গুচ্ছকবিতা ।। সুশান্ত সেন
সুকান্ত
তোমার হাতের ঝলসানো রুটি অনেক দিনের পর চাঁদের জ্যোৎস্নায় দেখতে পেয়ে মাথা তুলে দেখি তুমি মেট্রো স্টেশন এ দাঁড়িয়ে আছো।
তখন রাত্রি এগারোটা। এত রাত্রে তুমি মেট্রো স্টেশন এ কেন—শেষ মেট্রো ত অনেকক্ষণ চলে গেছে - তুমি কি সেই ট্রেন টা ধরতে অসমর্থ হয়েছিলে ।
উত্তর যে তুমি দেবে না তা জানতাম কারণ তোমার রুটি আজকাল কেউ চাঁদের জ্যোৎস্নায়
সেঁকে না বরং শোনা যায় ভারতীয় মহাকাশ বিজ্ঞান অনেক উন্নত ও ইসরো চাঁদে মানুষ পাঠাবার তোড়জোড় করছে।
কোন কোন সংসারে রুটি বাড়ন্ত সে কথা এখন চুপি চুপি বলতে হয় কারণ ভান্ডারের চাবি লুট হয়ে গেছে।
শতাব্দী এখন বিষ-নিঃশ্বাস ফেলছে—গাজায় ।
যুদ্ধ
একটা যুদ্ধ হলে কি কি সর্বনাশ হতে পারে
চিন্তা করতে গিয়ে দেখি
উগান্ডার উপজাতি যুদ্ধে ওকিডি
এমন অবস্থায় পড়েছিল,
সৈন্যরা তার যে যৌনহেনস্থা করে ছেড়েছিল
সর্ব সাধারণের সামনে ওকিডি তা
বলতে পারেনি।
কেবল নিজের স্ত্রী কে বলার পর
স্ত্রী ও সন্তানরা ওকে চুপ করে থাকতে
বলেছিল।
আনেক ক্লেশ অনেক যন্ত্রনা ভরা এই
সিদ্ধান্ত
এই চুপ করে থাকার সিদ্ধান্ত ।
সৈন্যরা তাকে নিয়ে যে যে খেলা
খেলেছিল সর্ব সমক্ষে বর্ণনা করা যায় না।
শোনা গেল - সৈন্যরা এইরূপ খেলাই খেলে থাকে।
কি করে ?
কি করে আমরা মানুষ খাই বলতে পারেন,
কি করে চাঁদ পুড়িয়ে ফেলি বলতে পারেন?
বলতে পারেন কেন আমরা নিদারুণ শীতেও হিমালয়ের বরফ খুঁড়ে ট্রেঞ্চ বানাই
কেনই বা আল্ট্রা আলোর দূরবীনের আড়াল
খুঁজি?
বলতে পারেন কেন আমরা
শঙ্কা নিয়ে ঘর করছি রাত্রি দিন?
বলতে পারেন চোখ থাকতেও আমরা হলাম অন্ধ কেন
অন্ধ কেন অন্ধ কেন?
বলতে পারেন কবে আমরা মানুষ খাওয়া বন্ধ করে মানুষ হবো ?
চাঁদ পুড়িয়ে খাব না আর সকাল সন্ধ্যে !
এখন
কাটালো আরো একটা দিন বন্দী মানুষ
দেশে দেশে বন্ধন - শ্রী ক্যাম্পে
মুক্তি পাবার নেশা ঘুচল অসহায়ের
মানুষ হলো চিড়িয়াখানার জীব
দেশ'টা কোথায় দেশ'টা কোথায় নিজের
ভাঙছে ভাঙছে উপাসনার স্থল
কাঁটাতারের বাজার ঊর্ধ্বমুখী
এই মওকায় ব্যবসা জমছে বেশ।
শাসক সবাই নোটিশ ধরায় খাদ্যে
ভর্তুকি আর পাবে নারে ঝুপড়ি
কাটাও কাটাও বন্দী জীবন ক্যাম্পে
মানুষ হলো চিড়িয়াখানার জীব।
সুশান্ত সেন
৩২, বি, শরৎ বোস রোড কলিকাতা ৭০০০২০
৯৮৩০২৪২১৩৪
No comments:
Post a Comment