ভিক্ষা কি বন্ধ হবে না?
এস এ বিপ্লব,,
ভিক্ষুক মানে হলো - ভাসমান, ক্ষুর্ধাত, কাঙাল। বর্তমান সমাজে এই ভাসমান ক্ষুধার্ত কাঙাল একটু বেশি দেখা যায়। আর এ জগত সংসারে কাঙাল কেউ ভালোবাসে না৷ সমাজে এতো সমস্যা যে বলার শেষ নেই।সমাজের চারপাশে তাকালেই সমস্যা আর সমস্যা চোখে পড়ে। তার মধ্যে র্বতমান একটি হলো ভিক্ষা সমস্যা।কেন জানি এ সমস্যা দিন কে দিন বাড়ছেই। এর কারণ কেউ কি খুঁজে বের করেছে। ভিক্ষা কোন পেশা না, এটা হলো অনেকের বেঁচে থাকার অবলম্বন বা বৃত্তি বলা যেতে পারে। আর যারা নিরুপায় তারাই কিন্তু ভিক্ষা কে বৃত্তি করে বেঁচে থাকতে চায়। কিন্ত যখন এটা ব্যবসায় চলে আসে তখন আর বৃত্তি বলা যায় না।আজকালের ভিক্ষাকে আর বৃত্তি বলা যায় না, বরং ব্যবসাই বলা চলে। কারণ বৃত্তি তাদের জন্য যাদের কেউ নেই, যারা জম্ম থেকে অন্ধ, যার দুটি হাত নেই, যার দুটি পা নেই, যার বাড়ি, জমিজমা,সন্তান, অর্থ এমন কি কাজ করার যোগ্যতা হারিয়ে ফেলে।ভিক্ষা হচ্ছে মূলত এদের জন্য।আর এ ধরনের মানুষ সমাজে খুব কম। তাই পূর্বে ভিক্ষা বা ভিক্ষুক খুব কম দেখা যেত। কিন্তু এখন ভিক্ষুক ঘুরে ফিরে দেখাই যায়। ভালো মানুষও ভিক্ষা করে থাকে। বিনা চালানের ব্যবসাগুলি আসলে একটু বেশিই হয়ে থাকে।তার মধ্যে একটি হলো এই ভিক্ষা বৃত্তি। যতদুর জানি গাজিপুর আর ঢাকার বিভিন্ন জায়গা তে ভিক্ষা বৃত্তির জন্য শিশু ভাড়া বা চুরি করে নিয়ে তাদের দিয়ে এসব কাজ করিয়ে থাকে। কোন মানুষ জম্ম থেকে ভিক্ষুক হয়ে জম্মায় না। ভিক্ষুক বানায় এই সমাজ,পরিবেশ আর পরিস্থিতি। তবে এটা গুটি কয়েক লোকের জন্য, বাকি যে ভিক্ষুক হয় তা পরিস্থিতি আর ব্যবসার জন্য করে থাকে কিছু দূর্নীতিবাজ লোকেরা। এসব লোকদের শাস্তির আওতায় আনা উচিত।
কেন না আজকাল আর প্রকৃত ভিক্ষুক দেখা যায় না। এখন কার মানুষ ভিক্ষা অভাবের চেয়ে স্বভাবে করে থাকে বেশি। করবেই না কেন এখন তো আর ভিক্ষুক নিধন কর্মসূচি নেই। সেই কবে ১৯৭২ সালের পর একবার ভিক্ষুক নিধন অভিযান হয়েছিল, এরপর আজ পর্যন্ত সেই ধরনের কোন অভিযান হয়নি। হবে বলে ও মনে হয় না। কারণ, এখন তো ভিক্ষাকে ব্যবসা বানিয়ে ফেলেছে। আর ব্যবসা মানেই তো মোটা ইনকাম। এমনও জরিপে দেখা গেছে ঢাকা হাইকোর্টের সামনে ভিক্ষা করত সেই ভিক্ষুকের ট্রাক আছে কয়েকটি, বাড়ি- গাড়ি সব আছে। তবুও সে ভিক্ষা করে। তার মানে এটা হলো স্বভাবের ভিক্ষুক। আবার কিছু ভিক্ষুক আছে যাদের ছেলে- মেয়েরা কলেজে পড়ছে।কিংবা বিদেশে বসবাস করছে।আসলে সত্যি বলতে কি ভিক্ষা কারা করছে, কেন করছে, কেনই বা দিন কে দিন এতো বাড়ছে এসব প্রশ্নের উত্তর কিন্তু কেউ খোঁজে না। আমার মনে হয় ভিক্ষা বাড়ছে যে সব কারণে তার মধ্যে অন্যতম হল অশিক্ষিত একটা বিষয় তো আছেই। এর পর আরো যে বিষয় আছে - ব্যবসা হিসেবে নেওয়া, কেউ বা অভাবে করা, আর অভাবের চেয়ে স্বভাবে করা, বয়স্ক লোকদের সন্তানাদি না থাকা বা সন্তানাদি ভাত- কাপড় না দেওয়া। তবে যে যাই বলুক না কেন, বর্তমান মুল কারণ হলো ব্যবসা। আর ব্যবসা বলেই এতো ভিক্ষুক দেশে বাড়ছে।বিশেষ করে শবে বরাতের রাতে দেখা যায় ভিক্ষুকের সংখ্যা। এছাড়া জুম্মার নামাজ তো আছেই। আবার কোর্ট, হাসপাতালে দেখা যায় ভিক্ষুক কাকে বলে। যাক সে কথা, মজার বিষয় হলো এই যে ভিক্ষা বৃত্তি বা ভিক্ষুক বাড়ছে তার জন্য কারো কোন মাথা ব্যথা নেই। এমন কি বড় বড় মাথাওয়ালা লোকগুলোর এ নিয়ে কোন চিন্তা ভাবনা নেই। কত মানুষ কত কিছু করে, অথচ ভিক্ষুকদের জন্য না করেছে পূর্ণবাসন না করছে কর্মসংস্হান। একটা স্বাধীন দেশে এভাবে এতো ভিক্ষুক থাকা ঠিক না। যা বিশ্বের অন্য সব দেশের দিকে তাকালে বোঝা যায়। আমার মনে হয় বাংলাদেশের মত এতো ভিক্ষুক কোন দেশে নেই। কারণ বাংলাদেশে ভিক্ষা বা ভিক্ষুক নিয়ে কোন মাথা ব্যথা কারো নেই। থাকবে কেন তাদের কোন আত্মীয় স্বজন বা আপন জন তো আর ভিক্ষা করে না।অনেক মণিষী, কিংবা দানশীল লোক অনেক কিছু করেছে কিন্তু করেনি ভিক্ষুকদের নিয়ে কোন কিছু। সেটা আজও বিধ্যমান রয়ে গেছে। আবার ভিক্ষুকদের কোন আইন নেই। আইনও যদি থাকত তবুও মনে হয় কিছুটা কম হতো। আসলে আমাদের দেশ টাকে সব দিক দিয়ে হ-য-ব-র-ল করে ফেলেছে। তাই কোন কিছুতেই আর উন্নতি হচ্ছে না। বিশ্বের অনেক দেশেই ডেড ডাক্তার আছে যারা ভুক্তভোগী রোগী কে ইনজেকশন দিয়ে বিদায়ের ঘন্টা বাজিয়ে দেয়। যেহেতু মরতে হবেই তাই তাদের একটা ভালোদিক বলা যেতে পারে। আমাদের দেশে যদি এরকম ব্যবস্হা করে তাহলে দেশের অর্ধেক জনগন এমনি কমে যাবে। তবে আমাদের দেশে সেটা চাইবে না জনগণ। যাক ডেড ডাক্তার প্রথা না থাকুক এটা নিয়ে কিছু বলব না। তবে ভিক্ষুক নিয়ে যে কোন উদ্দ্যোগ চালু করলে ভালো হবে। একবার বিবেক কে প্রশ্ন করুন যে, একটা স্বাধীন দেশে কেন এতো ভিক্ষুক। সেটা আবার দেশ স্বাধীন হয়েছে ৫০ বছরের বেশি। তাহলে দেশ স্বাধীন করেছে কি ভিক্ষুক বাড়ার জন্য। যদি তাই হয় তবে তো দেশ স্বাধীন না হওয়াই ভালো ছিল। আমি তো মনে করি ভিক্ষুক হওয়ার চেয়ে পরাধীন থাকা ভালো। কোর্ট, হাসপাতাল, কলেজ এসব জায়গায় ভিক্ষা নিষিদ্ধ করা হোক।আজকাল আবার প্রায় দেখা যায় মাদ্রাসা, এতিমখানায় পড়া কালীন ছাত্রদের রাস্তায় সাহায্য উঠাতে। জানি না এ বিষয় টি কে কিভাবে নেবে।তবে প্রশ্ন আসে কেন তারা রাস্তায় নামবে, হাত পেতে চাইবে? তারা তো পড়তে এসেছে, পড়তে এসে যদি এই শিক্ষা পায় তাহলে তো জীবন শিক্ষা বৃথা যায়। এ শিক্ষা কে কি বলবে মানুষ। তাহলে কি ধরে নিবে মাদ্রাসা, এতিমখানা ভিক্ষা বৃত্তি শিক্ষা দিয়ে থাকে। যদি তাই হয় তবে মাদ্রাসা তথা দেশের মাথাওয়ালাদের কাছে অনুরোধ করব যেন মাদ্রাসায় ও এতিমখানায় অনুদান বা প্রতিমাসে কিছু আর্থিক সহযোগিতা করুক, সেটা যেন ছাত্রদের কল্যাণে ব্যয় করা হয়। তবুও মাদ্রাসা, এতিমখানার কোন ছাত্রকে যেন সাহায্যের জন্য কারো কাছে হাত পেতে চাইতে না হয়। তবু যেন ছোট ছোট বাচ্চাদের ভিক্ষা করা জীবন দেখতে হতো না। তাই আমাদের এই ভিক্ষা বৃত্তি জীবন খেকে সমাজ, দেশ আর জাতিকে রক্ষা করতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। এবং এজন্য যে কোন ধরনের উদ্দ্যেগ নিতে হবে। আইন তৈরী করতে হবে। ভিক্ষুক মুক্তির কর্মসূচি বছরে একবার দিতে হবে। ভিক্ষুক পূর্ণবাসন কেন্দ্র করে দিতে হবে। ছোট ছোট ছেলে - মেয়েরা যাতে স্কুলে যায় সে দিকে খেয়াল নিতে হবে। আরেকটি কথা না বললেই নয়, সরকার এই ভাতা, সেই ভাতা, কত ধরনের ভাতা দিয়ে থাকে অথচ ভিক্ষুক ভাতা নেই।যাদের জীবন একেবারে অচল যেমন- অন্ধ,দু হাত, দু পা নেই এসব মানুষকে ভিক্ষুক ভাতায় নিয়ে আসা উচিত। তাহলে দেখবেন দেশ থেকে কিছুটা হলেও ভিক্ষা বৃত্তি আর ভিক্ষুক কমবে।
==========
এস এ বিপ্লব,,
নারায়ণগঞ্জ,চাষাড়া, ফোন-০১৯৫৭২৩৭০১২
ইমেইল :sabiplop160@gmail
নারায়ণগঞ্জ,চাষাড়া, ফোন-০১৯৫৭২৩৭০১২
ইমেইল :sabiplop160@gmail

Comments
Post a Comment