Skip to main content

ভ্রমণকাহিনি ।। মুকুটমণিপুরের মণিমুক্তা ।। কাকলী দেব


মুকুটমনিপুরের মণিমুক্তা

কাকলী দেব

                                 
(1)
অনেক দিন ধরেই একজন ছটফট করছে, কোথাও ঘুরতে যাবার জন্য। নিজেই নানারকম প্ল্যান করছে, ইউ-টিউবে ভিডিও দেখছে, বেড়ানোর। মাসে একবার অন্তত ঘুরতে না বেরোলে, ওর শরীর খারাপ হয়, মন খারাপ হয় ততোধিক !
তাই প্রায় প্রতি মাসেই বেড়ানোর একটা আয়োজন করতেই হবে! কোভিডের সময়ে ঘোরাঘুরি তে গাড়ী টা খানিক নিরাপদ বলে সেটাতে ভর করেই আমরা বেড়িয়ে পড়ি। তার আবার গাড়ী চালানোয় ভীষন আনন্দ! আমি একটু, "ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া, একটি ধানের শিষের ওপর একটি শিশির বিন্দু "- থিওরীর খুব ভক্ত!


(2)
এখন বসে আছি কংসাবতীর ধারে, পিয়ারলেস রিসর্টে। 
আমাদের কটেজের  মুখ  নদীর দিকে,সামনে বারান্দা। তারপরেই বাগান, সেটা পেরিয়ে রিসর্টের কম্পাউন্ডের পাঁচিল। তার পরেই মিষ্টি নামের, শান্ত নদী কংসাবতী। এত সুন্দর নাম, কবেকার কোন সময়ের মানুষের রাখা, তা কে জানে! কোনও নদীকে এত কাছ থেকে আগে কখনও দেখিনি! নদীর এইখানটায় যেন একটা লেকের মত! জলে তরঙ্গ আছে কিন্ত উথাল পাথাল ঢেউ নেই। কংসাবতীর ওপরে, পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম মাটির বাঁধ আছে। বৃহত্তম মাটির বাঁধ হল হীরাকুঁদ, ওড়িশায় ! 
আজ 25শে জানুয়ারি তে বাঁধের ওপরের রাস্তা বন্ধ। 25 আর 26 দুদিন রাস্তা বন্ধ থাকে। তাই কাল যাব, ঠিক হল! অন্য সময়, বিশেষত শীতকালে বা কোনও ছুটির দিনে এখানে পর্যটকদের খুব ভীড় হয়। দু বছর ধরে করোনা কালে লোক সমাগম যৎসামান্য! এখানে আবহাওয়াও ভাল, হালকা শীত! আজ বেলা দুটো নাগাদ এসে পৌঁছে লাঞ্চ করলাম। দারুণ খাওয়া দাওয়া! তারপর দুপুরে গাড়ীর চালক মশায়ের কিঞ্চিত দিবানিদ্রা নাহলে চলে না! বিকেলে বেড়োলাম টোটো করে ঘুরতে! সেই টোটো আবার ব্যাটারী তে চলে, তার গতি গরুর গাড়ীর থেকে একটু বেশী! 
এখানকার পুরনো কিছু নিদর্শন আমাদের ঘুরিয়ে দেখাল টোটোচালক। ব্রিটিশ আমলের 
বিপ্লবীদের সাহায্যকারী রাজা রাইচরণের প্রাসাদের ধংসাবশেষ, অম্বিকা দেবীর মন্দির, দক্ষিনা কালী মন্দির, লোকাল মার্কেট ইত্যাদি দর্শন করিয়ে সেই অমায়িক টোটোয়ালা আমাদের কাছে 500 টাকা চার্জ নিল যেটা স্পষ্টতই অনেক বেশী কিন্ত পর্যটকদের কাছ থেকে ওদের এই প্রত্যাশা অযৌক্তিক হলেও মেনে নিতে হয়, বিশেষ করে যেসব জায়গা র অর্থনীতি মূলত পর্যটন কেন্দ্রিক!
অম্বিকা দেবী র মন্দির টি সাতশো বছরের পুরনো ! এখন কার পুরোহিত রা ও সেই সময়কার পূজারী দের উত্তরসূরী।
সাতশো-হাজার বছরের  প্রাচীন  দেবী অম্বিকার মূর্তি!কংসাবতীর ধারে ধারে নিম্ন বর্গীয় হিন্দু বা সাঁওতাল দের মধ্যে একটা সময়ে জৈন ধর্ম মত প্রচলিত ছিল।তাদের ও আরাধ্যা দেবী ছিল অম্বিকা। এইসব প্রাচীন ঐতিহ্য গুলি আরও ভাল ভাবে সংরক্ষনের দরকার ছিল। যেটা আমাদের দেশে খুব কম হয়েছে, তাই ইতিহাস ও হারিয়ে যাচ্ছে, ঐতিহাসিক তথ্য সংগ্রহের গুরুত্ব হয়তো খুব কম লোকের কাছেই আছে এখন । কারণ বর্তমানে মানুষ নানান কারণে জর্জরিত!


(3)
আমি যেখানেই যাই, প্রতি বারই কিছু না কিছু নিতে ভুলে যাবই। এটা আমার ট্রেড মার্ক বলা যেতে পারে। এবারে দু, দুটো চটি এত যত্ন করে গুছিয়ে চেয়ারের ওপর  রেখে দিয়েছিলাম, যে শেষ মুহূর্তে আর সেটা আনতে ভুলে গেলাম। তবে আমার এই স্বভাবের জন্য শুধু যে আমি দায়ী, একথা ভাবাটা একদম ভুল হবে, কারণ কোথাও বেরনোর আগে আমাদের বাড়ী তে এমন একটা তাড়াহুড়োর বাতাবরণ তৈরী হবে, তখন যে কোনও লোকের ই এমন হওয়াটা খুব স্বাভাবিক! আর সেই তাড়াহুড়ো ,কার দ্বারা সৃষ্ট হয়, সেটা নিশ্চয়ই এতক্ষনে আপনারা বুঝতে পারছেন।  তাই জন্য গতকাল লোকাল মার্কেট থেকে কিনতে হল একজোড়া হাওয়াই চটি। আজ 26শে জানুয়ারি , প্রথমে ব্রেকফাস্ট সেরে গাড়ী নিয়ে ই বেরনো হল, কিন্ত যতটা ঘোরাঘুরি হবে, সেই পরিমাণ তেল নেই, তাই গাড়ী তে তেল ভরতে খাতরা গেলাম প্রথমে। আজকে যাব, ঝিলিমিলি, তালবেড়িয়া আর সুতান ফরেষ্ট! খাতরা থেকে ঝিলিমিলি যাওয়ার রাস্তা অপূর্ব সুন্দর। কলকাতার থেকে যতটা পথ এসেছি, তার মধ্যে কিছু কিছু জায়গা ছাড়া পুরো রাস্তা ই খুব ভাল। PWD নাকি কাজ করেনা, কিন্ত তার কোনো প্রমাণ এখানে পাইনি। পথের দুধারে সাঁওতালী দের গ্রাম গুলো দেখবার মত সুন্দর! কী পরিচ্ছন্ন মাটির বাড়ী সব, তাতে আবার নিপুণ শিল্প কর্মে র প্রকাশ! মনে হল, দারিদ্র্য থাকলেও এরা কেউ ই হতদরিদ্র নয়। কৃষিই এদের মূল রোজগারের সূত্র!ঝিলিমিলি র মোড় থেকে যাচ্ছি তালবেড়িয়া ড্যাম দেখতে। রাস্তার অনেকটাই যদিও কাঁচা রাস্তা, তবুও বড় গাড়ী নিয়ে যাওয়াটা খুব একটা অসুবিধা জনক হলনা। ড্যাম টি র ওপর থেকে অপূর্ব দৃশ্য!
পরিবহন দফতরের তারিফ করলেও পর্যটন দফতর নিয়ে অনেক অভিযোগ জমা হচ্ছে মনে র মধ্যে।এত সুন্দর ড্যাম কে আরও আকর্ষণীয় ট্যুরিস্ট স্পট হিসেবে গড়ে তোলার কাজ টা তাদেরই । আমি তো নাম টাই জানতাম না, পর্যটন কেন্দ্র গুলোর  সম্পর্কে প্রচারের কাজ টা ও তাদের ই করার কথা ! বিদেশ ঘুরতে গিয়ে দেখেছি, কত সামান্য, সাধারণ জায়গা কে বিশ্বের দরবারে কীভাবে তুলে ধরা হয়! 

 তালবেড়িয়া থেকে একটু তাড়াতাড়িই বেড়িয়ে আসতে হল, কারণ আকাশের মেঘ দেখে মনে হল, এই বুঝি, মুষল ধারে বৃষ্টি নামল! 
এবার আমরা আবার ঝিলিমিলি তে ফিরে এসে, সরকারী পর্যটন নিবাস, রিমিল ইকো রিসর্টে এলাম। ভারী সুন্দর জায়গায় অনেক গুলো ট্রি হাউস বানানো। অনেক পর্যটক ওখানে আছে দেখলাম। পকোড়া সহযোগে চা খেলাম এখানে।এত বড় ছিল পকোড়ার সাইজ যে সব খেতে পারলাম না, দুটো প্যাক করে নিয়ে এলাম, মুকুটমনিপুরের রিসর্টের দুটো বাচ্চা কুকুরের জন্য! একটু সন্দেহ ছিল তেলে ভাজা খাবার ওরা খাবে কিনা, সন্দেহ অমূলক প্রমাণ করে ওরা সেগুলো মহানন্দে চেটেপুটে খেল। মাত্র দুদিনের পরিচয় ওদের সাথে আমার! আমাদের ঘরের দরজার সামনে পোষা কুকুরের মত বসে, মুখের দিকে করুণ ভাবে তাকিয়ে ল্যাজ নাড়ে! সঙ্গে করে আনা  সব বিস্কুটের প্যাকেট ওরাই প্রায় শেষ করল!
ঝিলিমিলি থেকে সুতান ফরেষ্টে যাবার রাস্তা ও ভীষণ সুন্দর। রাস্তার দুপাশেই শাল, পিয়াল, সেগুন, মহুয়া র জঙ্গল। একেবারে গভীর জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে রাস্তা গ্যাছে। জন মানুষ চোখে পড়ে মাঝে মাঝে। হয়তো মেয়েরা কাঠ কুটো মাথায় করে যাচ্ছে। মেয়েরা যথারীতি পরিশ্রমী। 
ঝিলিমিলি থেকে আসার সময়, সুতান ফরেষ্টে ঢোকার রাস্তা পড়বে ডানদিকে আর খাতরা থেকে আসতে গেলে পড়বে বাঁদিকে। এবার শুরু হল পথের উতরাই, পাহাড়ী রাস্তা , অতুলনীয়! এরকম পাকদন্ডী পথের ওপর দিয়ে ও আমাদের গাড়ী চলছে সাঁ সাঁ করে, যেমন সমতলে চলে। এইসব সময় আমার রোষের , উত্তর আসে, " আমার ড্রাইভিং স্কিল টার ও টেষ্ট হয়ে যাচ্ছে! " জাতীয় কথায়! 
অবশেষে মিনিট পনেরো যাবার পর গভীর জঙ্গলের মধ্যে একটা উপত্যকার মত, সেটা পিকনিক স্পট, ক্যম্পিং এর ব্যবস্থাও আছে। বারবিকিউ এর আয়োজন হত, যখন এখানে লোকে বেড়াতে আসত, কিন্ত গত দুবছর সব বন্ধ থাকার পরে, ইদানিং একটু একটু করে আবার লোকের আনাগোনা বাড়ছে! পৃথিবী টা  যেন "go as you like "খেলতে খেলতে  stand still হয়ে দাঁড়িয়ে পড়েছিল। তার মধ্যেই আমাদের মত কতিপয় ট্যুরিস্ট দের ঘোরাঘুরি। এখানে একটা watch tower ও আছে। কী গভীর নৈঃশ্বব্দ এখানে, মানুষের কোলাহল  অবাঞ্ছিত! জঙ্গলের ভেতর সাঁওতাল দের অনেক ছোট ছোট গ্রাম আছে। যত টুকু দেখলাম তাতে এদের প্রতি শ্রদ্ধায় মাথা নত হয়ে আসে। কত ভদ্র আর মার্জিত সবাই !
বয়স্ক মানুষ থেকে ছোট শিশু পর্যন্ত, সবার সুন্দর কথাবার্তা আর ব্যবহার! 
জঙ্গলের পথ বেয়ে, মাথায় শুকনো জ্বালানী কাঠ বয়ে আনা দুজন সাঁওতাল রমনী কে জিজ্ঞেস করি,"ফটো তুলব, তোমাদের?" একজন বলে, "আমাদের আর কি ফটো তুলবে গো? আমরা জংলী মানুষ!" আমি মনে মনে বলি, শহুরে জংলীদের থেকে, তোমরা যে আসলে কত সুন্দর, সে যদি জানতে!"
শুধু সাঁওতাল দেরই নয়, বাঁকুড়ার সাধারণ বাঙালিরা ও খুব শান্তিপ্রিয়, অযথা চীৎকার চেঁচামেচি চোখে পড়েনি। শহরের ডিগ্রি ধারী ভদ্রলোকরা, শহুরে শিক্ষায়, শুধুমাত্র উদ্ধত, অর্বাচীন হয়েছে!

                                 (4)

এবার ফেরার পালা। ফিরে আসি আবার, খাতরার দিকে! খাতরা মোড় থেকেই আমাদের মুকুটমনিপুরের রাস্তা ধরার কথা কিন্ত আমরা তার আগেই একটা বাঁ দিকের রাস্তা ধরে ফেলি ভুল করে! তাতেও অসুবিধা কিছু নেই, অম্বিকা নগরের মধ্যে দিয়ে চমৎকার রাস্তা, যেটা গোড়াবাড়ী হয়ে মুকুটমনিপুরে ঢোকে। 
27শে জানুয়ারী মানে আজ আমরা সকালে ব্রেকফাস্ট করে বেরোলাম নৌকাভ্রমনে। সেকথায় পরে আসছি।ব্রেকফাস্টের সময় আলাপ হল এই রিসর্টের রিসেপশনিষ্ট অর্চনা মান্ডির সঙ্গে।  একটি সাঁওতালী শিক্ষিত, রুচিশীল মেয়ের সাথে আলাপ করে মুগ্ধ হলাম। নিজের কাজ সামলাচ্ছে এই রিসর্টে ,আজ সাত বছর ধরে! রিসর্টের ঠিক পেছনেই ওদের গ্রাম, দুই ছেলেকে বোর্ডিং স্কুলে রেখে পড়ায়, কারণ অর্চনা আর ওর বর দুজনকেই কাজে বেরোতে হয়, তাই ছেলেদের দেখাশোনা ঠিক ভাবে হয়না। যদিও, করোনা কালে স্কুল, বোর্ডিং সবই বন্ধ। দু বছর ধরে ছেলেরা তাই বাড়ীতেই, শাশুড়ীর তত্বাবধানে।
এখানকার বাকী স্টাফরা ও প্রত্যেকে খুবই ভাল! পল্লব হল পিয়ারলেস রিসর্টের ম্যানেজার, যে আবার অভিজিতের স্কুলের বন্ধু! অভিজিত আমাদের বাড়ীতে ইন্টিরিয়রের কাজ করেছিল।  অভিজিত দের পৈতৃক বাড়ী খাতরায়। 
লোকাল লোকজনের সঙ্গে কথা বলে, একটা জিনিস মনে হল যে আমাদের আঞ্চলিক শিক্ষার মান এখনও অনেক উঁচুতে। আজকাল  কলকাতা বা অন্য বড় শহরে বসে যে শিক্ষা আমরা ছেলেমেয়েকে দিয়ে চলেছি তার সঙ্গে এই মফস্বলীয় বা গ্রামীন শিক্ষার একটা পার্থক্য আছে। এখানে সহজ সরল, শিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত মানুষের মধ্যেও এক গভীর মানবিকতার অবস্থান, যেটা শহুরে, ফাঁপা, লোক দেখানো, চাকচিক্যময় শিক্ষায় হারিয়ে যাচ্ছে। দুর্ভাগ্য আমাদের, দুর্ভাগ্য urbanisation এর!
প্রথম দিন এসেই টোটো চেপে পাশের অম্বিকা নগরের প্রাচীন দ্রষ্টব্য গুলো দেখা, দ্বিতীয় দিন নিজেদের গাড়ীতেই  ঘুরলাম, ঝিলিমিলি, সুতান ফরেষ্ট আর তালবেড়িয়া। এবার তৃতীয় দিন আমরা কোথায় যাব,এই ব্যাপারে রিসর্টের সবার সঙ্গেই  কথা বলে, নেট সার্চ করে ঠিক করলাম যে, নৌকাবিহার করব আর ঐভাবে ই কয়েকটা জায়গা আরও ঘুরব।সকাল বেলা, ন'টা নাগাদ ব্রেকফাস্ট সেরে আমরা রেডি, বেরোব বলে, রিসর্টের পেছনের ঘাট থেকেই নৌকা ছাড়বে! নৌকার মাঝি, ছেলে টি দেখি রিসর্টের গেটে দাঁড়িয়ে। পরে নাম জানলাম, রাবণ সর্দার! নাম এবং পদবী দুটো র সাথে তার চেহারা এবং স্বভাবের বিস্তর ফারাক! 
অত্যন্ত অমায়িক অথচ সাবলীল বুদ্ধিদীপ্ত মানুষ সে! পাশের খগড়া গ্রামে থাকে। ওদের গ্রাম টা যেতে আসতে চোখে পড়েছে, 'মুক্ত আকাশ ' নামের একটি পাঠাগার দেখে খুব যাওয়ার ইচ্ছে ছিল কিন্ত সেটা শেষ পর্যন্ত আর সময়াভাবে হয়ে ওঠেনি। 
নৌকা করে আমরা কংসাবতীর ওপর দিয়ে চললাম, বনপুকুরিয়া দ্বীপের 'ডিয়ার পার্কে! সেখান থেকে আবার আসব মুকুটমনিপুরেই পরেশনাথ মন্দির আর কালী মন্দির দেখতে, এরকমই ঠিক হল। বনপুকুরিয়া যেতে লাগল প্রায় ঘণ্টাখানেক! আবার সেই একটা কাঁচা আঘাটায় গিয়ে আমাদের নৌকা ভেড়াল রাবন মাঝি। কোথাও ভাল বাঁধানো ঘাট চোখে পড়লনা।পর্যটন দফতর এই কাজগুলো কেন করছেনা, সেটা  ভেবে আমার বেশ অবাক লাগল!
ট্যুরিস্ট দের আকর্ষণ করতে গেলে তো একটা সঠিক পরিকাঠামোর দরকার!
রাবণ একটা পিঁড়ি পেতে দিল,আমরা কোনরকমে নামলাম তাতে পা রেখে। যাইহোক, দু'পা এগোলেই পাওয়া যাবে ভ্যান রিকশা। ডিয়ার পার্কে যাওয়া এবং আসার ভাড়া মোট দুশো টাকা। এইসব ভ্যান রিকশা এবং নৌকা গুলো খুব সুন্দর দেখতে, বেশ নতুন মনে হল! মাঝি দের এখন সরকারী সমবায় সমিতি গড়ে উঠেছে, তাতে রোজগার স্থিতিশীল হয়েছে আগের থেকে। নদীর ঘাট থেকে ডিয়ার পার্কের রাস্তা, অপূর্ব নির্জনতায় ভরা। এইসব জায়গায় সরকারী বা বেসরকারী রিসর্ট হলে,  তার বানিজ্যিক উন্নতির সম্ভাবনা আছে বলেই মনে হল! তখন আরও অনেকেই শহুরে জঙ্গল ছেড়ে আসল জঙ্গলে নিরিবিলি খুঁজতে চলে আসবে। এইসব ভাবতে লাগলাম ভ্যানে বসে পা দোলাতে দোলাতে। এবার এসে গেছি ডিয়ার পার্কে। বাইরে থেকে দেখে একটুও impressive মনে হচ্ছেনা। পর্যটক হাতে গোনা কজন, একটা হরিণের ও দেখা নেই। বনসংরক্ষন দফতর ভাল কাজ করছে তবে কিছুটা যেন দায়সারা ভাবে! কাঁটাতারে ঘেরা একটা বিশাল এরিয়ার মধ্যেই  নাকি শ' খানেক হরিণ দের বসবাস। বহু অপেক্ষার পরেও যখন কোনও হরিণ চোখে পড়ছে না, তখন আমাদের ভ্যান চালক ছেলে টি এসে তার নিজস্ব কায়দা প্রয়োগ করল! অঃ অঃ করে জোরে জোরে ডাকতে লাগল, আর পাতা সুদ্ধ বড় গাছের ডাল তুলে এনে আমাদের হাতে দিল। এই ডাল কাঁটা তারের বেড়ার ফাঁকে গলিয়ে দিয়ে ওদের কে লোভ দেখাতে হবে, তবেই ওনারা দর্শন দেবেন। সত্যিই তাই হল। একে একে তিনটে সোনার হরিণ ,  সহজে পাতা খাওয়ার লোভে এসে দাঁড়াল বেড়ার ওপারে! কয়েক টা ছাগল আবার আমাদের আশে পাশে ঘুর ঘুর করছে পাতা খাবে বলে! প্রায় একই ধরনের দেখতে, শুধু চামড়ার পার্থক্যের জন্য গর্বিত হরিণ কুল, আর ছাগল বেচারারা চিরকাল অন্ত্যজই থেকে গেল! এত সুন্দর দেখতে হরিণ দের যে, সীতা যে কেন  মায়াবী হরিণ দেখে তার ছলনায় ভুলে 'আমার সোনার হরিণ চাই ' বলে জেদ ধরেছিল, তা সহজেই অনুমান করা যায়!
এরপর ফেরার পালা। বনরক্ষীদের কোয়ার্টার পার্কের পাশেই, কর্মচারীর সংখ্যা ও ভাল, কিন্ত সব কিছু ই একটু অবহেলিত মনে হল!
কাছেই একটা ফুলের বাগান তথা পার্ক আছে, সরকারী প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত। মাত্র দশ টাকা র টিকিট কাটলে ভেতরে ঢুকতে দেবে, বৃদ্ধ গেটরক্ষী। ভ্যান রিকশা করে আবার ফিরে এলাম সেই আঘাটায়, যেখানে রাবণ মাঝি তার মোটর বোট নিয়ে অপেক্ষারত। বোট চলল বেশ স্পীডে, এলাম এবার পরেশনাথ মন্দিরের ঘাটে। এখানেও ঘাটের অবস্হা তথৈবচ! সেই যে ড্যামের ওপর দিয়ে সাত কিলোমিটার লম্বা রাস্তা, তাতে এসে উঠলাম। এই রাস্তার ওপরই দুটি মন্দির আছে। পরেশনাথ মন্দিরে যেতে গেলে অনেক সিঁড়ি ভাঙতে হয়, একটু কষ্টকর হলেও ওপরে মন্দিরের চাতালে এসে দাঁড়ালে মন ভাল হয়ে যায়! খোলা আকাশের নীচেই শিবলিঙ্গ, নন্দী, ভৃঙ্গী এদের মূর্তি রাখা আছে, একটা বেদীর ওপর।প্রাচীন রটনা অনুসারে এই মহাদেবের মাথায় ছাদ করা যাবেনা তাই শত ঝড়, জল, বৃষ্টির মধ্যেই এরা দাঁড়িয়ে আছে বছরের পর বছর ধরে। আজ আবহাওয়াও খুব ভাল, ঝকঝকে রোদের সঙ্গে মনোরম হাওয়া বইছে! এরকম পরিবেশে পূজোর আয়োজন দেখে মন ভাল হয়ে যায়। এখানকার পুরোহিত মশাই বললেন, তারা বংশ পরম্পরায় এই পূজা করছেন। মকর সংক্রান্তির সময় প্রতি বছর মেলা বসে, আশেপাশের গ্রামের মানুষ ভীড় করে।তবে কোভিড আক্রান্ত পৃথিবীর নিয়ম অনুসারে এখন সবকিছুই স্থগিত আছে। এই মন্দির দর্শন করে একটু দূরের কালী মন্দির ও দেখতে গেলাম। এটি একটি নতুন গড়ে ওঠা মন্দির, বেশ সুন্দর, পরিচ্ছন্ন!
বিধানচন্দ্র রায়ের আমলে যখন এই ড্যাম তৈরী হয় তখনই মাটি খুঁড়তে গিয়ে অনেক প্রাচীন মূর্তির সন্ধান মেলে। এইসব দেবদেবীর মূর্তি এবং মন্দির বহু পুরনো সংস্কৃতির পরিচয় বহন করে, সরকার থেকে ড্যাম তৈরির সময়েই এই ছোট টিলার ওপর নতুন করে মন্দির গড়ে দেয়। গতকাল 26শে জানুয়ারি অবধি ড্যামের ওপরের রাস্তা টা বন্ধ ছিল, আজ থেকে যানবাহন চলাচল খুলে দিয়েছে তাই আমরা ঠিক করলাম যে রিসর্টে ফিরে লাঞ্চ করে আবার গাড়ী নিয়ে আসব এই রাস্তায়। যে লোক টির মাধ্যমে আমরা বোট ভাড়া করেছিলাম সে আমাদের একটু মিসগাইড করেছিল হয়তো তার নিজের স্বার্থে ! রাস্তা খোলার খবর জানলে আমরা হয়তো তিন হাজার টাকা দিয়ে বোট ভাড়া করতাম না। তবে, বনপুকুরিয়া যেতে গেলে বোট ছাড়া রাস্তা নেই। বাই রোড যেতে গেলে এত ঘুরে যেতে হবে, যে সে ঝামেলা না করাই ভাল!
পরেশনাথ পাহাড় এবং মন্দির এখনও আর্কিওলজিকাল সাইট হিসেবেই  পরিচিত। এইসব জায়গায় অন্তত হাজার বছরের ইতিহাস লুকানো আছে!

                               (  5)

আমরা এবার ড্যামের ওপরের রাস্তা থেকে নেমে এলাম, যেখানে আমাদের বোট অপেক্ষারত। সব মিলিয়ে আমাদের ঘন্টা চারেক সময় লাগল। ফিরে এলাম রিসর্টে বোটে করে। লাঞ্চের মেনু বলে দিয়ে গেছিলাম, তাই সেইমত খাবার খেলাম তৃপ্তি করে! দুপুরের ঘুম জলান্জলি দিয়ে এবার আবার গাড়ী নিয়ে বেরনো হল। কারণ ড্যামের ওপরের রাস্তা টা explore করতে হবে।
পিয়ারলেস রিসর্টের সবই ভাল কিন্ত আসা যাওয়ার পথ টা এত সরু যে দুদিক দিয়ে দুটো গাড়ী একসাথে যাওয়া অসম্ভব! বেরিয়ে এরকম বিপাকেই পড়তে হয়েছিল। 
ড্যামের ওপর গাড়ী নিয়ে যাওয়ার জন্য একটা ফ্রি গেটপাশ নিতে হয়, যাতে দু ঘন্টা সময় বেঁধে দেওয়া আছে। সাত কিলোমিটার যাবার পরেও আমাদের আরও যাবার ইচ্ছে ছিল কিন্ত তাহলে ফিরতে দেরী হয়ে যাবে। আবার সেই যাবার পথের বাঁ দিকে পড়ল পরেশনাথ মন্দির আর ডান দিকে কালী মন্দির।  ড্যামের ওপর দিয়ে ফেরার সময়ে নামলাম 'মুসাফিরানা' বলে একটা পার্কে,এটাও টিলার ওপরে, একটা ভিউ পয়েন্ট আছে, যেখান থেকে দেখা যাচ্ছে কংসাবতী আর কুমারী নামক দুই নদীর মিলন দৃশ্য! মুকুটমনিপুরের নাম টা ও কেন হয়েছে, সেটা এখানে দাঁড়ালে বোঝা যায়। তিনটে উঁচু টিলা ঠিক মুকুটের মত এই জায়গার একপাশে আছে।
এবার ড্যামের ওপর থেকে নেমে এলাম মুকুটমনিপুরের হস্তশিল্প মার্কেটে।সবই এখন সরকারী দোকান, বিশ্ব বাংলা প্রকল্পের আওতা ভুক্ত।এদের মধ্যে একটা দোকানে শুধু ডোকরা আর পোড়া মাটির জিনিস রাখে, বাকী রা নানা রকম মনোহারী হস্তশিল্প সম্ভারে সজ্জিত। আমার বেশ খানিকটা কেনাকাটা হল।তার মধ্যে অনেকদিনের শখ ছিল বড় পোড়ামাটির ঘোড়া কেনার, সেটাও হল।
কাল সকালেই ফিরে যাব।মনে হচ্ছিল, আর না ফিরে এখানেই থাকি, অবশ্য এটা আমার বেড়াতে গিয়ে কোনও জায়গা ভাল লেগে গেলে প্রতিবারই  মনে হয়।কিন্ত সত্যিই খুব ভাল হল আমাদের মুকুটমনিপুর ভ্রমণ। লং ড্রাইভ হল,  নতুন জায়গা দেখা হল!

হয়তো তেমন বড় কোনও গ্ল্যামারাস জায়গা নয়, কিন্ত নিছক ভ্রমণের নিখাদ আনন্দ পাওয়ার জন্য এই সব জায়গার তুলনা নেই ! কলকাতার থেকে খুব দূরে নয় জায়গা গুলো, গাড়ী নিয়ে বেড়াতে যাবার জন্য আদর্শ। গ্রাম বাংলার স্বাদ পেতে হলে যেতেই হবে।
 

                               কাকলী দেব 



Comments

বিধিবদ্ধ স্বীকার্য :

লেখার বক্তব্যের দায়িত্ব লেখকের, পত্রিকার নয়। আমরা বহু মতের প্রকাশক মাত্র।

মতামত/লেখা এখানে জমা দিন

Name

Email *

Message *

সাম্প্রতিক বাছাই

গল্প ।। জাতিস্মর ।। আশীষ কুমার বিশ্বাস

    জাতিস্মর   আশীষ  কুমার   বিশ্বাস    গল্পের শুরুটা প্রায় ষাট বছর আগের কথা । যার নাম গৌতম, ডাক নাম ছিল বাবু ।  তার বছর তখন ছয়-সাত হবে । আমরা বা আমি তখন একটু বড় । এক সাথেই চলতো খেলা । গোল্লা ছুট, দাঁড়িয়া বান্দা, চোর-পুলিশ । যে মাঝে মাঝে খেলা থেকে বিরত থাকতো ; সে-ই জাতিস্মর । মাঠের পাশেই ছিল একটা খেঁজুর গাছ । তাতে হাত রেখে দূরের এক গ্রামের দিকে এক মনে তাঁকিয়ে থাকতো "বাবু" । গ্রামটির নাম "বিনয় পল্লী " । মাঝে বড়ো মাঠ । হাঁটা শুরু করলে তিরিশ - চল্লিশ মিনিট লাগবে । মাঝে জলে ভরপুর দেখে কখনো যাওয়া হয়নি । বাবু কে যখন বলতাম, ওপারে কি দেখছিস? ও বলতো, ওখানে আমার ছোট মা থাকে, দিদি থাকে, আমার ভুলু কুকুর থাকে । এ কথা আমাদের বিশ্বাস হতো না । আবার খেলায় ফিরে যেতাম, খেলতাম ।  কিন্তু ও বসে বসে , ওপারের গাছ পালা , বাড়ি ঘর দেখতো । কাছে গেলে বলতো , ওই যে সবুজ ,কচি কলাপাতা রঙের দালান বাড়ি, ওটাই আমাদের বাড়ি !  এই ভাবে মাস ছয়, বছর গড়াতে লাগলো । মনে প্রশ্ন জাগতে লাগলো, এ টা কি মন গড়া , বা বানিয়ে বানিয়ে বলছে? সত্যি প্রকাশ হোল এক দিন ।  সে বাড়িতে কিছু ...

কবিতা ।। ভাষার জন্য লড়াই ।। চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু

ভাষার জন্য লড়াই চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু মুখের ভাষা বাংলা ভাষা মাকে ডাকি মা, সারা বিশ্বে তোমার মাগো নেই তো তুলনা। তোমার মুখের প্রথম ভাষা আমার মনের সকল আশা তোমার ভাষায় বলবো মাগো আমার মনের কথা, এই ভাষাতেই জড়িয়ে আছে সকল স্বাধীনতা।  এই ভাষাকে আনতে গিয়ে তাজা বুকের রক্ত দিয়ে রাজপথে সব লড়াই হলো করলো লড়াই কারা, আমার মায়ের দামাল ছেলে রক্ত পলাশ যারা।  তোমার ছেলে লড়াই করে আনলো ভাষা ঘরে ঘরে সেদিন থেকে শহীদ মিনার সাজাই ফুলে ফুলে, বীর শহীদের ত্যাগের কথা যাইনি আজও ভুলে।    ++++++++++++++++++++++++++++++++    চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু শহীদ আবুল কাশেম সড়ক, বড় বাজার, চুয়াডাঙ্গা, বাংলাদেশ।

চিরকুটের কবিতা

নতুন পৃথিবী আজ সকালে রোদ্দুর নামুক ভেজা বর্ষার মতো গা ধুয়ে কিছুটা পবিত্র হবো যত জীর্ণ মলিন দ্বেষ বিলীন হোক সব সময়ের তটে গা ভাসিয়ে কিছুটা বিলাসী হবো যা ছিল অতীত যা ছিল কষ্ট সবকিছু ভুলে নবীনে ব্রতী হবো আসুক ধেয়ে সতেজ হাওয়া দূর হোক যত কুণ্ঠা ব্যথা পুরানো যত বিবাদ ভুলে ভালোবাসার আবার বেড়া দেবো কিছুটা আশাবাদী কিছুটা কর্মঠ কিছুটা জেদি কিছুটা শপথ আসুক ছুঁয়ে বাঁচার আলো হাতে হাত রেখেই বিশ্বাসের ঘরে আবার নতুন দীপ জ্বালাবো

কবিতা ।। মনোজকুমার রায়

জল সিঁড়ি চেক বইয়ের পাতা ফুরিয়ে যেতে থাকে -- ঝরে পড়ে বৃদ্ধ গাছটির পত্রমুকুল কাঁচা গন্ধ বেয়ে চলে সময়ের স্রোতে  সারা ভোর জেগে থাকি ঘুমের টলে তাড়া দেয় একগ্রাস অবিশ্বাসী বায়ু দিন ফুরনো লাল সূর্যের টানে নেমে আসে পাড় ছোঁয়া জল সিঁড়ি ================= মনোজকুমার রায় দঃ ঝাড় আলতা ডাউকিমারী, ধূপগুড়ি জলপাইগুড়ি -৭৩৫২১০ মো ৭৭৯৭৯৩৭৫৬৬

উন্মুক্ত পাগলামি ।। আশরাফুল মণ্ডল

উন্মুক্ত পাগলামি আশরাফুল মণ্ডল আহা, অপরূপ নিজস্বতার দাহ! কুঁকড়ে যায় আবহমান, সজনে পাতার বোঁটায়! ভাপওঠা ভাতের কাছে মাছি সত্তায় কী নিপুণ! তবুও ঘোর লাগা বসন্তের ডাক, হাঁকে! খেদিয়ে দেয় পা দোলানো প্রস্তাব, ওই ধুনুরি চোখ! রাংতায় মোড়া ডাকের সাজ, দে দোল দোল! হুইসেল বাজিয়ে কে রুখে দ্যায় সেই নাকছাবির রুদালি কাঁপন! খালবিল ছেঁচে পাঁচসিকের  মানত কুড়িয়ে আনে, বাংলা বাজার। ঠ্যাং নাচানো সুরে চোখ মারছে, দ্যাখো ভ্যানতারা! মুখ খোলা মানেই পাঁজরের স্রোত ভাবা যেন উগরানো টালমাটাল! ঢিল মারা প্রশ্নের রোয়াকে বক্রচোখে যেন মেধাবী কবিতা! মুছে দিও তবে লাজুক গুপ্ত রোগ, দিনরাত্রি! ভালো থেকো তোমরা বাছাধন, রং মাস সে আর কতদিন... ================    ASRAFUL MANDAL Chandidas Avenue, B-zone, Durgapur, Paschim Bardhaman, Pin - 713205,  

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬

  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠালে  অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে হলে ভালো। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # ...

ছোটগল্প ।। নীলিমার আত্মজাগরণ ।। পরেশ চন্দ্র মাহাত

নীলিমার আত্মজাগরণ পরেশ চন্দ্র মাহাত নীলিমা মাহাত, বয়স পঁচিশ প্লাস —তার বাবা মায়ের পঞ্চম তথা শেষ সন্তান। দুই দাদা —বড়দাদা শঙ্কর ও ছোটদাদা বিজয়। বড় দাদা শঙ্কর আর দুই দিদি তাদের কিন্তু বিয়ে হয়ে গেছে। একমাত্র নীলিমা আপাতত স্বামীর কোমল হাতের স্পর্শ ও সহানুভূতি থেকে বঞ্চিত এবং আদৌ কবে অথবা সেই সৌভাগ্য আসবে সেটা ঈশ্বরের নিকটই একমাত্র জ্ঞাত। সেই সঙ্গে দুবছরের সিনিয়র ছোটদাদা বিজয়েরও নীলিমার মতো অবস্থা। তারও জীবনসঙ্গিনী জুটেনি। মোট সাতজন সদস্য নিয়ে গঠিত সংসার নীলিমাদের পরিবার। মধ্যবিত্ত পরিবার —মধ্যবিত্ত পরিবার না বলে যদি নিম্নবিত্ত বলা হয় তবুও কোনো অত্যুক্তি করা হয় না। বাবার প্রত্যেকদিনের আয়ের উপর ভিত্তি করেই চলে সংসার। এই কঠোর এবং কঠিন পরিস্থিতিতেও নীলিমার মা শ্রীমতী মেনকা‚ সংসার সামলে তার ছেলেমেয়েদের পড়াশুনার প্রতি যথেষ্ট তৎপর ও সহানুভূতিশীল। তাদের পড়াশুনায় কোনো খামতি রাখেননি। যথা সময়ে তাদেরকে বিদ্যালয়ের মুখ দেখিয়েছে – টিউশনের বন্দোবস্ত করেছে। তাদের জীবন যাতে সুখকর হয় সেটাই প্রতিদিন ভগবানের কাছে প্রার্থনা করেছে। পাঁচ-পাঁচটি ছেলেমেয়ের মধ্যে সবাইকে উচ্চশিক্ষিত করে তোলা একপ...

কবিতা ।। সোনালি অতীত ।। প্রবোধ কুমার মৃধা

সোনালি অতীত  প্রবোধ কুমার মৃধা   সুশীতল ছায়াঘেরা স্নেহময়ী মাটি মা।   সে আমার জন্মভূমি সপ্তপুরুষের গাঁ।   প্রকৃতির বুক থেকে প্রাণের রসদ নিয়ে।   ফিরিতাম নদীতীরে হৃদয়ের গান গেয়ে।   সন্ধ্যাতারা উঁকি দিত গোধূলি লগনে।   প্রত্যুষে ভাঙিত ঘুম বিহঙ্গ কূজনে ।   আষাঢ়ের নব মেঘে ঘিরিত গগন।   বাদলের ছায়া ঢাকা কদম্ব কানন।   দলবেঁধে মাঠে-বাটে বেতালা-বেছন্দে।   কেটে যেত সারাদিন ভালো কভু মন্দে।   ডাক দেয় শিশুকাল, বাল্য ও কৈশোর।   অফুরন্ত প্রাণোচ্ছ্বল, আনন্দে বিভোর।   করমের স্রোতে ভেসে সংসারের হাটে।   ভিড়িল জীবনতরী নগরের ঘাটে।   ফিরিবার সাধ্য নাই ফেলে আসা পথে।   বাল্য রোমন্থন করি অতীত স্মৃতিতে।                    __________ 

কবিতা ।। রঙ ।। ইউসুফ মোল্লা

  রঙ  ইউসুফ মোল্লা সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি,  পৃথিবী নানা রঙে সেজে উঠেছে।  ধূসর বাদামী রঙ তোমার দেহ,  মাথায় সবুজ রঙের বাবরি চুল,  তাতে গুঁজে রেখেছো লাল-নীল ফুল।  নববধূর মতো সিঁথিতে দিয়েছো সিঁদুর,  চোখে দিয়েছো কাজল।  দিগন্তভরা আকাশ তোমাকে নীল উপহার দিল,  সূর্যের লাল আলো তোমাকে সুন্দর করেছে।  তুমি তাদের ফিরিয়ে দিলে, বুকভরা ভালোবাসা আর স্নেহ।  মাঝে মাঝে এইভাবে হোলি আসে,  আমার মনকে রাঙিয়ে দিতে। ------------------    ইউসুফ মোল্লা উত্তর অঙ্গদ বেড়িয়া, ট্যাংরাখালী, ক্যানিং,  দক্ষিণ ২৪ পরগনা, ৭৪৩৩২৯

চন্দন সুরভি নন্দর কবিতা

টাকার মেশিন                      মায়ের ওষুধ নিয়ে শহর থেকে ফিরল রতন সবে সন্ধ্যা নেমেছে  রাস্তায় আলো কম হাসপাতাল অনেক দূরে  অদৃশ্য যম খেলাকরে  মৃত্যুর সীমান্তে শায়িত মা   শেষ রক্ষা হল না  আস্তে আস্তে ভোরের আলো ফোটে রাতের আঁধারে ঘরের দেওয়াল গুলো রাঙিয়ে গেছে কারা  তুলেছে রং বেরং এর তোরন  এসেছে নির্বাচন  শোনাযায় এবার নাকি এ টি এম চিহ্নে দাঁড়িয়েছে একজন! টাকার মেশিন........  জিতলে সবাইকে দেওয়া হবে! সামনে বসে উল্লাসে ফেটে পড়া রোবট গুলো মানুষ কবে হবে?  ====================== Chandansuravi Nanda Revenue Office  BL&LRO,Manbazar-ll Boro Purulia PIN-723131 Phone-9163332432

জনপ্রিয় লেখা

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ -- "ত্রয়ী কাব্য" ------------------------------------------------------------------------------ সুনন্দ মন্ডল নবীনচন্দ্র সেন সাহিত্যে তথা বাংলা কবিতার জগতে এক অবিস্মরণীয় নাম। তিনি চট্টগ্রাম জেলার নওয়াপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ১৮৪৭ সালে তাঁর জন্ম এবং মত্যু ১৯০৯ সালে। বঙ্কিমচন্দ্র তাঁকে 'বাংলার বায়রন' বলেছেন। ‎জীবৎকালীন যুগে আত্মপ্রত্যয়ের মধ্যে জাতীয় চরিত্র আত্মস্থ করে নতুন সংস্কারে প্রয়াসী হয়ে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখেছেন।মধুসূদন-হেমচন্দ্র-নবীনচন্দ্র--এই তিন কবি বাংলা কাব্যধারায় প্রাণ সঞ্চার করেছিলেন। বিশেষত মহাকাব্য লেখার দুঃসাহস দেখিয়েছিলেন। এদিক থেকে মধুসূদন দত্ত একজন সফল মহাকাব্যিক। তাঁর 'মেঘনাদ বধ' কাব্যের মত গভীর ও ব্যঞ্জনাময় না হলেও নবীনচন্দ্র সেনের 'ত্রয়ী' কাব্য বিশেষ মর্যাদা দাবি করতেই পারে। তাছাড়া 'ত্রয়ী' কাব্যে ধর্মীয় ভাবধারার আবেগ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ‎ ‎নবীনচন্দ্র সেন বহু কাব্য লিখেছেন। যেমন- 'অবকাশরঞ্জিনী','পলাশীর যুদ্ধ', 'ক্লিওপেট্রা', 'রঙ্গমতী', 'খ্রীষ্ট', ...

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা শ্রীজিৎ জানা "সময় চলিয়া যায় নদীর স্রোতের প্রায়"। স্রোতের ধারা তার দু'প্রান্তে রেখে যায় ভাঙাগড়ার চিহ্ন। কালের দৃশ্যপটেও পরিবর্তনের ছবি অনিবার্যভাবেই চোখে পড়ে। সমাজ সময়ের ছাঁচে নিজেকে গড়ে নেয় প্রতিনিয়ত।  সেখানে মনে নেওয়ায় বাধা থাকলেও,মেনে নেওয়ার গাজোয়ারি চলে না। ফলত কাল বদলের গাণিতিক হিসেবে জীবন ও জীবিকার যে রদবদল,তাকেই বোধকরি সংগ্রাম বলা যায়। জীবন সংগ্রাম অথবা টিকে থাকার সংগ্রাম।  মানুষের জীবনযাপনের ক্ষেত্রে আজকে যা অত্যাবশ্যকীয় কাল তার বিকল্প রূপ পেতে পারে অথবা তা অনাবশ্যক হওয়াও স্বাভাবিক। সেক্ষেত্রে উক্ত বিষয়টির পরিষেবা দানকারী মানুষদের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হওয়া অস্বাভাবিক নয়। এক কালে গাঁয়ে কত ধরনের পেশার মানুষদের চোখে পোড়তো। কোন পেশা ছিল সম্বৎসরের,আবার কোন পেশা এককালীন।  সব পেশার লোকেরাই কত নিষ্ঠা ভরে গাঁয়ে  তাদের পরিষেবা দিত। বিনিময়ে সামান্য আয় হত তাদের। আর সেই আয়টুকুই ছিল  তাদের সংসার নির্বাহের একমাত্র উপায়। কালে কালান্তরে সেই সব পেশা,সেই সব সমাজবন্ধুরা হারিয়ে গ্যাছে। শুধুমাত্র তারা বেঁচে আছে অগ্রজের গল্পকথায়,আর বিভিন...

গ্রন্থ আলোচনা: শর্মিষ্ঠা দেবনাথ

প্রতিবাদ যখন অগ্নিবাণী বাংলাদেশে নারীমুক্তি ও নারী আন্দোলনের পুরোধা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ১৯৯তম জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদিত হল " আসিফা এবং.." কাব্য সংকলনটির মধ্যদিয়ে।সংকলনটির বিশেষত্ব হল,এটি উৎসর্গ করা হয়েছে নারীর সম্মান রক্ষার আন্দোলনের যোগ্যতম ব্যক্তি শহীদ শিক্ষক বরুন বিশ্বাসকে। সংকলক প্রকাশক সন্দীপ সাহু নিজে এবং বিশিষ্ট কবি সাহিত্যিকদের দিয়ে লিখিয়ে নিয়েছেন এমন কিছু কবিতা, যা শুধুমাত্র শব্দ ও ছন্দের অনুবন্ধ নয়, এক একটি অগ্নিবাণী।আসলে জীবনকে দেখার স্বাতন্ত্র‍্যে কবিরা সব সময়ই অগ্রগণ্য এবং অনন্য।যুগ ও জীবন দ্বন্দ্বের কণ্ঠস্বরকে আশ্রয় করে,একদিকে মনের প্রবল দাহ ও অন্যদিকে  নির্যাতিতা শিশুকন্যা ও নারীর প্রতি মনের গভীর আকুলতা থেকে প্রকাশ পেয়েছে "আসিফা এবং" এর  কবিতাগুলি।এক অন্ধকার সময়ের মুখোমুখি আমরা,সেই অন্ধকার আমাদের নিয়ে এসেছে সামাজিক অবক্ষয়ের শেষধাপে যেখানে নৈতিকতা,পাপবোধ,গ্লানিকে সরিয়ে রেখে, সমাজের বানানো নিয়মকে তোয়াক্কা না করে,অনায়াস দক্ষতায় ও ক্ষিপ্রতায় নিজেরই ধর্মচেতনাকে জলাঞ্জলি দিয়ে কিছু মানুষ তার পশুত্বের পরিচয় দিয়েছে ধর্ষণ ও ন...

শ্যামাপদ মালাকারের কবিতা

চোখ """"""" নদী, অরণ্য, রাতের ফালি চাঁদ- সবেই তো আমার...স্বর্ণপিঁড়িটাও!। সেদিন, শুকতারাটার গা' মাপতে গিয়ে মনে হল, --ওরা আমার চেয়েও সুখী? দেখিনা একবার গাইতি-শাবল চালিয়ে... চালালাম। জল-মাটি ভেজা একটা 'চোখ' কুড়িয়ে ফিরলাম! সেই চোখদিয়ে দেখি-- শেষ বিকেলের নিরন্ন আঁচে ঝলসানো বুকে নীড়ে ফিরছে ধূলিমাখা কত কাল পা, কি শান্তি - কি তৃষ্ণা! পাতাক্ষোয়া কোদালেরর মাথায় ঝরেপড়া ললাটের ঘামে, কারা যেন জীবন শাণ দেয়! রুক্ষঠোঁটের আবরণে এক সময় নেমে আসে শিশিরস্নাত কালনিশি-- মাঝের ব্যবধান মুছে দেয় প্রতিশ্রুতির ভীড়- - পূর্বজনমের নিদর্শনচুম্বন শেষে হেরে যায় কার মমতাজ-- ম্লান হয়ে যায় কত পিঁড়ি! ... ম্লান হয়ে যায় কত পিঁড়ি! ... ম্লা...

কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা: এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায় ।। পার্থ সারথি চক্রবর্তী

  কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা : এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায়  পার্থ সারথি চক্রবর্তী  কথায় বলে বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। রাজার শহর কোচবিহারের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা আরো অনেক বেশি। দুর্গাপূজা আর দীপাবলির মতো দু'দুটো বিরাট মাপের উৎসবের রেশ কাটতে না কাটতেই, এ শহর ভাসে রাস উৎসবের উন্মাদনায়। মদনমোহন ঠাকুর কোচবিহারের প্রাণের ঠাকুর। তাঁকে নিয়ে সবার আবেগ আর শ্রদ্ধা ও ভালবাসা এখানে বাঁধনছাড়া। এক অপূর্ব মিলনোৎসবের চেহারা নেওয়া এই উৎসব ঐতিহ্যবাহী ও ঐতিহাসিক। জন, মত, সম্প্রদায়ের উর্ধে এই উৎসবের গ্রহণযোগ্যতা। সময়ের কষ্টি পাথরে পরীক্ষিত! এক প্রাণের উৎসব, যা বহুদিন ধরেই গোটা উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ উৎসবে পর্যবসিত।কোচবিহারের এই রাস উৎসবকে কেন্দ্র করে যে মেলা হয় তাও সময়ের হাত ধরে অনেক বদলে গেছে। এসেছে আধুনিকতার ছোঁয়া! শৈশবে বাবার হাত ধরে যে মেলা দেখেছি তা চরিত্র ও আকৃতি দু'দিক থেকেই বদলে গেছে। গত পঁচিশ বছর ধরে খুব কাছে থেকে এই উৎসব ও মেলা দেখা, অনুভব করার সুযোগ হয়েছে। যা দিনদিন অভিজ্ঞতা ও প্রাপ্তির ঝুলিকে সমৃদ্ধ করে গেছে প্রতি ক্ষেত্রেই।  খুব সংক্ষেপে এই উৎসবের ইতিহাস না জানাটা কিন্তু অবিচারই ...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো,  তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) য...

মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা 2024 সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি (লেখক ও সম্পাদকীয় দপ্তরের কথোপকথন আকারে) --কী পত্রিকা? --নবপ্রভাত। --মুদ্রিত না অনলাইন? --মুদ্রিত। --কোন সংখ্যা হবে এটা? --বইমেলা 2024। --কোন কোন ধরনের লেখা থাকবে? --প্রবন্ধ-নিবন্ধ, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া। --বিশেষ কোন বিষয় আছে? --না। যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে। --শব্দ বা লাইন সংখ্যার কোন বাঁধন আছে? --না। নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো (যেমন, কবিতা 12-14 লাইনের মধ্যে, অণুগল্প কমবেশি 200/250শব্দে)। তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়। --ক'টি লেখা পাঠাতে হবে? --মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। --ফেসবুক বা অন্য কোন প্লাটফর্মে প্রকাশিত লেখা কি পাঠানো যাবে? --না। সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। --পত্রিকা কোন সময়ে প্রকাশিত হবে? --জানুয়ারি 2024-এর দ্বিতীয় সপ্তাহে। --লেখা পাঠানোর শেষতারিখ কত? -- 17 ডিসেম্বর 2023। --কীভাবে পাঠাতে হবে? --মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। --লেখার সঙ্গে কী কী দিতে হবে? --নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) --বিশেষ সতর্কতা কিছু ? --১)মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন '...

উৎসবের সৌন্দর্য: সেকালে ও একালে।। সৌরভ পুরকাইত

  উৎসবের সৌন্দর্য:  সেকালে ও একালে   সৌরভ পুরকাইত বাংলার উৎসব বাংলার প্রাণ। প্রতিদিনের জীবনযাপনের মধ্যে যখন মন ক্লান্ত হয়ে পড়ে তখন তাকে বেঁচে থাকার রসদ যোগায় এই উৎসব। কথায় বলে 'বারো মাসে তেরো পার্বণ'।মন আনন্দই চায়।তাই তাকে সজীবতা দিতে,পরিবারের,সমাজের ভালো-মন্দের কথা মাথায় রেখে মানুষ নিজেই সৃষ্টি করে নিয়েছে নানাবিধ উৎসবগুলিকে। একেবারে প্রাচীন কাল থেকে আজ পর্যন্ত মানুষ কখনোই উৎসব বিমুখ ছিল না।উৎসবই তাকে ঘর থেকে বাইরে টেনে এনেছে,চিনতে শিখিয়েছে আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার আনন্দকে। উৎসব আসলে প্রাণের সাথে প্রাণের যোগ, হৃদয়ের সাথে হৃদয়ের যোগ।রবীন্দ্রনাথ বলেছেন 'সত্য যেখানেই সুন্দর হয়ে প্রকাশ পায় সেইখানেই উৎসব'।হৃদয়ের সেই সুকোমল বৃত্তির জাগরণ যেন ফুটে ওঠা ফুলেরই মতো সত্য ও সুন্দর।এই জাগরণই উৎসব। তাই নানা কিছুর মধ্য দিয়ে,নানা উপলক্ষ্যে এই উৎসব প্রকাশ পায়। প্রাচীনকালে মানুষের হাতে না ছিল পসার, না ছিল পসরা।ছিল মনের আন্তরিকতা,মানুষকে কাছে টেনে নেবার ক্ষমতা।সেটাই ছিল উৎসবের সৌন্দর্য। তাই সেদিনের উৎসবে ক্ষুদ্র,তুচ্ছ উপকরণও প্রাণের উচ্ছ্বাসে মহৎ হয়ে উঠত।সেকালের উৎসবে লোক দেখানো ব্যাপার কিছু ...

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

বসন্তের কোকিল তুমি   বিচিত্র কুমার                      (০১) তোমার দু-আঁখির গহীন অরণ্যে একটা স্বপ্নের বহমান নদী রয়েছে, তারই রেশ ধরে আমি হেঁটে চলি অজানা বসন্তের পথে নীর উদ্দেশ্যে। সে চলার কোন শেষ সীমা নেই তাই আমার বিষণ্ণ একতারা সন্ন্যাস খুঁজে ফিরে , কবে তুমি বুঝবে অনুশ্রী মনের পর্দা খুলে একুশ বসন্ত তোমার রঙ ছিটিয়ে যাচ্ছে অচিনপুরে। এদিকে আমার দেহের প্রতিটি শিরা ধমনীতে প্রবাহিত হচ্ছে তোমার ভালোবাসার একটু উষ্ণতা পাবার জন্যে, শুধু অনুভবে তাণ্ডব উচ্ছাসিত হচ্ছে--- যেদিকে তাকাই --- ফুলে ফুলে ভ্রমর গুনগুনিয়ে উড়ে উড়ে পরে বসন্তের কোকিল গান গায় নব বসন্তে, তোমার দুই চোখে আমার একই ছায়া রয়ে যায় উতলা ভালোবাসার সীমান্তে।                 (০২)        এক রক্তাক্ত বসন্তের স্মৃতি কোন এক উতলা বসন্তের সকালে পুষ্পবনে ফুটেছিল একটি টকটকে লাল গোলাপ, তার সাথে হয়েছিলো দেখা প্রথম ফাগুনে হয়েছিল দুজনার এ জীবনের আলাপ।  তারপর প্র...

অনুভবে, অনুধ্যানে অনালোকিত কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী ।। সুপ্রিয় গঙ্গোপাধ্যায়

"এ কালে একটু লেখাপড়া জানা থাকাতে, এবং বঙ্গভাষায় অনেক গুলি পাঠ্য পুস্তক হওয়াতে কেবল পরনিন্দা করিয়া সময় কাটাইতে তাঁহাদের আবশ্যকও হয় না, প্রবৃত্তিও হয় না। …নিতান্ত সখ্যতা বা আত্মীয়তা না থাকিলে, সকল পেটের কথা খুলিয়া নিঃশ্বাস ছাড়িয়া তৃপ্তিলাভ করা, এ কালের মেয়েরা পছন্দ করেন না। তাঁহারা বইখানি, কার্পেটটুকু, নিজের স্বামী পুত্র লইয়া দিন যাপন করিতে বা একেলা থাকিতে কষ্ট বোধ করেন না।" —শরৎকুমারী চৌধুরাণীর এই লেখা (ভারতী ও বালক/ আশ্বিন কার্তিক, মাঘ/ ১২৯৮) দেখে বুঝতে অসুবিধা হয় না উনিশ শতকে নারীর লেখাপড়া শেখার উদ্দেশ্য ছিল মূলত আত্মমুক্তির জন্য। শুধু লেখাপড়া শেখা নয়, সাহিত্য সৃষ্টিতেও ছয়'এর দশক (উনিশ শতকের) থেকে নারীরা যে ধারা সূত্রপাত করেছিল তা নারীর আত্মমুক্তির পথকেই প্রসারিত করেছিল। ছয়'এর দশকের পূর্বেই ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে প্রথম ছাপার হরফে নারী রচিত কাব্য 'চিত্তবিলাসিনী' প্রকাশিত হয়। লেখেন কৃষ্ণকামিনী দাসী। ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে কবি ঠাকুরাণী দাসীর নাম উঠে আসতে থাকে, যিনি কবিতার পাশাপাশি গদ্যও লিখতেন। ঠিক সেই বছরই জন্মগ্রহণ করেন কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী, যাঁর কবিতা লেখা আত্মমুক্...

বছরের বাছাই

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৪তম সংখ্যা ।। ফাল্গুন ১৪৩১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

  এই সংখ্যায় একটি গ্রন্থ আলোচনা ও একটি ধারাবাহিক রচনা ছাড়া সব লেখাই ভাষা দিবস, মাতৃভাষা, ভাষাচেতনা ও ভাষা সমস্যা বিষয়ক রচনা। লেখাগুলি এই সংখ্যাকে অনেকটাই সমৃদ্ধ করেছে। পড়ুন। শেয়ার করুন। মতামত জানান। লেখকগণ নিজের নিজের লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন যতখুশি, যে মাধ্যমে খুশি। কিন্তু স্ক্রিনশট শেয়ার নৈব নৈব চ!  অন্য বিষয়ের লেখাগুলি আগামী সংখ্যার জন্য রইল।  সকলকে ধন্যবাদ, অভিনন্দন। ভালো থাকুন।   --সম্পাদক, নবপ্রভাত। ==  সূ  চি  প  ত্র  == প্রবন্ধ-নিবন্ধ অমর ২১শে ফেব্রুয়ারি বাঙ্গালীর বাংলা ভাষা দুর্জয় দিবস।। বটু কৃষ্ণ হালদার ভাষা শহীদদের পঁচাত্তর বছর।। অনিন্দ্য পাল একুশে ফেব্রুয়ারি : বাঙালির শ্রেষ্ঠ অশ্রুবিন্দু।। জীবনকুমার সরকার কবিগানের সাহিত্যিক ও সমাজতাত্ত্বিক মূল্য।। বারিদ বরন গুপ্ত বিপন্ন মাতৃভাষা ও সংস্কৃতি।। শ্যামল হুদাতী মায়ের দুধ আর মাতৃভাষা।। প্রদীপ কুমার দে একুশে ফেব্রুয়ারি : কিছু কথা।। বনশ্রী গোপ বাংলায় কথা বাংলায় কাজ।। চন্দন দাশগুপ্ত বিপন্ন মাতৃভাষা ও তার মুক্তির পথ।। মিঠুন মুখার্জী. হে অমর একুশে, তোমায় ভুলিনি, ভুলব না।। মহম্মদ মফিজুল ইসলা...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৭তম সংখ্যা ।। জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ মে ২০২৫

  প্রচ্ছদ চিত্র: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সূচিপত্র রবীন্দ্রনাথ এবং কয়েকজন নারী ।। অনিন্দ্য পাল পরাবাস্তববাদ ও বাংলায় জীবনানন্দের কাব্যচর্চা ।। রণেশ রায় প্রতীক্ষা ।। চন্দন দাশগুপ্ত আশ্রয় ।। সায়নী সাহা বয়স্ক শিক্ষাকেন্দ্র ।। দেবাংশু সরকার প্রণামের প্রভু ।। সুপ্রভাত মেট্যা দুর্ভাগ্যের সম্মুখ সমরে ।। সমীর কুমার দত্ত আচমকা শরৎ ।। অর্ণব সামন্ত প্রতিধ্বনি ✍️ সুবীর কুমার ঘোষ জীবন যেখানে যেমন ।। আরজু মুন জারিন বছর সীমান্তে হিসেব নিকেশ ।। রানা জামান চারটি কবিতা ।। বিবেকানন্দ নস্কর আমরা আছি ।। লালন চাঁদ চাওয়া ।। মাথুর দাস কাগজ ফুলে ।। সফিউল মল্লিক সময়ের স্রোত ।। দুর্গাদাস মিদ্যা তুমি মানুষ ।। বদরুল বোরহান দিঘার সমুদ্র ।। মাখনলাল প্রধান পুস্তক-আলোচনা ।। অরবিন্দ পুরকাইত সংযম ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত  চেনা প্রতিবেশী (প্রথম পর্ব) ।। দীপক পাল খেলার মাঠ ।। তূয়া নূর বন্ধু শ্যামলকান্তি ।। শংকর ব্রহ্ম তুমি তোমার মতো থাকলে ।। সত্যেন্দ্রনাথ বেরা গ্রীষ্মে খুবই হিংস্র রবি ।। জগবন্ধু হালদার স্বপ্ন দর্শন ✍️ পার্থ প্রতিম দাস মৌন মুখরতা ।। মুসা মন্ডল রুদ্র বৈশাখ ।। দীনেশ সরকার চিহ্নিত পদযুগ পদাঘাত ।। দেবাশীষ...

প্রচ্ছদ।। ৮৩তম সংখ্যা ।। মাঘ ১৪৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ।। প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র

  বিঃ দ্রঃ আগামী ফেব্রুয়ারি সংখ্যার জন্য ভাষা দিবসের কথা মাথায় রেখে লেখা পাঠান। email: nabapravatblog@gmail.com  সূচিপত্র ফিচার।। গোপাল ভাঁড়ের অজানা সত্য ।। লোকনাথ পাল প্রবন্ধ ।। মসুয়ার রায় পরিবার এবং বঙ্গসংস্কৃতি ।... প্রবন্ধ ।। সুধীন্দ্রনাথ দত্ত: কাব্যের দার্শনিক ও ন... কবিতায় সেতুবন্ধন (তৃতীয় অংশ) শিল্পবিপ্লবোত্তর কাল... রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর বিদ্রোহী প্রেমের কবিতা: ... কবিতা ।। এই মন ভালো নেই দিনে ।। সুপ্রভাত মেট্যা কবিতা ।। জোছনা আলোর স্বপ্ন ।। তুষার ভট্টাচাৰ্য কবিতা ।। নিঃস্ব হবো ।। লালন চাঁদ কবিতা ।। ভালোলাগা  ।। আজিজ উন নেসা  গল্প ।। স্বীকারোক্তি ।। চন্দন দাশগুপ্ত কবিতা ।। শীতের দিন ।। প্রশান্ত কুমার মন্ডল কবিতা ।। শীতকাল ।। অঙ্কিতা পাল নাসির ওয়াদেনের দুটি কবিতা ভূতের লেখা ছড়া ।। বদরুল বোরহান কবিতা ।। ব্যস্ত ।। আলাপন রায় চৌধুরী ছোটগল্প ।। লম্বুর স্বপ্নপূরণ ।। পরেশ চন্দ্র মাহাত কবিতা ।। সৎকার ।। সুমিত মোদক কবিতা।। শীত বৈচিত্র্য ।। সুমিতা চৌধুরী পুস্তক-আলোচনা ।। নিউটনের আপেল ও প্রেমিকা ।। অরবিন্... গল্প।। শান্তির পথে …...।। বন্দনা সেনগুপ্ত কবিতা ।। মা...

সূচিপত্র ।। ৮৯তম সংখ্যা ।। শ্রাবণ ১৪৩২ জুলাই ২০২৫

সূচিপত্র   প্রবন্ধ ।। বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় ।। মাখনলাল প্রধান প্রবন্ধ ।। শ্রমিকের অধিকার ।। চন্দন দাশগুপ্ত প্রবন্ধ ।। ভিনগ্রহীদের সন্ধানে ।। শ্যামল হুদাতী প্রবন্ধ ।। নারীমর্যাদা ও অধিকার ।। হিমাদ্রি শেখর দাস কবিতা ।। মশালের রং তুলি ।। তূণীর আচার্য কবিতা ।। জললিপি ।। রূপক চট্টোপাধ্যায় গুচ্ছকবিতা || শিশির আজম নিবন্ধ ।। পূনর্জন্ম ।। শংকর ব্রহ্ম মুক্তভাবনা ।। কোলাহল তো বারণ হলো ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত গল্প ।। গানের হাড় ।। শুভজিৎ দত্তগুপ্ত গল্প ।। শিকড়ের খোঁজে ।। সমীর কুমার দত্ত সুপ্রভাত মেট্যার পাঁচটি কবিতা গ্রন্থ-আলোচনা ।। আবদুস সালামের কাব্যগ্রন্থ 'অলীক রঙের বিশ্বাস'।। তৈমুর খান অণুগল্প ।। হরিবোল বুড়ো ।। সুমিত মোদক রম্যরচনা ।। গোয়েন্দা গোলাপচন্দ আর প্রেমের ভুল ঠিকানা ।। রাজদীপ মজুমদার দুটি গল্প ।। মুহাম্মদ ফজলুল হক দুটি কবিতা ।। তীর্থঙ্কর সুমিত কবিতা ।। মেঘমুক্তি ।। বন্দনা পাত্র কবিতা ।। ব্যবচ্ছিন্ন শরীর ।। কৌশিক চক্রবর্ত্তী কবিতা ।। শমনচিহ্ন ।। দীপঙ্কর সরকার কবিতা ।। ভালোবাসার দাগ ।। জয়শ্রী ব্যানার্জী কবিতা ।। ফণীমনসা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ছড়া ।। আজও যদি ।। বদ্রীন...

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ৮৬তম সংখ্যা ।। বৈশাখ ১৪৩২ এপ্রিল ২০২৫

সম্পাদকীয় এই সংখ্যাটি বাংলা নববর্ষ বিষয়ক সংখ্যা। নৱৰ্ষকেন্দ্রিক বহু তথ্যপূর্ণ লেখা এই সংখ্যাটিকে সমৃদ্ধ করেছে। বাংলা নববর্ষ উদযাপনের ইতিহাস, রীতিনীতি, উৎসব, পার্বন, লোকাচার, রূপান্তর বহুবিধ বিষয় প্রকাশিত হয়েছে এই সংখ্যার লেখাগুলিতে। এই সংখ্যার বাছাই কিছু লেখার সঙ্গে আগামীতে আরও কিছু লেখা সংযুক্ত করে বাংলা নববর্ষ বিষয়ক একটি মুদ্রিত সংখ্যা প্রকাশ করার ইচ্ছে রইল।  সকলকে নববর্ষের আন্তরিক শুভকামনা জানাই। উৎসবে আনন্দে থাকুন, হানাহানিতে নয়। ধর্ম-ব্যবসায়ীদের চক্রান্ত ব্যর্থ করে সহনাগরিকের পাশে থাকুন। মনে রাখুন, ধর্মকে মানুষই সৃষ্টি করেছে। ঈশ্বর আল্লা গড ইত্যাদির জন্মদাতা মানুষই। মানুষকে ভালোবাসুন। মানুষের পাশে থাকুন।  নিরাশাহরণ নস্কর  সম্পাদক, নবপ্রভাত।  সূচিপত্র প্রবন্ধ-নিবন্ধ-স্মৃতিকথা পয়লা বৈশাখ ।। সিদ্ধার্থ সিংহ নববর্ষকেন্দ্রিক মেলা, পার্বন, উত্সব, লোকাচার ।। সবিতা রায় বিশ্বাস নববর্ষ আবাহন ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে এবং বিভিন্ন দেশে ।। তুষার ভট্টাচার্য নববর্ষের সেকাল ও একাল ।। হিমাদ্রি শেখর দাস নববর্ষের হাল-হকিকৎ ।। শংকর ব্রহ্ম বোশেখি বাঙালি নাকি পোশাকি বাঙালি? ।। দিব্যেন্দু...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬

  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠালে  অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে হলে ভালো। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # ...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। নবপ্রভাত ৮৫ ।। চৈত্র ১৪৩১ মার্চ ২০২৫

  সূচিপত্র নিবন্ধ ।। মরিয়ম মির্জাখানি: এক অনন্য গণিতসূর্য ।। ... নিবন্ধ ।। নারী দিবসে যা ভাবা উচিত ।। বিশ্বনাথ পাল প্রবন্ধ ।। প্রাচীনকাল থেকে নারীরা অবহেলিত, বঞ্চিত,... নিবন্ধ ।। আমার চোখে আদর্শ নারী ।। জয়শ্রী বন্দ্... ফিচার।। এই মুহূর্তে বাংলা সাহিত্যে নারীদের লেখালেখ... আফ্রিকার লোককথা ।। করোটিকে বিয়ে করা অবাধ্য মেয়েটি ... ছোটগল্প ।। মানবী ।। ভুবনেশ্বর মন্ডল নিবন্ধ ।। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে অন্যতম নারী মু... নিবন্ধ ।। প্রিয় মহিলা সাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবী ।। ... গল্প ।। উই ওয়ান্ট জাস্টিস ।। রবীন বসু প্রবন্ধ ।। নিপীড়িতা ।। শ্যামল হুদাতী ফিচার ।। রমণী রতন ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত প্রবন্ধ ।। নারী সমাজ : তখন-এখন ।। তপন মাইতি নিবন্ধ ।। বহমান কালের ধারায় নারী ।। দীপক পাল গল্প ।। আমার দুর্গা ।। অঞ্জনা গোড়িয়া (সাউ) গল্প ।। যোগ্য জবাব ।। সমীর কুমার দত্ত ছোটগল্প ।। আমি দুর্গাকে দেখেছি।। চন্দন দাশগুপ্ত গল্প ।। সম্পর্ক ।। গৌতম সমাজদার কবিতা।। নারী মানে ।। গোবিন্দ মোদক কবিতা।। নারী ।। সমর আচার্য্য ছড়া ।। নারী অসামান্যা ।। সৌমিত্র মজুমদার কবিতা ।। নারী দিবসে ।। বিবেকানন্দ নস্কর কবিতা ।। না...

প্রবন্ধ ।। বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় ।। মাখনলাল প্রধান

বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় মাখনলাল প্রধান বাংলার শিল্প-সংস্কৃতির জগতে যাত্রা শিল্প তথা নাট‍্যশিল্পে মড়ক নেমে এসেছে । যাত্রা শিল্পের মড়কে শুধু কোভিড নয় তার বহুপূর্ব থেকেই অর্থনৈতিক বিপর্যয় , শিক্ষাক্ষেত্রে বন্ধ‍্যাত্ব এবং গ্ৰাম বাংলার পটপরিবর্তন শেষ পেরেক ঠুকে দিয়েছে। যাত্রা-শিল্পের লীলাভূমি ছিল গ্ৰাম বাংলা। গ্ৰামে প্রচুর যাত্রাপালা হত নানা উৎসবকে কেন্দ্র করে । জমিদারি ব‍্যবস্থা লুপ্ত হওয়ার পর গ্ৰামীণ মানুষের উদ‍্যোগে শীতলা পূজা,  কালীপূজা, দুর্গাপূজা, কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা, চড়ক ইত‍্যাদিকে উপলক্ষ‍্য করে যাত্রাপালার আয়োজন না হলে কেমন যেন ম‍্যাড়ম‍্যাড়ে লাগতো। সেই সঙ্গে কলকাতার বড়বড় কোম্পানির যাত্রাপালা ঘটা করে, টিকিট সেল করে হত মাঠে। খুব বড় মাপের খেলার মাঠ যেখানে ছিল না সেখানে ধানের মাঠ নেওয়া হত ‌। ত্রিশ-চল্লিশ হাজার মানুষ দেখতে আসত। স্পেশাল বাস পাঠাত  আয়োজক কর্তৃপক্ষ। বিনা ভাড়ায় বাসে যাতায়াত করত যাত্রার দর্শকেরা। কিন্তু বিকল্প ধানচাষ শুরু হলে জমিগুলো সময় মতো ফাঁকা পাওয়া গেল না । প্রথম দিকে ব‍্যাপকহারে ধান শুরু না হওয়ায় খুব একটা অসুবিধা হত না। বহুক্ষেত্রে  ধান কা...

প্রবন্ধ ।। ভিনগ্রহীদের সন্ধানে ।। শ্যামল হুদাতী

ভিনগ্রহীদের সন্ধানে  শ্যামল হুদাতী  ইতিহাসের শুরু থেকে বারবার মানুষকে একটা প্রশ্ন কুঁড়ে কুঁড়ে খায় – এই মহাবিশ্বে আমরা কি একা? পৃথিবীর মতো আরও গ্রহ রয়েছে, যেখানে মানুষের মতো বুদ্ধিমান প্রাণীরা বাস করে – এই সম্ভাবনা বরাবর মানুষকে মুগ্ধ করেছে। আমাদের প্রত্যেকের জীবনের কখনও না কখনও এই ভাবনা এসেছে। দীর্ঘ কয়েক দশকের গবেষণার পরও, এই বিষয়ে কোনও নিশ্চয়তা দিতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। জেমস ওয়েব মহাকাশ টেলিস্কোপ, বহু দূরের এমন কিছু গ্রহের সন্ধান দিয়েছে, যেগুলিতে প্রাণ থাকতেই পারে। তবে, নিশ্চিত কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে, আমেরিকার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাম্প্রতিক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, ভিনগ্রহীদের খুঁজতে বহু দূরে যাওয়ার কোনও দরকার নেই। তারা এই পৃথিবীতেই মানুষের ছদ্মবেশে মানুষের মধ্যেই বসবাস করতে পারে। আমরা ভিনগ্রহীদের যেমন কল্পনা করি, এরা তার থেকে আলাদা। এরা অনেকটাই, দেবদূতদের মতো। মানব জগতের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক প্রযুক্তিগত নয়, বরং জাদুকরি। মহাকাশে সৌরজগতের গ্রহ পৃথিবী ছাড়া অন্য কোথায় প্রাণ রয়েছে কি না তা নিয়ে চলছে বিস্তর গবেষণা। একই সঙ্গে পৃথিবী ছাড়া অন্য কোনো গ্রহে মানুষ বসবাস ক...

প্রবন্ধ ।। নারীমর্যাদা ও অধিকার ।। হিমাদ্রি শেখর দাস

নারীমর্যাদা ও অধিকার হিমাদ্রি শেখর দাস  নারীর মর্যাদা বলতে বোঝায় নারীর সম্মান, অধিকার, এবং তার ব্যক্তিগত স্বাধীনতা। এটি সমাজে নারীর অবস্থান এবং তার প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গিকে নির্দেশ করে। নারীর প্রতি সম্মানজনক আচরণ করা হয় এবং তাদের অধিকার গুলি সুরক্ষিত থাকে। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে এই শ্রেণি সংগ্রাম শুরু হয়েছিল অনেক আগে।  একদিকে শ্রেণী বৈষম্য অপরদিকে নারী পুরুষের বৈষম্য এই দুটি ছিল শ্রেণীবিভক্ত সমাজের অন্যতম দুটি মূল ভিত। নারীর অধিকারহীনতা বা দাসত্ব শুরু হয় পরিবার ও সম্পত্তির উদ্ভাবনের ফলে। বহু যুগ ধরে নারী সমাজকে পারিবারিক ও সামাজিক দাসত্বের বোঝা বহন করতে হয়েছে বিনা প্রতিবাদে। সভ্যতার ক্রম বিকাশের সাথে সাথে নিপীড়ন ও নির্যাতনের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে - দাস সমাজব্যবস্থা এবং সামন্ততান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় নারীরা পুরুষ ও পরিবারের অধীনতা স্বীকার করে নিতে বাধ্য হয়েছে। সামাজিক উৎপাদনের কাজে নারীদের বঞ্চিত রেখেই তাদের পরাধীন জীবন যাপনের মধ্যে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। নারীর অধিকারহীনতার বিরুদ্ধে সংগ্রামের সূচনা হয় ইংল্যান্ডের শিল্প বিপ্লবের পরবর্তী সময়ে। নতুন করে নারীদের সামাজিক উৎপাদনের কাজে ...

মাসের বাছাই

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯৩তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩২ নভেম্বর ২০২৫

সূচিপত্র বস্তু, চেতনা এবং কবি ।। সজল চক্রবর্তী দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত ।। রণেশ রায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট ও সন্নিহিত অঞ্চলের কথ্য শব্দ ।। অরবিন্দ পুরকাইত চাঁদে জীবন ।। শমীক সমাদ্দার অসমাপ্তি ।। মহুয়া হুই গ্যালাক্সির শব্দে ।। জাসমিনা খাতুন তিনটি কবিতা ।। দিবাকর সেন অপূর্ণতার শেষ অধ্যায় ।। সুপ্রিয় সাহা হাফ ডজন ছড়া ।। স্বপনকুমার পাহাড়ী স্বাপ্নিক অমলের ঘুৃম ।। সঞ্জয় দেওয়ান দুটি কবিতা ।। সৌমিত্র উপাধ্যায় পথ চলতি ✍️পার্থ প্রতিম দাস হেমন্তের বিষাদ ছুঁয়ে ।। শক্তিপদ পাঠক রাই আর বাবা ।। অদিতি চ্যাটার্জি স্থিতিশীল ।। রঞ্জিত মুখোপাধ্যায় হৃদয়ের শূন্য কোড ।। লিপিকা পিঙ্কি দে অমানিশা ।। সৌভিক মুখার্জী দৃষ্টিগত ।। শামীম নওরোজ জ্যান্ত ভূতের গপ্পো ।। পার্থ সারথি চট্টোপাধ্যায় ধুতরা ফুলের ঘ্রাণ ।। মজনু মিয়া তারা খসার আলোয় ।। তীর্থঙ্কর সুমিত উত্তরণে অন্তরায় ।। সমীর কুমার দত্ত প্রেম মুদ্রা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ধারা ।। লালন চাঁদ অন্যের ব্যথায় ব্যথি ।। জগদীশ মণ্ডল গর্ভ ।। শাশ্বত বোস ভ্রমণ বিষয়ক স্মৃতিকথা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত শাপে বর ।। সাইফুল ইসলাম রবিবার ।। সঙ্ঘমিত্রা দাস দুটি ...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬

  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠালে  অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে হলে ভালো। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # ...

গল্প ।। জাতিস্মর ।। আশীষ কুমার বিশ্বাস

    জাতিস্মর   আশীষ  কুমার   বিশ্বাস    গল্পের শুরুটা প্রায় ষাট বছর আগের কথা । যার নাম গৌতম, ডাক নাম ছিল বাবু ।  তার বছর তখন ছয়-সাত হবে । আমরা বা আমি তখন একটু বড় । এক সাথেই চলতো খেলা । গোল্লা ছুট, দাঁড়িয়া বান্দা, চোর-পুলিশ । যে মাঝে মাঝে খেলা থেকে বিরত থাকতো ; সে-ই জাতিস্মর । মাঠের পাশেই ছিল একটা খেঁজুর গাছ । তাতে হাত রেখে দূরের এক গ্রামের দিকে এক মনে তাঁকিয়ে থাকতো "বাবু" । গ্রামটির নাম "বিনয় পল্লী " । মাঝে বড়ো মাঠ । হাঁটা শুরু করলে তিরিশ - চল্লিশ মিনিট লাগবে । মাঝে জলে ভরপুর দেখে কখনো যাওয়া হয়নি । বাবু কে যখন বলতাম, ওপারে কি দেখছিস? ও বলতো, ওখানে আমার ছোট মা থাকে, দিদি থাকে, আমার ভুলু কুকুর থাকে । এ কথা আমাদের বিশ্বাস হতো না । আবার খেলায় ফিরে যেতাম, খেলতাম ।  কিন্তু ও বসে বসে , ওপারের গাছ পালা , বাড়ি ঘর দেখতো । কাছে গেলে বলতো , ওই যে সবুজ ,কচি কলাপাতা রঙের দালান বাড়ি, ওটাই আমাদের বাড়ি !  এই ভাবে মাস ছয়, বছর গড়াতে লাগলো । মনে প্রশ্ন জাগতে লাগলো, এ টা কি মন গড়া , বা বানিয়ে বানিয়ে বলছে? সত্যি প্রকাশ হোল এক দিন ।  সে বাড়িতে কিছু ...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯২তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩২ অক্টোবর ২০২৫

—: সম্পাদকীয় দপ্তর থেকে :— এই সংখ্যার জন্য লেখা এসেছিল প্রায় ১৮০টা। কিন্তু গুণগত মানে দুর্বল লেখার সংখ্যা বহু। আমরা নবপ্রভাতে নতুনদের কথা ভেবে বেশ কিছু দুর্বল লেখাও রাখি। কিন্তু সবসময় একই লোকের দুর্বল লেখা প্রকাশ করা অনুচিত বলে মনে করি। শেষ পর্যন্ত ৯৯ জনের লেখা রাখা গেল। যাদের লেখা প্রকাশিত হল না, তারা লেখাগুলি অন্য যেখানে খুশি পাঠাতে পারেন। বিশেষ কারণে এই সংখ্যার মুদ্রিত সংস্করণ প্রকাশিত হচ্ছে না। আমরা দুঃখিত। তবে মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি শীঘ্রই আসছে। সঙ্গে থাকুন। সকলকে উৎসবমুখর বর্ণময় শুভেচ্ছাসহ— —নিরাশাহরণ নস্কর, সম্পাদক, নবপ্রভাত। অনুরোধ : প্রকাশিত লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন, ছবি/স্ক্রীনশট নয়।  == সূচিপত্র == পড়া-লেখার ইতিহাস অনুসন্ধান।। তপন তরফদার উৎসব : মানুষের চিরন্তন আত্মপ্রকাশ।। কৃশানু ব্যানার্জি বাংলা : সভ্যতা ও সংস্কৃতির জন্মভূমি।। শ্যামল হুদাতী সমুদ্র আর অস্তিত্ব ।। সুব্রত চৌধুরী রাজা ছিলেন জুবিন গর্গ ।। গঙ্গা 'অনু'   আদ্যাশক্তি মহামায়ার বাংলা বারো মাসের বারো রূপ ।। অর্হণ জানা মেধাদাদুর আসর ।। রণেশ রায় বৈজ্ঞানিক মা...

চিরকুটের কবিতা

নতুন পৃথিবী আজ সকালে রোদ্দুর নামুক ভেজা বর্ষার মতো গা ধুয়ে কিছুটা পবিত্র হবো যত জীর্ণ মলিন দ্বেষ বিলীন হোক সব সময়ের তটে গা ভাসিয়ে কিছুটা বিলাসী হবো যা ছিল অতীত যা ছিল কষ্ট সবকিছু ভুলে নবীনে ব্রতী হবো আসুক ধেয়ে সতেজ হাওয়া দূর হোক যত কুণ্ঠা ব্যথা পুরানো যত বিবাদ ভুলে ভালোবাসার আবার বেড়া দেবো কিছুটা আশাবাদী কিছুটা কর্মঠ কিছুটা জেদি কিছুটা শপথ আসুক ছুঁয়ে বাঁচার আলো হাতে হাত রেখেই বিশ্বাসের ঘরে আবার নতুন দীপ জ্বালাবো

কবিতা ।। ভাষার জন্য লড়াই ।। চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু

ভাষার জন্য লড়াই চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু মুখের ভাষা বাংলা ভাষা মাকে ডাকি মা, সারা বিশ্বে তোমার মাগো নেই তো তুলনা। তোমার মুখের প্রথম ভাষা আমার মনের সকল আশা তোমার ভাষায় বলবো মাগো আমার মনের কথা, এই ভাষাতেই জড়িয়ে আছে সকল স্বাধীনতা।  এই ভাষাকে আনতে গিয়ে তাজা বুকের রক্ত দিয়ে রাজপথে সব লড়াই হলো করলো লড়াই কারা, আমার মায়ের দামাল ছেলে রক্ত পলাশ যারা।  তোমার ছেলে লড়াই করে আনলো ভাষা ঘরে ঘরে সেদিন থেকে শহীদ মিনার সাজাই ফুলে ফুলে, বীর শহীদের ত্যাগের কথা যাইনি আজও ভুলে।    ++++++++++++++++++++++++++++++++    চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু শহীদ আবুল কাশেম সড়ক, বড় বাজার, চুয়াডাঙ্গা, বাংলাদেশ।

কবিতা ।। অরণ্যকন্যা ।। অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়

  অরণ্যকন্যা অরিন্দম চট্টোপাধ্যায় অরণ্যকন্যার দৃষ্টির ভেতর বিষাদ বিন্দু ফোঁটা ফোঁটা জলের মতো গড়িয়ে যায়, হয়ে যায় কোন নদীপথ দৃষ্টি ভেঙে ভেঙে চলে যায় কোন এক শূন্য পথে অরণ্যকন্যার হৃদয়ের ভেতর ভাঙে যতো বৃক্ষপত্র নতুন পত্র পুষ্পের খোঁজ নেই ঠোঁট জুড়ে সমুদ্রকাঁপন বুদবুদের মতো অস্ফুট হয়ে উচ্চারিত হয় কোন অক্ষর শব্দ আর তাঁর শরীর থেকে ছড়িয়ে যায় হয়ে যায় একটা অদৃশ্য কবিতা...    ================== @ অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়,  বেহালা, কলকাতা -৭০০০৬০,  

কবিতা ।। মনোজকুমার রায়

জল সিঁড়ি চেক বইয়ের পাতা ফুরিয়ে যেতে থাকে -- ঝরে পড়ে বৃদ্ধ গাছটির পত্রমুকুল কাঁচা গন্ধ বেয়ে চলে সময়ের স্রোতে  সারা ভোর জেগে থাকি ঘুমের টলে তাড়া দেয় একগ্রাস অবিশ্বাসী বায়ু দিন ফুরনো লাল সূর্যের টানে নেমে আসে পাড় ছোঁয়া জল সিঁড়ি ================= মনোজকুমার রায় দঃ ঝাড় আলতা ডাউকিমারী, ধূপগুড়ি জলপাইগুড়ি -৭৩৫২১০ মো ৭৭৯৭৯৩৭৫৬৬

উন্মুক্ত পাগলামি ।। আশরাফুল মণ্ডল

উন্মুক্ত পাগলামি আশরাফুল মণ্ডল আহা, অপরূপ নিজস্বতার দাহ! কুঁকড়ে যায় আবহমান, সজনে পাতার বোঁটায়! ভাপওঠা ভাতের কাছে মাছি সত্তায় কী নিপুণ! তবুও ঘোর লাগা বসন্তের ডাক, হাঁকে! খেদিয়ে দেয় পা দোলানো প্রস্তাব, ওই ধুনুরি চোখ! রাংতায় মোড়া ডাকের সাজ, দে দোল দোল! হুইসেল বাজিয়ে কে রুখে দ্যায় সেই নাকছাবির রুদালি কাঁপন! খালবিল ছেঁচে পাঁচসিকের  মানত কুড়িয়ে আনে, বাংলা বাজার। ঠ্যাং নাচানো সুরে চোখ মারছে, দ্যাখো ভ্যানতারা! মুখ খোলা মানেই পাঁজরের স্রোত ভাবা যেন উগরানো টালমাটাল! ঢিল মারা প্রশ্নের রোয়াকে বক্রচোখে যেন মেধাবী কবিতা! মুছে দিও তবে লাজুক গুপ্ত রোগ, দিনরাত্রি! ভালো থেকো তোমরা বাছাধন, রং মাস সে আর কতদিন... ================    ASRAFUL MANDAL Chandidas Avenue, B-zone, Durgapur, Paschim Bardhaman, Pin - 713205,  

ভালবাসা কারে কয় ।। দ্যুতি রায়

  ভালবাসা কারে কয় দ্যুতি রায়       দ্বিরাগমনে বাপের বাড়ি এলো সৌমিলী । গাড়ি থেকে নেমেই, নিজের ঘরে ঢুকে, দরজা আটকে বসে রইলো সে। বর সমীরণ তার পিছু পিছু এসে ঘরে ঢুকলো। সৌমিলীর বাবা মা বেশ ঘাবড়ে গেছেন, তবে মুখে দেখন হাসির প্রলেপ মাখিয়ে নতুন জামাইকে আপ্যায়ন করলেন। বাপ মায়ের একমাত্র মেয়ে "মিলি", আদরে যতনে মানুষ হলেও অশিক্ষা কুশিক্ষা কখনো পায়নি বরং গুরুজনদের সম্মান করা, সহবত  সংযম সব জানে সে। খুব ভালো ঘরে বরে ওকে সম্প্রদান করা হয়েছে।  শত কষ্ট পেলেও ওই অভিমানী মেয়ে মুখ ফুটে কিছু বলবে না। কি এমন হলো? চিন্তিত হলেন মিলির মা বাবা। একটু বাদে, বন্ধ ঘরে সৌমিলীর মা, মেয়েকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে লাগলেন। বেচারা বর, গোবেচারা মুখে ঘরের বাইরে রইলো। মায়ের প্রশ্নের উত্তরে সৌমিলীর ঝুড়ি ঝুড়ি অভিযোগ করতে লাগলো।           বরের সাথে নাকি ভালো করে আলাপ হয়নি। সে গম্ভীর মানুষ, দরকার ছাড়া মুখে কথা নেই তার। মা বুঝলেন,  কথার ফুলঝুরি মিলি, গল্প করতে শুরু করলে ঝর্নার মতন কলকল করতেই থাকে। তার কথা বলার লোক কম ওখানে। তিনি বলেন মিলিকে," নতুন জায়গা, নুতন...