Skip to main content

বেড়িয়ে এলাম ঝাড়খণ্ডে ।। শিবপ্রসাদ পুরকায়স্থ

[ভ্রমণ]

বেড়িয়ে এলাম ঝাড়খণ্ডে

শিবপ্রসাদ পুরকায়স্থ

      ২৫শে ডিসেম্বর। সকাল ৬-৫এ হাতিয়া এক্সপ্রেসে, রাঁচির ষ্টেশনে পৌছলাম। ষ্টেশনে নেমে চারদিকটা একনজরে দেখে নিলাম। হালকা অন্ধকার ভাব। কুয়াশায় যেন ধোঁয়া আটকা পড়েছে। শরীরে ঠান্ডা টের পাচ্ছি। গায়ে গরম পোশাক চাপানো। এখানে আসার আগে যেমনটা ঠান্ডার গল্প শুনেছিলাম, তেমনটা এবারে হয়নি।
      পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ষ্টেশন চত্তর। চলমান সিঁড়ি দিয়ে ওপারে পেরিয়ে গেলাম। পরিপাটি করে সাজানো গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা। আমাদের নির্ধারিত গাড়ির চালক, ইমরান আনসারি। কালোসাদা বড় মাপের রুমালটি নাড়িয়ে নিশ্চিত করলেন। আমরা দুটো গাড়িতে উঠে পড়লাম। কে কোন গাড়িতে উঠবে আগেই ঠিক করা ছিলো। গাড়ি ষ্টেশন ছেড়ে সরু পথের মধ্যে দিয়ে গিয়ে হাইরোডে ছুটে চলল।
       তখন চারিদিকে শুনশান পরিবেশ। রাঁচি শহরে তখনও অধিকাংশ চোখের পাতা খুলবার সময় হয়ে ওঠেনি। বেশ কিছুটা পথ যাওয়ার পর হনুমানের কারুকার্য করা অসম্পূর্ণ মন্দিরের পাশ ঘেঁষে অপ্রসস্ত গলিপথে ঢুকে পড়ল। সামনে চলমান বিজ্ঞাপিত লেখায় হোটেল নটরাজ [Hotel Nataraj] আবাসিক দেখতে পেলাম। পথের পাশে আমাদের গাড়ি দাঁড়িয়ে গেল। প্রথমে এই জায়গাটি কোথায় ড্রাইভার বুঝতে পাচ্ছিল না। যাক শেষ পর্যন্ত পাওয়া তো গেল।
      পীযূষবাবু ফোনের পর ফোন করে হোটেলের দরজা খোলালো। দেখলাম দায়িত্বে যাকা কম বয়সি দুইছেলে চোখ কজলাতে কজলাতে দোর খুলে দিল। আমরা যে সিঁড়ি দিয়ে দোতলায় উঠতে চলেছি ঠিক তার দুহাত দূরে মেঝেতে বিছানা করে ঘুমচ্ছিল এরা। যে যেখানেই ঘুমুগ্যে না, আমরা পয়সা দিয়ে ভালো পরিসেবা পেলেই হলো। পাশ কাটিয়ে ওপরে উঠে গেলাম।
      এখানে আমার অর্ধাঙ্গিনী নেই। ঘর বাছাইয়ের প্রশ্ন ওঠে না। সবাই জানে আমি সাহিত্যমনস্ক মানুষ। যে ঘরটাই পাবো তাতেই খুশী। আমাদের কক্ষ পড়েছে চলতি রাস্তার ধারে। আমাদের বলতে, গোপালদা। আমি দাদা বলেই ডাকি। সংস্কৃতিমনস্ক মানুষ। আপাতদৃষ্টিতে গুরুগম্ভির। মিশলে বুঝবেন বাইরের খোলশ দেখে মনগড়া ধারণা করা ভুল, তা প্রমাণ হবে।
      আমাদের কক্ষের ঝুল বারান্দা আছে। কাচের পাল্লা খুলে বাইরে গিয়ে দাঁড়ালাম। সেখান থেকে রাঁচি শহরের অনেকটা দূর পর্যন্ত দেখা যায়। পুরোনো পাকা জরাজীর্ণ বাড়ির  পাশাপাশি হাল আমলের ঝকঝকে বহুতল  আবাসিক। বিভিন্ন নামে দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। যেহারে জায়গার দাম বাড়ছে। প্রোমটারের থাবা থেকে পুরোনো বাড়িগুলো বাঁচানো কতদিন যাবে। আরও কতকিছু মনে আসছিল। এমন সময় দাদা পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। শিবু, সকালের ঠাণ্ডায় বেশিক্ষণ থাকা ঠিক না। দাদার কথা অন্যথা না করে ভিতরে ঢুকে গেলাম।
      গরম জলে স্নান সারা হয়ে গেছে সবার। বাইরে থেকে চা এনে পানের পর্ব সমাপ্ত। নেতার হাটে দশম ফলস ( Ten Water Fall ) দেখতে বেরিয়ে পড়লাম। দর্শনীয় স্থানে পৌঁছিয়ে গেলাম। দেখলাম অনেকটা উঁচু থেকে জলের খরধারা প্রবাহিত হচ্ছে। অমি, ডাক্তারবাবু ও ঈশানী অনেকটা নিচুতে নেমে গেলাম। ঝর্ণার জল ছুঁয়ে ছবি তুললাম।
      দ্বিতীয়বার পাঁচমুখী বা পঞ্চ ঘাঘ জলপ্রপাত (Panchghagh Water Fall) লক্ষ্য করার মতো। এর বৈশিষ্ট্য আবার আলাদা। এই ঝর্ণাটি যে পাথর খণ্ডগুলো মধ্যে দিয়ে বয়ে চলেছে অনেককিছু মনে করিয়ে দেয়। প্রতিটি পাথরখণ্ড আড়ায়াড়ি ভাবে আছে। বিভিন্ন আঙ্গিকে তার অবস্থান। এই পাথরগুলো দেখে আমার যা মনে হয়েছিল সেটাই বলি। সকর্মে যুক্ত ব্যক্তিরা তার প্রিয়বস্তু লক্ষ্য করলে দেখতে পাবে। চকখড়ির আকার।  গ্রন্থের আদল। আস্ত কঠের গুঁড়ি। আরও কতো বিচিত্র রূপে পড়ে থাকা পাথরগুলোকে চিন্তিত করে যায় বা কল্পনায় ভেবে নিতে পারি।  যেমন বৈকালিক অস্তগামী ভাসমান মেঘগুলো এক দৃষ্টে দেখলে প্রতিমুহূর্তে কতকিছু চোখের সামনে ভেসে বেড়ায়। তেমন এই পঞ্চঘাঘের পাথরখণ্ডগুলো।
      সারাদিনের পাহাড়ি ঝর্ণা দেখার আনন্দ নিয়ে রাঁচি শহরের মধ্যে দিয়ে রাঁচিতে অবস্থিত আবাসের দিকে চলেছি। চারিদিকে আলো ঝলমল করছে। এখন বিবেকানন্দ রকে বিপরীত দিক দিয়ে ফিরছি। বিবেকানন্দের পূর্ণাঙ্গ মর্মর মুর্তি জলের মধ্যস্থলে দণ্ডায়মান। হনুমানজির মন্দিরে সকালে যেখানে ফাঁকা পড়ে ছিল এখন নেই। সেখানে চারচাকার ঠেলা ডালায় গরম পোষাকের ঢালাও ব্যবসা চরছে। তাই আমাদের গাড়ি উলটো দিকের পথে গলির মধ্যে ঢুকেছিল। ভেবেছিলাম সকালের মতো ভুল পথে ঘুরছে নাকি। আমাদের খাবার হোটেল হনুমানির মন্দিরের পিছনে। সরু পথ পেরিয়ে এই হোটেলটি। আমরা খাওয়ার আগে ও পরে পোষাকের বাজারে ঘুরলাম। দামও করলাম। ভীষণ ভালো সোয়েটার অনেক কম দামে এখানে পাওয়া যাচ্ছে। যখন দেখছি একে একে দোকান গুঠিয়ে নিচ্ছে, আমরাও রাত্রি যাপনের জন্য আস্তানার দিকে পা বাড়ালাম। সারাদিনের ক্লান্তিতে চোখ বুজে আসছে।
      ২৬শে ডিসেম্বর। দাদা, ভোর পাঁচটায় প্রাতঃভ্রমণে যাওয়ার জন্য ছটফট শুরু করে দিয়েছে। সাহিত্যসম্মেলনে যাওয়া শান্তিনিকেতনে প্রাতঃভ্রমণের ভূত রাঁচিতে ভীষণ ভাবে মাথায় চেপে বসেছে। সেখানেও এই অধম সঙ্গী। আমি বললাম দাদা ওরা এখনো গেট খোলেনি। আমাদের সবাই এখনো  ঘুমিয়ে আছে।
-চল, না গেলে খুলে দেবে কি? বাইরে এসে ঘুমিয়ে কাটালে, বাড়িতে থাকতে কি হয়েছে। -আমি তা বলছি না।
-কিছু বলতে হবেনে, চলো নিচে যাই।
হালকা আলোর মধ্যে সাবধানে সিঁড়ি ভেঙে নিচে নেমে গেলাম। নিজেরাই গেট খোলার নিষ্ফর চেষ্টা চালালাম। যদিও উচিত হয়নি এমন অস্বাভাবিক আচরণ করা। যাইহোক  ওপরে উঠে যাবো কিনা ভাবছি। রিসেপশানের ওদিকে থেকে মেঝে ফুঁড়ে কেউ যেন উঠে দাঁড়িয়েছে। ' উধার নেহি' বলে অনেকটা দৌড়ে যাওয়ার মতো করে অন্ধকারের দিকে চলে গেল। আমরা ভাবছি 'উধার নেহি কিউ, ইধার যানা পড়ে গা' বাংলায় কিছু বলে গেলে নিরাপদ বোধ করতাম। ঠায় দাঁড়িয়ে আছি। কী করব এখন। যে পথে এসেছি, সেই পথে ফিরে যাবো।
     এমন সময় ছেলেটি সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। আর কোথাও নয়, প্রাতঃকৃত্য সারতে গিয়েছিল।এসে জানালো, সামনের দরজা খোলার এখনো সময় হয়নি। দাদা তাকে হিন্দিতে বুঝিয়ে দিলেন। প্রাতঃভ্রমনের জন্য বাইরে যেতেই হবে। আমি বুঝতেই পারলাম না। দাদা তো নির্মল বাংলায় শব্দগুলো উচ্চারিত করলেন। যেখানে ছিটেফোঁটা হিন্দিভাষার টান নেই। আমাকে তো সুযোগ পেলেই বলেতে ছাড়েনা, 'শিবু লেখালেখি করছ, বাইরে বেরুচ্ছ। একটু আধটু অন্তত হিন্দি বলতেই হবে'। দাদা ছেলেটাকে আচ্ছা করে বোঝাচ্ছিলেন। হোটেলে বিভিন্ন ভাষার মানুষজন নিয়ে কাজ করবার। তাদের বুঝতে অসুবিধা হয়নি। বাধ্য হয়ে বাথরুমের পাশ দিয়ে পথ দেখিয় দিল। হাফ ছেড়ে বাঁচলাম। ভাষার বেড়াজালে থেকে মুক্তির স্বাদ পেলাম। এখন পথে বেরিয়ে হনুমানজির মন্দিরের দিকে যেতে থাকলাম। রাতের খাওয়া হোটেলের সামন দিয়ে হনুমানজির বিপরীত দিকে মন্দিরের গা ঘেঁষে চায়ের দোকান। সেখানেও দাদা নির্মল বাংলায় শারীরিক ভাষা সহযোগে দোকানীকে বুঝিয়ে দিলেন। 'দু'কাপ চা দিন আমরা এখানে খাবো। দশ কাপ আপনাদের কোনো জায়গায় দিন নিয়ে যাবো। আমরা পনেরো জন নটরাজ হোটেলে আছি। আরও অনেক চা লাগবে। বোঝানোর পালা প্রায় শেষ, এখন অপেক্ষায় থাকা।
      এই সুযোগে দুএকটি কথা জানিয়ে রাখি। হনুমানজির মন্দির বলছি বটে। আদপে কয়েক তলা বিল্লিং। যখন বাদ্যযন্ত্র বাজে বহুতল কাঁপে। এই কাঁপন ভক্তদের কাঁপায় বলে তো প্রণামিতে কৃপণতা করার অবকাশ থাকেনা। মন্দিরের সামনে গিয়ে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে দেখেছি। একভদ্রলোক শেতবস্ত্র পরিবৃত হয়ে, হাতে চামর নিয়ে মনে হয় ছোটছুটি করছে ভিতরে।  কী বলব কাশ্মীরী আপেলের মতো গায়ের রঙ। আর ভক্তদের রুক্ষ্ণ শরীর না হলে তো ভক্তি মাঠে মারা যাবে। ধর্মব্যবসায় কতকিছুর প্রয়োজন হয়। ভাবলে অবাক হতে হয়।
     এখন যেখানে দাঁড়িয়ে আছি, সকালে এখানে পাইকারি সবজির বাজার। এখন থেকে ছোট ছোট দোকানীদেরে প্রয়োজন মতো কিনে নিয়ে যায়। সারাদিন ফাঁকা পড়ে থাকে। সন্ধ্যায় মন্দিরের ওপারে গরম পোশাককের অস্থায়ী দোকান আগের দিন জেনে গেছি। আমরা চা বিস্কুট খেয়ে, ফ্লাক্সে চা নিলাম । এখন ওপরে ওঠার মুক্ত দরজা পেয়ে গেলাম।  ততক্ষণে নটরাজে নটরাজের নৃত্য শুরু হয়ে গিয়েছে। ঈশানী অস্থির করে তুলেছে, দাদাই দাদাই করে। দাদাকে দেখে শান্ত হলো।
     কাজলদি দুজনের দেখে জানতে চাইল, বাবুরা সব কোথায় গেছেলে। যখন জানল সকালে বেড়াতে গিয়ে ছিলাম। চা বিস্কুট খেয়ে  অল্প চা নিয়ে এসেছি। এই চা'য়ে সবার হবেনা। আরও চা আনতে হবে। আমি যেতে রাজি, দাদা আমাকে একা ছাড়বে কী করে হিন্দি বলয়ে।
      চায়ের সঙ্গে যার যা সঙ্গে ছিল খেয়ে নিচে নেমে এলাম। আমাদের গাড়ির চালক ইমরানদা। আমার নাম যে শিবু জেনে গেছে। রাঁচির প্রাক্তন মূখ্যমন্ত্রী শিবু সোরেন। আমাকেও শিবু সোরেন নামে মজা করে ডাকতে শুরু করেছে। আমিও মুচকি হেসে উপভোগ করছি। যাইহোক দুটো গাড়ি ভ্রমণের জন্য বেরিয়ে পড়েছে রাস্তায়। আমরা হুড্রু ওয়াটার ফলস (Hundru Water Fall) দেখার জন্য মূল জায়গায় পৌঁছে গেলাম। এখন ঝর্ণা দেখতে যাওয়ার জন্য যাওয়া-আসায় মোট ১৪৮৪ টা পোটে ভাঙতে হবে। শুনে প্রথমে দিদি ও পীযুষাবু না করে দিল। অনেকেই মনের জোরে নামতে শুরু করলেও শেষ পযর্ন্ত নামতে পারেনি। অতৃপ্ত মনে উঠে আসতে হয়েছে।
      আমি নেমে গিয়েছিল শেষ ধাপে। যেখানে সবাইকে দাঁড়িয়ে দু'দণ্ড ভাবতে হবে এবার কী করবে। 'ওই দেখা যায় বাবার মন্দির-' বলে প্রণাম করে ফিরবে। না ঝর্ণা প্রপাতের তলদেশে গিয়ে দাঁড়াবে। বিপদ যদি হয়, সেই বিপদের সম্ভবনা এবার প্রবলভাবে রয়েছে।ঈশানী পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। ডাক্তারবাবু প্রায় কাছেই আছে। মেয়ে বাবার কাছে আবদার করললো ঘুর্ণিয়মান চাকতির ওপর দাঁড়িয়ে রানিং ক্যামেরায় ছবি তুলল। ঈশানী টাইটানিকের নায়িকা যেভাবে দুদিকে হাত  মেলে ছুটন্ত জাহাজে দাঁড়িয়ে ছিল তেমন পোজ দিয়েছে। ছবি তোলা হয়ে গেলে মনে হবে। আমাদের বড়মেয়ের চারদিকে পুরো পাহাড় গাছপালা সমেত ঘুরছে। এই বয়সে এরা তুলবে না তো ষাট পেরিয়ে যাওয়াদের মতো ভয়ে কুঁকড়ে থাকবে। ছোটদের নিষেধের বেড়িতে আটকে রাখলে তারা তা মানবে কেন।
      চাকতিতে ঘুরে ছবি তোলা বিপদের ছিলনা। ওই ঘুর্ণিয়মান চাকতি বসানো ছিলো ভগ্ন পাহাড়ের কানা ঘেঁষে। মেয়ের ছবি তোলা শেষ। আমি এই সময়টায় ভাবছিলাম কী উপায়ে অসংখ্য ভ্রমণার্থী গভীর খাদে ওপর থেকে ঝরে পড়া ঠান্ডা ঝর্ণার জল নিয়ে কতভাবে যে জলকেলি করছে। কঠিন হলেও সহজে নামার পথে তখনও আবিষ্কার করে উঠতে পারিনি। ঈশানী যেদিকে ঘুরছিল, এদিকে টুকরো টুকরো পাথরখণ্ডের ওপর দিয়ে    অনেকেই নামতে দেখে আমিও দাঁড়িয়ে থাকতে পারলাম না। মেয়ে বলল,ও শিবুমামা চলো ওদিকে যাই। হ্যাঁ বলে পা বাড়িয়ে দিলাম।
     আর পেছনে তাকানোরও  সময় নেই। দুজনের মনের ইচ্ছে ওই ঝর্ণার তলায় যাওয়ার। একের পর এক পাথরখণ্ডের ওপর দিয়ে দুজনে চলেছি। এক পাথরে দুজনে নেই। এগিয়ে চলেছি আমি, মেয়ে পেছনের পাথরে। মেয়ের পায়ে সু। আমার পায়ে নতুন চামড়ার জুতো। জুতার তলার খাঁজ ক্ষয়ে জায়নি। মেয়েকে বলে দিয়েছি। হঠাৎ শরীর টলে গেলে হাত ছড়িয়ে বসে পড়বে। যেন পাকা প্রশিক্ষকের ভূমিকায় নিজেকে ভাবছি। সামনে পেছনে তাকাতে তাকাতে পা ফসকে অল্পের জন্য বিপদমুক্ত হলাম। একটু থেমে আরও একটি পাথরখণ্ডে পা বাড়াতে যাবে আপাতত থেমে গেলাম। ওপর থেকে আমার নাম ধরে বলছে, ফিরে যাওয়ার জন্য। কার গলা আবার - দাদার। আর দু'তিনটে পাথরের চাঁই পার হলে আমাদের উদ্দেশ্য সফল হয়। দাদা তো পোটের সংখ্যার শুনে নামতে নারাজ ছিল। ওইযে বাৎসল্য কতটা দুর্বল করে করে দিতে পারে এই মানুষটাকে না দেখলে বুঝতে পারবেন না। দুটো মেয়ে কৌশানী ও ঈশানী বাবা মায়ের সঙ্গে গেলেও দাদাইয়ের মনে সর্বদা সংশয়। ঠিক চলে এসেছে। আমি ঈশানীকে বললাম। মেয়ে তুমি ওখানে দাঁড়িয়ে থাকো। আমি একা ঘুরে আসছি। পারলে ওখান থেকে ছবি তুললে তুলতে পারো।
      যেভাবে নেমেছিলাম সেই ভাবে ওপরে দুজনে উঠে গেলাম। কৌশানী ঝাঁকে মিশে গেল। কিছু কেনাকাটায়, খাওয়াখায়িতে সঙ্গীদের অনেকে ব্যস্ত হয়ে পড়ল। আমি কোথাও হ্যাঁ করে দাঁড়িয়ে থাকতে পারিনা। ধাপে ধাপে একাই এগিয়ে চলেছি। যা ভালো লাগছে ছবি তুলছি। পথের চওড়া রেলিংএ আশপাশের পাহাড়ি বন থেকে সংগ্রহ করা গামার কাঠ। সেই কাঁচা কাঠে তলোয়ার তৈরি করে সাজিয়ে রেখেছে বেচার জন্য। সংগ্রহ করে আনা ফল, ফুল ছাড়াও স্থানীয় কতকিছু জিনিস পত্র বেচার জন্য খরিদ্দারের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। এইসব দোকান যারা দিয়েছে তাদের দেখে আমার মনে হলো অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে পড়া শ্রেণির মানুষজন। আর্থিক অনটনের মধ্যে জীবন যাপন করে।
       এক বাচ্চা মেয়ে হাত বাড়িয়ে কিছু চাইছে না। ছোট্ট কাঠের টুকরো যাকে সে তলোয়ার বলছে। কিছু শিল্পীর ছবির তলায় না লিখে দিলে কীসের ছবি বোঝা যায়না। ওই বাচ্চা মেয়টি অস্পষ্ট ভাষায় তলোয়ার না বললে সত্যি কিছুই বুঝতাম না। তলোয়ার নামক কাঠের টুকরো দশ টাকায় আমার কাছে বেচতে চায়। ইচ্ছে না থাকলেও দশ টাকা দিয়ে ওটা কিনে বাড়িতে এনেছিলাম। আমার ওই মেয়টির বয়সি নাতি খেলনা মনে করে কী খুশী না হয়েছে। কদিন ওটাই হাতছাড়া করেনি। শয়ণে, স্বপনে, খেলার অঙ্গনে হাতের কাছে রাখত।
       আমি তলোয়ার ছাড়া আর কিচ্ছুটি কিনিনি। হিড্রু জলপ্রপাত দেখে বা না দেখে সবাই একত্র জড়ো হলাম। ওখানকার পথের হোটেলে খেয়ে গাড়িতে বসলাম। এখন চলেছি জোহানা ওয়াটার ফলস (Jonhana Water Falls) দেখার জন্য। আমরা গন্তব্যে পৌঁছে ওখানকার দোকানীদের থেকে ফলমূল কিনে খাওয়ার ব্যস্ততায় কিছুটা সময় কাটালাম। এবার ধাপে ধাপে ওপরে উঠে দেখলাম সুন্দর পার্ক বানানো। পার্কের ভিতর থেকে এগিয়ে গেলাম ঝর্ণা দেখার জন্য। বাঁদিক ঘুরে পাহাড়ের গা কেটে তৈরি পথ দিয়ে এগিয়ে চলেছি কতো নিষেধ নির্দেশিকা মেনে। প্রথম বুঝতেই পারিনি ঝর্ণা কোথায়। কতদূর গেলে দেখতে পাবো। আমাদের পনেরো জনের কে কার সঙ্গে কোথায় ছড়িয়ে পড়েছে বোঝা যাচ্ছে  না। এমন অন্য কোথাও হয়নি। শারীরিক অক্ষমতা মূল কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমি দেখছি সামনে দিদির সঙ্গে অনেকে বসে আছা। সামনে একটা দল এগিয়ে গেছে। আমি সামনে পেছনে না ভেবে একাই চলতে শুরু করেছি। বুঝে ফেলেছি এখানে দ্বিতীয় পথ নেই। যারা বসে আছে,আর যারা ঝর্ণা দেখতে গেছে তাদের জন্য অপেক্ষা করবেই। পৃথিবী গোলের তথ্য এখানে খাটবে।
      আমি গাছপালার ফাঁক দিয়ে দেখতে পেলাম খুব উঁচু থেকে ঝর্ণার জল ঝরে পড়ছে। আমার মনে হলো হুড্রুর থেকেও অনেক উঁচু। সামনে ঝুলন্ত সাঁকো। দেখতে পাচ্ছি পিঁপড়ের সারের মতো দর্শনার্থীরা যাতায়াত করছে।এই ঝুলন্ত পাহাড়ি পথে দুই পাহাড়ের মানুষজন যাতায়াত করতে পারে। এক সময় মাওবাদীরা ওই পথটাই নিজেদের কাজে লাগিয়েছে। আমি আর এগিয়ে না গিয়ে মাঝ পথে পায়ে হাঁটা পথ দিয়ে ধীরে ধীরে নিচে নেমে গেলাম। ওই ঝর্ণার জল বয়ে চলেছে আমার সমন দিয়ে। একদম কাছে না গেলেও স্পষ্ট ঝর্ণা দেখতে পাচ্ছি। পাথরে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছি। জলে হাত দিয়ে দেখছি বেশ ঠাণ্ডা। পা ডুবিয়ে নিলাম। কতটা সময় পেরিয়ে গেল বুঝতে পারলাম না। কে কোথায় আছে জানিনা। এখন আমি একা, সত্যি আমার একা লাগছেনা। গাছপালা পাথর, মাথার ওপর খোলা আকাশ, পায়ের তলায় প্রবাহিত শীতল জলধারা আমার আপন হয়ে উঠেছে।
      হঠাৎ ঘোর কেটে গেল। কে কোথায় অপেক্ষা করছে বুঝতে পারার কথা নয়। তাড়াতাড়ি সংকীর্ণ পাথরের চাঁইয়ের ফাঁক গলে ওপরে উঠে এলাম। ফেরার পথের দিকে এগিয়ে যেতে দেখলাম দিদির উদ্বিগ্ন। কী ব্যাপার জানতে চাইলাম। মানতু,মহুয়া তারা কোথায়? ওই পথ দিয়ে নামতে তো দেখলুম ওদের। আমার মতো নিচে নামার পাগলামীতে পেয়ে বসেছে। অনেক্ষণ বলছে, দুটো মেয়ের তো যাওয়া উচিত হয়নি। আবার ফোন ধরছে না। কী হলো বুঝতে পারছিনা। অতো গড়েনে কেউ নামতে সাহস পাচ্ছে না। আমি বললাম নেমে দেখছি কোথায় গেছে। চারদিকে নজর রেখে সাবধানে নামছি। ওইতো প্রবাহিত ঝর্ণার শীতল জলধার পাথরের নুড়িতে ধাক্কা খেতে খেতে বয়ে চলেছে। আর কোথায় নেমে খুঁজবো। তবে বেশ কয়েটা বড়ো পথরখণ্ড সামনের কিছুটা জায়গা আড়াল করে আছে। আমি তার ওপর দিয়ে খাদের জল দেখছিলাম। নিচের দিকে লক্ষ্য পড়লো গায়ের  সোয়েটার ঝাঁটি গাছের ওপর পড়ে আছে। বুকের মধ্যে ছ্যাঁৎ করে উঠলো। কাউকে তো দেখতে পাচ্ছি না। দিদির কাছে ফোন করেছি। কানে রিংএর শব্দ শুনতে শুনতে চলেছি। তেমন হলে ফোন কেড়ে নেওয়ার আগে দুঃসংবাদ জানাতে পারব। পাথরের বাধা দৃষ্টি থেকে সরে যেতে দেখি মানতু ডুবন্ত পাথরে বসে আছে, ঠান্ডা জলে পা ডুবিয়ে। দুহাতে জল ছিটুচ্ছে। কি বলব, কী সুন্দর দেখতে লাগছে। যেন কোন রাজকন্যা সখীর সঙ্গে নিয়ে জলখেলা করছে। গুঠিয়ে নেওয়া বসনে মুক্ত চরণ স্বচ্ছ জলে মুক্তর মতো মনে হচ্ছে। তবে সঙ্গীটি জল খেলছে না। সম্ভবত ঘষে পায়ের ময়লা তুলছে। দেখে মনে হলো সময়ের অপচয় করেন না। এতো দূরে এসেও হিসাব বরাবর রেখেছেন। নতমুখে উভয় নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত ছিল। মনে হলো আমাকে দেখতে পায়নি। আমি তৎক্ষণাৎ মুখ ঘুরিয়ে ওপরে উঠে আসতে চাইলাম। মানতু আমাকে ডাকল, ও- শিবেনদা, চলে যাচ্ছো? ওরা আমাকে ঠিক লক্ষ্য করেছে।
- তোমাদের খুঁজতে এখানে আসা। তবে এসো আমি যাই।
- কী যাই, আমাদের ছবি তুলবে না।
- বললে তুলব। আমি নিচে নেমে ওদের কাছাকাছি গেলাম। মানতুর কতরকমের ভঙ্গিমায় ছবি তুলতে হলো। মহুয়া বোনের ছবি না তোলার অর্থ একযাত্রায় পৃথক ফল, তা কি করে সম্ভব। ছবি তোলার সময় কোনপ্রকার অঙ্গভঙ্গীর অবতারণা করেননি। ছবি তুলতে হয় তাই তোলা। খুব সাদাসিদে মনের। আর মানতু ভীষণ আমুদে, হাসিখুশিতে থাকতে অভ্যস্ত।
      জোহনা জলপ্রপাতের দিক থেকে এসে বাড়ির পথে গেলাম না। বিপরীতে এগিয়ে গেলাম। সবাই খাদের পথ ধরে নিচে নামার সাহস দেখায়নি। পথের পাশে লেলিংএর ওপর বসে আনন্দ উপভোগ করছে। আমার একই গোঁ নিচে নামার। ডাক্তারবাবুকে সঙ্গে নিয়ে বাঁধে মতো সরু পাথুরে পথে এগিয়ে গেলাম। এখানে রোপওয়ে সিষ্টেমে আছে। অনেক উঠছে। এখন বুটু থাকলে ঈশানীকে আটকানো যেতো না। পথরের ওপর দিয়ে জলাধারের কাছে তো যেতে পারি। মেয়ের ওখানে যাওয়ার ইচ্ছা। এখানে দাদার নিষেধ থেকে অনেকটা দূরে আছি। ডাক্তারবাবুর কথায় ঈশানী থামবে না। বেলা ডুবতে বসেছে দুঃসাহসিকতা দেখানো ঠিক নয়। মেয়েকে বললাম যাওয়া ঠিক হবেনা। চলো ফিরে যাই। ৪:২৪শে গাড়িতে উঠলাম। গাড়ি ছুটল হোটেল নটরাজে। চলার পথে মহেন্দ্র ধনির বাড়িটি দেখে নিলাম।
      ২৭শে ডিসেম্বর। ৯:৪২শে সূচি অনুযায়ী ভ্রমণ শুরু হলো। প্রথম রাঁচির মানসিক রুগীদের হাসপাতালে। আমাদের দুটো গাড়ি গেট দিয়ে ঢুকলো তবে নামার অনুমতি ছিল না। বিশাল এরিয়া। ওখান থেকে বেরিয়ে গেলাম। ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শিবু সোরেন তাঁর বাড়ি পেরিয়ে রক গর্ডেনে ঢুকলাম। একনজরে ঘুরে নিলাম। এবার পাত্রাতু লেক (Patratu Lake Resort. Patratu) ঘুরলাম। পরিপাটি করে সাজানো। 
 
Lake Resort, Patratu -Ranchi- Jharkhand -
 
আদিবাসীর যুগলমুর্তি দেখার মতো। যেন শিল্পীর তৈরি নয়। টিকিট কেটে হাইস্পিড বোটে লেকের মধ্যবর্তী পর্যন্ত পাক দিয়ে এলাম। বিশাল এরিয়া নিয়ে এই জলাধারটি। দেখলে ভয় পাওয়া মতো বটেই। ফেরার পথে কিং রেষ্টুরেন্টে ওই পাত্রাতু লেকের থেকে ধরা মাছ আর ভাত খেয়ে নটরাজে ফিরলাম। রাতে অর্ডার দিয়ে খাসির মাংস ভাত খেয়ে সেই রাতটা হোটেলে কিটালাম।
      ২৮শে আগষ্ট। সকল ৬:৩০শে চলেছি বেতলা ন্যাশানাল পার্ক (Betla National Park) অভিমুখে। এখন গভীর জঙ্গলের মধ্যে। ট্রেন লাইনের আগে গড়ি সারবেঁধে গড়ি দাঁড়িয়ে গেল। শুনলাম মালট্রেন পার হবে। দীর্ঘ সময় নিয়ে একটি মালট্রের জুড়ি পেরিয়ে যাওয়ার পরেও দেখছি গেট খুলছে না। রাঁচির দিক থেকে আসা আরও একটি পার হলে তবেই খুলবে। ঘন জঙ্গলে হাড়হিম করা পরিবেশ। এইসব দুর্গম জঙ্গলে দুস্কৃতির আড্ডা। তারা এমন সুযোগে নিজেদের কাজে লাগায়। যাক গেট উঠে গেল, গাড়ি চলতে শুরু করেছে। নানা ভাবে পথে অনেকটা সময় হয়ে গেল। এদিন আর বেলতা ফরেস্ট  দেখা হলোনা। তেলতা ফরেস্টর বিশাল গেটের সামনে হাইওয়ে। ওই রাস্তা পেরিয়ে হোটেলে পার্ক ভিউতে ( Hotel Park View) বতর্মানে থাকার জায়গা। দুখানা বাথরুম সহ হলঘরে ( Dormitory) রানিং এগারো খানা বেডের ব্যবস্থা।আছে। আমরা পনেরোজন একে একে ঘরের মধ্যে ঢুকে গেলাম। এখানে বেশ ঠান্ডা অনুভব করছি। কাচ দুটো জানালায় ভাঙা। আপাতত কাগজ দিয়ে আটকানো হলো। অফিসে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
      পীযূষবাবু থাকবেন আর মজা হবেনা তা কি করে হয়। কার কোথায় ত্রুটি সেই নিয়ে ঘোটপাকিয়ে মজা করার উপাদন বের করেই তবে ছাড়বে। এইভাবে একঘরে থাকার এটাই সবচেয়ে আনন্দ উপভোগের মজাদার ক্ষেত্র হয়ে ওঠে। দীপ রেষ্টুরেন্টে থেকে রাতের খাবার দিয়ে গেল। খেয়েদেয়ে যেযার নিদিষ্ট জায়গায় ঘুমিয়ে পড়লাম।
      ২৯শে আগষ্ট। বেতলা ফরেস্ট সাফারি, ৭:৩০ থেকে  ৪:৩০ এই সময়ের মধ্যে দেখাশোনা করিয়ে গেটের বাইরে ছেড়ে দিল। জিমকরবেট জঙ্গলের থেকে বেশ খোলামেলা। অনেক দূর পযর্ন্ত দেখা যায়। হরিণ আমাদের কাছাকাছি ঘুরে বেড়াচ্ছে। কয়েকটি বুনো শেয়ার রাত-দিন গুলিয়ে ফেলেছিল। আমাদের প্রথম গাড়ি যেতে দেখে ছুটে পালালো। বানরের লাফালাফি বনের থেকে সদর রাস্তায় গেটের সামনে বেশি। বানরের দৌরাত্যিতে হাতে কিছু রাখার উপায় নি। তবে দিয়ে খাওয়ার অভ্যাস যাদের নেই, তাদের লুকিয় চুরিয়ে খেতে কষ্ট হয় এইযা।
       এবার  দীপ রেষ্টুরেন্ট থেকে টিফিন খেয়ে বেরিয়ে পড়লাম, সবাই নয়। ডেলটাগঞ্জের দুবিয়া খাঁড় মার্কেট এবং পরসা নদী  তার ওপর দীর্ঘ ব্রিজ দেখার মতো। বালি মাড়িয়ে নদীর জলের ধারে গিয়ে দাঁড়ালাম। পা ডুবিয়ে কিছু দূর পযর্ন্ত হাঁটলাম। স্বচ্ছ জল হাতে মুখে দিলাম। যে যার মতো ছবি তুলে ডেরায় ফিরে এলাম।
      দুপুরের খাওয়া সেরে পালামৌ ফোর্স দেখার জন্য বেরিয়ে পড়লাম। মূল রাস্তা
ছাড়িয়ে প্রত্যন্ত গ্রামের রাস্তায় চলেছি। সরু ঢালাই পথ। রাস্তার ধারেই সাধারণ মানুষের বাড়ি। ধারের ক্ষেত । সবজির বাগান। ক্ষেত খামারে মেয়ে মদ্দ কাজে ব্যস্ত। গাড়ির মধ্যে দেখতে দেখতে এগিয়ে চলেছি। বেশ ভালো লাগছিল দেহাতি গ্রাম্যচিত্র দেখতে। গ্রাম ছাড়িয়ে যাওয়ায় আর ঘরবাড়ি চোখে পড়ছে না। ঘন বনের মধ্যে ঢুকছি ক্রমশ। দুদিকের ঘন ঝাঁটি গাছ যেন ভিতরে ঢুকতে বাধা দিচ্ছে। কেন জানিনা তেমনটাই মনে হচ্ছিল।
    ফিরতি গাড়ি সামনে আসতেই কেউ কাউকে  পথ ছাড়তে পারছিল না। সরুপথ দিয়ে গুতাগুতি করে পার হয়ে গেল। আমাদের দুটো গাড়ি এক পদ্মপুকুরের কাছে দাঁড় করালো। এই পুকুরটিতে এক সময়ে রানি স্নান করত। পাহাড়ের ওপর এই ঐতিহাসিক পুকুর দেখার জন্য সুন্দর ওয়চটাওয়ার বানানো হয়েছে। আমরা অনেক চক্কর কেটে আসলাম। এবার পালামৌ ফোর্ট দেখার পালা।
      ভ্রমনার্থীরা প্রথম যেখানে এসে সবাই দাঁড়ায়। আমরা সব্বাই সেখানেই এসে দাড়ালাম। ছাদ খোলা বেশ চওড়া চওড়া প্রাচীর কয়েক মানুষ উঁচু হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আর ভেতর যাওয়া যাবে না গাছের জঙ্গল বসে গেছে। আমাদের ঘোরাফেরার মধ্যে চোখে পড়ল পাথুরে সিঁড়ি দেখে বুঝলাম উপরে ওঠা যায়। আমি,ডাক্তারবাবু,কৌশানী সিঁড়ি ভেঙে উপরে উঠলাম। তলাতেই বোঝা যায় না। প্রাচীরগুলোর মাথা বেশ চওড়া পথ। পথের ধারে এমনভাবে ঘেরা ওপর থেকে নিচে দেখা যাবেনা। নিচে থেকে কেউ আছে বোঝার উপায় নেই। সন্ধানী দৃষ্টিতে নিজেদের মতো ধারণা অনুভব করে নেমে এলাম। তবে মন চাইছিল না নামতে। আর কিছুক্ষণ থাকার ইচ্ছে ছিলো।
      এই ধংসাবশেষের বিপরীতে চলতি পথে দাঁড়ালে পাহাড়ের অতোটা উপরে বিশাল পাথুরে বাড়ি প্রায় অক্ষত। ওঠার তেমন ভালো পথ নেই। পূর্বে এখনকার মতো পাথরের টুকরো ছড়ানো ছিল, না তাও কী করে বলব। তলায় কয়েকটি সুড়ঙ্গ দেখেছি। ভিতরে খানিকটা ঢুকে বেরিয়ে আসি। সম্ভবত ওখানথেকেই ওপরে ওঠার পথ আছে বলে আমার ধারণা। যাইহোক লড়াই করে ওপরে উঠে আমরা তিনজন কী দেখলাম সেটাই বলি। সামনে অনেকটা প্রসস্ত জায়গা। সমান্তরাল দীর্ঘ প্রাচীর। দশফুট উচ্চতায়, ছয়ফুটের মতো চওড়া কপাট। দরজা নষ্ট হয়নি। গেট দিয়ে ভিতরে ঢুকলাম ছমছমে, থমথমে ভাব নিয়ে। ভেতরের ঘরগুলো দেখে গৃহস্থালির বলে মনে হলনা। আমরা প্রথমে যেখানে উঠেছিলাম হলে ওটাই রাজাবাড়ি। এখন থেকে নজরদারী করার মূল ডেরা। আমরা এখানেও পাথুরে সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠেছি। বাইরে প্রাচীর ভাবছিলাম, এতো যেন চীনের প্রাচীর। যেখান থেকে অনায়াসে পাহারা দেওেয়া যায়। আমরা দেখলাম পতাকা দেওয়ার বেদী আছে। যেখানে পতাকার দণ্ড পোতার মতো ছিদ্র করা আছে। আমরা যে সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠেছিলাম, দ্বিতীয় সিঁড়িতে নামলাম। এই পালামৌ ফোর্স পুরোপুরি পাহাড়ের শেষ প্রান্তে। আমরা যেদিক থেকে এসেছি সমতল।
আরো অনেক দেখার ছিলো সম্ভব হলোনা। সূর্য ডুবতে বসেছে।এবার ফিরত হবে গভীর জঙ্গল এলাকা ছেড়ে।

##################

শিবপ্রসাদ পুরকায়স্থ
ডাক- লক্ষ্মীকান্তপুর জেলা- দক্ষিণ ২৪পরগনা। পশ্চিমবঙ্গ, ভারত পিন-৭৪৩৩৪৫


 

Comments

বিধিবদ্ধ স্বীকার্য :

লেখার বক্তব্যের দায়িত্ব লেখকের, পত্রিকার নয়। আমরা বহু মতের প্রকাশক মাত্র।

মতামত/লেখা এখানে জমা দিন

Name

Email *

Message *

সাম্প্রতিক বাছাই

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯৩তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩২ নভেম্বর ২০২৫

সূচিপত্র বস্তু, চেতনা এবং কবি ।। সজল চক্রবর্তী দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত ।। রণেশ রায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট ও সন্নিহিত অঞ্চলের কথ্য শব্দ ।। অরবিন্দ পুরকাইত চাঁদে জীবন ।। শমীক সমাদ্দার অসমাপ্তি ।। মহুয়া হুই গ্যালাক্সির শব্দে ।। জাসমিনা খাতুন তিনটি কবিতা ।। দিবাকর সেন অপূর্ণতার শেষ অধ্যায় ।। সুপ্রিয় সাহা হাফ ডজন ছড়া ।। স্বপনকুমার পাহাড়ী স্বাপ্নিক অমলের ঘুৃম ।। সঞ্জয় দেওয়ান দুটি কবিতা ।। সৌমিত্র উপাধ্যায় পথ চলতি ✍️পার্থ প্রতিম দাস হেমন্তের বিষাদ ছুঁয়ে ।। শক্তিপদ পাঠক রাই আর বাবা ।। অদিতি চ্যাটার্জি স্থিতিশীল ।। রঞ্জিত মুখোপাধ্যায় হৃদয়ের শূন্য কোড ।। লিপিকা পিঙ্কি দে অমানিশা ।। সৌভিক মুখার্জী দৃষ্টিগত ।। শামীম নওরোজ জ্যান্ত ভূতের গপ্পো ।। পার্থ সারথি চট্টোপাধ্যায় ধুতরা ফুলের ঘ্রাণ ।। মজনু মিয়া তারা খসার আলোয় ।। তীর্থঙ্কর সুমিত উত্তরণে অন্তরায় ।। সমীর কুমার দত্ত প্রেম মুদ্রা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ধারা ।। লালন চাঁদ অন্যের ব্যথায় ব্যথি ।। জগদীশ মণ্ডল গর্ভ ।। শাশ্বত বোস ভ্রমণ বিষয়ক স্মৃতিকথা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত শাপে বর ।। সাইফুল ইসলাম রবিবার ।। সঙ্ঘমিত্রা দাস দুটি ...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬

  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠালে  অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে হলে ভালো। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # ...

রেজাল্ট ।। সৈকত মাজী

রেজাল্ট সৈকত মাজী শুভ্রাংশু বিছানতে শুয়ে শুয়ে বিরক্ত হয়ে উঠল। মনে মনে নিজের শরীরটাকে আচ্ছা করে শুনিয়ে দিলো দু- চারটে কথা, দেবে নাই বা কেন, কয়দিন ধরে এতো কাঠ খড় পুড়িয়ে সব বন্ধুরা মিলে রথটা বানালো, কত কি প্ল্যান করলো, আর এই শরীরটার জন্যই তো সব ভেস্তে গেলো। মনে মনে ভাবলো একটা যা হোক শরীর হয়েছে ওর প্রতি মাসে তিন - চার বার করে জ্বর হচ্ছেই। হবি তো হ আর একটা দিন পরে হলে কি এমন ক্ষতি হতো, এই রথের দিনেই হতে হলো। ওর বিরক্তিটা বেড়ে গেলো আরো কয়েক ঘর।    " মা ও মা...মাআআআআ...." জোরে হাঁক  দিলো শুভ্রাংশু।    " কি হয়েছে বাবু? আবার জ্বরটা বেড়েছে? মাথা ব্যথা করছে?" ব্যস্ত হয়ে উঠলেন মালতিদেবী।     " ওসব কিছু নয়, ও মা বলছি এখন তো খুব কম জ্বর আছে যাই না মা একবার বাইরে, সবাই কতো ফুর্তি করছে বলো"  কাতর ভাবে বলল শুভ্রাংশু।      " না বাবু, এখনই আমরা ডাক্তারের কাছে যাব, বাবা তৈরী হয়ে গেছেন, আমরা বিকেলে তখন মেলা দেখতে যাব কেমন, এখন উঠে জামা কাপড় পরে নাও"  মালতিদেবী জামা কাপড় গুলো এগিয়ে দিলেন।      শুভ্রাংশু...

রাই আর বাবা ।। অদিতি চ্যাটার্জি

রাই আর বাবা অদিতি চ্যাটার্জি রাই-র জীবনে বেশ কিছু ভালো লাগা আছে তার মধ্যে একটা হলো সন্ধ্যার সময় তিন তলার বারান্দায় দাঁড়িয়ে রাস্তা দেখতে দেখতে কফি কাপে চুমুক দেওয়া ।" আজ যশোদা মিষ্টান্ন ভান্ডারের সামনে বেশ ভিড়,নির্ঘাত 'তেলে ভাজা ' প্রেমীরা।" আপন মনেই ভাবে ও, কিন্তু বসার ঘরে সুমন আর আঁখি এতো জোরে 'হল্লা গোল্লা ' করছে তালতলার জমজমাট রাস্তার দিকে আর মন দিতে পারছে না রাই।  পায়ে পায়ে ঘরে এসে দাঁড়ায় রাই, দেখে ক্লাস ফোরের মেয়ে এতোটা ঝগড়া করছে সুমনের সাথে , "বাপ রে, কবে এতোটা কথা শিখলো মেয়ে! কিভাবে কথা বলছে?? কোঁকড়া চুল ঝাঁঝিয়ে,গোলগাল হাত নেড়ে " ...মেয়ে কে দেখে থতমত খেয়ে যায় রাই। এদিকে আঁখি বলছে, "ধুত্ বাপী তুমি কিচ্ছু পারো না, তুতাই-র বাবা, পিসাই, মামু সবাই কত ভালো করে খেলতে পারে , না আমি তোমার সাথে খেলবো না।" কাতর চোখে মেয়ের দিকে একবার তাকিয়ে সুমন বলে ,"আচ্ছা তুই আমাকে শেখা, দ্যাখ আমি কার জন্য আলিপুরদুয়ার থেকে পনেরো দিন পর পর কলকাতায় আসি বল!"  ঐ টুকু মেয়ে কথা প্রায় না শুনেই ঘরে চলে গেল রাই-র চোখের সামনে, সুমন একবার হেসে বাথরুমের দিকে এগো...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯২তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩২ অক্টোবর ২০২৫

—: সম্পাদকীয় দপ্তর থেকে :— এই সংখ্যার জন্য লেখা এসেছিল প্রায় ১৮০টা। কিন্তু গুণগত মানে দুর্বল লেখার সংখ্যা বহু। আমরা নবপ্রভাতে নতুনদের কথা ভেবে বেশ কিছু দুর্বল লেখাও রাখি। কিন্তু সবসময় একই লোকের দুর্বল লেখা প্রকাশ করা অনুচিত বলে মনে করি। শেষ পর্যন্ত ৯৯ জনের লেখা রাখা গেল। যাদের লেখা প্রকাশিত হল না, তারা লেখাগুলি অন্য যেখানে খুশি পাঠাতে পারেন। বিশেষ কারণে এই সংখ্যার মুদ্রিত সংস্করণ প্রকাশিত হচ্ছে না। আমরা দুঃখিত। তবে মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি শীঘ্রই আসছে। সঙ্গে থাকুন। সকলকে উৎসবমুখর বর্ণময় শুভেচ্ছাসহ— —নিরাশাহরণ নস্কর, সম্পাদক, নবপ্রভাত। অনুরোধ : প্রকাশিত লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন, ছবি/স্ক্রীনশট নয়।  == সূচিপত্র == পড়া-লেখার ইতিহাস অনুসন্ধান।। তপন তরফদার উৎসব : মানুষের চিরন্তন আত্মপ্রকাশ।। কৃশানু ব্যানার্জি বাংলা : সভ্যতা ও সংস্কৃতির জন্মভূমি।। শ্যামল হুদাতী সমুদ্র আর অস্তিত্ব ।। সুব্রত চৌধুরী রাজা ছিলেন জুবিন গর্গ ।। গঙ্গা 'অনু'   আদ্যাশক্তি মহামায়ার বাংলা বারো মাসের বারো রূপ ।। অর্হণ জানা মেধাদাদুর আসর ।। রণেশ রায় বৈজ্ঞানিক মা...

বস্তু, চেতনা এবং কবি ।। সজল চক্রবর্তী

বস্তু, চেতনা এবং  কবি সজল চক্রবর্তী  "যেখানে পৌঁছায় না রবি,, সেখানে পৌঁছে যান কবি।" এই ছোট্ট কবিতা টি অনেক পুরনো  এবং বহু পরিচিত, তথাপি এর তাৎপর্য এখনো হারায় নি। তবে, কথা হ'চ্ছে -আমরা তো  রবি-কবিকে একত্রেই পেয়ে যাই আমাদের ঋষি-প্রতিম কবি রবীন্দ্রনাথের মধ্যে। আর তখনই জেনে যাই উপরোক্ত ছোট কবিতার প্রণিধানযোগ্যতা ।  ... এবার শুনে নেয়া যাক, ঋষি-প্রতিম কবির মুখ নিঃসৃত বাণী:- "তোমার অসীমে প্রাণমন লয়ে যত দূরে আমি যাই ...." অর্থাৎ আমাদের প্রিয়তম কবি অনায়াসে পৌঁছে যান সৃষ্টির অসীমে , যা আমাদের পক্ষে আদৌ সম্ভব নয়। এখানে কবির চেতনা সুদূর প্রসারী! ... প্রকৃত প্রস্তাবে কবি অতিন্দ্রীয় জগতের এক নাগরিক। তাঁর কাছে তাই চেতনা বা চৈতন্যেরই প্রাধান্য। ...এখন আসছি, বস্তু এবং চেতনার মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে।  ... আমি একজন অতি সাধারন মানুষ, তাই এই ব্যাপারটাকে কবিদের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার চেষ্টা ক'রছি। তবে আমার সামান্য জ্ঞান থেকে একটা সাধারণ কথা সেরে নি'। আমরা সাধারণত ব'লে থাকি-- সূর্য পূর্বদিকে ওঠে। প্রকৃত অর্থে কি তাই ? আসলে সূর্য যেদিকে ওঠে ,আমরা  সেই দিকটাকে নামাঙ্কিত ক...

দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট ও সন্নিহিত অঞ্চলের কথ্য শব্দ, উচ্চারণ, বাগ্্ধারা ইত্যাদি ।। অরবিন্দ পুরকাইত

স্থানীয় কিছু কথ্যশব্দ, উচ্চারণ, বাগধারা ইত্যাদি  (পর্ব—সাত) অরবিন্দ পুরকাইত স্থানীয় কিছু কথ্যশব্দ, উচ্চারণ, বাগ্্ধারা ইত্যাদির সংগ্রহ প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল রামচন্দ্র নস্কর সম্পাদিত 'চর্যা' পত্রিকায়, ২০১৬ সালে। সে সংগ্রহ যায় নিজের 'গাঁ-ঘরের কথা' পুস্তকে, ১৪২৩ সনে। পরে এই ব্লগজিনেও কিছু সংগ্রহ প্রকাশিত হয় ১৪২৮ সনের আশ্বিন মাসে, পৌষ ১৪২৯-এ, আষাঢ় ১৪৩০, নববর্ষ ১৪৩১ ও কার্তিক ১৪৩১ সংখ্যায়। তার পরেও ধীরে ধীরে আরও কিছু সংগৃহীত হয়েছে, সেগুলিই এখানে রাখা হল। নিজের আগের সংগ্রহে এসে-যাওয়া শব্দ যদি এখানে এসে থাকে, তা বাড়তি বা ভিন্ন কিছু বলার প্রয়োজনেই। নিজের আগের সংগ্রহ খুব ভাল করে যে মিলিয়েছি তা নয়, পুরো সংগ্রহ একত্র করার সময় তা করা যাবে যতটা সম্ভব নিখুঁত করে। আগে আগে সংগ্রহ প্রসঙ্গে কিছু কথা বলা হয়েছে, বিশেষত প্রথম প্রকাশের সময় একটু বিশদভাবে। এখানে আর কিছু বলা নয়, কেবল সংগ্রহটাই তুলে ধরা গেল। অখেজো/অখেজে — অকেজো থেকে। আদরের তিরস্কার হিসাবেই মূলত প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। পাজি। অচিমিতি — (উচ্চারণ ওচিমিতি) আচমকা, হঠাৎ। অদীয় — প্রচুর, অজস্র। অদ্বিতীয় থেকে ক...

কবিতা ।। অরণ্যকন্যা ।। অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়

  অরণ্যকন্যা অরিন্দম চট্টোপাধ্যায় অরণ্যকন্যার দৃষ্টির ভেতর বিষাদ বিন্দু ফোঁটা ফোঁটা জলের মতো গড়িয়ে যায়, হয়ে যায় কোন নদীপথ দৃষ্টি ভেঙে ভেঙে চলে যায় কোন এক শূন্য পথে অরণ্যকন্যার হৃদয়ের ভেতর ভাঙে যতো বৃক্ষপত্র নতুন পত্র পুষ্পের খোঁজ নেই ঠোঁট জুড়ে সমুদ্রকাঁপন বুদবুদের মতো অস্ফুট হয়ে উচ্চারিত হয় কোন অক্ষর শব্দ আর তাঁর শরীর থেকে ছড়িয়ে যায় হয়ে যায় একটা অদৃশ্য কবিতা...    ================== @ অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়,  বেহালা, কলকাতা -৭০০০৬০,  

দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত ।। রণেশ রায়

দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত রণেশ রায় ভূমিকা দর্শনের ইতিহাসে বস্তু ও চেতনার সম্পর্ক মানবচিন্তার গভীরতম প্রশ্ন। অধিবিদ্যা ভাবকে মুখ্য ধরে, বস্তুকে গৌণ বলে মনে করে। বিপরীতে মার্কস ও এঙ্গেলস বলেছেন—বস্তুই মুখ্য এবং চেতনা তার প্রতিবিম্ব। মানুষ যখন প্রথম আলোর মুখ দেখেছিল, তখনই সে বিস্ময়ে প্রশ্ন করেছিল—আমি কে, কোথা থেকে এলাম, আর এই দৃশ্যমান জগতের বাইরে কিছু আছে কি? এই প্রশ্ন থেকেই জন্ম নিয়েছিল দর্শনের দুই বিপরীত স্রোত—ভাববাদ আর বস্তুবাদ। ভাববাদ বলেছিল—"ভাবই প্রথম," আর মার্কস বললেন—"না, বস্তুই প্রথম।" এই দুই প্রান্তের মাঝখানে আমি দেখি এক সেতুবন্ধন, যেখানে বস্তু, স্নায়ু ও চেতনা একে অপরকে গড়ে তোলে, আর তাদের এই ত্রিত্বের নৃত্যেই সৃষ্টি হয় জীবন ও কল্পনার জগৎ। ভাবববাদ এক সর্বশক্তিমান শক্তির কল্পনা করে যা এই বস্তুজগতের স্রষ্টা। আর এখান থেকে ধর্ম ও ধর্মীয় ভাবধারার সৃষ্টি। আমার এই প্রবন্ধে আমি মার্কসীয় দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদকে আধুনিক বৈজ্ঞানিক আলোকে বোঝার চেষ্টা করেছি। আমি দেখাবার চেষ্টা করবো কিভাবে ইন্দ্রিয় এবং স্নায়ুজগৎ বস্তু ও চেতনাকে সংযুক্ত করে এবং কল্পলোকের জন্ম দেয়...

চাঁদে জীবন ।। শমীক সমাদ্দার

চাঁদে জীবন  শমীক সমাদ্দার                           চন্দ্রযান দুরন্ত তৈরি, রকেটের উপর ভর করে চন্দ্রযান চাঁদে অবতরণ করবে। মাধ্যাকর্ষণ শক্তি পেরিয়ে মহাকাশযান চাঁদের কক্ষপথে  স্থাপন করা হয়েছে। চন্দ্রাযান চাঁদের মাটিতে পা রাখবে সময়ের কাউন্ট ডাউন চলছে। সমস্ত নিয়ন্ত্রণ স্পেসস্কাই গাবেষণা কেন্দ্র কতৃক নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে প্রযুক্তি বিজ্ঞান অতল গভীরতায় বাসা বাঁধে। পরিচয়টা দিয়ে দিলাম এই স্পেসসিপে রয়েছে তিনজন নভোচর, একজনের নাম সাইমন আর এক জনের নাম রেমন্ড, আর এদের সঙ্গে একজন মহিলা আছে তার নাম মেরিনা। চন্দ্রযান চন্দ্রপৃষ্ঠে সফলভাবে অবতরণ করেছে। চন্দযান দুরন্ত চাঁদের পূর্ব -পশ্চিম অক্ষরেখা বরাবর অবতরণ করেছে। আলো আঁধারের গভীরতায় বড় বড় পাথরের পিণ্ড, চাঁদের সার্ফেসের উপরে পাথর জল দেখা যায়। জমাট বাঁধা অক্সিজেন আর কার্বনডাই অক্সাইড। ওরা এখানে এসেছে এক রহস্য উদ্ঘাটন করতে। যে স্থানে ওরা অবতরণ করেছে সেখানে ১০ বছর আগে ওরা এসেছিলো। রুশ সরকার ওদের দেশের ছাত্র ছাত্রী কে মহাকাশে চাঁদে পাঠাতে চায়। ওরা কেন এসেছে সেটা এখনো অধরা। সাইমনের বর্...

জনপ্রিয় লেখা

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ -- "ত্রয়ী কাব্য" ------------------------------------------------------------------------------ সুনন্দ মন্ডল নবীনচন্দ্র সেন সাহিত্যে তথা বাংলা কবিতার জগতে এক অবিস্মরণীয় নাম। তিনি চট্টগ্রাম জেলার নওয়াপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ১৮৪৭ সালে তাঁর জন্ম এবং মত্যু ১৯০৯ সালে। বঙ্কিমচন্দ্র তাঁকে 'বাংলার বায়রন' বলেছেন। ‎জীবৎকালীন যুগে আত্মপ্রত্যয়ের মধ্যে জাতীয় চরিত্র আত্মস্থ করে নতুন সংস্কারে প্রয়াসী হয়ে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখেছেন।মধুসূদন-হেমচন্দ্র-নবীনচন্দ্র--এই তিন কবি বাংলা কাব্যধারায় প্রাণ সঞ্চার করেছিলেন। বিশেষত মহাকাব্য লেখার দুঃসাহস দেখিয়েছিলেন। এদিক থেকে মধুসূদন দত্ত একজন সফল মহাকাব্যিক। তাঁর 'মেঘনাদ বধ' কাব্যের মত গভীর ও ব্যঞ্জনাময় না হলেও নবীনচন্দ্র সেনের 'ত্রয়ী' কাব্য বিশেষ মর্যাদা দাবি করতেই পারে। তাছাড়া 'ত্রয়ী' কাব্যে ধর্মীয় ভাবধারার আবেগ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ‎ ‎নবীনচন্দ্র সেন বহু কাব্য লিখেছেন। যেমন- 'অবকাশরঞ্জিনী','পলাশীর যুদ্ধ', 'ক্লিওপেট্রা', 'রঙ্গমতী', 'খ্রীষ্ট', ...

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা শ্রীজিৎ জানা "সময় চলিয়া যায় নদীর স্রোতের প্রায়"। স্রোতের ধারা তার দু'প্রান্তে রেখে যায় ভাঙাগড়ার চিহ্ন। কালের দৃশ্যপটেও পরিবর্তনের ছবি অনিবার্যভাবেই চোখে পড়ে। সমাজ সময়ের ছাঁচে নিজেকে গড়ে নেয় প্রতিনিয়ত।  সেখানে মনে নেওয়ায় বাধা থাকলেও,মেনে নেওয়ার গাজোয়ারি চলে না। ফলত কাল বদলের গাণিতিক হিসেবে জীবন ও জীবিকার যে রদবদল,তাকেই বোধকরি সংগ্রাম বলা যায়। জীবন সংগ্রাম অথবা টিকে থাকার সংগ্রাম।  মানুষের জীবনযাপনের ক্ষেত্রে আজকে যা অত্যাবশ্যকীয় কাল তার বিকল্প রূপ পেতে পারে অথবা তা অনাবশ্যক হওয়াও স্বাভাবিক। সেক্ষেত্রে উক্ত বিষয়টির পরিষেবা দানকারী মানুষদের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হওয়া অস্বাভাবিক নয়। এক কালে গাঁয়ে কত ধরনের পেশার মানুষদের চোখে পোড়তো। কোন পেশা ছিল সম্বৎসরের,আবার কোন পেশা এককালীন।  সব পেশার লোকেরাই কত নিষ্ঠা ভরে গাঁয়ে  তাদের পরিষেবা দিত। বিনিময়ে সামান্য আয় হত তাদের। আর সেই আয়টুকুই ছিল  তাদের সংসার নির্বাহের একমাত্র উপায়। কালে কালান্তরে সেই সব পেশা,সেই সব সমাজবন্ধুরা হারিয়ে গ্যাছে। শুধুমাত্র তারা বেঁচে আছে অগ্রজের গল্পকথায়,আর বিভিন...

গ্রন্থ আলোচনা: শর্মিষ্ঠা দেবনাথ

প্রতিবাদ যখন অগ্নিবাণী বাংলাদেশে নারীমুক্তি ও নারী আন্দোলনের পুরোধা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ১৯৯তম জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদিত হল " আসিফা এবং.." কাব্য সংকলনটির মধ্যদিয়ে।সংকলনটির বিশেষত্ব হল,এটি উৎসর্গ করা হয়েছে নারীর সম্মান রক্ষার আন্দোলনের যোগ্যতম ব্যক্তি শহীদ শিক্ষক বরুন বিশ্বাসকে। সংকলক প্রকাশক সন্দীপ সাহু নিজে এবং বিশিষ্ট কবি সাহিত্যিকদের দিয়ে লিখিয়ে নিয়েছেন এমন কিছু কবিতা, যা শুধুমাত্র শব্দ ও ছন্দের অনুবন্ধ নয়, এক একটি অগ্নিবাণী।আসলে জীবনকে দেখার স্বাতন্ত্র‍্যে কবিরা সব সময়ই অগ্রগণ্য এবং অনন্য।যুগ ও জীবন দ্বন্দ্বের কণ্ঠস্বরকে আশ্রয় করে,একদিকে মনের প্রবল দাহ ও অন্যদিকে  নির্যাতিতা শিশুকন্যা ও নারীর প্রতি মনের গভীর আকুলতা থেকে প্রকাশ পেয়েছে "আসিফা এবং" এর  কবিতাগুলি।এক অন্ধকার সময়ের মুখোমুখি আমরা,সেই অন্ধকার আমাদের নিয়ে এসেছে সামাজিক অবক্ষয়ের শেষধাপে যেখানে নৈতিকতা,পাপবোধ,গ্লানিকে সরিয়ে রেখে, সমাজের বানানো নিয়মকে তোয়াক্কা না করে,অনায়াস দক্ষতায় ও ক্ষিপ্রতায় নিজেরই ধর্মচেতনাকে জলাঞ্জলি দিয়ে কিছু মানুষ তার পশুত্বের পরিচয় দিয়েছে ধর্ষণ ও ন...

শ্যামাপদ মালাকারের কবিতা

চোখ """"""" নদী, অরণ্য, রাতের ফালি চাঁদ- সবেই তো আমার...স্বর্ণপিঁড়িটাও!। সেদিন, শুকতারাটার গা' মাপতে গিয়ে মনে হল, --ওরা আমার চেয়েও সুখী? দেখিনা একবার গাইতি-শাবল চালিয়ে... চালালাম। জল-মাটি ভেজা একটা 'চোখ' কুড়িয়ে ফিরলাম! সেই চোখদিয়ে দেখি-- শেষ বিকেলের নিরন্ন আঁচে ঝলসানো বুকে নীড়ে ফিরছে ধূলিমাখা কত কাল পা, কি শান্তি - কি তৃষ্ণা! পাতাক্ষোয়া কোদালেরর মাথায় ঝরেপড়া ললাটের ঘামে, কারা যেন জীবন শাণ দেয়! রুক্ষঠোঁটের আবরণে এক সময় নেমে আসে শিশিরস্নাত কালনিশি-- মাঝের ব্যবধান মুছে দেয় প্রতিশ্রুতির ভীড়- - পূর্বজনমের নিদর্শনচুম্বন শেষে হেরে যায় কার মমতাজ-- ম্লান হয়ে যায় কত পিঁড়ি! ... ম্লান হয়ে যায় কত পিঁড়ি! ... ম্লা...

কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা: এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায় ।। পার্থ সারথি চক্রবর্তী

  কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা : এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায়  পার্থ সারথি চক্রবর্তী  কথায় বলে বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। রাজার শহর কোচবিহারের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা আরো অনেক বেশি। দুর্গাপূজা আর দীপাবলির মতো দু'দুটো বিরাট মাপের উৎসবের রেশ কাটতে না কাটতেই, এ শহর ভাসে রাস উৎসবের উন্মাদনায়। মদনমোহন ঠাকুর কোচবিহারের প্রাণের ঠাকুর। তাঁকে নিয়ে সবার আবেগ আর শ্রদ্ধা ও ভালবাসা এখানে বাঁধনছাড়া। এক অপূর্ব মিলনোৎসবের চেহারা নেওয়া এই উৎসব ঐতিহ্যবাহী ও ঐতিহাসিক। জন, মত, সম্প্রদায়ের উর্ধে এই উৎসবের গ্রহণযোগ্যতা। সময়ের কষ্টি পাথরে পরীক্ষিত! এক প্রাণের উৎসব, যা বহুদিন ধরেই গোটা উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ উৎসবে পর্যবসিত।কোচবিহারের এই রাস উৎসবকে কেন্দ্র করে যে মেলা হয় তাও সময়ের হাত ধরে অনেক বদলে গেছে। এসেছে আধুনিকতার ছোঁয়া! শৈশবে বাবার হাত ধরে যে মেলা দেখেছি তা চরিত্র ও আকৃতি দু'দিক থেকেই বদলে গেছে। গত পঁচিশ বছর ধরে খুব কাছে থেকে এই উৎসব ও মেলা দেখা, অনুভব করার সুযোগ হয়েছে। যা দিনদিন অভিজ্ঞতা ও প্রাপ্তির ঝুলিকে সমৃদ্ধ করে গেছে প্রতি ক্ষেত্রেই।  খুব সংক্ষেপে এই উৎসবের ইতিহাস না জানাটা কিন্তু অবিচারই ...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো,  তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) য...

মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা 2024 সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি (লেখক ও সম্পাদকীয় দপ্তরের কথোপকথন আকারে) --কী পত্রিকা? --নবপ্রভাত। --মুদ্রিত না অনলাইন? --মুদ্রিত। --কোন সংখ্যা হবে এটা? --বইমেলা 2024। --কোন কোন ধরনের লেখা থাকবে? --প্রবন্ধ-নিবন্ধ, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া। --বিশেষ কোন বিষয় আছে? --না। যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে। --শব্দ বা লাইন সংখ্যার কোন বাঁধন আছে? --না। নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো (যেমন, কবিতা 12-14 লাইনের মধ্যে, অণুগল্প কমবেশি 200/250শব্দে)। তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়। --ক'টি লেখা পাঠাতে হবে? --মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। --ফেসবুক বা অন্য কোন প্লাটফর্মে প্রকাশিত লেখা কি পাঠানো যাবে? --না। সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। --পত্রিকা কোন সময়ে প্রকাশিত হবে? --জানুয়ারি 2024-এর দ্বিতীয় সপ্তাহে। --লেখা পাঠানোর শেষতারিখ কত? -- 17 ডিসেম্বর 2023। --কীভাবে পাঠাতে হবে? --মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। --লেখার সঙ্গে কী কী দিতে হবে? --নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) --বিশেষ সতর্কতা কিছু ? --১)মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন '...

উৎসবের সৌন্দর্য: সেকালে ও একালে।। সৌরভ পুরকাইত

  উৎসবের সৌন্দর্য:  সেকালে ও একালে   সৌরভ পুরকাইত বাংলার উৎসব বাংলার প্রাণ। প্রতিদিনের জীবনযাপনের মধ্যে যখন মন ক্লান্ত হয়ে পড়ে তখন তাকে বেঁচে থাকার রসদ যোগায় এই উৎসব। কথায় বলে 'বারো মাসে তেরো পার্বণ'।মন আনন্দই চায়।তাই তাকে সজীবতা দিতে,পরিবারের,সমাজের ভালো-মন্দের কথা মাথায় রেখে মানুষ নিজেই সৃষ্টি করে নিয়েছে নানাবিধ উৎসবগুলিকে। একেবারে প্রাচীন কাল থেকে আজ পর্যন্ত মানুষ কখনোই উৎসব বিমুখ ছিল না।উৎসবই তাকে ঘর থেকে বাইরে টেনে এনেছে,চিনতে শিখিয়েছে আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার আনন্দকে। উৎসব আসলে প্রাণের সাথে প্রাণের যোগ, হৃদয়ের সাথে হৃদয়ের যোগ।রবীন্দ্রনাথ বলেছেন 'সত্য যেখানেই সুন্দর হয়ে প্রকাশ পায় সেইখানেই উৎসব'।হৃদয়ের সেই সুকোমল বৃত্তির জাগরণ যেন ফুটে ওঠা ফুলেরই মতো সত্য ও সুন্দর।এই জাগরণই উৎসব। তাই নানা কিছুর মধ্য দিয়ে,নানা উপলক্ষ্যে এই উৎসব প্রকাশ পায়। প্রাচীনকালে মানুষের হাতে না ছিল পসার, না ছিল পসরা।ছিল মনের আন্তরিকতা,মানুষকে কাছে টেনে নেবার ক্ষমতা।সেটাই ছিল উৎসবের সৌন্দর্য। তাই সেদিনের উৎসবে ক্ষুদ্র,তুচ্ছ উপকরণও প্রাণের উচ্ছ্বাসে মহৎ হয়ে উঠত।সেকালের উৎসবে লোক দেখানো ব্যাপার কিছু ...

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

বসন্তের কোকিল তুমি   বিচিত্র কুমার                      (০১) তোমার দু-আঁখির গহীন অরণ্যে একটা স্বপ্নের বহমান নদী রয়েছে, তারই রেশ ধরে আমি হেঁটে চলি অজানা বসন্তের পথে নীর উদ্দেশ্যে। সে চলার কোন শেষ সীমা নেই তাই আমার বিষণ্ণ একতারা সন্ন্যাস খুঁজে ফিরে , কবে তুমি বুঝবে অনুশ্রী মনের পর্দা খুলে একুশ বসন্ত তোমার রঙ ছিটিয়ে যাচ্ছে অচিনপুরে। এদিকে আমার দেহের প্রতিটি শিরা ধমনীতে প্রবাহিত হচ্ছে তোমার ভালোবাসার একটু উষ্ণতা পাবার জন্যে, শুধু অনুভবে তাণ্ডব উচ্ছাসিত হচ্ছে--- যেদিকে তাকাই --- ফুলে ফুলে ভ্রমর গুনগুনিয়ে উড়ে উড়ে পরে বসন্তের কোকিল গান গায় নব বসন্তে, তোমার দুই চোখে আমার একই ছায়া রয়ে যায় উতলা ভালোবাসার সীমান্তে।                 (০২)        এক রক্তাক্ত বসন্তের স্মৃতি কোন এক উতলা বসন্তের সকালে পুষ্পবনে ফুটেছিল একটি টকটকে লাল গোলাপ, তার সাথে হয়েছিলো দেখা প্রথম ফাগুনে হয়েছিল দুজনার এ জীবনের আলাপ।  তারপর প্র...

অনুভবে, অনুধ্যানে অনালোকিত কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী ।। সুপ্রিয় গঙ্গোপাধ্যায়

"এ কালে একটু লেখাপড়া জানা থাকাতে, এবং বঙ্গভাষায় অনেক গুলি পাঠ্য পুস্তক হওয়াতে কেবল পরনিন্দা করিয়া সময় কাটাইতে তাঁহাদের আবশ্যকও হয় না, প্রবৃত্তিও হয় না। …নিতান্ত সখ্যতা বা আত্মীয়তা না থাকিলে, সকল পেটের কথা খুলিয়া নিঃশ্বাস ছাড়িয়া তৃপ্তিলাভ করা, এ কালের মেয়েরা পছন্দ করেন না। তাঁহারা বইখানি, কার্পেটটুকু, নিজের স্বামী পুত্র লইয়া দিন যাপন করিতে বা একেলা থাকিতে কষ্ট বোধ করেন না।" —শরৎকুমারী চৌধুরাণীর এই লেখা (ভারতী ও বালক/ আশ্বিন কার্তিক, মাঘ/ ১২৯৮) দেখে বুঝতে অসুবিধা হয় না উনিশ শতকে নারীর লেখাপড়া শেখার উদ্দেশ্য ছিল মূলত আত্মমুক্তির জন্য। শুধু লেখাপড়া শেখা নয়, সাহিত্য সৃষ্টিতেও ছয়'এর দশক (উনিশ শতকের) থেকে নারীরা যে ধারা সূত্রপাত করেছিল তা নারীর আত্মমুক্তির পথকেই প্রসারিত করেছিল। ছয়'এর দশকের পূর্বেই ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে প্রথম ছাপার হরফে নারী রচিত কাব্য 'চিত্তবিলাসিনী' প্রকাশিত হয়। লেখেন কৃষ্ণকামিনী দাসী। ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে কবি ঠাকুরাণী দাসীর নাম উঠে আসতে থাকে, যিনি কবিতার পাশাপাশি গদ্যও লিখতেন। ঠিক সেই বছরই জন্মগ্রহণ করেন কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী, যাঁর কবিতা লেখা আত্মমুক্...

বছরের বাছাই

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৪তম সংখ্যা ।। ফাল্গুন ১৪৩১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

  এই সংখ্যায় একটি গ্রন্থ আলোচনা ও একটি ধারাবাহিক রচনা ছাড়া সব লেখাই ভাষা দিবস, মাতৃভাষা, ভাষাচেতনা ও ভাষা সমস্যা বিষয়ক রচনা। লেখাগুলি এই সংখ্যাকে অনেকটাই সমৃদ্ধ করেছে। পড়ুন। শেয়ার করুন। মতামত জানান। লেখকগণ নিজের নিজের লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন যতখুশি, যে মাধ্যমে খুশি। কিন্তু স্ক্রিনশট শেয়ার নৈব নৈব চ!  অন্য বিষয়ের লেখাগুলি আগামী সংখ্যার জন্য রইল।  সকলকে ধন্যবাদ, অভিনন্দন। ভালো থাকুন।   --সম্পাদক, নবপ্রভাত। ==  সূ  চি  প  ত্র  == প্রবন্ধ-নিবন্ধ অমর ২১শে ফেব্রুয়ারি বাঙ্গালীর বাংলা ভাষা দুর্জয় দিবস।। বটু কৃষ্ণ হালদার ভাষা শহীদদের পঁচাত্তর বছর।। অনিন্দ্য পাল একুশে ফেব্রুয়ারি : বাঙালির শ্রেষ্ঠ অশ্রুবিন্দু।। জীবনকুমার সরকার কবিগানের সাহিত্যিক ও সমাজতাত্ত্বিক মূল্য।। বারিদ বরন গুপ্ত বিপন্ন মাতৃভাষা ও সংস্কৃতি।। শ্যামল হুদাতী মায়ের দুধ আর মাতৃভাষা।। প্রদীপ কুমার দে একুশে ফেব্রুয়ারি : কিছু কথা।। বনশ্রী গোপ বাংলায় কথা বাংলায় কাজ।। চন্দন দাশগুপ্ত বিপন্ন মাতৃভাষা ও তার মুক্তির পথ।। মিঠুন মুখার্জী. হে অমর একুশে, তোমায় ভুলিনি, ভুলব না।। মহম্মদ মফিজুল ইসলা...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৭তম সংখ্যা ।। জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ মে ২০২৫

  প্রচ্ছদ চিত্র: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সূচিপত্র রবীন্দ্রনাথ এবং কয়েকজন নারী ।। অনিন্দ্য পাল পরাবাস্তববাদ ও বাংলায় জীবনানন্দের কাব্যচর্চা ।। রণেশ রায় প্রতীক্ষা ।। চন্দন দাশগুপ্ত আশ্রয় ।। সায়নী সাহা বয়স্ক শিক্ষাকেন্দ্র ।। দেবাংশু সরকার প্রণামের প্রভু ।। সুপ্রভাত মেট্যা দুর্ভাগ্যের সম্মুখ সমরে ।। সমীর কুমার দত্ত আচমকা শরৎ ।। অর্ণব সামন্ত প্রতিধ্বনি ✍️ সুবীর কুমার ঘোষ জীবন যেখানে যেমন ।। আরজু মুন জারিন বছর সীমান্তে হিসেব নিকেশ ।। রানা জামান চারটি কবিতা ।। বিবেকানন্দ নস্কর আমরা আছি ।। লালন চাঁদ চাওয়া ।। মাথুর দাস কাগজ ফুলে ।। সফিউল মল্লিক সময়ের স্রোত ।। দুর্গাদাস মিদ্যা তুমি মানুষ ।। বদরুল বোরহান দিঘার সমুদ্র ।। মাখনলাল প্রধান পুস্তক-আলোচনা ।। অরবিন্দ পুরকাইত সংযম ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত  চেনা প্রতিবেশী (প্রথম পর্ব) ।। দীপক পাল খেলার মাঠ ।। তূয়া নূর বন্ধু শ্যামলকান্তি ।। শংকর ব্রহ্ম তুমি তোমার মতো থাকলে ।। সত্যেন্দ্রনাথ বেরা গ্রীষ্মে খুবই হিংস্র রবি ।। জগবন্ধু হালদার স্বপ্ন দর্শন ✍️ পার্থ প্রতিম দাস মৌন মুখরতা ।। মুসা মন্ডল রুদ্র বৈশাখ ।। দীনেশ সরকার চিহ্নিত পদযুগ পদাঘাত ।। দেবাশীষ...

প্রচ্ছদ।। ৮৩তম সংখ্যা ।। মাঘ ১৪৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ।। প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র

  বিঃ দ্রঃ আগামী ফেব্রুয়ারি সংখ্যার জন্য ভাষা দিবসের কথা মাথায় রেখে লেখা পাঠান। email: nabapravatblog@gmail.com  সূচিপত্র ফিচার।। গোপাল ভাঁড়ের অজানা সত্য ।। লোকনাথ পাল প্রবন্ধ ।। মসুয়ার রায় পরিবার এবং বঙ্গসংস্কৃতি ।... প্রবন্ধ ।। সুধীন্দ্রনাথ দত্ত: কাব্যের দার্শনিক ও ন... কবিতায় সেতুবন্ধন (তৃতীয় অংশ) শিল্পবিপ্লবোত্তর কাল... রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর বিদ্রোহী প্রেমের কবিতা: ... কবিতা ।। এই মন ভালো নেই দিনে ।। সুপ্রভাত মেট্যা কবিতা ।। জোছনা আলোর স্বপ্ন ।। তুষার ভট্টাচাৰ্য কবিতা ।। নিঃস্ব হবো ।। লালন চাঁদ কবিতা ।। ভালোলাগা  ।। আজিজ উন নেসা  গল্প ।। স্বীকারোক্তি ।। চন্দন দাশগুপ্ত কবিতা ।। শীতের দিন ।। প্রশান্ত কুমার মন্ডল কবিতা ।। শীতকাল ।। অঙ্কিতা পাল নাসির ওয়াদেনের দুটি কবিতা ভূতের লেখা ছড়া ।। বদরুল বোরহান কবিতা ।। ব্যস্ত ।। আলাপন রায় চৌধুরী ছোটগল্প ।। লম্বুর স্বপ্নপূরণ ।। পরেশ চন্দ্র মাহাত কবিতা ।। সৎকার ।। সুমিত মোদক কবিতা।। শীত বৈচিত্র্য ।। সুমিতা চৌধুরী পুস্তক-আলোচনা ।। নিউটনের আপেল ও প্রেমিকা ।। অরবিন্... গল্প।। শান্তির পথে …...।। বন্দনা সেনগুপ্ত কবিতা ।। মা...

সূচিপত্র ।। ৮৯তম সংখ্যা ।। শ্রাবণ ১৪৩২ জুলাই ২০২৫

সূচিপত্র   প্রবন্ধ ।। বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় ।। মাখনলাল প্রধান প্রবন্ধ ।। শ্রমিকের অধিকার ।। চন্দন দাশগুপ্ত প্রবন্ধ ।। ভিনগ্রহীদের সন্ধানে ।। শ্যামল হুদাতী প্রবন্ধ ।। নারীমর্যাদা ও অধিকার ।। হিমাদ্রি শেখর দাস কবিতা ।। মশালের রং তুলি ।। তূণীর আচার্য কবিতা ।। জললিপি ।। রূপক চট্টোপাধ্যায় গুচ্ছকবিতা || শিশির আজম নিবন্ধ ।। পূনর্জন্ম ।। শংকর ব্রহ্ম মুক্তভাবনা ।। কোলাহল তো বারণ হলো ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত গল্প ।। গানের হাড় ।। শুভজিৎ দত্তগুপ্ত গল্প ।। শিকড়ের খোঁজে ।। সমীর কুমার দত্ত সুপ্রভাত মেট্যার পাঁচটি কবিতা গ্রন্থ-আলোচনা ।। আবদুস সালামের কাব্যগ্রন্থ 'অলীক রঙের বিশ্বাস'।। তৈমুর খান অণুগল্প ।। হরিবোল বুড়ো ।। সুমিত মোদক রম্যরচনা ।। গোয়েন্দা গোলাপচন্দ আর প্রেমের ভুল ঠিকানা ।। রাজদীপ মজুমদার দুটি গল্প ।। মুহাম্মদ ফজলুল হক দুটি কবিতা ।। তীর্থঙ্কর সুমিত কবিতা ।। মেঘমুক্তি ।। বন্দনা পাত্র কবিতা ।। ব্যবচ্ছিন্ন শরীর ।। কৌশিক চক্রবর্ত্তী কবিতা ।। শমনচিহ্ন ।। দীপঙ্কর সরকার কবিতা ।। ভালোবাসার দাগ ।। জয়শ্রী ব্যানার্জী কবিতা ।। ফণীমনসা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ছড়া ।। আজও যদি ।। বদ্রীন...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো,  তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) য...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮২তম সংখ্যা ।। পৌষ ১৪৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

  সূচিপত্র অন্নদাশঙ্কর রায়ের সাহিত্য: সমাজের আয়না ।। বিচিত্র কুমার প্রবন্ধ ।। বই হাতিয়ার ।। শ্যামল হুদাতী কবিতায় সংস্কৃতায়ন (দ্বিতীয় ভাগ ) ।। রণেশ রায় পুস্তক-আলোচনা ।। অরবিন্দ পুরকাইত কবিতা ।। লেগে থাকা রোদ্দুরের ঘ্রাণের মতো ।। জয়শ্রী ব্যানার্জি কবিতা ।। ভুল ।। সুপ্রভাত মেট্যা কবিতা ।। উন্মেষ ।। বিশ্বজিৎ সেনগুপ্ত কবিতা ।। গার্হস্থ্য ।। বিবেকানন্দ নস্কর একগুচ্ছ বিজয়ের কবিতা ।। বিচিত্র কুমার গল্প ।। পোষ্য ভূত ।। সমীর কুমার দত্ত কবিতা ।। আশপাশ ।। প্রতীক মিত্র কবিতা ।। মেঘ ।। তীর্থঙ্কর সুমিত অণুগল্প ।। বংশীবদনের সুখদুঃখ ।। দীনেশ সরকার কবিতা ।। গভীর রাত ।। সুনন্দ মন্ডল তিনটি কবিতা ।। সুশান্ত সেন ভালোবাসার বাসা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত অণুগল্প ।। শিক্ষকের সম্মান ।। মিঠুন মুখার্জী কবিতা।। প্রশ্ন ।। জীবন সরখেল কবিতা ।।ক্ষরিত সে পথ ।। রহিত ঘোষাল কবিতা ।। রক্ত দিয়ে কেনা ।। মুহাম্মদ মুকুল মিয়া কবিতা ।। কংক্রিট ।। আলাপন রায় চৌধুরী ছড়া ।। শীত নেমেছে ।। রঞ্জন কুমার মণ্ডল কবিতা ।। কিছু শব্দ ।। সমীর কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় কবিতা ।। শীতের নগ্নতা ।। রানা জামান কবিতা ।। পথ চলা ।। পাভেল আমান বেদ পু...

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ৮৬তম সংখ্যা ।। বৈশাখ ১৪৩২ এপ্রিল ২০২৫

সম্পাদকীয় এই সংখ্যাটি বাংলা নববর্ষ বিষয়ক সংখ্যা। নৱৰ্ষকেন্দ্রিক বহু তথ্যপূর্ণ লেখা এই সংখ্যাটিকে সমৃদ্ধ করেছে। বাংলা নববর্ষ উদযাপনের ইতিহাস, রীতিনীতি, উৎসব, পার্বন, লোকাচার, রূপান্তর বহুবিধ বিষয় প্রকাশিত হয়েছে এই সংখ্যার লেখাগুলিতে। এই সংখ্যার বাছাই কিছু লেখার সঙ্গে আগামীতে আরও কিছু লেখা সংযুক্ত করে বাংলা নববর্ষ বিষয়ক একটি মুদ্রিত সংখ্যা প্রকাশ করার ইচ্ছে রইল।  সকলকে নববর্ষের আন্তরিক শুভকামনা জানাই। উৎসবে আনন্দে থাকুন, হানাহানিতে নয়। ধর্ম-ব্যবসায়ীদের চক্রান্ত ব্যর্থ করে সহনাগরিকের পাশে থাকুন। মনে রাখুন, ধর্মকে মানুষই সৃষ্টি করেছে। ঈশ্বর আল্লা গড ইত্যাদির জন্মদাতা মানুষই। মানুষকে ভালোবাসুন। মানুষের পাশে থাকুন।  নিরাশাহরণ নস্কর  সম্পাদক, নবপ্রভাত।  সূচিপত্র প্রবন্ধ-নিবন্ধ-স্মৃতিকথা পয়লা বৈশাখ ।। সিদ্ধার্থ সিংহ নববর্ষকেন্দ্রিক মেলা, পার্বন, উত্সব, লোকাচার ।। সবিতা রায় বিশ্বাস নববর্ষ আবাহন ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে এবং বিভিন্ন দেশে ।। তুষার ভট্টাচার্য নববর্ষের সেকাল ও একাল ।। হিমাদ্রি শেখর দাস নববর্ষের হাল-হকিকৎ ।। শংকর ব্রহ্ম বোশেখি বাঙালি নাকি পোশাকি বাঙালি? ।। দিব্যেন্দু...

প্রবন্ধ ।। বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় ।। মাখনলাল প্রধান

বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় মাখনলাল প্রধান বাংলার শিল্প-সংস্কৃতির জগতে যাত্রা শিল্প তথা নাট‍্যশিল্পে মড়ক নেমে এসেছে । যাত্রা শিল্পের মড়কে শুধু কোভিড নয় তার বহুপূর্ব থেকেই অর্থনৈতিক বিপর্যয় , শিক্ষাক্ষেত্রে বন্ধ‍্যাত্ব এবং গ্ৰাম বাংলার পটপরিবর্তন শেষ পেরেক ঠুকে দিয়েছে। যাত্রা-শিল্পের লীলাভূমি ছিল গ্ৰাম বাংলা। গ্ৰামে প্রচুর যাত্রাপালা হত নানা উৎসবকে কেন্দ্র করে । জমিদারি ব‍্যবস্থা লুপ্ত হওয়ার পর গ্ৰামীণ মানুষের উদ‍্যোগে শীতলা পূজা,  কালীপূজা, দুর্গাপূজা, কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা, চড়ক ইত‍্যাদিকে উপলক্ষ‍্য করে যাত্রাপালার আয়োজন না হলে কেমন যেন ম‍্যাড়ম‍্যাড়ে লাগতো। সেই সঙ্গে কলকাতার বড়বড় কোম্পানির যাত্রাপালা ঘটা করে, টিকিট সেল করে হত মাঠে। খুব বড় মাপের খেলার মাঠ যেখানে ছিল না সেখানে ধানের মাঠ নেওয়া হত ‌। ত্রিশ-চল্লিশ হাজার মানুষ দেখতে আসত। স্পেশাল বাস পাঠাত  আয়োজক কর্তৃপক্ষ। বিনা ভাড়ায় বাসে যাতায়াত করত যাত্রার দর্শকেরা। কিন্তু বিকল্প ধানচাষ শুরু হলে জমিগুলো সময় মতো ফাঁকা পাওয়া গেল না । প্রথম দিকে ব‍্যাপকহারে ধান শুরু না হওয়ায় খুব একটা অসুবিধা হত না। বহুক্ষেত্রে  ধান কা...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। নবপ্রভাত ৮৫ ।। চৈত্র ১৪৩১ মার্চ ২০২৫

  সূচিপত্র নিবন্ধ ।। মরিয়ম মির্জাখানি: এক অনন্য গণিতসূর্য ।। ... নিবন্ধ ।। নারী দিবসে যা ভাবা উচিত ।। বিশ্বনাথ পাল প্রবন্ধ ।। প্রাচীনকাল থেকে নারীরা অবহেলিত, বঞ্চিত,... নিবন্ধ ।। আমার চোখে আদর্শ নারী ।। জয়শ্রী বন্দ্... ফিচার।। এই মুহূর্তে বাংলা সাহিত্যে নারীদের লেখালেখ... আফ্রিকার লোককথা ।। করোটিকে বিয়ে করা অবাধ্য মেয়েটি ... ছোটগল্প ।। মানবী ।। ভুবনেশ্বর মন্ডল নিবন্ধ ।। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে অন্যতম নারী মু... নিবন্ধ ।। প্রিয় মহিলা সাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবী ।। ... গল্প ।। উই ওয়ান্ট জাস্টিস ।। রবীন বসু প্রবন্ধ ।। নিপীড়িতা ।। শ্যামল হুদাতী ফিচার ।। রমণী রতন ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত প্রবন্ধ ।। নারী সমাজ : তখন-এখন ।। তপন মাইতি নিবন্ধ ।। বহমান কালের ধারায় নারী ।। দীপক পাল গল্প ।। আমার দুর্গা ।। অঞ্জনা গোড়িয়া (সাউ) গল্প ।। যোগ্য জবাব ।। সমীর কুমার দত্ত ছোটগল্প ।। আমি দুর্গাকে দেখেছি।। চন্দন দাশগুপ্ত গল্প ।। সম্পর্ক ।। গৌতম সমাজদার কবিতা।। নারী মানে ।। গোবিন্দ মোদক কবিতা।। নারী ।। সমর আচার্য্য ছড়া ।। নারী অসামান্যা ।। সৌমিত্র মজুমদার কবিতা ।। নারী দিবসে ।। বিবেকানন্দ নস্কর কবিতা ।। না...

প্রবন্ধ ।। ভিনগ্রহীদের সন্ধানে ।। শ্যামল হুদাতী

ভিনগ্রহীদের সন্ধানে  শ্যামল হুদাতী  ইতিহাসের শুরু থেকে বারবার মানুষকে একটা প্রশ্ন কুঁড়ে কুঁড়ে খায় – এই মহাবিশ্বে আমরা কি একা? পৃথিবীর মতো আরও গ্রহ রয়েছে, যেখানে মানুষের মতো বুদ্ধিমান প্রাণীরা বাস করে – এই সম্ভাবনা বরাবর মানুষকে মুগ্ধ করেছে। আমাদের প্রত্যেকের জীবনের কখনও না কখনও এই ভাবনা এসেছে। দীর্ঘ কয়েক দশকের গবেষণার পরও, এই বিষয়ে কোনও নিশ্চয়তা দিতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। জেমস ওয়েব মহাকাশ টেলিস্কোপ, বহু দূরের এমন কিছু গ্রহের সন্ধান দিয়েছে, যেগুলিতে প্রাণ থাকতেই পারে। তবে, নিশ্চিত কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে, আমেরিকার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাম্প্রতিক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, ভিনগ্রহীদের খুঁজতে বহু দূরে যাওয়ার কোনও দরকার নেই। তারা এই পৃথিবীতেই মানুষের ছদ্মবেশে মানুষের মধ্যেই বসবাস করতে পারে। আমরা ভিনগ্রহীদের যেমন কল্পনা করি, এরা তার থেকে আলাদা। এরা অনেকটাই, দেবদূতদের মতো। মানব জগতের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক প্রযুক্তিগত নয়, বরং জাদুকরি। মহাকাশে সৌরজগতের গ্রহ পৃথিবী ছাড়া অন্য কোথায় প্রাণ রয়েছে কি না তা নিয়ে চলছে বিস্তর গবেষণা। একই সঙ্গে পৃথিবী ছাড়া অন্য কোনো গ্রহে মানুষ বসবাস ক...

মাসের বাছাই

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬

  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠালে  অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে হলে ভালো। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # ...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯২তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩২ অক্টোবর ২০২৫

—: সম্পাদকীয় দপ্তর থেকে :— এই সংখ্যার জন্য লেখা এসেছিল প্রায় ১৮০টা। কিন্তু গুণগত মানে দুর্বল লেখার সংখ্যা বহু। আমরা নবপ্রভাতে নতুনদের কথা ভেবে বেশ কিছু দুর্বল লেখাও রাখি। কিন্তু সবসময় একই লোকের দুর্বল লেখা প্রকাশ করা অনুচিত বলে মনে করি। শেষ পর্যন্ত ৯৯ জনের লেখা রাখা গেল। যাদের লেখা প্রকাশিত হল না, তারা লেখাগুলি অন্য যেখানে খুশি পাঠাতে পারেন। বিশেষ কারণে এই সংখ্যার মুদ্রিত সংস্করণ প্রকাশিত হচ্ছে না। আমরা দুঃখিত। তবে মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি শীঘ্রই আসছে। সঙ্গে থাকুন। সকলকে উৎসবমুখর বর্ণময় শুভেচ্ছাসহ— —নিরাশাহরণ নস্কর, সম্পাদক, নবপ্রভাত। অনুরোধ : প্রকাশিত লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন, ছবি/স্ক্রীনশট নয়।  == সূচিপত্র == পড়া-লেখার ইতিহাস অনুসন্ধান।। তপন তরফদার উৎসব : মানুষের চিরন্তন আত্মপ্রকাশ।। কৃশানু ব্যানার্জি বাংলা : সভ্যতা ও সংস্কৃতির জন্মভূমি।। শ্যামল হুদাতী সমুদ্র আর অস্তিত্ব ।। সুব্রত চৌধুরী রাজা ছিলেন জুবিন গর্গ ।। গঙ্গা 'অনু'   আদ্যাশক্তি মহামায়ার বাংলা বারো মাসের বারো রূপ ।। অর্হণ জানা মেধাদাদুর আসর ।। রণেশ রায় বৈজ্ঞানিক মা...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯৩তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩২ নভেম্বর ২০২৫

সূচিপত্র বস্তু, চেতনা এবং কবি ।। সজল চক্রবর্তী দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত ।। রণেশ রায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট ও সন্নিহিত অঞ্চলের কথ্য শব্দ ।। অরবিন্দ পুরকাইত চাঁদে জীবন ।। শমীক সমাদ্দার অসমাপ্তি ।। মহুয়া হুই গ্যালাক্সির শব্দে ।। জাসমিনা খাতুন তিনটি কবিতা ।। দিবাকর সেন অপূর্ণতার শেষ অধ্যায় ।। সুপ্রিয় সাহা হাফ ডজন ছড়া ।। স্বপনকুমার পাহাড়ী স্বাপ্নিক অমলের ঘুৃম ।। সঞ্জয় দেওয়ান দুটি কবিতা ।। সৌমিত্র উপাধ্যায় পথ চলতি ✍️পার্থ প্রতিম দাস হেমন্তের বিষাদ ছুঁয়ে ।। শক্তিপদ পাঠক রাই আর বাবা ।। অদিতি চ্যাটার্জি স্থিতিশীল ।। রঞ্জিত মুখোপাধ্যায় হৃদয়ের শূন্য কোড ।। লিপিকা পিঙ্কি দে অমানিশা ।। সৌভিক মুখার্জী দৃষ্টিগত ।। শামীম নওরোজ জ্যান্ত ভূতের গপ্পো ।। পার্থ সারথি চট্টোপাধ্যায় ধুতরা ফুলের ঘ্রাণ ।। মজনু মিয়া তারা খসার আলোয় ।। তীর্থঙ্কর সুমিত উত্তরণে অন্তরায় ।। সমীর কুমার দত্ত প্রেম মুদ্রা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ধারা ।। লালন চাঁদ অন্যের ব্যথায় ব্যথি ।। জগদীশ মণ্ডল গর্ভ ।। শাশ্বত বোস ভ্রমণ বিষয়ক স্মৃতিকথা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত শাপে বর ।। সাইফুল ইসলাম রবিবার ।। সঙ্ঘমিত্রা দাস দুটি ...

দিদৃক্ষা ।। রাজেশ কে. চক্রবর্ত্তী

  দিদৃক্ষা রাজেশ কে. চক্রবর্ত্তী 'কাল একবার দেখা হতে পারে?' দশমীর দুপুরে খাটে আধশোয়া হয়ে নিজের ফোনটা ঘাঁটছিল দেবমাল্য; হোয়াট্‌সঅ্যাপের সার্চ বক্সে  র‍্যান্ডম সিক্যুয়েন্সে ক'খানা ডিজিট ইনপুট করতেই বিস্মৃতির অতল থেকে অপ্রত্যাশিতভাবে যে নামটা স্ক্রিনের সারফেসে ভেসে উঠল, এককালে দেবমাল্যের প্রায়োরিটি লিস্টে সবথেকে ওপরে পিন্‌ করা থাকতো এই অ্যাকাউন্টটা। 'অহনা দাশগুপ্ত'—গ্রেয়েড-আউট ডিপিটার ডানদিকে, নামটার তলায় নিস্প্রভ হরফে ভেসে থাকা ওর এই লাস্ট মেসেজটা বেশ ক'বছরের পুরনো, কিন্তু দেবমাল্যর স্মৃতির প্যান্ডোরা বাক্সটি উলটে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল। আরেকবার আপাদমস্তক শিহরিত হয় সে। প্রোফাইলটা খুলে ওপরে-নীচে স্ক্রল্‌ করে দেখে, ওদের পুরনো চ্যাটগুলো তেমনি আড়ষ্ট হয়ে পড়ে আছে, ওর মেসেজগুলোর পাশে ডাবল টিকগুলো এখনও জাজ্বল্যমান সবুজে ছোপানো, যেন এইমাত্র 'সিন্‌' করে রেখেছে অহনা! যেন এখুনি আবার হাত বোলালেই অহনা এসে খানিকটা রাগত ভঙ্গিতে চ্যাট করতে লেগে যাবে। দেবমাল্যের বুক ছাপিয়ে একটা নীরব দীর্ঘশ্বাস উঠে আসে! ছুটির এই আমেজটা লক্ষ্মীপুজো অব্দি গড়াবে—অফিস খুললেই তো আবার দমফাটা ব্য...

গুচ্ছকবিতা || শিশির আজম

  গুচ্ছকবিতা || শিশির আজম হুইসেল (মুরাকামি থেকে অনুপ্রাণিত) ♦ 'গভীর রাতে একটা হুইসেল কতটা গভীর হতে পারে তুমি কল্পনাও করতে পারো না,' ছেলেটা বললো, 'আশ্চর্য ঐ হুইসেলের মতো আমি ভালবাসি তোমাকে।' কিন্তু গভীর রাতে অন্ধকারে কখনও তো ঘুম ভেঙে যায়নি মেয়েটার, কখনও ও বিচ্ছিন্ন আর একা হয়ে যায়নি। ও কীভাবে অনুভব করবে গভীর রাতে ট্রেনের হুইসেল কতটা গভীর! নিউজ এজেন্সি ♦ একসময় আমরা খবর শুনতাম এখন দেখি স্বীকার করতে হবে খবর শোনার চেয়ে দেখার আনন্দ বেশি আলাদা উত্তেজনা নিউজ এজেন্সিগুলো এব্যাপারে তৎপর আর প্রতিযোগিতাপূর্ণ কোনটা নিউজ সেটা ওরাই ঠিক করে যেটা ওদের দরকার আর সেটাই আমাদের দেখানো হয় ধারাবাহিকভাবে সুচারু জ্যামিতিকতায় বিভিন্ন পদ মিশিয়ে খাওয়ানো হয় নতুন বাস্তবতা নির্মাণে যে বাস্তবতায় জায়গা নেই আমাদের ইতিহাস অন্বেষা স্বাধীনতার সমৃদ্ধি আর স্বাধীনতার কথা বলেই ওরা আমার ক্ষেতখামার পাহাড় আর নদীর দখল নিয়েছে তাহলে টিভিতে যে হাসিখুশি প্রাণবন্ত আমাদেরকে দেখানো হয় ওরা কারা এই প্রশ্ন করো নিজের কাছে আগুন নিয়ে খেলা ♦ আজও পুকুরে ছিপ ফেলে বসবো আমি ধীরে চুপ সূর্য আমার ঘাড়ে শ্বাস ফেলবে সারারাত ঘরের ভেতর ল্যাং...

বিদায়ের স্রোত ।। চয়ন মন্ডল

  বিদায়ের স্রোত চয়ন মন্ডল "বিজয়া দশমী—আনন্দের দিন, কারও কাছে যা হয়ে উঠল চিরন্তন বিদায়।" আজ বিজয়া দশমী। শিউলি ফুলের গন্ধে ভোরটা অন্যরকম। পাড়ার প্যান্ডেলে অদ্ভুত এক কোলাহল—মায়ের বিদায় যে আজ। শঙ্খধ্বনি, ঢাকের বাজনা আর উলুধ্বনিতে গমগম করছে চারদিক। একদিকে মা দুর্গার বিদায়ের বেদনা, অন্যদিকে আনন্দ ও মিলনমেলা। সারা বছরের অপেক্ষা শেষে এই দিনটিতে প্যান্ডেল ভরে উঠেছে মানুষের ভিড়ে। সকালের পূজার্চনা শেষ হতেই শুরু হয়েছে সিঁদুর খেলা। মহিলারা মায়ের প্রতিমাকে সিঁদুর পরিয়ে একে অপরের কপালে, গালে রাঙিয়ে দিচ্ছেন। ঢাকের তালে আর শাঁখ বাজনার আবেশে ভেসে যাচ্ছে পাড়া। শুরু হয়েছে প্রতিমা বিসর্জনের প্রস্তুতি। কিন্তু এসবের মধ্যে নেই অনুরাধা। কেউ তার বা মিনির খোঁজ রাখেনি। মুখার্জিদের দোতলা বাড়ির কোণের ঘরে বসে সে চোখের জল ফেলছে। সবার বাড়িতে আলোর রোশনাই, ভোগের গন্ধ, হাসি—শুধু তাদের ঘরটিতে নিস্তব্ধতা। গতবছর এই দিনেই তো অন্যরকম ছিল সবকিছু। অনুরাধা, সুজয় আর তাদের তিন বছরের মেয়ে মিনি পাড়ার প্যান্ডেলে ঢাকের তালে নেচেছিল, সিঁদুর খেলায় রঙে ভেসেছিল। বিকেলের দিকে প্রতিমা বিসর্জনের মিছিলে শামিল ...

কবিতা ।। অরণ্যকন্যা ।। অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়

  অরণ্যকন্যা অরিন্দম চট্টোপাধ্যায় অরণ্যকন্যার দৃষ্টির ভেতর বিষাদ বিন্দু ফোঁটা ফোঁটা জলের মতো গড়িয়ে যায়, হয়ে যায় কোন নদীপথ দৃষ্টি ভেঙে ভেঙে চলে যায় কোন এক শূন্য পথে অরণ্যকন্যার হৃদয়ের ভেতর ভাঙে যতো বৃক্ষপত্র নতুন পত্র পুষ্পের খোঁজ নেই ঠোঁট জুড়ে সমুদ্রকাঁপন বুদবুদের মতো অস্ফুট হয়ে উচ্চারিত হয় কোন অক্ষর শব্দ আর তাঁর শরীর থেকে ছড়িয়ে যায় হয়ে যায় একটা অদৃশ্য কবিতা...    ================== @ অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়,  বেহালা, কলকাতা -৭০০০৬০,  

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯১তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পাদকীয় দপ্তর থেকে এই সংখ্যায়  'শিক্ষা ও শিক্ষক' বিষয়ক বেশ কিছু লেখার পাশাপাশি রয়েছে বিচিত্র বিষয়ের আরও কিছু লেখা। সব মিলিয়ে সংখ্যাটি আপনাদের সমৃদ্ধ করবে, আপ্লুত করবে — এ বিষয়ে আমরা আশাবাদী। আপনাদের মতামত অবশ্যই জানাবেন। আমরা প্রতীক্ষিত।            আগামী অক্টোবর ২০২৫ সংখ্যা 'উৎসব সংখ্যা' হিসাবে প্রকাশিত হবে। ওয়েব সংখ্যার পাশাপাশি নির্বাচিত লেখাগুলি নিয়ে একটি pdf এবং তার মুদ্রিত সংস্করণও প্রকাশিত হবে। তাই অপ্রকাশিত ভালো লেখা পাঠান। বিশেষ কোনও বিষয় নেই। প্রবন্ধ-নিবন্ধ-ফিচার ২০০০ শব্দ, গল্প ১২০০ শব্দ, অণুগল্প ৫০০ শব্দ, কবিতা-ছড়া ২৪ লাইনের মধ্যে হলে ভালো। ইমেলঃ nabapravatblog@gmail.com           বিস্তারিত বিজ্ঞপ্তি আসবে। সামাজিক মাধ্যমে আমদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন। সময় মতো সব সংবাদ পেয়ে যাবেন।  শারদ উৎসবের দিনগুলি সকলের আনন্দে কাটুক এই কামনা করি। —নিরাশাহরণ নস্কর সম্পাদক: নবপ্রভাত মোঃ ৯৪৩৩৩৯৩৫৫৬ Whatsapp Group:  https://chat.whatsapp.com/ AIpj98JKbloFSpeqMcpr6j Facebook Page:  https://www.facebook.com/ share...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো,  তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) য...

শেষ বিকেলের আলো ।। সৈকত প্রসাদ রায়

  শেষ বিকেলের আলো সৈকত প্রসাদ রায় রানাঘাট শহরের প্রান্তে ছোট্ট এক পাড়া বিশ্বাসপাড়া। সেই পাড়ার পুরোনো ভাঙাচোরা বাড়িটায় থাকেন পুষ্পরাণী ভট্টাচার্য— বয়স পঁয়ষট্টির কোঠায়। সবাই তাকে "পুষ্পদি" বলেই চেনে। একসময় প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতা করতেন, এখন অবসর নিয়েছেন। প্রতিদিন বিকেলে পুষ্পদি বারান্দায় বসে চা খান। ছোট একটা টেবিল, কয়েকটা পুরোনো বই, আর একখানা নীল কাঁচের ফুলদানি — তার নিত্যসঙ্গী। বারান্দার সামনেই একটা গলি, যেখান দিয়ে প্রতিদিনই স্কুল ছুটির পরে বাচ্চারা হইচই করে ছুটে যায়। পুষ্পদির একমাত্র ছেলে অনিরুদ্ধ — কলকাতায় চাকরি করে। ছেলেটা আধুনিক, নিজের সংসার আছে, স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ব্যস্ত। বছরে হয়তো একবার আসে, তাও কিছুক্ষণ বসে আবার চলে যায়। পুষ্পদি মুখে কিছু বলেন না, কিন্তু বুকের ভেতরে একটা কষ্ট জমে থাকে। সেই বিকেলটা অন্যরকম ছিল। আকাশে ধুলো, গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা। হঠাৎ পুষ্পদির চোখে পড়ে — রাস্তায় এক কিশোর বসে আছে। বয়স বারো-তেরোর বেশি নয়। মলিন জামা, পায়ে ছেঁড়া চটি। ছেলেটা একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে পুষ্পদির বাড়ির গেটে ঝুলে থাকা পুরোনো নোটিশবোর্ডটার দিকে, যেখানে একসময় লেখা ছিল — "পুষ্পরাণী ভ...