Skip to main content

প্রবন্ধ ।। ঘুড়ির বিচিত্র কাহিনি ।। চন্দন দাশগুপ্ত


ঘুড়ির বিচিত্র কাহিনি 

চন্দন দাশগুপ্ত 


মোবাইলে মত্ত আজকের মানুষের আকাশের দিকে তাকানোর সময় নেই। তবুও কয়েকজন এখনো পুরোনো অভ্যাস ছাড়তে পারেননি। আর বোধহয় তাঁদেরই জন্য আজও লুপ্তপ্রায় হয়েও বেঁচে আছে ঘুড়ি শিল্প। 

          অনেকের মতে, হাজার চারেক বছর আগে চীন দেশেই সর্বপ্রথম ঘুড়ি ওড়ে। শোনা যায়, চীনা চাষিরা ঝড়ের সময় তাঁদের টুপি সুতো দিয়ে বেঁধে রাখতেন। সেখান থেকেই ঘুড়ির ভাবনা আসে। কেউ কেউ বলেন, দুজন চীনা দার্শনিক মজি আর লু ব্যান সর্বপ্রথম ঘুড়ি আবিষ্কার করেছিলেন। অনেকের অবশ্য ধারণা, ঘুড়ির প্রথম প্রচলন চীনদেশে হলেও সময়টা অতটা আগে নয়, আনুমানিক ১০০০ খৃষ্ট-পৃর্বাব্দ। কয়েকজনের মতে, ৪০০ খৃষ্টপূর্বাব্দে 'আর্কাইতের' নামে একজন গ্রীক সর্বপ্রথম ঘুড়ি উড়িয়েছিলেন টেরানটাসে। আবার এমনও শোনা যায় যে, ২০০ খৃষ্টপূর্বাব্দে হ্যান বংশীয় রাজা হানসিন একবার যুদ্ধের সময় সুড়ঙ্গ খোঁড়ার জন্য ওয়ে ফ্যাং শহরে ঘুড়ি উড়িয়ে নিজ প্রাসাদ থেকে শত্রুশিবিরের দূরত্ব মেপে নিয়েছিলেন। ফলে কতটা লম্বা সুড়ঙ্গপথ দরকার, তা তিনি আগেই জেনে নিতে পেরেছিলেন। 

           চীনা ভাষায় ঘুড়িকে বলা হত 'কাগুজে চিল'। একটা সময় চীনে তৈরি হত 'মু ইয়ুয়ান' অর্থাৎ কাঠের ঘুড়ি। পরে কাগজ আবিষ্কার হলে তৈরি হয় 'ঝি ইয়ুয়ান' বা কাগজের ঘুড়ি। চীনারা সাধারণভাবে ঘুড়িকে বলেন 'ফেং ঝিং'। মোটামুটি  ৫০০ খৃষ্টাব্দ নাগাদ জাপান, থাইল্যান্ড, কোরিয়া, তাইওয়ান, ফিলিপাইনস, ইন্দোনেশিয়া প্রভৃতি প্রাচ্যের দেশগুলিতে এবং পশ্চিমদিকের আরবীয় দেশগুলিতে ঘুড়ি ওড়ানো শুরু হয়। আফগানিস্তানে ঘুড়িকে বলা হয় 'গুড়িপারান বাজি'। জাপানে বৌদ্ধ ধর্মপ্রচারকেরা দুষ্টের দমন কল্পনায় ঘুড়ি ওড়াতেন। হিয়ান আমলেই জাপানে ঘুড়ি ওড়ানো শুরু হয়। ১৬০৩--১৮৬৮ খৃষ্টাব্দ পর্যন্ত সময় ছিল জাপানে ঘুড়ির স্বর্ণযুগ। জাপানীদের বিশ্বাস ছিল ঘুড়ি ওড়ালে কৃষিজাত উৎপাদন বাড়ে। তবে শোনা যায়, সেখানে নাকি ঘুড়ির নেশা মানুষকে কর্মবিমুখ করে তুলেছিল। তাই কিছু কাজপাগল জাপানী ঘুড়ি ওড়ানো পছন্দ করতেন না। ঘুড়ি নিয়ে মানুষের মধ্যে ছিল নানা সংস্কার। কোরিয়ার জনশ্রুতি, সিলা রাজবংশের সেনাপতি গিম উ 'শিনের আদেশে তাঁর সেনারা শত্রুশিবির আক্রমণ করার সময় দেখে আকাশ থেকে উল্কাপাত হচ্ছে। অশুভ আশঙ্কায় তারা পালাতে থাকে। তখন গিম একটি ঘুড়ির মাথায় আগুনের গোলা জুড়ে দিয়ে আকাশে ওড়ান। তখন তাঁর সেনারা ভাবে, যে শয়তান আকাশ থেকে নামছিল সে এখন ওপরে উঠছে----এটা নিশ্চয় শুভ সঙ্কেত। তখন তারা নতুন উদ্যমে শত্রুর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে যুদ্ধে জয়লাভ করে। তাই ঘুড়ি ওড়ানোর সাথে যুদ্ধের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে। 'ভোকাট্টা' চীৎকারের মাধ্যমে একের পর এক প্রতিপক্ষের ঘুড়ির সুতো কেটে দেওয়া----যেন মহাশূণ্যে আধিপত্য বিস্তারেরই বহিঃপ্রকাশ। 

        ১৬৯৪ সালে এক ডাচ বণিকের মাধ্যমে ইউরোপে ঘুড়ির প্রচলন হয়। আর অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষদিকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ঘুড়ি বিশেষ জনপ্রিয়তা লাভ করে।

         ঘুড়ি আকাশে ওড়ার পেছনে যে বিজ্ঞান আছে, তাকে বলে এরোডায়নামিকস্ বা বায়ুগতিবিদ্যা। পরস্পর-বিরোধী দুটি শক্তি ঘুড়ির ওপর একসাথে কাজ করে। একটি বাতাসের আকর্ষণ শক্তি, অন্যটি সুতোর মাধ্যমে নিম্নাভিমুখী টান। এই দুই শক্তি সমানে সমানে কাজ করে বলেই ঘুড়ি আকাশে ওড়ে। প্রযুক্তিগত দিক থেকে দেখলে এদেশে প্রচলিত বিভিন্ন ঘুড়ি ( যেমন, বাক্স ঘুড়ি, মাছ ঘুড়ি, পতঙ্গ ঘুড়ি) বিশেষত চৌকো ঘুড়ি খুবই উচ্চমানের। এইসব চৌকো ঘুড়ি হয় দ্বি-মাত্রিক---ওড়ার সময় মাথাটি সামনের দিকে ঝুঁকে থাকে। সুতোর টানের জন্য পিছনের চেয়ে সামনের বাতাসে বেশি চাপ দেয়। আর এই চাপের পার্থক্যের জন্য যে লব্ধি বলের সৃষ্টি হয়, সেটাই ঘুড়িকে ওপরে উঠতে সাহায্য করে। এজন্যই সুতো টানলে ঘুড়ি ওপরে উঠতে থাকে।

         ঘুড়ি ওড়ার সময় তিন ধরণের অসাম্য হতে পারে। এদেরকে বলে 'পিচ'( ঘুড়ির ডাইনে-বাঁয়ে আড়াআড়ি অক্ষের ওপর ঘূর্ণন ), 'রোল' (সুতো বরাবর অক্ষের ওপর ঘূর্ণন--এটাই হয় সর্বাধিক ),  এবং 'ইঅ' ( উল্লম্ব অক্ষের ওপর ঘূর্ণন)। ঘুড়ির লেজের পাখনাদুটি 'পিচ' নিয়ন্ত্রণ করে। বাতাসের চাপে এগুলি অল্প ওপরে উঁচু হয়ে কিছুটা 'ইঅ'-ও নিয়ন্ত্রণ করে। ঘুড়িতে ধনুকের মতো যে বাঁকানো কাঠিটা থাকে, সেটি সংনমনশীল। তাই ঘুড়ি ওপরে উঠলে তা বেঁকে গিয়ে 'রোল' নিয়ন্ত্রণ করে। ঘুড়ির দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের অনুপাতকে তার 'অ্যাসপেক্ট রেশিও' বলে। এটি সাধারণত ১ এর কাছাকাছি হয়। ফলে ঘুড়িকে সহজেই এদিক-ওদিক চালনা করা যায়। এই অনুপাত ১ এর কম হলে ঘুড়িকে আরও দ্রুত এদিক-ওদিক চালনা করা সম্ভব ঠিকই,  কিন্তু সেক্ষেত্রে ঘুড়ির সাম্য বজায় রাখা কঠিন হয়ে পড়ে।

            ঘুড়ি ওড়া নিয়ে রয়েছে বহু বিচিত্র রেকর্ড। ১৯৩৬ সালে জাপানের নারুতো সিটিতে বানানো হয়েছিল একটা বিরাট ঘুড়ি, যার ওজন ছিল প্রায় সাড়ে ন-টন ! এতে কাগজ লেগেছিল ৩১০০ খানা। ১৯৮৭ সালের ১৫ নভেম্বর ফ্রান্সের আকাশে এক বিশাল ( ৭০৫ মিটার লম্বা ) ঘুড়ি উড়িয়েছিলেন মাইকেল ট্রায়লেট, ফিলিপ বোস্টন, আর পিয়েরে এগলিন। ঐ বছরেই ১৫ মার্চ একসাথে ২২৩৩ টি ঘুড়িকে আকাশে উড়িয়ে রেকর্ড করেছিলেন জাপানের হিরোসীমা ক্লাবের সদস্যেরা। এই রেকর্ড অবশ্য ভেঙে দিয়েছেন একজন জাপানী ( কাজহিকো ), তিনি একসাথে ৪১২৮ টি ঘুড়ি উড়িয়েছিলেন। তবে সবচেয়ে বড় ঘুড়ির মাপ জানা গেছে ১০৩৪ মিটার। ৯৬৭ জন জার্মান এক ইভেন্টে একসাথে ঘুড়ি উড়িয়ে রেকর্ড করেন। ২০০৯ সালে সেই রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে এক হাজারের বেশি শিশু। তারা ইউনাইটেড নেশনসের উদ্যোগে ইজরায়েলের গাজার বীচে একসাথে ঘরে তৈরি রংবেরঙের ঘুড়ি উড়িয়েছিল। ১৯৮৯ সালের ২২ সেপ্টেম্বর আমেরিকায় ওড়ানো হয়েছিল বিশ্বের সবচেয়ে গতিশীল ঘুড়ি--বেগ ছিল ঘন্টায় ১৯৩ কিলোমিটার। আবার একজন জাপানী ঘুড়ি প্রস্তুতকর্তা একই লাইন বরাবর বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ( ১১২৮৪ টি ) ঘুড়ি উড়িয়ে বিশ্বরেকর্ড করেছেন।

          এখনও অক্ষত আছে ১৯৮২ সালের আগস্ট মাসের শেষ সপ্তাহে ১৮০ ঘন্টা ১৭ মিনিট একটানা উড়তে থাকা ঘুড়ির রেকর্ড। উড়িয়েছিলেন আমেরিকার এডমন্ডস কমিউনিটি কলেজের কিছু ছাত্র। এর পরের বছরই ( ১৯৮৩ ) আমেরিকার ওয়াশিংটন শহরে এক ঘুড়িপ্রেমী ৭২৫৭ কিলোগ্রাম ওজনের একটি বিশালাকৃতির ঘুড়ি ওড়ান। সর্বাধিক উচ্চতায় ( সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৯৮৪৫ মিটার) ঘুড়ি ওড়ানোর রেকর্ড দখলে রেখেছে জার্মানির লিন্ডেনবার্গ শহর (১৯১৯ )। ২০১৪ সালের ২৩ শে সেপ্টেম্বর চারজন অস্ট্রেলিয়ান ১১×১১ মিটার মাপের একটি বিশাল ঘুড়িকে ভূপৃষ্ঠ থেকে ৪৯২৬ মিটার উঁচুতে তুলেছিলেন। ইংল্যান্ডের ফ্লেক্সফয়েল ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি ঘুড়ি প্রস্তুতকারী সংস্থার ঘুড়িতে চড়ে সবচেয়ে কম সময়ে ( আড়াই ঘন্টায় ) ইংলিশ চ্যানেল পার হবার রেকর্ড আছে। তবে সেই সংস্থার দাবী, বন্দর রক্ষীরা বার বার তাঁদের না আটকালে তাঁরা ২ ঘন্টাতেই ইংলিশ চ্যানেল পার হতে পারতেন।

         অনলাইনে বিক্রি হওয়া একটি দামী ঘুড়ি হল ইংল্যান্ডে তৈরি মার্টিন লেস্টার ফ্লেমিংগো কাইট, দাম ১১৫৯১৯ টাকা। এর প্লাস্টিকের ফ্লেমিংগোটি-র ডানার সাইজ ২.৫ মিটার। ঘুড়িটির সুতো ফাইবার গ্লাসের। এছাড়াও অনলাইনে পাওয়া যায় পেপার কাইট ( ৪১৪৩২ টাকায় ১০০ টি ), ঈগল ঘুড়ি ( ৫০ সেন্টিমিটার মাপের--৫৮৬ টাকা), আর লম্বা লেজওলা জার্মান স্পাইডারম্যান ( ৮১৯ টাকা )। তবে পৃথিবীর দুটি দেশে ঘুড়ি ওড়ানো নিষিদ্ধ -- রাশিয়া এবং আইল্যান্ড। সাবেক পূর্ব জার্মানিতে আবার বিরাট ঘুড়ি ওড়ানোতে নিষেধাজ্ঞা ছিল--যাতে সেই ঘুড়িতে চড়ে কেউ তৎকালীন বার্লিন প্রাচীর টপকাতে না পারে !

         ঘুড়ি জগতের পরিভাষাও খুবই বৈচিত্র্যময়---কাঁপকাঠি, পেটকাঠি, চিতেন ভাঙা, ভো-কাট্টা, ভো-ম্মারা, লাট খাওয়া, গোঁৎ খাওয়া, কাহ্নিক, টাংকি, তোল্লাই, লক দেওয়া, চং দেওয়া, ঢিলা, ভলকা, টাইট, খিঁচ, আড় খিঁচ, ডবকা, মাঞ্জা, দাঁত্তি পড়া, নাক্কু, গদ্দা, চপার মারা, দুয়োক্কো, বাড়েনাক্কো, হপ্তা ধরা,,,,,,,,। ঘুড়িও আছে অজস্র নামের---পেটকাটি, লাট্টু, বগ্গা, গ্লাসকাটিং, পাছাপেড়ে, মোমবাতি, চাপরাশ, চাঁদিয়াল, পান্ডা, আদ্দা, তুককল, দেড়কারানি, ময়ুরপঙ্খী, আধিয়াল, ববি, ঘয়লা, চৌরঙ্গী, পান্ডা, একতেল, সিকিতেল, দোতে, বাউনটেক্কা, কড়িয়াল, মুখপোড়া......। চীন, জাপান, ইন্দোচীনে মাছ, ড্রাগন, প্রজাপতি, পরি, পাখী, আর মানুষের আদলেও ঘুড়ি তৈরি হয়। আজকাল ভারতের বাজারেও পাওয়া যায় বার্বি গার্ল, ডোরেমন, মিকি মাউস, ছোটা ভীম, হনুমান, এমনকি সিনেমার নায়ক-নায়িকার আদলে তৈরি বিশাল আকারের ঘুড়ি। টিটাগড়ের পি কে বিশ্বাস রোডে রয়েছে ঘুড়ির বিরাট বাজার। রাজস্থানের জয়পুরের মতি দুংরিতেও রয়েছে বড় ঘুড়ি-পট্টি। সেখানে সবচেয়ে ছোট ঘুড়িকে বলে হাফ সেল আর সবচেয়ে বড় ঘুড়ির সাইজ হল ২-সেল।

           তবে, ঘুড়ির প্যাঁচ খেলার প্রসঙ্গ উঠলেই অবধারিত ভাবে আসবে মাঞ্জা বা 'সুতোয় ধার' দেবার কথা। এই মাঞ্জাও আছে হরেক রকমের---লুদদি মাঞ্জা, গোলা মাঞ্জা, ছাড়া মাঞ্জা, টানা মাঞ্জা, ফেত্তি, আড়, চপার,......। ভাত, সাবু, ইসবগুলের ভুষি দিয়ে মন্ড তৈরি করে তাতে মিহি কাঁচের গুঁড়ো মিশিয়ে তৈরি হয় এইসব মাঞ্জা। কেউ কেউ তাতে মেশায় বিভিন্ন রঙ, গাব গাছের আঠা, ফেভিকল, ডেনড্রাইট, এমনকি ডিম পর্যন্ত ! তবে বেরিলির সুতো আর লখনউ এর সালামতের মাঞ্জা ভারতবিখ্যাত। কারণ, এইসব মাঞ্জাতে কাঁচগুঁড়োর বদলে ব্যবহার করা হয় হীরা-পালিশের তলানি, যার দাম অনেক বেশি। তবে দক্ষিণ আর পশ্চিম ভারতে ঘুড়ির সুতোয় কাঁচগুঁড়োর মাঞ্জা দেওয়া সম্পূর্ণ বে-আইনী।

          ঘুড়ির জন্য আগে আসত জার্মানির কাগজ। এখন দেশি কাগজেই ঘুড়ি তৈরি হয়, এমনকি খুব পাতলা প্লাস্টিক দিয়েও আজকাল ঘুড়ি তৈরি হচ্ছে। আরেকটি জরুরি উপকরণ হল মেটিয়াবুরুজের বাঁশের কাঠি। 

          ১৯২০-২৫ সালের দুজন ঘুড়িবাজের কথা জানা যায় শংকর সেনগুপ্তের একটি লেখায়। এঁরা হলেন ফ্রী স্কুল স্ট্রীট এলাকার দুই অ্যাংলো ইন্ডিয়ান ম্যাক সুইনি এবং চেটার। এই ম্যাক সুইনির শিষ্য ছিলেন বৌবাজারের মধু গুপ্ত লেনের যতীন্দ্রচন্দ্র ধর এবং মণীন্দ্রচন্দ্র ধর। এই মণীন্দ্র চন্দ্র নাকি মাত্র দেড় হাত সুতোর মধ্যেই এমন মারাত্মক প্যাঁচ দিতে পারতেন যে তাঁর নাম হয়ে গিয়েছিল 'দেড়হাতি মণি' ! এই ধর ব্রাদার্সের তৈরি ঘুড়ির ব্র্যান্ডের নাম ছিল 'D' । উত্তর কলকাতার বাসিন্দা রামদুলাল দে-র পুত্র প্রমথনাথ, ঘুড়ি-লাটাইয়ে সেযুগের শেষ কথা, লাটাই থেকেই হয়ে গিয়েছিলেন বিখ্যাত লাটুবাবু। মানিকতলার কানাই সেনের বিখ্যাত ঘুড়ি-মাঞ্জার কারখানা বেশ কয়েক বছর ধরে বন্ধ। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য,  ঘুড়িপ্রেমী সতীশ সামন্তের শৈশবে ঘুড়িতে হাতেখড়ি হয় চারু ওস্তাদ, তিনকড়ি আর হরিহর বাগের কাছে। সেই শৈশবের নেশা পরে জীবিকা হয়ে দাঁড়াল। উত্তর কলকাতার ডি.এল.রায় রোডে 'সতীশের ঘুড়ি'র দোকানে এখনও ময়দানী ঝুলা, ট্রিপল ডোর সহ বিভিন্ন দামী কেমিক্যাল মাঞ্জা দেওয়া ৩-১২ হাজার মিটার সুতোর লাটাই সাজানো থাকে। আগেকার বাঁশ-কাঠের লাটাইয়ের জায়গা অবশ্য ক্রমশ কেড়ে নিচ্ছে সুদৃশ্য শক্ত-পোক্ত প্লাস্টিকের লাটাই। অপর্ণা সেনের 'পারমিতার একদিনে'-র ঘুড়ির দৃশ্য আর স্বয়ং অপর্ণা সেনের সই করা ঘুড়ি সতীশ সামন্তের গর্ব। মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল ডার্বি ম্যাচের দিনে বাড়ির ছাদে, এমনকি মাঠের গ্যালারিতেও সবুজ-মেরুণ আর লাল-হলুদ ঘুড়ি উড়তে দেখা যায়। আবার একধরণের শব্দওয়ালা ঘুড়ি আছে, যেগুলো ওড়ার সাথে সাথে একটা সুর বাতাসে ভেসে বেড়ায়।

          ঘুড়ির আলোচনায় পাঁচ ঘুড়ি-বন্ধুর ( মনোরঞ্জন পাল, তরুণ সেন, শ্যামল দে, শঙ্কর নাগ, এবং অমল দে----সবাই সিনিয়র সিটিজেন ) কথা না বললে আলোচনা অসম্পূর্ণ থাকবে। এঁদের কারো বাড়ি শোভাবাজার, কারো শ্যামপার্ক, কারো বাগবাজার। সারা বছর এঁরা মিলিত হবার সুযোগ পান না। কিন্তু জন্মাষ্টমী থেকেই যোগাযোগ হয়। চলতে থাকে একসাথে ঘুড়ি তৈরি, মাঞ্জা দেওয়া, ঘুড়ি ওড়ানো। শোনা যায়, লক্ষ্ণৌ, এলাহাবাদ, বেরিলির ওস্তাদেরা পর্যন্ত হার মানতেন প্যাঁচের মাস্টার মনোরঞ্জনবাবুর 'থাকপি', 'ঝিটকার', 'চুটকি', 'লেটে টেনে', 'টানামানি'.......প্রভৃতি দেশী প্যাঁচের কাছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, প্রখ্যাত চিত্রকর ও ভাস্কর শানু লাহিড়ীও লক্ষ্ণৌ থাকাকালীন ছোটবেলা থেকেই ঘুড়িপ্রমী। ইউরোপ-আমেরিকার বেশ কিছু অদ্ভুত-দর্শন ঘুড়ি ও অজস্র বইপত্র তাঁর সংগ্রহে আছে। ১৯৯০ এর দশকে তিনি পাতিপুকুরের গাঁন্ধী সেবাশ্রম সঙ্ঘের শিশুদের ঘুড়ি তৈরি শেখাতে উদ্যোগী হন। শুধু বিনোদন নয়, ঘুড়ি থেকে যে জীবিকার্জনও সম্ভব, তিনি সেটাই বোঝাতে চেয়েছিলেন। সত্যজিত রায়ও নাকি ছোটবেলায় ঘুড়ি ওড়াতে পছন্দ করতেন। তাঁর শতরঞ্জ কে খিলাড়ি ছবিতে ঘুড়ি ওড়ানোর দৃশ্য আছে। বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের সরীসৃপ ছবিতে ধৃতিমান ঘুড়ি উড়িয়েছেন। আর হাম দিল দে চুকে সনম সিনেমার ঘুড়ির দৃশ্য আর গান তো অসম্ভব জনপ্রিয়তা পেয়েছিল।

             কাটাকুটি-যুদ্ধের পক্ষে সবচেয়ে উপযুক্ত বড় ও মজবুত এদেশের ঘুড়ি হল ৪৮ ইঞ্চি লম্বা 'ছাগ'। এর দামও একটু বেশি। ৩৭ ইঞ্চির 'ডিলাক্স ফাইটার'-ও চমৎকার। এটি খুব মজবুত,  অনেকদিন টেঁকে। অনেকে আবার ঘুড়ির মাথায় টাকার নোট আটকে দেন। ভারত-পাকিস্তান দু-দেশেই যথেষ্ট জনপ্রিয় ঘুড়ি হল 'টুক্কাল'। এটি রাতেও ওড়ানো যায়। তবে একে নিয়ন্ত্রণ করা সহজ নয়, একমাত্র অভিজ্ঞরাই একে ওড়াতে পারেন। সবচেয়ে হাল্কা ঘুড়ি হল পতং। তবে একে শুধুই মনের আনন্দে ওড়ানো যাবে, কাটাকুটি খেলা যাবে না।

          এশিয়ার দেশগুলোর মতো জনপ্রিয় না হলেও ইংল্যান্ড ও ইউরোপের অন্যান্য দেশেও ঘুড়ি ওড়ে। ইংল্যান্ডে টনি স্লেটারের ঘুড়ি বেশ জনপ্রিয়। ফাইটার ফিশ, বাটারফ্লাই, বোম্বে ফাইটার প্রভৃতি ঘুড়িগুলো খুব শক্তপোক্ত, ফাইবারগ্লাসের মোড়কে তৈরি। ওয়েলস-এ পাওয়া যায় মার্টিন লরেন্সের বানানো স্ক্যাম্প, ড্যান্সার, স্কাউট, টাইক.....এইসব নানা আকারের ঘুড়ি। যথেষ্ট সুনাম আছে সানডিয়াগোর ডিক্স ফাইটার এবং অস্ট্রেলিয়ার পিটার লয়েডের ডিজাইনে বানানো পি এল ইন্ডিয়ান ফাইটার ঘুড়িরও। আমেরিকার ওয়াশিংটন,  ক্যালিফোর্নিয়া শহরেও ঘুড়ি ওড়ানোর প্রথা আছে।

          ঘুড়ি কিন্তু শুধু বিনোদনেরই উপকরণ নয়, বৈজ্ঞানিক গবেষণায় ঘুড়ি ব্যবহৃত হয়েছিল ১৭৪৯ খৃষ্টাব্দে। স্কটল্যান্ডের দুজন বিজ্ঞানী আলেকজান্ডার উইলসন এবং টমাস মেলভিল ঐসময় ঘুড়ির সাথে ম্যাক্সিমাম-মিনিমাম থার্মোমিটার বেঁধে আকাশে ওড়ান।  তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল, বায়ুমন্ডলের বিভিন্ন স্তরের তাপমাত্রা পরিমাপ করা। এরপর ১৭৫২ সালে ঘটে সেই যুগান্তকারী আবিষ্কার। মেঘে ঢাকা আকাশে বেঞ্জামিন ফ্র্যাঙ্কলিন ও তাঁর ছেলে ঘুড়ি ওড়ান। আর আকাশে বিদ্যুত চমকের পর ঘুড়ির রেশমী সুতোয় বাঁধা চাবিতে হাত দেবার সাথে সাথেই বেঞ্জামিন ছিটকে পড়েন। প্রমাণিত হয় যে, প্রাকৃতিক বিদ্যুতের সাথে ঘরের বিদ্যুতের কোনও গঠনগত পার্থক্য নেই।

          টেলিফোন আবিষ্কারক আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেলও ১৯০৭ সালের ৬ ডিসেম্বর এক বিরাট বাক্স ঘুড়ির মধ্যেই নানা যন্ত্রপাতি বসিয়ে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালান। এছাড়া স্যামুয়েল ল্যাঙলে, স্যার জর্জ ক্যালে প্রমুখ বহু বিজ্ঞানী তাঁদের পরীক্ষানিরীক্ষা আর পর্যবেক্ষণের কাজে ঘুড়ি ব্যবহার করেছেন। বৃটিশ বিজ্ঞানী ডগলাস আর্কিবল্ড বিভিন্ন উচ্চতায় বাতাসের বেগ মাপার জন্য ঘুড়ির সুতোয় বেঁধে দেন অ্যানিমোমিটার। প্রায় ৪০০ মিটার উচ্চতাতেও এই যন্ত্রটি সঠিক তথ্য দিয়েছিল। আরেক জন বৃটিশ বিজ্ঞানী উইলিয়াম এডি আবহাওয়াবিদ্যার যন্ত্রপাতি ও শক্তিশালী ক্যামেরা লাগানো এক বিশেষ ধরণের ঘুড়ি তৈরি করেন, যা পরে বৃটিশ আবহাওয়া দফতর নিয়মিত ব্যবহার করা শুরু করে। জাপানে আবার বাড়ি বা মন্দির তৈরির সময় মাটি থেকে ছাদে টালি আর অন্যান্য জিনিসপত্র তোলার কাজেও ঘুড়ি ব্যবহৃত হত।

          অস্ট্রেলিয়ান গবেষক হারগ্রাভ্স ১৮০৯ সালে বাক্সঘুড়ি তৈরির পর থেকেই পণ্ডিতেরা বিষয়টি নিয়ে আরো বিস্তারিত গবেষণা চালাতে থাকেন। রাইট ভাইয়েরা যে বিমানের মডেল তৈরি করেন, তার সাথেও ঐ বাক্সঘুড়ির অনেক মিল ছিল।

           প্রযুক্তির কাজেও ঘুড়িকে কাজে লাগানো হয়েছে। ১৮৪৭ সালে কানাডা ও আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে নায়াগ্রা নদীর ওপর ঝুলন্ত সেতু তৈরির সময় দড়ি মইকে নদীর এপার থেকে ওপারে নিয়ে যাবার সময় ঘুড়ির সাহায্য নেওয়া হয়েছিল। ১৮৯৩ থেকে ১৯৩৩ সাল পর্যন্ত মার্কিন আবহাওয়া সংস্থা ( যেটি এখন 'ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস' নামে পরিচিত ) আবহাওয়ার পূর্বাভাস পেতে ঘুড়ির সাহায্য নিত।

          একাদশ শতাব্দীতে চীনারা বিস্ফোরক বাঁধা ঘুড়িকে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পাঠিয়ে শত্রুদের যুদ্ধজাহাজ ধ্বংস করে দিতেন। তবে ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময় থেকেই ঘুড়িকে সামরিক কাজে গুরুত্বের সাথে ব্যবহার করা হয়েছে। গোপন ক্যামেরা লাগিয়ে ঘুড়ির সাহায্যে উঁচু থেকে বিরাট এলাকায় নজরদারি করা বা শত্রুপক্ষের গতিবিধি চিহ্নিত করা যায়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় এজন্যই বৃটিশ, ফরাসী, ইটালি আর রাশিয়ান সেনারা নিয়মিত ঘুড়ি ওড়াত। জার্মান নৌ সেনারা আবার সাবমেরিন থেকেই বড় বড় বাক্সঘুড়ি উড়িয়ে বিপক্ষের গতিবিধি বুঝে নিত আর অন্যদের কাছে গোপন সংকেত পাঠাত। আমেরিকান নৌবাহিনীর গোলন্দাজদের নিশানা অনুশীলনের জন্য কমান্ডার পল গার্বার একঝাঁক ঘুড়িকে লক্ষ্যবস্তু হিসেবে ব্যবহার শুরু করেন। তখনও প্লেন আবিষ্কার হয়নি। বহুদূর থাকা শত্রুশিবির খুঁজে বার করতে সেই সময় সৈন্যদেরকে ঘুড়িতে বেঁধে ওপরে ওঠানো হত। মার্কিন সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ক্যাপ্টেন বার্ডেন পাওয়েল ১৮৯১ সালে এইভাবে একজন সৈনিক-কে ঘুড়ির সাথে বেঁধে ১২০ ফুট ওপরে তুলেছিলেন। বেতার প্রেরক যন্ত্রের এরিয়েল যেমন বেতার সংকেতের সম্প্রসারণ ক্ষমতা বাড়ায়, তেমনই বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে বেতার যন্ত্রের এরিয়েলকে ঘুড়ির সাহায্যে উঁচুতে তুলে যুদ্ধের খবর আদান-প্রদান করা হত। জাপানে বহুকাল আগে ঘুড়ির গায়ে ক্যালিগ্রাফি বা বাহারি অক্ষর লিখে এক দুর্গ থেকে অন্য দুর্গে গুপ্ত সংকেত পাঠানো হত।

          পাখির মতই ঘুড়ি কিন্তু উড়ন্ত বিমানের কাছে অত্যন্ত বিপজ্জনক। তাই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মিত্র বাহিনীর যুদ্ধ জাহাজগুলির সাথে অসংখ্য ঘুড়ি বাঁধা থাকত, যাতে শত্রুশিবিরের বিমান পেছন থেকে আক্রমণ করতে না পারে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে এইভাবে ঘুড়ির সাথে ধাক্কা লেগে অন্তত ৪ টি জার্মান বিমান ধ্বংস হয়েছিল। এইসব ঘুড়ির নক্সা করেছিলেন হ্যারি সি. সাউলস্।

          একবার নাকি এক চোর দামী সোনার মূর্তি চুরি করার উদ্দেশ্যে এক বড়সড় ঘুড়ির মধ্যে ঢুকে নাগোয়া দুর্গের মাথায় পৌঁছবার চেষ্টা করেছিল। তবে সে ধরা পড়ে যায়। ইন্দোনেশিয়ার কিছু জেলে একধরণের পাতার ঘুড়ির সাহায্যে বঁড়শির টোপ বড় মাছ ধরার জন্য দূরের নদীতে নিয়ে যেত । সেইসব ঘুড়ির সুতো হত প্রচন্ড শক্ত। মাঝ- সমুদ্রে জাহাজ হঠাৎ বিপদে পড়লে নাবিকেরা উদ্ধার লাভের জন্য বড় বাক্সঘুড়িতে লাল সংকেত লাগিয়ে উড়িয়ে দিত। মোটরযান আবিষ্কারের আগে একটা সময় শিল্পোন্নত দেশের রাজপথে চলত ঘোড়ার গাড়ি। যে গাড়ি যত বেশি ঘোড়া টানত, তার ট্যাক্সও ছিল তত বেশি। ১৮২২ সালে জর্জ পোকক নামে এক স্কুল শিক্ষক ঘোড়ার বদলে একটি শক্তিশালী ঘুড়ির সাহায্যে ঘন্টায় ৩২ কিলোমিটার বেগে গাড়ি চালাতে সক্ষম হন। পরে আরো উন্নত মানের ঘুড়ি দিয়ে তিনি প্রায় দেড়শো কিলোমিটার বেগে গাড়ি চালান। এগুলি জনপ্রিয়তা পায়, কারণ এতে আর ট্যাক্স দেবার প্রয়োজন থাকল না। মেরু অঞ্চলে স্লেজগাড়িও ঘুড়ির সাহায্যে টানা হচ্ছে।

         ভারতবর্ষে ঘুড়ির ব্যাপক ব্যবহারের সূচনা হয় মুঘল যুগে। মূলত খবর আর মনের কথা যথাস্থানে পৌঁছে দিতেই তখন ঘুড়ি কাজে লাগানো হত। মুঘল চিত্রকলায় দেখা যায়, সেকালে ঘুড়ির ল্যাজে আতর মাখানো চিঠি বেঁধে তা উড়িয়ে দেওয়া হত প্রিয়জনের উদ্দেশ্যে। ধীরে ধীরে দিল্লি থেকে আগ্রা, লক্ষ্ণৌ, কানপুর, গাজিয়াবাদ, বেরিলি, আহমেদাবাদ, অর্থাৎ ভারতীয় উপমহাদেশের প্রায় সর্বত্রই ঘুড়ির জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে। প্রথমদিকে মনোরঞ্জনের জন্য ঘুড়ি ওড়ালেও পরে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ খেলা হিসেবেই চিহ্নিত হয়।

       প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, প্রতিবছর ঘুড়ির ধারালো সুতোয় বহু পাখি হতাহত হয়। ২০০৫ সালের ১৫ই আগস্ট শুধু পুরোনো দিল্লী শহরেই ঘুড়ির সুতোয় আহত ৩১ টি পাখির চিকিৎসা করেছেন পশুচিকিৎসকেরা। এদের কারো ডানা কেটে গেছে, কেউ ঘুড়ির সুতোয় জড়িয়ে গিয়ে ধাক্কা খেয়েছে....ভেঙে গেছে হাড়। বেশির ভাগ পাখীরই পায়ের নরম অংশ ধারালো সুতোয় জখম হয়। লাঙ অ্যান্ড কেয়ার ফর অ্যানিম্যালসের পক্ষ থেকে তাই ঘুড়ির সুতোয় ধারাল মাঞ্জা না-দেবার জন্য আবেদন জানানো হয়েছে।

       কলকাতা শহরে একটা সময় ঘুড়ির লড়াই ছিল পায়রা ওড়ানোর মতোই বাবু-কালচারের প্রধান অঙ্গ। শোনা যায়, ঘুড়ির সাথে নাকি টাকা জুড়ে দিয়ে আকাশের বুকে চলত হারজিতের লড়াই। কলকাতায় ঘুড়ি ওড়ানোর প্রচলন করেন লক্ষ্ণৌ থেকে মেটিয়াবুরুজে আসা নবাব  ওয়াজেদ আলি শাহ। অবশেষে ঘুড়ি প্রেমিকদের সমবেত প্রচেষ্টায় ১৯৫৪ সালে তৈরি হল 'ওয়েস্ট বেঙ্গল কাইট অ্যাসোসিয়েশন'। আর ১৯৮৪ তে গড়ে ওঠে 'ক্যালকাটা কাইট অ্যাসোসিয়েশন'। ফুটবল-ক্রিকেটের দাপটে ঘুড়ি প্রায় হারিয়ে যেতে বসলেও শুনতে আশ্চর্য লাগে যে, ঘুড়ির দলগুলির লিগ আজও চালু আছে। ফুটবলের মতোই সেখানেও দলবদল হয়। রাজ্য কাইট অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালনায় ১৯৫৪ সালে প্রথম বছরের প্রতিযোগিতায় নেমেছিল  ১৫ টি দল। শোনা যায়, ১৯৪৯ সালের আই এফ এ শিল্ডের ফাইনালে ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান ম্যাচকে ঘিরে যেমন উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিল, ঠিক সেরকম উত্তেজনাই  নাকি ছিল ভারতবর্ষের প্রথম ঘুড়ির লিগের ফাইনাল খেলায়। ২০০১ সালে এরাজ্যে ঘুড়ির লিগ ও নক-আউটে অংশগ্রহণ করে মোট ৫৩ টি দল। এখন মোটামুটি ৫৬টি দলের লীগ কাম নক আউট ভিত্তিক খেলা চলে ১০ মাস ধরে। শুধু বর্ষার দুমাস ( জুলাই-আগস্ট ) খেলা বন্ধ থাকে। এই সময় এ-রাজ্যের বেশ কয়েকটি দল লক্ষ্ণৌ সহ ভিন্ - রাজ্যে চলে যায়। সর্বভারতীয় প্রতিযোগিতা উপলক্ষ্যে লক্ষ্ণৌতেই প্রতিবছর বসে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের ঘুড়ি-টুর্ণামেন্ট। বেশ বড় অঙ্কের আর্থিক পুরস্কারও দেওয়া হয়। চীন-জাপান-থাইল্যান্ড-রাশিয়া থেকেও অভিজ্ঞ প্রতিযোগীরা এতে অংশ নেন। কলকাতায় এক সময় ঘুড়ি ওড়াতে এসেছেন অভিনেতা দিলীপ কুমার। মান্না দে-ও ঘুড়ি ওড়াতে পছন্দ করতেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মকর সংক্রান্তিতে শ্রীরামপুরের মাহেশেও ঘুড়ির ম্যাচ হয়। তবে সাধারণভাবে অধিকাংশ জায়গায় বিশ্বকর্মা পুজোর দিন ঘুড়ি উড়লেও কলকাতার বড়বাজারে অক্ষয় তৃতীয়ায়, সরস্বতী পুজোয় বারুইপুর-খড়দহে-উত্তরবঙ্গে,  আর রথের দিন নবদ্বীপে প্রচুর ঘুড়ি ওড়ে। জগদ্ধাত্রী পুজোর দিন আবার বেলুড়-দক্ষিণেশ্বরে প্রত্যেকটি ঘুড়ি কাটলে একটি নির্দিষ্ট অর্থ পুরস্কার দেওয়ার প্রথা আছে। বিহারে গণেশ চতুর্থীতে, আর দক্ষিণ ভারতে 'ওনাম'-এর দিন ঘুড়ি ওড়ে।ওয়াশিংটন, বার্কলে, জিকার পার্ক, ব্রিস্টল, বালিংটন, পোর্টস মাউথ প্রভৃতি জায়গায় প্রতি বছর জুন থেকে সেপ্টেম্বর চলে ঘুড়ির উৎসব। ভারতের ঘুড়ির শহর আহমেদাবাদে  মকর সংক্রান্তির উত্তরণ উৎসবে অসংখ্য ঘুড়ি ওড়ে। বিশ্বের বৃহত্তম আন্তর্জাতিক ঘুড়ি উৎসবের আয়োজনটিও হয় এখানকার পতঙ্গনগরে। ১৯৮৬ সালে ভানু সিংহ এখানে তৈরি করেছেন একটি ঘুড়ির মিউজিয়াম। এমন মিউজিয়াম রয়েছে বিভিন্ন দেশে, যেমন, চীনের উইফ্যাং-এ  ( এখানেই আছে ওয়ার্ল্ড কাইট ফেডারেশনের প্রধান কার্যালয় ), টোকিওর তাইসেইকেন নামে রেস্তোরাঁর ওপরে, তাইওয়ানের জিওফেন-এ, ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায়, কম্বোডিয়ার নমপেনে, আর মালয়েশিয়ার কাইট পাহাড়ে। জাপানে ঘুড়ি ওড়ে ৫-মে শিশু উৎসবে, কোরিয়াতে নববর্ষে, থাইল্যান্ডে মার্চ মাসে, চীনে সেখানকার লন্ঠন উৎসবে ঘুড়ি ওড়ে। আমেরিকার স্টেট ইন্টারন্যাশনাল কাইট ফেস্টিভ্যাল হয় পেনিনসুলা সমুদ্র সৈকতে। এখানকার ঘুড়ির মিউজিয়ামে আছে পৃথিবীর সব দেশের ঘুড়ি আর তাদের বিবর্তনের ইতিহাস। ২০০৮ সালের ১৯ শে জুলাই ১৩ তম আন্তর্জাতিক ঘুড়ি উৎসবের আসর বসেছিল সুইজারল্যান্ডের Cret-du-Midi তে। ২০১৪ সালের ১৯ শে অক্টোবর উত্তর মিয়ামীর হলোভার বিচ পার্কে অনুষ্ঠিত ঘুড়ি উৎসবে ওড়ানো হয়েছিল বিশাল 'আইস রে' ঘুড়িটি----এটি লম্বায় ছিল ২৭.৭ মিটার, চওড়ায় ১২.৩ মিটার। আন্তর্জাতিক ঘুড়ি উৎসবে প্রতি বছর একটি নির্দিষ্ট থিম থাকে। ২০২০ সালের থিম ছিল, "একটি মেয়েকে শিক্ষিত করে তুলুন। সে-ই বদলে দেবে গোটা পৃথিবী।" ২০২৩ এর থিম ছিল, "একটি পৃথিবী, একটি পরিবার, একটি ভবিষ্যত"। ২০২৪ সালের ৭ থেকে ১৪ ই জানুয়ারী আন্তর্জাতিক ঘুড়ি উৎসবের আসর বসেছিল আহমেদাবাদের বল্লভসদনের সবরমতি রিভারফ্রন্টে। সেখানে ৫৫ টি দেশের ১৫৩ জন ঘুড়িবাজ যোগ দেন। তাঁদের সাথে ছিলেন ভারতের ১২ টি রাজ্যের ৬৮ জন ঘুড়িবাজ এবং গুজরাটের ৮৬৫ জন ঘুড়িপ্রেমী।

         ঘুড়ির লীগে অংশ নেওয়া দলগুলির খরচ কিন্তু কম নয়। চার জনের দলপিছু প্রতি মরশুমে খরচ ৬০--৭০ হাজার টাকা। প্রতিযোগিতার উপযুক্ত প্রত্যেকটি ঘুড়ির দাম ১০--২০ টাকা। ম্যাচ পিছু মাঞ্জা দেওয়া সুতো লাগে কমপক্ষে ২০০০ মিটার, যার দাম ৬০০--১২০০ টাকা। খেলার শুরুতে হয় টস। যে পক্ষ টসে জেতে, সেই দল নেয় তাদের পছন্দের দিক্। ম্যাচ শুরু হয় প্রতিদিন দুপুর একটায়, আর শেষ হয় সাড়ে চারটেয়। ম্যাচ রেফারি বা গ্রাউন্ড সেক্রেটারির সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে ধরে নেওয়া হয়। ম্যাচ শুরুর আগেই প্রতিযোগিতা কমিটি প্রত্যেক প্রতিযোগীর ঘুড়ি, সুতো পরীক্ষা করে নেয়।

        কাজকর্ম ভুলে বাড়ির ছাদে বা খোলা মাঠে ঘুড়ি ওড়াতে গিয়ে কিভাবে যে ঘন্টার পর ঘন্টা সময় কেটে যায়, তা টেরই পাওয়া যায় না। তবে এই ঘুড়ির নেশা শুধু শখ বা বিনোদনের জন্য নয়, অসংখ্য লোক যেমন আকাশে ঘুড়ির লড়াই দেখে আনন্দ-উত্তেজনা পান, তেমনই মানিকতলা-বজবজ-মেটিয়াবুরুজের বহু মানুষের রুজি-রোজগার জড়িয়ে আছে এই ঘুড়ি শিল্পের সাথে। কিছুটা সরকারী উদ্যোগ বোধহয় এই মৃতপ্রায় শিল্পকে আবার চাঙা করে তুলতে পারে। ঘুড়ি-প্রেমী মানুষের সংখ্যা কমে এলেও জীবনমুখী গায়কের সাথে তাই আজ গলা মেলাতে ইচ্ছে করে.......
         "পেটকাটি চাঁদিয়াল মোমবাতি বগ্গা
        বাতাসে ঘুড়ির ঝাঁক, মাটিতে অবজ্ঞা।"

==========

চন্দন দাশগুপ্ত 
সি/৩০/১, রামকৃষ্ণ উপনিবেশ,  রিজেন্ট এস্টেট, 
কলকাতা-৭০০ ০৯২


Comments

বিধিবদ্ধ স্বীকার্য :

লেখার বক্তব্যের দায়িত্ব লেখকের, পত্রিকার নয়। আমরা বহু মতের প্রকাশক মাত্র।

মতামত/লেখা এখানে জমা দিন

Name

Email *

Message *

সাম্প্রতিক বাছাই

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯৩তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩২ নভেম্বর ২০২৫

সূচিপত্র বস্তু, চেতনা এবং কবি ।। সজল চক্রবর্তী দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত ।। রণেশ রায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট ও সন্নিহিত অঞ্চলের কথ্য শব্দ ।। অরবিন্দ পুরকাইত চাঁদে জীবন ।। শমীক সমাদ্দার অসমাপ্তি ।। মহুয়া হুই গ্যালাক্সির শব্দে ।। জাসমিনা খাতুন তিনটি কবিতা ।। দিবাকর সেন অপূর্ণতার শেষ অধ্যায় ।। সুপ্রিয় সাহা হাফ ডজন ছড়া ।। স্বপনকুমার পাহাড়ী স্বাপ্নিক অমলের ঘুৃম ।। সঞ্জয় দেওয়ান দুটি কবিতা ।। সৌমিত্র উপাধ্যায় পথ চলতি ✍️পার্থ প্রতিম দাস হেমন্তের বিষাদ ছুঁয়ে ।। শক্তিপদ পাঠক রাই আর বাবা ।। অদিতি চ্যাটার্জি স্থিতিশীল ।। রঞ্জিত মুখোপাধ্যায় হৃদয়ের শূন্য কোড ।। লিপিকা পিঙ্কি দে অমানিশা ।। সৌভিক মুখার্জী দৃষ্টিগত ।। শামীম নওরোজ জ্যান্ত ভূতের গপ্পো ।। পার্থ সারথি চট্টোপাধ্যায় ধুতরা ফুলের ঘ্রাণ ।। মজনু মিয়া তারা খসার আলোয় ।। তীর্থঙ্কর সুমিত উত্তরণে অন্তরায় ।। সমীর কুমার দত্ত প্রেম মুদ্রা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ধারা ।। লালন চাঁদ অন্যের ব্যথায় ব্যথি ।। জগদীশ মণ্ডল গর্ভ ।। শাশ্বত বোস ভ্রমণ বিষয়ক স্মৃতিকথা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত শাপে বর ।। সাইফুল ইসলাম রবিবার ।। সঙ্ঘমিত্রা দাস দুটি ...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬

  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠালে  অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে হলে ভালো। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # ...

রেজাল্ট ।। সৈকত মাজী

রেজাল্ট সৈকত মাজী শুভ্রাংশু বিছানতে শুয়ে শুয়ে বিরক্ত হয়ে উঠল। মনে মনে নিজের শরীরটাকে আচ্ছা করে শুনিয়ে দিলো দু- চারটে কথা, দেবে নাই বা কেন, কয়দিন ধরে এতো কাঠ খড় পুড়িয়ে সব বন্ধুরা মিলে রথটা বানালো, কত কি প্ল্যান করলো, আর এই শরীরটার জন্যই তো সব ভেস্তে গেলো। মনে মনে ভাবলো একটা যা হোক শরীর হয়েছে ওর প্রতি মাসে তিন - চার বার করে জ্বর হচ্ছেই। হবি তো হ আর একটা দিন পরে হলে কি এমন ক্ষতি হতো, এই রথের দিনেই হতে হলো। ওর বিরক্তিটা বেড়ে গেলো আরো কয়েক ঘর।    " মা ও মা...মাআআআআ...." জোরে হাঁক  দিলো শুভ্রাংশু।    " কি হয়েছে বাবু? আবার জ্বরটা বেড়েছে? মাথা ব্যথা করছে?" ব্যস্ত হয়ে উঠলেন মালতিদেবী।     " ওসব কিছু নয়, ও মা বলছি এখন তো খুব কম জ্বর আছে যাই না মা একবার বাইরে, সবাই কতো ফুর্তি করছে বলো"  কাতর ভাবে বলল শুভ্রাংশু।      " না বাবু, এখনই আমরা ডাক্তারের কাছে যাব, বাবা তৈরী হয়ে গেছেন, আমরা বিকেলে তখন মেলা দেখতে যাব কেমন, এখন উঠে জামা কাপড় পরে নাও"  মালতিদেবী জামা কাপড় গুলো এগিয়ে দিলেন।      শুভ্রাংশু...

রাই আর বাবা ।। অদিতি চ্যাটার্জি

রাই আর বাবা অদিতি চ্যাটার্জি রাই-র জীবনে বেশ কিছু ভালো লাগা আছে তার মধ্যে একটা হলো সন্ধ্যার সময় তিন তলার বারান্দায় দাঁড়িয়ে রাস্তা দেখতে দেখতে কফি কাপে চুমুক দেওয়া ।" আজ যশোদা মিষ্টান্ন ভান্ডারের সামনে বেশ ভিড়,নির্ঘাত 'তেলে ভাজা ' প্রেমীরা।" আপন মনেই ভাবে ও, কিন্তু বসার ঘরে সুমন আর আঁখি এতো জোরে 'হল্লা গোল্লা ' করছে তালতলার জমজমাট রাস্তার দিকে আর মন দিতে পারছে না রাই।  পায়ে পায়ে ঘরে এসে দাঁড়ায় রাই, দেখে ক্লাস ফোরের মেয়ে এতোটা ঝগড়া করছে সুমনের সাথে , "বাপ রে, কবে এতোটা কথা শিখলো মেয়ে! কিভাবে কথা বলছে?? কোঁকড়া চুল ঝাঁঝিয়ে,গোলগাল হাত নেড়ে " ...মেয়ে কে দেখে থতমত খেয়ে যায় রাই। এদিকে আঁখি বলছে, "ধুত্ বাপী তুমি কিচ্ছু পারো না, তুতাই-র বাবা, পিসাই, মামু সবাই কত ভালো করে খেলতে পারে , না আমি তোমার সাথে খেলবো না।" কাতর চোখে মেয়ের দিকে একবার তাকিয়ে সুমন বলে ,"আচ্ছা তুই আমাকে শেখা, দ্যাখ আমি কার জন্য আলিপুরদুয়ার থেকে পনেরো দিন পর পর কলকাতায় আসি বল!"  ঐ টুকু মেয়ে কথা প্রায় না শুনেই ঘরে চলে গেল রাই-র চোখের সামনে, সুমন একবার হেসে বাথরুমের দিকে এগো...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯২তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩২ অক্টোবর ২০২৫

—: সম্পাদকীয় দপ্তর থেকে :— এই সংখ্যার জন্য লেখা এসেছিল প্রায় ১৮০টা। কিন্তু গুণগত মানে দুর্বল লেখার সংখ্যা বহু। আমরা নবপ্রভাতে নতুনদের কথা ভেবে বেশ কিছু দুর্বল লেখাও রাখি। কিন্তু সবসময় একই লোকের দুর্বল লেখা প্রকাশ করা অনুচিত বলে মনে করি। শেষ পর্যন্ত ৯৯ জনের লেখা রাখা গেল। যাদের লেখা প্রকাশিত হল না, তারা লেখাগুলি অন্য যেখানে খুশি পাঠাতে পারেন। বিশেষ কারণে এই সংখ্যার মুদ্রিত সংস্করণ প্রকাশিত হচ্ছে না। আমরা দুঃখিত। তবে মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি শীঘ্রই আসছে। সঙ্গে থাকুন। সকলকে উৎসবমুখর বর্ণময় শুভেচ্ছাসহ— —নিরাশাহরণ নস্কর, সম্পাদক, নবপ্রভাত। অনুরোধ : প্রকাশিত লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন, ছবি/স্ক্রীনশট নয়।  == সূচিপত্র == পড়া-লেখার ইতিহাস অনুসন্ধান।। তপন তরফদার উৎসব : মানুষের চিরন্তন আত্মপ্রকাশ।। কৃশানু ব্যানার্জি বাংলা : সভ্যতা ও সংস্কৃতির জন্মভূমি।। শ্যামল হুদাতী সমুদ্র আর অস্তিত্ব ।। সুব্রত চৌধুরী রাজা ছিলেন জুবিন গর্গ ।। গঙ্গা 'অনু'   আদ্যাশক্তি মহামায়ার বাংলা বারো মাসের বারো রূপ ।। অর্হণ জানা মেধাদাদুর আসর ।। রণেশ রায় বৈজ্ঞানিক মা...

বস্তু, চেতনা এবং কবি ।। সজল চক্রবর্তী

বস্তু, চেতনা এবং  কবি সজল চক্রবর্তী  "যেখানে পৌঁছায় না রবি,, সেখানে পৌঁছে যান কবি।" এই ছোট্ট কবিতা টি অনেক পুরনো  এবং বহু পরিচিত, তথাপি এর তাৎপর্য এখনো হারায় নি। তবে, কথা হ'চ্ছে -আমরা তো  রবি-কবিকে একত্রেই পেয়ে যাই আমাদের ঋষি-প্রতিম কবি রবীন্দ্রনাথের মধ্যে। আর তখনই জেনে যাই উপরোক্ত ছোট কবিতার প্রণিধানযোগ্যতা ।  ... এবার শুনে নেয়া যাক, ঋষি-প্রতিম কবির মুখ নিঃসৃত বাণী:- "তোমার অসীমে প্রাণমন লয়ে যত দূরে আমি যাই ...." অর্থাৎ আমাদের প্রিয়তম কবি অনায়াসে পৌঁছে যান সৃষ্টির অসীমে , যা আমাদের পক্ষে আদৌ সম্ভব নয়। এখানে কবির চেতনা সুদূর প্রসারী! ... প্রকৃত প্রস্তাবে কবি অতিন্দ্রীয় জগতের এক নাগরিক। তাঁর কাছে তাই চেতনা বা চৈতন্যেরই প্রাধান্য। ...এখন আসছি, বস্তু এবং চেতনার মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে।  ... আমি একজন অতি সাধারন মানুষ, তাই এই ব্যাপারটাকে কবিদের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার চেষ্টা ক'রছি। তবে আমার সামান্য জ্ঞান থেকে একটা সাধারণ কথা সেরে নি'। আমরা সাধারণত ব'লে থাকি-- সূর্য পূর্বদিকে ওঠে। প্রকৃত অর্থে কি তাই ? আসলে সূর্য যেদিকে ওঠে ,আমরা  সেই দিকটাকে নামাঙ্কিত ক...

দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট ও সন্নিহিত অঞ্চলের কথ্য শব্দ, উচ্চারণ, বাগ্্ধারা ইত্যাদি ।। অরবিন্দ পুরকাইত

স্থানীয় কিছু কথ্যশব্দ, উচ্চারণ, বাগধারা ইত্যাদি  (পর্ব—সাত) অরবিন্দ পুরকাইত স্থানীয় কিছু কথ্যশব্দ, উচ্চারণ, বাগ্্ধারা ইত্যাদির সংগ্রহ প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল রামচন্দ্র নস্কর সম্পাদিত 'চর্যা' পত্রিকায়, ২০১৬ সালে। সে সংগ্রহ যায় নিজের 'গাঁ-ঘরের কথা' পুস্তকে, ১৪২৩ সনে। পরে এই ব্লগজিনেও কিছু সংগ্রহ প্রকাশিত হয় ১৪২৮ সনের আশ্বিন মাসে, পৌষ ১৪২৯-এ, আষাঢ় ১৪৩০, নববর্ষ ১৪৩১ ও কার্তিক ১৪৩১ সংখ্যায়। তার পরেও ধীরে ধীরে আরও কিছু সংগৃহীত হয়েছে, সেগুলিই এখানে রাখা হল। নিজের আগের সংগ্রহে এসে-যাওয়া শব্দ যদি এখানে এসে থাকে, তা বাড়তি বা ভিন্ন কিছু বলার প্রয়োজনেই। নিজের আগের সংগ্রহ খুব ভাল করে যে মিলিয়েছি তা নয়, পুরো সংগ্রহ একত্র করার সময় তা করা যাবে যতটা সম্ভব নিখুঁত করে। আগে আগে সংগ্রহ প্রসঙ্গে কিছু কথা বলা হয়েছে, বিশেষত প্রথম প্রকাশের সময় একটু বিশদভাবে। এখানে আর কিছু বলা নয়, কেবল সংগ্রহটাই তুলে ধরা গেল। অখেজো/অখেজে — অকেজো থেকে। আদরের তিরস্কার হিসাবেই মূলত প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। পাজি। অচিমিতি — (উচ্চারণ ওচিমিতি) আচমকা, হঠাৎ। অদীয় — প্রচুর, অজস্র। অদ্বিতীয় থেকে ক...

কবিতা ।। অরণ্যকন্যা ।। অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়

  অরণ্যকন্যা অরিন্দম চট্টোপাধ্যায় অরণ্যকন্যার দৃষ্টির ভেতর বিষাদ বিন্দু ফোঁটা ফোঁটা জলের মতো গড়িয়ে যায়, হয়ে যায় কোন নদীপথ দৃষ্টি ভেঙে ভেঙে চলে যায় কোন এক শূন্য পথে অরণ্যকন্যার হৃদয়ের ভেতর ভাঙে যতো বৃক্ষপত্র নতুন পত্র পুষ্পের খোঁজ নেই ঠোঁট জুড়ে সমুদ্রকাঁপন বুদবুদের মতো অস্ফুট হয়ে উচ্চারিত হয় কোন অক্ষর শব্দ আর তাঁর শরীর থেকে ছড়িয়ে যায় হয়ে যায় একটা অদৃশ্য কবিতা...    ================== @ অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়,  বেহালা, কলকাতা -৭০০০৬০,  

দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত ।। রণেশ রায়

দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত রণেশ রায় ভূমিকা দর্শনের ইতিহাসে বস্তু ও চেতনার সম্পর্ক মানবচিন্তার গভীরতম প্রশ্ন। অধিবিদ্যা ভাবকে মুখ্য ধরে, বস্তুকে গৌণ বলে মনে করে। বিপরীতে মার্কস ও এঙ্গেলস বলেছেন—বস্তুই মুখ্য এবং চেতনা তার প্রতিবিম্ব। মানুষ যখন প্রথম আলোর মুখ দেখেছিল, তখনই সে বিস্ময়ে প্রশ্ন করেছিল—আমি কে, কোথা থেকে এলাম, আর এই দৃশ্যমান জগতের বাইরে কিছু আছে কি? এই প্রশ্ন থেকেই জন্ম নিয়েছিল দর্শনের দুই বিপরীত স্রোত—ভাববাদ আর বস্তুবাদ। ভাববাদ বলেছিল—"ভাবই প্রথম," আর মার্কস বললেন—"না, বস্তুই প্রথম।" এই দুই প্রান্তের মাঝখানে আমি দেখি এক সেতুবন্ধন, যেখানে বস্তু, স্নায়ু ও চেতনা একে অপরকে গড়ে তোলে, আর তাদের এই ত্রিত্বের নৃত্যেই সৃষ্টি হয় জীবন ও কল্পনার জগৎ। ভাবববাদ এক সর্বশক্তিমান শক্তির কল্পনা করে যা এই বস্তুজগতের স্রষ্টা। আর এখান থেকে ধর্ম ও ধর্মীয় ভাবধারার সৃষ্টি। আমার এই প্রবন্ধে আমি মার্কসীয় দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদকে আধুনিক বৈজ্ঞানিক আলোকে বোঝার চেষ্টা করেছি। আমি দেখাবার চেষ্টা করবো কিভাবে ইন্দ্রিয় এবং স্নায়ুজগৎ বস্তু ও চেতনাকে সংযুক্ত করে এবং কল্পলোকের জন্ম দেয়...

চাঁদে জীবন ।। শমীক সমাদ্দার

চাঁদে জীবন  শমীক সমাদ্দার                           চন্দ্রযান দুরন্ত তৈরি, রকেটের উপর ভর করে চন্দ্রযান চাঁদে অবতরণ করবে। মাধ্যাকর্ষণ শক্তি পেরিয়ে মহাকাশযান চাঁদের কক্ষপথে  স্থাপন করা হয়েছে। চন্দ্রাযান চাঁদের মাটিতে পা রাখবে সময়ের কাউন্ট ডাউন চলছে। সমস্ত নিয়ন্ত্রণ স্পেসস্কাই গাবেষণা কেন্দ্র কতৃক নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে প্রযুক্তি বিজ্ঞান অতল গভীরতায় বাসা বাঁধে। পরিচয়টা দিয়ে দিলাম এই স্পেসসিপে রয়েছে তিনজন নভোচর, একজনের নাম সাইমন আর এক জনের নাম রেমন্ড, আর এদের সঙ্গে একজন মহিলা আছে তার নাম মেরিনা। চন্দ্রযান চন্দ্রপৃষ্ঠে সফলভাবে অবতরণ করেছে। চন্দযান দুরন্ত চাঁদের পূর্ব -পশ্চিম অক্ষরেখা বরাবর অবতরণ করেছে। আলো আঁধারের গভীরতায় বড় বড় পাথরের পিণ্ড, চাঁদের সার্ফেসের উপরে পাথর জল দেখা যায়। জমাট বাঁধা অক্সিজেন আর কার্বনডাই অক্সাইড। ওরা এখানে এসেছে এক রহস্য উদ্ঘাটন করতে। যে স্থানে ওরা অবতরণ করেছে সেখানে ১০ বছর আগে ওরা এসেছিলো। রুশ সরকার ওদের দেশের ছাত্র ছাত্রী কে মহাকাশে চাঁদে পাঠাতে চায়। ওরা কেন এসেছে সেটা এখনো অধরা। সাইমনের বর্...

জনপ্রিয় লেখা

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ -- "ত্রয়ী কাব্য" ------------------------------------------------------------------------------ সুনন্দ মন্ডল নবীনচন্দ্র সেন সাহিত্যে তথা বাংলা কবিতার জগতে এক অবিস্মরণীয় নাম। তিনি চট্টগ্রাম জেলার নওয়াপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ১৮৪৭ সালে তাঁর জন্ম এবং মত্যু ১৯০৯ সালে। বঙ্কিমচন্দ্র তাঁকে 'বাংলার বায়রন' বলেছেন। ‎জীবৎকালীন যুগে আত্মপ্রত্যয়ের মধ্যে জাতীয় চরিত্র আত্মস্থ করে নতুন সংস্কারে প্রয়াসী হয়ে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখেছেন।মধুসূদন-হেমচন্দ্র-নবীনচন্দ্র--এই তিন কবি বাংলা কাব্যধারায় প্রাণ সঞ্চার করেছিলেন। বিশেষত মহাকাব্য লেখার দুঃসাহস দেখিয়েছিলেন। এদিক থেকে মধুসূদন দত্ত একজন সফল মহাকাব্যিক। তাঁর 'মেঘনাদ বধ' কাব্যের মত গভীর ও ব্যঞ্জনাময় না হলেও নবীনচন্দ্র সেনের 'ত্রয়ী' কাব্য বিশেষ মর্যাদা দাবি করতেই পারে। তাছাড়া 'ত্রয়ী' কাব্যে ধর্মীয় ভাবধারার আবেগ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ‎ ‎নবীনচন্দ্র সেন বহু কাব্য লিখেছেন। যেমন- 'অবকাশরঞ্জিনী','পলাশীর যুদ্ধ', 'ক্লিওপেট্রা', 'রঙ্গমতী', 'খ্রীষ্ট', ...

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা শ্রীজিৎ জানা "সময় চলিয়া যায় নদীর স্রোতের প্রায়"। স্রোতের ধারা তার দু'প্রান্তে রেখে যায় ভাঙাগড়ার চিহ্ন। কালের দৃশ্যপটেও পরিবর্তনের ছবি অনিবার্যভাবেই চোখে পড়ে। সমাজ সময়ের ছাঁচে নিজেকে গড়ে নেয় প্রতিনিয়ত।  সেখানে মনে নেওয়ায় বাধা থাকলেও,মেনে নেওয়ার গাজোয়ারি চলে না। ফলত কাল বদলের গাণিতিক হিসেবে জীবন ও জীবিকার যে রদবদল,তাকেই বোধকরি সংগ্রাম বলা যায়। জীবন সংগ্রাম অথবা টিকে থাকার সংগ্রাম।  মানুষের জীবনযাপনের ক্ষেত্রে আজকে যা অত্যাবশ্যকীয় কাল তার বিকল্প রূপ পেতে পারে অথবা তা অনাবশ্যক হওয়াও স্বাভাবিক। সেক্ষেত্রে উক্ত বিষয়টির পরিষেবা দানকারী মানুষদের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হওয়া অস্বাভাবিক নয়। এক কালে গাঁয়ে কত ধরনের পেশার মানুষদের চোখে পোড়তো। কোন পেশা ছিল সম্বৎসরের,আবার কোন পেশা এককালীন।  সব পেশার লোকেরাই কত নিষ্ঠা ভরে গাঁয়ে  তাদের পরিষেবা দিত। বিনিময়ে সামান্য আয় হত তাদের। আর সেই আয়টুকুই ছিল  তাদের সংসার নির্বাহের একমাত্র উপায়। কালে কালান্তরে সেই সব পেশা,সেই সব সমাজবন্ধুরা হারিয়ে গ্যাছে। শুধুমাত্র তারা বেঁচে আছে অগ্রজের গল্পকথায়,আর বিভিন...

গ্রন্থ আলোচনা: শর্মিষ্ঠা দেবনাথ

প্রতিবাদ যখন অগ্নিবাণী বাংলাদেশে নারীমুক্তি ও নারী আন্দোলনের পুরোধা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ১৯৯তম জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদিত হল " আসিফা এবং.." কাব্য সংকলনটির মধ্যদিয়ে।সংকলনটির বিশেষত্ব হল,এটি উৎসর্গ করা হয়েছে নারীর সম্মান রক্ষার আন্দোলনের যোগ্যতম ব্যক্তি শহীদ শিক্ষক বরুন বিশ্বাসকে। সংকলক প্রকাশক সন্দীপ সাহু নিজে এবং বিশিষ্ট কবি সাহিত্যিকদের দিয়ে লিখিয়ে নিয়েছেন এমন কিছু কবিতা, যা শুধুমাত্র শব্দ ও ছন্দের অনুবন্ধ নয়, এক একটি অগ্নিবাণী।আসলে জীবনকে দেখার স্বাতন্ত্র‍্যে কবিরা সব সময়ই অগ্রগণ্য এবং অনন্য।যুগ ও জীবন দ্বন্দ্বের কণ্ঠস্বরকে আশ্রয় করে,একদিকে মনের প্রবল দাহ ও অন্যদিকে  নির্যাতিতা শিশুকন্যা ও নারীর প্রতি মনের গভীর আকুলতা থেকে প্রকাশ পেয়েছে "আসিফা এবং" এর  কবিতাগুলি।এক অন্ধকার সময়ের মুখোমুখি আমরা,সেই অন্ধকার আমাদের নিয়ে এসেছে সামাজিক অবক্ষয়ের শেষধাপে যেখানে নৈতিকতা,পাপবোধ,গ্লানিকে সরিয়ে রেখে, সমাজের বানানো নিয়মকে তোয়াক্কা না করে,অনায়াস দক্ষতায় ও ক্ষিপ্রতায় নিজেরই ধর্মচেতনাকে জলাঞ্জলি দিয়ে কিছু মানুষ তার পশুত্বের পরিচয় দিয়েছে ধর্ষণ ও ন...

শ্যামাপদ মালাকারের কবিতা

চোখ """"""" নদী, অরণ্য, রাতের ফালি চাঁদ- সবেই তো আমার...স্বর্ণপিঁড়িটাও!। সেদিন, শুকতারাটার গা' মাপতে গিয়ে মনে হল, --ওরা আমার চেয়েও সুখী? দেখিনা একবার গাইতি-শাবল চালিয়ে... চালালাম। জল-মাটি ভেজা একটা 'চোখ' কুড়িয়ে ফিরলাম! সেই চোখদিয়ে দেখি-- শেষ বিকেলের নিরন্ন আঁচে ঝলসানো বুকে নীড়ে ফিরছে ধূলিমাখা কত কাল পা, কি শান্তি - কি তৃষ্ণা! পাতাক্ষোয়া কোদালেরর মাথায় ঝরেপড়া ললাটের ঘামে, কারা যেন জীবন শাণ দেয়! রুক্ষঠোঁটের আবরণে এক সময় নেমে আসে শিশিরস্নাত কালনিশি-- মাঝের ব্যবধান মুছে দেয় প্রতিশ্রুতির ভীড়- - পূর্বজনমের নিদর্শনচুম্বন শেষে হেরে যায় কার মমতাজ-- ম্লান হয়ে যায় কত পিঁড়ি! ... ম্লান হয়ে যায় কত পিঁড়ি! ... ম্লা...

কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা: এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায় ।। পার্থ সারথি চক্রবর্তী

  কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা : এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায়  পার্থ সারথি চক্রবর্তী  কথায় বলে বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। রাজার শহর কোচবিহারের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা আরো অনেক বেশি। দুর্গাপূজা আর দীপাবলির মতো দু'দুটো বিরাট মাপের উৎসবের রেশ কাটতে না কাটতেই, এ শহর ভাসে রাস উৎসবের উন্মাদনায়। মদনমোহন ঠাকুর কোচবিহারের প্রাণের ঠাকুর। তাঁকে নিয়ে সবার আবেগ আর শ্রদ্ধা ও ভালবাসা এখানে বাঁধনছাড়া। এক অপূর্ব মিলনোৎসবের চেহারা নেওয়া এই উৎসব ঐতিহ্যবাহী ও ঐতিহাসিক। জন, মত, সম্প্রদায়ের উর্ধে এই উৎসবের গ্রহণযোগ্যতা। সময়ের কষ্টি পাথরে পরীক্ষিত! এক প্রাণের উৎসব, যা বহুদিন ধরেই গোটা উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ উৎসবে পর্যবসিত।কোচবিহারের এই রাস উৎসবকে কেন্দ্র করে যে মেলা হয় তাও সময়ের হাত ধরে অনেক বদলে গেছে। এসেছে আধুনিকতার ছোঁয়া! শৈশবে বাবার হাত ধরে যে মেলা দেখেছি তা চরিত্র ও আকৃতি দু'দিক থেকেই বদলে গেছে। গত পঁচিশ বছর ধরে খুব কাছে থেকে এই উৎসব ও মেলা দেখা, অনুভব করার সুযোগ হয়েছে। যা দিনদিন অভিজ্ঞতা ও প্রাপ্তির ঝুলিকে সমৃদ্ধ করে গেছে প্রতি ক্ষেত্রেই।  খুব সংক্ষেপে এই উৎসবের ইতিহাস না জানাটা কিন্তু অবিচারই ...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো,  তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) য...

মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা 2024 সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি (লেখক ও সম্পাদকীয় দপ্তরের কথোপকথন আকারে) --কী পত্রিকা? --নবপ্রভাত। --মুদ্রিত না অনলাইন? --মুদ্রিত। --কোন সংখ্যা হবে এটা? --বইমেলা 2024। --কোন কোন ধরনের লেখা থাকবে? --প্রবন্ধ-নিবন্ধ, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া। --বিশেষ কোন বিষয় আছে? --না। যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে। --শব্দ বা লাইন সংখ্যার কোন বাঁধন আছে? --না। নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো (যেমন, কবিতা 12-14 লাইনের মধ্যে, অণুগল্প কমবেশি 200/250শব্দে)। তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়। --ক'টি লেখা পাঠাতে হবে? --মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। --ফেসবুক বা অন্য কোন প্লাটফর্মে প্রকাশিত লেখা কি পাঠানো যাবে? --না। সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। --পত্রিকা কোন সময়ে প্রকাশিত হবে? --জানুয়ারি 2024-এর দ্বিতীয় সপ্তাহে। --লেখা পাঠানোর শেষতারিখ কত? -- 17 ডিসেম্বর 2023। --কীভাবে পাঠাতে হবে? --মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। --লেখার সঙ্গে কী কী দিতে হবে? --নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) --বিশেষ সতর্কতা কিছু ? --১)মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন '...

উৎসবের সৌন্দর্য: সেকালে ও একালে।। সৌরভ পুরকাইত

  উৎসবের সৌন্দর্য:  সেকালে ও একালে   সৌরভ পুরকাইত বাংলার উৎসব বাংলার প্রাণ। প্রতিদিনের জীবনযাপনের মধ্যে যখন মন ক্লান্ত হয়ে পড়ে তখন তাকে বেঁচে থাকার রসদ যোগায় এই উৎসব। কথায় বলে 'বারো মাসে তেরো পার্বণ'।মন আনন্দই চায়।তাই তাকে সজীবতা দিতে,পরিবারের,সমাজের ভালো-মন্দের কথা মাথায় রেখে মানুষ নিজেই সৃষ্টি করে নিয়েছে নানাবিধ উৎসবগুলিকে। একেবারে প্রাচীন কাল থেকে আজ পর্যন্ত মানুষ কখনোই উৎসব বিমুখ ছিল না।উৎসবই তাকে ঘর থেকে বাইরে টেনে এনেছে,চিনতে শিখিয়েছে আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার আনন্দকে। উৎসব আসলে প্রাণের সাথে প্রাণের যোগ, হৃদয়ের সাথে হৃদয়ের যোগ।রবীন্দ্রনাথ বলেছেন 'সত্য যেখানেই সুন্দর হয়ে প্রকাশ পায় সেইখানেই উৎসব'।হৃদয়ের সেই সুকোমল বৃত্তির জাগরণ যেন ফুটে ওঠা ফুলেরই মতো সত্য ও সুন্দর।এই জাগরণই উৎসব। তাই নানা কিছুর মধ্য দিয়ে,নানা উপলক্ষ্যে এই উৎসব প্রকাশ পায়। প্রাচীনকালে মানুষের হাতে না ছিল পসার, না ছিল পসরা।ছিল মনের আন্তরিকতা,মানুষকে কাছে টেনে নেবার ক্ষমতা।সেটাই ছিল উৎসবের সৌন্দর্য। তাই সেদিনের উৎসবে ক্ষুদ্র,তুচ্ছ উপকরণও প্রাণের উচ্ছ্বাসে মহৎ হয়ে উঠত।সেকালের উৎসবে লোক দেখানো ব্যাপার কিছু ...

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

বসন্তের কোকিল তুমি   বিচিত্র কুমার                      (০১) তোমার দু-আঁখির গহীন অরণ্যে একটা স্বপ্নের বহমান নদী রয়েছে, তারই রেশ ধরে আমি হেঁটে চলি অজানা বসন্তের পথে নীর উদ্দেশ্যে। সে চলার কোন শেষ সীমা নেই তাই আমার বিষণ্ণ একতারা সন্ন্যাস খুঁজে ফিরে , কবে তুমি বুঝবে অনুশ্রী মনের পর্দা খুলে একুশ বসন্ত তোমার রঙ ছিটিয়ে যাচ্ছে অচিনপুরে। এদিকে আমার দেহের প্রতিটি শিরা ধমনীতে প্রবাহিত হচ্ছে তোমার ভালোবাসার একটু উষ্ণতা পাবার জন্যে, শুধু অনুভবে তাণ্ডব উচ্ছাসিত হচ্ছে--- যেদিকে তাকাই --- ফুলে ফুলে ভ্রমর গুনগুনিয়ে উড়ে উড়ে পরে বসন্তের কোকিল গান গায় নব বসন্তে, তোমার দুই চোখে আমার একই ছায়া রয়ে যায় উতলা ভালোবাসার সীমান্তে।                 (০২)        এক রক্তাক্ত বসন্তের স্মৃতি কোন এক উতলা বসন্তের সকালে পুষ্পবনে ফুটেছিল একটি টকটকে লাল গোলাপ, তার সাথে হয়েছিলো দেখা প্রথম ফাগুনে হয়েছিল দুজনার এ জীবনের আলাপ।  তারপর প্র...

অনুভবে, অনুধ্যানে অনালোকিত কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী ।। সুপ্রিয় গঙ্গোপাধ্যায়

"এ কালে একটু লেখাপড়া জানা থাকাতে, এবং বঙ্গভাষায় অনেক গুলি পাঠ্য পুস্তক হওয়াতে কেবল পরনিন্দা করিয়া সময় কাটাইতে তাঁহাদের আবশ্যকও হয় না, প্রবৃত্তিও হয় না। …নিতান্ত সখ্যতা বা আত্মীয়তা না থাকিলে, সকল পেটের কথা খুলিয়া নিঃশ্বাস ছাড়িয়া তৃপ্তিলাভ করা, এ কালের মেয়েরা পছন্দ করেন না। তাঁহারা বইখানি, কার্পেটটুকু, নিজের স্বামী পুত্র লইয়া দিন যাপন করিতে বা একেলা থাকিতে কষ্ট বোধ করেন না।" —শরৎকুমারী চৌধুরাণীর এই লেখা (ভারতী ও বালক/ আশ্বিন কার্তিক, মাঘ/ ১২৯৮) দেখে বুঝতে অসুবিধা হয় না উনিশ শতকে নারীর লেখাপড়া শেখার উদ্দেশ্য ছিল মূলত আত্মমুক্তির জন্য। শুধু লেখাপড়া শেখা নয়, সাহিত্য সৃষ্টিতেও ছয়'এর দশক (উনিশ শতকের) থেকে নারীরা যে ধারা সূত্রপাত করেছিল তা নারীর আত্মমুক্তির পথকেই প্রসারিত করেছিল। ছয়'এর দশকের পূর্বেই ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে প্রথম ছাপার হরফে নারী রচিত কাব্য 'চিত্তবিলাসিনী' প্রকাশিত হয়। লেখেন কৃষ্ণকামিনী দাসী। ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে কবি ঠাকুরাণী দাসীর নাম উঠে আসতে থাকে, যিনি কবিতার পাশাপাশি গদ্যও লিখতেন। ঠিক সেই বছরই জন্মগ্রহণ করেন কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী, যাঁর কবিতা লেখা আত্মমুক্...

বছরের বাছাই

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৪তম সংখ্যা ।। ফাল্গুন ১৪৩১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

  এই সংখ্যায় একটি গ্রন্থ আলোচনা ও একটি ধারাবাহিক রচনা ছাড়া সব লেখাই ভাষা দিবস, মাতৃভাষা, ভাষাচেতনা ও ভাষা সমস্যা বিষয়ক রচনা। লেখাগুলি এই সংখ্যাকে অনেকটাই সমৃদ্ধ করেছে। পড়ুন। শেয়ার করুন। মতামত জানান। লেখকগণ নিজের নিজের লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন যতখুশি, যে মাধ্যমে খুশি। কিন্তু স্ক্রিনশট শেয়ার নৈব নৈব চ!  অন্য বিষয়ের লেখাগুলি আগামী সংখ্যার জন্য রইল।  সকলকে ধন্যবাদ, অভিনন্দন। ভালো থাকুন।   --সম্পাদক, নবপ্রভাত। ==  সূ  চি  প  ত্র  == প্রবন্ধ-নিবন্ধ অমর ২১শে ফেব্রুয়ারি বাঙ্গালীর বাংলা ভাষা দুর্জয় দিবস।। বটু কৃষ্ণ হালদার ভাষা শহীদদের পঁচাত্তর বছর।। অনিন্দ্য পাল একুশে ফেব্রুয়ারি : বাঙালির শ্রেষ্ঠ অশ্রুবিন্দু।। জীবনকুমার সরকার কবিগানের সাহিত্যিক ও সমাজতাত্ত্বিক মূল্য।। বারিদ বরন গুপ্ত বিপন্ন মাতৃভাষা ও সংস্কৃতি।। শ্যামল হুদাতী মায়ের দুধ আর মাতৃভাষা।। প্রদীপ কুমার দে একুশে ফেব্রুয়ারি : কিছু কথা।। বনশ্রী গোপ বাংলায় কথা বাংলায় কাজ।। চন্দন দাশগুপ্ত বিপন্ন মাতৃভাষা ও তার মুক্তির পথ।। মিঠুন মুখার্জী. হে অমর একুশে, তোমায় ভুলিনি, ভুলব না।। মহম্মদ মফিজুল ইসলা...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৭তম সংখ্যা ।। জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ মে ২০২৫

  প্রচ্ছদ চিত্র: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সূচিপত্র রবীন্দ্রনাথ এবং কয়েকজন নারী ।। অনিন্দ্য পাল পরাবাস্তববাদ ও বাংলায় জীবনানন্দের কাব্যচর্চা ।। রণেশ রায় প্রতীক্ষা ।। চন্দন দাশগুপ্ত আশ্রয় ।। সায়নী সাহা বয়স্ক শিক্ষাকেন্দ্র ।। দেবাংশু সরকার প্রণামের প্রভু ।। সুপ্রভাত মেট্যা দুর্ভাগ্যের সম্মুখ সমরে ।। সমীর কুমার দত্ত আচমকা শরৎ ।। অর্ণব সামন্ত প্রতিধ্বনি ✍️ সুবীর কুমার ঘোষ জীবন যেখানে যেমন ।। আরজু মুন জারিন বছর সীমান্তে হিসেব নিকেশ ।। রানা জামান চারটি কবিতা ।। বিবেকানন্দ নস্কর আমরা আছি ।। লালন চাঁদ চাওয়া ।। মাথুর দাস কাগজ ফুলে ।। সফিউল মল্লিক সময়ের স্রোত ।। দুর্গাদাস মিদ্যা তুমি মানুষ ।। বদরুল বোরহান দিঘার সমুদ্র ।। মাখনলাল প্রধান পুস্তক-আলোচনা ।। অরবিন্দ পুরকাইত সংযম ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত  চেনা প্রতিবেশী (প্রথম পর্ব) ।। দীপক পাল খেলার মাঠ ।। তূয়া নূর বন্ধু শ্যামলকান্তি ।। শংকর ব্রহ্ম তুমি তোমার মতো থাকলে ।। সত্যেন্দ্রনাথ বেরা গ্রীষ্মে খুবই হিংস্র রবি ।। জগবন্ধু হালদার স্বপ্ন দর্শন ✍️ পার্থ প্রতিম দাস মৌন মুখরতা ।। মুসা মন্ডল রুদ্র বৈশাখ ।। দীনেশ সরকার চিহ্নিত পদযুগ পদাঘাত ।। দেবাশীষ...

প্রচ্ছদ।। ৮৩তম সংখ্যা ।। মাঘ ১৪৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ।। প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র

  বিঃ দ্রঃ আগামী ফেব্রুয়ারি সংখ্যার জন্য ভাষা দিবসের কথা মাথায় রেখে লেখা পাঠান। email: nabapravatblog@gmail.com  সূচিপত্র ফিচার।। গোপাল ভাঁড়ের অজানা সত্য ।। লোকনাথ পাল প্রবন্ধ ।। মসুয়ার রায় পরিবার এবং বঙ্গসংস্কৃতি ।... প্রবন্ধ ।। সুধীন্দ্রনাথ দত্ত: কাব্যের দার্শনিক ও ন... কবিতায় সেতুবন্ধন (তৃতীয় অংশ) শিল্পবিপ্লবোত্তর কাল... রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর বিদ্রোহী প্রেমের কবিতা: ... কবিতা ।। এই মন ভালো নেই দিনে ।। সুপ্রভাত মেট্যা কবিতা ।। জোছনা আলোর স্বপ্ন ।। তুষার ভট্টাচাৰ্য কবিতা ।। নিঃস্ব হবো ।। লালন চাঁদ কবিতা ।। ভালোলাগা  ।। আজিজ উন নেসা  গল্প ।। স্বীকারোক্তি ।। চন্দন দাশগুপ্ত কবিতা ।। শীতের দিন ।। প্রশান্ত কুমার মন্ডল কবিতা ।। শীতকাল ।। অঙ্কিতা পাল নাসির ওয়াদেনের দুটি কবিতা ভূতের লেখা ছড়া ।। বদরুল বোরহান কবিতা ।। ব্যস্ত ।। আলাপন রায় চৌধুরী ছোটগল্প ।। লম্বুর স্বপ্নপূরণ ।। পরেশ চন্দ্র মাহাত কবিতা ।। সৎকার ।। সুমিত মোদক কবিতা।। শীত বৈচিত্র্য ।। সুমিতা চৌধুরী পুস্তক-আলোচনা ।। নিউটনের আপেল ও প্রেমিকা ।। অরবিন্... গল্প।। শান্তির পথে …...।। বন্দনা সেনগুপ্ত কবিতা ।। মা...

সূচিপত্র ।। ৮৯তম সংখ্যা ।। শ্রাবণ ১৪৩২ জুলাই ২০২৫

সূচিপত্র   প্রবন্ধ ।। বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় ।। মাখনলাল প্রধান প্রবন্ধ ।। শ্রমিকের অধিকার ।। চন্দন দাশগুপ্ত প্রবন্ধ ।। ভিনগ্রহীদের সন্ধানে ।। শ্যামল হুদাতী প্রবন্ধ ।। নারীমর্যাদা ও অধিকার ।। হিমাদ্রি শেখর দাস কবিতা ।। মশালের রং তুলি ।। তূণীর আচার্য কবিতা ।। জললিপি ।। রূপক চট্টোপাধ্যায় গুচ্ছকবিতা || শিশির আজম নিবন্ধ ।। পূনর্জন্ম ।। শংকর ব্রহ্ম মুক্তভাবনা ।। কোলাহল তো বারণ হলো ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত গল্প ।। গানের হাড় ।। শুভজিৎ দত্তগুপ্ত গল্প ।। শিকড়ের খোঁজে ।। সমীর কুমার দত্ত সুপ্রভাত মেট্যার পাঁচটি কবিতা গ্রন্থ-আলোচনা ।। আবদুস সালামের কাব্যগ্রন্থ 'অলীক রঙের বিশ্বাস'।। তৈমুর খান অণুগল্প ।। হরিবোল বুড়ো ।। সুমিত মোদক রম্যরচনা ।। গোয়েন্দা গোলাপচন্দ আর প্রেমের ভুল ঠিকানা ।। রাজদীপ মজুমদার দুটি গল্প ।। মুহাম্মদ ফজলুল হক দুটি কবিতা ।। তীর্থঙ্কর সুমিত কবিতা ।। মেঘমুক্তি ।। বন্দনা পাত্র কবিতা ।। ব্যবচ্ছিন্ন শরীর ।। কৌশিক চক্রবর্ত্তী কবিতা ।। শমনচিহ্ন ।। দীপঙ্কর সরকার কবিতা ।। ভালোবাসার দাগ ।। জয়শ্রী ব্যানার্জী কবিতা ।। ফণীমনসা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ছড়া ।। আজও যদি ।। বদ্রীন...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো,  তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) য...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮২তম সংখ্যা ।। পৌষ ১৪৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

  সূচিপত্র অন্নদাশঙ্কর রায়ের সাহিত্য: সমাজের আয়না ।। বিচিত্র কুমার প্রবন্ধ ।। বই হাতিয়ার ।। শ্যামল হুদাতী কবিতায় সংস্কৃতায়ন (দ্বিতীয় ভাগ ) ।। রণেশ রায় পুস্তক-আলোচনা ।। অরবিন্দ পুরকাইত কবিতা ।। লেগে থাকা রোদ্দুরের ঘ্রাণের মতো ।। জয়শ্রী ব্যানার্জি কবিতা ।। ভুল ।। সুপ্রভাত মেট্যা কবিতা ।। উন্মেষ ।। বিশ্বজিৎ সেনগুপ্ত কবিতা ।। গার্হস্থ্য ।। বিবেকানন্দ নস্কর একগুচ্ছ বিজয়ের কবিতা ।। বিচিত্র কুমার গল্প ।। পোষ্য ভূত ।। সমীর কুমার দত্ত কবিতা ।। আশপাশ ।। প্রতীক মিত্র কবিতা ।। মেঘ ।। তীর্থঙ্কর সুমিত অণুগল্প ।। বংশীবদনের সুখদুঃখ ।। দীনেশ সরকার কবিতা ।। গভীর রাত ।। সুনন্দ মন্ডল তিনটি কবিতা ।। সুশান্ত সেন ভালোবাসার বাসা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত অণুগল্প ।। শিক্ষকের সম্মান ।। মিঠুন মুখার্জী কবিতা।। প্রশ্ন ।। জীবন সরখেল কবিতা ।।ক্ষরিত সে পথ ।। রহিত ঘোষাল কবিতা ।। রক্ত দিয়ে কেনা ।। মুহাম্মদ মুকুল মিয়া কবিতা ।। কংক্রিট ।। আলাপন রায় চৌধুরী ছড়া ।। শীত নেমেছে ।। রঞ্জন কুমার মণ্ডল কবিতা ।। কিছু শব্দ ।। সমীর কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় কবিতা ।। শীতের নগ্নতা ।। রানা জামান কবিতা ।। পথ চলা ।। পাভেল আমান বেদ পু...

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ৮৬তম সংখ্যা ।। বৈশাখ ১৪৩২ এপ্রিল ২০২৫

সম্পাদকীয় এই সংখ্যাটি বাংলা নববর্ষ বিষয়ক সংখ্যা। নৱৰ্ষকেন্দ্রিক বহু তথ্যপূর্ণ লেখা এই সংখ্যাটিকে সমৃদ্ধ করেছে। বাংলা নববর্ষ উদযাপনের ইতিহাস, রীতিনীতি, উৎসব, পার্বন, লোকাচার, রূপান্তর বহুবিধ বিষয় প্রকাশিত হয়েছে এই সংখ্যার লেখাগুলিতে। এই সংখ্যার বাছাই কিছু লেখার সঙ্গে আগামীতে আরও কিছু লেখা সংযুক্ত করে বাংলা নববর্ষ বিষয়ক একটি মুদ্রিত সংখ্যা প্রকাশ করার ইচ্ছে রইল।  সকলকে নববর্ষের আন্তরিক শুভকামনা জানাই। উৎসবে আনন্দে থাকুন, হানাহানিতে নয়। ধর্ম-ব্যবসায়ীদের চক্রান্ত ব্যর্থ করে সহনাগরিকের পাশে থাকুন। মনে রাখুন, ধর্মকে মানুষই সৃষ্টি করেছে। ঈশ্বর আল্লা গড ইত্যাদির জন্মদাতা মানুষই। মানুষকে ভালোবাসুন। মানুষের পাশে থাকুন।  নিরাশাহরণ নস্কর  সম্পাদক, নবপ্রভাত।  সূচিপত্র প্রবন্ধ-নিবন্ধ-স্মৃতিকথা পয়লা বৈশাখ ।। সিদ্ধার্থ সিংহ নববর্ষকেন্দ্রিক মেলা, পার্বন, উত্সব, লোকাচার ।। সবিতা রায় বিশ্বাস নববর্ষ আবাহন ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে এবং বিভিন্ন দেশে ।। তুষার ভট্টাচার্য নববর্ষের সেকাল ও একাল ।। হিমাদ্রি শেখর দাস নববর্ষের হাল-হকিকৎ ।। শংকর ব্রহ্ম বোশেখি বাঙালি নাকি পোশাকি বাঙালি? ।। দিব্যেন্দু...

প্রবন্ধ ।। বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় ।। মাখনলাল প্রধান

বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় মাখনলাল প্রধান বাংলার শিল্প-সংস্কৃতির জগতে যাত্রা শিল্প তথা নাট‍্যশিল্পে মড়ক নেমে এসেছে । যাত্রা শিল্পের মড়কে শুধু কোভিড নয় তার বহুপূর্ব থেকেই অর্থনৈতিক বিপর্যয় , শিক্ষাক্ষেত্রে বন্ধ‍্যাত্ব এবং গ্ৰাম বাংলার পটপরিবর্তন শেষ পেরেক ঠুকে দিয়েছে। যাত্রা-শিল্পের লীলাভূমি ছিল গ্ৰাম বাংলা। গ্ৰামে প্রচুর যাত্রাপালা হত নানা উৎসবকে কেন্দ্র করে । জমিদারি ব‍্যবস্থা লুপ্ত হওয়ার পর গ্ৰামীণ মানুষের উদ‍্যোগে শীতলা পূজা,  কালীপূজা, দুর্গাপূজা, কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা, চড়ক ইত‍্যাদিকে উপলক্ষ‍্য করে যাত্রাপালার আয়োজন না হলে কেমন যেন ম‍্যাড়ম‍্যাড়ে লাগতো। সেই সঙ্গে কলকাতার বড়বড় কোম্পানির যাত্রাপালা ঘটা করে, টিকিট সেল করে হত মাঠে। খুব বড় মাপের খেলার মাঠ যেখানে ছিল না সেখানে ধানের মাঠ নেওয়া হত ‌। ত্রিশ-চল্লিশ হাজার মানুষ দেখতে আসত। স্পেশাল বাস পাঠাত  আয়োজক কর্তৃপক্ষ। বিনা ভাড়ায় বাসে যাতায়াত করত যাত্রার দর্শকেরা। কিন্তু বিকল্প ধানচাষ শুরু হলে জমিগুলো সময় মতো ফাঁকা পাওয়া গেল না । প্রথম দিকে ব‍্যাপকহারে ধান শুরু না হওয়ায় খুব একটা অসুবিধা হত না। বহুক্ষেত্রে  ধান কা...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। নবপ্রভাত ৮৫ ।। চৈত্র ১৪৩১ মার্চ ২০২৫

  সূচিপত্র নিবন্ধ ।। মরিয়ম মির্জাখানি: এক অনন্য গণিতসূর্য ।। ... নিবন্ধ ।। নারী দিবসে যা ভাবা উচিত ।। বিশ্বনাথ পাল প্রবন্ধ ।। প্রাচীনকাল থেকে নারীরা অবহেলিত, বঞ্চিত,... নিবন্ধ ।। আমার চোখে আদর্শ নারী ।। জয়শ্রী বন্দ্... ফিচার।। এই মুহূর্তে বাংলা সাহিত্যে নারীদের লেখালেখ... আফ্রিকার লোককথা ।। করোটিকে বিয়ে করা অবাধ্য মেয়েটি ... ছোটগল্প ।। মানবী ।। ভুবনেশ্বর মন্ডল নিবন্ধ ।। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে অন্যতম নারী মু... নিবন্ধ ।। প্রিয় মহিলা সাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবী ।। ... গল্প ।। উই ওয়ান্ট জাস্টিস ।। রবীন বসু প্রবন্ধ ।। নিপীড়িতা ।। শ্যামল হুদাতী ফিচার ।। রমণী রতন ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত প্রবন্ধ ।। নারী সমাজ : তখন-এখন ।। তপন মাইতি নিবন্ধ ।। বহমান কালের ধারায় নারী ।। দীপক পাল গল্প ।। আমার দুর্গা ।। অঞ্জনা গোড়িয়া (সাউ) গল্প ।। যোগ্য জবাব ।। সমীর কুমার দত্ত ছোটগল্প ।। আমি দুর্গাকে দেখেছি।। চন্দন দাশগুপ্ত গল্প ।। সম্পর্ক ।। গৌতম সমাজদার কবিতা।। নারী মানে ।। গোবিন্দ মোদক কবিতা।। নারী ।। সমর আচার্য্য ছড়া ।। নারী অসামান্যা ।। সৌমিত্র মজুমদার কবিতা ।। নারী দিবসে ।। বিবেকানন্দ নস্কর কবিতা ।। না...

প্রবন্ধ ।। ভিনগ্রহীদের সন্ধানে ।। শ্যামল হুদাতী

ভিনগ্রহীদের সন্ধানে  শ্যামল হুদাতী  ইতিহাসের শুরু থেকে বারবার মানুষকে একটা প্রশ্ন কুঁড়ে কুঁড়ে খায় – এই মহাবিশ্বে আমরা কি একা? পৃথিবীর মতো আরও গ্রহ রয়েছে, যেখানে মানুষের মতো বুদ্ধিমান প্রাণীরা বাস করে – এই সম্ভাবনা বরাবর মানুষকে মুগ্ধ করেছে। আমাদের প্রত্যেকের জীবনের কখনও না কখনও এই ভাবনা এসেছে। দীর্ঘ কয়েক দশকের গবেষণার পরও, এই বিষয়ে কোনও নিশ্চয়তা দিতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। জেমস ওয়েব মহাকাশ টেলিস্কোপ, বহু দূরের এমন কিছু গ্রহের সন্ধান দিয়েছে, যেগুলিতে প্রাণ থাকতেই পারে। তবে, নিশ্চিত কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে, আমেরিকার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাম্প্রতিক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, ভিনগ্রহীদের খুঁজতে বহু দূরে যাওয়ার কোনও দরকার নেই। তারা এই পৃথিবীতেই মানুষের ছদ্মবেশে মানুষের মধ্যেই বসবাস করতে পারে। আমরা ভিনগ্রহীদের যেমন কল্পনা করি, এরা তার থেকে আলাদা। এরা অনেকটাই, দেবদূতদের মতো। মানব জগতের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক প্রযুক্তিগত নয়, বরং জাদুকরি। মহাকাশে সৌরজগতের গ্রহ পৃথিবী ছাড়া অন্য কোথায় প্রাণ রয়েছে কি না তা নিয়ে চলছে বিস্তর গবেষণা। একই সঙ্গে পৃথিবী ছাড়া অন্য কোনো গ্রহে মানুষ বসবাস ক...

মাসের বাছাই

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬

  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠালে  অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে হলে ভালো। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # ...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯২তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩২ অক্টোবর ২০২৫

—: সম্পাদকীয় দপ্তর থেকে :— এই সংখ্যার জন্য লেখা এসেছিল প্রায় ১৮০টা। কিন্তু গুণগত মানে দুর্বল লেখার সংখ্যা বহু। আমরা নবপ্রভাতে নতুনদের কথা ভেবে বেশ কিছু দুর্বল লেখাও রাখি। কিন্তু সবসময় একই লোকের দুর্বল লেখা প্রকাশ করা অনুচিত বলে মনে করি। শেষ পর্যন্ত ৯৯ জনের লেখা রাখা গেল। যাদের লেখা প্রকাশিত হল না, তারা লেখাগুলি অন্য যেখানে খুশি পাঠাতে পারেন। বিশেষ কারণে এই সংখ্যার মুদ্রিত সংস্করণ প্রকাশিত হচ্ছে না। আমরা দুঃখিত। তবে মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি শীঘ্রই আসছে। সঙ্গে থাকুন। সকলকে উৎসবমুখর বর্ণময় শুভেচ্ছাসহ— —নিরাশাহরণ নস্কর, সম্পাদক, নবপ্রভাত। অনুরোধ : প্রকাশিত লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন, ছবি/স্ক্রীনশট নয়।  == সূচিপত্র == পড়া-লেখার ইতিহাস অনুসন্ধান।। তপন তরফদার উৎসব : মানুষের চিরন্তন আত্মপ্রকাশ।। কৃশানু ব্যানার্জি বাংলা : সভ্যতা ও সংস্কৃতির জন্মভূমি।। শ্যামল হুদাতী সমুদ্র আর অস্তিত্ব ।। সুব্রত চৌধুরী রাজা ছিলেন জুবিন গর্গ ।। গঙ্গা 'অনু'   আদ্যাশক্তি মহামায়ার বাংলা বারো মাসের বারো রূপ ।। অর্হণ জানা মেধাদাদুর আসর ।। রণেশ রায় বৈজ্ঞানিক মা...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯৩তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩২ নভেম্বর ২০২৫

সূচিপত্র বস্তু, চেতনা এবং কবি ।। সজল চক্রবর্তী দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত ।। রণেশ রায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট ও সন্নিহিত অঞ্চলের কথ্য শব্দ ।। অরবিন্দ পুরকাইত চাঁদে জীবন ।। শমীক সমাদ্দার অসমাপ্তি ।। মহুয়া হুই গ্যালাক্সির শব্দে ।। জাসমিনা খাতুন তিনটি কবিতা ।। দিবাকর সেন অপূর্ণতার শেষ অধ্যায় ।। সুপ্রিয় সাহা হাফ ডজন ছড়া ।। স্বপনকুমার পাহাড়ী স্বাপ্নিক অমলের ঘুৃম ।। সঞ্জয় দেওয়ান দুটি কবিতা ।। সৌমিত্র উপাধ্যায় পথ চলতি ✍️পার্থ প্রতিম দাস হেমন্তের বিষাদ ছুঁয়ে ।। শক্তিপদ পাঠক রাই আর বাবা ।। অদিতি চ্যাটার্জি স্থিতিশীল ।। রঞ্জিত মুখোপাধ্যায় হৃদয়ের শূন্য কোড ।। লিপিকা পিঙ্কি দে অমানিশা ।। সৌভিক মুখার্জী দৃষ্টিগত ।। শামীম নওরোজ জ্যান্ত ভূতের গপ্পো ।। পার্থ সারথি চট্টোপাধ্যায় ধুতরা ফুলের ঘ্রাণ ।। মজনু মিয়া তারা খসার আলোয় ।। তীর্থঙ্কর সুমিত উত্তরণে অন্তরায় ।। সমীর কুমার দত্ত প্রেম মুদ্রা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ধারা ।। লালন চাঁদ অন্যের ব্যথায় ব্যথি ।। জগদীশ মণ্ডল গর্ভ ।। শাশ্বত বোস ভ্রমণ বিষয়ক স্মৃতিকথা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত শাপে বর ।। সাইফুল ইসলাম রবিবার ।। সঙ্ঘমিত্রা দাস দুটি ...

দিদৃক্ষা ।। রাজেশ কে. চক্রবর্ত্তী

  দিদৃক্ষা রাজেশ কে. চক্রবর্ত্তী 'কাল একবার দেখা হতে পারে?' দশমীর দুপুরে খাটে আধশোয়া হয়ে নিজের ফোনটা ঘাঁটছিল দেবমাল্য; হোয়াট্‌সঅ্যাপের সার্চ বক্সে  র‍্যান্ডম সিক্যুয়েন্সে ক'খানা ডিজিট ইনপুট করতেই বিস্মৃতির অতল থেকে অপ্রত্যাশিতভাবে যে নামটা স্ক্রিনের সারফেসে ভেসে উঠল, এককালে দেবমাল্যের প্রায়োরিটি লিস্টে সবথেকে ওপরে পিন্‌ করা থাকতো এই অ্যাকাউন্টটা। 'অহনা দাশগুপ্ত'—গ্রেয়েড-আউট ডিপিটার ডানদিকে, নামটার তলায় নিস্প্রভ হরফে ভেসে থাকা ওর এই লাস্ট মেসেজটা বেশ ক'বছরের পুরনো, কিন্তু দেবমাল্যর স্মৃতির প্যান্ডোরা বাক্সটি উলটে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল। আরেকবার আপাদমস্তক শিহরিত হয় সে। প্রোফাইলটা খুলে ওপরে-নীচে স্ক্রল্‌ করে দেখে, ওদের পুরনো চ্যাটগুলো তেমনি আড়ষ্ট হয়ে পড়ে আছে, ওর মেসেজগুলোর পাশে ডাবল টিকগুলো এখনও জাজ্বল্যমান সবুজে ছোপানো, যেন এইমাত্র 'সিন্‌' করে রেখেছে অহনা! যেন এখুনি আবার হাত বোলালেই অহনা এসে খানিকটা রাগত ভঙ্গিতে চ্যাট করতে লেগে যাবে। দেবমাল্যের বুক ছাপিয়ে একটা নীরব দীর্ঘশ্বাস উঠে আসে! ছুটির এই আমেজটা লক্ষ্মীপুজো অব্দি গড়াবে—অফিস খুললেই তো আবার দমফাটা ব্য...

গুচ্ছকবিতা || শিশির আজম

  গুচ্ছকবিতা || শিশির আজম হুইসেল (মুরাকামি থেকে অনুপ্রাণিত) ♦ 'গভীর রাতে একটা হুইসেল কতটা গভীর হতে পারে তুমি কল্পনাও করতে পারো না,' ছেলেটা বললো, 'আশ্চর্য ঐ হুইসেলের মতো আমি ভালবাসি তোমাকে।' কিন্তু গভীর রাতে অন্ধকারে কখনও তো ঘুম ভেঙে যায়নি মেয়েটার, কখনও ও বিচ্ছিন্ন আর একা হয়ে যায়নি। ও কীভাবে অনুভব করবে গভীর রাতে ট্রেনের হুইসেল কতটা গভীর! নিউজ এজেন্সি ♦ একসময় আমরা খবর শুনতাম এখন দেখি স্বীকার করতে হবে খবর শোনার চেয়ে দেখার আনন্দ বেশি আলাদা উত্তেজনা নিউজ এজেন্সিগুলো এব্যাপারে তৎপর আর প্রতিযোগিতাপূর্ণ কোনটা নিউজ সেটা ওরাই ঠিক করে যেটা ওদের দরকার আর সেটাই আমাদের দেখানো হয় ধারাবাহিকভাবে সুচারু জ্যামিতিকতায় বিভিন্ন পদ মিশিয়ে খাওয়ানো হয় নতুন বাস্তবতা নির্মাণে যে বাস্তবতায় জায়গা নেই আমাদের ইতিহাস অন্বেষা স্বাধীনতার সমৃদ্ধি আর স্বাধীনতার কথা বলেই ওরা আমার ক্ষেতখামার পাহাড় আর নদীর দখল নিয়েছে তাহলে টিভিতে যে হাসিখুশি প্রাণবন্ত আমাদেরকে দেখানো হয় ওরা কারা এই প্রশ্ন করো নিজের কাছে আগুন নিয়ে খেলা ♦ আজও পুকুরে ছিপ ফেলে বসবো আমি ধীরে চুপ সূর্য আমার ঘাড়ে শ্বাস ফেলবে সারারাত ঘরের ভেতর ল্যাং...

বিদায়ের স্রোত ।। চয়ন মন্ডল

  বিদায়ের স্রোত চয়ন মন্ডল "বিজয়া দশমী—আনন্দের দিন, কারও কাছে যা হয়ে উঠল চিরন্তন বিদায়।" আজ বিজয়া দশমী। শিউলি ফুলের গন্ধে ভোরটা অন্যরকম। পাড়ার প্যান্ডেলে অদ্ভুত এক কোলাহল—মায়ের বিদায় যে আজ। শঙ্খধ্বনি, ঢাকের বাজনা আর উলুধ্বনিতে গমগম করছে চারদিক। একদিকে মা দুর্গার বিদায়ের বেদনা, অন্যদিকে আনন্দ ও মিলনমেলা। সারা বছরের অপেক্ষা শেষে এই দিনটিতে প্যান্ডেল ভরে উঠেছে মানুষের ভিড়ে। সকালের পূজার্চনা শেষ হতেই শুরু হয়েছে সিঁদুর খেলা। মহিলারা মায়ের প্রতিমাকে সিঁদুর পরিয়ে একে অপরের কপালে, গালে রাঙিয়ে দিচ্ছেন। ঢাকের তালে আর শাঁখ বাজনার আবেশে ভেসে যাচ্ছে পাড়া। শুরু হয়েছে প্রতিমা বিসর্জনের প্রস্তুতি। কিন্তু এসবের মধ্যে নেই অনুরাধা। কেউ তার বা মিনির খোঁজ রাখেনি। মুখার্জিদের দোতলা বাড়ির কোণের ঘরে বসে সে চোখের জল ফেলছে। সবার বাড়িতে আলোর রোশনাই, ভোগের গন্ধ, হাসি—শুধু তাদের ঘরটিতে নিস্তব্ধতা। গতবছর এই দিনেই তো অন্যরকম ছিল সবকিছু। অনুরাধা, সুজয় আর তাদের তিন বছরের মেয়ে মিনি পাড়ার প্যান্ডেলে ঢাকের তালে নেচেছিল, সিঁদুর খেলায় রঙে ভেসেছিল। বিকেলের দিকে প্রতিমা বিসর্জনের মিছিলে শামিল ...

কবিতা ।। অরণ্যকন্যা ।। অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়

  অরণ্যকন্যা অরিন্দম চট্টোপাধ্যায় অরণ্যকন্যার দৃষ্টির ভেতর বিষাদ বিন্দু ফোঁটা ফোঁটা জলের মতো গড়িয়ে যায়, হয়ে যায় কোন নদীপথ দৃষ্টি ভেঙে ভেঙে চলে যায় কোন এক শূন্য পথে অরণ্যকন্যার হৃদয়ের ভেতর ভাঙে যতো বৃক্ষপত্র নতুন পত্র পুষ্পের খোঁজ নেই ঠোঁট জুড়ে সমুদ্রকাঁপন বুদবুদের মতো অস্ফুট হয়ে উচ্চারিত হয় কোন অক্ষর শব্দ আর তাঁর শরীর থেকে ছড়িয়ে যায় হয়ে যায় একটা অদৃশ্য কবিতা...    ================== @ অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়,  বেহালা, কলকাতা -৭০০০৬০,  

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯১তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পাদকীয় দপ্তর থেকে এই সংখ্যায়  'শিক্ষা ও শিক্ষক' বিষয়ক বেশ কিছু লেখার পাশাপাশি রয়েছে বিচিত্র বিষয়ের আরও কিছু লেখা। সব মিলিয়ে সংখ্যাটি আপনাদের সমৃদ্ধ করবে, আপ্লুত করবে — এ বিষয়ে আমরা আশাবাদী। আপনাদের মতামত অবশ্যই জানাবেন। আমরা প্রতীক্ষিত।            আগামী অক্টোবর ২০২৫ সংখ্যা 'উৎসব সংখ্যা' হিসাবে প্রকাশিত হবে। ওয়েব সংখ্যার পাশাপাশি নির্বাচিত লেখাগুলি নিয়ে একটি pdf এবং তার মুদ্রিত সংস্করণও প্রকাশিত হবে। তাই অপ্রকাশিত ভালো লেখা পাঠান। বিশেষ কোনও বিষয় নেই। প্রবন্ধ-নিবন্ধ-ফিচার ২০০০ শব্দ, গল্প ১২০০ শব্দ, অণুগল্প ৫০০ শব্দ, কবিতা-ছড়া ২৪ লাইনের মধ্যে হলে ভালো। ইমেলঃ nabapravatblog@gmail.com           বিস্তারিত বিজ্ঞপ্তি আসবে। সামাজিক মাধ্যমে আমদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন। সময় মতো সব সংবাদ পেয়ে যাবেন।  শারদ উৎসবের দিনগুলি সকলের আনন্দে কাটুক এই কামনা করি। —নিরাশাহরণ নস্কর সম্পাদক: নবপ্রভাত মোঃ ৯৪৩৩৩৯৩৫৫৬ Whatsapp Group:  https://chat.whatsapp.com/ AIpj98JKbloFSpeqMcpr6j Facebook Page:  https://www.facebook.com/ share...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো,  তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) য...

শেষ বিকেলের আলো ।। সৈকত প্রসাদ রায়

  শেষ বিকেলের আলো সৈকত প্রসাদ রায় রানাঘাট শহরের প্রান্তে ছোট্ট এক পাড়া বিশ্বাসপাড়া। সেই পাড়ার পুরোনো ভাঙাচোরা বাড়িটায় থাকেন পুষ্পরাণী ভট্টাচার্য— বয়স পঁয়ষট্টির কোঠায়। সবাই তাকে "পুষ্পদি" বলেই চেনে। একসময় প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতা করতেন, এখন অবসর নিয়েছেন। প্রতিদিন বিকেলে পুষ্পদি বারান্দায় বসে চা খান। ছোট একটা টেবিল, কয়েকটা পুরোনো বই, আর একখানা নীল কাঁচের ফুলদানি — তার নিত্যসঙ্গী। বারান্দার সামনেই একটা গলি, যেখান দিয়ে প্রতিদিনই স্কুল ছুটির পরে বাচ্চারা হইচই করে ছুটে যায়। পুষ্পদির একমাত্র ছেলে অনিরুদ্ধ — কলকাতায় চাকরি করে। ছেলেটা আধুনিক, নিজের সংসার আছে, স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ব্যস্ত। বছরে হয়তো একবার আসে, তাও কিছুক্ষণ বসে আবার চলে যায়। পুষ্পদি মুখে কিছু বলেন না, কিন্তু বুকের ভেতরে একটা কষ্ট জমে থাকে। সেই বিকেলটা অন্যরকম ছিল। আকাশে ধুলো, গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা। হঠাৎ পুষ্পদির চোখে পড়ে — রাস্তায় এক কিশোর বসে আছে। বয়স বারো-তেরোর বেশি নয়। মলিন জামা, পায়ে ছেঁড়া চটি। ছেলেটা একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে পুষ্পদির বাড়ির গেটে ঝুলে থাকা পুরোনো নোটিশবোর্ডটার দিকে, যেখানে একসময় লেখা ছিল — "পুষ্পরাণী ভ...