চাঁদে জীবন
শমীক সমাদ্দার
চন্দ্রযান দুরন্ত তৈরি, রকেটের উপর ভর করে চন্দ্রযান চাঁদে অবতরণ করবে। মাধ্যাকর্ষণ শক্তি পেরিয়ে মহাকাশযান চাঁদের কক্ষপথে স্থাপন করা হয়েছে। চন্দ্রাযান চাঁদের মাটিতে পা রাখবে সময়ের কাউন্ট ডাউন চলছে। সমস্ত নিয়ন্ত্রণ স্পেসস্কাই গাবেষণা কেন্দ্র কতৃক নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে প্রযুক্তি বিজ্ঞান অতল গভীরতায় বাসা বাঁধে। পরিচয়টা দিয়ে দিলাম এই স্পেসসিপে রয়েছে তিনজন নভোচর, একজনের নাম সাইমন আর এক জনের নাম রেমন্ড, আর এদের সঙ্গে একজন মহিলা আছে তার নাম মেরিনা। চন্দ্রযান চন্দ্রপৃষ্ঠে সফলভাবে অবতরণ করেছে। চন্দযান দুরন্ত চাঁদের পূর্ব -পশ্চিম অক্ষরেখা বরাবর অবতরণ করেছে। আলো আঁধারের গভীরতায় বড় বড় পাথরের পিণ্ড, চাঁদের সার্ফেসের উপরে পাথর জল দেখা যায়। জমাট বাঁধা অক্সিজেন আর কার্বনডাই অক্সাইড। ওরা এখানে এসেছে এক রহস্য উদ্ঘাটন করতে। যে স্থানে ওরা অবতরণ করেছে সেখানে ১০ বছর আগে ওরা এসেছিলো। রুশ সরকার ওদের দেশের ছাত্র ছাত্রী কে মহাকাশে চাঁদে পাঠাতে চায়। ওরা কেন এসেছে সেটা এখনো অধরা। সাইমনের বর্তমান বয়স হবে ৪২ বছর আর রেমন্ডের বয়স হবে ৪০ বছরের কাছাকাছি। আর মেরিনার বয়স হবে ১৭ বছর। ওরা ওদের চারপাশে অটোমেটিক রোবট দিয়ে সেন্সরিং প্রক্রিয়া চালাচ্ছে। নিয়ন্ত্রণ করছে চন্দ্রযানে প্রতিস্থাপিত সুপার কম্পিউটার আর পৃথিবী থেকে আসা ম্যাগনেটিক ফ্রিকোয়েন্সি, যা পৃথিবী থেকে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে, মস্কোর স্পেসস্কাই মহাকাশ গাবেষণাগার কেন্দ্র থেকে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। চাঁদের মাটিতে ওরা তন্ন তন্ন করে খুঁজে চলেছে, ১০ বছর আগে বিজ্ঞানী রেমন্ড আর সাইমন এখানে এসেছিলো ওদের গবেষনার কাজের জন্য ওদের মনে আছে ওরা আগে যখন এখানে এসেছিলো তখন চাঁদের সার্ফেসে কালো সাদা পাথর দেখছিলো, ওখানে আলো আর শুষ্ক জলের আবরণে একটা বলয় তৈরি হতে দেখেছিল আর সেটা ছিল লাল কমলা মিশিয়ে অদ্ভুত অপরূপ যা কথায় বর্ণনা করা যায়না। ঠিক কোন স্থানে ওরা দেখছিলো তার পরিমাপ ওদের সুপারকম্পিউটারে স্মৃতিতে আছে, যেখানে চন্দ্রযান অবতরণ করেছে সেখান থেকে পরিমাপ করে সুপারকম্পিউটার তথ্য সরবরাহ করছে। রেমন্ড বলছে "মেরিনা ক্যামেরা টা রেডি রাখো তাড়াতাড়ি আর রোবটের গতি বিধি লক্ষ্য করো।সাইমন বলছে " এখন কিরকম একটা কম্পন অনুভূত হচ্ছে জানিনা কি হল, যাই হোক আমরা দমে যাইনা মরে যাইনা, চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি সবাই সজাগ থাকো" চাঁদের পৃষ্ঠে হঠাৎ একটা দমকা ধুলোর ঝড় শুরু হল তার গতিবেগ যা ছিল তাতে স্বল্প মাধ্যাকর্ষণ আপেক্ষিক ভরের ভারসাম্য ভেদ করে কেউ চাঁদে দাঁড়িয়ে থাকতে পারেনা, চাঁদের মাধ্যাকর্ষণ পৃথিবীর প্রায় ১/৬ ভাগ মানে পৃথিবী তে যার ওজন ৭২ কেজি চাঁদে তার ওজন ১২ কেজি। একটি বস্তুর ঘনত্ব আর একটি জলের ঘনত্ব
এই ধুলো ঝাড়ের পূর্বাভাষ ওদের সুপার কম্পিউটারে ধরা পড়েছিল ওরা চন্দ্রযানের ভিতরে চলে গেছিল। ধুলোর ঝড় প্রায় ১৫ থেকে ২০ মিনিট স্থায়ী ছিল। মেরিনা ছোট্ট মেয়ে ওর ভরা যৌবন নিয়ে চাঁদের রূপ পারিদর্শন করছে মেরিনা বলে 'কি অদ্ভুত ভয়ানক এই ঝড় ভাবা যায়না স্যার" তারপর পরিবেশ পরিছন্ন হয়ে গেছিল চারিদিকে পরিষ্কার আকাশ, মেরিনা বলে "দেখুন স্যার প্রকৃতি কিরকম সুন্দর হয়ে উঠেছে তবে ধীর গতিতে বাতাস বইছে।" হঠাৎ সাইমন চিৎকার করে বলছে "তাড়াতাড়ি এদিকে এসো দেখ সুপারকম্পিউটর সিগন্যাল দিচ্ছে এখান থেকে ডানদিকে প্রায় ৭০০ ইয়ার্ড যেতে হবে যেঝানে একটা লাল কমলা রঙের বলয় দেখা যাচ্ছে সাইমন বলে "তৈরি হও সতর্কমূলক উপাদান নিয়ে আমাকে ফলো করো তাড়াতাড়ি, আর বিলম্ব নয় নয় " ঠিক ওরা সুপারকম্পিউটার আর রোবটের নির্দেশ অনুসারে এগিয়ে চলে ওই লাল কমলা রঙের বলয়ের দিকে যেখানে চাঁদের মাটি পাওয়া গেছিল, ওদের প্রাণ মন উত্তেজনায় ভরপুর, রেমন্ড চিৎকার করে বলে ' পেয়েছি আমরা পেয়েছি আমরা হেরে যায়নি, ওই দেখ সবুজ একটা গাছ বেঁচে আছে, যার বীজ আমি আর তুমি সাইমন দশ বছর আগে এখানে পুঁতে ছিলাম, এই গাছ বড় হয়েছে, আর দেখ পাশে কত চিহ্ন হাতের ছাপের, যে গুলো পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে " সাইমন মেরিনা কে বলে "এগুলোর ছবি তোলো " সবাই ফুৎকার করে বলে "আমরা হেরে যায়নি আমরা জিতেছি গবেষনার অনেক উপাদান পেলাম, এটা কি কল্প বিজ্ঞান নাকি অন্য কিছু '" ওরা সুস্থ শরীরে ঠিক ঠিক ভাবে পৃথিবীতে ফিরে এসেছিলো। ওদের অসুবিধা হয়নি, ওরা কম মাধ্যাকর্ষণ পরিবেশে হাঁটা, দৌড়ানো এবং অন্যান্য শারীরিক কার্যকলাপ করার কৌশল ইত্যাদি বিষয়ে প্রশিক্ষিত হয়েছিল, আর নয় শেষ।
==========================
শমীক সমাদ্দার, চড়ক ডাঙ্গা, বারাসাত, উত্তর ২৪ পরগনা, পিন ৭০০১২৪
Comments
Post a Comment