পুরোনোপন্হী
প্রতীক মিত্র
এদের বিষয়ে বিশেষ কিছু না বলাই ভালো। একদম মান্ধাতার আমলের। সারাক্ষণ ছেলে-ছেলে নিয়ে রক্তচাপ বাড়িয়ে চলেছে। ছেলেটা তেমন ডানপিটে নয়। কথা শোনে। পড়াশোনাতেও খারাপ নয়। হাসির কথায় খিলখিলিয়ে হাসে। বন্ধুদের সঙ্গ পেলে সেই সঙ্গ ছেড়ে আসার সময় হলে কাঁদে, বায়না করে, কিন্তু বোঝালে শোনে। ওদের তবু হয়না। ছেলেটাকে নাকি আরো ভালো হতে হবে। আরো আরো ইত্যাদি। ছেলের বিষয় যখন মেটে তখন ওরা নিজেরা বেশ গল্পে মশগুল হয়। রেগে যায় একে অন্যের ওপরে রাগের ছুতো ছোটোখাটো হলেও।আবার ভেতরে ভেতরে কষ্ট পেতে থাকে কেন একজন অন্যজনের সাথে কথা বলে অভিমানটা ভাঙাচ্ছে না। বিয়ের বয়স বারো হয়ে গেল। এখনও মুহুর্ত কোন সময় যে অন্তরঙ্গতার জলতরঙ্গে সুর তোলে। রাস্তাঘাটে এদিকে ওদিকে চোখ যদি বা যায় মন পাথরের মতন থসকে একজনের অনুরাগের কোমর-ডোবা জলেই ডুবে থাকে। তার নোনা স্বাদের স্রোতেই সেই পাথর ক্ষইতে থাকে, মোলায়েম হতে থাকে। কানে আসে এদিক-ওদিকের খবরগুলো। ছাড়াছাড়ি, বিচ্ছেদ, নানান কিসিমের দাম্পত্য কলহ। ওরা শোনে, পড়ে, সহানুভুতি দেখায় সেইসব একাকি মানুষগুলোর প্রতি। তারপর ভুলে যায়। তাদের এইসব কেচ্ছা কেলেঙ্কারি, বিচ্ছেদ শুনতে কেমন কেমন লাগে। অস্বস্তি হয়। সময়ের সাথে তালে তাল মিলিয়ে তারা ঠিক চলছে তো? নাকি এইসব ছেলেমেয়েগুলোই আধুনিক। ওরা পিছিয়ে পড়া। পুরোনোপন্থী। যাক ওদের পুরোনোপন্হী বললে ওদের আর খারাপ লাগার কারণ নেই। ওরা নিজেরাই তো নিজেদের সম্বন্ধে সেটা ভাবে।
***************
প্রতীক মিত্র
কোন্নগর-712235, পশ্চিমবঙ্গ
Comments
Post a Comment