Skip to main content

মানুষের অস্থিরতা : বাংলা সাহিত্যে প্রভাব ।। তপন মাইতি

নবপ্রভাত

প্রবন্ধ

মানুষের অস্থিরতা : বাংলা সাহিত্যে প্রভাব

                                   তপন মাইতি


নদী আর সাগরের সাথে তুলনা করলে অস্থির বা চঞ্চল হবে নদী।তার কারণ সাগরের চেয়ে নদীর গভীরতা কম।কিছু কিছু নদী যদি সাগরের গভীরতা ছাপিয়ে যায় সে কথায় যাচ্ছি না আপাতত।ওদিকে ফুলস্টপ দিয়ে মানুষের অস্থিরতার দিকে আলোকপাত করবার চেষ্টা করছি।মানসিক অস্থিরতায় ভোগা মানুষ কখনোই সুখি হতে পারে না।তারসাথে সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে।
ভোররাতে করল।বিকেলে সন্ধ্যার দিকে করল। রাতে খাওয়ার পর করল। তবু বলছো করেনি?বলি একটা ছেলে কতবার ফোন করতে পারে বলো? বলছি তোমার মাথা টাথা ঠিক আছে তো?এরকম করতে থাকলে মাথায় জল ঢেলে দেব।আগে তো এমন বলতে না?আগে তো এমন করতে না?যত বয়স হচ্ছে তত দিন দিন ভীমরতি চাপছে?মনে আছে ছেলেটা দিন দিন বড় হচ্ছে?আগের দিনের কথা একটু ভাবো সোনার বাবা?তখন হাতের লেখা চিঠির যুগ ছিল।এত ফোনাফোনি ছিল না সেদিন।এখনকার কথা আর আগেকার কথার মধ্যে আকাশ পৃথিবী চাঁদ পার্থক্য।সে কথা বললে শুনবে কেন এখনকার ছেলেরা?তারা কি সেদিনের পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছে কখনও?হয়নি তো? বুঝবে কীভাবে?যেমন যুগ তেমন তাল মিলিয়ে চলতে হয়। না চলতে পারলে পিছিয়ে পড়তে হয় বলে মনে হয়।
এখন যান্ত্রিক-দ্রুত-শর্টকাট যুগ।আধুনিক যুগে কাজের অনেক দরজা খুলে গেছে ঠিকই।তবে যন্ত্র কেড়ে নিয়েছে মানুষের হাতের কাজ ও গুরুত্বপূর্ণ সময়।১০ জনের কাজ একটি যন্ত্র করে দিচ্ছে মুহূর্তের মধ্যে।বেকারত্ব বাড়ছে।পৃথিবীতে জনবিস্ফোরণ ঘটে চলেছে অনবরত।মানুষের ভিড় যত বাড়ছে।তত ঘর বাড়ছে।ছোট পরিবার সুখী পরিবার মানসিকতায় দিন চলছে।ফলস্বরূপ চাষের জমিন কমছে।জমিন কমলে খাদ্য সংকট বাড়ছে।একটা জমিতে যতই বারবার চাষ করা হোক না কেন।চাহিদা কি মিটবে?জমির মাটির উর্বরতা কমে যাচ্ছে ক্রমাগত।ক্ষতিকর কীট পতঙ্গ পোকামাকড় রোগ শোক বাড়ছে।দুর্যোগ বাড়ছে।ফলে মানুষ অপুষ্টিতে ভুগছে।অভাবগ্রস্ত হচ্ছে মানুষজন।যত অভাবগ্রস্থ হচ্ছে তত মানুষের অস্থিরতা বাড়ছে।এটাই স্বাভাবিক এটাই বাস্তবতা ও এখনকার হালহকিকৎ।
এই ধরুন!আজকের দিনে সবার হাতে হাতে মোবাইল।ধরুন আপনার হাত থেকে কয়েক মুহূর্তের জন্য আপনার মুঠোফোনটা হারিয়ে গেল বা কেউ ছিনিয়ে নিল!আপনার কত নথিপত্র হারিয়ে যাবে বলুন তো?পাগলের মত হাতড়ে বেড়াবে।আপনার কি অবস্থা হবে একবার ভাবুন।আপনি কেমন অস্থিরতায় ভুগবেন বলুন তো?এই অস্থিরতায় বসে জল্পনা কল্পনা ভাবনায় শান দিতে হবে।
মানুষের জীবনে মোবাইল প্রতিনিয়ত বহুমুখী ব্যবহৃত হওয়ায় অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে মানুষজন।এর প্রভাব অত্যন্ত সুদূরপ্রসারী।বহু কাজ একসাথে করা হয়ে যায়।ইচ্ছেমতো ভার্চুয়ালের বিভিন্ন শাখায় অবাধ বিচরণ করতে পারা যায়।স্মার্টফোন বা আইফোন থাকলে আপনার হাতে কত অপশন চলে আসবে।ঘড়ির সময় থেকে ব্যাংক ব্যালেন্স,রিচার্জ বা নিত্যনৈমিতিক যাবতীয় প্রয়োজনীয় দেখতে এবং কাজ সম্পন্ন করতে পারবেন।ঘরে বসে কাজ করতে পারবেন তা হাতে নাতে।মানুষের হাতে যখন বহু অপশন চলে আসে সব ভালো ভালো তথ্য সুবিধা পেয়ে যাবেন। তখন মানুষ কোনটি ছেড়ে কোনটি ধরবে এমন অস্থিরতার মধ্যে পড়া খুব স্বাভাবিক।
এই সেলফি প্রয়োজনীয় অ্যাপস ডেভেলপমেন্ট যুগে মানুষের হাতে যেমন বহু অপশন রয়েছে তেমন করে মানুষের ব্যস্ততা ও বেড়েছে।মানুষের যত ব্যস্ততা বাড়বে তত অস্থিরতা বাড়বে।
এখন রিলাক্স আর ভোগের যুগ।আপনি কেন বই কিনে পড়বেন বলুন তো?আপনি ঘরে কেন আলমারি ভর্তি বই রাখবেন?শুধু শুধু ঘরের জায়গা অধিকার করে রাখা কী ঠিক হবে?এই ওয়াইফাই ইন্টারনেট বিভিন্নরূপ অ্যাপসের যুগে কত কম দামে পিডিএফ পেয়ে যাবেন মুঠোফোন এক মুহূর্তের মধ্যেই?ডাউনলোড করতে পারবেন।এই মোটা মোটা বই বইতে অসুবিধা ও হ্যাঁপা আছে।সেটা যদি মোবাইল বন্দি থাকে তো বেশ ভালো হয়।তাই না?সেটা খুব শৌখিন স্টাইল পোর্টেবল খুব সুবিধাজনক তাই না?মানুষের যেটা সুবিধাজনক সেটাই গ্রহণযোগ্যতা পায়।মনে রাখতে হবে বেশি আরাম হারামের কারণ।অনেক ক্ষণ মোবাইল স্ক্রীনে চেয়ে থাকলে অন্ধকার হয়ে আসে এবং ঝাপসা লাগে।যদিও স্ক্রীনটাচ হওয়ায় অনেক সুবিধা হয়েছে।
এখন মানুষের বিনোদনের চাহিদা এসে গেছে হাতের মুঠোফোনে।অনেক সিনেমাহলগুলোয় তালা ঝুলছে।একটা কথা আছে না?অতি জিনিসটা একদমই ভালো না।সে যাইহোক না কেন।মানুষের অস্থিরতার শিকার হতে হয় খুব।এর প্রভাব বাংলা সাহিত্যে ও পড়ে।যেহেতু আমাদের মাতৃভাষা বাংলা।আমাদের পিতৃভিটে মাটির বাতাসে মিশে আছে বাংলা ভাষা।মায়ের ঘুম পাড়ানি গান।ঠাকুরমার ঝুলি।আবোল তাবোল। বর্ণপরিচয়। সহজপাঠ। একুশে ফেব্রুয়ারি।সাহিত্য হল সমাজের দর্পণ।সমাজের মধ্যে সামাজিক অর্থনৈতিক রাজনৈতিক অস্থিরতা যত বাড়বে বাংলা সাহিত্যের স্রষ্টা-সৃষ্টি স্থাপত্য ভাস্কর্য নিদর্শনে তত অস্থিরতার ছাপ পড়বে এটাই স্বাভাবিক।
আসলে আগেকার মানুষের কিছু থাক আর নাই থাক তবু একটা বইয়ের আলমারি থাকতো।তারা সময় কাটাত বই পড়ে।এখন মানুষের কাছে বইয়ের বদলে রয়েছে মোবাইল ফোন।আর মোবাইল থাকলে অতি বহু অপশন ও প্রচুর পরিমাণে ভ্যারাইটি আছে।তা মানুষের সময় কাটাবার জন্য যথেষ্ট।আপনি যেমন ভাবে মোবাইল ব্যবহার করবেন কেমন করে তার সুফল কুফল ঠিকই পাবেন।সেটা মানুষের ব্যবহারের উপর ডিপেন্ড করে।এবার মানুষ পড়ে কষ্ট করতে যাবেন কেন?যদি তার কাছে পড়াশোনার গল্পটি যদি অডিও ভিডিও একসাথে পেয়ে যান অ্যাপসে বা ব্লগে এবং সেটা পাওয়া যায় সস্তায় কম দামে।তাহলে আপনি কোনটা বেছে নেবেন বলুন তো?মানুষ ওটাই করছে এবং করাটি স্বাভাবিক তাই না?
এই দ্রুত যুগ ব্যস্ততার যুগে পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা উল্টে পাল্টে প্রিয় লাইনে আন্ডারলাইন করে উপন্যাস পড়বে কে?তেমন পড়বাবার মানুষ আছে?শখ থাকলেও সময় কি তিনি পান?আপনি কি করবেন বা করেন?বোধহয় না!আপনি যদি না যান তাহলে আপনি খুব ভালো।ধরে নেওয়া যাবে আপনি আর পাঁচজনের মত নয়।আপনি ব্যতিক্রম।
ষোলো লাইনের কবিতা দু লাইন পড়তে পড়তে স্কিট করে সেই সময়ে পাঁচ সেকেন্ডের অনেকগুলো রিলস দেখে নেয়।কম সময়ের মধ্যে আপনি বেশি বিনোদন পেয়ে যাচ্ছেন?দীর্ঘ কবিতা তো দূরের কথা কবিতা পড়বার লোক দুনিয়াতে তুলনামূলক ভাবে অনেক কমে গেছে।এসবের জন্য আরও সংখ্যা কমে যাচ্ছে ক্রমাগত। আর যে সমাজের মানুষ যত কম বই পড়েন সে সমাজের অস্থিরতা তত বেশি দেখা দেয়।মানুষের প্রকৃত যদি কেউ বন্ধু থাকে সে হল ভালো ভালো বই। ভালো বই অমৃতযোগ অমৃত সমান।একটি বই মানুষের জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে।সময় কাটাতে পারে।বিনোদনের সামগ্রী হতে পারে।একটি বই একজীবনের অনেক কিছুই হতে পারে।
আজকাল শুধু পড়েও মন টেকে না পড়ুয়াদের।পড়তে বসলে ফোন।স্কুলে যেতে ফোন।পথ হাঁটতে হাঁটতে ফোন।খেতে বসলে ফোন।ঘুমোতে গেলে ফোন।আর সেই ফোনের মধ্যে যদি বই থাকে।পড়াশোনার শিখন পদ্ধতি থাকে।তাহলে কেল্লাফতে।এই বহুমাত্রিক যুগে কোনো একদিকে থাকলে চলবে না।ভালো মন্দ উভয়েই নিয়ে চলতে হবে।তবে ভালোকে দমিয়ে মন্দকে প্রশ্রয় দিলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে।মানুষের মানসিকতা মুঠোফোনের মত হওয়ার ফ্রাসট্রেশনে ভোগে প্রতিনিয়ত।আমাকে কিছু একটি করতে হবে।নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে এই অস্থিরতায়।ফলে অস্থিরতা বেড়ে যাচ্ছে ক্রমাগত।তারা মানুষের ভিড়ের মিছিল যেদিকে হাঁটছে তার বিপরীত দিকে হাঁটছে।তারা রহস্যময় ভূত,ভৌতিক,অলৌকিক গল্পের দিকে ঝোঁক বাড়ছে।ওইদিকে ঝোঁক বাড়ছে।কারণ মানুষ ব্যতিক্রমী কিছু চাইছে।একটু অন্য স্বাদ পেলে মানুষ মুখিয়ে পড়ে।ফলস্বরূপ বাংলা সাহিত্যের সৃজনশীল মানুষজন নিজেদের ভালো লাগা বা মাথায় নতুন প্লট ছেড়ে ওদিকে ঝাঁপিয়ে পড়ছে।কারণ মানুষ নিচ্ছে আজকের দিনে শুনতে বেশ খারাপ লাগে মানুষ নাকি খাচ্ছে!এর অস্থিরতার প্রভাব স্রষ্টার উপরেও পড়ে বা শিল্পীদের উপরে বর্তায়। এই অস্থিরতার প্রভাব সাহিত্যও পড়ে।
মানুষ যেভাবে চাইছে সেভাবে করতে গিয়ে অনবদ্য অসাধারণ কিছুই হচ্ছেই না।ক্ষণজন্মার মত হুজুগে আবেগী শিল্পসত্ত্বা বেঁচে থাকে অস্থিরতায়।প্রাণবন্ত সহজিয়া প্রাণোচ্ছ্বল হৃদয়ঙ্গম হচ্ছে কোথায়।ফলে পাঠকগন মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।আকৃষ্ট না হয়ে অনীহা দেখা দিচ্ছে।এমনভাবে দেওয়ার চেষ্টা করলে একটা যুগ শেষ হয়ে যাবে পক্ষাঘাতের মত।এমন চলতে থাকলে পঙ্গু হয়ে যেতে পারে।এখনকারের মানুষ ভার্চুয়াল জগতে ডুবে থাকে প্রতিনিয়ত।ফলে অধিকাংশ মানুষ শিক্ষিত বা পড়াশুনা বা জ্ঞান সঞ্চয় থেকে দূরে যাচ্ছে।এখন ভার্চুয়ালে অবাধ স্বাধীনতা।আমাদের সাহিত্য ভার্চুয়াল কেন্দ্রিক হতে হবে।হলে পাঠকবৃন্দের সন্তুষ্টি পাবে।
কিস্তি খেউর আর নিষিদ্ধ ছবির ফোয়ারায় ভাইরাল হয়ে যাচ্ছে মামুলী ফিল্টার লাগানো অতিসাধারণ সুন্দর সুন্দরীগন।কিছু ফেক আইডি।কিছু ফেক আইডি নিয়ে দু'নম্বর বেআইনী কাজ রমারমা চলছে গোষ্ঠীবদ্ধ ভাবে।নৈতিক শিক্ষার জায়গাটা কোথাও যেন অপূর্ণ থেকে যাচ্ছে। মানুষের রুচি মার্জিত সেটা উবে যাচ্ছে মনে হচ্ছে দিন দিন।লাজ-লজ্জার মাথা খেয়ে ফেলছে ক্রমাগত।ফলে মানুষ একটা শিক্ষিত আর অশিক্ষিতর মাঝ বরাবর থেকে যাচ্ছে।মানে ধুতিটাও ছাড়তে পারছে না আবার শুভদিন আসলে পড়তেও পারছে না।আবার ইঙ্গবঙ্গ বাবু হচ্ছে।একটি বাক্য সম্পন্ন হচ্ছে তিনটে ইংরেজী দুটো হিন্দি আর না পারলে তিনটে কোনরকম বাংলা ভাষা গুঁজে দিয়ে কোনরকম বলে স্মার্ট হওয়ার দেমাক দেখানোর ধারাবাহিকতা চলে আসছে দেখা যাচ্ছে।এই জগা-খিচুড়ি সংমিশ্রণ সংস্কৃতি বাংলা সাহিত্যে প্রবেশ করছে।আর বানানের কথা বলব কি তার তো কোন মাথামুন্ডু নেই।
 এই জনবিস্ফোরণ,কর্মসংকট,কর্মসংকোচন,বেসরকারিকরণ,ই-কমার্স ও দ্রুত আপডেট যুগে শুধু তীব্র প্রতিযোগিতা আর প্রতিযোগিতা।ফলে সেরার সেরা হওয়ার প্রতিযোগিতা।সে ক্যারিয়ার হোক আর বাংলা সাহিত্য হোক।তোমাকে কিছু না কিছু একটা হতে হবে বা করতে হবে তবেই আপনাকে চিনবে এর অস্থিরতায় ভুগছে।এখন ক্লাসে হয় খুব ভালো ছেলে হও নচেৎ খুব খারাপ ছেলে হও। তবেই তোমাকে ক্লাসমেট,জুনিয়র সিনিয়র ক্লাসশিক্ষক থেকে প্রিন্সিপাল এক ডাকেই চিনবে।এই হাই নম্বর যুগে বেশি নম্বর না তুলতে পারলে কিছু করতে পারবে না।কারণ এটাই সিস্টেম।সেজন্য ডিভিশন থেকে এখন সেমিস্টার গ্রেডেশন এসেছে।ঠিক এমন ভাবে বাংলা সাহিত্যে একটি বিপ্লব বা নবজাগরণ ঘটাতে হবে।কাজ করে ফেলতে পারলে পাঠকদের ভালোবাসা থেকে কেউ আটকাতে পারবে না।
এখন মানুষ একটুতেই সন্তুষ্ট নয়।এক্সপেক্টশন অনেক বেশি।আগ্রাসনও খুব।আগ্রাসী না হতে পারলে এই তীব্র প্রতিযোগিতার ইঁদুর দৌড়ে সবার পিছনে পড়ে থাকতে হবে। আমাদের প্রতিবেশীর ছেলে অনি অঙ্কে একশোর মধ্যে একশো পেয়েছে।সকলে বলবে। এটা সবেমাত্র মাধ্যমিক।সবে তো শুরু।এখন অনেক বাকি।এখানে এত নম্বর পেয়ে ডানা গজিয়ে গেলেই সব যাবে।হয়ে গেল ধপ করে পড়ে যাবে বাস্তবের মাটিতে। নিজেও বুঝতে পারবে না।এই পড়াশোনা ধরে রাখো যতদিন না নিজে প্রতিষ্ঠিত করতে পারছ ততদিন থামবে না।মাঝখানে কত ভালো ছেলে তলিয়ে গেল নিজের চোখে দেখলাম।তেমন ভাবে বাংলা সাহিত্যেকে তলিয়ে যেতে দিলে হবে?
একটা কিছু পাওয়ার জন্য কত কিছু ত্যাগ করতে হয় জানা আছে?তুমি কত কঠোর পরিশ্রম করলে কত অধ্যাবসায় থাকলে কত ধৈর্যশীল হলে সেটাই তোমার সফলতার উপর নির্ভর করবে।তবে মনে রেখো তপু আট ঘন্টা ধরে পড়েছে অনি।আমাকে দিনে ৯ ঘন্টা ধরে পড়লে হয়তো ভালো রেজাল্ট হবে।এই পথে না গিয়ে দেখো নিজেকে আগে চেনো। নিজের দুর্বল পয়েন্ট আর স্ট্রং পয়েন্ট চিনতে হবে।তুমি কি পারো আর কি পারো না।কোনটি খুব সহজে ভালো লাগে।সেটাই কর।যেটা সহজে আসে সেটাই গ্রহনযোগ্য।সেটি জীবন হোক বা বাংলা সাহিত্য।
পৃথিবীতে কোনরূপ তুমি সস্তা নও।শুধু মনে করলে হবে না সেটা কাজ-কর্মে দেখাতে হবে এবং প্রমাণ দিতে হবে।এটা দিয়ে কোন ভবিষ্যৎ নেই আমি বলব না। কোন স্বপ্ন ছোট নয়! স্বপ্ন দেখে সবাই কিন্তু বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কতজন আছে? পৃথিবীতে তা খুব সামান্য।বেশিরভাগই আমরা তো স্বপ্ন দেখে ঘুমিয়ে পড়ি আর স্বপ্ন দেখে মৃদু ব্যর্থতার হাসি হেসে ফেলি।এই স্বপ্ন ভাঙা স্বপ্ন নিয়ে অস্থিরতা নিয়ে বেঁচে থাকে মানুষ। 
আমাদের চোখের সামনে পাড়া-প্রতিবেশীর একটি ছেলে সুমন নাম তার।পড়াশুনায় ভালো। বাবা-মা দুজনে চাকরিজীবী। বাবার ছোটবেলার স্বপ্ন ছিল ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার। হয়নি।কোনমতে টেনেটুনে কোনমতে স্কুল শিক্ষকের চাকরি পেয়েছে।তা আবার অনেক কাঠ খড় পুড়িয়ে।এখন তার ছেলেকে সেই স্বপ্নের টিপস দেয়। বাবা তোমাকে ইঞ্জিনিয়ার হতে হবে...ইঞ্জিনিয়ার হতে গেলে এভাবে পড়তে হয়।ওভাবে আঁকতে হয়।তেমন অভ্যেস করতে হয়।অনুরূপ এভাবে ডিসপ্লিন হও।ইঞ্জিনিয়ার পেশাটি এমন যে যেকোন কিছু করতে পারবে একজীবনে।তার মা স্কুলে পড়ান।ছোটবেলায় তার ইচ্ছে ছিল ডাক্তার হওয়ার।বাপের বাড়ির আর্থিক দুরবস্থার জন্য জীবনের দিক পরিবর্তন করে কোনরকম স্কুল শিক্ষিকার চাকরি পেয়েছে।সুমন তোমাকে ডাক্তার হতে হবে।এমডি হতে হবে।তার জন্য ইংরেজিতে দক্ষ হতে হবে।পড়াশুনা আরও ভালো হতে হবে।একবার ডাক্তার হতে পারলে জীবনটা ঝিঙ্গালালা।তোমাকে মানুষের মত মানুষ হতে হবে।মনে রাখবে নিজের জীবন বাজি রেখে মানুষের জীবন বাঁচাতে হবে।সুমনের দাদু ব্যাংক ম্যানেজার রিটিয়ার্ড মানুষ।তিনি বললেন।চল্লিশ বছর অভিজ্ঞতা থেকে বলছি দাদু?ব্যাংকে চাকরি একদম করবি না। আমি যেভাবে ঠকেছি তুমি ঠকবে না দাদু।যদি আমার কথা শোনো।ওখানে শুধু টাকা ছাড়া কোন গল্পই নেই। মানুষের শুধু সমস্যা আর সমস্যা। সমস্যার শেষ নেই। যদিও সকলকে ব্যাংকেই যেতে হয়। তবু তোকে বলবো দাদু আজকালকার যুগে সব মিটে যাবে নিমেষের মধ্যে।তোর গাড়ি বাড়ি ব্যাংক ব্যালেন্স সব হবে।যদি তুই নেতা মন্ত্রী হতে পারিস।ঠাকুমা রিটিয়ার্ড উকিল।জানিস দাদু এটিএম ক্রেডিট কার্ড অনেক দেখলাম দাদু।মানুষ এখন বড় জটিল।চোখের সামনে পরিবারে সবকিছু শেষ হতে দেখেছি।আর শেষ হওয়ার বাকি কি আছে দেখতে?তুমি বাবা কলেজে প্রফেসর হও। তার মানে পড়াশোনায় তুমি ভালো।আত্মীয়-স্বজন পরিজন সকলে যে যার মত কথা বলে।কেউ বলে ভালো ছবি আঁকো।কেউ বলে ভালো পড়াশোনা করো।কেউ  বলে ভালো রেজাল্ট করো।কেউ বলে ভালো সাঁতার কাটবে,কেউ বলছে ভালো দৌড়োবে, বন্ধু বান্ধবী সবার সঙ্গে ভালো করে ঘুরবে। জীবনের সবকিছু করতে হয়।যতক্ষণ বাঁচো এনজয় করে যাও।দুঃখের বিষয় সুমন কিছু হতে পারেনি।
সব মানিয়ে নিতে হবে।আগে গোল্ডেন যুগের গানের সাথে সাথে এখনকার  ডিজে গানে নেচে নেওয়া শিখে নিতে হবে।এতকিছু করার পরেও প্রতি বছর পরীক্ষা হয় না।সুযোগ কম।মানে চাকরির বাজার মন্দা।অবশেষে ভার্চুয়াল জগতে চুটিয়ে ফেসবুক ইউটিউব ভাইরাল হওয়ার জন্য মুখিয়ে পড়ে যুব সমাজ।বিলিয়ন সাবস্ক্রাইব হলেই মুনাফা।এখন ধরাছাড়া প্রেম ভালবাসা বিরহ বিচ্ছেদের যুগ।বাজারে তো চাকরি অবস্থা বেহাল তা জোটাতে না পারলে ভালো ব্যবসা জুড়ে দিতে হয়।নচেৎ ভবঘুরে,মামুলি টিউশন বা কোচিং সেন্টার বা রাস্তার পাশে খাওয়ার দোকান খুলে বসে পড়তে হয়।কিছু করবার নেই।একটা সময়ের পর না পারবে সংসার করতে না পারবে কোন চাকরি করতে।না পারবে কুলে মুটে মজুরদের সাথে কাজ করতে। একটা ইঁচড়ে পাকা ইঁদুর মার্কা লাটসাহেব বলা ছাড়া উপায় নেই।ওটাই হয়ে যেতে হয়।কিছু করবার নেই।এসব অস্থিরতার বাংলা সাহিত্যে ও প্রভাব পড়ছে।
দলছুট স্কুলছুটের মত কিছু হবে না।মানে কোন কিছু সহ্য হবে না।এবার ধামা ধরে চলতে হবে।তেল দিয়ে চলতে হবে।গাধা পিটিয়ে ঘোড়া।আর ঘোড়া পিটিয়ে বাইক করতে হবে।পৃথিবীতে সব কিছু হয় তেমনটাই মনোভাব মানুষের আজকার দিনে। এমন আকাশ কুসুম স্বপ্নের পর ব্যর্থতার গ্লানি নিয়ে বলবে এই জীবনে কিছু তো করতে পারলাম না।এভাবে শিশুদের শৈশব গেল।কৈশোরের কিশোর স্বপ্ন গেল।যৌবনের টগবগে ফাগুন গেল।অফুরন্ত ঝক্কি ঝামেলা এল। টালমাটালের দিন কাটবে কবে?যত জীবনে নেগেটিভগুলো সরাতে সরাতে জীবনটা এক্কবারে ঘুঁচিয়ে গুছিয়ে গেল।আর যত রাজ্যের খিস্তি খেউর অপসংস্কৃতির মন্ত্র জপ করতে লাগল।আর যত রাজ্যের নিষিদ্ধ গল্প,রগরগে রসিকতা স্থান কাল পাত্র না মেনে চলতে থাকলে সেই অস্থিরতার ও তার প্রভাব বাংলা সাহিত্যে পড়বে।তারপরে মাথায় হাত পড়বে।আমরা কোন সমস্যার সমাধানের পথ না খুঁজে সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে গা ভাসিয়ে দিলে কি হবে?ক্ষতি তো আমাদেরই হবে তাই না?বলবে ভাই এবারে আর কিছু করতে পারছি না লোকের পকেট মারা ছাড়া আমার আর কোন উপায় নেই।লোকের টাকা ঝেড়ে ঝুড়ে ট্রেনে বোম মেরে কোথাও লুকিয়ে পড়া ছাড়া কোন উপায় নেই।পৃথিবীতে যত নেশা আছে একসাথে সব নেশায় ডুবে থাকে।জীবনের সমস্যা এভাবে নিরাময় হয় না।হতে পারে না।বাঁচতে তো হবে তাই না?আমি বলি কি আমি মরে যাব।দেওয়াল ধরে চলব।নিঃসঙ্গ জীবন যাপন করব।তবু কারোর কোন কিছুর প্রতি একটুও লোভী হব না।লোভ সংবরন করব।তাতে এত অস্থিরতার সম্মুখীন হতে হবে না কাউকে।যা আছে সেটা নিয়ে চলতে থাকলে সারাজীবন ভালোভাবেই চলে যাবে।এই অস্থিরতা সমাজের বিশৃঙ্খলা সম্পর্ক ভাঙন বিচ্ছেদের সৃষ্টি হবে।ভাইয়ে ভাইয়ে দ্বন্দ্ব হবে।লোভ লালসায় জায়গা জমি বিষয় সম্পত্তি ভাগ বাঁটোয়ারা সৎ সততার পথে না চলে জোর করে হাতিয়ে নেওয়া হলে অরাজকতা বাড়বে।আর অরাজকতা বাড়লে অস্থিরতা বাড়বে।আর তা যেহেতু আমরা বাঙালি তাহলে বাংলা সাহিত্যেও এর প্রভাব পড়বে।
শিক্ষানীতি যদি ব্যবসায়ী নীতিতে পরিচালিত হয় সেটি মানবতার দিকে লক্ষ্য  রাখতে হবে।আর এটির দিকে আলোকপাত না করলে মানুষের শোচনীয় অস্থিরতায় ভুগতে হবে।যে সমাজের মানুষ যত বেশি শিক্ষিত এবং সমজদার বুঝদার।সে সমাজের উন্নতি কোন কিছুতেই আটকায় না।নচেৎ সব কিছু চুলোয় যাবে। সমাজের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি হবে।বড়লোকের ব্যাটারা শুধু পড়বে।বিশেষ বিশেষ সুযোগ সুবিধা পাবে।তারা সামাজিক অর্থনৈতিক রাজনৈতিক সব সুযোগ সুবিধা পাবে।ভাড়াটে বাদশারা অরাজকতা চালাবে।গরিবরা আরো পিছিয়ে পড়বে।ওরা শোষিত নিপীড়িত বঞ্চিত অবহেলিত হবে।মন সহজে খারাপের রাস্তার দিকে পরিচালিত হবে বা ধাবিত হবে। সমাজ যাবে রসাতলে। মানবতারগুলি ধুঁকে ধুঁকে মরবে।সৎ সততা রাষ্ট্র ছেড়ে চলে যাবে।সহানুভূতিশীলতা যুবকাষ্ঠে বলি হবে।মানবতা তো জ্ঞানের ঝুলি নিয়ে পাশ কাটিয়ে চলে যাবে।এসব প্রতিবিম্ব হতে বাধ্য বাংলা সাহিত্যে।মানুষ অস্থিরতায় পড়ে হাবুডুবু খাবে।কোন সময়ে কি করা উচিত তার সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারাটা মুস্কিল হয়ে পড়বে।সহজে মাথা গরম হয়ে উঠবে।অসৎ অবলম্বনকারী মানুষেরা দাপিয়ে বেড়াবে।সব কিছুতে অসন্তোষের কারণ হয়ে দাঁড়াবে।তার প্রভাব বাংলা সাহিত্যে পড়া খুব স্বাভাবিক।
এখন একটি নগ্ন নিষিদ্ধ ছবি ২৪ ঘন্টা যেতে না যেতে অসংখ্য লাইক, কমেন্ট, সেয়ার আসে।রাতারাতি ভাইরালও হয়।ইনকাম ও হয়।এই ভার্চুয়াল চক্কর এ পড়ে কত মানুষের ভবলীলা সাঙ্গ হচ্ছে তার ঠিক আছে?এখন বিচিত্রানুষ্টান হলে লোক হয় না।যদি কোন কমিটি ড্যান্স হাঙ্গামা বা ধামাকা করে।লোকের জায়গা দিতে পারছে না।শিল্পীরা কোথাও স্টেজ পারফরম্যান্স করতে গেলে।গানের সাথে সাথে বিকৃতি নাচ করতে হবে।তালে তালে শরীর নাচাতে হবে।অনেক দর্শকদের দেখেছি তারা এই মানসিকতার পরিচয় দেয় যে আমরা তো সবসময়ই গোল্ডেন গান শুনতে পারি যেকোন সময় তবে আজকের অনুষ্ঠানে এসেছি তো নেচে কুঁদে এনজয় করে চলে যাব।সব কিছুর একটা সীমা থাকে তা অতিক্রম হলে অস্থিরতা তো বাড়বেই।তাই অনেক শিল্পীদের আর ডাক পড়ে না কারণ তারা হট গান নাচ উভয়েই করতে পারেন না বলে।অনেক শিল্পী তালে তাল মিলিয়ে পপ সিঙ্গার হতে যাচ্ছে কিন্তু পুরোপুরিই ব্যর্থ হচ্ছে।আচ্ছা বলুন তো জোর করে কেমিক্যাল দিয়ে তাড়াহুড়ো করে ফল পাকালে ভালো লাগে?গাছে পাকা ফলের সুস্বাদটাই কিন্তু আলাদা।তার তুলনা হয় না।মুখে লেগে থাকা স্বাভাবিক।এভাবে কবি সাহিত্যিক শিল্পী সত্ত্বা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ক্রমাগত।তাদের মত করে কিছু করতে দেওয়া হচ্ছে না।তাদের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে অনেককিছুই।আর তারা করতে বাধ্য হচ্ছে তার কারন তারা মানুষের মনে জায়গা করবার জন্য সব কিছু করতে পারে। মনে জায়গা করবার জন্য সদা প্রস্তুতি নেয়।এই অস্থিরতার ও বাংলা সাহিত্যে প্রভাব পড়ছে বা পড়ে।
মানুষের মনের অস্থিরতা বিভিন্ন কারণে হয়ে থাকে মানুষের মধ্যে সমন্বয়হীনতা অসন্তোষ সংঘাত জটিল কুটিলতা পরিস্থিতির কারণে ও হয়। অস্থিরতায় ভোগে মানুষ। অস্থিরতা একটি জটিল ও বহুমাত্রিক সমস্যা। যা রাজনৈতিক অস্থিরতা,অর্থনৈতিক বৈষম্য,সামাজিক বৈষম্য,সাংস্কৃতিক সংঘাত,বেকারত্ব,শিক্ষার অভাবের ফলে সাংসারিক পারিবারিক প্রয়োজনীয়তা চাহিদা মনের অস্থিরতা প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।অর্থনৈতিক বৈষম্য সামাজিক অস্থিরতার প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এখন।যদি মানুষ দারিদ্র পীড়িত হয় মানুষের অসন্তোষ ও হতাশা ব্যর্থতা অবজ্ঞা ঘৃণা এগুলো শেষ থাকে না। গোষ্ঠী বৈষম্য দ্বন্দ্বের সূত্রপাত হয়। ধনী-গরীবের অবদমনের সুযোগ পায়। নিম্ন মধ্যবিত্তদের আর্থিক সুযোগের অভাব,বেকারত্ব সামাজিক অস্থিরতার কারণ বড় হয়ে দেখা দিচ্ছে। যখন যুব সমাজ শিক্ষিত হয়ে কোন কর্মসংস্থানের সুযোগ না পায় তখন তারা তীব্র হতাশায় ভেঙে পড়ে এবং হাতের কাছে যা পায় তাই নিয়ে সন্তুষ্ট  থাকতে হয়।কিছু করবার থাকে না।পি এইচ ডি হোল্ডার স্টেশনে ঝাঁট দেয়।এইট পাশ রাষ্ট্র নায়ক হয়।এমন বিষম অরাজকতা অস্থিরতার প্রভাব যেকোন সাহিত্যের উপর পড়া কি খুব স্বাভাবিক নয়?এবং অপরাধমূলক কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। সামাজিক অস্থিরতার প্রভাব অত্যন্ত ব্যাপক ও ভয়াবহ রূপ ধারণ করে। শান্তি শৃঙ্খলা ও স্থিতিশীলতা নষ্ট হয়। সামাজিক অস্থিরতার ফলে মানুষ বিশৃঙ্খলা মূলক কার্যকলাপ বৃদ্ধি পায়।আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটে। দুর্নীতিতে জর্জরিত হয়ে পড়ে।অর্থনৈতিক প্রবৃত্তি ব্যবহৃত হয় এবং বিনিয়ককারীরা ভীত থাকে সন্ত্রস্ত হয়।সামাজিক বন্ধনকে দুর্বল করে দেয়।সমাজে বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে বিভাজন এবং অবিশ্বাস সৃষ্টি হয়।যা সামাজিক ঐক্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
আধুনিক প্রযুক্তিবিদ্যার অন্যতম আবিষ্কার বা হাতিয়ার হল ইন্টারনেট ইমেইল ফোন।যোগাযোগের ব্যবস্থা অন্যতম হাতিয়ার হল মুঠোফোন স্মার্টফোন বা iphone। মনের অস্থিরতা সভ্য জীবনের একটা অপরিহার্য অবস্থা হয়ে দাঁড়িয়েছে।সময় সংকট ও চরম ব্যস্ততা মানুষের অস্থিরতার প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।এর ফলস্বরূপ মানুষের মন খারাপের আকাশ মেঘলা হচ্ছে ক্রমাগত।নিঃসঙ্গতা একাকীত্বে ভুগছে মানুষ।টেনশনের চাপে দুরারোগ্য ব্যাধিতে ভুগছে। উচ্চরক্ত চাপ,সুগারের মত দুরারোগ্য রোগ হামেশাই লোকের লক্ষণ দেখা দিচ্ছে।অপুষ্টিতে ভুগছে একাংশের মানুষজন।ক্যান্সার সৃষ্টি হচ্ছে।রোগ শোক জরা ব্যাধি দূষণ উষ্ণায়নে পরিপূর্ণ হচ্ছে।প্রাকৃতিক দুর্যোগ বেড়ে যাচ্ছে ক্রমাগত।মানুষ বই বিমুখ হয়ে পড়ছে।অস্থিরতার সমস্যা ঘুন পোকার মত কুরে কুরে খাচ্ছে।
বর্তমানে আট থেকে আশি বছরের সকলেই যন্ত্রনির্ভর মোবাইল ফোনে আসক্ত হয়ে পড়ছে।যে এটা ঠিকই এ বিষয়ে আমাদের সচেতন হতে হবে। পড়ুয়ারা পড়ায় তেমন মনোযোগ দিচ্ছে না।বই থেকে মুখ ফিরে আছে এটাও দেখা দরকার।মানুষের যত দুঃখ কষ্ট অশান্তি অস্থিরতা বাড়ছে তত মানুষ হাসির খোরাক মনের খোরাক এবং বিনোদনের পথ খুঁজে নিচ্ছে মানুষ।আগেকার মানুষ একাকিত্ব নিঃসঙ্গতা ঘোঁচাতে ভ্রমণে সময় কাটাতো প্রিয় বই পড়ে সময় কাটাতো।এমনও অভ্যাস হয়ে গিয়েছিল কারোর কারোর কিছু কিছু মানুষের।যে রাতের বেলা না পড়লে তাদের চোখে ঘুম আসতো না। এখন আর তেমন পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা উপন্যাস পড়া তো দূরের কথা ষোলো লাইনের কবিতা পড়বার সময় বা ধৈর্য নেই কারোর।কারোর স্কুল কলেজের পড়া।কারোর আপিসের ভীষণ কাজকর্ম।কারোর সাংসারিক কাজ।এসব করতে করতে বই পড়া কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ছে। তাই facebook টুইটার ইনস্টাগ্রাম ফেসবুক পেইজ ইউটিউব আর ও অন্যান্য দেখা যাচ্ছে একসাথে। মানুষের বিনোদনের অনেক অপশন হয়ে গেছে এখন। কোনরকম ভাবনা চিন্তা না করে মানুষ অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে।এভাবে চললে হয়তো মানুষের অস্থিরতার ভয়াবহতা রূপ দেখা যাবে একদিন এবং এর প্রভাব যথারীতি পড়ে গেছে বাংলা সাহিত্যে।
এই রিলস আর বহু অপশন যুগে মশকরা খিস্তি খেউর পর্নোগ্রাফি নগ্ন শারীরিক বা দৈহিক নিষিদ্ধ ছবির অবাধ বিচরণ দেখা যাচ্ছে সর্বত্র।স্বাধীনতা আছে বলে মানুষ যা খুশি তা করতে পারে না।তার একটা সীমা থাকে।তা লঙ্ঘন করলে তার খেসারত গুনতে হবে।মানসিক অস্থিরতা বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে।সেটা রুচিশীল মার্জিত হওয়া উচিত। মোবাইল ফোনে অনর্থ কথা বলে সময় নষ্ট করা।এসএমএস করা। গেম খেলা।নানা ধরনের নিষিদ্ধ ছবি দেখায় লিপ্ত না হয়ে আমরা পৃথিবীর ভালো ভালো বই পড়ে ফেলতে পারি।তাতে আমাদের জ্ঞানের পরিধি প্রসার হবে এবং উন্নত মানসিকতার পরিচয় দেওয়া যাবে তাই না?
এখনকার যুবক-যুবতীরা পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ছে সংসার ভাঙছে,সম্পর্ক বিচ্ছেদ হচ্ছে।আরও ভালো কিছু পাওয়ার আশায়।একজীবনে একজিনিসে আসক্ত হওয়ার একঘেঁয়েমি লাগার মনোভাব তৈরি হচ্ছে।একজীবনে পৃথিবীর সবকিছু দেখে নেওয়ার চিন্তা ভাবনা চলছে।সেটা কি একটি মানুষের দ্বারা সম্ভব?অনেক কিছু বাজিয়ে দেখবার জন্য,পরীক্ষামূলক অভিজ্ঞতার পাওয়ার জন্য মানুষজীবন স্বার্থপর জটিল ও কুটিল হয়ে পড়ছে। আগেকার মানুষজন রাত জেগে জেগে প্রিয় লেখকের প্রিয় লেখার লাইন খুঁজতো।তার মনের কথা কোথায় লেখা রয়েছে।তার মনের মানুষ কাছের মানুষ পাশের মানুষ হাত ধরে সারাজীবন কাটিয়ে দেওয়ার অঙ্গীকার বদ্ধ মানুষকে গুছিয়ে গাঁথিয়ে বাঁচিয়ে প্রিয় মানুষটার কাছে প্রকাশ করবে কীভাবে তা ভাবতো।উপহারের বইয়ের উপরে লেখা এখনকার ক্যাপশনের মধ্যে খুঁজে পাই তার ধারাবাহিতা।আগেকার মানুষজন তা আন্ডারলাইন করে রাখতেন বইয়ের পাতায়।কিছু না বলে বলতো বইটা পড়ে দেখো বইটায় অনেক কিছু খুঁজে পাবে।আজকাল তো সেসব বালাই নেই।চোখেও পড়ে না।এখন চার পাঁচজন সম্পর্কে ঝুলে থাকে।কোন সময় নেই!ট্রেন এসেছে চড়তেই হবে।কোথায় নামবো?সে ট্রেনে উঠলেই দেখা যাবে। ফলে সমাজের এখন এই অস্থির অবস্থা। তাদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ধরন এমন হলে তার ছাপ তো বাংলা সাহিত্যে প্রতিনিয়ত প্রতিবিম্বিত হতে বাধ্য।

মনে পড়বে সেটাই করতে হবে? না করতে পারলেই অসুখ অস্থিরতা বাড়বে এবং আরও অনেক কিছু বাড়তে বাধ্য হবে?না করতে পারলে সমস্যা?আজকের সময়ের মানুষের অপেক্ষা প্রতীক্ষায় বালাই নেই।হাইভোল্টেজ টানটান ম্যাচ দেখার আমেজের মত।ইউজ অ্যান্ড থ্রুর মত মানুষের মনোভাব দেখা যাচ্ছে ফলে অস্থিরতার সূচক ক্রমশ উর্দ্ধগতির দিকে ধাবমান।তা তো বাংলা সাহিত্যে প্রভাব পড়বেই।
মানুষের একটা বড় অংশ বই থেকে বিমুখ হচ্ছে।এর ফলে কবি সাহিত্যিক শিল্প ব্যবসা বাণিজ্য সংস্কৃতি সামাজিক অর্থনৈতিক রাজনৈতিক সব জায়গায় মানুষের অস্থিরতার ছাপ স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।মানুষ যা চাইছে তা করতে গিয়ে অস্থিরতায় ভুগছে। নতুন ভালো কিছু প্লট বা থিম রেখে সৃজনশীল স্রষ্টা রসিক রহস্য ভৌতিক জাতীয় অবাস্তব অলৌকিক অবান্তর কিছু জিনিস নিয়ে মজে আছে স্রষ্টামহল।এই সমস্ত কিছু কারণ তাদেরকে ওইদিকে যেতে বাধ্য হতে হচ্ছে অর্থাৎ ভার্চুয়াল জগতের দিকে যেতে হচ্ছে বাধ্য হয়ে। কিছু করার নেই। কারণ সভ্যতার সৃষ্টি সস্তায় সহজিয়ার  মধ্যে বেঁচে থাকে। যদি পাঠক তাদেরকে বাঁচিয়ে রাখে।তবে সে বাঁচে।সে কদর পায়।তাকে মাথায় নিয়ে নাচানাচি করে।পাঠকেরা যেদিকেই চায় যা চায় সৃজনশীল স্রষ্টারা সেই দিকেই যেতে বাধ্য হয়।উল্টোটা হওয়া কোন ব্যাতিক্রম নয়।কিছু করবার নেই।আর এই অস্থিরতার ছবি প্রতিফলিত হচ্ছে পুরো সমাজ তথা বাংলা সাহিত্যে।
সময় নেই এই অজুহাতে মানুষ ছুটছে অনুগল্প পরমাণু গল্প বা কবিতায়। লেখা শুরু হয়ে গেছে। কিছু পাঠকের চোখ তৈরি হয়ে গেছে ছোট লেখা ছাড়া পড়বই না।কে পড়বে ইয়া বড় বড় উপন্যাস।হাতে এত সময় কই?মানুষ যা অভ্যস্ত কে ছেড়ে অনভ্যাসকে অভ্যস্ত করে নিচ্ছে।তার মধ্যে ভালোবাসা বা ভালোলাগা না থাকলে সে জিনিসটা সম্পূর্ণভাবে গ্রহণযোগ্যতা পায় না। অর্থাৎ জোর করে কাঁঠাল পাকানোর মতো অবস্থা আমাদের এখন এই অস্থিরতার প্রভাব পড়ছে আমাদের সাহিত্যে।
ফলে মানুষ যেদিকে দাঁড়িয়ে আছে সেটা আছে ভেবে তার চারপাশের জন্য পাওয়ার  বা ব্যাকুলতা হয়ে পড়াটা সব সময় ঠিক নাও হতে পারে। ভার্চুয়াল এতটাই মগ্ন হয়ে পড়েছে মানুষজন যে তারা পারিপার্শ্বিক প্রকৃতির দিকে তাকাচ্ছে না।ফলে সৃজনশীল মানুষেরা ভার্চুয়ালের উপর আকৃষ্ট হতে হবে।এবং সুপাঠকের মনমত করে তুলতে হবে।তুলতে পারলেই সফলতা।আর সেই সফলতার ফসল ফলবে আমাদের বাংলা সাহিত্যের উর্বর জমিনে।
মানুষের  যন্ত্রনির্ভর মানবতা সহনশীলতা সহানুভূতিশীল নির্ভর করে তুলতে হবে।যন্ত্র মানব যেন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারে।নচেৎ তাদের চাহিদা পূরণের অস্থিরতা ক্রমশ কমবে।আমাদের মনের মতো কোনো কিছু না পেলে মানিয়ে নেব ধৈর্যশীলত দেখিয়ে।আমাদের মনে রাখতে হবে যে দেশের মানুষের মানসিকতা যত উন্নত এবং মানবিক তাদের উন্নত এবং গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে দারিদ্র্যসীমার নিচে অশিক্ষিত সর্বাগ্রেই এদের উন্নতির কথা চিন্তা করতে হলে সাহিত্য ও বিজ্ঞানের দিকে তাকাতে হবে এবং প্রসার ও সার্বজনীন গ্রাহ্য করতে হবে।সাহিত্যিক তত্ত্ব বৈজ্ঞানিক তথ্য প্রযুক্তির সাফল্য যদি জনসাধারণের মুখে হাসি ফোটাতে পারলে আমাদের সাহিত্যের সৃজনশীলতা সফলতা দোর গোড়ায় টৌকা মারবে।
আমাদেরই ব্যর্থতা আমাদের অস্থিরতা ক্রমশ বাড়তে দেওয়া যাবে না। আমাদের জীবন নিয়ে লক্ষ্য মর্মভেদ করা উচিত।অন্ধভাবে ভুলবশত অস্ত্রপ্রচার করা হলে তা বিপদ। তা বিবেচনা করতে হবে।সমালোচনা করতে হবে।তার অস্থিরতার কারণ খুঁজে অতিসত্বর তার সমাধান করে ফেলতে হবে।দুর্নীতি পাহাড় বিলাসিতায় মগ্ন হয়ে থাকা নয়।আমি তো ভালো আছি কার কি হল আমার জানবার দরকার নেই।এত বড় পৃথিবী সবার ঠিক চলে যাবে।আমার কোন যায় আসে না।এমন স্বার্থসিদ্ধির জন্য স্বার্থপরতা সমাজের কাছে কিন্তু মঙ্গলদায়ক নয়।দেওয়া যেমন ঠিকই তার অপব্যবহারী যে কি পরিণাম হতে পারে তার দূরদর্শী চিন্তাভাবনা বা চিন্তা করা আমাদের কর্তব্য।হাত পা গুটিয়ে বসে থাকলে অস্থিরতা বাড়বে বইকি কমবে না।নচেৎ পরের প্রজন্মকে শুধু কি সেলফি ছাড়া আর কি দেখানো থাকতে পারে কি?
 বিশ্বব্যাপী সামাজিক অস্থিরতা দিন দিন বেড়েই চলেছে।মানুষের জ্ঞান মান ইজ্জত নিরাপত্তা নিম্নতম পর্যায়ে পৌঁছাতে বেশিদূর আর বাকি নেই।পৃথিবী এসে মানুষের অবাসযোগ্য হয়ে উঠছে দিন দিন। বর্তমানে বিশ্বের সামাজিক অস্থিরতা মৌলিক কারণ বলা যেতে পারে।আত্মকেন্দ্রিকতা পারস্পরিক স্বার্থপরতা যুবসম্প্রদায় এবং মান ইজ্জত মর্যাদা লাভের প্রতিযোগিতা বাড়ছে দিন দিন।কাঁচা হাতে সুন্দর হাতে লেখা ধৈর্য নিয়ে পড়তে হবে।সমালোচনা মানে শুধু নিন্দা বা কাদা ছেটানো নয়।অনেক সম্মানিত পাঠক পরেন দৈনন্দিন পারিবারিক ও সামাজিক বহুমুখী চিন্তা হতাশা অস্থিরতা মাননীয়তার ঘাটতি মেটাতে পারেন। তারা যদি ধৈর্য ধরে পড়ে সঠিক মূল্যায়ন করেন।নতুনদের সৃজনশীলতা দেখানোর উত্তম প্রন্থা বা সুযোগ পায় কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে যে আমরা চাইলে সবকিছু আমাদের মনে করলে চলবে না।এই দৈনিক তার পত্রিকা ইলেকট্রনিক্স মিডিয়া সামাজিক যোগাযোগ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে অজস্র সৃজনশীল কাজ চলছে বা হচ্ছে এখন।সেটার সুযোগ নিয়ে প্রি বুকিং ব্যবস্থা,যে লিখবে সে টাকা দিয়ে বই কিনে পড়বে।তার শুভেচ্ছা মূল্য দিয়ে তাকেই  মানপত্র,মেডেল,বিরিয়ানি ভোজন করানো হবে।এটা ঠিক করতে হবে।,কেউ কারোর কিছু সৃজনশীলতা শোনে না দেখে না শুধু সেলফির ফোয়ারা হয়।বিখ্যাত কারোর পাশে দাঁড়িয়ে সেলফি যোগাযোগের মাধ্যম বা প্ল্যাটফর্ম খোঁজা ভালো।এর ফলস্বরূপ যারা প্রতিভাবান তাদের মুখ চাপা পড়ে যাচ্ছে ক্রমাগত।সত্যিকারের মেধা বা স্রষ্টাদের সঠিক মূল্যায়নের কোথাও যেন একটা খামতি থেকেই যাচ্ছে।এই অস্থিরতার প্রভাব সাহিত্যে পড়াটা খুব স্বাভাবিক।
সামাজিক অস্থিরতা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ তা মানুষের নৈতিকতা অবক্ষয়।সাহিত্য হল সমাজের দর্পণ।সমাজে যা কিছু ঘটবে কবি সাহিত্যিক স্রষ্টা-সৃষ্টিমহল শিল্প জগত তাই ফোটাতে সদা প্রস্তুত।এবার যদি কোন সংবাদ মাধ্যম সোশ্যাল মিডিয়া তার ব্যবসার জন্য তোষণ পোষন করতে ব্যস্ত থাকে।তবে অস্থিরতার সম্মুখীন হতে হবে সেটাই স্বাভাবিক।সেই সমাজের ছবি প্রতিবিম্বিত হবে সাহিত্যে এটাই স্বাভাবিক।সাহিত্যিকেরা স্রষ্টা গণ তাঁরা সত্যান্বেষী।আমাদের ভাবনার সময় এসেছে মানুষ মানুষের জন্য। সাহিত্য মানুষের জন্য।মানুষের হৃদয়ঙ্গম থেকে মস্তিষ্কে স্থান করে নিতে হবে বাংলা সাহিত্যকে।মানুষের সকল অস্থিরতা ঘুঁচে যাক মুছে যাক।সারা পৃথিবীর মানুষের কাছে তা স্মরণীয় হয়ে থাকবে এই আশা রাখি।বাংলা ভাষা হল পৃথিবীর সবচেয়ে মধুরতম সুমিষ্ট ভাষা।
==================
নাম:তপন মাইতি
ঠিকানা:গ্রাম:পশ্চিম দেবীপুর;পো:দেবীপুর;থানা:মৈপীঠ কোস্টাল;জেলা:দঃ২৪পরগণা;পিন-৭৪৩৩৮৩;

Comments

বিধিবদ্ধ স্বীকার্য :

লেখার বক্তব্যের দায়িত্ব লেখকের, পত্রিকার নয়। আমরা বহু মতের প্রকাশক মাত্র।

মতামত/লেখা এখানে জমা দিন

Name

Email *

Message *

সাম্প্রতিক বাছাই

গল্প ।। জাতিস্মর ।। আশীষ কুমার বিশ্বাস

    জাতিস্মর   আশীষ  কুমার   বিশ্বাস    গল্পের শুরুটা প্রায় ষাট বছর আগের কথা । যার নাম গৌতম, ডাক নাম ছিল বাবু ।  তার বছর তখন ছয়-সাত হবে । আমরা বা আমি তখন একটু বড় । এক সাথেই চলতো খেলা । গোল্লা ছুট, দাঁড়িয়া বান্দা, চোর-পুলিশ । যে মাঝে মাঝে খেলা থেকে বিরত থাকতো ; সে-ই জাতিস্মর । মাঠের পাশেই ছিল একটা খেঁজুর গাছ । তাতে হাত রেখে দূরের এক গ্রামের দিকে এক মনে তাঁকিয়ে থাকতো "বাবু" । গ্রামটির নাম "বিনয় পল্লী " । মাঝে বড়ো মাঠ । হাঁটা শুরু করলে তিরিশ - চল্লিশ মিনিট লাগবে । মাঝে জলে ভরপুর দেখে কখনো যাওয়া হয়নি । বাবু কে যখন বলতাম, ওপারে কি দেখছিস? ও বলতো, ওখানে আমার ছোট মা থাকে, দিদি থাকে, আমার ভুলু কুকুর থাকে । এ কথা আমাদের বিশ্বাস হতো না । আবার খেলায় ফিরে যেতাম, খেলতাম ।  কিন্তু ও বসে বসে , ওপারের গাছ পালা , বাড়ি ঘর দেখতো । কাছে গেলে বলতো , ওই যে সবুজ ,কচি কলাপাতা রঙের দালান বাড়ি, ওটাই আমাদের বাড়ি !  এই ভাবে মাস ছয়, বছর গড়াতে লাগলো । মনে প্রশ্ন জাগতে লাগলো, এ টা কি মন গড়া , বা বানিয়ে বানিয়ে বলছে? সত্যি প্রকাশ হোল এক দিন ।  সে বাড়িতে কিছু ...

কবিতা ।। ভাষার জন্য লড়াই ।। চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু

ভাষার জন্য লড়াই চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু মুখের ভাষা বাংলা ভাষা মাকে ডাকি মা, সারা বিশ্বে তোমার মাগো নেই তো তুলনা। তোমার মুখের প্রথম ভাষা আমার মনের সকল আশা তোমার ভাষায় বলবো মাগো আমার মনের কথা, এই ভাষাতেই জড়িয়ে আছে সকল স্বাধীনতা।  এই ভাষাকে আনতে গিয়ে তাজা বুকের রক্ত দিয়ে রাজপথে সব লড়াই হলো করলো লড়াই কারা, আমার মায়ের দামাল ছেলে রক্ত পলাশ যারা।  তোমার ছেলে লড়াই করে আনলো ভাষা ঘরে ঘরে সেদিন থেকে শহীদ মিনার সাজাই ফুলে ফুলে, বীর শহীদের ত্যাগের কথা যাইনি আজও ভুলে।    ++++++++++++++++++++++++++++++++    চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু শহীদ আবুল কাশেম সড়ক, বড় বাজার, চুয়াডাঙ্গা, বাংলাদেশ।

কবিতা ।। মনোজকুমার রায়

জল সিঁড়ি চেক বইয়ের পাতা ফুরিয়ে যেতে থাকে -- ঝরে পড়ে বৃদ্ধ গাছটির পত্রমুকুল কাঁচা গন্ধ বেয়ে চলে সময়ের স্রোতে  সারা ভোর জেগে থাকি ঘুমের টলে তাড়া দেয় একগ্রাস অবিশ্বাসী বায়ু দিন ফুরনো লাল সূর্যের টানে নেমে আসে পাড় ছোঁয়া জল সিঁড়ি ================= মনোজকুমার রায় দঃ ঝাড় আলতা ডাউকিমারী, ধূপগুড়ি জলপাইগুড়ি -৭৩৫২১০ মো ৭৭৯৭৯৩৭৫৬৬

চিরকুটের কবিতা

নতুন পৃথিবী আজ সকালে রোদ্দুর নামুক ভেজা বর্ষার মতো গা ধুয়ে কিছুটা পবিত্র হবো যত জীর্ণ মলিন দ্বেষ বিলীন হোক সব সময়ের তটে গা ভাসিয়ে কিছুটা বিলাসী হবো যা ছিল অতীত যা ছিল কষ্ট সবকিছু ভুলে নবীনে ব্রতী হবো আসুক ধেয়ে সতেজ হাওয়া দূর হোক যত কুণ্ঠা ব্যথা পুরানো যত বিবাদ ভুলে ভালোবাসার আবার বেড়া দেবো কিছুটা আশাবাদী কিছুটা কর্মঠ কিছুটা জেদি কিছুটা শপথ আসুক ছুঁয়ে বাঁচার আলো হাতে হাত রেখেই বিশ্বাসের ঘরে আবার নতুন দীপ জ্বালাবো

উন্মুক্ত পাগলামি ।। আশরাফুল মণ্ডল

উন্মুক্ত পাগলামি আশরাফুল মণ্ডল আহা, অপরূপ নিজস্বতার দাহ! কুঁকড়ে যায় আবহমান, সজনে পাতার বোঁটায়! ভাপওঠা ভাতের কাছে মাছি সত্তায় কী নিপুণ! তবুও ঘোর লাগা বসন্তের ডাক, হাঁকে! খেদিয়ে দেয় পা দোলানো প্রস্তাব, ওই ধুনুরি চোখ! রাংতায় মোড়া ডাকের সাজ, দে দোল দোল! হুইসেল বাজিয়ে কে রুখে দ্যায় সেই নাকছাবির রুদালি কাঁপন! খালবিল ছেঁচে পাঁচসিকের  মানত কুড়িয়ে আনে, বাংলা বাজার। ঠ্যাং নাচানো সুরে চোখ মারছে, দ্যাখো ভ্যানতারা! মুখ খোলা মানেই পাঁজরের স্রোত ভাবা যেন উগরানো টালমাটাল! ঢিল মারা প্রশ্নের রোয়াকে বক্রচোখে যেন মেধাবী কবিতা! মুছে দিও তবে লাজুক গুপ্ত রোগ, দিনরাত্রি! ভালো থেকো তোমরা বাছাধন, রং মাস সে আর কতদিন... ================    ASRAFUL MANDAL Chandidas Avenue, B-zone, Durgapur, Paschim Bardhaman, Pin - 713205,  

চন্দন সুরভি নন্দর কবিতা

টাকার মেশিন                      মায়ের ওষুধ নিয়ে শহর থেকে ফিরল রতন সবে সন্ধ্যা নেমেছে  রাস্তায় আলো কম হাসপাতাল অনেক দূরে  অদৃশ্য যম খেলাকরে  মৃত্যুর সীমান্তে শায়িত মা   শেষ রক্ষা হল না  আস্তে আস্তে ভোরের আলো ফোটে রাতের আঁধারে ঘরের দেওয়াল গুলো রাঙিয়ে গেছে কারা  তুলেছে রং বেরং এর তোরন  এসেছে নির্বাচন  শোনাযায় এবার নাকি এ টি এম চিহ্নে দাঁড়িয়েছে একজন! টাকার মেশিন........  জিতলে সবাইকে দেওয়া হবে! সামনে বসে উল্লাসে ফেটে পড়া রোবট গুলো মানুষ কবে হবে?  ====================== Chandansuravi Nanda Revenue Office  BL&LRO,Manbazar-ll Boro Purulia PIN-723131 Phone-9163332432

কবিতা ।। রঙ ।। ইউসুফ মোল্লা

  রঙ  ইউসুফ মোল্লা সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি,  পৃথিবী নানা রঙে সেজে উঠেছে।  ধূসর বাদামী রঙ তোমার দেহ,  মাথায় সবুজ রঙের বাবরি চুল,  তাতে গুঁজে রেখেছো লাল-নীল ফুল।  নববধূর মতো সিঁথিতে দিয়েছো সিঁদুর,  চোখে দিয়েছো কাজল।  দিগন্তভরা আকাশ তোমাকে নীল উপহার দিল,  সূর্যের লাল আলো তোমাকে সুন্দর করেছে।  তুমি তাদের ফিরিয়ে দিলে, বুকভরা ভালোবাসা আর স্নেহ।  মাঝে মাঝে এইভাবে হোলি আসে,  আমার মনকে রাঙিয়ে দিতে। ------------------    ইউসুফ মোল্লা উত্তর অঙ্গদ বেড়িয়া, ট্যাংরাখালী, ক্যানিং,  দক্ষিণ ২৪ পরগনা, ৭৪৩৩২৯

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬

  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠালে  অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে হলে ভালো। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # ...

ছোটগল্প ।। নীলিমার আত্মজাগরণ ।। পরেশ চন্দ্র মাহাত

নীলিমার আত্মজাগরণ পরেশ চন্দ্র মাহাত নীলিমা মাহাত, বয়স পঁচিশ প্লাস —তার বাবা মায়ের পঞ্চম তথা শেষ সন্তান। দুই দাদা —বড়দাদা শঙ্কর ও ছোটদাদা বিজয়। বড় দাদা শঙ্কর আর দুই দিদি তাদের কিন্তু বিয়ে হয়ে গেছে। একমাত্র নীলিমা আপাতত স্বামীর কোমল হাতের স্পর্শ ও সহানুভূতি থেকে বঞ্চিত এবং আদৌ কবে অথবা সেই সৌভাগ্য আসবে সেটা ঈশ্বরের নিকটই একমাত্র জ্ঞাত। সেই সঙ্গে দুবছরের সিনিয়র ছোটদাদা বিজয়েরও নীলিমার মতো অবস্থা। তারও জীবনসঙ্গিনী জুটেনি। মোট সাতজন সদস্য নিয়ে গঠিত সংসার নীলিমাদের পরিবার। মধ্যবিত্ত পরিবার —মধ্যবিত্ত পরিবার না বলে যদি নিম্নবিত্ত বলা হয় তবুও কোনো অত্যুক্তি করা হয় না। বাবার প্রত্যেকদিনের আয়ের উপর ভিত্তি করেই চলে সংসার। এই কঠোর এবং কঠিন পরিস্থিতিতেও নীলিমার মা শ্রীমতী মেনকা‚ সংসার সামলে তার ছেলেমেয়েদের পড়াশুনার প্রতি যথেষ্ট তৎপর ও সহানুভূতিশীল। তাদের পড়াশুনায় কোনো খামতি রাখেননি। যথা সময়ে তাদেরকে বিদ্যালয়ের মুখ দেখিয়েছে – টিউশনের বন্দোবস্ত করেছে। তাদের জীবন যাতে সুখকর হয় সেটাই প্রতিদিন ভগবানের কাছে প্রার্থনা করেছে। পাঁচ-পাঁচটি ছেলেমেয়ের মধ্যে সবাইকে উচ্চশিক্ষিত করে তোলা একপ...

কবিতা ।। সোনালি অতীত ।। প্রবোধ কুমার মৃধা

সোনালি অতীত  প্রবোধ কুমার মৃধা   সুশীতল ছায়াঘেরা স্নেহময়ী মাটি মা।   সে আমার জন্মভূমি সপ্তপুরুষের গাঁ।   প্রকৃতির বুক থেকে প্রাণের রসদ নিয়ে।   ফিরিতাম নদীতীরে হৃদয়ের গান গেয়ে।   সন্ধ্যাতারা উঁকি দিত গোধূলি লগনে।   প্রত্যুষে ভাঙিত ঘুম বিহঙ্গ কূজনে ।   আষাঢ়ের নব মেঘে ঘিরিত গগন।   বাদলের ছায়া ঢাকা কদম্ব কানন।   দলবেঁধে মাঠে-বাটে বেতালা-বেছন্দে।   কেটে যেত সারাদিন ভালো কভু মন্দে।   ডাক দেয় শিশুকাল, বাল্য ও কৈশোর।   অফুরন্ত প্রাণোচ্ছ্বল, আনন্দে বিভোর।   করমের স্রোতে ভেসে সংসারের হাটে।   ভিড়িল জীবনতরী নগরের ঘাটে।   ফিরিবার সাধ্য নাই ফেলে আসা পথে।   বাল্য রোমন্থন করি অতীত স্মৃতিতে।                    __________ 

জনপ্রিয় লেখা

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ -- "ত্রয়ী কাব্য" ------------------------------------------------------------------------------ সুনন্দ মন্ডল নবীনচন্দ্র সেন সাহিত্যে তথা বাংলা কবিতার জগতে এক অবিস্মরণীয় নাম। তিনি চট্টগ্রাম জেলার নওয়াপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ১৮৪৭ সালে তাঁর জন্ম এবং মত্যু ১৯০৯ সালে। বঙ্কিমচন্দ্র তাঁকে 'বাংলার বায়রন' বলেছেন। ‎জীবৎকালীন যুগে আত্মপ্রত্যয়ের মধ্যে জাতীয় চরিত্র আত্মস্থ করে নতুন সংস্কারে প্রয়াসী হয়ে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখেছেন।মধুসূদন-হেমচন্দ্র-নবীনচন্দ্র--এই তিন কবি বাংলা কাব্যধারায় প্রাণ সঞ্চার করেছিলেন। বিশেষত মহাকাব্য লেখার দুঃসাহস দেখিয়েছিলেন। এদিক থেকে মধুসূদন দত্ত একজন সফল মহাকাব্যিক। তাঁর 'মেঘনাদ বধ' কাব্যের মত গভীর ও ব্যঞ্জনাময় না হলেও নবীনচন্দ্র সেনের 'ত্রয়ী' কাব্য বিশেষ মর্যাদা দাবি করতেই পারে। তাছাড়া 'ত্রয়ী' কাব্যে ধর্মীয় ভাবধারার আবেগ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ‎ ‎নবীনচন্দ্র সেন বহু কাব্য লিখেছেন। যেমন- 'অবকাশরঞ্জিনী','পলাশীর যুদ্ধ', 'ক্লিওপেট্রা', 'রঙ্গমতী', 'খ্রীষ্ট', ...

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা শ্রীজিৎ জানা "সময় চলিয়া যায় নদীর স্রোতের প্রায়"। স্রোতের ধারা তার দু'প্রান্তে রেখে যায় ভাঙাগড়ার চিহ্ন। কালের দৃশ্যপটেও পরিবর্তনের ছবি অনিবার্যভাবেই চোখে পড়ে। সমাজ সময়ের ছাঁচে নিজেকে গড়ে নেয় প্রতিনিয়ত।  সেখানে মনে নেওয়ায় বাধা থাকলেও,মেনে নেওয়ার গাজোয়ারি চলে না। ফলত কাল বদলের গাণিতিক হিসেবে জীবন ও জীবিকার যে রদবদল,তাকেই বোধকরি সংগ্রাম বলা যায়। জীবন সংগ্রাম অথবা টিকে থাকার সংগ্রাম।  মানুষের জীবনযাপনের ক্ষেত্রে আজকে যা অত্যাবশ্যকীয় কাল তার বিকল্প রূপ পেতে পারে অথবা তা অনাবশ্যক হওয়াও স্বাভাবিক। সেক্ষেত্রে উক্ত বিষয়টির পরিষেবা দানকারী মানুষদের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হওয়া অস্বাভাবিক নয়। এক কালে গাঁয়ে কত ধরনের পেশার মানুষদের চোখে পোড়তো। কোন পেশা ছিল সম্বৎসরের,আবার কোন পেশা এককালীন।  সব পেশার লোকেরাই কত নিষ্ঠা ভরে গাঁয়ে  তাদের পরিষেবা দিত। বিনিময়ে সামান্য আয় হত তাদের। আর সেই আয়টুকুই ছিল  তাদের সংসার নির্বাহের একমাত্র উপায়। কালে কালান্তরে সেই সব পেশা,সেই সব সমাজবন্ধুরা হারিয়ে গ্যাছে। শুধুমাত্র তারা বেঁচে আছে অগ্রজের গল্পকথায়,আর বিভিন...

গ্রন্থ আলোচনা: শর্মিষ্ঠা দেবনাথ

প্রতিবাদ যখন অগ্নিবাণী বাংলাদেশে নারীমুক্তি ও নারী আন্দোলনের পুরোধা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ১৯৯তম জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদিত হল " আসিফা এবং.." কাব্য সংকলনটির মধ্যদিয়ে।সংকলনটির বিশেষত্ব হল,এটি উৎসর্গ করা হয়েছে নারীর সম্মান রক্ষার আন্দোলনের যোগ্যতম ব্যক্তি শহীদ শিক্ষক বরুন বিশ্বাসকে। সংকলক প্রকাশক সন্দীপ সাহু নিজে এবং বিশিষ্ট কবি সাহিত্যিকদের দিয়ে লিখিয়ে নিয়েছেন এমন কিছু কবিতা, যা শুধুমাত্র শব্দ ও ছন্দের অনুবন্ধ নয়, এক একটি অগ্নিবাণী।আসলে জীবনকে দেখার স্বাতন্ত্র‍্যে কবিরা সব সময়ই অগ্রগণ্য এবং অনন্য।যুগ ও জীবন দ্বন্দ্বের কণ্ঠস্বরকে আশ্রয় করে,একদিকে মনের প্রবল দাহ ও অন্যদিকে  নির্যাতিতা শিশুকন্যা ও নারীর প্রতি মনের গভীর আকুলতা থেকে প্রকাশ পেয়েছে "আসিফা এবং" এর  কবিতাগুলি।এক অন্ধকার সময়ের মুখোমুখি আমরা,সেই অন্ধকার আমাদের নিয়ে এসেছে সামাজিক অবক্ষয়ের শেষধাপে যেখানে নৈতিকতা,পাপবোধ,গ্লানিকে সরিয়ে রেখে, সমাজের বানানো নিয়মকে তোয়াক্কা না করে,অনায়াস দক্ষতায় ও ক্ষিপ্রতায় নিজেরই ধর্মচেতনাকে জলাঞ্জলি দিয়ে কিছু মানুষ তার পশুত্বের পরিচয় দিয়েছে ধর্ষণ ও ন...

শ্যামাপদ মালাকারের কবিতা

চোখ """"""" নদী, অরণ্য, রাতের ফালি চাঁদ- সবেই তো আমার...স্বর্ণপিঁড়িটাও!। সেদিন, শুকতারাটার গা' মাপতে গিয়ে মনে হল, --ওরা আমার চেয়েও সুখী? দেখিনা একবার গাইতি-শাবল চালিয়ে... চালালাম। জল-মাটি ভেজা একটা 'চোখ' কুড়িয়ে ফিরলাম! সেই চোখদিয়ে দেখি-- শেষ বিকেলের নিরন্ন আঁচে ঝলসানো বুকে নীড়ে ফিরছে ধূলিমাখা কত কাল পা, কি শান্তি - কি তৃষ্ণা! পাতাক্ষোয়া কোদালেরর মাথায় ঝরেপড়া ললাটের ঘামে, কারা যেন জীবন শাণ দেয়! রুক্ষঠোঁটের আবরণে এক সময় নেমে আসে শিশিরস্নাত কালনিশি-- মাঝের ব্যবধান মুছে দেয় প্রতিশ্রুতির ভীড়- - পূর্বজনমের নিদর্শনচুম্বন শেষে হেরে যায় কার মমতাজ-- ম্লান হয়ে যায় কত পিঁড়ি! ... ম্লান হয়ে যায় কত পিঁড়ি! ... ম্লা...

কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা: এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায় ।। পার্থ সারথি চক্রবর্তী

  কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা : এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায়  পার্থ সারথি চক্রবর্তী  কথায় বলে বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। রাজার শহর কোচবিহারের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা আরো অনেক বেশি। দুর্গাপূজা আর দীপাবলির মতো দু'দুটো বিরাট মাপের উৎসবের রেশ কাটতে না কাটতেই, এ শহর ভাসে রাস উৎসবের উন্মাদনায়। মদনমোহন ঠাকুর কোচবিহারের প্রাণের ঠাকুর। তাঁকে নিয়ে সবার আবেগ আর শ্রদ্ধা ও ভালবাসা এখানে বাঁধনছাড়া। এক অপূর্ব মিলনোৎসবের চেহারা নেওয়া এই উৎসব ঐতিহ্যবাহী ও ঐতিহাসিক। জন, মত, সম্প্রদায়ের উর্ধে এই উৎসবের গ্রহণযোগ্যতা। সময়ের কষ্টি পাথরে পরীক্ষিত! এক প্রাণের উৎসব, যা বহুদিন ধরেই গোটা উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ উৎসবে পর্যবসিত।কোচবিহারের এই রাস উৎসবকে কেন্দ্র করে যে মেলা হয় তাও সময়ের হাত ধরে অনেক বদলে গেছে। এসেছে আধুনিকতার ছোঁয়া! শৈশবে বাবার হাত ধরে যে মেলা দেখেছি তা চরিত্র ও আকৃতি দু'দিক থেকেই বদলে গেছে। গত পঁচিশ বছর ধরে খুব কাছে থেকে এই উৎসব ও মেলা দেখা, অনুভব করার সুযোগ হয়েছে। যা দিনদিন অভিজ্ঞতা ও প্রাপ্তির ঝুলিকে সমৃদ্ধ করে গেছে প্রতি ক্ষেত্রেই।  খুব সংক্ষেপে এই উৎসবের ইতিহাস না জানাটা কিন্তু অবিচারই ...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো,  তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) য...

মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা 2024 সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি (লেখক ও সম্পাদকীয় দপ্তরের কথোপকথন আকারে) --কী পত্রিকা? --নবপ্রভাত। --মুদ্রিত না অনলাইন? --মুদ্রিত। --কোন সংখ্যা হবে এটা? --বইমেলা 2024। --কোন কোন ধরনের লেখা থাকবে? --প্রবন্ধ-নিবন্ধ, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া। --বিশেষ কোন বিষয় আছে? --না। যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে। --শব্দ বা লাইন সংখ্যার কোন বাঁধন আছে? --না। নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো (যেমন, কবিতা 12-14 লাইনের মধ্যে, অণুগল্প কমবেশি 200/250শব্দে)। তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়। --ক'টি লেখা পাঠাতে হবে? --মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। --ফেসবুক বা অন্য কোন প্লাটফর্মে প্রকাশিত লেখা কি পাঠানো যাবে? --না। সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। --পত্রিকা কোন সময়ে প্রকাশিত হবে? --জানুয়ারি 2024-এর দ্বিতীয় সপ্তাহে। --লেখা পাঠানোর শেষতারিখ কত? -- 17 ডিসেম্বর 2023। --কীভাবে পাঠাতে হবে? --মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। --লেখার সঙ্গে কী কী দিতে হবে? --নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) --বিশেষ সতর্কতা কিছু ? --১)মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন '...

উৎসবের সৌন্দর্য: সেকালে ও একালে।। সৌরভ পুরকাইত

  উৎসবের সৌন্দর্য:  সেকালে ও একালে   সৌরভ পুরকাইত বাংলার উৎসব বাংলার প্রাণ। প্রতিদিনের জীবনযাপনের মধ্যে যখন মন ক্লান্ত হয়ে পড়ে তখন তাকে বেঁচে থাকার রসদ যোগায় এই উৎসব। কথায় বলে 'বারো মাসে তেরো পার্বণ'।মন আনন্দই চায়।তাই তাকে সজীবতা দিতে,পরিবারের,সমাজের ভালো-মন্দের কথা মাথায় রেখে মানুষ নিজেই সৃষ্টি করে নিয়েছে নানাবিধ উৎসবগুলিকে। একেবারে প্রাচীন কাল থেকে আজ পর্যন্ত মানুষ কখনোই উৎসব বিমুখ ছিল না।উৎসবই তাকে ঘর থেকে বাইরে টেনে এনেছে,চিনতে শিখিয়েছে আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার আনন্দকে। উৎসব আসলে প্রাণের সাথে প্রাণের যোগ, হৃদয়ের সাথে হৃদয়ের যোগ।রবীন্দ্রনাথ বলেছেন 'সত্য যেখানেই সুন্দর হয়ে প্রকাশ পায় সেইখানেই উৎসব'।হৃদয়ের সেই সুকোমল বৃত্তির জাগরণ যেন ফুটে ওঠা ফুলেরই মতো সত্য ও সুন্দর।এই জাগরণই উৎসব। তাই নানা কিছুর মধ্য দিয়ে,নানা উপলক্ষ্যে এই উৎসব প্রকাশ পায়। প্রাচীনকালে মানুষের হাতে না ছিল পসার, না ছিল পসরা।ছিল মনের আন্তরিকতা,মানুষকে কাছে টেনে নেবার ক্ষমতা।সেটাই ছিল উৎসবের সৌন্দর্য। তাই সেদিনের উৎসবে ক্ষুদ্র,তুচ্ছ উপকরণও প্রাণের উচ্ছ্বাসে মহৎ হয়ে উঠত।সেকালের উৎসবে লোক দেখানো ব্যাপার কিছু ...

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

বসন্তের কোকিল তুমি   বিচিত্র কুমার                      (০১) তোমার দু-আঁখির গহীন অরণ্যে একটা স্বপ্নের বহমান নদী রয়েছে, তারই রেশ ধরে আমি হেঁটে চলি অজানা বসন্তের পথে নীর উদ্দেশ্যে। সে চলার কোন শেষ সীমা নেই তাই আমার বিষণ্ণ একতারা সন্ন্যাস খুঁজে ফিরে , কবে তুমি বুঝবে অনুশ্রী মনের পর্দা খুলে একুশ বসন্ত তোমার রঙ ছিটিয়ে যাচ্ছে অচিনপুরে। এদিকে আমার দেহের প্রতিটি শিরা ধমনীতে প্রবাহিত হচ্ছে তোমার ভালোবাসার একটু উষ্ণতা পাবার জন্যে, শুধু অনুভবে তাণ্ডব উচ্ছাসিত হচ্ছে--- যেদিকে তাকাই --- ফুলে ফুলে ভ্রমর গুনগুনিয়ে উড়ে উড়ে পরে বসন্তের কোকিল গান গায় নব বসন্তে, তোমার দুই চোখে আমার একই ছায়া রয়ে যায় উতলা ভালোবাসার সীমান্তে।                 (০২)        এক রক্তাক্ত বসন্তের স্মৃতি কোন এক উতলা বসন্তের সকালে পুষ্পবনে ফুটেছিল একটি টকটকে লাল গোলাপ, তার সাথে হয়েছিলো দেখা প্রথম ফাগুনে হয়েছিল দুজনার এ জীবনের আলাপ।  তারপর প্র...

অনুভবে, অনুধ্যানে অনালোকিত কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী ।। সুপ্রিয় গঙ্গোপাধ্যায়

"এ কালে একটু লেখাপড়া জানা থাকাতে, এবং বঙ্গভাষায় অনেক গুলি পাঠ্য পুস্তক হওয়াতে কেবল পরনিন্দা করিয়া সময় কাটাইতে তাঁহাদের আবশ্যকও হয় না, প্রবৃত্তিও হয় না। …নিতান্ত সখ্যতা বা আত্মীয়তা না থাকিলে, সকল পেটের কথা খুলিয়া নিঃশ্বাস ছাড়িয়া তৃপ্তিলাভ করা, এ কালের মেয়েরা পছন্দ করেন না। তাঁহারা বইখানি, কার্পেটটুকু, নিজের স্বামী পুত্র লইয়া দিন যাপন করিতে বা একেলা থাকিতে কষ্ট বোধ করেন না।" —শরৎকুমারী চৌধুরাণীর এই লেখা (ভারতী ও বালক/ আশ্বিন কার্তিক, মাঘ/ ১২৯৮) দেখে বুঝতে অসুবিধা হয় না উনিশ শতকে নারীর লেখাপড়া শেখার উদ্দেশ্য ছিল মূলত আত্মমুক্তির জন্য। শুধু লেখাপড়া শেখা নয়, সাহিত্য সৃষ্টিতেও ছয়'এর দশক (উনিশ শতকের) থেকে নারীরা যে ধারা সূত্রপাত করেছিল তা নারীর আত্মমুক্তির পথকেই প্রসারিত করেছিল। ছয়'এর দশকের পূর্বেই ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে প্রথম ছাপার হরফে নারী রচিত কাব্য 'চিত্তবিলাসিনী' প্রকাশিত হয়। লেখেন কৃষ্ণকামিনী দাসী। ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে কবি ঠাকুরাণী দাসীর নাম উঠে আসতে থাকে, যিনি কবিতার পাশাপাশি গদ্যও লিখতেন। ঠিক সেই বছরই জন্মগ্রহণ করেন কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী, যাঁর কবিতা লেখা আত্মমুক্...

বছরের বাছাই

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৪তম সংখ্যা ।। ফাল্গুন ১৪৩১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

  এই সংখ্যায় একটি গ্রন্থ আলোচনা ও একটি ধারাবাহিক রচনা ছাড়া সব লেখাই ভাষা দিবস, মাতৃভাষা, ভাষাচেতনা ও ভাষা সমস্যা বিষয়ক রচনা। লেখাগুলি এই সংখ্যাকে অনেকটাই সমৃদ্ধ করেছে। পড়ুন। শেয়ার করুন। মতামত জানান। লেখকগণ নিজের নিজের লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন যতখুশি, যে মাধ্যমে খুশি। কিন্তু স্ক্রিনশট শেয়ার নৈব নৈব চ!  অন্য বিষয়ের লেখাগুলি আগামী সংখ্যার জন্য রইল।  সকলকে ধন্যবাদ, অভিনন্দন। ভালো থাকুন।   --সম্পাদক, নবপ্রভাত। ==  সূ  চি  প  ত্র  == প্রবন্ধ-নিবন্ধ অমর ২১শে ফেব্রুয়ারি বাঙ্গালীর বাংলা ভাষা দুর্জয় দিবস।। বটু কৃষ্ণ হালদার ভাষা শহীদদের পঁচাত্তর বছর।। অনিন্দ্য পাল একুশে ফেব্রুয়ারি : বাঙালির শ্রেষ্ঠ অশ্রুবিন্দু।। জীবনকুমার সরকার কবিগানের সাহিত্যিক ও সমাজতাত্ত্বিক মূল্য।। বারিদ বরন গুপ্ত বিপন্ন মাতৃভাষা ও সংস্কৃতি।। শ্যামল হুদাতী মায়ের দুধ আর মাতৃভাষা।। প্রদীপ কুমার দে একুশে ফেব্রুয়ারি : কিছু কথা।। বনশ্রী গোপ বাংলায় কথা বাংলায় কাজ।। চন্দন দাশগুপ্ত বিপন্ন মাতৃভাষা ও তার মুক্তির পথ।। মিঠুন মুখার্জী. হে অমর একুশে, তোমায় ভুলিনি, ভুলব না।। মহম্মদ মফিজুল ইসলা...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৭তম সংখ্যা ।। জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ মে ২০২৫

  প্রচ্ছদ চিত্র: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সূচিপত্র রবীন্দ্রনাথ এবং কয়েকজন নারী ।। অনিন্দ্য পাল পরাবাস্তববাদ ও বাংলায় জীবনানন্দের কাব্যচর্চা ।। রণেশ রায় প্রতীক্ষা ।। চন্দন দাশগুপ্ত আশ্রয় ।। সায়নী সাহা বয়স্ক শিক্ষাকেন্দ্র ।। দেবাংশু সরকার প্রণামের প্রভু ।। সুপ্রভাত মেট্যা দুর্ভাগ্যের সম্মুখ সমরে ।। সমীর কুমার দত্ত আচমকা শরৎ ।। অর্ণব সামন্ত প্রতিধ্বনি ✍️ সুবীর কুমার ঘোষ জীবন যেখানে যেমন ।। আরজু মুন জারিন বছর সীমান্তে হিসেব নিকেশ ।। রানা জামান চারটি কবিতা ।। বিবেকানন্দ নস্কর আমরা আছি ।। লালন চাঁদ চাওয়া ।। মাথুর দাস কাগজ ফুলে ।। সফিউল মল্লিক সময়ের স্রোত ।। দুর্গাদাস মিদ্যা তুমি মানুষ ।। বদরুল বোরহান দিঘার সমুদ্র ।। মাখনলাল প্রধান পুস্তক-আলোচনা ।। অরবিন্দ পুরকাইত সংযম ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত  চেনা প্রতিবেশী (প্রথম পর্ব) ।। দীপক পাল খেলার মাঠ ।। তূয়া নূর বন্ধু শ্যামলকান্তি ।। শংকর ব্রহ্ম তুমি তোমার মতো থাকলে ।। সত্যেন্দ্রনাথ বেরা গ্রীষ্মে খুবই হিংস্র রবি ।। জগবন্ধু হালদার স্বপ্ন দর্শন ✍️ পার্থ প্রতিম দাস মৌন মুখরতা ।। মুসা মন্ডল রুদ্র বৈশাখ ।। দীনেশ সরকার চিহ্নিত পদযুগ পদাঘাত ।। দেবাশীষ...

প্রচ্ছদ।। ৮৩তম সংখ্যা ।। মাঘ ১৪৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ।। প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র

  বিঃ দ্রঃ আগামী ফেব্রুয়ারি সংখ্যার জন্য ভাষা দিবসের কথা মাথায় রেখে লেখা পাঠান। email: nabapravatblog@gmail.com  সূচিপত্র ফিচার।। গোপাল ভাঁড়ের অজানা সত্য ।। লোকনাথ পাল প্রবন্ধ ।। মসুয়ার রায় পরিবার এবং বঙ্গসংস্কৃতি ।... প্রবন্ধ ।। সুধীন্দ্রনাথ দত্ত: কাব্যের দার্শনিক ও ন... কবিতায় সেতুবন্ধন (তৃতীয় অংশ) শিল্পবিপ্লবোত্তর কাল... রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর বিদ্রোহী প্রেমের কবিতা: ... কবিতা ।। এই মন ভালো নেই দিনে ।। সুপ্রভাত মেট্যা কবিতা ।। জোছনা আলোর স্বপ্ন ।। তুষার ভট্টাচাৰ্য কবিতা ।। নিঃস্ব হবো ।। লালন চাঁদ কবিতা ।। ভালোলাগা  ।। আজিজ উন নেসা  গল্প ।। স্বীকারোক্তি ।। চন্দন দাশগুপ্ত কবিতা ।। শীতের দিন ।। প্রশান্ত কুমার মন্ডল কবিতা ।। শীতকাল ।। অঙ্কিতা পাল নাসির ওয়াদেনের দুটি কবিতা ভূতের লেখা ছড়া ।। বদরুল বোরহান কবিতা ।। ব্যস্ত ।। আলাপন রায় চৌধুরী ছোটগল্প ।। লম্বুর স্বপ্নপূরণ ।। পরেশ চন্দ্র মাহাত কবিতা ।। সৎকার ।। সুমিত মোদক কবিতা।। শীত বৈচিত্র্য ।। সুমিতা চৌধুরী পুস্তক-আলোচনা ।। নিউটনের আপেল ও প্রেমিকা ।। অরবিন্... গল্প।। শান্তির পথে …...।। বন্দনা সেনগুপ্ত কবিতা ।। মা...

সূচিপত্র ।। ৮৯তম সংখ্যা ।। শ্রাবণ ১৪৩২ জুলাই ২০২৫

সূচিপত্র   প্রবন্ধ ।। বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় ।। মাখনলাল প্রধান প্রবন্ধ ।। শ্রমিকের অধিকার ।। চন্দন দাশগুপ্ত প্রবন্ধ ।। ভিনগ্রহীদের সন্ধানে ।। শ্যামল হুদাতী প্রবন্ধ ।। নারীমর্যাদা ও অধিকার ।। হিমাদ্রি শেখর দাস কবিতা ।। মশালের রং তুলি ।। তূণীর আচার্য কবিতা ।। জললিপি ।। রূপক চট্টোপাধ্যায় গুচ্ছকবিতা || শিশির আজম নিবন্ধ ।। পূনর্জন্ম ।। শংকর ব্রহ্ম মুক্তভাবনা ।। কোলাহল তো বারণ হলো ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত গল্প ।। গানের হাড় ।। শুভজিৎ দত্তগুপ্ত গল্প ।। শিকড়ের খোঁজে ।। সমীর কুমার দত্ত সুপ্রভাত মেট্যার পাঁচটি কবিতা গ্রন্থ-আলোচনা ।। আবদুস সালামের কাব্যগ্রন্থ 'অলীক রঙের বিশ্বাস'।। তৈমুর খান অণুগল্প ।। হরিবোল বুড়ো ।। সুমিত মোদক রম্যরচনা ।। গোয়েন্দা গোলাপচন্দ আর প্রেমের ভুল ঠিকানা ।। রাজদীপ মজুমদার দুটি গল্প ।। মুহাম্মদ ফজলুল হক দুটি কবিতা ।। তীর্থঙ্কর সুমিত কবিতা ।। মেঘমুক্তি ।। বন্দনা পাত্র কবিতা ।। ব্যবচ্ছিন্ন শরীর ।। কৌশিক চক্রবর্ত্তী কবিতা ।। শমনচিহ্ন ।। দীপঙ্কর সরকার কবিতা ।। ভালোবাসার দাগ ।। জয়শ্রী ব্যানার্জী কবিতা ।। ফণীমনসা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ছড়া ।। আজও যদি ।। বদ্রীন...

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ৮৬তম সংখ্যা ।। বৈশাখ ১৪৩২ এপ্রিল ২০২৫

সম্পাদকীয় এই সংখ্যাটি বাংলা নববর্ষ বিষয়ক সংখ্যা। নৱৰ্ষকেন্দ্রিক বহু তথ্যপূর্ণ লেখা এই সংখ্যাটিকে সমৃদ্ধ করেছে। বাংলা নববর্ষ উদযাপনের ইতিহাস, রীতিনীতি, উৎসব, পার্বন, লোকাচার, রূপান্তর বহুবিধ বিষয় প্রকাশিত হয়েছে এই সংখ্যার লেখাগুলিতে। এই সংখ্যার বাছাই কিছু লেখার সঙ্গে আগামীতে আরও কিছু লেখা সংযুক্ত করে বাংলা নববর্ষ বিষয়ক একটি মুদ্রিত সংখ্যা প্রকাশ করার ইচ্ছে রইল।  সকলকে নববর্ষের আন্তরিক শুভকামনা জানাই। উৎসবে আনন্দে থাকুন, হানাহানিতে নয়। ধর্ম-ব্যবসায়ীদের চক্রান্ত ব্যর্থ করে সহনাগরিকের পাশে থাকুন। মনে রাখুন, ধর্মকে মানুষই সৃষ্টি করেছে। ঈশ্বর আল্লা গড ইত্যাদির জন্মদাতা মানুষই। মানুষকে ভালোবাসুন। মানুষের পাশে থাকুন।  নিরাশাহরণ নস্কর  সম্পাদক, নবপ্রভাত।  সূচিপত্র প্রবন্ধ-নিবন্ধ-স্মৃতিকথা পয়লা বৈশাখ ।। সিদ্ধার্থ সিংহ নববর্ষকেন্দ্রিক মেলা, পার্বন, উত্সব, লোকাচার ।। সবিতা রায় বিশ্বাস নববর্ষ আবাহন ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে এবং বিভিন্ন দেশে ।। তুষার ভট্টাচার্য নববর্ষের সেকাল ও একাল ।। হিমাদ্রি শেখর দাস নববর্ষের হাল-হকিকৎ ।। শংকর ব্রহ্ম বোশেখি বাঙালি নাকি পোশাকি বাঙালি? ।। দিব্যেন্দু...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬

  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠালে  অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে হলে ভালো। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # ...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। নবপ্রভাত ৮৫ ।। চৈত্র ১৪৩১ মার্চ ২০২৫

  সূচিপত্র নিবন্ধ ।। মরিয়ম মির্জাখানি: এক অনন্য গণিতসূর্য ।। ... নিবন্ধ ।। নারী দিবসে যা ভাবা উচিত ।। বিশ্বনাথ পাল প্রবন্ধ ।। প্রাচীনকাল থেকে নারীরা অবহেলিত, বঞ্চিত,... নিবন্ধ ।। আমার চোখে আদর্শ নারী ।। জয়শ্রী বন্দ্... ফিচার।। এই মুহূর্তে বাংলা সাহিত্যে নারীদের লেখালেখ... আফ্রিকার লোককথা ।। করোটিকে বিয়ে করা অবাধ্য মেয়েটি ... ছোটগল্প ।। মানবী ।। ভুবনেশ্বর মন্ডল নিবন্ধ ।। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে অন্যতম নারী মু... নিবন্ধ ।। প্রিয় মহিলা সাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবী ।। ... গল্প ।। উই ওয়ান্ট জাস্টিস ।। রবীন বসু প্রবন্ধ ।। নিপীড়িতা ।। শ্যামল হুদাতী ফিচার ।। রমণী রতন ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত প্রবন্ধ ।। নারী সমাজ : তখন-এখন ।। তপন মাইতি নিবন্ধ ।। বহমান কালের ধারায় নারী ।। দীপক পাল গল্প ।। আমার দুর্গা ।। অঞ্জনা গোড়িয়া (সাউ) গল্প ।। যোগ্য জবাব ।। সমীর কুমার দত্ত ছোটগল্প ।। আমি দুর্গাকে দেখেছি।। চন্দন দাশগুপ্ত গল্প ।। সম্পর্ক ।। গৌতম সমাজদার কবিতা।। নারী মানে ।। গোবিন্দ মোদক কবিতা।। নারী ।। সমর আচার্য্য ছড়া ।। নারী অসামান্যা ।। সৌমিত্র মজুমদার কবিতা ।। নারী দিবসে ।। বিবেকানন্দ নস্কর কবিতা ।। না...

প্রবন্ধ ।। বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় ।। মাখনলাল প্রধান

বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় মাখনলাল প্রধান বাংলার শিল্প-সংস্কৃতির জগতে যাত্রা শিল্প তথা নাট‍্যশিল্পে মড়ক নেমে এসেছে । যাত্রা শিল্পের মড়কে শুধু কোভিড নয় তার বহুপূর্ব থেকেই অর্থনৈতিক বিপর্যয় , শিক্ষাক্ষেত্রে বন্ধ‍্যাত্ব এবং গ্ৰাম বাংলার পটপরিবর্তন শেষ পেরেক ঠুকে দিয়েছে। যাত্রা-শিল্পের লীলাভূমি ছিল গ্ৰাম বাংলা। গ্ৰামে প্রচুর যাত্রাপালা হত নানা উৎসবকে কেন্দ্র করে । জমিদারি ব‍্যবস্থা লুপ্ত হওয়ার পর গ্ৰামীণ মানুষের উদ‍্যোগে শীতলা পূজা,  কালীপূজা, দুর্গাপূজা, কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা, চড়ক ইত‍্যাদিকে উপলক্ষ‍্য করে যাত্রাপালার আয়োজন না হলে কেমন যেন ম‍্যাড়ম‍্যাড়ে লাগতো। সেই সঙ্গে কলকাতার বড়বড় কোম্পানির যাত্রাপালা ঘটা করে, টিকিট সেল করে হত মাঠে। খুব বড় মাপের খেলার মাঠ যেখানে ছিল না সেখানে ধানের মাঠ নেওয়া হত ‌। ত্রিশ-চল্লিশ হাজার মানুষ দেখতে আসত। স্পেশাল বাস পাঠাত  আয়োজক কর্তৃপক্ষ। বিনা ভাড়ায় বাসে যাতায়াত করত যাত্রার দর্শকেরা। কিন্তু বিকল্প ধানচাষ শুরু হলে জমিগুলো সময় মতো ফাঁকা পাওয়া গেল না । প্রথম দিকে ব‍্যাপকহারে ধান শুরু না হওয়ায় খুব একটা অসুবিধা হত না। বহুক্ষেত্রে  ধান কা...

প্রবন্ধ ।। ভিনগ্রহীদের সন্ধানে ।। শ্যামল হুদাতী

ভিনগ্রহীদের সন্ধানে  শ্যামল হুদাতী  ইতিহাসের শুরু থেকে বারবার মানুষকে একটা প্রশ্ন কুঁড়ে কুঁড়ে খায় – এই মহাবিশ্বে আমরা কি একা? পৃথিবীর মতো আরও গ্রহ রয়েছে, যেখানে মানুষের মতো বুদ্ধিমান প্রাণীরা বাস করে – এই সম্ভাবনা বরাবর মানুষকে মুগ্ধ করেছে। আমাদের প্রত্যেকের জীবনের কখনও না কখনও এই ভাবনা এসেছে। দীর্ঘ কয়েক দশকের গবেষণার পরও, এই বিষয়ে কোনও নিশ্চয়তা দিতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। জেমস ওয়েব মহাকাশ টেলিস্কোপ, বহু দূরের এমন কিছু গ্রহের সন্ধান দিয়েছে, যেগুলিতে প্রাণ থাকতেই পারে। তবে, নিশ্চিত কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে, আমেরিকার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাম্প্রতিক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, ভিনগ্রহীদের খুঁজতে বহু দূরে যাওয়ার কোনও দরকার নেই। তারা এই পৃথিবীতেই মানুষের ছদ্মবেশে মানুষের মধ্যেই বসবাস করতে পারে। আমরা ভিনগ্রহীদের যেমন কল্পনা করি, এরা তার থেকে আলাদা। এরা অনেকটাই, দেবদূতদের মতো। মানব জগতের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক প্রযুক্তিগত নয়, বরং জাদুকরি। মহাকাশে সৌরজগতের গ্রহ পৃথিবী ছাড়া অন্য কোথায় প্রাণ রয়েছে কি না তা নিয়ে চলছে বিস্তর গবেষণা। একই সঙ্গে পৃথিবী ছাড়া অন্য কোনো গ্রহে মানুষ বসবাস ক...

প্রবন্ধ ।। নারীমর্যাদা ও অধিকার ।। হিমাদ্রি শেখর দাস

নারীমর্যাদা ও অধিকার হিমাদ্রি শেখর দাস  নারীর মর্যাদা বলতে বোঝায় নারীর সম্মান, অধিকার, এবং তার ব্যক্তিগত স্বাধীনতা। এটি সমাজে নারীর অবস্থান এবং তার প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গিকে নির্দেশ করে। নারীর প্রতি সম্মানজনক আচরণ করা হয় এবং তাদের অধিকার গুলি সুরক্ষিত থাকে। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে এই শ্রেণি সংগ্রাম শুরু হয়েছিল অনেক আগে।  একদিকে শ্রেণী বৈষম্য অপরদিকে নারী পুরুষের বৈষম্য এই দুটি ছিল শ্রেণীবিভক্ত সমাজের অন্যতম দুটি মূল ভিত। নারীর অধিকারহীনতা বা দাসত্ব শুরু হয় পরিবার ও সম্পত্তির উদ্ভাবনের ফলে। বহু যুগ ধরে নারী সমাজকে পারিবারিক ও সামাজিক দাসত্বের বোঝা বহন করতে হয়েছে বিনা প্রতিবাদে। সভ্যতার ক্রম বিকাশের সাথে সাথে নিপীড়ন ও নির্যাতনের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে - দাস সমাজব্যবস্থা এবং সামন্ততান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় নারীরা পুরুষ ও পরিবারের অধীনতা স্বীকার করে নিতে বাধ্য হয়েছে। সামাজিক উৎপাদনের কাজে নারীদের বঞ্চিত রেখেই তাদের পরাধীন জীবন যাপনের মধ্যে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। নারীর অধিকারহীনতার বিরুদ্ধে সংগ্রামের সূচনা হয় ইংল্যান্ডের শিল্প বিপ্লবের পরবর্তী সময়ে। নতুন করে নারীদের সামাজিক উৎপাদনের কাজে ...

মাসের বাছাই

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯৩তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩২ নভেম্বর ২০২৫

সূচিপত্র বস্তু, চেতনা এবং কবি ।। সজল চক্রবর্তী দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত ।। রণেশ রায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট ও সন্নিহিত অঞ্চলের কথ্য শব্দ ।। অরবিন্দ পুরকাইত চাঁদে জীবন ।। শমীক সমাদ্দার অসমাপ্তি ।। মহুয়া হুই গ্যালাক্সির শব্দে ।। জাসমিনা খাতুন তিনটি কবিতা ।। দিবাকর সেন অপূর্ণতার শেষ অধ্যায় ।। সুপ্রিয় সাহা হাফ ডজন ছড়া ।। স্বপনকুমার পাহাড়ী স্বাপ্নিক অমলের ঘুৃম ।। সঞ্জয় দেওয়ান দুটি কবিতা ।। সৌমিত্র উপাধ্যায় পথ চলতি ✍️পার্থ প্রতিম দাস হেমন্তের বিষাদ ছুঁয়ে ।। শক্তিপদ পাঠক রাই আর বাবা ।। অদিতি চ্যাটার্জি স্থিতিশীল ।। রঞ্জিত মুখোপাধ্যায় হৃদয়ের শূন্য কোড ।। লিপিকা পিঙ্কি দে অমানিশা ।। সৌভিক মুখার্জী দৃষ্টিগত ।। শামীম নওরোজ জ্যান্ত ভূতের গপ্পো ।। পার্থ সারথি চট্টোপাধ্যায় ধুতরা ফুলের ঘ্রাণ ।। মজনু মিয়া তারা খসার আলোয় ।। তীর্থঙ্কর সুমিত উত্তরণে অন্তরায় ।। সমীর কুমার দত্ত প্রেম মুদ্রা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ধারা ।। লালন চাঁদ অন্যের ব্যথায় ব্যথি ।। জগদীশ মণ্ডল গর্ভ ।। শাশ্বত বোস ভ্রমণ বিষয়ক স্মৃতিকথা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত শাপে বর ।। সাইফুল ইসলাম রবিবার ।। সঙ্ঘমিত্রা দাস দুটি ...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬

  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠালে  অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে হলে ভালো। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # ...

গল্প ।। জাতিস্মর ।। আশীষ কুমার বিশ্বাস

    জাতিস্মর   আশীষ  কুমার   বিশ্বাস    গল্পের শুরুটা প্রায় ষাট বছর আগের কথা । যার নাম গৌতম, ডাক নাম ছিল বাবু ।  তার বছর তখন ছয়-সাত হবে । আমরা বা আমি তখন একটু বড় । এক সাথেই চলতো খেলা । গোল্লা ছুট, দাঁড়িয়া বান্দা, চোর-পুলিশ । যে মাঝে মাঝে খেলা থেকে বিরত থাকতো ; সে-ই জাতিস্মর । মাঠের পাশেই ছিল একটা খেঁজুর গাছ । তাতে হাত রেখে দূরের এক গ্রামের দিকে এক মনে তাঁকিয়ে থাকতো "বাবু" । গ্রামটির নাম "বিনয় পল্লী " । মাঝে বড়ো মাঠ । হাঁটা শুরু করলে তিরিশ - চল্লিশ মিনিট লাগবে । মাঝে জলে ভরপুর দেখে কখনো যাওয়া হয়নি । বাবু কে যখন বলতাম, ওপারে কি দেখছিস? ও বলতো, ওখানে আমার ছোট মা থাকে, দিদি থাকে, আমার ভুলু কুকুর থাকে । এ কথা আমাদের বিশ্বাস হতো না । আবার খেলায় ফিরে যেতাম, খেলতাম ।  কিন্তু ও বসে বসে , ওপারের গাছ পালা , বাড়ি ঘর দেখতো । কাছে গেলে বলতো , ওই যে সবুজ ,কচি কলাপাতা রঙের দালান বাড়ি, ওটাই আমাদের বাড়ি !  এই ভাবে মাস ছয়, বছর গড়াতে লাগলো । মনে প্রশ্ন জাগতে লাগলো, এ টা কি মন গড়া , বা বানিয়ে বানিয়ে বলছে? সত্যি প্রকাশ হোল এক দিন ।  সে বাড়িতে কিছু ...

কবিতা ।। ভাষার জন্য লড়াই ।। চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু

ভাষার জন্য লড়াই চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু মুখের ভাষা বাংলা ভাষা মাকে ডাকি মা, সারা বিশ্বে তোমার মাগো নেই তো তুলনা। তোমার মুখের প্রথম ভাষা আমার মনের সকল আশা তোমার ভাষায় বলবো মাগো আমার মনের কথা, এই ভাষাতেই জড়িয়ে আছে সকল স্বাধীনতা।  এই ভাষাকে আনতে গিয়ে তাজা বুকের রক্ত দিয়ে রাজপথে সব লড়াই হলো করলো লড়াই কারা, আমার মায়ের দামাল ছেলে রক্ত পলাশ যারা।  তোমার ছেলে লড়াই করে আনলো ভাষা ঘরে ঘরে সেদিন থেকে শহীদ মিনার সাজাই ফুলে ফুলে, বীর শহীদের ত্যাগের কথা যাইনি আজও ভুলে।    ++++++++++++++++++++++++++++++++    চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু শহীদ আবুল কাশেম সড়ক, বড় বাজার, চুয়াডাঙ্গা, বাংলাদেশ।

চিরকুটের কবিতা

নতুন পৃথিবী আজ সকালে রোদ্দুর নামুক ভেজা বর্ষার মতো গা ধুয়ে কিছুটা পবিত্র হবো যত জীর্ণ মলিন দ্বেষ বিলীন হোক সব সময়ের তটে গা ভাসিয়ে কিছুটা বিলাসী হবো যা ছিল অতীত যা ছিল কষ্ট সবকিছু ভুলে নবীনে ব্রতী হবো আসুক ধেয়ে সতেজ হাওয়া দূর হোক যত কুণ্ঠা ব্যথা পুরানো যত বিবাদ ভুলে ভালোবাসার আবার বেড়া দেবো কিছুটা আশাবাদী কিছুটা কর্মঠ কিছুটা জেদি কিছুটা শপথ আসুক ছুঁয়ে বাঁচার আলো হাতে হাত রেখেই বিশ্বাসের ঘরে আবার নতুন দীপ জ্বালাবো

কবিতা ।। অরণ্যকন্যা ।। অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়

  অরণ্যকন্যা অরিন্দম চট্টোপাধ্যায় অরণ্যকন্যার দৃষ্টির ভেতর বিষাদ বিন্দু ফোঁটা ফোঁটা জলের মতো গড়িয়ে যায়, হয়ে যায় কোন নদীপথ দৃষ্টি ভেঙে ভেঙে চলে যায় কোন এক শূন্য পথে অরণ্যকন্যার হৃদয়ের ভেতর ভাঙে যতো বৃক্ষপত্র নতুন পত্র পুষ্পের খোঁজ নেই ঠোঁট জুড়ে সমুদ্রকাঁপন বুদবুদের মতো অস্ফুট হয়ে উচ্চারিত হয় কোন অক্ষর শব্দ আর তাঁর শরীর থেকে ছড়িয়ে যায় হয়ে যায় একটা অদৃশ্য কবিতা...    ================== @ অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়,  বেহালা, কলকাতা -৭০০০৬০,  

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯২তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩২ অক্টোবর ২০২৫

—: সম্পাদকীয় দপ্তর থেকে :— এই সংখ্যার জন্য লেখা এসেছিল প্রায় ১৮০টা। কিন্তু গুণগত মানে দুর্বল লেখার সংখ্যা বহু। আমরা নবপ্রভাতে নতুনদের কথা ভেবে বেশ কিছু দুর্বল লেখাও রাখি। কিন্তু সবসময় একই লোকের দুর্বল লেখা প্রকাশ করা অনুচিত বলে মনে করি। শেষ পর্যন্ত ৯৯ জনের লেখা রাখা গেল। যাদের লেখা প্রকাশিত হল না, তারা লেখাগুলি অন্য যেখানে খুশি পাঠাতে পারেন। বিশেষ কারণে এই সংখ্যার মুদ্রিত সংস্করণ প্রকাশিত হচ্ছে না। আমরা দুঃখিত। তবে মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি শীঘ্রই আসছে। সঙ্গে থাকুন। সকলকে উৎসবমুখর বর্ণময় শুভেচ্ছাসহ— —নিরাশাহরণ নস্কর, সম্পাদক, নবপ্রভাত। অনুরোধ : প্রকাশিত লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন, ছবি/স্ক্রীনশট নয়।  == সূচিপত্র == পড়া-লেখার ইতিহাস অনুসন্ধান।। তপন তরফদার উৎসব : মানুষের চিরন্তন আত্মপ্রকাশ।। কৃশানু ব্যানার্জি বাংলা : সভ্যতা ও সংস্কৃতির জন্মভূমি।। শ্যামল হুদাতী সমুদ্র আর অস্তিত্ব ।। সুব্রত চৌধুরী রাজা ছিলেন জুবিন গর্গ ।। গঙ্গা 'অনু'   আদ্যাশক্তি মহামায়ার বাংলা বারো মাসের বারো রূপ ।। অর্হণ জানা মেধাদাদুর আসর ।। রণেশ রায় বৈজ্ঞানিক মা...

কবিতা ।। মনোজকুমার রায়

জল সিঁড়ি চেক বইয়ের পাতা ফুরিয়ে যেতে থাকে -- ঝরে পড়ে বৃদ্ধ গাছটির পত্রমুকুল কাঁচা গন্ধ বেয়ে চলে সময়ের স্রোতে  সারা ভোর জেগে থাকি ঘুমের টলে তাড়া দেয় একগ্রাস অবিশ্বাসী বায়ু দিন ফুরনো লাল সূর্যের টানে নেমে আসে পাড় ছোঁয়া জল সিঁড়ি ================= মনোজকুমার রায় দঃ ঝাড় আলতা ডাউকিমারী, ধূপগুড়ি জলপাইগুড়ি -৭৩৫২১০ মো ৭৭৯৭৯৩৭৫৬৬

উন্মুক্ত পাগলামি ।। আশরাফুল মণ্ডল

উন্মুক্ত পাগলামি আশরাফুল মণ্ডল আহা, অপরূপ নিজস্বতার দাহ! কুঁকড়ে যায় আবহমান, সজনে পাতার বোঁটায়! ভাপওঠা ভাতের কাছে মাছি সত্তায় কী নিপুণ! তবুও ঘোর লাগা বসন্তের ডাক, হাঁকে! খেদিয়ে দেয় পা দোলানো প্রস্তাব, ওই ধুনুরি চোখ! রাংতায় মোড়া ডাকের সাজ, দে দোল দোল! হুইসেল বাজিয়ে কে রুখে দ্যায় সেই নাকছাবির রুদালি কাঁপন! খালবিল ছেঁচে পাঁচসিকের  মানত কুড়িয়ে আনে, বাংলা বাজার। ঠ্যাং নাচানো সুরে চোখ মারছে, দ্যাখো ভ্যানতারা! মুখ খোলা মানেই পাঁজরের স্রোত ভাবা যেন উগরানো টালমাটাল! ঢিল মারা প্রশ্নের রোয়াকে বক্রচোখে যেন মেধাবী কবিতা! মুছে দিও তবে লাজুক গুপ্ত রোগ, দিনরাত্রি! ভালো থেকো তোমরা বাছাধন, রং মাস সে আর কতদিন... ================    ASRAFUL MANDAL Chandidas Avenue, B-zone, Durgapur, Paschim Bardhaman, Pin - 713205,  

কবিতা ।। সোনালি অতীত ।। প্রবোধ কুমার মৃধা

সোনালি অতীত  প্রবোধ কুমার মৃধা   সুশীতল ছায়াঘেরা স্নেহময়ী মাটি মা।   সে আমার জন্মভূমি সপ্তপুরুষের গাঁ।   প্রকৃতির বুক থেকে প্রাণের রসদ নিয়ে।   ফিরিতাম নদীতীরে হৃদয়ের গান গেয়ে।   সন্ধ্যাতারা উঁকি দিত গোধূলি লগনে।   প্রত্যুষে ভাঙিত ঘুম বিহঙ্গ কূজনে ।   আষাঢ়ের নব মেঘে ঘিরিত গগন।   বাদলের ছায়া ঢাকা কদম্ব কানন।   দলবেঁধে মাঠে-বাটে বেতালা-বেছন্দে।   কেটে যেত সারাদিন ভালো কভু মন্দে।   ডাক দেয় শিশুকাল, বাল্য ও কৈশোর।   অফুরন্ত প্রাণোচ্ছ্বল, আনন্দে বিভোর।   করমের স্রোতে ভেসে সংসারের হাটে।   ভিড়িল জীবনতরী নগরের ঘাটে।   ফিরিবার সাধ্য নাই ফেলে আসা পথে।   বাল্য রোমন্থন করি অতীত স্মৃতিতে।                    __________