স্কুলে পড়াশোনা করেছিলেন।
সেন্ট পিটাসবার্গে বিজ্ঞানের পাঠ শেষ করে আলফ্রেড প্রথমে চলে গিয়েছিলেন আমেরিকায় । পরে, উচ্চশিক্ষার জন্য তিনি যান ফ্রান্সে র প্যারিসে । প্যারিসে থাকাকালীন তাঁর সঙ্গে আলাপ হয় বিজ্ঞানী আস্কানিয়ো সোবেরোর । সোবেরোর ততদিনে নাইট্রোগ্লিসারিন আবিষ্কার করে ফেলেছেন । নাইট্রোগ্লিসারিনের ব্যবহারগত দিক নিয়ে গবেষণা করছিলেন তিনি । আলফ্রেড সেখানে থেকে সোবেরোর কাছে নাইট্রোগ্লিসারিনের বিজ্ঞানটি ভাল করে বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করলেন।
১৮৫২-তে তিনি ফিরে এলেন পিটার্সবার্গে , নিজের বাসভূমিতে । সেখানে ফিরেই তিনি যোগ দিলেন পারিবারিক অস্ত্রব্যবসায়। ব্যবসায় যোগ দিলেন ঠিকই, কিন্তু নাইট্রোগ্লিসারিন তাঁর মাথা থেকে সরে যায়নি । অস্ত্রের ব্যবসার পাশাপাশি নাইট্রোগ্লিসারিন নিয়ে বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার কাজটিও শুরু করলেন সমান তালে । সেই সময়ে সঙ্গে পেলেন ভাই এমিলকে।
১৮৬৩ সালে নাইট্রোগ্লিসারিনের সঙ্গে বারুদ মিশিয়ে বানিয়ে ফেললেন ব্লাস্টিং অয়েল। বিস্ফোরণ ঘটানোর জন্য বানানো হলো ফিউজ়যুক্ত ব্লাস্টিং ক্যাপ। ব্লাস্টিং অয়েল ও ব্লাস্টিং ক্যাপ দুটোরই পেটেন্ট নিয়ে নিলেন তিনি । ব্যবসা চলছিল ভালোই কিন্তু , যুদ্ধ শেষে সব ব্যাঙ্ক একসাথে দেউলিয়া হয়ে যাওয়ায় অর্থের অভাবে তাদের ব্যবসাটি বন্ধ হয়ে যায় ।
পিটার্সবার্গের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে পুরো পরিবার নিয়ে আলফ্রড চলে আসেন স্টকহলমে। সেখানে আলফ্রেড আর তাঁর ভাই এমিল পুনরায় নাইট্রোগ্লিসারিন নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে শুরু করলেন । সেই পরীক্ষা চলাকালে একদিন এক ভয়ংকর দুর্ঘটনা ঘটে যায় । সেই দুর্ঘটনায় মারা যায় আলফ্রেডের ভাই এমিল। কিছুদিন পরে মারা গেলেন বাবাও । মাত্র ৩১বছর বয়সে পরিবারের দায়িত্ব নিতে হলো আলফ্রেডকে। ততদিনে তাঁর ব্লাস্টিং অয়েল বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে, চার দিকে চাহিদা বেড়েই চলেছে । সেই অতিরিক্ত চাহিদা মেটাতে জার্মানি ও স্কটল্যান্ডে আরও দুটি কারখানা খুললেন আলফ্রেড। কিন্তু সবচেয়ে মুশকিল ছিল সুরক্ষার বিষয়টি । গরম কিছুর সংস্পর্শে এলেই বা ধাক্কা লাগলেই নাইট্রোগ্লিসারিনে বিস্ফোরণ ঘটে প্রচুর শ্রমিক মারা যেতে লাগলেন । সবচেয়ে ভয়ংকর দুর্ঘটনাটি ঘটে গেল ১৮৬৬ সালে , জার্মানির ক্রুমেলে। এই দুর্ঘটনা পরে কারখানায় মৃত্যুমিছিল চিরতরে তাঁর জীবন বদলে দিল ।
ক্রুমেলের দুর্ঘটনাস্থলে পড়ে থাকা সছিদ্র বালির স্তুপ ঘুরিয়ে দিল আলফ্রেডের জীবনের মোড়
আদি প্রাণী ডায়াটমের দেহাবশেষে নাইট্রোগ্লিসারিন ভরে, এই ছিদ্রযুক্ত বালির আবরন দিয়ে ঢেকে দেওয়ার কথা ভাবলেন তিনি । তাঁর মনে হলো এমন জিনিস ধাক্কা খেলে যেমন সহজে ফাটবে না, তেমনই গরম হলেও সহজে বিস্ফোরণ ঘটবে না । এটা ব্লাস্টিং ক্যাপ দিয়ে ডিটোনেট করে ফাটানোও যাবে সহজে ।
১৮৬৭ সালে নতুন এই বিস্ফোরকটির পেটেন্ট নিলেন আলফ্রেড। গ্রিক শব্দ 'ডুনামিস' মানে প্রবল শক্তি। সেখান থেকেই এই নতুন আবিষ্কারের তিনি নাম দিলেন
' ডিনামাইট ' ।
সেই সময়ে পাথরে ফুটো করতে নিউম্যাটিক ড্রিলের আবিষ্কার বড় ভূমিকা নিয়েছে । সেই ফুটোকে ফাটিয়ে চৌচির করার সহজ পথ নিয়ে এল আলফ্রেডের 'ডিনামাইট'।শুধু পাহাড় নয়, বড় বড় বাড়ি মুহূর্তে ভেঙে দিতে ডিনামাইটের জুড়ি ছিল না। অল্প দিনেই ডিনামাইট হয়ে ওঠে একটি জনপ্রিয় বিস্ফোরক।

তিন .

১৮৮৮ সালের ১২ জুন। সকালের সংবাদপত্রে বড় বড় হরফে নিজের নাম দেখে চমকে উঠলেন আলফ্রেড । সেদিন কাগজে তিনি দেখলেন তাঁরই মৃত্যুসংবাদ ছাপা হয়েছে কাগজের প্রথম পাতায় । চমকে উঠলেন তিনি । শিরোনামে লেখা ছিল 'মৃত্যু নিয়ে ব্যবসা করা ব্যবসায়ীর মৃত্যু' । আসলে , পত্রিকাটি ভুল করে আলফ্রেডের ভাইয়ের মৃত্যুর সঙ্গে তাঁকে গুলিয়ে ফেলেছিল। ভুল করে প্রকাশিত সেই শোক সংবাদ আলফ্রেড নোবেলকে তাঁর উত্তরাধিকার এবং বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের প্রভাব সম্পর্কে গভীরভাবে চিন্তা করতে বাধ্য করে। সেই মুহূর্তটিই বিশ্বের সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত পুরস্কার , নোবেল পুরস্কার তৈরির অনুপ্রেরণা জোগায়।

আলফ্রেড নোবেল ডিনামাইট আবিস্কার করেছিলেন সহজে ঘর বাড়ি ভেঙে ফেলতে বা বিস্ফোরন ঘটিয়ে পাহাড়ে ফাটল ধরাতে । আলফ্রেড মানুষের কাজের সুবিধে হওয়ার কথা ভেবেছিলেন , শ্রমিকের কাজের সুবিধের কথা ভেবেছিলেন। তিনি মানুষ মারার কাজে ডিনামাইট ব্যবহার করতে বলেননি । কিন্তু, মানুষ ধ্বংস ও মৃত্যুর কাজে লাগালো ডিনামাইটকে। তার নিজের আবিস্কারে মানুষের নির্বিচার মৃত্যু দেখে আহত হয়েছিলেন আলফ্রেড ।
মানুষটি জীবনে কোনোদিন ধূমপান করেননি, কখনও মদের গ্লাস ছুঁয়ে দেখেননি। একাকী জীবন তাঁর , বিয়েও করেননি তিনি । তেমন কোনো বন্ধুবান্ধবও ছিল না । মৃত্যুর অনুশোচনায় দগ্ধ হয়ে প্রভূত অর্থের মালিক আলফ্রেড সেই সময়ে জীবনে নিরাসক্ত হয়ে পড়েন ।
প্রথম জীবনে আলফ্রেড কবি হতে চেয়েছিলেন , বেশ কিছু কবিতাও লিখেছিলেন। নিজের মৃত্যুর খবরে আলফ্রেডের মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি ধীরে ধীরে হারিয়ে গেল তাঁর সযত্ন লালিত বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গির কাছে।

চার.

১৮৯৬ সালের ডিসেম্বরে মৃত্যুর এক বছর আগে, ১৮৯৫ সালের ২৭ নভেম্বর ৬৩ বছর বয়সে, আলফ্রেড নোবেল তার আগের উইলে পরিবর্তন করলেন । সেই উইলে উল্লেখ করলেন পুরস্কার দেওয়ার কথা । তিনি লিখলেন, তাঁর সম্পত্তির বেশিরভাগ অংশ পাঁচ ভাগে ভাগ করে নোবেল পুরস্কারের তহবিল সংগ্রহ করা হবে। সুইডিশ ভাষায় হাতে লেখা চার পৃষ্ঠার সেই উইলে তিনি সারাজীবনের সঞ্চিত ধন-সম্পদের বিলিবন্টনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট নির্দেশ দিয়েছিলেন । পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, শারীরবিদ্যা বা চিকিৎসা, সাহিত্য এবং শান্তিতে পুরষ্কার দেওয়ার জন্য তিনি সঞ্চিত অর্থের একটি বড় অংশ দান করে দিলেন । নোবেলের উইলে অর্থনীতিতে পুরষ্কার দেওয়ার কোনো কথা তিনি বলে যাননি তাই নোবেলের সঞ্চিত অর্থ-সম্পদ থেকেও অর্থনীতিতে নোবেল পুরষ্কারের অর্থ আজও দেয়াও হয় না। তাঁর উইলের একটি নির্দিষ্ট অংশে এই পুরস্কার দেওয়ার প্রসঙ্গে তিনি লিখেছিলেন,
...আমার বাকি সব সম্পদের বিলিবন্টন করা হবে এভাবে , আমার মূলধন যা আমার নির্বাহী কর্মকর্তারা নিরাপদে বিনিয়োগ করেছেন তা দিয়ে একটা তহবিল গঠন করা হবে। এই তহবিল থেকে বার্ষিক যে সুদ পাওয়া যাবে তা প্রতি বছর পুরষ্কার হিসেবে ভাগ করে দেয়া হবে তাদেরকে যাঁরা আগের বছর মানুষের কল্যাণে সর্বোচ্চ অবদান রেখেছেন। বছরে যে সুদ পাওয়া যাবে সেই সুদকে সমান পাঁচ ভাগে ভাগ করে দেওয়া হবে । এক ভাগ দেয়া হবে সেই ব্যক্তিকে যিনি পদার্থবিজ্ঞানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার বা উদ্ভাবন করবেন , এক ভাগ দেয়া হবে সেই ব্যক্তিকে যিনি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাসায়নিক আবিষ্কার বা উন্নয়ন করবেন, এক ভাগ দেয়া হবে সেই ব্যক্তিকে যিনি শরীরতত্ত্ব কিংবা চিকিৎসাবিজ্ঞানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার করবেন, এক ভাগ দেয়া হবে সেই ব্যক্তিকে যিনি কোন আদর্শ স্থাপনের লক্ষ্যে সাহিত্যে সবচেয়ে ভালো কাজ করবেন এবং এক ভাগ দেয়া হবে সেই ব্যক্তিকে যিনি দুটি দেশের মধ্যে বন্ধুত্ব সৃষ্টির লক্ষ্যে, সেনাবাহিনীর বিলুপ্তি বা সৈন্যসংখ্যা কমানোর লক্ষ্যে, শান্তি সম্মেলনের আয়োজন ও প্রচারের লক্ষ্যে সবচেয়ে বেশি কিংবা সবচেয়ে ভালো কাজ করবেন।

তিনি আরও লিখেছেন, পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়নের পুরষ্কার দেবে সুইডিশ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস, শরীরতত্ত্ব কিংবা চিকিৎসাবিজ্ঞানের পুরষ্কার দেবে স্টকহোমের ক্যারোলিন ইন্সটিটিউট, সাহিত্যের পুরষ্কার দেবে অ্যাকাডেমি ইন স্টকহোম এবং শান্তি পুরষ্কার দেবে নরওয়ের পার্লামেন্ট (স্টরটিং) কর্তৃক নিয়োজিত পাঁচ সদস্যের এক কমিটি।

এই পুরস্কার তাঁর নামে নামাঙ্কিত হয়ে নোবেল পুরষ্কারে পরিণত হয়। তৈরি হয় নোবেল ফাউন্ডেশন। ১৯০০ সালের ২৯ শে জুন এই প্রতিষ্ঠানটির জন্ম হয়েছিল । আলফ্রেডের উইলের ভিত্তিতে নোবেল পুরস্কারের অর্থ ও প্রশাসন পরিচালনা করাই ছিল এই প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কাজ। নোবেল ফাউন্ডেশন এই পুরস্কারের নিয়মাবলী চূড়ান্ত করার পরে নোবেল কমিটি প্রথম পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন সংগ্রহ করা শুরু করে। পরবর্তী কালে তারা প্রাথমিক নির্বাচিত প্রার্থীদের একটি তালিকাও পুরস্কার প্রদানকারী সংস্থাগুলোকে দেয়। বিভিন্ন পুরস্কারের জন্য নির্দিষ্ট সুইডিশ একাডেমি এবং নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি বিজয়ী নির্বাচন করে।

আলফ্রেড নোবেল পুরস্কারের জন্য গণিতকে তাঁর উইলে অন্তর্ভুক্ত করে যাননি। ফলে , বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখায় দেওয়া হলেও গণিতের উপর কোনো নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয় না। কেন তিনি পুরস্কারের জন্য গণিতের কথা বলেননি সেই নিয়ে বছরের পর বছর ধরে অনেক কৌতূহল এবং জল্পনা-কল্পনা তৈরি হয়েছে, বিশেষ করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে গণিতের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা বিবেচনা করেই তৈরি হয়েছে এই জল্পনা । বিশেষজ্ঞদের ধারণা, সম্ভবত গণিতকে তাত্ত্বিক বিষয় হিসেবে দেখেছিলেন আলফ্রেড , আর সেই কারণেই হয়তো তিনি গণিতকে পুরস্কারের জন্য ভাবেননি ।
তিনি সেই ক্ষেত্রগুলোই বেছে নিয়েছিলেন যেখানে মানবজাতির উপকার হতে পারে। এছাড়া, যেহেতু মর্যাদাপূর্ণ কয়েকটি গণিত পুরষ্কার তখন প্রচলিতই ছিল, যেমন সুইডিশ গণিতবিদ গোস্টা মিত্তাগ-লেফলারের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত পুরস্কার , সেই কারনে নোবেল হয়তো আরও একটি প্রতিযোগিতামূলক পুরষ্কার দেওয়ার কথা ভাবেননি ।

পাঁচ

১৮৯৬ সালে নোবেলের মৃত্যুর পাঁচ বছর পর, ১৯০১ সালে প্রথম নোবেল পুরষ্কার প্রদান করা হয়েছিল।
পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, শারীরবিদ্যা বা চিকিৎসা, সাহিত্য এবং শান্তির ক্ষেত্রে মোট পাঁচটি নোবেল পুরষ্কার প্রদান করা শুরু হয়। ১৯৬৯ সালে, অর্থনীতি বিজ্ঞানে পুরষ্কার দেওয়ার প্রচলন হলে নোবেল পুরস্কারের সংখ্যা দাঁড়ায় ছ'য়ে। অর্থনীতির পুরষ্কারটি আনুষ্ঠানিকভাবে নোবেল পুরষ্কার না হলেও এটি আলফ্রেড নোবেলের স্মৃতিতে অর্থনৈতিক বিজ্ঞানে "দ্য সেভেরিগেস রিক্সব্যাঙ্ক পুরষ্কার" নামে পরিচিত। এই পুরস্কারটি সুইডেনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সেভেরিগেস রিক্সব্যাঙ্ক দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

প্রতি বছর ১০ ডিসেম্বর, আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুবার্ষিকীতে নোবেল পুরস্কার প্রাপকদের হাতে এই পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, চিকিৎসা, সাহিত্য এবং অর্থনীতির অনুষ্ঠানটি সুইডেনের স্টকহোমে অনুষ্ঠিত হয়, যার সভাপতিত্ব করেন সুইডেনের রাজা। নরওয়ের অসলোতে নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি দেয় নোবেল শান্তি পুরস্কার।
পুরস্কার গ্রহণের সময়ে বিজয়ীরা নোবেল বক্তৃতাগুলিতেও অংশগ্রহণ করেন, যেখানে তারা তাদের গবেষণা বা মানবিক কাজের অন্তর্দৃষ্টি বিশ্ববাসীর সঙ্গে ভাগ করে নেয়। আলফ্রেডের উইলের মর্মানুসারে পুরস্কার প্রাপকদের হাতে একটি স্বর্ণপদক, ডিপ্লোমা এবং আর্থিক পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। এই আর্থিক পুরস্কারের মূল্য বর্তমানে ১১ মিলিয়ন সুইডিশ ক্রোনা যেটি ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১০.৩ কোটি টাকা । নোবেল পুরস্কারে সম্মানিত ব্যক্তি ' নোবেল লরিয়েট ' হিসেবে সারা বিশ্বে স্বীকৃতি পেয়ে থাকেন ।

নোবেল লরিয়েটদের যে স্বর্ণপদকটি দেওয়া হয়, সেটি অবশ্য বিশুদ্ধ সোনার তৈরি নয়। ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত ২৩ ক্যারেট সোনা দিয়ে নোবেল পুরস্কারের পদক তৈরি করা হয়েছিল । পরে, ১৮ ক্যারেটের সোনা দিয়ে পদক তৈরি করা শুরু হয়। ১৮ ক্যারেটের সোনার পদকে দেওয়া থাকে ২৪ ক্যারেটের সোনার প্রলেপ।
১৯৮০ সালের পর থেকে স্বর্ণপদকের বিশুদ্ধতাই কমেনি , কমে যায় ওজনও। আগের পদকগুলির ওজন হতো ২০০ গ্রাম আর এখন সেটি দাঁড়িয়েছে ১৭৫ গ্রামে।


ছয়.

প্রথম নোবেল প্রদান অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৯০১ মার্চ ১০ ডিসেম্বর স্টকহোমের গ্র্যান্ডে হোটেলে এক ভোজসভার মাধ্যমে । সেই ভোজসভায় ১১৩ জন পুরুষ প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। সেই বছরেই এক্স-রে আবিষ্কারের জন্য প্রথম নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল উইলহেম রন্টজেনকে। এটি ছিল পদার্থবিজ্ঞানে প্রথম নোবেল পুরস্কার। চিকিৎসায় প্রথম নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন জার্মান চিকিৎসক ও অনুপ্রাণবিজ্ঞানী এমিলি ভন বেরিং। ১৮৯০ এর দশকে তিনি ডিপথেরিয়া প্রতিরোধক তৈরি করেন, যা আজও হাজার হাজার মানুষের জীবন রক্ষা করে চলছে।

২০২৪ সাল পর্যন্ত মোট ১,০১২ জন ব্যক্তি ও সংস্থা নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন , এদের মধ্যে কেউ কেউ একাধিকবার পুরস্কার লাভ করেছেন, মোট ৮৯২ জন ভিন্ন ব্যক্তি ও সংস্থা এই সম্মাননা অর্জন করেছেন। এই বছরে এই তালিকায় যুক্ত হলেন আরও ১৪ জন।
নোবেল পুরস্কারের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত সর্বকনিষ্ঠ হিসেবে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন মালালা ইউসুফজাই। ২০১৪ সালে তিনি মেয়েদের শিক্ষার জন্য লড়াই করে মাত্র ১৭ বছর বয়সে নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছিলেন। অন্যদিকে মার্কিন পদার্থবিদ জন বি. গুডেনাফ হলেন সবচেয়ে বয়স্ক নোবেল লরিয়েট যিনি লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি তৈরিতে তার কাজের জন্য ৯৭ বছর বয়সে ২০১৯ সালে রসায়নে নোবেল পুরষ্কার পেয়েছিলেন।
এখন পর্যন্ত মোট নয়জন ভারতীয় বা ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্যক্তি নোবেল পুরষ্কার পেয়েছেন। প্রথম এশীয় হিসেবে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, যিনি ১৯১৩ সালে তাঁর বিখ্যাত রচনা গীতাঞ্জলির জন্য সাহিত্যে নোবেল পুরষ্কার পেয়েছিলেন।
মাত্র কয়েকজন ব্যক্তি দু'বার নোবেল পুরষ্কার জিতেছেন। এদের একজন হলেন জন বার্ডিন যিনি পদার্থবিজ্ঞানে প্রথমবার ১৯৫৬ সালে ট্রানজিস্টর আবিষ্কারের জন্য এবং দ্বিতীয় বার ১৯৭২ সালে অতিপরিবাহিতার (সুপারকন্ডাক্টিভিটি) তত্ত্ব উদ্ভাবনের জন্য এই পুরষ্কার পেয়েছিলেন । আরেকজন হলেন পোলীয় ও ফরাসি বিজ্ঞানী মেরি কুরি । মেরি কুরি ছিলেন নোবেল পুরস্কারে সম্মানিত প্রথম মহিলা বিজ্ঞানী ও একমাত্র বিজ্ঞানী যিনি দুটি ভিন্ন বিজ্ঞান ক্ষেত্রে দুটি নোবেল পুরষ্কার জিতেছেন । ১৯০৩ সালে পদার্থবিজ্ঞান এবং ১৯১১ সালে রসায়নে নোবেল পুরস্কারে সম্মানিত করা হয়েছিল তাঁকে । তার আবিষ্কারগুলি আধুনিক পদার্থবিদ্যা এবং রসায়নের ভিত্তি স্থাপন করেছিল।
ফ্রেডরিক স্যাঙ্গার ১৯৫৮ সালে রসায়নে নোবেল পান ইনসুলিন অণুর গঠন নির্ধারণের জন্য। ১৯৮০ সালে পুনরায় তিনি রসায়নে নোবেল পেয়েছিলেন ভাইরাসের নিউক্লিওটাইড ধারা বা ডিএনএ সিকুয়েন্সিং উদ্ভাবনের জন্য। তিনি ছিলেন রসায়নে দুবার নোবেলজয়ী প্রথম বিজ্ঞানী।
২০০১ সালে শার্পলেস রসায়নে নোবেল পান কাইরালি-অণুঘটিত জারণ বিক্রিয়ার জন্য। এরপর ২০২২ সালে তিনি আবার রসায়নে নোবেল পান ক্লিক কেমিস্ট্রি ও বায়ো–অর্থোগোনাল কেমিস্ট্রির উন্নয়নের জন্য। স্যাঙ্গারের পর তিনিই দ্বিতীয় ব্যক্তি, যিনি রসায়নে দুবার নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন ।

মার্কিন রসায়নবিদ লিনাস পাউলিং হলেন একমাত্র ব্যক্তি যিনি রসায়ন এবং শান্তিতে দুটি আলাদা ক্ষেত্রে নোবেল পুরষ্কার পেয়েছিলেন। তিনি রাসায়নিক বন্ধন বোঝার এবং বর্ণনা করার জন্য কোয়ান্টাম মেকানিক্স ব্যবহার করেছিলেন। পরে তিনি পারমাণবিক অস্ত্রের বিরুদ্ধে তীব্র প্রচার চালিয়েছিলেন। পারমাণবিক পরীক্ষা নিষিদ্ধ করার জন্য একটি আবেদনেরও নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি । ১৯৫৪ সালে রসায়নে এবং ১৯৬৩ সালে শান্তিতে দুইবার নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন পাউলিং ।

মানবতার সেবায় অগ্রণী ভূমিকা রাখার কারণে ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব দ্য রেড ক্রস ১৯১৭, ১৯৪৪ ও ১৯৬৩ সালে তিনবার শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলে মানবিক সহায়তা ও আহতদের চিকিৎসা প্রদানে এই প্রতিষ্ঠান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

বিশ্বব্যাপী শরণার্থী ও বাস্তুচ্যুত মানুষের সহায়তায় অসাধারণ অবদানের জন্য জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার (ইউএনএইচসিআর)
১৯৫৪ এবং ১৯৮১ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছে।

নোবেলের দীর্ঘ ইতিহাসে দুজন স্বেচ্ছায় নোবেল পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। এই দুজনের প্রথমজন হলেন ফরাসি দার্শনিক জঁ পল সার্ত্রে এবং দ্বিতীয়জন ভিয়েতনামের সংগ্রামী রাজনীতিবিদ লে দুক তাও।
ফরাসি লেখক জঁ পল সার্ত্রে ছিলেন অস্তিত্ববাদের অন্যতম প্রধান প্রবক্তা । তাকে আধুনিক অস্তিত্ববাদের জনকও বলা হয়। সার্ত্রের অসাধারণ কাজের মধ্যে রয়েছে, 'বিয়িং অ্যান্ড নাথিংনেস' শীর্ষক বইটি। যেখানে তিনি তাত্ত্বিকভাবে অস্তিত্ববাদের উপর তাঁর মতামত উপস্থাপন করেছেন। ইউরোপের জন্য দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিপর্যয় কেমন ছিল, সেটা গভীরভাবে ব্যাখ্যা করেছেন তিনি।
পল সার্ত্রে ১৯৬৪ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিলেন কিন্তু তিনি এই পুরস্কার নিতে অস্বীকার করেন। কারণ হিসেবে তিনি জানিয়েছিলেন , নোবেল এমন এক সম্মান, যা পাশ্চাত্যের লেখক এবং প্রাচ্যের বিপ্লবীদের বাক্‌রুদ্ধ করে দেয়।
তিনি বলেছিলেন , আলজেরিয়ায় যুদ্ধ চলাকালে তাঁরা ১২১ জনের স্বাক্ষরিত বক্তব্য প্রকাশ করেছিলেন, তখন তাঁদের পুরস্কার দেওয়া হয়নি। দিলে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তিকে সম্মানিত করা হয়েছে বলে তাঁরা তা গ্রহণ করতেন। সংগ্রামের শেষে পুরস্কৃত হতে তিনি তাঁর অপারগতা প্রকাশ করেন।
১৯৭৩ সালে ভিয়েতনামের বিপ্লবী নেতা লে দুক তাও এবং মার্কিন জাতীয় প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা হেনরি কিসিঞ্জারকে যৌথভাবে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত করেছিল নোবেল কমিটি। ভিয়েতনাম যুদ্ধের অবসান ঘটাতে যে শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল তাতে এই দুজনের মুখ্য ভূমিকা ছিল । কিন্তু লে দুক তাও পুরস্কার নিতে অসম্মতি জানিয়েছিলেন । কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ভিয়েতনামে প্রকৃত শান্তি তখনও ফিরে আসেনি। যেহেতু শান্তিই প্রতিষ্ঠা হয়নি, সেহেতু শান্তি প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখার জন্য কোনো পুরস্কার তিনি গ্রহণ করতে পারেন না। সুইডিশ একাডেমি পঞ্চাশ বছর ধরে পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন বা বাছাইয়ের সব তথ্য গোপন করে রাখে। তাই এই চিঠির কথা জানা যায় ৫০ বছর পরে। হেনরি কিসিঞ্জার ও লে দুক তাওকে নোবেল পুরস্কার দেওয়ার প্রতিবাদে সেই সময়ে নোবেল কমিটির দুই সদস্য পদত্যাগও করেছিলেন। কারণ হিসেবে তারা যুদ্ধবিরতি চুক্তি সত্ত্বেও ভিয়েতনামে যুদ্ধ বন্ধ না হওয়াকেই তুলে ধরেছিলেন ।
বার্ট্রান্ড রাসেলও প্রাথমিক ভাবে নোবেল নিতে তাঁর অসম্মতি প্রকাশ করেছিলেন , কিন্তু পরবর্তী সময়ে অনিচ্ছা সত্ত্বেও তা গ্রহণ করেছিলেন ।

প্রায় ছয় দশক আগে ১৯৫৮ সালে মস্কোর ঔপন্যাসিক ও কবি বরিস পাস্তারনাককে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছিল। সমসাময়িক গীতিকবিতা এবং মহান রাশিয়ান মহাকাব্য রচনায় তাঁর গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য এই স্বীকৃতি প্রদান করা হয়।
তিনি প্রাথমিকভাবে এই সম্মান গ্রহণ করলেও পরে তৎকালীন সোভিয়েত সরকারের চাপের মুখে পুরস্কারটি প্রত্যাখ্যান করতে বাধ্য হয়েছিলেন ।

হিটলারের নিষেধাজ্ঞার কারণে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েও পুরস্কার নিতে আসতে পারেননি তিন জন জার্মান বিজ্ঞানী। ক্যারোটিনয়েড ও ভিটামিন নিয়ে কাজ করার জন্য ১৯৩৮ সালে রসায়নে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিলেন জার্মান জৈব রসায়নবিদ রিশার্ড কুন। রিশার্ড কুন নোবেল পুরস্কার গ্রহণ করতে পারেননি। সব জার্মান নাগরিকদের জন্য নোবেল পুরস্কার গ্রহণ করা নিষিদ্ধ ঘোষণা করে ১৯৩৭ সালে অ্যাডল্ফ হিটলার একটি ডিক্রি জারি করেছিলেন। হিটলারের জারি করা নিষেধাজ্ঞার কারণেই কুন নোবেল পুরস্কার নিতে পারেননি । একই কারণে পুরস্কার নিতে পারেননি অ্যাডলফ বুটেনান্ডও। ১৯৩৯ সালে রসায়নে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন ক্রোয়েশিয়ান বিজ্ঞানী লিওপোল্ড রুজিকার সাথে যৌথভাবে জার্মান জৈব রসায়নবিদ অ্যাডলফ বুটেনান্ড । যৌন হরমোন নিয়ে গবেষণার জন্য তাঁদের এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল । তিনিই প্রথম একটি বিশুদ্ধ পুরুষ যৌন হরমোন তৈরি করতে এবং এর রাসায়নিক গঠন নির্ধারণ করতে সক্ষম হয়েছিলেন, যাকে বলা হয়েছিল , 'অ্যান্ড্রোস্টেরোন'।
বঞ্চিতদের তালিকায় ছিলেন আরও একজন । জার্মান প্যাথলজিস্ট ও ব্যাকটিরিওলজিস্ট গেরহার্ড ডোমাকক ১৯৩৯ সালে মেডিসিনে নোবেল পুরস্কার পেয়েও সেটি নিতে যেতে পারেননি হিটলারের নিষেধাজ্ঞার কারণেই । পরবর্তীকালে নোবেল কমিটির পক্ষ থেকে ডিপ্লোমা সনদ ও পদক তাঁর কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল , কিন্তু পুরস্কারের অর্থ তাঁর কাছে পৌঁছায়নি।


সাত.

এই বছরে নোবেল পুরষ্কার বিজয়ীদের নাম ৬ অক্টোবর থেকে ১৩ অক্টোবরের মধ্যে ঘোষণা করা হয়েছে । শান্তি পুরস্কারের ঘোষণা হয়েছিল অসলোতে , অন্য পুরস্কারের ঘোষণা হয় স্টকহোমে । ডিসেম্বরের ১০ তারিখে আলফ্রেডের জন্মদিনে প্রাপকদের হাতে তুলে দেওয়া হলো সেই পুরস্কার ।

২০২৫ সালের চিকিৎসা বিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন মেরি ই. ব্রুনকো, ফ্রেড র‍্যামসডেল এবং শিমন সাকাগুচি৬ অক্টোবর এই তিন বিজ্ঞানীর নাম ঘোষণা করে সুইডেনের ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউটের নোবেল অ্যাসেমব্লি। মেরি ই ব্রাঙ্কো যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটেলের ইনস্টিটিউট ফর সিস্টেমস বায়োলজির গবেষক, ফ্রেড র‍্যামসডেল যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোর সোনোমা বায়োথেরাপিউটিক্সের গবেষক এবং শিমন সাকাগুচি জাপানের ওসাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক। পেরিফেরাল ইমিউন টলারেন্সের উপর তাদের যুগান্তকারী গবেষণার জন্য এই পুরস্কার পেয়েছেন তারা। এই গবেষণার ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে আমাদের ধারণায় বিপ্লব এসেছে এবং অটোইমিউন ডিসঅর্ডার, ক্যান্সার এবং অঙ্গ প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্তের সূচনা হয়েছে। ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউটের নোবেল অ্যাসেমব্লি এক বিবৃতিতে বলেছে, 'তাদের আবিষ্কার গবেষণার একটি নতুন ক্ষেত্রের ভিত্তি স্থাপন করেছে এবং নতুন চিকিৎসার বিকাশকে উৎসাহিত করেছে।'


পদার্থবিদ্যায় নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার গবেষক জন ক্লার্ক, মিশেল এইচ. ডেভোরেট এবং জন এম. মার্টিনিস। বৈদ্যুতিক সার্কিটে কোয়ান্টাম টানেলিং এবং শক্তির স্তরের উপর তাদের যুগান্তকারী গবেষণা অণুবীক্ষণিক কোয়ান্টাম জগৎ এবং ম্যাক্রোস্কোপিক বাস্তব জগতের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ তৈরি করেছে। এই অর্জন কোয়ান্টাম কম্পিউটার, নিরাপদ যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং উন্নত সেন্সিং প্রযুক্তির উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে।


ধাতব-জৈব কাঠামো (MOFs) আবিষ্কারের জন্য জাপানের কিউটো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক সুসুমু কিতাগাওয়া, অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক রিচার্ড রবসন এবং যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ওমর এম. ইয়াঘিকে নোবেল পুরষ্কার দেওয়া হয়েছে রসায়নে । ধাতব-জৈব কাঠামো বিশিষ্ট পদার্থগুলিতে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র স্থান রয়েছে যা গ্যাস আটকে রাখতে পারে, ক্ষতিকারক রাসায়নিক সঞ্চয় করতে পারে, বিক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে পারে এবং এমনকি শুষ্ক বাতাস থেকে জল সংগ্রহ করতে পারে, এগুলো বিজ্ঞান এবং পরিবেশের জন্য যথেষ্ট সুবিধা প্রদান করে।


বিশৃঙ্খলা ও হতাশার মধ্যে শিল্পের স্থায়ী শক্তি তুলে ধরার জন্য হাঙ্গেরীয় লেখক লাসজলো ক্রাস্‌নাহোরকাইকে দেওয়া হয়েছে সাহিত্যের নোবেল পুরষ্কার । তার অনন্য লেখার ধরণটির জন্যই তিনি পরিচিত। ক্রাস্‌নাহোরকাই অযৌক্তিকতা, গভীর প্রতিফলন এবং কাব্যিক গল্প বলার মিশ্রণ ঘটিয়ে মধ্য ইউরোপীয় সাহিত্য ঐতিহ্যকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন এবং পূর্ব দর্শন থেকে অনুপ্রেরণাও গ্রহণ করেছেন।সুইডিশ অ্যাকাডেমি বলেছে, আকর্ষণীয় এবং দুরদর্শী রচনার জন্য তাকে এ বছর সাহিত্যে নোবেল দেওয়া হয়েছে। সংস্থাটি বলেছে, তার লেখনি বৈশ্বিক ভয়াবহতার মধ্যে শিল্পের শক্তিকে পুনরায় নিশ্চিত করেছে।
লাসজলো ক্রাস্‌নাহোরকাই তার ডিস্টোপিয়ান ও বিষণ্ণতাময় উপন্যাসগুলোর জন্য বিখ্যাত। তার উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে আছে, সাটানট্যাঙ্গো, দ্য মেলানকোলি অব রেজিস্ট্যান্স। এগুলো পরবর্তীকালে চলচ্চিত্রে রূপান্তরিত হয়েছে। তিনি ২০১৫ সালে ম্যান বুকার ইন্টারন্যাশনাল পুরস্কার এবং ২০১৯ সালে ন্যাশনাল বুক অ্যাওয়ার্ড ফর ট্রান্সলেটেড লিটারেচার জেতেন।
২০২৫ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছেন ভেনেজুয়েলায় জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার অর্জনের লড়াইয়ের সাহসী নেত্রী মারিয়া করিনা মাচাদো । অবাধ নির্বাচন, মানবাধিকার এবং গণতন্ত্রের শান্তিপূর্ণ রূপান্তরের জন্য তার নিরন্তর লড়াইকে সম্মান জানিয়েছে নরওয়ের নোবেল কমিটি। তার সাহস এবং শান্তিপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি লক্ষ লক্ষ ভেনেজুয়েলার মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছে যারা নিপীড়নের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে চলেছেন এবং স্বাধীনতার জন্য লড়াই করে চলেছেন ।


অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার পেলেন তিনজন অর্থনীতিবিদ যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয়ের নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির গবেষক জোয়েল মোকির, ফ্রান্সের নাগরিক ও কলেজ দে ফ্রান্স এবং লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকস অ্যান্ড পলিটিক্যাল সায়েন্সের গবেষক ফিলিপ আগিয়োঁ এবং যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাউন ইউনিভার্সিটি, প্রভিডেন্সের অধ্যাপক পিটার হাউইট। উদ্ভাবননির্ভর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ব্যাখ্যা করার জন্য তাঁরা এই পুরস্কার পেলেন। তারা দেখিয়েছেন, উদ্ভাবনই ভবিষ্যৎ অগ্রগতির মূল চালিকা শক্তি। তাঁদের গবেষণা মনে করিয়ে দেয়, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি স্বয়ংক্রিয় বা নিশ্চিত কোনো প্রক্রিয়া নয়।নোবেল কমিটি তাদের বিবৃতিতে বলেছে, গত দুই শতাব্দীতে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বিশ্ব দেখেছে ধারাবাহিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি। এর ফলে দারিদ্র্য থেকে মুক্তি পেয়েছে বিপুলসংখ্যক মানুষ, আর এর ওপরই গড়ে উঠেছে আমাদের সমৃদ্ধির ভিত্তি। এ বছরের অর্থনীতিতে নোবেলজয়ী তিন বিজ্ঞানী-জোয়েল ময়কার, ফিলিপ আগিয়োঁ ও পিটার হাউইট দেখিয়েছেন, কীভাবে উদ্ভাবন আরো অগ্রগতির প্রেরণা হতে পারে ।
এই তিন অর্থনীতিবিদের মধ্যে অর্ধেক পুরস্কার পেয়েছেন জোয়েল মোকির। প্রযুক্তিগত অগ্রগতির মাধ্যমে টেকসই প্রবৃদ্ধির পূর্বশর্তগুলো শনাক্ত করার জন্য তিনি পুরস্কার পেয়েছেন। 'সৃজনশীল বিনাশ' প্রক্রিয়ার মাধ্যমে টেকসই প্রবৃদ্ধির তত্ত্ব দেওয়ার জন্য বাকি অর্ধেক পুরস্কার যৌথভাবে পেয়েছেন ফিলিপ আগিয়োঁ ও পিটার হাউইট। রয়টার্সের তথ্যানুসারে, এই পুরস্কারের মূল্য প্রায় ১২ লক্ষ ডলার।

যথারীতি দ্বন্দ্ব রইল, মতান্তর রইল। পাওয়া না পাওয়া নিয়ে বিতর্কও থেকে গেল। কিন্তু নোবেল পুরস্কারের গুরুত্ব এতে এতটুকুও কমে যাচ্ছে না। আলফ্রেড নোবেল যেমন ছিলেন তেমনই থাকলেন চিরস্মরণীয় হয়ে । থেকে গেল তাঁর স্মরণে তৈরি নোবেল পুরস্কারও।




=====================

Pulakranjan Chakraborty

Pulakranjan Chakraborty

Village- Jatadharpur

PO- KALARA

Dist Paschim medinipur

Pin no : 7365933874

Comments

বিধিবদ্ধ স্বীকার্য :

লেখার বক্তব্যের দায়িত্ব লেখকের, পত্রিকার নয়। আমরা বহু মতের প্রকাশক মাত্র।

মতামত/লেখা এখানে জমা দিন

Name

Email *

Message *

সাম্প্রতিক বাছাই

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬

  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠালে  অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে হলে ভালো। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # ...

গল্প ।। জাতিস্মর ।। আশীষ কুমার বিশ্বাস

    জাতিস্মর   আশীষ  কুমার   বিশ্বাস    গল্পের শুরুটা প্রায় ষাট বছর আগের কথা । যার নাম গৌতম, ডাক নাম ছিল বাবু ।  তার বছর তখন ছয়-সাত হবে । আমরা বা আমি তখন একটু বড় । এক সাথেই চলতো খেলা । গোল্লা ছুট, দাঁড়িয়া বান্দা, চোর-পুলিশ । যে মাঝে মাঝে খেলা থেকে বিরত থাকতো ; সে-ই জাতিস্মর । মাঠের পাশেই ছিল একটা খেঁজুর গাছ । তাতে হাত রেখে দূরের এক গ্রামের দিকে এক মনে তাঁকিয়ে থাকতো "বাবু" । গ্রামটির নাম "বিনয় পল্লী " । মাঝে বড়ো মাঠ । হাঁটা শুরু করলে তিরিশ - চল্লিশ মিনিট লাগবে । মাঝে জলে ভরপুর দেখে কখনো যাওয়া হয়নি । বাবু কে যখন বলতাম, ওপারে কি দেখছিস? ও বলতো, ওখানে আমার ছোট মা থাকে, দিদি থাকে, আমার ভুলু কুকুর থাকে । এ কথা আমাদের বিশ্বাস হতো না । আবার খেলায় ফিরে যেতাম, খেলতাম ।  কিন্তু ও বসে বসে , ওপারের গাছ পালা , বাড়ি ঘর দেখতো । কাছে গেলে বলতো , ওই যে সবুজ ,কচি কলাপাতা রঙের দালান বাড়ি, ওটাই আমাদের বাড়ি !  এই ভাবে মাস ছয়, বছর গড়াতে লাগলো । মনে প্রশ্ন জাগতে লাগলো, এ টা কি মন গড়া , বা বানিয়ে বানিয়ে বলছে? সত্যি প্রকাশ হোল এক দিন ।  সে বাড়িতে কিছু ...

কবিতা ।। মনোজকুমার রায়

জল সিঁড়ি চেক বইয়ের পাতা ফুরিয়ে যেতে থাকে -- ঝরে পড়ে বৃদ্ধ গাছটির পত্রমুকুল কাঁচা গন্ধ বেয়ে চলে সময়ের স্রোতে  সারা ভোর জেগে থাকি ঘুমের টলে তাড়া দেয় একগ্রাস অবিশ্বাসী বায়ু দিন ফুরনো লাল সূর্যের টানে নেমে আসে পাড় ছোঁয়া জল সিঁড়ি ================= মনোজকুমার রায় দঃ ঝাড় আলতা ডাউকিমারী, ধূপগুড়ি জলপাইগুড়ি -৭৩৫২১০ মো ৭৭৯৭৯৩৭৫৬৬

কবিতাগুচ্ছ ।। মেশকাতুন নাহার

কবিতাগুচ্ছ ।। মেশকাতুন নাহার  ১. বিধির অভিশাপ  সরকারি হবো সরকারি হবো ছিল বড়োই যে সাধ,  এখন দেখি সরকারি হওয়া আমারই অপরাধ। সাতটি বছর পার হলেও পাইনি নিজ অধিকার,  স্থায়ীকরণ,পদোন্নতিটা অতি সত্বরই  দরকার। জনস্বার্থে সরকারি হয়েছে,বল আমার কীসে ভুল?  বিধিরই চক্রে গ্রেড বক্রে, ভেঙেছে মনেরই কুল। প্রভাষক থেকেই বিদায় নিচ্ছে হাজার হাজার লোক, নীরব চিৎকার,নেই শোধাবার,প্রাণে বইছে শোক। বদলী চালু নেই বলেই তো চলছে ভাই অনিয়ম,  একই জায়গায় থেকে থেকে লড়াই চলে হরদম। দিন দিনই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক কমছে যতই, ছাত্রছাত্রীর ফলাফলের মান নামছে নীচে ততই। বিকলাঙ্গ সামাজিক অবস্থান দুঃখ মনেরই মাঝে, বঞ্চনারই শিকার হয়েছি আঠারো বিধিরই ভাঁজে। চাই অধিকার,চাই মর্যাদা,অভিশাপের অবসান, সকল ভেদাভেদ দূর করতে গাহিবো সাম্যের গান। ২. ভালোবাসার রঙধনু  ইচ্ছে মতো রঙধনু টা উঠে আকাশ নীলে, সাজিয়ে দেয় এই আমাকে  সাতটি রঙে মিলে। বর্ষণ শেষে ক্লান্তি ধুয়ে দেয় সে মুচকি হাসি, নানান বর্ণে দীপ জ্বালিয়ে  বলে ভালোবাসি। ওই মেঘেরা যেই না উড়ে ঝরে পড়ে ঘাসে, রঙধনু টা ঠিক তখনই  চুপিসারে আসে।  অব...

উন্মুক্ত পাগলামি ।। আশরাফুল মণ্ডল

উন্মুক্ত পাগলামি আশরাফুল মণ্ডল আহা, অপরূপ নিজস্বতার দাহ! কুঁকড়ে যায় আবহমান, সজনে পাতার বোঁটায়! ভাপওঠা ভাতের কাছে মাছি সত্তায় কী নিপুণ! তবুও ঘোর লাগা বসন্তের ডাক, হাঁকে! খেদিয়ে দেয় পা দোলানো প্রস্তাব, ওই ধুনুরি চোখ! রাংতায় মোড়া ডাকের সাজ, দে দোল দোল! হুইসেল বাজিয়ে কে রুখে দ্যায় সেই নাকছাবির রুদালি কাঁপন! খালবিল ছেঁচে পাঁচসিকের  মানত কুড়িয়ে আনে, বাংলা বাজার। ঠ্যাং নাচানো সুরে চোখ মারছে, দ্যাখো ভ্যানতারা! মুখ খোলা মানেই পাঁজরের স্রোত ভাবা যেন উগরানো টালমাটাল! ঢিল মারা প্রশ্নের রোয়াকে বক্রচোখে যেন মেধাবী কবিতা! মুছে দিও তবে লাজুক গুপ্ত রোগ, দিনরাত্রি! ভালো থেকো তোমরা বাছাধন, রং মাস সে আর কতদিন... ================    ASRAFUL MANDAL Chandidas Avenue, B-zone, Durgapur, Paschim Bardhaman, Pin - 713205,  

কবিতা ।। ভাষার জন্য লড়াই ।। চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু

ভাষার জন্য লড়াই চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু মুখের ভাষা বাংলা ভাষা মাকে ডাকি মা, সারা বিশ্বে তোমার মাগো নেই তো তুলনা। তোমার মুখের প্রথম ভাষা আমার মনের সকল আশা তোমার ভাষায় বলবো মাগো আমার মনের কথা, এই ভাষাতেই জড়িয়ে আছে সকল স্বাধীনতা।  এই ভাষাকে আনতে গিয়ে তাজা বুকের রক্ত দিয়ে রাজপথে সব লড়াই হলো করলো লড়াই কারা, আমার মায়ের দামাল ছেলে রক্ত পলাশ যারা।  তোমার ছেলে লড়াই করে আনলো ভাষা ঘরে ঘরে সেদিন থেকে শহীদ মিনার সাজাই ফুলে ফুলে, বীর শহীদের ত্যাগের কথা যাইনি আজও ভুলে।    ++++++++++++++++++++++++++++++++    চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু শহীদ আবুল কাশেম সড়ক, বড় বাজার, চুয়াডাঙ্গা, বাংলাদেশ।

চিরকুটের কবিতা

নতুন পৃথিবী আজ সকালে রোদ্দুর নামুক ভেজা বর্ষার মতো গা ধুয়ে কিছুটা পবিত্র হবো যত জীর্ণ মলিন দ্বেষ বিলীন হোক সব সময়ের তটে গা ভাসিয়ে কিছুটা বিলাসী হবো যা ছিল অতীত যা ছিল কষ্ট সবকিছু ভুলে নবীনে ব্রতী হবো আসুক ধেয়ে সতেজ হাওয়া দূর হোক যত কুণ্ঠা ব্যথা পুরানো যত বিবাদ ভুলে ভালোবাসার আবার বেড়া দেবো কিছুটা আশাবাদী কিছুটা কর্মঠ কিছুটা জেদি কিছুটা শপথ আসুক ছুঁয়ে বাঁচার আলো হাতে হাত রেখেই বিশ্বাসের ঘরে আবার নতুন দীপ জ্বালাবো

আপন ... আপন ।। অলক মিশ্র

আপন ... আপন ✍️ অলক মিশ্র সবাই আপন চারপাশের মানুষ যত, চেনা অচেনার ভিড় ভাঙা কত। হাত বাড়িয়ে ছুঁয়ে যাওয়ার ডাক, অভিমান, কান্নাকাটি, রাগ। কত শত ভাবনার যাওয়া আসা, মুচকি হাসিতে একটু পাশে বসা। ভাবনার পাগল পারা ছুটি, আপন আপন মানুষের যে জুটি। রুক্ষ শুষ্ক বালুকায় চলি পথ, দূরন্ত বাতাস ওড়ায় পতাকা; চলে রথ। দীর্ঘ সুদূর বিস্তীর্ণ প্রান্তর, বন্যায় ভেসে ব্যথিত অন্তর। নতুন বরণের মুঠো ভরা ডালি, ফুলে ফুলে গুণ গণ করে অলি। স্বাগত তোমায় হে অনাগত, আপন আপন নেই তোমার মতো। নিরন্ন খালি গায়ের ছোট্টো শিশু, অজানা নামের ঋষি, খুশি বা বিশু। বহুর মাঝে একের উপস্থিতি, আসা আর যাওয়া এটাই যে রীতি। চলা শুধু বোঝা বয়ে চলা, গভীর রাতে দুচোখ একটু খোলা। সবার আনন্দে হৃদয় দেয় দোলা, আপন আপন শুধু আপনের মেলা।। ......................... Name  :  Alak Mishra Vill   : Mirjapur Po   : Mirjapur Belda Ps  : Dantan Dost   :  Pashchim Medinipur Pin : 721445  

কবিতা ।। রঙ ।। ইউসুফ মোল্লা

  রঙ  ইউসুফ মোল্লা সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি,  পৃথিবী নানা রঙে সেজে উঠেছে।  ধূসর বাদামী রঙ তোমার দেহ,  মাথায় সবুজ রঙের বাবরি চুল,  তাতে গুঁজে রেখেছো লাল-নীল ফুল।  নববধূর মতো সিঁথিতে দিয়েছো সিঁদুর,  চোখে দিয়েছো কাজল।  দিগন্তভরা আকাশ তোমাকে নীল উপহার দিল,  সূর্যের লাল আলো তোমাকে সুন্দর করেছে।  তুমি তাদের ফিরিয়ে দিলে, বুকভরা ভালোবাসা আর স্নেহ।  মাঝে মাঝে এইভাবে হোলি আসে,  আমার মনকে রাঙিয়ে দিতে। ------------------    ইউসুফ মোল্লা উত্তর অঙ্গদ বেড়িয়া, ট্যাংরাখালী, ক্যানিং,  দক্ষিণ ২৪ পরগনা, ৭৪৩৩২৯

ধারাবাহিক গল্প ।। চেনা প্রতিবেশী ( অষ্টম পর্ব ) ।। দীপক পাল

চেনা প্রতিবেশী   ( অষ্টম পর্ব ) দীপক পাল              রান্নাঘরে এসে গরম কড়াইতে সুন্দর করে কাটা বেগুনের টুকরোগুলো ছাড়তে লাগলো। ওদিকে কমল ত্রিহানকে বললো, ' ত্রিহানদা এতসব মিষ্টির কি দরকার ছিল?' পবন বললো, ' বৌদিকে দেখ আমাদের মিষ্টি দিয়ে বসিয়ে রান্নাঘরে গিয়ে কড়াইতে কি ভাজছে যেন। এখান থেকে শোনা যাচ্ছে ।' ত্রিহান হেসে বলে, - ' ও কিছু নয় পবন, মনে হয় মাছটাছ কিছু একটা ভাজছে। নাও খাওয়া শুরু করতো।'             একটু পরে দুটো বড়ো বড়ো প্লেটে করে গরম গরম বেগুনি এনে একটা কমল ও পবনের মাঝে রাখলো ইমন আর একটা ত্রিহানেব সামনে রেখে বললো, - ' চায়ের জল বসিয়েছি চাটা নিয়ে এসে একসাথে বসে চায়ের সাথে বেগুনি খেতে খেতে গল্প করবো। বেশ মজা হবে। যাই নিয়ে আসি চা।' পবন কিন্তু বলে ওঠে, - 'আরে আমি বুজেছি বৌদি বেশ কায়দা করে আমাদের লাঞ্চের ব্যাবস্থাটা করে দিল।' - ' কি আর এমন খাওয়ালাম। লাঞ্চের এখনও অনেক দেরী দেখবে খিদে পেয়ে যাবে।'      ...

জনপ্রিয় লেখা

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ -- "ত্রয়ী কাব্য" ------------------------------------------------------------------------------ সুনন্দ মন্ডল নবীনচন্দ্র সেন সাহিত্যে তথা বাংলা কবিতার জগতে এক অবিস্মরণীয় নাম। তিনি চট্টগ্রাম জেলার নওয়াপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ১৮৪৭ সালে তাঁর জন্ম এবং মত্যু ১৯০৯ সালে। বঙ্কিমচন্দ্র তাঁকে 'বাংলার বায়রন' বলেছেন। ‎জীবৎকালীন যুগে আত্মপ্রত্যয়ের মধ্যে জাতীয় চরিত্র আত্মস্থ করে নতুন সংস্কারে প্রয়াসী হয়ে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখেছেন।মধুসূদন-হেমচন্দ্র-নবীনচন্দ্র--এই তিন কবি বাংলা কাব্যধারায় প্রাণ সঞ্চার করেছিলেন। বিশেষত মহাকাব্য লেখার দুঃসাহস দেখিয়েছিলেন। এদিক থেকে মধুসূদন দত্ত একজন সফল মহাকাব্যিক। তাঁর 'মেঘনাদ বধ' কাব্যের মত গভীর ও ব্যঞ্জনাময় না হলেও নবীনচন্দ্র সেনের 'ত্রয়ী' কাব্য বিশেষ মর্যাদা দাবি করতেই পারে। তাছাড়া 'ত্রয়ী' কাব্যে ধর্মীয় ভাবধারার আবেগ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ‎ ‎নবীনচন্দ্র সেন বহু কাব্য লিখেছেন। যেমন- 'অবকাশরঞ্জিনী','পলাশীর যুদ্ধ', 'ক্লিওপেট্রা', 'রঙ্গমতী', 'খ্রীষ্ট', ...

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা শ্রীজিৎ জানা "সময় চলিয়া যায় নদীর স্রোতের প্রায়"। স্রোতের ধারা তার দু'প্রান্তে রেখে যায় ভাঙাগড়ার চিহ্ন। কালের দৃশ্যপটেও পরিবর্তনের ছবি অনিবার্যভাবেই চোখে পড়ে। সমাজ সময়ের ছাঁচে নিজেকে গড়ে নেয় প্রতিনিয়ত।  সেখানে মনে নেওয়ায় বাধা থাকলেও,মেনে নেওয়ার গাজোয়ারি চলে না। ফলত কাল বদলের গাণিতিক হিসেবে জীবন ও জীবিকার যে রদবদল,তাকেই বোধকরি সংগ্রাম বলা যায়। জীবন সংগ্রাম অথবা টিকে থাকার সংগ্রাম।  মানুষের জীবনযাপনের ক্ষেত্রে আজকে যা অত্যাবশ্যকীয় কাল তার বিকল্প রূপ পেতে পারে অথবা তা অনাবশ্যক হওয়াও স্বাভাবিক। সেক্ষেত্রে উক্ত বিষয়টির পরিষেবা দানকারী মানুষদের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হওয়া অস্বাভাবিক নয়। এক কালে গাঁয়ে কত ধরনের পেশার মানুষদের চোখে পোড়তো। কোন পেশা ছিল সম্বৎসরের,আবার কোন পেশা এককালীন।  সব পেশার লোকেরাই কত নিষ্ঠা ভরে গাঁয়ে  তাদের পরিষেবা দিত। বিনিময়ে সামান্য আয় হত তাদের। আর সেই আয়টুকুই ছিল  তাদের সংসার নির্বাহের একমাত্র উপায়। কালে কালান্তরে সেই সব পেশা,সেই সব সমাজবন্ধুরা হারিয়ে গ্যাছে। শুধুমাত্র তারা বেঁচে আছে অগ্রজের গল্পকথায়,আর বিভিন...

গ্রন্থ আলোচনা: শর্মিষ্ঠা দেবনাথ

প্রতিবাদ যখন অগ্নিবাণী বাংলাদেশে নারীমুক্তি ও নারী আন্দোলনের পুরোধা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ১৯৯তম জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদিত হল " আসিফা এবং.." কাব্য সংকলনটির মধ্যদিয়ে।সংকলনটির বিশেষত্ব হল,এটি উৎসর্গ করা হয়েছে নারীর সম্মান রক্ষার আন্দোলনের যোগ্যতম ব্যক্তি শহীদ শিক্ষক বরুন বিশ্বাসকে। সংকলক প্রকাশক সন্দীপ সাহু নিজে এবং বিশিষ্ট কবি সাহিত্যিকদের দিয়ে লিখিয়ে নিয়েছেন এমন কিছু কবিতা, যা শুধুমাত্র শব্দ ও ছন্দের অনুবন্ধ নয়, এক একটি অগ্নিবাণী।আসলে জীবনকে দেখার স্বাতন্ত্র‍্যে কবিরা সব সময়ই অগ্রগণ্য এবং অনন্য।যুগ ও জীবন দ্বন্দ্বের কণ্ঠস্বরকে আশ্রয় করে,একদিকে মনের প্রবল দাহ ও অন্যদিকে  নির্যাতিতা শিশুকন্যা ও নারীর প্রতি মনের গভীর আকুলতা থেকে প্রকাশ পেয়েছে "আসিফা এবং" এর  কবিতাগুলি।এক অন্ধকার সময়ের মুখোমুখি আমরা,সেই অন্ধকার আমাদের নিয়ে এসেছে সামাজিক অবক্ষয়ের শেষধাপে যেখানে নৈতিকতা,পাপবোধ,গ্লানিকে সরিয়ে রেখে, সমাজের বানানো নিয়মকে তোয়াক্কা না করে,অনায়াস দক্ষতায় ও ক্ষিপ্রতায় নিজেরই ধর্মচেতনাকে জলাঞ্জলি দিয়ে কিছু মানুষ তার পশুত্বের পরিচয় দিয়েছে ধর্ষণ ও ন...

শ্যামাপদ মালাকারের কবিতা

চোখ """"""" নদী, অরণ্য, রাতের ফালি চাঁদ- সবেই তো আমার...স্বর্ণপিঁড়িটাও!। সেদিন, শুকতারাটার গা' মাপতে গিয়ে মনে হল, --ওরা আমার চেয়েও সুখী? দেখিনা একবার গাইতি-শাবল চালিয়ে... চালালাম। জল-মাটি ভেজা একটা 'চোখ' কুড়িয়ে ফিরলাম! সেই চোখদিয়ে দেখি-- শেষ বিকেলের নিরন্ন আঁচে ঝলসানো বুকে নীড়ে ফিরছে ধূলিমাখা কত কাল পা, কি শান্তি - কি তৃষ্ণা! পাতাক্ষোয়া কোদালেরর মাথায় ঝরেপড়া ললাটের ঘামে, কারা যেন জীবন শাণ দেয়! রুক্ষঠোঁটের আবরণে এক সময় নেমে আসে শিশিরস্নাত কালনিশি-- মাঝের ব্যবধান মুছে দেয় প্রতিশ্রুতির ভীড়- - পূর্বজনমের নিদর্শনচুম্বন শেষে হেরে যায় কার মমতাজ-- ম্লান হয়ে যায় কত পিঁড়ি! ... ম্লান হয়ে যায় কত পিঁড়ি! ... ম্লা...

কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা: এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায় ।। পার্থ সারথি চক্রবর্তী

  কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা : এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায়  পার্থ সারথি চক্রবর্তী  কথায় বলে বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। রাজার শহর কোচবিহারের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা আরো অনেক বেশি। দুর্গাপূজা আর দীপাবলির মতো দু'দুটো বিরাট মাপের উৎসবের রেশ কাটতে না কাটতেই, এ শহর ভাসে রাস উৎসবের উন্মাদনায়। মদনমোহন ঠাকুর কোচবিহারের প্রাণের ঠাকুর। তাঁকে নিয়ে সবার আবেগ আর শ্রদ্ধা ও ভালবাসা এখানে বাঁধনছাড়া। এক অপূর্ব মিলনোৎসবের চেহারা নেওয়া এই উৎসব ঐতিহ্যবাহী ও ঐতিহাসিক। জন, মত, সম্প্রদায়ের উর্ধে এই উৎসবের গ্রহণযোগ্যতা। সময়ের কষ্টি পাথরে পরীক্ষিত! এক প্রাণের উৎসব, যা বহুদিন ধরেই গোটা উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ উৎসবে পর্যবসিত।কোচবিহারের এই রাস উৎসবকে কেন্দ্র করে যে মেলা হয় তাও সময়ের হাত ধরে অনেক বদলে গেছে। এসেছে আধুনিকতার ছোঁয়া! শৈশবে বাবার হাত ধরে যে মেলা দেখেছি তা চরিত্র ও আকৃতি দু'দিক থেকেই বদলে গেছে। গত পঁচিশ বছর ধরে খুব কাছে থেকে এই উৎসব ও মেলা দেখা, অনুভব করার সুযোগ হয়েছে। যা দিনদিন অভিজ্ঞতা ও প্রাপ্তির ঝুলিকে সমৃদ্ধ করে গেছে প্রতি ক্ষেত্রেই।  খুব সংক্ষেপে এই উৎসবের ইতিহাস না জানাটা কিন্তু অবিচারই ...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো,  তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) য...

মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা 2024 সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি (লেখক ও সম্পাদকীয় দপ্তরের কথোপকথন আকারে) --কী পত্রিকা? --নবপ্রভাত। --মুদ্রিত না অনলাইন? --মুদ্রিত। --কোন সংখ্যা হবে এটা? --বইমেলা 2024। --কোন কোন ধরনের লেখা থাকবে? --প্রবন্ধ-নিবন্ধ, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া। --বিশেষ কোন বিষয় আছে? --না। যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে। --শব্দ বা লাইন সংখ্যার কোন বাঁধন আছে? --না। নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো (যেমন, কবিতা 12-14 লাইনের মধ্যে, অণুগল্প কমবেশি 200/250শব্দে)। তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়। --ক'টি লেখা পাঠাতে হবে? --মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। --ফেসবুক বা অন্য কোন প্লাটফর্মে প্রকাশিত লেখা কি পাঠানো যাবে? --না। সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। --পত্রিকা কোন সময়ে প্রকাশিত হবে? --জানুয়ারি 2024-এর দ্বিতীয় সপ্তাহে। --লেখা পাঠানোর শেষতারিখ কত? -- 17 ডিসেম্বর 2023। --কীভাবে পাঠাতে হবে? --মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। --লেখার সঙ্গে কী কী দিতে হবে? --নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) --বিশেষ সতর্কতা কিছু ? --১)মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন '...

উৎসবের সৌন্দর্য: সেকালে ও একালে।। সৌরভ পুরকাইত

  উৎসবের সৌন্দর্য:  সেকালে ও একালে   সৌরভ পুরকাইত বাংলার উৎসব বাংলার প্রাণ। প্রতিদিনের জীবনযাপনের মধ্যে যখন মন ক্লান্ত হয়ে পড়ে তখন তাকে বেঁচে থাকার রসদ যোগায় এই উৎসব। কথায় বলে 'বারো মাসে তেরো পার্বণ'।মন আনন্দই চায়।তাই তাকে সজীবতা দিতে,পরিবারের,সমাজের ভালো-মন্দের কথা মাথায় রেখে মানুষ নিজেই সৃষ্টি করে নিয়েছে নানাবিধ উৎসবগুলিকে। একেবারে প্রাচীন কাল থেকে আজ পর্যন্ত মানুষ কখনোই উৎসব বিমুখ ছিল না।উৎসবই তাকে ঘর থেকে বাইরে টেনে এনেছে,চিনতে শিখিয়েছে আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার আনন্দকে। উৎসব আসলে প্রাণের সাথে প্রাণের যোগ, হৃদয়ের সাথে হৃদয়ের যোগ।রবীন্দ্রনাথ বলেছেন 'সত্য যেখানেই সুন্দর হয়ে প্রকাশ পায় সেইখানেই উৎসব'।হৃদয়ের সেই সুকোমল বৃত্তির জাগরণ যেন ফুটে ওঠা ফুলেরই মতো সত্য ও সুন্দর।এই জাগরণই উৎসব। তাই নানা কিছুর মধ্য দিয়ে,নানা উপলক্ষ্যে এই উৎসব প্রকাশ পায়। প্রাচীনকালে মানুষের হাতে না ছিল পসার, না ছিল পসরা।ছিল মনের আন্তরিকতা,মানুষকে কাছে টেনে নেবার ক্ষমতা।সেটাই ছিল উৎসবের সৌন্দর্য। তাই সেদিনের উৎসবে ক্ষুদ্র,তুচ্ছ উপকরণও প্রাণের উচ্ছ্বাসে মহৎ হয়ে উঠত।সেকালের উৎসবে লোক দেখানো ব্যাপার কিছু ...

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

বসন্তের কোকিল তুমি   বিচিত্র কুমার                      (০১) তোমার দু-আঁখির গহীন অরণ্যে একটা স্বপ্নের বহমান নদী রয়েছে, তারই রেশ ধরে আমি হেঁটে চলি অজানা বসন্তের পথে নীর উদ্দেশ্যে। সে চলার কোন শেষ সীমা নেই তাই আমার বিষণ্ণ একতারা সন্ন্যাস খুঁজে ফিরে , কবে তুমি বুঝবে অনুশ্রী মনের পর্দা খুলে একুশ বসন্ত তোমার রঙ ছিটিয়ে যাচ্ছে অচিনপুরে। এদিকে আমার দেহের প্রতিটি শিরা ধমনীতে প্রবাহিত হচ্ছে তোমার ভালোবাসার একটু উষ্ণতা পাবার জন্যে, শুধু অনুভবে তাণ্ডব উচ্ছাসিত হচ্ছে--- যেদিকে তাকাই --- ফুলে ফুলে ভ্রমর গুনগুনিয়ে উড়ে উড়ে পরে বসন্তের কোকিল গান গায় নব বসন্তে, তোমার দুই চোখে আমার একই ছায়া রয়ে যায় উতলা ভালোবাসার সীমান্তে।                 (০২)        এক রক্তাক্ত বসন্তের স্মৃতি কোন এক উতলা বসন্তের সকালে পুষ্পবনে ফুটেছিল একটি টকটকে লাল গোলাপ, তার সাথে হয়েছিলো দেখা প্রথম ফাগুনে হয়েছিল দুজনার এ জীবনের আলাপ।  তারপর প্র...

অনুভবে, অনুধ্যানে অনালোকিত কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী ।। সুপ্রিয় গঙ্গোপাধ্যায়

"এ কালে একটু লেখাপড়া জানা থাকাতে, এবং বঙ্গভাষায় অনেক গুলি পাঠ্য পুস্তক হওয়াতে কেবল পরনিন্দা করিয়া সময় কাটাইতে তাঁহাদের আবশ্যকও হয় না, প্রবৃত্তিও হয় না। …নিতান্ত সখ্যতা বা আত্মীয়তা না থাকিলে, সকল পেটের কথা খুলিয়া নিঃশ্বাস ছাড়িয়া তৃপ্তিলাভ করা, এ কালের মেয়েরা পছন্দ করেন না। তাঁহারা বইখানি, কার্পেটটুকু, নিজের স্বামী পুত্র লইয়া দিন যাপন করিতে বা একেলা থাকিতে কষ্ট বোধ করেন না।" —শরৎকুমারী চৌধুরাণীর এই লেখা (ভারতী ও বালক/ আশ্বিন কার্তিক, মাঘ/ ১২৯৮) দেখে বুঝতে অসুবিধা হয় না উনিশ শতকে নারীর লেখাপড়া শেখার উদ্দেশ্য ছিল মূলত আত্মমুক্তির জন্য। শুধু লেখাপড়া শেখা নয়, সাহিত্য সৃষ্টিতেও ছয়'এর দশক (উনিশ শতকের) থেকে নারীরা যে ধারা সূত্রপাত করেছিল তা নারীর আত্মমুক্তির পথকেই প্রসারিত করেছিল। ছয়'এর দশকের পূর্বেই ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে প্রথম ছাপার হরফে নারী রচিত কাব্য 'চিত্তবিলাসিনী' প্রকাশিত হয়। লেখেন কৃষ্ণকামিনী দাসী। ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে কবি ঠাকুরাণী দাসীর নাম উঠে আসতে থাকে, যিনি কবিতার পাশাপাশি গদ্যও লিখতেন। ঠিক সেই বছরই জন্মগ্রহণ করেন কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী, যাঁর কবিতা লেখা আত্মমুক্...

বছরের বাছাই

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৪তম সংখ্যা ।। ফাল্গুন ১৪৩১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

  এই সংখ্যায় একটি গ্রন্থ আলোচনা ও একটি ধারাবাহিক রচনা ছাড়া সব লেখাই ভাষা দিবস, মাতৃভাষা, ভাষাচেতনা ও ভাষা সমস্যা বিষয়ক রচনা। লেখাগুলি এই সংখ্যাকে অনেকটাই সমৃদ্ধ করেছে। পড়ুন। শেয়ার করুন। মতামত জানান। লেখকগণ নিজের নিজের লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন যতখুশি, যে মাধ্যমে খুশি। কিন্তু স্ক্রিনশট শেয়ার নৈব নৈব চ!  অন্য বিষয়ের লেখাগুলি আগামী সংখ্যার জন্য রইল।  সকলকে ধন্যবাদ, অভিনন্দন। ভালো থাকুন।   --সম্পাদক, নবপ্রভাত। ==  সূ  চি  প  ত্র  == প্রবন্ধ-নিবন্ধ অমর ২১শে ফেব্রুয়ারি বাঙ্গালীর বাংলা ভাষা দুর্জয় দিবস।। বটু কৃষ্ণ হালদার ভাষা শহীদদের পঁচাত্তর বছর।। অনিন্দ্য পাল একুশে ফেব্রুয়ারি : বাঙালির শ্রেষ্ঠ অশ্রুবিন্দু।। জীবনকুমার সরকার কবিগানের সাহিত্যিক ও সমাজতাত্ত্বিক মূল্য।। বারিদ বরন গুপ্ত বিপন্ন মাতৃভাষা ও সংস্কৃতি।। শ্যামল হুদাতী মায়ের দুধ আর মাতৃভাষা।। প্রদীপ কুমার দে একুশে ফেব্রুয়ারি : কিছু কথা।। বনশ্রী গোপ বাংলায় কথা বাংলায় কাজ।। চন্দন দাশগুপ্ত বিপন্ন মাতৃভাষা ও তার মুক্তির পথ।। মিঠুন মুখার্জী. হে অমর একুশে, তোমায় ভুলিনি, ভুলব না।। মহম্মদ মফিজুল ইসলা...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৭তম সংখ্যা ।। জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ মে ২০২৫

  প্রচ্ছদ চিত্র: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সূচিপত্র রবীন্দ্রনাথ এবং কয়েকজন নারী ।। অনিন্দ্য পাল পরাবাস্তববাদ ও বাংলায় জীবনানন্দের কাব্যচর্চা ।। রণেশ রায় প্রতীক্ষা ।। চন্দন দাশগুপ্ত আশ্রয় ।। সায়নী সাহা বয়স্ক শিক্ষাকেন্দ্র ।। দেবাংশু সরকার প্রণামের প্রভু ।। সুপ্রভাত মেট্যা দুর্ভাগ্যের সম্মুখ সমরে ।। সমীর কুমার দত্ত আচমকা শরৎ ।। অর্ণব সামন্ত প্রতিধ্বনি ✍️ সুবীর কুমার ঘোষ জীবন যেখানে যেমন ।। আরজু মুন জারিন বছর সীমান্তে হিসেব নিকেশ ।। রানা জামান চারটি কবিতা ।। বিবেকানন্দ নস্কর আমরা আছি ।। লালন চাঁদ চাওয়া ।। মাথুর দাস কাগজ ফুলে ।। সফিউল মল্লিক সময়ের স্রোত ।। দুর্গাদাস মিদ্যা তুমি মানুষ ।। বদরুল বোরহান দিঘার সমুদ্র ।। মাখনলাল প্রধান পুস্তক-আলোচনা ।। অরবিন্দ পুরকাইত সংযম ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত  চেনা প্রতিবেশী (প্রথম পর্ব) ।। দীপক পাল খেলার মাঠ ।। তূয়া নূর বন্ধু শ্যামলকান্তি ।। শংকর ব্রহ্ম তুমি তোমার মতো থাকলে ।। সত্যেন্দ্রনাথ বেরা গ্রীষ্মে খুবই হিংস্র রবি ।। জগবন্ধু হালদার স্বপ্ন দর্শন ✍️ পার্থ প্রতিম দাস মৌন মুখরতা ।। মুসা মন্ডল রুদ্র বৈশাখ ।। দীনেশ সরকার চিহ্নিত পদযুগ পদাঘাত ।। দেবাশীষ...

প্রচ্ছদ।। ৮৩তম সংখ্যা ।। মাঘ ১৪৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ।। প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র

  বিঃ দ্রঃ আগামী ফেব্রুয়ারি সংখ্যার জন্য ভাষা দিবসের কথা মাথায় রেখে লেখা পাঠান। email: nabapravatblog@gmail.com  সূচিপত্র ফিচার।। গোপাল ভাঁড়ের অজানা সত্য ।। লোকনাথ পাল প্রবন্ধ ।। মসুয়ার রায় পরিবার এবং বঙ্গসংস্কৃতি ।... প্রবন্ধ ।। সুধীন্দ্রনাথ দত্ত: কাব্যের দার্শনিক ও ন... কবিতায় সেতুবন্ধন (তৃতীয় অংশ) শিল্পবিপ্লবোত্তর কাল... রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর বিদ্রোহী প্রেমের কবিতা: ... কবিতা ।। এই মন ভালো নেই দিনে ।। সুপ্রভাত মেট্যা কবিতা ।। জোছনা আলোর স্বপ্ন ।। তুষার ভট্টাচাৰ্য কবিতা ।। নিঃস্ব হবো ।। লালন চাঁদ কবিতা ।। ভালোলাগা  ।। আজিজ উন নেসা  গল্প ।। স্বীকারোক্তি ।। চন্দন দাশগুপ্ত কবিতা ।। শীতের দিন ।। প্রশান্ত কুমার মন্ডল কবিতা ।। শীতকাল ।। অঙ্কিতা পাল নাসির ওয়াদেনের দুটি কবিতা ভূতের লেখা ছড়া ।। বদরুল বোরহান কবিতা ।। ব্যস্ত ।। আলাপন রায় চৌধুরী ছোটগল্প ।। লম্বুর স্বপ্নপূরণ ।। পরেশ চন্দ্র মাহাত কবিতা ।। সৎকার ।। সুমিত মোদক কবিতা।। শীত বৈচিত্র্য ।। সুমিতা চৌধুরী পুস্তক-আলোচনা ।। নিউটনের আপেল ও প্রেমিকা ।। অরবিন্... গল্প।। শান্তির পথে …...।। বন্দনা সেনগুপ্ত কবিতা ।। মা...

সূচিপত্র ।। ৮৯তম সংখ্যা ।। শ্রাবণ ১৪৩২ জুলাই ২০২৫

সূচিপত্র   প্রবন্ধ ।। বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় ।। মাখনলাল প্রধান প্রবন্ধ ।। শ্রমিকের অধিকার ।। চন্দন দাশগুপ্ত প্রবন্ধ ।। ভিনগ্রহীদের সন্ধানে ।। শ্যামল হুদাতী প্রবন্ধ ।। নারীমর্যাদা ও অধিকার ।। হিমাদ্রি শেখর দাস কবিতা ।। মশালের রং তুলি ।। তূণীর আচার্য কবিতা ।। জললিপি ।। রূপক চট্টোপাধ্যায় গুচ্ছকবিতা || শিশির আজম নিবন্ধ ।। পূনর্জন্ম ।। শংকর ব্রহ্ম মুক্তভাবনা ।। কোলাহল তো বারণ হলো ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত গল্প ।। গানের হাড় ।। শুভজিৎ দত্তগুপ্ত গল্প ।। শিকড়ের খোঁজে ।। সমীর কুমার দত্ত সুপ্রভাত মেট্যার পাঁচটি কবিতা গ্রন্থ-আলোচনা ।। আবদুস সালামের কাব্যগ্রন্থ 'অলীক রঙের বিশ্বাস'।। তৈমুর খান অণুগল্প ।। হরিবোল বুড়ো ।। সুমিত মোদক রম্যরচনা ।। গোয়েন্দা গোলাপচন্দ আর প্রেমের ভুল ঠিকানা ।। রাজদীপ মজুমদার দুটি গল্প ।। মুহাম্মদ ফজলুল হক দুটি কবিতা ।। তীর্থঙ্কর সুমিত কবিতা ।। মেঘমুক্তি ।। বন্দনা পাত্র কবিতা ।। ব্যবচ্ছিন্ন শরীর ।। কৌশিক চক্রবর্ত্তী কবিতা ।। শমনচিহ্ন ।। দীপঙ্কর সরকার কবিতা ।। ভালোবাসার দাগ ।। জয়শ্রী ব্যানার্জী কবিতা ।। ফণীমনসা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ছড়া ।। আজও যদি ।। বদ্রীন...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬

  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠালে  অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে হলে ভালো। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # ...

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ৮৬তম সংখ্যা ।। বৈশাখ ১৪৩২ এপ্রিল ২০২৫

সম্পাদকীয় এই সংখ্যাটি বাংলা নববর্ষ বিষয়ক সংখ্যা। নৱৰ্ষকেন্দ্রিক বহু তথ্যপূর্ণ লেখা এই সংখ্যাটিকে সমৃদ্ধ করেছে। বাংলা নববর্ষ উদযাপনের ইতিহাস, রীতিনীতি, উৎসব, পার্বন, লোকাচার, রূপান্তর বহুবিধ বিষয় প্রকাশিত হয়েছে এই সংখ্যার লেখাগুলিতে। এই সংখ্যার বাছাই কিছু লেখার সঙ্গে আগামীতে আরও কিছু লেখা সংযুক্ত করে বাংলা নববর্ষ বিষয়ক একটি মুদ্রিত সংখ্যা প্রকাশ করার ইচ্ছে রইল।  সকলকে নববর্ষের আন্তরিক শুভকামনা জানাই। উৎসবে আনন্দে থাকুন, হানাহানিতে নয়। ধর্ম-ব্যবসায়ীদের চক্রান্ত ব্যর্থ করে সহনাগরিকের পাশে থাকুন। মনে রাখুন, ধর্মকে মানুষই সৃষ্টি করেছে। ঈশ্বর আল্লা গড ইত্যাদির জন্মদাতা মানুষই। মানুষকে ভালোবাসুন। মানুষের পাশে থাকুন।  নিরাশাহরণ নস্কর  সম্পাদক, নবপ্রভাত।  সূচিপত্র প্রবন্ধ-নিবন্ধ-স্মৃতিকথা পয়লা বৈশাখ ।। সিদ্ধার্থ সিংহ নববর্ষকেন্দ্রিক মেলা, পার্বন, উত্সব, লোকাচার ।। সবিতা রায় বিশ্বাস নববর্ষ আবাহন ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে এবং বিভিন্ন দেশে ।। তুষার ভট্টাচার্য নববর্ষের সেকাল ও একাল ।। হিমাদ্রি শেখর দাস নববর্ষের হাল-হকিকৎ ।। শংকর ব্রহ্ম বোশেখি বাঙালি নাকি পোশাকি বাঙালি? ।। দিব্যেন্দু...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। নবপ্রভাত ৮৫ ।। চৈত্র ১৪৩১ মার্চ ২০২৫

  সূচিপত্র নিবন্ধ ।। মরিয়ম মির্জাখানি: এক অনন্য গণিতসূর্য ।। ... নিবন্ধ ।। নারী দিবসে যা ভাবা উচিত ।। বিশ্বনাথ পাল প্রবন্ধ ।। প্রাচীনকাল থেকে নারীরা অবহেলিত, বঞ্চিত,... নিবন্ধ ।। আমার চোখে আদর্শ নারী ।। জয়শ্রী বন্দ্... ফিচার।। এই মুহূর্তে বাংলা সাহিত্যে নারীদের লেখালেখ... আফ্রিকার লোককথা ।। করোটিকে বিয়ে করা অবাধ্য মেয়েটি ... ছোটগল্প ।। মানবী ।। ভুবনেশ্বর মন্ডল নিবন্ধ ।। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে অন্যতম নারী মু... নিবন্ধ ।। প্রিয় মহিলা সাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবী ।। ... গল্প ।। উই ওয়ান্ট জাস্টিস ।। রবীন বসু প্রবন্ধ ।। নিপীড়িতা ।। শ্যামল হুদাতী ফিচার ।। রমণী রতন ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত প্রবন্ধ ।। নারী সমাজ : তখন-এখন ।। তপন মাইতি নিবন্ধ ।। বহমান কালের ধারায় নারী ।। দীপক পাল গল্প ।। আমার দুর্গা ।। অঞ্জনা গোড়িয়া (সাউ) গল্প ।। যোগ্য জবাব ।। সমীর কুমার দত্ত ছোটগল্প ।। আমি দুর্গাকে দেখেছি।। চন্দন দাশগুপ্ত গল্প ।। সম্পর্ক ।। গৌতম সমাজদার কবিতা।। নারী মানে ।। গোবিন্দ মোদক কবিতা।। নারী ।। সমর আচার্য্য ছড়া ।। নারী অসামান্যা ।। সৌমিত্র মজুমদার কবিতা ।। নারী দিবসে ।। বিবেকানন্দ নস্কর কবিতা ।। না...

প্রবন্ধ ।। বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় ।। মাখনলাল প্রধান

বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় মাখনলাল প্রধান বাংলার শিল্প-সংস্কৃতির জগতে যাত্রা শিল্প তথা নাট‍্যশিল্পে মড়ক নেমে এসেছে । যাত্রা শিল্পের মড়কে শুধু কোভিড নয় তার বহুপূর্ব থেকেই অর্থনৈতিক বিপর্যয় , শিক্ষাক্ষেত্রে বন্ধ‍্যাত্ব এবং গ্ৰাম বাংলার পটপরিবর্তন শেষ পেরেক ঠুকে দিয়েছে। যাত্রা-শিল্পের লীলাভূমি ছিল গ্ৰাম বাংলা। গ্ৰামে প্রচুর যাত্রাপালা হত নানা উৎসবকে কেন্দ্র করে । জমিদারি ব‍্যবস্থা লুপ্ত হওয়ার পর গ্ৰামীণ মানুষের উদ‍্যোগে শীতলা পূজা,  কালীপূজা, দুর্গাপূজা, কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা, চড়ক ইত‍্যাদিকে উপলক্ষ‍্য করে যাত্রাপালার আয়োজন না হলে কেমন যেন ম‍্যাড়ম‍্যাড়ে লাগতো। সেই সঙ্গে কলকাতার বড়বড় কোম্পানির যাত্রাপালা ঘটা করে, টিকিট সেল করে হত মাঠে। খুব বড় মাপের খেলার মাঠ যেখানে ছিল না সেখানে ধানের মাঠ নেওয়া হত ‌। ত্রিশ-চল্লিশ হাজার মানুষ দেখতে আসত। স্পেশাল বাস পাঠাত  আয়োজক কর্তৃপক্ষ। বিনা ভাড়ায় বাসে যাতায়াত করত যাত্রার দর্শকেরা। কিন্তু বিকল্প ধানচাষ শুরু হলে জমিগুলো সময় মতো ফাঁকা পাওয়া গেল না । প্রথম দিকে ব‍্যাপকহারে ধান শুরু না হওয়ায় খুব একটা অসুবিধা হত না। বহুক্ষেত্রে  ধান কা...

প্রবন্ধ ।। ভিনগ্রহীদের সন্ধানে ।। শ্যামল হুদাতী

ভিনগ্রহীদের সন্ধানে  শ্যামল হুদাতী  ইতিহাসের শুরু থেকে বারবার মানুষকে একটা প্রশ্ন কুঁড়ে কুঁড়ে খায় – এই মহাবিশ্বে আমরা কি একা? পৃথিবীর মতো আরও গ্রহ রয়েছে, যেখানে মানুষের মতো বুদ্ধিমান প্রাণীরা বাস করে – এই সম্ভাবনা বরাবর মানুষকে মুগ্ধ করেছে। আমাদের প্রত্যেকের জীবনের কখনও না কখনও এই ভাবনা এসেছে। দীর্ঘ কয়েক দশকের গবেষণার পরও, এই বিষয়ে কোনও নিশ্চয়তা দিতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। জেমস ওয়েব মহাকাশ টেলিস্কোপ, বহু দূরের এমন কিছু গ্রহের সন্ধান দিয়েছে, যেগুলিতে প্রাণ থাকতেই পারে। তবে, নিশ্চিত কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে, আমেরিকার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাম্প্রতিক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, ভিনগ্রহীদের খুঁজতে বহু দূরে যাওয়ার কোনও দরকার নেই। তারা এই পৃথিবীতেই মানুষের ছদ্মবেশে মানুষের মধ্যেই বসবাস করতে পারে। আমরা ভিনগ্রহীদের যেমন কল্পনা করি, এরা তার থেকে আলাদা। এরা অনেকটাই, দেবদূতদের মতো। মানব জগতের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক প্রযুক্তিগত নয়, বরং জাদুকরি। মহাকাশে সৌরজগতের গ্রহ পৃথিবী ছাড়া অন্য কোথায় প্রাণ রয়েছে কি না তা নিয়ে চলছে বিস্তর গবেষণা। একই সঙ্গে পৃথিবী ছাড়া অন্য কোনো গ্রহে মানুষ বসবাস ক...

প্রবন্ধ ।। নারীমর্যাদা ও অধিকার ।। হিমাদ্রি শেখর দাস

নারীমর্যাদা ও অধিকার হিমাদ্রি শেখর দাস  নারীর মর্যাদা বলতে বোঝায় নারীর সম্মান, অধিকার, এবং তার ব্যক্তিগত স্বাধীনতা। এটি সমাজে নারীর অবস্থান এবং তার প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গিকে নির্দেশ করে। নারীর প্রতি সম্মানজনক আচরণ করা হয় এবং তাদের অধিকার গুলি সুরক্ষিত থাকে। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে এই শ্রেণি সংগ্রাম শুরু হয়েছিল অনেক আগে।  একদিকে শ্রেণী বৈষম্য অপরদিকে নারী পুরুষের বৈষম্য এই দুটি ছিল শ্রেণীবিভক্ত সমাজের অন্যতম দুটি মূল ভিত। নারীর অধিকারহীনতা বা দাসত্ব শুরু হয় পরিবার ও সম্পত্তির উদ্ভাবনের ফলে। বহু যুগ ধরে নারী সমাজকে পারিবারিক ও সামাজিক দাসত্বের বোঝা বহন করতে হয়েছে বিনা প্রতিবাদে। সভ্যতার ক্রম বিকাশের সাথে সাথে নিপীড়ন ও নির্যাতনের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে - দাস সমাজব্যবস্থা এবং সামন্ততান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় নারীরা পুরুষ ও পরিবারের অধীনতা স্বীকার করে নিতে বাধ্য হয়েছে। সামাজিক উৎপাদনের কাজে নারীদের বঞ্চিত রেখেই তাদের পরাধীন জীবন যাপনের মধ্যে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। নারীর অধিকারহীনতার বিরুদ্ধে সংগ্রামের সূচনা হয় ইংল্যান্ডের শিল্প বিপ্লবের পরবর্তী সময়ে। নতুন করে নারীদের সামাজিক উৎপাদনের কাজে ...

মাসের বাছাই

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬

  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠালে  অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে হলে ভালো। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # ...

গল্প ।। জাতিস্মর ।। আশীষ কুমার বিশ্বাস

    জাতিস্মর   আশীষ  কুমার   বিশ্বাস    গল্পের শুরুটা প্রায় ষাট বছর আগের কথা । যার নাম গৌতম, ডাক নাম ছিল বাবু ।  তার বছর তখন ছয়-সাত হবে । আমরা বা আমি তখন একটু বড় । এক সাথেই চলতো খেলা । গোল্লা ছুট, দাঁড়িয়া বান্দা, চোর-পুলিশ । যে মাঝে মাঝে খেলা থেকে বিরত থাকতো ; সে-ই জাতিস্মর । মাঠের পাশেই ছিল একটা খেঁজুর গাছ । তাতে হাত রেখে দূরের এক গ্রামের দিকে এক মনে তাঁকিয়ে থাকতো "বাবু" । গ্রামটির নাম "বিনয় পল্লী " । মাঝে বড়ো মাঠ । হাঁটা শুরু করলে তিরিশ - চল্লিশ মিনিট লাগবে । মাঝে জলে ভরপুর দেখে কখনো যাওয়া হয়নি । বাবু কে যখন বলতাম, ওপারে কি দেখছিস? ও বলতো, ওখানে আমার ছোট মা থাকে, দিদি থাকে, আমার ভুলু কুকুর থাকে । এ কথা আমাদের বিশ্বাস হতো না । আবার খেলায় ফিরে যেতাম, খেলতাম ।  কিন্তু ও বসে বসে , ওপারের গাছ পালা , বাড়ি ঘর দেখতো । কাছে গেলে বলতো , ওই যে সবুজ ,কচি কলাপাতা রঙের দালান বাড়ি, ওটাই আমাদের বাড়ি !  এই ভাবে মাস ছয়, বছর গড়াতে লাগলো । মনে প্রশ্ন জাগতে লাগলো, এ টা কি মন গড়া , বা বানিয়ে বানিয়ে বলছে? সত্যি প্রকাশ হোল এক দিন ।  সে বাড়িতে কিছু ...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯৩তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩২ নভেম্বর ২০২৫

সূচিপত্র বস্তু, চেতনা এবং কবি ।। সজল চক্রবর্তী দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত ।। রণেশ রায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট ও সন্নিহিত অঞ্চলের কথ্য শব্দ ।। অরবিন্দ পুরকাইত চাঁদে জীবন ।। শমীক সমাদ্দার অসমাপ্তি ।। মহুয়া হুই গ্যালাক্সির শব্দে ।। জাসমিনা খাতুন তিনটি কবিতা ।। দিবাকর সেন অপূর্ণতার শেষ অধ্যায় ।। সুপ্রিয় সাহা হাফ ডজন ছড়া ।। স্বপনকুমার পাহাড়ী স্বাপ্নিক অমলের ঘুৃম ।। সঞ্জয় দেওয়ান দুটি কবিতা ।। সৌমিত্র উপাধ্যায় পথ চলতি ✍️পার্থ প্রতিম দাস হেমন্তের বিষাদ ছুঁয়ে ।। শক্তিপদ পাঠক রাই আর বাবা ।। অদিতি চ্যাটার্জি স্থিতিশীল ।। রঞ্জিত মুখোপাধ্যায় হৃদয়ের শূন্য কোড ।। লিপিকা পিঙ্কি দে অমানিশা ।। সৌভিক মুখার্জী দৃষ্টিগত ।। শামীম নওরোজ জ্যান্ত ভূতের গপ্পো ।। পার্থ সারথি চট্টোপাধ্যায় ধুতরা ফুলের ঘ্রাণ ।। মজনু মিয়া তারা খসার আলোয় ।। তীর্থঙ্কর সুমিত উত্তরণে অন্তরায় ।। সমীর কুমার দত্ত প্রেম মুদ্রা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ধারা ।। লালন চাঁদ অন্যের ব্যথায় ব্যথি ।। জগদীশ মণ্ডল গর্ভ ।। শাশ্বত বোস ভ্রমণ বিষয়ক স্মৃতিকথা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত শাপে বর ।। সাইফুল ইসলাম রবিবার ।। সঙ্ঘমিত্রা দাস দুটি ...

কবিতা ।। ভাষার জন্য লড়াই ।। চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু

ভাষার জন্য লড়াই চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু মুখের ভাষা বাংলা ভাষা মাকে ডাকি মা, সারা বিশ্বে তোমার মাগো নেই তো তুলনা। তোমার মুখের প্রথম ভাষা আমার মনের সকল আশা তোমার ভাষায় বলবো মাগো আমার মনের কথা, এই ভাষাতেই জড়িয়ে আছে সকল স্বাধীনতা।  এই ভাষাকে আনতে গিয়ে তাজা বুকের রক্ত দিয়ে রাজপথে সব লড়াই হলো করলো লড়াই কারা, আমার মায়ের দামাল ছেলে রক্ত পলাশ যারা।  তোমার ছেলে লড়াই করে আনলো ভাষা ঘরে ঘরে সেদিন থেকে শহীদ মিনার সাজাই ফুলে ফুলে, বীর শহীদের ত্যাগের কথা যাইনি আজও ভুলে।    ++++++++++++++++++++++++++++++++    চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু শহীদ আবুল কাশেম সড়ক, বড় বাজার, চুয়াডাঙ্গা, বাংলাদেশ।

চিরকুটের কবিতা

নতুন পৃথিবী আজ সকালে রোদ্দুর নামুক ভেজা বর্ষার মতো গা ধুয়ে কিছুটা পবিত্র হবো যত জীর্ণ মলিন দ্বেষ বিলীন হোক সব সময়ের তটে গা ভাসিয়ে কিছুটা বিলাসী হবো যা ছিল অতীত যা ছিল কষ্ট সবকিছু ভুলে নবীনে ব্রতী হবো আসুক ধেয়ে সতেজ হাওয়া দূর হোক যত কুণ্ঠা ব্যথা পুরানো যত বিবাদ ভুলে ভালোবাসার আবার বেড়া দেবো কিছুটা আশাবাদী কিছুটা কর্মঠ কিছুটা জেদি কিছুটা শপথ আসুক ছুঁয়ে বাঁচার আলো হাতে হাত রেখেই বিশ্বাসের ঘরে আবার নতুন দীপ জ্বালাবো

কবিতা ।। মনোজকুমার রায়

জল সিঁড়ি চেক বইয়ের পাতা ফুরিয়ে যেতে থাকে -- ঝরে পড়ে বৃদ্ধ গাছটির পত্রমুকুল কাঁচা গন্ধ বেয়ে চলে সময়ের স্রোতে  সারা ভোর জেগে থাকি ঘুমের টলে তাড়া দেয় একগ্রাস অবিশ্বাসী বায়ু দিন ফুরনো লাল সূর্যের টানে নেমে আসে পাড় ছোঁয়া জল সিঁড়ি ================= মনোজকুমার রায় দঃ ঝাড় আলতা ডাউকিমারী, ধূপগুড়ি জলপাইগুড়ি -৭৩৫২১০ মো ৭৭৯৭৯৩৭৫৬৬

উন্মুক্ত পাগলামি ।। আশরাফুল মণ্ডল

উন্মুক্ত পাগলামি আশরাফুল মণ্ডল আহা, অপরূপ নিজস্বতার দাহ! কুঁকড়ে যায় আবহমান, সজনে পাতার বোঁটায়! ভাপওঠা ভাতের কাছে মাছি সত্তায় কী নিপুণ! তবুও ঘোর লাগা বসন্তের ডাক, হাঁকে! খেদিয়ে দেয় পা দোলানো প্রস্তাব, ওই ধুনুরি চোখ! রাংতায় মোড়া ডাকের সাজ, দে দোল দোল! হুইসেল বাজিয়ে কে রুখে দ্যায় সেই নাকছাবির রুদালি কাঁপন! খালবিল ছেঁচে পাঁচসিকের  মানত কুড়িয়ে আনে, বাংলা বাজার। ঠ্যাং নাচানো সুরে চোখ মারছে, দ্যাখো ভ্যানতারা! মুখ খোলা মানেই পাঁজরের স্রোত ভাবা যেন উগরানো টালমাটাল! ঢিল মারা প্রশ্নের রোয়াকে বক্রচোখে যেন মেধাবী কবিতা! মুছে দিও তবে লাজুক গুপ্ত রোগ, দিনরাত্রি! ভালো থেকো তোমরা বাছাধন, রং মাস সে আর কতদিন... ================    ASRAFUL MANDAL Chandidas Avenue, B-zone, Durgapur, Paschim Bardhaman, Pin - 713205,  

কবিতা ।। রঙ ।। ইউসুফ মোল্লা

  রঙ  ইউসুফ মোল্লা সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি,  পৃথিবী নানা রঙে সেজে উঠেছে।  ধূসর বাদামী রঙ তোমার দেহ,  মাথায় সবুজ রঙের বাবরি চুল,  তাতে গুঁজে রেখেছো লাল-নীল ফুল।  নববধূর মতো সিঁথিতে দিয়েছো সিঁদুর,  চোখে দিয়েছো কাজল।  দিগন্তভরা আকাশ তোমাকে নীল উপহার দিল,  সূর্যের লাল আলো তোমাকে সুন্দর করেছে।  তুমি তাদের ফিরিয়ে দিলে, বুকভরা ভালোবাসা আর স্নেহ।  মাঝে মাঝে এইভাবে হোলি আসে,  আমার মনকে রাঙিয়ে দিতে। ------------------    ইউসুফ মোল্লা উত্তর অঙ্গদ বেড়িয়া, ট্যাংরাখালী, ক্যানিং,  দক্ষিণ ২৪ পরগনা, ৭৪৩৩২৯

চন্দন সুরভি নন্দর কবিতা

টাকার মেশিন                      মায়ের ওষুধ নিয়ে শহর থেকে ফিরল রতন সবে সন্ধ্যা নেমেছে  রাস্তায় আলো কম হাসপাতাল অনেক দূরে  অদৃশ্য যম খেলাকরে  মৃত্যুর সীমান্তে শায়িত মা   শেষ রক্ষা হল না  আস্তে আস্তে ভোরের আলো ফোটে রাতের আঁধারে ঘরের দেওয়াল গুলো রাঙিয়ে গেছে কারা  তুলেছে রং বেরং এর তোরন  এসেছে নির্বাচন  শোনাযায় এবার নাকি এ টি এম চিহ্নে দাঁড়িয়েছে একজন! টাকার মেশিন........  জিতলে সবাইকে দেওয়া হবে! সামনে বসে উল্লাসে ফেটে পড়া রোবট গুলো মানুষ কবে হবে?  ====================== Chandansuravi Nanda Revenue Office  BL&LRO,Manbazar-ll Boro Purulia PIN-723131 Phone-9163332432

ছোটগল্প ।। নীলিমার আত্মজাগরণ ।। পরেশ চন্দ্র মাহাত

নীলিমার আত্মজাগরণ পরেশ চন্দ্র মাহাত নীলিমা মাহাত, বয়স পঁচিশ প্লাস —তার বাবা মায়ের পঞ্চম তথা শেষ সন্তান। দুই দাদা —বড়দাদা শঙ্কর ও ছোটদাদা বিজয়। বড় দাদা শঙ্কর আর দুই দিদি তাদের কিন্তু বিয়ে হয়ে গেছে। একমাত্র নীলিমা আপাতত স্বামীর কোমল হাতের স্পর্শ ও সহানুভূতি থেকে বঞ্চিত এবং আদৌ কবে অথবা সেই সৌভাগ্য আসবে সেটা ঈশ্বরের নিকটই একমাত্র জ্ঞাত। সেই সঙ্গে দুবছরের সিনিয়র ছোটদাদা বিজয়েরও নীলিমার মতো অবস্থা। তারও জীবনসঙ্গিনী জুটেনি। মোট সাতজন সদস্য নিয়ে গঠিত সংসার নীলিমাদের পরিবার। মধ্যবিত্ত পরিবার —মধ্যবিত্ত পরিবার না বলে যদি নিম্নবিত্ত বলা হয় তবুও কোনো অত্যুক্তি করা হয় না। বাবার প্রত্যেকদিনের আয়ের উপর ভিত্তি করেই চলে সংসার। এই কঠোর এবং কঠিন পরিস্থিতিতেও নীলিমার মা শ্রীমতী মেনকা‚ সংসার সামলে তার ছেলেমেয়েদের পড়াশুনার প্রতি যথেষ্ট তৎপর ও সহানুভূতিশীল। তাদের পড়াশুনায় কোনো খামতি রাখেননি। যথা সময়ে তাদেরকে বিদ্যালয়ের মুখ দেখিয়েছে – টিউশনের বন্দোবস্ত করেছে। তাদের জীবন যাতে সুখকর হয় সেটাই প্রতিদিন ভগবানের কাছে প্রার্থনা করেছে। পাঁচ-পাঁচটি ছেলেমেয়ের মধ্যে সবাইকে উচ্চশিক্ষিত করে তোলা একপ...