Skip to main content

প্রবন্ধ ।। মা সারদা - চিন্ময়ী ।। সত্যেন্দ্রনাথ পাইন

মা সারদা

মা সারদা - চিন্ময়ী

সত্যেন্দ্রনাথ পাইন

   

     প্রয়োজনের নদীটা খরস্রোতা; প্রাপ্তির দিগন্তে সর্বদা মরুভূমির হাহাকার।
      এই হাহাকারের মাঝে তৃষ্ণার্ত মানুষ খোঁজে একটুখানি শীতলপানীয়। কোথায় কখন মিলবে, কে দেবে সেই বাঁচার মঙ্গল সুধা????
  মা- ই পারে কেবল অভয় অংকে তার বুকের সুধা পানে সন্তানকে অভয়বাণী শোনাতে।
   আর আমরা সকলে তো সেই মায়ের ই অবোধ সন্তান।
 যার স্তনামৃতে আমাদের আক্ষেপ, বিক্ষেপ,কান্না, চাঞ্চল্য, বিশ্বাস -- অবিশ্বাস, সুখ- দুঃখ, আলো- আঁধার বলে কিছু অবশিষ্ট থাকে না। শুধুই নির্ভয়, নিষ্কলঙ্ক সেই অঙ্ক‌ ।মা যে সর্বদা করুণাময়ী।
   এখানে কোনো শঙ্কা নেই ভয় নেই। আছে কেবল অশেষ আশ্রয়, সুস্থ্ আলোর উদ্ভাস।
    মা-- ই পারে এই যুগ যুগান্তের বন্ধন অটুট রাখতে। এই শক্তির গোলকে তিনিই তো কখনও কৃষ্ণ প্রেমিকা রাধা, কখনও লক্ষ্মী নামে বৈকুন্ঠে নারায়ন ঘরণী,, ব্রহ্ম লোকে কখনো বা সাবিত্রী, কৈলাসে হলেন শিবানী, সীতারূপে কখনও বা বনবাসী রামচন্দ্রের স্ত্রী, দ্বারকায় রুক্মিনী, কখনও  বা যশোদা, কখনো দেবকী - আর একালে যিনি শক্তিরূপিনী সারদা জননী     মা-সারদা রূপে দেখা দিলেন দক্ষিণেশ্বরে।।
  যাঁর অপরূপ রূপে প্রাণের  পরশ খাদহীন খাঁটি সোনা। ইংরেজি ১৮৫৩ সালের ২২ ডিসেম্বর, বাংলার ১২৬০ সালের ৮ পৌষ বৃহস্পতিবার সেই মা কৃষ্ণ সপ্তমীর আঁধার ভেদ করে এই ধরাধামে আবির্ভূতা হলেন জয়রামবাটীর এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারে। সারদা মনি দেবীর পিতা হলেন রামচন্দ্র মুখোপাধ্যায়, মাতা শ্যামা সুন্দরী দেবী।
   মাত্র পাঁচ বৎসর বয়সে তৎকালীন বাংলার সামাজিকতায়  বোধকরি তাঁর বিবাহ হয় কামারপুকুরের ক্ষুদিরাম চাটুজ্যের তৃতীয় পুত্র তেইশ বৎসর বয়সী গদাধরের সাথে।
       গদাধর অটল। কেউ বলে পাগল- খ্যাপা। যাঁর নেই কোন ভাবের অভাব। যিনি জলের মত স্বচ্ছ, কুসুমের মতো কোমল।। যাঁর স্পর্শে স্বয়ং স্বামীজীর শরীর থেকে বিদ্যুৎ বহ্নি বয়ে ছিল। 
       যিনি পরে হলেন শ্রীশ্রী ঠাকুর রামকৃষ্ণ। তাঁকে মা সারদা প্রশ্ন করেছিলেন, " ওগো, আমি তোমার কে?"।  
       ধ্যানগম্ভীর ভাব মুগ্ধ তপস্বী রামকৃষ্ণ বলেছেন --" " তুমি  আমার বানী, বিদ্যা, সরস্বতী । তুমি আমার জ্ঞান, প্রজ্ঞা, জ্যোতি। তুমি সারদা, তুমি অপরূপা। তুমি সুন্দরী।" কিছু ক্ষণ বিরতি থাকার পর বলেছেন -- যে মা মন্দিরে আছেন, তিনিই এই শরীরের জন্ম দিয়েছেন ও এখনও নবতে( নহবতে) আছেন"।----
এই কথা বলতে বলতে আভূমি প্রণত হয়েছিলেন রামকৃষ্ণ জননী মা সারদার চরণযুগলে। সারদা চমকে উঠলেন, বিস্মিতা হলেন। কুন্ঠিত কন্ঠে, বলেছেন -  " "ছিঃ, ও কী হচ্ছে? আমি যে তোমার দাসী!" রামকৃষ্ণ বলেছেন --" না, তুমি আমার আনন্দময়ী"।
     তারপর সেই রাতে একাকিনী মা সারদার কাছে একান্ত নিরালায় ঠাকুর রামকৃষ্ণ।
       গভীর রাত। চারিদিকে রাত্রিকালীন নিস্তব্ধেতা। কেউ জেগে নেই। কেউ দেখতে ও পাবে না। শুধু আকাশের বুকে এক ফালি চাঁদ আর মিটিমিটি তারার নির্ভীক নির্বাক দৃষ্টি। শিরশিরে হাওয়ায়   শোনা যায় গঙ্গার উচ্ছ্বাস, উদ্দাম।
   মা সারদা ঘুমে অচৈতন্য। ঠাকুর যেন অতন্দ্র প্রহরী ।
   ওরে মন, চেয়ে দ্যাখ্ , দেখছিস? যৌবনের জোয়ার, ফোয়ারা? অতসী অধরে কেমন লালসার রোমাঞ্চ মাখা।। ছিলে টানা ধনুকের মত ভ্রূযুগল ,উন্নত নাক। সমতল বক্ষের মাঝে দুধারে দুটো মঙ্গল কুম্ভ।যেন সমুদ্রের খুব গভীরে ডুব দিতে আসা কোনো যৌবনের জোয়ার আছড়ে পড়ছে। আকুলি বিকুলি করছে দুই যৌবনের জোয়ার।
      দেহের প্রতিটা পাপড়িতে  পাপড়িতে  অপরূপ স্নিগ্ধ মধুর আকর্ষণ।  এটাই তো প্রকৃষ্ট সময় ভোগ করার।
     ঠাকুর মনকে কড়া শাসনে বাঁধতে বাঁধতেও বারবার প্রত্যাঘাত খেয়ে ক্ষতবিক্ষত। বলেছেন - যা, এগিয়ে যা। কাছে যা। আরো কাছে। ঐ নিটোল স্তনবৃন্তে ফুটে ওঠ ফুলের মতো, মদনের সাথে মিতালী কর। নারীকে জড়িয়ে ধর আচ্ছা করে। দুটি দেহে, দুটি প্রাণ মিলে মিশে এক হয়ে যাক। অঙ্গে অঙ্গে মিশে ফুটে উঠুক জৈবিক প্রেমের তৃপ্তি।
       এতো বিয়ে করা নারীর শরীর। লোকে যাকে  পরম উপাদেয় ভোগ্য রূপে পেতে লালায়িত।মন রে, গ্রহণ করবি,  না কি বর্জনের আনন্দে বধির হবি?  কামনার মালা পরাবি, নাকি অসীম প্রেমের ফুল ছড়াবি? রতি পতি হবি, না মদনকে ভস্ম করে প্রেমময় নাম নিবি? 
  ঠাকুরের মনতটে এরকম হাজার প্রশ্ন আছড়ে পড়ে। থরথর করে কেঁপে কেঁপে ওঠে সারা শরীর। শুকিয়ে যায় গলা।
      চিন্তা থামিয়ে রামকৃষ্ণ ভাবছেন, " কাম ভোগ করে কি নিবৃত্তি হয় কামের?"
  "না।"
   ভোগে রতির বিস্তার আর ত্যাগে নিরবচ্ছিন্ন আনন্দ।
অনন্ত সুখ, অশেষ তৃপ্তি ‌।
 শ্রীরামকৃষ্ণ মুহূর্তে মুখ ফিরিয়ে নিশ্চুপ, নির্বাক, অনড়, নিথর, নিষ্পন্দ;! বিচ্ছুরিত হলো স্নিগ্ধ জ্যোতি।
 মা সারদা ঘুমে ভেঙে বললেন, " এখনো ঘুমাওনি তুমি? রাত কত?""
কোনো জবাব না পেয়ে ভয় পেয়ে গেলেন। বাইরে  কালীর মাকে  বললেন -- "শীগগির ভাগ্নেকে খবর দাও উনি যেন কেমন হয়ে গেছেন"। হৃদয় তৎক্ষণাৎ ছুটে এসে মামার কানে শোনালেন, মায়ের মাতৃ মন্ত্র। ধ্যান ভাঙলো ঠাকুরের। বলে উঠলেন --" না, না, জৈব প্রয়োজন নেই। আমি চাই দৈব। দৈব ই হবে আমার জীবনের ধ্রুবতারা"!  একদিন সারদা মা ভয়ে ভয়ে ঠাকুরের কাছে প্রশ্ন করলেন, তাই তো, ছেলে পুলে একটাও হবেনি, সংসার ধর্ম বজায় থাকবে কিসে?
   শ্রীরামকৃষ্ণ মুহূর্তে উত্তর দিলেন -- তুমি মা হতে চাও?
 বিশ্বচরাচরের হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ মানুষ তোমার সন্তান। তুমি বিশ্বজননী জগদ্ধাত্রী। --- জয় মা, জয় মা।
     কিন্তু এই ভাব- আন্দোলনে তাঁর সহধর্মিণীর যে অসামান্য অবদান আছে ভক্তমহল তখনও বুঝতেই পারেনি। সেই জন্য অবতার পুরুষের কাছে মানুষ সত্যকে মিথ্যা, আর মিথ্যাকে সত্য বানানোর জন্যে কোনো না কোনোভাবে মিথ্যাচার করে। এবং চিনতে দেরী হয়। গীতায় ভগবান  বলেছেন -- 
 অবজানন্তি মাং মূঢ়া মানুষীং তনুমাশ্রিতাম। 
   পরং ভাবম জানন্তো মম ভূতামহেশ্বরম"। ৯/১১
 আমাদের মতো অজ্ঞান মানুষ অবতারগনকে মানব দেহ বিশিষ্ট বলে উপহাস করে। ঠাকুর রামকৃষ্ণ পরমহংস কেও মানুষ চিনতে ভুল করেছিল-- ব্যতিক্রমী ছিলেন শুধু স্বামী বিবেকানন্দ।!
 ঠাকুরের অন্য ঐশ্বর্য ছিল না।  অসীম আধ্যাত্মিক ঐশ্বর্যের অধিকারী ছিলেন। যিনি মুহুর্মুহু সমাধিস্থ হতেন--  যা দেখে লোকে বিদ্রুপ করে বলতো -- সাতবার মরে , সাতবার বাঁচে। অথচ তাঁর মুখনিসৃত মন্দাকিনী পান করে অনেক  পন্ডিত-- মূর্খ মুগ্ধ হয়ে যেতেন!   এমন গদাধরকেও মানুষ  অবতার রূপে চিনতে পারেননি। আর মা সারদা তো বাইরে লোকের সাথে কথাই বলতেন না।যাঁর মধ্যে কোনো ঐশ্বর্য ছিল না সেই মাকে লোকে চিনবে কীকরে!? তাছাড়া, মাকে লোকে না চিনতে পারার কারণ , মা নিজেই " "লজ্জাপটাবৃতা'  থাকতেন‌ দক্ষনেশ্বরের ঐ ছোট্ট ঘরটায় ‌ তাঁকে বাইরের কেউ দেখতেই পেত না।
 এমনকি দক্ষিণেশ্বরে র কালীবাড়ির খাজাঞ্জিও বলেছেন -- "তিনি আছেন শুনেছি, কিন্তু কখনো দেখতে পাইনি"।
 মনে হয় স্বয়ং ঠাকুরের  ইচ্ছা ছিলো আধ্যাত্মিক কথায় অসম্পূর্ণ সারদাকে বাইরে র সংসারের কোলাহল থেকে মুক্ত রাখা। তাই একটু একটু করে তাঁকে গড়েছেন সম্পূর্ণ লোকচক্ষুর অন্তরালে। তারপর তিনি যখন প্রকাশিত হলেন তখন মানুষ মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে রইলেন তাঁর দিকে। । মাতৃ লীলা আস্বাদন করে পরিতৃপ্ত হলো। অবশ্য যাঁর যেমন আধার সেই ভাবে।
 এই যার যেমন আধার কথার  মধ্যেই স্বয়ং স্বামীজী শিবানন্দকে বলেছেন -- দাদা রাগ কোরোনা ‌ তোমরা এখনও মাকে চিনতে শেখোনি। অতএব আমার মতো অকৃতি অধমরা যে সীমিত বুদ্ধি দিয়ে শ্রী মায়ের অসীম মহিমা  যে অসম্পূর্ণ ভাবেই জানব এতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই।
   মায়ের মহিমা একমাত্র যিনি সঠিক রূপে জেনেছিলেন তিনি স্বয়ং রামকৃষ্ণ আর তাই তিনি গাইলেন ---
  আমি সব সাধনার ইতি খুঁজে 
     পেলাম তোমার মাঝে 
 তোমার পায়ের ধ্বনি আমার 
      বুকের মধ্যে বাজে।
 তুমি আমার বেদ ও বিবেক স্মৃতি শ্রুতি সব
   তুমি আমার পাপ পূণ্য দুঃখ ও বৈভব।
তুমি শিব, তুমি কালী, কৃষ্ণ রাধিকা
তোমার মাঝে সদাই যেন----
        আমার ভূবন রাজে।।
তুমি আমার রস ও রসিক
       পরা -প্রেম- রতি
তুমি আমার সুর ছন্দ
        তাল মান যতি ।
 তুমি স্বর্গ, তুমি নরক, তুমি মন্ত্র গুরু
তুমি আমার শেষ ও অশেষ তুমি সাগর মরু।
তুমি শক্তি, তুমি ভক্তি মুক্তি আরাধিকা 
তোমার মাঝে আমায় দেখি নানা রূপের সাজে।।

কিংবা -- । 
   যা করার করিবে কালী
       আমি কি তার জানি
দাসখতে করেছি স ই
        ব-- কলম আনি।
তারিই দেয়া বিধি বিধান 
 সে যদি না করে প্রমাণ
 আমার ঠেকা নেইতো কিছুই 
         চিনি চরণখানি।
এবার ভাবনা আমার নয়তো 
             ভাবতে হবে তার।
দায় দায়িত্বের বোঝাবুঝি
       নেইতো আমার আর।
সুখ দুৃঃখ মান অপমান 
জানেনা তো আমার এ প্রাণ
পেলে রাঙা চরণ দুটি 
  তবেই ধন্য মানি।
 আর ঐ রাঙা চরণযুগলে ঠাকুরের ইচ্ছা হলো ১৮৭২ সালে খ ৫ জুন বাংলার ১২৭৯ ২৪ জৈষ্ঠ্য মাসের এক অমাবস্যার রাতকে  বেছে নিলেন । ছিলো যেদিন ফলহারিনী কালীপূজার রাত।
        ঘুটঘুটে অন্ধকার। নির্জনে নিশীথে আবাসিক হবেন বিশ্বজননী।--- সাড়া দিলেন ভক্তের ডাকে। যাঁর হাসিতে সারা পৃথিবী হাসে আর বিষাদে বিশ্ব হয়ে যায় আন্ধকারময়।
 হৃদয় পূজো করবেন মন্দিরে আর ঠাকুরের পূজো হবে এক রুদ্ধদ্বারের অন্তরালে।
     কে নেবে সেই পুষ্পাঞ্জলি! 
    নেবেন মা সারদা।
   বিশ্বমাতৃরূপে হবেন সংস্থিতা। শক্তি রূপিনী শক্তিধর করবেন  স্বরূপে প্রতিষ্ঠিত। করলেন ষোড়শী পুজো। ফলহারিনী কালীপূজার বিধান মেনে।
       রাত তখন ৯ টা। 
 ঠাকুর পূর্বমুখে আর পশ্চিম  মুখে বসালেন মা সারদাকে। ছিলনা মত্ততা, ছিল অনির্বচনীয় আনন্দের উষ্ণ প্রস্রবণ।।
     সারদা মনির চরণ যুগলে আলতা পরিয়ে, কপালে সিঁদুরের টিপ দিয়ে, নতুন বসনে ভূষিত করে সারলেন ষোড়শী পুজো। পশ্যাচার , বীরাচার  আর দিব্যা চারের মধ্যে দিয়ে ভেদ করলেন ছয় চক্রকে । মিষ্টি মুখে দিয়ে বললেন --" খাও" তারপর একটা পানের খিলি।
    জেগে উঠলো সন্তানভাব। মায়ের বুকে প্রবাহিত হলো
 মাতৃ স্নেহ। পত্নী রুপান্তরিত হলেন জননী তে। উচ্চকন্ঠে
ঠাকুর রামকৃষ্ণ পাঠ করলেন, " হে বালে, হে সর্ববশক্তি অধীশ্বরী মাতঃ, ত্রিপুরা সুন্দরী, সিদ্ধিদ্বার উন্মুক্ত করো
 শরীর থেকে মন থেকে সবকিছুই পবিত্র করে ইহাতে আবির্ভূতা হয়ে সর্ব কল্যাণ সাধন করো"!
    ধীরে ধীরে জাগ্রত হলো ঠাকুরের কুলকুন্ডলিনী শক্তি। ঠাকুর তন্ময়, মৃন্ময়, মুগ্ধ। মাতৃ দর্শন করে আনন্দ বিহ্বল। আনন্দে চরণ পদ্মে বিসর্জন দিলেন জীবনের সব কিছু। যাঁর সূক্ষ্ম সুর হলো সমর্পন।
      শিব নিজেকে  সমর্পণ করেই শক্তি রূপিনী কালীর পদতলে যেমন শব হয়েছেন আমাদের ঠাকুরও তেমনি শক্তি রূপিনী মা সারদা র কাছে আত্মসমর্পণ করে শব হতে চেয়েছেন।
      তাই আত্মভোলা অসহায় বালক ভেবে শ্রী শ্রী মায়ের মতই সেবা করতে লাগলেন মা সারদা বালক গোপালের মতো ঠাকুরের ।পৃথক অস্তিত্বের এক ই ধারা বিরাজমান যেন ।
     মহাজ্ঞানী ঠাকুরের ভাবোন্মত কন্ঠে ধ্বনিত হলো তাই, " হে সর্বমঙ্গলের মঙ্গল স্বরূপে, হে  সর্ব কর্ম নিষ্পন্ন কারিনী, হে শরণ দায়িনী, ত্রিনয়নী, শিবসোহাগিনী গৌরী তোমাকে প্রণাম,  তোমাকে প্রণাম।
       শ্রীরামকৃষ্ণ বাহ্যজ্ঞান হীন সমাধিস্থ । সারদা মনিও আর শুধু সারদা নন। সাক্ষাৎ শ্রী মা। জগৎ জননী শ্রী মা।
রাত্রি তৃতীয় প্রহরে এবার ঠাকুর রামকৃষ্ণ পরমহংস শ্রী মাকে নহবতে যেতে  নির্দেশ করলেন।
 শ্রী মা বাইরে  এসে  বিশ্ব ভোলার উদ্দেশ্যে নিবেদন করলেন তাঁর আন্তরিক প্রণাম। সূত্রপাত হলো্  নবজীবনের । চৈতন্যের আকাশে সূর্য উঠলো।সহস্রারে হলো  তাঁর স্বচ্ছন্দ গতাগতি।  বিচিত্র রূপ। পরম শক্তি রূপিনী রূপে প্রকাশিত হলেন শ্রীশ্রী মা সারদা মনি।
     মৃন্ময়ী সারদার আত্মপ্রকাশ হলো চিন্ময়ী রূপে। একেবারে জীবন্ত, জাগ্রত, রক্তে মাংসে গড়া হাজার লক্ষকোটি মানুষের  জননী রূপে। সতের মা অসতেরোও মা যে তিনি। 
     তাঁর কাছ থেকেই মানুষ শিখলো, খুঁজে পেল অযুত প্রশ্নের উত্তর। মিললো সমস্তই সমাধান।
 শ্রী মাকে দেখতে দলে দলে দর্শনার্থীদের ভিড় । তারই মাঝে কেউ কেউ বলে উঠলো - মেয়ে হয়ে জন্মে যদি সংসার ই না পেলে তাহলে আবার জীবন কী?  
     ঠাকুর সব বুঝতে পেরে ওদের কথায় কান  না দিতে মা সারদাকে বারণ করেছিলেন। --- ... আমার সব আছে, তবে ভগবানের জন্য সর্বশক্তি দিয়ে তাঁর কাছে রেখেছি।
 মা বলে উঠলেন -- "যে যা খুশি বলুক, আমি তোমার  সাধন পথে চিরদিন সঙ্গিনীর  মতো জেগে থাকবো"।
    ঠাকুরের কোনো দুঃখে মাও মনে মনে বড়ই আঘাত পেতেন। তাই বলতেন- ঠাকুর আমায় কোনদিন ফুলের ঘা টি পর্য্ন্ত দেননি" এমন যে মা তাকে একবার ভাগ্নে হৃদে কটাক্ষ করলে  ঠাকুর বলেছিলেন -- "ওরে হৃদে, ( নিজেকে দেখিয়ে,) একে তুই  তাচ্ছিল্য করে কথা বলিস বল।ওকে( শ্রী মাকে) আর কখনও এরকম কথা বলিসনি, এর ভেতরে যে আছে সে ফোঁস করলে হয়তো রক্ষা পেলেও পেতে পারিস কিন্তু ওর ভেতরে যে আছে, সে ফোঁস করলে তোকে ব্রহ্মা, বিষ্ণু মহেশ্বর ও রক্ষা করতে পারবেনি।"
    শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের কাছে এত সম্মান পেলেও মা সারদা কিন্তু ঠাকুরের সেবিকা ছাড়া  নিজেকে কিছুই ভাবতেন না। স্থূল দেহসুখ তো দূরের কথা, সূক্ষ্মভাবে জাগতিক বাসনাও কোনোদিন মনে স্থান দেননি। আজকের বিশ্বায়নের যুগে যার মূল্য অসীম এবং বিরল দৃষ্টান্ত।-- তাইতো তিনি বিশ্ববন্দিতা , আরাধ্যা জগজ্জননীশ্রীমা। যিনি বলেছেন --" অপরের দোষ দেখোনা। আগে নিজের দোষটা লক্ষ্য করো" তিনি ছিলেন রামকূষ্ণগতপ্রাণা"।
 তাই রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের কথা -- তুমি মাথায় ঘোমটা টেনে নিঃশব্দে নারীদের দিকে লক্ষ্য করো। নারীর জগৎ তোমার জগৎ, নারীর এই অপবাদ ঘোচানো তোমার কাজ।। , "" দিনকা মোহিনী, রাতকা বাঘিনী"। মা হয়ে পরিবারের আত্মপ্রকাশ ঘটুক।
 আর সেই মন্ত্র দীক্ষিতা হয়ে শ্রীমাও বুঝিয়ে দিলেন নারী অবলা নয়, সবলা । শক্তি নিয়ে খেলা! মা- ই শেখালেন, সংসার হোলো স্টেপিং স্টোন।'
 স্বামীজী বলেছেন -" শক্তি বিনা জগতের উদ্ধার হবে না। ঠাকুরের  শক্তি মা সারদা, বুদ্ধের যেমন সুজাতা। তাই ঠাকুর এলেন, মাও এলেন।
১৮৫৫ সালের ৩১ মে, রানী রাসমনি দক্ষিনেশ্বরে মা ভবতারিণী র মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। ঠাকুর এলেন তাঁর দাদার হাত ধরে। দাদা হলেন পুরোহিত , আর ঠাকুর হলেন মায়ের বেশকারী। তারপর দাদার অসুস্থ হবার কারণে ্ কেনারাম ভট্টাচার্য্য র কাছে দীক্ষা নিয়ে পূজারী হলেন আমাদের ঠাকুর রামকৃষ্ণ। 
    ঠাকুরের ইচ্ছাতেই পুরুষ নির্মিত শাস্ত্রের মুখে ঝামা ঘষে দিলেন।  সঙ্গে অবশ্যই মা সারদা ছিলেন। সে সময় ধর্মের জগতে সহধর্মিণীর স্থান ছিল না। নারীদেহ যে অশুদ্ধ।শাস্ত্রে অধিকার নেই। ওঁ কার নারীর জন্যে যে অনিয়ম। শালগ্রাম শিলা স্পর্শ করা চলবে না। দেবী দুর্গা ,কালী , জগদ্ধাত্রী পূজা করবেন শুধু পুরুষ। না ব্রাহ্মণীর স্ত্রী। এখানেই ইতি টানলেন রামকৃষ্ণ। সঙ্গে নিলেন    মা সারদা কে। 
 শ্রীরামকৃষ্ণ হলেন জগদ্গুরু আর দেবী হলেন মা-- সারদা। জগৎ জানে স্বামী স্ত্রী। আধ্যাত্মিক কথায় গুরু শিষ্যা। ঠাকুর জীবনের সবচেয়ে বড় হলো তাঁর প্রথম শিষ্যা হলেন মা সারদা আবার প্রথম গুরু হলেন নারী। পুরুষ শাসিত সমাজের মূলে কুঠারাঘাত। লোকে বিদ্রুপ করে উন্মাদ বললেও তাঁর দৃষ্টিতে সারদা হলেন সংযোগ, দেবী সরস্বতী, দেবী দুর্গা । স্বামীজীর কথায় যেন 'জ্যান্ত দুর্গা।'স্বামী আবেদা নন্দের কথায় মা সারদা র প্রধান অস্ত্র হলো তাঁর অপার স্নেহ। 
সারদা হলেন সচ্চিদানন্দময়ী। এই সৃষ্টি যেন তাঁর জীবজগতের স্থূল বিগ্রহ।।
  শ্রীল অক্ষয় কুমার সেন তাঁর অমর লীলা কাব্য শ্রীশ্রী রামকৃষৃণ পুঁথি তে যে সারদা বন্দনা করেছেন তার পৃষ্ঠা ৫৯ তে পাই--
 খেলার ডালি মা তোমার সৃষ্টি খানি।
লীলাময়ী লীলা পরা লীলা স্বরূপিনী ।।
একা তুমি অদ্বিতীয়া আপন মায়ায় 
ধরিয়াছ বহুরূপী জগৎ লীলায়।।
আপনার অখন্ডত্ব করি খন্ড খন্ড 
গেছো অগন্য আমি রুচিতে ব্রহ্মাণ্ড।
গুপ্তভাবে আপ্তলীলা করো গো জননী 
মায়ায় তোমার জীবে করে " আমি , আমি"!
 শ্রীশ্রী মায়ের কাছেই শুনেছি জগৎ কি তোমার  পর? তাঁকে আপন করে নিতে শেখোঊজু থেকে সরিয়ে নিলেন ঠাকুর ।। শ্রীমা নির্জনে সরে গেলেন। নিশ্চল নিথর শ্রীরামকৃষ্ণ যেন সারদাকে বলে গেলেন, আমি কিছু করিনি, তোমাকে এর চাইতে অনেক বেশি য়করতে হবে।" শয়নে রইলেন নরেন্দ্রনাথ।
 ঐ সালের ১৫ ভাদ্র মা গেলেন বৃন্দাবনে। সঙ্গে নিলেন স্বামী যোগানন্দ, অভেদানন্দ, অদ্ভুতানন্দ, লক্ষ্মীদেবী, গোলাপ মা আর বিষ্ণু দেবী। তারপর কাশীধাম, সর্বত্রই দেখেছেন ঠাকুরের বিগ্রহ। তাঁর কাছেই শুনেছেন, শিখেছেন নানা দেশ থেকে অনেক সন্তান আসবে -- তাদের জন্যে জ্ঞানের আলো জ্বালিয়ে দিতে হবে।
    আজ মায়ের বাড়িটাই উদ্বোধন পত্রিকা অফিসে পরিণত।  যাঁর প্রথম সম্পাদিকা হন যোগিনী মা সারদা প্রসন্ন। যাঁর সন্ন্যাসী নাম  স্বামী ত্রিগুণাতীতা নন্দজী।।
 আমাদের ঠাকুর রামকৃষ্ণ দেবের ছিল সমাধি, সংগীত, কীর্তন, কথকথা অশেষ ভাব ও প্রকাশ। মায়ের ছিল, কর্মে ভরা একখানা তরতাজা জীবন। যাঁর পাথেয় হলো দুঃখে র নামাবলী আর মুখে রামকৃষ্ণ ধ্বনি। এই মায়ের কাছেই রইলো অনন্ত ঠিকানা। ‌যিনি জড় না হয়েও সারা বিশ্বে দাঁড়ালেন সচল শক্তি নিয়ে।
এমন মা ও আমাদের ছেড়ে সকলকে বিষণ্ণ করে এক অবসন্ন অপরাহ্ন বেলায় অন্তরীক্ষে বিলীন হলেন।
 যাঁর কাছে এসে ছিল মুসলমান, শিখ, গুজরাটী, এবং পাশ্চাত্যের দেশগুলো থেকে ও। যেমন মার্গারেট আলভা( নিবেদিতা) প্রভৃতি অসংখ্য নরনারী।
   জয়রাম বাকী থেকে বিষ্ণু পুর স্টেশনের মাঝে একটা আশ্রমে মা ঠাকুরের পাশে নিজের ফটো বসিয়ে নিজেই পুজো করেছেন আত্মদর্শনের অঙ্গীকারে। যেখানে শিখলাম তিনিই শ্রী আবার তিনিই ফ্রী। যেন নিজের মধ্যেই অরূপের দর্শন।।।
 মাতৃ অন্তর ঝংকৃত হলো।- শুনতে পেলাম-"আমি 
 মা, জগতের মা, সকলের মা। ----" তিনি যে স্বরূপের ঘণীভূত প্রতিমূর্তি। তাঁকে দর্শনে, চিন্তনে ও মননে ইষ্ট শক্তি জন্মে। তাঁর ঢরণবন্দনায় ছিন্ন হয় সকল বন্ধন । তিনি যে পরমা প্রকৃতি মানসী দেবী। তাঁকে জানাই শতকোটি প্রণাম। গাইতে ইচ্ছে করে ---
     অকূলের কূল তুমি,     অগতির গতি
      তব পদে সদা যেন        থাকে মোর মতি
       কত রূপে কতভাবে     এসেছো মা তুমি 
     বারেবারে তাই মোরা           তোমারে যে নমি।
      অসতেরর মা তুমি              সতেরো তো মা
বুঝতে না পারি,  মাগো।        তোমার মহিমা ।
জ্ঞান দাও, ভক্তি দাও।          দাও ভালোবাসা 
সহ্য শক্তি দাও মোদের         দাও মৃদু ভাষা ।
ভক্তিভরে যেই জন  করে           তোমার পূজন। 
জনম  সফল তার                   সার্থক জীবন। 
  মনপ্রাণ তব পদে                  করিনু অর্পণ 
সদা হৃদে থাকে যেন               তোমার চরণ।।
            ১৮চৈত্র - ২৫ চৈত্র ১৪১৫ বঙ্গাব্দ। 
                প্রণাম মাগো তোমায় প্রণাম। 
 
============
 
 সূত্র --- আদ্যাপীঠ মাতৃপূজা পৃষ্ঠা ৬১
    পৌষ সংখ্যা __১৪১৫!
 আরও--- 
    ১!সবার মা সারদা - মৃণালকান্তি দাশগুপ্ত।
 ২; ভবাণি ত্রিমনি রত্নম- সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়, 
৩! অভিলাষ-& শ্রীরামকৃষ্ণ প্রেমবিহার ১৪১২( ৮ম),  ১৪১৪ (১০ম)
 প্রণব পত্রিকা ভারত সেবাশ্রম সংঘ ১৪২৩!
 

 

Comments

বিধিবদ্ধ স্বীকার্য :

লেখার বক্তব্যের দায়িত্ব লেখকের, পত্রিকার নয়। আমরা বহু মতের প্রকাশক মাত্র।

মতামত/লেখা এখানে জমা দিন

Name

Email *

Message *

সাম্প্রতিক বাছাই

গল্প ।। জাতিস্মর ।। আশীষ কুমার বিশ্বাস

    জাতিস্মর   আশীষ  কুমার   বিশ্বাস    গল্পের শুরুটা প্রায় ষাট বছর আগের কথা । যার নাম গৌতম, ডাক নাম ছিল বাবু ।  তার বছর তখন ছয়-সাত হবে । আমরা বা আমি তখন একটু বড় । এক সাথেই চলতো খেলা । গোল্লা ছুট, দাঁড়িয়া বান্দা, চোর-পুলিশ । যে মাঝে মাঝে খেলা থেকে বিরত থাকতো ; সে-ই জাতিস্মর । মাঠের পাশেই ছিল একটা খেঁজুর গাছ । তাতে হাত রেখে দূরের এক গ্রামের দিকে এক মনে তাঁকিয়ে থাকতো "বাবু" । গ্রামটির নাম "বিনয় পল্লী " । মাঝে বড়ো মাঠ । হাঁটা শুরু করলে তিরিশ - চল্লিশ মিনিট লাগবে । মাঝে জলে ভরপুর দেখে কখনো যাওয়া হয়নি । বাবু কে যখন বলতাম, ওপারে কি দেখছিস? ও বলতো, ওখানে আমার ছোট মা থাকে, দিদি থাকে, আমার ভুলু কুকুর থাকে । এ কথা আমাদের বিশ্বাস হতো না । আবার খেলায় ফিরে যেতাম, খেলতাম ।  কিন্তু ও বসে বসে , ওপারের গাছ পালা , বাড়ি ঘর দেখতো । কাছে গেলে বলতো , ওই যে সবুজ ,কচি কলাপাতা রঙের দালান বাড়ি, ওটাই আমাদের বাড়ি !  এই ভাবে মাস ছয়, বছর গড়াতে লাগলো । মনে প্রশ্ন জাগতে লাগলো, এ টা কি মন গড়া , বা বানিয়ে বানিয়ে বলছে? সত্যি প্রকাশ হোল এক দিন ।  সে বাড়িতে কিছু ...

কবিতা ।। ভাষার জন্য লড়াই ।। চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু

ভাষার জন্য লড়াই চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু মুখের ভাষা বাংলা ভাষা মাকে ডাকি মা, সারা বিশ্বে তোমার মাগো নেই তো তুলনা। তোমার মুখের প্রথম ভাষা আমার মনের সকল আশা তোমার ভাষায় বলবো মাগো আমার মনের কথা, এই ভাষাতেই জড়িয়ে আছে সকল স্বাধীনতা।  এই ভাষাকে আনতে গিয়ে তাজা বুকের রক্ত দিয়ে রাজপথে সব লড়াই হলো করলো লড়াই কারা, আমার মায়ের দামাল ছেলে রক্ত পলাশ যারা।  তোমার ছেলে লড়াই করে আনলো ভাষা ঘরে ঘরে সেদিন থেকে শহীদ মিনার সাজাই ফুলে ফুলে, বীর শহীদের ত্যাগের কথা যাইনি আজও ভুলে।    ++++++++++++++++++++++++++++++++    চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু শহীদ আবুল কাশেম সড়ক, বড় বাজার, চুয়াডাঙ্গা, বাংলাদেশ।

কবিতা ।। মনোজকুমার রায়

জল সিঁড়ি চেক বইয়ের পাতা ফুরিয়ে যেতে থাকে -- ঝরে পড়ে বৃদ্ধ গাছটির পত্রমুকুল কাঁচা গন্ধ বেয়ে চলে সময়ের স্রোতে  সারা ভোর জেগে থাকি ঘুমের টলে তাড়া দেয় একগ্রাস অবিশ্বাসী বায়ু দিন ফুরনো লাল সূর্যের টানে নেমে আসে পাড় ছোঁয়া জল সিঁড়ি ================= মনোজকুমার রায় দঃ ঝাড় আলতা ডাউকিমারী, ধূপগুড়ি জলপাইগুড়ি -৭৩৫২১০ মো ৭৭৯৭৯৩৭৫৬৬

চিরকুটের কবিতা

নতুন পৃথিবী আজ সকালে রোদ্দুর নামুক ভেজা বর্ষার মতো গা ধুয়ে কিছুটা পবিত্র হবো যত জীর্ণ মলিন দ্বেষ বিলীন হোক সব সময়ের তটে গা ভাসিয়ে কিছুটা বিলাসী হবো যা ছিল অতীত যা ছিল কষ্ট সবকিছু ভুলে নবীনে ব্রতী হবো আসুক ধেয়ে সতেজ হাওয়া দূর হোক যত কুণ্ঠা ব্যথা পুরানো যত বিবাদ ভুলে ভালোবাসার আবার বেড়া দেবো কিছুটা আশাবাদী কিছুটা কর্মঠ কিছুটা জেদি কিছুটা শপথ আসুক ছুঁয়ে বাঁচার আলো হাতে হাত রেখেই বিশ্বাসের ঘরে আবার নতুন দীপ জ্বালাবো

উন্মুক্ত পাগলামি ।। আশরাফুল মণ্ডল

উন্মুক্ত পাগলামি আশরাফুল মণ্ডল আহা, অপরূপ নিজস্বতার দাহ! কুঁকড়ে যায় আবহমান, সজনে পাতার বোঁটায়! ভাপওঠা ভাতের কাছে মাছি সত্তায় কী নিপুণ! তবুও ঘোর লাগা বসন্তের ডাক, হাঁকে! খেদিয়ে দেয় পা দোলানো প্রস্তাব, ওই ধুনুরি চোখ! রাংতায় মোড়া ডাকের সাজ, দে দোল দোল! হুইসেল বাজিয়ে কে রুখে দ্যায় সেই নাকছাবির রুদালি কাঁপন! খালবিল ছেঁচে পাঁচসিকের  মানত কুড়িয়ে আনে, বাংলা বাজার। ঠ্যাং নাচানো সুরে চোখ মারছে, দ্যাখো ভ্যানতারা! মুখ খোলা মানেই পাঁজরের স্রোত ভাবা যেন উগরানো টালমাটাল! ঢিল মারা প্রশ্নের রোয়াকে বক্রচোখে যেন মেধাবী কবিতা! মুছে দিও তবে লাজুক গুপ্ত রোগ, দিনরাত্রি! ভালো থেকো তোমরা বাছাধন, রং মাস সে আর কতদিন... ================    ASRAFUL MANDAL Chandidas Avenue, B-zone, Durgapur, Paschim Bardhaman, Pin - 713205,  

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬

  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠালে  অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে হলে ভালো। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # ...

ছোটগল্প ।। নীলিমার আত্মজাগরণ ।। পরেশ চন্দ্র মাহাত

নীলিমার আত্মজাগরণ পরেশ চন্দ্র মাহাত নীলিমা মাহাত, বয়স পঁচিশ প্লাস —তার বাবা মায়ের পঞ্চম তথা শেষ সন্তান। দুই দাদা —বড়দাদা শঙ্কর ও ছোটদাদা বিজয়। বড় দাদা শঙ্কর আর দুই দিদি তাদের কিন্তু বিয়ে হয়ে গেছে। একমাত্র নীলিমা আপাতত স্বামীর কোমল হাতের স্পর্শ ও সহানুভূতি থেকে বঞ্চিত এবং আদৌ কবে অথবা সেই সৌভাগ্য আসবে সেটা ঈশ্বরের নিকটই একমাত্র জ্ঞাত। সেই সঙ্গে দুবছরের সিনিয়র ছোটদাদা বিজয়েরও নীলিমার মতো অবস্থা। তারও জীবনসঙ্গিনী জুটেনি। মোট সাতজন সদস্য নিয়ে গঠিত সংসার নীলিমাদের পরিবার। মধ্যবিত্ত পরিবার —মধ্যবিত্ত পরিবার না বলে যদি নিম্নবিত্ত বলা হয় তবুও কোনো অত্যুক্তি করা হয় না। বাবার প্রত্যেকদিনের আয়ের উপর ভিত্তি করেই চলে সংসার। এই কঠোর এবং কঠিন পরিস্থিতিতেও নীলিমার মা শ্রীমতী মেনকা‚ সংসার সামলে তার ছেলেমেয়েদের পড়াশুনার প্রতি যথেষ্ট তৎপর ও সহানুভূতিশীল। তাদের পড়াশুনায় কোনো খামতি রাখেননি। যথা সময়ে তাদেরকে বিদ্যালয়ের মুখ দেখিয়েছে – টিউশনের বন্দোবস্ত করেছে। তাদের জীবন যাতে সুখকর হয় সেটাই প্রতিদিন ভগবানের কাছে প্রার্থনা করেছে। পাঁচ-পাঁচটি ছেলেমেয়ের মধ্যে সবাইকে উচ্চশিক্ষিত করে তোলা একপ...

কবিতা ।। সোনালি অতীত ।। প্রবোধ কুমার মৃধা

সোনালি অতীত  প্রবোধ কুমার মৃধা   সুশীতল ছায়াঘেরা স্নেহময়ী মাটি মা।   সে আমার জন্মভূমি সপ্তপুরুষের গাঁ।   প্রকৃতির বুক থেকে প্রাণের রসদ নিয়ে।   ফিরিতাম নদীতীরে হৃদয়ের গান গেয়ে।   সন্ধ্যাতারা উঁকি দিত গোধূলি লগনে।   প্রত্যুষে ভাঙিত ঘুম বিহঙ্গ কূজনে ।   আষাঢ়ের নব মেঘে ঘিরিত গগন।   বাদলের ছায়া ঢাকা কদম্ব কানন।   দলবেঁধে মাঠে-বাটে বেতালা-বেছন্দে।   কেটে যেত সারাদিন ভালো কভু মন্দে।   ডাক দেয় শিশুকাল, বাল্য ও কৈশোর।   অফুরন্ত প্রাণোচ্ছ্বল, আনন্দে বিভোর।   করমের স্রোতে ভেসে সংসারের হাটে।   ভিড়িল জীবনতরী নগরের ঘাটে।   ফিরিবার সাধ্য নাই ফেলে আসা পথে।   বাল্য রোমন্থন করি অতীত স্মৃতিতে।                    __________ 

কবিতা ।। রঙ ।। ইউসুফ মোল্লা

  রঙ  ইউসুফ মোল্লা সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি,  পৃথিবী নানা রঙে সেজে উঠেছে।  ধূসর বাদামী রঙ তোমার দেহ,  মাথায় সবুজ রঙের বাবরি চুল,  তাতে গুঁজে রেখেছো লাল-নীল ফুল।  নববধূর মতো সিঁথিতে দিয়েছো সিঁদুর,  চোখে দিয়েছো কাজল।  দিগন্তভরা আকাশ তোমাকে নীল উপহার দিল,  সূর্যের লাল আলো তোমাকে সুন্দর করেছে।  তুমি তাদের ফিরিয়ে দিলে, বুকভরা ভালোবাসা আর স্নেহ।  মাঝে মাঝে এইভাবে হোলি আসে,  আমার মনকে রাঙিয়ে দিতে। ------------------    ইউসুফ মোল্লা উত্তর অঙ্গদ বেড়িয়া, ট্যাংরাখালী, ক্যানিং,  দক্ষিণ ২৪ পরগনা, ৭৪৩৩২৯

চন্দন সুরভি নন্দর কবিতা

টাকার মেশিন                      মায়ের ওষুধ নিয়ে শহর থেকে ফিরল রতন সবে সন্ধ্যা নেমেছে  রাস্তায় আলো কম হাসপাতাল অনেক দূরে  অদৃশ্য যম খেলাকরে  মৃত্যুর সীমান্তে শায়িত মা   শেষ রক্ষা হল না  আস্তে আস্তে ভোরের আলো ফোটে রাতের আঁধারে ঘরের দেওয়াল গুলো রাঙিয়ে গেছে কারা  তুলেছে রং বেরং এর তোরন  এসেছে নির্বাচন  শোনাযায় এবার নাকি এ টি এম চিহ্নে দাঁড়িয়েছে একজন! টাকার মেশিন........  জিতলে সবাইকে দেওয়া হবে! সামনে বসে উল্লাসে ফেটে পড়া রোবট গুলো মানুষ কবে হবে?  ====================== Chandansuravi Nanda Revenue Office  BL&LRO,Manbazar-ll Boro Purulia PIN-723131 Phone-9163332432

জনপ্রিয় লেখা

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ -- "ত্রয়ী কাব্য" ------------------------------------------------------------------------------ সুনন্দ মন্ডল নবীনচন্দ্র সেন সাহিত্যে তথা বাংলা কবিতার জগতে এক অবিস্মরণীয় নাম। তিনি চট্টগ্রাম জেলার নওয়াপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ১৮৪৭ সালে তাঁর জন্ম এবং মত্যু ১৯০৯ সালে। বঙ্কিমচন্দ্র তাঁকে 'বাংলার বায়রন' বলেছেন। ‎জীবৎকালীন যুগে আত্মপ্রত্যয়ের মধ্যে জাতীয় চরিত্র আত্মস্থ করে নতুন সংস্কারে প্রয়াসী হয়ে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখেছেন।মধুসূদন-হেমচন্দ্র-নবীনচন্দ্র--এই তিন কবি বাংলা কাব্যধারায় প্রাণ সঞ্চার করেছিলেন। বিশেষত মহাকাব্য লেখার দুঃসাহস দেখিয়েছিলেন। এদিক থেকে মধুসূদন দত্ত একজন সফল মহাকাব্যিক। তাঁর 'মেঘনাদ বধ' কাব্যের মত গভীর ও ব্যঞ্জনাময় না হলেও নবীনচন্দ্র সেনের 'ত্রয়ী' কাব্য বিশেষ মর্যাদা দাবি করতেই পারে। তাছাড়া 'ত্রয়ী' কাব্যে ধর্মীয় ভাবধারার আবেগ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ‎ ‎নবীনচন্দ্র সেন বহু কাব্য লিখেছেন। যেমন- 'অবকাশরঞ্জিনী','পলাশীর যুদ্ধ', 'ক্লিওপেট্রা', 'রঙ্গমতী', 'খ্রীষ্ট', ...

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা শ্রীজিৎ জানা "সময় চলিয়া যায় নদীর স্রোতের প্রায়"। স্রোতের ধারা তার দু'প্রান্তে রেখে যায় ভাঙাগড়ার চিহ্ন। কালের দৃশ্যপটেও পরিবর্তনের ছবি অনিবার্যভাবেই চোখে পড়ে। সমাজ সময়ের ছাঁচে নিজেকে গড়ে নেয় প্রতিনিয়ত।  সেখানে মনে নেওয়ায় বাধা থাকলেও,মেনে নেওয়ার গাজোয়ারি চলে না। ফলত কাল বদলের গাণিতিক হিসেবে জীবন ও জীবিকার যে রদবদল,তাকেই বোধকরি সংগ্রাম বলা যায়। জীবন সংগ্রাম অথবা টিকে থাকার সংগ্রাম।  মানুষের জীবনযাপনের ক্ষেত্রে আজকে যা অত্যাবশ্যকীয় কাল তার বিকল্প রূপ পেতে পারে অথবা তা অনাবশ্যক হওয়াও স্বাভাবিক। সেক্ষেত্রে উক্ত বিষয়টির পরিষেবা দানকারী মানুষদের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হওয়া অস্বাভাবিক নয়। এক কালে গাঁয়ে কত ধরনের পেশার মানুষদের চোখে পোড়তো। কোন পেশা ছিল সম্বৎসরের,আবার কোন পেশা এককালীন।  সব পেশার লোকেরাই কত নিষ্ঠা ভরে গাঁয়ে  তাদের পরিষেবা দিত। বিনিময়ে সামান্য আয় হত তাদের। আর সেই আয়টুকুই ছিল  তাদের সংসার নির্বাহের একমাত্র উপায়। কালে কালান্তরে সেই সব পেশা,সেই সব সমাজবন্ধুরা হারিয়ে গ্যাছে। শুধুমাত্র তারা বেঁচে আছে অগ্রজের গল্পকথায়,আর বিভিন...

গ্রন্থ আলোচনা: শর্মিষ্ঠা দেবনাথ

প্রতিবাদ যখন অগ্নিবাণী বাংলাদেশে নারীমুক্তি ও নারী আন্দোলনের পুরোধা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ১৯৯তম জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদিত হল " আসিফা এবং.." কাব্য সংকলনটির মধ্যদিয়ে।সংকলনটির বিশেষত্ব হল,এটি উৎসর্গ করা হয়েছে নারীর সম্মান রক্ষার আন্দোলনের যোগ্যতম ব্যক্তি শহীদ শিক্ষক বরুন বিশ্বাসকে। সংকলক প্রকাশক সন্দীপ সাহু নিজে এবং বিশিষ্ট কবি সাহিত্যিকদের দিয়ে লিখিয়ে নিয়েছেন এমন কিছু কবিতা, যা শুধুমাত্র শব্দ ও ছন্দের অনুবন্ধ নয়, এক একটি অগ্নিবাণী।আসলে জীবনকে দেখার স্বাতন্ত্র‍্যে কবিরা সব সময়ই অগ্রগণ্য এবং অনন্য।যুগ ও জীবন দ্বন্দ্বের কণ্ঠস্বরকে আশ্রয় করে,একদিকে মনের প্রবল দাহ ও অন্যদিকে  নির্যাতিতা শিশুকন্যা ও নারীর প্রতি মনের গভীর আকুলতা থেকে প্রকাশ পেয়েছে "আসিফা এবং" এর  কবিতাগুলি।এক অন্ধকার সময়ের মুখোমুখি আমরা,সেই অন্ধকার আমাদের নিয়ে এসেছে সামাজিক অবক্ষয়ের শেষধাপে যেখানে নৈতিকতা,পাপবোধ,গ্লানিকে সরিয়ে রেখে, সমাজের বানানো নিয়মকে তোয়াক্কা না করে,অনায়াস দক্ষতায় ও ক্ষিপ্রতায় নিজেরই ধর্মচেতনাকে জলাঞ্জলি দিয়ে কিছু মানুষ তার পশুত্বের পরিচয় দিয়েছে ধর্ষণ ও ন...

শ্যামাপদ মালাকারের কবিতা

চোখ """"""" নদী, অরণ্য, রাতের ফালি চাঁদ- সবেই তো আমার...স্বর্ণপিঁড়িটাও!। সেদিন, শুকতারাটার গা' মাপতে গিয়ে মনে হল, --ওরা আমার চেয়েও সুখী? দেখিনা একবার গাইতি-শাবল চালিয়ে... চালালাম। জল-মাটি ভেজা একটা 'চোখ' কুড়িয়ে ফিরলাম! সেই চোখদিয়ে দেখি-- শেষ বিকেলের নিরন্ন আঁচে ঝলসানো বুকে নীড়ে ফিরছে ধূলিমাখা কত কাল পা, কি শান্তি - কি তৃষ্ণা! পাতাক্ষোয়া কোদালেরর মাথায় ঝরেপড়া ললাটের ঘামে, কারা যেন জীবন শাণ দেয়! রুক্ষঠোঁটের আবরণে এক সময় নেমে আসে শিশিরস্নাত কালনিশি-- মাঝের ব্যবধান মুছে দেয় প্রতিশ্রুতির ভীড়- - পূর্বজনমের নিদর্শনচুম্বন শেষে হেরে যায় কার মমতাজ-- ম্লান হয়ে যায় কত পিঁড়ি! ... ম্লান হয়ে যায় কত পিঁড়ি! ... ম্লা...

কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা: এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায় ।। পার্থ সারথি চক্রবর্তী

  কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা : এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায়  পার্থ সারথি চক্রবর্তী  কথায় বলে বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। রাজার শহর কোচবিহারের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা আরো অনেক বেশি। দুর্গাপূজা আর দীপাবলির মতো দু'দুটো বিরাট মাপের উৎসবের রেশ কাটতে না কাটতেই, এ শহর ভাসে রাস উৎসবের উন্মাদনায়। মদনমোহন ঠাকুর কোচবিহারের প্রাণের ঠাকুর। তাঁকে নিয়ে সবার আবেগ আর শ্রদ্ধা ও ভালবাসা এখানে বাঁধনছাড়া। এক অপূর্ব মিলনোৎসবের চেহারা নেওয়া এই উৎসব ঐতিহ্যবাহী ও ঐতিহাসিক। জন, মত, সম্প্রদায়ের উর্ধে এই উৎসবের গ্রহণযোগ্যতা। সময়ের কষ্টি পাথরে পরীক্ষিত! এক প্রাণের উৎসব, যা বহুদিন ধরেই গোটা উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ উৎসবে পর্যবসিত।কোচবিহারের এই রাস উৎসবকে কেন্দ্র করে যে মেলা হয় তাও সময়ের হাত ধরে অনেক বদলে গেছে। এসেছে আধুনিকতার ছোঁয়া! শৈশবে বাবার হাত ধরে যে মেলা দেখেছি তা চরিত্র ও আকৃতি দু'দিক থেকেই বদলে গেছে। গত পঁচিশ বছর ধরে খুব কাছে থেকে এই উৎসব ও মেলা দেখা, অনুভব করার সুযোগ হয়েছে। যা দিনদিন অভিজ্ঞতা ও প্রাপ্তির ঝুলিকে সমৃদ্ধ করে গেছে প্রতি ক্ষেত্রেই।  খুব সংক্ষেপে এই উৎসবের ইতিহাস না জানাটা কিন্তু অবিচারই ...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো,  তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) য...

মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা 2024 সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি (লেখক ও সম্পাদকীয় দপ্তরের কথোপকথন আকারে) --কী পত্রিকা? --নবপ্রভাত। --মুদ্রিত না অনলাইন? --মুদ্রিত। --কোন সংখ্যা হবে এটা? --বইমেলা 2024। --কোন কোন ধরনের লেখা থাকবে? --প্রবন্ধ-নিবন্ধ, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া। --বিশেষ কোন বিষয় আছে? --না। যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে। --শব্দ বা লাইন সংখ্যার কোন বাঁধন আছে? --না। নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো (যেমন, কবিতা 12-14 লাইনের মধ্যে, অণুগল্প কমবেশি 200/250শব্দে)। তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়। --ক'টি লেখা পাঠাতে হবে? --মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। --ফেসবুক বা অন্য কোন প্লাটফর্মে প্রকাশিত লেখা কি পাঠানো যাবে? --না। সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। --পত্রিকা কোন সময়ে প্রকাশিত হবে? --জানুয়ারি 2024-এর দ্বিতীয় সপ্তাহে। --লেখা পাঠানোর শেষতারিখ কত? -- 17 ডিসেম্বর 2023। --কীভাবে পাঠাতে হবে? --মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। --লেখার সঙ্গে কী কী দিতে হবে? --নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) --বিশেষ সতর্কতা কিছু ? --১)মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন '...

উৎসবের সৌন্দর্য: সেকালে ও একালে।। সৌরভ পুরকাইত

  উৎসবের সৌন্দর্য:  সেকালে ও একালে   সৌরভ পুরকাইত বাংলার উৎসব বাংলার প্রাণ। প্রতিদিনের জীবনযাপনের মধ্যে যখন মন ক্লান্ত হয়ে পড়ে তখন তাকে বেঁচে থাকার রসদ যোগায় এই উৎসব। কথায় বলে 'বারো মাসে তেরো পার্বণ'।মন আনন্দই চায়।তাই তাকে সজীবতা দিতে,পরিবারের,সমাজের ভালো-মন্দের কথা মাথায় রেখে মানুষ নিজেই সৃষ্টি করে নিয়েছে নানাবিধ উৎসবগুলিকে। একেবারে প্রাচীন কাল থেকে আজ পর্যন্ত মানুষ কখনোই উৎসব বিমুখ ছিল না।উৎসবই তাকে ঘর থেকে বাইরে টেনে এনেছে,চিনতে শিখিয়েছে আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার আনন্দকে। উৎসব আসলে প্রাণের সাথে প্রাণের যোগ, হৃদয়ের সাথে হৃদয়ের যোগ।রবীন্দ্রনাথ বলেছেন 'সত্য যেখানেই সুন্দর হয়ে প্রকাশ পায় সেইখানেই উৎসব'।হৃদয়ের সেই সুকোমল বৃত্তির জাগরণ যেন ফুটে ওঠা ফুলেরই মতো সত্য ও সুন্দর।এই জাগরণই উৎসব। তাই নানা কিছুর মধ্য দিয়ে,নানা উপলক্ষ্যে এই উৎসব প্রকাশ পায়। প্রাচীনকালে মানুষের হাতে না ছিল পসার, না ছিল পসরা।ছিল মনের আন্তরিকতা,মানুষকে কাছে টেনে নেবার ক্ষমতা।সেটাই ছিল উৎসবের সৌন্দর্য। তাই সেদিনের উৎসবে ক্ষুদ্র,তুচ্ছ উপকরণও প্রাণের উচ্ছ্বাসে মহৎ হয়ে উঠত।সেকালের উৎসবে লোক দেখানো ব্যাপার কিছু ...

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

বসন্তের কোকিল তুমি   বিচিত্র কুমার                      (০১) তোমার দু-আঁখির গহীন অরণ্যে একটা স্বপ্নের বহমান নদী রয়েছে, তারই রেশ ধরে আমি হেঁটে চলি অজানা বসন্তের পথে নীর উদ্দেশ্যে। সে চলার কোন শেষ সীমা নেই তাই আমার বিষণ্ণ একতারা সন্ন্যাস খুঁজে ফিরে , কবে তুমি বুঝবে অনুশ্রী মনের পর্দা খুলে একুশ বসন্ত তোমার রঙ ছিটিয়ে যাচ্ছে অচিনপুরে। এদিকে আমার দেহের প্রতিটি শিরা ধমনীতে প্রবাহিত হচ্ছে তোমার ভালোবাসার একটু উষ্ণতা পাবার জন্যে, শুধু অনুভবে তাণ্ডব উচ্ছাসিত হচ্ছে--- যেদিকে তাকাই --- ফুলে ফুলে ভ্রমর গুনগুনিয়ে উড়ে উড়ে পরে বসন্তের কোকিল গান গায় নব বসন্তে, তোমার দুই চোখে আমার একই ছায়া রয়ে যায় উতলা ভালোবাসার সীমান্তে।                 (০২)        এক রক্তাক্ত বসন্তের স্মৃতি কোন এক উতলা বসন্তের সকালে পুষ্পবনে ফুটেছিল একটি টকটকে লাল গোলাপ, তার সাথে হয়েছিলো দেখা প্রথম ফাগুনে হয়েছিল দুজনার এ জীবনের আলাপ।  তারপর প্র...

অনুভবে, অনুধ্যানে অনালোকিত কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী ।। সুপ্রিয় গঙ্গোপাধ্যায়

"এ কালে একটু লেখাপড়া জানা থাকাতে, এবং বঙ্গভাষায় অনেক গুলি পাঠ্য পুস্তক হওয়াতে কেবল পরনিন্দা করিয়া সময় কাটাইতে তাঁহাদের আবশ্যকও হয় না, প্রবৃত্তিও হয় না। …নিতান্ত সখ্যতা বা আত্মীয়তা না থাকিলে, সকল পেটের কথা খুলিয়া নিঃশ্বাস ছাড়িয়া তৃপ্তিলাভ করা, এ কালের মেয়েরা পছন্দ করেন না। তাঁহারা বইখানি, কার্পেটটুকু, নিজের স্বামী পুত্র লইয়া দিন যাপন করিতে বা একেলা থাকিতে কষ্ট বোধ করেন না।" —শরৎকুমারী চৌধুরাণীর এই লেখা (ভারতী ও বালক/ আশ্বিন কার্তিক, মাঘ/ ১২৯৮) দেখে বুঝতে অসুবিধা হয় না উনিশ শতকে নারীর লেখাপড়া শেখার উদ্দেশ্য ছিল মূলত আত্মমুক্তির জন্য। শুধু লেখাপড়া শেখা নয়, সাহিত্য সৃষ্টিতেও ছয়'এর দশক (উনিশ শতকের) থেকে নারীরা যে ধারা সূত্রপাত করেছিল তা নারীর আত্মমুক্তির পথকেই প্রসারিত করেছিল। ছয়'এর দশকের পূর্বেই ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে প্রথম ছাপার হরফে নারী রচিত কাব্য 'চিত্তবিলাসিনী' প্রকাশিত হয়। লেখেন কৃষ্ণকামিনী দাসী। ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে কবি ঠাকুরাণী দাসীর নাম উঠে আসতে থাকে, যিনি কবিতার পাশাপাশি গদ্যও লিখতেন। ঠিক সেই বছরই জন্মগ্রহণ করেন কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী, যাঁর কবিতা লেখা আত্মমুক্...

বছরের বাছাই

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৪তম সংখ্যা ।। ফাল্গুন ১৪৩১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

  এই সংখ্যায় একটি গ্রন্থ আলোচনা ও একটি ধারাবাহিক রচনা ছাড়া সব লেখাই ভাষা দিবস, মাতৃভাষা, ভাষাচেতনা ও ভাষা সমস্যা বিষয়ক রচনা। লেখাগুলি এই সংখ্যাকে অনেকটাই সমৃদ্ধ করেছে। পড়ুন। শেয়ার করুন। মতামত জানান। লেখকগণ নিজের নিজের লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন যতখুশি, যে মাধ্যমে খুশি। কিন্তু স্ক্রিনশট শেয়ার নৈব নৈব চ!  অন্য বিষয়ের লেখাগুলি আগামী সংখ্যার জন্য রইল।  সকলকে ধন্যবাদ, অভিনন্দন। ভালো থাকুন।   --সম্পাদক, নবপ্রভাত। ==  সূ  চি  প  ত্র  == প্রবন্ধ-নিবন্ধ অমর ২১শে ফেব্রুয়ারি বাঙ্গালীর বাংলা ভাষা দুর্জয় দিবস।। বটু কৃষ্ণ হালদার ভাষা শহীদদের পঁচাত্তর বছর।। অনিন্দ্য পাল একুশে ফেব্রুয়ারি : বাঙালির শ্রেষ্ঠ অশ্রুবিন্দু।। জীবনকুমার সরকার কবিগানের সাহিত্যিক ও সমাজতাত্ত্বিক মূল্য।। বারিদ বরন গুপ্ত বিপন্ন মাতৃভাষা ও সংস্কৃতি।। শ্যামল হুদাতী মায়ের দুধ আর মাতৃভাষা।। প্রদীপ কুমার দে একুশে ফেব্রুয়ারি : কিছু কথা।। বনশ্রী গোপ বাংলায় কথা বাংলায় কাজ।। চন্দন দাশগুপ্ত বিপন্ন মাতৃভাষা ও তার মুক্তির পথ।। মিঠুন মুখার্জী. হে অমর একুশে, তোমায় ভুলিনি, ভুলব না।। মহম্মদ মফিজুল ইসলা...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৭তম সংখ্যা ।। জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ মে ২০২৫

  প্রচ্ছদ চিত্র: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সূচিপত্র রবীন্দ্রনাথ এবং কয়েকজন নারী ।। অনিন্দ্য পাল পরাবাস্তববাদ ও বাংলায় জীবনানন্দের কাব্যচর্চা ।। রণেশ রায় প্রতীক্ষা ।। চন্দন দাশগুপ্ত আশ্রয় ।। সায়নী সাহা বয়স্ক শিক্ষাকেন্দ্র ।। দেবাংশু সরকার প্রণামের প্রভু ।। সুপ্রভাত মেট্যা দুর্ভাগ্যের সম্মুখ সমরে ।। সমীর কুমার দত্ত আচমকা শরৎ ।। অর্ণব সামন্ত প্রতিধ্বনি ✍️ সুবীর কুমার ঘোষ জীবন যেখানে যেমন ।। আরজু মুন জারিন বছর সীমান্তে হিসেব নিকেশ ।। রানা জামান চারটি কবিতা ।। বিবেকানন্দ নস্কর আমরা আছি ।। লালন চাঁদ চাওয়া ।। মাথুর দাস কাগজ ফুলে ।। সফিউল মল্লিক সময়ের স্রোত ।। দুর্গাদাস মিদ্যা তুমি মানুষ ।। বদরুল বোরহান দিঘার সমুদ্র ।। মাখনলাল প্রধান পুস্তক-আলোচনা ।। অরবিন্দ পুরকাইত সংযম ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত  চেনা প্রতিবেশী (প্রথম পর্ব) ।। দীপক পাল খেলার মাঠ ।। তূয়া নূর বন্ধু শ্যামলকান্তি ।। শংকর ব্রহ্ম তুমি তোমার মতো থাকলে ।। সত্যেন্দ্রনাথ বেরা গ্রীষ্মে খুবই হিংস্র রবি ।। জগবন্ধু হালদার স্বপ্ন দর্শন ✍️ পার্থ প্রতিম দাস মৌন মুখরতা ।। মুসা মন্ডল রুদ্র বৈশাখ ।। দীনেশ সরকার চিহ্নিত পদযুগ পদাঘাত ।। দেবাশীষ...

প্রচ্ছদ।। ৮৩তম সংখ্যা ।। মাঘ ১৪৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ।। প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র

  বিঃ দ্রঃ আগামী ফেব্রুয়ারি সংখ্যার জন্য ভাষা দিবসের কথা মাথায় রেখে লেখা পাঠান। email: nabapravatblog@gmail.com  সূচিপত্র ফিচার।। গোপাল ভাঁড়ের অজানা সত্য ।। লোকনাথ পাল প্রবন্ধ ।। মসুয়ার রায় পরিবার এবং বঙ্গসংস্কৃতি ।... প্রবন্ধ ।। সুধীন্দ্রনাথ দত্ত: কাব্যের দার্শনিক ও ন... কবিতায় সেতুবন্ধন (তৃতীয় অংশ) শিল্পবিপ্লবোত্তর কাল... রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর বিদ্রোহী প্রেমের কবিতা: ... কবিতা ।। এই মন ভালো নেই দিনে ।। সুপ্রভাত মেট্যা কবিতা ।। জোছনা আলোর স্বপ্ন ।। তুষার ভট্টাচাৰ্য কবিতা ।। নিঃস্ব হবো ।। লালন চাঁদ কবিতা ।। ভালোলাগা  ।। আজিজ উন নেসা  গল্প ।। স্বীকারোক্তি ।। চন্দন দাশগুপ্ত কবিতা ।। শীতের দিন ।। প্রশান্ত কুমার মন্ডল কবিতা ।। শীতকাল ।। অঙ্কিতা পাল নাসির ওয়াদেনের দুটি কবিতা ভূতের লেখা ছড়া ।। বদরুল বোরহান কবিতা ।। ব্যস্ত ।। আলাপন রায় চৌধুরী ছোটগল্প ।। লম্বুর স্বপ্নপূরণ ।। পরেশ চন্দ্র মাহাত কবিতা ।। সৎকার ।। সুমিত মোদক কবিতা।। শীত বৈচিত্র্য ।। সুমিতা চৌধুরী পুস্তক-আলোচনা ।। নিউটনের আপেল ও প্রেমিকা ।। অরবিন্... গল্প।। শান্তির পথে …...।। বন্দনা সেনগুপ্ত কবিতা ।। মা...

সূচিপত্র ।। ৮৯তম সংখ্যা ।। শ্রাবণ ১৪৩২ জুলাই ২০২৫

সূচিপত্র   প্রবন্ধ ।। বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় ।। মাখনলাল প্রধান প্রবন্ধ ।। শ্রমিকের অধিকার ।। চন্দন দাশগুপ্ত প্রবন্ধ ।। ভিনগ্রহীদের সন্ধানে ।। শ্যামল হুদাতী প্রবন্ধ ।। নারীমর্যাদা ও অধিকার ।। হিমাদ্রি শেখর দাস কবিতা ।। মশালের রং তুলি ।। তূণীর আচার্য কবিতা ।। জললিপি ।। রূপক চট্টোপাধ্যায় গুচ্ছকবিতা || শিশির আজম নিবন্ধ ।। পূনর্জন্ম ।। শংকর ব্রহ্ম মুক্তভাবনা ।। কোলাহল তো বারণ হলো ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত গল্প ।। গানের হাড় ।। শুভজিৎ দত্তগুপ্ত গল্প ।। শিকড়ের খোঁজে ।। সমীর কুমার দত্ত সুপ্রভাত মেট্যার পাঁচটি কবিতা গ্রন্থ-আলোচনা ।। আবদুস সালামের কাব্যগ্রন্থ 'অলীক রঙের বিশ্বাস'।। তৈমুর খান অণুগল্প ।। হরিবোল বুড়ো ।। সুমিত মোদক রম্যরচনা ।। গোয়েন্দা গোলাপচন্দ আর প্রেমের ভুল ঠিকানা ।। রাজদীপ মজুমদার দুটি গল্প ।। মুহাম্মদ ফজলুল হক দুটি কবিতা ।। তীর্থঙ্কর সুমিত কবিতা ।। মেঘমুক্তি ।। বন্দনা পাত্র কবিতা ।। ব্যবচ্ছিন্ন শরীর ।। কৌশিক চক্রবর্ত্তী কবিতা ।। শমনচিহ্ন ।। দীপঙ্কর সরকার কবিতা ।। ভালোবাসার দাগ ।। জয়শ্রী ব্যানার্জী কবিতা ।। ফণীমনসা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ছড়া ।। আজও যদি ।। বদ্রীন...

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ৮৬তম সংখ্যা ।। বৈশাখ ১৪৩২ এপ্রিল ২০২৫

সম্পাদকীয় এই সংখ্যাটি বাংলা নববর্ষ বিষয়ক সংখ্যা। নৱৰ্ষকেন্দ্রিক বহু তথ্যপূর্ণ লেখা এই সংখ্যাটিকে সমৃদ্ধ করেছে। বাংলা নববর্ষ উদযাপনের ইতিহাস, রীতিনীতি, উৎসব, পার্বন, লোকাচার, রূপান্তর বহুবিধ বিষয় প্রকাশিত হয়েছে এই সংখ্যার লেখাগুলিতে। এই সংখ্যার বাছাই কিছু লেখার সঙ্গে আগামীতে আরও কিছু লেখা সংযুক্ত করে বাংলা নববর্ষ বিষয়ক একটি মুদ্রিত সংখ্যা প্রকাশ করার ইচ্ছে রইল।  সকলকে নববর্ষের আন্তরিক শুভকামনা জানাই। উৎসবে আনন্দে থাকুন, হানাহানিতে নয়। ধর্ম-ব্যবসায়ীদের চক্রান্ত ব্যর্থ করে সহনাগরিকের পাশে থাকুন। মনে রাখুন, ধর্মকে মানুষই সৃষ্টি করেছে। ঈশ্বর আল্লা গড ইত্যাদির জন্মদাতা মানুষই। মানুষকে ভালোবাসুন। মানুষের পাশে থাকুন।  নিরাশাহরণ নস্কর  সম্পাদক, নবপ্রভাত।  সূচিপত্র প্রবন্ধ-নিবন্ধ-স্মৃতিকথা পয়লা বৈশাখ ।। সিদ্ধার্থ সিংহ নববর্ষকেন্দ্রিক মেলা, পার্বন, উত্সব, লোকাচার ।। সবিতা রায় বিশ্বাস নববর্ষ আবাহন ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে এবং বিভিন্ন দেশে ।। তুষার ভট্টাচার্য নববর্ষের সেকাল ও একাল ।। হিমাদ্রি শেখর দাস নববর্ষের হাল-হকিকৎ ।। শংকর ব্রহ্ম বোশেখি বাঙালি নাকি পোশাকি বাঙালি? ।। দিব্যেন্দু...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬

  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠালে  অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে হলে ভালো। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # ...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। নবপ্রভাত ৮৫ ।। চৈত্র ১৪৩১ মার্চ ২০২৫

  সূচিপত্র নিবন্ধ ।। মরিয়ম মির্জাখানি: এক অনন্য গণিতসূর্য ।। ... নিবন্ধ ।। নারী দিবসে যা ভাবা উচিত ।। বিশ্বনাথ পাল প্রবন্ধ ।। প্রাচীনকাল থেকে নারীরা অবহেলিত, বঞ্চিত,... নিবন্ধ ।। আমার চোখে আদর্শ নারী ।। জয়শ্রী বন্দ্... ফিচার।। এই মুহূর্তে বাংলা সাহিত্যে নারীদের লেখালেখ... আফ্রিকার লোককথা ।। করোটিকে বিয়ে করা অবাধ্য মেয়েটি ... ছোটগল্প ।। মানবী ।। ভুবনেশ্বর মন্ডল নিবন্ধ ।। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে অন্যতম নারী মু... নিবন্ধ ।। প্রিয় মহিলা সাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবী ।। ... গল্প ।। উই ওয়ান্ট জাস্টিস ।। রবীন বসু প্রবন্ধ ।। নিপীড়িতা ।। শ্যামল হুদাতী ফিচার ।। রমণী রতন ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত প্রবন্ধ ।। নারী সমাজ : তখন-এখন ।। তপন মাইতি নিবন্ধ ।। বহমান কালের ধারায় নারী ।। দীপক পাল গল্প ।। আমার দুর্গা ।। অঞ্জনা গোড়িয়া (সাউ) গল্প ।। যোগ্য জবাব ।। সমীর কুমার দত্ত ছোটগল্প ।। আমি দুর্গাকে দেখেছি।। চন্দন দাশগুপ্ত গল্প ।। সম্পর্ক ।। গৌতম সমাজদার কবিতা।। নারী মানে ।। গোবিন্দ মোদক কবিতা।। নারী ।। সমর আচার্য্য ছড়া ।। নারী অসামান্যা ।। সৌমিত্র মজুমদার কবিতা ।। নারী দিবসে ।। বিবেকানন্দ নস্কর কবিতা ।। না...

প্রবন্ধ ।। বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় ।। মাখনলাল প্রধান

বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় মাখনলাল প্রধান বাংলার শিল্প-সংস্কৃতির জগতে যাত্রা শিল্প তথা নাট‍্যশিল্পে মড়ক নেমে এসেছে । যাত্রা শিল্পের মড়কে শুধু কোভিড নয় তার বহুপূর্ব থেকেই অর্থনৈতিক বিপর্যয় , শিক্ষাক্ষেত্রে বন্ধ‍্যাত্ব এবং গ্ৰাম বাংলার পটপরিবর্তন শেষ পেরেক ঠুকে দিয়েছে। যাত্রা-শিল্পের লীলাভূমি ছিল গ্ৰাম বাংলা। গ্ৰামে প্রচুর যাত্রাপালা হত নানা উৎসবকে কেন্দ্র করে । জমিদারি ব‍্যবস্থা লুপ্ত হওয়ার পর গ্ৰামীণ মানুষের উদ‍্যোগে শীতলা পূজা,  কালীপূজা, দুর্গাপূজা, কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা, চড়ক ইত‍্যাদিকে উপলক্ষ‍্য করে যাত্রাপালার আয়োজন না হলে কেমন যেন ম‍্যাড়ম‍্যাড়ে লাগতো। সেই সঙ্গে কলকাতার বড়বড় কোম্পানির যাত্রাপালা ঘটা করে, টিকিট সেল করে হত মাঠে। খুব বড় মাপের খেলার মাঠ যেখানে ছিল না সেখানে ধানের মাঠ নেওয়া হত ‌। ত্রিশ-চল্লিশ হাজার মানুষ দেখতে আসত। স্পেশাল বাস পাঠাত  আয়োজক কর্তৃপক্ষ। বিনা ভাড়ায় বাসে যাতায়াত করত যাত্রার দর্শকেরা। কিন্তু বিকল্প ধানচাষ শুরু হলে জমিগুলো সময় মতো ফাঁকা পাওয়া গেল না । প্রথম দিকে ব‍্যাপকহারে ধান শুরু না হওয়ায় খুব একটা অসুবিধা হত না। বহুক্ষেত্রে  ধান কা...

প্রবন্ধ ।। ভিনগ্রহীদের সন্ধানে ।। শ্যামল হুদাতী

ভিনগ্রহীদের সন্ধানে  শ্যামল হুদাতী  ইতিহাসের শুরু থেকে বারবার মানুষকে একটা প্রশ্ন কুঁড়ে কুঁড়ে খায় – এই মহাবিশ্বে আমরা কি একা? পৃথিবীর মতো আরও গ্রহ রয়েছে, যেখানে মানুষের মতো বুদ্ধিমান প্রাণীরা বাস করে – এই সম্ভাবনা বরাবর মানুষকে মুগ্ধ করেছে। আমাদের প্রত্যেকের জীবনের কখনও না কখনও এই ভাবনা এসেছে। দীর্ঘ কয়েক দশকের গবেষণার পরও, এই বিষয়ে কোনও নিশ্চয়তা দিতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। জেমস ওয়েব মহাকাশ টেলিস্কোপ, বহু দূরের এমন কিছু গ্রহের সন্ধান দিয়েছে, যেগুলিতে প্রাণ থাকতেই পারে। তবে, নিশ্চিত কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে, আমেরিকার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাম্প্রতিক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, ভিনগ্রহীদের খুঁজতে বহু দূরে যাওয়ার কোনও দরকার নেই। তারা এই পৃথিবীতেই মানুষের ছদ্মবেশে মানুষের মধ্যেই বসবাস করতে পারে। আমরা ভিনগ্রহীদের যেমন কল্পনা করি, এরা তার থেকে আলাদা। এরা অনেকটাই, দেবদূতদের মতো। মানব জগতের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক প্রযুক্তিগত নয়, বরং জাদুকরি। মহাকাশে সৌরজগতের গ্রহ পৃথিবী ছাড়া অন্য কোথায় প্রাণ রয়েছে কি না তা নিয়ে চলছে বিস্তর গবেষণা। একই সঙ্গে পৃথিবী ছাড়া অন্য কোনো গ্রহে মানুষ বসবাস ক...

প্রবন্ধ ।। নারীমর্যাদা ও অধিকার ।। হিমাদ্রি শেখর দাস

নারীমর্যাদা ও অধিকার হিমাদ্রি শেখর দাস  নারীর মর্যাদা বলতে বোঝায় নারীর সম্মান, অধিকার, এবং তার ব্যক্তিগত স্বাধীনতা। এটি সমাজে নারীর অবস্থান এবং তার প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গিকে নির্দেশ করে। নারীর প্রতি সম্মানজনক আচরণ করা হয় এবং তাদের অধিকার গুলি সুরক্ষিত থাকে। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে এই শ্রেণি সংগ্রাম শুরু হয়েছিল অনেক আগে।  একদিকে শ্রেণী বৈষম্য অপরদিকে নারী পুরুষের বৈষম্য এই দুটি ছিল শ্রেণীবিভক্ত সমাজের অন্যতম দুটি মূল ভিত। নারীর অধিকারহীনতা বা দাসত্ব শুরু হয় পরিবার ও সম্পত্তির উদ্ভাবনের ফলে। বহু যুগ ধরে নারী সমাজকে পারিবারিক ও সামাজিক দাসত্বের বোঝা বহন করতে হয়েছে বিনা প্রতিবাদে। সভ্যতার ক্রম বিকাশের সাথে সাথে নিপীড়ন ও নির্যাতনের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে - দাস সমাজব্যবস্থা এবং সামন্ততান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় নারীরা পুরুষ ও পরিবারের অধীনতা স্বীকার করে নিতে বাধ্য হয়েছে। সামাজিক উৎপাদনের কাজে নারীদের বঞ্চিত রেখেই তাদের পরাধীন জীবন যাপনের মধ্যে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। নারীর অধিকারহীনতার বিরুদ্ধে সংগ্রামের সূচনা হয় ইংল্যান্ডের শিল্প বিপ্লবের পরবর্তী সময়ে। নতুন করে নারীদের সামাজিক উৎপাদনের কাজে ...

মাসের বাছাই

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯৩তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩২ নভেম্বর ২০২৫

সূচিপত্র বস্তু, চেতনা এবং কবি ।। সজল চক্রবর্তী দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত ।। রণেশ রায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট ও সন্নিহিত অঞ্চলের কথ্য শব্দ ।। অরবিন্দ পুরকাইত চাঁদে জীবন ।। শমীক সমাদ্দার অসমাপ্তি ।। মহুয়া হুই গ্যালাক্সির শব্দে ।। জাসমিনা খাতুন তিনটি কবিতা ।। দিবাকর সেন অপূর্ণতার শেষ অধ্যায় ।। সুপ্রিয় সাহা হাফ ডজন ছড়া ।। স্বপনকুমার পাহাড়ী স্বাপ্নিক অমলের ঘুৃম ।। সঞ্জয় দেওয়ান দুটি কবিতা ।। সৌমিত্র উপাধ্যায় পথ চলতি ✍️পার্থ প্রতিম দাস হেমন্তের বিষাদ ছুঁয়ে ।। শক্তিপদ পাঠক রাই আর বাবা ।। অদিতি চ্যাটার্জি স্থিতিশীল ।। রঞ্জিত মুখোপাধ্যায় হৃদয়ের শূন্য কোড ।। লিপিকা পিঙ্কি দে অমানিশা ।। সৌভিক মুখার্জী দৃষ্টিগত ।। শামীম নওরোজ জ্যান্ত ভূতের গপ্পো ।। পার্থ সারথি চট্টোপাধ্যায় ধুতরা ফুলের ঘ্রাণ ।। মজনু মিয়া তারা খসার আলোয় ।। তীর্থঙ্কর সুমিত উত্তরণে অন্তরায় ।। সমীর কুমার দত্ত প্রেম মুদ্রা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ধারা ।। লালন চাঁদ অন্যের ব্যথায় ব্যথি ।। জগদীশ মণ্ডল গর্ভ ।। শাশ্বত বোস ভ্রমণ বিষয়ক স্মৃতিকথা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত শাপে বর ।। সাইফুল ইসলাম রবিবার ।। সঙ্ঘমিত্রা দাস দুটি ...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬

  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠালে  অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে হলে ভালো। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # ...

গল্প ।। জাতিস্মর ।। আশীষ কুমার বিশ্বাস

    জাতিস্মর   আশীষ  কুমার   বিশ্বাস    গল্পের শুরুটা প্রায় ষাট বছর আগের কথা । যার নাম গৌতম, ডাক নাম ছিল বাবু ।  তার বছর তখন ছয়-সাত হবে । আমরা বা আমি তখন একটু বড় । এক সাথেই চলতো খেলা । গোল্লা ছুট, দাঁড়িয়া বান্দা, চোর-পুলিশ । যে মাঝে মাঝে খেলা থেকে বিরত থাকতো ; সে-ই জাতিস্মর । মাঠের পাশেই ছিল একটা খেঁজুর গাছ । তাতে হাত রেখে দূরের এক গ্রামের দিকে এক মনে তাঁকিয়ে থাকতো "বাবু" । গ্রামটির নাম "বিনয় পল্লী " । মাঝে বড়ো মাঠ । হাঁটা শুরু করলে তিরিশ - চল্লিশ মিনিট লাগবে । মাঝে জলে ভরপুর দেখে কখনো যাওয়া হয়নি । বাবু কে যখন বলতাম, ওপারে কি দেখছিস? ও বলতো, ওখানে আমার ছোট মা থাকে, দিদি থাকে, আমার ভুলু কুকুর থাকে । এ কথা আমাদের বিশ্বাস হতো না । আবার খেলায় ফিরে যেতাম, খেলতাম ।  কিন্তু ও বসে বসে , ওপারের গাছ পালা , বাড়ি ঘর দেখতো । কাছে গেলে বলতো , ওই যে সবুজ ,কচি কলাপাতা রঙের দালান বাড়ি, ওটাই আমাদের বাড়ি !  এই ভাবে মাস ছয়, বছর গড়াতে লাগলো । মনে প্রশ্ন জাগতে লাগলো, এ টা কি মন গড়া , বা বানিয়ে বানিয়ে বলছে? সত্যি প্রকাশ হোল এক দিন ।  সে বাড়িতে কিছু ...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯২তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩২ অক্টোবর ২০২৫

—: সম্পাদকীয় দপ্তর থেকে :— এই সংখ্যার জন্য লেখা এসেছিল প্রায় ১৮০টা। কিন্তু গুণগত মানে দুর্বল লেখার সংখ্যা বহু। আমরা নবপ্রভাতে নতুনদের কথা ভেবে বেশ কিছু দুর্বল লেখাও রাখি। কিন্তু সবসময় একই লোকের দুর্বল লেখা প্রকাশ করা অনুচিত বলে মনে করি। শেষ পর্যন্ত ৯৯ জনের লেখা রাখা গেল। যাদের লেখা প্রকাশিত হল না, তারা লেখাগুলি অন্য যেখানে খুশি পাঠাতে পারেন। বিশেষ কারণে এই সংখ্যার মুদ্রিত সংস্করণ প্রকাশিত হচ্ছে না। আমরা দুঃখিত। তবে মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি শীঘ্রই আসছে। সঙ্গে থাকুন। সকলকে উৎসবমুখর বর্ণময় শুভেচ্ছাসহ— —নিরাশাহরণ নস্কর, সম্পাদক, নবপ্রভাত। অনুরোধ : প্রকাশিত লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন, ছবি/স্ক্রীনশট নয়।  == সূচিপত্র == পড়া-লেখার ইতিহাস অনুসন্ধান।। তপন তরফদার উৎসব : মানুষের চিরন্তন আত্মপ্রকাশ।। কৃশানু ব্যানার্জি বাংলা : সভ্যতা ও সংস্কৃতির জন্মভূমি।। শ্যামল হুদাতী সমুদ্র আর অস্তিত্ব ।। সুব্রত চৌধুরী রাজা ছিলেন জুবিন গর্গ ।। গঙ্গা 'অনু'   আদ্যাশক্তি মহামায়ার বাংলা বারো মাসের বারো রূপ ।। অর্হণ জানা মেধাদাদুর আসর ।। রণেশ রায় বৈজ্ঞানিক মা...

চিরকুটের কবিতা

নতুন পৃথিবী আজ সকালে রোদ্দুর নামুক ভেজা বর্ষার মতো গা ধুয়ে কিছুটা পবিত্র হবো যত জীর্ণ মলিন দ্বেষ বিলীন হোক সব সময়ের তটে গা ভাসিয়ে কিছুটা বিলাসী হবো যা ছিল অতীত যা ছিল কষ্ট সবকিছু ভুলে নবীনে ব্রতী হবো আসুক ধেয়ে সতেজ হাওয়া দূর হোক যত কুণ্ঠা ব্যথা পুরানো যত বিবাদ ভুলে ভালোবাসার আবার বেড়া দেবো কিছুটা আশাবাদী কিছুটা কর্মঠ কিছুটা জেদি কিছুটা শপথ আসুক ছুঁয়ে বাঁচার আলো হাতে হাত রেখেই বিশ্বাসের ঘরে আবার নতুন দীপ জ্বালাবো

কবিতা ।। ভাষার জন্য লড়াই ।। চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু

ভাষার জন্য লড়াই চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু মুখের ভাষা বাংলা ভাষা মাকে ডাকি মা, সারা বিশ্বে তোমার মাগো নেই তো তুলনা। তোমার মুখের প্রথম ভাষা আমার মনের সকল আশা তোমার ভাষায় বলবো মাগো আমার মনের কথা, এই ভাষাতেই জড়িয়ে আছে সকল স্বাধীনতা।  এই ভাষাকে আনতে গিয়ে তাজা বুকের রক্ত দিয়ে রাজপথে সব লড়াই হলো করলো লড়াই কারা, আমার মায়ের দামাল ছেলে রক্ত পলাশ যারা।  তোমার ছেলে লড়াই করে আনলো ভাষা ঘরে ঘরে সেদিন থেকে শহীদ মিনার সাজাই ফুলে ফুলে, বীর শহীদের ত্যাগের কথা যাইনি আজও ভুলে।    ++++++++++++++++++++++++++++++++    চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু শহীদ আবুল কাশেম সড়ক, বড় বাজার, চুয়াডাঙ্গা, বাংলাদেশ।

কবিতা ।। অরণ্যকন্যা ।। অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়

  অরণ্যকন্যা অরিন্দম চট্টোপাধ্যায় অরণ্যকন্যার দৃষ্টির ভেতর বিষাদ বিন্দু ফোঁটা ফোঁটা জলের মতো গড়িয়ে যায়, হয়ে যায় কোন নদীপথ দৃষ্টি ভেঙে ভেঙে চলে যায় কোন এক শূন্য পথে অরণ্যকন্যার হৃদয়ের ভেতর ভাঙে যতো বৃক্ষপত্র নতুন পত্র পুষ্পের খোঁজ নেই ঠোঁট জুড়ে সমুদ্রকাঁপন বুদবুদের মতো অস্ফুট হয়ে উচ্চারিত হয় কোন অক্ষর শব্দ আর তাঁর শরীর থেকে ছড়িয়ে যায় হয়ে যায় একটা অদৃশ্য কবিতা...    ================== @ অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়,  বেহালা, কলকাতা -৭০০০৬০,  

কবিতা ।। মনোজকুমার রায়

জল সিঁড়ি চেক বইয়ের পাতা ফুরিয়ে যেতে থাকে -- ঝরে পড়ে বৃদ্ধ গাছটির পত্রমুকুল কাঁচা গন্ধ বেয়ে চলে সময়ের স্রোতে  সারা ভোর জেগে থাকি ঘুমের টলে তাড়া দেয় একগ্রাস অবিশ্বাসী বায়ু দিন ফুরনো লাল সূর্যের টানে নেমে আসে পাড় ছোঁয়া জল সিঁড়ি ================= মনোজকুমার রায় দঃ ঝাড় আলতা ডাউকিমারী, ধূপগুড়ি জলপাইগুড়ি -৭৩৫২১০ মো ৭৭৯৭৯৩৭৫৬৬

উন্মুক্ত পাগলামি ।। আশরাফুল মণ্ডল

উন্মুক্ত পাগলামি আশরাফুল মণ্ডল আহা, অপরূপ নিজস্বতার দাহ! কুঁকড়ে যায় আবহমান, সজনে পাতার বোঁটায়! ভাপওঠা ভাতের কাছে মাছি সত্তায় কী নিপুণ! তবুও ঘোর লাগা বসন্তের ডাক, হাঁকে! খেদিয়ে দেয় পা দোলানো প্রস্তাব, ওই ধুনুরি চোখ! রাংতায় মোড়া ডাকের সাজ, দে দোল দোল! হুইসেল বাজিয়ে কে রুখে দ্যায় সেই নাকছাবির রুদালি কাঁপন! খালবিল ছেঁচে পাঁচসিকের  মানত কুড়িয়ে আনে, বাংলা বাজার। ঠ্যাং নাচানো সুরে চোখ মারছে, দ্যাখো ভ্যানতারা! মুখ খোলা মানেই পাঁজরের স্রোত ভাবা যেন উগরানো টালমাটাল! ঢিল মারা প্রশ্নের রোয়াকে বক্রচোখে যেন মেধাবী কবিতা! মুছে দিও তবে লাজুক গুপ্ত রোগ, দিনরাত্রি! ভালো থেকো তোমরা বাছাধন, রং মাস সে আর কতদিন... ================    ASRAFUL MANDAL Chandidas Avenue, B-zone, Durgapur, Paschim Bardhaman, Pin - 713205,  

ভালবাসা কারে কয় ।। দ্যুতি রায়

  ভালবাসা কারে কয় দ্যুতি রায়       দ্বিরাগমনে বাপের বাড়ি এলো সৌমিলী । গাড়ি থেকে নেমেই, নিজের ঘরে ঢুকে, দরজা আটকে বসে রইলো সে। বর সমীরণ তার পিছু পিছু এসে ঘরে ঢুকলো। সৌমিলীর বাবা মা বেশ ঘাবড়ে গেছেন, তবে মুখে দেখন হাসির প্রলেপ মাখিয়ে নতুন জামাইকে আপ্যায়ন করলেন। বাপ মায়ের একমাত্র মেয়ে "মিলি", আদরে যতনে মানুষ হলেও অশিক্ষা কুশিক্ষা কখনো পায়নি বরং গুরুজনদের সম্মান করা, সহবত  সংযম সব জানে সে। খুব ভালো ঘরে বরে ওকে সম্প্রদান করা হয়েছে।  শত কষ্ট পেলেও ওই অভিমানী মেয়ে মুখ ফুটে কিছু বলবে না। কি এমন হলো? চিন্তিত হলেন মিলির মা বাবা। একটু বাদে, বন্ধ ঘরে সৌমিলীর মা, মেয়েকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে লাগলেন। বেচারা বর, গোবেচারা মুখে ঘরের বাইরে রইলো। মায়ের প্রশ্নের উত্তরে সৌমিলীর ঝুড়ি ঝুড়ি অভিযোগ করতে লাগলো।           বরের সাথে নাকি ভালো করে আলাপ হয়নি। সে গম্ভীর মানুষ, দরকার ছাড়া মুখে কথা নেই তার। মা বুঝলেন,  কথার ফুলঝুরি মিলি, গল্প করতে শুরু করলে ঝর্নার মতন কলকল করতেই থাকে। তার কথা বলার লোক কম ওখানে। তিনি বলেন মিলিকে," নতুন জায়গা, নুতন...