চাঁইদূর্গঢেলা থেকে
বিকেল ক্রমশ ধুলোমাখা পাতা থেকে
আলো সরিয়ে নিয়ে গিয়ে হালকা হয়ে আসছে।
হলুদ রোদ ফ্যাকাশে আশায় স্বপ্ন শূন্য.....
নীরব কলোনীর চাঁইদূর্গঢেলা থেকে গড়িয়ে নামছে প্রেম।
বাদাম খোলায় ছাড়ানো সোহাগের অনুভূতি হাত
তখনও স্পষ্ট। তখনও অতীতের অতিবাহি রাত
স্মৃতি হাতড়ে হাতড়ে তার কলঙ্কের চাঁদ উঠলে তবে,
শব্দ আর সন্ধিস্বরের অক্ষরেরা মৃদু যুক্ত হয়,
এবং কখন একটা পংক্তি গঠনের সন্তান,
দারুণ আনন্দের দিকে ছুটে যায়!
ঈশ্বর মানি
জন্ম বড় সহজ; তবে পালন, কর্তব্যলিখনে এতো কঠিন যে
শব্দেরা পংক্তি হারিয়ে কখন একা হয়ে যায়!
যেকোনও চলে যাওয়ার আগে
খোলা আকাশের নীচে ফসল ফলিয়ে সুন্দর যাওয়াটাই ভাল।
কারন আমরা জানি, যেভাবে শ্রাবণ শেষে
তারে ঝুলে থাকা বৃষ্টির ফোঁটার লাইট নিভিয়ে দেয়
কোনও এক গ্রামীণ কিশোর; ঠিক সেইভাবে যাওয়া-
হঠাৎই মাটিতে মিশে যাওয়া আমাদের।
সর্বোপরি অদৃশ্যের উপর নির্দেশিকা থেকে যে হাত,
বাড়িয়ে বাঁচার ছায়া, আয়ু সংযোজনের রেখা তৈরি করে
আমরা তাকেই তো ঈশ্বর মানি, তাই না?
দুগ্ধজল
হৃদয় গলতে শুরু করলে
তুমি এসে দুগ্ধজল ধোও। আমাকে
আপনকরে টেনে নাও বুকে।
সরষের ফুলফুল রঙের শরীর, তোমার লাল ঠোঁট,
রাঙা রোদে ফর্সা বিকেল লেখিকার লেখা খুঁটে খায়।
আর কবিতা আবাসের ধুলোছেলে নিয়ে
উড়ে বেড়ায়, হাওয়ায় হাওয়ায়।
আলোকে হাতে নিয়ে গোধূলির সাঁকো পেরিয়ে ডুব দাও তুমি জলে।
গর্ভে অন্ধকার সর্বস্বের প্রাচীন অঙ্কুর মাথা তুলে, চাঁদ দেখে।
ছায়া সরে যায় দূরে জলে ও জঙ্গলে ভোর।
আর শরীর খাটানোর চাইতে গতর খাটানোই
শ্রেয় সম্মানের পরিষ্কার আকাশ দেখা যায় গ্রামে।
হৃদয়কেন্দ্রিক
মানুষের ভালো চায়,
সে মানুষ যদি আলো নাও হয়ে থাকে
ভালো তার মধ্যে প্রস্ফুটিত অন্ধকারেও
জ্যোৎস্নার ফসল ফলাবে নিশ্চিত।
নিশ্চিত তার ঠাণ্ডা লাগা স্থির মস্তিষ্কে
পরোপকারের অঙ্কুর গজাবে সবুজ।
হৃৎপিন্ডের চলমান লাল বংশলতিকায়
পিতামহের স্নেহ, আদুরীঠাকুমার প্রেম, আর
সহাস্য মায়ের মুখের মতো ক্ষেত জন্মাবে অবশ্যই।
সত্যিকারের পৃথিবী,
হৃদয়কেন্দ্রিক ঘুরতে ঘুরতে জীবন অতিক্রম করবে নিষ্ঠা ও সৌন্দর্যের প্রতিকী মানুষের, প্রত্যেকটিই।
শেষ প্রহরের লীলা
অনেকদিন ভালো নেই।
ফলত, আমার ভালো না-থাকার ভেতর গভীর জঙ্গল,
রহস্যের রূপ নিয়ে গাঢ় অন্ধকার হয়ে আছে।
ভূতের ছায়া হয়ে আছে জীবন।
অসুখ সময়ের মেঘ উড়ে বেড়াচ্ছে আমার মাথার
উপরে ঘোর। ঘন নীল আকাশ হৃদয়ে
কালোপাখির ডাক কু-গাইছে কী অদ্ভুত!
আর কালরাত্রির ডানায় কৃষ্ণপক্ষের হাওয়া,
ঝড় উঠিয়ে, ধ্বংস চাইছে আমার।
ও আমার শেষ প্রহরের লীলা
আমাকে পতনমুখের গুহা দেখাও যত,
তারচেয়ে, আমৃত্যুর আলো দেখিও বেশি।
================
কবির নাম :- সুপ্রভাত মেট্যা
গ্রাম :- বলরামপুর
পোষ্ট :- জয় বলরামপুর
থানা :- তমলুক
জেলা :-পূর্ব মেদিনীপুর
পিন:- ৭২১১৩৭
Comments
Post a Comment