Skip to main content

গল্প ।। অন্তিম স্বীকারোক্তি ।। বিতস্তা বোস

nabapravat

অন্তিম স্বীকারোক্তি

বিতস্তা বোস


"আসবো ম্যাম?"— কনস্টেবল নন্দীর গলা পেয়ে ফাইল গুলোর থেকে মাথা তুলে তাকালো বন্থিশিখা।
"ইয়েস প্লিজ"— গম্ভীর গলায় বললো সে।
কনস্টেবল নন্দী বন্থিশিখার রুমে ঢুকে এসে ওর সামনে টেবিলের উপর একটা বড় সাদা কাগজ রাখলো।
বন্থিশিখা কাগজটা হাতে নিতে নিতে বললো—"অবশেষে তাহলে বিশ্বাসঘাতকতাটা কে করল শুনি!"
কনস্টেবল নন্দীও বিন্দু মাত্র সময় নষ্ট না করে বলে উঠলো—"ওই যে ম্যাম, শেষ যে দুটো ছেলেকে নেপাল বর্ডার থেকে ধরা হলো তাদের মধ্যেই একজন। সে বলেছে সে মাত্র একবারই দেখেছে লোকটিকে, তাও নাকি দরজার আড়াল থেকে। ওর দেওয়া বর্ণনা শুনেই কোনরকমে আমাদের আর্টিস্টকে দিয়ে আঁকিয়েছি এই ছবিটা।"
বন্থিশিখা কাগজে আঁকা ছবিটার দিকে তাকিয়ে শান্ত স্বরে বললো— "লোকটা ছদ্মবেশে ছিল। এই ছদ্মবেশের আড়ালে লুকিয়ে থাকা আসল লোকটাকে খুঁজে বের করা কিন্তু অতটাও সহজ কাজ হবেনা আমাদের জন্য।" তারপর একটু থেমে বললো— "আচ্ছা আপনি এখন আসুন। আমি দেখি এই ছবিটা দিয়ে আসল লোকটার কোনো ট্রেস পাওয়া যায় কিনা!"
বন্থিশিখা, এস.পি. বন্থিশিখা লাহিড়ী, বিশেষ তদন্তকারী অফিসার হিসেবে মাস দুয়েক হলো আলিপুরদুয়ারে বদলি হয়ে এসেছে। বেশ কয়েকমাস ধরে ডুয়ার্স-এর জঙ্গলে একদল পশু পাচারকারির খোঁজ চলছে। সেই কেসের তদন্তের জন্যেই তাকে এখানে বদলি করা হয়েছে। এস.পি. পদে উন্নতি হওয়ার পর এটাই তার প্রথম বড় কেস। রাত দিন এক করে সে এই পাচারকারীদের ধরার চেষ্টা করে চলেছে। বেশ কিছু চুনোপুটি ধরা পড়লেও এখনও মূল মাথার সন্ধান পাওয়া যায়নি। অবশেষে আজ নেপাল বর্ডারে হাতির দাঁত পাচার করতে গিয়ে ধরা পড়া একজনের দেওয়া বর্ণনা অনুযায়ী আঁকা একটি ছবি পাওয়া গেছে মূল মাথার। যদিও ছবিটিতে লোকটি একটি পাঞ্জাবির ছদ্মবেশে রয়েছে। বন্থিশিখা নিশ্চিত লোকটি একই ছদ্মবেশে কখনও থাকেনা। ও ভালো করে তাকালো ছবিটির দিকে। এক মুখ দাড়ি, মাথায় পাগড়ি, চোখে চশমা— এই সবের আড়ালে লুকিয়ে থাকা চোখ দুটোর দিকে চেয়ে বন্থিশিখার কেমন যেনো একটা অস্বস্থি হচ্ছিল। সেই অস্বস্তিটা মুখে বলে বোঝাতে পারবে না, সে নিজেও জানেনা এই অস্বস্তির কারণ। ছবিটি একটা পেপার ওয়েট দিয়ে চাপা দিয়ে তার জন্যে দিয়ে যাওয়া চায়ের কাপটা হাতে নিলো সে। চায়ের কাপে একটা চুমুক দিয়েই আবার সে ছবিটার দিকে তাকালো। ডাকাবুকো অফিসার বন্থিশিখার চোখে প্রথমবার একটা অদ্ভুত ভয় দেখা দিলো। যা কিনা তার ভাবনার অতীত, যা সে কোনোদিন দুঃস্বপ্নেও ভাবেনি সেটাই সত্যি হওয়ার ভয়…!

                               ***

সালটা ২০১৩, সদ্য উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণ বনি চলেছে আলিপুরদুয়ারের পথে এক আত্মীয়ের বিয়ের নিমন্ত্রণে। আলিপুরদুয়ারে ছিল তাদের সাত পুরুষের ভিটে। যদিও বাবার চাকরি সূত্রে বনির বেড়ে ওঠা কলকাতাতেই। তবে ছোটো বেলায় বহুবার গেছে সে আলিপুরদুয়ারে সেই বাড়িতে তার দাদু-ঠাকুরমার কাছে। প্রায় আট বছর আগে দাদু-ঠাকুরমা গত হওয়ার পর তার বাবা সেই বাড়ি বিক্রি করে সেখানকার পাট চুকিয়ে ফেলে। তারপর থেকে সেখানে আর তাদের যাওয়া হয়নি। এবারের এই নিমন্ত্রণটি এড়াতে না পেরে এক প্রকার বাধ্য হয়েই তাদের সেখানে আবার যেতে হচ্ছে।
কোচবিহার পর্যন্ত ফ্লাইটে গিয়ে সেখান থেকে গাড়ি নিয়ে আলিপুরদুয়ার পৌঁছতে তাদের সন্ধ্যে হলো। পরদিন সকালে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে সকলে হলুদ শাড়ি আর পাঞ্জাবিতে হাজির হয়েছে। সকলের মাঝে অত্যন্ত বেমানান ভাবে একটি সবুজ শার্টে উপস্থিত হলো প্রায় ছফুট লম্বা, বছর কুড়ি–বাইশের একটি ছেলে। বৈশাখের ওই প্রচণ্ড গরমেও তার পায়ে মোজা এবং কভার শু। বনি ড্রেসের ব্যাপারে খুব পার্টিকুলার। তবু এই প্রথমবার একটা খারাপ প্রসাধন জ্ঞানের মানুষকে দেখেও ওর মনের মধ্যে এক অন্যরকম অনুভূতি হলো, যেন এক মুহূর্তর জন্য ওর হৃদস্পন্দন থমকে দাঁড়ালো। সন্ধ্যেতে বিয়ের সময়ও সেই একই ভাবে একটি নীল শার্টে উপস্থিত হলো সেই ছেলেটি। সকলের থেকে কেমন একটা বিচ্ছিন্ন হয়ে দাঁড়ালো একপাশে। বনির যেন এক অদ্ভুত আকর্ষণ জন্মেছে ওর প্রতি, ওর বড্ড ইচ্ছা করছিল ছেলেটির পরিচয় জানতে, তার সাথে আলাপ করতে। ওর মনের কথা বোধহয় ঠাকুর শুনতে পেয়েছিল। পরদিন সকালে বনি তার মা বাবার সাথে বসে জলখাবার খাচ্ছে এমন সময় এক ভদ্রলোক তাদের সামনে এসে তার বাবার উদ্যেশে বললো— "ভালো আছো ভুবন?" তার বাবা মাথা তুলে লোকটির মুখের দিকে চেয়ে হেসে বললো—"আরে! সমরেশদা যে। কতদিন পর দেখা।" সে বললো— "আজ তো সন্ধ্যেতে বধূবরণের আগে আর সেরকম কিছু নেই। জলখাবার খাওয়া শেষ করে ঘুরে যাও আমাদের বাড়ি থেকে। সে তো একসময় তোমাদেরই বাড়ি ছিল। দেখে যাও সেই বাড়িটিকে। এই পাশের গলিতেই তো।" বনিদের বাড়ি ওরাই কিনেছিল। অবশেষে তার জোরাজুরিতে তারা গেলো সেই বাড়িতে। বাড়িটা ঠিক আগের মতই আছে শুধু রংটা বদল হয়েছে। বাড়িতে ঢুকতেই সেই ছেলেটির সাথে আবার দেখা। সমরেশ বাবুর ছেলে ও। অবশেষে তার পরিচয় জানতে পারল বনি। খুব স্বল্পভাষী ছেলেটি, নাম শুভ্র বিশ্বাস। সদ্য বি.এ. পাস করে এখন এম.এ. পড়ার পরিকল্পনা করছে সে।
দেখতে দেখতে বিয়ে বাড়ির পর্ব শেষ করে তারা ফিরে এলো কলকাতায়। সারাটা রাস্তা এমনকি কলকাতায় ফিরেও শুভ্রকে ভুলতে পারছিল না বনি। বার-বার মনে হচ্ছিল যদি আর একটিবার তার সাথে দেখা হয়ে যায়। নিয়তির খেলা সত্যিই অদ্ভুত। মাস ছয়েক পর কলেজের বাইরে একদিন অপ্রত্যাশিত ভাবে আবার শুভ্রর সাথে দেখা তার। দুজন দুজনকে দেখা মাত্রই একে অপরের দিকে এগিয়ে এলো তারা। বনির মুখে হালকা হাসি গোধূলি আলোয় উজ্জ্বল হয়ে উঠল।
"তুমি এখানে?"— জিজ্ঞেস করলো সে।
"এইতো পাশের কলেজটাই তো আমার। তুমি বুঝি এই কলেজটায় পড়ো?"— বললো শুভ্র।
শুভ্রর চোখের দিকে চেয়ে, বনর তখন চোখের পলক পড়ছে না। তার প্রশ্নের উত্তরে শুধু হালকা ঘাড় নাড়ল। এবার থেকে তার সাথে প্রায়ই দেখা করার সুযোগ পাবে, মনে মনে ভাবলো বনি।
"আমি তো কলকাতার বিশেষ কিছুই চিনিনা। তুমি তো কলকাতারই মেয়ে। তোমার ফোন নাম্বারটা যদি পেতাম…"— শুভ্রর কথাটা যেন বনির মনের ইচ্ছাটাই পূরণ করলো।
এরপর থেকে কলেজের পর প্রায় দিনই দেখা করে তারা। শুভ্র কম কথা বলা ছেলে। তবে যেটুকু কথা বলতো বনি মুগ্ধ হয়ে শুধু শুনতো আর আরও বেশি করে ওর মায়ায় পড়ে যেতো। কি সুন্দর ওর কথা বলা। অল্প কথায় কি সুন্দর করে নিজের মনের ভাব প্রকাশ করতে পারে ও। ওর সব পছন্দগুলো বনির পছন্দের ঠিক উল্টো। তবু যেন সেগুলোকেই ওরও পছন্দ হতে শুরু করলো। ওর জঙ্গল ভালোলাগে আর বনির পাহাড়। শুভ্র ভালবাসে রবীন্দ্রসঙ্গীত আর বনির পছন্দ রক্। হাজার অমিলের মাঝেও যেন দুটি হৃদয় মিলেমিশে যেতে লাগলো। প্রিন্সেপ ঘাটে বসে সূর্যাস্ত দেখতে দেখতে দুজন দুজনের সাথে অনেক কথা ভাগ করতো। শুধু বনির নিজের মনের কথাটাই বলা হলো না। এভাবেই তিনটে বছর কেটে গেলো। শুভ্র তখন এম.এ. শেষ করে কলকাতাতেই একটি চাকরি করে। অপরদিকে বনিরও গ্র্যাজুয়েশন শেষ। এরপর সে মাস্টার্সের জন্য দিল্লির একটি ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হবে। সে মনে মনে ঠিক করে নিয়েছিল কলকাতা ছেড়ে যাওয়ার আগে শুভ্রর প্রতি ওর ভালোলাগার কথা ওকে জানিয়ে দেবে। কিন্তু শুভ্রর এতদিন সব কথার মধ্যে একটা কথা স্পষ্ট ছিল। প্রেম–ভালোবাসা এই সবের প্রতি ওর তীব্র অবিশ্বাস, নিজের মতো একা জীবন কাটাতে চাওয়া।
বনির কলেজে আজ কনভোকেশন। শুভ্রও এসেছিল কিন্তু শার্ট নয়, পাঞ্জাবিতে। অনেক গল্প করলো দুজন আর বনি শেষবারের মত দুচোখ ভরে দেখলো তার শুভ্রকে। কিন্তু সেদিনও নিজের মনের কথাটি আর জানিয়ে উঠতে পারল না সে। শুধুমাত্র শুভ্রর একা থাকতে চাওয়ার ইচ্ছেটাকেই যেন সম্মান জানিয়ে সেদিনও সে চুপ থাকলো। কাল সকালের ফ্লাইটেই সে দিল্লি চলে যাচ্ছে। আর কি কোনোদিন দেখা হবে না দুজনের? সেদিন বাড়ি ফেরার পথে একটা অদ্ভুত চাপা কষ্ট হচ্ছিল বনির। যে কোনোদিন তার ছিলই না তাকেই হারিয়ে ফেলার কষ্ট। দম বন্ধ হয়ে আসা এক যন্ত্রণা। এই তিন বছরে শুভ্র যেন তার অভ্যেস হয়ে গিয়েছিল। কি করে থাকবে সে শুভ্রকে ছাড়া? "আমি যত বেশি তোমার সাথে কথা বলব তত বেশি করে তোমার মায়ায় জড়িয়ে পড়বো", বনি ঠিক করলো দিল্লি চলে যাওয়ার পর সে আর শুভ্রর সাথে কোনো যোগাযোগ রাখবে না। "দেখি যদি এই ভাবে ভুলে থাকতে পারি তোমায়"— মনে মনে ভাবলো বনি।

                              ***

ট্র্যাফিক সিগন্যাল, রাজ্য এবং দেশের বর্ডার, বিমানবন্দর, রেল স্টেশন— এই সব জায়গাতেই লোকটির সেই আঁকা ছবিটি পাঠিয়ে দিয়েছে বন্থিশিখা। যদিও সে জানে এই ছবিটি দিয়ে লোকটির সন্ধান সে এই সব জায়গা থেকে কোনো ভাবেই পাবে না। যে এত বড় পশু পাচার ব্যবসা চালাচ্ছে সে একই ছদ্মবেশে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়ানোর মত কাঁচা কাজ করবে না। এই সব প্রাথমিক পদক্ষেপ ছাড়া আর কি ভাবে তদন্তটা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় তা বন্থিশিখার মত একজন পোড় খাওয়া আই.পি.এস. অফিসার খুব ভালো করেই জানে। তবু যেন সে অনর্থক ধীরে চলছিল। কেনো সে এমনটা করছে, কাকে বাঁচাতে চাইছে সে— এর উত্তর বোধহয় ওর নিজের কাছেও নেই। বন্থিশিখা অত্যন্ত উত্সর্গীকৃত তার কাজের প্রতি। তবু তার এহেন আচরণ যেনো তার নিজের কাছেই নিজেকে খুব অচেনা করে তুলছিল। এই ভাবেই সপ্তাহ খানেক কাটার পর বন্থিশিখা আজ তদন্তের নতুন ধাপে পা ফেললো। তার নির্দেশে আজ তার তদন্তকারী দল বিভিন্ন সফ্টওয়ারের সাহায্যে সেই ছবিটির থেকে গোঁফ, দাড়ি, পাগড়ি সরিয়ে লোকটির আসল মুখটা খোঁজার কাজ শুরু করেছে। বেশ কয়েকটি ছবি এক এক করে তার সামনে এনে দেখানো হচ্ছে কিন্তু সে প্রত্যেকবার বলছে,"না এরকম নয়। আরেকবার চেষ্টা করো। এই চোখ ছবিতে আঁকা চোখের সাথে মিলছে না।" অবশেষে একটি ছবি তার সামনে হাজির করা হতেই তার মুখ কেমন যেন ফ্যাকাশে হয়ে গেলো। "এই তো সেই চোখ"— মনে মনে ভাবলো বন্থিশিখা। যতটা সম্ভব নিজের মনকে শক্ত করে সে বললো—"গাড়ি বের করো আর ফোর্সও তৈরি রাখো।"
কিছুক্ষণের মধ্যেই ফোর্স নিয়ে বন্থিশিখা পৌঁছলো আলিপুরদুয়ারেই এক গৃহস্হ্ বাড়িতে। গাড়িতে যেতে যেতেই সে তার ফোর্সকে সেখানে পৌঁছে কি করতে হবে সমস্তটা বুঝিয়ে দিয়েছিল। বাড়িটির সামনে পৌঁছনো মাত্রই পুলিশ ফোর্স পুরো বাড়িটা ঘিরে ফেললো। কয়েকজন ভেতরে ঢুকে গিয়ে সার্ভিস রিভলবার বের করে সেখানে উপস্থিত সকলকে আদেশ করলো—"কেউ এক পাও নড়বেন না। যে যেখানে আছেন চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকুন।" বন্থিশিখা বাড়িটায় ঢোকার মুখে দেখতে পেলো ফুল দিয়ে সাজানো বাড়িটার সদর দরজার উপরে থার্মকল দিয়ে লেখা 'শুভ্র ওয়েডস্ নিশা'। সেই বাড়ি যেখানে অষ্টাদশীর বনির প্রথম আলাপ হয়েছিল শুভ্রর সাথে। বন্থিশিখা ভেতরে ঢুকে সোজা গিয়ে বন্দুক ধরলো সকলের চোখ এড়িয়ে পালানোর চেষ্টা করা আসল অভিযুক্ত অর্থাৎ শুভ্রর মাথায়। হ্যাঁ, ছদ্মবেশের আড়ালে লুকিয়ে থাকা আসল মানুষটি ছিল শুভ্রই। বন্থিশিখা সে ছবি দেখা মাত্রই তাকে চিনতে পেরেছিল। তার বাড়ি এসে যে স্বয়ং তাকেই হাতে নাতে ধরতে পারবে সেটা অবশ্য ভাবতে পারেনি সে। শুধুমাত্র যদি তার কোনো সন্ধান পাওয়া যায় তার মা বাবার থেকে সেই আশাতেই এসেছিল সে।
"হ্যান্ডস আপ"— বন্থিশিখার গলা পেয়ে ঘুরে তাকালো শুভ্র। দুজন দুজনের চোখে চোখ রাখল। আজ প্রায় দশ বছর পর তাদের দেখা। কিন্তু সেটা যে এরকম ভাবে হবে তা দুজনের কেউই কোনোদিন ভাবতে পারেনি। বন্থিশিখার চোখে তখন একরাশ অভিমান আর অসহায়তা। "কেনো এমনটা করলে শুভ্র। তোমার সবটাই কি মিথ্যে ছিল? তোমার সেই বিয়ে না করে সারাটা জীবন একা কাটাতে চাওয়ার ইচ্ছা, তোমার মধ্যের সেই স্বচ্ছ মানুষটা যার প্রেমে আমি বার-বার পড়েছি? সবটাই কি নকল তুমি ছিলে নাকি এখন যা হচ্ছে সেই সব আমার তদন্তের ভুল?"— মনের মধ্যে হাজারটা অনুভূতি ঘুরপাক খেতে লাগলো তার। তারপর যতটা সম্ভব নিজের গলা না কাঁপিয়ে সে বললো —"ওকে গাড়িতে তোলো। সাথে যেন কড়া গার্ড থাকে, কোনোভাবেই যেনো পালাতে না পারে।" সঙ্গে সঙ্গে চারদিক থেকে শুভ্রকে পুলিশ ঘিরে ধরে টেনে বাইরে নিয়ে চাওয়ার চেষ্টা করলো। শুভ্র যাওয়ার সময় বলে উঠলো— "বনি…", কঠিন আই.পি.এস. অফিসারের বুকের মধ্যে যেন একটা ঝড় উঠলো— সেই কণ্ঠস্বর, সেই একই ভাবে তাকে 'বনি' বলে ডাকা— সে তো চাইলেই ছবিটির লোকটিকে আইডেন্টিফাই না করতে পারত, তবু কেন করল সে এমনটা! ন্যায়ের সাথে সে কোনোদিনও আপোষ করেনি আর তার ডিউটি কে সে সবার আগে রাখে, আজও তাই করলো। "আমি আর পালাবো না বনি। তোমার কাছে ধরা পড়ে গেছি যে"— এক অদ্ভুত বেদনা ভরা নিচু স্বরে বললো শুভ্র। বেড়িয়ে যাওয়ার আগে একবার পেছন ঘুরে বাড়িটিকে দেখে নিলো 'বনি' ওরফে এস.পি. বন্থিশিখা লাহিড়ী।
দুদিনের মাথায় কেসটির প্রথম ট্রায়াল। কোর্ট রুমে অভিযুক্তকে আনা হলো। সাথে সেই কেসের সমস্ত তদন্তকারী অফিসার এবং বন্থিশিখাও উপস্থিত। অদ্ভুত ভাবে শুভ্র এক কথায় তার সব অপরাধ স্বীকার করে নিলো। সাজা স্বরূপ পঁচিশ হাজার টাকা জরিমানা সাথে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ডর ঘোষণা করল কোর্ট।
তদন্তের কাজ সফল ভাবে শেষ হয়েছে। দোষীর শাস্তি হয়েছে। এবার যেন তাকে এই আলিপুরদুয়ার থেকে বদলি করা হয় সেই আবেদন জানিয়ে পুলিশ কর্তৃপক্ষকে মেল করল বন্থিশিখা। উত্তর স্বরূপ তাকে অভিনন্দন জানিয়ে মেল এলো যে খুব শিঘ্রই তাকে ভূপালে এক নতুন তদন্তের জন্যে বদলি করা হবে।
আলিপুরদুয়ারে আজ তার শেষ দিন। কিন্তু থানা থেকে খবর এলো অপরাধী শুভ্র বিশ্বাস তার সাথে অনেকবার দেখা করার অনুরোধ জানাচ্ছে। একজন আই.পি.এস. অফিসার কেন যাবে সামান্য একজন কয়েদির ডাকে তার সাথে দেখা করতে? কিন্তু চলে যাওয়ার আগে যে একবার তার শুভ্রর সাথে, তার দেখা করতে বড্ড ইচ্ছে করছে। সে গেল সংশোধনাগারে শুভ্রর সাথে দেখা করতে। মিনিট দশেকের কথপোকথনে শুভ্র তাকে বললো— "আমি জানি তোমার মনে আমাকে নিয়ে অনেকগুলো প্রশ্ন ঘুরছে। আমি আজ সব কিছুর জবাব দেবো। আমি যখন প্রথম কলকাতায় যাই তখন অলরেডী আমি একটি সামাজ বিরোধী চক্রের সাথে অনিচ্ছাকৃত ভাবেই জড়িয়ে গিয়েছি। অনেক চেষ্টা করেও আমি সেখান থেকে বেরোতে পারিনি। কলকাতায় গিয়ে তোমার সাথে মেলামেশা করে তোমায় খুব ভালোলাগে। তোমার মধ্যের সেই নির্ভেজাল প্রাণোচ্ছল মেয়েটার প্রেমে পড়ে যাই আমি। তোমার সাথে যখন কথা বলতাম, তোমার চোখের দিকে তাকিয়ে খুব ইচ্ছা করতো তোমায় নিজের মনের কথা বলে দিতে। কিন্তু আমি চাইনি আমার এই অন্ধকার জীবনের সাথে তোমার জীবনকে জড়াতে। তাই তুমি গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে মাস্টার্স করতে দিল্লি চলে যাওয়ার পর, তোমার সাথে আর যোগাযোগ রাখিনি। আমি আমার সবটুকু দিয়ে আজও তোমাকেই ভালবাসি। শুধুমাত্র কাজের প্রয়োজনেই আমাকে অন্য একজনকে বিয়ে করতেও রাজি হতে হয়েছিল।" বন্থিশিখা শুধু পাথরের মত দাঁড়িয়ে সবটা শুনছিল। ওর চোখে শুভ্রর প্রতি অবিশ্বাস স্পষ্ট ফুটে উঠছিল। "একটিবার আমায় বিশ্বাস করো বনি।" আজও শুভ্রর জন্য একবুক ভালবাসা লুকিয়ে রাখা বনি তো তাকে বিশ্বাস করতেই চায় কিন্তু এস.পি. বন্থিশিখা লাহিড়ীর কঠোর মস্তিষ্ক যে আবেগে ভাসেনা। আলিপুরদুয়ার ছেড়ে চলে যাওয়ার আগে শেষ কিছু ফর্মালিটিস্ সারতে সে থানায় এলো। সেখানে ঢোকার মুখে একজন কনস্টেবলের সাথে তার ধাক্কা লাগতে সেই কনস্টেবলের হাতে থাকা শুভ্রর জমা রাখা ঘড়ি আর মানিব্যাগটি মাটিতে পড়ে গেলো। বন্থিশিখার অনেক কষ্টে শক্ত রাখা হৃদয় এক মুহূর্তে ঠুনকো কাচের মতো ভেঙে পড়লো, সেই মানিব্যাগে জ্বলজ্বল করতে থাকা কনভোকেশনের দিন বন্থিশিখার অজান্তেই তোলা তার একটি ছবির দিকে চেয়ে।

=============

বিতস্তা বোস
লারিকা টাউনশিপ, বারাসাত, কলকাতা


Comments

বিধিবদ্ধ স্বীকার্য :

লেখার বক্তব্যের দায়িত্ব লেখকের, পত্রিকার নয়। আমরা বহু মতের প্রকাশক মাত্র।

মতামত/লেখা এখানে জমা দিন

Name

Email *

Message *

সাম্প্রতিক বাছাই

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬

  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠালে  অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে হলে ভালো। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # ...

গল্প ।। জাতিস্মর ।। আশীষ কুমার বিশ্বাস

    জাতিস্মর   আশীষ  কুমার   বিশ্বাস    গল্পের শুরুটা প্রায় ষাট বছর আগের কথা । যার নাম গৌতম, ডাক নাম ছিল বাবু ।  তার বছর তখন ছয়-সাত হবে । আমরা বা আমি তখন একটু বড় । এক সাথেই চলতো খেলা । গোল্লা ছুট, দাঁড়িয়া বান্দা, চোর-পুলিশ । যে মাঝে মাঝে খেলা থেকে বিরত থাকতো ; সে-ই জাতিস্মর । মাঠের পাশেই ছিল একটা খেঁজুর গাছ । তাতে হাত রেখে দূরের এক গ্রামের দিকে এক মনে তাঁকিয়ে থাকতো "বাবু" । গ্রামটির নাম "বিনয় পল্লী " । মাঝে বড়ো মাঠ । হাঁটা শুরু করলে তিরিশ - চল্লিশ মিনিট লাগবে । মাঝে জলে ভরপুর দেখে কখনো যাওয়া হয়নি । বাবু কে যখন বলতাম, ওপারে কি দেখছিস? ও বলতো, ওখানে আমার ছোট মা থাকে, দিদি থাকে, আমার ভুলু কুকুর থাকে । এ কথা আমাদের বিশ্বাস হতো না । আবার খেলায় ফিরে যেতাম, খেলতাম ।  কিন্তু ও বসে বসে , ওপারের গাছ পালা , বাড়ি ঘর দেখতো । কাছে গেলে বলতো , ওই যে সবুজ ,কচি কলাপাতা রঙের দালান বাড়ি, ওটাই আমাদের বাড়ি !  এই ভাবে মাস ছয়, বছর গড়াতে লাগলো । মনে প্রশ্ন জাগতে লাগলো, এ টা কি মন গড়া , বা বানিয়ে বানিয়ে বলছে? সত্যি প্রকাশ হোল এক দিন ।  সে বাড়িতে কিছু ...

কবিতা ।। মনোজকুমার রায়

জল সিঁড়ি চেক বইয়ের পাতা ফুরিয়ে যেতে থাকে -- ঝরে পড়ে বৃদ্ধ গাছটির পত্রমুকুল কাঁচা গন্ধ বেয়ে চলে সময়ের স্রোতে  সারা ভোর জেগে থাকি ঘুমের টলে তাড়া দেয় একগ্রাস অবিশ্বাসী বায়ু দিন ফুরনো লাল সূর্যের টানে নেমে আসে পাড় ছোঁয়া জল সিঁড়ি ================= মনোজকুমার রায় দঃ ঝাড় আলতা ডাউকিমারী, ধূপগুড়ি জলপাইগুড়ি -৭৩৫২১০ মো ৭৭৯৭৯৩৭৫৬৬

কবিতাগুচ্ছ ।। মেশকাতুন নাহার

কবিতাগুচ্ছ ।। মেশকাতুন নাহার  ১. বিধির অভিশাপ  সরকারি হবো সরকারি হবো ছিল বড়োই যে সাধ,  এখন দেখি সরকারি হওয়া আমারই অপরাধ। সাতটি বছর পার হলেও পাইনি নিজ অধিকার,  স্থায়ীকরণ,পদোন্নতিটা অতি সত্বরই  দরকার। জনস্বার্থে সরকারি হয়েছে,বল আমার কীসে ভুল?  বিধিরই চক্রে গ্রেড বক্রে, ভেঙেছে মনেরই কুল। প্রভাষক থেকেই বিদায় নিচ্ছে হাজার হাজার লোক, নীরব চিৎকার,নেই শোধাবার,প্রাণে বইছে শোক। বদলী চালু নেই বলেই তো চলছে ভাই অনিয়ম,  একই জায়গায় থেকে থেকে লড়াই চলে হরদম। দিন দিনই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক কমছে যতই, ছাত্রছাত্রীর ফলাফলের মান নামছে নীচে ততই। বিকলাঙ্গ সামাজিক অবস্থান দুঃখ মনেরই মাঝে, বঞ্চনারই শিকার হয়েছি আঠারো বিধিরই ভাঁজে। চাই অধিকার,চাই মর্যাদা,অভিশাপের অবসান, সকল ভেদাভেদ দূর করতে গাহিবো সাম্যের গান। ২. ভালোবাসার রঙধনু  ইচ্ছে মতো রঙধনু টা উঠে আকাশ নীলে, সাজিয়ে দেয় এই আমাকে  সাতটি রঙে মিলে। বর্ষণ শেষে ক্লান্তি ধুয়ে দেয় সে মুচকি হাসি, নানান বর্ণে দীপ জ্বালিয়ে  বলে ভালোবাসি। ওই মেঘেরা যেই না উড়ে ঝরে পড়ে ঘাসে, রঙধনু টা ঠিক তখনই  চুপিসারে আসে।  অব...

উন্মুক্ত পাগলামি ।। আশরাফুল মণ্ডল

উন্মুক্ত পাগলামি আশরাফুল মণ্ডল আহা, অপরূপ নিজস্বতার দাহ! কুঁকড়ে যায় আবহমান, সজনে পাতার বোঁটায়! ভাপওঠা ভাতের কাছে মাছি সত্তায় কী নিপুণ! তবুও ঘোর লাগা বসন্তের ডাক, হাঁকে! খেদিয়ে দেয় পা দোলানো প্রস্তাব, ওই ধুনুরি চোখ! রাংতায় মোড়া ডাকের সাজ, দে দোল দোল! হুইসেল বাজিয়ে কে রুখে দ্যায় সেই নাকছাবির রুদালি কাঁপন! খালবিল ছেঁচে পাঁচসিকের  মানত কুড়িয়ে আনে, বাংলা বাজার। ঠ্যাং নাচানো সুরে চোখ মারছে, দ্যাখো ভ্যানতারা! মুখ খোলা মানেই পাঁজরের স্রোত ভাবা যেন উগরানো টালমাটাল! ঢিল মারা প্রশ্নের রোয়াকে বক্রচোখে যেন মেধাবী কবিতা! মুছে দিও তবে লাজুক গুপ্ত রোগ, দিনরাত্রি! ভালো থেকো তোমরা বাছাধন, রং মাস সে আর কতদিন... ================    ASRAFUL MANDAL Chandidas Avenue, B-zone, Durgapur, Paschim Bardhaman, Pin - 713205,  

কবিতা ।। ভাষার জন্য লড়াই ।। চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু

ভাষার জন্য লড়াই চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু মুখের ভাষা বাংলা ভাষা মাকে ডাকি মা, সারা বিশ্বে তোমার মাগো নেই তো তুলনা। তোমার মুখের প্রথম ভাষা আমার মনের সকল আশা তোমার ভাষায় বলবো মাগো আমার মনের কথা, এই ভাষাতেই জড়িয়ে আছে সকল স্বাধীনতা।  এই ভাষাকে আনতে গিয়ে তাজা বুকের রক্ত দিয়ে রাজপথে সব লড়াই হলো করলো লড়াই কারা, আমার মায়ের দামাল ছেলে রক্ত পলাশ যারা।  তোমার ছেলে লড়াই করে আনলো ভাষা ঘরে ঘরে সেদিন থেকে শহীদ মিনার সাজাই ফুলে ফুলে, বীর শহীদের ত্যাগের কথা যাইনি আজও ভুলে।    ++++++++++++++++++++++++++++++++    চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু শহীদ আবুল কাশেম সড়ক, বড় বাজার, চুয়াডাঙ্গা, বাংলাদেশ।

চিরকুটের কবিতা

নতুন পৃথিবী আজ সকালে রোদ্দুর নামুক ভেজা বর্ষার মতো গা ধুয়ে কিছুটা পবিত্র হবো যত জীর্ণ মলিন দ্বেষ বিলীন হোক সব সময়ের তটে গা ভাসিয়ে কিছুটা বিলাসী হবো যা ছিল অতীত যা ছিল কষ্ট সবকিছু ভুলে নবীনে ব্রতী হবো আসুক ধেয়ে সতেজ হাওয়া দূর হোক যত কুণ্ঠা ব্যথা পুরানো যত বিবাদ ভুলে ভালোবাসার আবার বেড়া দেবো কিছুটা আশাবাদী কিছুটা কর্মঠ কিছুটা জেদি কিছুটা শপথ আসুক ছুঁয়ে বাঁচার আলো হাতে হাত রেখেই বিশ্বাসের ঘরে আবার নতুন দীপ জ্বালাবো

আপন ... আপন ।। অলক মিশ্র

আপন ... আপন ✍️ অলক মিশ্র সবাই আপন চারপাশের মানুষ যত, চেনা অচেনার ভিড় ভাঙা কত। হাত বাড়িয়ে ছুঁয়ে যাওয়ার ডাক, অভিমান, কান্নাকাটি, রাগ। কত শত ভাবনার যাওয়া আসা, মুচকি হাসিতে একটু পাশে বসা। ভাবনার পাগল পারা ছুটি, আপন আপন মানুষের যে জুটি। রুক্ষ শুষ্ক বালুকায় চলি পথ, দূরন্ত বাতাস ওড়ায় পতাকা; চলে রথ। দীর্ঘ সুদূর বিস্তীর্ণ প্রান্তর, বন্যায় ভেসে ব্যথিত অন্তর। নতুন বরণের মুঠো ভরা ডালি, ফুলে ফুলে গুণ গণ করে অলি। স্বাগত তোমায় হে অনাগত, আপন আপন নেই তোমার মতো। নিরন্ন খালি গায়ের ছোট্টো শিশু, অজানা নামের ঋষি, খুশি বা বিশু। বহুর মাঝে একের উপস্থিতি, আসা আর যাওয়া এটাই যে রীতি। চলা শুধু বোঝা বয়ে চলা, গভীর রাতে দুচোখ একটু খোলা। সবার আনন্দে হৃদয় দেয় দোলা, আপন আপন শুধু আপনের মেলা।। ......................... Name  :  Alak Mishra Vill   : Mirjapur Po   : Mirjapur Belda Ps  : Dantan Dost   :  Pashchim Medinipur Pin : 721445  

কবিতা ।। রঙ ।। ইউসুফ মোল্লা

  রঙ  ইউসুফ মোল্লা সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি,  পৃথিবী নানা রঙে সেজে উঠেছে।  ধূসর বাদামী রঙ তোমার দেহ,  মাথায় সবুজ রঙের বাবরি চুল,  তাতে গুঁজে রেখেছো লাল-নীল ফুল।  নববধূর মতো সিঁথিতে দিয়েছো সিঁদুর,  চোখে দিয়েছো কাজল।  দিগন্তভরা আকাশ তোমাকে নীল উপহার দিল,  সূর্যের লাল আলো তোমাকে সুন্দর করেছে।  তুমি তাদের ফিরিয়ে দিলে, বুকভরা ভালোবাসা আর স্নেহ।  মাঝে মাঝে এইভাবে হোলি আসে,  আমার মনকে রাঙিয়ে দিতে। ------------------    ইউসুফ মোল্লা উত্তর অঙ্গদ বেড়িয়া, ট্যাংরাখালী, ক্যানিং,  দক্ষিণ ২৪ পরগনা, ৭৪৩৩২৯

ধারাবাহিক গল্প ।। চেনা প্রতিবেশী ( অষ্টম পর্ব ) ।। দীপক পাল

চেনা প্রতিবেশী   ( অষ্টম পর্ব ) দীপক পাল              রান্নাঘরে এসে গরম কড়াইতে সুন্দর করে কাটা বেগুনের টুকরোগুলো ছাড়তে লাগলো। ওদিকে কমল ত্রিহানকে বললো, ' ত্রিহানদা এতসব মিষ্টির কি দরকার ছিল?' পবন বললো, ' বৌদিকে দেখ আমাদের মিষ্টি দিয়ে বসিয়ে রান্নাঘরে গিয়ে কড়াইতে কি ভাজছে যেন। এখান থেকে শোনা যাচ্ছে ।' ত্রিহান হেসে বলে, - ' ও কিছু নয় পবন, মনে হয় মাছটাছ কিছু একটা ভাজছে। নাও খাওয়া শুরু করতো।'             একটু পরে দুটো বড়ো বড়ো প্লেটে করে গরম গরম বেগুনি এনে একটা কমল ও পবনের মাঝে রাখলো ইমন আর একটা ত্রিহানেব সামনে রেখে বললো, - ' চায়ের জল বসিয়েছি চাটা নিয়ে এসে একসাথে বসে চায়ের সাথে বেগুনি খেতে খেতে গল্প করবো। বেশ মজা হবে। যাই নিয়ে আসি চা।' পবন কিন্তু বলে ওঠে, - 'আরে আমি বুজেছি বৌদি বেশ কায়দা করে আমাদের লাঞ্চের ব্যাবস্থাটা করে দিল।' - ' কি আর এমন খাওয়ালাম। লাঞ্চের এখনও অনেক দেরী দেখবে খিদে পেয়ে যাবে।'      ...

জনপ্রিয় লেখা

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ -- "ত্রয়ী কাব্য" ------------------------------------------------------------------------------ সুনন্দ মন্ডল নবীনচন্দ্র সেন সাহিত্যে তথা বাংলা কবিতার জগতে এক অবিস্মরণীয় নাম। তিনি চট্টগ্রাম জেলার নওয়াপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ১৮৪৭ সালে তাঁর জন্ম এবং মত্যু ১৯০৯ সালে। বঙ্কিমচন্দ্র তাঁকে 'বাংলার বায়রন' বলেছেন। ‎জীবৎকালীন যুগে আত্মপ্রত্যয়ের মধ্যে জাতীয় চরিত্র আত্মস্থ করে নতুন সংস্কারে প্রয়াসী হয়ে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখেছেন।মধুসূদন-হেমচন্দ্র-নবীনচন্দ্র--এই তিন কবি বাংলা কাব্যধারায় প্রাণ সঞ্চার করেছিলেন। বিশেষত মহাকাব্য লেখার দুঃসাহস দেখিয়েছিলেন। এদিক থেকে মধুসূদন দত্ত একজন সফল মহাকাব্যিক। তাঁর 'মেঘনাদ বধ' কাব্যের মত গভীর ও ব্যঞ্জনাময় না হলেও নবীনচন্দ্র সেনের 'ত্রয়ী' কাব্য বিশেষ মর্যাদা দাবি করতেই পারে। তাছাড়া 'ত্রয়ী' কাব্যে ধর্মীয় ভাবধারার আবেগ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ‎ ‎নবীনচন্দ্র সেন বহু কাব্য লিখেছেন। যেমন- 'অবকাশরঞ্জিনী','পলাশীর যুদ্ধ', 'ক্লিওপেট্রা', 'রঙ্গমতী', 'খ্রীষ্ট', ...

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা শ্রীজিৎ জানা "সময় চলিয়া যায় নদীর স্রোতের প্রায়"। স্রোতের ধারা তার দু'প্রান্তে রেখে যায় ভাঙাগড়ার চিহ্ন। কালের দৃশ্যপটেও পরিবর্তনের ছবি অনিবার্যভাবেই চোখে পড়ে। সমাজ সময়ের ছাঁচে নিজেকে গড়ে নেয় প্রতিনিয়ত।  সেখানে মনে নেওয়ায় বাধা থাকলেও,মেনে নেওয়ার গাজোয়ারি চলে না। ফলত কাল বদলের গাণিতিক হিসেবে জীবন ও জীবিকার যে রদবদল,তাকেই বোধকরি সংগ্রাম বলা যায়। জীবন সংগ্রাম অথবা টিকে থাকার সংগ্রাম।  মানুষের জীবনযাপনের ক্ষেত্রে আজকে যা অত্যাবশ্যকীয় কাল তার বিকল্প রূপ পেতে পারে অথবা তা অনাবশ্যক হওয়াও স্বাভাবিক। সেক্ষেত্রে উক্ত বিষয়টির পরিষেবা দানকারী মানুষদের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হওয়া অস্বাভাবিক নয়। এক কালে গাঁয়ে কত ধরনের পেশার মানুষদের চোখে পোড়তো। কোন পেশা ছিল সম্বৎসরের,আবার কোন পেশা এককালীন।  সব পেশার লোকেরাই কত নিষ্ঠা ভরে গাঁয়ে  তাদের পরিষেবা দিত। বিনিময়ে সামান্য আয় হত তাদের। আর সেই আয়টুকুই ছিল  তাদের সংসার নির্বাহের একমাত্র উপায়। কালে কালান্তরে সেই সব পেশা,সেই সব সমাজবন্ধুরা হারিয়ে গ্যাছে। শুধুমাত্র তারা বেঁচে আছে অগ্রজের গল্পকথায়,আর বিভিন...

গ্রন্থ আলোচনা: শর্মিষ্ঠা দেবনাথ

প্রতিবাদ যখন অগ্নিবাণী বাংলাদেশে নারীমুক্তি ও নারী আন্দোলনের পুরোধা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ১৯৯তম জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদিত হল " আসিফা এবং.." কাব্য সংকলনটির মধ্যদিয়ে।সংকলনটির বিশেষত্ব হল,এটি উৎসর্গ করা হয়েছে নারীর সম্মান রক্ষার আন্দোলনের যোগ্যতম ব্যক্তি শহীদ শিক্ষক বরুন বিশ্বাসকে। সংকলক প্রকাশক সন্দীপ সাহু নিজে এবং বিশিষ্ট কবি সাহিত্যিকদের দিয়ে লিখিয়ে নিয়েছেন এমন কিছু কবিতা, যা শুধুমাত্র শব্দ ও ছন্দের অনুবন্ধ নয়, এক একটি অগ্নিবাণী।আসলে জীবনকে দেখার স্বাতন্ত্র‍্যে কবিরা সব সময়ই অগ্রগণ্য এবং অনন্য।যুগ ও জীবন দ্বন্দ্বের কণ্ঠস্বরকে আশ্রয় করে,একদিকে মনের প্রবল দাহ ও অন্যদিকে  নির্যাতিতা শিশুকন্যা ও নারীর প্রতি মনের গভীর আকুলতা থেকে প্রকাশ পেয়েছে "আসিফা এবং" এর  কবিতাগুলি।এক অন্ধকার সময়ের মুখোমুখি আমরা,সেই অন্ধকার আমাদের নিয়ে এসেছে সামাজিক অবক্ষয়ের শেষধাপে যেখানে নৈতিকতা,পাপবোধ,গ্লানিকে সরিয়ে রেখে, সমাজের বানানো নিয়মকে তোয়াক্কা না করে,অনায়াস দক্ষতায় ও ক্ষিপ্রতায় নিজেরই ধর্মচেতনাকে জলাঞ্জলি দিয়ে কিছু মানুষ তার পশুত্বের পরিচয় দিয়েছে ধর্ষণ ও ন...

শ্যামাপদ মালাকারের কবিতা

চোখ """"""" নদী, অরণ্য, রাতের ফালি চাঁদ- সবেই তো আমার...স্বর্ণপিঁড়িটাও!। সেদিন, শুকতারাটার গা' মাপতে গিয়ে মনে হল, --ওরা আমার চেয়েও সুখী? দেখিনা একবার গাইতি-শাবল চালিয়ে... চালালাম। জল-মাটি ভেজা একটা 'চোখ' কুড়িয়ে ফিরলাম! সেই চোখদিয়ে দেখি-- শেষ বিকেলের নিরন্ন আঁচে ঝলসানো বুকে নীড়ে ফিরছে ধূলিমাখা কত কাল পা, কি শান্তি - কি তৃষ্ণা! পাতাক্ষোয়া কোদালেরর মাথায় ঝরেপড়া ললাটের ঘামে, কারা যেন জীবন শাণ দেয়! রুক্ষঠোঁটের আবরণে এক সময় নেমে আসে শিশিরস্নাত কালনিশি-- মাঝের ব্যবধান মুছে দেয় প্রতিশ্রুতির ভীড়- - পূর্বজনমের নিদর্শনচুম্বন শেষে হেরে যায় কার মমতাজ-- ম্লান হয়ে যায় কত পিঁড়ি! ... ম্লান হয়ে যায় কত পিঁড়ি! ... ম্লা...

কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা: এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায় ।। পার্থ সারথি চক্রবর্তী

  কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা : এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায়  পার্থ সারথি চক্রবর্তী  কথায় বলে বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। রাজার শহর কোচবিহারের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা আরো অনেক বেশি। দুর্গাপূজা আর দীপাবলির মতো দু'দুটো বিরাট মাপের উৎসবের রেশ কাটতে না কাটতেই, এ শহর ভাসে রাস উৎসবের উন্মাদনায়। মদনমোহন ঠাকুর কোচবিহারের প্রাণের ঠাকুর। তাঁকে নিয়ে সবার আবেগ আর শ্রদ্ধা ও ভালবাসা এখানে বাঁধনছাড়া। এক অপূর্ব মিলনোৎসবের চেহারা নেওয়া এই উৎসব ঐতিহ্যবাহী ও ঐতিহাসিক। জন, মত, সম্প্রদায়ের উর্ধে এই উৎসবের গ্রহণযোগ্যতা। সময়ের কষ্টি পাথরে পরীক্ষিত! এক প্রাণের উৎসব, যা বহুদিন ধরেই গোটা উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ উৎসবে পর্যবসিত।কোচবিহারের এই রাস উৎসবকে কেন্দ্র করে যে মেলা হয় তাও সময়ের হাত ধরে অনেক বদলে গেছে। এসেছে আধুনিকতার ছোঁয়া! শৈশবে বাবার হাত ধরে যে মেলা দেখেছি তা চরিত্র ও আকৃতি দু'দিক থেকেই বদলে গেছে। গত পঁচিশ বছর ধরে খুব কাছে থেকে এই উৎসব ও মেলা দেখা, অনুভব করার সুযোগ হয়েছে। যা দিনদিন অভিজ্ঞতা ও প্রাপ্তির ঝুলিকে সমৃদ্ধ করে গেছে প্রতি ক্ষেত্রেই।  খুব সংক্ষেপে এই উৎসবের ইতিহাস না জানাটা কিন্তু অবিচারই ...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো,  তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) য...

মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা 2024 সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি (লেখক ও সম্পাদকীয় দপ্তরের কথোপকথন আকারে) --কী পত্রিকা? --নবপ্রভাত। --মুদ্রিত না অনলাইন? --মুদ্রিত। --কোন সংখ্যা হবে এটা? --বইমেলা 2024। --কোন কোন ধরনের লেখা থাকবে? --প্রবন্ধ-নিবন্ধ, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া। --বিশেষ কোন বিষয় আছে? --না। যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে। --শব্দ বা লাইন সংখ্যার কোন বাঁধন আছে? --না। নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো (যেমন, কবিতা 12-14 লাইনের মধ্যে, অণুগল্প কমবেশি 200/250শব্দে)। তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়। --ক'টি লেখা পাঠাতে হবে? --মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। --ফেসবুক বা অন্য কোন প্লাটফর্মে প্রকাশিত লেখা কি পাঠানো যাবে? --না। সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। --পত্রিকা কোন সময়ে প্রকাশিত হবে? --জানুয়ারি 2024-এর দ্বিতীয় সপ্তাহে। --লেখা পাঠানোর শেষতারিখ কত? -- 17 ডিসেম্বর 2023। --কীভাবে পাঠাতে হবে? --মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। --লেখার সঙ্গে কী কী দিতে হবে? --নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) --বিশেষ সতর্কতা কিছু ? --১)মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন '...

উৎসবের সৌন্দর্য: সেকালে ও একালে।। সৌরভ পুরকাইত

  উৎসবের সৌন্দর্য:  সেকালে ও একালে   সৌরভ পুরকাইত বাংলার উৎসব বাংলার প্রাণ। প্রতিদিনের জীবনযাপনের মধ্যে যখন মন ক্লান্ত হয়ে পড়ে তখন তাকে বেঁচে থাকার রসদ যোগায় এই উৎসব। কথায় বলে 'বারো মাসে তেরো পার্বণ'।মন আনন্দই চায়।তাই তাকে সজীবতা দিতে,পরিবারের,সমাজের ভালো-মন্দের কথা মাথায় রেখে মানুষ নিজেই সৃষ্টি করে নিয়েছে নানাবিধ উৎসবগুলিকে। একেবারে প্রাচীন কাল থেকে আজ পর্যন্ত মানুষ কখনোই উৎসব বিমুখ ছিল না।উৎসবই তাকে ঘর থেকে বাইরে টেনে এনেছে,চিনতে শিখিয়েছে আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার আনন্দকে। উৎসব আসলে প্রাণের সাথে প্রাণের যোগ, হৃদয়ের সাথে হৃদয়ের যোগ।রবীন্দ্রনাথ বলেছেন 'সত্য যেখানেই সুন্দর হয়ে প্রকাশ পায় সেইখানেই উৎসব'।হৃদয়ের সেই সুকোমল বৃত্তির জাগরণ যেন ফুটে ওঠা ফুলেরই মতো সত্য ও সুন্দর।এই জাগরণই উৎসব। তাই নানা কিছুর মধ্য দিয়ে,নানা উপলক্ষ্যে এই উৎসব প্রকাশ পায়। প্রাচীনকালে মানুষের হাতে না ছিল পসার, না ছিল পসরা।ছিল মনের আন্তরিকতা,মানুষকে কাছে টেনে নেবার ক্ষমতা।সেটাই ছিল উৎসবের সৌন্দর্য। তাই সেদিনের উৎসবে ক্ষুদ্র,তুচ্ছ উপকরণও প্রাণের উচ্ছ্বাসে মহৎ হয়ে উঠত।সেকালের উৎসবে লোক দেখানো ব্যাপার কিছু ...

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

বসন্তের কোকিল তুমি   বিচিত্র কুমার                      (০১) তোমার দু-আঁখির গহীন অরণ্যে একটা স্বপ্নের বহমান নদী রয়েছে, তারই রেশ ধরে আমি হেঁটে চলি অজানা বসন্তের পথে নীর উদ্দেশ্যে। সে চলার কোন শেষ সীমা নেই তাই আমার বিষণ্ণ একতারা সন্ন্যাস খুঁজে ফিরে , কবে তুমি বুঝবে অনুশ্রী মনের পর্দা খুলে একুশ বসন্ত তোমার রঙ ছিটিয়ে যাচ্ছে অচিনপুরে। এদিকে আমার দেহের প্রতিটি শিরা ধমনীতে প্রবাহিত হচ্ছে তোমার ভালোবাসার একটু উষ্ণতা পাবার জন্যে, শুধু অনুভবে তাণ্ডব উচ্ছাসিত হচ্ছে--- যেদিকে তাকাই --- ফুলে ফুলে ভ্রমর গুনগুনিয়ে উড়ে উড়ে পরে বসন্তের কোকিল গান গায় নব বসন্তে, তোমার দুই চোখে আমার একই ছায়া রয়ে যায় উতলা ভালোবাসার সীমান্তে।                 (০২)        এক রক্তাক্ত বসন্তের স্মৃতি কোন এক উতলা বসন্তের সকালে পুষ্পবনে ফুটেছিল একটি টকটকে লাল গোলাপ, তার সাথে হয়েছিলো দেখা প্রথম ফাগুনে হয়েছিল দুজনার এ জীবনের আলাপ।  তারপর প্র...

অনুভবে, অনুধ্যানে অনালোকিত কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী ।। সুপ্রিয় গঙ্গোপাধ্যায়

"এ কালে একটু লেখাপড়া জানা থাকাতে, এবং বঙ্গভাষায় অনেক গুলি পাঠ্য পুস্তক হওয়াতে কেবল পরনিন্দা করিয়া সময় কাটাইতে তাঁহাদের আবশ্যকও হয় না, প্রবৃত্তিও হয় না। …নিতান্ত সখ্যতা বা আত্মীয়তা না থাকিলে, সকল পেটের কথা খুলিয়া নিঃশ্বাস ছাড়িয়া তৃপ্তিলাভ করা, এ কালের মেয়েরা পছন্দ করেন না। তাঁহারা বইখানি, কার্পেটটুকু, নিজের স্বামী পুত্র লইয়া দিন যাপন করিতে বা একেলা থাকিতে কষ্ট বোধ করেন না।" —শরৎকুমারী চৌধুরাণীর এই লেখা (ভারতী ও বালক/ আশ্বিন কার্তিক, মাঘ/ ১২৯৮) দেখে বুঝতে অসুবিধা হয় না উনিশ শতকে নারীর লেখাপড়া শেখার উদ্দেশ্য ছিল মূলত আত্মমুক্তির জন্য। শুধু লেখাপড়া শেখা নয়, সাহিত্য সৃষ্টিতেও ছয়'এর দশক (উনিশ শতকের) থেকে নারীরা যে ধারা সূত্রপাত করেছিল তা নারীর আত্মমুক্তির পথকেই প্রসারিত করেছিল। ছয়'এর দশকের পূর্বেই ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে প্রথম ছাপার হরফে নারী রচিত কাব্য 'চিত্তবিলাসিনী' প্রকাশিত হয়। লেখেন কৃষ্ণকামিনী দাসী। ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে কবি ঠাকুরাণী দাসীর নাম উঠে আসতে থাকে, যিনি কবিতার পাশাপাশি গদ্যও লিখতেন। ঠিক সেই বছরই জন্মগ্রহণ করেন কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী, যাঁর কবিতা লেখা আত্মমুক্...

বছরের বাছাই

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৪তম সংখ্যা ।। ফাল্গুন ১৪৩১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

  এই সংখ্যায় একটি গ্রন্থ আলোচনা ও একটি ধারাবাহিক রচনা ছাড়া সব লেখাই ভাষা দিবস, মাতৃভাষা, ভাষাচেতনা ও ভাষা সমস্যা বিষয়ক রচনা। লেখাগুলি এই সংখ্যাকে অনেকটাই সমৃদ্ধ করেছে। পড়ুন। শেয়ার করুন। মতামত জানান। লেখকগণ নিজের নিজের লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন যতখুশি, যে মাধ্যমে খুশি। কিন্তু স্ক্রিনশট শেয়ার নৈব নৈব চ!  অন্য বিষয়ের লেখাগুলি আগামী সংখ্যার জন্য রইল।  সকলকে ধন্যবাদ, অভিনন্দন। ভালো থাকুন।   --সম্পাদক, নবপ্রভাত। ==  সূ  চি  প  ত্র  == প্রবন্ধ-নিবন্ধ অমর ২১শে ফেব্রুয়ারি বাঙ্গালীর বাংলা ভাষা দুর্জয় দিবস।। বটু কৃষ্ণ হালদার ভাষা শহীদদের পঁচাত্তর বছর।। অনিন্দ্য পাল একুশে ফেব্রুয়ারি : বাঙালির শ্রেষ্ঠ অশ্রুবিন্দু।। জীবনকুমার সরকার কবিগানের সাহিত্যিক ও সমাজতাত্ত্বিক মূল্য।। বারিদ বরন গুপ্ত বিপন্ন মাতৃভাষা ও সংস্কৃতি।। শ্যামল হুদাতী মায়ের দুধ আর মাতৃভাষা।। প্রদীপ কুমার দে একুশে ফেব্রুয়ারি : কিছু কথা।। বনশ্রী গোপ বাংলায় কথা বাংলায় কাজ।। চন্দন দাশগুপ্ত বিপন্ন মাতৃভাষা ও তার মুক্তির পথ।। মিঠুন মুখার্জী. হে অমর একুশে, তোমায় ভুলিনি, ভুলব না।। মহম্মদ মফিজুল ইসলা...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৭তম সংখ্যা ।। জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ মে ২০২৫

  প্রচ্ছদ চিত্র: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সূচিপত্র রবীন্দ্রনাথ এবং কয়েকজন নারী ।। অনিন্দ্য পাল পরাবাস্তববাদ ও বাংলায় জীবনানন্দের কাব্যচর্চা ।। রণেশ রায় প্রতীক্ষা ।। চন্দন দাশগুপ্ত আশ্রয় ।। সায়নী সাহা বয়স্ক শিক্ষাকেন্দ্র ।। দেবাংশু সরকার প্রণামের প্রভু ।। সুপ্রভাত মেট্যা দুর্ভাগ্যের সম্মুখ সমরে ।। সমীর কুমার দত্ত আচমকা শরৎ ।। অর্ণব সামন্ত প্রতিধ্বনি ✍️ সুবীর কুমার ঘোষ জীবন যেখানে যেমন ।। আরজু মুন জারিন বছর সীমান্তে হিসেব নিকেশ ।। রানা জামান চারটি কবিতা ।। বিবেকানন্দ নস্কর আমরা আছি ।। লালন চাঁদ চাওয়া ।। মাথুর দাস কাগজ ফুলে ।। সফিউল মল্লিক সময়ের স্রোত ।। দুর্গাদাস মিদ্যা তুমি মানুষ ।। বদরুল বোরহান দিঘার সমুদ্র ।। মাখনলাল প্রধান পুস্তক-আলোচনা ।। অরবিন্দ পুরকাইত সংযম ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত  চেনা প্রতিবেশী (প্রথম পর্ব) ।। দীপক পাল খেলার মাঠ ।। তূয়া নূর বন্ধু শ্যামলকান্তি ।। শংকর ব্রহ্ম তুমি তোমার মতো থাকলে ।। সত্যেন্দ্রনাথ বেরা গ্রীষ্মে খুবই হিংস্র রবি ।। জগবন্ধু হালদার স্বপ্ন দর্শন ✍️ পার্থ প্রতিম দাস মৌন মুখরতা ।। মুসা মন্ডল রুদ্র বৈশাখ ।। দীনেশ সরকার চিহ্নিত পদযুগ পদাঘাত ।। দেবাশীষ...

প্রচ্ছদ।। ৮৩তম সংখ্যা ।। মাঘ ১৪৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ।। প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র

  বিঃ দ্রঃ আগামী ফেব্রুয়ারি সংখ্যার জন্য ভাষা দিবসের কথা মাথায় রেখে লেখা পাঠান। email: nabapravatblog@gmail.com  সূচিপত্র ফিচার।। গোপাল ভাঁড়ের অজানা সত্য ।। লোকনাথ পাল প্রবন্ধ ।। মসুয়ার রায় পরিবার এবং বঙ্গসংস্কৃতি ।... প্রবন্ধ ।। সুধীন্দ্রনাথ দত্ত: কাব্যের দার্শনিক ও ন... কবিতায় সেতুবন্ধন (তৃতীয় অংশ) শিল্পবিপ্লবোত্তর কাল... রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর বিদ্রোহী প্রেমের কবিতা: ... কবিতা ।। এই মন ভালো নেই দিনে ।। সুপ্রভাত মেট্যা কবিতা ।। জোছনা আলোর স্বপ্ন ।। তুষার ভট্টাচাৰ্য কবিতা ।। নিঃস্ব হবো ।। লালন চাঁদ কবিতা ।। ভালোলাগা  ।। আজিজ উন নেসা  গল্প ।। স্বীকারোক্তি ।। চন্দন দাশগুপ্ত কবিতা ।। শীতের দিন ।। প্রশান্ত কুমার মন্ডল কবিতা ।। শীতকাল ।। অঙ্কিতা পাল নাসির ওয়াদেনের দুটি কবিতা ভূতের লেখা ছড়া ।। বদরুল বোরহান কবিতা ।। ব্যস্ত ।। আলাপন রায় চৌধুরী ছোটগল্প ।। লম্বুর স্বপ্নপূরণ ।। পরেশ চন্দ্র মাহাত কবিতা ।। সৎকার ।। সুমিত মোদক কবিতা।। শীত বৈচিত্র্য ।। সুমিতা চৌধুরী পুস্তক-আলোচনা ।। নিউটনের আপেল ও প্রেমিকা ।। অরবিন্... গল্প।। শান্তির পথে …...।। বন্দনা সেনগুপ্ত কবিতা ।। মা...

সূচিপত্র ।। ৮৯তম সংখ্যা ।। শ্রাবণ ১৪৩২ জুলাই ২০২৫

সূচিপত্র   প্রবন্ধ ।। বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় ।। মাখনলাল প্রধান প্রবন্ধ ।। শ্রমিকের অধিকার ।। চন্দন দাশগুপ্ত প্রবন্ধ ।। ভিনগ্রহীদের সন্ধানে ।। শ্যামল হুদাতী প্রবন্ধ ।। নারীমর্যাদা ও অধিকার ।। হিমাদ্রি শেখর দাস কবিতা ।। মশালের রং তুলি ।। তূণীর আচার্য কবিতা ।। জললিপি ।। রূপক চট্টোপাধ্যায় গুচ্ছকবিতা || শিশির আজম নিবন্ধ ।। পূনর্জন্ম ।। শংকর ব্রহ্ম মুক্তভাবনা ।। কোলাহল তো বারণ হলো ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত গল্প ।। গানের হাড় ।। শুভজিৎ দত্তগুপ্ত গল্প ।। শিকড়ের খোঁজে ।। সমীর কুমার দত্ত সুপ্রভাত মেট্যার পাঁচটি কবিতা গ্রন্থ-আলোচনা ।। আবদুস সালামের কাব্যগ্রন্থ 'অলীক রঙের বিশ্বাস'।। তৈমুর খান অণুগল্প ।। হরিবোল বুড়ো ।। সুমিত মোদক রম্যরচনা ।। গোয়েন্দা গোলাপচন্দ আর প্রেমের ভুল ঠিকানা ।। রাজদীপ মজুমদার দুটি গল্প ।। মুহাম্মদ ফজলুল হক দুটি কবিতা ।। তীর্থঙ্কর সুমিত কবিতা ।। মেঘমুক্তি ।। বন্দনা পাত্র কবিতা ।। ব্যবচ্ছিন্ন শরীর ।। কৌশিক চক্রবর্ত্তী কবিতা ।। শমনচিহ্ন ।। দীপঙ্কর সরকার কবিতা ।। ভালোবাসার দাগ ।। জয়শ্রী ব্যানার্জী কবিতা ।। ফণীমনসা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ছড়া ।। আজও যদি ।। বদ্রীন...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬

  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠালে  অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে হলে ভালো। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # ...

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ৮৬তম সংখ্যা ।। বৈশাখ ১৪৩২ এপ্রিল ২০২৫

সম্পাদকীয় এই সংখ্যাটি বাংলা নববর্ষ বিষয়ক সংখ্যা। নৱৰ্ষকেন্দ্রিক বহু তথ্যপূর্ণ লেখা এই সংখ্যাটিকে সমৃদ্ধ করেছে। বাংলা নববর্ষ উদযাপনের ইতিহাস, রীতিনীতি, উৎসব, পার্বন, লোকাচার, রূপান্তর বহুবিধ বিষয় প্রকাশিত হয়েছে এই সংখ্যার লেখাগুলিতে। এই সংখ্যার বাছাই কিছু লেখার সঙ্গে আগামীতে আরও কিছু লেখা সংযুক্ত করে বাংলা নববর্ষ বিষয়ক একটি মুদ্রিত সংখ্যা প্রকাশ করার ইচ্ছে রইল।  সকলকে নববর্ষের আন্তরিক শুভকামনা জানাই। উৎসবে আনন্দে থাকুন, হানাহানিতে নয়। ধর্ম-ব্যবসায়ীদের চক্রান্ত ব্যর্থ করে সহনাগরিকের পাশে থাকুন। মনে রাখুন, ধর্মকে মানুষই সৃষ্টি করেছে। ঈশ্বর আল্লা গড ইত্যাদির জন্মদাতা মানুষই। মানুষকে ভালোবাসুন। মানুষের পাশে থাকুন।  নিরাশাহরণ নস্কর  সম্পাদক, নবপ্রভাত।  সূচিপত্র প্রবন্ধ-নিবন্ধ-স্মৃতিকথা পয়লা বৈশাখ ।। সিদ্ধার্থ সিংহ নববর্ষকেন্দ্রিক মেলা, পার্বন, উত্সব, লোকাচার ।। সবিতা রায় বিশ্বাস নববর্ষ আবাহন ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে এবং বিভিন্ন দেশে ।। তুষার ভট্টাচার্য নববর্ষের সেকাল ও একাল ।। হিমাদ্রি শেখর দাস নববর্ষের হাল-হকিকৎ ।। শংকর ব্রহ্ম বোশেখি বাঙালি নাকি পোশাকি বাঙালি? ।। দিব্যেন্দু...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। নবপ্রভাত ৮৫ ।। চৈত্র ১৪৩১ মার্চ ২০২৫

  সূচিপত্র নিবন্ধ ।। মরিয়ম মির্জাখানি: এক অনন্য গণিতসূর্য ।। ... নিবন্ধ ।। নারী দিবসে যা ভাবা উচিত ।। বিশ্বনাথ পাল প্রবন্ধ ।। প্রাচীনকাল থেকে নারীরা অবহেলিত, বঞ্চিত,... নিবন্ধ ।। আমার চোখে আদর্শ নারী ।। জয়শ্রী বন্দ্... ফিচার।। এই মুহূর্তে বাংলা সাহিত্যে নারীদের লেখালেখ... আফ্রিকার লোককথা ।। করোটিকে বিয়ে করা অবাধ্য মেয়েটি ... ছোটগল্প ।। মানবী ।। ভুবনেশ্বর মন্ডল নিবন্ধ ।। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে অন্যতম নারী মু... নিবন্ধ ।। প্রিয় মহিলা সাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবী ।। ... গল্প ।। উই ওয়ান্ট জাস্টিস ।। রবীন বসু প্রবন্ধ ।। নিপীড়িতা ।। শ্যামল হুদাতী ফিচার ।। রমণী রতন ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত প্রবন্ধ ।। নারী সমাজ : তখন-এখন ।। তপন মাইতি নিবন্ধ ।। বহমান কালের ধারায় নারী ।। দীপক পাল গল্প ।। আমার দুর্গা ।। অঞ্জনা গোড়িয়া (সাউ) গল্প ।। যোগ্য জবাব ।। সমীর কুমার দত্ত ছোটগল্প ।। আমি দুর্গাকে দেখেছি।। চন্দন দাশগুপ্ত গল্প ।। সম্পর্ক ।। গৌতম সমাজদার কবিতা।। নারী মানে ।। গোবিন্দ মোদক কবিতা।। নারী ।। সমর আচার্য্য ছড়া ।। নারী অসামান্যা ।। সৌমিত্র মজুমদার কবিতা ।। নারী দিবসে ।। বিবেকানন্দ নস্কর কবিতা ।। না...

প্রবন্ধ ।। বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় ।। মাখনলাল প্রধান

বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় মাখনলাল প্রধান বাংলার শিল্প-সংস্কৃতির জগতে যাত্রা শিল্প তথা নাট‍্যশিল্পে মড়ক নেমে এসেছে । যাত্রা শিল্পের মড়কে শুধু কোভিড নয় তার বহুপূর্ব থেকেই অর্থনৈতিক বিপর্যয় , শিক্ষাক্ষেত্রে বন্ধ‍্যাত্ব এবং গ্ৰাম বাংলার পটপরিবর্তন শেষ পেরেক ঠুকে দিয়েছে। যাত্রা-শিল্পের লীলাভূমি ছিল গ্ৰাম বাংলা। গ্ৰামে প্রচুর যাত্রাপালা হত নানা উৎসবকে কেন্দ্র করে । জমিদারি ব‍্যবস্থা লুপ্ত হওয়ার পর গ্ৰামীণ মানুষের উদ‍্যোগে শীতলা পূজা,  কালীপূজা, দুর্গাপূজা, কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা, চড়ক ইত‍্যাদিকে উপলক্ষ‍্য করে যাত্রাপালার আয়োজন না হলে কেমন যেন ম‍্যাড়ম‍্যাড়ে লাগতো। সেই সঙ্গে কলকাতার বড়বড় কোম্পানির যাত্রাপালা ঘটা করে, টিকিট সেল করে হত মাঠে। খুব বড় মাপের খেলার মাঠ যেখানে ছিল না সেখানে ধানের মাঠ নেওয়া হত ‌। ত্রিশ-চল্লিশ হাজার মানুষ দেখতে আসত। স্পেশাল বাস পাঠাত  আয়োজক কর্তৃপক্ষ। বিনা ভাড়ায় বাসে যাতায়াত করত যাত্রার দর্শকেরা। কিন্তু বিকল্প ধানচাষ শুরু হলে জমিগুলো সময় মতো ফাঁকা পাওয়া গেল না । প্রথম দিকে ব‍্যাপকহারে ধান শুরু না হওয়ায় খুব একটা অসুবিধা হত না। বহুক্ষেত্রে  ধান কা...

প্রবন্ধ ।। ভিনগ্রহীদের সন্ধানে ।। শ্যামল হুদাতী

ভিনগ্রহীদের সন্ধানে  শ্যামল হুদাতী  ইতিহাসের শুরু থেকে বারবার মানুষকে একটা প্রশ্ন কুঁড়ে কুঁড়ে খায় – এই মহাবিশ্বে আমরা কি একা? পৃথিবীর মতো আরও গ্রহ রয়েছে, যেখানে মানুষের মতো বুদ্ধিমান প্রাণীরা বাস করে – এই সম্ভাবনা বরাবর মানুষকে মুগ্ধ করেছে। আমাদের প্রত্যেকের জীবনের কখনও না কখনও এই ভাবনা এসেছে। দীর্ঘ কয়েক দশকের গবেষণার পরও, এই বিষয়ে কোনও নিশ্চয়তা দিতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। জেমস ওয়েব মহাকাশ টেলিস্কোপ, বহু দূরের এমন কিছু গ্রহের সন্ধান দিয়েছে, যেগুলিতে প্রাণ থাকতেই পারে। তবে, নিশ্চিত কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে, আমেরিকার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাম্প্রতিক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, ভিনগ্রহীদের খুঁজতে বহু দূরে যাওয়ার কোনও দরকার নেই। তারা এই পৃথিবীতেই মানুষের ছদ্মবেশে মানুষের মধ্যেই বসবাস করতে পারে। আমরা ভিনগ্রহীদের যেমন কল্পনা করি, এরা তার থেকে আলাদা। এরা অনেকটাই, দেবদূতদের মতো। মানব জগতের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক প্রযুক্তিগত নয়, বরং জাদুকরি। মহাকাশে সৌরজগতের গ্রহ পৃথিবী ছাড়া অন্য কোথায় প্রাণ রয়েছে কি না তা নিয়ে চলছে বিস্তর গবেষণা। একই সঙ্গে পৃথিবী ছাড়া অন্য কোনো গ্রহে মানুষ বসবাস ক...

প্রবন্ধ ।। নারীমর্যাদা ও অধিকার ।। হিমাদ্রি শেখর দাস

নারীমর্যাদা ও অধিকার হিমাদ্রি শেখর দাস  নারীর মর্যাদা বলতে বোঝায় নারীর সম্মান, অধিকার, এবং তার ব্যক্তিগত স্বাধীনতা। এটি সমাজে নারীর অবস্থান এবং তার প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গিকে নির্দেশ করে। নারীর প্রতি সম্মানজনক আচরণ করা হয় এবং তাদের অধিকার গুলি সুরক্ষিত থাকে। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে এই শ্রেণি সংগ্রাম শুরু হয়েছিল অনেক আগে।  একদিকে শ্রেণী বৈষম্য অপরদিকে নারী পুরুষের বৈষম্য এই দুটি ছিল শ্রেণীবিভক্ত সমাজের অন্যতম দুটি মূল ভিত। নারীর অধিকারহীনতা বা দাসত্ব শুরু হয় পরিবার ও সম্পত্তির উদ্ভাবনের ফলে। বহু যুগ ধরে নারী সমাজকে পারিবারিক ও সামাজিক দাসত্বের বোঝা বহন করতে হয়েছে বিনা প্রতিবাদে। সভ্যতার ক্রম বিকাশের সাথে সাথে নিপীড়ন ও নির্যাতনের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে - দাস সমাজব্যবস্থা এবং সামন্ততান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় নারীরা পুরুষ ও পরিবারের অধীনতা স্বীকার করে নিতে বাধ্য হয়েছে। সামাজিক উৎপাদনের কাজে নারীদের বঞ্চিত রেখেই তাদের পরাধীন জীবন যাপনের মধ্যে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। নারীর অধিকারহীনতার বিরুদ্ধে সংগ্রামের সূচনা হয় ইংল্যান্ডের শিল্প বিপ্লবের পরবর্তী সময়ে। নতুন করে নারীদের সামাজিক উৎপাদনের কাজে ...

মাসের বাছাই

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬

  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠালে  অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে হলে ভালো। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # ...

গল্প ।। জাতিস্মর ।। আশীষ কুমার বিশ্বাস

    জাতিস্মর   আশীষ  কুমার   বিশ্বাস    গল্পের শুরুটা প্রায় ষাট বছর আগের কথা । যার নাম গৌতম, ডাক নাম ছিল বাবু ।  তার বছর তখন ছয়-সাত হবে । আমরা বা আমি তখন একটু বড় । এক সাথেই চলতো খেলা । গোল্লা ছুট, দাঁড়িয়া বান্দা, চোর-পুলিশ । যে মাঝে মাঝে খেলা থেকে বিরত থাকতো ; সে-ই জাতিস্মর । মাঠের পাশেই ছিল একটা খেঁজুর গাছ । তাতে হাত রেখে দূরের এক গ্রামের দিকে এক মনে তাঁকিয়ে থাকতো "বাবু" । গ্রামটির নাম "বিনয় পল্লী " । মাঝে বড়ো মাঠ । হাঁটা শুরু করলে তিরিশ - চল্লিশ মিনিট লাগবে । মাঝে জলে ভরপুর দেখে কখনো যাওয়া হয়নি । বাবু কে যখন বলতাম, ওপারে কি দেখছিস? ও বলতো, ওখানে আমার ছোট মা থাকে, দিদি থাকে, আমার ভুলু কুকুর থাকে । এ কথা আমাদের বিশ্বাস হতো না । আবার খেলায় ফিরে যেতাম, খেলতাম ।  কিন্তু ও বসে বসে , ওপারের গাছ পালা , বাড়ি ঘর দেখতো । কাছে গেলে বলতো , ওই যে সবুজ ,কচি কলাপাতা রঙের দালান বাড়ি, ওটাই আমাদের বাড়ি !  এই ভাবে মাস ছয়, বছর গড়াতে লাগলো । মনে প্রশ্ন জাগতে লাগলো, এ টা কি মন গড়া , বা বানিয়ে বানিয়ে বলছে? সত্যি প্রকাশ হোল এক দিন ।  সে বাড়িতে কিছু ...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯৩তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩২ নভেম্বর ২০২৫

সূচিপত্র বস্তু, চেতনা এবং কবি ।। সজল চক্রবর্তী দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত ।। রণেশ রায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট ও সন্নিহিত অঞ্চলের কথ্য শব্দ ।। অরবিন্দ পুরকাইত চাঁদে জীবন ।। শমীক সমাদ্দার অসমাপ্তি ।। মহুয়া হুই গ্যালাক্সির শব্দে ।। জাসমিনা খাতুন তিনটি কবিতা ।। দিবাকর সেন অপূর্ণতার শেষ অধ্যায় ।। সুপ্রিয় সাহা হাফ ডজন ছড়া ।। স্বপনকুমার পাহাড়ী স্বাপ্নিক অমলের ঘুৃম ।। সঞ্জয় দেওয়ান দুটি কবিতা ।। সৌমিত্র উপাধ্যায় পথ চলতি ✍️পার্থ প্রতিম দাস হেমন্তের বিষাদ ছুঁয়ে ।। শক্তিপদ পাঠক রাই আর বাবা ।। অদিতি চ্যাটার্জি স্থিতিশীল ।। রঞ্জিত মুখোপাধ্যায় হৃদয়ের শূন্য কোড ।। লিপিকা পিঙ্কি দে অমানিশা ।। সৌভিক মুখার্জী দৃষ্টিগত ।। শামীম নওরোজ জ্যান্ত ভূতের গপ্পো ।। পার্থ সারথি চট্টোপাধ্যায় ধুতরা ফুলের ঘ্রাণ ।। মজনু মিয়া তারা খসার আলোয় ।। তীর্থঙ্কর সুমিত উত্তরণে অন্তরায় ।। সমীর কুমার দত্ত প্রেম মুদ্রা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ধারা ।। লালন চাঁদ অন্যের ব্যথায় ব্যথি ।। জগদীশ মণ্ডল গর্ভ ।। শাশ্বত বোস ভ্রমণ বিষয়ক স্মৃতিকথা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত শাপে বর ।। সাইফুল ইসলাম রবিবার ।। সঙ্ঘমিত্রা দাস দুটি ...

কবিতা ।। ভাষার জন্য লড়াই ।। চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু

ভাষার জন্য লড়াই চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু মুখের ভাষা বাংলা ভাষা মাকে ডাকি মা, সারা বিশ্বে তোমার মাগো নেই তো তুলনা। তোমার মুখের প্রথম ভাষা আমার মনের সকল আশা তোমার ভাষায় বলবো মাগো আমার মনের কথা, এই ভাষাতেই জড়িয়ে আছে সকল স্বাধীনতা।  এই ভাষাকে আনতে গিয়ে তাজা বুকের রক্ত দিয়ে রাজপথে সব লড়াই হলো করলো লড়াই কারা, আমার মায়ের দামাল ছেলে রক্ত পলাশ যারা।  তোমার ছেলে লড়াই করে আনলো ভাষা ঘরে ঘরে সেদিন থেকে শহীদ মিনার সাজাই ফুলে ফুলে, বীর শহীদের ত্যাগের কথা যাইনি আজও ভুলে।    ++++++++++++++++++++++++++++++++    চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু শহীদ আবুল কাশেম সড়ক, বড় বাজার, চুয়াডাঙ্গা, বাংলাদেশ।

চিরকুটের কবিতা

নতুন পৃথিবী আজ সকালে রোদ্দুর নামুক ভেজা বর্ষার মতো গা ধুয়ে কিছুটা পবিত্র হবো যত জীর্ণ মলিন দ্বেষ বিলীন হোক সব সময়ের তটে গা ভাসিয়ে কিছুটা বিলাসী হবো যা ছিল অতীত যা ছিল কষ্ট সবকিছু ভুলে নবীনে ব্রতী হবো আসুক ধেয়ে সতেজ হাওয়া দূর হোক যত কুণ্ঠা ব্যথা পুরানো যত বিবাদ ভুলে ভালোবাসার আবার বেড়া দেবো কিছুটা আশাবাদী কিছুটা কর্মঠ কিছুটা জেদি কিছুটা শপথ আসুক ছুঁয়ে বাঁচার আলো হাতে হাত রেখেই বিশ্বাসের ঘরে আবার নতুন দীপ জ্বালাবো

কবিতা ।। মনোজকুমার রায়

জল সিঁড়ি চেক বইয়ের পাতা ফুরিয়ে যেতে থাকে -- ঝরে পড়ে বৃদ্ধ গাছটির পত্রমুকুল কাঁচা গন্ধ বেয়ে চলে সময়ের স্রোতে  সারা ভোর জেগে থাকি ঘুমের টলে তাড়া দেয় একগ্রাস অবিশ্বাসী বায়ু দিন ফুরনো লাল সূর্যের টানে নেমে আসে পাড় ছোঁয়া জল সিঁড়ি ================= মনোজকুমার রায় দঃ ঝাড় আলতা ডাউকিমারী, ধূপগুড়ি জলপাইগুড়ি -৭৩৫২১০ মো ৭৭৯৭৯৩৭৫৬৬

উন্মুক্ত পাগলামি ।। আশরাফুল মণ্ডল

উন্মুক্ত পাগলামি আশরাফুল মণ্ডল আহা, অপরূপ নিজস্বতার দাহ! কুঁকড়ে যায় আবহমান, সজনে পাতার বোঁটায়! ভাপওঠা ভাতের কাছে মাছি সত্তায় কী নিপুণ! তবুও ঘোর লাগা বসন্তের ডাক, হাঁকে! খেদিয়ে দেয় পা দোলানো প্রস্তাব, ওই ধুনুরি চোখ! রাংতায় মোড়া ডাকের সাজ, দে দোল দোল! হুইসেল বাজিয়ে কে রুখে দ্যায় সেই নাকছাবির রুদালি কাঁপন! খালবিল ছেঁচে পাঁচসিকের  মানত কুড়িয়ে আনে, বাংলা বাজার। ঠ্যাং নাচানো সুরে চোখ মারছে, দ্যাখো ভ্যানতারা! মুখ খোলা মানেই পাঁজরের স্রোত ভাবা যেন উগরানো টালমাটাল! ঢিল মারা প্রশ্নের রোয়াকে বক্রচোখে যেন মেধাবী কবিতা! মুছে দিও তবে লাজুক গুপ্ত রোগ, দিনরাত্রি! ভালো থেকো তোমরা বাছাধন, রং মাস সে আর কতদিন... ================    ASRAFUL MANDAL Chandidas Avenue, B-zone, Durgapur, Paschim Bardhaman, Pin - 713205,  

কবিতা ।। রঙ ।। ইউসুফ মোল্লা

  রঙ  ইউসুফ মোল্লা সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি,  পৃথিবী নানা রঙে সেজে উঠেছে।  ধূসর বাদামী রঙ তোমার দেহ,  মাথায় সবুজ রঙের বাবরি চুল,  তাতে গুঁজে রেখেছো লাল-নীল ফুল।  নববধূর মতো সিঁথিতে দিয়েছো সিঁদুর,  চোখে দিয়েছো কাজল।  দিগন্তভরা আকাশ তোমাকে নীল উপহার দিল,  সূর্যের লাল আলো তোমাকে সুন্দর করেছে।  তুমি তাদের ফিরিয়ে দিলে, বুকভরা ভালোবাসা আর স্নেহ।  মাঝে মাঝে এইভাবে হোলি আসে,  আমার মনকে রাঙিয়ে দিতে। ------------------    ইউসুফ মোল্লা উত্তর অঙ্গদ বেড়িয়া, ট্যাংরাখালী, ক্যানিং,  দক্ষিণ ২৪ পরগনা, ৭৪৩৩২৯

চন্দন সুরভি নন্দর কবিতা

টাকার মেশিন                      মায়ের ওষুধ নিয়ে শহর থেকে ফিরল রতন সবে সন্ধ্যা নেমেছে  রাস্তায় আলো কম হাসপাতাল অনেক দূরে  অদৃশ্য যম খেলাকরে  মৃত্যুর সীমান্তে শায়িত মা   শেষ রক্ষা হল না  আস্তে আস্তে ভোরের আলো ফোটে রাতের আঁধারে ঘরের দেওয়াল গুলো রাঙিয়ে গেছে কারা  তুলেছে রং বেরং এর তোরন  এসেছে নির্বাচন  শোনাযায় এবার নাকি এ টি এম চিহ্নে দাঁড়িয়েছে একজন! টাকার মেশিন........  জিতলে সবাইকে দেওয়া হবে! সামনে বসে উল্লাসে ফেটে পড়া রোবট গুলো মানুষ কবে হবে?  ====================== Chandansuravi Nanda Revenue Office  BL&LRO,Manbazar-ll Boro Purulia PIN-723131 Phone-9163332432

ছোটগল্প ।। নীলিমার আত্মজাগরণ ।। পরেশ চন্দ্র মাহাত

নীলিমার আত্মজাগরণ পরেশ চন্দ্র মাহাত নীলিমা মাহাত, বয়স পঁচিশ প্লাস —তার বাবা মায়ের পঞ্চম তথা শেষ সন্তান। দুই দাদা —বড়দাদা শঙ্কর ও ছোটদাদা বিজয়। বড় দাদা শঙ্কর আর দুই দিদি তাদের কিন্তু বিয়ে হয়ে গেছে। একমাত্র নীলিমা আপাতত স্বামীর কোমল হাতের স্পর্শ ও সহানুভূতি থেকে বঞ্চিত এবং আদৌ কবে অথবা সেই সৌভাগ্য আসবে সেটা ঈশ্বরের নিকটই একমাত্র জ্ঞাত। সেই সঙ্গে দুবছরের সিনিয়র ছোটদাদা বিজয়েরও নীলিমার মতো অবস্থা। তারও জীবনসঙ্গিনী জুটেনি। মোট সাতজন সদস্য নিয়ে গঠিত সংসার নীলিমাদের পরিবার। মধ্যবিত্ত পরিবার —মধ্যবিত্ত পরিবার না বলে যদি নিম্নবিত্ত বলা হয় তবুও কোনো অত্যুক্তি করা হয় না। বাবার প্রত্যেকদিনের আয়ের উপর ভিত্তি করেই চলে সংসার। এই কঠোর এবং কঠিন পরিস্থিতিতেও নীলিমার মা শ্রীমতী মেনকা‚ সংসার সামলে তার ছেলেমেয়েদের পড়াশুনার প্রতি যথেষ্ট তৎপর ও সহানুভূতিশীল। তাদের পড়াশুনায় কোনো খামতি রাখেননি। যথা সময়ে তাদেরকে বিদ্যালয়ের মুখ দেখিয়েছে – টিউশনের বন্দোবস্ত করেছে। তাদের জীবন যাতে সুখকর হয় সেটাই প্রতিদিন ভগবানের কাছে প্রার্থনা করেছে। পাঁচ-পাঁচটি ছেলেমেয়ের মধ্যে সবাইকে উচ্চশিক্ষিত করে তোলা একপ...