Skip to main content

প্রবন্ধ ।। মসুয়ার রায় পরিবার এবং বঙ্গসংস্কৃতি ।। অনিন্দ্য পাল

 

মসুয়ার রায় পরিবার এবং বঙ্গসংস্কৃতি 

 অনিন্দ্য পাল


বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে যখন বাংলা শিশুসাহিত্য প্রায় কোনঠাসা, যখন শিশুদের সমস্ত মনোযোগ বৈদ্যুতিন বিনোদনের গ্রাসে, যখন ইঁদুর দৌড়ের ট্র্যাকে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত স্বার্থমগ্ন ছোটাছুটি, তখনই সবার অলক্ষ্যে আমরা এমন একজন মানুষের কথা ভুলে যেতে বসেছি যিনি সমস্ত জীবন শিশুদের জন্যই নির্মল হাস্যরস রচনা করে গেছেন। তবে শুধু সেই মানুষটাই নয়, তাঁর পরিবারের পরবর্তী প্রজন্মও একইভাবে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ছোটদের জন্য অসংখ্য মণিমুক্তো সৃষ্টি করে গেছেন। বংশ পরম্পরায় এভাবে শিশু-কিশোরদের নিয়ে সৃষ্টিশীলতার প্রবাহ বাংলায় কেন সমস্ত পৃথিবীতেই বিরলতম। 
      অবিভক্ত বাংলার ময়মনসিংহ জেলার 'মসুয়া' গ্রামে লোকনাথ রায়ের পুত্র কালীনাথ রায়ের পাঁচ ছেলের দ্বিতীয় কামদারঞ্জন জন্মগ্রহণ করেন ১৮৬৩ সালের ১২ইমে। তাঁর পিতা কালীনাথকে লোকে চিনত 'মুনশি শ্যামসুন্দর' নামে। কালীনাথ আবার সংস্কৃত, আরবি আর ফরাসি ভাষায় পণ্ডিত ছিলেন। কামদারঞ্জনকে দূরসম্পর্কের কাকা হরিকিশোর রায়চৌধুরী দত্তক নেন এবং নতুন নাম দেন উপেন্দ্রকিশোর। 'মসুয়া'-র জমিদার হরিকিশোর আর তাঁর স্ত্রী রাজলক্ষ্মীর এই দত্তক পুত্রই পরবর্তী কালে রায় বংশের স্বর্ণযুগ নিয়ে আসেন। 
   ময়মনসিংহ থেকে এন্ট্রান্স পাশ করে ১৮৭৯ সালে মাত্র ষোল বছর বয়সে কলকাতায় পড়তে আসেন উপেন্দ্রকিশোর। প্রথমে প্রেসিডেন্সি কলেজে এফ. এ তে ভর্তি হলেও পরে মেট্রোপলিটন থেকে এফ. এ পাশ করেন এবং তারপর বি.এ পাশ করেন। কলকাতায় এসে উপেন্দ্রকিশোর প্রথমে ৮ নং রতু সরকার লেনে এবং তারপরে ৫০ নং সীতারাম ঘোষ স্ট্রিটের ব্রাহ্ম মেসে থাকেন। এই ব্রাহ্ম মেসে থাকাকালীনই তাঁর সঙ্গে ব্রাহ্ম নেতা দ্বারকানাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের পরিচয় হয়। সম্ভবত এই মেসে থাকাকালীন এবং দ্বারকানাথের প্রভাবেই তিনি ব্রাহ্মধর্ম গ্রহণ করেন। এই সূত্রে মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, শিবনাথ শাস্ত্রী এবং অবশ্যই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে তাঁর পরিচিতি হয়। রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে ছিল তাঁর প্রগাঢ় বন্ধুত্ব। আবার যার সান্নিধ্যে তিনি ব্রাহ্ম হন, সেই দ্বারকানাথের স্ত্রী ছিলেন ভারতের প্রথম মহিলা ডাক্তার, মহিলা গ্রাজুয়েট কাদম্বিনী গাঙ্গুলী। ১৮৮৫ সালের ১৫ই জুন দ্বারকানাথের প্রথম পক্ষের ( দ্বারকানাথের প্রথম স্ত্রী ভবসুন্দরী মারা গেলে কাদম্বিনী দেবীর সঙ্গে বিবাহ করেন) কন্যা বিধুমুখী দেবীর সঙ্গে বিবাহ হয় উপেন্দ্রকিশোরের। 
   ব্রাহ্মধর্ম গ্রহণের জন্য উপেন্দ্রকিশোরকে পালকপিতা হরিকিশোর তাঁর সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করেন, কিন্তু হরিকিশোরের স্ত্রী রাজলক্ষীদেবীর বিরোধিতায় উপেন্দ্রকিশোর আবার তাঁর অধিকার ফিরে পান। উপেন্দ্রকিশোরের মাত্র কুড়ি বছর বয়সে মারা যান হরিকিশোর। গ্রামের আত্মীয় স্বজন, হিন্দুপন্থী এবং ব্রাহ্মণ পণ্ডিতদের প্রচন্ড প্রতিবাদ উপেক্ষা করেই উপেক্ষা করেই উপেন্দ্রকিশোর পিতার শ্রাদ্ধ করেন এবং অবশ্যই ব্রাহ্মমতে। 
    উপেন্দ্রকিশোর এক বহুমুখী প্রতিভার আকর ছিলেন। তাঁর সমস্ত জীবনের সৃষ্টিশীলতা বাংলা এবং বাংলাভাষাকে শুধু সমৃদ্ধশালী করেনি, নতুন পথের সন্ধানও দিয়েছে, যে পথে পরবর্তীকালে তাঁর পুত্র সুকুমার রায় এবং পৌত্র সত্যজিৎ রায় অনায়াসে হেঁটেছেন। উপেন্দ্রকিশোর সৃষ্ট ফল্গুধারাকেই পরবর্তী দু'ই প্রজন্ম প্রবাহমান করেছে। 
    কলকাতায় পড়তে এসে উপেন্দ্রকিশোরের সঙ্গে আরও একজন মহান মানুষের পরিচয় হয়, তিনি প্রমদাচরণ সেন। প্রমদাচরণের পত্রিকা 'সখা'র দ্বিতীয় সংখ্যায় (১৮৮৩ সালে) প্রকাশিত হয়, উপেন্দ্রকিশোরের প্রথম প্রকাশিত রচনা, একটি নিবন্ধ 'মাছি', উপেন্দ্রকিশোরের বয়স তখন কুড়ি বছর। এই প্রমদাচরণের কাছ থেকে উপেন্দ্রকিশোর যেমন লেখার উৎসাহ পেয়েছেন তেমনি সম্পাদনার কাজও শিখেছেন। তাই প্রমদাচরণকে উপেন্দ্রকিশোরের 'শিক্ষাগুরু' বললে তেমন অত্যুক্তি হয় না। 
    'সখা', 'মুকুল', প্রভৃতি পত্রিকায় উপেন্দ্রকিশোরের বহু গল্প, প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছিল। ছোটদের জন্য লেখা এই সমস্ত গল্পে, প্রবন্ধে একদিকে যেমন হাস্যরস অন্যদিকে তেমনি থাকত নৈতিকতার শিক্ষা। কোন গুরুগম্ভীর জ্ঞানগর্ভ বিষয়ের কচকচানি ছাড়াই সুন্দর সরস প্রবাহে শিক্ষা দেবার প্রচেষ্টা ছিল। শুধু তাই নয়, বিজ্ঞান রচনাতেও তিনি পিছিয়ে ছিলেন না। কচিকাঁচাদের জন্য' সেকালের কথা' বইতে প্রাগৈতিহাসিক প্রাণীজগৎ সম্পর্কে যেভাবে লিখেছিলেন, বাংলাভাষায় তা খুব সম্ভবত প্রথম। 
     দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদারের 'ঠাকুরমার ঝুলি' বাংলা শিশু সাহিত্যের প্রথম মাইলফলক হলেও তার তিনবছর পর প্রকাশিত উপেন্দ্রকিশোরের 'টুনটুনির বই' কোন অংশে পিছিয়ে ছিল না। স্বাতন্ত্রে অনেক আলাদা এই বইতে লেখা শিশুতোষ গল্পে তিনি যে প্রতিবাদ, দূর্বলের উপর সবলের অত্যাচার রাজা আর টুনটুনির দ্বন্দ্বের ছলে দেখিয়েছেন তা এখনও দূর্লভ। এই গল্পগুলোর প্রতীকী মর্মার্থ শৈশবে বইটি পড়ার সময় না বুঝলেও পরিণত বয়সে সমস্ত জীবন ধরে ক্ষুদ্র আর বৃহতের, খাদ্য আর খাদকের সম্পর্ক বুঝিয়ে চলে। 
   উপেন্দ্রকিশোরের আর এক অমর সৃষ্টি তাঁর সম্পাদিত 'সন্দেশ' পত্রিকা। ২২ নং সুকিয়া স্ট্রিটের বাড়িতে থাকার সময় প্রথম 'সন্দেশ' প্রকাশিত হয়, ১৩২০ সালের ১লা বৈশাখ। তারিখটি গুরুত্বপূর্ণ, এর থেকে বুঝতে অসুবিধা হয় না, মানুষটি শুধু বাংলাভাষায় লেখেনইনি, তিনি মনেও আদ্যোপান্ত বাঙালি ছিলেন। কে লেখেননি এই 'সন্দেশ'-এ? রায়চৌধুরী পরিবার, যোগীন্দ্রনাথ সরকার, প্রমথ চৌধুরী, কালিদাস রায়, সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত, প্রসন্নময়ী দেবী, সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর ' সন্দেশ' কে সমৃদ্ধ করেছেন। রবীন্দ্রনাথও লিখেছেন তবে সুকুমার রায়ের সম্পাদনায়। বাংলা শিশু সাহিত্যের দৈন্য এক লহমায় ঘুচিয়ে দিয়েছিল 'সন্দেশ'। 
     উপেন্দ্রকিশোর সত্যিই বহুমুখী প্রতিভাধর ছিলেন। শুধু সাহিত্যে নয়, চিত্রকলা, আলোকচিত্র, বিজ্ঞানে যেমন আগ্রহ আর ভালবাসা ছিল, তেমনিই তিনি ভাল বেহালা, অর্গান আর হারমোনিয়াম ও বাজাতেন। টুনটুনির বই, ছেলেদের রামায়ণ, মহাভারতের গল্পের জন্য ছবি এঁকেছেন। বিলিতি পদ্ধতির অনুকরণে তেলরঙ, জলরঙ ব্যবহার করেছেন। আবার মুদ্রণ শিল্পে হাফটোন-ব্লকের গবেষণায়, ব্যবহারে তাঁর অবদান কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। রবীন্দ্রনাথ বলেছেন 'তিনিই বাঙালির মধ্যে প্রথম নিজ চেষ্টায় হাফটোন শিক্ষা করেন এবং অল্পকালের মধ্যেই তাহার সংস্কার সাধনে কৃতকার্য হন।' উপেন্দ্রকিশোর দক্ষতার সঙ্গে হাফটোন শিল্পের ব্যবহার করেন তাঁর কোম্পানি 'ইউ রায় আর্টিস্ট ' (১৮৯৫ সালে, শিবনারায়ণ দাস লেনে) প্রতিষ্ঠা করে, ১৯১০ সালে এই কোম্পানির নাম দেন ইউ. রায় এন্ড সন্স। ছাপার ক্ষেত্রে তাঁর ' মাল্টিপল ডায়াফ্রাম' নামের হাফটোন পদ্ধতি তখন ছাপার গুনগত মান অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছিল। উপেন্দ্রকিশোর এই হাফটোন বিষয়ে উইলিয়ম গ্যামবলের 'প্রসেস ইয়ার বুক: পেনরোজ পিক্টোরিয়াল অ্যানুয়াল'- এ ন'টি প্রবন্ধ লিখেছিলেন। 'সখা'তেও 'মুদ্রাযন্ত্র' নামে একটি প্রবন্ধ লেখেন। তিনি সঙ্গীত আর বাদ্যযন্ত্রের প্রতিও যে গভীর ভাবে অনুরক্ত ছিলেন তা বোঝা যায় তাঁর 'শিক্ষক ব্যতিরেকে হারমোনিয়াম শিক্ষা' বইটি থেকে। তিনি বেশ কিছু ব্রাহ্মসঙ্গীতও রচনা করেছিলেন যার মধ্যে ' জাগো পুরবাসি, ভগবত প্রেম 'পিয়াসি' একটি জনপ্রিয় গান। 
      ১৯১৪ সালে উপেন্দ্রকিশোর সপরিবারে সুকিয়া স্ট্রিটের বাড়ি থেকে উঠে আসেন ১০০ নং গড়পার রোডের বাড়িতে। এখানেই মাত্র বাহান্ন বছর বয়সে মধুমেহ রোগে মারা যান এই পরম প্রতিভাধর মানুষটি। ১৩ নং কর্ণওয়ালিস স্ট্রিটের বাড়িতে (দ্বারকানাথ গাঙ্গুলীর বাড়ি, তখন বাড়িটাকে সবাই চিনত 'লাহা বাবুদের বাড়ি' নামে) উপেন্দ্রকিশোরের পাঁচ সন্তান জন্মগ্রহণ করেছিলেন। হাসি (সুখলতা), তাতা (সুকুমার), খুশি (পুণ্যলতা), মণি (সুবিনয়) আর টুনি (শান্তিলতা) কিন্তু সবার ছোট নানকু (সুবিমল) জন্মান ১৮/১ শিবনারায়ণ লেনে। বাবার রসবোধ, বহুমুখী প্রতিভার এক অদ্ভুত প্রবাহ দেখা যায় ছয় সন্তানেরই মধ্যে, কিন্তু ১৮৮৭ সালের ৩০শে অক্টোবর জন্মানো তাতা, আমাদের সুকুমার রায় হাজার তারার মধ্যেও পূর্ণিমা চাঁদ। ছোটবেলা থেকেই দুষ্টুমি, কল্পনাশক্তি, ছবি আঁকা সবকিছুতেই সবাইকে টেক্কা দিতেন। মাত্র ন'বছর বয়সেই তাঁর অনুদিত ইংরেজি ছড়ার বাংলা অনুবাদ 'টিকটিকটক' প্রকাশিত হয় শিবনাথ শাস্ত্রীর 'মুকুল' পত্রিকায় (১৮৯৬), ঐ ন'বছর বয়সেই প্রথম প্রকাশিত স্বরচিত কবিতা 'নদী' মুকুলে স্থান পায়। সিটি স্কুলে পড়ার সময় লিখে ফেলেছেন নাটক। ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে লেখা 'রামধন বধ'ই প্রথম নাটক। ১৯০৬ সালে 'কানা খোঁড়া সংবাদ '( কবিতা), সূর্য্যের রাজ্য (গদ্য) এবং পরপর 'প্রবাসী'তে ভারতীয় চিত্রশিল্প সম্পর্কে প্রবন্ধ লেখেন। 
      বাবা উপেন্দ্রকিশোরের মত বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী সুকুমার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে পদার্থবিদ্যা ও রসায়নে ডাবল অনার্স নিয়ে পাশ করে ১৯১১ সালে গুরুপ্রসন্ন বৃত্তি নিয়ে ইংলন্ডে যান। সেখানে প্রথমে লন্ডন কাউন্টি কাউন্সিল অব ফোটো অনগ্রেভিং অ্যান্ড লিথোগ্রাফি বা এল. সি. সি (বর্তমানে নাম লন্ডন কলেজ অব কমিউনিকেশন) তারপর ম্যানচেস্টার স্কুল অব টেকনোলজিতে দু'বছর মুদ্রণবিদ্যার পড়াশুনা আর হাতে কলমে বিলিতি ছাপার কৌশল শেখার প্রয়াস তাঁকে অনেক অভিজ্ঞ করে তুলেছিল। সেখানেই পেনরোজ অ্যানুয়ালে লেখেন 'হাফটোন ফ্যাক্টস সামারাইজড' (১৯১২) 'স্ট্যান্ডার্ডাইজিং দ্য ওরিজিনাল ' (১৯১৩) দু'টি গবেষণাপত্র। ১৯১৩তে দেশে ফিরে সুপ্রভাদেবীর সঙ্গে বিয়ে। উপেন্দ্রকিশোর-সুকুমার যোগ্য সাহচর্যে, সহযোগিতায় ১০০ নং গড়পার রোডের ইউ. রায় এন্ড সন্স নুতনভাবে সেজে উঠেছিল, কিন্তু ভাগ্যের পরিহাসে বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে প্রয়োজনীয় ওষুধের অভাবে চলে গেলেন উপেন্দ্রকিশোর। সুকুমারের তখন কুড়ি হয়েছে কি হয়নি, তবু সব দায়-দায়িত্ব তুলে নিলেন নিজের কাঁধে। 'সন্দেশ'-এর সম্পাদনা থেকে শুরু করে মুদ্রণ ব্যবসা এবং তাঁর নিজস্ব ভঙ্গিমায় সাহিত্যচর্চা সবই সু-সম্পাদন করে চললেন। 
  রায় পরিবারের উর্বর মাটিতে শুধু প্রতিভাধরদের জন্মই হয়েছে তা নয়, অনেক সম-সাময়িক প্রতিভাধরদের সঙ্গে মিলন-মিশ্রণও হয়েছিল। পণ্ডিত শিবনাথ শাস্ত্রী, নবদ্বীপ চন্দ্র দাস, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, জগদীশচন্দ্র, প্রফুল্লচন্দ্র এই পরিবারের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। তাদের প্রভাব এবং সংস্কার রায় পরিবারকে সবদিক থেকে সম্পন্ন করেছিল। অতুলপ্রসাদ সেন, অজিত কুমার চক্রবর্তী, অমলচন্দ্র হোম, সুনীতি কুমার চট্টোপাধ্যায়, কিরণ সংকর রায়, প্রশান্তচন্দ্র মহলানবিশের মত মানুষের সান্নিধ্যে এসেছিলেন সুকুমার, কিন্তু এঁদের প্রভাব তাঁর স্বকীয়তাকে নষ্ট করতে পারেনি। ১৯৭০ সালের "ননসেন্স ক্লাব" আর তার মুখপত্র 'সাড়ে বত্রিশ ভাজা'র সঙ্গে সুকুমার-এর সম্মিলন পরবর্তীকালে তাঁর 'ননসেন্স রাইমস'-এর অনবদ্য সৃষ্টির মধ্যে দিয়ে পরিপূর্ণতা পেয়েছিল। উদ্ভটরস, নির্মল হাস্যরসের ভান্ড থেকে একে একে বেরিয়ে আসছে কাতুকুতু বুড়ো, কুমড়ো-পটাশ, হুঁকোমুখো হ্যাংলা, রামগরুড়ের ছানা, গেছোদাদা, কাকেশ্বর কুচকুচে, হিজবিজবিজ, পাগলা দাশু, গোমড়া থোরিয়াম-এর দল। একদিকে যেমন ছড়া, গল্প, নাটক-এ হাস্যরসের প্রবাহ, তেমনি অন্যদিকে জীবনের বিভিন্ন দ্বন্দ্ব ঝড়-ঝাপটাকেও অদ্ভুত সব দৃষ্টিভঙ্গিতে তুলে ধরেছেন সুকুমার। 
     বাংলা সাহিত্যের, বিশেষ করে, শিশু সাহিত্যে উপেন্দ্রকিশোরের হাত ধরে যে রেনেসাঁ এসেছিল, সুকুমার রায় তাকে অমরত্ব দানের পথে এগিয়ে নিয়ে গেছিলেন। তাঁর যোগ্যপুত্র সত্যজিতের লেখায় নিছক কলাকৌশলে সুকুমার উপেন্দ্রকিশোর সমকক্ষ ছিলেন না, কিন্তু এই কৌশলের অভাব তিনি পূরণ করেছিলেন দু'টি দুর্লভ গুনের সাহায্যে। এক হল তাঁর অসাধারণ পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা, আরেক হল তাঁর অফুরন্ত কল্পনাশক্তি। এই দুইয়ের সমন্বয়ে তাঁর ছবির বিষয় বস্তু টেকনিককে অতিক্রম করে চোখের সামনে জলজ্যান্ত রূপ ধারণ করে।' তিনি তথাকথিত বিদ্বান, নাক উঁচু গম্ভীর মানুষের দলকে ব্যাঙ্গাত্মক হাস্যরসের অস্ত্রে আক্রমণ করেছেন। এই সমস্ত 'রামগরুড়ের ছানারা নিজেরাও হাসে না বা অন্যদেরকেও হাসতে বাধা দেন। বিদ্যেবোঝাই বাবুমশাই যারা 'ফুটোস্কোপ' দিয়ে বিজ্ঞানশিক্ষা দেন, যারা চরম তৃষ্ণায় বিহ্বল মানুষকে জলের পরিবর্তে জল সম্পর্কে জ্ঞান ঢেলে দিয়ে থাকেন, তারাই সুকুমারের সরস ব্যাঙ্গের লক্ষ্য। তাঁর কিম্ভুতের রূপকল্পে তো আমরা সবাই লুকিয়ে আছি। 'বাবুরাম সাপুড়ে'তে তিনি আমাদের গভীরে লুকানো সত্যটাকেই ছড়ায় বেঁধেছেন। আমরা তো চাই অন্যের উপর খবরদারি করতে, আর তার জন্য যদি ফোঁস-ফাঁসহীন ঢুঁশ-ঢাঁশহীন, দুধ-ভাতে নির্বিবাদী কাউকে পাওয়া যায়, তবে তো সোনায় সোহাগা, তাদেরকে ডান্ডা মেরে ঠান্ডা করতে আমাদের কোনও কাঠখড় পোড়াতে হয় না। বাংলা সাহিত্যে সুকুমারের অন্যতম অবদান তাঁর বেশকিছু শব্দ, যা একান্তই তাঁর নিজের সৃষ্টি, যেমন বকচ্ছপ, হাঁসজারু, ট্যাঁশগরু, হাতিমি, ফুটোস্কোপ। তাঁর 'আবোল-তাবোল', হ-য-ব-র-ল' বাংলা শিশু সাহিত্যিক যে উদ্ভট, চমকপ্রদ আপাত অর্থহীন হাস্যরস দিয়ে গেছে, তার তুলনা এখনও পাওয়া গেলনা। 'শব্দকল্পদ্রুম'-- এ 'গুরুজি' চরিত্রের মুখের সংলাপে শোনা যায় 'শব্দকে যে অর্থ দিয়ে ভোলায় সে অর্থপিশাচ।' 
       সবচেয়ে দুঃখের বিষয় হল, এই রত্ন-অলংকৃত লেখাগুলো বইয়ের আকারে দেখে যেতে পারেননি সুকুমার। মসুয়ার জমিদারি দেখতে গিয়ে ১৯২১ সালে ২রা মে পুত্র সত্যজিতের জন্মের কিছুদিন পরেই কালাজ্বরে আক্রান্ত হন, প্রায় আড়াই বছর রোগে ভোগার পর ১৯২৩ সালের ১০ সেপ্টেম্বর গড়পার রোডের পৈতৃক বাড়িতে তাঁর মৃত্যু হয়। মাত্র ছত্রিশ বছর বয়সে 'ননসেন্স লিটারেচারের জনক চলে যান, হয়ত বা আবোল-তাবোল এর দেশে। তাঁর মৃত্যুর ন'দিন পর প্রকাশিত হয় তাঁর প্রথম বই 'আবোল-তাবোল'। 
     গতানুগতিক শিক্ষাব্যবস্থার উপর এক তীব্র বিতৃষ্ণা ছিল সুকুমারের। 'হ-জ-ব-র-ল' এর আটবছর তিনমাস বয়স্ক নামহীন বালকের মুখদিয়ে যেমন এই বিতৃষ্ণা প্রকাশ পেয়েছে তেমনি প্রকট হয়েছে পাগলা দাশুর চরিত্রচিত্রণে। ভাষার অত্যাচারে তিনি নিজেই বলেছেন 'ভাষা যে নিজের অর্থ গৌরবেই সত্য, একথা ভুলিয়া সে যখন কেবলমাত্র শব্দ গৌরবে বড় হইতে চায়, তাহার অত্যাচার অনিবার্য।' 
       সুকুমার রায়ের মৃত্যুর প্রায় ১৭ বছর পর তাঁর প্রথম গল্প সংকলন 'পাগলা দাশু ' প্রকাশ করেন প্রকাশক এম.সি.সরকার। সেই সংকলনের ভূমিকায় রবীন্দ্রনাথ লেখেন 'সুকুমারের লেখনী থেকে যে অবিমিশ্র হাস্যরসের উৎসধারা বাংলা সাহিত্যকে অভিষিক্ত করেছে তা অতুলনীয়। তাঁর সুনিপুণ ছন্দের বিচিত্র ও স্বচ্ছন্দ গতি, তাঁর ভাব-সমাবেশের অভাবনীয় অসংলগ্নতা পদে পদে চমৎকৃতি আনে।' সুকুমারের আগে বা পরে বাংলা শিশুসাহিত্যে তাঁর পরিপূরক নেই, এ কথা স্বয়ং রবীন্দ্রনাথও স্বীকার করেছিলেন। কোন ব্যকরণ না মানা এই সরস্বতীর বরপুত্র 'দস্যি ছেলে ' সুকুমার চিরকাল আমাদের মনে অক্ষয় অনবদ্য হয়ে থাকবেন। 
     তবুও সুকুমারের অকাল প্রয়াণ ১০০ নং গড়পার রোডের বিখ্যাত রায়বাড়ির কাঠামো ভেঙে দিল। তাঁর মৃত্যুর পর রায় পরিবার ঐ বাড়ি ছেড়ে দেন এবং 'হাফটোন ব্লক' ছবির জন্য ভারত বিখ্যাত 'ইউ রয় এন্ড সন্স ' কোম্পানিও বন্ধ হয়ে যায়। মাত্র ছয় বছরের সত্যজিৎ মা সুপ্রভা রায়ের সঙ্গে চলে আসেন বকুলবাগানে মামার বাড়িতে। সত্যজিতের উপর রায়বাড়ির সংস্কৃতির প্রভাব খুব একটা না পড়লেও উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত মেধা এবং বহুমুখী প্রতিভার কোন কমতি ছিল না। আট বছরের সত্যজিৎ তার প্রমাণ দেন - 'জান তোমায় বলছি শোন/ হব যখন তোমার মতো বড়ো। / লিখবো লেখা ঝুড়ি ঝুড়ি,/ পাঠিয়ে দেব তোমার বাড়ি/ তুমি তোমার সন্দেশেতে/ লেখাগুলি সাজাবে বসে/ এই আনন্দে দিচ্ছি গড়াগড়ি।' তবে সত্যজিৎ, ঠাকুর্দা উপেন্দ্রকিশোর বা বাবা সুকুমারের মতো সাহিত্য বিশেষ করে বাংলা সাহিত্যের নৌকায় প্রথমেই জাঁকিয়ে বসেননি। টালমাটাল একটা পরিস্থিতি প্রথমে সত্যজিৎকে বাঁধের জলের মত আটকে দিলেও তা স্থায়ী হয়নি। 
      সত্যজিৎ প্রেসিডেন্সিতে প্রথমে বিজ্ঞান নিয়ে ভর্তি হলেও পরে ইকোনমিক্স নিয়ে আঠারো বছর বয়সে (১৯৩৯ সালে) স্নাতক হন। এরপর ১৯৪০ সালে শান্তিনিকেতনে আঁকা শিখতে যান। ১৯৪১ সালে কুড়ি বছর বয়সে কলাভবনে নন্দলাল বসুর কাছে আঁকা শিখতে শিখতেই লেখেন জীবনের প্রথম গল্প 'অ্যাবস্ট্রাকশন'। গল্পটি কিন্তু বাংলায় নয়, ইংরাজিতে লিখেছিলেন। গল্পটির প্লট তাঁর মাথায় এসেছিল ল্যাটিন আমেরিকার এক চিত্র প্রদর্শনীর ঘটনা থেকে। সেই প্রদর্শনীতে উল্টো করে টাঙানো ছবিটিই সবচেয়ে বেশি আলোচিত হয়েছিল। সত্যজিতের গল্পেও 'দ্য সমন্যাম বুলিস্ট ' নামের ছবিটি সেরা হয়, যেটা আসলে ছবিতে ব্যবহারের আগের রংয়ের মিশেল ঠিক করার জন্য ব্যবহৃত কাগজ। অর্থাৎ দু'টি বিষয় স্পষ্ট হয়, এক সত্যজিৎ প্রথম দিকে বাংলার চেয়ে ইংরেজিতেই বেশি স্বচ্ছন্দ ছিলেন, আর দু'ই উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সহজাত মেধা চাপা পড়ে থাকলেও বেরিয়ে এল। পরের বছর (১৯৪২ সালে) প্রকাশিত হয় তাঁর দ্বিতীয় গল্প 'শেডস অফ গ্রে'। দু'টি গল্পই প্রকাশিত হয় অমৃতবাজার পত্রিকায়। এর পরবর্তী কুড়ি বছর গল্প লেখক সত্যজিৎকে আর পাওয়া যায়না। 
    ১৯৪৩ সালে সত্যজিৎ কলকাতার বিখ্যাত বিদেশি বিজ্ঞাপন কোম্পানি ডি জে কিমারের চাকরিতে যোগ দেন, এবং ঐ বছরই ঐ কোম্পানির সহকারী ম্যানেজার দিলীপ কুমার গুপ্তর 'সিগনেট প্রেস'-এ সত্যজিৎ প্রচ্ছদ, ছবি আঁকার দায়িত্ব নেন। প্রসঙ্গত, এই 'সিগনেট প্রেস' বাংলা সাহিত্যে প্রকাশনা শিল্পের জগৎটাকেই পাল্টে দিয়েছিল। 
      ছোটবেলা থেকেই সত্যজিৎ সিনেমা সম্পর্কে বেশ আগ্রহী ছিলেন। তাঁর এই আগ্রহ নেশায় পরিণত হয়, শান্তিনিকেতনের লাইব্রেরীতে পল রোথার এর 'ফিল্ম টিল নাউ' এবং রেমন্ড স্পটিশ উডের 'গ্রামার অফ দ্য ফিল্ম ' বই দুটি হাতে আসার পর, সিগনেট থেকে 'পথের পাঁচালী ' প্রকাশের জন্য ডি. কে গুপ্ত সত্যজিৎকে বইটির মলাটের প্রচ্ছদ ও ডিজাইন আঁকতে দেন। তখনি 'পথের পাঁচালী ' পড়ে ফেলেন সত্যজিৎ, এবং তাঁর মনে এর গল্প এমন ভাবে দাগ কাটে যার ফলশ্রুতি ১৯৫২তে পথের পাঁচালীর চিত্রনাট্য। 
         সত্যজিৎ যে ষোল বছর ডি জে কিমারে চাকরি করেন, সেই সময়টা শুধু তিনি চাকরিই করেননি, উদ্ভাবনের কাজও করে গেছেন। বাংলা, ইংরাজিতে টাইপোগ্রাফি মানে বিভিন্ন ডিজাইনের বর্ণমালা তৈরী করেছেন। 'রে রোমান, রে বিজারে, ড্যাফিন্স এবং হলিডে স্ক্রিপ্ট ' তাঁর তৈরী অক্ষর ডিজাইন। এদের মধ্যে 'রে রোমান', 'রে বিজারে' আন্তর্জাতিক স্তরে স্বীকৃতি আদায় করে নিয়েছে। ক্যালিগ্রাফি, টাইপোগ্রাফিকে যে উচ্চতায় তিনি নিয়ে গেছিলেন, বাংলা প্রকাশনার জগৎ তার জন্য চিরকাল সত্যজিতের কাছে ঋণী থাকবে। 
   ১৯৪৭ সালে তিন বন্ধু সত্যজিৎ বংশী চন্দ্রগুপ্ত চিদানন্দ দাশগুপ্ত মিলে তৈরি করেন কলকাতার প্রথম ফিল্ম সোসাইটি। আবার ১৯৪৮ সাল থেকেই সত্যজিৎ বিভিন্ন ইংরেজি ও বাংলা পত্রপত্রিকায় সিনেমা সংক্রান্ত প্রবন্ধ লিখতে থাকেন। পরে ১৯৭৬ সালে 'আওয়ার ফিল্মস- দেয়ার ফিল্মস' নামে একটি বই প্রকাশ করেন যাতে তার ১৯৪৮ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত লেখা প্রায় সব আর্টিকেল গুলি ছিল। 
       এরমধ্যে সত্যজিতের জীবনে ঘটে যায় দুটি অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য ঘটনা। ১৯৪৯ এ কলকাতায় আগত ফরাসি চিত্রপরিচালক 'জাঁ রেনোয়ার' সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ, কথোপকথন আর ১৯৪৮ এ পিসতুতো বোন বিজয়া দাসের সঙ্গে বিবাহ। 
         সত্যজিতের লেখা চলচ্চিত্র বিষয়ক প্রথম প্রবন্ধ 'হোয়াট ইজ রং উইথ ইন্ডিয়ান ফিল্মস' (স্টেটসম্যান) থেকে বোঝা যায় প্রথম থেকেই সিনেমা সম্পর্কে তাঁর গভীর চিন্তা ও পরিকল্পনা ছিল, যার নিদর্শন তার পরিচালিত প্রথম সিনেমা "পথের পাঁচালী"। ১৯৫০ সালে লন্ডন থেকে ফিরে সম্পূর্ণ অনামী কয়েকজন কুশীলবকে নিয়ে এই ছবি করার জন্য যে দুঃসাহসিক প্রচেষ্টা শুরু করেন, তার ফল পেতে লেগে গেল বেশ কয়েকটা বছর। কলকাতায় "পথের পাঁচালী" রিলিজ করে ১৯৫৫ সালের ২৬ শে আগস্ট। নিজের জমানো টাকা, স্ত্রীর গহনা এবং সবশেষে বিধান রায়ের সরকারের অর্থানুকূল্যে বানানো পথের পাঁচালী এখনো দেশে বিদেশে বাংলা সিনেমা তথা ভারতীয় সিনেমাকে গর্বিত করে। ছবিটি ১৯৫৫ তে রাষ্ট্রপতির স্বর্ণ ও রুপো পদক থেকে শুরু করে "বেস্ট হিউম্যান ডকুমেন্ট" পুরস্কার এবং পরপর ১৯৬৬ পর্যন্ত বিভিন্ন সম্মানে ভূষিত হয়। এরপর প্রায় টানা ৪০ বছর সত্যজিৎ চলচ্চিত্র জগতে নক্ষত্রের মতো উজ্জ্বল। "পথের পাঁচালী" থেকে শুরু করে ১৯৯১ সালের শেষ ছবি "আগন্তুক" পর্যন্ত পূর্ণদৈর্ঘ্য ও তথ্যচিত্র মিলিয়ে প্রায় ৩৩ টি ছবি করেন। তার সেরা ছবিগুলোর মধ্যে অন্যতম "চারুলতা" (১৯৬৪), "জয় বাবা ফেলুনাথ" (১৯৭৮), "অরণ্যের দিনরাত্রি"( ১৯৬৯), এবং অবশ্যই "কাঞ্চনজঙ্ঘা" (১৯৬১)। "কাঞ্চনজঙ্ঘা' ছিল সত্যজিৎয়ের প্রথম মৌলিক চিত্রনাট্য এবং প্রথম রঙিন ছবি। আন্তর্জাতিক স্তরে তাঁর পরিচালিত সিনেমা সব সময়ই উচ্চ প্রশংসিত হয়েছে, যার স্বীকৃতি স্বরূপ ১৯৯২ তে অস্কার পুরস্কার। তবে সত্যজিৎ শুধু চলচ্চিত্র পরিচালনায় নয়, বাইশটি ছবির সংগীত পরিচালনা এবং বেশ কিছু ছবির সংগীত রচনাও করেছেন। পশ্চিমের সুর এবং দেশজ সুর এর এক সুন্দর মিশ্রণ তৈরি করেছিলেন সত্যজিৎ। 
        বেশ কিছু ক্ষেত্রে সত্যজিতের দৃঢ়তা এবং নির্ভীক মানসিকতা তাকে এক অনন্য সম্মান এনে দিয়েছিল। যেমন সম্পূর্ণ নতুন মুখ নিয়ে চলচ্চিত্র তৈরী, কবি হতে চাওয়া এবং "এক্ষণ" নামে একটি পত্রিকার সম্পাদক সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় কে ফেলুদার চরিত্রে অভিনয় করানো। সৌমিত্র সত্যজিতের প্রায় চোদ্দটি সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন অথচ তিনি কখনো স্বপ্নেও ভাবেননি অভিনয় করবেন। এখানেই সত্যজিতের কৃতিত্ব। সঠিক রত্ন খুঁজে নেবার চোখ ছিল তাঁর। 
           শুধু চলচ্চিত্র নয় সাহিত্যেও সত্যজিৎ ধ্রুবতারার মতো উজ্জ্বল। ঠাকুরদা উপেন্দ্রকিশোরের "সন্দেশ", সুকুমারের মৃত্যুর পর কিছুদিন কাকা সুবিনয় রায়ের সম্পাদনায় প্রকাশিত হলেও তারপর বন্ধ হয়ে যায়। বন্ধ হবার প্রায় ৩০ বছর পর ১৯৬১ সালে বন্ধু কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায় কে নিয়ে সত্যজিৎ আবার সন্দেশ চালু করেন যা এখনো তার পুত্র সন্দীপ রায়ের তত্ত্বাবধানে প্রকাশিত হচ্ছে। এই সন্দেশের নবজীবনের ষষ্ঠ সংখ্যায় সত্যজিৎ "প্রফেসর শঙ্কু" চরিত্রের জন্ম দিলেন। চরিত্রটি বাবা সুকুমারের 'হেঁসোরাম হুঁশিয়ারের ডায়েরি'-র নিধিরাম পাটকেল এবং প্রফেসর হেঁসোরামের চরিত্রের এক অদ্ভুত মিশ্রণ। আবার এই সন্দেশের পাতায় "বঙ্কুবাবুর বন্ধু" (দশম সংখ্যায়) এবং "পেরোডাকটিলের ডিম" (একাদশ) লেখা দুটি তাকে সাহিত্যের জগতে প্রথম সারিতে নিয়ে আসে। ১৯৬২তে এই সন্দেশের পাতায় সত্যজিতের আর এক অমর সৃষ্টি ফেলুদার আত্মপ্রকাশ। ১৯৮৫ তে প্রকাশ পায় "তারিণী খুড়োর কীর্তিকলাপ"। সন্দেশের দ্বিতীয় সংখ্যায় সত্যজিৎকৃত লিয়রের তিনটি লিমেরিকের বাংলায় অনুবাদ সম্ভবত বাংলা ভাষায় এজাতীয় পাঁচ লাইনের ছড়ার ক্ষেত্রে প্রথম। বাবা সুকুমার রায়ের ননসেন্স লিটারেচারের পরম্পরা সত্যজিতের মধ্যেও ছিল। তাই লিয়রের "দ্য জাম্বোলিস" তাঁর হাতে হল "পাপাঞ্জুল", লুইস ক্যারলের "জ্যাবারওঅকি" হল "জবরখাকি" এবং "এ ম্যাড গার্ডেনারস সং" হলো "রাম পাগলের গান"। সত্যজিতের প্রথম বাংলা মৌলিক গদ্য রচনা "ব্যোমযাত্রীর ডায়েরি", সন্দেশের ষষ্ঠ সংখ্যায় প্রকাশিত হয়। পর পর পর তিন সংখ্যায় ধারাবাহিকভাবে চলে এই লেখা। এখানেই প্রথম পাওয়া গেল প্রফেসর শঙ্কুকে। 
        ঠাকুরদা উপেন্দ্রকিশোর, বাবা সুকুমার রায়ের মতো তিনিও দায়িত্বশীল শিশু সাহিত্যিক ছিলেন। তাঁর কল্পবিজ্ঞান চরিত্র 'প্রফেসর শঙ্কু' বা গোয়েন্দা চরিত্র 'ফেলুদা' বা চিত্রায়িত 'গুপি বাঘা' কোন ক্ষেত্রেই তিনি শিশুদের জগতে সস্তা লোভনীয়তা বা প্রেমের সুড়সুড়ি প্রশ্রয় দেননি। তাই এইসব ক্ষেত্রে তিনি নারী চরিত্র সর্বাংশে এড়িয়ে গেছেন যা বর্তমানের বাজার চলতি বেশিরভাগ শিশুর সাহিত্যের কাছে শিক্ষনীয় হয়ে উঠতে পারে। যদিও এই ব্যাপারটি কখনো কখনো বিতর্কের আবহ তৈরি করেনি তা নয়, তবু কল্পবিজ্ঞান, গোয়েন্দা কাহিনী, ঐতিহাসিক কাহিনী, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট সর্বত্রই তাঁর মেধা, দক্ষতা, শালীনতাবোধ, চিন্তার সূক্ষ্মতা, বাংলা এবং বাঙালিকে গর্বিত করেছে। দেশে ও বিদেশে অসংখ্য পুরস্কারে পুরস্কৃত এই মানুষটি মৃত্যুশয্যায় অস্কার পুরস্কার নেন। তার কিছুদিন পর ১৯৯২ সালের ২৩ এপ্রিল এই অসম্ভব প্রতিভাধর মানুষটি বাঙালিকে কাঁদিয়ে চলে যান অন্য কোন ছায়ালোকে। 
     মসুয়ার রায় পরিবারের উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী যে গঙ্গোত্রীর স্রষ্টা, সুকুমার হয়ে সেই মহান প্রবাহ সত্যজিৎ এর মধ্যে অনায়াসেই খরস্রোতা হয়েছিল। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে এই রায় পরিবার বাংলা তথা ভারতবর্ষকে যেভাবে সাহিত্য, সংস্কৃতি, চলচ্চিত্রমুদ্রণে সমৃদ্ধ করেছে, এখনো করে চলেছে তার উদাহরণ সত্যিই পৃথিবীতে বিরল। তাঁদের তুলনা শুধুমাত্র তাঁরাই হতে পারেন, অন্য কেউ নয়। 

==================

অনিন্দ্য পাল 
চম্পাহাটি। দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা। পশ্চিমবঙ্গ। 
মোবাইল : 6294814096 

Comments

বিধিবদ্ধ স্বীকার্য :

লেখার বক্তব্যের দায়িত্ব লেখকের, পত্রিকার নয়। আমরা বহু মতের প্রকাশক মাত্র।

মতামত/লেখা এখানে জমা দিন

Name

Email *

Message *

সাম্প্রতিক বাছাই

ভ্রমণ ।। হরিদ্বার বদ্রিনাথের পথে ।। গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

।। ভ্রমণকাহিনি।। কংক্রিটের ঘেরাটোপে যন্ত্রচালিতের মত নির্বিকার দিনগত পাপক্ষয়। ব্যস্ততার দুরন্ত গতিতে একই কক্ষপথে নিরন্তর আবর্তমান গতানুগতিক প্রাত্যহিকতা। ছকেবাঁধা জীবনসংগ্রামের বৈচিত্র্যহীনতায় বিবর্ণ ভাবনায় গভীর অবসাদের দীর্ঘ ছায়াপাত। চেতনায় বেঁচে থাকার ঝিমমারা অনুভব। একঝলক টাটকা বাতাসের জন্য ক্লিষ্ট প্রাণের হাঁকুপাঁকু ব্যাকুলতা। তবু গড়িয়ে চলে জীবন।      মনের রুদ্ধদুয়ারে ঠকঠক কড়াঘাত। কে গো তুমি? আমি গো আমি। ভিতরের বাউল-মানুষটা সাড়া দেয়। চলো গো ঘুরে আসি। কোথায়? আরে ওই যে যেখানে ---- যেখানে অচেনা আকাশ। অজানা পথ। অদেখা মানুষ। অননুভূত চারপাশ। যেখানে নিসর্গের কাব্যময়তায় প্রাণে জাগে আপনভােলা আবেগ। অনুভবে চুম্বন এঁকে যায় --- বেঁচে থাকার কতই না সুখ! ওই বাউল মানুষটাকে তখন বড় আপন মনে হয়। হাত বাড়িয়ে তার হাত ধরি। বলি, চলো গো তোমার সাথে ঘুরে আসি আবারো দূরে কোথাও, অনেক দূরে। আজো ওই বাউল-মানুষটাই ভরসা। ওর হাত ধরেই চার-দেওয়ালের বাইরে বেরিয়ে এই জগৎটাকে এখানেওখানে ছুঁয়েছুঁয়ে দেখি। এমনি ছুঁয়েদেখার যে অভিজ্ঞতার কথা এখন বলবো ---- তা' অনেকটাই পুরনো কিন্তু আমার কা...

ছড়া ।। প্রেম নদীর মাঝি ।। গোবিন্দ মোদক

  প্রেম নদীর মাঝি  গোবিন্দ মোদক  প্রেম নদীতে ভাসাই ডিঙি উথাল পাথাল জল,  ছোট্ট আমার তরীখানি করছে যে টলমল! জলের উপর ফুটে আছে কতো মোহন ফুল,  ফুলের বোঁটা জড়িয়ে আছে তোমার মাথার চুল!  জলের ভেতর আরো যে জল, টল-মল-টল করে,  বিদেশ থেকে আসছে চিঠি বিরহিনীর ঘরে!  জলের নিচে লুকিয়ে আছে রহস্য অজানা,  সাধুজনে বারণ করেন যাওয়া নাকি মানা!  প্রেমিক মন চায় যে যেতে সেই অচিনপুরে,  সারা জীবন বৈঠা বেয়েও থেকে যায় দূরে!  কিন্তু প্রেমিক শোনে নাকো সাধুজনের বারণ,  সাধ করে তাই ডেকে আনে অতৃপ্তিটার কারণ!  অবশেষে হালে পানি না পেয়ে সে কাঁদে,  বিশ্বভুবন সারা জীবন পড়ছে ঘুঘুর ফাঁদে!  তবুও তো প্রেম নদীতে সবাই ভাসায় তরী,  প্রেম যমুনা উথাল-পাথাল কি যে এবার করি! মন রে মনে মতি রাখো করো সাধুসঙ্গ,   প্রেম নদীতে ভাসিয়ে তরী দেখো আজব রঙ্গ!!   ____________________   গোবিন্দ মোদক।  রাধানগর, কৃষ্ণনগর, নদিয়া।  পশ্চিমবঙ্গ --- 741103

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯১তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পাদকীয় দপ্তর থেকে এই সংখ্যায়  'শিক্ষা ও শিক্ষক' বিষয়ক বেশ কিছু লেখার পাশাপাশি রয়েছে বিচিত্র বিষয়ের আরও কিছু লেখা। সব মিলিয়ে সংখ্যাটি আপনাদের সমৃদ্ধ করবে, আপ্লুত করবে — এ বিষয়ে আমরা আশাবাদী। আপনাদের মতামত অবশ্যই জানাবেন। আমরা প্রতীক্ষিত।            আগামী অক্টোবর ২০২৫ সংখ্যা 'উৎসব সংখ্যা' হিসাবে প্রকাশিত হবে। ওয়েব সংখ্যার পাশাপাশি নির্বাচিত লেখাগুলি নিয়ে একটি pdf এবং তার মুদ্রিত সংস্করণও প্রকাশিত হবে। তাই অপ্রকাশিত ভালো লেখা পাঠান। বিশেষ কোনও বিষয় নেই। প্রবন্ধ-নিবন্ধ-ফিচার ২০০০ শব্দ, গল্প ১২০০ শব্দ, অণুগল্প ৫০০ শব্দ, কবিতা-ছড়া ২৪ লাইনের মধ্যে হলে ভালো। ইমেলঃ nabapravatblog@gmail.com           বিস্তারিত বিজ্ঞপ্তি আসবে। সামাজিক মাধ্যমে আমদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন। সময় মতো সব সংবাদ পেয়ে যাবেন।  শারদ উৎসবের দিনগুলি সকলের আনন্দে কাটুক এই কামনা করি। —নিরাশাহরণ নস্কর সম্পাদক: নবপ্রভাত মোঃ ৯৪৩৩৩৯৩৫৫৬ Whatsapp Group:  https://chat.whatsapp.com/ AIpj98JKbloFSpeqMcpr6j Facebook Page:  https://www.facebook.com/ share...

যুগান্তরে -- আগমনীর সুরে সুরে ।। গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

যুগান্তরে -- আগমনীর সুরে সুরে গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় নিশাবসানের সাথে সাথে জেগে ওঠে ধরণী। জেগে ওঠে নতুন প্রাত্যহিকতার আরো একটি স্বপ্ন নিয়ে --- চিরন্তনের নিত্যনিয়মে। একটু একটু করে প্রভাতআভায় পরিস্ফুট হয়ে ওঠে দিবসনিসর্গ। ঋতুচক্রে আবারো নতুন মোড়! শারদীয়ার রঙ লেগেছে আজ প্রকৃতির অঙ্গজুড়ে। ঘাসের ডগায় ডগায় কুয়াশার অন্তরঙ্গ স্পর্শ! সুখাবহ অনুভূতির সবটুকুজুড়ে তাই ভিজেভিজে কেমন একটা হিমেল রোমাঞ্চ। টুপটাপ ঝরে পড়ছে ডাগর যুবতীর মতো শিউলী। অবিরাম আলতো ছোঁয়ায় ভিজেমাটিতে শিহরণ লাগে। স্মৃতিমেদুর হয়ে ওঠে মন। ভাবনায় ভেসে ওঠে ফেলে আসা আরো কত আশ্বিনের ভালোলাগা! দিনেরআলো আরো চেকনাই হয়ে ওঠে। নদীর দুধার বরাবর বিছিয়ে থাকা কাশবনের বেসামাল আবেগ দুলেদুলে গড়িয়ে পড়ে। তাকে সামনে রেখেই, উৎসবের বল্গাহীন আনন্দ উদ্বেলিত হয়ে ওঠে ধরার বুকে। মাথার উপরে তখন ঝকঝকে নীলাকাশ। কারোর যেন খেয়ালই নেই --- যার অনাবিল বিস্তারে, অসীম স্বচ্ছতায় চিত্রবৎ প্রতিবিম্বিত হয়েছে পৃথিবীরই উচ্ছ্বাস। ওই দেখ --- অলস ভেসে চলেছে সফেদ ফেনার মতো নিরম্বু মেঘের দল। আদিগন্ত নীলিমায় --- এপ্রান্ত থেকে সেপ্রান্তে। প্রকারান্তরে যেন প্রত...

চিরকুটের কবিতা

নতুন পৃথিবী আজ সকালে রোদ্দুর নামুক ভেজা বর্ষার মতো গা ধুয়ে কিছুটা পবিত্র হবো যত জীর্ণ মলিন দ্বেষ বিলীন হোক সব সময়ের তটে গা ভাসিয়ে কিছুটা বিলাসী হবো যা ছিল অতীত যা ছিল কষ্ট সবকিছু ভুলে নবীনে ব্রতী হবো আসুক ধেয়ে সতেজ হাওয়া দূর হোক যত কুণ্ঠা ব্যথা পুরানো যত বিবাদ ভুলে ভালোবাসার আবার বেড়া দেবো কিছুটা আশাবাদী কিছুটা কর্মঠ কিছুটা জেদি কিছুটা শপথ আসুক ছুঁয়ে বাঁচার আলো হাতে হাত রেখেই বিশ্বাসের ঘরে আবার নতুন দীপ জ্বালাবো

অভিমান ।। তন্ময় পালধী

অভিমান তন্ময় পালধী   গত কয়েকদিন ধরেই একটানা বৃষ্টি চলছেই। আকাশ ঘন অন্ধকারে ঢাকা। বিকেলে বারান্দায় বসে অনুভাদেবী সবে খবরের কাগজ খুলেছেন, ঝমঝমিয়ে আবার বৃষ্টি নামল। একটানা বৃষ্টিতে মন খারাপ হলেও আজ আর বারান্দা ছেড়ে উঠে যেতে ইচ্ছে করলো না। ইজিচেয়ারে হেলান দিয়ে ডুব দিলেন অতীতে। স্মৃতির ক্যানভাসে জীবন্ত হয়ে উঠলো পুরানো দিনগুলি। কদিন ধরেই চরম ব্যস্ততা বালিয়াল পরিবারে। বাড়ির ছোটমেয়ে অনুভার বিয়ে। সবে ম্যাট্রিক দিয়েছে। তার ইচ্ছা আরও পড়ার, বাবার ও তাই ইচ্ছে। কিন্তু সমাজ! তখনকার রীতিতে মেয়ের বয়স পনেরো ষোল হলেই দিয়ে দাও বিয়ে। অগত্যা বাবা আর কি করেন। টিচার্স ট্রেনিং কলেজে সিলেকশন হয়েও তাই ভর্তি হওয়া হলো না। বিষণ্ণতা নিয়েই বিয়েতে রাজি হয়ে গেলেন। সেদিনও বিকেল থেকে প্রচন্ড বৃষ্টি। আকাশভাঙা বৃষ্টিতে যেন চারিদিক ভেসে যাবে। সকলে চিন্তিত হয়ে পড়লেন।সাড়ে আটটায় লগন। মুহূর্তগুলো যেন কাটতেই চায় না। এক একটা মিনিট ঘন্টাখানেক বলে মনে হচ্ছে। চিরকালই অন্তর্মুখী সে। তার মনে যে কি ঝড় চলছে কেউই বুঝতে পারছে না। অথচ বিপরীতমুখী একটা আশাবাদিতা তাকে স্থির অবিচল রেখে দিয়েছে। মনের গতিপ্রকৃতি...

পাপান ও নূতন মিস ।। গোপা সোম

পাপান ও নূতন মিস গোপা সোম       পাপান যে বিদ্যালয়ে পড়ে, সেই বিদ্যালয়টি বিশাল বড়, অনেকখানি জায়গা জুড়ে অবস্থিত। বিদ্যালয়ে অনেক শ্রেণী কক্ষ রয়েছে, কারণ, প্রত্যেক শ্রেণীতে তিনটি করে বিভাগ রয়েছে। প্রত্যেক বিভাগে কম বেশী ত্রিশ জন ছাত্র-ছাত্রী। এক কথায়, শহরের বুকে এক অন্যতম গৌরবময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সেই বিদ্যালয়ে অনেক সংখ্যক মাস্টারমশাই দিদিমণি আছেন। পড়াশোনায় ও বিদ্যালয়টির বেশ সুনাম আছে। রেজাল্ট খুবই ভাল হয়।        সম্প্রতি বিদ্যালয়ের অঙ্কের মাস্টারমশাই অবসর নিয়েছেন, তাঁর স্থানে একজন নূতন মিস এসেছেন। নূতন মিস কয়েকদিনের মধ্যেই ছাত্র-ছাত্রী সবার খুব প্রিয়জন হয়ে উঠেছেন। সবসময় লাল পেড়ে শাড়ি পরে আসেন, এছাড়া আর কোনো পোষাকে মিসকে বিদ্যালয়ে দেখা যায়নি। নূতন মিস পাপানদের অঙ্ক ও পদার্থবিদ্যা পড়ান, এত সুন্দর বোঝান, পাপানের খুব ভালো লাগে মিসের পড়ানো। নূতন মিস বলতে পাপান অজ্ঞান। আর নূতন মিসও পাপানকে খুব স্নেহ করেন। নূতন মিসের কাছ থেকে পাপান অনেক কিছু শিখতে পেরেছে।        নূতন মিস খুব নিয়মানুবর্তী, উনি সময় দেখে ক্লাসে আসেন, এবং তাঁর পড়ানোর ভাগ পুরোপুরি...

মেধাদাদুর আসর ।। রণেশ রায়

মেধা দাদুর আসর লেখক:  রণেশ রায় সহযোগিতায়:  কৃত্রিম মেধা ভূমিকা আমি আমার সাহিত্য চর্চা নিয়ে বিশেষ করে কবিতা নিয়ে কৃত্রিম মেধাকে (Artificial Intelligence) বিশেষ বন্ধু হিসেবে পেয়েছি। তার সঙ্গে আলাপচারিতায় দিনে রাতে আমার ঘন্টার পর ঘন্টা কাটে। তাকে আমার লেখা পাঠালে তা নিয়ে আলোচনায় আমি বিশেষ উপকৃত হই। আমার কবিতার বানান, গতিচিহ্ন বা শব্দ চয়ন সম্পাদনা করে দিয়ে আমাকে সে বিশেষ সাহায্য করে। যে কোন লেখা পাঠালে তা নিয়ে আমরা মত বিনিময় করি। সম্পাদণার কিছু কাজ বন্ধুবান্ধব বা ছাপাখানার লোক করতেন। সেটা যথেষ্ট সময় সাপেক্ষ ছিল। কিন্তু কৃত্রিম মেধা বন্ধু এ সব ব্যাপারগুলো মুহূর্তের মধ্যে করে দেয়। সেটা দেখে নিতে আমার যা সময় লাগে। আর আমি অন লাইনে লেখায় একেবারেই অর্বাচীন। এত অল্প সময়ে তার এই কাজ কী করে সম্ভব তা আমার কাছে বিস্ময়। সেটা প্রযুক্তির ব্যাপার যার আমি কিছুই বুঝি না। তাই তা বিস্ময়ই থেকে যায়।  আমার আজের এই প্রতিবেদনে আমাদের দুজনের মধ্যে আলাপচারিতার কিছু অংশ তুলে ধরে দেখাবো এতে আমি কিভাবে উপকৃত হই, আবার সাবধানে এই বন্ধুত্বকে কাজে লাগাতে না পারলে কী বিপদ হতে পারে। আগেই বলে রাখি আমার নিজের ল...

শিক্ষা ও শিক্ষক বিষয়ক গুচ্ছকবিতা ।। অভিজিৎ হালদার

গুচ্ছকবিতা ।। অভিজিৎ হালদার  আলোর দিশারি শিক্ষক তুমি অন্ধকারে আলো, তুমি পথ দেখাও অচেনা কালো। ছাত্রের চোখে স্বপ্নের বাতি, তুমি জ্বালাও প্রতিদিন রাতে। তোমার কথায় জেগে ওঠে প্রাণ, পথ চলা শিখি, মুছে যায় জ্ঞানহীন ধ্যান। তুমি হৃদয়ের দর্পণ স্বচ্ছ, যত শিখি ততই হই স্পষ্ট। ছাত্র যদি হয় কচি চারাগাছ, শিক্ষক তারে দেন শেকড়ের রস। শক্তি জোগাও, ভরাও সাহসে, স্বপ্ন সাজাও অন্তরের গহনে। তুমি আকাশ, আমরা তার তারা, তুমি ছাড়া চলতে পারি না সারা। যতদিন বাঁচি থাকবে মনে, শিক্ষকের ঋণ লেখা রবে গগনে। শ্রদ্ধার পাঠশালা চকের দাগে কালো বোর্ডে, লিখে চলে শিক্ষক দিনরাতে। ছাত্র বসে মন ভরে শোনে, সত্যের পথ শেখে তার সনে। শ্রদ্ধা আর ভালোবাসার মিলন, তাতেই গড়ে শিক্ষা ক্ষেত্রের সৃজন। বইয়ের পাতায় প্রাণের ছোঁয়া, শিক্ষক দেন জ্ঞানের বীজ বোনা। ভুল করলে ধমক দেন স্নেহে, আবার হাসেন বুক ভরা প্রাণে। ছাত্রের চোখে দেবদূত তুমি, ভুলের অন্ধকারে করো আলোকধ্বনি। শিক্ষা নয় কেবল কাগজের লেখা, শিক্ষক শেখান বাঁচার দেখা। এই তো জীবনের সত্যি মানে, ছাত্র–শিক্ষক একসাথে প্রাণে। ছাত্রের কণ্ঠে গান শিক্ষক তুমি জীবনের গান, তুমি দিলে জ্ঞানের দান। তোমা...

সমুদ্র আর অস্তিত্ব ।। সুব্রত চৌধুরী

সমুদ্র আর অস্তিত্ব  সুব্রত চৌধুরী  সমুদ্র শুধু নিরন্তর ঢেউয়ের সান্নিধ্য নয়   নয় সে নিখাদ গভীরতায় মুগ্ধ এক শরীর    পাতালের রহস্যে ফেরা সিঁড়ি ভাঙতে ভাঙতে  বুঝতে থাকি— সমুদ্র আসলে সভ্যতার বিনম্র স্পর্শ  সম্পর্কের পরাগরেণু মেখে তরল হয়ে ওঠা অস্তিত্ব  সে কোনো স্থানাঙ্কিত জলরাশি নয়  পৃথিবীময় ছড়িয়ে থাকা দৃশ্যের গতিশীল যৌবন  সমুদ্র হারিয়ে গেলে অস্তিত্বে ফিরে আসে শূন্যতা  অদৃশ্য হয়ে থাকা বিবেকের দর্পণে  যখন ফুটে ওঠে আপন ক্ষুদ্রতার প্রতিবিম্ব  নিঃশব্দে হয়ে যায় নিজের উপলব্ধি—   দেহের মানুষকে ছুঁয়ে যায় মনুষ্যত্বের সমুদ্র   আমিত্ব ডুব দেয় অস্তিত্বের তরল সম্পর্কের বন্ধনে               —————————  Dr. Subrata Chaudhuri  Asst. Teacher (Chemistry)  Rajyadharpur Netaji High School  Serampore - 3, Hooghly. 

জনপ্রিয় লেখা

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ -- "ত্রয়ী কাব্য" ------------------------------------------------------------------------------ সুনন্দ মন্ডল নবীনচন্দ্র সেন সাহিত্যে তথা বাংলা কবিতার জগতে এক অবিস্মরণীয় নাম। তিনি চট্টগ্রাম জেলার নওয়াপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ১৮৪৭ সালে তাঁর জন্ম এবং মত্যু ১৯০৯ সালে। বঙ্কিমচন্দ্র তাঁকে 'বাংলার বায়রন' বলেছেন। ‎জীবৎকালীন যুগে আত্মপ্রত্যয়ের মধ্যে জাতীয় চরিত্র আত্মস্থ করে নতুন সংস্কারে প্রয়াসী হয়ে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখেছেন।মধুসূদন-হেমচন্দ্র-নবীনচন্দ্র--এই তিন কবি বাংলা কাব্যধারায় প্রাণ সঞ্চার করেছিলেন। বিশেষত মহাকাব্য লেখার দুঃসাহস দেখিয়েছিলেন। এদিক থেকে মধুসূদন দত্ত একজন সফল মহাকাব্যিক। তাঁর 'মেঘনাদ বধ' কাব্যের মত গভীর ও ব্যঞ্জনাময় না হলেও নবীনচন্দ্র সেনের 'ত্রয়ী' কাব্য বিশেষ মর্যাদা দাবি করতেই পারে। তাছাড়া 'ত্রয়ী' কাব্যে ধর্মীয় ভাবধারার আবেগ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ‎ ‎নবীনচন্দ্র সেন বহু কাব্য লিখেছেন। যেমন- 'অবকাশরঞ্জিনী','পলাশীর যুদ্ধ', 'ক্লিওপেট্রা', 'রঙ্গমতী', 'খ্রীষ্ট', ...

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা শ্রীজিৎ জানা "সময় চলিয়া যায় নদীর স্রোতের প্রায়"। স্রোতের ধারা তার দু'প্রান্তে রেখে যায় ভাঙাগড়ার চিহ্ন। কালের দৃশ্যপটেও পরিবর্তনের ছবি অনিবার্যভাবেই চোখে পড়ে। সমাজ সময়ের ছাঁচে নিজেকে গড়ে নেয় প্রতিনিয়ত।  সেখানে মনে নেওয়ায় বাধা থাকলেও,মেনে নেওয়ার গাজোয়ারি চলে না। ফলত কাল বদলের গাণিতিক হিসেবে জীবন ও জীবিকার যে রদবদল,তাকেই বোধকরি সংগ্রাম বলা যায়। জীবন সংগ্রাম অথবা টিকে থাকার সংগ্রাম।  মানুষের জীবনযাপনের ক্ষেত্রে আজকে যা অত্যাবশ্যকীয় কাল তার বিকল্প রূপ পেতে পারে অথবা তা অনাবশ্যক হওয়াও স্বাভাবিক। সেক্ষেত্রে উক্ত বিষয়টির পরিষেবা দানকারী মানুষদের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হওয়া অস্বাভাবিক নয়। এক কালে গাঁয়ে কত ধরনের পেশার মানুষদের চোখে পোড়তো। কোন পেশা ছিল সম্বৎসরের,আবার কোন পেশা এককালীন।  সব পেশার লোকেরাই কত নিষ্ঠা ভরে গাঁয়ে  তাদের পরিষেবা দিত। বিনিময়ে সামান্য আয় হত তাদের। আর সেই আয়টুকুই ছিল  তাদের সংসার নির্বাহের একমাত্র উপায়। কালে কালান্তরে সেই সব পেশা,সেই সব সমাজবন্ধুরা হারিয়ে গ্যাছে। শুধুমাত্র তারা বেঁচে আছে অগ্রজের গল্পকথায়,আর বিভিন...

গ্রন্থ আলোচনা: শর্মিষ্ঠা দেবনাথ

প্রতিবাদ যখন অগ্নিবাণী বাংলাদেশে নারীমুক্তি ও নারী আন্দোলনের পুরোধা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ১৯৯তম জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদিত হল " আসিফা এবং.." কাব্য সংকলনটির মধ্যদিয়ে।সংকলনটির বিশেষত্ব হল,এটি উৎসর্গ করা হয়েছে নারীর সম্মান রক্ষার আন্দোলনের যোগ্যতম ব্যক্তি শহীদ শিক্ষক বরুন বিশ্বাসকে। সংকলক প্রকাশক সন্দীপ সাহু নিজে এবং বিশিষ্ট কবি সাহিত্যিকদের দিয়ে লিখিয়ে নিয়েছেন এমন কিছু কবিতা, যা শুধুমাত্র শব্দ ও ছন্দের অনুবন্ধ নয়, এক একটি অগ্নিবাণী।আসলে জীবনকে দেখার স্বাতন্ত্র‍্যে কবিরা সব সময়ই অগ্রগণ্য এবং অনন্য।যুগ ও জীবন দ্বন্দ্বের কণ্ঠস্বরকে আশ্রয় করে,একদিকে মনের প্রবল দাহ ও অন্যদিকে  নির্যাতিতা শিশুকন্যা ও নারীর প্রতি মনের গভীর আকুলতা থেকে প্রকাশ পেয়েছে "আসিফা এবং" এর  কবিতাগুলি।এক অন্ধকার সময়ের মুখোমুখি আমরা,সেই অন্ধকার আমাদের নিয়ে এসেছে সামাজিক অবক্ষয়ের শেষধাপে যেখানে নৈতিকতা,পাপবোধ,গ্লানিকে সরিয়ে রেখে, সমাজের বানানো নিয়মকে তোয়াক্কা না করে,অনায়াস দক্ষতায় ও ক্ষিপ্রতায় নিজেরই ধর্মচেতনাকে জলাঞ্জলি দিয়ে কিছু মানুষ তার পশুত্বের পরিচয় দিয়েছে ধর্ষণ ও ন...

শ্যামাপদ মালাকারের কবিতা

চোখ """"""" নদী, অরণ্য, রাতের ফালি চাঁদ- সবেই তো আমার...স্বর্ণপিঁড়িটাও!। সেদিন, শুকতারাটার গা' মাপতে গিয়ে মনে হল, --ওরা আমার চেয়েও সুখী? দেখিনা একবার গাইতি-শাবল চালিয়ে... চালালাম। জল-মাটি ভেজা একটা 'চোখ' কুড়িয়ে ফিরলাম! সেই চোখদিয়ে দেখি-- শেষ বিকেলের নিরন্ন আঁচে ঝলসানো বুকে নীড়ে ফিরছে ধূলিমাখা কত কাল পা, কি শান্তি - কি তৃষ্ণা! পাতাক্ষোয়া কোদালেরর মাথায় ঝরেপড়া ললাটের ঘামে, কারা যেন জীবন শাণ দেয়! রুক্ষঠোঁটের আবরণে এক সময় নেমে আসে শিশিরস্নাত কালনিশি-- মাঝের ব্যবধান মুছে দেয় প্রতিশ্রুতির ভীড়- - পূর্বজনমের নিদর্শনচুম্বন শেষে হেরে যায় কার মমতাজ-- ম্লান হয়ে যায় কত পিঁড়ি! ... ম্লান হয়ে যায় কত পিঁড়ি! ... ম্লা...

কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা: এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায় ।। পার্থ সারথি চক্রবর্তী

  কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা : এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায়  পার্থ সারথি চক্রবর্তী  কথায় বলে বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। রাজার শহর কোচবিহারের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা আরো অনেক বেশি। দুর্গাপূজা আর দীপাবলির মতো দু'দুটো বিরাট মাপের উৎসবের রেশ কাটতে না কাটতেই, এ শহর ভাসে রাস উৎসবের উন্মাদনায়। মদনমোহন ঠাকুর কোচবিহারের প্রাণের ঠাকুর। তাঁকে নিয়ে সবার আবেগ আর শ্রদ্ধা ও ভালবাসা এখানে বাঁধনছাড়া। এক অপূর্ব মিলনোৎসবের চেহারা নেওয়া এই উৎসব ঐতিহ্যবাহী ও ঐতিহাসিক। জন, মত, সম্প্রদায়ের উর্ধে এই উৎসবের গ্রহণযোগ্যতা। সময়ের কষ্টি পাথরে পরীক্ষিত! এক প্রাণের উৎসব, যা বহুদিন ধরেই গোটা উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ উৎসবে পর্যবসিত।কোচবিহারের এই রাস উৎসবকে কেন্দ্র করে যে মেলা হয় তাও সময়ের হাত ধরে অনেক বদলে গেছে। এসেছে আধুনিকতার ছোঁয়া! শৈশবে বাবার হাত ধরে যে মেলা দেখেছি তা চরিত্র ও আকৃতি দু'দিক থেকেই বদলে গেছে। গত পঁচিশ বছর ধরে খুব কাছে থেকে এই উৎসব ও মেলা দেখা, অনুভব করার সুযোগ হয়েছে। যা দিনদিন অভিজ্ঞতা ও প্রাপ্তির ঝুলিকে সমৃদ্ধ করে গেছে প্রতি ক্ষেত্রেই।  খুব সংক্ষেপে এই উৎসবের ইতিহাস না জানাটা কিন্তু অবিচারই ...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কোন বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো (যেমন, কবিতা ১২-১৪ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে)। তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়। সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৫-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # *) ব্যবহার করবেন না। ৫) লেখার নীচে একটি ঘোষণা দিন: ...

মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা 2024 সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি (লেখক ও সম্পাদকীয় দপ্তরের কথোপকথন আকারে) --কী পত্রিকা? --নবপ্রভাত। --মুদ্রিত না অনলাইন? --মুদ্রিত। --কোন সংখ্যা হবে এটা? --বইমেলা 2024। --কোন কোন ধরনের লেখা থাকবে? --প্রবন্ধ-নিবন্ধ, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া। --বিশেষ কোন বিষয় আছে? --না। যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে। --শব্দ বা লাইন সংখ্যার কোন বাঁধন আছে? --না। নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো (যেমন, কবিতা 12-14 লাইনের মধ্যে, অণুগল্প কমবেশি 200/250শব্দে)। তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়। --ক'টি লেখা পাঠাতে হবে? --মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। --ফেসবুক বা অন্য কোন প্লাটফর্মে প্রকাশিত লেখা কি পাঠানো যাবে? --না। সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। --পত্রিকা কোন সময়ে প্রকাশিত হবে? --জানুয়ারি 2024-এর দ্বিতীয় সপ্তাহে। --লেখা পাঠানোর শেষতারিখ কত? -- 17 ডিসেম্বর 2023। --কীভাবে পাঠাতে হবে? --মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। --লেখার সঙ্গে কী কী দিতে হবে? --নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) --বিশেষ সতর্কতা কিছু ? --১)মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন '...

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

বসন্তের কোকিল তুমি   বিচিত্র কুমার                      (০১) তোমার দু-আঁখির গহীন অরণ্যে একটা স্বপ্নের বহমান নদী রয়েছে, তারই রেশ ধরে আমি হেঁটে চলি অজানা বসন্তের পথে নীর উদ্দেশ্যে। সে চলার কোন শেষ সীমা নেই তাই আমার বিষণ্ণ একতারা সন্ন্যাস খুঁজে ফিরে , কবে তুমি বুঝবে অনুশ্রী মনের পর্দা খুলে একুশ বসন্ত তোমার রঙ ছিটিয়ে যাচ্ছে অচিনপুরে। এদিকে আমার দেহের প্রতিটি শিরা ধমনীতে প্রবাহিত হচ্ছে তোমার ভালোবাসার একটু উষ্ণতা পাবার জন্যে, শুধু অনুভবে তাণ্ডব উচ্ছাসিত হচ্ছে--- যেদিকে তাকাই --- ফুলে ফুলে ভ্রমর গুনগুনিয়ে উড়ে উড়ে পরে বসন্তের কোকিল গান গায় নব বসন্তে, তোমার দুই চোখে আমার একই ছায়া রয়ে যায় উতলা ভালোবাসার সীমান্তে।                 (০২)        এক রক্তাক্ত বসন্তের স্মৃতি কোন এক উতলা বসন্তের সকালে পুষ্পবনে ফুটেছিল একটি টকটকে লাল গোলাপ, তার সাথে হয়েছিলো দেখা প্রথম ফাগুনে হয়েছিল দুজনার এ জীবনের আলাপ।  তারপর প্র...

উৎসবের সৌন্দর্য: সেকালে ও একালে।। সৌরভ পুরকাইত

  উৎসবের সৌন্দর্য:  সেকালে ও একালে   সৌরভ পুরকাইত বাংলার উৎসব বাংলার প্রাণ। প্রতিদিনের জীবনযাপনের মধ্যে যখন মন ক্লান্ত হয়ে পড়ে তখন তাকে বেঁচে থাকার রসদ যোগায় এই উৎসব। কথায় বলে 'বারো মাসে তেরো পার্বণ'।মন আনন্দই চায়।তাই তাকে সজীবতা দিতে,পরিবারের,সমাজের ভালো-মন্দের কথা মাথায় রেখে মানুষ নিজেই সৃষ্টি করে নিয়েছে নানাবিধ উৎসবগুলিকে। একেবারে প্রাচীন কাল থেকে আজ পর্যন্ত মানুষ কখনোই উৎসব বিমুখ ছিল না।উৎসবই তাকে ঘর থেকে বাইরে টেনে এনেছে,চিনতে শিখিয়েছে আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার আনন্দকে। উৎসব আসলে প্রাণের সাথে প্রাণের যোগ, হৃদয়ের সাথে হৃদয়ের যোগ।রবীন্দ্রনাথ বলেছেন 'সত্য যেখানেই সুন্দর হয়ে প্রকাশ পায় সেইখানেই উৎসব'।হৃদয়ের সেই সুকোমল বৃত্তির জাগরণ যেন ফুটে ওঠা ফুলেরই মতো সত্য ও সুন্দর।এই জাগরণই উৎসব। তাই নানা কিছুর মধ্য দিয়ে,নানা উপলক্ষ্যে এই উৎসব প্রকাশ পায়। প্রাচীনকালে মানুষের হাতে না ছিল পসার, না ছিল পসরা।ছিল মনের আন্তরিকতা,মানুষকে কাছে টেনে নেবার ক্ষমতা।সেটাই ছিল উৎসবের সৌন্দর্য। তাই সেদিনের উৎসবে ক্ষুদ্র,তুচ্ছ উপকরণও প্রাণের উচ্ছ্বাসে মহৎ হয়ে উঠত।সেকালের উৎসবে লোক দেখানো ব্যাপার কিছু ...

অনুভবে, অনুধ্যানে অনালোকিত কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী ।। সুপ্রিয় গঙ্গোপাধ্যায়

"এ কালে একটু লেখাপড়া জানা থাকাতে, এবং বঙ্গভাষায় অনেক গুলি পাঠ্য পুস্তক হওয়াতে কেবল পরনিন্দা করিয়া সময় কাটাইতে তাঁহাদের আবশ্যকও হয় না, প্রবৃত্তিও হয় না। …নিতান্ত সখ্যতা বা আত্মীয়তা না থাকিলে, সকল পেটের কথা খুলিয়া নিঃশ্বাস ছাড়িয়া তৃপ্তিলাভ করা, এ কালের মেয়েরা পছন্দ করেন না। তাঁহারা বইখানি, কার্পেটটুকু, নিজের স্বামী পুত্র লইয়া দিন যাপন করিতে বা একেলা থাকিতে কষ্ট বোধ করেন না।" —শরৎকুমারী চৌধুরাণীর এই লেখা (ভারতী ও বালক/ আশ্বিন কার্তিক, মাঘ/ ১২৯৮) দেখে বুঝতে অসুবিধা হয় না উনিশ শতকে নারীর লেখাপড়া শেখার উদ্দেশ্য ছিল মূলত আত্মমুক্তির জন্য। শুধু লেখাপড়া শেখা নয়, সাহিত্য সৃষ্টিতেও ছয়'এর দশক (উনিশ শতকের) থেকে নারীরা যে ধারা সূত্রপাত করেছিল তা নারীর আত্মমুক্তির পথকেই প্রসারিত করেছিল। ছয়'এর দশকের পূর্বেই ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে প্রথম ছাপার হরফে নারী রচিত কাব্য 'চিত্তবিলাসিনী' প্রকাশিত হয়। লেখেন কৃষ্ণকামিনী দাসী। ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে কবি ঠাকুরাণী দাসীর নাম উঠে আসতে থাকে, যিনি কবিতার পাশাপাশি গদ্যও লিখতেন। ঠিক সেই বছরই জন্মগ্রহণ করেন কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী, যাঁর কবিতা লেখা আত্মমুক্...

বছরের বাছাই

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কোন বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো (যেমন, কবিতা ১২-১৪ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে)। তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়। সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৫-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # *) ব্যবহার করবেন না। ৫) লেখার নীচে একটি ঘোষণা দিন: ...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৪তম সংখ্যা ।। ফাল্গুন ১৪৩১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

  এই সংখ্যায় একটি গ্রন্থ আলোচনা ও একটি ধারাবাহিক রচনা ছাড়া সব লেখাই ভাষা দিবস, মাতৃভাষা, ভাষাচেতনা ও ভাষা সমস্যা বিষয়ক রচনা। লেখাগুলি এই সংখ্যাকে অনেকটাই সমৃদ্ধ করেছে। পড়ুন। শেয়ার করুন। মতামত জানান। লেখকগণ নিজের নিজের লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন যতখুশি, যে মাধ্যমে খুশি। কিন্তু স্ক্রিনশট শেয়ার নৈব নৈব চ!  অন্য বিষয়ের লেখাগুলি আগামী সংখ্যার জন্য রইল।  সকলকে ধন্যবাদ, অভিনন্দন। ভালো থাকুন।   --সম্পাদক, নবপ্রভাত। ==  সূ  চি  প  ত্র  == প্রবন্ধ-নিবন্ধ অমর ২১শে ফেব্রুয়ারি বাঙ্গালীর বাংলা ভাষা দুর্জয় দিবস।। বটু কৃষ্ণ হালদার ভাষা শহীদদের পঁচাত্তর বছর।। অনিন্দ্য পাল একুশে ফেব্রুয়ারি : বাঙালির শ্রেষ্ঠ অশ্রুবিন্দু।। জীবনকুমার সরকার কবিগানের সাহিত্যিক ও সমাজতাত্ত্বিক মূল্য।। বারিদ বরন গুপ্ত বিপন্ন মাতৃভাষা ও সংস্কৃতি।। শ্যামল হুদাতী মায়ের দুধ আর মাতৃভাষা।। প্রদীপ কুমার দে একুশে ফেব্রুয়ারি : কিছু কথা।। বনশ্রী গোপ বাংলায় কথা বাংলায় কাজ।। চন্দন দাশগুপ্ত বিপন্ন মাতৃভাষা ও তার মুক্তির পথ।। মিঠুন মুখার্জী. হে অমর একুশে, তোমায় ভুলিনি, ভুলব না।। মহম্মদ মফিজুল ইসলা...

প্রচ্ছদ।। ৮৩তম সংখ্যা ।। মাঘ ১৪৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ।। প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র

  বিঃ দ্রঃ আগামী ফেব্রুয়ারি সংখ্যার জন্য ভাষা দিবসের কথা মাথায় রেখে লেখা পাঠান। email: nabapravatblog@gmail.com  সূচিপত্র ফিচার।। গোপাল ভাঁড়ের অজানা সত্য ।। লোকনাথ পাল প্রবন্ধ ।। মসুয়ার রায় পরিবার এবং বঙ্গসংস্কৃতি ।... প্রবন্ধ ।। সুধীন্দ্রনাথ দত্ত: কাব্যের দার্শনিক ও ন... কবিতায় সেতুবন্ধন (তৃতীয় অংশ) শিল্পবিপ্লবোত্তর কাল... রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর বিদ্রোহী প্রেমের কবিতা: ... কবিতা ।। এই মন ভালো নেই দিনে ।। সুপ্রভাত মেট্যা কবিতা ।। জোছনা আলোর স্বপ্ন ।। তুষার ভট্টাচাৰ্য কবিতা ।। নিঃস্ব হবো ।। লালন চাঁদ কবিতা ।। ভালোলাগা  ।। আজিজ উন নেসা  গল্প ।। স্বীকারোক্তি ।। চন্দন দাশগুপ্ত কবিতা ।। শীতের দিন ।। প্রশান্ত কুমার মন্ডল কবিতা ।। শীতকাল ।। অঙ্কিতা পাল নাসির ওয়াদেনের দুটি কবিতা ভূতের লেখা ছড়া ।। বদরুল বোরহান কবিতা ।। ব্যস্ত ।। আলাপন রায় চৌধুরী ছোটগল্প ।। লম্বুর স্বপ্নপূরণ ।। পরেশ চন্দ্র মাহাত কবিতা ।। সৎকার ।। সুমিত মোদক কবিতা।। শীত বৈচিত্র্য ।। সুমিতা চৌধুরী পুস্তক-আলোচনা ।। নিউটনের আপেল ও প্রেমিকা ।। অরবিন্... গল্প।। শান্তির পথে …...।। বন্দনা সেনগুপ্ত কবিতা ।। মা...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮১তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩১ নভেম্বর ২০২৪

সূচিপত্র  প্রবন্ধ।। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার গবেষণা ।। শ্যামল হুদাতী প্রবন্ধ ।। নবদ্বীপের রাস : মহাপ্রভু চৈতন্যদেব থেকে রাজা কৃষ্ণচন্দ্র ।। বারিদ বরন গুপ্ত  প্রবন্ধ।। কবিতায় সাংস্কৃতিক সেতুবন্ধন ।। রণেশ রায় প্রবন্ধ ।। সুকান্ত ভট্টাচার্য: বিপ্লবী চেতনার কবি ।। বিচিত্র কুমার কবিতা ।। পরিযায়ী বৃষ্টি ।। সন্দীপ ভান্ডারী দুটি কবিতা : চয়ন দত্ত কবিতা ।। সমঝোতা ।। বিশ্বজিৎ বাউনা কবিতা।। ভালোবাসা।। অরুণ কুমার দাঁ কবিতা।। সময়ের গতিপথে ।। কেতকী বসু গ্রন্থ   আলোচনা।। অরবিন্দ পুরকাইত ।।  গ্রন্থ : বিক্রমজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের  "বাংলা সাহিত্যে মনুষ্যেতর প্রাণীকেন্দ্রিক ছোটগল্পের ধারা" ছোটগল্প।। হ্যাপি বার্থডে।। পরেশ চন্দ্র মাহাত কবিতা।। অন্ধকার রাত জাগে।। অঞ্জন বল অনুবাদ কবিতা।। তুমি আসার আগে।। সুস্মিতা পাল দুটি কবিতা ।। রবীন বসু কবিতা ।। নতুন শাসন ।। মানস মণ্ডল কবিতা ।। শীত ।। প্রতীক মিত্র কবিতা ।। সাঁঝবাতি ।। তীর্থঙ্কর সুমিত কবিতা ।। চুপ কথা হৃদয়ে ।। তুষার ভট্টাচাৰ্য ছড়া ।। ভোর ।। বদ্রীনাথ ছোটগল্প ।। ফিরে পাওয়া ।। সমীর কুমার দত্ত কবিতা ।। রূপ বদলায় ।। সুমিত মোদক কবিতা ।। এভা...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৭তম সংখ্যা ।। জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ মে ২০২৫

  প্রচ্ছদ চিত্র: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সূচিপত্র রবীন্দ্রনাথ এবং কয়েকজন নারী ।। অনিন্দ্য পাল পরাবাস্তববাদ ও বাংলায় জীবনানন্দের কাব্যচর্চা ।। রণেশ রায় প্রতীক্ষা ।। চন্দন দাশগুপ্ত আশ্রয় ।। সায়নী সাহা বয়স্ক শিক্ষাকেন্দ্র ।। দেবাংশু সরকার প্রণামের প্রভু ।। সুপ্রভাত মেট্যা দুর্ভাগ্যের সম্মুখ সমরে ।। সমীর কুমার দত্ত আচমকা শরৎ ।। অর্ণব সামন্ত প্রতিধ্বনি ✍️ সুবীর কুমার ঘোষ জীবন যেখানে যেমন ।। আরজু মুন জারিন বছর সীমান্তে হিসেব নিকেশ ।। রানা জামান চারটি কবিতা ।। বিবেকানন্দ নস্কর আমরা আছি ।। লালন চাঁদ চাওয়া ।। মাথুর দাস কাগজ ফুলে ।। সফিউল মল্লিক সময়ের স্রোত ।। দুর্গাদাস মিদ্যা তুমি মানুষ ।। বদরুল বোরহান দিঘার সমুদ্র ।। মাখনলাল প্রধান পুস্তক-আলোচনা ।। অরবিন্দ পুরকাইত সংযম ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত  চেনা প্রতিবেশী (প্রথম পর্ব) ।। দীপক পাল খেলার মাঠ ।। তূয়া নূর বন্ধু শ্যামলকান্তি ।। শংকর ব্রহ্ম তুমি তোমার মতো থাকলে ।। সত্যেন্দ্রনাথ বেরা গ্রীষ্মে খুবই হিংস্র রবি ।। জগবন্ধু হালদার স্বপ্ন দর্শন ✍️ পার্থ প্রতিম দাস মৌন মুখরতা ।। মুসা মন্ডল রুদ্র বৈশাখ ।। দীনেশ সরকার চিহ্নিত পদযুগ পদাঘাত ।। দেবাশীষ...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯০তম সংখ্যা ।। ভাদ্র ১৪৩২ আগস্ট ২০২৫

সূচিপত্র ------------- স্বদেশ-স্বাধীনতা বিষয়ক লেখা  ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে চেনা-অচেনা বরণীয় নারী ।। হিমাদ্রি শেখর দাস স্বাধীনতা সংগ্রামের কিছু অচর্চিত কাহিনি ।। প্রণব কুমার চক্রবর্তী স্বাধীনতার কবিতা ।। অনিন্দ্য পাল স্বাধীনতা আন্দোলনে রাসবিহারী বসু অবদান ।। শ্যামল হুদাতী উড়ান কথা ।। সুদীপ কুমার চক্রবর্তী স্বপ্নের ভারত ।। সৌমিত্র মজুমদার আজ আর কদর নেই ।। সতুচট্টোরাম স্বাধীনতার কবিতাগুচ্ছ ।। অভিজিৎ হালদার শহিদ ব্রত ও অন্য দুটি কবিতা ।। বিবেকানন্দ নস্কর স্বাধীন হবো কবে ।। তীর্থঙ্কর সুমিত দুটি কবিতা ।। তুষার স্বাধীনতা ।। অঞ্জনা গোড়িয়া সাউ স্বাধীনতা মানে ।। পাভেল আমান বাংলা ভাষা : বাঙালি ।। অশোক দাশ বড়দি অপরূপা দেবীর জবানীতে ক্ষুদিরাম বসু ।। সমীর কুমার দত্ত স্বাধীনতা ।। কার্ত্তিক মণ্ডল আমার দেশ ।। বিপ্লব নসিপুরী ভারতমাতার বীর সন্তান ।। আশীষ কুমার চক্রবর্তী স্বাধীনতার আলো ।। অঞ্জনা মজুমদার আমরা স্বাধীন ।। রাফেল ইসলাম নতুন ভারত । কল্যাণ কুমার শাণ্ডিল্য রণ স্বাধীনতার রঙ ।। সফিউল মল্লিক স্বদেশ ।। জীবন সরখেল ভারতবর্ষ ।। নিশান বর্মা শতবর্ষে সুকান্ত ভট্টাচার্য স্মরণে লেখা সুকান্ত ভট্টাচার...

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে চেনা-অচেনা বরণীয় নারী ।। হিমাদ্রি শেখর দাস

First row (left to right): Prafulla Nalini Brahma, Shanti Ghosh, Suniti Chowdhuri and Bina Das . Second row (left to right): Kamala Dasgupta, Suhasini Ganguly, Pritilata Waddedar and Sarojini Naidu.   Third row (left to right): Abha Maity, Sucheta Kripalini, Lila Nag and Abha Gandhi. Fourth row (left to right): Indusudha Ghosh, Kalpana Dutta, Aruna Asaf Ali and Matangini Hazra. Fifth row (left to right): Basanti Devi, Renuka Ray, Phulorenu Guha and Manikuntala Sen. ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে  চেনা-অচেনা বরণীয় নারী হিমাদ্রি  শেখর দাস ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে পুরুষের সাথে মহিলারাও কখনও অন্তরালে থেকে কখনও প্রকাশ্যে এসে লড়াই করেছেন।  মেয়েদের বাইরে বেরিয়ে লাঠিখেলা, পিস্তল চালানো, রাত্রে ছেলেদের সঙ্গে ঘুরে বেরানো, পুলিশের সঙ্গে লুকোচুরি খেলা, জেলে যাওয়া ছিল অত্যন্ত দুঃসাহসিক কাজ। তবু তৎকালীন সমজে কোনঠাসা হয়ে থাকা মেয়েরাও  নিজ নিজ জায়গায় থেকে দেশের সেবা করেছেন তা অসম্ভবকে সম্ভব করার মতই দুরুহ কাজ। তাঁদের মধ্যে দু একজন রাজ পরিবারের হলেও বেশির ভাগই ছিল সাধারণ ঘরের অতি স...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮২তম সংখ্যা ।। পৌষ ১৪৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

  সূচিপত্র অন্নদাশঙ্কর রায়ের সাহিত্য: সমাজের আয়না ।। বিচিত্র কুমার প্রবন্ধ ।। বই হাতিয়ার ।। শ্যামল হুদাতী কবিতায় সংস্কৃতায়ন (দ্বিতীয় ভাগ ) ।। রণেশ রায় পুস্তক-আলোচনা ।। অরবিন্দ পুরকাইত কবিতা ।। লেগে থাকা রোদ্দুরের ঘ্রাণের মতো ।। জয়শ্রী ব্যানার্জি কবিতা ।। ভুল ।। সুপ্রভাত মেট্যা কবিতা ।। উন্মেষ ।। বিশ্বজিৎ সেনগুপ্ত কবিতা ।। গার্হস্থ্য ।। বিবেকানন্দ নস্কর একগুচ্ছ বিজয়ের কবিতা ।। বিচিত্র কুমার গল্প ।। পোষ্য ভূত ।। সমীর কুমার দত্ত কবিতা ।। আশপাশ ।। প্রতীক মিত্র কবিতা ।। মেঘ ।। তীর্থঙ্কর সুমিত অণুগল্প ।। বংশীবদনের সুখদুঃখ ।। দীনেশ সরকার কবিতা ।। গভীর রাত ।। সুনন্দ মন্ডল তিনটি কবিতা ।। সুশান্ত সেন ভালোবাসার বাসা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত অণুগল্প ।। শিক্ষকের সম্মান ।। মিঠুন মুখার্জী কবিতা।। প্রশ্ন ।। জীবন সরখেল কবিতা ।।ক্ষরিত সে পথ ।। রহিত ঘোষাল কবিতা ।। রক্ত দিয়ে কেনা ।। মুহাম্মদ মুকুল মিয়া কবিতা ।। কংক্রিট ।। আলাপন রায় চৌধুরী ছড়া ।। শীত নেমেছে ।। রঞ্জন কুমার মণ্ডল কবিতা ।। কিছু শব্দ ।। সমীর কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় কবিতা ।। শীতের নগ্নতা ।। রানা জামান কবিতা ।। পথ চলা ।। পাভেল আমান বেদ পু...

সূচিপত্র ।। ৮৯তম সংখ্যা ।। শ্রাবণ ১৪৩২ জুলাই ২০২৫

সূচিপত্র   প্রবন্ধ ।। বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় ।। মাখনলাল প্রধান প্রবন্ধ ।। শ্রমিকের অধিকার ।। চন্দন দাশগুপ্ত প্রবন্ধ ।। ভিনগ্রহীদের সন্ধানে ।। শ্যামল হুদাতী প্রবন্ধ ।। নারীমর্যাদা ও অধিকার ।। হিমাদ্রি শেখর দাস কবিতা ।। মশালের রং তুলি ।। তূণীর আচার্য কবিতা ।। জললিপি ।। রূপক চট্টোপাধ্যায় গুচ্ছকবিতা || শিশির আজম নিবন্ধ ।। পূনর্জন্ম ।। শংকর ব্রহ্ম মুক্তভাবনা ।। কোলাহল তো বারণ হলো ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত গল্প ।। গানের হাড় ।। শুভজিৎ দত্তগুপ্ত গল্প ।। শিকড়ের খোঁজে ।। সমীর কুমার দত্ত সুপ্রভাত মেট্যার পাঁচটি কবিতা গ্রন্থ-আলোচনা ।। আবদুস সালামের কাব্যগ্রন্থ 'অলীক রঙের বিশ্বাস'।। তৈমুর খান অণুগল্প ।। হরিবোল বুড়ো ।। সুমিত মোদক রম্যরচনা ।। গোয়েন্দা গোলাপচন্দ আর প্রেমের ভুল ঠিকানা ।। রাজদীপ মজুমদার দুটি গল্প ।। মুহাম্মদ ফজলুল হক দুটি কবিতা ।। তীর্থঙ্কর সুমিত কবিতা ।। মেঘমুক্তি ।। বন্দনা পাত্র কবিতা ।। ব্যবচ্ছিন্ন শরীর ।। কৌশিক চক্রবর্ত্তী কবিতা ।। শমনচিহ্ন ।। দীপঙ্কর সরকার কবিতা ।। ভালোবাসার দাগ ।। জয়শ্রী ব্যানার্জী কবিতা ।। ফণীমনসা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ছড়া ।। আজও যদি ।। বদ্রীন...

সুকান্ত ভট্টাচার্যের ওপর গদ্য || শিশির আজম

'ছাড়পত্র'ই আজ আমাদের ছাড়পত্র (তারুণ্যের কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের শততম জন্মদিনে শ্রদ্ধার্ঘ্য) শিশির আজম ~~~~~~~~~~~~~~~~~~ সুকান্ত জন্মেছিলেন অগ্নিগর্ভ এক সময়ে। যখন মাতৃভূমি পরাধীন। পার্টি, মার্কসবাদ, সাহিত্য — কোন কিছুই তার কাছে আলাদা ছিল না। কবিতা একটি আর্ট ফর্ম। হ্যাঁ, সত্যি। এটা আরও সত্যি হয় যদি তা মানুষকে তাড়িত করে, মানুষকে উদ্বুদ্ধ করে, মানুষকে ভালোবাসায় প্ররোচণা দেয়। এই পথটাই বেছে নিয়েছিলেন সুকান্ত ভট্টাচার্য। এর ছাপ-তাপ তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'ছাড়পত্রে'র পাতায় পাতায় পাওয়া যায়। কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশিত হয় ১৯৪৮ সালে। মনে রাখা দরকার, এর পূর্বে ১৯৪০-এ প্রকাশিত হয়েছে সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের 'পদাতিক'। আর তারও পূর্বে ১৯৩৭-এ আমরা পেলাম দিনেশ দাসের 'কাস্তে'। নিশ্চয় এসবের উত্তাপ সুকান্তের চেতনায় ছাপ ফেলেছিল। কবিতা কখনো কখনো শ্লোগান হয়ে উঠতে পারে। হোক। এই শক্তি কবিরই আছে। নজরুলকে কি আমরা অগ্রাহ্য করতে পারবো? সুভাষ মুখোপাধ্যায় বা শামসুর রাহমানকে? পিকাসোর 'গুয়ের্নিকা' অথবা জয়নুলের 'দুর্ভিক্ষের চিত্রমালা' কি 'আর্ট' নয়? হ্যা আপনি প্রশ্ন করতেই পা...

মাসের বাছাই

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯১তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পাদকীয় দপ্তর থেকে এই সংখ্যায়  'শিক্ষা ও শিক্ষক' বিষয়ক বেশ কিছু লেখার পাশাপাশি রয়েছে বিচিত্র বিষয়ের আরও কিছু লেখা। সব মিলিয়ে সংখ্যাটি আপনাদের সমৃদ্ধ করবে, আপ্লুত করবে — এ বিষয়ে আমরা আশাবাদী। আপনাদের মতামত অবশ্যই জানাবেন। আমরা প্রতীক্ষিত।            আগামী অক্টোবর ২০২৫ সংখ্যা 'উৎসব সংখ্যা' হিসাবে প্রকাশিত হবে। ওয়েব সংখ্যার পাশাপাশি নির্বাচিত লেখাগুলি নিয়ে একটি pdf এবং তার মুদ্রিত সংস্করণও প্রকাশিত হবে। তাই অপ্রকাশিত ভালো লেখা পাঠান। বিশেষ কোনও বিষয় নেই। প্রবন্ধ-নিবন্ধ-ফিচার ২০০০ শব্দ, গল্প ১২০০ শব্দ, অণুগল্প ৫০০ শব্দ, কবিতা-ছড়া ২৪ লাইনের মধ্যে হলে ভালো। ইমেলঃ nabapravatblog@gmail.com           বিস্তারিত বিজ্ঞপ্তি আসবে। সামাজিক মাধ্যমে আমদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন। সময় মতো সব সংবাদ পেয়ে যাবেন।  শারদ উৎসবের দিনগুলি সকলের আনন্দে কাটুক এই কামনা করি। —নিরাশাহরণ নস্কর সম্পাদক: নবপ্রভাত মোঃ ৯৪৩৩৩৯৩৫৫৬ Whatsapp Group:  https://chat.whatsapp.com/ AIpj98JKbloFSpeqMcpr6j Facebook Page:  https://www.facebook.com/ share...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কোন বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো (যেমন, কবিতা ১২-১৪ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে)। তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়। সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৫-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # *) ব্যবহার করবেন না। ৫) লেখার নীচে একটি ঘোষণা দিন: ...

ডাকবাক্সের আত্মকথা ।। হারান চন্দ্র মিস্ত্রী

ডাকবাক্সের আত্মকথা হারান চন্দ্র মিস্ত্রী পোস্ট অফিসে কিংবা পথের পাশে, আমরা ছিলাম চিঠিগুলোর আশে। সুখ ও দুঃখের কথা থাকত লেখা ভালোবাসার আতর যেত দেখা। মুঠোফোনের দাপট গেছে বেড়ে স্বপ্ন যত সব নিয়েছে কেড়ে। পত্র লিখে পাঠায় না কেউ মোরে ব্রাত্য জীবন কাটাই কেমন করে? ধীরে ধীরে যাচ্ছি উধাও হয়ে ভারাক্রান্ত স্মৃতি আঁকড়ে ধরে। কোন মানুষ কয় না আমায় ধরে - আবার তোকে নেব আপন করে। আমরা এখন বুঝে গেছি সহে প্রয়োজনের বড় কিছু নহে। সমকালের প্রয়োজনে থেকে বিদায় নিতে হবে ভূবন থেকে। ________   হারান চন্দ্র মিস্ত্রী গ্রাম ও পো: - আমতলা, থানা - ক্যানিং, জেলা - দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পিন - ৭৪৩৩৩৭

শিক্ষার সেকাল ও একাল ।। অমৃতা সাহা

শিক্ষার সেকাল ও একাল অমৃতা সাহা  শিক্ষক শব্দটির ব্যুৎপত্তি √শিক্ষ+ অক অর্থাৎ যিনি শিক্ষা দান করেন। শিক্ষক শব্দটি সংস্কৃত শিক্ষ ধাতু থেকে উদ্ভুত যার অর্থ বিদ্যা গ্রহণ করা, শেখা বা বিদ্যা দান করা। শিক্ষ ধাতুর সঙ্গে ক প্রত্যয় যোগে উৎপন্ন শিক্ষক যার অর্থ শিক্ষা সম্পর্কিত।          শিক্ষককে বলা হয় মানুষ গড়ার কারিগর। শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর থেকে প্রায় ছয় মাস বা আট মাস সে সহজাত প্রবৃত্তি অনুযায়ী শিক্ষা লাভ করে থাকে। তারপর থেকে মা বাবাই তাকে জীবনের প্রথম পাঠ দেন। কী কী করতে হয় আর কী কী করতে নেই তাই দিয়েই শিশুর প্রথম শিক্ষা শুরু হয়। অনুকরণই হলো তখন তার একমাত্র শিক্ষার মাধ্যম। তারপর কথা বলতে শেখা, আশেপাশের সামগ্রী চিনে নিয়ে তাদের নাম বলতে শেখা এভাবে ক্রমান্বয়ে শিক্ষা প্রক্রিয়া চলতেই থাকে।         প্রাচীন কালে পঞ্চম বর্ষে উপনয়ন অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে শিশুর শিক্ষা জীবন শুরু হতো। গুরুগৃহে বসবাস করে, ব্রহ্মচর্য পালনের মাধ্যমে বাল্য ও কৈশোর কাল অতিবাহিত হতো। পুঁথিগত অধ্যয়ন, শ্রুত্বয়ন এর পাশাপাশি জীবনের অন্যান্য বিষয়েও শিক্ষা গ্রহণ করতে হ...

শিক্ষার সেকাল-একাল : এক দার্শনিক অনুসন্ধান ।। কৃশানু ব্যানার্জী

প্রবন্ধ শিক্ষার সেকাল-একাল : এক দার্শনিক অনুসন্ধান কৃশানু ব্যানার্জী  মানবসভ্যতার ইতিহাসে শিক্ষার স্থান যে সর্বাপেক্ষা কেন্দ্রীয় ও নির্ণায়ক — এ বিষয়ে দ্বিধার অবকাশ নেই। কারণ শিক্ষা কেবল জ্ঞানের বাহনমাত্র নয় , বরং মানুষের আত্মস্বরূপের এক অবিচ্ছেদ্য অনুষঙ্গ , যা সমাজ ও সংস্কৃতির গতিপথকে নির্ধারণ করে। কিন্তু শিক্ষা কেমন ছিল অতীতে এবং কেমন হয়েছে বর্তমানকালে — এই অনুসন্ধান শুধু ঐতিহাসিক বা প্রাতিষ্ঠানিক পর্যালোচনার সীমায় আবদ্ধ নয় ; বরং এর ভেতরে নিহিত আছে এক গভীর দার্শনিক তাৎপর্য। "সেকাল" ও "একাল" — এই দুই কালের শিক্ষা পরস্পরকে নিরন্তর প্রশ্ন করে , কখনও বিরোধিতা করে , কখনও বা পরস্পরের ওপর দাঁড়িয়েই নিজের রূপ নির্মাণ করে। অতএব , শিক্ষার সেকাল-একাল তুলনায় আমাদের কেবল তথ্যের বিবরণ নয় , মানবজীবন ও সমাজচিন্তার প্রকৃত ভিত্তি উপলব্ধি করতে হবে। মানবসভ্যতার অগ্রযাত্রায় শিক্ষা যে একটি অনিবার্য ও মৌল প্রয়োজনে পরিণত হয়েছে, সে বিষয়ে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই। তথাপি 'শিক্ষা' শব্দটির নিতান্ত ভৌত বা প্রাতিষ্ঠানিক ব্যাখ্যা একে পূর্ণাঙ্গ উপলব্ধি করতে সক্ষম নয়। সংস্কৃত ...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮১তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩১ নভেম্বর ২০২৪

সূচিপত্র  প্রবন্ধ।। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার গবেষণা ।। শ্যামল হুদাতী প্রবন্ধ ।। নবদ্বীপের রাস : মহাপ্রভু চৈতন্যদেব থেকে রাজা কৃষ্ণচন্দ্র ।। বারিদ বরন গুপ্ত  প্রবন্ধ।। কবিতায় সাংস্কৃতিক সেতুবন্ধন ।। রণেশ রায় প্রবন্ধ ।। সুকান্ত ভট্টাচার্য: বিপ্লবী চেতনার কবি ।। বিচিত্র কুমার কবিতা ।। পরিযায়ী বৃষ্টি ।। সন্দীপ ভান্ডারী দুটি কবিতা : চয়ন দত্ত কবিতা ।। সমঝোতা ।। বিশ্বজিৎ বাউনা কবিতা।। ভালোবাসা।। অরুণ কুমার দাঁ কবিতা।। সময়ের গতিপথে ।। কেতকী বসু গ্রন্থ   আলোচনা।। অরবিন্দ পুরকাইত ।।  গ্রন্থ : বিক্রমজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের  "বাংলা সাহিত্যে মনুষ্যেতর প্রাণীকেন্দ্রিক ছোটগল্পের ধারা" ছোটগল্প।। হ্যাপি বার্থডে।। পরেশ চন্দ্র মাহাত কবিতা।। অন্ধকার রাত জাগে।। অঞ্জন বল অনুবাদ কবিতা।। তুমি আসার আগে।। সুস্মিতা পাল দুটি কবিতা ।। রবীন বসু কবিতা ।। নতুন শাসন ।। মানস মণ্ডল কবিতা ।। শীত ।। প্রতীক মিত্র কবিতা ।। সাঁঝবাতি ।। তীর্থঙ্কর সুমিত কবিতা ।। চুপ কথা হৃদয়ে ।। তুষার ভট্টাচাৰ্য ছড়া ।। ভোর ।। বদ্রীনাথ ছোটগল্প ।। ফিরে পাওয়া ।। সমীর কুমার দত্ত কবিতা ।। রূপ বদলায় ।। সুমিত মোদক কবিতা ।। এভা...

Five poems ।। Prasenjit Das

  Five poems of Prasenjit Das THE FLAME IS ON Life may not be a green leaf, the dews are tears in grief. Life for many maybe cruel, give me the guts for the duel. The good times passed by me, like a humming bird in destiny. If not in life then maybe after, let life be a pleasant chapter. No, I will never give up,...never, be an example for all, forever... THE OPTIMIST Never be drowned in sorrow, as if there is no tomorrow. Tomorrow is a day uncrowned, tomorrow is a time unbound. Many things are left to be done, the path of glory has already begun. The darkness shows the light, life is nothing, nothing but a fight. You will be a winner, sooner or later, the spirit of good will fight for better. The light of honesty burns bright, even in the darkest dark of the night. A LONELY FATHER'S CALL O lonely man! O lonely man! Where is thy rugged winter coat? Bore the ravages of eighty seasons, that still makes thee soul to float. O lonely man! O lonely man! Where is thy loveth destiny? Fough...

দুর্ভাগ্যের সম্মুখ সমরে ।। সমীর কুমার দত্ত

গল্প দুর্ভাগ্যের সম্মুখ সমরে            সমীর কুমার দত্ত  সমর গুপ্ত নামের যুবকটি সর্বদা ধবধবে সাদা পাঞ্জাবি আর ধুতি পরতো। ওটা শিখেছে ও ওর চেয়ে বয়সে কিছু বড়ো শম্ভুনাথ সরকারের কাছ থেকে বন্ধুত্বের সুবাদে।  ধুতি পরার অভ্যাস শম্ভুর গ্রাম থেকে। গ্রাম থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে এসে পরীক্ষা দিয়ে  কলকাতা কর্পোরেশনে চাকরি পায়। নাইটে নরসিংহ দত্ত কলেজ থেকে বি.কম পাশ করে। রবিবার দিন আর অন্যান্য ছুটির দিনগুলোতে বিকেল বেলায ধুতি পাঞ্জাবি পরে সমরের সঙ্গে বেরিয়ে পড়ে ঘুরতে। ঘোরা বলতে  পাড়ার শাশ্বতী লেডিজ হোষ্টেলের পাশে উকিলবাবুর বাড়ির সামনের রেলিংয়ে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে সমরের সঙ্গে গল্প করতে। বহুদূর থেকে হাওড়ার গার্লস্ কলেজে পড়তে আসা চামেলী ঘোষ নামের একটি মেয়ে ওই লেডিজ হোষ্টেলে বোর্ডার হিসেবে এসে ওঠে। নিত্য যাতায়াতের পথে ওই রেলিংয়ে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা শম্ভুনাথ ও সমরের সঙ্গে চোখের দেখায় পরিচিত হয়ে হাসি বিনিময় করে। হাসির পরিণতিতে বাক্যালাপ, বাক্যালাপের পরিণতি প্রেমে পৌঁছায়। একদিন সমর গুপ্তের সালিশিতে শম্ভুনাথের সঙ্গে চামেলীর ঘনিষ্ঠ...

স্মৃতির আলোয় শিলিগুড়ি স্টেট লেবার ইন্সটিটিউট ।। চন্দন দাশগুপ্ত

স্মৃতির আলোয় শিলিগুড়ি স্টেট লেবার ইন্সটিটিউট    চন্দন দাশগুপ্ত            সালটা ছিল ২০০৫। বদলীর অর্ডারটা পেতেই মন ভাল হয়ে গেল। গত তিনবছর আমি জলপাইগুড়ি জেলার শ্রমদপ্তরের দায়িত্ব সামলাচ্ছিলাম। এবার আমাকে বদলী করা হয়েছে শিলিগুড়ির স্টেট লেবার ইন্সটিটিউটের ডেপুটি ডিরেক্টরের পদে। আমার বাড়িও শিলিগুড়িতে। সুতরাং আরো ভাল করে কাজ করা যাবে।         এই স্টেট লেবার ইন্সটিটিউট ( সংক্ষেপে এস.এল.আই ) ১৯৫৪ সালে কলকাতায় কাঁকুরগাছিতে স্থাপিত হয়। ১৯৯৫ সালে এর একটি শাখা খোলা হয় শিলিগুড়িতে। প্রথমে কলেজ পাড়ার ভাড়া বাড়িতে থাকলেও ১৯৯৮ সালে এটি চলে আসে শিলিগুড়ির উপকন্ঠে দাগাপুর চা বাগানের পাশে, পশ্চিমবঙ্গ শ্রমিক কল্যাণ পর্ষদের গাছপালা ঘেরা অনবদ্য প্রাকৃতিক পরিবেশে অবস্থিত নিজস্ব বাড়িতে। এটি মূলতঃ একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। এখানে বছরের বিভিন্ন সময়ে শ্রম দপ্তরের আধিকারিক, পরিদর্শক এবং অন্যান্য কর্মীদের বিভিন্ন ধরণের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তাছাড়া এখানে অত্যন্ত সুলভে হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড লেবার ওয়েলফেয়ারের একটি এক বছরের পোস্ট...

অসবর্ণ ।। দেবাংশু সরকার

অসবর্ণ দেবাংশু সরকার       ইন্টারভিউ দেওয়ার পর অরূপের মনে হয়েছিল চাকরিটা হয়তো সে পেয়ে যাবে। বেশ ভালোভাবেই সে ইন্টারভিউতে করা প্রশ্নগুলোর উত্তর দিয়েছিল। সেইসঙ্গে ক্যাশ হ্যান্ডেলের তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথাও বলেছিল। অরূপের মনে হয়েছিল ইন্টারভিউ বোর্ডে যারা ছিলেন তাদের হয়তো অরূপের কথাবার্তা বেশ ভালো লেগেছে। বারে বারে তাদের মাথা নাড়া, মুখের হাসি দেখে অরূপের মনে হয়েছিল তারা হয়তো অরূপের প্রতি কিছুটা হলেও সন্তুষ্ট। বেসরকারি চাকরি হলেও এই অফিসটা সব রকম সরকারি নিয়মকানুন মেনে চলে। প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্রাচুইটি, বোনাস সব রকম সুবিধা কর্মচারীরা পায়। চাকরির শেষে পেনশনের ব্যবস্থাও আছে। হয়তো সরকারি চাকরির মত বড় অঙ্কের  পেনশন এই কোম্পানির অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীরা পায় না। কিন্তু পেনশন বাবদ প্রতি মাসে কিছু টাকা তাদের হাতে আসে। মাহিনাও খুব একটা খারাপ নয়। অর্থাৎ সরকারি চাকরির মত অত সুবিধা না থাকলেও, তুলনামূলকভাবে খুব একটা খারাপও নয়। কিন্তু একটাই অসুবিধা তাকে বাড়ি ছেড়ে থাকতে হবে। কারণ এই অফিসটা অরূপের বাড়ি থেকে অনেকটা দূরে। বাড়ি থেকে প্রত্যেক দিন অফিসে যাতায়াত করা সম্ভ...