Skip to main content

গল্প ।। উষ্ণতার সান্নিধ্যহীনতা ।। সৌমেন দেবনাথ

উষ্ণতার সান্নিধ্যহীনতা 

সৌমেন দেবনাথ 


দিন এসেছে দিন গিয়েছে। সব দিন যে সুখের জন্য এসেছে বা সুখ বয়ে নিয়ে এসেছে তা নয়, আবার সব দিন দুঃখও বয়ে আনেনি। স্বাচ্ছন্দ্য যে ছিলো বলবো না, আবার অস্বাচ্ছন্দ্যও ছিলো না। দুঃখ, কষ্ট, দারিদ্র্য, রোগ-ব্যাধি, সমস্যা যত ছিলো তারচেয়ে সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য, প্রেম-ভালোবাসা, মায়া-মমতাও কম ছিলো না। মৃত্যুকে কখনো কামনা করিনি, বেঁচে থাকার আকুতি বেশী ছিলো বলে। আমার স্বামীর সাথে তার ভাইদের মতভেদ হয়েছে, আমার স্বামী তার মাকে বিশেষ কারণে বড় কথা বলেছে, প্রতিবেশীদের সাথে আমার স্বামী বাক-বিতণ্ডা করেছে, কিন্তু আমাকে কোনদিনও আঘাত দিয়ে কথা বলেনি, আঘাত করেনি। আমার স্বামী বলতো, তোমাকে দুঃখ কী বুঝতে দেয়নি, কষ্টের থাবার থেকে দূরে রেখেছি, দারিদ্র্যের চোখ রাঙানী তোমাকে পেতে দেয়নি, রোগ-ব্যাধি তোমাকে শাশানী দেয়নি, সমস্যাও তোমার জীবনে এসে দাপাদাপি করতে পারেনি। শত বিপদ থেকে তোমাকে রক্ষা করেছি, নিজের শরীরকে প্রাচীর করে। বিনিময়ে তোমাকে কিছু দিতে হবে আমায়! আমি ভ্রূ কুঁচকে ভাবতাম, কি চায় ও আমার কাছে! ও এত উজাড় করে দিয়ে নিঃস্বকে ঐশ্বর্যে ভরিয়ে দিচ্ছে, নিঃস্বর কাছে সে কি চায়, নিঃস্বর কাছে এমন কি দেখলো যে, এত কিছুর বিনিময়ে সেটি সে পেতে চায়! অনেক পরে বুঝতে পারি। আসলে ওর হৃদয়কে বোঝার সে হৃদয় আমার ছিলো না। ওর হৃদয়ে আবেগের প্রাবল্য ছিলো, আমি ছিলাম ঠিক ঊষর জমির মত নীরস। ওর কারিশমাময় ব্যক্তিত্ব আমার বন্ধ হৃদয়ে বারবার টোকা মেরেছিলো, আমি বুঝতে পারিনি। যখন বুঝতে পারলাম, তখন আর দেরী করিনি, ও যে জিনিসটি বিনিময়ে পেতে চেয়েছিলো, আমি সেটি ওকে বিনা বিনিময়ে দিয়ে দিয়েছি। ভাবি, নিঃস্বর ভেতরও এমন কিছু থাকে, যা অন্যের চোখে অনেক মূল্যবান। সেটি বিনিময় করলে নিঃস্ব আর নিঃস্ব থাকে না। নিঃস্ব হয়ে যায় মহাশ্চৈর্যের অধিকারী। আজ আমার হৃদয়ের সকল ভালোবাসা ওর জন্য, আমার একান্ত মনের ন্যূনতম সুখটুকুও ওর জন্য। আগামীর পথ চলাটাও ওর জন্য। বেঁচে থাকাও ওর বেঁচে থাকার উপর। ও আমার জীবনের আর এক অংশ, আমার জীবনের আর এক নাম, আমার সুখের আর এক নাম। আমার সুখ।
আমার ভাগ্যাহত কপালের এলোকেশগুলো সরিয়ে দিয়ে ও যখন আমায় উষ্ণ পরশ দিতো আমি ব্যাপক বিরক্তিবোধ করতাম। আমার স্বামীর এহেন কাণ্ডকে আমি উত্যক্ত জ্ঞান করতাম এবং নির্লজ্জ, বেহায়া বলে সম্বোধন করে বড় বড় কথা শুনিয়ে দিতাম। অথচ আমার স্বামী এক তিল কণাও রাগ প্রকাশ করতো না, আমার পাশ থেকে সরতো না, আমাকে একা থাকতে দিতো না, আমি ওর থেকে পালিয়ে থাকার চেষ্টা  করতাম। তখন ভাবতাম, ওর থেকে পালালেই বুঝি বাঁচা। এখন বুঝি, স্বামীর স্পর্শের মর্ম। আজ বুঝি, স্বামীর স্পর্শ স্ত্রীর জন্য কী! আজ বুঝি, স্বামীর আদর স্ত্রীর জন্য কত বড় প্রাপ্তি! আজ বুঝি, স্বামীর সান্নিধ্য কত বেশী সুখের! স্বামীর সান্নিধ্যে না থাকলে কোনো নারী কি বসন্তের মানে বোঝে! আসলে যে নারী বোঝে না ভালোবাসা, সে নারী বেঁচে থাকার স্বার্থকতা কিসে তা জানে না। যে নারীর জীবনে ভালোবাসার মানুষটি আজো আসেনি, সে নারী বোঝে না জীবনের সবচেয়ে রঙিন অংশ কি!
আজ বুঝতে পারি, আমার ছোট ছোট ভুলগুলো আমার সুখ নামক পাখিটিকে কত দূর বিতাড়িত করে দিচ্ছিলো। আজো যদি সেই ভুলকে আঁকড়ে থাকতাম, তবে হয়ত মাটির সাথে মিশে যেতাম। বুঝতে পারছি একটি ভুলের অনেক ক্ষমতা। সে নষ্ট করতে পারে একটি দিনকে, একটি মাসকে, এমনকি একটি জীবনকে। ভুল একটি হাজার বাকল বিশিষ্ট বৃক্ষ। সেই বাকলগুলো আরো পাঁচজনের মনের বিরুদ্ধে যেয়ে জীবনকে, জগৎকে বিষময় করে তোলে। সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ জানাই, একটি ভুলকে মহাভুলে রূপান্তর করার পূর্বেই আমি আমার লাগামকে ভালো ভাবেই টানতে পেরেছি। মৃত্যুর দ্বারপ্রান্ত থেকে ফিরে এসেছি, আর ভুল নয়। এবার ভুল হয়ে গেলে আর সহ্য করতে পারবো না। সব ভুল সব সময় সমান আঘাত দেয় না। পূর্বের ভুলে মজা পেতাম, এখন ভুল হলে জীবনটাই বৃথা হয়ে যাবে।
আমাদের জীবনের প্রথম রাতে আমার স্বামী যখন রুমে প্রবেশ করে তখন তার মোবাইলে একের পর এক কল আসতেই থাকে। কে কি বলছিলো আমি স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছিলাম। এবং বুঝতেও পাচ্ছিলাম। এক বন্ধু ওকে বললো, ঘরের লাইট যেন বন্ধ করিস না। জীবনের প্রকৃত মজাটা কিন্তু অন্ধকারে মাটি হবে।
আমার স্বামী তার বন্ধুটিকে ফাজিল বলে কলটা কেটে দিয়ে নিজের মনেই হাসতে থাকে। পরক্ষণে আবার কল আসে। সেই বন্ধুটি বললো, বেশী ভদ্র সাজতে গিয়ে নিজের আয়েশ না মিটিয়ে মনে মনে ইশপিশ করার দরকার নেই। যখন যে কাজটি করতে হয় তখনই সেটা করাই শ্রেয়। সময় গেলে কিন্তু ফোঁসফোঁস পাবি। বিষাক্ত সর্পকে বোঝার চেয়ে তাকে ধরেই নির্বিষ করতে হয়।
আমার স্বামী তাকে পাজী আর জ্ঞানী বলে কলটা কেটে দেয়। ভ্রূ কুঁচকে একটা মিনিট বসে থাকতেই আবার কল আসে। সেই বন্ধু বললো, এ রজনী জীবনে এক বারই আসে। কভু বৃথা যেতে দিবি না। যে কাজ হয় না বাসর রাত, সে কাজ হয় না আশ্বিন কার্তিক মাস।
আমার স্বামী যেন এক প্রকার বিপদে পড়ে গেলো। ও কলটা কেটে দিয়েছিলো রাগে। আমার শরীরে ঘাম দিতে শুরু করে আর গলা শুকাতে থাকে। এ রাত স্বামীর জন্য যত সুখের, যত সুখকর, স্ত্রীর জন্য তত নয়। স্ত্রীর জন্য ভয়ের যত, লজ্জারও তত। এ রাতের জন্য নরের মত নারীও অপেক্ষা করে, কিন্তু নরের তার পিছনে থাকে লোভ আর নারীর থাকে বিপদের, আশংকার। এ রাতে নারী তার সবচেয়ে আপন পুরুষের কাছে থেকে অমৃত ব্যবহার চায়, বোঝা পড়ার প্রারম্ভেই জীবন চলার চিত্রটা আঁকতে চায়, শিকারে থাকতে চায়, কিন্তু শিকার হতে চায় না। নিজেকে উজাড় করে দিতে চায়, কিন্তু নিজেকে দিতে চায় না। বেশ পরে আমার স্বামীর সেটে আবারও কল আসে। সে বন্ধু বললেন, ব্যস্ত একটা দিন পার করলি, জানি এখনো ব্যস্ত আছিস। ব্যস্ত থাকিস থাক, ব্যস্ত রাখিস ঠোঁট, ব্যস্ত রাখিস হাত।
আমার স্বামীর রাগ হয়ে গেলো। ও সেট বন্ধ করে দিলো। ও আমার সামনে এসে বসলো, আমাকে এক মিনিট অপলকে দেখলো, কিন্তু কোনো শব্দ উচ্চারণ করলো না। হয়ত আমার রূপে ও মুগ্ধ হয়েছিল, নতুবা ক্রুদ্ধ। বেশক্ষণ পরে আমার নাম সম্বোধন করে বললো, রাজন্যা, আর দশটা পুরুষের মত আমি ধ্যান-ধারণা পোষণ করি না। আমি ভদ্রতার মাপকাটিতে পিছিয়ে ছিলাম না, তোমার চোখেও অভদ্র হতে চাই না। আমি কখনো কারো মতামত ভিন্ন কোনো কাজ একার সিদ্ধান্তে করিনি। এ কারণে আমি ঠকি কম। তোমার মতামত ভিন্ন তাই কোনো কাজও করবো না। জীবনে সুখী হতে হলে অনেক ধৈর্য ধারণ করতে হয়, যাকে নিয়ে পরবর্তী জীবনটা চলবো তাকে আমি আর যায় করতে পারি, নির্যাতন করতে পারি না। জীবন সাগরের আমরা দুই নব যাত্রী, আমাদের পথ এক মোহনায় মিলেছে। আজ সর্বোচ্চ আমি তোমার হাত ধরতে পারি, যার অর্থ আজ থেকে তুমি আমার চলার পথের সাথী, তাই-ই নয় আমিও তোমার চলার পথের সাথী। আমার জীবন নৌকায় তুলে নিলাম তোমায়, কভু এমন কাজ করো না, যাতে আমি অন্যের কাছে ছোট হই, পরস্পর পরস্পরের উপর নির্ভরশীল হলে, সুখ আমাদের থেকে ছেড়ে যাবে না। কী হাতটি ধরতে দেবে? আমি জোর করে তোমার হাত ধরবো না।
আমি আমার হাতটি সভয়ে ওর হাতের উপর রাখি। ওর হাতে হাত রাখতেই আমার যে কি ভালো লেগেছিলো বলে বোঝাতে পারবো না। আজো সে আমার হাতের থেকে হাত সরাইনি। একটি দিনও আমাকে কষ্ট দেইনি। আমার পাশ থেকে সরে যায়নি। আজ আমার পুরুষটি আমার জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ।
নিজের স্বামী বলে বলছি না, আমার স্বামীর মনে কোনো পাপ নেই। নির্ভেজাল একজন মানুষ ও। ওর কথা, আমার পাঁচটি ভালো বান্ধবী থাকতে পারে, তেমনি তোমার পাঁচটি ভালো বন্ধু থাকতে পারে। সবার সাথে মিশবে, সবাইকে সময় দেবে, কিন্তু শালীনতার পরিচয় দেবে৷ হাত তোমার, পা তোমার-কোনটিকেই আমি বাঁধতে পারি না। কিন্তু ঐ মস্তিষ্কে আছে তোমার নীতি। বিবেকবর্জিত কাজ করলে ঐ মস্তিষ্কে আমি নাড়া দিতে পারি, তাতে তোমার হাত যা ইচ্ছা তাই করবে না, পা বিপথে পা বাড়াবে না। স্নানের নামে তুমি শরীর ভাসিয়ে দিতে পারো না, আনন্দের নামে তুমি নিজেকে বিলিয়ে দিতে পারো না। যা করবে নীতিকে আঁকড়ে করবে। জ্ঞানত অন্যায় করবে না।
আমি আমার স্বামীর কথা আজো মেনে চলছি, তাই আমার সুখের শেষ নেই, শত্রুরও।
অন্যের সুখে ঈর্ষান্বিত হওয়া মানুষের স্বভাবজাত প্রবৃত্তি। অনেকে অনেক কথা বলেন। সব আমার কানে না আসলেও অনেক কথায় কানে আসে। কেউ আবার শুনিয়ে শুনিয়ে বলেন। কেউ বলেন, স্বামীর গুণেই স্ত্রী গুণান্বিত। স্ত্রী যদি উচ্চ শিক্ষিত হয় আর স্বামী যদি পাগল হয়, সবাই তাকে পাগলের বৌ-ই বলেন।
আর একজন বলেন, বোয়াল মাছের পেডি নরম, ভালো মানুষের বেডি নরম। স্বামীর দ্বারা স্ত্রী তো প্রভাবিত হবেই।
আবার কেউ আমার পূর্ব ইতিহাস তুলে বলেন, লোহা জব্দ কামার বাড়ি, মেয়ে জব্দ শ্বশুরবাড়ি।
আর একজন একই সুরে বলেন, মরিচ সড়ো শিলে, বৌ সড়ো কিলে।
যে যায় বলুক না কেনো আমার স্বামী আমাকে শাসন করে, প্রহার করে কিংবা অন্যায়শক্তি প্রদর্শন করে জয় করেনি। হৃদয়ের শক্তি প্রয়োগ করেই ও আমায় জয় করেছে। ওর হৃদয়ের শক্তি প্রবল। তা দিয়ে আমায় এমন কষে বেঁধেছে ছুটে গেলেও ফিরে আসতে হবে। অযাচিত ভাবেই জীবনের মহামূল্যবান জিনিসই পেয়েছি। এখন আমার মৌলিক চাহিদা তাই পাঁচটি নয়, ছয়টি।
একবার আমার স্বামী প্রশিক্ষণের জন্য বিদেশ যায়। পাড়ার লোকজন আমার শ্বাশুড়িকে ঘিরে ধরে হেসে হেসে বলতে লাগলেন, সুন্দরী বৌ ঘরে ফেলে বাইরে গেলে তা ফিরে পাওয়া যায় নাকি?
অন্যজন বললেন, দেবর সম্পর্কীয়দের সাথে দেখিস এবার বৌটির কথা-বার্তার মাত্রা বেড়ে যাবে।
আর একজন মহিলা নাক মুখ বাঁকিয়ে বললেন, বিয়ে করে বৌকে রেখে যাওয়া মানে বৌকে নরকে রাখা। নরকে কি সে নারী থাকে! এখন তো স্বামীর সাথে মোবাইলে কথা বলছে, দেখিস কিছু দিন পরে আর তেমন মিষ্টি করে কথায় বলবে না।
এক অল্প বয়স্কা নারী বললেন, দুরত্ব বাড়লে অনুভব বাড়ে। অনুরাগ না কমে বরং বাড়েই।
একজন বয়স্কা মহিলা তাকে গরম দিয়ে বললেন, দূর, তুই জানিস না কিছু। যৌবনের খাই বড় খাই। একবার যে নারী ঐ স্বাদ পেয়েছে, সে স্থির থাকতে পারে না। বিবেক তার লয় যায়। দেখিস ও বৌ রিক্সাওয়ালার হাত ধরে পালাবে।
আরো দুইজন মহিলা ঐ মহিলাটিকে সায় দিলেন। অন্যজন বললেন, লাজ-লজ্জার ঘাটতি আছে বৌটির। পর-পুরুষকে ঘরে জায়গা দেবেই দেবে।
এসব কথা ঘরে থেকে সব শুনলাম আমি। আমার শ্বাশুড়ি তাদের সাথে যোগ দিয়েছেন, তার বৌমাকে নিয়ে এত বাজে বাজে কথা বলছে অথচ একটি কথাও না ধরে বরং আমার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। এসব কথা স্বামীকে বললাম। স্বামী আমাকে বুঝিয়ে সান্ত্বনা দিলেন। স্বামীর সান্ত্বনায় আমি সব ভুলে যাই।
এ রকম সমালোচনার সিংহভাগই আমার কপালে জোটে। নিন্দুকদের কথাগুলো আমাকে যেন উজ্জীবিত করে। আমি পথ চলি বুঝে শুনে। সকল কাঁটা ধন্য করে আমি হয়েছি জয়ী। আমার স্বামী আমায় বিশ্বাস করে, তার বিশ্বাসের কোনো অমর্যাদা আমি করতে পারি না। বিশ্বাস থেকে যে আশা জন্মায়, তার নাম ভালোবাসা। আর এ এমনি ভালোবাসা যা ঠুনকে নয় যে, একটু ঝড়ে ভাঙবে। স্বামী আমাকে আদর করে দিয়ে বলে, সমাজে এমন কীটের অভাব নেই। সব হয় ওদের, শান্তি হয় না। মনোভাব পরিবর্তন হয় না। সুন্দর পৃথিবী ওদের চায় না, সুন্দর পৃথিবী ওদের ডিভোর্স দিয়ে দিয়েছে। সুখ থাকে না পথে পড়ে। আমরা বেঁচে রবো একে অপরের জন্য। সুখ তো তখন কেবল মামুলি। অনুভব দিয়ে ভালোবাসা হবে প্রগাঢ়তর। মেঘের থেকে কিছুটা জল চেয়ে আঙিনায় ভিজবো দুইজন। মধ্যরাতে জ্যোৎস্নাস্নানে একাকার হয়ে যাবো। তুমি এমন করে এঁকে দেবে ভালোবাসার চিহ্ন যেমনটা করলে মনটা শান্তি পাবে। হবে অভিমান, অভিমান কখনো জিতবে না, জিতবে ভালোবাসা।
আমার স্বামীর মুখের বাক্য আমার লাগে অমিয় সমান। ওর মুখের কথা আমার জীবনের সংলাপ। ওকে ছাড়া আজ এক পা এগুতে পারবো না। যা সকলে আশা করে আমি হাতে তাই পেয়েছি। সুনীল আকাশের একমুঠো নীল পেয়েছি। আজ সুখ-শান্তি কল্পিত নয়। জীবনের দৈনন্দিন লেনদেন সব জাবেদায় লিপিবদ্ধ করায় খতিয়ান করতে সমস্যা হয়নি। রেওয়ামিল মিলে যাওয়ায় আমাদের প্রেম আছে তেমনি। বৈধ পথে অর্থ উপার্জন করে আমার স্বামী, যা আমাদের আর্থিক অবস্থাকে করেছে আচ্ছা, হিসাব বলে সব হিসাব রেখেছি। আমার স্বামী আমাকে পণ্যজ্ঞান করেনি, ভোগের সামগ্রী ভাবেনি। ও আমাকে ব্যালেন্স শীটের দায় পাশে রাখেনি, রেখেছে সম্পদ পাশে। সংসার নামক শিল্প প্রতিষ্ঠানে পর্যাপ্ত কাঁচামাল দিয়েছে। উৎপাদন তাই ব্যাহত  হয়নি। লজ্জায় আজো সরাসরি বলতে পারিনি, আমি তোমায় ভালোবাসি। এবার প্রশ্ন পেলে বলবো, প্রেমের নিক্তিতে মেপে দেখো আমি তোমায় কত কিলোগ্রাম ভালোবাসি!
আমি দেখেছি সাংসারিক কাজে কিছু থেকে কিছু হলেই আমার বাবা আমার মাকে বকতেন। শাসন করতেন। কিন্তু আমি সংসারে নিজের অগোচরে কত অনাকাঙ্ক্ষিত কাজই করে ফেলি। কিন্তু আমার স্বামী আমাকে বকে না। শাসন করে না। বরং বুঝিয়ে বলে। শিখিয়ে দেয়। আমি হতবাক হই। দুটো পুরুষে আমি পার্থক্য দেখি। বলছি না আমার বাবা খারাপ। কোন বাবাই খারাপ না। কিন্তু স্বামী তো খারাপও হয়। বাবা শাসন করতেন, বকতেন, এগুলোও দরকার আছে। বাবা আমাকে স্নেহ করতেন, ভালোবাসতেন কিন্তু মায়ের উপর তো কষাঘাত করতেন। মায়ের কথার মূল্য ছিলো না, মা কথা বলার সাহসও করতেন না। কিন্তু আমার অভাগা মা বাবাকে অন্যের কাছে উপস্থাপন করতেন অনেক বড় করে, সুন্দরের চেয়েও সুন্দর করে। বাবার প্রতি মায়ের ভালোবাসার কমতি ছিলো না।
ছোটবেলা থেকেই আমার মিথ্যা বলার স্বভাব ছিলো। মিথ্যা বলে বলে মায়ের কাছ থেকে টাকা নিতাম। বাবাকেও মিথ্যা বলে বলে টাকা নিতাম। ক্লাস ফাঁকি দিয়ে বন্ধুদের সাথে ঘুরতাম। রেজাল্ট ভালো না হলেও বাড়ি এসে মা বাবাকে বলতাম রেজাল্ট ভালো হয়েছে। স্বামীর সাথেও মিথ্যা বলতাম। আমার স্বামী আমাকে অকপটে বিশ্বাস করতো। এক সময় জ্ঞান ফিরলো, এত মিথ্যা বলি, অথচ সে আমাকে বিশ্বস্ততায় রেখেছে। মিথ্যা বলা ছেড়ে দিলাম। ভালো মানুষের সংস্পর্শে থাকলে খারাপও ভালো হয়ে যায়। আমার ভেতরটা পরিষ্কার হয়ে গেলো ওর উজ্জ্বলতায়। কি দারুণ একটা মানুষ, কি দারুণ আচার আর কি দারুণ সুবিন্যস্ত চিন্তা! কখনো কোনদিন রেগে কথা বলেনি। কিভাবে রাগ করবো তার উপর! রাগ উঠার আগেই তার মহান ব্যক্তিত্ব আর দায়িত্বসুলভ ব্যবহারে রাগ কর্পূরের মত উড়ে যায়। সে আমাকে তার করে নেয়ার যে চেষ্টা করেছে আমি তার না হয়ে আর পারিনি। এখন সে যত ভালোবাসার চেষ্টা করে তারচেয়ে চেষ্টা বেশী করি আমি। যত সম্ভব ভালোবাসি, প্রকাশ করার চেয়ে কর্ম আর অনুভব দিয়ে বেশী বুঝিয়ে দিই।
এক মানুষের সুখ অন্য মানুষের সহ্য হয় না। আমাদের সুখও মানুষের সহ্যের বাইরে চলে গেলো। কেউ কেউ আমাদের উদাহরণ হিসেবে গ্রহণ করেছে, কেউ কেউ আমাদের প্রতিপক্ষ হিসেবে গ্রহণ করেছে। কে বা কারোর বৌ আমাকে নিয়ে আমার স্বামীর কাছে নালিশ করেছে। আমি কিভাবে বুঝলাম? বাইরে থেকে এসেই আমার চোখে চেয়েই আমার স্বামী একটা অমলিন হাসি দেয়। যখন তার মুখে অমলিন হাসি দেখলাম না, বুঝলাম কেউ তার মুখে গরল দিয়েছে এবং গরলের পরিমাণ বেশ বেশীই। আমি কি হয়েছে বলতেও পারলাম না, আমাকে ও হাতের ইশারায় থামিয়ে দিলো। আমি ওর এমন গম্ভীর মুখ কখনো দেখিনি। আর এমন শক্ত হতে কখনো দেখিনি। যার হৃদয় যত কোমল রেগে গেলে ঘটে তার সম্পূর্ণ বিপরীত। বাবা রেগে গেলে দেখতাম মাও রেগে যেত, ঘটে যেত ঘটনা দুর্ঘটনা পর্যন্ত । আমি মায়ের মত উচ্চবাক্য না করে চুপ থাকলাম। আমি জানি ওর রাগ দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে না। ওর রাগ ও সংবরণ করে নেবে তাও জানি। কি করে না করে তাই অনুসরণ করছি। দেখলাম ও খুব অস্থির। এমন অস্থির ওকে মানাচ্ছে না। ওকে শান্ত করবো, তাও সাহসে কুলাচ্ছে না। ভুল বুঝতে পারলে ক্ষমা চেয়ে নেয়া যেত। কিন্তু কি ভুল করলাম যা মানুষের চোখে পড়লো, আমাকে ভুল ধরিয়ে দিলো না, স্বামীকে বলে তাকে বিষিয়ে দিলো! খুব খারাপ লাগছে। খেতে দিলাম। শান্ত ছেলের মত খেয়ে উঠে গেলো। এক গাল ভাত ও আজ গালে তুলেও দিলো না।
খেয়ে ও বিশ্রাম নিতে গেলো। আমি পিছন পিছন এলাম। ওর নিষ্প্রভতা আমাকে আরো নিষ্প্রভ করে দিচ্ছে। মুখ ফুঁটে বলেই ফেললাম, আমার অজান্তে আমি যদি কোনো ভুল করি আমাকে ক্ষমা করো।
চুপ করে থাকলো সে। আমি বললাম, আমার ভুলটা কি আমি তো সেটাই বুঝতে পারছি না! 
কোনো কথা সে বলছে না। ওর চিবুক ধরে ঝাঁকিয়ে দিলে ও খুব খুশী হয়। ভাবলাম একবার চিবুক ধরে আচ্ছামত ঝাঁকিয়ে দিই। সাহসে বেড় পেলো না। ওর ঘুম আসছে না। আবার বললাম, আচ্ছা, ঠিক আছে, ভুল করেছিই। স্বীকার করলাম। আর গোমড়া মুখে থেকো না। 
ও ঘুমানোর জন্য খুব চেষ্টা করলো, কিন্তু ঘুম আসছে না। যাতে ঘুম আসে তাই চুলে হাত বুলিয়ে দিচ্ছিলাম। ও আমার হাতটা সরিয়ে দিলো। আমি আজ আর বেশী অগ্রগামী হলাম না। ও ঘুমিয়ে গেলো। আমি ওর গাল, মুখ, চোখ, কপালে হাত বুলিয়ে অমৃত পরশ দিয়েও তৃপ্ত হচ্ছি না। মানুষটা আমাকে ভুল বুঝেছে। ফেঁটে যাচ্ছে বুকটা, চোখে জল এলো। জলচোখ দেখলে ও বাঁচতো না। ঘুম ভেঙে যদি দেখতো আমার চোখে জল, ওর সব রাগ চলে যেত। আমার সব ভুল ওর চোখে ফুল হয়ে ফুঁটতো।
সকালে অফিসে যাওয়ার আগে ও ওর মাকে ডেকে বললো, মা, তোমার বৌমা যেন বাইরে না যায়। 
মায়ের কেনো প্রশ্নের উত্তর না করে ও চলে গেলো। অফিসে যাওয়ার আগে কত বার ও ফিরে ফিরে দেখতো। আজ সে সব ভুলে গেছে। কে কানে বিষ দিলো, যে বিষে ওর মনের যত মাধুর্য নীল হয়ে গেছে! মা বললো, বাইরে যাও, কার কার বাসায় যাও? কী গল্প করো? সংসারকে কি ছোট করে উপস্থাপন করো?
আমি থমকে গেলাম। আমার সংসার আমার স্বর্গ। আমার সংসারকে মানুষের কাছে ছোট করবো কেনো? মা আবারো বললেন, আমাকে নিয়ে, আমার রবিনকে নিয়ে নিশ্চয় কারো কাছে বিষোদগার করেছো?
আমি মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে কান্না করে দিলাম। অপ্রত্যাশিত কিছু শুনলেই আমার চোখে জল আসে। একটু সুখের পরশ পেলেও চোখে জল আসে। বাবা যখন মাকে বকতো তখনও মা না কাদলেও আমার চোখে জল আসতো। আমার মা আমার বাবার আচরণে শক্ত হয়ে গিয়েছিলো। কিন্তু আমি তো আমার স্বামীর থেকে তেমন আচরণ পাইনি যে শক্ত হয়ে নীরস হয়ে পড়বো। নাকি আমার স্বামী এখন থেকে ওমন আচরণই করবে আর আমি শক্ত হয়ে উঠবো? আমার স্বামী কি আসলেই পরিবর্তন হয়ে যাবে! মাকে নির্ভয় দিয়ে বললাম, মা, আপনার অনুমতি ভিন্ন বাড়ির বাইরে আমি আর যাবো না।
মা বিড়বিড় করে বকতে বকতে চলে গেলেন। মা ছেলের মনে আমাকে নিয়ে সন্দেহ প্রবেশ করেছে। অথচ আমি কী ভুল বা কী অন্যায়টা করলাম বুঝতেও পারলাম না। আর কোন প্রতিবেশীর আমি ক্ষতি করেছি যে আমার প্রতিপক্ষ হলো! আমার বিরুদ্ধে আমার স্বামীকে বিষিয়ে দিলো কে! সারাদিন ভেবে ভেবে কূল কিনারা পেলাম না। একবার স্বামীকে ফোন দিলাম, ফোন ধরলো না। ধরলো না ভালোই হয়েছে, নতুবা কি বলতাম!
বাবা যেদিন যেদিন মায়ের সাথে দুর্ব্যবহার করতো সেদিন সেদিন মা অভিমান করে চুপ থাকতো না। বাবার জামা কাপড় কেঁচে দিতো। বাবার পছন্দের খাবার রান্না করতো। আমাকে বেশী বেশী আদর করতো। ঘর, বাড়ি সুন্দর করে পরিষ্কার করতো। বাবা দেখে মাকে ধন্যবাদ না দিলেও রাগ থেকে বেরিয়ে আসতো। সব পুরুষ যদি এক চরিত্রের হয়, তবে আমার স্বামীও খুশী হবে। সারাদিন ঘরের কাজে মনোনিবেশ করলাম। প্রতিটি সংসারে স্বামীর মন জয়ের জন্য আমাদের মত স্ত্রীদের কত কিছুই না করতে হয়।
আমি খুব উৎকণ্ঠিত আর চিন্তিত। অফিস থেকে বাড়ি এসে আজ তার ভূমিকা কী হতে পারে ভেবে খুব ভেঙে পড়লাম। কেউ হয়ত তাকে বলেছে বৌ শাসনের কথা। সমাজে বৌ শাসন করা এক প্রকার পুরুষত্ব। হয়ত আমার স্বামীকে কেউ কাপুরুষ বলেছে বৌর সাথে মিলেমিশে মহব্বতে থাকে বলে। যে কোনো কাজে বৌর সাথে পরামর্শ করা, বৌর মতামত গ্রহণ করা আমাদের সমাজ কি ভালো চোখে দেখে?
মন খারাপ হলেও সংসারে মন খারপ করে থাকলে হবে না। বুকে ব্যথা নিয়ে তাই মুখে হাসি রাখার চেষ্টা করলাম। এভাবে হেসে যাওয়ার গল্প কেউ বোঝে না, কেউ দেখেও দেখে না। ওর বাসায় চলে আসার সময় হয়ে গিয়েছে। আমি খুব অপ্রস্তুত হয়ে আছি। ও কি বলে না বলে, আর আমি প্রতিউত্তরে কি বলবো না বলবো, মেনে নেবো সব, না যথোচিত জবাব দেবো! বিশ্বাস করেছিলো যাকে তাকে এত ভুল বোঝাটা কতটুকু সমীচীন তার? অপরাধ না করেও যদি শাস্তি পেতে হয়, তবে সেই শাস্তি মাথা পেতে দেয়াও ঠিক না। প্রতিঘাত তো মানুষ তখনই করে যখন আঘাত পায়।
অফিস থেকে ফিরে ও প্রথমে ওর মায়ের কাছে গেলো। সচরাচর তা সে করে না। মায়ের সাথে কথা সেরে শুকনো মুখে আমার সামনে দিয়ে হেটে ঘরে চলে গেলো। চেয়েও দেখলো না। কি কারণে এক দিনেই এত অচেনা হয়ে গেলাম! ভালোবাসার মানুষটাকে সুন্দর করে কষ্ট দিতে একটুও ওর বুক কাঁপছে না। আমি ওর ধারে কাছে ঘেঁষলাম না। হয়ত তার রেগে থাকাতে আমার কোনো প্রশ্ন বিস্ফোরণের উদ্রেক করতে পারে।
শার্ট, প্যান্ট বদলে স্নানে গেলো ও। ছুঁড়ে ছুঁড়ে দেয়া ওর শার্ট, প্যান্ট আমি যত্ন করে গুছিয়ে রাখলাম। কি রাগ, রাগ যেন বজ্রাস্ত্র! পুরুষ তো, রাগ তার মানায়, আমি নারী, আমার রাগতে মানা। পুরুষ রাগলে বাদশা, নারী রাগলে রগচটা।
ও স্নান করে এলো। ওকে খুব ফ্রেশ দেখাচ্ছে। শুধু মুখে হাসি নেই। মন চাচ্ছে ওর বুকে যেয়ে লুকাই। আজ কি এক দ্বিধার বেড়া দূর করে রেখেছে! নিরীহ হরিণীটিকে দেখেও কি ওর খুব ভাল লাগছে! খেতে দাও খেতে দাও করে অন্যদিন পাগল করে তুলতো, আজ কিছুই বলছে না। ওর পছন্দের খাবার রান্না করেছি। বললাম, চলো খাবে।
খেয়ে এসেছি কথাটি বলে ও ঘরে যেয়ে ঘুমিয়ে গেলো। বিয়ের পর ও কখনো এক সাঝ বাইরে খায়নি। আমার হাতের রান্না নাকি ওর অমৃত লাগে। মা রান্না করতে চাইলেও আমি মাকে রান্না করতে কখনো দিইনি। আপন মাধুরী মিশিয়ে রান্না করি, ও যে আমার রান্না খেতে মরিয়া। আজ সে বাইরে থেকে খেয়ে এসেছে, শুনে এত খারাপ লাগলো বলে বোঝাতে পারবো না। সংসারে আজ আমি কত নেহাত একটা জীব হয়ে পড়েছি। সংসারের এ দুটো মানুষ আজ কত দূরের যেন। মনটা ছটফট করছে শুধু কথা বলবো বলে। কিন্তু কথা শোনার মানুষ নেই।
ও এড়িয়ে চলছে, ওকে অনুসরণ করা কতটুকু সমীচীন ভাবলাম। ওর পিছে লেগে না থাকলে ওর রাগ ভাঙবে না, আরো ভুল বুঝবে। আবার ওর পিছে লেগে থাকলে ও ভাববে অন্যায় করেছি। ক্ষমা পাওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছি। যাবো না ওর কাছে! দেখি একা থেকে কত আনন্দ পায়! ধারে থাকলে মূল্যবানকেও মূল্যহীন মনে হয়। নিজেকে মূল্যহীন করে তুলবো না। আমি ঘরে না যেয়ে বাইরে বসে থাকলাম। আজ ঘর আমার ঘর নেই, নিজের ঘরে ঢুকবো তবুও দ্বিধা জাগছে। নারীর ঘর কি খুব সহজপ্রাপ্য? আমার জন্য দরজাটা খোলা আছে, কত নারীর তো ঘরে প্রবেশের দরজাও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সারারাত দরজা ঠুকেও পাষাণ স্বামীর মন গলাতে পারে না, এমন নারীও কি সমাজে নেই?
মা এসে বিরক্তির স্বরে বললেন, এত রাতে বাইরে কেনো?
মায়ের প্রশ্নের জবাব সহজ হলেও উচ্চারণ কঠিন৷ ঘরে গেলাম। ও ঘুমিয়ে গিয়েছে। কত আরামের ঘুম! ওর ঘুমন্ত মুখে চেয়ে থেকে ভাবছি, কঠিন তুমি কত কঠিন! তবে অত সহজ হয়ে ধরা দিয়েছিলে কেনো? স্বপ্ন দেখিয়ে স্বপ্ন কেড়ে নিলে কেনো? প্রথম থেকেই নিরাশা দিলে নিরাশার মধ্যে তো আমি বাঁচতে শিখে যেতাম।
শুধু ভাবছি আর ভয় পাচ্ছি, কাকে চুল টেনে দিতাম, নাক টেনে দিতাম, কান টেনে দিতাম! কত ভয়ংকর একটা মানুষ। কথা বলতেও ভয় করছে। অথচ দুইদিন আগেও তার সাথে কত খুঁনসুটি, তর্কতর্কি করেছি। আমিও ঘুমানোর জন্য প্রস্তুত হলাম। যতক্ষণ ঘুম আসেনি, ততক্ষণই ভেবেছি, জীবনটা উলোট-পালোট হতে কত অল্প সময়ই না লাগে! গতবার যখন আমার জ্বর হয়, আমার স্বামী আমাকে কত যত্ন করে সুস্থ করে তুলেছিলো। সারাক্ষণ ভেবেছি আজ রাতেই আমার জ্বর আসুক। কাল সকালে তবে আমাকে সে শুশ্রূষা না দিয়ে থাকতে পারবে না। কাছে আসবে। কাছে থাকবে। কথা নাই বলুক কাছে তো থাকবে। কিন্তু অভাগার স্বপ্ন পূর্ণ হলো না। আমার জ্বর এলো না। ও কাছেও এলো না। প্রত্যাশিতকে কাছে পেতে মানুষ কত অপ্রত্যাশিতও কামনা করে, ভাবা যায়?
যখন ও অফিসের উদ্দেশ্যে বের হবে, বাঁধা দিলাম, বললাম, তুমি আমাকে এত এড়িয়ে চলছো কেনো? 
ও উত্তর না দিয়ে চলে যাচ্ছিলো। সামনে যেয়ে ওর চোখে মুখে চেয়ে বললাম, আমি কি এমন করেছি যে এত সন্দেহ করছো? তুমি আমাকে সন্দেহ করতে পারো?
ও খুব বিরক্ত। আমি তোয়াক্কা না করে বললাম, মানুষের কান কথায় কান দিয়ে নিজের স্ত্রীকে ভুল বোঝো? আর আমি কত বড় ভুল করেছি যে, এত শাস্তি দিচ্ছো? 
ও আমাকে শান্ত-শিষ্ট ভাবেই বললো, সরো, অফিসে যেতে দাও। দেরী হয়ে যাচ্ছে। 
আমি আজ ছাড়ার লোক না। বললাম, যাকে বিশ্বাস করো না, যার প্রতি অবিশ্বাস ভর করেছে সে এই জৌলুসে থাকবে না। প্রাণশূন্য ইমারতের মধ্যে সে থাকবে না। সে ভালোবাসা চায়, হয় ভালোবাসবে, না হয় ত্যাগ করবে।
ও দেখলাম একটু তাচ্ছিল্যের হাসি হাসলো। এত শক্ত শক্ত কথা বলেও ওকে দমাতে পারলাম না। কাজে চলে গেলো। আমি খুব রাগ আর জেদে ঘরে যেয়ে জিনিস পত্র গুছিয়ে নিলাম। কিন্তু ঘর থেকে বের হতে পারলাম না। নারী ভালোবাসার নীড়ে থাকতে চায়, ভালোবাসায় বেঁধে রাখতে চায় সবাইকে। ভালোবাসার মধ্যে বাঁচতে চায়। ভালোবাসা না পেলে ঘর ছাড়তে চায়, কিন্তু ঘর থেকে বের হতে পারে না। অদৃশ্য কোনো এক বাঁধনে সে আটকা পড়ে যায়। ভালোবাসাহীনতায়ও তাই তাকে কত নিশীদিন যাপন করতে হয়। ব্যাগ থেকে জামা কাপড় বের করে আবার ঘর সাজালাম। থাক সে তার মত, আমিও থাকবো আমার মত। ভালোবাসা তো আর চেয়ে পাওয়া যায় না। আমার মা তো ভালোবাসাহীনতায় একটা জনম পার করে দিলো। দুটো মানুষ এক ঘরে থাকা আর দুটো মানুষ এক হয়ে থাকা তো এক কথা না। তবুও জীবন চলে যায়। মনের যা দাবী মন না পেলে মনে যে হাহাকার থাকে তা তো বলে বোঝানো যাবে না। তবুও বেঁচে থাকতে হয়, বাঁচার মত না হলেও।
================
 
সৌমেন দেবনাথ
যশোর

Comments

বিধিবদ্ধ স্বীকার্য :

লেখার বক্তব্যের দায়িত্ব লেখকের, পত্রিকার নয়। আমরা বহু মতের প্রকাশক মাত্র।

মতামত/লেখা এখানে জমা দিন

Name

Email *

Message *

সাম্প্রতিক বাছাই

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯৩তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩২ নভেম্বর ২০২৫

সূচিপত্র বস্তু, চেতনা এবং কবি ।। সজল চক্রবর্তী দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত ।। রণেশ রায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট ও সন্নিহিত অঞ্চলের কথ্য শব্দ ।। অরবিন্দ পুরকাইত চাঁদে জীবন ।। শমীক সমাদ্দার অসমাপ্তি ।। মহুয়া হুই গ্যালাক্সির শব্দে ।। জাসমিনা খাতুন তিনটি কবিতা ।। দিবাকর সেন অপূর্ণতার শেষ অধ্যায় ।। সুপ্রিয় সাহা হাফ ডজন ছড়া ।। স্বপনকুমার পাহাড়ী স্বাপ্নিক অমলের ঘুৃম ।। সঞ্জয় দেওয়ান দুটি কবিতা ।। সৌমিত্র উপাধ্যায় পথ চলতি ✍️পার্থ প্রতিম দাস হেমন্তের বিষাদ ছুঁয়ে ।। শক্তিপদ পাঠক রাই আর বাবা ।। অদিতি চ্যাটার্জি স্থিতিশীল ।। রঞ্জিত মুখোপাধ্যায় হৃদয়ের শূন্য কোড ।। লিপিকা পিঙ্কি দে অমানিশা ।। সৌভিক মুখার্জী দৃষ্টিগত ।। শামীম নওরোজ জ্যান্ত ভূতের গপ্পো ।। পার্থ সারথি চট্টোপাধ্যায় ধুতরা ফুলের ঘ্রাণ ।। মজনু মিয়া তারা খসার আলোয় ।। তীর্থঙ্কর সুমিত উত্তরণে অন্তরায় ।। সমীর কুমার দত্ত প্রেম মুদ্রা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ধারা ।। লালন চাঁদ অন্যের ব্যথায় ব্যথি ।। জগদীশ মণ্ডল গর্ভ ।। শাশ্বত বোস ভ্রমণ বিষয়ক স্মৃতিকথা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত শাপে বর ।। সাইফুল ইসলাম রবিবার ।। সঙ্ঘমিত্রা দাস দুটি ...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬

  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠালে  অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে হলে ভালো। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # ...

রেজাল্ট ।। সৈকত মাজী

রেজাল্ট সৈকত মাজী শুভ্রাংশু বিছানতে শুয়ে শুয়ে বিরক্ত হয়ে উঠল। মনে মনে নিজের শরীরটাকে আচ্ছা করে শুনিয়ে দিলো দু- চারটে কথা, দেবে নাই বা কেন, কয়দিন ধরে এতো কাঠ খড় পুড়িয়ে সব বন্ধুরা মিলে রথটা বানালো, কত কি প্ল্যান করলো, আর এই শরীরটার জন্যই তো সব ভেস্তে গেলো। মনে মনে ভাবলো একটা যা হোক শরীর হয়েছে ওর প্রতি মাসে তিন - চার বার করে জ্বর হচ্ছেই। হবি তো হ আর একটা দিন পরে হলে কি এমন ক্ষতি হতো, এই রথের দিনেই হতে হলো। ওর বিরক্তিটা বেড়ে গেলো আরো কয়েক ঘর।    " মা ও মা...মাআআআআ...." জোরে হাঁক  দিলো শুভ্রাংশু।    " কি হয়েছে বাবু? আবার জ্বরটা বেড়েছে? মাথা ব্যথা করছে?" ব্যস্ত হয়ে উঠলেন মালতিদেবী।     " ওসব কিছু নয়, ও মা বলছি এখন তো খুব কম জ্বর আছে যাই না মা একবার বাইরে, সবাই কতো ফুর্তি করছে বলো"  কাতর ভাবে বলল শুভ্রাংশু।      " না বাবু, এখনই আমরা ডাক্তারের কাছে যাব, বাবা তৈরী হয়ে গেছেন, আমরা বিকেলে তখন মেলা দেখতে যাব কেমন, এখন উঠে জামা কাপড় পরে নাও"  মালতিদেবী জামা কাপড় গুলো এগিয়ে দিলেন।      শুভ্রাংশু...

রাই আর বাবা ।। অদিতি চ্যাটার্জি

রাই আর বাবা অদিতি চ্যাটার্জি রাই-র জীবনে বেশ কিছু ভালো লাগা আছে তার মধ্যে একটা হলো সন্ধ্যার সময় তিন তলার বারান্দায় দাঁড়িয়ে রাস্তা দেখতে দেখতে কফি কাপে চুমুক দেওয়া ।" আজ যশোদা মিষ্টান্ন ভান্ডারের সামনে বেশ ভিড়,নির্ঘাত 'তেলে ভাজা ' প্রেমীরা।" আপন মনেই ভাবে ও, কিন্তু বসার ঘরে সুমন আর আঁখি এতো জোরে 'হল্লা গোল্লা ' করছে তালতলার জমজমাট রাস্তার দিকে আর মন দিতে পারছে না রাই।  পায়ে পায়ে ঘরে এসে দাঁড়ায় রাই, দেখে ক্লাস ফোরের মেয়ে এতোটা ঝগড়া করছে সুমনের সাথে , "বাপ রে, কবে এতোটা কথা শিখলো মেয়ে! কিভাবে কথা বলছে?? কোঁকড়া চুল ঝাঁঝিয়ে,গোলগাল হাত নেড়ে " ...মেয়ে কে দেখে থতমত খেয়ে যায় রাই। এদিকে আঁখি বলছে, "ধুত্ বাপী তুমি কিচ্ছু পারো না, তুতাই-র বাবা, পিসাই, মামু সবাই কত ভালো করে খেলতে পারে , না আমি তোমার সাথে খেলবো না।" কাতর চোখে মেয়ের দিকে একবার তাকিয়ে সুমন বলে ,"আচ্ছা তুই আমাকে শেখা, দ্যাখ আমি কার জন্য আলিপুরদুয়ার থেকে পনেরো দিন পর পর কলকাতায় আসি বল!"  ঐ টুকু মেয়ে কথা প্রায় না শুনেই ঘরে চলে গেল রাই-র চোখের সামনে, সুমন একবার হেসে বাথরুমের দিকে এগো...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯২তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩২ অক্টোবর ২০২৫

—: সম্পাদকীয় দপ্তর থেকে :— এই সংখ্যার জন্য লেখা এসেছিল প্রায় ১৮০টা। কিন্তু গুণগত মানে দুর্বল লেখার সংখ্যা বহু। আমরা নবপ্রভাতে নতুনদের কথা ভেবে বেশ কিছু দুর্বল লেখাও রাখি। কিন্তু সবসময় একই লোকের দুর্বল লেখা প্রকাশ করা অনুচিত বলে মনে করি। শেষ পর্যন্ত ৯৯ জনের লেখা রাখা গেল। যাদের লেখা প্রকাশিত হল না, তারা লেখাগুলি অন্য যেখানে খুশি পাঠাতে পারেন। বিশেষ কারণে এই সংখ্যার মুদ্রিত সংস্করণ প্রকাশিত হচ্ছে না। আমরা দুঃখিত। তবে মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি শীঘ্রই আসছে। সঙ্গে থাকুন। সকলকে উৎসবমুখর বর্ণময় শুভেচ্ছাসহ— —নিরাশাহরণ নস্কর, সম্পাদক, নবপ্রভাত। অনুরোধ : প্রকাশিত লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন, ছবি/স্ক্রীনশট নয়।  == সূচিপত্র == পড়া-লেখার ইতিহাস অনুসন্ধান।। তপন তরফদার উৎসব : মানুষের চিরন্তন আত্মপ্রকাশ।। কৃশানু ব্যানার্জি বাংলা : সভ্যতা ও সংস্কৃতির জন্মভূমি।। শ্যামল হুদাতী সমুদ্র আর অস্তিত্ব ।। সুব্রত চৌধুরী রাজা ছিলেন জুবিন গর্গ ।। গঙ্গা 'অনু'   আদ্যাশক্তি মহামায়ার বাংলা বারো মাসের বারো রূপ ।। অর্হণ জানা মেধাদাদুর আসর ।। রণেশ রায় বৈজ্ঞানিক মা...

বস্তু, চেতনা এবং কবি ।। সজল চক্রবর্তী

বস্তু, চেতনা এবং  কবি সজল চক্রবর্তী  "যেখানে পৌঁছায় না রবি,, সেখানে পৌঁছে যান কবি।" এই ছোট্ট কবিতা টি অনেক পুরনো  এবং বহু পরিচিত, তথাপি এর তাৎপর্য এখনো হারায় নি। তবে, কথা হ'চ্ছে -আমরা তো  রবি-কবিকে একত্রেই পেয়ে যাই আমাদের ঋষি-প্রতিম কবি রবীন্দ্রনাথের মধ্যে। আর তখনই জেনে যাই উপরোক্ত ছোট কবিতার প্রণিধানযোগ্যতা ।  ... এবার শুনে নেয়া যাক, ঋষি-প্রতিম কবির মুখ নিঃসৃত বাণী:- "তোমার অসীমে প্রাণমন লয়ে যত দূরে আমি যাই ...." অর্থাৎ আমাদের প্রিয়তম কবি অনায়াসে পৌঁছে যান সৃষ্টির অসীমে , যা আমাদের পক্ষে আদৌ সম্ভব নয়। এখানে কবির চেতনা সুদূর প্রসারী! ... প্রকৃত প্রস্তাবে কবি অতিন্দ্রীয় জগতের এক নাগরিক। তাঁর কাছে তাই চেতনা বা চৈতন্যেরই প্রাধান্য। ...এখন আসছি, বস্তু এবং চেতনার মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে।  ... আমি একজন অতি সাধারন মানুষ, তাই এই ব্যাপারটাকে কবিদের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার চেষ্টা ক'রছি। তবে আমার সামান্য জ্ঞান থেকে একটা সাধারণ কথা সেরে নি'। আমরা সাধারণত ব'লে থাকি-- সূর্য পূর্বদিকে ওঠে। প্রকৃত অর্থে কি তাই ? আসলে সূর্য যেদিকে ওঠে ,আমরা  সেই দিকটাকে নামাঙ্কিত ক...

দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট ও সন্নিহিত অঞ্চলের কথ্য শব্দ, উচ্চারণ, বাগ্্ধারা ইত্যাদি ।। অরবিন্দ পুরকাইত

স্থানীয় কিছু কথ্যশব্দ, উচ্চারণ, বাগধারা ইত্যাদি  (পর্ব—সাত) অরবিন্দ পুরকাইত স্থানীয় কিছু কথ্যশব্দ, উচ্চারণ, বাগ্্ধারা ইত্যাদির সংগ্রহ প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল রামচন্দ্র নস্কর সম্পাদিত 'চর্যা' পত্রিকায়, ২০১৬ সালে। সে সংগ্রহ যায় নিজের 'গাঁ-ঘরের কথা' পুস্তকে, ১৪২৩ সনে। পরে এই ব্লগজিনেও কিছু সংগ্রহ প্রকাশিত হয় ১৪২৮ সনের আশ্বিন মাসে, পৌষ ১৪২৯-এ, আষাঢ় ১৪৩০, নববর্ষ ১৪৩১ ও কার্তিক ১৪৩১ সংখ্যায়। তার পরেও ধীরে ধীরে আরও কিছু সংগৃহীত হয়েছে, সেগুলিই এখানে রাখা হল। নিজের আগের সংগ্রহে এসে-যাওয়া শব্দ যদি এখানে এসে থাকে, তা বাড়তি বা ভিন্ন কিছু বলার প্রয়োজনেই। নিজের আগের সংগ্রহ খুব ভাল করে যে মিলিয়েছি তা নয়, পুরো সংগ্রহ একত্র করার সময় তা করা যাবে যতটা সম্ভব নিখুঁত করে। আগে আগে সংগ্রহ প্রসঙ্গে কিছু কথা বলা হয়েছে, বিশেষত প্রথম প্রকাশের সময় একটু বিশদভাবে। এখানে আর কিছু বলা নয়, কেবল সংগ্রহটাই তুলে ধরা গেল। অখেজো/অখেজে — অকেজো থেকে। আদরের তিরস্কার হিসাবেই মূলত প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। পাজি। অচিমিতি — (উচ্চারণ ওচিমিতি) আচমকা, হঠাৎ। অদীয় — প্রচুর, অজস্র। অদ্বিতীয় থেকে ক...

কবিতা ।। অরণ্যকন্যা ।। অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়

  অরণ্যকন্যা অরিন্দম চট্টোপাধ্যায় অরণ্যকন্যার দৃষ্টির ভেতর বিষাদ বিন্দু ফোঁটা ফোঁটা জলের মতো গড়িয়ে যায়, হয়ে যায় কোন নদীপথ দৃষ্টি ভেঙে ভেঙে চলে যায় কোন এক শূন্য পথে অরণ্যকন্যার হৃদয়ের ভেতর ভাঙে যতো বৃক্ষপত্র নতুন পত্র পুষ্পের খোঁজ নেই ঠোঁট জুড়ে সমুদ্রকাঁপন বুদবুদের মতো অস্ফুট হয়ে উচ্চারিত হয় কোন অক্ষর শব্দ আর তাঁর শরীর থেকে ছড়িয়ে যায় হয়ে যায় একটা অদৃশ্য কবিতা...    ================== @ অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়,  বেহালা, কলকাতা -৭০০০৬০,  

দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত ।। রণেশ রায়

দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত রণেশ রায় ভূমিকা দর্শনের ইতিহাসে বস্তু ও চেতনার সম্পর্ক মানবচিন্তার গভীরতম প্রশ্ন। অধিবিদ্যা ভাবকে মুখ্য ধরে, বস্তুকে গৌণ বলে মনে করে। বিপরীতে মার্কস ও এঙ্গেলস বলেছেন—বস্তুই মুখ্য এবং চেতনা তার প্রতিবিম্ব। মানুষ যখন প্রথম আলোর মুখ দেখেছিল, তখনই সে বিস্ময়ে প্রশ্ন করেছিল—আমি কে, কোথা থেকে এলাম, আর এই দৃশ্যমান জগতের বাইরে কিছু আছে কি? এই প্রশ্ন থেকেই জন্ম নিয়েছিল দর্শনের দুই বিপরীত স্রোত—ভাববাদ আর বস্তুবাদ। ভাববাদ বলেছিল—"ভাবই প্রথম," আর মার্কস বললেন—"না, বস্তুই প্রথম।" এই দুই প্রান্তের মাঝখানে আমি দেখি এক সেতুবন্ধন, যেখানে বস্তু, স্নায়ু ও চেতনা একে অপরকে গড়ে তোলে, আর তাদের এই ত্রিত্বের নৃত্যেই সৃষ্টি হয় জীবন ও কল্পনার জগৎ। ভাবববাদ এক সর্বশক্তিমান শক্তির কল্পনা করে যা এই বস্তুজগতের স্রষ্টা। আর এখান থেকে ধর্ম ও ধর্মীয় ভাবধারার সৃষ্টি। আমার এই প্রবন্ধে আমি মার্কসীয় দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদকে আধুনিক বৈজ্ঞানিক আলোকে বোঝার চেষ্টা করেছি। আমি দেখাবার চেষ্টা করবো কিভাবে ইন্দ্রিয় এবং স্নায়ুজগৎ বস্তু ও চেতনাকে সংযুক্ত করে এবং কল্পলোকের জন্ম দেয়...

চাঁদে জীবন ।। শমীক সমাদ্দার

চাঁদে জীবন  শমীক সমাদ্দার                           চন্দ্রযান দুরন্ত তৈরি, রকেটের উপর ভর করে চন্দ্রযান চাঁদে অবতরণ করবে। মাধ্যাকর্ষণ শক্তি পেরিয়ে মহাকাশযান চাঁদের কক্ষপথে  স্থাপন করা হয়েছে। চন্দ্রাযান চাঁদের মাটিতে পা রাখবে সময়ের কাউন্ট ডাউন চলছে। সমস্ত নিয়ন্ত্রণ স্পেসস্কাই গাবেষণা কেন্দ্র কতৃক নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে প্রযুক্তি বিজ্ঞান অতল গভীরতায় বাসা বাঁধে। পরিচয়টা দিয়ে দিলাম এই স্পেসসিপে রয়েছে তিনজন নভোচর, একজনের নাম সাইমন আর এক জনের নাম রেমন্ড, আর এদের সঙ্গে একজন মহিলা আছে তার নাম মেরিনা। চন্দ্রযান চন্দ্রপৃষ্ঠে সফলভাবে অবতরণ করেছে। চন্দযান দুরন্ত চাঁদের পূর্ব -পশ্চিম অক্ষরেখা বরাবর অবতরণ করেছে। আলো আঁধারের গভীরতায় বড় বড় পাথরের পিণ্ড, চাঁদের সার্ফেসের উপরে পাথর জল দেখা যায়। জমাট বাঁধা অক্সিজেন আর কার্বনডাই অক্সাইড। ওরা এখানে এসেছে এক রহস্য উদ্ঘাটন করতে। যে স্থানে ওরা অবতরণ করেছে সেখানে ১০ বছর আগে ওরা এসেছিলো। রুশ সরকার ওদের দেশের ছাত্র ছাত্রী কে মহাকাশে চাঁদে পাঠাতে চায়। ওরা কেন এসেছে সেটা এখনো অধরা। সাইমনের বর্...

জনপ্রিয় লেখা

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ -- "ত্রয়ী কাব্য" ------------------------------------------------------------------------------ সুনন্দ মন্ডল নবীনচন্দ্র সেন সাহিত্যে তথা বাংলা কবিতার জগতে এক অবিস্মরণীয় নাম। তিনি চট্টগ্রাম জেলার নওয়াপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ১৮৪৭ সালে তাঁর জন্ম এবং মত্যু ১৯০৯ সালে। বঙ্কিমচন্দ্র তাঁকে 'বাংলার বায়রন' বলেছেন। ‎জীবৎকালীন যুগে আত্মপ্রত্যয়ের মধ্যে জাতীয় চরিত্র আত্মস্থ করে নতুন সংস্কারে প্রয়াসী হয়ে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখেছেন।মধুসূদন-হেমচন্দ্র-নবীনচন্দ্র--এই তিন কবি বাংলা কাব্যধারায় প্রাণ সঞ্চার করেছিলেন। বিশেষত মহাকাব্য লেখার দুঃসাহস দেখিয়েছিলেন। এদিক থেকে মধুসূদন দত্ত একজন সফল মহাকাব্যিক। তাঁর 'মেঘনাদ বধ' কাব্যের মত গভীর ও ব্যঞ্জনাময় না হলেও নবীনচন্দ্র সেনের 'ত্রয়ী' কাব্য বিশেষ মর্যাদা দাবি করতেই পারে। তাছাড়া 'ত্রয়ী' কাব্যে ধর্মীয় ভাবধারার আবেগ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ‎ ‎নবীনচন্দ্র সেন বহু কাব্য লিখেছেন। যেমন- 'অবকাশরঞ্জিনী','পলাশীর যুদ্ধ', 'ক্লিওপেট্রা', 'রঙ্গমতী', 'খ্রীষ্ট', ...

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা শ্রীজিৎ জানা "সময় চলিয়া যায় নদীর স্রোতের প্রায়"। স্রোতের ধারা তার দু'প্রান্তে রেখে যায় ভাঙাগড়ার চিহ্ন। কালের দৃশ্যপটেও পরিবর্তনের ছবি অনিবার্যভাবেই চোখে পড়ে। সমাজ সময়ের ছাঁচে নিজেকে গড়ে নেয় প্রতিনিয়ত।  সেখানে মনে নেওয়ায় বাধা থাকলেও,মেনে নেওয়ার গাজোয়ারি চলে না। ফলত কাল বদলের গাণিতিক হিসেবে জীবন ও জীবিকার যে রদবদল,তাকেই বোধকরি সংগ্রাম বলা যায়। জীবন সংগ্রাম অথবা টিকে থাকার সংগ্রাম।  মানুষের জীবনযাপনের ক্ষেত্রে আজকে যা অত্যাবশ্যকীয় কাল তার বিকল্প রূপ পেতে পারে অথবা তা অনাবশ্যক হওয়াও স্বাভাবিক। সেক্ষেত্রে উক্ত বিষয়টির পরিষেবা দানকারী মানুষদের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হওয়া অস্বাভাবিক নয়। এক কালে গাঁয়ে কত ধরনের পেশার মানুষদের চোখে পোড়তো। কোন পেশা ছিল সম্বৎসরের,আবার কোন পেশা এককালীন।  সব পেশার লোকেরাই কত নিষ্ঠা ভরে গাঁয়ে  তাদের পরিষেবা দিত। বিনিময়ে সামান্য আয় হত তাদের। আর সেই আয়টুকুই ছিল  তাদের সংসার নির্বাহের একমাত্র উপায়। কালে কালান্তরে সেই সব পেশা,সেই সব সমাজবন্ধুরা হারিয়ে গ্যাছে। শুধুমাত্র তারা বেঁচে আছে অগ্রজের গল্পকথায়,আর বিভিন...

গ্রন্থ আলোচনা: শর্মিষ্ঠা দেবনাথ

প্রতিবাদ যখন অগ্নিবাণী বাংলাদেশে নারীমুক্তি ও নারী আন্দোলনের পুরোধা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ১৯৯তম জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদিত হল " আসিফা এবং.." কাব্য সংকলনটির মধ্যদিয়ে।সংকলনটির বিশেষত্ব হল,এটি উৎসর্গ করা হয়েছে নারীর সম্মান রক্ষার আন্দোলনের যোগ্যতম ব্যক্তি শহীদ শিক্ষক বরুন বিশ্বাসকে। সংকলক প্রকাশক সন্দীপ সাহু নিজে এবং বিশিষ্ট কবি সাহিত্যিকদের দিয়ে লিখিয়ে নিয়েছেন এমন কিছু কবিতা, যা শুধুমাত্র শব্দ ও ছন্দের অনুবন্ধ নয়, এক একটি অগ্নিবাণী।আসলে জীবনকে দেখার স্বাতন্ত্র‍্যে কবিরা সব সময়ই অগ্রগণ্য এবং অনন্য।যুগ ও জীবন দ্বন্দ্বের কণ্ঠস্বরকে আশ্রয় করে,একদিকে মনের প্রবল দাহ ও অন্যদিকে  নির্যাতিতা শিশুকন্যা ও নারীর প্রতি মনের গভীর আকুলতা থেকে প্রকাশ পেয়েছে "আসিফা এবং" এর  কবিতাগুলি।এক অন্ধকার সময়ের মুখোমুখি আমরা,সেই অন্ধকার আমাদের নিয়ে এসেছে সামাজিক অবক্ষয়ের শেষধাপে যেখানে নৈতিকতা,পাপবোধ,গ্লানিকে সরিয়ে রেখে, সমাজের বানানো নিয়মকে তোয়াক্কা না করে,অনায়াস দক্ষতায় ও ক্ষিপ্রতায় নিজেরই ধর্মচেতনাকে জলাঞ্জলি দিয়ে কিছু মানুষ তার পশুত্বের পরিচয় দিয়েছে ধর্ষণ ও ন...

শ্যামাপদ মালাকারের কবিতা

চোখ """"""" নদী, অরণ্য, রাতের ফালি চাঁদ- সবেই তো আমার...স্বর্ণপিঁড়িটাও!। সেদিন, শুকতারাটার গা' মাপতে গিয়ে মনে হল, --ওরা আমার চেয়েও সুখী? দেখিনা একবার গাইতি-শাবল চালিয়ে... চালালাম। জল-মাটি ভেজা একটা 'চোখ' কুড়িয়ে ফিরলাম! সেই চোখদিয়ে দেখি-- শেষ বিকেলের নিরন্ন আঁচে ঝলসানো বুকে নীড়ে ফিরছে ধূলিমাখা কত কাল পা, কি শান্তি - কি তৃষ্ণা! পাতাক্ষোয়া কোদালেরর মাথায় ঝরেপড়া ললাটের ঘামে, কারা যেন জীবন শাণ দেয়! রুক্ষঠোঁটের আবরণে এক সময় নেমে আসে শিশিরস্নাত কালনিশি-- মাঝের ব্যবধান মুছে দেয় প্রতিশ্রুতির ভীড়- - পূর্বজনমের নিদর্শনচুম্বন শেষে হেরে যায় কার মমতাজ-- ম্লান হয়ে যায় কত পিঁড়ি! ... ম্লান হয়ে যায় কত পিঁড়ি! ... ম্লা...

কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা: এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায় ।। পার্থ সারথি চক্রবর্তী

  কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা : এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায়  পার্থ সারথি চক্রবর্তী  কথায় বলে বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। রাজার শহর কোচবিহারের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা আরো অনেক বেশি। দুর্গাপূজা আর দীপাবলির মতো দু'দুটো বিরাট মাপের উৎসবের রেশ কাটতে না কাটতেই, এ শহর ভাসে রাস উৎসবের উন্মাদনায়। মদনমোহন ঠাকুর কোচবিহারের প্রাণের ঠাকুর। তাঁকে নিয়ে সবার আবেগ আর শ্রদ্ধা ও ভালবাসা এখানে বাঁধনছাড়া। এক অপূর্ব মিলনোৎসবের চেহারা নেওয়া এই উৎসব ঐতিহ্যবাহী ও ঐতিহাসিক। জন, মত, সম্প্রদায়ের উর্ধে এই উৎসবের গ্রহণযোগ্যতা। সময়ের কষ্টি পাথরে পরীক্ষিত! এক প্রাণের উৎসব, যা বহুদিন ধরেই গোটা উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ উৎসবে পর্যবসিত।কোচবিহারের এই রাস উৎসবকে কেন্দ্র করে যে মেলা হয় তাও সময়ের হাত ধরে অনেক বদলে গেছে। এসেছে আধুনিকতার ছোঁয়া! শৈশবে বাবার হাত ধরে যে মেলা দেখেছি তা চরিত্র ও আকৃতি দু'দিক থেকেই বদলে গেছে। গত পঁচিশ বছর ধরে খুব কাছে থেকে এই উৎসব ও মেলা দেখা, অনুভব করার সুযোগ হয়েছে। যা দিনদিন অভিজ্ঞতা ও প্রাপ্তির ঝুলিকে সমৃদ্ধ করে গেছে প্রতি ক্ষেত্রেই।  খুব সংক্ষেপে এই উৎসবের ইতিহাস না জানাটা কিন্তু অবিচারই ...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো,  তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) য...

মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা 2024 সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি (লেখক ও সম্পাদকীয় দপ্তরের কথোপকথন আকারে) --কী পত্রিকা? --নবপ্রভাত। --মুদ্রিত না অনলাইন? --মুদ্রিত। --কোন সংখ্যা হবে এটা? --বইমেলা 2024। --কোন কোন ধরনের লেখা থাকবে? --প্রবন্ধ-নিবন্ধ, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া। --বিশেষ কোন বিষয় আছে? --না। যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে। --শব্দ বা লাইন সংখ্যার কোন বাঁধন আছে? --না। নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো (যেমন, কবিতা 12-14 লাইনের মধ্যে, অণুগল্প কমবেশি 200/250শব্দে)। তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়। --ক'টি লেখা পাঠাতে হবে? --মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। --ফেসবুক বা অন্য কোন প্লাটফর্মে প্রকাশিত লেখা কি পাঠানো যাবে? --না। সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। --পত্রিকা কোন সময়ে প্রকাশিত হবে? --জানুয়ারি 2024-এর দ্বিতীয় সপ্তাহে। --লেখা পাঠানোর শেষতারিখ কত? -- 17 ডিসেম্বর 2023। --কীভাবে পাঠাতে হবে? --মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। --লেখার সঙ্গে কী কী দিতে হবে? --নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) --বিশেষ সতর্কতা কিছু ? --১)মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন '...

উৎসবের সৌন্দর্য: সেকালে ও একালে।। সৌরভ পুরকাইত

  উৎসবের সৌন্দর্য:  সেকালে ও একালে   সৌরভ পুরকাইত বাংলার উৎসব বাংলার প্রাণ। প্রতিদিনের জীবনযাপনের মধ্যে যখন মন ক্লান্ত হয়ে পড়ে তখন তাকে বেঁচে থাকার রসদ যোগায় এই উৎসব। কথায় বলে 'বারো মাসে তেরো পার্বণ'।মন আনন্দই চায়।তাই তাকে সজীবতা দিতে,পরিবারের,সমাজের ভালো-মন্দের কথা মাথায় রেখে মানুষ নিজেই সৃষ্টি করে নিয়েছে নানাবিধ উৎসবগুলিকে। একেবারে প্রাচীন কাল থেকে আজ পর্যন্ত মানুষ কখনোই উৎসব বিমুখ ছিল না।উৎসবই তাকে ঘর থেকে বাইরে টেনে এনেছে,চিনতে শিখিয়েছে আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার আনন্দকে। উৎসব আসলে প্রাণের সাথে প্রাণের যোগ, হৃদয়ের সাথে হৃদয়ের যোগ।রবীন্দ্রনাথ বলেছেন 'সত্য যেখানেই সুন্দর হয়ে প্রকাশ পায় সেইখানেই উৎসব'।হৃদয়ের সেই সুকোমল বৃত্তির জাগরণ যেন ফুটে ওঠা ফুলেরই মতো সত্য ও সুন্দর।এই জাগরণই উৎসব। তাই নানা কিছুর মধ্য দিয়ে,নানা উপলক্ষ্যে এই উৎসব প্রকাশ পায়। প্রাচীনকালে মানুষের হাতে না ছিল পসার, না ছিল পসরা।ছিল মনের আন্তরিকতা,মানুষকে কাছে টেনে নেবার ক্ষমতা।সেটাই ছিল উৎসবের সৌন্দর্য। তাই সেদিনের উৎসবে ক্ষুদ্র,তুচ্ছ উপকরণও প্রাণের উচ্ছ্বাসে মহৎ হয়ে উঠত।সেকালের উৎসবে লোক দেখানো ব্যাপার কিছু ...

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

বসন্তের কোকিল তুমি   বিচিত্র কুমার                      (০১) তোমার দু-আঁখির গহীন অরণ্যে একটা স্বপ্নের বহমান নদী রয়েছে, তারই রেশ ধরে আমি হেঁটে চলি অজানা বসন্তের পথে নীর উদ্দেশ্যে। সে চলার কোন শেষ সীমা নেই তাই আমার বিষণ্ণ একতারা সন্ন্যাস খুঁজে ফিরে , কবে তুমি বুঝবে অনুশ্রী মনের পর্দা খুলে একুশ বসন্ত তোমার রঙ ছিটিয়ে যাচ্ছে অচিনপুরে। এদিকে আমার দেহের প্রতিটি শিরা ধমনীতে প্রবাহিত হচ্ছে তোমার ভালোবাসার একটু উষ্ণতা পাবার জন্যে, শুধু অনুভবে তাণ্ডব উচ্ছাসিত হচ্ছে--- যেদিকে তাকাই --- ফুলে ফুলে ভ্রমর গুনগুনিয়ে উড়ে উড়ে পরে বসন্তের কোকিল গান গায় নব বসন্তে, তোমার দুই চোখে আমার একই ছায়া রয়ে যায় উতলা ভালোবাসার সীমান্তে।                 (০২)        এক রক্তাক্ত বসন্তের স্মৃতি কোন এক উতলা বসন্তের সকালে পুষ্পবনে ফুটেছিল একটি টকটকে লাল গোলাপ, তার সাথে হয়েছিলো দেখা প্রথম ফাগুনে হয়েছিল দুজনার এ জীবনের আলাপ।  তারপর প্র...

অনুভবে, অনুধ্যানে অনালোকিত কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী ।। সুপ্রিয় গঙ্গোপাধ্যায়

"এ কালে একটু লেখাপড়া জানা থাকাতে, এবং বঙ্গভাষায় অনেক গুলি পাঠ্য পুস্তক হওয়াতে কেবল পরনিন্দা করিয়া সময় কাটাইতে তাঁহাদের আবশ্যকও হয় না, প্রবৃত্তিও হয় না। …নিতান্ত সখ্যতা বা আত্মীয়তা না থাকিলে, সকল পেটের কথা খুলিয়া নিঃশ্বাস ছাড়িয়া তৃপ্তিলাভ করা, এ কালের মেয়েরা পছন্দ করেন না। তাঁহারা বইখানি, কার্পেটটুকু, নিজের স্বামী পুত্র লইয়া দিন যাপন করিতে বা একেলা থাকিতে কষ্ট বোধ করেন না।" —শরৎকুমারী চৌধুরাণীর এই লেখা (ভারতী ও বালক/ আশ্বিন কার্তিক, মাঘ/ ১২৯৮) দেখে বুঝতে অসুবিধা হয় না উনিশ শতকে নারীর লেখাপড়া শেখার উদ্দেশ্য ছিল মূলত আত্মমুক্তির জন্য। শুধু লেখাপড়া শেখা নয়, সাহিত্য সৃষ্টিতেও ছয়'এর দশক (উনিশ শতকের) থেকে নারীরা যে ধারা সূত্রপাত করেছিল তা নারীর আত্মমুক্তির পথকেই প্রসারিত করেছিল। ছয়'এর দশকের পূর্বেই ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে প্রথম ছাপার হরফে নারী রচিত কাব্য 'চিত্তবিলাসিনী' প্রকাশিত হয়। লেখেন কৃষ্ণকামিনী দাসী। ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে কবি ঠাকুরাণী দাসীর নাম উঠে আসতে থাকে, যিনি কবিতার পাশাপাশি গদ্যও লিখতেন। ঠিক সেই বছরই জন্মগ্রহণ করেন কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী, যাঁর কবিতা লেখা আত্মমুক্...

বছরের বাছাই

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৪তম সংখ্যা ।। ফাল্গুন ১৪৩১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

  এই সংখ্যায় একটি গ্রন্থ আলোচনা ও একটি ধারাবাহিক রচনা ছাড়া সব লেখাই ভাষা দিবস, মাতৃভাষা, ভাষাচেতনা ও ভাষা সমস্যা বিষয়ক রচনা। লেখাগুলি এই সংখ্যাকে অনেকটাই সমৃদ্ধ করেছে। পড়ুন। শেয়ার করুন। মতামত জানান। লেখকগণ নিজের নিজের লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন যতখুশি, যে মাধ্যমে খুশি। কিন্তু স্ক্রিনশট শেয়ার নৈব নৈব চ!  অন্য বিষয়ের লেখাগুলি আগামী সংখ্যার জন্য রইল।  সকলকে ধন্যবাদ, অভিনন্দন। ভালো থাকুন।   --সম্পাদক, নবপ্রভাত। ==  সূ  চি  প  ত্র  == প্রবন্ধ-নিবন্ধ অমর ২১শে ফেব্রুয়ারি বাঙ্গালীর বাংলা ভাষা দুর্জয় দিবস।। বটু কৃষ্ণ হালদার ভাষা শহীদদের পঁচাত্তর বছর।। অনিন্দ্য পাল একুশে ফেব্রুয়ারি : বাঙালির শ্রেষ্ঠ অশ্রুবিন্দু।। জীবনকুমার সরকার কবিগানের সাহিত্যিক ও সমাজতাত্ত্বিক মূল্য।। বারিদ বরন গুপ্ত বিপন্ন মাতৃভাষা ও সংস্কৃতি।। শ্যামল হুদাতী মায়ের দুধ আর মাতৃভাষা।। প্রদীপ কুমার দে একুশে ফেব্রুয়ারি : কিছু কথা।। বনশ্রী গোপ বাংলায় কথা বাংলায় কাজ।। চন্দন দাশগুপ্ত বিপন্ন মাতৃভাষা ও তার মুক্তির পথ।। মিঠুন মুখার্জী. হে অমর একুশে, তোমায় ভুলিনি, ভুলব না।। মহম্মদ মফিজুল ইসলা...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৭তম সংখ্যা ।। জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ মে ২০২৫

  প্রচ্ছদ চিত্র: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সূচিপত্র রবীন্দ্রনাথ এবং কয়েকজন নারী ।। অনিন্দ্য পাল পরাবাস্তববাদ ও বাংলায় জীবনানন্দের কাব্যচর্চা ।। রণেশ রায় প্রতীক্ষা ।। চন্দন দাশগুপ্ত আশ্রয় ।। সায়নী সাহা বয়স্ক শিক্ষাকেন্দ্র ।। দেবাংশু সরকার প্রণামের প্রভু ।। সুপ্রভাত মেট্যা দুর্ভাগ্যের সম্মুখ সমরে ।। সমীর কুমার দত্ত আচমকা শরৎ ।। অর্ণব সামন্ত প্রতিধ্বনি ✍️ সুবীর কুমার ঘোষ জীবন যেখানে যেমন ।। আরজু মুন জারিন বছর সীমান্তে হিসেব নিকেশ ।। রানা জামান চারটি কবিতা ।। বিবেকানন্দ নস্কর আমরা আছি ।। লালন চাঁদ চাওয়া ।। মাথুর দাস কাগজ ফুলে ।। সফিউল মল্লিক সময়ের স্রোত ।। দুর্গাদাস মিদ্যা তুমি মানুষ ।। বদরুল বোরহান দিঘার সমুদ্র ।। মাখনলাল প্রধান পুস্তক-আলোচনা ।। অরবিন্দ পুরকাইত সংযম ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত  চেনা প্রতিবেশী (প্রথম পর্ব) ।। দীপক পাল খেলার মাঠ ।। তূয়া নূর বন্ধু শ্যামলকান্তি ।। শংকর ব্রহ্ম তুমি তোমার মতো থাকলে ।। সত্যেন্দ্রনাথ বেরা গ্রীষ্মে খুবই হিংস্র রবি ।। জগবন্ধু হালদার স্বপ্ন দর্শন ✍️ পার্থ প্রতিম দাস মৌন মুখরতা ।। মুসা মন্ডল রুদ্র বৈশাখ ।। দীনেশ সরকার চিহ্নিত পদযুগ পদাঘাত ।। দেবাশীষ...

প্রচ্ছদ।। ৮৩তম সংখ্যা ।। মাঘ ১৪৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ।। প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র

  বিঃ দ্রঃ আগামী ফেব্রুয়ারি সংখ্যার জন্য ভাষা দিবসের কথা মাথায় রেখে লেখা পাঠান। email: nabapravatblog@gmail.com  সূচিপত্র ফিচার।। গোপাল ভাঁড়ের অজানা সত্য ।। লোকনাথ পাল প্রবন্ধ ।। মসুয়ার রায় পরিবার এবং বঙ্গসংস্কৃতি ।... প্রবন্ধ ।। সুধীন্দ্রনাথ দত্ত: কাব্যের দার্শনিক ও ন... কবিতায় সেতুবন্ধন (তৃতীয় অংশ) শিল্পবিপ্লবোত্তর কাল... রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর বিদ্রোহী প্রেমের কবিতা: ... কবিতা ।। এই মন ভালো নেই দিনে ।। সুপ্রভাত মেট্যা কবিতা ।। জোছনা আলোর স্বপ্ন ।। তুষার ভট্টাচাৰ্য কবিতা ।। নিঃস্ব হবো ।। লালন চাঁদ কবিতা ।। ভালোলাগা  ।। আজিজ উন নেসা  গল্প ।। স্বীকারোক্তি ।। চন্দন দাশগুপ্ত কবিতা ।। শীতের দিন ।। প্রশান্ত কুমার মন্ডল কবিতা ।। শীতকাল ।। অঙ্কিতা পাল নাসির ওয়াদেনের দুটি কবিতা ভূতের লেখা ছড়া ।। বদরুল বোরহান কবিতা ।। ব্যস্ত ।। আলাপন রায় চৌধুরী ছোটগল্প ।। লম্বুর স্বপ্নপূরণ ।। পরেশ চন্দ্র মাহাত কবিতা ।। সৎকার ।। সুমিত মোদক কবিতা।। শীত বৈচিত্র্য ।। সুমিতা চৌধুরী পুস্তক-আলোচনা ।। নিউটনের আপেল ও প্রেমিকা ।। অরবিন্... গল্প।। শান্তির পথে …...।। বন্দনা সেনগুপ্ত কবিতা ।। মা...

সূচিপত্র ।। ৮৯তম সংখ্যা ।। শ্রাবণ ১৪৩২ জুলাই ২০২৫

সূচিপত্র   প্রবন্ধ ।। বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় ।। মাখনলাল প্রধান প্রবন্ধ ।। শ্রমিকের অধিকার ।। চন্দন দাশগুপ্ত প্রবন্ধ ।। ভিনগ্রহীদের সন্ধানে ।। শ্যামল হুদাতী প্রবন্ধ ।। নারীমর্যাদা ও অধিকার ।। হিমাদ্রি শেখর দাস কবিতা ।। মশালের রং তুলি ।। তূণীর আচার্য কবিতা ।। জললিপি ।। রূপক চট্টোপাধ্যায় গুচ্ছকবিতা || শিশির আজম নিবন্ধ ।। পূনর্জন্ম ।। শংকর ব্রহ্ম মুক্তভাবনা ।। কোলাহল তো বারণ হলো ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত গল্প ।। গানের হাড় ।। শুভজিৎ দত্তগুপ্ত গল্প ।। শিকড়ের খোঁজে ।। সমীর কুমার দত্ত সুপ্রভাত মেট্যার পাঁচটি কবিতা গ্রন্থ-আলোচনা ।। আবদুস সালামের কাব্যগ্রন্থ 'অলীক রঙের বিশ্বাস'।। তৈমুর খান অণুগল্প ।। হরিবোল বুড়ো ।। সুমিত মোদক রম্যরচনা ।। গোয়েন্দা গোলাপচন্দ আর প্রেমের ভুল ঠিকানা ।। রাজদীপ মজুমদার দুটি গল্প ।। মুহাম্মদ ফজলুল হক দুটি কবিতা ।। তীর্থঙ্কর সুমিত কবিতা ।। মেঘমুক্তি ।। বন্দনা পাত্র কবিতা ।। ব্যবচ্ছিন্ন শরীর ।। কৌশিক চক্রবর্ত্তী কবিতা ।। শমনচিহ্ন ।। দীপঙ্কর সরকার কবিতা ।। ভালোবাসার দাগ ।। জয়শ্রী ব্যানার্জী কবিতা ।। ফণীমনসা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ছড়া ।। আজও যদি ।। বদ্রীন...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো,  তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) য...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮২তম সংখ্যা ।। পৌষ ১৪৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

  সূচিপত্র অন্নদাশঙ্কর রায়ের সাহিত্য: সমাজের আয়না ।। বিচিত্র কুমার প্রবন্ধ ।। বই হাতিয়ার ।। শ্যামল হুদাতী কবিতায় সংস্কৃতায়ন (দ্বিতীয় ভাগ ) ।। রণেশ রায় পুস্তক-আলোচনা ।। অরবিন্দ পুরকাইত কবিতা ।। লেগে থাকা রোদ্দুরের ঘ্রাণের মতো ।। জয়শ্রী ব্যানার্জি কবিতা ।। ভুল ।। সুপ্রভাত মেট্যা কবিতা ।। উন্মেষ ।। বিশ্বজিৎ সেনগুপ্ত কবিতা ।। গার্হস্থ্য ।। বিবেকানন্দ নস্কর একগুচ্ছ বিজয়ের কবিতা ।। বিচিত্র কুমার গল্প ।। পোষ্য ভূত ।। সমীর কুমার দত্ত কবিতা ।। আশপাশ ।। প্রতীক মিত্র কবিতা ।। মেঘ ।। তীর্থঙ্কর সুমিত অণুগল্প ।। বংশীবদনের সুখদুঃখ ।। দীনেশ সরকার কবিতা ।। গভীর রাত ।। সুনন্দ মন্ডল তিনটি কবিতা ।। সুশান্ত সেন ভালোবাসার বাসা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত অণুগল্প ।। শিক্ষকের সম্মান ।। মিঠুন মুখার্জী কবিতা।। প্রশ্ন ।। জীবন সরখেল কবিতা ।।ক্ষরিত সে পথ ।। রহিত ঘোষাল কবিতা ।। রক্ত দিয়ে কেনা ।। মুহাম্মদ মুকুল মিয়া কবিতা ।। কংক্রিট ।। আলাপন রায় চৌধুরী ছড়া ।। শীত নেমেছে ।। রঞ্জন কুমার মণ্ডল কবিতা ।। কিছু শব্দ ।। সমীর কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় কবিতা ।। শীতের নগ্নতা ।। রানা জামান কবিতা ।। পথ চলা ।। পাভেল আমান বেদ পু...

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ৮৬তম সংখ্যা ।। বৈশাখ ১৪৩২ এপ্রিল ২০২৫

সম্পাদকীয় এই সংখ্যাটি বাংলা নববর্ষ বিষয়ক সংখ্যা। নৱৰ্ষকেন্দ্রিক বহু তথ্যপূর্ণ লেখা এই সংখ্যাটিকে সমৃদ্ধ করেছে। বাংলা নববর্ষ উদযাপনের ইতিহাস, রীতিনীতি, উৎসব, পার্বন, লোকাচার, রূপান্তর বহুবিধ বিষয় প্রকাশিত হয়েছে এই সংখ্যার লেখাগুলিতে। এই সংখ্যার বাছাই কিছু লেখার সঙ্গে আগামীতে আরও কিছু লেখা সংযুক্ত করে বাংলা নববর্ষ বিষয়ক একটি মুদ্রিত সংখ্যা প্রকাশ করার ইচ্ছে রইল।  সকলকে নববর্ষের আন্তরিক শুভকামনা জানাই। উৎসবে আনন্দে থাকুন, হানাহানিতে নয়। ধর্ম-ব্যবসায়ীদের চক্রান্ত ব্যর্থ করে সহনাগরিকের পাশে থাকুন। মনে রাখুন, ধর্মকে মানুষই সৃষ্টি করেছে। ঈশ্বর আল্লা গড ইত্যাদির জন্মদাতা মানুষই। মানুষকে ভালোবাসুন। মানুষের পাশে থাকুন।  নিরাশাহরণ নস্কর  সম্পাদক, নবপ্রভাত।  সূচিপত্র প্রবন্ধ-নিবন্ধ-স্মৃতিকথা পয়লা বৈশাখ ।। সিদ্ধার্থ সিংহ নববর্ষকেন্দ্রিক মেলা, পার্বন, উত্সব, লোকাচার ।। সবিতা রায় বিশ্বাস নববর্ষ আবাহন ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে এবং বিভিন্ন দেশে ।। তুষার ভট্টাচার্য নববর্ষের সেকাল ও একাল ।। হিমাদ্রি শেখর দাস নববর্ষের হাল-হকিকৎ ।। শংকর ব্রহ্ম বোশেখি বাঙালি নাকি পোশাকি বাঙালি? ।। দিব্যেন্দু...

প্রবন্ধ ।। বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় ।। মাখনলাল প্রধান

বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় মাখনলাল প্রধান বাংলার শিল্প-সংস্কৃতির জগতে যাত্রা শিল্প তথা নাট‍্যশিল্পে মড়ক নেমে এসেছে । যাত্রা শিল্পের মড়কে শুধু কোভিড নয় তার বহুপূর্ব থেকেই অর্থনৈতিক বিপর্যয় , শিক্ষাক্ষেত্রে বন্ধ‍্যাত্ব এবং গ্ৰাম বাংলার পটপরিবর্তন শেষ পেরেক ঠুকে দিয়েছে। যাত্রা-শিল্পের লীলাভূমি ছিল গ্ৰাম বাংলা। গ্ৰামে প্রচুর যাত্রাপালা হত নানা উৎসবকে কেন্দ্র করে । জমিদারি ব‍্যবস্থা লুপ্ত হওয়ার পর গ্ৰামীণ মানুষের উদ‍্যোগে শীতলা পূজা,  কালীপূজা, দুর্গাপূজা, কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা, চড়ক ইত‍্যাদিকে উপলক্ষ‍্য করে যাত্রাপালার আয়োজন না হলে কেমন যেন ম‍্যাড়ম‍্যাড়ে লাগতো। সেই সঙ্গে কলকাতার বড়বড় কোম্পানির যাত্রাপালা ঘটা করে, টিকিট সেল করে হত মাঠে। খুব বড় মাপের খেলার মাঠ যেখানে ছিল না সেখানে ধানের মাঠ নেওয়া হত ‌। ত্রিশ-চল্লিশ হাজার মানুষ দেখতে আসত। স্পেশাল বাস পাঠাত  আয়োজক কর্তৃপক্ষ। বিনা ভাড়ায় বাসে যাতায়াত করত যাত্রার দর্শকেরা। কিন্তু বিকল্প ধানচাষ শুরু হলে জমিগুলো সময় মতো ফাঁকা পাওয়া গেল না । প্রথম দিকে ব‍্যাপকহারে ধান শুরু না হওয়ায় খুব একটা অসুবিধা হত না। বহুক্ষেত্রে  ধান কা...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। নবপ্রভাত ৮৫ ।। চৈত্র ১৪৩১ মার্চ ২০২৫

  সূচিপত্র নিবন্ধ ।। মরিয়ম মির্জাখানি: এক অনন্য গণিতসূর্য ।। ... নিবন্ধ ।। নারী দিবসে যা ভাবা উচিত ।। বিশ্বনাথ পাল প্রবন্ধ ।। প্রাচীনকাল থেকে নারীরা অবহেলিত, বঞ্চিত,... নিবন্ধ ।। আমার চোখে আদর্শ নারী ।। জয়শ্রী বন্দ্... ফিচার।। এই মুহূর্তে বাংলা সাহিত্যে নারীদের লেখালেখ... আফ্রিকার লোককথা ।। করোটিকে বিয়ে করা অবাধ্য মেয়েটি ... ছোটগল্প ।। মানবী ।। ভুবনেশ্বর মন্ডল নিবন্ধ ।। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে অন্যতম নারী মু... নিবন্ধ ।। প্রিয় মহিলা সাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবী ।। ... গল্প ।। উই ওয়ান্ট জাস্টিস ।। রবীন বসু প্রবন্ধ ।। নিপীড়িতা ।। শ্যামল হুদাতী ফিচার ।। রমণী রতন ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত প্রবন্ধ ।। নারী সমাজ : তখন-এখন ।। তপন মাইতি নিবন্ধ ।। বহমান কালের ধারায় নারী ।। দীপক পাল গল্প ।। আমার দুর্গা ।। অঞ্জনা গোড়িয়া (সাউ) গল্প ।। যোগ্য জবাব ।। সমীর কুমার দত্ত ছোটগল্প ।। আমি দুর্গাকে দেখেছি।। চন্দন দাশগুপ্ত গল্প ।। সম্পর্ক ।। গৌতম সমাজদার কবিতা।। নারী মানে ।। গোবিন্দ মোদক কবিতা।। নারী ।। সমর আচার্য্য ছড়া ।। নারী অসামান্যা ।। সৌমিত্র মজুমদার কবিতা ।। নারী দিবসে ।। বিবেকানন্দ নস্কর কবিতা ।। না...

প্রবন্ধ ।। ভিনগ্রহীদের সন্ধানে ।। শ্যামল হুদাতী

ভিনগ্রহীদের সন্ধানে  শ্যামল হুদাতী  ইতিহাসের শুরু থেকে বারবার মানুষকে একটা প্রশ্ন কুঁড়ে কুঁড়ে খায় – এই মহাবিশ্বে আমরা কি একা? পৃথিবীর মতো আরও গ্রহ রয়েছে, যেখানে মানুষের মতো বুদ্ধিমান প্রাণীরা বাস করে – এই সম্ভাবনা বরাবর মানুষকে মুগ্ধ করেছে। আমাদের প্রত্যেকের জীবনের কখনও না কখনও এই ভাবনা এসেছে। দীর্ঘ কয়েক দশকের গবেষণার পরও, এই বিষয়ে কোনও নিশ্চয়তা দিতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। জেমস ওয়েব মহাকাশ টেলিস্কোপ, বহু দূরের এমন কিছু গ্রহের সন্ধান দিয়েছে, যেগুলিতে প্রাণ থাকতেই পারে। তবে, নিশ্চিত কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে, আমেরিকার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাম্প্রতিক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, ভিনগ্রহীদের খুঁজতে বহু দূরে যাওয়ার কোনও দরকার নেই। তারা এই পৃথিবীতেই মানুষের ছদ্মবেশে মানুষের মধ্যেই বসবাস করতে পারে। আমরা ভিনগ্রহীদের যেমন কল্পনা করি, এরা তার থেকে আলাদা। এরা অনেকটাই, দেবদূতদের মতো। মানব জগতের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক প্রযুক্তিগত নয়, বরং জাদুকরি। মহাকাশে সৌরজগতের গ্রহ পৃথিবী ছাড়া অন্য কোথায় প্রাণ রয়েছে কি না তা নিয়ে চলছে বিস্তর গবেষণা। একই সঙ্গে পৃথিবী ছাড়া অন্য কোনো গ্রহে মানুষ বসবাস ক...

মাসের বাছাই

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬

  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠালে  অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে হলে ভালো। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # ...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯২তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩২ অক্টোবর ২০২৫

—: সম্পাদকীয় দপ্তর থেকে :— এই সংখ্যার জন্য লেখা এসেছিল প্রায় ১৮০টা। কিন্তু গুণগত মানে দুর্বল লেখার সংখ্যা বহু। আমরা নবপ্রভাতে নতুনদের কথা ভেবে বেশ কিছু দুর্বল লেখাও রাখি। কিন্তু সবসময় একই লোকের দুর্বল লেখা প্রকাশ করা অনুচিত বলে মনে করি। শেষ পর্যন্ত ৯৯ জনের লেখা রাখা গেল। যাদের লেখা প্রকাশিত হল না, তারা লেখাগুলি অন্য যেখানে খুশি পাঠাতে পারেন। বিশেষ কারণে এই সংখ্যার মুদ্রিত সংস্করণ প্রকাশিত হচ্ছে না। আমরা দুঃখিত। তবে মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি শীঘ্রই আসছে। সঙ্গে থাকুন। সকলকে উৎসবমুখর বর্ণময় শুভেচ্ছাসহ— —নিরাশাহরণ নস্কর, সম্পাদক, নবপ্রভাত। অনুরোধ : প্রকাশিত লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন, ছবি/স্ক্রীনশট নয়।  == সূচিপত্র == পড়া-লেখার ইতিহাস অনুসন্ধান।। তপন তরফদার উৎসব : মানুষের চিরন্তন আত্মপ্রকাশ।। কৃশানু ব্যানার্জি বাংলা : সভ্যতা ও সংস্কৃতির জন্মভূমি।। শ্যামল হুদাতী সমুদ্র আর অস্তিত্ব ।। সুব্রত চৌধুরী রাজা ছিলেন জুবিন গর্গ ।। গঙ্গা 'অনু'   আদ্যাশক্তি মহামায়ার বাংলা বারো মাসের বারো রূপ ।। অর্হণ জানা মেধাদাদুর আসর ।। রণেশ রায় বৈজ্ঞানিক মা...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯৩তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩২ নভেম্বর ২০২৫

সূচিপত্র বস্তু, চেতনা এবং কবি ।। সজল চক্রবর্তী দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত ।। রণেশ রায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট ও সন্নিহিত অঞ্চলের কথ্য শব্দ ।। অরবিন্দ পুরকাইত চাঁদে জীবন ।। শমীক সমাদ্দার অসমাপ্তি ।। মহুয়া হুই গ্যালাক্সির শব্দে ।। জাসমিনা খাতুন তিনটি কবিতা ।। দিবাকর সেন অপূর্ণতার শেষ অধ্যায় ।। সুপ্রিয় সাহা হাফ ডজন ছড়া ।। স্বপনকুমার পাহাড়ী স্বাপ্নিক অমলের ঘুৃম ।। সঞ্জয় দেওয়ান দুটি কবিতা ।। সৌমিত্র উপাধ্যায় পথ চলতি ✍️পার্থ প্রতিম দাস হেমন্তের বিষাদ ছুঁয়ে ।। শক্তিপদ পাঠক রাই আর বাবা ।। অদিতি চ্যাটার্জি স্থিতিশীল ।। রঞ্জিত মুখোপাধ্যায় হৃদয়ের শূন্য কোড ।। লিপিকা পিঙ্কি দে অমানিশা ।। সৌভিক মুখার্জী দৃষ্টিগত ।। শামীম নওরোজ জ্যান্ত ভূতের গপ্পো ।। পার্থ সারথি চট্টোপাধ্যায় ধুতরা ফুলের ঘ্রাণ ।। মজনু মিয়া তারা খসার আলোয় ।। তীর্থঙ্কর সুমিত উত্তরণে অন্তরায় ।। সমীর কুমার দত্ত প্রেম মুদ্রা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ধারা ।। লালন চাঁদ অন্যের ব্যথায় ব্যথি ।। জগদীশ মণ্ডল গর্ভ ।। শাশ্বত বোস ভ্রমণ বিষয়ক স্মৃতিকথা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত শাপে বর ।। সাইফুল ইসলাম রবিবার ।। সঙ্ঘমিত্রা দাস দুটি ...

দিদৃক্ষা ।। রাজেশ কে. চক্রবর্ত্তী

  দিদৃক্ষা রাজেশ কে. চক্রবর্ত্তী 'কাল একবার দেখা হতে পারে?' দশমীর দুপুরে খাটে আধশোয়া হয়ে নিজের ফোনটা ঘাঁটছিল দেবমাল্য; হোয়াট্‌সঅ্যাপের সার্চ বক্সে  র‍্যান্ডম সিক্যুয়েন্সে ক'খানা ডিজিট ইনপুট করতেই বিস্মৃতির অতল থেকে অপ্রত্যাশিতভাবে যে নামটা স্ক্রিনের সারফেসে ভেসে উঠল, এককালে দেবমাল্যের প্রায়োরিটি লিস্টে সবথেকে ওপরে পিন্‌ করা থাকতো এই অ্যাকাউন্টটা। 'অহনা দাশগুপ্ত'—গ্রেয়েড-আউট ডিপিটার ডানদিকে, নামটার তলায় নিস্প্রভ হরফে ভেসে থাকা ওর এই লাস্ট মেসেজটা বেশ ক'বছরের পুরনো, কিন্তু দেবমাল্যর স্মৃতির প্যান্ডোরা বাক্সটি উলটে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল। আরেকবার আপাদমস্তক শিহরিত হয় সে। প্রোফাইলটা খুলে ওপরে-নীচে স্ক্রল্‌ করে দেখে, ওদের পুরনো চ্যাটগুলো তেমনি আড়ষ্ট হয়ে পড়ে আছে, ওর মেসেজগুলোর পাশে ডাবল টিকগুলো এখনও জাজ্বল্যমান সবুজে ছোপানো, যেন এইমাত্র 'সিন্‌' করে রেখেছে অহনা! যেন এখুনি আবার হাত বোলালেই অহনা এসে খানিকটা রাগত ভঙ্গিতে চ্যাট করতে লেগে যাবে। দেবমাল্যের বুক ছাপিয়ে একটা নীরব দীর্ঘশ্বাস উঠে আসে! ছুটির এই আমেজটা লক্ষ্মীপুজো অব্দি গড়াবে—অফিস খুললেই তো আবার দমফাটা ব্য...

গুচ্ছকবিতা || শিশির আজম

  গুচ্ছকবিতা || শিশির আজম হুইসেল (মুরাকামি থেকে অনুপ্রাণিত) ♦ 'গভীর রাতে একটা হুইসেল কতটা গভীর হতে পারে তুমি কল্পনাও করতে পারো না,' ছেলেটা বললো, 'আশ্চর্য ঐ হুইসেলের মতো আমি ভালবাসি তোমাকে।' কিন্তু গভীর রাতে অন্ধকারে কখনও তো ঘুম ভেঙে যায়নি মেয়েটার, কখনও ও বিচ্ছিন্ন আর একা হয়ে যায়নি। ও কীভাবে অনুভব করবে গভীর রাতে ট্রেনের হুইসেল কতটা গভীর! নিউজ এজেন্সি ♦ একসময় আমরা খবর শুনতাম এখন দেখি স্বীকার করতে হবে খবর শোনার চেয়ে দেখার আনন্দ বেশি আলাদা উত্তেজনা নিউজ এজেন্সিগুলো এব্যাপারে তৎপর আর প্রতিযোগিতাপূর্ণ কোনটা নিউজ সেটা ওরাই ঠিক করে যেটা ওদের দরকার আর সেটাই আমাদের দেখানো হয় ধারাবাহিকভাবে সুচারু জ্যামিতিকতায় বিভিন্ন পদ মিশিয়ে খাওয়ানো হয় নতুন বাস্তবতা নির্মাণে যে বাস্তবতায় জায়গা নেই আমাদের ইতিহাস অন্বেষা স্বাধীনতার সমৃদ্ধি আর স্বাধীনতার কথা বলেই ওরা আমার ক্ষেতখামার পাহাড় আর নদীর দখল নিয়েছে তাহলে টিভিতে যে হাসিখুশি প্রাণবন্ত আমাদেরকে দেখানো হয় ওরা কারা এই প্রশ্ন করো নিজের কাছে আগুন নিয়ে খেলা ♦ আজও পুকুরে ছিপ ফেলে বসবো আমি ধীরে চুপ সূর্য আমার ঘাড়ে শ্বাস ফেলবে সারারাত ঘরের ভেতর ল্যাং...

বিদায়ের স্রোত ।। চয়ন মন্ডল

  বিদায়ের স্রোত চয়ন মন্ডল "বিজয়া দশমী—আনন্দের দিন, কারও কাছে যা হয়ে উঠল চিরন্তন বিদায়।" আজ বিজয়া দশমী। শিউলি ফুলের গন্ধে ভোরটা অন্যরকম। পাড়ার প্যান্ডেলে অদ্ভুত এক কোলাহল—মায়ের বিদায় যে আজ। শঙ্খধ্বনি, ঢাকের বাজনা আর উলুধ্বনিতে গমগম করছে চারদিক। একদিকে মা দুর্গার বিদায়ের বেদনা, অন্যদিকে আনন্দ ও মিলনমেলা। সারা বছরের অপেক্ষা শেষে এই দিনটিতে প্যান্ডেল ভরে উঠেছে মানুষের ভিড়ে। সকালের পূজার্চনা শেষ হতেই শুরু হয়েছে সিঁদুর খেলা। মহিলারা মায়ের প্রতিমাকে সিঁদুর পরিয়ে একে অপরের কপালে, গালে রাঙিয়ে দিচ্ছেন। ঢাকের তালে আর শাঁখ বাজনার আবেশে ভেসে যাচ্ছে পাড়া। শুরু হয়েছে প্রতিমা বিসর্জনের প্রস্তুতি। কিন্তু এসবের মধ্যে নেই অনুরাধা। কেউ তার বা মিনির খোঁজ রাখেনি। মুখার্জিদের দোতলা বাড়ির কোণের ঘরে বসে সে চোখের জল ফেলছে। সবার বাড়িতে আলোর রোশনাই, ভোগের গন্ধ, হাসি—শুধু তাদের ঘরটিতে নিস্তব্ধতা। গতবছর এই দিনেই তো অন্যরকম ছিল সবকিছু। অনুরাধা, সুজয় আর তাদের তিন বছরের মেয়ে মিনি পাড়ার প্যান্ডেলে ঢাকের তালে নেচেছিল, সিঁদুর খেলায় রঙে ভেসেছিল। বিকেলের দিকে প্রতিমা বিসর্জনের মিছিলে শামিল ...

কবিতা ।। অরণ্যকন্যা ।। অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়

  অরণ্যকন্যা অরিন্দম চট্টোপাধ্যায় অরণ্যকন্যার দৃষ্টির ভেতর বিষাদ বিন্দু ফোঁটা ফোঁটা জলের মতো গড়িয়ে যায়, হয়ে যায় কোন নদীপথ দৃষ্টি ভেঙে ভেঙে চলে যায় কোন এক শূন্য পথে অরণ্যকন্যার হৃদয়ের ভেতর ভাঙে যতো বৃক্ষপত্র নতুন পত্র পুষ্পের খোঁজ নেই ঠোঁট জুড়ে সমুদ্রকাঁপন বুদবুদের মতো অস্ফুট হয়ে উচ্চারিত হয় কোন অক্ষর শব্দ আর তাঁর শরীর থেকে ছড়িয়ে যায় হয়ে যায় একটা অদৃশ্য কবিতা...    ================== @ অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়,  বেহালা, কলকাতা -৭০০০৬০,  

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯১তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পাদকীয় দপ্তর থেকে এই সংখ্যায়  'শিক্ষা ও শিক্ষক' বিষয়ক বেশ কিছু লেখার পাশাপাশি রয়েছে বিচিত্র বিষয়ের আরও কিছু লেখা। সব মিলিয়ে সংখ্যাটি আপনাদের সমৃদ্ধ করবে, আপ্লুত করবে — এ বিষয়ে আমরা আশাবাদী। আপনাদের মতামত অবশ্যই জানাবেন। আমরা প্রতীক্ষিত।            আগামী অক্টোবর ২০২৫ সংখ্যা 'উৎসব সংখ্যা' হিসাবে প্রকাশিত হবে। ওয়েব সংখ্যার পাশাপাশি নির্বাচিত লেখাগুলি নিয়ে একটি pdf এবং তার মুদ্রিত সংস্করণও প্রকাশিত হবে। তাই অপ্রকাশিত ভালো লেখা পাঠান। বিশেষ কোনও বিষয় নেই। প্রবন্ধ-নিবন্ধ-ফিচার ২০০০ শব্দ, গল্প ১২০০ শব্দ, অণুগল্প ৫০০ শব্দ, কবিতা-ছড়া ২৪ লাইনের মধ্যে হলে ভালো। ইমেলঃ nabapravatblog@gmail.com           বিস্তারিত বিজ্ঞপ্তি আসবে। সামাজিক মাধ্যমে আমদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন। সময় মতো সব সংবাদ পেয়ে যাবেন।  শারদ উৎসবের দিনগুলি সকলের আনন্দে কাটুক এই কামনা করি। —নিরাশাহরণ নস্কর সম্পাদক: নবপ্রভাত মোঃ ৯৪৩৩৩৯৩৫৫৬ Whatsapp Group:  https://chat.whatsapp.com/ AIpj98JKbloFSpeqMcpr6j Facebook Page:  https://www.facebook.com/ share...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো,  তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) য...

শেষ বিকেলের আলো ।। সৈকত প্রসাদ রায়

  শেষ বিকেলের আলো সৈকত প্রসাদ রায় রানাঘাট শহরের প্রান্তে ছোট্ট এক পাড়া বিশ্বাসপাড়া। সেই পাড়ার পুরোনো ভাঙাচোরা বাড়িটায় থাকেন পুষ্পরাণী ভট্টাচার্য— বয়স পঁয়ষট্টির কোঠায়। সবাই তাকে "পুষ্পদি" বলেই চেনে। একসময় প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতা করতেন, এখন অবসর নিয়েছেন। প্রতিদিন বিকেলে পুষ্পদি বারান্দায় বসে চা খান। ছোট একটা টেবিল, কয়েকটা পুরোনো বই, আর একখানা নীল কাঁচের ফুলদানি — তার নিত্যসঙ্গী। বারান্দার সামনেই একটা গলি, যেখান দিয়ে প্রতিদিনই স্কুল ছুটির পরে বাচ্চারা হইচই করে ছুটে যায়। পুষ্পদির একমাত্র ছেলে অনিরুদ্ধ — কলকাতায় চাকরি করে। ছেলেটা আধুনিক, নিজের সংসার আছে, স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ব্যস্ত। বছরে হয়তো একবার আসে, তাও কিছুক্ষণ বসে আবার চলে যায়। পুষ্পদি মুখে কিছু বলেন না, কিন্তু বুকের ভেতরে একটা কষ্ট জমে থাকে। সেই বিকেলটা অন্যরকম ছিল। আকাশে ধুলো, গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা। হঠাৎ পুষ্পদির চোখে পড়ে — রাস্তায় এক কিশোর বসে আছে। বয়স বারো-তেরোর বেশি নয়। মলিন জামা, পায়ে ছেঁড়া চটি। ছেলেটা একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে পুষ্পদির বাড়ির গেটে ঝুলে থাকা পুরোনো নোটিশবোর্ডটার দিকে, যেখানে একসময় লেখা ছিল — "পুষ্পরাণী ভ...