কবিতা-১
ঘড়ি
মনোজ চৌধুরী
নির্দিষ্ট সংখ্যার মারপ্যাঁচে অনর্গল সময়কে
আমি অনবরত হত্যা করে সামনের দিকে
কেবল স্মৃতিগুচ্ছ গুছিয়ে আলমারি বন্দী
করে রাখার চেষ্টা করি...তবু পিছলে যায়
এ জীবনকে পা পা করে ঠেলে নিয়ে যায়
বোকা সেজে বাধ্য হয়ে; বারবার আটকে
যাওয়া সত্ত্বেও হলদে হওয়া জীবনরসকে
চিরহরিৎ করার জন্য শতবার করি সন্ধি।
কিন্তু ঘূর্ণন থমকে যায় না কোনো মুহূর্তে
এক বিন্দুর জন্য। সুখ দুঃখ সাজায় বৃত্ত
সবুজ পাতার;শত ধূসর পাতার পরিবর্তে
ঘড়ির কাটা ঘুরবে রামধনুর মতো নিত্য।
কবিতা-২
আকাশ
মনোজ চৌধুরী
মাইলের পর মাইল অক্লান্ত পথ হেঁটে
কষ্টাঘাত উপেক্ষা করে
মাথার উপর দিব্যি এক নিশ্চিন্তের আকাশ
সৃষ্টি করেছে লোকটি
রক্তসম নোনা বৃষ্টিতে অসীম ভিজে
চার দেয়াল দাঁড় করিয়েছে
নগ্ন শরীর রক্ষার্থে
লোকটির বৃহৎ কঠিন চামড়া
শুধু চিত্ত স্পঞ্জের মতো নরম
দিবারাতহীন জীবন ধূসর আবছায়া ভর্তি
একরাশ সেতু এড়িয়ে
লোকটি স্থায়ী একটি আকাশ সৃষ্টি করে
আগামীতে ক্রমশ ঝাপসা হয়ে যায়
না চাওয়া সত্ত্বেও।
কবিতা-৩
একরাশ মান
মনোজ চৌধুরী
চিত্তমাঝে বিবশভাবে একরাশ মান জমেছে
আমি একদৃষ্টিও আড়াল হতে পারিনি, শুধু
তোমার বকুনিকে ভালোবাসার সাজ দিয়ে
রজনীগন্ধার অশেষ সুগন্ধ ছড়িয়ে দিয়েছি
তোমার মানাভিমানের অনন্ত সীমান্ত পর্যন্ত।
আমি নতজানু হয়ে তোমার মানের সমীপেষূ
আমার নিংড়ানো ভালোবাসা টুকু পেতে দেব
শুধু গ্ৰহণ করে নিও ।
নিঃশব্দ কথামালায় শাশ্বত শ্যামল বৃক্ষচূড়া
দাঁড় করিয়ে শতাব্দী বিঘা গোলাপ পুঁতে-
চিরনতুনের ডাক দিয়ে সমস্ত মান ভাঙবো
ভালোবাসি বলে। দরজা খুলে মুক্ত অম্বরে
তুমি শুধু মেনে গিয়ে পাশাপাশি উভয় নাম
লিখে জানান দিও।
=================
মনোজ চৌধুরী
গ্ৰাম- কাগমারী হাটপাড়া
জেলা- মালদা, ৭৩২২০৭
Comments
Post a Comment