Skip to main content

অসবর্ণ ।। দেবাংশু সরকার

banglar sarat prakriti

অসবর্ণ

দেবাংশু সরকার


      ইন্টারভিউ দেওয়ার পর অরূপের মনে হয়েছিল চাকরিটা হয়তো সে পেয়ে যাবে। বেশ ভালোভাবেই সে ইন্টারভিউতে করা প্রশ্নগুলোর উত্তর দিয়েছিল। সেইসঙ্গে ক্যাশ হ্যান্ডেলের তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথাও বলেছিল। অরূপের মনে হয়েছিল ইন্টারভিউ বোর্ডে যারা ছিলেন তাদের হয়তো অরূপের কথাবার্তা বেশ ভালো লেগেছে। বারে বারে তাদের মাথা নাড়া, মুখের হাসি দেখে অরূপের মনে হয়েছিল তারা হয়তো অরূপের প্রতি কিছুটা হলেও সন্তুষ্ট। বেসরকারি চাকরি হলেও এই অফিসটা সব রকম সরকারি নিয়মকানুন মেনে চলে। প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্রাচুইটি, বোনাস সব রকম সুবিধা কর্মচারীরা পায়। চাকরির শেষে পেনশনের ব্যবস্থাও আছে। হয়তো সরকারি চাকরির মত বড় অঙ্কের  পেনশন এই কোম্পানির অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীরা পায় না। কিন্তু পেনশন বাবদ প্রতি মাসে কিছু টাকা তাদের হাতে আসে। মাহিনাও খুব একটা খারাপ নয়। অর্থাৎ সরকারি চাকরির মত অত সুবিধা না থাকলেও, তুলনামূলকভাবে খুব একটা খারাপও নয়। কিন্তু একটাই অসুবিধা তাকে বাড়ি ছেড়ে থাকতে হবে। কারণ এই অফিসটা অরূপের বাড়ি থেকে অনেকটা দূরে। বাড়ি থেকে প্রত্যেক দিন অফিসে যাতায়াত করা সম্ভব নয়। অফিসের কাছাকাছি কোনও বাড়ি ভাড়া করে থাকতে হবে।
      ইমেল মারফত চাকরির অফার লেটারটা পাওয়ার পরে অরূপ এসেছে তার নতুন অফিসে।  ফ্যাক্টরি সংলগ্ন অফিস। সহরাঞ্চল থেকে বেশ কিছুটা দুরে। আশপাশের পরিবেশটা অনেকটাই গ্রাম্য। কিছু কাগজপত্র জমা দিতে হবে। তাছাড়া আরও কিছু অফিসের নিয়ম কানুন তাকে পূরণ করতে হবে। সেইসঙ্গে একটা ভাড়া বাড়ির ব্যবস্থাও সে করে যাবে বলে ঠিক করেছে। এক কামরার খুব ছোট ঘর হলেও তার চলবে। সে রান্নাবান্না মোটামুটি করতে জানে, একা থাকলেও তার অসুবিধা হবে না। নতুন অফিসে এসে প্রথম দিন অরূপের ভালোই লেগেছে। প্রথম দিনেই তার মনে হয়েছে অফিসের অন্যান্য কর্মচারীরা খুব মিশুকে। প্রথম দিনেই তারা অরূপের সঙ্গে মন খুলে কথা বলেছে। তার সম্বন্ধে যথেষ্ট আগ্রহ দেখিয়েছে। এমনকি কোনও কিছু প্রয়োজন হলে, কোনও রকম দ্বিধা না করে অরূপ যেন তাদের বলে সে কথাও জানিয়েছে। সহকর্মীদের আন্তরিক ব্যবহারে অরূপ মুগ্ধ হয়।
      শ্যামল নামের এক সহকর্মী যে অরূপের প্রায় সমবয়সী তাকে অরূপ একটা ছোট খাটো ভাড়া বাড়ি দেখে দেওয়ার জন্য বলে। শুনে শ্যামল বলে, "ভাড়া বাড়ি নিয়ে কোনও চিন্তা করোনা। আমাদের নবীনদার কয়েকটা ছোট ছোট বাড়ি আছে। ভাড়া দেয় তুমি একা থাকবে, খুব বড় বাড়ির প্রয়োজন নেই। ছোট এক কামরার ঘরেই তোমার হয়ে যাবে। এখানে খুঁজলে তুমি অবশ্য বড় বাড়িও পেয়ে যাবে। তবে বড় বাড়ি তোমার মনে হয় না খুব একটা প্রয়োজন। তাছাড়া বড় বাড়ির ভাড়াও বেশি পড়বে। তুমি নবীনদার সঙ্গে কথা বলে দেখো। নবীনদারন্ত যদি বাড়ি খালি থাকে, তোমার ব্যবস্থা হয়ে যাবে। না হলে অন্য ব্যবস্থা করতে হবে।" 
      - "নবীনদাকে আমি চিনি না। তুমি একটু কথা বলে দেবে?" 
      - "এক্ষুনি কথা বলে দিচ্ছি। এসো আমার সঙ্গে।"
       শ্যামল অরূপকে নিয়ে পাশের ঘরে গিয়ে নবীন বাবুর সঙ্গে অরূপের আলাপ করিয়ে দেয়। নবীন ব্যানার্জি বয়স্ক মানুষ। তার তিন মেয়ে, ছেলে নেই। অবসরের কাছাকাছি চলে এসেছেন। অফিস থেকে প্রায় চার কিলোমিটার দূরে তার বাড়ি। ছাপোষা মানুষ, রোজগার করে যেটুকু টাকা জমাতে পেরেছেন তার অনেকটাই খরচ হয় গেছে বড় দুই মেয়ের বিয়ে দিতে গিয়ে। ছোট মেয়ে জয়ী কলেজে পড়ে। এবারে তাকেও পাত্রস্থ করতে হবে। সেইজন্য ভেবে চিন্তে হিসাব করে সংসার চালান। একটু একটু করে টাকা জমাচ্ছেন। নবীন বাবু সাত্বিক ব্রাহ্মণ। আজন্ম নিরামিষাশী। প্রতিদিন জপ আহ্নিক না করে অন্নজল গ্রহণ করেন না। বড় দুই মেয়েকে কুলীন ব্রাহ্মণ ঘরে বিয়ের দিয়েছেন। ছোট মেয়েটির বিয়েও দেখে শুনে সেই রকম কোনও উচ্চ বংশের সন্তানের সঙ্গে দেবেন বলে মনস্থির করে রেখেছেন। তবে ছোট মেয়ের বিয়ের ব্যাপারে তিনি কিছুটা হলেও চিন্তিত। চিন্তার একটাই কারণ টাকা। নিজের পছন্দ মত কুলীন ঘরের পাত্র পেতে হলে আজকের দিনেও খরচ খরচা বেশ ভালই হয়। পণপ্রথা নিয়ে এত আন্দোলন, এত প্রচার, এত আইনের ব্যবস্থা হলেও পুরোপুরি পণপ্রথা এখনও সমাজ থেকে উঠে যায়নি। বরং কোথাও কোথাও যেন আরও জাঁকিয়ে বসেছে। বাড়ি ভাড়ার কথা বলতে নবীন বাবু অরূপকে জানালেন যে তার একটা এক কামরার ঘর কিছুদিন হল খালি হয়েছে। তিনিও ভাড়াটে খোঁজা শুরু করেছেন।
      বললেন, "আমরা সহকর্মী হতে চলেছি। এক অফিসে একসঙ্গে দুজনে কাজ করব। আমাদের মধ্যে বোঝাপড়া এমনিতেই তৈরি হয়ে যাবে। তাই আপনাকে ভাড়াটে হিসেবে পেলে আমার সুবিধাই হবে।" 
      - "আমাকে আর 'আপনি' বলবেন না নবীনদা। আমি প্রায় আপনার ছেলের বয়সী।" 
      - "ঠিক ঠিক। আমার ছেলে না থাকলেও তুমি আমার বড় মেয়ের বয়সী। তোমাকে আমি তাহলে তুমি বলে ডাকব। তুমি অবশ্য আমাকে 'নবীনদা' বলে ডেকো। অফিসে এসে কাকা জ্যাঠা সম্মোধনটা ঠিক ভালো লাগে না।" নবীন বাবুর কথা শুনে অরূপ শ্যামল দুজনেই হেসে ওঠে। "কিন্তু অরূপ, আমার বাড়ি এই অফিস থেকে প্রায় চার কিলোমিটার দূরে। অটোতে আসতে আমার অনেক টাকা খরচ হয়। সেইসঙ্গে কিছুটা হাঁটতেও হয়। এ ব্যাপারে তোমার কোনও অসুবিধা হবে না তো?"
      - "তেমন অসুবিধা হবে না। আমার একটা মোটর বাইক আছে। সেটা না হয় এখানে নিয়ে আসব। আপনাকেও তাহলে আর রোজ অটোতে চড়তে হবে না।" 
      - "সে তো ভালই হবে। তাহলে চলো ঘরটা দেখে আসবে। ভাড়া নেওয়ার আগে দেখা দরকার। পছন্দ অপছন্দের একটা ব্যাপার আছে। এবারে আধঘন্টার টিফিনের ব্রেক হবে। এরমধ্যে আমরা দেখে আসি।" নবীন বাবু অরূপকে নিয়ে বেরিয়ে যান। অন্যান্য কলিগদের বলে যান যে ফিরতে একটু দেরি হতে পারে, তারা যেন সামলে নেয়। সেইসঙ্গে তার স্ত্রীকে ফোন করে জানিয়ে দেন যে তিনি একজনকে নিয়ে ঘর দেখাতে যাচ্ছেন। ঘর দেখে মোটামুটি ভালো লাগে অরূপের। ভাড়ার ব্যাপারে কথাবার্তা বলে নেয়। নবীন বাবুর স্ত্রীও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। বাড়ি দেখার পর তারা নবীন বাবুর ঘরে আসে। নবীন বাবুর স্ত্রী আগে থেকেই রান্না করে রেখেছিলেন। তিনি কিছুতেই অরূপকে না খাইয়ে ছাড়বেন না। অগত্যা অরূপকে বসতেই হয় ডাইনিং টেবিলে। 
      - "বৌদি আমার মা বেশ কয়েক বছর আগে গত হয়েছেন। আজ মনে হল অনেকদিন পর যেন মায়ের হাতের রান্না খেলাম। সত্যিই পেটের সঙ্গে মন ভরে গেল।" 
      - "ঠিক আছে, এবারেতো এখানেই থাকবে। মাঝে মাঝে আমার রান্না খেয়ে দেখবে।" 
      নবীন বাবু ঘড়ির দিকে তাকান। ভাবেন আর সময় নষ্ট করা যাবে না। তাহলে অফিসে পৌঁছাতে অনেক দেরি হয়ে যাবে। বেরিয়ে পড়েন তারা। বের হওয়ার আগে নবীন বাবুর স্ত্রী অরূপকে বলেন, "আজ একজনের সঙ্গে দেখা হল না। আমার ছোট মেয়ে জয়ী, কলেজে গেছে। কলেজ করে, প্রাইভেট পড়ে ফিরতে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে যাবে। রোজ অবশ্য দেরি হয় না। সপ্তাহে একদিন দেরি হয়। সেদিন আমি একটু চিন্তায় থাকি। মেয়ে ঘরে ফিরলে নিশ্চিন্ত হই।" 
      - "আজ আপনার মেয়ের সঙ্গে আলাপ হল না। পরে নিশ্চয়ই হবে।" 
     - "সে তো হবেই। পাশাপাশি বাড়িতে থাকলে দেখা সাক্ষাৎ আলাপ পরিচয় হবে।" 
      পরের মাসে অরূপ নতুন চাকরিতে যোগ দেয়। সেইসঙ্গে চলে আসে নবীন বাবুর ভাড়া বাড়িতে। ভাড়া বাড়িতে অরূপ নিজেই রান্না করে খায়। খুব সকালে তাকে ঘুম থেকে উঠে রান্না করতে হয়। তারপর সাড়ে নটা নাগাদ সে বেরিয়ে পড়ে তার অফিসের উদ্দেশ্যে। নবীন বাবুও অটোর বদলে অরূপের বাইকে চড়ে প্রতিদিন অফিসে যাতায়াত করেন। অটোর ভাড়াটা বেঁচে যায়। এমন এক ভাড়াটেকে পেয়ে তিনি বেজায় খুশি। নবীন বাবুর স্ত্রী মাঝে মাঝে অরূপের খোঁজ খবর নেন। কোনও কিছু অসুবিধা হচ্ছে কিনা জানতে চান। নবীন বাবুর ছোট মেয়েকে অরূপ দু একবার দেখতে পেলেও, তার সঙ্গে অরূপের এখনও আলাপ হয়নি। কলেজ যাওয়া, পড়তে যাওয়া ছাড়া নবীন বাবুর ছোট মেয়ে জয়ী খুব একটা বাড়ির বাইরে বের হয় না। সপ্তাহে  একদিন তার কলেজের পর প্রাইভেট টিউশনি পড়ে বাড়ি ফিরতে সন্ধ্যা হয়ে যায়। 
      সকালে সময় অল্প, তাই মাঝে মাঝে সন্ধ্যার পর অরূপ অফিস থেকে ফিরে আবার বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ে। স্টেশন সংলগ্ন বাজার থেকে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কাঁচা আনাজ এবং রান্নার অন্যান্য জিনিস সে সন্ধ্যার পর কেনাকাটা করে। রাতেই সে রান্নার জন্য শাকসবজি, আনাজ কেটে রাখে। সকাল হতে না হতেই রান্না চাপিয়ে দেয়।  
      - "ম্যাডাম, শুনছেন।" ঘুরে তাকায় জয়ী। দেখে তাদের নতুন ভাড়াটিয়া  তাকে ডাকছে। 
      - "আমি এখন বাড়ি যাব। অটোর জন্য লম্বা লাইনে না দাঁড়িয়ে আপনি আমার সঙ্গে যেতে পারেন।"
       - "যেতে পারি, কিন্তু..."‌। 
       - "কিন্তু কি?" 
       - "আমি এর আগে কারও বাইকে উঠিনি। তাই ভয় করছে।" 
      - "ঠিক আছে, উঠে আসুন খুব আস্তে চালাব।" 
      - "আসতে চালাবেনতো?" 
      - "কোনও ভয় নেই। খুব আস্তে চালাব।"
      - "তবুও ভয় লাগছে। যদি আস্তে চালাতে গিয়ে ব্যালেন্স হারিয়ে পড়ে যান! আমিওতো পড়ে যাব। খুব চোট লাগবে।"
       জয়ীর কথা শুনে হেসে ফেলে অরূপ। বলে, "আমি খুব খারাপ ড্রাইভার নই ম্যাডাম। এখন আমার কাছে বাইক চালানোর সার্টিফিকেট নেই। বাড়িতে চলুন, আপনার বাবা রোজ আমার বাইকে চড়েন। ওনার থেকে সার্টিফিকেট নিয়ে আপনাকে দেখাব।" 
      বাইকে উঠে পড়ে জয়ী। বাইকে বসে প্রশ্ন করে, "কিছু ধরার জায়গা নেই?" 
      - "আছেতো। পুলিশ যেভাবে চোরের কলার ধরে টেনে নিয়ে যায়। আপনিও সেভাবে আমার জামার কলারটা ধরুন।" 
      - "ঠিক আছে। তবে খুব আস্তে চালাবেন। আমার সত্যিই খুব ভয় করছে।" পুরো রাস্তাটা জয়ী প্রায় দম বন্ধ করে বাইকে বসেছিল। বাড়ির সামনে এসে যেন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে বলে, "আপনি ভালোই গাড়ি চালান। আমি একটুও টলমল করিনি। অকারণে ভয় পাচ্ছিলাম।" 
      - "প্রথমবার বাইক চড়াটা আপনার কাছে রীতিমতো একটা অ্যাডভেঞ্চার হল।" 
      - "সত্যিই বাইকে উঠে প্রথমে খুব ভয়ে ভয়ে ছিলাম। এখন মনে হচ্ছে তেমন ভয়ের কিছু নেই বরং বেশ মজাই লাগল। মাঝে মাঝে চড়ব আপনার বাইকে। মাকেও চড়াব।" 
      সন্ধ্যার পর অরূপ নিজের ঘরে বসে টিভি দেখছে। এমন সময় দরজায় টোকা। উঠে গিয়ে সে দরজা খোলে। নবীন বাবুর স্ত্রী এসেছেন। হাতে একটা বাটি। তার পেছনে জয়ী। 
      - "আজ ফ্রাইড রাইস করেছিলাম। ভাবছিলাম তুমি কখন বাড়ি ফিরবে।" 
      - "আমি যে বাড়ি ছেড়ে এত দূরে একা আছি। আপনার জন্য সে কথা বুঝতেই পারিনা।" 
      অরূপের কথার মাঝেই জয়ী বলে, "জানো মা, আজ একটা এডভেঞ্চার হল। আমি স্টেশন থেকে অরূপের বাইকের চড়ে বাড়ি ফিরেছি। যতক্ষণ বাইকে বসে ছিলাম, কি ভয় করছিল! যখন নামলাম তখন মনে হল ভয়ের কিছুই নেই। তুমি একদিন চড়বে অরূপের বাইকে?"
      - "না বাবা, আমার দরকার নেই। তারপর পড়ে গিয়ে বুড়ো বয়সে হাত পা ভাঙব?" 
      - "ঠিক করে বসলে পড়ে যাওয়ার কোনও চান্স নেই। তুমি শুধু শুধু ভয় পাচ্ছ। প্রথমে আমিও ভয় পেয়েছিলাম। তারপর বেশ মজা লাগল। কি রকম হুশ করে চলে এলাম। সত্যি পরের দিকে আমার বেশ মজা লাগছিল। অরূপ তুমি কি রোজ সন্ধ্যাবেলা স্টেশনের দিকে যাও?" 
      - "রোজ না হলেও, প্রায়ই যাই।" 
      - "ঠিক আছে, আমি যেদিন পড়ে ফিরব সেদিন অন্তত যাবে। আমি তোমার বাইকে ফিরব। বেশ মজা হবে।" 
      - "সেইসঙ্গে অটোর ভাড়াটাও বাঁচবে। ওই টাকায় ফুচকা খাব। সত্যি কি ধান্দাবাজ আজকালকার মেয়েগুলো!" ফোড়ন কাটেন নবীন বাবু স্ত্রী। 
      নবীন বাবুর স্ত্রীর কথাগুলো শুনে হেসে ওঠে অরূপ। বলে, "এতে অসুবিধের কিছু নেই। এমনিতেই আমাকে সপ্তাহে তিন চার দিন বাজার করতে যেতে হয়। জয়ী পড়তে যাওয়ার দিন আমি বাজার করতে যাব। তাহলে আমিও ফুচকার ভাগ পাব।" 
      কেবল পড়ে ফেরার দিন নয়। মাঝে মাঝেই জয়ীকে অরূপের বাইকে চেপে ঘুরতে দেখা যায়। সেইসঙ্গে স্টেশন চত্বরে গজিয়ে ওটা নতুন রেস্টুরেন্টে আড্ডাও চলে।
      - "অরূপ তুমিতো আমার বাবাকে নবীন দা বলো। মাকে বৌদি বলো। তাহলে তোমাকে আমার কাকা বলা উচিত।" 
      - "এই না, একদম নয়। কখনো আমাকে কাকা বলে ডাকবে না।" 
      - "কাকা নয়। তাহলে কি বলব?" 
      - "জ্যাঠা।" 
      - "এই ফোট এখান থেকে। এইটুকু ছেলেকে জ্যাঠা বলতে হবে! মামার বাড়ির আবদার।" 
      - "তাহলে যা বলছ, তাই বলো। 'হ্যাঁগো', 'ওগো' করে চালিয়ে যাও।" 
      - "এই অরূপ বলো না, কবে সত্যি সত্যি 'হ্যাঁগো', 'ওগো' বলে ডাকব?"
      - "জানি জানি সব জানি। প্রথম প্রথম সবাই সোহাগ করে মিষ্টি সুরে 'হ্যাঁগো', 'ওগো শুনছো' বলে। তারপর যখন পুরানো হয়ে যাব, তখন 'মুখ পোড়া মিনষে' বলে ডাকবে।" 
      - "ধ্যাৎ! ওসব বুড়ো বুড়িরা বলে।" 
      - "তুমি কি কোনও দিন বুড়ি হবে না? চিরদিন একরকম থাকবে?" 
      - "কি রকম?" 
      - "এই যে রকম আছো। সুন্দরী, সেক্সি।" 
      - "এক চড় মারব। খালি উল্টোপাল্টা কথা।"
      - "কেন? উল্টোপাল্টা কেন? যখন তুমি আমার বাইকে চড়ে যাও, তোমাদের পাড়ার ছেলেরা করুণ চোখে তাকিয়ে থাকে! হয়তো ভাবে...।"
      - "কিভাবে?" 
      - "ভাবে, কোন ধ্যাড় ধাড়ে গোবিন্দপুর থেকে এসে পাড়ার এক নম্বর মালটাকে তুলে নিল! আর আমরা পাড়ায় থেকে ইয়ে ছিঁড়লাম।" 
      - "আবার আজে বাজে কথা। তবে আমাদের বিয়েতে খুব ঝামেলা হবে। সেই ঝামেলা সামলানো খুব মুশকিল হয়ে উঠবে। আমি খালি ভাবি কি করে আমাদের সম্পর্কের কথাটা বাড়িতে বলব!" 
      - "কেন? না বলার কি আছে?"
      - "তুমি দাস, মাহিষ্য। আমরা বামুন। বাবা মেনে নেবে না আমাদের সম্পর্কটা।" 
      - "ধুর, আজকের দিনে কেউ ওসব নিয়ে মাথা ঘামায় না।" 
      - "তুমি আমার বাবাকে চেনো না, তাই এ কথা বলছ। আমার বাবা হচ্ছে গোঁড়া বামুন। মাছ মাংসের ধার মাড়ায় না। দিনে তিনবার পুজো আর্চা করে। কপালে চন্দনের তিলক কাটে। সেই লোক অসবর্ণ বিয়ে মানবে?" 
      অফিসের লোকজনদের বলব তোমার বাবাকে বোঝাতে। এমনকি এমডিকে বলব। এমডি এখন আমার হাতে আছে। মানে আমার কাজে খুব সন্তুষ্ট। আমাকে ক্যাশ হ্যান্ডেল করতে হয়। আগে অনেক বেহিসেবী খরচ হত। সেগুলোকে আটকে দিয়েছি। অনেক টেন্ডারে জালিয়াতি, কারচুপি হত। সেগুলো সব বন্ধ করে দিয়েছি। এরজন্য অবশ্য অফিসের অনেকেই আমার উপর রেগে আছে। কিন্তু আমার কাজে কোম্পানির এমডির পুরোপুরি মদত আছে। এমডি আমাকে বলেছেন এভাবে চালিয়ে যেতে। বাজে খরচ, অপচয় আটকাতে। যেখানে এমডি আমার ফেভারে আছে, সেখানে কোন কলিগ আমার এগেনস্টে গেল, না গেল তাতে আমার কিছু আসে যায় না। এমডি মানে কোম্পানির মালিকের কথাই শেষ কথা। সেরকম প্রয়োজন হলে এমডিকে বলব তোমার বাবাকে বোঝাতে যে এইসব পুরানো ধ্যান ধারণার কোনও মূল্য নেই আজকের দিনে।" 
      - "তবে আমার বাবা যা রাগী আর গোঁয়ার! এমনিতে ভালো, কিন্তু রেগে গেলে আর দেখতে হবে না। একেবারে কুরুক্ষেত্র বাঁধিয়ে ছাড়বে। ওসব এমডি ফেমডি কাউকে মানবে না। এইসব লোকেদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা খুব কঠিন।" 
      - "দেখবে সব ঠিক হয়ে যাবে। কোনও ঝামেলা হবে না। তাছাড়া তোমার বাবার বয়স বাড়ছে। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে সবারই গরম রক্ত ঠান্ডা হয়ে যায়। অত চিন্তা করার কিছু নেই। পরীক্ষাটা ভালোভাবে দাও। তোমাকে কিছু বলতে হবে না। যা বলার আমি বলব।"
      ব্যাপারটা নবীন বাবুরও চোখে পড়েছে। জয়ী কেবল টিউশনি পড়ে ফেরার পরেই অরূপের মোটরসাইকেলে চড়ে বাড়ি ফেরে না। মাঝে মাঝে সন্ধ্যার সময় তাদের দুজনকে বাইকে চড়ে ঘুরতে দেখা যায়। পাড়া প্রতিবেশীদেরও নজরে পড়েছে ব্যাপারটা। অনেকেরই দৃষ্টিকটু লাগছে, কিন্তু কেউ ব্যাপারটা নিয়ে মাথা ঘামায় না। তবে পাড়ার বিলাস বাবু একদিন নবীন বাবুকে ডেকে বললেন, "নবীন তোমার সঙ্গে একটা কথা আছে।" 
      - "বলুন বিলাস দা।" 
      - "ইদানিং তোমার মেয়েকে দেখছি তোমাদের নতুন ভাড়াটের সঙ্গে উড়ে বেড়াচ্ছে। তারমানে তোমাদের নতুন ভাড়াটে কি তোমার ছোট জামাই হচ্ছে?" 
      - "আরে না না, ওসব কিছু নয়। জয়ী টিউশনি পড়ে ফেরার পথে মাঝে মাঝে অরূপের বাইকে ফেরে। অটোর ভাড়াটা বেঁচে যায়। তাই আমি বাধা দিই না।" কথাটা বলে হেসে ওঠেন নবীন বাবু।
      - "কেবল অটোর ভাড়া কেন, এখন দেখে শুনে মেয়ের বিয়ে দেওয়া মানে লাখ লাখ টাকার খরচ। হয়তো দেখবে তোমার সেই খরচটাও বেঁচে যাবে।"
     - "বিলাস দা, আমরা কুলীন ব্রাহ্মণ। অরূপরা দাস, মাহিষ্য। আমি মরে গেলেও এসব মেনে নেব না।" 
      - "যদি ওরা বিয়ে করবে বলে মনস্থির করে। তখন তুমি কি করবে?" 
      - "ব্যাপারটা একটু আঁচ পেয়েই আমি ব্যবস্থা করে রেখেছি। ঘোরাফেরা করছে করুক, তবে অরুপ যদি বামুন হয়ে চাঁদে হাত বাড়ানোর চেষ্টা করে, তাহলে আমার হাত থেকে রেহাই পাবে না।"
      - "কি করবে তুমি? মানে কি করতে পারবে? একটা এডাল্ট ছেলে, আর একটা এডাল্ট মেয়ে যদি বিয়ে করবে বলে মনস্থির করে, তাহলে তোমার কিছু করার নেই।"
      - "আছে বিলাসদা, সব ব্যবস্থা করা আছে।" কথা বলতে বলতে নবীন বাবু তার পকেট থেকে কিছু একটা বের করে বিলাস বাবুকে দেখান।
      জয়ীর পরীক্ষা শেষ হয়েছে। নবীন বাবুও মেয়ের বিয়ে দেওয়ার জন্য তোড়জোড় শুরু করেছেন। পাত্র দেখাশোনা শুরু করেছেন। প্রথমে জয়ী চুপচাপ থাকলেও, একদিন সে তার মাকে সব খুলে বলে।
      - "মা এভাবে আমাকে সাজিয়ে গুজিয়ে আর পাত্রপক্ষের সামনে বসাবে না। আমার একদম ভালো লাগেনা। আমি একজন শিক্ষিত মেয়ে। এইভাবে পাত্রপক্ষের সামনে রঙ মেখে নিজেকে দেখানোটা আমার খুব অপমানজনক মনে হয়।"
      - "তাহলে কিভাবে তোকে দেখাব?" 
      - "দেখাতে হবে না। যখন আমার ইচ্ছা হবে, তখন বিয়ে করব।" 
      - "তার মানে?" 
      - "তার মানে।" ক্ষণিক চুপ করে থেকে জয়ী বলে, "আমি অরূপকে ভালোবাসি মা। আমি অরূপকে বিয়ে করব।" 
      - "চুপ কর বেয়াদব মেয়ে। তোর বাবা শুনতে পেলে তোকে কেটে ফেলবে।" 
      - "সে যা করার করবে। আমি অরূপকে ছাড়া আর কাউকে বিয়ে করতে পারব না।"
      সেই রাতেই নবীন বাবু তার স্ত্রীর মুখে সব শুনে প্রথমে রেগে গেলেও, মুহূর্তের মধ্যে নিজেকে সামলে নিয়ে চুপ করে যান। পরবর্তী পদক্ষেপের পরিকল্পনা করতে থাকেন। 
      বেশ সমস্যায় পড়ে গেছে অরূপ। এতদিন ধরে কাজ করছে, কোনও দিন এরকম ভুল তার হয়নি। কিন্তু এবারে যে কিভাবে হল, সেটা কিছুতেই বুঝতে পারছে না! বরাবরই সে দক্ষতার সঙ্গে ক্যাশ হ্যান্ডেল করে। কিন্তু এবারে কি করে এত বড় ভুল হল কিছুতেই ভেবে পাচ্ছে না! প্রায় লাখ খানেক টাকার হিসেব মিলছে না! কোথায় গেল এতগুলো টাকা? কাকে দিল সে? কিছুই মনে পড়ছে না! সে তো অফিসের বিশেষ আলমারিতেই টাকাগুলো রেখেছিল। সেই আলমারির চাবি তার কাছেই থাকে। তাহলে টাকাগুলো গেল কোথায়? এত আর্থিক তছরূপ। খবর যায় থানায়। পুলিশ আসে। তদন্ত হয়। কিন্তু অরূপ পুলিশের জেরায় কিছুই ঠিক করে বলতে পারে না! 
      খবরটা শুনে মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ে জয়ীর। কি করবে সে বুঝতে পারে না। কান্নায় ভেঙে পড়ে সে। তার মা তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেন, "অন্যের অপরাধের ফল তুই ভোগ করছিস কেন? যে অপরাধ করেছে সে তো শাস্তি পাবেই।" 
      - "না মা, না, অরূপ অপরাধী নয়। যে কদিন আমি ওর সঙ্গে মিশেছি, তারমধ্যেই আমি বুঝতে পেরেছি অরূপ অত্যন্ত নির্লোভ, সৎ ছেলে। কাজের জায়গা নিয়ে ওর মনে কত উচ্চাকাঙ্ক্ষা রয়েছে সেটা আমি জানি। ও এরকম বোকার মত টাকা সরানোর ছেলে নয়। আমার বিশ্বাস এরমধ্যে কোনও চক্রান্ত রয়েছে। নিশ্চয়ই রয়েছে, না হলে এসব হতে পারে না।" 
      এখন সে কি করবে, কি করা উচিত, অরূপের মুক্তির জন্য কার সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত, কোনও কিছু স্থির করতে পারে না জয়ী। সারাদিন সে ঘরে বসে থাকে, ভগবানের কাছে প্রার্থনা করে অরূপের জন্য।
      - "শোনো জয়ীর মা, আর আমি অপেক্ষা করব না। এবারে জয়ীর বিয়ে দিয়ে আমি নিশ্চিন্ত হব। আর কোনও দিন কোনও চ্যাংড়া ছেলেকে বাড়ি ভাড়া দেব না। কেবল মাত্র পুরো সংসার ভাড়া চাইলে, তবেই ভাড়া দেব।" 
      - "মেয়ের বিয়ে দেবে বলছ। কিন্তু অত টাকা জোগাড় হয়েছে?"
      - "হয়ে গেছে। টাকার ব্যবস্থা হয়ে গেছে। সব টাকা আমি ব্যাঙ্ক থেকে তুলে এনে আলমারিতে রেখেছি। দিনকাল ভালো নয়, চারিদিকে টাকা তছরূপের কেলেঙ্কারি ঘটছে। আমাদের অফিসে যা কোনও দিন ঘটেনি, এবার সেটা ঘটল। কাউকে বিশ্বাস নেই। এমনকি ব্যাঙ্কেও বিশ্বাস নেই। ব্যাঙ্কে যদি টাকা চুরি হয়, তখন কি হবে? আমি গরিব মানুষ, টাকার জন্য কার কাছে যাব? ব্যাঙ্কে যা টাকা ছিল সব তুলে এনেছি। এতে জয়ীর ভালোভাবে বিয়ে হয়ে গিয়ে, হাতে বেশ কিছু টাকা থেকে যাবে।"
      ঘরের ভেতরে থাকা জয়ীর কানে যায় তার বাবার কথাগুলো। শুনে অবাক হয় সে। তার বাবা সারাদিন অফিসে ব্যস্ত থাকেন বলে ব্যাঙ্কের কাজ জয়ী করে। ব্যাঙ্কে টাকা জমা করা, টাকা তোলা, পাস বই আপডেট করা সব কাজ সে করে। সে ভালোভাবে জানে তার বাবার ব্যাঙ্কের খাতায় ত্রিশ হাজারের মতো টাকা আছে। এই সামান্য টাকায় তার বাবা তার বিয়ে দেবে! তারপরেও হাতে টাকা থাকবে! কেমন যেন একটা খটকা লাগে জয়ীর মনে। সে বুঝতে পারে কিছু একটা গোলমাল রয়েছে পুরো ব্যাপারটার মধ্যে। সবকিছু তাকে ভালোভাবে খতিয়ে দেখতে হবে। সত্যিটা সামনে আনতে হবে। কিন্তু এখন কিছু করা যাবে না। সে অপেক্ষা করতে থাকে। 
      মধ্যরাত। অনেক আগেই সকলে রাতের খাওয়া সেরে ঘুমিয়ে পড়েছে। কিন্তু জয়ীর চোখে ঘুম নেই। সে অপেক্ষা করছে। পাশের ঘর থেকে তার বাবার নাক ডাকার শব্দ আসতে শুরু করেছে। এতক্ষণে নিশ্চয়ই তার মা ঘুমিয়ে পড়েছেন। উঠে পড়ে জয়ী, অতি সন্তর্পনে সে গিয়ে ঢোকে তার বাবার ঘরে। দেখে নেয় তার মা ঘুমিয়েছেন কিনা। নিশ্চিত হওয়ার পর সে আলমারি খোলে। আলমারি খুলে সে দেখতে পায় একটা তাকে বান্ডিল বান্ডিল টাকা রাখা আছে। এত টাকা! এত টাকাতো তার বাবার ব্যাঙ্কে ছিল না! তাহলে কোথা থেকে এল? আলমারিটা খুঁটিয়ে দেখে সে। দেখে একটা চাবিও পড়ে আছে টাকার বান্ডিলের পাশে। ওটা কি? হাতে তুলে নেয় জয়ী। একটা শুকনো সাবান, তার উপর একটা চাবির ছাপ। ক্রমশ সবকিছু পরিষ্কার হতে থাকে তার কাছে। পুরো চক্রান্তটাই তার চোখের সামনে ভেসে ওঠে। সে বুঝতে পারে অরূপের সরলতার সুযোগ নিয়ে তার বাবা অফিসের আলমারির চাবির নকল বানিয়ে এই কাজ করেছেন। এত নিচে তার বাবা যে নামতে পারেন, সে কথা ভেবে তার বাবার প্রতি তীব্র ঘৃণায় তার মনটা ভরে ওঠে। তবে সে ছাড়বে না। একটা নিরাপরাধ ছেলেকে সে বিনা দোষে জেল খাটতে দেবে না। তারপর সব কিছু জেনে অরূপ তাকে গ্রহণ করবে নাকি চিরতরে পরিত্যাগ করবে সেসব নিয়ে সে ভাবতে চায় না। তবে রাত পোহালে সে একটা হেস্তনেস্ত করবে। রাতেই সে একটা ব্যাগে সমস্ত টাকা, চাবি, সাবান ভরে রাখে। সকাল হলেই সে অফিসের মালিকের বাড়ি যাবে বলে ঠিক করে। 
      দেখতে দেখতে রাত কেটে ভোর হয়। সূর্যের প্রথম কিরণ পৃথিবীর মাটি ছোঁয়ার অনেক আগেই বিছানা ছেড়েছে জয়ী। পুরানো রাতকে দূরে সরিয়ে সামনে এসেছে নতুন ভোর। এরমধ্যে কিছুটা সময় অতিবাহিত হয়েছে। সময়ের সাথে সাথে জয়ীর মনে জ্বলে ওঠা আগুন অনেকটা  স্তিমিত হয়েছে। যদিও অরূপের জন্য তার মন খুবই ভারাক্রান্ত। এরকম অন্যায়ভাবে অরূপের জেল খাটা সে দেখতে পারবে না। আবার অরূপকে মুক্ত করতে গেলে সত্য উদঘাটন করতে হবে। সেটা করতে গেলে তার বাবার হাতে দড়ি পড়বে। সেটা কি সে সহ্য করতে পারবে? সেই মানসিক শক্তি কি জয়ীর আছে? না নেই। সে পারবে না। তার বাবার জেল হাজত সে দেখতে পারবে না। সহ্য করতে পারবে না। এখন কি করবে জয়ী? কি করা উচিত! ভাবতে থাকে সে। ভাবতেই থাকে। কিন্তু কোনও উত্তর, কোনও সমাধান সে খুঁজে পায় না।
       অন্যান্য দিন বিভিন্ন কাজ সেরে দুপুরের পর অফিসে আসেন সৌমেন সেনগুপ্ত। কোম্পানির ম্যানেজিং ডিরেক্টর তথা মালিক সৌমেন বাবুর অফিসে এসে বসা ছাড়া আরও অনেক কাজ রয়েছে। সেইজন্য অফিসে আসতে তার বেশ দেরি হয়। কিন্তু আজ সকালেই অফিসে এসে গেছেন। অফিসে এসে তলব করেন নবীন বাবুকে।
      ইদানিং সব সময় একটা খুশি খুশি ভাব দেখা যায় নবীন বাবুর মধ্যে। যেন এক যুদ্ধ জয়ের দামামা বেজে চলেছে তার মনের মাঝে। আর বাজবে নাইবা কেন? অনেক ভেবে চিন্তে বুদ্ধি খাটিয়ে বিদায় করতে পেরেছেন আপদটাকে। না হলে জাত, মান, কুল সব খোয়া যেত। খুব জোর বেঁচে গেছেন এই যাত্রায়। নবীন বাবু ঠিক করেছেন এবারে খুব ভেবে চিন্তে বাড়ি ভাড়া দেবেন। অবশ্য জয়ীর বিয়ে হয়ে গেলে আর ওসব চিন্তা থাকবে না। এমডির তলব পেয়ে তার ঘরে আসেন নবীন বাবু। 
      - "নবীন বাবু, আপনি এই অফিসের সব থেকে সিনিয়র স্টাফ। তাই বেশিরভাগ ব্যাপারে আপনার সঙ্গে আলোচনা করি। আজ আমি সকালে অফিসে এসেছি। তবে এক্ষুনি বেরিয়ে যাব। একটা বিয়ের ব্যাপারে ব্যস্ত আছি। মানে আমার কন্যাসমা একজনের বিয়ে দিচ্ছি।"
      - "ভালো ভালো, খুব ভালো।" পুরো কথা না শুনেই মন্তব্য করেন খুশিতে ডগমগ করতে থাকা নবীন বাবু। 
      - "তবে এই বিয়েতে একটা সমস্যা আছে। মানে মেয়ের বাড়ির অমতে, বিশেষ করে মেয়ের বাবার অমতে এই বিয়ে হচ্ছে। অসবর্ণ বিয়েতে মেয়ের বাবার ঘোরতর আপত্তি। নবীন বাবু, আপনি বলুনতো আজকের দিনে এইসব বস্তা পচা চিন্তাভাবনার কোনও মূল্য আছে?"
      কি যেন বলতে গিয়েও নিজেকে সামলে নেন নবীন বাবু। তিনি জানেন বেসরকারি ক্ষেত্রে কাজ করার অনেক হ্যাপা। এখানে সব সময় মালিকের মন যুগিয়ে চলতে হয়। মালিকের কথাই এক্ষেত্রে শেষ কথা। বরাবর সেভাবেই চলার চেষ্টা করে এসেছেন। আর আজ তিনি কেন ভিন্ন মত পোষণ করে মালিকের বিরাগ ভাজন হবেন? এমডিকে সমর্থন করে নবীন বাবু বলেন, "ঠিকই তো, আজকের দিনে এসবের কোনও মানে নেই, যুক্তি নেই। এসব নিয়ে মাথা ঘামানো মানে ক্রমশ পিছিয়ে যাওয়া। আজকাল হাজার হাজার অসবর্ণ বিয়ে হচ্ছে। বামুনের ছেলে মেথরের মেয়েকে বিয়ে করছে। মুচির মেয়ে কায়েতের ছেলেকে বিয়ে করছে। এসব নিয়ে কেউ মাথা ঘামায় না।" বলতে থাকেন নবীন বাবু। ধৈর্য সহকারে শুনতে থাকেন সৌমেন বাবু, "ওসব জাতপাত সব বাজে কথা। আসল কথা হল মানুষ..."। 
      - "সত্যি নবীন বাবু আপনার মত কনসিডারেট ব্যক্তিত্ব আমি খুব কম দেখেছি। আপনি সব সময় যুক্তির উপর চলেন। আপনার মত চিন্তা ভাবনা যদি সবার মধ্যে থাকতো তাহলে দেশের চেহারা অন্যরকম হত।" 
      মালিকের কথায় অতি উৎসাহিত হয়ে নবীন বাবু আবার বলতে শুরু করেন, "সেই জন্যইতো বলছি স্যার, আসল কথা হল মানুষ। সেই কোন যুগে আলেকজান্ডার দ্যা গ্রেট বিয়াস নদী পার হতে হতে তার প্রধান সেনাপতি সেলুকাস কে বলেছিল - 'এট টু ব্রুটাস' যার বাংলা মানে সবার উপরে মানুষ সত্য। আর মানুষের উপরে....।" উৎসাহের আতিশয্যে নবীন বাবু কথা বলতে বলতে খেই হারিয়ে ফেলছেন। একেতো অরূপ জেলে গেছে। তার উপর অফিসের মালিক তাকে এতটা প্রাধান্য দিয়ে কথা বলছেন! দুটো আনন্দের ধাক্কায় নবীন বাবু একেবারে বেসামাল হয়ে গেছেন।  কি বলতে কি বলছেন, নিজেই বুঝে উঠতে পারছেন না। সবকিছু পুরোপুরি তালগোল পাকিয়ে ফেলছেন তিনি। সবকিছু তার কাছে স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে।
      - "ব্যাস ব্যাস, আর বলতে হবে না। ইতিহাস আর সাহিত্যে আপনার প্রগাঢ় পাণ্ডিত্যের কথা আমরা সবাই খুব ভালোভাবে জানি। তবে আমার মত সাধারন মানুষের মাথায় এত ভারী ভারী কথা ঢুকবে না। যাইহোক কালকে আপনাকে আর অফিসে আসতে হবে না। কালকে আপনি সারাদিন আমার সাথে বিয়ে বাড়িতে থাকবেন, আমার এক নম্বর হেল্পিং হ্যান্ড হিসেবে। আর একটা ব্যাপার, মেয়ের পরিবারের কেউ থাকবে না। ব্যাপারটা খুব দৃষ্টিকটু, তাই আপনাকে মেয়ের কাকা, মামা, জ্যাঠা কিছু একটা বলে পাত্রপক্ষের সঙ্গে আলাপ করিয়ে দেব। তাহলে মান সম্মান বজায় থাকবে। তাছাড়া সবকিছুইতো একদিনের ব্যাপার। তারপর কে আপনার খোঁজ নিতে আসবে? আপনার আপত্তি নেই তো?" 
       - "আপনি স্যার যেটা ভালো বুঝবেন, সেটাই করবেন। এতে আমার আপত্তি কেন থাকবে?"
       - "থ্যাঙ্ক ইউ। কাল সকালে আমার বাড়িতে চলে আসবেন। তারপর আমরা একসঙ্গে বিয়ে বাড়িতে যাব।" 
      - "ঠিক আছে স্যার।" 
      - "দেরি করবেন না যেন।" 
      পরের দিন সকালে এক রাশ খুশি, এক রাশ আনন্দসহ নবীন বাবু পৌঁছে যান সৌমেন বাবুর বাড়ি। সৌমেন বাবু বসতে বলেন নবীন বাবুকে। অনেকক্ষণ বসে আছেন নবীন বাবু। বিয়ে বাড়িতে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হতে সৌমেন বাবু যেন কিছুটা বেশি সময় নিচ্ছেন। ক্রমশ ধৈর্যচ্যুতি ঘটছে নবীন বাবুর। কিন্তু তিনি ধৈর্য ধরে একই জায়গায় বসে আছেন। এছাড়া এই মুহূর্তে আর কিছু করার নেই তার। বেশ কিছুক্ষণ পর বিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়েন তারা। কিছুক্ষণের মধ্যে পৌঁছে যান বিয়ে বাড়িতে। বাড়িতে ঢোকার মুখে কয়েকজন দাঁড়িয়ে আছেন। সৌমেন বাবুকে দেখে তারা এগিয়ে আসেন। 
      সৌমেন বাবু তাদের নবীন বাবুকে দেখিয়ে বলেন, "ইনি নবীন বাবু, পাত্রীর বাবা।" 
      একটু চমকে ওঠেন নবীন বাবু। ফিসফিস করে সৌমেন বাবুকে বলেন, "মামা, জ্যাঠা, কাকা অব্দি ঠিক ছিল। একেবারে মেয়ের বাবা বানিয়ে দিলেন আমাকে!"
      - "উত্তেজনায় মুখ ফসকে বেরিয়ে গেছে। বাদ দিন ওসব কথা। চলুন, ভেতরে চলুন।" 
      যেতে যেতে সৌমেন বাবু নবীন বাবুকে বলেন, "ওই ঘরে বর বসে আছে। চলুন ওদিকে যাই।" 
      বরের ঘরে ঢুকে ভূত দেখার মত চমকে ওঠেন নবীন বাবু, "অরূপ! স্যার এরতো জেলে থাকার কথা!" 
      - "গতকাল ছাড়া পেয়েছে। ছাড়া পেয়েই ব্যাটা বিয়ে করতে চলে এসেছে! ছাড়ুন একে। চলুন ওদিকে যাই। ওদিকে কনে আছে, কনের মা আছে। সবার সঙ্গে কথা বলি।" 
      দুরু দুরু বুকে যেতে থাকেন নবীন বাবু। তিনি   যা আশঙ্কা করেছিলেন ঠিক তাই। সেই ঘরে ঢুকে দেখেন জয়ী সেজেগুজে বসে আছে। জয়ীর মাও আছেন! 
      - "নবীন বাবু আপনি যে অপরাধ করেছেন সেটা সত্যিই শাস্তিযোগ্য। প্রথমে ভেবেছিলাম আপনাকে জেলে পাঠাব। পরে ভেবে দেখলাম শাস্তিতো কেবল অপরাধী একা পায় না। তার পরিবারের অন্যান্যদেরও শাস্তি ভোগ করতে হয়। জয়ীর দিকে তাকিয়ে পারলাম না আপনাকে শাস্তি দিতে। তাছাড়া অপরাধতো আপনি করেননি। অপরাধ করেছে আপনার মনে জমে থাকা কুসংস্কার। তাই শাস্তি দিতে হলে আপনার কুসংস্কারকে শাস্তি দিতে হবে। মানে আপনার মন থেকে আগে কুসংস্কারকে তাড়াতে হবে। কাল সকালে জয়ী আমার বাড়িতে এসে টাকা, চাবি সব দিয়ে বলল যে অরূপকে মুক্ত করতে। সেইসঙ্গে বলল তার বাবা যেন শাস্তি না পায়। কারণ তার জন্য তার বাবা জেলে গেলে সে আর নিজেকে বাঁচিয়ে রাখবে না। এইটুকু একটা মেয়ের কথা কি করে ইগনর করি বলুন? তাই কাজকর্ম ছেড়ে অরূপের জামিনের ব্যবস্থা করলাম। অরূপের বাড়ির লোকদের বলে বুঝিয়ে বিয়ের ব্যাপারে রাজি করালাম। এবার আপনি সামনের দিকে তাকান। কুসংস্কার মুক্ত হয়ে মেয়ে জামাইকে আশীর্বাদ করে বাড়িতে নিয়ে যান। আমার দায়িত্ব এখানে শেষ। এখান থেকে শুরু আপনার দায়িত্ব। তবে সব সময় মনে রাখবেন ওসব জাতপাত সব কুসংস্কার। সবার উপরে মানুষ সত্য। আপনার আর আলেকজান্ডারের ভাষায় 'এট টু ব্রুটাস' হা হা হা।"
       কথা শেষ করে সশব্দে হেসে ওঠেন সৌমেন বাবু। হাসিটা সংক্রামক রোগের মত ঘরে উপস্থিত অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।

                         ।। সমাপ্ত ।।

দেবাংশু সরকার
               M G.ROAD,
               BUDGE BUDGE, 
               KOLKATA - 700137







Comments

বিধিবদ্ধ স্বীকার্য :

লেখার বক্তব্যের দায়িত্ব লেখকের, পত্রিকার নয়। আমরা বহু মতের প্রকাশক মাত্র।

মতামত/লেখা এখানে জমা দিন

Name

Email *

Message *

সাম্প্রতিক বাছাই

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯৩তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩২ নভেম্বর ২০২৫

সূচিপত্র বস্তু, চেতনা এবং কবি ।। সজল চক্রবর্তী দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত ।। রণেশ রায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট ও সন্নিহিত অঞ্চলের কথ্য শব্দ ।। অরবিন্দ পুরকাইত চাঁদে জীবন ।। শমীক সমাদ্দার অসমাপ্তি ।। মহুয়া হুই গ্যালাক্সির শব্দে ।। জাসমিনা খাতুন তিনটি কবিতা ।। দিবাকর সেন অপূর্ণতার শেষ অধ্যায় ।। সুপ্রিয় সাহা হাফ ডজন ছড়া ।। স্বপনকুমার পাহাড়ী স্বাপ্নিক অমলের ঘুৃম ।। সঞ্জয় দেওয়ান দুটি কবিতা ।। সৌমিত্র উপাধ্যায় পথ চলতি ✍️পার্থ প্রতিম দাস হেমন্তের বিষাদ ছুঁয়ে ।। শক্তিপদ পাঠক রাই আর বাবা ।। অদিতি চ্যাটার্জি স্থিতিশীল ।। রঞ্জিত মুখোপাধ্যায় হৃদয়ের শূন্য কোড ।। লিপিকা পিঙ্কি দে অমানিশা ।। সৌভিক মুখার্জী দৃষ্টিগত ।। শামীম নওরোজ জ্যান্ত ভূতের গপ্পো ।। পার্থ সারথি চট্টোপাধ্যায় ধুতরা ফুলের ঘ্রাণ ।। মজনু মিয়া তারা খসার আলোয় ।। তীর্থঙ্কর সুমিত উত্তরণে অন্তরায় ।। সমীর কুমার দত্ত প্রেম মুদ্রা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ধারা ।। লালন চাঁদ অন্যের ব্যথায় ব্যথি ।। জগদীশ মণ্ডল গর্ভ ।। শাশ্বত বোস ভ্রমণ বিষয়ক স্মৃতিকথা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত শাপে বর ।। সাইফুল ইসলাম রবিবার ।। সঙ্ঘমিত্রা দাস দুটি ...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬

  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠালে  অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে হলে ভালো। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # ...

রেজাল্ট ।। সৈকত মাজী

রেজাল্ট সৈকত মাজী শুভ্রাংশু বিছানতে শুয়ে শুয়ে বিরক্ত হয়ে উঠল। মনে মনে নিজের শরীরটাকে আচ্ছা করে শুনিয়ে দিলো দু- চারটে কথা, দেবে নাই বা কেন, কয়দিন ধরে এতো কাঠ খড় পুড়িয়ে সব বন্ধুরা মিলে রথটা বানালো, কত কি প্ল্যান করলো, আর এই শরীরটার জন্যই তো সব ভেস্তে গেলো। মনে মনে ভাবলো একটা যা হোক শরীর হয়েছে ওর প্রতি মাসে তিন - চার বার করে জ্বর হচ্ছেই। হবি তো হ আর একটা দিন পরে হলে কি এমন ক্ষতি হতো, এই রথের দিনেই হতে হলো। ওর বিরক্তিটা বেড়ে গেলো আরো কয়েক ঘর।    " মা ও মা...মাআআআআ...." জোরে হাঁক  দিলো শুভ্রাংশু।    " কি হয়েছে বাবু? আবার জ্বরটা বেড়েছে? মাথা ব্যথা করছে?" ব্যস্ত হয়ে উঠলেন মালতিদেবী।     " ওসব কিছু নয়, ও মা বলছি এখন তো খুব কম জ্বর আছে যাই না মা একবার বাইরে, সবাই কতো ফুর্তি করছে বলো"  কাতর ভাবে বলল শুভ্রাংশু।      " না বাবু, এখনই আমরা ডাক্তারের কাছে যাব, বাবা তৈরী হয়ে গেছেন, আমরা বিকেলে তখন মেলা দেখতে যাব কেমন, এখন উঠে জামা কাপড় পরে নাও"  মালতিদেবী জামা কাপড় গুলো এগিয়ে দিলেন।      শুভ্রাংশু...

রাই আর বাবা ।। অদিতি চ্যাটার্জি

রাই আর বাবা অদিতি চ্যাটার্জি রাই-র জীবনে বেশ কিছু ভালো লাগা আছে তার মধ্যে একটা হলো সন্ধ্যার সময় তিন তলার বারান্দায় দাঁড়িয়ে রাস্তা দেখতে দেখতে কফি কাপে চুমুক দেওয়া ।" আজ যশোদা মিষ্টান্ন ভান্ডারের সামনে বেশ ভিড়,নির্ঘাত 'তেলে ভাজা ' প্রেমীরা।" আপন মনেই ভাবে ও, কিন্তু বসার ঘরে সুমন আর আঁখি এতো জোরে 'হল্লা গোল্লা ' করছে তালতলার জমজমাট রাস্তার দিকে আর মন দিতে পারছে না রাই।  পায়ে পায়ে ঘরে এসে দাঁড়ায় রাই, দেখে ক্লাস ফোরের মেয়ে এতোটা ঝগড়া করছে সুমনের সাথে , "বাপ রে, কবে এতোটা কথা শিখলো মেয়ে! কিভাবে কথা বলছে?? কোঁকড়া চুল ঝাঁঝিয়ে,গোলগাল হাত নেড়ে " ...মেয়ে কে দেখে থতমত খেয়ে যায় রাই। এদিকে আঁখি বলছে, "ধুত্ বাপী তুমি কিচ্ছু পারো না, তুতাই-র বাবা, পিসাই, মামু সবাই কত ভালো করে খেলতে পারে , না আমি তোমার সাথে খেলবো না।" কাতর চোখে মেয়ের দিকে একবার তাকিয়ে সুমন বলে ,"আচ্ছা তুই আমাকে শেখা, দ্যাখ আমি কার জন্য আলিপুরদুয়ার থেকে পনেরো দিন পর পর কলকাতায় আসি বল!"  ঐ টুকু মেয়ে কথা প্রায় না শুনেই ঘরে চলে গেল রাই-র চোখের সামনে, সুমন একবার হেসে বাথরুমের দিকে এগো...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯২তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩২ অক্টোবর ২০২৫

—: সম্পাদকীয় দপ্তর থেকে :— এই সংখ্যার জন্য লেখা এসেছিল প্রায় ১৮০টা। কিন্তু গুণগত মানে দুর্বল লেখার সংখ্যা বহু। আমরা নবপ্রভাতে নতুনদের কথা ভেবে বেশ কিছু দুর্বল লেখাও রাখি। কিন্তু সবসময় একই লোকের দুর্বল লেখা প্রকাশ করা অনুচিত বলে মনে করি। শেষ পর্যন্ত ৯৯ জনের লেখা রাখা গেল। যাদের লেখা প্রকাশিত হল না, তারা লেখাগুলি অন্য যেখানে খুশি পাঠাতে পারেন। বিশেষ কারণে এই সংখ্যার মুদ্রিত সংস্করণ প্রকাশিত হচ্ছে না। আমরা দুঃখিত। তবে মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি শীঘ্রই আসছে। সঙ্গে থাকুন। সকলকে উৎসবমুখর বর্ণময় শুভেচ্ছাসহ— —নিরাশাহরণ নস্কর, সম্পাদক, নবপ্রভাত। অনুরোধ : প্রকাশিত লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন, ছবি/স্ক্রীনশট নয়।  == সূচিপত্র == পড়া-লেখার ইতিহাস অনুসন্ধান।। তপন তরফদার উৎসব : মানুষের চিরন্তন আত্মপ্রকাশ।। কৃশানু ব্যানার্জি বাংলা : সভ্যতা ও সংস্কৃতির জন্মভূমি।। শ্যামল হুদাতী সমুদ্র আর অস্তিত্ব ।। সুব্রত চৌধুরী রাজা ছিলেন জুবিন গর্গ ।। গঙ্গা 'অনু'   আদ্যাশক্তি মহামায়ার বাংলা বারো মাসের বারো রূপ ।। অর্হণ জানা মেধাদাদুর আসর ।। রণেশ রায় বৈজ্ঞানিক মা...

বস্তু, চেতনা এবং কবি ।। সজল চক্রবর্তী

বস্তু, চেতনা এবং  কবি সজল চক্রবর্তী  "যেখানে পৌঁছায় না রবি,, সেখানে পৌঁছে যান কবি।" এই ছোট্ট কবিতা টি অনেক পুরনো  এবং বহু পরিচিত, তথাপি এর তাৎপর্য এখনো হারায় নি। তবে, কথা হ'চ্ছে -আমরা তো  রবি-কবিকে একত্রেই পেয়ে যাই আমাদের ঋষি-প্রতিম কবি রবীন্দ্রনাথের মধ্যে। আর তখনই জেনে যাই উপরোক্ত ছোট কবিতার প্রণিধানযোগ্যতা ।  ... এবার শুনে নেয়া যাক, ঋষি-প্রতিম কবির মুখ নিঃসৃত বাণী:- "তোমার অসীমে প্রাণমন লয়ে যত দূরে আমি যাই ...." অর্থাৎ আমাদের প্রিয়তম কবি অনায়াসে পৌঁছে যান সৃষ্টির অসীমে , যা আমাদের পক্ষে আদৌ সম্ভব নয়। এখানে কবির চেতনা সুদূর প্রসারী! ... প্রকৃত প্রস্তাবে কবি অতিন্দ্রীয় জগতের এক নাগরিক। তাঁর কাছে তাই চেতনা বা চৈতন্যেরই প্রাধান্য। ...এখন আসছি, বস্তু এবং চেতনার মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে।  ... আমি একজন অতি সাধারন মানুষ, তাই এই ব্যাপারটাকে কবিদের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার চেষ্টা ক'রছি। তবে আমার সামান্য জ্ঞান থেকে একটা সাধারণ কথা সেরে নি'। আমরা সাধারণত ব'লে থাকি-- সূর্য পূর্বদিকে ওঠে। প্রকৃত অর্থে কি তাই ? আসলে সূর্য যেদিকে ওঠে ,আমরা  সেই দিকটাকে নামাঙ্কিত ক...

দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট ও সন্নিহিত অঞ্চলের কথ্য শব্দ, উচ্চারণ, বাগ্্ধারা ইত্যাদি ।। অরবিন্দ পুরকাইত

স্থানীয় কিছু কথ্যশব্দ, উচ্চারণ, বাগধারা ইত্যাদি  (পর্ব—সাত) অরবিন্দ পুরকাইত স্থানীয় কিছু কথ্যশব্দ, উচ্চারণ, বাগ্্ধারা ইত্যাদির সংগ্রহ প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল রামচন্দ্র নস্কর সম্পাদিত 'চর্যা' পত্রিকায়, ২০১৬ সালে। সে সংগ্রহ যায় নিজের 'গাঁ-ঘরের কথা' পুস্তকে, ১৪২৩ সনে। পরে এই ব্লগজিনেও কিছু সংগ্রহ প্রকাশিত হয় ১৪২৮ সনের আশ্বিন মাসে, পৌষ ১৪২৯-এ, আষাঢ় ১৪৩০, নববর্ষ ১৪৩১ ও কার্তিক ১৪৩১ সংখ্যায়। তার পরেও ধীরে ধীরে আরও কিছু সংগৃহীত হয়েছে, সেগুলিই এখানে রাখা হল। নিজের আগের সংগ্রহে এসে-যাওয়া শব্দ যদি এখানে এসে থাকে, তা বাড়তি বা ভিন্ন কিছু বলার প্রয়োজনেই। নিজের আগের সংগ্রহ খুব ভাল করে যে মিলিয়েছি তা নয়, পুরো সংগ্রহ একত্র করার সময় তা করা যাবে যতটা সম্ভব নিখুঁত করে। আগে আগে সংগ্রহ প্রসঙ্গে কিছু কথা বলা হয়েছে, বিশেষত প্রথম প্রকাশের সময় একটু বিশদভাবে। এখানে আর কিছু বলা নয়, কেবল সংগ্রহটাই তুলে ধরা গেল। অখেজো/অখেজে — অকেজো থেকে। আদরের তিরস্কার হিসাবেই মূলত প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। পাজি। অচিমিতি — (উচ্চারণ ওচিমিতি) আচমকা, হঠাৎ। অদীয় — প্রচুর, অজস্র। অদ্বিতীয় থেকে ক...

কবিতা ।। অরণ্যকন্যা ।। অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়

  অরণ্যকন্যা অরিন্দম চট্টোপাধ্যায় অরণ্যকন্যার দৃষ্টির ভেতর বিষাদ বিন্দু ফোঁটা ফোঁটা জলের মতো গড়িয়ে যায়, হয়ে যায় কোন নদীপথ দৃষ্টি ভেঙে ভেঙে চলে যায় কোন এক শূন্য পথে অরণ্যকন্যার হৃদয়ের ভেতর ভাঙে যতো বৃক্ষপত্র নতুন পত্র পুষ্পের খোঁজ নেই ঠোঁট জুড়ে সমুদ্রকাঁপন বুদবুদের মতো অস্ফুট হয়ে উচ্চারিত হয় কোন অক্ষর শব্দ আর তাঁর শরীর থেকে ছড়িয়ে যায় হয়ে যায় একটা অদৃশ্য কবিতা...    ================== @ অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়,  বেহালা, কলকাতা -৭০০০৬০,  

দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত ।। রণেশ রায়

দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত রণেশ রায় ভূমিকা দর্শনের ইতিহাসে বস্তু ও চেতনার সম্পর্ক মানবচিন্তার গভীরতম প্রশ্ন। অধিবিদ্যা ভাবকে মুখ্য ধরে, বস্তুকে গৌণ বলে মনে করে। বিপরীতে মার্কস ও এঙ্গেলস বলেছেন—বস্তুই মুখ্য এবং চেতনা তার প্রতিবিম্ব। মানুষ যখন প্রথম আলোর মুখ দেখেছিল, তখনই সে বিস্ময়ে প্রশ্ন করেছিল—আমি কে, কোথা থেকে এলাম, আর এই দৃশ্যমান জগতের বাইরে কিছু আছে কি? এই প্রশ্ন থেকেই জন্ম নিয়েছিল দর্শনের দুই বিপরীত স্রোত—ভাববাদ আর বস্তুবাদ। ভাববাদ বলেছিল—"ভাবই প্রথম," আর মার্কস বললেন—"না, বস্তুই প্রথম।" এই দুই প্রান্তের মাঝখানে আমি দেখি এক সেতুবন্ধন, যেখানে বস্তু, স্নায়ু ও চেতনা একে অপরকে গড়ে তোলে, আর তাদের এই ত্রিত্বের নৃত্যেই সৃষ্টি হয় জীবন ও কল্পনার জগৎ। ভাবববাদ এক সর্বশক্তিমান শক্তির কল্পনা করে যা এই বস্তুজগতের স্রষ্টা। আর এখান থেকে ধর্ম ও ধর্মীয় ভাবধারার সৃষ্টি। আমার এই প্রবন্ধে আমি মার্কসীয় দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদকে আধুনিক বৈজ্ঞানিক আলোকে বোঝার চেষ্টা করেছি। আমি দেখাবার চেষ্টা করবো কিভাবে ইন্দ্রিয় এবং স্নায়ুজগৎ বস্তু ও চেতনাকে সংযুক্ত করে এবং কল্পলোকের জন্ম দেয়...

চাঁদে জীবন ।। শমীক সমাদ্দার

চাঁদে জীবন  শমীক সমাদ্দার                           চন্দ্রযান দুরন্ত তৈরি, রকেটের উপর ভর করে চন্দ্রযান চাঁদে অবতরণ করবে। মাধ্যাকর্ষণ শক্তি পেরিয়ে মহাকাশযান চাঁদের কক্ষপথে  স্থাপন করা হয়েছে। চন্দ্রাযান চাঁদের মাটিতে পা রাখবে সময়ের কাউন্ট ডাউন চলছে। সমস্ত নিয়ন্ত্রণ স্পেসস্কাই গাবেষণা কেন্দ্র কতৃক নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে প্রযুক্তি বিজ্ঞান অতল গভীরতায় বাসা বাঁধে। পরিচয়টা দিয়ে দিলাম এই স্পেসসিপে রয়েছে তিনজন নভোচর, একজনের নাম সাইমন আর এক জনের নাম রেমন্ড, আর এদের সঙ্গে একজন মহিলা আছে তার নাম মেরিনা। চন্দ্রযান চন্দ্রপৃষ্ঠে সফলভাবে অবতরণ করেছে। চন্দযান দুরন্ত চাঁদের পূর্ব -পশ্চিম অক্ষরেখা বরাবর অবতরণ করেছে। আলো আঁধারের গভীরতায় বড় বড় পাথরের পিণ্ড, চাঁদের সার্ফেসের উপরে পাথর জল দেখা যায়। জমাট বাঁধা অক্সিজেন আর কার্বনডাই অক্সাইড। ওরা এখানে এসেছে এক রহস্য উদ্ঘাটন করতে। যে স্থানে ওরা অবতরণ করেছে সেখানে ১০ বছর আগে ওরা এসেছিলো। রুশ সরকার ওদের দেশের ছাত্র ছাত্রী কে মহাকাশে চাঁদে পাঠাতে চায়। ওরা কেন এসেছে সেটা এখনো অধরা। সাইমনের বর্...

জনপ্রিয় লেখা

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ -- "ত্রয়ী কাব্য" ------------------------------------------------------------------------------ সুনন্দ মন্ডল নবীনচন্দ্র সেন সাহিত্যে তথা বাংলা কবিতার জগতে এক অবিস্মরণীয় নাম। তিনি চট্টগ্রাম জেলার নওয়াপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ১৮৪৭ সালে তাঁর জন্ম এবং মত্যু ১৯০৯ সালে। বঙ্কিমচন্দ্র তাঁকে 'বাংলার বায়রন' বলেছেন। ‎জীবৎকালীন যুগে আত্মপ্রত্যয়ের মধ্যে জাতীয় চরিত্র আত্মস্থ করে নতুন সংস্কারে প্রয়াসী হয়ে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখেছেন।মধুসূদন-হেমচন্দ্র-নবীনচন্দ্র--এই তিন কবি বাংলা কাব্যধারায় প্রাণ সঞ্চার করেছিলেন। বিশেষত মহাকাব্য লেখার দুঃসাহস দেখিয়েছিলেন। এদিক থেকে মধুসূদন দত্ত একজন সফল মহাকাব্যিক। তাঁর 'মেঘনাদ বধ' কাব্যের মত গভীর ও ব্যঞ্জনাময় না হলেও নবীনচন্দ্র সেনের 'ত্রয়ী' কাব্য বিশেষ মর্যাদা দাবি করতেই পারে। তাছাড়া 'ত্রয়ী' কাব্যে ধর্মীয় ভাবধারার আবেগ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ‎ ‎নবীনচন্দ্র সেন বহু কাব্য লিখেছেন। যেমন- 'অবকাশরঞ্জিনী','পলাশীর যুদ্ধ', 'ক্লিওপেট্রা', 'রঙ্গমতী', 'খ্রীষ্ট', ...

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা শ্রীজিৎ জানা "সময় চলিয়া যায় নদীর স্রোতের প্রায়"। স্রোতের ধারা তার দু'প্রান্তে রেখে যায় ভাঙাগড়ার চিহ্ন। কালের দৃশ্যপটেও পরিবর্তনের ছবি অনিবার্যভাবেই চোখে পড়ে। সমাজ সময়ের ছাঁচে নিজেকে গড়ে নেয় প্রতিনিয়ত।  সেখানে মনে নেওয়ায় বাধা থাকলেও,মেনে নেওয়ার গাজোয়ারি চলে না। ফলত কাল বদলের গাণিতিক হিসেবে জীবন ও জীবিকার যে রদবদল,তাকেই বোধকরি সংগ্রাম বলা যায়। জীবন সংগ্রাম অথবা টিকে থাকার সংগ্রাম।  মানুষের জীবনযাপনের ক্ষেত্রে আজকে যা অত্যাবশ্যকীয় কাল তার বিকল্প রূপ পেতে পারে অথবা তা অনাবশ্যক হওয়াও স্বাভাবিক। সেক্ষেত্রে উক্ত বিষয়টির পরিষেবা দানকারী মানুষদের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হওয়া অস্বাভাবিক নয়। এক কালে গাঁয়ে কত ধরনের পেশার মানুষদের চোখে পোড়তো। কোন পেশা ছিল সম্বৎসরের,আবার কোন পেশা এককালীন।  সব পেশার লোকেরাই কত নিষ্ঠা ভরে গাঁয়ে  তাদের পরিষেবা দিত। বিনিময়ে সামান্য আয় হত তাদের। আর সেই আয়টুকুই ছিল  তাদের সংসার নির্বাহের একমাত্র উপায়। কালে কালান্তরে সেই সব পেশা,সেই সব সমাজবন্ধুরা হারিয়ে গ্যাছে। শুধুমাত্র তারা বেঁচে আছে অগ্রজের গল্পকথায়,আর বিভিন...

গ্রন্থ আলোচনা: শর্মিষ্ঠা দেবনাথ

প্রতিবাদ যখন অগ্নিবাণী বাংলাদেশে নারীমুক্তি ও নারী আন্দোলনের পুরোধা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ১৯৯তম জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদিত হল " আসিফা এবং.." কাব্য সংকলনটির মধ্যদিয়ে।সংকলনটির বিশেষত্ব হল,এটি উৎসর্গ করা হয়েছে নারীর সম্মান রক্ষার আন্দোলনের যোগ্যতম ব্যক্তি শহীদ শিক্ষক বরুন বিশ্বাসকে। সংকলক প্রকাশক সন্দীপ সাহু নিজে এবং বিশিষ্ট কবি সাহিত্যিকদের দিয়ে লিখিয়ে নিয়েছেন এমন কিছু কবিতা, যা শুধুমাত্র শব্দ ও ছন্দের অনুবন্ধ নয়, এক একটি অগ্নিবাণী।আসলে জীবনকে দেখার স্বাতন্ত্র‍্যে কবিরা সব সময়ই অগ্রগণ্য এবং অনন্য।যুগ ও জীবন দ্বন্দ্বের কণ্ঠস্বরকে আশ্রয় করে,একদিকে মনের প্রবল দাহ ও অন্যদিকে  নির্যাতিতা শিশুকন্যা ও নারীর প্রতি মনের গভীর আকুলতা থেকে প্রকাশ পেয়েছে "আসিফা এবং" এর  কবিতাগুলি।এক অন্ধকার সময়ের মুখোমুখি আমরা,সেই অন্ধকার আমাদের নিয়ে এসেছে সামাজিক অবক্ষয়ের শেষধাপে যেখানে নৈতিকতা,পাপবোধ,গ্লানিকে সরিয়ে রেখে, সমাজের বানানো নিয়মকে তোয়াক্কা না করে,অনায়াস দক্ষতায় ও ক্ষিপ্রতায় নিজেরই ধর্মচেতনাকে জলাঞ্জলি দিয়ে কিছু মানুষ তার পশুত্বের পরিচয় দিয়েছে ধর্ষণ ও ন...

শ্যামাপদ মালাকারের কবিতা

চোখ """"""" নদী, অরণ্য, রাতের ফালি চাঁদ- সবেই তো আমার...স্বর্ণপিঁড়িটাও!। সেদিন, শুকতারাটার গা' মাপতে গিয়ে মনে হল, --ওরা আমার চেয়েও সুখী? দেখিনা একবার গাইতি-শাবল চালিয়ে... চালালাম। জল-মাটি ভেজা একটা 'চোখ' কুড়িয়ে ফিরলাম! সেই চোখদিয়ে দেখি-- শেষ বিকেলের নিরন্ন আঁচে ঝলসানো বুকে নীড়ে ফিরছে ধূলিমাখা কত কাল পা, কি শান্তি - কি তৃষ্ণা! পাতাক্ষোয়া কোদালেরর মাথায় ঝরেপড়া ললাটের ঘামে, কারা যেন জীবন শাণ দেয়! রুক্ষঠোঁটের আবরণে এক সময় নেমে আসে শিশিরস্নাত কালনিশি-- মাঝের ব্যবধান মুছে দেয় প্রতিশ্রুতির ভীড়- - পূর্বজনমের নিদর্শনচুম্বন শেষে হেরে যায় কার মমতাজ-- ম্লান হয়ে যায় কত পিঁড়ি! ... ম্লান হয়ে যায় কত পিঁড়ি! ... ম্লা...

কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা: এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায় ।। পার্থ সারথি চক্রবর্তী

  কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা : এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায়  পার্থ সারথি চক্রবর্তী  কথায় বলে বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। রাজার শহর কোচবিহারের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা আরো অনেক বেশি। দুর্গাপূজা আর দীপাবলির মতো দু'দুটো বিরাট মাপের উৎসবের রেশ কাটতে না কাটতেই, এ শহর ভাসে রাস উৎসবের উন্মাদনায়। মদনমোহন ঠাকুর কোচবিহারের প্রাণের ঠাকুর। তাঁকে নিয়ে সবার আবেগ আর শ্রদ্ধা ও ভালবাসা এখানে বাঁধনছাড়া। এক অপূর্ব মিলনোৎসবের চেহারা নেওয়া এই উৎসব ঐতিহ্যবাহী ও ঐতিহাসিক। জন, মত, সম্প্রদায়ের উর্ধে এই উৎসবের গ্রহণযোগ্যতা। সময়ের কষ্টি পাথরে পরীক্ষিত! এক প্রাণের উৎসব, যা বহুদিন ধরেই গোটা উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ উৎসবে পর্যবসিত।কোচবিহারের এই রাস উৎসবকে কেন্দ্র করে যে মেলা হয় তাও সময়ের হাত ধরে অনেক বদলে গেছে। এসেছে আধুনিকতার ছোঁয়া! শৈশবে বাবার হাত ধরে যে মেলা দেখেছি তা চরিত্র ও আকৃতি দু'দিক থেকেই বদলে গেছে। গত পঁচিশ বছর ধরে খুব কাছে থেকে এই উৎসব ও মেলা দেখা, অনুভব করার সুযোগ হয়েছে। যা দিনদিন অভিজ্ঞতা ও প্রাপ্তির ঝুলিকে সমৃদ্ধ করে গেছে প্রতি ক্ষেত্রেই।  খুব সংক্ষেপে এই উৎসবের ইতিহাস না জানাটা কিন্তু অবিচারই ...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো,  তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) য...

মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা 2024 সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি (লেখক ও সম্পাদকীয় দপ্তরের কথোপকথন আকারে) --কী পত্রিকা? --নবপ্রভাত। --মুদ্রিত না অনলাইন? --মুদ্রিত। --কোন সংখ্যা হবে এটা? --বইমেলা 2024। --কোন কোন ধরনের লেখা থাকবে? --প্রবন্ধ-নিবন্ধ, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া। --বিশেষ কোন বিষয় আছে? --না। যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে। --শব্দ বা লাইন সংখ্যার কোন বাঁধন আছে? --না। নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো (যেমন, কবিতা 12-14 লাইনের মধ্যে, অণুগল্প কমবেশি 200/250শব্দে)। তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়। --ক'টি লেখা পাঠাতে হবে? --মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। --ফেসবুক বা অন্য কোন প্লাটফর্মে প্রকাশিত লেখা কি পাঠানো যাবে? --না। সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। --পত্রিকা কোন সময়ে প্রকাশিত হবে? --জানুয়ারি 2024-এর দ্বিতীয় সপ্তাহে। --লেখা পাঠানোর শেষতারিখ কত? -- 17 ডিসেম্বর 2023। --কীভাবে পাঠাতে হবে? --মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। --লেখার সঙ্গে কী কী দিতে হবে? --নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) --বিশেষ সতর্কতা কিছু ? --১)মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন '...

উৎসবের সৌন্দর্য: সেকালে ও একালে।। সৌরভ পুরকাইত

  উৎসবের সৌন্দর্য:  সেকালে ও একালে   সৌরভ পুরকাইত বাংলার উৎসব বাংলার প্রাণ। প্রতিদিনের জীবনযাপনের মধ্যে যখন মন ক্লান্ত হয়ে পড়ে তখন তাকে বেঁচে থাকার রসদ যোগায় এই উৎসব। কথায় বলে 'বারো মাসে তেরো পার্বণ'।মন আনন্দই চায়।তাই তাকে সজীবতা দিতে,পরিবারের,সমাজের ভালো-মন্দের কথা মাথায় রেখে মানুষ নিজেই সৃষ্টি করে নিয়েছে নানাবিধ উৎসবগুলিকে। একেবারে প্রাচীন কাল থেকে আজ পর্যন্ত মানুষ কখনোই উৎসব বিমুখ ছিল না।উৎসবই তাকে ঘর থেকে বাইরে টেনে এনেছে,চিনতে শিখিয়েছে আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার আনন্দকে। উৎসব আসলে প্রাণের সাথে প্রাণের যোগ, হৃদয়ের সাথে হৃদয়ের যোগ।রবীন্দ্রনাথ বলেছেন 'সত্য যেখানেই সুন্দর হয়ে প্রকাশ পায় সেইখানেই উৎসব'।হৃদয়ের সেই সুকোমল বৃত্তির জাগরণ যেন ফুটে ওঠা ফুলেরই মতো সত্য ও সুন্দর।এই জাগরণই উৎসব। তাই নানা কিছুর মধ্য দিয়ে,নানা উপলক্ষ্যে এই উৎসব প্রকাশ পায়। প্রাচীনকালে মানুষের হাতে না ছিল পসার, না ছিল পসরা।ছিল মনের আন্তরিকতা,মানুষকে কাছে টেনে নেবার ক্ষমতা।সেটাই ছিল উৎসবের সৌন্দর্য। তাই সেদিনের উৎসবে ক্ষুদ্র,তুচ্ছ উপকরণও প্রাণের উচ্ছ্বাসে মহৎ হয়ে উঠত।সেকালের উৎসবে লোক দেখানো ব্যাপার কিছু ...

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

বসন্তের কোকিল তুমি   বিচিত্র কুমার                      (০১) তোমার দু-আঁখির গহীন অরণ্যে একটা স্বপ্নের বহমান নদী রয়েছে, তারই রেশ ধরে আমি হেঁটে চলি অজানা বসন্তের পথে নীর উদ্দেশ্যে। সে চলার কোন শেষ সীমা নেই তাই আমার বিষণ্ণ একতারা সন্ন্যাস খুঁজে ফিরে , কবে তুমি বুঝবে অনুশ্রী মনের পর্দা খুলে একুশ বসন্ত তোমার রঙ ছিটিয়ে যাচ্ছে অচিনপুরে। এদিকে আমার দেহের প্রতিটি শিরা ধমনীতে প্রবাহিত হচ্ছে তোমার ভালোবাসার একটু উষ্ণতা পাবার জন্যে, শুধু অনুভবে তাণ্ডব উচ্ছাসিত হচ্ছে--- যেদিকে তাকাই --- ফুলে ফুলে ভ্রমর গুনগুনিয়ে উড়ে উড়ে পরে বসন্তের কোকিল গান গায় নব বসন্তে, তোমার দুই চোখে আমার একই ছায়া রয়ে যায় উতলা ভালোবাসার সীমান্তে।                 (০২)        এক রক্তাক্ত বসন্তের স্মৃতি কোন এক উতলা বসন্তের সকালে পুষ্পবনে ফুটেছিল একটি টকটকে লাল গোলাপ, তার সাথে হয়েছিলো দেখা প্রথম ফাগুনে হয়েছিল দুজনার এ জীবনের আলাপ।  তারপর প্র...

অনুভবে, অনুধ্যানে অনালোকিত কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী ।। সুপ্রিয় গঙ্গোপাধ্যায়

"এ কালে একটু লেখাপড়া জানা থাকাতে, এবং বঙ্গভাষায় অনেক গুলি পাঠ্য পুস্তক হওয়াতে কেবল পরনিন্দা করিয়া সময় কাটাইতে তাঁহাদের আবশ্যকও হয় না, প্রবৃত্তিও হয় না। …নিতান্ত সখ্যতা বা আত্মীয়তা না থাকিলে, সকল পেটের কথা খুলিয়া নিঃশ্বাস ছাড়িয়া তৃপ্তিলাভ করা, এ কালের মেয়েরা পছন্দ করেন না। তাঁহারা বইখানি, কার্পেটটুকু, নিজের স্বামী পুত্র লইয়া দিন যাপন করিতে বা একেলা থাকিতে কষ্ট বোধ করেন না।" —শরৎকুমারী চৌধুরাণীর এই লেখা (ভারতী ও বালক/ আশ্বিন কার্তিক, মাঘ/ ১২৯৮) দেখে বুঝতে অসুবিধা হয় না উনিশ শতকে নারীর লেখাপড়া শেখার উদ্দেশ্য ছিল মূলত আত্মমুক্তির জন্য। শুধু লেখাপড়া শেখা নয়, সাহিত্য সৃষ্টিতেও ছয়'এর দশক (উনিশ শতকের) থেকে নারীরা যে ধারা সূত্রপাত করেছিল তা নারীর আত্মমুক্তির পথকেই প্রসারিত করেছিল। ছয়'এর দশকের পূর্বেই ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে প্রথম ছাপার হরফে নারী রচিত কাব্য 'চিত্তবিলাসিনী' প্রকাশিত হয়। লেখেন কৃষ্ণকামিনী দাসী। ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে কবি ঠাকুরাণী দাসীর নাম উঠে আসতে থাকে, যিনি কবিতার পাশাপাশি গদ্যও লিখতেন। ঠিক সেই বছরই জন্মগ্রহণ করেন কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী, যাঁর কবিতা লেখা আত্মমুক্...

বছরের বাছাই

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৪তম সংখ্যা ।। ফাল্গুন ১৪৩১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

  এই সংখ্যায় একটি গ্রন্থ আলোচনা ও একটি ধারাবাহিক রচনা ছাড়া সব লেখাই ভাষা দিবস, মাতৃভাষা, ভাষাচেতনা ও ভাষা সমস্যা বিষয়ক রচনা। লেখাগুলি এই সংখ্যাকে অনেকটাই সমৃদ্ধ করেছে। পড়ুন। শেয়ার করুন। মতামত জানান। লেখকগণ নিজের নিজের লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন যতখুশি, যে মাধ্যমে খুশি। কিন্তু স্ক্রিনশট শেয়ার নৈব নৈব চ!  অন্য বিষয়ের লেখাগুলি আগামী সংখ্যার জন্য রইল।  সকলকে ধন্যবাদ, অভিনন্দন। ভালো থাকুন।   --সম্পাদক, নবপ্রভাত। ==  সূ  চি  প  ত্র  == প্রবন্ধ-নিবন্ধ অমর ২১শে ফেব্রুয়ারি বাঙ্গালীর বাংলা ভাষা দুর্জয় দিবস।। বটু কৃষ্ণ হালদার ভাষা শহীদদের পঁচাত্তর বছর।। অনিন্দ্য পাল একুশে ফেব্রুয়ারি : বাঙালির শ্রেষ্ঠ অশ্রুবিন্দু।। জীবনকুমার সরকার কবিগানের সাহিত্যিক ও সমাজতাত্ত্বিক মূল্য।। বারিদ বরন গুপ্ত বিপন্ন মাতৃভাষা ও সংস্কৃতি।। শ্যামল হুদাতী মায়ের দুধ আর মাতৃভাষা।। প্রদীপ কুমার দে একুশে ফেব্রুয়ারি : কিছু কথা।। বনশ্রী গোপ বাংলায় কথা বাংলায় কাজ।। চন্দন দাশগুপ্ত বিপন্ন মাতৃভাষা ও তার মুক্তির পথ।। মিঠুন মুখার্জী. হে অমর একুশে, তোমায় ভুলিনি, ভুলব না।। মহম্মদ মফিজুল ইসলা...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৭তম সংখ্যা ।। জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ মে ২০২৫

  প্রচ্ছদ চিত্র: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সূচিপত্র রবীন্দ্রনাথ এবং কয়েকজন নারী ।। অনিন্দ্য পাল পরাবাস্তববাদ ও বাংলায় জীবনানন্দের কাব্যচর্চা ।। রণেশ রায় প্রতীক্ষা ।। চন্দন দাশগুপ্ত আশ্রয় ।। সায়নী সাহা বয়স্ক শিক্ষাকেন্দ্র ।। দেবাংশু সরকার প্রণামের প্রভু ।। সুপ্রভাত মেট্যা দুর্ভাগ্যের সম্মুখ সমরে ।। সমীর কুমার দত্ত আচমকা শরৎ ।। অর্ণব সামন্ত প্রতিধ্বনি ✍️ সুবীর কুমার ঘোষ জীবন যেখানে যেমন ।। আরজু মুন জারিন বছর সীমান্তে হিসেব নিকেশ ।। রানা জামান চারটি কবিতা ।। বিবেকানন্দ নস্কর আমরা আছি ।। লালন চাঁদ চাওয়া ।। মাথুর দাস কাগজ ফুলে ।। সফিউল মল্লিক সময়ের স্রোত ।। দুর্গাদাস মিদ্যা তুমি মানুষ ।। বদরুল বোরহান দিঘার সমুদ্র ।। মাখনলাল প্রধান পুস্তক-আলোচনা ।। অরবিন্দ পুরকাইত সংযম ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত  চেনা প্রতিবেশী (প্রথম পর্ব) ।। দীপক পাল খেলার মাঠ ।। তূয়া নূর বন্ধু শ্যামলকান্তি ।। শংকর ব্রহ্ম তুমি তোমার মতো থাকলে ।। সত্যেন্দ্রনাথ বেরা গ্রীষ্মে খুবই হিংস্র রবি ।। জগবন্ধু হালদার স্বপ্ন দর্শন ✍️ পার্থ প্রতিম দাস মৌন মুখরতা ।। মুসা মন্ডল রুদ্র বৈশাখ ।। দীনেশ সরকার চিহ্নিত পদযুগ পদাঘাত ।। দেবাশীষ...

প্রচ্ছদ।। ৮৩তম সংখ্যা ।। মাঘ ১৪৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ।। প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র

  বিঃ দ্রঃ আগামী ফেব্রুয়ারি সংখ্যার জন্য ভাষা দিবসের কথা মাথায় রেখে লেখা পাঠান। email: nabapravatblog@gmail.com  সূচিপত্র ফিচার।। গোপাল ভাঁড়ের অজানা সত্য ।। লোকনাথ পাল প্রবন্ধ ।। মসুয়ার রায় পরিবার এবং বঙ্গসংস্কৃতি ।... প্রবন্ধ ।। সুধীন্দ্রনাথ দত্ত: কাব্যের দার্শনিক ও ন... কবিতায় সেতুবন্ধন (তৃতীয় অংশ) শিল্পবিপ্লবোত্তর কাল... রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর বিদ্রোহী প্রেমের কবিতা: ... কবিতা ।। এই মন ভালো নেই দিনে ।। সুপ্রভাত মেট্যা কবিতা ।। জোছনা আলোর স্বপ্ন ।। তুষার ভট্টাচাৰ্য কবিতা ।। নিঃস্ব হবো ।। লালন চাঁদ কবিতা ।। ভালোলাগা  ।। আজিজ উন নেসা  গল্প ।। স্বীকারোক্তি ।। চন্দন দাশগুপ্ত কবিতা ।। শীতের দিন ।। প্রশান্ত কুমার মন্ডল কবিতা ।। শীতকাল ।। অঙ্কিতা পাল নাসির ওয়াদেনের দুটি কবিতা ভূতের লেখা ছড়া ।। বদরুল বোরহান কবিতা ।। ব্যস্ত ।। আলাপন রায় চৌধুরী ছোটগল্প ।। লম্বুর স্বপ্নপূরণ ।। পরেশ চন্দ্র মাহাত কবিতা ।। সৎকার ।। সুমিত মোদক কবিতা।। শীত বৈচিত্র্য ।। সুমিতা চৌধুরী পুস্তক-আলোচনা ।। নিউটনের আপেল ও প্রেমিকা ।। অরবিন্... গল্প।। শান্তির পথে …...।। বন্দনা সেনগুপ্ত কবিতা ।। মা...

সূচিপত্র ।। ৮৯তম সংখ্যা ।। শ্রাবণ ১৪৩২ জুলাই ২০২৫

সূচিপত্র   প্রবন্ধ ।। বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় ।। মাখনলাল প্রধান প্রবন্ধ ।। শ্রমিকের অধিকার ।। চন্দন দাশগুপ্ত প্রবন্ধ ।। ভিনগ্রহীদের সন্ধানে ।। শ্যামল হুদাতী প্রবন্ধ ।। নারীমর্যাদা ও অধিকার ।। হিমাদ্রি শেখর দাস কবিতা ।। মশালের রং তুলি ।। তূণীর আচার্য কবিতা ।। জললিপি ।। রূপক চট্টোপাধ্যায় গুচ্ছকবিতা || শিশির আজম নিবন্ধ ।। পূনর্জন্ম ।। শংকর ব্রহ্ম মুক্তভাবনা ।। কোলাহল তো বারণ হলো ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত গল্প ।। গানের হাড় ।। শুভজিৎ দত্তগুপ্ত গল্প ।। শিকড়ের খোঁজে ।। সমীর কুমার দত্ত সুপ্রভাত মেট্যার পাঁচটি কবিতা গ্রন্থ-আলোচনা ।। আবদুস সালামের কাব্যগ্রন্থ 'অলীক রঙের বিশ্বাস'।। তৈমুর খান অণুগল্প ।। হরিবোল বুড়ো ।। সুমিত মোদক রম্যরচনা ।। গোয়েন্দা গোলাপচন্দ আর প্রেমের ভুল ঠিকানা ।। রাজদীপ মজুমদার দুটি গল্প ।। মুহাম্মদ ফজলুল হক দুটি কবিতা ।। তীর্থঙ্কর সুমিত কবিতা ।। মেঘমুক্তি ।। বন্দনা পাত্র কবিতা ।। ব্যবচ্ছিন্ন শরীর ।। কৌশিক চক্রবর্ত্তী কবিতা ।। শমনচিহ্ন ।। দীপঙ্কর সরকার কবিতা ।। ভালোবাসার দাগ ।। জয়শ্রী ব্যানার্জী কবিতা ।। ফণীমনসা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ছড়া ।। আজও যদি ।। বদ্রীন...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো,  তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) য...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮২তম সংখ্যা ।। পৌষ ১৪৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

  সূচিপত্র অন্নদাশঙ্কর রায়ের সাহিত্য: সমাজের আয়না ।। বিচিত্র কুমার প্রবন্ধ ।। বই হাতিয়ার ।। শ্যামল হুদাতী কবিতায় সংস্কৃতায়ন (দ্বিতীয় ভাগ ) ।। রণেশ রায় পুস্তক-আলোচনা ।। অরবিন্দ পুরকাইত কবিতা ।। লেগে থাকা রোদ্দুরের ঘ্রাণের মতো ।। জয়শ্রী ব্যানার্জি কবিতা ।। ভুল ।। সুপ্রভাত মেট্যা কবিতা ।। উন্মেষ ।। বিশ্বজিৎ সেনগুপ্ত কবিতা ।। গার্হস্থ্য ।। বিবেকানন্দ নস্কর একগুচ্ছ বিজয়ের কবিতা ।। বিচিত্র কুমার গল্প ।। পোষ্য ভূত ।। সমীর কুমার দত্ত কবিতা ।। আশপাশ ।। প্রতীক মিত্র কবিতা ।। মেঘ ।। তীর্থঙ্কর সুমিত অণুগল্প ।। বংশীবদনের সুখদুঃখ ।। দীনেশ সরকার কবিতা ।। গভীর রাত ।। সুনন্দ মন্ডল তিনটি কবিতা ।। সুশান্ত সেন ভালোবাসার বাসা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত অণুগল্প ।। শিক্ষকের সম্মান ।। মিঠুন মুখার্জী কবিতা।। প্রশ্ন ।। জীবন সরখেল কবিতা ।।ক্ষরিত সে পথ ।। রহিত ঘোষাল কবিতা ।। রক্ত দিয়ে কেনা ।। মুহাম্মদ মুকুল মিয়া কবিতা ।। কংক্রিট ।। আলাপন রায় চৌধুরী ছড়া ।। শীত নেমেছে ।। রঞ্জন কুমার মণ্ডল কবিতা ।। কিছু শব্দ ।। সমীর কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় কবিতা ।। শীতের নগ্নতা ।। রানা জামান কবিতা ।। পথ চলা ।। পাভেল আমান বেদ পু...

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ৮৬তম সংখ্যা ।। বৈশাখ ১৪৩২ এপ্রিল ২০২৫

সম্পাদকীয় এই সংখ্যাটি বাংলা নববর্ষ বিষয়ক সংখ্যা। নৱৰ্ষকেন্দ্রিক বহু তথ্যপূর্ণ লেখা এই সংখ্যাটিকে সমৃদ্ধ করেছে। বাংলা নববর্ষ উদযাপনের ইতিহাস, রীতিনীতি, উৎসব, পার্বন, লোকাচার, রূপান্তর বহুবিধ বিষয় প্রকাশিত হয়েছে এই সংখ্যার লেখাগুলিতে। এই সংখ্যার বাছাই কিছু লেখার সঙ্গে আগামীতে আরও কিছু লেখা সংযুক্ত করে বাংলা নববর্ষ বিষয়ক একটি মুদ্রিত সংখ্যা প্রকাশ করার ইচ্ছে রইল।  সকলকে নববর্ষের আন্তরিক শুভকামনা জানাই। উৎসবে আনন্দে থাকুন, হানাহানিতে নয়। ধর্ম-ব্যবসায়ীদের চক্রান্ত ব্যর্থ করে সহনাগরিকের পাশে থাকুন। মনে রাখুন, ধর্মকে মানুষই সৃষ্টি করেছে। ঈশ্বর আল্লা গড ইত্যাদির জন্মদাতা মানুষই। মানুষকে ভালোবাসুন। মানুষের পাশে থাকুন।  নিরাশাহরণ নস্কর  সম্পাদক, নবপ্রভাত।  সূচিপত্র প্রবন্ধ-নিবন্ধ-স্মৃতিকথা পয়লা বৈশাখ ।। সিদ্ধার্থ সিংহ নববর্ষকেন্দ্রিক মেলা, পার্বন, উত্সব, লোকাচার ।। সবিতা রায় বিশ্বাস নববর্ষ আবাহন ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে এবং বিভিন্ন দেশে ।। তুষার ভট্টাচার্য নববর্ষের সেকাল ও একাল ।। হিমাদ্রি শেখর দাস নববর্ষের হাল-হকিকৎ ।। শংকর ব্রহ্ম বোশেখি বাঙালি নাকি পোশাকি বাঙালি? ।। দিব্যেন্দু...

প্রবন্ধ ।। বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় ।। মাখনলাল প্রধান

বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় মাখনলাল প্রধান বাংলার শিল্প-সংস্কৃতির জগতে যাত্রা শিল্প তথা নাট‍্যশিল্পে মড়ক নেমে এসেছে । যাত্রা শিল্পের মড়কে শুধু কোভিড নয় তার বহুপূর্ব থেকেই অর্থনৈতিক বিপর্যয় , শিক্ষাক্ষেত্রে বন্ধ‍্যাত্ব এবং গ্ৰাম বাংলার পটপরিবর্তন শেষ পেরেক ঠুকে দিয়েছে। যাত্রা-শিল্পের লীলাভূমি ছিল গ্ৰাম বাংলা। গ্ৰামে প্রচুর যাত্রাপালা হত নানা উৎসবকে কেন্দ্র করে । জমিদারি ব‍্যবস্থা লুপ্ত হওয়ার পর গ্ৰামীণ মানুষের উদ‍্যোগে শীতলা পূজা,  কালীপূজা, দুর্গাপূজা, কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা, চড়ক ইত‍্যাদিকে উপলক্ষ‍্য করে যাত্রাপালার আয়োজন না হলে কেমন যেন ম‍্যাড়ম‍্যাড়ে লাগতো। সেই সঙ্গে কলকাতার বড়বড় কোম্পানির যাত্রাপালা ঘটা করে, টিকিট সেল করে হত মাঠে। খুব বড় মাপের খেলার মাঠ যেখানে ছিল না সেখানে ধানের মাঠ নেওয়া হত ‌। ত্রিশ-চল্লিশ হাজার মানুষ দেখতে আসত। স্পেশাল বাস পাঠাত  আয়োজক কর্তৃপক্ষ। বিনা ভাড়ায় বাসে যাতায়াত করত যাত্রার দর্শকেরা। কিন্তু বিকল্প ধানচাষ শুরু হলে জমিগুলো সময় মতো ফাঁকা পাওয়া গেল না । প্রথম দিকে ব‍্যাপকহারে ধান শুরু না হওয়ায় খুব একটা অসুবিধা হত না। বহুক্ষেত্রে  ধান কা...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। নবপ্রভাত ৮৫ ।। চৈত্র ১৪৩১ মার্চ ২০২৫

  সূচিপত্র নিবন্ধ ।। মরিয়ম মির্জাখানি: এক অনন্য গণিতসূর্য ।। ... নিবন্ধ ।। নারী দিবসে যা ভাবা উচিত ।। বিশ্বনাথ পাল প্রবন্ধ ।। প্রাচীনকাল থেকে নারীরা অবহেলিত, বঞ্চিত,... নিবন্ধ ।। আমার চোখে আদর্শ নারী ।। জয়শ্রী বন্দ্... ফিচার।। এই মুহূর্তে বাংলা সাহিত্যে নারীদের লেখালেখ... আফ্রিকার লোককথা ।। করোটিকে বিয়ে করা অবাধ্য মেয়েটি ... ছোটগল্প ।। মানবী ।। ভুবনেশ্বর মন্ডল নিবন্ধ ।। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে অন্যতম নারী মু... নিবন্ধ ।। প্রিয় মহিলা সাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবী ।। ... গল্প ।। উই ওয়ান্ট জাস্টিস ।। রবীন বসু প্রবন্ধ ।। নিপীড়িতা ।। শ্যামল হুদাতী ফিচার ।। রমণী রতন ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত প্রবন্ধ ।। নারী সমাজ : তখন-এখন ।। তপন মাইতি নিবন্ধ ।। বহমান কালের ধারায় নারী ।। দীপক পাল গল্প ।। আমার দুর্গা ।। অঞ্জনা গোড়িয়া (সাউ) গল্প ।। যোগ্য জবাব ।। সমীর কুমার দত্ত ছোটগল্প ।। আমি দুর্গাকে দেখেছি।। চন্দন দাশগুপ্ত গল্প ।। সম্পর্ক ।। গৌতম সমাজদার কবিতা।। নারী মানে ।। গোবিন্দ মোদক কবিতা।। নারী ।। সমর আচার্য্য ছড়া ।। নারী অসামান্যা ।। সৌমিত্র মজুমদার কবিতা ।। নারী দিবসে ।। বিবেকানন্দ নস্কর কবিতা ।। না...

প্রবন্ধ ।। ভিনগ্রহীদের সন্ধানে ।। শ্যামল হুদাতী

ভিনগ্রহীদের সন্ধানে  শ্যামল হুদাতী  ইতিহাসের শুরু থেকে বারবার মানুষকে একটা প্রশ্ন কুঁড়ে কুঁড়ে খায় – এই মহাবিশ্বে আমরা কি একা? পৃথিবীর মতো আরও গ্রহ রয়েছে, যেখানে মানুষের মতো বুদ্ধিমান প্রাণীরা বাস করে – এই সম্ভাবনা বরাবর মানুষকে মুগ্ধ করেছে। আমাদের প্রত্যেকের জীবনের কখনও না কখনও এই ভাবনা এসেছে। দীর্ঘ কয়েক দশকের গবেষণার পরও, এই বিষয়ে কোনও নিশ্চয়তা দিতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। জেমস ওয়েব মহাকাশ টেলিস্কোপ, বহু দূরের এমন কিছু গ্রহের সন্ধান দিয়েছে, যেগুলিতে প্রাণ থাকতেই পারে। তবে, নিশ্চিত কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে, আমেরিকার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাম্প্রতিক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, ভিনগ্রহীদের খুঁজতে বহু দূরে যাওয়ার কোনও দরকার নেই। তারা এই পৃথিবীতেই মানুষের ছদ্মবেশে মানুষের মধ্যেই বসবাস করতে পারে। আমরা ভিনগ্রহীদের যেমন কল্পনা করি, এরা তার থেকে আলাদা। এরা অনেকটাই, দেবদূতদের মতো। মানব জগতের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক প্রযুক্তিগত নয়, বরং জাদুকরি। মহাকাশে সৌরজগতের গ্রহ পৃথিবী ছাড়া অন্য কোথায় প্রাণ রয়েছে কি না তা নিয়ে চলছে বিস্তর গবেষণা। একই সঙ্গে পৃথিবী ছাড়া অন্য কোনো গ্রহে মানুষ বসবাস ক...

মাসের বাছাই

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬

  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠালে  অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে হলে ভালো। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # ...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯২তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩২ অক্টোবর ২০২৫

—: সম্পাদকীয় দপ্তর থেকে :— এই সংখ্যার জন্য লেখা এসেছিল প্রায় ১৮০টা। কিন্তু গুণগত মানে দুর্বল লেখার সংখ্যা বহু। আমরা নবপ্রভাতে নতুনদের কথা ভেবে বেশ কিছু দুর্বল লেখাও রাখি। কিন্তু সবসময় একই লোকের দুর্বল লেখা প্রকাশ করা অনুচিত বলে মনে করি। শেষ পর্যন্ত ৯৯ জনের লেখা রাখা গেল। যাদের লেখা প্রকাশিত হল না, তারা লেখাগুলি অন্য যেখানে খুশি পাঠাতে পারেন। বিশেষ কারণে এই সংখ্যার মুদ্রিত সংস্করণ প্রকাশিত হচ্ছে না। আমরা দুঃখিত। তবে মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি শীঘ্রই আসছে। সঙ্গে থাকুন। সকলকে উৎসবমুখর বর্ণময় শুভেচ্ছাসহ— —নিরাশাহরণ নস্কর, সম্পাদক, নবপ্রভাত। অনুরোধ : প্রকাশিত লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন, ছবি/স্ক্রীনশট নয়।  == সূচিপত্র == পড়া-লেখার ইতিহাস অনুসন্ধান।। তপন তরফদার উৎসব : মানুষের চিরন্তন আত্মপ্রকাশ।। কৃশানু ব্যানার্জি বাংলা : সভ্যতা ও সংস্কৃতির জন্মভূমি।। শ্যামল হুদাতী সমুদ্র আর অস্তিত্ব ।। সুব্রত চৌধুরী রাজা ছিলেন জুবিন গর্গ ।। গঙ্গা 'অনু'   আদ্যাশক্তি মহামায়ার বাংলা বারো মাসের বারো রূপ ।। অর্হণ জানা মেধাদাদুর আসর ।। রণেশ রায় বৈজ্ঞানিক মা...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯৩তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩২ নভেম্বর ২০২৫

সূচিপত্র বস্তু, চেতনা এবং কবি ।। সজল চক্রবর্তী দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত ।। রণেশ রায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট ও সন্নিহিত অঞ্চলের কথ্য শব্দ ।। অরবিন্দ পুরকাইত চাঁদে জীবন ।। শমীক সমাদ্দার অসমাপ্তি ।। মহুয়া হুই গ্যালাক্সির শব্দে ।। জাসমিনা খাতুন তিনটি কবিতা ।। দিবাকর সেন অপূর্ণতার শেষ অধ্যায় ।। সুপ্রিয় সাহা হাফ ডজন ছড়া ।। স্বপনকুমার পাহাড়ী স্বাপ্নিক অমলের ঘুৃম ।। সঞ্জয় দেওয়ান দুটি কবিতা ।। সৌমিত্র উপাধ্যায় পথ চলতি ✍️পার্থ প্রতিম দাস হেমন্তের বিষাদ ছুঁয়ে ।। শক্তিপদ পাঠক রাই আর বাবা ।। অদিতি চ্যাটার্জি স্থিতিশীল ।। রঞ্জিত মুখোপাধ্যায় হৃদয়ের শূন্য কোড ।। লিপিকা পিঙ্কি দে অমানিশা ।। সৌভিক মুখার্জী দৃষ্টিগত ।। শামীম নওরোজ জ্যান্ত ভূতের গপ্পো ।। পার্থ সারথি চট্টোপাধ্যায় ধুতরা ফুলের ঘ্রাণ ।। মজনু মিয়া তারা খসার আলোয় ।। তীর্থঙ্কর সুমিত উত্তরণে অন্তরায় ।। সমীর কুমার দত্ত প্রেম মুদ্রা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ধারা ।। লালন চাঁদ অন্যের ব্যথায় ব্যথি ।। জগদীশ মণ্ডল গর্ভ ।। শাশ্বত বোস ভ্রমণ বিষয়ক স্মৃতিকথা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত শাপে বর ।। সাইফুল ইসলাম রবিবার ।। সঙ্ঘমিত্রা দাস দুটি ...

দিদৃক্ষা ।। রাজেশ কে. চক্রবর্ত্তী

  দিদৃক্ষা রাজেশ কে. চক্রবর্ত্তী 'কাল একবার দেখা হতে পারে?' দশমীর দুপুরে খাটে আধশোয়া হয়ে নিজের ফোনটা ঘাঁটছিল দেবমাল্য; হোয়াট্‌সঅ্যাপের সার্চ বক্সে  র‍্যান্ডম সিক্যুয়েন্সে ক'খানা ডিজিট ইনপুট করতেই বিস্মৃতির অতল থেকে অপ্রত্যাশিতভাবে যে নামটা স্ক্রিনের সারফেসে ভেসে উঠল, এককালে দেবমাল্যের প্রায়োরিটি লিস্টে সবথেকে ওপরে পিন্‌ করা থাকতো এই অ্যাকাউন্টটা। 'অহনা দাশগুপ্ত'—গ্রেয়েড-আউট ডিপিটার ডানদিকে, নামটার তলায় নিস্প্রভ হরফে ভেসে থাকা ওর এই লাস্ট মেসেজটা বেশ ক'বছরের পুরনো, কিন্তু দেবমাল্যর স্মৃতির প্যান্ডোরা বাক্সটি উলটে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল। আরেকবার আপাদমস্তক শিহরিত হয় সে। প্রোফাইলটা খুলে ওপরে-নীচে স্ক্রল্‌ করে দেখে, ওদের পুরনো চ্যাটগুলো তেমনি আড়ষ্ট হয়ে পড়ে আছে, ওর মেসেজগুলোর পাশে ডাবল টিকগুলো এখনও জাজ্বল্যমান সবুজে ছোপানো, যেন এইমাত্র 'সিন্‌' করে রেখেছে অহনা! যেন এখুনি আবার হাত বোলালেই অহনা এসে খানিকটা রাগত ভঙ্গিতে চ্যাট করতে লেগে যাবে। দেবমাল্যের বুক ছাপিয়ে একটা নীরব দীর্ঘশ্বাস উঠে আসে! ছুটির এই আমেজটা লক্ষ্মীপুজো অব্দি গড়াবে—অফিস খুললেই তো আবার দমফাটা ব্য...

গুচ্ছকবিতা || শিশির আজম

  গুচ্ছকবিতা || শিশির আজম হুইসেল (মুরাকামি থেকে অনুপ্রাণিত) ♦ 'গভীর রাতে একটা হুইসেল কতটা গভীর হতে পারে তুমি কল্পনাও করতে পারো না,' ছেলেটা বললো, 'আশ্চর্য ঐ হুইসেলের মতো আমি ভালবাসি তোমাকে।' কিন্তু গভীর রাতে অন্ধকারে কখনও তো ঘুম ভেঙে যায়নি মেয়েটার, কখনও ও বিচ্ছিন্ন আর একা হয়ে যায়নি। ও কীভাবে অনুভব করবে গভীর রাতে ট্রেনের হুইসেল কতটা গভীর! নিউজ এজেন্সি ♦ একসময় আমরা খবর শুনতাম এখন দেখি স্বীকার করতে হবে খবর শোনার চেয়ে দেখার আনন্দ বেশি আলাদা উত্তেজনা নিউজ এজেন্সিগুলো এব্যাপারে তৎপর আর প্রতিযোগিতাপূর্ণ কোনটা নিউজ সেটা ওরাই ঠিক করে যেটা ওদের দরকার আর সেটাই আমাদের দেখানো হয় ধারাবাহিকভাবে সুচারু জ্যামিতিকতায় বিভিন্ন পদ মিশিয়ে খাওয়ানো হয় নতুন বাস্তবতা নির্মাণে যে বাস্তবতায় জায়গা নেই আমাদের ইতিহাস অন্বেষা স্বাধীনতার সমৃদ্ধি আর স্বাধীনতার কথা বলেই ওরা আমার ক্ষেতখামার পাহাড় আর নদীর দখল নিয়েছে তাহলে টিভিতে যে হাসিখুশি প্রাণবন্ত আমাদেরকে দেখানো হয় ওরা কারা এই প্রশ্ন করো নিজের কাছে আগুন নিয়ে খেলা ♦ আজও পুকুরে ছিপ ফেলে বসবো আমি ধীরে চুপ সূর্য আমার ঘাড়ে শ্বাস ফেলবে সারারাত ঘরের ভেতর ল্যাং...

বিদায়ের স্রোত ।। চয়ন মন্ডল

  বিদায়ের স্রোত চয়ন মন্ডল "বিজয়া দশমী—আনন্দের দিন, কারও কাছে যা হয়ে উঠল চিরন্তন বিদায়।" আজ বিজয়া দশমী। শিউলি ফুলের গন্ধে ভোরটা অন্যরকম। পাড়ার প্যান্ডেলে অদ্ভুত এক কোলাহল—মায়ের বিদায় যে আজ। শঙ্খধ্বনি, ঢাকের বাজনা আর উলুধ্বনিতে গমগম করছে চারদিক। একদিকে মা দুর্গার বিদায়ের বেদনা, অন্যদিকে আনন্দ ও মিলনমেলা। সারা বছরের অপেক্ষা শেষে এই দিনটিতে প্যান্ডেল ভরে উঠেছে মানুষের ভিড়ে। সকালের পূজার্চনা শেষ হতেই শুরু হয়েছে সিঁদুর খেলা। মহিলারা মায়ের প্রতিমাকে সিঁদুর পরিয়ে একে অপরের কপালে, গালে রাঙিয়ে দিচ্ছেন। ঢাকের তালে আর শাঁখ বাজনার আবেশে ভেসে যাচ্ছে পাড়া। শুরু হয়েছে প্রতিমা বিসর্জনের প্রস্তুতি। কিন্তু এসবের মধ্যে নেই অনুরাধা। কেউ তার বা মিনির খোঁজ রাখেনি। মুখার্জিদের দোতলা বাড়ির কোণের ঘরে বসে সে চোখের জল ফেলছে। সবার বাড়িতে আলোর রোশনাই, ভোগের গন্ধ, হাসি—শুধু তাদের ঘরটিতে নিস্তব্ধতা। গতবছর এই দিনেই তো অন্যরকম ছিল সবকিছু। অনুরাধা, সুজয় আর তাদের তিন বছরের মেয়ে মিনি পাড়ার প্যান্ডেলে ঢাকের তালে নেচেছিল, সিঁদুর খেলায় রঙে ভেসেছিল। বিকেলের দিকে প্রতিমা বিসর্জনের মিছিলে শামিল ...

কবিতা ।। অরণ্যকন্যা ।। অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়

  অরণ্যকন্যা অরিন্দম চট্টোপাধ্যায় অরণ্যকন্যার দৃষ্টির ভেতর বিষাদ বিন্দু ফোঁটা ফোঁটা জলের মতো গড়িয়ে যায়, হয়ে যায় কোন নদীপথ দৃষ্টি ভেঙে ভেঙে চলে যায় কোন এক শূন্য পথে অরণ্যকন্যার হৃদয়ের ভেতর ভাঙে যতো বৃক্ষপত্র নতুন পত্র পুষ্পের খোঁজ নেই ঠোঁট জুড়ে সমুদ্রকাঁপন বুদবুদের মতো অস্ফুট হয়ে উচ্চারিত হয় কোন অক্ষর শব্দ আর তাঁর শরীর থেকে ছড়িয়ে যায় হয়ে যায় একটা অদৃশ্য কবিতা...    ================== @ অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়,  বেহালা, কলকাতা -৭০০০৬০,  

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯১তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পাদকীয় দপ্তর থেকে এই সংখ্যায়  'শিক্ষা ও শিক্ষক' বিষয়ক বেশ কিছু লেখার পাশাপাশি রয়েছে বিচিত্র বিষয়ের আরও কিছু লেখা। সব মিলিয়ে সংখ্যাটি আপনাদের সমৃদ্ধ করবে, আপ্লুত করবে — এ বিষয়ে আমরা আশাবাদী। আপনাদের মতামত অবশ্যই জানাবেন। আমরা প্রতীক্ষিত।            আগামী অক্টোবর ২০২৫ সংখ্যা 'উৎসব সংখ্যা' হিসাবে প্রকাশিত হবে। ওয়েব সংখ্যার পাশাপাশি নির্বাচিত লেখাগুলি নিয়ে একটি pdf এবং তার মুদ্রিত সংস্করণও প্রকাশিত হবে। তাই অপ্রকাশিত ভালো লেখা পাঠান। বিশেষ কোনও বিষয় নেই। প্রবন্ধ-নিবন্ধ-ফিচার ২০০০ শব্দ, গল্প ১২০০ শব্দ, অণুগল্প ৫০০ শব্দ, কবিতা-ছড়া ২৪ লাইনের মধ্যে হলে ভালো। ইমেলঃ nabapravatblog@gmail.com           বিস্তারিত বিজ্ঞপ্তি আসবে। সামাজিক মাধ্যমে আমদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন। সময় মতো সব সংবাদ পেয়ে যাবেন।  শারদ উৎসবের দিনগুলি সকলের আনন্দে কাটুক এই কামনা করি। —নিরাশাহরণ নস্কর সম্পাদক: নবপ্রভাত মোঃ ৯৪৩৩৩৯৩৫৫৬ Whatsapp Group:  https://chat.whatsapp.com/ AIpj98JKbloFSpeqMcpr6j Facebook Page:  https://www.facebook.com/ share...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো,  তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) য...

শেষ বিকেলের আলো ।। সৈকত প্রসাদ রায়

  শেষ বিকেলের আলো সৈকত প্রসাদ রায় রানাঘাট শহরের প্রান্তে ছোট্ট এক পাড়া বিশ্বাসপাড়া। সেই পাড়ার পুরোনো ভাঙাচোরা বাড়িটায় থাকেন পুষ্পরাণী ভট্টাচার্য— বয়স পঁয়ষট্টির কোঠায়। সবাই তাকে "পুষ্পদি" বলেই চেনে। একসময় প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতা করতেন, এখন অবসর নিয়েছেন। প্রতিদিন বিকেলে পুষ্পদি বারান্দায় বসে চা খান। ছোট একটা টেবিল, কয়েকটা পুরোনো বই, আর একখানা নীল কাঁচের ফুলদানি — তার নিত্যসঙ্গী। বারান্দার সামনেই একটা গলি, যেখান দিয়ে প্রতিদিনই স্কুল ছুটির পরে বাচ্চারা হইচই করে ছুটে যায়। পুষ্পদির একমাত্র ছেলে অনিরুদ্ধ — কলকাতায় চাকরি করে। ছেলেটা আধুনিক, নিজের সংসার আছে, স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ব্যস্ত। বছরে হয়তো একবার আসে, তাও কিছুক্ষণ বসে আবার চলে যায়। পুষ্পদি মুখে কিছু বলেন না, কিন্তু বুকের ভেতরে একটা কষ্ট জমে থাকে। সেই বিকেলটা অন্যরকম ছিল। আকাশে ধুলো, গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা। হঠাৎ পুষ্পদির চোখে পড়ে — রাস্তায় এক কিশোর বসে আছে। বয়স বারো-তেরোর বেশি নয়। মলিন জামা, পায়ে ছেঁড়া চটি। ছেলেটা একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে পুষ্পদির বাড়ির গেটে ঝুলে থাকা পুরোনো নোটিশবোর্ডটার দিকে, যেখানে একসময় লেখা ছিল — "পুষ্পরাণী ভ...