উত্তরণে অন্তরায়
সমীর কুমার দত্ত
সতীশ মল্লিক জাতিতে ডোম। হাওড়ার মল্লিক ফটকের অনতিদূরের মর্গে লাশ কাটার কাজ করে। একাজ করতে গেলে মদ তাকে খেতেই হয়। না হলে মৃতদেহের পচনশীল তীব্র গন্ধে আর মৃতদেহ সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত ফর্মালডিহাইড ও অন্যান্য রাসায়নিক পদার্থের মিশ্রণে উদ্ভূত তীব্র গন্ধে টেকাই দায়। এমতাবস্থায় পচা লাশ কাটা অসম্ভব। রাতে বাড়ি ফিরে কি শীত কি গ্রীষ্ম তাকে স্নান করতে হয়। লাল কাটা ঘরে থেকে থেকে মনটাও মলিন হয়ে উঠেছে।
সতীশের বৌ মলিনা জানে তার স্বামী সরকারি হাসপাতালে কাজ করে।অন্তত বিয়ের সময়ে তাই বলেছিলো। তবে কী কাজ করে তা খুলে বলে নি । সরকারি হাসপাতালে হলে কি হবে, আজ পর্যন্ত ও অস্থায়ী রয়ে গেছে। মাইনে বারো হাজার টাকা পায়। বাজার দর যেভাবে বেড়ে চলেছে এই টাকায় চলে না। লাশের মালিকের কাছ থেকে কিছু উপরি আয় হয় বলে কোন রকমে চার জনের ভরণপোষণ চলে যায়। মাইনে আগে কম ছিলো। বেড়ে বেড়ে এখন বারো হাজারে এসে ঠেকেছে। এ হলো গিয়ে নব্বইয়ের দশকের কথা যখন ও চাকরি পায়। সরকারি চাকরি, তাই ঢুকে পড়েছে। এটা এদের পরম্পরা। ওর বাবা, ঠাকুরদা এই কাজ করেই কাটিয়েছে। আজকাল এ পেশায় কেউ আসতে চায় না। বর্তমানে বেকারিত্বের জ্বালায় অন্য জাতের ছেলেরা অনিচ্ছাসত্ত্বেও এই কাজকে মেনে নিচ্ছে। স্ত্রী, এক মেয়ে আর এক ছেলে নিয়ে সতীশের সংসার।মেয়ে ঝর্ণা, বয়স এই বছর পনেরো হবে, এবছর ফার্স্ট ডিভিশনে মাধ্যমিক পাশ করেছে। উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হবে। সায়েন্স নিয়ে পড়তে চায় উদ্দেশ্য ভবিষ্যতে নার্স হওয়া। ছেলে দীপেন, ডাক নাম দীপু।বয়স এই দশ এগারো, ষষ্ঠ শ্রেণীতে উঠেছে। সতীশ স্নান করে খেয়ে দেয়ে অফিস যায় আবার এসে স্নান করে। স্নান না করে ঘরে ঢোকে না। মেয়ে অনেক বার জানতে চেয়েছে ওর বাবার কাছে , " বাবা তুমি কি কাজ করো যে রাতে এসে স্নান করতে হয়?" উত্তরে ইতস্তত করে বলে," হাসপাতালের মর্গে কাজ করি।"
—মর্গ ? সেটা আবার কী?
— মর্গ হলো ডোমঘর । যেখানে ডোমেরা মৃতদেহ কাটা ছেঁড়া করে মৃত্যুর কারণ জানতে।
— তুমি কি কাজ করো?
সত্য গোপন করে সতীশ বলে,
" আমি মর্গ দেখাশোনা করি— এই কতো গুলো মড়া এলো, তাদের নম্বর দেওয়া ইত্যাদি ইত্যাদি।"
—তোমার ভয় লাগে না?
— চাকরির প্রথম প্রথম লাগতো। এখন সয়ে গেছে।
— প্রথম প্রথম ভয় লাগতো কেন? তুমি কি কিছু দেখে ছিলে?
হ্যাঁ, আমরা দুজন থাকতুম মর্গে। যিনি আমার সঙ্গে থাকতেন তিনি হলেন শিবুদা। আমার সিনিয়র। আমাকে একদিন একটা মড়া পোস্ট মর্টেম হয়ে যাবার পর সেলাই করতে বলে বাইরে বেরিয়ে গেলো। আমি যতবার মড়াটা সেলাই করছি, ততোবারই সেলাই খুলে যাচ্ছে। আবার মাঝে একবার নড়েও উঠলো। আমি ভয় পেয়ে মড়া ফেলে রেখে দ্রুত পদে বেরিয়ে গেলুম। গিয়ে শিবুদাকে খুঁজতে লাগলুম। দেখি শিবুদা দোকানে চা খাচ্ছে। হন্তদন্ত হয়ে গিয়ে যা ঘটেছে সব বললুম। শুনে শিবুদা বললো, "ধ্যাৎ, কী বলছিস্ কী! যখন কাটা হলো,তখন তো নড়ে নি। বুঝতে পেরেছি তুই ভয় পেয়েছিস্। প্রথম প্রথম তো , ও একটু হবে। আমারও হতো। চল দেখি গে। গিয়ে যা দেখলুম, তাতে চক্ষু ছানাবড়া!
— কী দেখলে?
— কিছুই দেখতে পেলুম না। লাশ গায়েব! শিবুদাকে বললুম,
" এই তো এখানে ছিলো! কোথায় গেলো? আমি বললুম না তোমায়।"
— সত্যিই তো লাশটা গেলো কোথায়?
অনেক খোঁজাখুঁজির পর লাশটা দেখা গেলো অদূরে। কতকগুলো কুকুর টেনে নিয়ে গিয়ে খেতে শুরু করে দিয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে ওদের তাড়িয়ে দিয়ে শিবুদা তাড়াতাড়ি করে শেলাই করে দিলো। নইলে লাশের মালিকরা এসে ঝামেলা করবে। আর আমাদের কৈফিয়ৎ দিতে হবে।
সব শুনে ঝর্ণা বললো," দাঁড়াও, দাঁড়াও আমার সব কি রকম গুলিয়ে যাচ্ছে। তুমি যে বললে, তুমি মর্গ দেখাশোনা করো। নম্বর লাগাও। আর ডোমেরা লাশ চেরাই করে।"
কথা ঘুরিয়ে দিয়ে সতীশ বলে, "প্রথমে আমি তো ওই কাজেই ঢুকে ছিলুম। তখন কাজ কর্ম পাইনি, সরকারি হাসপাতালে কাজ, হাতে পেয়ে ছেড়ে দেবো? তাই ওই কাজে ঢুকে পড়ে ছিলুম । তখন আমাকে সব কাজ করতে হতো। তারপর প্রোমোশন পেয়ে পেয়ে এই পোস্ট এসেছি।
সতীশ মেয়েকে যা বোঝালো তাই ও বুঝে গেলো। তারপর বললো," আর কিছু ঘটেনি?"
আর একবার রেল দুর্ঘটনায় কাটা পড়া একটা লাশ দু আধখানা হয়ে গিয়ে ট্রেনের যাত্রীদের উদ্দ্যেশ্যে আঙুল তুলে বলছে, " এই, বাড়িতে একটু খবর দিয়ে দিস্।" এটা অনেকে দেখেছে। তারপর মারা গেছে। বাঁশের সঙ্গে বেঁধে এনে পোষ্ট মর্টেমের জন্য খুলে রাখা হয়েছে। আমি একটু মদ খেয়ে ছিলুম। না খেলে চলে না।
পোষ্ট মর্টেমের পর ফেলে রাখা হয়েছে লাশের মালিক এলে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। এমনসময় পরিষ্কার দেখলুম যেন পাশ ঘুরে শুলো আর গোঙানির শব্দ শুনতে পেলুম। পরক্ষনেই আবার সোজা হয়ে শুলো। আমি খুব ভয় পেয়ে গেলুম। তারপর সহকর্মীকে সব বললুম। ও আমাকে বললো, " তুই মাল খেয়ে আছিস্ তো, কী বলতে কী দেখেছিস্ ,শুনেছিস্! আর বলিস্ নি কাকেও। নে লাশ রেডি কর।"
সতীশের ছেলে মেয়ে কেউই জানে না সতীশ আজও লাশ চেরাই, সেলাই করে। একদিন ঝর্ণা উচ্চ মাধ্যমিকের ফর্ম ফিলাপ করে গার্জেনের সই আর ভর্তির টাকার জন্য বাবার খোঁজে মর্গে যায়। বাবাকে আগেই বলেছিলো, ফর্মে সই করে ভর্তির টাকা রেখে যেতে। ওর বাবা যখন বেরোয়, ও তখন বাড়ি ছিলো না। বাবা ভুলেই গেছে হবে অথবা টাকা দেবার ভয়ে ভুলে যাবার ভান করেছে, যাই হোক একটা হবে। ভাইকে সঙ্গে নিয়ে মর্গে বাবার খোঁজ করতে গিয়ে একজনকে সামনে পেয়ে জিজ্ঞেস করে," সতীশ মল্লিককে একটু ডেকে দেবেন?"
লোকটি বলে," সতীশ ? ও সতে ডোমকে খুঁজছো? কথা বুঝতে না পেরে ঝর্ণা বললো, " আমি সতীশ মল্লিককে খুঁজছি।"
— ঐ হলো। এখানে ওকে ডোম বলে সবাই জানে। লাশ চেরাই করে। তোমরা ওর কে হও?
—ছেলেমেয়ে।
তারপর লোকটি ভিতরের দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ করে হাত নাড়িয়ে বলে,
"ভিতরের যেও না। ও ব্যস্ত আছে। আমি গিয়ে ওকে বলে দিচ্ছি। কাজ হয়ে গেলে ও তোমাদের সঙ্গে এসে দেখা করবে। দীপুর আর তর সয় না। মুখ বাড়িয়ে দেখে ওর বাবাকে। দিদি ঝর্ণাকে বলে, " দিদি ওই যে বাবা। উঃ, কি গন্ধ!"
ঝর্ণা মুখ বাড়িয়ে দেখে ওদের বাবা নোংরা জামা কাপড় পরে লাশ সেলাই করছে।
দীপু বাইরে থেকে ডাকে,"বাবা, ও বাবা ।"
নাকে মুখে রুমাল চাপা দিয়ে ঝর্ণা বলে, "আঃ দীপু, বাবা এখন কাজ করছে। ডাকিস্ না।" মনে মনে ভাবে —তাদের বাবা নিজেই লাশ কাটে! তবে তাকে যে বলে ছিলো , ডোমে লাশ কাটে। তার বাবা কি তাহলে ডোম! ওই জন্যই বাড়ি ফিরে আগেই বার্থরুমে ঢুকে যায়। স্নান করে বের হয়। যারা ডোম তারাই শুধু লাশ কাটে। কি যেন বললো লোকটা, ও হ্যাঁ সতে ডোম! কি বিশ্রী কাজ করে তাদের বাবা! ঘেন্না করে না?
তাহলে তো তারা জাতিতে ডোম। ভাই বড়ো হলে ভাইকেও লাশ চেরাই করতে হবে। বাবা, কি দুর্গন্ধ! না না ও কিছুতেই ভাইকে লাশ চেরাইয়ের কাজ করতে দেবে না।
ভাইকে নিয়ে সে দূরে সরে গিয়ে বাবার জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। বিষন্নতায় ভরে যায় তার মন। বাবার জন্য কষ্টও হয়, অর্থ উপার্জনের জন্য বাবাকে এই নরক যন্ত্রণা ভোগ করতে হয় বলে। ঐ লোকটাকে দেখতে পেয়ে বলে," আমার বাবাকে একটু ডেকে দেবেন?"
— ও হ্যাঁ দিচ্ছি।
বলে লোকটা ভিতরে ঢুকে গেলো। কিছুক্ষণ পর ওদের বাবা হাত পা ধুয়ে জামা কাপড় বদলে বাইরে এসে দেখলো ওর মেয়ে ও ছেলে কিছুদূরে দাঁড়িয়ে আছে। কাছে এসে বললো, " "তোরা এখানে?"
—তোমাকে গতকাল বলেছিলাম না, আগামী কাল উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হতে হবে।ফর্মটা সই করে দিয়ে যাবে আর ২৫০ টাকা রেখে যাবে। আমি তো থাকবো না। টিউশন যাবো। টিউশন থেকে এসে দেখছি তুমি না করেছো ফর্মে সই, না রেখে এসেছো টাকা। তাই লোককে জিজ্ঞাসা করতে করতে এলুম। — তুই তো বলেছিলি কাল।
—হ্যাঁ, ঠিকই তো বলেছি। গতকাল বলে ছিলুম।
—হ্যাঁ, তাই তো! কাল কাল করে একদম ভুলে গেছি। কই দে দিকি ফর্মটা সই করে দি। ঝর্ণা ফর্মটা বাড়িয়ে দিয়ে জায়গাটা দেখিয়ে দেয় কোথায় সই করতে হবে। সতীশ সই করে দিলে ঝর্ণা হাত পেতে বললো," টাকাটা দাও।"
—টাকা দিতে হবে নয়? কতো টাকা?
—আড়াইশো টাকা।
—আমার কাছে তো মোটে দেড়শো টাকা আছে। মাসের শেষ। মাইনে হবে কাল। দাঁড়া দেখছি।
বলে সতীশ ভিতরে গিয়ে শিবুকে বললো, এই শিবুদা একশোটা টাকা দে তো। কাল মাইনে হলে দিয়ে দেবো।
—কি হবে?
—ঐ যে মেয়েটা কালকে উচ্চ মাধ্যমিকের ফর্ম জমা দেবে।
—হ্যাঁ, হ্যাঁ মেয়েটা পড়ছে পড়তে দে। তোর মেয়েটা ভালো রে। ওকে পড়তে দে। দেখবি ওই একদিন তোদের দুঃখ ঘুচিয়ে দেবে। হ্যাঁ , একশো টাকা চাইলি নয়? এই নে ধর। মাসের শেষে সবারই এক অবস্থা।
সতীশ সরকারি হসপিটালে কাজ করে ঠিকই কিন্তু পদোন্নতি না হওয়ায় অল্প মাইনেতে পড়ে থাকতে হয়েছে। আসলে ওদের তো কোন ইউনিয়ন নেই। লড়াইটা করবে কে? সতীশ মনে মনে ভাবে ছেলেমেয়ে জেনে যায় নি তো যে সে এখনও লাশ চেরাইয়ের কাজ করে। যদিও কোন কাজই ছোট নয়। তবুও সভ্য সমাজে এ কাজের কোনো মূল্য নেই। এ কাজকে সকলে নিচু নজরেই দেখে। ওর হীন কাজের জন্য ওর পরিবারকেও সকলে ঘৃনার নজরে দেখবে। তাই পরিবারের সকলে তার এই কাজকে মেনে নিতে পারে না।
বাবার এই কাজকে ঝর্ণা কিছুতেই মন থেকে মেনে নিতে পারছে না। যতো তাড়াতাড়ি পারে বাবাকে এই কাজ থেকে মুক্তি দিতে পারে সেই চেষ্টাই সে করবে। স্কুলের ভর্তির ওই সামান্য টাকা দিতে গিয়েও তাঁকে অপরের কাছে হাত পাততে হয়েছে। হ্যাঁ , এই মুহূর্তে হয়তো বাবাকে মুক্তি দিতে পারবে না ঠিকই, তবে সাহায্য তো করতে পারে। আরও দু একটা টিউশনি ধরে পড়ার খরচ তুলে নিতে পারলে বাবার কিছু সুরাহা হয়। ভবিষ্যতে চাকরি পেলে সে বাবাকে ওই কাজ থেকে মুক্তি দেবেই দেবে। ইংরেজিতে একটা কথা আছে— ম্যান প্রোপোজেস, গড ডিসপোজেস। কিছুদিন পর ঝর্ণা কোন এক যুবকের,নাম দিলু'র কুনজরে পড়ে যায়। কয়েকদিন ওর পিছনে পিছনে ঘোরে। ঝর্ণা শুধু দেখে যায় জল কতদূর গড়ায় অর্থাৎ ভাব গতিক কোথায় গিয়ে পৌঁছায়। এমনিতে ও অসভ্যতা কিছু করে না। শুধু লালসার দৃষ্টি ছুঁড়ে মারে। ভাই দীপুও সব লক্ষ্য করে। বলে," দিদি দ্যাখ ওই লোকটা কেমন ড্যাবড্যাব করে তোর দিকে দেখছে । ঝর্ণা বলে,
"তোকে ওসব দেখতে হবে না।"
দিলু তার কামনা চরিতার্থ করতে একটা ফাঁদ পাতলো।
একদিন সন্ধ্যায় দীপু খেলে বাড়ি ফিরছিলো। এমন সময় দীপু সাদা ফুটফুটে সুন্দর একটা খরগোশ দেখতে পেলো। খরগোশটাকে কোথায় যেন ও দেখেছিলো। খরগোশটাকে ধরবে বলে ছুটলো। খরগোশটা ছুটতে ছুটতে দীর্ঘ দিন বন্ধ হয়ে যাওয়া একটা কারখানায় গজিয়ে ওঠা বৃহৎ জঙ্গলের মধ্যে ঢুকে গেল। সচরাচর ওই জঙ্গলে কেউ ঢোকে না। দীপু ওটার পিছনে ছুটতে ছুটতে জঙ্গলে ঢুকে গেলো। কারসাজি করে ওকে জঙ্গলে ঢোকানো কারো উদ্দেশ্যে ছিলো। দীপু যেই না জঙ্গলের মুখ পর্যন্ত গেছে, অমনি মুখে কালো কাপড় ঢাকা জনা তিনেক ছেলে এসে ওর মুখে সেলোটেপ মেরে ওই জঙ্গলের একটা গাছে বেঁধে রেখে চলে গেল। ভয়ে দীপু কাঁদতে লাগলো। এদিকে ভাইয়ের ফিরতে দেরি হচ্ছে দেখে ঝর্ণা বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়লো ভাইকে খুঁজতে। পথে দিলুর মুখোমুখি হলো। দিলু বললো," ভাইকে খুঁজছো?" কথা বলার ইচ্ছে না থাকলেও বলতে হবে। প্রয়োজনে টেক বজায় রাখলে চলে না। তাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে বলে উঠলো, হ্যাঁ হ্যাঁ, ওকে দেখেছেন?" উত্তরে দিলু বললো," ওই একটু আগেই তো দেখলাম।" বিশ্বাস করে ঝর্ণা এগিয়ে গেলো। জায়গাটা নির্জন এমনিতেই সন্ধ্যে হয়ে এসেছে। ঝর্ণার ভয় ভয় করতে লাগলো। দিলু লুকিয়ে লুকিয়ে ঝর্ণাকে এমনভাবে অনুসরণ করে চললো, যাতে ঝর্ণা ওকে দেখতে না পায়। তেমাথার কাছে গিয়ে ঝর্ণা ডানদিক বাঁদিক দেখতে লাগলো। দিলু এসে হাজির হয়ে বললো," ওই দিকেই তো যেতে দেখলুম। যে দিকে দীপুকে বেঁধে রাখা হয়েছে ঠিক তার উল্টো দিকে একটা পোড়ো ঘর ইতিমধ্যেই পরিষ্কার করে রেডি রাখা হয়েছে। সেখানে পৌঁছতেই দিলু বললো, "এই ঘরের মধ্যে তো ঢুকতে দেখলুম।
" এই ঘরে কি করছে? এই দীপু, এই দীপু।" —বলতে বলতে ঝর্ণা যেই দরজাটা খুলে ঢুকতে গেলো । দরজা খুললো না। ঝর্ণা বললো," একি, এ তো বন্ধ। চাবি দেওয়া।এতক্ষণে ওর তিন বন্ধু এসে হাজির হয়ে গেছে। দিলু হাতে চাবিটা দোলাতে দোলাতে বললো, " এই যে চাবি।"
— ও, এসব তোমাদের প্ল্যান!
কিন্তু কেন? আমার ভাই কি করেছে?
বলেই হাত থেকে চাবি কেড়ে নিয়ে দরজা খুলে ফেললো। দেখলো কেউ নেই। সঙ্গে সঙ্গে দিলু বলে উঠলো,"তোমার ভাই কিছু করেনি। করেছো তুমি।
—আমি! আমি কি করেছি? উত্তরে দিলু ঝর্ণার মুখটা চেপে ধরে ধস্তাধস্তি করতে থাকে। সকলে মিলে ওরই ওড়না দিয়ে ওর মুখ বেঁধে ফেললো। ভিতর থেকে দরজার ছিটকিনি তুলে দিয়ে সকলে মিলে ওকে ধর্ষণ করে ওড়না দিয়ে ওর গলায় ফাঁস দিয়ে ওকে মেরে ফেললো। কারণ বেঁচে থাকলে ওদের বিপদ বাড়বে।
এদিকে সতীশের স্ত্রী মলিনা হাঁ করে অনেকক্ষণ সদর দরজায় দাঁড়িয়ে থেকে বললো, "ভাইকে খুঁজতে গিয়ে দিদি আবার কোথায় আটকে পড়লো? এখন কে ওদের খুঁজতে যাবে?" দিলু ও দিলুর সাগরেদরা ওখান থেকে চলে গিয়ে দীপুর বাঁধন খুলে দেয়। তারপর ওরা ওখান থেকে বিচ্ছিন্নভাবে ছিটকে যায়। দীপু কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফেরে। দীপুর মা দীপুকে দেখে বলে, "কিরে দীপু, তুই একা এলি? দিদি কোথায়?
— দিদি কোথায় আমি কি করে জানবো?
— একজনের চিন্তা কাটলো তো আর একজনের চিন্তা। আমি যে কী করি? তোর বাবাও আজ আসতে দেরি করছে! তা তুই এতোক্ষণ কোথায় ছিলি?
দীপু যা ঘটেছে আদ্যোপান্ত সব তার মা'কে বললো। এমনসময় সতীশ বাড়ি ফিরে সব শুনে বেরিয়ে পড়লো মেয়েকে খুঁজতে। কোথাও হদিস করতে না পেরে ছুটলো থানায়। থানায় ফটো সহ এফ আই আর করে ঘরে ফিরে এলো। সতীশ ভীষণভাবে ভেঙে পড়লো। পড়ারই কথা। মেয়েই তার সংসারের বল ভরসা। সেই রাতে স্বামী স্ত্রীর খাওয়া দাওয়া মাথায় উঠলো। কিছুদিন পর এলাকায় একটা দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়লো। পাড়ার লোক ভাবলো কোন জন্তু জানোয়ার মরেছে হবে। কিন্তু যত দিন যায় গন্ধটা ঐ ঘরের ভিতর থেকে ততই প্রকট হয় । তখন লোকের সন্দেহ হয়। কিন্তু কেউই ঘরের কাছে যায় না। সতীশকে এসে তারা বলে। থানায় খবর দেওয়া হলে পুলিশ এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে পোষ্ট মর্টেমে পাঠিয়ে দেয়। মর্গে লাশ চেরাই করতে চাইলো না সতীশ। খুবই স্বাভাবিক, তার যা মনের অবস্থা তাতে নিজের মেয়ের বডি চেরাই করা তার পক্ষে সম্ভব নয়। বন্ধুর মেয়ে তাই শিবুও চাইলো না। তাই অন্য মর্গ থেকে দীনু ডোম ও তার ছেলেকে ডেকে আনা হলো।
এদিকে পুলিশ সতীশের ছেলেকে জেরা করতে এসে দীপুকে জিজ্ঞাসা করে,"তুমি বাড়ি না এসে কোথায় ছিলে?
—আমি তখন ওই যে ওখানে জঙ্গলটা আছে ওখানে।
—তুমি ওখানে কি করছিলে?
—আমি একটা খরগোশের পিছু ধাওয়া করেছিলুম।
— তারপর কি হলো?
—তারপর খরগোশটা জঙ্গলের ভেতর ঢুকে গেলো।
—তারপর?
—তারপর কতোগুলো লোক মুখে কালো কাপড় ঢাকা আমার মুখে সেলোটেপ মেরে আমায় একটা গাছের সঙ্গে বেঁধে ফেললো।
— হ্যাঁ কাজটা ওরা প্ল্যান করেই করেছে। তুমি কাকেও চিনতে পেরেছো?
—না, মুখ কালো কাপড়ে ঢাকা ছিলো তো তাই।
—ইদানিং তোমার দিদির সঙ্গে কাকেও অসভ্যতা করতে দেখেছো?
—না, তবে একটা দাদা, আমি আর দিদি রাস্তা দিয়ে গেলে দিদির মুখের দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকতো।
—তার নাম কী? তুমি চেনো? কোথায় থাকে?
—আমি চিনি না। তবে ওই লোকটাকে ওর বন্ধু কিনা জানিনা , দিলু বলে ডাকতে শুনেছি ।
—কোথায় থাকে?
— ওই— ওই দিকে।
— আচ্ছা , একটা কথা বলো তো। ওই খরগোশটাকে তুমি আগে কখনো দেখে ছিলে?
—হ্যাঁ, আমি কারো কোলে ওকে দেখেছিলাম বলে মনে হচ্ছে। তবে কার সেটা মনে করতে পারছি না।
পুলিশ দীপুর মা ও বাবাকে জিজ্ঞাসা করলো," আপনাদের কাকেও সন্দেহ হয়?"
"আমি তো বড়ো একটা বাইরে বের হইনা তাই আমি বলতে পারবো না। "— দীপুর মা বললো। দীপুর বাবা বললো,
" আমি তো ডিউটিতে থাকি, আমি কি করে বলবো,স্যার?"
— হুঁ, ঠিক আছে। আমরা এখন যাচ্ছি। সন্দেহজনক কাকেও দেখলে আমাদের জানাতে ভুলবেন না। অপরাধী ঠিক স্পটে ফিরে আসবেই হাল হকিকৎ জানার জন্য।
তারপর থেকে দিলু কিংবা দিলুর সাগরেদদের আর ওখানে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায় না।
দীপুকে ওর মা জিজ্ঞাসা করে,
" হ্যারে দীপু, ওই দিলু বলে ছেলেটাকে আর দেখা যায় না?"
দীপু উত্তর দেয়, " না। আমার মনে হয় মা ওই ছেলেটাই কিছু করেছে। নাহলে আর দেখা যায়না কেন।"
কানা মনে মনে জানা। তাই দিলু এলাকা ছাড়া হয়েছে, কারণ দিলু জানে ওর ভাই ওকে ওর দিদির মুখের দিকে চেয়ে থাকতে দেখেছে। ওকে দেখতে পেলে যদি ওর নামটা পুলিশের কাছে বলে দেয়, ছোটছেলে হলেও ওর বোঝার মতো বয়স হয়েছে ও কেন ওর দিদির মুখের দিকে ওই ভাবে তাকিয়ে থাকে। হ্যাঁ যদিও ও কোন রকম অসভ্যতা করেনি। তবুও সাবধানের মার নেই। সেইজন্য ও ওই রাস্তায় আর মাড়ায় না।
পুলিশ অফিসার মিঃ অনির্বাণ সাহা একটা ক্লু পেয়েগেছেন, তার সূত্র ধরে তদন্তের কাজ চালিয়ে যাবেন বলে ঠিক করেন। তিনি এলাকায় গিয়ে তদন্ত শুরু করেন। জিপ এসে থামলো পাড়ার মোড়ে। মিঃ অনির্বাণ পাড়ার একটা দোকানে জিজ্ঞাসা করলেন," আচ্ছা, দিলুর বাড়িটা কোথায়?"
"ওই যে ইঁট বেরিয়ে আছে, ওই বাড়িটা।" দোকানদার তর্জনী তুলে বললো।
পুলিশ অফিসার হাতের রুল দিয়ে দরজায় আঘাত করলেন। আওয়াজ পেয়ে ভিতর থেকে গলা ভেসে এলো,"কে?"
—পুলিশ!
কিছুটা দেরিতে দরজা খুলে মুখ বাড়িয়ে এক মহিলা বললো,"কাকে চাই?"
—দিলু আছে?
—দিলুকে কেন? দিলু কিছু কি করেছে?
—আছে কিনা বলুন। কি করেছে পরে বলছি।
দরজা যে খুললো, পুলিশ অফিসার লক্ষ্য করলেন, একটা খরগোশ তার পিছন পিছন বেরিয়ে এলো।
— এটা কি আপনাদের পোষ্য?
—হ্যাঁ।
পুলিশ অফিসার মনে মনে ভাবলেন —বাঃ, দুয়ে দুয়ে চার হয়ে গেলো। এখানেই অপরাধের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। তদন্ত ঠিক পথেই শুরু হয়েছে।
— আচ্ছা, দিলু কোথায় বলুন।
— ও তো ঘরে নেই।
—কোথায় গেছে?
কি জানি, বলতে পারবো না। কিছু তো বলে যায়নি।
— ফিরলে থানায় দেখা করতে বলবেন।
—অফিসার ও কিছু কি করেছে?
— করেছে কিনা সে তো জানি না। সে জিজ্ঞাসাবাদ করলে জানা যাবে। আর না গেলে, আমাদের যদি আবার আসতে হয়, এসে না পেলে, আপনাদের ধরে নিয়ে যাবো।
—ঠিক আছে। এলে বলবো।
পুলিশ অফিসার ফিরে গেলো। দিলুর কাছে খবর চলে গেলো। রাতের বেলায় দিলু চোরের মতো ঘরে এসে ঢুকলো। দিলুর মা বাবা দিলুকে জিজ্ঞাসা করলো, "এই তুই কী করে এসেছিস্, যার জন্যে পুলিশ তোকে খুঁজছে? থানায় দেখা করতে বলেছে। না গেলে আমাদের ধরে নিয়ে যাবে বলেছে।
— আরে ওই যে মেয়েটা খুন হয়েছে না,সেই ব্যাপারে আমাকে খুঁজতে এসেছে।
—কেন, তুই কি এ ব্যাপারে জড়িত?
—আমি কেন জড়িত হবো? ওরা সন্দেহ করে আমায় ধরতে এসেছে।
—না, ওরা জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেবে। তুই যদি কিছু না করে থাকিস্ , থানায় দেখা কর। না গেলেই তো ওরা ভাববে তুই এই কান্ড করে লুকিয়ে বেড়াচ্ছিস্ । তখন তোকে ছেড়ে দেবে ভেবেছিস্? তোকে তো ছাড়বে না আর আমাদেরও ছাড়বে না। তোর জন্যে আমরা জেলে যাবো?
দিলু মাথা নিচু করে থাকে। মনে মনে ভাবে, পালিয়ে বেড়ালে প্রমাণ হয়ে যাবে যে ওইই রেফ এন্ড মার্ডারে জড়িত। তারচেয়ে থানায় দেখা করাই ভালো।তাহলে ওকে কেউ সন্দেহ করতে পারবে না। আর ও যদি ধরা পড়েই যায়, তাহলে ও ওদেরও ধরিয়ে দেবে। ও জেল খাটবে আর ওরা ভালো মানুষ সেজে গায়ে হাওয়া লাগিয়ে ঘুরে বেড়াবে তা হতে পারে না। অপরাধ করেছে সবাই তবে ও একাই কেন জেল খাটবে?
পরের দিন দিলু থানায় দেখা করতে গেলো। অফিসার ওকে জেরা শুরু করলেন, "ঘটনার সময় তুই কোথা ছিলি?"
"আমি ছিলাম না।" দিলু বললো।
—কোথায় ছিলি?
—আমি কাজে গিয়েছিলাম, রোজ যেমন যাই।
—কোথায়? ঠিকানাটা দে।
দিলু একটা কোম্পানিতে মাল ডেলিভারির কাজ করে। ওই দিন ও কাজে বের হয়নি। কি বলবে ঠিক করে উঠতে পারছিলো না। কোম্পানির ঠিকানা দেয়। তারপর বলে,
" আমি এখন যাই স্যার?"
—হ্যাঁ, যেতে পারিস্। তবে বাড়ি ও কাজে ছাড়া আর অন্য কোথাও যেতে পারবি না। দরকার হলে আবার ডেকে পাঠানো হবে।
ঘাড় নেড়ে দিলু থানা থেকে বেরিয়ে কোম্পানির ম্যানেজারকে ফোনে ধরার চেষ্টা করলো। ফোনে রিং হচ্ছে শুনে দিলু প্রস্তুত হলো।
—হ্যালো।
—হ্যাঁ, আমি দিলীপ বলছি স্যার।
— হ্যাঁ ,বল।
—বলছি স্যার আমি তো কাল যেতে পারিনি একটা বিশেষ কাজ ছিলো বলে।দেখুন না আমাদের পাড়ায় একটা খুন হয়েছে। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে। থানা থেকে যদি ফোন করে জিজ্ঞাসা করে বলবেন আমি কাল অফিসে ছিলাম।
— কী বললি খুন! এসব খুনখারাবির ঝামেলা তুই অফিসে ঢোকাচ্ছিস্ কেন? একে তুই অফিস কামাই করেছিস, তার ওপর বলছিস্ তুই অফিসে এসেছিলি। এ কী মগের মুল্লুক নাকি। কর্মচারীরা কোথায় কী করে আসবে আর অফিসকে বলতে হবে অফিসে ছিলো। পুলিশ অ্যাটেনডেন্স রেজিস্টার্ড দেখতে চাইবে না? এ কি ছেলেখেলা নাকি। না না ও সব এখানে হবে না।
কথাগুলো বলে ম্যানেজার ফোন কেটে দিল। দিলু বুঝতে পারলো তার বাঁচার আর রাস্তা নেই। তারপর ওর সাকরেদরা যখন বলবে —এই নোংরা কাজে দিলুই ওদের জোর করে ব্যবহার করেছে। এই মাষ্টার প্ল্যান সম্পূর্ণভাবে ওর। তাহলে ওদের থেকে ওর শাস্তি বেশি হবে। এইসব ভেবে ও ঠিক করলো পালিয়ে গিয়ে গা ঢাকা দেবে।
এদিকে পুলিশ ওর অফিসে ফোন করে জানতে পেরেগেছে যে ও ওই দিন অফিসে যায় নি। যে খরগোশ দেখিয়ে দীপু কে প্রলুব্ধ করা হয়েছে তা ওই দিলুরই কাজ। দিলু বুঝে গেছে যে ধরা পড়েগেছে। তাই ও পালিয়ে গিয়ে গা ঢাকা দেবে। তাই পুলিশ সিভিল ড্রেসে ওদের বাড়ির চারপাশ ঘিরে ফেলে। ঠিক তাই সন্ধ্যে হলে দিলু ব্যাগ গুছিয়ে বাড়ির পিছনের দরজা ফাঁক করে দেখে নেয় কেউ আছে কিনা। কাউকেও দেখতে না পেয়ে মুখ ঢাকা দিয়ে হন্তদন্ত হয়ে বেরিয়ে যেতে গেলে পুলিশ ওকে ধরে ফেলে বলে," কি পালাচ্ছিস্? পালিয়ে যাবি কোথায়? তুই যেখানেই যাস খুঁজে ঠিক বের করে এনে গরাদে ঢোকাবো। আমরা তোকে থানায় গ্রেপ্তার করতে পারতাম। করিনি। কেন জানিস্? তাহলে তোকে এই পলায়মান অবস্থায় ধরতে পারতাম না। এতে তুই আরও প্রমাণ করে দিলি যে তুইই কালপ্রিট। না হলে পালাবি কেন? চল থানায়,থার্ড ডিগ্রী অ্যাপ্লাই করে সব জেনে নেবো। থানায় দিলু কিছুতেই মুখ খুলতে চায়নি। থার্ড ডিগ্রী অ্যাপ্লাই করতে ও সব স্বীকার করে যে এ কাজের মাষ্টার প্ল্যান তারই। ও এবং ওর তিন বন্ধু মিলে এই কাজ করেছে। পুলিশ বাকি তিনজনকে গ্রেপ্তার করে স্বীকারোক্তি নিয়ে নেয়। তারপর ওদের কোর্টে চালান করে। ধর্ষণ, খুন ও এই জঘন্য অপরাধ সংঘটিত করার মাষ্টার প্ল্যানের দায়ে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২, ৩০৫ ও ৩০৬ ধারা মতে দিলু দশ বৎসরের সশ্রম কারাদন্ডে দণ্ডিত হলো এবং বাকি তিন জন আট বৎসরের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলো। প্রতিশ্রুতিসম্পন্না, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থিনী ঝর্ণার অকাল, শোচনীয় মৃত্যুর শোকে সতীশ ও তার পরিবার ভীষন ভাবে ভেঙে পড়ে। জাতধর্মে ও অভাবে পিছিয়ে পড়া সংসারে তাদের আশার প্রদীপটি এক ঝটকায় দুষ্টচক্রের চক্রান্তে নির্বাপিত হয়ে গেল!
===============
Samir Kumar Dutta
Pune, Maharashtra
Comments
Post a Comment