Skip to main content

প্রণব কুমার চক্রবর্তীর গল্প


    লক্ষ্মীপুরের বিমলা 

              

    সকালেই বল্লরী ফোন করে জানালো যে , এবারের নবান্নের অনুষ্ঠানে ওরা অাসতে পারবে না ৷ 
   - সে কি বলছিস ! 
    - গতবারে গিয়ে অর্ক ভীষন অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে পড়েছিলো ৷ 
    - কেন ? বিমলা জানতে চায় ৷ 
     - কেন অাবার ৷ সে তো ও ই জানে ৷ বাড়িতে ফিরে খুব রাগারাগি করেছিলো ৷ 
     -দে লাইনটা অর্ককে ৷ অামি কথা বলবো ৷
     - মায়ের কথা শোনা মাত্রই  বল্লরী ঝাঁজিয়ে বলে - থাক ৷ ওর সাথে কথা বলে কোনও  লাভ হবে না ৷
      - কেন ? অামার তো ব্যপারটা একটু জানা দরকার ৷ 
      - তোমার জেনে কোনও লাভ নেই  ৷গোটা ব্যাপারটা ওর বাবা মা শুনে পরিস্কার জানিয়ে দিয়েছেন - তোমার এসব অাধিক্ষেতা  অার বুজরুকি  ওনারা একদম মেনে নিতে রাজি নন ৷ নিষেধ করেছেন যেতে ৷ বলেছেন কথা দিয়েছিলেন মানে এইনয় যে , তুমি ওদের ছেলেকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে গিয়ে ওই ভাবে হেনস্তুা করবে !
     - এ কী লছিস ? বিমলা কাঁদো কাঁদো গলায় বলে - অামি ওদের  কাছে , মানে অর্কের বাবা মায়ের সাথে কথা বলে এক্ষুনি ব্যাপারটা মিটিয়ে নিচ্ছি  ৷ অামার ভুলের জন্য ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি ৷        - সে অার করতে হবে না ৷ তুমি কী চাও তোমাদের জন্য অামার সংসারটা ভেঙে যাক ?অামি এর খেশি অার কিছুই  বলতে চাই  না ৷ তোমরা অামাদের জন্য অযথা অপেক্ষা করবে বলে সকালেই ফোন করে জানিয়ে দিলাম ৷ কিছু মনে কোরো না , বলেই লাইনটা কেটে দিলো ৷
    বিমলা রিসিভারটা মুখের কাছে নিয়ে বার কয়েক জোরে হ্যালো হ্যালো করে চিৎকার করে বুঝলো বল্লরী  ফোনটা ছেড়ে দিয়েছে ৷ একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বিছানায় গিয়ে বসে পড়লো ৷ ভাবে- এখন ওর কী করবে  ? বল্লরীর বাবাকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে গোটা ব্যাপারটা বলবে ? নাকি নিজেই ছেলে বিল্টুকে নিয়ে সকালের প্রথম বাসেই বসিরহাটে অর্কদের বাড়িতে চলে যাবে ! ক্ষমা চেয়ে বুঝিয় সুঝিয়ে মেয়ে অার জামাইকে নিয়ে অাসবে ?

                                ( দুই  )

     ভাবতে ভাবতেই বিমলার দু চোখ জলে ভরে ওঠে ৷
     বুঝতে পারে -কথাগুলো মোটেই  বল্লরীর মনের কথা নয় ৷ সাংসারিক শান্তি বজায় রাখার জন্যই ও সব কথা বলেছে ! বিয়ের পরে  বিগত চার বছর ধরে ওরা অাসছে ৷ অথচ , এবারে এই কথা ! হঠাৎ  কী হলো ! অর্করা তো অশিক্ষিত পরিবার নয় ! যথেষ্ট লেখাপড়া জানে ! তবু কেন এই ধরনের কথা ! বল্লরীর বিয়ে দেবার অাগে ওর শ্বশুর বিপ্রদাশ বন্দোপাধ্যায় এবং শ্বাশুরি মহামায়া দেবী অর্কের বাবা অার মায়ের সাথে এই ব্যাপারে কথা বলেই নিয়েছিলেন ৷ লক্ষ্মীপুর গ্রামে নবান্নের অনুষ্ঠানটা খুবই  জাঁক -জমক পূর্ণ ৷ সারাটা গ্রাম এই উৎসবে মেতে ওঠে ৷ ওই দিনটাতে বল্লরী অার অর্ককে যন অাসতে দেয়া হয় ৷
     অর্কের বাবা অার মা ওঁদের সেই দাবী মেনেও নিয়েছিলেন ৷ অথচ ,অাজ অাসতে দিতে রাজি নন !
     চোখের সামনে ভেসে ওঠে শ্বশুর বিপ্রদাশ বন্দোপাধ্যায়ের মুখ ৷ 
     বিছানায় বসেই ও দেয়ালে টাঙানো ছবিটার দিকে তকাতেই যেন শুনতে পায় - বিপ্রদাশ বন্দোপাধ্যায়ের গলা ! ওকে ডেকে বলছেন - বৌমা ? ডোন্ট ক্রাই ৷ এটা খুব সামান্য ব্যাপার ৷ তোমার মেয়ে জামাই অাজ এলো কী না এলো , সেটা কোনও  ব্যাপারই নয় ৷ মনে রেখো ,তুমি শুধুমাত্র বল্লরী অার বিল্টুরই মা নও ৷ তুমি সব্বার মা ৷ তোমাকে সব্বার কথাই ভাবতে হবে ৷ ওরা ওদের কথা খেলাপ করতে পারে , কিন্তু তুমি তোমার কর্তব্যে অটল থেকো ৷ অামি সেটাই দেখতে চাই  ৷ 
      হাজার হোক মেয়ে জামাই বলে কথা ! মনের ভেতরের দৃঢ়তা হঠাৎই কেমন যেন শীথিল হয়ে উঠেছিলো ৷ মাতৃস্বত্তা ওকে ভীষন ভাবে নাড়া দেয়া শুরু করেছিলো ৷ সত্যিই  যদি ওর জন্য বল্লরীর সংসারটা ভেঙে যায় , তাহলে মা হিসবে সেটা ও দেখবে কিভাবে ? মিটিয়ে নেয়াটাই ভালো ৷
     বিমলা একবার ভেবেছিলো স্বামীকে ডেকে বলবে - যাও ৷ তুমি শান্ত স্বভাবের মানুষ ৷ তোমাকে দেখলে  ওনারা বেশি কিছু বলতে পারবে না ৷ গিয়ে ওদের বুঝিয়ে নিয়ে এসো  ৷ কিন্তু , পরমুহূর্তেই  বিমলা ওর শ্বশুর অার শ্বাশুরির মান সম্মানের কথা ভেবে ঠিক করে - নাহ্ ৷ বলবে না ৷ অন্তত অাজ তো মোটেই  নয় ৷কারন এই দিনটার সকথে গ্রামের অনেকেরই  মান সম্মান জড়িয়ে রয়েছে ৷
     বিমলা কোনও মতেই গ্রামের মান সম্মাল ভূলুণ্ঠিত হতে দেবে না ৷

                                 ( তিন )

      লক্ষ্মীপুর গ্রামটা মূলত দক্ষিন চব্বিশ পরগনার কোল ঘেঁসা উত্তর চব্বিশ পরগনার বসিরহাট মহকুমার একটি কৃষি এবং মেছোঘেরি অধ্যুষিত অঞ্চল ৷ 
      মিনাখাঁ থানার দক্ষিনে বিদ্যাধরী নদির পাশে এই গ্রামটি বাদ দিলে চারপাশের গ্রামগুলোতে - হাকিবপুর , রাঁকিপুর , নিয়ামতপুর , বেরমজুর , ইত্যাদিতে মুসলীমদের অাধিপত্যিই বেশি ৷ গ্রামের বেশিরভাগ লোকই হয় কৃষিজীবী - ধনী মানুষের জমিতে চাষ-অাবাদ করে , না হয় বাবুদের মাছের ঘেরিতে কাজ করে জীবন নির্বাহ করে ৷ লেখা পড়ায় খুব একটা উৎসাহী নয় ৷ ওদের ধারনা - লেখাপড়াটা অর্থ-কড়ি সম্পন্ন  লোকদের একটা শখ ৷ সমাজে বাবুগিরি দেখাবার একটা কায়দা মাত্র ৷
      বিপ্রদাশ বন্দোপাধ্যায়ের বাবা ব্রহ্মজ্যোতি
বিদ্যাবিনোদ গ্রামে একটা সংস্কৃতের টোল খুলেছিলেন ৷ সেটা দেখেই  হাজি নুরুদ্দিন মুনশীরো ইচ্ছে হয়েছিলো গ্রামের মসজিদে একটা মক্তবা খোলার ৷ ব্যাপারটা রেশারেশির পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে এই চিন্তা করে ব্রহ্মজ্যোতি বিদ্যাবিনোদ হাজি নুরুদ্দিন মুনশীকে বলেছিলেন - শোনো  ভায়া ? গ্রামের ছেলেদের ওই সংস্কৃত অার অারবি-ঊর্দু শিখে কোন কামে লাগবে ? লেখা-পড়া যদি শিকতেই হয় , ইংরেজী শিখতেইহবে ৷ নাহলে গ্রামের ,ছেলেপুলেরা অফিস-কাছাড়ীতে চাকবীইপাবে না ৷
      দু জনে উদ্যোগী হয়ে লক্ষ্মীপুর গ্রামে প্রায় বিঘা পাঁচেক জমির উপরে প্রথমে একটা প্রাথমিক ইস্কুল তৈরি করেছিলেন ৷ হাজি বদরুদ্দোজাকে পধান শিক্ষক করে বিপ্রদাশ বন্দোপাধ্যায়কে করেছিলেন ইস্কুল কমিটির প্রেসিডেন্ট ৷
      সেই  ইস্কুল এখন জুনিয়ার হাই ইস্কুলে পরিনত হয়েছে ৷ আশ-পাশ গ্রামের ছেলেরা সব পড়তে অাসে ৷ বিপ্রদাশ বন্দোপাধ্যায় এবং হাজি বদরুদ্দোজা সাহেবের ইচ্ছে যে কোনও মূল্যেই ওই জুনিয়ার হাই স্কুলকে একদিন হাই ইস্কুলে পরিনত করবেন ৷
     ইস্কুলের সামনের বিরাট মাঠটাতে ওই তল্লাটের মুসলীমরা মহরমের দিন তাজিয়া নিয়ে এসে  লাঠি-সড়কি খেলতো ৷ সব সম্প্রদায়ের মানুষ মাঠে এসে হাজির হতো তাজিয়া এবং লাঠি খেলা দেখার জন্য ৷ হিন্দুরাও  রথ, গাজন , শিব , ইত্যাদির মেলা বসাতো ৷ হাজি বদরুদ্দোজা সাহেব একদিন নিজেই উপযাজক হয়ে বিমলার শ্বশুর বিপ্রদাশ বন্দোপাধ্যায়কে বলেছিলেন - অামি যতদূর অাপনাদের শিব পূজোয় বট গাছ লাগে ,তাইনা ? কিন্তু , এই ইস্কুলের মাঠে তো বট গাছ নেই  ৷ অসুবিধা হয় না ? 
     বিপ্রদাশ বন্দোপাধ্যায় কোনও উত্তর না দিয়ে চুপ করেছিলেন ৷
    - বুঝেছি সাহেব ৷ বদরুদ্দোজা মাস্টার হেসে বলেছিলেন - মৌনতাই সম্মতির লক্ষ্যন ৷ নিজেই উদ্যোগী হয়ে ইস্কুলের মাঠের একদম দক্ষিন প্রান্তে কালুয়া দিঘীর পাড়ে একটা বট গাছের চারা এনে লাগিয়ে বলেছিলেন - যতদিন এইগাছটা বেঁচে থাকবে ততদিন লক্ষ্মীপুরের বিপ্রদাশ বন্দোপাধ্যায় এবং বদরুদ্দোজা  মাস্টারও বেঁচে থাকবে ৷ 
      কালুয়া দিঘীর পাড়ের সেই বট গাছটা এখন শাখা-প্রশাখা অার ঝুড়িতে বিরাট অাকার ধারন করেছে ৷ গ্রীষ্মের তপ্ত নিদাঘ অার দাবদাহের হাত থেকে বাঁচতে অনেকেই দুপুর বেলায় ওইবট গাছের ছায়ায় শুয়ে বসে বিশ্রাম নেয় ! মনে হয় যেন বিপ্রদাশ বন্দোপাধ্যায় অার বদরুদ্দোজা মাস্টার ছাতা হয়ে লক্ষ্মীপুর গ্রামটাকে রোদ ঝড় জল এবং বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচিয়ে রেখেছে !

                                  (চার )

       সাল এবং মাসটা এখনো বিমলার মনে অাছে ৷ ১৯৯২ সালের ডিসেম্বর মাস ! শীতটা সবে বেশ জাঁকিয়ে পড়া শুরু করেছে ৷
       বিমলা সেই সময় বছর চারেক হলো লক্ষ্মীপুরে বৌ হয়ে এসেছে ৷
       বিপ্রদাশ বন্দোপাধ্যায় সকাল সকাল বাজার করে এসে বাড়িত বসে টিভি দেখতে ব্যাস্ত ৷ সারা ভারত জুড়ে তোলপাড় করা খবর ! এক দল লোক অযোধ্যার বাবরি মসজিদ ভাঙার কাজ শুরু করেছে ! সেখানে নাকি রাম মন্দির বানানো হবে !
        সাংঘাতিক ব্যাপার !
        ঘটনার রেশ হিসেবে ভারতের বিভিন্ন্ স্থানে সাম্প্রোদায়িক গন্ডগোল শুরু হয়ে গেছে ! উভয় সম্প্রোদায়ের মানুষ একে অপরের উপরে খড়্গ হস্ত হয়ে খেঁপে উঠেছে !
        চারপাশে একটা অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি !
        সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকার উভয়েই রেড-এ্যালার্ট জারি করেছে ! পুলিশ টহল শুরু হয়ে গেছে ৷ প্রশাসনের তরফ থেকে মাইকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য প্রচর করা শুরু করেছে ৷
        বিপ্রদাশ বন্দোপাধ্যায় ঘরে বসে টিফিন খাচ্ছিলেন ৷ হঠাৎ , ছেলে ব্রজকে ডেকে বললেন - দ্যাখ তো বদরুদ্দোজা মাস্টার বাড়িতে অাছে কিনা ? থাকলে , ডেকে অানতো ৷ দেশের অবস্থা মোটেই  ভালো না ৷ অামাদের  এখনই কিছু ভাবা প্রয়োজন ৷
       ব্রজ বরুতে গিয়েই দেখে বদরুদ্দোজা মাস্টার অারোও  কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে এসে হাজির ৷ হন্তদন্ত হয়ে বলে ওঠেন - শুনেছেন কর্তা ? দেশের হাল ! অামাদের এই সব এলাকা তো গন্ড-মূর্খের বাস ৷ কেউ এই সুযোগে এদিকে না গন্ডগোল লাগাবার চেষ্টা করে ! বুঝলেন কর্তা  অামি ঠিক করেছি অামরা সবাই মিলে এই লক্ষ্মীপুরে কোনও গন্ডগোল পাকাতে দেবো না ৷ কিছুদন সবাই  মিলে পালা করে পাহারা দেবো ৷
       - এর থেকে উত্তম প্রস্তাব অার কী হতে পারে ৷ বিপ্রদাশ বাবু বলেছিলেন - এমনটাই তো হওয়া দরকার ৷ চলুন হাজি সহেব অামি এখন থেকেই তৈরি ৷
       অাতংক এবং ভীতির মধ্যেই  দিন চারেক কাটার পরেই হঠাৎ কিভাবে যেন একটা গুজব রটিয়ে দেয়া হলো - লক্ষ্মীপুরের হিন্দুরা বিপ্রদাশ বন্দোপাধ্যায়ের  নেতৃত্বে ইস্কুলের মাঠে যেখানে মহরমের লাঠি খেলা এতদিন ধরে হয়ে অাসছে , সেটা দখল করছে ৷ তুলসির বেদী  এবং শিবের মন্দির করবে বলে ইঁট বালি সিমেন্ট সব ফেলেছে ৷
       ব্যাস ! যাবে কোথায় ?
        বিকেলের দিকে অাশ-পাশ এলাকার সব মুসলমানরা যেমন লাঠি-সড়কি নিয়ে চড়াও  করলো লক্ষ্মীপুরে ৷ হিন্দুরাও পিছিয়ে ছিলো না ৷
তারাও  লক্ষ্মীপুরের তুলসি বেদী এবং শিব মন্দির তৈরর কাজ ত্বরান্নিত করার জন্য সেখানে এসে দাঁড়ালো ৷
       একদিকে মুসলীমদের না রাহে তগদির ধ্বনি ! অন্যদিকে হিন্দুদের ঘন ঘন জয় শ্রী রাম অাওয়াজ !
       সংঘর্ষ বধে অার কী ! 
        উভয় সম্প্রোদায়ের মহিলারা ভয়ে বাড়িতে বসে নিজেদের ইস্ট দেবতাকে স্মরণ করা শুরু করেছিলো ৷ ঠিক সেই  সময়েই  বদরুদ্দোজা মাস্টার এবং বিমলার শ্বশুর লক্ষ্মীপুরের উভয় সম্প্রোদায়ের সমস্ত ছেলেদের নিয়ে রুখে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন - এইগ্রামে ওসব ধর্মীয় জিগির তুলে গন্ডগোল পাকাতে দেবো না ৷                 বিপ্রদাশ বন্দোপাধ্যায় বেপাড়ার  এসে জড়ো হওয়া হিন্দুদের দ্দেশ্যে বলেছিলেন - তুলসী বেদী অার মন্দির যদি করার প্রয়োজন হয় , তাহলে সেখানে অাপনাদের অাসতে হবে না ৷ অামরা লক্ষ্মীপুরের লোকরাই  তৈরি করতে পারবো ৷ বদরুদ্দোজা মাস্টারও তেমনি হাড়োয়া অার হাসনাবাদের চৌভাগার মুসলমানদের রীতিমতো দাবড়িয়ে বলেছিলেন - এই লক্ষ্মীপুর গ্রামে হিন্দু এবং মুসলমান কেউই ধর্মীয় খতরেতে নেই  ৷ অামরা কিন্তু এখানে কারোও কোনও ধরনের সাম্প্রদায়িক ঝামলা বরদস্ত করবো না ৷ হিন্দুরা কেউ  মহরমের মাঠ দখল করার ইছে প্রকাশ করেনি ৷ উল্টো অামরা এই লক্ষ্মীপুরের মুসলমানরাই উদ্যোগী হয়ে ওই কালুয়া দীঘির পাড়ে ওদের তুলসী বেদী এবং মন্দির তৈরি করে দেবো বলেছি ৷
        যৌথভাবে সেদিন রুখে দাঁড়াতেই কেউ  অার গন্ডগোল পাকাতে সাহস পায়নি ৷ ফিরে গিয়েছিলো ৷ তবু , মাস দুয়েক সবাই গ্রামটা পাহারা দিয়ে রেখেছিলো শুধুমাত্র উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্প্রীতির বন্ধনটাকে দৃঢ় রাখার জন্য ৷ পরে একটা রবিবারে গ্রামের সব্বাইকে নিয়ে বসে বিপ্রদাশ বন্দোপাধ্যায় এবং হাজি বদরুদ্দোজা মাস্টার  ঠিক করেন - গ্রামের সমস্ত মানুষকে নিয়ে একটা দিন সম্প্রীতির উৎসব হিসেবে পালন করবেন ৷
       কেউ  বলেছিলো দুর্গা পূজোর বিজয়ার পরের দিন ৷ কেউ  বলেছিলো ঈদের পরের রবি বারে ৷ কেউ  অাবার বলেছিলো - দুর্গা পূজো এবং ঈদের সাথে ধর্মের গন্ধ রয়েছে , সেই  কারনে ওই দুটো দিনে না করে অন্য একটা অালাদা দিন ঠিক করতে হবে- যার সাথে ধর্মের কোনও সম্পর্ক থাকবে না ৷
         সেটা কোন দিন হতে পারে ?
         সেই  ব্যাপারে বিস্তর অালোচনা হয়েছিলো ৷ বদরুদ্দোজা মাস্টার বলেছিলেন রাখীবন্ধন উৎসবটাকে পালন করলেই মনে হয় ভালো হবে ৷ কবিগুরু হিন্দু-মুসলীমের মধ্যে ঐক্যবন্ধন তৈরি করার জন্য বঙ্গ-ভঙ্গের বিরোধীতা করে ওই  উৎসবের সূচনা করেছিলেন ৷ অামরা লক্ষ্মীপুরের মাঠে ওই লক্ষ্যেই রাখী উৎসবটা অাবার চালু করবো ৷
         বিপ্রদাশ বন্দোপাধ্যায় হাজি সাহেবের ওই প্রস্তাবের বিরোধীতা করে বলেছিলেন - মাস্টার ? লক্ষ্মীপুর  একটা গন্ড গ্রাম ৷ এখানকার লোকজন লেখা-পড়া জানে না ৷ অাপনি মোটেই বুঝাতে পারবেন না - হোয়াট ইজ বঙ্গ ভঙ্গ ? লোকজন অাপনার কথার হয়তো অাজ বিরোধীতা করবে না ৷ কিন্তু , মন থেকে রাখীর ব্যাপারটা মেনে নিতে পারবে না ৷ চব্বিশ  ঘন্টা ওইব্যাপারটা নিয়েই ঘোঁটপাকাবে ৷ শহরের লোক হলে কর্ম ব্যস্ততায় ওইসব ছোট-খাটো বিষয় নিয়ে চিন্তা করার সময়ই পাবে না ৷ তাই  অামি বলছিলাম - নবান্নের দিনটাকেই করলে মনে হয় ঠিক হবে ৷
         কেন ? দু চারজন প্রত্যুত্তরে বলেছিলো - নবান্নও তো একটা হিন্দুদের উৎসব ! সেই ধর্মের ব্যাপারটাইতো এসে যাবে ?
         - মোটেই নয়  ৷ বিপ্রদাশ বাবু বেশ গম্ভীর হয়ে বলেছিলেন - কেউ  কিছু হাইজ্যাক করে নিজের বাড়িতে নিয়ে গেলেই কী সেটা তার নিজের হয়ে যায় ?
        ব্যাপারটা বোধগম্য না হওয়ায় সবাই ওর মুখের দিকে অবাক হয়ে ভাবতে থাকে - বিপ্রদাশ বন্দোপাধ্যায় এ কী বলছেন ?
        - অবাক হওয়ার কিছু নেই ৷ বিপ্রদাশ বাবু হেসে বলেন - নবান্নটা মূলত কৃষি প্রধান উৎসব ৷ অর্থাৎ , যে কৃষক নবান্ন তারইউৎসব ৷ কৃষক তো কোনও ধর্মের বিচারে হয় না ৷ হিন্দুরাও হতে পারে ৷ মুসলসানরাও হতে পারে ৷ তাহলে "নোতুন ধান্যে হবে নবান্ন" কেন শুধুমাত্র হিন্দুদের উৎসব বলে বিবেচিত হবে ? তাছাড়া , অামাদের এই অঞ্চলটা হলো গিয়ে কৃষিজীবী  অধ্যুসিত  অঞ্চল ৷ এই বিদ্যাধরী নদির দু পাড় জুরেই এক সময় গড়ে উঠেছিলো বিখ্যাত কৃষক অান্দোলন - তেভাগা অান্দোলন ৷ পাশের গ্রাম বেরমজুরে এখনও  সেই  অান্দোলনের স্মৃতি নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে শহীদ বেদী ৷ সেই  অান্দোলনে কোনও  জাত-পাত কিংবা ধর্মের ব্যাপার ছিল না ৷ অামার মতে নবান্ন পালন করে অামরা সবাইকে দেখাতে চাই  - মানুষের পেটের লড়াইয়ের কাছে কোনও  ধর্মের রাজনীতিকে লক্ষ্মীপুর গ্রামের লোকজন পাত্তা দেবে না ৷ 
        বহু অালোচনা করেই ঠিক হয়েছিলো - প্রতিবছর নবান্নের  দিনে সকাল থেকে ইস্কুলের মাঠে অনুষ্ঠানটা হবে ৷ চলবে সন্ধ্যে পর্যন্ত ৷ খাওয়া-দাওয়া , গান-বাজনা , ইত্যাদি সবই করবে গ্রামের ছেলে মেয়েরা ৷ লক্ষ্মীপুর গ্রামের ছেলেএবং মেয়েরা কর্মসূত্রে এবং বৈবাহিক সূত্রে যে যেখানেই থাকুক , ওই দিন সে ছুটি নিয় ওই নবান্নের  অনুষ্ঠানে হাজির থাকবেই৷
       যতদিন বিপ্রদাশ বন্দোপাধ্যায় এবং ওর স্ত্রী মহামায়া দেবী অার হাজি বদরুদ্দোজা মাস্টার  এবং তার বিবি মেহেরুন্নিসা বেগম জীবিত  ছিলেন , ওরাই  উৎসবের মাথা হয়ে কাজ করে গেছেন ৷ ওদের অবর্তমানে গ্রামবাসীরা এখন বিমলা অার হাজি বদরুদ্দোজা সাহেবের মেয়ে রওশন বেগমের উপরে দায়িত্ব বর্তিয়েছে ৷
       বিপ্রদাশ বাবু মারা যাবার অাগে বিমলাকে বারবার করে স্মরণ করিয়ে দিয়ে গিয়েছেন যে , কোনও  অবস্থাতেই এই সম্প্রীতির উৎসব যেন বন্দ না হয় ৷
      বল্লরী বেশ ছোটবেলা থেকেই  লক্ষ্মীপুরের এই উৎসবের সাথে জড়িয়ে থেকেছে ৷ নিজে তো নাচ -গান গাইতোই , অন্য ছেলে-মেয়েদের নিয়ে নাটক ,গান-বাজনা করাতো ৷ বিয়ের পরেও তিন বছর অর্ককে  নিয়ে এসেছে ৷ নাচ-গান করেছে ৷
       সেই নবান্নের উৎসবে বল্লরী অার অর্ক এবারে অাসবে না !

                                         ( পাঁচ )

      প্রত্যেক দিন বিমলা চা করে নিজেই এনে ব্রজেশ্বরকে ঘুম থেকে ডেকে তোলে ৷ কিন্তু , চা হাতে অাজ অাসতেই দেখলো ব্রজেশ্বর বিছানায় নেই ৷ উঠে গেছে ৷
       কোথায় গেলো ? বিমলা খানিকটা চিন্তাগ্রস্ত অবস্থায় এদিকে সেদিকে তাকায় ৷ নাহ্ ৷ ঝুল বারান্দাতেওতো নেই  !
       বিমলা যখন চিন্পাতা এবং ভাবনার ঘূর্ণাবর্তে বিধ্বস্ত ,ঠিক সেই সময় পাশের ঘরে অালমারির পাল্লা বন্দ করার অাওয়াজে গিয়ে দেখে ব্রজেশ্বর স্নান সেরে ধুতি পাঞ্জাবি পরে একদম রেডি ৷ 
      - কী ব্যাপার ! বিমলা জিঞ্জেস করে - সকাল সকাল স্নান সেরে একদম রেডি হয়ে কোথায় চললে ?
       - ইস্কুলের মাঠে ৷
       - ইস্কুলের মাঠে ! তুমি এত সকালে ? কী ব্যাপার সত্যি বলো তো ? 
        বিমলা মনে মনে ভাবে যে লোককে সে বিগত তিরিশ বছর সকালে উঠতে দেখেনি , সে অাজ সকালে উঠেছে !বলছে কাজ অাছে ! মনে হয় বল্লরীর ফোনের ব্যাপারটা ঘাপটি মেরে শুনেছে ৷ ওর অার বলার জন্য অপেক্ষা না করে নিজেই  উদ্যোগী হয়েছে অর্কদের বাড়িতে  যাবার জন্য ৷ অাসলে বল্লরীকে ব্রজেশ্বর দারুন ভালবাসে ৷ ও অাসবে না শুনেই  মনটা খারাপ হয়ে গেছে ৷
        - কী গো বললে না তো সত্যি  কোথায় যাচ্ছো ?
        - তুমি যা ভাবছো ,সেখানেই ৷ ব্রজেশ্বর বলে - বুঝতে পারছো মেয়েটার মনের অবস্থাটা কী হয়েছে ? যাই  একবার চেষ্টা করে দেখি ৷ কেন ওনারা এইব্যাপারে অাপত্তি করছেন ! অর্কের যদি ইস্কুলের মাঠে যেতে অাপত্তি থাকে , যাবে না ৷ বাড়িতেই থাকবে ৷ অামিই না হয় ওকে অার বল্লরীকে সঙ্গ দেবো ৷
        - যাও  ৷ বিমলা গম্তীর ভাবে বলে - দেখো , বাবার সম্মানটা যেন ধুলোয় নষ্ট কোরো না ৷ মনে রেখো , অর্কের বাবা মায়ের সাথে তোমার বাবা মায়ের এই অনুষ্ঠানে অাসার ব্যপারে চুক্তি হয়েছিলো ৷ সেটা ওরা ভঙ্গ করেন কিভাবে ? এর মানে তো ওনাদের স্বর্গত  অাত্মাকে অপমান করা ! শিক্ষিত ভদ্রলোকরা কখনও কথার খেলাপ করে না ৷ তুমি মেনে এসব মেনে নিলেও অামি কিন্তু মন থেকে ওদের এই অভদ্র বাজ ব্যবহারকে মেনে নিতে পারছি ন ৷ তাই  কিছুই  বলিনি ৷
       - সে তো বুঝেছি বলেই অামি উঠে তৈরি হয়ে নিয়েছ ৷ব্রজেশ্বর চায়ের কাপটা হাতে নিয়ে এক চুমুকে গলাধঃকরণ করে ঠাকুরের নাম স্মরণ করে বেরিয়ে পড়েছিলো ৷

                                     ( ছয় )

        ব্রজেশ্বর বেরিয়ে যেতেই বিমলা ফোনে রমেশ অার নওশাদের সাথে অনুষ্ঠানের ব্যাপারে এক প্রস্থ অালোচনা করে নেয় ৷ বলে - রান্নার ঠাকুরকে দিয়ে সকালের টিফনটা বানাবার কাজটা শুরু করে দিতে ৷৷ইব্রাহীম অার গোবিন্দ যেন বাজারে চলে যায় মাংস অানতে ৷ একটু যেন দেখে নেয় ৷ গত বছর নাকি মাংসটা ভাল দেয়নি ৷ কম দামতো নেয় না ! কেন মাংস খারাপ দেবে ? রাখহরি মুদির দোকানে ফর্দটা দেয়া অাছে ৷  অামি বিল্টুর হাত দিয়ে সব টাকা পাঠিয়ে দিচ্ছি ৷ তোমরা মুদির দোকান থেকে সব মাল অার বাজারের থেকে ভালো মাছ অানিয়ে নিও  ৷ কেষ্ট ময়রাকে বলা অাছে - ঠিক সময়ে মিষ্টি পাঠিয়ে দেবে ৷
        সব্বাইকে সমস্ত কিছু বুঝিয়ে বলে বিমলা অালমারি থেকে টাকা-পয়সা এবং চেক বইটা বের করে ৷ বিল্টুকে ডেকে সব ওর হাতে বুঝিয়ে দিয়ে বলে -যাহ্ ৷ মাঠে গিয়ে রওশন চাচীর হাতে এগুলো দিয়ে বলবি যে অামার অাজ যেতে একটু দেরি  হবে ৷ স্নান করে বাড়ির পূজোটা সেরে অামি দশটা সাড়ে দশটার মধ্যেই যাবো ৷ অামার জন্য যেন কোনও কাজ ফেলে না রাখে ৷
         বিল্টু বেরিয়ে যেতেই  বিমলা স্নান সেরে ঘরে এসে অালমারিটা খুলে ভাবে কোন শাড়িটা পরবে ? ভেতরের সব থাকে থাকে নানান ধরনের নানা রঙের শাড়ি সাজানো ৷ ওসবের ভেতর থেকে একটা লাল পাড়ের তসরের শাড়িটা টেনে বের করে ৷ শাড়িটা ছিলো ওর শ্বাশুরির ৷ যখন প্রথম লক্ষ্মীপুরে নবান্ন উৎসবটা চালু হয়েছিলো বিপ্রদাশ বন্দোপাধ্যায় কোলকাতার বড়বাজার থেকে নিজেই পছন্দ করে কিন এনে দিয়ে বলেছিলেন ওটা পরে সব কাজ করতে ৷ মহমায়া দেবী  ওই শাড়িটা উত্তরসুরি  হিসেবে ওকে দিয়ে গিয়েছে ৷ এই ক"বছর বিমলা ওই শাড়িটা পরেই উৎসবের কাজ করেছে ৷ অাজোও ওটাই  সে পরবে ৷
        বিমলা শাড়িটা বের করে পরে ৷ অাস্তে অাস্তে  ড্রেসিং অায়নাটার সামনে এগিয়ে গিয়ে দাঁড়ায় ৷ কপালে সিঁদুরের টিপটা পরে নিজেকে বার কয়েক ঘুরে ফিরে দেখে একটা লম্বা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে ৷ তারপরে এগিয়ে গিয়ে দাঁড়ায় শ্বশুর অার শ্বাশুরির ছবির সামনে ৷ নমস্কার জানিয়ে বলে - অামি সত্যিই ব্যার্থ ৷ অাপনাদের সৃষ্টির  উপযুক্ত মর্যাদা রাখতে পারলাম না ৷ নিজের মেয়ে-জামাইমেয়ে-জামাইমেয়ে-জামাইমেয়ে-জামাইকেই এই নবান্নের সঠিক মূল্যায়ন বুঝাতে পারিনি ৷ অাজ ওরা অাসবে না বলেছে ৷ গ্রামের সবাই যখন জিঞ্জেস করবে , অামি কী জবাব দেবো ? এত কষ্ট করে যে একটা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাতাবরন গড়ে তোলা হয়েছে , সেটা তো নষ্ট হয়ে যাবে ! শেয পর্যন্ত সুযোগ সন্ধানীরাই মনে হচ্ছে জিতে যাবে !
সেই  দৃশ্য অামি দেখবো কিভাবে ? ঘরে বসে মুখ বুঁজে সহ্য করতে পারবো না ৷ অাপনারা অামাকে বলে দিন - এই  মুহূর্তে  অামার কী করনীয় ?
        পাগলের মতো নিজের মনে কথা বলতে বলতে বিমলা ডুকরে কেঁদে ওঠে ৷ 
        মনে হলো বিপ্রদাশ বন্দোপাধ্যায় এবং মহামায়া দেবী ফটো থেকে বেরিয়ে এসে , ওর চোখের জল মুছিয়ে দিয়ে বলেন - যাও  ৷ ঠাকুর ঘরে গিয়ে মন দিয় পূজোটা সারো ৷ প্রার্থনা করো লক্ষ্মীপুরের সব মানুষের মঙ্গলের জন্য ৷ দেখবে সমস্ত ঝামেলা মিটে যাবে ৷ শুভ শক্তির কাছে কখনোই অশুভ শক্তি জিততে পারবে না ৷

                                  ( সাত )

       বেলা বারোটা বাজলো ৷
        ইস্কুলের মাঠে সবাই বলাবলি শুরু করেছে - এখনও  কেন বিমলা কাকিমা এসে পৌঁছালো না ! এতো তো দেরি  সে কোনও দিন করে না !
        - কী রে ? ইদ্রিশ মোল্লা এসে বিল্টুকে জিঞ্জেস করে - বৌদি এখনও কেন অাসেননি ? কী বলেছে ? শরীরটা খারাপ হয়নি তো ? যাহ্ না ৷ একবার গিয়ে দেখে অায় ৷
        বিল্টু তখন মাঠে অন্যদের সাথে খেলায় ব্যাস্ত ৷ বলে - কাকা ? চিন্তা করবেন না ৷ মা বাড়ির পূজোটা সেরেই  এসে পড়বে ৷ হয়ত দিদি জামাইবাবুরা এসে হাজির হয়েছে ৷ মনে হয় ওদের সঙ্গে নিয়েই  অাসবে ৷
       - নাহ্ ৷ শিবতোষ ভট্টাচার্য , সাগিনা মন্ডল , রোহিলা বিবিরা এক রকম জোর করেই বিল্টুকে সঙ্গে নিয়ে ওদের বাড়িতে গিয়ে দেখলো - সদর দরজাটা ভেতর থেকে বন্দ ৷ ডাকাডাকি করলো , কিন্তু কোনও সাড়া শব্দ নেই  ৷
         ওরা যখন নিজেরা ব্যাপরটা নিয়ে অালোচনায় ব্যাস্ত , ঠিক সেই  সময়েই  ফোনটা বিকট চিৎকার করা শুরু করলো ! 
       বেজেই চলেছে , অথচ কেউ  ধরছে না 
       - কাকা ? বিল্টু বেশ চিন্তিত  হয়েই  বলে - নির্ঘাৎ মায়ের কিছু একটা হয়েছে ! নাহলে নিশ্চিত ফোনটা  ধরতো ! তোমরা দাঁড়াও ৷অামি প্রাচীল টপকে ভেতরে গিয়ে দেখছি ৷
        - হ্যাঁ ৷ তাই কর ৷ শিবতোষ ভট্টাচার্য অার সাগিনা মন্ডল বিল্টুকে ঠেলে তুলে প্রাচীরে উঠতে সাহায্য করে ৷
        ভেতরে ঢুকতেই ফোনটা থেমে গেলো ৷
সদরের দরজাটা খুলে দিয়ে বিল্টু মা মা বলে বার কয়েক ডেকে বাড়ির ঠাকুর ঘরের দিকে এগোতেই দেখে - মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় বিমলা পড়ে অাছে ! হাতে বাড়ির ধারালো কাস্তেটা ধরা !
        - জেঠু ? বিল্টু কান্না ভেজা গলায় বলে ওঠে - দেখুন মা কী করেছে ! পুলিশকে খবর দিতে হবে ৷
        শিবতোষ ভট্টাচার্য এবং সাগিনা মন্ডল ছূটে গিয়ে দেখে - ওর রক্তাক্ত শরীরের পাশেই  একটা সাদা কাগজের টুকরোতে গোটা গোটা অক্ষরে কী সব যন লেখা অাছে ! কাগজটাও রক্তে ভিজে গেছে ৷ 
       - বিল্টু ? শিবতোষ ভট্টাচার্য জিঞ্জেস করেন - দ্যাখ তো লেখাটা কী তোর মায়ের ?
        বিল্টু কিছু বলতে যাচ্ছিলো , কিন্তু সেই মুহূর্তেই  ফোনটা অাবার বেজে উঠলো  ৷ বিল্টু ছূটে গিয়ে ফোনটা ধরেই  বুঝলো বাবা ৷ দিদির বাড়ি থেকে বলছে - সবকিছু মিটে গেছে ৷ ওরা একটু বাদেই  রওনা দিচ্ছে ৷ বলছে মাকে একটু  ফোনটা দে অর্কের বাবা অার মায়ের সাথে কথা বলুক ৷
       - বাবা ? মা এখন কথা বলতে পারবে না ৷ ওকে নিয়ে এক্ষুনি অামাদের হাসপাতালে যেতে হবে ৷ অামি ফোনটা রাখছি , বলে হাঁউমাউ করে কেঁদে উঠলো ৷ 
       সাগিনা চাচা গয়ে বিল্টুকে ধরতেই সে ফোনের রিসিভারটা ছেড়ে দেয় ৷ ভট্টা৷চার্য জেঠু
লোকজনকে ডেকে বিমলার রক্তাক্ত দেহটাকে একটা ম্যাটাডোরে তুলে বললেন থানা হয়ে যেতে ৷ লেখা কগজের টুকরো তুলে নিয়ে দেখে লেখা অাছে "যে কোনও মূল্যে লক্ষ্মীপুরের এই সাম্প্রোদায়িক সম্প্রীতির উৎসব নবান্নকে বজায় রাখতেই হবে ৷ "
        ওরা বেরিয়ে যাওয়ার পরেও দোদুল্যমান রিসিভারটা থেক তখনো ব্রজেশ্বরের গলা ভেসে অাসছে - হ্যাঁ রে বিল্টু ? বলছিস না কেন তোর মায়ের কী হয়েছে ? কেন হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে ?

        হাসপাতালের মাঠে যেন সারাটা লক্ষ্মীপুর গিয়ে হাজির হয়েছে ৷ সবাই জাতি ধর্মের ভেদাভেদ ভূলে ভগবানের কাছে প্রার্থনা করে চলেছে - ওকে বিপন্মুক্ত করে দাও  ৷ লক্ষ্মীপুরে ফিরিয়ে নিয়ে  যাবে ৷

ঠিকানা :
প্রণব কুমার চক্রবর্তী 
৩৭/১ স্বামী শিবানন্দ রোড , চৌধুরীপাড়া ,
বারাসাত , কোলকাতা - ৭০০ ১২৪
মো: নং - ৯৪৩৩০ ২৮৬৮৫ এবং
               ৮৭৭৭৬ ৮৫৯৯২ ৷

        

       
     

       

        
       

       

                                   
  

      
      
      


      

Comments

বিধিবদ্ধ স্বীকার্য :

লেখার বক্তব্যের দায়িত্ব লেখকের, পত্রিকার নয়। আমরা বহু মতের প্রকাশক মাত্র।

মতামত/লেখা এখানে জমা দিন

Name

Email *

Message *

সাম্প্রতিক বাছাই

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯৩তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩২ নভেম্বর ২০২৫

সূচিপত্র বস্তু, চেতনা এবং কবি ।। সজল চক্রবর্তী দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত ।। রণেশ রায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট ও সন্নিহিত অঞ্চলের কথ্য শব্দ ।। অরবিন্দ পুরকাইত চাঁদে জীবন ।। শমীক সমাদ্দার অসমাপ্তি ।। মহুয়া হুই গ্যালাক্সির শব্দে ।। জাসমিনা খাতুন তিনটি কবিতা ।। দিবাকর সেন অপূর্ণতার শেষ অধ্যায় ।। সুপ্রিয় সাহা হাফ ডজন ছড়া ।। স্বপনকুমার পাহাড়ী স্বাপ্নিক অমলের ঘুৃম ।। সঞ্জয় দেওয়ান দুটি কবিতা ।। সৌমিত্র উপাধ্যায় পথ চলতি ✍️পার্থ প্রতিম দাস হেমন্তের বিষাদ ছুঁয়ে ।। শক্তিপদ পাঠক রাই আর বাবা ।। অদিতি চ্যাটার্জি স্থিতিশীল ।। রঞ্জিত মুখোপাধ্যায় হৃদয়ের শূন্য কোড ।। লিপিকা পিঙ্কি দে অমানিশা ।। সৌভিক মুখার্জী দৃষ্টিগত ।। শামীম নওরোজ জ্যান্ত ভূতের গপ্পো ।। পার্থ সারথি চট্টোপাধ্যায় ধুতরা ফুলের ঘ্রাণ ।। মজনু মিয়া তারা খসার আলোয় ।। তীর্থঙ্কর সুমিত উত্তরণে অন্তরায় ।। সমীর কুমার দত্ত প্রেম মুদ্রা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ধারা ।। লালন চাঁদ অন্যের ব্যথায় ব্যথি ।। জগদীশ মণ্ডল গর্ভ ।। শাশ্বত বোস ভ্রমণ বিষয়ক স্মৃতিকথা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত শাপে বর ।। সাইফুল ইসলাম রবিবার ।। সঙ্ঘমিত্রা দাস দুটি ...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬

  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠালে  অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে হলে ভালো। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # ...

রেজাল্ট ।। সৈকত মাজী

রেজাল্ট সৈকত মাজী শুভ্রাংশু বিছানতে শুয়ে শুয়ে বিরক্ত হয়ে উঠল। মনে মনে নিজের শরীরটাকে আচ্ছা করে শুনিয়ে দিলো দু- চারটে কথা, দেবে নাই বা কেন, কয়দিন ধরে এতো কাঠ খড় পুড়িয়ে সব বন্ধুরা মিলে রথটা বানালো, কত কি প্ল্যান করলো, আর এই শরীরটার জন্যই তো সব ভেস্তে গেলো। মনে মনে ভাবলো একটা যা হোক শরীর হয়েছে ওর প্রতি মাসে তিন - চার বার করে জ্বর হচ্ছেই। হবি তো হ আর একটা দিন পরে হলে কি এমন ক্ষতি হতো, এই রথের দিনেই হতে হলো। ওর বিরক্তিটা বেড়ে গেলো আরো কয়েক ঘর।    " মা ও মা...মাআআআআ...." জোরে হাঁক  দিলো শুভ্রাংশু।    " কি হয়েছে বাবু? আবার জ্বরটা বেড়েছে? মাথা ব্যথা করছে?" ব্যস্ত হয়ে উঠলেন মালতিদেবী।     " ওসব কিছু নয়, ও মা বলছি এখন তো খুব কম জ্বর আছে যাই না মা একবার বাইরে, সবাই কতো ফুর্তি করছে বলো"  কাতর ভাবে বলল শুভ্রাংশু।      " না বাবু, এখনই আমরা ডাক্তারের কাছে যাব, বাবা তৈরী হয়ে গেছেন, আমরা বিকেলে তখন মেলা দেখতে যাব কেমন, এখন উঠে জামা কাপড় পরে নাও"  মালতিদেবী জামা কাপড় গুলো এগিয়ে দিলেন।      শুভ্রাংশু...

রাই আর বাবা ।। অদিতি চ্যাটার্জি

রাই আর বাবা অদিতি চ্যাটার্জি রাই-র জীবনে বেশ কিছু ভালো লাগা আছে তার মধ্যে একটা হলো সন্ধ্যার সময় তিন তলার বারান্দায় দাঁড়িয়ে রাস্তা দেখতে দেখতে কফি কাপে চুমুক দেওয়া ।" আজ যশোদা মিষ্টান্ন ভান্ডারের সামনে বেশ ভিড়,নির্ঘাত 'তেলে ভাজা ' প্রেমীরা।" আপন মনেই ভাবে ও, কিন্তু বসার ঘরে সুমন আর আঁখি এতো জোরে 'হল্লা গোল্লা ' করছে তালতলার জমজমাট রাস্তার দিকে আর মন দিতে পারছে না রাই।  পায়ে পায়ে ঘরে এসে দাঁড়ায় রাই, দেখে ক্লাস ফোরের মেয়ে এতোটা ঝগড়া করছে সুমনের সাথে , "বাপ রে, কবে এতোটা কথা শিখলো মেয়ে! কিভাবে কথা বলছে?? কোঁকড়া চুল ঝাঁঝিয়ে,গোলগাল হাত নেড়ে " ...মেয়ে কে দেখে থতমত খেয়ে যায় রাই। এদিকে আঁখি বলছে, "ধুত্ বাপী তুমি কিচ্ছু পারো না, তুতাই-র বাবা, পিসাই, মামু সবাই কত ভালো করে খেলতে পারে , না আমি তোমার সাথে খেলবো না।" কাতর চোখে মেয়ের দিকে একবার তাকিয়ে সুমন বলে ,"আচ্ছা তুই আমাকে শেখা, দ্যাখ আমি কার জন্য আলিপুরদুয়ার থেকে পনেরো দিন পর পর কলকাতায় আসি বল!"  ঐ টুকু মেয়ে কথা প্রায় না শুনেই ঘরে চলে গেল রাই-র চোখের সামনে, সুমন একবার হেসে বাথরুমের দিকে এগো...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯২তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩২ অক্টোবর ২০২৫

—: সম্পাদকীয় দপ্তর থেকে :— এই সংখ্যার জন্য লেখা এসেছিল প্রায় ১৮০টা। কিন্তু গুণগত মানে দুর্বল লেখার সংখ্যা বহু। আমরা নবপ্রভাতে নতুনদের কথা ভেবে বেশ কিছু দুর্বল লেখাও রাখি। কিন্তু সবসময় একই লোকের দুর্বল লেখা প্রকাশ করা অনুচিত বলে মনে করি। শেষ পর্যন্ত ৯৯ জনের লেখা রাখা গেল। যাদের লেখা প্রকাশিত হল না, তারা লেখাগুলি অন্য যেখানে খুশি পাঠাতে পারেন। বিশেষ কারণে এই সংখ্যার মুদ্রিত সংস্করণ প্রকাশিত হচ্ছে না। আমরা দুঃখিত। তবে মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি শীঘ্রই আসছে। সঙ্গে থাকুন। সকলকে উৎসবমুখর বর্ণময় শুভেচ্ছাসহ— —নিরাশাহরণ নস্কর, সম্পাদক, নবপ্রভাত। অনুরোধ : প্রকাশিত লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন, ছবি/স্ক্রীনশট নয়।  == সূচিপত্র == পড়া-লেখার ইতিহাস অনুসন্ধান।। তপন তরফদার উৎসব : মানুষের চিরন্তন আত্মপ্রকাশ।। কৃশানু ব্যানার্জি বাংলা : সভ্যতা ও সংস্কৃতির জন্মভূমি।। শ্যামল হুদাতী সমুদ্র আর অস্তিত্ব ।। সুব্রত চৌধুরী রাজা ছিলেন জুবিন গর্গ ।। গঙ্গা 'অনু'   আদ্যাশক্তি মহামায়ার বাংলা বারো মাসের বারো রূপ ।। অর্হণ জানা মেধাদাদুর আসর ।। রণেশ রায় বৈজ্ঞানিক মা...

বস্তু, চেতনা এবং কবি ।। সজল চক্রবর্তী

বস্তু, চেতনা এবং  কবি সজল চক্রবর্তী  "যেখানে পৌঁছায় না রবি,, সেখানে পৌঁছে যান কবি।" এই ছোট্ট কবিতা টি অনেক পুরনো  এবং বহু পরিচিত, তথাপি এর তাৎপর্য এখনো হারায় নি। তবে, কথা হ'চ্ছে -আমরা তো  রবি-কবিকে একত্রেই পেয়ে যাই আমাদের ঋষি-প্রতিম কবি রবীন্দ্রনাথের মধ্যে। আর তখনই জেনে যাই উপরোক্ত ছোট কবিতার প্রণিধানযোগ্যতা ।  ... এবার শুনে নেয়া যাক, ঋষি-প্রতিম কবির মুখ নিঃসৃত বাণী:- "তোমার অসীমে প্রাণমন লয়ে যত দূরে আমি যাই ...." অর্থাৎ আমাদের প্রিয়তম কবি অনায়াসে পৌঁছে যান সৃষ্টির অসীমে , যা আমাদের পক্ষে আদৌ সম্ভব নয়। এখানে কবির চেতনা সুদূর প্রসারী! ... প্রকৃত প্রস্তাবে কবি অতিন্দ্রীয় জগতের এক নাগরিক। তাঁর কাছে তাই চেতনা বা চৈতন্যেরই প্রাধান্য। ...এখন আসছি, বস্তু এবং চেতনার মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে।  ... আমি একজন অতি সাধারন মানুষ, তাই এই ব্যাপারটাকে কবিদের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার চেষ্টা ক'রছি। তবে আমার সামান্য জ্ঞান থেকে একটা সাধারণ কথা সেরে নি'। আমরা সাধারণত ব'লে থাকি-- সূর্য পূর্বদিকে ওঠে। প্রকৃত অর্থে কি তাই ? আসলে সূর্য যেদিকে ওঠে ,আমরা  সেই দিকটাকে নামাঙ্কিত ক...

দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট ও সন্নিহিত অঞ্চলের কথ্য শব্দ, উচ্চারণ, বাগ্্ধারা ইত্যাদি ।। অরবিন্দ পুরকাইত

স্থানীয় কিছু কথ্যশব্দ, উচ্চারণ, বাগধারা ইত্যাদি  (পর্ব—সাত) অরবিন্দ পুরকাইত স্থানীয় কিছু কথ্যশব্দ, উচ্চারণ, বাগ্্ধারা ইত্যাদির সংগ্রহ প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল রামচন্দ্র নস্কর সম্পাদিত 'চর্যা' পত্রিকায়, ২০১৬ সালে। সে সংগ্রহ যায় নিজের 'গাঁ-ঘরের কথা' পুস্তকে, ১৪২৩ সনে। পরে এই ব্লগজিনেও কিছু সংগ্রহ প্রকাশিত হয় ১৪২৮ সনের আশ্বিন মাসে, পৌষ ১৪২৯-এ, আষাঢ় ১৪৩০, নববর্ষ ১৪৩১ ও কার্তিক ১৪৩১ সংখ্যায়। তার পরেও ধীরে ধীরে আরও কিছু সংগৃহীত হয়েছে, সেগুলিই এখানে রাখা হল। নিজের আগের সংগ্রহে এসে-যাওয়া শব্দ যদি এখানে এসে থাকে, তা বাড়তি বা ভিন্ন কিছু বলার প্রয়োজনেই। নিজের আগের সংগ্রহ খুব ভাল করে যে মিলিয়েছি তা নয়, পুরো সংগ্রহ একত্র করার সময় তা করা যাবে যতটা সম্ভব নিখুঁত করে। আগে আগে সংগ্রহ প্রসঙ্গে কিছু কথা বলা হয়েছে, বিশেষত প্রথম প্রকাশের সময় একটু বিশদভাবে। এখানে আর কিছু বলা নয়, কেবল সংগ্রহটাই তুলে ধরা গেল। অখেজো/অখেজে — অকেজো থেকে। আদরের তিরস্কার হিসাবেই মূলত প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। পাজি। অচিমিতি — (উচ্চারণ ওচিমিতি) আচমকা, হঠাৎ। অদীয় — প্রচুর, অজস্র। অদ্বিতীয় থেকে ক...

কবিতা ।। অরণ্যকন্যা ।। অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়

  অরণ্যকন্যা অরিন্দম চট্টোপাধ্যায় অরণ্যকন্যার দৃষ্টির ভেতর বিষাদ বিন্দু ফোঁটা ফোঁটা জলের মতো গড়িয়ে যায়, হয়ে যায় কোন নদীপথ দৃষ্টি ভেঙে ভেঙে চলে যায় কোন এক শূন্য পথে অরণ্যকন্যার হৃদয়ের ভেতর ভাঙে যতো বৃক্ষপত্র নতুন পত্র পুষ্পের খোঁজ নেই ঠোঁট জুড়ে সমুদ্রকাঁপন বুদবুদের মতো অস্ফুট হয়ে উচ্চারিত হয় কোন অক্ষর শব্দ আর তাঁর শরীর থেকে ছড়িয়ে যায় হয়ে যায় একটা অদৃশ্য কবিতা...    ================== @ অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়,  বেহালা, কলকাতা -৭০০০৬০,  

দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত ।। রণেশ রায়

দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত রণেশ রায় ভূমিকা দর্শনের ইতিহাসে বস্তু ও চেতনার সম্পর্ক মানবচিন্তার গভীরতম প্রশ্ন। অধিবিদ্যা ভাবকে মুখ্য ধরে, বস্তুকে গৌণ বলে মনে করে। বিপরীতে মার্কস ও এঙ্গেলস বলেছেন—বস্তুই মুখ্য এবং চেতনা তার প্রতিবিম্ব। মানুষ যখন প্রথম আলোর মুখ দেখেছিল, তখনই সে বিস্ময়ে প্রশ্ন করেছিল—আমি কে, কোথা থেকে এলাম, আর এই দৃশ্যমান জগতের বাইরে কিছু আছে কি? এই প্রশ্ন থেকেই জন্ম নিয়েছিল দর্শনের দুই বিপরীত স্রোত—ভাববাদ আর বস্তুবাদ। ভাববাদ বলেছিল—"ভাবই প্রথম," আর মার্কস বললেন—"না, বস্তুই প্রথম।" এই দুই প্রান্তের মাঝখানে আমি দেখি এক সেতুবন্ধন, যেখানে বস্তু, স্নায়ু ও চেতনা একে অপরকে গড়ে তোলে, আর তাদের এই ত্রিত্বের নৃত্যেই সৃষ্টি হয় জীবন ও কল্পনার জগৎ। ভাবববাদ এক সর্বশক্তিমান শক্তির কল্পনা করে যা এই বস্তুজগতের স্রষ্টা। আর এখান থেকে ধর্ম ও ধর্মীয় ভাবধারার সৃষ্টি। আমার এই প্রবন্ধে আমি মার্কসীয় দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদকে আধুনিক বৈজ্ঞানিক আলোকে বোঝার চেষ্টা করেছি। আমি দেখাবার চেষ্টা করবো কিভাবে ইন্দ্রিয় এবং স্নায়ুজগৎ বস্তু ও চেতনাকে সংযুক্ত করে এবং কল্পলোকের জন্ম দেয়...

চাঁদে জীবন ।। শমীক সমাদ্দার

চাঁদে জীবন  শমীক সমাদ্দার                           চন্দ্রযান দুরন্ত তৈরি, রকেটের উপর ভর করে চন্দ্রযান চাঁদে অবতরণ করবে। মাধ্যাকর্ষণ শক্তি পেরিয়ে মহাকাশযান চাঁদের কক্ষপথে  স্থাপন করা হয়েছে। চন্দ্রাযান চাঁদের মাটিতে পা রাখবে সময়ের কাউন্ট ডাউন চলছে। সমস্ত নিয়ন্ত্রণ স্পেসস্কাই গাবেষণা কেন্দ্র কতৃক নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে প্রযুক্তি বিজ্ঞান অতল গভীরতায় বাসা বাঁধে। পরিচয়টা দিয়ে দিলাম এই স্পেসসিপে রয়েছে তিনজন নভোচর, একজনের নাম সাইমন আর এক জনের নাম রেমন্ড, আর এদের সঙ্গে একজন মহিলা আছে তার নাম মেরিনা। চন্দ্রযান চন্দ্রপৃষ্ঠে সফলভাবে অবতরণ করেছে। চন্দযান দুরন্ত চাঁদের পূর্ব -পশ্চিম অক্ষরেখা বরাবর অবতরণ করেছে। আলো আঁধারের গভীরতায় বড় বড় পাথরের পিণ্ড, চাঁদের সার্ফেসের উপরে পাথর জল দেখা যায়। জমাট বাঁধা অক্সিজেন আর কার্বনডাই অক্সাইড। ওরা এখানে এসেছে এক রহস্য উদ্ঘাটন করতে। যে স্থানে ওরা অবতরণ করেছে সেখানে ১০ বছর আগে ওরা এসেছিলো। রুশ সরকার ওদের দেশের ছাত্র ছাত্রী কে মহাকাশে চাঁদে পাঠাতে চায়। ওরা কেন এসেছে সেটা এখনো অধরা। সাইমনের বর্...

জনপ্রিয় লেখা

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ -- "ত্রয়ী কাব্য" ------------------------------------------------------------------------------ সুনন্দ মন্ডল নবীনচন্দ্র সেন সাহিত্যে তথা বাংলা কবিতার জগতে এক অবিস্মরণীয় নাম। তিনি চট্টগ্রাম জেলার নওয়াপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ১৮৪৭ সালে তাঁর জন্ম এবং মত্যু ১৯০৯ সালে। বঙ্কিমচন্দ্র তাঁকে 'বাংলার বায়রন' বলেছেন। ‎জীবৎকালীন যুগে আত্মপ্রত্যয়ের মধ্যে জাতীয় চরিত্র আত্মস্থ করে নতুন সংস্কারে প্রয়াসী হয়ে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখেছেন।মধুসূদন-হেমচন্দ্র-নবীনচন্দ্র--এই তিন কবি বাংলা কাব্যধারায় প্রাণ সঞ্চার করেছিলেন। বিশেষত মহাকাব্য লেখার দুঃসাহস দেখিয়েছিলেন। এদিক থেকে মধুসূদন দত্ত একজন সফল মহাকাব্যিক। তাঁর 'মেঘনাদ বধ' কাব্যের মত গভীর ও ব্যঞ্জনাময় না হলেও নবীনচন্দ্র সেনের 'ত্রয়ী' কাব্য বিশেষ মর্যাদা দাবি করতেই পারে। তাছাড়া 'ত্রয়ী' কাব্যে ধর্মীয় ভাবধারার আবেগ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ‎ ‎নবীনচন্দ্র সেন বহু কাব্য লিখেছেন। যেমন- 'অবকাশরঞ্জিনী','পলাশীর যুদ্ধ', 'ক্লিওপেট্রা', 'রঙ্গমতী', 'খ্রীষ্ট', ...

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা শ্রীজিৎ জানা "সময় চলিয়া যায় নদীর স্রোতের প্রায়"। স্রোতের ধারা তার দু'প্রান্তে রেখে যায় ভাঙাগড়ার চিহ্ন। কালের দৃশ্যপটেও পরিবর্তনের ছবি অনিবার্যভাবেই চোখে পড়ে। সমাজ সময়ের ছাঁচে নিজেকে গড়ে নেয় প্রতিনিয়ত।  সেখানে মনে নেওয়ায় বাধা থাকলেও,মেনে নেওয়ার গাজোয়ারি চলে না। ফলত কাল বদলের গাণিতিক হিসেবে জীবন ও জীবিকার যে রদবদল,তাকেই বোধকরি সংগ্রাম বলা যায়। জীবন সংগ্রাম অথবা টিকে থাকার সংগ্রাম।  মানুষের জীবনযাপনের ক্ষেত্রে আজকে যা অত্যাবশ্যকীয় কাল তার বিকল্প রূপ পেতে পারে অথবা তা অনাবশ্যক হওয়াও স্বাভাবিক। সেক্ষেত্রে উক্ত বিষয়টির পরিষেবা দানকারী মানুষদের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হওয়া অস্বাভাবিক নয়। এক কালে গাঁয়ে কত ধরনের পেশার মানুষদের চোখে পোড়তো। কোন পেশা ছিল সম্বৎসরের,আবার কোন পেশা এককালীন।  সব পেশার লোকেরাই কত নিষ্ঠা ভরে গাঁয়ে  তাদের পরিষেবা দিত। বিনিময়ে সামান্য আয় হত তাদের। আর সেই আয়টুকুই ছিল  তাদের সংসার নির্বাহের একমাত্র উপায়। কালে কালান্তরে সেই সব পেশা,সেই সব সমাজবন্ধুরা হারিয়ে গ্যাছে। শুধুমাত্র তারা বেঁচে আছে অগ্রজের গল্পকথায়,আর বিভিন...

গ্রন্থ আলোচনা: শর্মিষ্ঠা দেবনাথ

প্রতিবাদ যখন অগ্নিবাণী বাংলাদেশে নারীমুক্তি ও নারী আন্দোলনের পুরোধা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ১৯৯তম জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদিত হল " আসিফা এবং.." কাব্য সংকলনটির মধ্যদিয়ে।সংকলনটির বিশেষত্ব হল,এটি উৎসর্গ করা হয়েছে নারীর সম্মান রক্ষার আন্দোলনের যোগ্যতম ব্যক্তি শহীদ শিক্ষক বরুন বিশ্বাসকে। সংকলক প্রকাশক সন্দীপ সাহু নিজে এবং বিশিষ্ট কবি সাহিত্যিকদের দিয়ে লিখিয়ে নিয়েছেন এমন কিছু কবিতা, যা শুধুমাত্র শব্দ ও ছন্দের অনুবন্ধ নয়, এক একটি অগ্নিবাণী।আসলে জীবনকে দেখার স্বাতন্ত্র‍্যে কবিরা সব সময়ই অগ্রগণ্য এবং অনন্য।যুগ ও জীবন দ্বন্দ্বের কণ্ঠস্বরকে আশ্রয় করে,একদিকে মনের প্রবল দাহ ও অন্যদিকে  নির্যাতিতা শিশুকন্যা ও নারীর প্রতি মনের গভীর আকুলতা থেকে প্রকাশ পেয়েছে "আসিফা এবং" এর  কবিতাগুলি।এক অন্ধকার সময়ের মুখোমুখি আমরা,সেই অন্ধকার আমাদের নিয়ে এসেছে সামাজিক অবক্ষয়ের শেষধাপে যেখানে নৈতিকতা,পাপবোধ,গ্লানিকে সরিয়ে রেখে, সমাজের বানানো নিয়মকে তোয়াক্কা না করে,অনায়াস দক্ষতায় ও ক্ষিপ্রতায় নিজেরই ধর্মচেতনাকে জলাঞ্জলি দিয়ে কিছু মানুষ তার পশুত্বের পরিচয় দিয়েছে ধর্ষণ ও ন...

শ্যামাপদ মালাকারের কবিতা

চোখ """"""" নদী, অরণ্য, রাতের ফালি চাঁদ- সবেই তো আমার...স্বর্ণপিঁড়িটাও!। সেদিন, শুকতারাটার গা' মাপতে গিয়ে মনে হল, --ওরা আমার চেয়েও সুখী? দেখিনা একবার গাইতি-শাবল চালিয়ে... চালালাম। জল-মাটি ভেজা একটা 'চোখ' কুড়িয়ে ফিরলাম! সেই চোখদিয়ে দেখি-- শেষ বিকেলের নিরন্ন আঁচে ঝলসানো বুকে নীড়ে ফিরছে ধূলিমাখা কত কাল পা, কি শান্তি - কি তৃষ্ণা! পাতাক্ষোয়া কোদালেরর মাথায় ঝরেপড়া ললাটের ঘামে, কারা যেন জীবন শাণ দেয়! রুক্ষঠোঁটের আবরণে এক সময় নেমে আসে শিশিরস্নাত কালনিশি-- মাঝের ব্যবধান মুছে দেয় প্রতিশ্রুতির ভীড়- - পূর্বজনমের নিদর্শনচুম্বন শেষে হেরে যায় কার মমতাজ-- ম্লান হয়ে যায় কত পিঁড়ি! ... ম্লান হয়ে যায় কত পিঁড়ি! ... ম্লা...

কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা: এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায় ।। পার্থ সারথি চক্রবর্তী

  কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা : এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায়  পার্থ সারথি চক্রবর্তী  কথায় বলে বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। রাজার শহর কোচবিহারের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা আরো অনেক বেশি। দুর্গাপূজা আর দীপাবলির মতো দু'দুটো বিরাট মাপের উৎসবের রেশ কাটতে না কাটতেই, এ শহর ভাসে রাস উৎসবের উন্মাদনায়। মদনমোহন ঠাকুর কোচবিহারের প্রাণের ঠাকুর। তাঁকে নিয়ে সবার আবেগ আর শ্রদ্ধা ও ভালবাসা এখানে বাঁধনছাড়া। এক অপূর্ব মিলনোৎসবের চেহারা নেওয়া এই উৎসব ঐতিহ্যবাহী ও ঐতিহাসিক। জন, মত, সম্প্রদায়ের উর্ধে এই উৎসবের গ্রহণযোগ্যতা। সময়ের কষ্টি পাথরে পরীক্ষিত! এক প্রাণের উৎসব, যা বহুদিন ধরেই গোটা উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ উৎসবে পর্যবসিত।কোচবিহারের এই রাস উৎসবকে কেন্দ্র করে যে মেলা হয় তাও সময়ের হাত ধরে অনেক বদলে গেছে। এসেছে আধুনিকতার ছোঁয়া! শৈশবে বাবার হাত ধরে যে মেলা দেখেছি তা চরিত্র ও আকৃতি দু'দিক থেকেই বদলে গেছে। গত পঁচিশ বছর ধরে খুব কাছে থেকে এই উৎসব ও মেলা দেখা, অনুভব করার সুযোগ হয়েছে। যা দিনদিন অভিজ্ঞতা ও প্রাপ্তির ঝুলিকে সমৃদ্ধ করে গেছে প্রতি ক্ষেত্রেই।  খুব সংক্ষেপে এই উৎসবের ইতিহাস না জানাটা কিন্তু অবিচারই ...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো,  তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) য...

মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা 2024 সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি (লেখক ও সম্পাদকীয় দপ্তরের কথোপকথন আকারে) --কী পত্রিকা? --নবপ্রভাত। --মুদ্রিত না অনলাইন? --মুদ্রিত। --কোন সংখ্যা হবে এটা? --বইমেলা 2024। --কোন কোন ধরনের লেখা থাকবে? --প্রবন্ধ-নিবন্ধ, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া। --বিশেষ কোন বিষয় আছে? --না। যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে। --শব্দ বা লাইন সংখ্যার কোন বাঁধন আছে? --না। নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো (যেমন, কবিতা 12-14 লাইনের মধ্যে, অণুগল্প কমবেশি 200/250শব্দে)। তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়। --ক'টি লেখা পাঠাতে হবে? --মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। --ফেসবুক বা অন্য কোন প্লাটফর্মে প্রকাশিত লেখা কি পাঠানো যাবে? --না। সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। --পত্রিকা কোন সময়ে প্রকাশিত হবে? --জানুয়ারি 2024-এর দ্বিতীয় সপ্তাহে। --লেখা পাঠানোর শেষতারিখ কত? -- 17 ডিসেম্বর 2023। --কীভাবে পাঠাতে হবে? --মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। --লেখার সঙ্গে কী কী দিতে হবে? --নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) --বিশেষ সতর্কতা কিছু ? --১)মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন '...

উৎসবের সৌন্দর্য: সেকালে ও একালে।। সৌরভ পুরকাইত

  উৎসবের সৌন্দর্য:  সেকালে ও একালে   সৌরভ পুরকাইত বাংলার উৎসব বাংলার প্রাণ। প্রতিদিনের জীবনযাপনের মধ্যে যখন মন ক্লান্ত হয়ে পড়ে তখন তাকে বেঁচে থাকার রসদ যোগায় এই উৎসব। কথায় বলে 'বারো মাসে তেরো পার্বণ'।মন আনন্দই চায়।তাই তাকে সজীবতা দিতে,পরিবারের,সমাজের ভালো-মন্দের কথা মাথায় রেখে মানুষ নিজেই সৃষ্টি করে নিয়েছে নানাবিধ উৎসবগুলিকে। একেবারে প্রাচীন কাল থেকে আজ পর্যন্ত মানুষ কখনোই উৎসব বিমুখ ছিল না।উৎসবই তাকে ঘর থেকে বাইরে টেনে এনেছে,চিনতে শিখিয়েছে আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার আনন্দকে। উৎসব আসলে প্রাণের সাথে প্রাণের যোগ, হৃদয়ের সাথে হৃদয়ের যোগ।রবীন্দ্রনাথ বলেছেন 'সত্য যেখানেই সুন্দর হয়ে প্রকাশ পায় সেইখানেই উৎসব'।হৃদয়ের সেই সুকোমল বৃত্তির জাগরণ যেন ফুটে ওঠা ফুলেরই মতো সত্য ও সুন্দর।এই জাগরণই উৎসব। তাই নানা কিছুর মধ্য দিয়ে,নানা উপলক্ষ্যে এই উৎসব প্রকাশ পায়। প্রাচীনকালে মানুষের হাতে না ছিল পসার, না ছিল পসরা।ছিল মনের আন্তরিকতা,মানুষকে কাছে টেনে নেবার ক্ষমতা।সেটাই ছিল উৎসবের সৌন্দর্য। তাই সেদিনের উৎসবে ক্ষুদ্র,তুচ্ছ উপকরণও প্রাণের উচ্ছ্বাসে মহৎ হয়ে উঠত।সেকালের উৎসবে লোক দেখানো ব্যাপার কিছু ...

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

বসন্তের কোকিল তুমি   বিচিত্র কুমার                      (০১) তোমার দু-আঁখির গহীন অরণ্যে একটা স্বপ্নের বহমান নদী রয়েছে, তারই রেশ ধরে আমি হেঁটে চলি অজানা বসন্তের পথে নীর উদ্দেশ্যে। সে চলার কোন শেষ সীমা নেই তাই আমার বিষণ্ণ একতারা সন্ন্যাস খুঁজে ফিরে , কবে তুমি বুঝবে অনুশ্রী মনের পর্দা খুলে একুশ বসন্ত তোমার রঙ ছিটিয়ে যাচ্ছে অচিনপুরে। এদিকে আমার দেহের প্রতিটি শিরা ধমনীতে প্রবাহিত হচ্ছে তোমার ভালোবাসার একটু উষ্ণতা পাবার জন্যে, শুধু অনুভবে তাণ্ডব উচ্ছাসিত হচ্ছে--- যেদিকে তাকাই --- ফুলে ফুলে ভ্রমর গুনগুনিয়ে উড়ে উড়ে পরে বসন্তের কোকিল গান গায় নব বসন্তে, তোমার দুই চোখে আমার একই ছায়া রয়ে যায় উতলা ভালোবাসার সীমান্তে।                 (০২)        এক রক্তাক্ত বসন্তের স্মৃতি কোন এক উতলা বসন্তের সকালে পুষ্পবনে ফুটেছিল একটি টকটকে লাল গোলাপ, তার সাথে হয়েছিলো দেখা প্রথম ফাগুনে হয়েছিল দুজনার এ জীবনের আলাপ।  তারপর প্র...

অনুভবে, অনুধ্যানে অনালোকিত কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী ।। সুপ্রিয় গঙ্গোপাধ্যায়

"এ কালে একটু লেখাপড়া জানা থাকাতে, এবং বঙ্গভাষায় অনেক গুলি পাঠ্য পুস্তক হওয়াতে কেবল পরনিন্দা করিয়া সময় কাটাইতে তাঁহাদের আবশ্যকও হয় না, প্রবৃত্তিও হয় না। …নিতান্ত সখ্যতা বা আত্মীয়তা না থাকিলে, সকল পেটের কথা খুলিয়া নিঃশ্বাস ছাড়িয়া তৃপ্তিলাভ করা, এ কালের মেয়েরা পছন্দ করেন না। তাঁহারা বইখানি, কার্পেটটুকু, নিজের স্বামী পুত্র লইয়া দিন যাপন করিতে বা একেলা থাকিতে কষ্ট বোধ করেন না।" —শরৎকুমারী চৌধুরাণীর এই লেখা (ভারতী ও বালক/ আশ্বিন কার্তিক, মাঘ/ ১২৯৮) দেখে বুঝতে অসুবিধা হয় না উনিশ শতকে নারীর লেখাপড়া শেখার উদ্দেশ্য ছিল মূলত আত্মমুক্তির জন্য। শুধু লেখাপড়া শেখা নয়, সাহিত্য সৃষ্টিতেও ছয়'এর দশক (উনিশ শতকের) থেকে নারীরা যে ধারা সূত্রপাত করেছিল তা নারীর আত্মমুক্তির পথকেই প্রসারিত করেছিল। ছয়'এর দশকের পূর্বেই ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে প্রথম ছাপার হরফে নারী রচিত কাব্য 'চিত্তবিলাসিনী' প্রকাশিত হয়। লেখেন কৃষ্ণকামিনী দাসী। ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে কবি ঠাকুরাণী দাসীর নাম উঠে আসতে থাকে, যিনি কবিতার পাশাপাশি গদ্যও লিখতেন। ঠিক সেই বছরই জন্মগ্রহণ করেন কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী, যাঁর কবিতা লেখা আত্মমুক্...

বছরের বাছাই

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৪তম সংখ্যা ।। ফাল্গুন ১৪৩১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

  এই সংখ্যায় একটি গ্রন্থ আলোচনা ও একটি ধারাবাহিক রচনা ছাড়া সব লেখাই ভাষা দিবস, মাতৃভাষা, ভাষাচেতনা ও ভাষা সমস্যা বিষয়ক রচনা। লেখাগুলি এই সংখ্যাকে অনেকটাই সমৃদ্ধ করেছে। পড়ুন। শেয়ার করুন। মতামত জানান। লেখকগণ নিজের নিজের লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন যতখুশি, যে মাধ্যমে খুশি। কিন্তু স্ক্রিনশট শেয়ার নৈব নৈব চ!  অন্য বিষয়ের লেখাগুলি আগামী সংখ্যার জন্য রইল।  সকলকে ধন্যবাদ, অভিনন্দন। ভালো থাকুন।   --সম্পাদক, নবপ্রভাত। ==  সূ  চি  প  ত্র  == প্রবন্ধ-নিবন্ধ অমর ২১শে ফেব্রুয়ারি বাঙ্গালীর বাংলা ভাষা দুর্জয় দিবস।। বটু কৃষ্ণ হালদার ভাষা শহীদদের পঁচাত্তর বছর।। অনিন্দ্য পাল একুশে ফেব্রুয়ারি : বাঙালির শ্রেষ্ঠ অশ্রুবিন্দু।। জীবনকুমার সরকার কবিগানের সাহিত্যিক ও সমাজতাত্ত্বিক মূল্য।। বারিদ বরন গুপ্ত বিপন্ন মাতৃভাষা ও সংস্কৃতি।। শ্যামল হুদাতী মায়ের দুধ আর মাতৃভাষা।। প্রদীপ কুমার দে একুশে ফেব্রুয়ারি : কিছু কথা।। বনশ্রী গোপ বাংলায় কথা বাংলায় কাজ।। চন্দন দাশগুপ্ত বিপন্ন মাতৃভাষা ও তার মুক্তির পথ।। মিঠুন মুখার্জী. হে অমর একুশে, তোমায় ভুলিনি, ভুলব না।। মহম্মদ মফিজুল ইসলা...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৭তম সংখ্যা ।। জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ মে ২০২৫

  প্রচ্ছদ চিত্র: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সূচিপত্র রবীন্দ্রনাথ এবং কয়েকজন নারী ।। অনিন্দ্য পাল পরাবাস্তববাদ ও বাংলায় জীবনানন্দের কাব্যচর্চা ।। রণেশ রায় প্রতীক্ষা ।। চন্দন দাশগুপ্ত আশ্রয় ।। সায়নী সাহা বয়স্ক শিক্ষাকেন্দ্র ।। দেবাংশু সরকার প্রণামের প্রভু ।। সুপ্রভাত মেট্যা দুর্ভাগ্যের সম্মুখ সমরে ।। সমীর কুমার দত্ত আচমকা শরৎ ।। অর্ণব সামন্ত প্রতিধ্বনি ✍️ সুবীর কুমার ঘোষ জীবন যেখানে যেমন ।। আরজু মুন জারিন বছর সীমান্তে হিসেব নিকেশ ।। রানা জামান চারটি কবিতা ।। বিবেকানন্দ নস্কর আমরা আছি ।। লালন চাঁদ চাওয়া ।। মাথুর দাস কাগজ ফুলে ।। সফিউল মল্লিক সময়ের স্রোত ।। দুর্গাদাস মিদ্যা তুমি মানুষ ।। বদরুল বোরহান দিঘার সমুদ্র ।। মাখনলাল প্রধান পুস্তক-আলোচনা ।। অরবিন্দ পুরকাইত সংযম ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত  চেনা প্রতিবেশী (প্রথম পর্ব) ।। দীপক পাল খেলার মাঠ ।। তূয়া নূর বন্ধু শ্যামলকান্তি ।। শংকর ব্রহ্ম তুমি তোমার মতো থাকলে ।। সত্যেন্দ্রনাথ বেরা গ্রীষ্মে খুবই হিংস্র রবি ।। জগবন্ধু হালদার স্বপ্ন দর্শন ✍️ পার্থ প্রতিম দাস মৌন মুখরতা ।। মুসা মন্ডল রুদ্র বৈশাখ ।। দীনেশ সরকার চিহ্নিত পদযুগ পদাঘাত ।। দেবাশীষ...

প্রচ্ছদ।। ৮৩তম সংখ্যা ।। মাঘ ১৪৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ।। প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র

  বিঃ দ্রঃ আগামী ফেব্রুয়ারি সংখ্যার জন্য ভাষা দিবসের কথা মাথায় রেখে লেখা পাঠান। email: nabapravatblog@gmail.com  সূচিপত্র ফিচার।। গোপাল ভাঁড়ের অজানা সত্য ।। লোকনাথ পাল প্রবন্ধ ।। মসুয়ার রায় পরিবার এবং বঙ্গসংস্কৃতি ।... প্রবন্ধ ।। সুধীন্দ্রনাথ দত্ত: কাব্যের দার্শনিক ও ন... কবিতায় সেতুবন্ধন (তৃতীয় অংশ) শিল্পবিপ্লবোত্তর কাল... রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর বিদ্রোহী প্রেমের কবিতা: ... কবিতা ।। এই মন ভালো নেই দিনে ।। সুপ্রভাত মেট্যা কবিতা ।। জোছনা আলোর স্বপ্ন ।। তুষার ভট্টাচাৰ্য কবিতা ।। নিঃস্ব হবো ।। লালন চাঁদ কবিতা ।। ভালোলাগা  ।। আজিজ উন নেসা  গল্প ।। স্বীকারোক্তি ।। চন্দন দাশগুপ্ত কবিতা ।। শীতের দিন ।। প্রশান্ত কুমার মন্ডল কবিতা ।। শীতকাল ।। অঙ্কিতা পাল নাসির ওয়াদেনের দুটি কবিতা ভূতের লেখা ছড়া ।। বদরুল বোরহান কবিতা ।। ব্যস্ত ।। আলাপন রায় চৌধুরী ছোটগল্প ।। লম্বুর স্বপ্নপূরণ ।। পরেশ চন্দ্র মাহাত কবিতা ।। সৎকার ।। সুমিত মোদক কবিতা।। শীত বৈচিত্র্য ।। সুমিতা চৌধুরী পুস্তক-আলোচনা ।। নিউটনের আপেল ও প্রেমিকা ।। অরবিন্... গল্প।। শান্তির পথে …...।। বন্দনা সেনগুপ্ত কবিতা ।। মা...

সূচিপত্র ।। ৮৯তম সংখ্যা ।। শ্রাবণ ১৪৩২ জুলাই ২০২৫

সূচিপত্র   প্রবন্ধ ।। বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় ।। মাখনলাল প্রধান প্রবন্ধ ।। শ্রমিকের অধিকার ।। চন্দন দাশগুপ্ত প্রবন্ধ ।। ভিনগ্রহীদের সন্ধানে ।। শ্যামল হুদাতী প্রবন্ধ ।। নারীমর্যাদা ও অধিকার ।। হিমাদ্রি শেখর দাস কবিতা ।। মশালের রং তুলি ।। তূণীর আচার্য কবিতা ।। জললিপি ।। রূপক চট্টোপাধ্যায় গুচ্ছকবিতা || শিশির আজম নিবন্ধ ।। পূনর্জন্ম ।। শংকর ব্রহ্ম মুক্তভাবনা ।। কোলাহল তো বারণ হলো ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত গল্প ।। গানের হাড় ।। শুভজিৎ দত্তগুপ্ত গল্প ।। শিকড়ের খোঁজে ।। সমীর কুমার দত্ত সুপ্রভাত মেট্যার পাঁচটি কবিতা গ্রন্থ-আলোচনা ।। আবদুস সালামের কাব্যগ্রন্থ 'অলীক রঙের বিশ্বাস'।। তৈমুর খান অণুগল্প ।। হরিবোল বুড়ো ।। সুমিত মোদক রম্যরচনা ।। গোয়েন্দা গোলাপচন্দ আর প্রেমের ভুল ঠিকানা ।। রাজদীপ মজুমদার দুটি গল্প ।। মুহাম্মদ ফজলুল হক দুটি কবিতা ।। তীর্থঙ্কর সুমিত কবিতা ।। মেঘমুক্তি ।। বন্দনা পাত্র কবিতা ।। ব্যবচ্ছিন্ন শরীর ।। কৌশিক চক্রবর্ত্তী কবিতা ।। শমনচিহ্ন ।। দীপঙ্কর সরকার কবিতা ।। ভালোবাসার দাগ ।। জয়শ্রী ব্যানার্জী কবিতা ।। ফণীমনসা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ছড়া ।। আজও যদি ।। বদ্রীন...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো,  তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) য...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮২তম সংখ্যা ।। পৌষ ১৪৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

  সূচিপত্র অন্নদাশঙ্কর রায়ের সাহিত্য: সমাজের আয়না ।। বিচিত্র কুমার প্রবন্ধ ।। বই হাতিয়ার ।। শ্যামল হুদাতী কবিতায় সংস্কৃতায়ন (দ্বিতীয় ভাগ ) ।। রণেশ রায় পুস্তক-আলোচনা ।। অরবিন্দ পুরকাইত কবিতা ।। লেগে থাকা রোদ্দুরের ঘ্রাণের মতো ।। জয়শ্রী ব্যানার্জি কবিতা ।। ভুল ।। সুপ্রভাত মেট্যা কবিতা ।। উন্মেষ ।। বিশ্বজিৎ সেনগুপ্ত কবিতা ।। গার্হস্থ্য ।। বিবেকানন্দ নস্কর একগুচ্ছ বিজয়ের কবিতা ।। বিচিত্র কুমার গল্প ।। পোষ্য ভূত ।। সমীর কুমার দত্ত কবিতা ।। আশপাশ ।। প্রতীক মিত্র কবিতা ।। মেঘ ।। তীর্থঙ্কর সুমিত অণুগল্প ।। বংশীবদনের সুখদুঃখ ।। দীনেশ সরকার কবিতা ।। গভীর রাত ।। সুনন্দ মন্ডল তিনটি কবিতা ।। সুশান্ত সেন ভালোবাসার বাসা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত অণুগল্প ।। শিক্ষকের সম্মান ।। মিঠুন মুখার্জী কবিতা।। প্রশ্ন ।। জীবন সরখেল কবিতা ।।ক্ষরিত সে পথ ।। রহিত ঘোষাল কবিতা ।। রক্ত দিয়ে কেনা ।। মুহাম্মদ মুকুল মিয়া কবিতা ।। কংক্রিট ।। আলাপন রায় চৌধুরী ছড়া ।। শীত নেমেছে ।। রঞ্জন কুমার মণ্ডল কবিতা ।। কিছু শব্দ ।। সমীর কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় কবিতা ।। শীতের নগ্নতা ।। রানা জামান কবিতা ।। পথ চলা ।। পাভেল আমান বেদ পু...

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ৮৬তম সংখ্যা ।। বৈশাখ ১৪৩২ এপ্রিল ২০২৫

সম্পাদকীয় এই সংখ্যাটি বাংলা নববর্ষ বিষয়ক সংখ্যা। নৱৰ্ষকেন্দ্রিক বহু তথ্যপূর্ণ লেখা এই সংখ্যাটিকে সমৃদ্ধ করেছে। বাংলা নববর্ষ উদযাপনের ইতিহাস, রীতিনীতি, উৎসব, পার্বন, লোকাচার, রূপান্তর বহুবিধ বিষয় প্রকাশিত হয়েছে এই সংখ্যার লেখাগুলিতে। এই সংখ্যার বাছাই কিছু লেখার সঙ্গে আগামীতে আরও কিছু লেখা সংযুক্ত করে বাংলা নববর্ষ বিষয়ক একটি মুদ্রিত সংখ্যা প্রকাশ করার ইচ্ছে রইল।  সকলকে নববর্ষের আন্তরিক শুভকামনা জানাই। উৎসবে আনন্দে থাকুন, হানাহানিতে নয়। ধর্ম-ব্যবসায়ীদের চক্রান্ত ব্যর্থ করে সহনাগরিকের পাশে থাকুন। মনে রাখুন, ধর্মকে মানুষই সৃষ্টি করেছে। ঈশ্বর আল্লা গড ইত্যাদির জন্মদাতা মানুষই। মানুষকে ভালোবাসুন। মানুষের পাশে থাকুন।  নিরাশাহরণ নস্কর  সম্পাদক, নবপ্রভাত।  সূচিপত্র প্রবন্ধ-নিবন্ধ-স্মৃতিকথা পয়লা বৈশাখ ।। সিদ্ধার্থ সিংহ নববর্ষকেন্দ্রিক মেলা, পার্বন, উত্সব, লোকাচার ।। সবিতা রায় বিশ্বাস নববর্ষ আবাহন ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে এবং বিভিন্ন দেশে ।। তুষার ভট্টাচার্য নববর্ষের সেকাল ও একাল ।। হিমাদ্রি শেখর দাস নববর্ষের হাল-হকিকৎ ।। শংকর ব্রহ্ম বোশেখি বাঙালি নাকি পোশাকি বাঙালি? ।। দিব্যেন্দু...

প্রবন্ধ ।। বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় ।। মাখনলাল প্রধান

বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় মাখনলাল প্রধান বাংলার শিল্প-সংস্কৃতির জগতে যাত্রা শিল্প তথা নাট‍্যশিল্পে মড়ক নেমে এসেছে । যাত্রা শিল্পের মড়কে শুধু কোভিড নয় তার বহুপূর্ব থেকেই অর্থনৈতিক বিপর্যয় , শিক্ষাক্ষেত্রে বন্ধ‍্যাত্ব এবং গ্ৰাম বাংলার পটপরিবর্তন শেষ পেরেক ঠুকে দিয়েছে। যাত্রা-শিল্পের লীলাভূমি ছিল গ্ৰাম বাংলা। গ্ৰামে প্রচুর যাত্রাপালা হত নানা উৎসবকে কেন্দ্র করে । জমিদারি ব‍্যবস্থা লুপ্ত হওয়ার পর গ্ৰামীণ মানুষের উদ‍্যোগে শীতলা পূজা,  কালীপূজা, দুর্গাপূজা, কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা, চড়ক ইত‍্যাদিকে উপলক্ষ‍্য করে যাত্রাপালার আয়োজন না হলে কেমন যেন ম‍্যাড়ম‍্যাড়ে লাগতো। সেই সঙ্গে কলকাতার বড়বড় কোম্পানির যাত্রাপালা ঘটা করে, টিকিট সেল করে হত মাঠে। খুব বড় মাপের খেলার মাঠ যেখানে ছিল না সেখানে ধানের মাঠ নেওয়া হত ‌। ত্রিশ-চল্লিশ হাজার মানুষ দেখতে আসত। স্পেশাল বাস পাঠাত  আয়োজক কর্তৃপক্ষ। বিনা ভাড়ায় বাসে যাতায়াত করত যাত্রার দর্শকেরা। কিন্তু বিকল্প ধানচাষ শুরু হলে জমিগুলো সময় মতো ফাঁকা পাওয়া গেল না । প্রথম দিকে ব‍্যাপকহারে ধান শুরু না হওয়ায় খুব একটা অসুবিধা হত না। বহুক্ষেত্রে  ধান কা...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। নবপ্রভাত ৮৫ ।। চৈত্র ১৪৩১ মার্চ ২০২৫

  সূচিপত্র নিবন্ধ ।। মরিয়ম মির্জাখানি: এক অনন্য গণিতসূর্য ।। ... নিবন্ধ ।। নারী দিবসে যা ভাবা উচিত ।। বিশ্বনাথ পাল প্রবন্ধ ।। প্রাচীনকাল থেকে নারীরা অবহেলিত, বঞ্চিত,... নিবন্ধ ।। আমার চোখে আদর্শ নারী ।। জয়শ্রী বন্দ্... ফিচার।। এই মুহূর্তে বাংলা সাহিত্যে নারীদের লেখালেখ... আফ্রিকার লোককথা ।। করোটিকে বিয়ে করা অবাধ্য মেয়েটি ... ছোটগল্প ।। মানবী ।। ভুবনেশ্বর মন্ডল নিবন্ধ ।। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে অন্যতম নারী মু... নিবন্ধ ।। প্রিয় মহিলা সাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবী ।। ... গল্প ।। উই ওয়ান্ট জাস্টিস ।। রবীন বসু প্রবন্ধ ।। নিপীড়িতা ।। শ্যামল হুদাতী ফিচার ।। রমণী রতন ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত প্রবন্ধ ।। নারী সমাজ : তখন-এখন ।। তপন মাইতি নিবন্ধ ।। বহমান কালের ধারায় নারী ।। দীপক পাল গল্প ।। আমার দুর্গা ।। অঞ্জনা গোড়িয়া (সাউ) গল্প ।। যোগ্য জবাব ।। সমীর কুমার দত্ত ছোটগল্প ।। আমি দুর্গাকে দেখেছি।। চন্দন দাশগুপ্ত গল্প ।। সম্পর্ক ।। গৌতম সমাজদার কবিতা।। নারী মানে ।। গোবিন্দ মোদক কবিতা।। নারী ।। সমর আচার্য্য ছড়া ।। নারী অসামান্যা ।। সৌমিত্র মজুমদার কবিতা ।। নারী দিবসে ।। বিবেকানন্দ নস্কর কবিতা ।। না...

প্রবন্ধ ।। ভিনগ্রহীদের সন্ধানে ।। শ্যামল হুদাতী

ভিনগ্রহীদের সন্ধানে  শ্যামল হুদাতী  ইতিহাসের শুরু থেকে বারবার মানুষকে একটা প্রশ্ন কুঁড়ে কুঁড়ে খায় – এই মহাবিশ্বে আমরা কি একা? পৃথিবীর মতো আরও গ্রহ রয়েছে, যেখানে মানুষের মতো বুদ্ধিমান প্রাণীরা বাস করে – এই সম্ভাবনা বরাবর মানুষকে মুগ্ধ করেছে। আমাদের প্রত্যেকের জীবনের কখনও না কখনও এই ভাবনা এসেছে। দীর্ঘ কয়েক দশকের গবেষণার পরও, এই বিষয়ে কোনও নিশ্চয়তা দিতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। জেমস ওয়েব মহাকাশ টেলিস্কোপ, বহু দূরের এমন কিছু গ্রহের সন্ধান দিয়েছে, যেগুলিতে প্রাণ থাকতেই পারে। তবে, নিশ্চিত কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে, আমেরিকার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাম্প্রতিক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, ভিনগ্রহীদের খুঁজতে বহু দূরে যাওয়ার কোনও দরকার নেই। তারা এই পৃথিবীতেই মানুষের ছদ্মবেশে মানুষের মধ্যেই বসবাস করতে পারে। আমরা ভিনগ্রহীদের যেমন কল্পনা করি, এরা তার থেকে আলাদা। এরা অনেকটাই, দেবদূতদের মতো। মানব জগতের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক প্রযুক্তিগত নয়, বরং জাদুকরি। মহাকাশে সৌরজগতের গ্রহ পৃথিবী ছাড়া অন্য কোথায় প্রাণ রয়েছে কি না তা নিয়ে চলছে বিস্তর গবেষণা। একই সঙ্গে পৃথিবী ছাড়া অন্য কোনো গ্রহে মানুষ বসবাস ক...

মাসের বাছাই

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬

  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠালে  অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে হলে ভালো। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # ...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯২তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩২ অক্টোবর ২০২৫

—: সম্পাদকীয় দপ্তর থেকে :— এই সংখ্যার জন্য লেখা এসেছিল প্রায় ১৮০টা। কিন্তু গুণগত মানে দুর্বল লেখার সংখ্যা বহু। আমরা নবপ্রভাতে নতুনদের কথা ভেবে বেশ কিছু দুর্বল লেখাও রাখি। কিন্তু সবসময় একই লোকের দুর্বল লেখা প্রকাশ করা অনুচিত বলে মনে করি। শেষ পর্যন্ত ৯৯ জনের লেখা রাখা গেল। যাদের লেখা প্রকাশিত হল না, তারা লেখাগুলি অন্য যেখানে খুশি পাঠাতে পারেন। বিশেষ কারণে এই সংখ্যার মুদ্রিত সংস্করণ প্রকাশিত হচ্ছে না। আমরা দুঃখিত। তবে মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি শীঘ্রই আসছে। সঙ্গে থাকুন। সকলকে উৎসবমুখর বর্ণময় শুভেচ্ছাসহ— —নিরাশাহরণ নস্কর, সম্পাদক, নবপ্রভাত। অনুরোধ : প্রকাশিত লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন, ছবি/স্ক্রীনশট নয়।  == সূচিপত্র == পড়া-লেখার ইতিহাস অনুসন্ধান।। তপন তরফদার উৎসব : মানুষের চিরন্তন আত্মপ্রকাশ।। কৃশানু ব্যানার্জি বাংলা : সভ্যতা ও সংস্কৃতির জন্মভূমি।। শ্যামল হুদাতী সমুদ্র আর অস্তিত্ব ।। সুব্রত চৌধুরী রাজা ছিলেন জুবিন গর্গ ।। গঙ্গা 'অনু'   আদ্যাশক্তি মহামায়ার বাংলা বারো মাসের বারো রূপ ।। অর্হণ জানা মেধাদাদুর আসর ।। রণেশ রায় বৈজ্ঞানিক মা...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯৩তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩২ নভেম্বর ২০২৫

সূচিপত্র বস্তু, চেতনা এবং কবি ।। সজল চক্রবর্তী দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত ।। রণেশ রায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট ও সন্নিহিত অঞ্চলের কথ্য শব্দ ।। অরবিন্দ পুরকাইত চাঁদে জীবন ।। শমীক সমাদ্দার অসমাপ্তি ।। মহুয়া হুই গ্যালাক্সির শব্দে ।। জাসমিনা খাতুন তিনটি কবিতা ।। দিবাকর সেন অপূর্ণতার শেষ অধ্যায় ।। সুপ্রিয় সাহা হাফ ডজন ছড়া ।। স্বপনকুমার পাহাড়ী স্বাপ্নিক অমলের ঘুৃম ।। সঞ্জয় দেওয়ান দুটি কবিতা ।। সৌমিত্র উপাধ্যায় পথ চলতি ✍️পার্থ প্রতিম দাস হেমন্তের বিষাদ ছুঁয়ে ।। শক্তিপদ পাঠক রাই আর বাবা ।। অদিতি চ্যাটার্জি স্থিতিশীল ।। রঞ্জিত মুখোপাধ্যায় হৃদয়ের শূন্য কোড ।। লিপিকা পিঙ্কি দে অমানিশা ।। সৌভিক মুখার্জী দৃষ্টিগত ।। শামীম নওরোজ জ্যান্ত ভূতের গপ্পো ।। পার্থ সারথি চট্টোপাধ্যায় ধুতরা ফুলের ঘ্রাণ ।। মজনু মিয়া তারা খসার আলোয় ।। তীর্থঙ্কর সুমিত উত্তরণে অন্তরায় ।। সমীর কুমার দত্ত প্রেম মুদ্রা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ধারা ।। লালন চাঁদ অন্যের ব্যথায় ব্যথি ।। জগদীশ মণ্ডল গর্ভ ।। শাশ্বত বোস ভ্রমণ বিষয়ক স্মৃতিকথা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত শাপে বর ।। সাইফুল ইসলাম রবিবার ।। সঙ্ঘমিত্রা দাস দুটি ...

দিদৃক্ষা ।। রাজেশ কে. চক্রবর্ত্তী

  দিদৃক্ষা রাজেশ কে. চক্রবর্ত্তী 'কাল একবার দেখা হতে পারে?' দশমীর দুপুরে খাটে আধশোয়া হয়ে নিজের ফোনটা ঘাঁটছিল দেবমাল্য; হোয়াট্‌সঅ্যাপের সার্চ বক্সে  র‍্যান্ডম সিক্যুয়েন্সে ক'খানা ডিজিট ইনপুট করতেই বিস্মৃতির অতল থেকে অপ্রত্যাশিতভাবে যে নামটা স্ক্রিনের সারফেসে ভেসে উঠল, এককালে দেবমাল্যের প্রায়োরিটি লিস্টে সবথেকে ওপরে পিন্‌ করা থাকতো এই অ্যাকাউন্টটা। 'অহনা দাশগুপ্ত'—গ্রেয়েড-আউট ডিপিটার ডানদিকে, নামটার তলায় নিস্প্রভ হরফে ভেসে থাকা ওর এই লাস্ট মেসেজটা বেশ ক'বছরের পুরনো, কিন্তু দেবমাল্যর স্মৃতির প্যান্ডোরা বাক্সটি উলটে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল। আরেকবার আপাদমস্তক শিহরিত হয় সে। প্রোফাইলটা খুলে ওপরে-নীচে স্ক্রল্‌ করে দেখে, ওদের পুরনো চ্যাটগুলো তেমনি আড়ষ্ট হয়ে পড়ে আছে, ওর মেসেজগুলোর পাশে ডাবল টিকগুলো এখনও জাজ্বল্যমান সবুজে ছোপানো, যেন এইমাত্র 'সিন্‌' করে রেখেছে অহনা! যেন এখুনি আবার হাত বোলালেই অহনা এসে খানিকটা রাগত ভঙ্গিতে চ্যাট করতে লেগে যাবে। দেবমাল্যের বুক ছাপিয়ে একটা নীরব দীর্ঘশ্বাস উঠে আসে! ছুটির এই আমেজটা লক্ষ্মীপুজো অব্দি গড়াবে—অফিস খুললেই তো আবার দমফাটা ব্য...

গুচ্ছকবিতা || শিশির আজম

  গুচ্ছকবিতা || শিশির আজম হুইসেল (মুরাকামি থেকে অনুপ্রাণিত) ♦ 'গভীর রাতে একটা হুইসেল কতটা গভীর হতে পারে তুমি কল্পনাও করতে পারো না,' ছেলেটা বললো, 'আশ্চর্য ঐ হুইসেলের মতো আমি ভালবাসি তোমাকে।' কিন্তু গভীর রাতে অন্ধকারে কখনও তো ঘুম ভেঙে যায়নি মেয়েটার, কখনও ও বিচ্ছিন্ন আর একা হয়ে যায়নি। ও কীভাবে অনুভব করবে গভীর রাতে ট্রেনের হুইসেল কতটা গভীর! নিউজ এজেন্সি ♦ একসময় আমরা খবর শুনতাম এখন দেখি স্বীকার করতে হবে খবর শোনার চেয়ে দেখার আনন্দ বেশি আলাদা উত্তেজনা নিউজ এজেন্সিগুলো এব্যাপারে তৎপর আর প্রতিযোগিতাপূর্ণ কোনটা নিউজ সেটা ওরাই ঠিক করে যেটা ওদের দরকার আর সেটাই আমাদের দেখানো হয় ধারাবাহিকভাবে সুচারু জ্যামিতিকতায় বিভিন্ন পদ মিশিয়ে খাওয়ানো হয় নতুন বাস্তবতা নির্মাণে যে বাস্তবতায় জায়গা নেই আমাদের ইতিহাস অন্বেষা স্বাধীনতার সমৃদ্ধি আর স্বাধীনতার কথা বলেই ওরা আমার ক্ষেতখামার পাহাড় আর নদীর দখল নিয়েছে তাহলে টিভিতে যে হাসিখুশি প্রাণবন্ত আমাদেরকে দেখানো হয় ওরা কারা এই প্রশ্ন করো নিজের কাছে আগুন নিয়ে খেলা ♦ আজও পুকুরে ছিপ ফেলে বসবো আমি ধীরে চুপ সূর্য আমার ঘাড়ে শ্বাস ফেলবে সারারাত ঘরের ভেতর ল্যাং...

বিদায়ের স্রোত ।। চয়ন মন্ডল

  বিদায়ের স্রোত চয়ন মন্ডল "বিজয়া দশমী—আনন্দের দিন, কারও কাছে যা হয়ে উঠল চিরন্তন বিদায়।" আজ বিজয়া দশমী। শিউলি ফুলের গন্ধে ভোরটা অন্যরকম। পাড়ার প্যান্ডেলে অদ্ভুত এক কোলাহল—মায়ের বিদায় যে আজ। শঙ্খধ্বনি, ঢাকের বাজনা আর উলুধ্বনিতে গমগম করছে চারদিক। একদিকে মা দুর্গার বিদায়ের বেদনা, অন্যদিকে আনন্দ ও মিলনমেলা। সারা বছরের অপেক্ষা শেষে এই দিনটিতে প্যান্ডেল ভরে উঠেছে মানুষের ভিড়ে। সকালের পূজার্চনা শেষ হতেই শুরু হয়েছে সিঁদুর খেলা। মহিলারা মায়ের প্রতিমাকে সিঁদুর পরিয়ে একে অপরের কপালে, গালে রাঙিয়ে দিচ্ছেন। ঢাকের তালে আর শাঁখ বাজনার আবেশে ভেসে যাচ্ছে পাড়া। শুরু হয়েছে প্রতিমা বিসর্জনের প্রস্তুতি। কিন্তু এসবের মধ্যে নেই অনুরাধা। কেউ তার বা মিনির খোঁজ রাখেনি। মুখার্জিদের দোতলা বাড়ির কোণের ঘরে বসে সে চোখের জল ফেলছে। সবার বাড়িতে আলোর রোশনাই, ভোগের গন্ধ, হাসি—শুধু তাদের ঘরটিতে নিস্তব্ধতা। গতবছর এই দিনেই তো অন্যরকম ছিল সবকিছু। অনুরাধা, সুজয় আর তাদের তিন বছরের মেয়ে মিনি পাড়ার প্যান্ডেলে ঢাকের তালে নেচেছিল, সিঁদুর খেলায় রঙে ভেসেছিল। বিকেলের দিকে প্রতিমা বিসর্জনের মিছিলে শামিল ...

কবিতা ।। অরণ্যকন্যা ।। অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়

  অরণ্যকন্যা অরিন্দম চট্টোপাধ্যায় অরণ্যকন্যার দৃষ্টির ভেতর বিষাদ বিন্দু ফোঁটা ফোঁটা জলের মতো গড়িয়ে যায়, হয়ে যায় কোন নদীপথ দৃষ্টি ভেঙে ভেঙে চলে যায় কোন এক শূন্য পথে অরণ্যকন্যার হৃদয়ের ভেতর ভাঙে যতো বৃক্ষপত্র নতুন পত্র পুষ্পের খোঁজ নেই ঠোঁট জুড়ে সমুদ্রকাঁপন বুদবুদের মতো অস্ফুট হয়ে উচ্চারিত হয় কোন অক্ষর শব্দ আর তাঁর শরীর থেকে ছড়িয়ে যায় হয়ে যায় একটা অদৃশ্য কবিতা...    ================== @ অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়,  বেহালা, কলকাতা -৭০০০৬০,  

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯১তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পাদকীয় দপ্তর থেকে এই সংখ্যায়  'শিক্ষা ও শিক্ষক' বিষয়ক বেশ কিছু লেখার পাশাপাশি রয়েছে বিচিত্র বিষয়ের আরও কিছু লেখা। সব মিলিয়ে সংখ্যাটি আপনাদের সমৃদ্ধ করবে, আপ্লুত করবে — এ বিষয়ে আমরা আশাবাদী। আপনাদের মতামত অবশ্যই জানাবেন। আমরা প্রতীক্ষিত।            আগামী অক্টোবর ২০২৫ সংখ্যা 'উৎসব সংখ্যা' হিসাবে প্রকাশিত হবে। ওয়েব সংখ্যার পাশাপাশি নির্বাচিত লেখাগুলি নিয়ে একটি pdf এবং তার মুদ্রিত সংস্করণও প্রকাশিত হবে। তাই অপ্রকাশিত ভালো লেখা পাঠান। বিশেষ কোনও বিষয় নেই। প্রবন্ধ-নিবন্ধ-ফিচার ২০০০ শব্দ, গল্প ১২০০ শব্দ, অণুগল্প ৫০০ শব্দ, কবিতা-ছড়া ২৪ লাইনের মধ্যে হলে ভালো। ইমেলঃ nabapravatblog@gmail.com           বিস্তারিত বিজ্ঞপ্তি আসবে। সামাজিক মাধ্যমে আমদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন। সময় মতো সব সংবাদ পেয়ে যাবেন।  শারদ উৎসবের দিনগুলি সকলের আনন্দে কাটুক এই কামনা করি। —নিরাশাহরণ নস্কর সম্পাদক: নবপ্রভাত মোঃ ৯৪৩৩৩৯৩৫৫৬ Whatsapp Group:  https://chat.whatsapp.com/ AIpj98JKbloFSpeqMcpr6j Facebook Page:  https://www.facebook.com/ share...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো,  তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) য...

শেষ বিকেলের আলো ।। সৈকত প্রসাদ রায়

  শেষ বিকেলের আলো সৈকত প্রসাদ রায় রানাঘাট শহরের প্রান্তে ছোট্ট এক পাড়া বিশ্বাসপাড়া। সেই পাড়ার পুরোনো ভাঙাচোরা বাড়িটায় থাকেন পুষ্পরাণী ভট্টাচার্য— বয়স পঁয়ষট্টির কোঠায়। সবাই তাকে "পুষ্পদি" বলেই চেনে। একসময় প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতা করতেন, এখন অবসর নিয়েছেন। প্রতিদিন বিকেলে পুষ্পদি বারান্দায় বসে চা খান। ছোট একটা টেবিল, কয়েকটা পুরোনো বই, আর একখানা নীল কাঁচের ফুলদানি — তার নিত্যসঙ্গী। বারান্দার সামনেই একটা গলি, যেখান দিয়ে প্রতিদিনই স্কুল ছুটির পরে বাচ্চারা হইচই করে ছুটে যায়। পুষ্পদির একমাত্র ছেলে অনিরুদ্ধ — কলকাতায় চাকরি করে। ছেলেটা আধুনিক, নিজের সংসার আছে, স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ব্যস্ত। বছরে হয়তো একবার আসে, তাও কিছুক্ষণ বসে আবার চলে যায়। পুষ্পদি মুখে কিছু বলেন না, কিন্তু বুকের ভেতরে একটা কষ্ট জমে থাকে। সেই বিকেলটা অন্যরকম ছিল। আকাশে ধুলো, গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা। হঠাৎ পুষ্পদির চোখে পড়ে — রাস্তায় এক কিশোর বসে আছে। বয়স বারো-তেরোর বেশি নয়। মলিন জামা, পায়ে ছেঁড়া চটি। ছেলেটা একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে পুষ্পদির বাড়ির গেটে ঝুলে থাকা পুরোনো নোটিশবোর্ডটার দিকে, যেখানে একসময় লেখা ছিল — "পুষ্পরাণী ভ...