দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট ও সন্নিহিত অঞ্চলের কথ্য শব্দ, উচ্চারণ, বাগ্্ধারা ইত্যাদি ।। অরবিন্দ পুরকাইত
স্থানীয় কিছু কথ্যশব্দ, উচ্চারণ, বাগ্্ধারা ইত্যাদির সংগ্রহ প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল রামচন্দ্র নস্কর সম্পাদিত 'চর্যা' পত্রিকায়, ২০১৬ সালে। সে সংগ্রহ যায় নিজের 'গাঁ-ঘরের কথা' পুস্তকে, ১৪২৩ সনে। পরে এই ব্লগজিনেও কিছু সংগ্রহ প্রকাশিত হয় ১৪২৮ সনের আশ্বিন মাসে, পৌষ ১৪২৯-এ, আষাঢ় ১৪৩০, নববর্ষ ১৪৩১ ও কার্তিক ১৪৩১ সংখ্যায়। তার পরেও ধীরে ধীরে আরও কিছু সংগৃহীত হয়েছে, সেগুলিই এখানে রাখা হল।
নিজের আগের সংগ্রহে এসে-যাওয়া শব্দ যদি এখানে এসে থাকে, তা বাড়তি বা ভিন্ন কিছু বলার প্রয়োজনেই। নিজের আগের সংগ্রহ খুব ভাল করে যে মিলিয়েছি তা নয়, পুরো সংগ্রহ একত্র করার সময় তা করা যাবে যতটা সম্ভব নিখুঁত করে।
আগে আগে সংগ্রহ প্রসঙ্গে কিছু কথা বলা হয়েছে, বিশেষত প্রথম প্রকাশের সময় একটু বিশদভাবে। এখানে আর কিছু বলা নয়, কেবল সংগ্রহটাই তুলে ধরা গেল।
অখেজো/অখেজে — অকেজো থেকে। আদরের তিরস্কার হিসাবেই মূলত প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। পাজি।
অচিমিতি — (উচ্চারণ ওচিমিতি) আচমকা, হঠাৎ।
অদীয় — প্রচুর, অজস্র। অদ্বিতীয় থেকে কি? এ বচর অদীয় আম হয়চে, কত খাবি, খা না!
অব্্ঘেতে — অপঘাতে। ওর মতন নোকের ওরম অব্্ঘেতে মিত্যু হবে কেউ ভাবতি পেরেছেল! (নোকের— লোকের)
অ্যাকেয়ার — অনেক, প্রচুর, অত্যধিক। তাড়াতাড়ি হবে কী করে, অ্যাকেয়ার ভিড় হয়ছেল ন্যায়। একন করে ঝেন ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা চুরি অ্যাকেয়ার বেড়ে গেচে!
আড়কুড় — উলটোপালটা, এটা-সেটা, অনভিপ্রেত কাজ। কাজের বেলা নয়, কেবল আড়কুড় কত্তিচিস!
আবলিশ/আব্বুলিশ — খেলা থামানোর নির্দেশ। গ্রামীণ নানান খেলায় প্রচলিত। না তোমার বেলা ঝকন তকন ওরম আব্বুলিশ দিলি হবেনে।
আল্লো — আলুনো, আনুনো, অর্থাৎ লবণ ছাড়া, লবণহীন। আল্লো পান্তা খাব নাকি, এট্টু নুন দে।
আশলা — আরশোলা।
উইরে যাওয়া — উতরে যাওয়া, এগিয়ে যাওয়া।
উদোমাদা — ন্যালাক্ষ্যাপা, অগোছালো ব্যক্তি।
উলোঢুসকো — চটপটে বা স্মার্ট নয় যে, অলস এবং মাঝেমধ্যে পড়ে যায় এমন ব্যক্তি। ওরম উলোঢুসকো হলি আর পড়ে গে কাডবেনে তো কী হবে! কাডবে— কাটবে।
এনচাপ — আন্দাজ, অনুমান, ধারণা। এটার কত্্টা রোজন হতি পারে এট্টা এনচাপ কর।
এমনে/অ্যামনে — (উচ্চারণ এম্্নে, অ্যাম্্নে) এমনিতে, সচরাচর।
ওত্তর — উত্তর। ককন থেকে বলতিচি, এট্টা ওত্তর করিস না, হ্যারে!
কব্বর — কবর। কব্বরে যাবার আগে অব্দি সে কতা আমি ভুলব ভেবিচিস!
কিরকির লাগা — কাতুকুতু লাগা।
কিরকির করা — ক্ষুদ্র বালি ইত্যাদি চোখে পড়ে অস্বস্তি বা বিরক্তির ভাব বা ভাতে পড়ে হাতের ঘসা ইত্যাদির ফলে ক্ষীণ আওয়াজ করা।
কামটো/কুমটো — বেশ বড়সড়।
কামদো/কুমদো/কুঁদো — বেশ গায়-গতরে, কেঁদো।
কুদ্্লো — বড়সড়, বড় বাচ্ছা। মেয়ে হলে কুদ্্লি।
কেন করা — জেদ, রাগ বা অভিমান করা। এই বললি যাবিনি, একন ওর সঙ্গে কেন করে বলতিচিস, যাব! (কেন-এ ন হলন্ত উচ্চারণ, সঙ্গে সোঙ্গে উচ্চারণ)
কেলটা/কেল্টা — কেলাটা, কলাটা, ঘোড়ার ডিমটা। এই কেলটা দোবো, তুমি ত্যাকন আমার দাওনে! বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বলা সচরাচর।
কোঁতারে — বেশ বড় ও মোটাসোটা। জানিস, এট্টা কোঁতারে তোড়ামাচ ধরেচে মিলনদা!
খপ্পুরি — (উ. খোপ্পুরি) হালকা ছোটখাটো চেহারার।
খিজড়ি — খিচুড়ি। অত ঝামেলায় না গে ডালে-চালে খিজড়ি করে নে দেন।
খুচো — খুচরো, খুচরা।
খেঁচে দোবড়োনো/দোবড়ানো/দৌড়োনো — প্রচণ্ড জোরে ছুট লাগানো।
খোদ্্নো/খোত্্নো/খোতো — জীর্ণ, ভঙ্গুর, বিশেষত কাঠ, বাঁশ ইত্যাদি ঘুণ ধরে বা পোকায় কেটে অথবা জল-হাওয়ায় পচে-শুকিয়ে জীর্ণ বা ভঙ্গুর হয়ে যাওয়া। কাটগুনো মাটিই পড়ে থেকে থেকে খোদ্্নো হয়ে গেচে, ওদে দে দেন, পুইড়ে নোবো একন। (ওদে— রোদে) সহকর্মী প্রণব কুমার বসু বলল তাদের পূর্ব বর্ধমানের বেড়ুগ্রামে একে বলে 'খতিয়ে যাওয়া'।
গাবলুতি — গাফিলতি।
গিছালি/গেছালি — গিয়েছিলিস/গিয়েছিলি। বাবা, তোর বাড়িই আসব বলে আকলুম/আকলুঙ আর তুই কোতায় গিছালি/গেছালি?
গাঁতাল — গাঁথাল অর্থাৎ গাঁথা থেকে। বেশ কয়েকটি একসঙ্গে গাঁথা অবস্থায় থাকা।
গুল্লে — গোড়ালি। কী করে পা ধুইচিস, তোর গুল্লেয় কাদা!
গেঁটকুলে — ছোটখাটো, অতিশয় বেঁটে। সেই যে এট্টা গেঁটকুলে মতন ছাবাল অ্যায়ছেল ন্যায় ভূপতির সঙ্গে... (সঙ্গে-র উচ্চারণ সোঙ্গে)
গোঁ-ভরে — সচরাচর রাগ করে বা বিরক্তি সহকারে কারো দিকে দৃক্্পাত না করে। সবে কতাটা বলেচে কি না বলেচে, উটে গোঁ-ভরে বেইরে গেল!
ঘুরমুচে/ঘিরমুচে — ছোটখাটো চেহারার দুষ্টু বা পাজি ছেলে।
ঘিসঘিস করে — গুটিগুটি, অত্বর ভাবে, হচ্ছে-হবে ভাবে। ওরম ঘিসঘিস করে কল্লি কদ্দিন ধরে করবি তুই ওই কাজ!
ঘুঁটি ধরা — আম ইত্যাদির ফল ছোট ছোট আকার নেওয়া।
ঘেতো/ঘেত্তাবদ্দি — অলস, কুড়ে, হচ্ছে-হবে ভাব।
চড়িচোট — চটপটে। ও খুব চড়িচোট আচে, দেক না ও কাজ ওর বেশিক্ষণ নাগবেনে।
চুমরি — নারকেল কাঁদি বেরোনোর আবরণ, পরে যা ভিজিয়ে চিরে বেড়া ইত্যাদি বাঁধা হত।
চোকোল মারা — ছোবল মারা। চোকোল মেরে ওটা — ছোবল মারার মতো ভঙ্গি, আক্রমণাত্মক ভঙ্গি। বাবা, কতাটা বলিচি কি বলিনি, তা একাবারে/এগবারে চোকোল মেরে উটবেনে!
চোগলা/চোকলা — টুকরো টুকরো কাঠ ইত্যাদি।
ছটকিল — বন্ধ-রাখা খেলা চালু করার নির্দেশ।
ছিটে নাওয়া — শোয়ার সময় লেপ কম্বল ইত্যাদির নিচে হালকা পাতলা কোনও কাপড় চাদর ইত্যাদি মেলে নেওয়া।
ছেঁচারি কাঁটার মতন — প্রচুর, ছোট ছোট অজস্র কিছু ফোটা বা ফলা অর্থাৎ ফলনকে বোঝায়।
ছোল — হালকা। শোলাকে উচ্চারণ করা হয় ছোলা, তা থেকেই সম্ভবত ছোল। আলুগুনো তুলে নে, থালি ব্যাগ অনেক ছোল হয়ে যাবে।
ছোলা — শোলা।
জমাখরচ (উচ্চারণ জমাখরোচ বা জমাখরোজ) — হিসাব, বৃত্তান্ত। অত জমাখরচ দিতি পারবুনি বাপু।
জেগোল — কচ্ছপ। আমার বাবা মাটে আজ এট্টা ছোট মতন জেগোল প্যায়চে রে!
ঝাঁপুই জোড়া — অন্যকে বলার সুযোগ না দিয়ে ঝাঁপিয়ে একতরফা বলে যাওয়া। কতা শুনলি তো তবে, এগবারে ঝাঁপুই জুড়ে দেচে ন্যায়!
ঝেদি/ঝদি — যদি।
ঝোরানি — জলের ধারা (ঝরনা থেকে সম্ভবত)। ঠান্ডা-গরম জলের ঝোরানি দিস দেন দু-একদিন, ও ব্যতা চলে যাবে।
টাঁস লাগা — আঙুল ইত্যাদি সাময়িক অসাড় হয়ে যাওয়া, টান ধরা।
ডেসলাই — দেশলাই। ডেসলাইটা এট্টু দে দেন, বিড়িটা ধরাই।
ঢেকা — ঢোক মারা। বাবা, কত দিন আর ওই ওষুদ ঢেকা যায়!— পরাণের দায় খেতি হয়।
তাঙড়ানো — তুলে রাখা, সংরক্ষণ করা, ভবিষ্যতের জন্যে তুলে রাখা। একদিকি গাচের খাবি, আবার তলার তাঙড়াবি ন্যায়!
তালমেড়ো — অকৃষিযোগ্য, সাধারণত নোনা জমিতে চোঁচ-চোঁচ ঘাসযুক্ত ছোট-বড় ঢিপি।
তেলমা (উচ্চারণ ত্যালমা) — আরশোলা।
থালকুড় — থানকুনি।
নালচ/লালচ — লোভ, লালসা। আমার অত খাবার নালচ নি।
নিধাউত হয়ে পড়া — নেই বা নি ধাত থেকে। চেতনাহীন হওয়ার দশা, শরীর এলিয়ে পড়া, অত্যন্ত ক্লান্ত হয়ে পড়া।
নিশ — নিশ্বাস, শ্বাস, দম। এক নিশি তুই কত্্ধুর পজ্জন্ত গুনতি পারিস দেকি।
নুটি দে নাওয়া — একটি ঘটনা দিয়ে বলি না কেন! রান্নার জায়গার বেসিন থেকে বললাম, নুটি দে নোবো?
গরমের দুপুরে এইমাত্র নুন-চিনি সহযোগে (আমার কেবল নুন) টক দইয়ের লস্যি খাওয়া হয়েছে, ধুতে এসেছি গ্লাস-চামচ। বুলিয়ে নেব তো 'স্কচবাইট'-এ একটু থালাবাসন মাজার 'বার' লাগিয়ে। প্রায়-প্রবাসে থাকি, ছেলেমেয়েদের ছোটবেলাতেই নিয়ে এসে ফেলেছি শহরের ভাড়াবাড়িতে। মাঝে মাঝে এই খেলাটা খেলি, হারিয়ে-যাওয়া বংশধারার ভাষার অবশিষ্ট কিছু কিছু এদেরকেও শোনাতে। পুরোপুরি উপযুক্ত না হলেও একটু ঘুরিয়ে শোনালাম তাই।
ঘর থেকে মেয়ে তার মায়ের পাশ থেকে বলল, কী বলল বাবা?
ঠিক এই প্রতিক্রিয়াটিই আমি চাইছিলাম মেয়ের থেকে। দাদার থেকে ছয় বছরের ছোট হিসাবে সে আমাদের সঙ্গে গ্রাম ছাড়তে বাধ্য হয়েছে আরও ছোট বয়সে।
দক্ষিণ বারাশতের নুরুল্লাপুরের-মেয়ে তার মা বলল, খড়কুটি দিয়ে নুটি তৈরি করা হত, তা দিয়ে থালাবাসন-টাসন মাজা হত কাদা, ছাই ইত্যাদি লাগিয়ে।
— ও, আমি ভাবলুম 'ইজি' দে নোবো... না কী বলল বাবা!
এখনকার প্রজন্মের আমাদের গ্রামের অনেক ছেলেমেয়েও হয়তো অনুধাবন করতে ব্যর্থ হবে এ ভাষা। চান করানোর সময় গরু-ছাগলের গায়েও নুটি দেওয়া হত। খড়কুটির নুড়ো বা নুটি করে গু-পোনায় ফেলে দিয়ে আসা হত বাচ্চাদের পায়খানাও।
নুড়োনুড়ি — লড়ালড়ি। বাবা, ধান ক'টা না তুলতি তুলতি নাড়া ক'টা সব নুড়োনুড়ি করে কেটে নেল! আক্ষরিক অর্থে লড়াই নয় সবসময়, অন্যদের মধ্যে তাড়াহুড়ো করে।
নোল — লোল, হালকা করে ধরা বা বাঁধা ইত্যাদি। নোল করে ধর, না হলি দম এটকে তো আমি মরে যাব! [এক পিতা বলছে পিছনের ক্যারিয়ারে দাঁড়িয়ে তার গলা-জড়িয়ে-থাকা কন্যাকে]
ন্যাগরা মারা — বলা যায় ঝটকা মারা।
পরাণ ব্যাকাত্তায় — প্রাণের দায়ে। ওই জিনিস কি খাওয়া যায়!— পরাণ ব্যাকাত্তায় খেতি হয়।
পিটেন — আসলে পিঠেন। পৃষ্ঠা বা পিঠ থেকে। দিক, পার, বার। এক পিটেনের ভাড়া কত?
পেট খসানো — গর্ভপাত করা।
পেটে গদ থাকা — পেট ভার থাকা, পেট ভরা থাকা। কী রে, এত পচন্দের জিনিস রুচতিছিনি, পেটে গদ আচে না কি!
প্যান — প্যান্ট। এই প্যান আর জামা এট্টা আমি কিনে নে যাব।
ফিচকিরি — পিচকারী।
ফুতি মারা — কানভাঙানি। পচন্দ হবে কী করে,পাশের বাড়ির ওরা মেয়েটারে এট্টা আসুক আচে বলে ফুতি মেরেচে ন্যায়!
বিনকুড়ি বিনকুড়ি — বিনবিনে। কপালে বিনকুড়ি বিনকুড়ি ঘাম এসে গেচে।
বিলুতি/বিলিতি মাটি — সিমেন্ট।
ভাঙর/ভাঙুর — উপায়, রাহা, পথ, অজুহাত ধরনের। ক'জন ঝ্যাটা নে বেরুলি বেটারা পালাতি ভাঙর/ভাঙুর পাবেনে!
ভোঁয়ে — ভূঁয়ে, ভূ-তে, ভূমিতে, মাটিতে। তা তুই ভোঁয়ে বসে পান্তা খাচ্চিস কেন, এট্টা কিচু টেনে নে বসতি পারিসনি!
ভ্যাঙ — ভান। ওরম ভ্যাঙ করিসনিদেন।
মই-মাড়ান করে খাওয়া — ইচ্ছামতো ফেলে-ছড়িয়ে খাওয়া। ক'ওসা হয়ে মদনদের কত ফুলকবি ফুটে যাচ্ছে বলে ক'দিন তা মই-মাড়ান করে খেয়ে নেলে এই ক'বাড়ি! (কওসা— কুয়াশা, ফুলকবি— ফুলকপি)
মাটো — কাজে ঢিমে বা ধীরগতি যে, কাজে চটপটে নয়। অত মাটো হলি সোংসারের এত কাজ করবে ককন তুমি!
মুক-আলাপন — কথাবার্তা বলা। আমি ওর সঙ্গে মুক-আলাপন করি না।
মিত্যু খিদে — প্রচণ্ড ক্ষুধা, অভাবের সংসারে কেবলই খিদে পাওয়া।
মুক ছোটানো — না, কথার তুবড়ি ওড়ানো নয়, কেটে উন্মুক্ত করা। ডাবের মুক ছোটানো।
লাইটবয় — লাইফবয়
নেইবে/লেইবে — নামিয়ে। একটু ভদ্দরআনায় নাইবে, লাইবে।
শুকনো দাওয়া — না খাওয়া বা ভাত-পান্তা ছাড়া খুবই হালকা খাওয়া। এট্টু-আদটু জ্বর, দুটো দিন শুকনো/শুগনো দিলি ও ঠিক হয়ে যাবে।
সলপোট খোঁজা — সলপোটে সারা — সহজে সারা, ফকোটিয়ায় সারা, বিনা আয়াসে চটজলদি সারার ধান্দা। এত বড় এট্টা কাজ অত সলপোটে সেরে নেবে ভেবচ!
হাত-নম্বা/লম্বা — না, লম্বা হাত অর্থাৎ প্রভাবশালী নয়, খরচের হাত বেশি যার। খরুচে হাত, হিসেব করে খরচ করে না যে। ওজগার নি, অত হাত-নম্বা হলি আর অভাব হবেনে!
হাতবদ্দা — কঞ্জুস, কিপটে, যে সহজে পয়সা দিতে বা খরচ করতে চায় না। হাত বদ্ধ থেকে।
হেউত করা — মনে করা বা খেয়াল করা। হেউত করে দেকদেন/দেগদেন ডেসলাইটা তুই বেজনার ওপর একিছিলিস কি না।
হালুক-চালুক করে খাওয়া — ততটা ইচ্ছা না থাকা সত্ত্বেও অল্প অল্প খাওয়া।
হোড়েচাপা — হুড়ে চেপে দেওয়া যেন! কোনও একটা প্রসঙ্গ নিয়ে মজা করে কাউকে কোণঠাসা করা। বরের বন্ধুটা জল খেতি চ্যায়ছেল, তা আমাদের মিনু এক গেলাস জল দেচে। আর যায় কোতায়, বউদিরা সব এমন হোড়েচাপা করতি নাগল, শেষে মিনু ওকেন থেকে পালাতি ভাঙর পায় না! (ভাঙর/ভাঙুর — উপায়, রাহা, পথ, অজুহাত ধরনের)
হোঁগরানি — তর্জন গর্জন করা বা ওইভাবে করে তেড়ে যাওয়া। তোর অত হোঁগরানির কে ধার ধেরেচে রে! কী রে, হুঁগরে হুঁগরে আসতিচিস, মারবি নাকি!
================
অরবিন্দ পুরকাইত
গ্রাম ও ডাক — গোকর্ণী,
থানা — মগরাহাট,
জেলা — দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা,
ডাকসূচক সংখ্যা — ৮৪৩ ৬০১।

Comments
Post a Comment