Skip to main content

গল্প ।। কথা রাখার কথা ।। সুপ্তা আঢ্য


কথা রাখার কথা         

সুপ্তা আঢ্য
বড়ো রাস্তা ছাড়িয়ে দুটো গলি পেরিয়ে তিন নম্বর গলির একটু ভেতরে বড়ো পাঁচতলা আবাসনের চতুর্থ তলার দক্ষিণমুখো ফ্ল্যাটের বসার ঘরে সৌপর্ণ ওর স্ত্রী হিয়া আর ওদের মা বিতস্তা দেবী এই মুহূর্তে গভীর আলোচনায় মগ্ন ।আধুনিকতার সাথে সাবেকিয়ানার মেলবন্ধনে সাজানো ফ্ল্যাটের ভিতরটা দেখলেই এ বাড়ির মানুষদের রুচিশীলতার পরিচয় পাওয়া যায়।বছর খানেক আগে বাড়ির কর্তা রণিতেশ সেন রিটায়ারমেণ্টের পর পরই ইহলোকের মায়া কাটিয়েছেন। আর মিসেস বিতস্তা সেন এই একমাস হলো স্কুল জীবনের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিয়ে নিজের সাথে সময় কাটাচ্ছেন । ওনার ছেলে সৌপর্ণ আর ওর স্ত্রী দুজনেই মুম্বইয়ের এক বহুজাতিক সংস্থায় কর্মরত, ওদের একমাত্র ছেলে সৌহার্দ্য পাশের ঘরে আপনমনে ভিডিও গেম খেলতে ব্যস্ত। সৌপর্ণ ওর মাকে বলে উঠল "তুমি এখন কি করবে---কিছু ভেবেছ?" "ঠিক বুঝলাম না রে----কী করব বল তো?" "না মানে - - - তোমার তো রিটায়ারমেণ্ট হয়েই গেল - - - - বাবাও এখন নেই। এই ফাঁকা বাড়িতে তুমি একা কী করবে? বরং তুমি আমাদের সঙ্গে চল---ওখানে তুমি ভালো থাকবে মা।" "ও--এই কথা। কিন্তু - - - - " " কিন্তু কি মা! " "দেখ বাবা----আমি তোর ঘাড়ে বোঝা হতে চাই না। ষাটের কোটা পেরিয়ে এলাম----যে কটা দিন বাঁচব _---চতুরাশ্রমের তৃতীয় আশ্রম বাণপ্রস্থকেই না হয় বেছে নিলাম। কিন্তু এখন জঙ্গলে তো থাকতে পারব না - - - - তাই শহর ছাড়িয়ে ভাগীরথীর তীরে একটা বৃদ্ধাবাসের খোঁজ পেয়েছি। ওখানেই থাকব রে । " বিতস্তা দেবীর এহেন সিদ্ধান্তে সৌপর্ণ আর হিয়া স্তব্ধবাক হয়ে বসে রইল - - - সারা ঘরজুড়ে এখন পিন ড্রপ সাইলেন্স। পরিবেশটা হাল্কা করার জন্য উনি বলে উঠলেন" তুই এত বড়ো হয়ে গেছিস আর এই একটা ছোট্ট কথায় মন খারাপ করে বসে পড়লি? " " এটা ছোট কথা নয় মা----তুমি আমাদের ছেড়ে চলে যাবে----এটা ভাবলে কি করে?" "তোদের ছেড়ে কোথাও যাচ্ছি না আমি----শুধু এই ফাঁকা বাড়িটা ছেড়ে অন্য বাড়িতে যাচ্ছি। ছুটি ছাটায় তোদের আসার খবর পেলে এসে সবাই একসাথে কাটিয়ে যাব। আর শোন, এই কাগজগুলো রাখ----" " এগুলো কিসের কাগজ মা! " " এই বাড়ি আর ব্যাংকের পেপার্স---এগুলো সাবধানে রাখবি।" " কবে যাবে তুমি? " " কাল বিকেলে যাব। হিয়া, তোমাদের ফ্লাইট কখন? " " সকালে মা। " " ঠিক আছে, আমি ঘরে গেলাম - - - কিছু গোছানোর আছে----ওগুলো কমপ্লিট করে নি। তোমরাও শুতে যাও।" কথাগুলো বলে নিজের ঘরে গিয়ে পরেরদিনের যাত্রার সবকিছু গোছগাছ কমপ্লিট করে নিল বিতস্তা। শেষ মুহূর্তে স্বামী রণিতেশের একটা ছবি সঙ্গে নিয়ে নিল ও। সমস্ত গোছগাছ সারা হতে ঘড়ির দিকে মুখ তুলে তাকাতেই দেখল ঘড়ির ছোট কাঁটাটা একটার ঘর প্রায় ছুঁয়ে ফেলেছে। টেবিলের ওপর রাখা বোতল থেকে জলটা খেয়ে বিছানার দিকে একঝলক তাকিয়ে আস্তে আস্তে দরজাটা খুলে বারান্দার চেয়ারে এসে বসল বিতস্তা। পাশের ছেলের ঘর থেকে তখন চাপাস্বরে স্বামী স্ত্রীর আলাপনের আওয়াজ আসছে। ওদের কথার আওয়াজে মুচকি হেসে চেয়ারে বসে বাইরে গহীন অন্ধকারের দিকে তাকিয়ে রইল ও। এত বছরের সংসার জীবনের আজই শেষ রাত ওর----তাই প্রথম রাতের মতো শেষ রাতটাও না ঘুমিয়ে থাকার সিদ্ধান্তই নিল ও। বাইরের নিঝুম নিশার নীরবতা যখন চারপাশকে ঘিরে রেখেছে তখন মাঝে মাঝে পথ কুকুরদের চিৎকার ওর মায়া জাল ছিন্ন করলেও তাকে পূরণ করতে বেশী সময় লাগছিল না নিশার। এরকম রাত বড়ো প্রিয় বিতস্তার----এমন রাতেই তো ভেলায় চড়ে সময় সাগরের স্মৃতির ঢেউয়ে নিমগ্ন হওয়া যায়। অন্ধকারকে চোখে জড়িয়ে স্মৃতির অতলে ডুব দিতেই ছবির মতো ওর চোখে ভেসে উঠতে লাগল সবচেয়ে প্রিয় কিশোরীবেলা। মনে পড়ে গেল স্কুল থেকে পাঁচজন মিলে বাড়ি ফেরার কথা। ও, দীপন, পাঞ্চালী, শ্যামল আর স্মৃতিকণা---পাঁচবন্ধুর মিলেমিশে থাকার কথা বড্ড মনে পড়ছিল ওর আজ। ওদের বন্ধুত্বের বিষয় ছোট্ট গ্রামটায় চর্চিত থাকলেও ওদের কোনো হেলদোল ছিল না এই ব্যাপারে। এই পাঁচজনের দলে বিতস্তা আর দীপন ছিল সবচেয়ে কাছের বন্ধু - - - - আর এই বন্ধুত্ব যে কখন ভালোবাসায় পরিণত হয়ে গেছে বুঝতে পারেনি কেউ। পাঞ্চালী এ নিয়ে আড়ালে বিতস্তাকে খ্যাপালেও পাত্তা দেয়নি ও কখনও। দীপ ওর প্রেমিক - - - এটা ভাবলেই চাপা হাসিতে মুখ ভরে উঠত ওর। আর ওকে মুখ চেপে হাসতে দেখে পাঞ্চালী বলল"তুই আমার কথা মানছিস না তো---পরে কিন্তু তুই পস্তাবি।" "শুধু শুধু পস্তাতে যাব কেন?" "দীপ তোকে সত্যিই ভালোবাসে রে----ওর চোখ দুটো দেখিসনি তুই? এই স্মৃতি, তুই কিছু বল না!" স্মৃতিকণা কিছু বলার আগেই ওকে থামিয়ে দিয়ে বিতস্তা বলে উঠল "ও কি বলবে রে? আর দীপের চোখে আলাদা কি আছে বলতো! তুই একটু বেশীই ভাবিস এসব নিয়ে। " ওদিকে শ্যামলও দীপনকে তাগাদা দেয় মনের কথা বিতস্তাকে খুলে বলার জন্য। কিন্তু যাকে নিয়ে এত আলোচনা - - - সেই দীপন ছিল নিজের জায়গায় অটল। ও বলত"তিস্তাকে নিজেকেই বুঝে নিতে দে ওর ভালোবাসাকে। আজ আমি বললেও ও বুঝবে না রে---- এতে ওর সাথে বন্ধুত্বটাই নষ্ট হয়ে যাবে। এর চেয়ে এটাই ভালো - - - - ।" একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে দীপন চলে গেলে শ্যামল মুখ নামিয়ে উপায় ভাবতে থাকত বিতস্তাকে জানানোর। ওরা তিনজন কোনো উপায় না পেয়ে নীরব দর্শকের মতোই দীপনের একতরফা ভালোবাসার যন্ত্রণার সাক্ষী হয়ে বুক ফেটে গেলেও মুখ ফোটাতে পারে না দীপনের মুখের দিকে তাকিয়ে। এর মধ্যে কলেজ জীবন শেষে হায়ার এডুকেশনের জন্য দীপন বাইরে চান্স পেয়ে যায় আর বিতস্তার বাড়িতে পাত্রপক্ষের আনাগোনা শুরু হয়ে যায়। পাত্রপক্ষের পাকা কথার খবরটা বিতস্তা উত্তেজিত হয়ে দীপনকে জানাতে গিয়ে ওর মায়ের কাছে শুনল "দীপ একটু বেরিয়েছে বিতস্তা।" "কখন ফিরবে ও কাকীমা?" "ও তো পরশু চলে যাচ্ছে - - - তারই কেনাকাটা করতে গেছে।" "ও কোথায় যাচ্ছে কাকীমা?" "ওমা, তুই জানিস না - - - ও তো পিএইচডি করতে দিল্লী যাচ্ছে। তুই ওর ঘরে বস - - - ও এখনই চলে আসবে।"

Supta sent Today at 7:54 PM

বিস্মিত বিতস্তা দীপনের ঘরে ঢুকে চারিদিক দেখতে দেখতে হঠাৎই ওর চোখ পড়ে গেল টেবিলের ওপরের রাখা ডায়েরিটায়। এত বড়ো খবরটা দীপন ওকে না বলায় মনে মনে রাগ হলেও ডায়েরিটা দেখার কৌতুহল চাপতে পারছিল না ও।পায়ে পায়ে টেবিলের কাছে গিয়ে ডায়েরিটা হাতে নিয়ে পাতা ওল্টাতেই চোখে পড়ল ওর সাথে কাটানো প্রতিটা মুহূর্তের কথা কি অসামান্য ভাবব্যঞ্জনায় ফুটে উঠেছে প্রতি পাতায়। পড়তে পড়তে চমকে উঠছিল বিতস্তা - - - - দীপনের চোখে নিজেকে নতুন রূপে আবিষ্কার করে মুক্তোর মতো জলবিন্দু শ্রাবণের বারিধারার মতো অঝোর ধারায় কপোল, চিবুক হয়ে কণ্ঠদেশে মিলে বড়ো বড়ো ফোঁটায় ভিজিয়ে দিচ্ছিল ডায়েরির পাতাগুলো। সময়ের কোনো হুঁশ ছিল না ওর - - - - বাইরে দীপনের গলার আওয়াজ পেলেও কোনোমতেই নিজেকে সামলাতে না পেরে স্থানুবৎ বসে রইল বিতস্তা । মায়ের কাছে বিতস্তার আসার খবর শুনে কোনওরকমে সাইকেলটা রেখে ঘরে ঢুকে ওকে টেবিলের কাছে বসে থাকতে দেখে একটু ভয় পেয়ে কাছে গিয়ে দেখল দামাল মেয়েটা শান্ত হয়ে বসে আছে - - - কোলের ওপর ডায়েরিটা খোলা আর ওর সারা গালে চোখের জলের আঁকিবুঁকি। ডায়েরির সাথে এই অবস্থায় বিতস্তাকে দেখে একটু অপ্রস্তুত ভাবে ওকে ঝাঁকিয়ে বলল "কি রে তিস্তা, কী হয়েছে তোর?" "কিচ্ছু না - - - কী হবে - - - তুই তো সব জানিস---তুই বল আমার কী হয়েছে।" "আমি স্যরি তিস্তা - - - ওগুলো এমনিই পাগলের প্রলাপ - - - - ওগুলো দেখে তুই কিছু মিন করিস না রে।" দীপনের মুখে একথা শুনেই কোনওরকমে ডায়েরিটা রেখে ওর কাছে গিয়ে দুহাতে ওর জামার কলারটা ধরে বলে উঠল" কোনটা এমনিই - - - দীপ----তুই - - তুই - - - আমাকে এত ভালোবাসিস - - - আর সবটাই এমনি! "ওর কলারটা ধরে ওকে আরও কাছে টেনে ঝাঁকিয়ে ফিসফিসে গলায় বলল" তুই কি ভেবেছিলি---তুই একাই ভালোবেসে মহান হতে পারিস - - - - সব ছেড়ে চলে যেতে পারিস - - - - আমি কিচ্ছু পারি না? দেখ আমি কি করতে পারি?" তিস্তা রেগে গেলে কি করতে পারে সে সম্পর্কে খুব ভালোই জানে দীপন----সরলমনা মেয়েটা রেগে গেলে জাস্ট পাগল হয়ে যায় - - - - আর দীপনের প্রতি ওর পজেসিভনেস তো ওর জানা----তবু কেন যে মেয়েটা এতদিন নিজের মন বুঝতে পারেনি কে জানে! দীপন ওকে দুহাতে জড়িয়ে ধরে বলতে লাগল "একটু শান্ত হ----আমার ভুল হয়ে গেছে - - - - তোকে বোঝানোর দায়িত্ব ছিল আমার - - - - আমি পালন করিনি - - - আমাকে যা সাজা দেওয়ার দে----কিন্তু তুই একটু মাথা ঠাণ্ডা কর, লক্ষ্মীটি। কথা শোন আমার - - - - সোনা মেয়ে তুই।" দীপনের বাহুডোরের বাঁধনের পরম আশ্রয়ে নিজেকে আর ধরে রাখতে না পেরে ঝরঝরিয়ে কেঁদে ফেলল তিস্তা। ওকে কাঁদতে দিয়ে ওকে নিজের বুকের মাঝে জড়িয়ে ওর মাথায় ভালোবাসার পরশ বোলাতে লাগল দীপন। বেশ কিছুক্ষণ এইভাবে থাকার পর একটু শান্ত হয়ে দীপনের বাহুডোরে আরও নিশ্চিন্তে নিজেকে সঁপে দিয়ে কান্নাভেজা গলায় বলে উঠল "এখন কী হবে দীপ? তুই চলে যাবি আমাকে ছেড়ে? পারবি থাকতে---বল না?" বিষণ্ণ হাসি মুখে ফুটিয়ে ওকে আরও শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলল"তুইও তো তোর চলে যাবার খবরটাই আমাকে দিতে এসেছিস পাগলী!এখন একটু নিজেকে শান্ত কর তো।" "এরপরেও তুই আমাকে শান্ত হতে বলছিস! কী হবে এখন----বাড়ি গিয়ে মাকে সবটা বলে বিয়েটা ভেঙে দিতে হবে রে---আমি এখন যাই রে! বিকেলে দেখা করি বরং---" "শোন - - - একটু ঠাণ্ডা হ' তুই---একটা কথা কেন বুঝতে পারছিস না - - - তোর বিয়ের কথা পাকা হয়ে গেছে - - - এখন কিচ্ছুটি করিস না সোনা! " " তাতে কী হয়েছে - - - - বিয়েটা তো আর হয়ে যায়নি। তুই আমাকে বিয়ে করতে রাজী আছিস তো? " " তুই ভুল করছিস তিস্তা - - - এত কিছুর পর বিয়েটা ভেঙে গেলে কাকুর সম্মানের কী হবে ভেবেছিস! শুধু নিজের কথাই ভাববি - - - ওই মানুষটার কথা ভাববি না একবারও? " " তাহলে এখন কী করব তুই বলে দে? আমাকে সারাজীবনের জন্য অন্য কারোর হাতে হাত রাখতে হবে---এটা কী ভাবে সম্ভব দীপ? " তিস্তার উত্তেজনায় গুরুত্ব না দিয়ে শান্ত স্বরে দীপন বলল" তুই যে আমার ভালোবাসাকে---আমাকে - - - গ্রহণ করেছিস - - - এতেই আমি ধন্য রে। " " তুই এত কম পাওয়ায় কী করে ধন্য হতে পারিস দীপ! আমি যে আরও বেশী চাই----" " তুই এখন যা করতে চাস---সেটা করে তোর বাবা মাকে অথৈ জলে ফেলে দিস না তিস্তা - - -" "তাহলে - - -" তিস্তার হাতদুটো নিজের হাতে নিয়ে দীপন বলল" এই পৃথিবীটা বড্ড ছোট রে---তুই আমি একদিন ঠিক মিলবই। দেখিস তুই---" " তুই চলে যাচ্ছিস - - - আর আমিও কটাদিন পর অন্য লোকের সংসার করতে যাব---কী করে দেখা হবে তোর-আমার! " " ভালোবেসে দূরে থাকা যায় না বলেই এক হব---কবে---কোথায় - - কিভাবে - - - কিচ্ছু জানি না রে - - - শুধু জানি, দেখা আমাদের হবেই। তুই এখন বাড়ি যা - - - - কাকীমা চিন্তা করছেন। তোর বিয়েতে আসব না রে--। তোর-আমার এটাই শেষ দেখা---বিকেলে সবাই আজ আড্ডা দেব---আসিস কিন্তু।" কথাগুলো বলে হাতে ধরা তিস্তার হাতটা ছেড়ে দিতেই ওকে শক্ত করে আঁকড়ে ধরে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠল ও। দীপন ওর হাল্কা নীলচে শার্টের প্রতিটি সুতোয় জমিয়ে নিচ্ছিল ওর চোখের জল ।বেশ কিছুক্ষণ পর বিতস্তা নিজেকে সামলে চোখ মুছে একবারও পিছনে না তাকিয়ে বেরিয়ে গেল ঘর থেকে। সেদিন বিকেলে ওরা ডাকতে এলেও মাথা ধরার অজুহাতে মুখ গুঁজে শুয়ে রইল বিছানায়। পরদিন দীপনও চলে গেল আর তার কয়েকদিনের মধ্যেই একমাথা সিঁদুর পরে কনের সাজে সেজে রণিতেশের হাত ধরে এ বাড়িতে চলে আসে বিতস্তা। সেদিনের পর থেকে দীপনের আর কোনও খোঁজই পায়নি ও। নিজেদের চাকরির সুবাদে অনেক মানুষ দেখলেও ওই একজোড়া চোখ কোথাও খুঁজে পায়নি ও। বাপের বাড়ি গিয়ে শ্যামলের কাছে শুনেছে, বাইরের কোনো এক কলেজে দীপন পড়ায় - - - গ্রামে প্রায় আসেই না। ভীষণই জানতে ইচ্ছে করছিল---দীপনের বিয়ের খবর---ওর বউ কেমন হয়েছে - - - কিন্তু শ্যামলের সামনেও লজ্জায় জিভ জড়িয়ে যাচ্ছিল ওর। বোধহয় ওর মনের কথা বুঝতে পেরে শ্যামল বলেছিল"জানিস বিতস্তা - - - দীপন একাই থাকে - - - বিয়ে করেনি। কতবার বললাম বিয়ের কথা----কিন্তু - - -"

Supta sent Today at 7:55 PM

কিন্তু কী" সেটা আর জিজ্ঞেস করতে জিভ সরল না ওর---বদলে প্রসঙ্গ পাল্টে দুএক কথা বলার পর চলে এসেছিল বিতস্তা। এক অপার আনন্দে বুক ভরে উঠেছিল ওর----দীপ এখনও ওরই আছে----এটা ভেবে দীপের সেদিনের স্পর্শের কথা মনে পড়তেই শিহরিত হয়ে উঠেছিল ওর সারা শরীর। সেদিনের পর থেকে গ্রামের বাড়িতে যাওয়াও কমিয়ে দিয়েছিল ও। তবে এখনও একলহমায় যেমন ও দীপকে নিজের ভাবতে পারে----এতদিন সংসার করার পরেও ও যেমন রণিতেশের হতে পারেনি তেমনি ওই মানুষটাকেও নিজের ভাবতে পারেনি কখনও। প্রতি মুহূর্তে দীপনের স্মৃতি কুঁড়ে কুঁড়ে খেয়েছে ওকে - - - - সকালে ঘুম থেকে উঠতই ওর দীপকে সাথে নিয়ে আর রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ওর দীপের দুচোখ নিজের চোখে জড়িয়ে ঘুমোতে যেত বিতস্তা। একমাত্র ছেলে সৌপর্ণ বাইরে চলে যাওয়ার পর থেকেই সংসারের বাঁধন আলগা হতে শুরু হয়েছিল ওর আর এখন রণিতেশের মৃত্যুর পর সে বাঁধনটা পুরোপুরি ছিঁড়ে গেছে। এখন এই সংসার থেকে মুক্তি নিয়ে নতুন করে দীপের স্মৃতি সাথে নিয়ে বাঁচবে ও। দীপের সাথে দেখা হওয়ার স্বপ্ন আর দেখে না তিস্তা - - - - দীপ যতই বলুক পৃথিবীর পরিসর ছোট - - - তিস্তা কিছুতেই মানতে পারে না সে কথা। পৃথিবী ছোট হলে দীপের দেখা ও ঠিক পেত, এতবছরেও যখন ও দীপের দেখা পায়নি তখন বাকি জীবনটা একা দীপের সঙ্গে কাটানো সময়ের সাথেই সহবাস করবে ও। এসব ভাবতে ভাবতে হঠাৎই ভোরের পাখির সুরেলা আওয়াজে চমকে তাকিয়ে দেখল মিলনপিয়াসী প্রভাকরের সাথে মিলনের পর ঊষার কপোলের আবীরের লালিমার আগুন রাঙা রঙে সেজে উঠছে ভোরের আকাশ। সকালের এই সময়টা বরাবরই ওর খুব প্রিয়। ভোরাইয়ের সুরের মূর্চ্ছনায় মোহিত হয়ে আবীর রাঙা আকাশের দিকে বেশ কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইল বিতস্তা । হঠাৎ নীচে সাইকেলের বেলের আওয়াজে ঘোর কাটতেই মনে পড়ে গেল, একটু পরেই সৌপর্ণ হিয়ারা বেরোবে আর তাছাড়া ওর নিজেরও বেরোনোর তাড়া আছে। ওরা বেরিয়ে পড়লেই সবকিছু গুছিয়ে রেখে বিতস্তাও বেরিয়ে পড়বে ওর গন্তব্যের উদ্দেশ্যে । প্রত্যেকবার সৌপর্ণ আর হিয়া হইহই করতে করতে যায় আবার আসার তাগিদে। কিন্তু এবার বোধহয় সেই মায়ের কাছে আসার তাগিদটা নেই বলেই ওদের যাবার তাড়াটাও ছিল কম। মায়ের সিদ্ধান্তের বদল হবে না বুঝে মনটা বড্ড ভার হয়ে আছে ছোট থেকেই মায়ের ভালোবাসার কাঙাল সৌপর্ণর। যাবার আগে আজ একটু বেশী সময় নিয়েই প্রণাম করতে গিয়ে নিজের অলক্ষ্যেই একফোঁটা জল বিতস্তার পায়ে পড়তেই ছেলেকে তুলে মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন "এত মনখারাপ করছিস কেন? আমি ভালো থাকব এটা ভেবে খুশি থাকতে পারবি না তুই?" চোখের জল মুছে মুখে হাসি ফুটিয়ে সৌপর্ণ মায়ের হাত ধরে বলল "তাই হোক মা---তুমি ভালো থেকো আর - - -" "আর কী---বল---" "আমাদের ভুলে যাবে না তো মা?" নাতিকে বুকে জড়িয়ে হিয়ার মাথায় হাত রেখে বললেন " তুই আমার সন্তান - - - - আমার প্রতিটা নিশ্বাস প্রশ্বাসের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছিস তোরা। নিশ্বাস নেওয়া বন্ধ না হলে তোকে কি করে ভুলব বল। তুই চিন্তা করিস না - - - আমি ভালোই থাকব। " ওরা বেরিয়ে যাওয়ার ঘণ্টাখানেক পর খাওয়া দাওয়া সেরে বাড়িটাকে শেষবারের মতো একবার দেখে নিয়ে একটা গাড়ি বুক করে রওনা দিল নিজের নতুন ঠিকানার দিকে। প্রায় ঘন্টাখানেকের জার্নির পর যখন 'নবনীড়ে' এসে পৌঁছল তখন গোধূলিবেলার শেষের আবেশটুকু চোখে জড়িয়ে বিকেল অপেক্ষায় রয়েছে সন্ধ্যারানীর সন্ধ্যাতারা জ্বালানোর। ফোনে সবকিছু আগে থেকেই ব্যবস্থা করে রাখায় এখানে এসে কোনো অসুবিধে হয়নি বিতস্তার। দোতলার দক্ষিণ - পূব খোলা বারান্দাসংলগ্ন এক কামরার ঘরটা বেশ মনোমতই হয়েছে ওর। বারান্দার সামনের বাগানের নাম না জানা গাছের সারির ফাঁক দিয়ে দেখা একফালি চাঁদের আবছা আলো মুগ্ধ করছিল ওকে। আজ প্রথম দিন হওয়ায় সন্ধ্যের প্রার্থনায় না গিয়ে চুপচাপ নিজের বারান্দায় বসে সন্ধ্যের এই আমেজটুকু উপভোগ করছিল ও। বহুদিন এরকম আমেজি সন্ধ্যে না দেখা বিতস্তা যখন সন্ধ্যের রেশটুকু নিতে ব্যস্ত তখন সন্ধ্যের চাঁদ হঠাৎই লুকিয়ে কালো ধোঁয়ার মতো একখণ্ড মেঘকে জায়গা দিতেই ধীরে ধীরে সেই ধোঁয়া জড়ানো মেঘরাজি কখন যেন নীলাকাশকে ধোঁয়ার চাদরে মুড়ে ঝড়কে সাথী করে তার অসামান্য বাজনার দুন্দুভিতে প্রকৃতিরানীকে মাতিয়ে তুলতে হাজির হয়েছে ওর সামনে। গ্রামের মেয়ে বিতস্তা এই ঝড়ের সন্ধ্যেটা বেশ উপভোগ করছিল----দীর্ঘদিন শহুরে হাওয়ায় অভ্যস্ত হয়ে এই ঝড়ের আবেশটুকু প্রায় ভুলতেই বসেছিল । বাইরে ঝড় শুরু হওয়ার সাথে সাথেই লোডশেডিং হয়ে যাওয়ায় অফিস থেকে মোমবাতি জ্বালিয়ে দিয়ে গেছে। প্রতিটা বিল্ডিং - এ ইনভার্টার থাকলেও ঝড়ের রাতের সুবিধার্থে সন্ধ্যেটা মোমবাতিতেই কাজ চালায় এরা। এতে অবশ্য বিতস্তার সুবিধেই হয়েছে। বাইরে নিকষ কালো অন্ধকারে এলোমেলো করে দেওয়া ঝড়ের দাপট আর মাঝে মাঝে বিদ্যুতের চমকানিতে নিজের অবছায়াকে অশরীরি বলে ভ্রম হলেও হতে পারে। ঝড়ের বাজনার সাথে বৃষ্টিও সুরের রোশনাই বাড়ানোয় বারান্দা থেকে ঘরে এসে জানালার ধারটাতে বসে বিতস্তা। ঘরের বন্ধ দরজা জানালার ফাঁক দিয়ে আসা হাওয়ায় তিরতির করে কাঁপছিল মোমবাতিটা আর তার কম্পনের জাদুতে দেওয়ালে যে অসামান্য শিল্পকলা সৃষ্টি হচ্ছিল মোহিত হয়ে তার দিকেই তাকিয়ে বসে ছিল ও। হঠাৎই বাইরের দরজায় আওয়াজ শুনে দরজাটা খুলতেই অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল বিতস্তা - - - - বাইরে আধো অন্ধকারে আধভেজা অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে দীপন----চেহারায় অল্প বয়সের ছাপ ছাড়া আর কোনো পরিবর্তন হয়নি ওর---সেই এক মুখ - চোখ - চেহারার দীপনের ব্যাকব্রাশ করা সামনের কিছু চুলে পাক ধরা ছাড়া বাকীটা একই আছে। "কীরে, ভিতরে আসতে বলবি না?" হতভম্ব ভাবটা কাটিয়ে বিতস্তা বলে উঠল "ও---হ্যাঁ - - - আয় - - - কিন্তু----তুই এখানে?" ওকে পাশ কাটিয়ে দীপন ভিতরে ঢুকতেই এক ঝলক শিরশিরানি ঠাণ্ডা হাওয়ায় নিভে গেল মোমবাতিটা। "যাঃ! কী হবে এখন - - - আমার কাছে তো দেশলাইও নেই।" " এতে এত ভাবছিস কেন তিস্তা - - - -এরকম ওয়েদারে অন্ধকার বেশ লাগছে রে। " " বেশ তো - - - তোর অসুবিধা না হলে আমারও অসুবিধা নেই।"

Supta sent Today at 7:57 PM

কেমন আছিস তিস্তা - - -" "এই তো যেমন দেখছিস - - - তুই ভালো আছিস তো?" " আমার আবার ভালো থাকা - - - আছি একরকম। " " তুই কি করে জানলি আমি এখানেই আসব? " " জানতাম না তো---তোকে বলেছিলাম না, পৃথিবীটা বড্ড ছোট - - - আর ভালোবাসা সত্যি হলে আমাদের দেখা হবেই।" " হুম্ - - - - বুঝলাম। শ্যামলের কাছে শুনেছিলাম তুই নাকি বিয়ে করিস নি আর গ্রামেও আসতিস না। কেন বলতো? " " একসাথে এত প্রশ্নের উত্তর দেব কী করে? একে একে বলি---তোর প্রথম প্রশ্নের উত্তর, তোকে পাইনি বলে। আর দ্বিতীয় উত্তর, তোকে ছাড়া ওখানে থাকতে পারতাম না তাই!" " তাহলে সেদিন ছেড়ে দিয়েছিলি কেন? " " সব প্রশ্নের উত্তর একদিনেই শুনে নিবি---তার চেয়ে আজকের এই সন্ধ্যেটা গল্পও তো করতে পারি আমরা? " " তোর গলাটা এমন শোনাচ্ছে কেন রে? " " ভুলে যাচ্ছিস কেন - - - - আমি তোর থেকে একবছরের বড়ো - - - সময়টাতো খারাপ - - - তাই একটু ঠাণ্ডা লেগেছে রে। " একটু চুপ থেকে ফ্যাঁসফেঁসে গলায় দীপন বলল" তুই এখনও একইরকম আছিস তিস্তা - - - একটুও বদলাস নি। " " তুইও একইরকম আছিস দীপ - - - "বিতস্তা আরও কিছু বলার উদ্যোগ করার আগেই দীপন বলে উঠল" আমি এখন আসি রে---অনেকটা দেরী হয়ে গেল। " " কিসের দেরী দীপ----এতদিন পরে এলি---এক্ষুণি চলে যাবি? আর একটু বোস না----তোকে ছাড়তে মন চাইছে না রে! " একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে দীপন ওর হাতটা তিস্তার হাতে রাখতেই কেঁপে উঠল ও"তোর হাত এত ঠাণ্ডা কেন? তোর কী শীত করছে?" " হ্যাঁ রে, বৃষ্টিতে ভিজে গেছি---একটু তো শীত করছেই। আমি এখন আসি রে। " " তুই আর থাকবি না দীপ? " " নারে, এই অন্ধকারে কে কোথায় দেখবে---সেটা কী ঠিক হবে। কাল সকালে বরং তুই আমার কাছে আসিস।" "তুই কি এখানেই থাকিস? " "হ্যাঁ রে, ওই পিছন দিকের ঘরে - - - ম্যানেজারকে বললেই দেখিয়ে দেবে। " " সে না হয় যাব----কিন্তু সকালে তো বেশিক্ষণ থাকা যাবে না, তুই রোজ রাত্তিরে আসবি তো? " দীপন আরও ফ্যাঁসফেঁসে গলায় বলল" আসব রে, রোজ আসব---তোর কাছে আসার অপেক্ষাতেই তো আছি রে পাগলী। তুই রেস্ট নে - - - আমি আসছি। "কথাগুলো বলে দীপন ঘর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ করতেই বিতস্তা বলে উঠল" সেদিনের মতো আর একবার তোকে জড়াতে দিবি দীপ? " ওর দিকে ঘুরে বিষণ্ণ গলায় দীপন বলল "আজ আমি ভিজে গেছি তিস্তা - - - আমাকে জড়ালে তুইও ভিজে যাবি---অন্য কোনদিন না হয় - - - " " বেশ তাই হবে" "আমি এখন আসি, কাল তোর অপেক্ষায় থাকব" কথাগুলো বলে পিছনে না তাকিয়ে খোলা দরজা দিয়ে অন্ধকারে দীপন মিলিয়ে যেতেই মোমবাতিটা না জ্বালিয়ে দীপনের স্পর্শধন্য হাতটা বুকের কাছে জড়িয়ে চুপটি করে বসে রইল বিতস্তা।বেশ কিছুক্ষণ পর একটা টর্চের জোরালো আলোয় চমক ভেঙে তাকাতেই আবাসনের সর্বক্ষণের ছেলে সমীর বলল" কী হয়েছে মাসীমা, অন্ধকারে একা বসে আছেন যে? মোমবাতিটা নিভে গিয়েছিল - - - আমাদের ডাকবেন তো? এভাবে অন্ধকারে যদি পড়ে টড়ে যেতেন!" "না রে বাবা - - - - না! কিচ্ছু হবে না। অন্ধকারে কোনও অসুবিধে হয়নি আমার। তা কারেন্ট কী আসবে না আজ?" "না - - - - কারেন্ট আসবেনা - - - তবে সবাই শুয়ে পড়লে ইনভার্টারটা চালানো হবে। আপনার খাবার দিয়ে গেলাম আর মোমবাতিটা জ্বালিয়ে দিয়ে গেলাম। ও - - - হ্যাঁ - - - দেশলাইটা পাশেই রাখলাম। আর প্রয়োজনে ডাকবেন কিন্তু। " সমীরের সব কথা কানে ঢুকলেও মনে সবটা ঢুকল না ভাববিহ্বল বিতস্তার। দীপনের কথা ওকে জিজ্ঞেস করবে ভেবেও শেষ মুহূর্তে কিছু একটা ভেবে চুপ করে ওর কথায় মাথা নেড়ে বসে রইল বিতস্তা। সমীর চলে গেলে দরজাটা ভেজিয়ে দিয়ে খাবারটা ঢাকা দিয়ে পাশে সরিয়ে রেখে জমাট বাঁধা অন্ধকারে বাইরের বারান্দায় চুপচাপ বসে দীপনের কথা ভাবতে লাগল ও। পরদিন সকালে প্রার্থনার পর অফিসে এসে ম্যানেজারবাবুর সাথে আলাপ পরিচয়ের পর বিতস্তা বলল "আমাকে একটু দীপন বসুর ঘরে নিয়ে যাবেন?" "আপনি দীপন বাবুকে চেনেন?" "হ্যাঁ, ও আমার বন্ধু। একটু নিয়ে চলুন না প্লিজ - - -" "কিন্তু উনি এখানে আছেন জানলেন কিভাবে - - - - না - - - মানে - - - উনি বলেছিলেন কাউকে না জানিয়েই এসেছেন এখানে। তাই - - - জানতে চাইছিলাম ।" একটু ইতস্তত করে বিতস্তা বলল "আসলে ওর সাথে দেখা হয়েছিল - - - তখনই বলল। একটু নিয়ে চলুন না প্লিজ। " ম্যানেজারবাবু অবাক হয়ে বললেন" উনি নিজে আপনাকে বলেছেন? না - - - মানে! " ওনাকে কথাটা শেষ করতে না দিয়ে বিতস্তা এগিয়ে গেল ঘরের দরজার দিকে। ম্যানেজারবাবুও আর কথা না বাড়িয়ে ওনাকে নিয়ে অফিসের পিছন দিকে পার্ক সংলগ্ন দোতলা বাড়ির একেবারে দক্ষিণ দিকে দক্ষিণ পূবের বারান্দা ঘেরা ঘরটার সামনে এসে দাঁড়াতেই দরজায় তালা দেখে বিতস্তা বলে উঠল "এই যাঃ! দরজাটা তো তালাবন্ধ দেখছি। জানিয়ে আসা উচিত ছিল আমার। আপনি বরং চলে যান----আমি ওর সাথে দেখা করে ঠিক চিনে চলে যাব" একটু ভ্রূ কুঁচকে ম্যানেজারবাবু বললেন "আমি চাবি খুলে দিচ্ছি - - - - আপনি ভিতরে যান।" ম্যানেজার বাবুর কথায় একটু অবাক হলেও এটা নিয়ম ভেবে চাবি খোলার সাথে সাথেই ঘরটায় ঢুকতে গিয়ে আবারো অবাক হল ও। ঘরটা খুলতেই একটা চাপা ধূলোর গন্ধ নাকে এসে লাগল ওর। গন্ধটা সয়ে নিয়ে ঘরে ঢুকতেই দেখল ভীষণই পরিপাটি করে সাজানো ঘরটা যেন ওরই অপেক্ষায় রয়েছে। টানটান করে পেতে রাখা অল্প কুঁচকে যাওয়া বিছানাটা দেখে মনে হচ্ছে, একটু আগেই কেউ উঠে গেছে বিছানা থেকে। পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখল ম্যানেজারবাবু কখন চলে গেছেন ওখান থেকে। দীপনের অপেক্ষায় চুপচাপ বসে না থেকে পুরো ঘরটা ঘুরে ঘুরে দেখতে লাগল ও। দেওয়ালজোড়া বিভিন্ন ছবি, একটা বুকসেল্ফে সাজানো বিভিন্ন বই, জানালায় রাখা দুটো মানিপ্ল্যান্ট গাছ একে অপরকে জড়িয়ে দেওয়াল বেয়ে বেশ উঠছে। টেবিলের ওপর বেশ কিছু বইয়ের মাঝে সেই নীল ডায়েরিটা - - - যা একদিন বিতস্তাকে ওর মনের মানুষের খবর এনে দিয়েছিল। এক বুক কৌতুহল নিয়ে ডায়েরির পাতা টা খুলতেই একটা চিঠি ওর হাতে পড়ল। একটু দোনামোনা করে চিঠিটা খুলতেই দেখল ওকেই লেখা হয়েছে চিঠিটা। দীপনের এমন কাজকে পাগলামী ভেবে নিজের মনে একটু হেসে পড়তে শুরু করল চিঠিটা---

Supta sent Today at 7:59 PM

তিস্তা,
 আমার মনে হয়েছিল তুই এখানে আসবি। তাই তোর জন্য এটা রাখলাম। ম্যানেজার সতীশবাবুকে বলাই আছে, তুই এলে তোকে এঘরে পৌঁছে দিতে। আসলে আর কিছুদিন আগে এলে আমি নিজেই তোকে নিয়ে আসতাম। ভীষণ অবাক হচ্ছিস তো এটা ভেবে যে, আমি কী করে জানলাম তোর আসার কথা! ভুলে যাস কেন, আমরা একসাথে বড়ো হয়েছি - - - - তাই সুন্দরী ভাগীরথী যে তোর প্রিয় নদী - - - এটা তোর মনে না থাকলেও আমি ভুলিনি রে। জানিস তিস্তা, তোকে আমি একটা দিনের জন্যেও ভুলিনি -----আমার নিশ্বাস প্রশ্বাসের সঙ্গেই জড়িয়ে নিয়েছিলাম তোকে। তোর সব খবর আমি পেতাম শ্যামলের কাছ থেকে। তুই যেদিন অফ হোয়াইট আর কচি পাতা কম্বিনেশনের শাড়িটা পরে প্রথম স্কুলে গেছিলি - - - তোর অগোচরেই তোকে দুচোখ ভরে দেখে জড়িয়ে নিয়েছিলাম নিজের উষ্ণতায়। একই শহরে থেকেও ভিন্ন দ্বীপের বাসিন্দা হয়ে বেঁচেছি এতদিন।শরীরের টান তৈরী হওয়ার আগে থেকেই মনের টান তৈরী হয়ে গিয়েছিল আমাদের - - - তাই তোকে দূরে পাঠিয়েও নিজে দূরে যেতে পারলাম না রে। তোর না থাকা তুই-এর সাথেই সহবাস করেছি এতদিন - - - - এখানে এসে মনের টান মেটাতে তোর সাথে নতুন ভাবে বাঁচব ভেবেছিলাম - - - কিন্তু ওপারের ডাক যে অমোঘ - - - তাকে এড়াই কেমনে! জানিস তিস্তা, সবাই বলে নিশ্বাস বন্ধেই সব শেষ - - - - কিন্তু আমার কাছে তা আর এক শুরু। সতীশকে এই ঘরে অন্য কাউকে না রাখতে বলেছি তুই না আসা অব্দি। ভাবছিস তো জানলাম কীকরে! এটুকু বিশ্বাস না থাকলে বৃথাই এতদিন ভালোবাসলাম তোকে। এতদিন রণিতেশের সাথে সংসার করেও যে তুই ওর হতে পারিসনি - - - এটা আমি জানি। আর এখানেই তো আমার জিত রে। তুই আমার তিস্তা - - - শুধুই আমার - - - - কোনো বাধাই তোকে দূরে নিয়ে যেতে পারেনি আমার থেকে। আর তাই তো তুই ফিরে এসেছিস আমার কাছে। তুই থাকবি আমার এই ঘরে----আমার সাথে - - - আমার কাছে? আমার অশরীরের উষ্ণতায় জড়িয়ে রাখব তোকে - - - - তোকে বুকের মাঝে রাখার যে অপার শান্তি - - - - তা আমি উপভোগ করতে চাই তোকে বুকে জড়িয়ে। এক অশরীরের সাথে নতুন খেলার - - - - নতুন সংসার পাতবি? আমার এই ঘর তোর অপেক্ষায় - - - - আসবি তিস্তা? " চিঠিটা পড়তে পড়তেই চোখের জল বাঁধ মানছিল না বিতস্তার। চিঠি পড়া শেষ করে চিঠিটার গা থেকে দীপনের স্পর্শসুখ অনুভব করতে করতে কান্নায় ভেঙে পড়ে বলতে লাগল" তুই কাল কথা রাখতে এসেছিলি দীপ - - - - আমি এ ঘরেই থাকব - - - - তুই এখানেই আছিস আমি জানি - - - - সব শুনছিস তো----আমি তোর অশরীরের সাথেই বাকী দিনগুলো যাপন করব - - - - তুই খুশী তো!" বলতে বলতে হু হু করে কেঁদে উঠল দীপনের তিস্তা আর তখন ঠিক ওর পিছনে অবয়বহীন শরীরে এক নিশ্চিন্ত অবয়ব ফুটে উঠছিল ধীরে ধীরে।
 
  -----------------------------

You sent Today at 8:02 PM



Comments

বিধিবদ্ধ স্বীকার্য :

লেখার বক্তব্যের দায়িত্ব লেখকের, পত্রিকার নয়। আমরা বহু মতের প্রকাশক মাত্র।

মতামত/লেখা এখানে জমা দিন

Name

Email *

Message *

সাম্প্রতিক বাছাই

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯৩তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩২ নভেম্বর ২০২৫

সূচিপত্র বস্তু, চেতনা এবং কবি ।। সজল চক্রবর্তী দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত ।। রণেশ রায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট ও সন্নিহিত অঞ্চলের কথ্য শব্দ ।। অরবিন্দ পুরকাইত চাঁদে জীবন ।। শমীক সমাদ্দার অসমাপ্তি ।। মহুয়া হুই গ্যালাক্সির শব্দে ।। জাসমিনা খাতুন তিনটি কবিতা ।। দিবাকর সেন অপূর্ণতার শেষ অধ্যায় ।। সুপ্রিয় সাহা হাফ ডজন ছড়া ।। স্বপনকুমার পাহাড়ী স্বাপ্নিক অমলের ঘুৃম ।। সঞ্জয় দেওয়ান দুটি কবিতা ।। সৌমিত্র উপাধ্যায় পথ চলতি ✍️পার্থ প্রতিম দাস হেমন্তের বিষাদ ছুঁয়ে ।। শক্তিপদ পাঠক রাই আর বাবা ।। অদিতি চ্যাটার্জি স্থিতিশীল ।। রঞ্জিত মুখোপাধ্যায় হৃদয়ের শূন্য কোড ।। লিপিকা পিঙ্কি দে অমানিশা ।। সৌভিক মুখার্জী দৃষ্টিগত ।। শামীম নওরোজ জ্যান্ত ভূতের গপ্পো ।। পার্থ সারথি চট্টোপাধ্যায় ধুতরা ফুলের ঘ্রাণ ।। মজনু মিয়া তারা খসার আলোয় ।। তীর্থঙ্কর সুমিত উত্তরণে অন্তরায় ।। সমীর কুমার দত্ত প্রেম মুদ্রা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ধারা ।। লালন চাঁদ অন্যের ব্যথায় ব্যথি ।। জগদীশ মণ্ডল গর্ভ ।। শাশ্বত বোস ভ্রমণ বিষয়ক স্মৃতিকথা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত শাপে বর ।। সাইফুল ইসলাম রবিবার ।। সঙ্ঘমিত্রা দাস দুটি ...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬

  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠালে  অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে হলে ভালো। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # ...

রেজাল্ট ।। সৈকত মাজী

রেজাল্ট সৈকত মাজী শুভ্রাংশু বিছানতে শুয়ে শুয়ে বিরক্ত হয়ে উঠল। মনে মনে নিজের শরীরটাকে আচ্ছা করে শুনিয়ে দিলো দু- চারটে কথা, দেবে নাই বা কেন, কয়দিন ধরে এতো কাঠ খড় পুড়িয়ে সব বন্ধুরা মিলে রথটা বানালো, কত কি প্ল্যান করলো, আর এই শরীরটার জন্যই তো সব ভেস্তে গেলো। মনে মনে ভাবলো একটা যা হোক শরীর হয়েছে ওর প্রতি মাসে তিন - চার বার করে জ্বর হচ্ছেই। হবি তো হ আর একটা দিন পরে হলে কি এমন ক্ষতি হতো, এই রথের দিনেই হতে হলো। ওর বিরক্তিটা বেড়ে গেলো আরো কয়েক ঘর।    " মা ও মা...মাআআআআ...." জোরে হাঁক  দিলো শুভ্রাংশু।    " কি হয়েছে বাবু? আবার জ্বরটা বেড়েছে? মাথা ব্যথা করছে?" ব্যস্ত হয়ে উঠলেন মালতিদেবী।     " ওসব কিছু নয়, ও মা বলছি এখন তো খুব কম জ্বর আছে যাই না মা একবার বাইরে, সবাই কতো ফুর্তি করছে বলো"  কাতর ভাবে বলল শুভ্রাংশু।      " না বাবু, এখনই আমরা ডাক্তারের কাছে যাব, বাবা তৈরী হয়ে গেছেন, আমরা বিকেলে তখন মেলা দেখতে যাব কেমন, এখন উঠে জামা কাপড় পরে নাও"  মালতিদেবী জামা কাপড় গুলো এগিয়ে দিলেন।      শুভ্রাংশু...

রাই আর বাবা ।। অদিতি চ্যাটার্জি

রাই আর বাবা অদিতি চ্যাটার্জি রাই-র জীবনে বেশ কিছু ভালো লাগা আছে তার মধ্যে একটা হলো সন্ধ্যার সময় তিন তলার বারান্দায় দাঁড়িয়ে রাস্তা দেখতে দেখতে কফি কাপে চুমুক দেওয়া ।" আজ যশোদা মিষ্টান্ন ভান্ডারের সামনে বেশ ভিড়,নির্ঘাত 'তেলে ভাজা ' প্রেমীরা।" আপন মনেই ভাবে ও, কিন্তু বসার ঘরে সুমন আর আঁখি এতো জোরে 'হল্লা গোল্লা ' করছে তালতলার জমজমাট রাস্তার দিকে আর মন দিতে পারছে না রাই।  পায়ে পায়ে ঘরে এসে দাঁড়ায় রাই, দেখে ক্লাস ফোরের মেয়ে এতোটা ঝগড়া করছে সুমনের সাথে , "বাপ রে, কবে এতোটা কথা শিখলো মেয়ে! কিভাবে কথা বলছে?? কোঁকড়া চুল ঝাঁঝিয়ে,গোলগাল হাত নেড়ে " ...মেয়ে কে দেখে থতমত খেয়ে যায় রাই। এদিকে আঁখি বলছে, "ধুত্ বাপী তুমি কিচ্ছু পারো না, তুতাই-র বাবা, পিসাই, মামু সবাই কত ভালো করে খেলতে পারে , না আমি তোমার সাথে খেলবো না।" কাতর চোখে মেয়ের দিকে একবার তাকিয়ে সুমন বলে ,"আচ্ছা তুই আমাকে শেখা, দ্যাখ আমি কার জন্য আলিপুরদুয়ার থেকে পনেরো দিন পর পর কলকাতায় আসি বল!"  ঐ টুকু মেয়ে কথা প্রায় না শুনেই ঘরে চলে গেল রাই-র চোখের সামনে, সুমন একবার হেসে বাথরুমের দিকে এগো...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯২তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩২ অক্টোবর ২০২৫

—: সম্পাদকীয় দপ্তর থেকে :— এই সংখ্যার জন্য লেখা এসেছিল প্রায় ১৮০টা। কিন্তু গুণগত মানে দুর্বল লেখার সংখ্যা বহু। আমরা নবপ্রভাতে নতুনদের কথা ভেবে বেশ কিছু দুর্বল লেখাও রাখি। কিন্তু সবসময় একই লোকের দুর্বল লেখা প্রকাশ করা অনুচিত বলে মনে করি। শেষ পর্যন্ত ৯৯ জনের লেখা রাখা গেল। যাদের লেখা প্রকাশিত হল না, তারা লেখাগুলি অন্য যেখানে খুশি পাঠাতে পারেন। বিশেষ কারণে এই সংখ্যার মুদ্রিত সংস্করণ প্রকাশিত হচ্ছে না। আমরা দুঃখিত। তবে মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি শীঘ্রই আসছে। সঙ্গে থাকুন। সকলকে উৎসবমুখর বর্ণময় শুভেচ্ছাসহ— —নিরাশাহরণ নস্কর, সম্পাদক, নবপ্রভাত। অনুরোধ : প্রকাশিত লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন, ছবি/স্ক্রীনশট নয়।  == সূচিপত্র == পড়া-লেখার ইতিহাস অনুসন্ধান।। তপন তরফদার উৎসব : মানুষের চিরন্তন আত্মপ্রকাশ।। কৃশানু ব্যানার্জি বাংলা : সভ্যতা ও সংস্কৃতির জন্মভূমি।। শ্যামল হুদাতী সমুদ্র আর অস্তিত্ব ।। সুব্রত চৌধুরী রাজা ছিলেন জুবিন গর্গ ।। গঙ্গা 'অনু'   আদ্যাশক্তি মহামায়ার বাংলা বারো মাসের বারো রূপ ।। অর্হণ জানা মেধাদাদুর আসর ।। রণেশ রায় বৈজ্ঞানিক মা...

বস্তু, চেতনা এবং কবি ।। সজল চক্রবর্তী

বস্তু, চেতনা এবং  কবি সজল চক্রবর্তী  "যেখানে পৌঁছায় না রবি,, সেখানে পৌঁছে যান কবি।" এই ছোট্ট কবিতা টি অনেক পুরনো  এবং বহু পরিচিত, তথাপি এর তাৎপর্য এখনো হারায় নি। তবে, কথা হ'চ্ছে -আমরা তো  রবি-কবিকে একত্রেই পেয়ে যাই আমাদের ঋষি-প্রতিম কবি রবীন্দ্রনাথের মধ্যে। আর তখনই জেনে যাই উপরোক্ত ছোট কবিতার প্রণিধানযোগ্যতা ।  ... এবার শুনে নেয়া যাক, ঋষি-প্রতিম কবির মুখ নিঃসৃত বাণী:- "তোমার অসীমে প্রাণমন লয়ে যত দূরে আমি যাই ...." অর্থাৎ আমাদের প্রিয়তম কবি অনায়াসে পৌঁছে যান সৃষ্টির অসীমে , যা আমাদের পক্ষে আদৌ সম্ভব নয়। এখানে কবির চেতনা সুদূর প্রসারী! ... প্রকৃত প্রস্তাবে কবি অতিন্দ্রীয় জগতের এক নাগরিক। তাঁর কাছে তাই চেতনা বা চৈতন্যেরই প্রাধান্য। ...এখন আসছি, বস্তু এবং চেতনার মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে।  ... আমি একজন অতি সাধারন মানুষ, তাই এই ব্যাপারটাকে কবিদের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার চেষ্টা ক'রছি। তবে আমার সামান্য জ্ঞান থেকে একটা সাধারণ কথা সেরে নি'। আমরা সাধারণত ব'লে থাকি-- সূর্য পূর্বদিকে ওঠে। প্রকৃত অর্থে কি তাই ? আসলে সূর্য যেদিকে ওঠে ,আমরা  সেই দিকটাকে নামাঙ্কিত ক...

দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট ও সন্নিহিত অঞ্চলের কথ্য শব্দ, উচ্চারণ, বাগ্্ধারা ইত্যাদি ।। অরবিন্দ পুরকাইত

স্থানীয় কিছু কথ্যশব্দ, উচ্চারণ, বাগধারা ইত্যাদি  (পর্ব—সাত) অরবিন্দ পুরকাইত স্থানীয় কিছু কথ্যশব্দ, উচ্চারণ, বাগ্্ধারা ইত্যাদির সংগ্রহ প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল রামচন্দ্র নস্কর সম্পাদিত 'চর্যা' পত্রিকায়, ২০১৬ সালে। সে সংগ্রহ যায় নিজের 'গাঁ-ঘরের কথা' পুস্তকে, ১৪২৩ সনে। পরে এই ব্লগজিনেও কিছু সংগ্রহ প্রকাশিত হয় ১৪২৮ সনের আশ্বিন মাসে, পৌষ ১৪২৯-এ, আষাঢ় ১৪৩০, নববর্ষ ১৪৩১ ও কার্তিক ১৪৩১ সংখ্যায়। তার পরেও ধীরে ধীরে আরও কিছু সংগৃহীত হয়েছে, সেগুলিই এখানে রাখা হল। নিজের আগের সংগ্রহে এসে-যাওয়া শব্দ যদি এখানে এসে থাকে, তা বাড়তি বা ভিন্ন কিছু বলার প্রয়োজনেই। নিজের আগের সংগ্রহ খুব ভাল করে যে মিলিয়েছি তা নয়, পুরো সংগ্রহ একত্র করার সময় তা করা যাবে যতটা সম্ভব নিখুঁত করে। আগে আগে সংগ্রহ প্রসঙ্গে কিছু কথা বলা হয়েছে, বিশেষত প্রথম প্রকাশের সময় একটু বিশদভাবে। এখানে আর কিছু বলা নয়, কেবল সংগ্রহটাই তুলে ধরা গেল। অখেজো/অখেজে — অকেজো থেকে। আদরের তিরস্কার হিসাবেই মূলত প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। পাজি। অচিমিতি — (উচ্চারণ ওচিমিতি) আচমকা, হঠাৎ। অদীয় — প্রচুর, অজস্র। অদ্বিতীয় থেকে ক...

দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত ।। রণেশ রায়

দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত রণেশ রায় ভূমিকা দর্শনের ইতিহাসে বস্তু ও চেতনার সম্পর্ক মানবচিন্তার গভীরতম প্রশ্ন। অধিবিদ্যা ভাবকে মুখ্য ধরে, বস্তুকে গৌণ বলে মনে করে। বিপরীতে মার্কস ও এঙ্গেলস বলেছেন—বস্তুই মুখ্য এবং চেতনা তার প্রতিবিম্ব। মানুষ যখন প্রথম আলোর মুখ দেখেছিল, তখনই সে বিস্ময়ে প্রশ্ন করেছিল—আমি কে, কোথা থেকে এলাম, আর এই দৃশ্যমান জগতের বাইরে কিছু আছে কি? এই প্রশ্ন থেকেই জন্ম নিয়েছিল দর্শনের দুই বিপরীত স্রোত—ভাববাদ আর বস্তুবাদ। ভাববাদ বলেছিল—"ভাবই প্রথম," আর মার্কস বললেন—"না, বস্তুই প্রথম।" এই দুই প্রান্তের মাঝখানে আমি দেখি এক সেতুবন্ধন, যেখানে বস্তু, স্নায়ু ও চেতনা একে অপরকে গড়ে তোলে, আর তাদের এই ত্রিত্বের নৃত্যেই সৃষ্টি হয় জীবন ও কল্পনার জগৎ। ভাবববাদ এক সর্বশক্তিমান শক্তির কল্পনা করে যা এই বস্তুজগতের স্রষ্টা। আর এখান থেকে ধর্ম ও ধর্মীয় ভাবধারার সৃষ্টি। আমার এই প্রবন্ধে আমি মার্কসীয় দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদকে আধুনিক বৈজ্ঞানিক আলোকে বোঝার চেষ্টা করেছি। আমি দেখাবার চেষ্টা করবো কিভাবে ইন্দ্রিয় এবং স্নায়ুজগৎ বস্তু ও চেতনাকে সংযুক্ত করে এবং কল্পলোকের জন্ম দেয়...

চাঁদে জীবন ।। শমীক সমাদ্দার

চাঁদে জীবন  শমীক সমাদ্দার                           চন্দ্রযান দুরন্ত তৈরি, রকেটের উপর ভর করে চন্দ্রযান চাঁদে অবতরণ করবে। মাধ্যাকর্ষণ শক্তি পেরিয়ে মহাকাশযান চাঁদের কক্ষপথে  স্থাপন করা হয়েছে। চন্দ্রাযান চাঁদের মাটিতে পা রাখবে সময়ের কাউন্ট ডাউন চলছে। সমস্ত নিয়ন্ত্রণ স্পেসস্কাই গাবেষণা কেন্দ্র কতৃক নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে প্রযুক্তি বিজ্ঞান অতল গভীরতায় বাসা বাঁধে। পরিচয়টা দিয়ে দিলাম এই স্পেসসিপে রয়েছে তিনজন নভোচর, একজনের নাম সাইমন আর এক জনের নাম রেমন্ড, আর এদের সঙ্গে একজন মহিলা আছে তার নাম মেরিনা। চন্দ্রযান চন্দ্রপৃষ্ঠে সফলভাবে অবতরণ করেছে। চন্দযান দুরন্ত চাঁদের পূর্ব -পশ্চিম অক্ষরেখা বরাবর অবতরণ করেছে। আলো আঁধারের গভীরতায় বড় বড় পাথরের পিণ্ড, চাঁদের সার্ফেসের উপরে পাথর জল দেখা যায়। জমাট বাঁধা অক্সিজেন আর কার্বনডাই অক্সাইড। ওরা এখানে এসেছে এক রহস্য উদ্ঘাটন করতে। যে স্থানে ওরা অবতরণ করেছে সেখানে ১০ বছর আগে ওরা এসেছিলো। রুশ সরকার ওদের দেশের ছাত্র ছাত্রী কে মহাকাশে চাঁদে পাঠাতে চায়। ওরা কেন এসেছে সেটা এখনো অধরা। সাইমনের বর্...

কবিতা ।। অরণ্যকন্যা ।। অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়

  অরণ্যকন্যা অরিন্দম চট্টোপাধ্যায় অরণ্যকন্যার দৃষ্টির ভেতর বিষাদ বিন্দু ফোঁটা ফোঁটা জলের মতো গড়িয়ে যায়, হয়ে যায় কোন নদীপথ দৃষ্টি ভেঙে ভেঙে চলে যায় কোন এক শূন্য পথে অরণ্যকন্যার হৃদয়ের ভেতর ভাঙে যতো বৃক্ষপত্র নতুন পত্র পুষ্পের খোঁজ নেই ঠোঁট জুড়ে সমুদ্রকাঁপন বুদবুদের মতো অস্ফুট হয়ে উচ্চারিত হয় কোন অক্ষর শব্দ আর তাঁর শরীর থেকে ছড়িয়ে যায় হয়ে যায় একটা অদৃশ্য কবিতা...    ================== @ অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়,  বেহালা, কলকাতা -৭০০০৬০,  

জনপ্রিয় লেখা

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ -- "ত্রয়ী কাব্য" ------------------------------------------------------------------------------ সুনন্দ মন্ডল নবীনচন্দ্র সেন সাহিত্যে তথা বাংলা কবিতার জগতে এক অবিস্মরণীয় নাম। তিনি চট্টগ্রাম জেলার নওয়াপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ১৮৪৭ সালে তাঁর জন্ম এবং মত্যু ১৯০৯ সালে। বঙ্কিমচন্দ্র তাঁকে 'বাংলার বায়রন' বলেছেন। ‎জীবৎকালীন যুগে আত্মপ্রত্যয়ের মধ্যে জাতীয় চরিত্র আত্মস্থ করে নতুন সংস্কারে প্রয়াসী হয়ে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখেছেন।মধুসূদন-হেমচন্দ্র-নবীনচন্দ্র--এই তিন কবি বাংলা কাব্যধারায় প্রাণ সঞ্চার করেছিলেন। বিশেষত মহাকাব্য লেখার দুঃসাহস দেখিয়েছিলেন। এদিক থেকে মধুসূদন দত্ত একজন সফল মহাকাব্যিক। তাঁর 'মেঘনাদ বধ' কাব্যের মত গভীর ও ব্যঞ্জনাময় না হলেও নবীনচন্দ্র সেনের 'ত্রয়ী' কাব্য বিশেষ মর্যাদা দাবি করতেই পারে। তাছাড়া 'ত্রয়ী' কাব্যে ধর্মীয় ভাবধারার আবেগ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ‎ ‎নবীনচন্দ্র সেন বহু কাব্য লিখেছেন। যেমন- 'অবকাশরঞ্জিনী','পলাশীর যুদ্ধ', 'ক্লিওপেট্রা', 'রঙ্গমতী', 'খ্রীষ্ট', ...

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা শ্রীজিৎ জানা "সময় চলিয়া যায় নদীর স্রোতের প্রায়"। স্রোতের ধারা তার দু'প্রান্তে রেখে যায় ভাঙাগড়ার চিহ্ন। কালের দৃশ্যপটেও পরিবর্তনের ছবি অনিবার্যভাবেই চোখে পড়ে। সমাজ সময়ের ছাঁচে নিজেকে গড়ে নেয় প্রতিনিয়ত।  সেখানে মনে নেওয়ায় বাধা থাকলেও,মেনে নেওয়ার গাজোয়ারি চলে না। ফলত কাল বদলের গাণিতিক হিসেবে জীবন ও জীবিকার যে রদবদল,তাকেই বোধকরি সংগ্রাম বলা যায়। জীবন সংগ্রাম অথবা টিকে থাকার সংগ্রাম।  মানুষের জীবনযাপনের ক্ষেত্রে আজকে যা অত্যাবশ্যকীয় কাল তার বিকল্প রূপ পেতে পারে অথবা তা অনাবশ্যক হওয়াও স্বাভাবিক। সেক্ষেত্রে উক্ত বিষয়টির পরিষেবা দানকারী মানুষদের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হওয়া অস্বাভাবিক নয়। এক কালে গাঁয়ে কত ধরনের পেশার মানুষদের চোখে পোড়তো। কোন পেশা ছিল সম্বৎসরের,আবার কোন পেশা এককালীন।  সব পেশার লোকেরাই কত নিষ্ঠা ভরে গাঁয়ে  তাদের পরিষেবা দিত। বিনিময়ে সামান্য আয় হত তাদের। আর সেই আয়টুকুই ছিল  তাদের সংসার নির্বাহের একমাত্র উপায়। কালে কালান্তরে সেই সব পেশা,সেই সব সমাজবন্ধুরা হারিয়ে গ্যাছে। শুধুমাত্র তারা বেঁচে আছে অগ্রজের গল্পকথায়,আর বিভিন...

গ্রন্থ আলোচনা: শর্মিষ্ঠা দেবনাথ

প্রতিবাদ যখন অগ্নিবাণী বাংলাদেশে নারীমুক্তি ও নারী আন্দোলনের পুরোধা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ১৯৯তম জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদিত হল " আসিফা এবং.." কাব্য সংকলনটির মধ্যদিয়ে।সংকলনটির বিশেষত্ব হল,এটি উৎসর্গ করা হয়েছে নারীর সম্মান রক্ষার আন্দোলনের যোগ্যতম ব্যক্তি শহীদ শিক্ষক বরুন বিশ্বাসকে। সংকলক প্রকাশক সন্দীপ সাহু নিজে এবং বিশিষ্ট কবি সাহিত্যিকদের দিয়ে লিখিয়ে নিয়েছেন এমন কিছু কবিতা, যা শুধুমাত্র শব্দ ও ছন্দের অনুবন্ধ নয়, এক একটি অগ্নিবাণী।আসলে জীবনকে দেখার স্বাতন্ত্র‍্যে কবিরা সব সময়ই অগ্রগণ্য এবং অনন্য।যুগ ও জীবন দ্বন্দ্বের কণ্ঠস্বরকে আশ্রয় করে,একদিকে মনের প্রবল দাহ ও অন্যদিকে  নির্যাতিতা শিশুকন্যা ও নারীর প্রতি মনের গভীর আকুলতা থেকে প্রকাশ পেয়েছে "আসিফা এবং" এর  কবিতাগুলি।এক অন্ধকার সময়ের মুখোমুখি আমরা,সেই অন্ধকার আমাদের নিয়ে এসেছে সামাজিক অবক্ষয়ের শেষধাপে যেখানে নৈতিকতা,পাপবোধ,গ্লানিকে সরিয়ে রেখে, সমাজের বানানো নিয়মকে তোয়াক্কা না করে,অনায়াস দক্ষতায় ও ক্ষিপ্রতায় নিজেরই ধর্মচেতনাকে জলাঞ্জলি দিয়ে কিছু মানুষ তার পশুত্বের পরিচয় দিয়েছে ধর্ষণ ও ন...

শ্যামাপদ মালাকারের কবিতা

চোখ """"""" নদী, অরণ্য, রাতের ফালি চাঁদ- সবেই তো আমার...স্বর্ণপিঁড়িটাও!। সেদিন, শুকতারাটার গা' মাপতে গিয়ে মনে হল, --ওরা আমার চেয়েও সুখী? দেখিনা একবার গাইতি-শাবল চালিয়ে... চালালাম। জল-মাটি ভেজা একটা 'চোখ' কুড়িয়ে ফিরলাম! সেই চোখদিয়ে দেখি-- শেষ বিকেলের নিরন্ন আঁচে ঝলসানো বুকে নীড়ে ফিরছে ধূলিমাখা কত কাল পা, কি শান্তি - কি তৃষ্ণা! পাতাক্ষোয়া কোদালেরর মাথায় ঝরেপড়া ললাটের ঘামে, কারা যেন জীবন শাণ দেয়! রুক্ষঠোঁটের আবরণে এক সময় নেমে আসে শিশিরস্নাত কালনিশি-- মাঝের ব্যবধান মুছে দেয় প্রতিশ্রুতির ভীড়- - পূর্বজনমের নিদর্শনচুম্বন শেষে হেরে যায় কার মমতাজ-- ম্লান হয়ে যায় কত পিঁড়ি! ... ম্লান হয়ে যায় কত পিঁড়ি! ... ম্লা...

কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা: এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায় ।। পার্থ সারথি চক্রবর্তী

  কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা : এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায়  পার্থ সারথি চক্রবর্তী  কথায় বলে বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। রাজার শহর কোচবিহারের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা আরো অনেক বেশি। দুর্গাপূজা আর দীপাবলির মতো দু'দুটো বিরাট মাপের উৎসবের রেশ কাটতে না কাটতেই, এ শহর ভাসে রাস উৎসবের উন্মাদনায়। মদনমোহন ঠাকুর কোচবিহারের প্রাণের ঠাকুর। তাঁকে নিয়ে সবার আবেগ আর শ্রদ্ধা ও ভালবাসা এখানে বাঁধনছাড়া। এক অপূর্ব মিলনোৎসবের চেহারা নেওয়া এই উৎসব ঐতিহ্যবাহী ও ঐতিহাসিক। জন, মত, সম্প্রদায়ের উর্ধে এই উৎসবের গ্রহণযোগ্যতা। সময়ের কষ্টি পাথরে পরীক্ষিত! এক প্রাণের উৎসব, যা বহুদিন ধরেই গোটা উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ উৎসবে পর্যবসিত।কোচবিহারের এই রাস উৎসবকে কেন্দ্র করে যে মেলা হয় তাও সময়ের হাত ধরে অনেক বদলে গেছে। এসেছে আধুনিকতার ছোঁয়া! শৈশবে বাবার হাত ধরে যে মেলা দেখেছি তা চরিত্র ও আকৃতি দু'দিক থেকেই বদলে গেছে। গত পঁচিশ বছর ধরে খুব কাছে থেকে এই উৎসব ও মেলা দেখা, অনুভব করার সুযোগ হয়েছে। যা দিনদিন অভিজ্ঞতা ও প্রাপ্তির ঝুলিকে সমৃদ্ধ করে গেছে প্রতি ক্ষেত্রেই।  খুব সংক্ষেপে এই উৎসবের ইতিহাস না জানাটা কিন্তু অবিচারই ...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো,  তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) য...

মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা 2024 সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি (লেখক ও সম্পাদকীয় দপ্তরের কথোপকথন আকারে) --কী পত্রিকা? --নবপ্রভাত। --মুদ্রিত না অনলাইন? --মুদ্রিত। --কোন সংখ্যা হবে এটা? --বইমেলা 2024। --কোন কোন ধরনের লেখা থাকবে? --প্রবন্ধ-নিবন্ধ, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া। --বিশেষ কোন বিষয় আছে? --না। যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে। --শব্দ বা লাইন সংখ্যার কোন বাঁধন আছে? --না। নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো (যেমন, কবিতা 12-14 লাইনের মধ্যে, অণুগল্প কমবেশি 200/250শব্দে)। তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়। --ক'টি লেখা পাঠাতে হবে? --মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। --ফেসবুক বা অন্য কোন প্লাটফর্মে প্রকাশিত লেখা কি পাঠানো যাবে? --না। সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। --পত্রিকা কোন সময়ে প্রকাশিত হবে? --জানুয়ারি 2024-এর দ্বিতীয় সপ্তাহে। --লেখা পাঠানোর শেষতারিখ কত? -- 17 ডিসেম্বর 2023। --কীভাবে পাঠাতে হবে? --মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। --লেখার সঙ্গে কী কী দিতে হবে? --নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) --বিশেষ সতর্কতা কিছু ? --১)মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন '...

উৎসবের সৌন্দর্য: সেকালে ও একালে।। সৌরভ পুরকাইত

  উৎসবের সৌন্দর্য:  সেকালে ও একালে   সৌরভ পুরকাইত বাংলার উৎসব বাংলার প্রাণ। প্রতিদিনের জীবনযাপনের মধ্যে যখন মন ক্লান্ত হয়ে পড়ে তখন তাকে বেঁচে থাকার রসদ যোগায় এই উৎসব। কথায় বলে 'বারো মাসে তেরো পার্বণ'।মন আনন্দই চায়।তাই তাকে সজীবতা দিতে,পরিবারের,সমাজের ভালো-মন্দের কথা মাথায় রেখে মানুষ নিজেই সৃষ্টি করে নিয়েছে নানাবিধ উৎসবগুলিকে। একেবারে প্রাচীন কাল থেকে আজ পর্যন্ত মানুষ কখনোই উৎসব বিমুখ ছিল না।উৎসবই তাকে ঘর থেকে বাইরে টেনে এনেছে,চিনতে শিখিয়েছে আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার আনন্দকে। উৎসব আসলে প্রাণের সাথে প্রাণের যোগ, হৃদয়ের সাথে হৃদয়ের যোগ।রবীন্দ্রনাথ বলেছেন 'সত্য যেখানেই সুন্দর হয়ে প্রকাশ পায় সেইখানেই উৎসব'।হৃদয়ের সেই সুকোমল বৃত্তির জাগরণ যেন ফুটে ওঠা ফুলেরই মতো সত্য ও সুন্দর।এই জাগরণই উৎসব। তাই নানা কিছুর মধ্য দিয়ে,নানা উপলক্ষ্যে এই উৎসব প্রকাশ পায়। প্রাচীনকালে মানুষের হাতে না ছিল পসার, না ছিল পসরা।ছিল মনের আন্তরিকতা,মানুষকে কাছে টেনে নেবার ক্ষমতা।সেটাই ছিল উৎসবের সৌন্দর্য। তাই সেদিনের উৎসবে ক্ষুদ্র,তুচ্ছ উপকরণও প্রাণের উচ্ছ্বাসে মহৎ হয়ে উঠত।সেকালের উৎসবে লোক দেখানো ব্যাপার কিছু ...

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

বসন্তের কোকিল তুমি   বিচিত্র কুমার                      (০১) তোমার দু-আঁখির গহীন অরণ্যে একটা স্বপ্নের বহমান নদী রয়েছে, তারই রেশ ধরে আমি হেঁটে চলি অজানা বসন্তের পথে নীর উদ্দেশ্যে। সে চলার কোন শেষ সীমা নেই তাই আমার বিষণ্ণ একতারা সন্ন্যাস খুঁজে ফিরে , কবে তুমি বুঝবে অনুশ্রী মনের পর্দা খুলে একুশ বসন্ত তোমার রঙ ছিটিয়ে যাচ্ছে অচিনপুরে। এদিকে আমার দেহের প্রতিটি শিরা ধমনীতে প্রবাহিত হচ্ছে তোমার ভালোবাসার একটু উষ্ণতা পাবার জন্যে, শুধু অনুভবে তাণ্ডব উচ্ছাসিত হচ্ছে--- যেদিকে তাকাই --- ফুলে ফুলে ভ্রমর গুনগুনিয়ে উড়ে উড়ে পরে বসন্তের কোকিল গান গায় নব বসন্তে, তোমার দুই চোখে আমার একই ছায়া রয়ে যায় উতলা ভালোবাসার সীমান্তে।                 (০২)        এক রক্তাক্ত বসন্তের স্মৃতি কোন এক উতলা বসন্তের সকালে পুষ্পবনে ফুটেছিল একটি টকটকে লাল গোলাপ, তার সাথে হয়েছিলো দেখা প্রথম ফাগুনে হয়েছিল দুজনার এ জীবনের আলাপ।  তারপর প্র...

অনুভবে, অনুধ্যানে অনালোকিত কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী ।। সুপ্রিয় গঙ্গোপাধ্যায়

"এ কালে একটু লেখাপড়া জানা থাকাতে, এবং বঙ্গভাষায় অনেক গুলি পাঠ্য পুস্তক হওয়াতে কেবল পরনিন্দা করিয়া সময় কাটাইতে তাঁহাদের আবশ্যকও হয় না, প্রবৃত্তিও হয় না। …নিতান্ত সখ্যতা বা আত্মীয়তা না থাকিলে, সকল পেটের কথা খুলিয়া নিঃশ্বাস ছাড়িয়া তৃপ্তিলাভ করা, এ কালের মেয়েরা পছন্দ করেন না। তাঁহারা বইখানি, কার্পেটটুকু, নিজের স্বামী পুত্র লইয়া দিন যাপন করিতে বা একেলা থাকিতে কষ্ট বোধ করেন না।" —শরৎকুমারী চৌধুরাণীর এই লেখা (ভারতী ও বালক/ আশ্বিন কার্তিক, মাঘ/ ১২৯৮) দেখে বুঝতে অসুবিধা হয় না উনিশ শতকে নারীর লেখাপড়া শেখার উদ্দেশ্য ছিল মূলত আত্মমুক্তির জন্য। শুধু লেখাপড়া শেখা নয়, সাহিত্য সৃষ্টিতেও ছয়'এর দশক (উনিশ শতকের) থেকে নারীরা যে ধারা সূত্রপাত করেছিল তা নারীর আত্মমুক্তির পথকেই প্রসারিত করেছিল। ছয়'এর দশকের পূর্বেই ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে প্রথম ছাপার হরফে নারী রচিত কাব্য 'চিত্তবিলাসিনী' প্রকাশিত হয়। লেখেন কৃষ্ণকামিনী দাসী। ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে কবি ঠাকুরাণী দাসীর নাম উঠে আসতে থাকে, যিনি কবিতার পাশাপাশি গদ্যও লিখতেন। ঠিক সেই বছরই জন্মগ্রহণ করেন কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী, যাঁর কবিতা লেখা আত্মমুক্...

বছরের বাছাই

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৪তম সংখ্যা ।। ফাল্গুন ১৪৩১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

  এই সংখ্যায় একটি গ্রন্থ আলোচনা ও একটি ধারাবাহিক রচনা ছাড়া সব লেখাই ভাষা দিবস, মাতৃভাষা, ভাষাচেতনা ও ভাষা সমস্যা বিষয়ক রচনা। লেখাগুলি এই সংখ্যাকে অনেকটাই সমৃদ্ধ করেছে। পড়ুন। শেয়ার করুন। মতামত জানান। লেখকগণ নিজের নিজের লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন যতখুশি, যে মাধ্যমে খুশি। কিন্তু স্ক্রিনশট শেয়ার নৈব নৈব চ!  অন্য বিষয়ের লেখাগুলি আগামী সংখ্যার জন্য রইল।  সকলকে ধন্যবাদ, অভিনন্দন। ভালো থাকুন।   --সম্পাদক, নবপ্রভাত। ==  সূ  চি  প  ত্র  == প্রবন্ধ-নিবন্ধ অমর ২১শে ফেব্রুয়ারি বাঙ্গালীর বাংলা ভাষা দুর্জয় দিবস।। বটু কৃষ্ণ হালদার ভাষা শহীদদের পঁচাত্তর বছর।। অনিন্দ্য পাল একুশে ফেব্রুয়ারি : বাঙালির শ্রেষ্ঠ অশ্রুবিন্দু।। জীবনকুমার সরকার কবিগানের সাহিত্যিক ও সমাজতাত্ত্বিক মূল্য।। বারিদ বরন গুপ্ত বিপন্ন মাতৃভাষা ও সংস্কৃতি।। শ্যামল হুদাতী মায়ের দুধ আর মাতৃভাষা।। প্রদীপ কুমার দে একুশে ফেব্রুয়ারি : কিছু কথা।। বনশ্রী গোপ বাংলায় কথা বাংলায় কাজ।। চন্দন দাশগুপ্ত বিপন্ন মাতৃভাষা ও তার মুক্তির পথ।। মিঠুন মুখার্জী. হে অমর একুশে, তোমায় ভুলিনি, ভুলব না।। মহম্মদ মফিজুল ইসলা...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৭তম সংখ্যা ।। জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ মে ২০২৫

  প্রচ্ছদ চিত্র: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সূচিপত্র রবীন্দ্রনাথ এবং কয়েকজন নারী ।। অনিন্দ্য পাল পরাবাস্তববাদ ও বাংলায় জীবনানন্দের কাব্যচর্চা ।। রণেশ রায় প্রতীক্ষা ।। চন্দন দাশগুপ্ত আশ্রয় ।। সায়নী সাহা বয়স্ক শিক্ষাকেন্দ্র ।। দেবাংশু সরকার প্রণামের প্রভু ।। সুপ্রভাত মেট্যা দুর্ভাগ্যের সম্মুখ সমরে ।। সমীর কুমার দত্ত আচমকা শরৎ ।। অর্ণব সামন্ত প্রতিধ্বনি ✍️ সুবীর কুমার ঘোষ জীবন যেখানে যেমন ।। আরজু মুন জারিন বছর সীমান্তে হিসেব নিকেশ ।। রানা জামান চারটি কবিতা ।। বিবেকানন্দ নস্কর আমরা আছি ।। লালন চাঁদ চাওয়া ।। মাথুর দাস কাগজ ফুলে ।। সফিউল মল্লিক সময়ের স্রোত ।। দুর্গাদাস মিদ্যা তুমি মানুষ ।। বদরুল বোরহান দিঘার সমুদ্র ।। মাখনলাল প্রধান পুস্তক-আলোচনা ।। অরবিন্দ পুরকাইত সংযম ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত  চেনা প্রতিবেশী (প্রথম পর্ব) ।। দীপক পাল খেলার মাঠ ।। তূয়া নূর বন্ধু শ্যামলকান্তি ।। শংকর ব্রহ্ম তুমি তোমার মতো থাকলে ।। সত্যেন্দ্রনাথ বেরা গ্রীষ্মে খুবই হিংস্র রবি ।। জগবন্ধু হালদার স্বপ্ন দর্শন ✍️ পার্থ প্রতিম দাস মৌন মুখরতা ।। মুসা মন্ডল রুদ্র বৈশাখ ।। দীনেশ সরকার চিহ্নিত পদযুগ পদাঘাত ।। দেবাশীষ...

প্রচ্ছদ।। ৮৩তম সংখ্যা ।। মাঘ ১৪৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ।। প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র

  বিঃ দ্রঃ আগামী ফেব্রুয়ারি সংখ্যার জন্য ভাষা দিবসের কথা মাথায় রেখে লেখা পাঠান। email: nabapravatblog@gmail.com  সূচিপত্র ফিচার।। গোপাল ভাঁড়ের অজানা সত্য ।। লোকনাথ পাল প্রবন্ধ ।। মসুয়ার রায় পরিবার এবং বঙ্গসংস্কৃতি ।... প্রবন্ধ ।। সুধীন্দ্রনাথ দত্ত: কাব্যের দার্শনিক ও ন... কবিতায় সেতুবন্ধন (তৃতীয় অংশ) শিল্পবিপ্লবোত্তর কাল... রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর বিদ্রোহী প্রেমের কবিতা: ... কবিতা ।। এই মন ভালো নেই দিনে ।। সুপ্রভাত মেট্যা কবিতা ।। জোছনা আলোর স্বপ্ন ।। তুষার ভট্টাচাৰ্য কবিতা ।। নিঃস্ব হবো ।। লালন চাঁদ কবিতা ।। ভালোলাগা  ।। আজিজ উন নেসা  গল্প ।। স্বীকারোক্তি ।। চন্দন দাশগুপ্ত কবিতা ।। শীতের দিন ।। প্রশান্ত কুমার মন্ডল কবিতা ।। শীতকাল ।। অঙ্কিতা পাল নাসির ওয়াদেনের দুটি কবিতা ভূতের লেখা ছড়া ।। বদরুল বোরহান কবিতা ।। ব্যস্ত ।। আলাপন রায় চৌধুরী ছোটগল্প ।। লম্বুর স্বপ্নপূরণ ।। পরেশ চন্দ্র মাহাত কবিতা ।। সৎকার ।। সুমিত মোদক কবিতা।। শীত বৈচিত্র্য ।। সুমিতা চৌধুরী পুস্তক-আলোচনা ।। নিউটনের আপেল ও প্রেমিকা ।। অরবিন্... গল্প।। শান্তির পথে …...।। বন্দনা সেনগুপ্ত কবিতা ।। মা...

সূচিপত্র ।। ৮৯তম সংখ্যা ।। শ্রাবণ ১৪৩২ জুলাই ২০২৫

সূচিপত্র   প্রবন্ধ ।। বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় ।। মাখনলাল প্রধান প্রবন্ধ ।। শ্রমিকের অধিকার ।। চন্দন দাশগুপ্ত প্রবন্ধ ।। ভিনগ্রহীদের সন্ধানে ।। শ্যামল হুদাতী প্রবন্ধ ।। নারীমর্যাদা ও অধিকার ।। হিমাদ্রি শেখর দাস কবিতা ।। মশালের রং তুলি ।। তূণীর আচার্য কবিতা ।। জললিপি ।। রূপক চট্টোপাধ্যায় গুচ্ছকবিতা || শিশির আজম নিবন্ধ ।। পূনর্জন্ম ।। শংকর ব্রহ্ম মুক্তভাবনা ।। কোলাহল তো বারণ হলো ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত গল্প ।। গানের হাড় ।। শুভজিৎ দত্তগুপ্ত গল্প ।। শিকড়ের খোঁজে ।। সমীর কুমার দত্ত সুপ্রভাত মেট্যার পাঁচটি কবিতা গ্রন্থ-আলোচনা ।। আবদুস সালামের কাব্যগ্রন্থ 'অলীক রঙের বিশ্বাস'।। তৈমুর খান অণুগল্প ।। হরিবোল বুড়ো ।। সুমিত মোদক রম্যরচনা ।। গোয়েন্দা গোলাপচন্দ আর প্রেমের ভুল ঠিকানা ।। রাজদীপ মজুমদার দুটি গল্প ।। মুহাম্মদ ফজলুল হক দুটি কবিতা ।। তীর্থঙ্কর সুমিত কবিতা ।। মেঘমুক্তি ।। বন্দনা পাত্র কবিতা ।। ব্যবচ্ছিন্ন শরীর ।। কৌশিক চক্রবর্ত্তী কবিতা ।। শমনচিহ্ন ।। দীপঙ্কর সরকার কবিতা ।। ভালোবাসার দাগ ।। জয়শ্রী ব্যানার্জী কবিতা ।। ফণীমনসা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ছড়া ।। আজও যদি ।। বদ্রীন...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো,  তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) য...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮২তম সংখ্যা ।। পৌষ ১৪৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

  সূচিপত্র অন্নদাশঙ্কর রায়ের সাহিত্য: সমাজের আয়না ।। বিচিত্র কুমার প্রবন্ধ ।। বই হাতিয়ার ।। শ্যামল হুদাতী কবিতায় সংস্কৃতায়ন (দ্বিতীয় ভাগ ) ।। রণেশ রায় পুস্তক-আলোচনা ।। অরবিন্দ পুরকাইত কবিতা ।। লেগে থাকা রোদ্দুরের ঘ্রাণের মতো ।। জয়শ্রী ব্যানার্জি কবিতা ।। ভুল ।। সুপ্রভাত মেট্যা কবিতা ।। উন্মেষ ।। বিশ্বজিৎ সেনগুপ্ত কবিতা ।। গার্হস্থ্য ।। বিবেকানন্দ নস্কর একগুচ্ছ বিজয়ের কবিতা ।। বিচিত্র কুমার গল্প ।। পোষ্য ভূত ।। সমীর কুমার দত্ত কবিতা ।। আশপাশ ।। প্রতীক মিত্র কবিতা ।। মেঘ ।। তীর্থঙ্কর সুমিত অণুগল্প ।। বংশীবদনের সুখদুঃখ ।। দীনেশ সরকার কবিতা ।। গভীর রাত ।। সুনন্দ মন্ডল তিনটি কবিতা ।। সুশান্ত সেন ভালোবাসার বাসা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত অণুগল্প ।। শিক্ষকের সম্মান ।। মিঠুন মুখার্জী কবিতা।। প্রশ্ন ।। জীবন সরখেল কবিতা ।।ক্ষরিত সে পথ ।। রহিত ঘোষাল কবিতা ।। রক্ত দিয়ে কেনা ।। মুহাম্মদ মুকুল মিয়া কবিতা ।। কংক্রিট ।। আলাপন রায় চৌধুরী ছড়া ।। শীত নেমেছে ।। রঞ্জন কুমার মণ্ডল কবিতা ।। কিছু শব্দ ।। সমীর কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় কবিতা ।। শীতের নগ্নতা ।। রানা জামান কবিতা ।। পথ চলা ।। পাভেল আমান বেদ পু...

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ৮৬তম সংখ্যা ।। বৈশাখ ১৪৩২ এপ্রিল ২০২৫

সম্পাদকীয় এই সংখ্যাটি বাংলা নববর্ষ বিষয়ক সংখ্যা। নৱৰ্ষকেন্দ্রিক বহু তথ্যপূর্ণ লেখা এই সংখ্যাটিকে সমৃদ্ধ করেছে। বাংলা নববর্ষ উদযাপনের ইতিহাস, রীতিনীতি, উৎসব, পার্বন, লোকাচার, রূপান্তর বহুবিধ বিষয় প্রকাশিত হয়েছে এই সংখ্যার লেখাগুলিতে। এই সংখ্যার বাছাই কিছু লেখার সঙ্গে আগামীতে আরও কিছু লেখা সংযুক্ত করে বাংলা নববর্ষ বিষয়ক একটি মুদ্রিত সংখ্যা প্রকাশ করার ইচ্ছে রইল।  সকলকে নববর্ষের আন্তরিক শুভকামনা জানাই। উৎসবে আনন্দে থাকুন, হানাহানিতে নয়। ধর্ম-ব্যবসায়ীদের চক্রান্ত ব্যর্থ করে সহনাগরিকের পাশে থাকুন। মনে রাখুন, ধর্মকে মানুষই সৃষ্টি করেছে। ঈশ্বর আল্লা গড ইত্যাদির জন্মদাতা মানুষই। মানুষকে ভালোবাসুন। মানুষের পাশে থাকুন।  নিরাশাহরণ নস্কর  সম্পাদক, নবপ্রভাত।  সূচিপত্র প্রবন্ধ-নিবন্ধ-স্মৃতিকথা পয়লা বৈশাখ ।। সিদ্ধার্থ সিংহ নববর্ষকেন্দ্রিক মেলা, পার্বন, উত্সব, লোকাচার ।। সবিতা রায় বিশ্বাস নববর্ষ আবাহন ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে এবং বিভিন্ন দেশে ।। তুষার ভট্টাচার্য নববর্ষের সেকাল ও একাল ।। হিমাদ্রি শেখর দাস নববর্ষের হাল-হকিকৎ ।। শংকর ব্রহ্ম বোশেখি বাঙালি নাকি পোশাকি বাঙালি? ।। দিব্যেন্দু...

প্রবন্ধ ।। বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় ।। মাখনলাল প্রধান

বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় মাখনলাল প্রধান বাংলার শিল্প-সংস্কৃতির জগতে যাত্রা শিল্প তথা নাট‍্যশিল্পে মড়ক নেমে এসেছে । যাত্রা শিল্পের মড়কে শুধু কোভিড নয় তার বহুপূর্ব থেকেই অর্থনৈতিক বিপর্যয় , শিক্ষাক্ষেত্রে বন্ধ‍্যাত্ব এবং গ্ৰাম বাংলার পটপরিবর্তন শেষ পেরেক ঠুকে দিয়েছে। যাত্রা-শিল্পের লীলাভূমি ছিল গ্ৰাম বাংলা। গ্ৰামে প্রচুর যাত্রাপালা হত নানা উৎসবকে কেন্দ্র করে । জমিদারি ব‍্যবস্থা লুপ্ত হওয়ার পর গ্ৰামীণ মানুষের উদ‍্যোগে শীতলা পূজা,  কালীপূজা, দুর্গাপূজা, কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা, চড়ক ইত‍্যাদিকে উপলক্ষ‍্য করে যাত্রাপালার আয়োজন না হলে কেমন যেন ম‍্যাড়ম‍্যাড়ে লাগতো। সেই সঙ্গে কলকাতার বড়বড় কোম্পানির যাত্রাপালা ঘটা করে, টিকিট সেল করে হত মাঠে। খুব বড় মাপের খেলার মাঠ যেখানে ছিল না সেখানে ধানের মাঠ নেওয়া হত ‌। ত্রিশ-চল্লিশ হাজার মানুষ দেখতে আসত। স্পেশাল বাস পাঠাত  আয়োজক কর্তৃপক্ষ। বিনা ভাড়ায় বাসে যাতায়াত করত যাত্রার দর্শকেরা। কিন্তু বিকল্প ধানচাষ শুরু হলে জমিগুলো সময় মতো ফাঁকা পাওয়া গেল না । প্রথম দিকে ব‍্যাপকহারে ধান শুরু না হওয়ায় খুব একটা অসুবিধা হত না। বহুক্ষেত্রে  ধান কা...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। নবপ্রভাত ৮৫ ।। চৈত্র ১৪৩১ মার্চ ২০২৫

  সূচিপত্র নিবন্ধ ।। মরিয়ম মির্জাখানি: এক অনন্য গণিতসূর্য ।। ... নিবন্ধ ।। নারী দিবসে যা ভাবা উচিত ।। বিশ্বনাথ পাল প্রবন্ধ ।। প্রাচীনকাল থেকে নারীরা অবহেলিত, বঞ্চিত,... নিবন্ধ ।। আমার চোখে আদর্শ নারী ।। জয়শ্রী বন্দ্... ফিচার।। এই মুহূর্তে বাংলা সাহিত্যে নারীদের লেখালেখ... আফ্রিকার লোককথা ।। করোটিকে বিয়ে করা অবাধ্য মেয়েটি ... ছোটগল্প ।। মানবী ।। ভুবনেশ্বর মন্ডল নিবন্ধ ।। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে অন্যতম নারী মু... নিবন্ধ ।। প্রিয় মহিলা সাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবী ।। ... গল্প ।। উই ওয়ান্ট জাস্টিস ।। রবীন বসু প্রবন্ধ ।। নিপীড়িতা ।। শ্যামল হুদাতী ফিচার ।। রমণী রতন ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত প্রবন্ধ ।। নারী সমাজ : তখন-এখন ।। তপন মাইতি নিবন্ধ ।। বহমান কালের ধারায় নারী ।। দীপক পাল গল্প ।। আমার দুর্গা ।। অঞ্জনা গোড়িয়া (সাউ) গল্প ।। যোগ্য জবাব ।। সমীর কুমার দত্ত ছোটগল্প ।। আমি দুর্গাকে দেখেছি।। চন্দন দাশগুপ্ত গল্প ।। সম্পর্ক ।। গৌতম সমাজদার কবিতা।। নারী মানে ।। গোবিন্দ মোদক কবিতা।। নারী ।। সমর আচার্য্য ছড়া ।। নারী অসামান্যা ।। সৌমিত্র মজুমদার কবিতা ।। নারী দিবসে ।। বিবেকানন্দ নস্কর কবিতা ।। না...

প্রবন্ধ ।। ভিনগ্রহীদের সন্ধানে ।। শ্যামল হুদাতী

ভিনগ্রহীদের সন্ধানে  শ্যামল হুদাতী  ইতিহাসের শুরু থেকে বারবার মানুষকে একটা প্রশ্ন কুঁড়ে কুঁড়ে খায় – এই মহাবিশ্বে আমরা কি একা? পৃথিবীর মতো আরও গ্রহ রয়েছে, যেখানে মানুষের মতো বুদ্ধিমান প্রাণীরা বাস করে – এই সম্ভাবনা বরাবর মানুষকে মুগ্ধ করেছে। আমাদের প্রত্যেকের জীবনের কখনও না কখনও এই ভাবনা এসেছে। দীর্ঘ কয়েক দশকের গবেষণার পরও, এই বিষয়ে কোনও নিশ্চয়তা দিতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। জেমস ওয়েব মহাকাশ টেলিস্কোপ, বহু দূরের এমন কিছু গ্রহের সন্ধান দিয়েছে, যেগুলিতে প্রাণ থাকতেই পারে। তবে, নিশ্চিত কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে, আমেরিকার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাম্প্রতিক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, ভিনগ্রহীদের খুঁজতে বহু দূরে যাওয়ার কোনও দরকার নেই। তারা এই পৃথিবীতেই মানুষের ছদ্মবেশে মানুষের মধ্যেই বসবাস করতে পারে। আমরা ভিনগ্রহীদের যেমন কল্পনা করি, এরা তার থেকে আলাদা। এরা অনেকটাই, দেবদূতদের মতো। মানব জগতের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক প্রযুক্তিগত নয়, বরং জাদুকরি। মহাকাশে সৌরজগতের গ্রহ পৃথিবী ছাড়া অন্য কোথায় প্রাণ রয়েছে কি না তা নিয়ে চলছে বিস্তর গবেষণা। একই সঙ্গে পৃথিবী ছাড়া অন্য কোনো গ্রহে মানুষ বসবাস ক...

মাসের বাছাই

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬

  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠালে  অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে হলে ভালো। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # ...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯২তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩২ অক্টোবর ২০২৫

—: সম্পাদকীয় দপ্তর থেকে :— এই সংখ্যার জন্য লেখা এসেছিল প্রায় ১৮০টা। কিন্তু গুণগত মানে দুর্বল লেখার সংখ্যা বহু। আমরা নবপ্রভাতে নতুনদের কথা ভেবে বেশ কিছু দুর্বল লেখাও রাখি। কিন্তু সবসময় একই লোকের দুর্বল লেখা প্রকাশ করা অনুচিত বলে মনে করি। শেষ পর্যন্ত ৯৯ জনের লেখা রাখা গেল। যাদের লেখা প্রকাশিত হল না, তারা লেখাগুলি অন্য যেখানে খুশি পাঠাতে পারেন। বিশেষ কারণে এই সংখ্যার মুদ্রিত সংস্করণ প্রকাশিত হচ্ছে না। আমরা দুঃখিত। তবে মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি শীঘ্রই আসছে। সঙ্গে থাকুন। সকলকে উৎসবমুখর বর্ণময় শুভেচ্ছাসহ— —নিরাশাহরণ নস্কর, সম্পাদক, নবপ্রভাত। অনুরোধ : প্রকাশিত লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন, ছবি/স্ক্রীনশট নয়।  == সূচিপত্র == পড়া-লেখার ইতিহাস অনুসন্ধান।। তপন তরফদার উৎসব : মানুষের চিরন্তন আত্মপ্রকাশ।। কৃশানু ব্যানার্জি বাংলা : সভ্যতা ও সংস্কৃতির জন্মভূমি।। শ্যামল হুদাতী সমুদ্র আর অস্তিত্ব ।। সুব্রত চৌধুরী রাজা ছিলেন জুবিন গর্গ ।। গঙ্গা 'অনু'   আদ্যাশক্তি মহামায়ার বাংলা বারো মাসের বারো রূপ ।। অর্হণ জানা মেধাদাদুর আসর ।। রণেশ রায় বৈজ্ঞানিক মা...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯৩তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩২ নভেম্বর ২০২৫

সূচিপত্র বস্তু, চেতনা এবং কবি ।। সজল চক্রবর্তী দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত ।। রণেশ রায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট ও সন্নিহিত অঞ্চলের কথ্য শব্দ ।। অরবিন্দ পুরকাইত চাঁদে জীবন ।। শমীক সমাদ্দার অসমাপ্তি ।। মহুয়া হুই গ্যালাক্সির শব্দে ।। জাসমিনা খাতুন তিনটি কবিতা ।। দিবাকর সেন অপূর্ণতার শেষ অধ্যায় ।। সুপ্রিয় সাহা হাফ ডজন ছড়া ।। স্বপনকুমার পাহাড়ী স্বাপ্নিক অমলের ঘুৃম ।। সঞ্জয় দেওয়ান দুটি কবিতা ।। সৌমিত্র উপাধ্যায় পথ চলতি ✍️পার্থ প্রতিম দাস হেমন্তের বিষাদ ছুঁয়ে ।। শক্তিপদ পাঠক রাই আর বাবা ।। অদিতি চ্যাটার্জি স্থিতিশীল ।। রঞ্জিত মুখোপাধ্যায় হৃদয়ের শূন্য কোড ।। লিপিকা পিঙ্কি দে অমানিশা ।। সৌভিক মুখার্জী দৃষ্টিগত ।। শামীম নওরোজ জ্যান্ত ভূতের গপ্পো ।। পার্থ সারথি চট্টোপাধ্যায় ধুতরা ফুলের ঘ্রাণ ।। মজনু মিয়া তারা খসার আলোয় ।। তীর্থঙ্কর সুমিত উত্তরণে অন্তরায় ।। সমীর কুমার দত্ত প্রেম মুদ্রা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ধারা ।। লালন চাঁদ অন্যের ব্যথায় ব্যথি ।। জগদীশ মণ্ডল গর্ভ ।। শাশ্বত বোস ভ্রমণ বিষয়ক স্মৃতিকথা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত শাপে বর ।। সাইফুল ইসলাম রবিবার ।। সঙ্ঘমিত্রা দাস দুটি ...

দিদৃক্ষা ।। রাজেশ কে. চক্রবর্ত্তী

  দিদৃক্ষা রাজেশ কে. চক্রবর্ত্তী 'কাল একবার দেখা হতে পারে?' দশমীর দুপুরে খাটে আধশোয়া হয়ে নিজের ফোনটা ঘাঁটছিল দেবমাল্য; হোয়াট্‌সঅ্যাপের সার্চ বক্সে  র‍্যান্ডম সিক্যুয়েন্সে ক'খানা ডিজিট ইনপুট করতেই বিস্মৃতির অতল থেকে অপ্রত্যাশিতভাবে যে নামটা স্ক্রিনের সারফেসে ভেসে উঠল, এককালে দেবমাল্যের প্রায়োরিটি লিস্টে সবথেকে ওপরে পিন্‌ করা থাকতো এই অ্যাকাউন্টটা। 'অহনা দাশগুপ্ত'—গ্রেয়েড-আউট ডিপিটার ডানদিকে, নামটার তলায় নিস্প্রভ হরফে ভেসে থাকা ওর এই লাস্ট মেসেজটা বেশ ক'বছরের পুরনো, কিন্তু দেবমাল্যর স্মৃতির প্যান্ডোরা বাক্সটি উলটে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল। আরেকবার আপাদমস্তক শিহরিত হয় সে। প্রোফাইলটা খুলে ওপরে-নীচে স্ক্রল্‌ করে দেখে, ওদের পুরনো চ্যাটগুলো তেমনি আড়ষ্ট হয়ে পড়ে আছে, ওর মেসেজগুলোর পাশে ডাবল টিকগুলো এখনও জাজ্বল্যমান সবুজে ছোপানো, যেন এইমাত্র 'সিন্‌' করে রেখেছে অহনা! যেন এখুনি আবার হাত বোলালেই অহনা এসে খানিকটা রাগত ভঙ্গিতে চ্যাট করতে লেগে যাবে। দেবমাল্যের বুক ছাপিয়ে একটা নীরব দীর্ঘশ্বাস উঠে আসে! ছুটির এই আমেজটা লক্ষ্মীপুজো অব্দি গড়াবে—অফিস খুললেই তো আবার দমফাটা ব্য...

গুচ্ছকবিতা || শিশির আজম

  গুচ্ছকবিতা || শিশির আজম হুইসেল (মুরাকামি থেকে অনুপ্রাণিত) ♦ 'গভীর রাতে একটা হুইসেল কতটা গভীর হতে পারে তুমি কল্পনাও করতে পারো না,' ছেলেটা বললো, 'আশ্চর্য ঐ হুইসেলের মতো আমি ভালবাসি তোমাকে।' কিন্তু গভীর রাতে অন্ধকারে কখনও তো ঘুম ভেঙে যায়নি মেয়েটার, কখনও ও বিচ্ছিন্ন আর একা হয়ে যায়নি। ও কীভাবে অনুভব করবে গভীর রাতে ট্রেনের হুইসেল কতটা গভীর! নিউজ এজেন্সি ♦ একসময় আমরা খবর শুনতাম এখন দেখি স্বীকার করতে হবে খবর শোনার চেয়ে দেখার আনন্দ বেশি আলাদা উত্তেজনা নিউজ এজেন্সিগুলো এব্যাপারে তৎপর আর প্রতিযোগিতাপূর্ণ কোনটা নিউজ সেটা ওরাই ঠিক করে যেটা ওদের দরকার আর সেটাই আমাদের দেখানো হয় ধারাবাহিকভাবে সুচারু জ্যামিতিকতায় বিভিন্ন পদ মিশিয়ে খাওয়ানো হয় নতুন বাস্তবতা নির্মাণে যে বাস্তবতায় জায়গা নেই আমাদের ইতিহাস অন্বেষা স্বাধীনতার সমৃদ্ধি আর স্বাধীনতার কথা বলেই ওরা আমার ক্ষেতখামার পাহাড় আর নদীর দখল নিয়েছে তাহলে টিভিতে যে হাসিখুশি প্রাণবন্ত আমাদেরকে দেখানো হয় ওরা কারা এই প্রশ্ন করো নিজের কাছে আগুন নিয়ে খেলা ♦ আজও পুকুরে ছিপ ফেলে বসবো আমি ধীরে চুপ সূর্য আমার ঘাড়ে শ্বাস ফেলবে সারারাত ঘরের ভেতর ল্যাং...

বিদায়ের স্রোত ।। চয়ন মন্ডল

  বিদায়ের স্রোত চয়ন মন্ডল "বিজয়া দশমী—আনন্দের দিন, কারও কাছে যা হয়ে উঠল চিরন্তন বিদায়।" আজ বিজয়া দশমী। শিউলি ফুলের গন্ধে ভোরটা অন্যরকম। পাড়ার প্যান্ডেলে অদ্ভুত এক কোলাহল—মায়ের বিদায় যে আজ। শঙ্খধ্বনি, ঢাকের বাজনা আর উলুধ্বনিতে গমগম করছে চারদিক। একদিকে মা দুর্গার বিদায়ের বেদনা, অন্যদিকে আনন্দ ও মিলনমেলা। সারা বছরের অপেক্ষা শেষে এই দিনটিতে প্যান্ডেল ভরে উঠেছে মানুষের ভিড়ে। সকালের পূজার্চনা শেষ হতেই শুরু হয়েছে সিঁদুর খেলা। মহিলারা মায়ের প্রতিমাকে সিঁদুর পরিয়ে একে অপরের কপালে, গালে রাঙিয়ে দিচ্ছেন। ঢাকের তালে আর শাঁখ বাজনার আবেশে ভেসে যাচ্ছে পাড়া। শুরু হয়েছে প্রতিমা বিসর্জনের প্রস্তুতি। কিন্তু এসবের মধ্যে নেই অনুরাধা। কেউ তার বা মিনির খোঁজ রাখেনি। মুখার্জিদের দোতলা বাড়ির কোণের ঘরে বসে সে চোখের জল ফেলছে। সবার বাড়িতে আলোর রোশনাই, ভোগের গন্ধ, হাসি—শুধু তাদের ঘরটিতে নিস্তব্ধতা। গতবছর এই দিনেই তো অন্যরকম ছিল সবকিছু। অনুরাধা, সুজয় আর তাদের তিন বছরের মেয়ে মিনি পাড়ার প্যান্ডেলে ঢাকের তালে নেচেছিল, সিঁদুর খেলায় রঙে ভেসেছিল। বিকেলের দিকে প্রতিমা বিসর্জনের মিছিলে শামিল ...

কবিতা ।। অরণ্যকন্যা ।। অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়

  অরণ্যকন্যা অরিন্দম চট্টোপাধ্যায় অরণ্যকন্যার দৃষ্টির ভেতর বিষাদ বিন্দু ফোঁটা ফোঁটা জলের মতো গড়িয়ে যায়, হয়ে যায় কোন নদীপথ দৃষ্টি ভেঙে ভেঙে চলে যায় কোন এক শূন্য পথে অরণ্যকন্যার হৃদয়ের ভেতর ভাঙে যতো বৃক্ষপত্র নতুন পত্র পুষ্পের খোঁজ নেই ঠোঁট জুড়ে সমুদ্রকাঁপন বুদবুদের মতো অস্ফুট হয়ে উচ্চারিত হয় কোন অক্ষর শব্দ আর তাঁর শরীর থেকে ছড়িয়ে যায় হয়ে যায় একটা অদৃশ্য কবিতা...    ================== @ অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়,  বেহালা, কলকাতা -৭০০০৬০,  

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো,  তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) য...

শেষ বিকেলের আলো ।। সৈকত প্রসাদ রায়

  শেষ বিকেলের আলো সৈকত প্রসাদ রায় রানাঘাট শহরের প্রান্তে ছোট্ট এক পাড়া বিশ্বাসপাড়া। সেই পাড়ার পুরোনো ভাঙাচোরা বাড়িটায় থাকেন পুষ্পরাণী ভট্টাচার্য— বয়স পঁয়ষট্টির কোঠায়। সবাই তাকে "পুষ্পদি" বলেই চেনে। একসময় প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতা করতেন, এখন অবসর নিয়েছেন। প্রতিদিন বিকেলে পুষ্পদি বারান্দায় বসে চা খান। ছোট একটা টেবিল, কয়েকটা পুরোনো বই, আর একখানা নীল কাঁচের ফুলদানি — তার নিত্যসঙ্গী। বারান্দার সামনেই একটা গলি, যেখান দিয়ে প্রতিদিনই স্কুল ছুটির পরে বাচ্চারা হইচই করে ছুটে যায়। পুষ্পদির একমাত্র ছেলে অনিরুদ্ধ — কলকাতায় চাকরি করে। ছেলেটা আধুনিক, নিজের সংসার আছে, স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ব্যস্ত। বছরে হয়তো একবার আসে, তাও কিছুক্ষণ বসে আবার চলে যায়। পুষ্পদি মুখে কিছু বলেন না, কিন্তু বুকের ভেতরে একটা কষ্ট জমে থাকে। সেই বিকেলটা অন্যরকম ছিল। আকাশে ধুলো, গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা। হঠাৎ পুষ্পদির চোখে পড়ে — রাস্তায় এক কিশোর বসে আছে। বয়স বারো-তেরোর বেশি নয়। মলিন জামা, পায়ে ছেঁড়া চটি। ছেলেটা একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে পুষ্পদির বাড়ির গেটে ঝুলে থাকা পুরোনো নোটিশবোর্ডটার দিকে, যেখানে একসময় লেখা ছিল — "পুষ্পরাণী ভ...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯১তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পাদকীয় দপ্তর থেকে এই সংখ্যায়  'শিক্ষা ও শিক্ষক' বিষয়ক বেশ কিছু লেখার পাশাপাশি রয়েছে বিচিত্র বিষয়ের আরও কিছু লেখা। সব মিলিয়ে সংখ্যাটি আপনাদের সমৃদ্ধ করবে, আপ্লুত করবে — এ বিষয়ে আমরা আশাবাদী। আপনাদের মতামত অবশ্যই জানাবেন। আমরা প্রতীক্ষিত।            আগামী অক্টোবর ২০২৫ সংখ্যা 'উৎসব সংখ্যা' হিসাবে প্রকাশিত হবে। ওয়েব সংখ্যার পাশাপাশি নির্বাচিত লেখাগুলি নিয়ে একটি pdf এবং তার মুদ্রিত সংস্করণও প্রকাশিত হবে। তাই অপ্রকাশিত ভালো লেখা পাঠান। বিশেষ কোনও বিষয় নেই। প্রবন্ধ-নিবন্ধ-ফিচার ২০০০ শব্দ, গল্প ১২০০ শব্দ, অণুগল্প ৫০০ শব্দ, কবিতা-ছড়া ২৪ লাইনের মধ্যে হলে ভালো। ইমেলঃ nabapravatblog@gmail.com           বিস্তারিত বিজ্ঞপ্তি আসবে। সামাজিক মাধ্যমে আমদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন। সময় মতো সব সংবাদ পেয়ে যাবেন।  শারদ উৎসবের দিনগুলি সকলের আনন্দে কাটুক এই কামনা করি। —নিরাশাহরণ নস্কর সম্পাদক: নবপ্রভাত মোঃ ৯৪৩৩৩৯৩৫৫৬ Whatsapp Group:  https://chat.whatsapp.com/ AIpj98JKbloFSpeqMcpr6j Facebook Page:  https://www.facebook.com/ share...