গুচ্ছকবিতা ।। তুষার ভট্টাচাৰ্য
রোদ্দুরের জামা পড়ে
আবার কেউ না কেউ অপমানিত দুঃখী
আমাকে জাগাতে আসবেই
ভোরবেলা রোদ্দুরের জামা পড়ে ;
এইটুকু সান্ত্বনা নিয়েই বেঁচে থাকি
প্রতিদিন অলীক স্বপ্নের উৎসবে।
নদীর পাড়ে
হেমন্তের পর্যটক এসে দেখে গেছে
সূর্যাস্তের ঘুরঘুট্টি অন্ধকারে
ব্যর্থ অসফল কবি
ঘুমিয়ে রয়েছে পাণ্ডুলিপি
বুকে নিয়ে নির্জন নদীর পাড়ে;
তার না কামানো দাড়ি, চুল
রোগাতে শরীর ঢেকে গেছে
মনস্তাপের অশ্রু অক্ষরে।
ভোরের স্বপ্ন
ক্ষুধার চারণভূমিতে আমি ঝকঝকে
চাঁদের থালায় করে জুঁইফুলের মতন
সাদা ধবধবে গরমভাতের স্বপ্ন
দু'হাতের মুঠোয় উড়িয়ে এনে
ছড়িয়ে দিই হাড়হাভাতে
বুভুক্ষু মানুষের দুঃখী ম্লান চোখে মুখে ;
তারপর সবাই নিরাশার ঝুলকালি
ঝেড়ে ফেলে জেগে ওঠে ভোরের স্বপ্ন
বুকে নিয়ে।
অভিমানী মুখ
নিঝুম রাত্তিরে ঝরা শিশিরের কান্না জলের ভিতরে
যার অভিমানী ম্লান মুখ ভেসে ওঠে
তাকে আমি চিনি;
সে ছিল অমল কৈশোরের
রূপকথা স্বপ্ন সহচরী;
তাকে আমি আজও নীরবে খুঁজি
মায়া মৃদঙ্গ জোছনায়
ওই দীঘল আকাশ দিগন্ত রেখায়।
জানালা খুললেই
জানালা খুললেই উঁকি মারে রুপোলি চাঁদ
সন্ধ্যাতারার আকাশ থেকে থোকা থোকা স্বপ্ন
উড়ে আসে ঘরে;
জানালা বন্ধ করলেই
শীতের গন্ধ নিয়ে
হিমেল রাত্তিরে কালো পোশাক পড়ে কে যেন
ঘরে আততায়ীর মতন
ওত পেতে থাকে জ্বলন্ত
চোখ।
=============
তুষার ভট্টাচাৰ্য
বহরমপুর
মুর্শিদাবাদ

Comments
Post a Comment