Skip to main content

ছোটগল্প ।। জল চলে না উজানে ।। সৌমেন দেবনাথ



প্রবাদে আছে, গাঙে গাঙে দেখা হয় তো বোনে বোনে দেখা হয় না। চোখের দেখা না হলেও মনের দেখা হয় ছাড়া কি! বুলি আর দুলির দেখা হওয়া অসম্ভব কোন ব্যাপারই না, তবুও তারা একে অপরের সাথে দেখা করে না। দুই বোনের মধ্যে কিভাবে দূরত্ব সৃষ্টি হলো সেটা আগে বলি।
বুলির স্বামী কোটিপতি, ব্যবসায়ী কিন্তু রঙে একেবারে মরা। বুলি আর দশটা মেয়ের মত না হওয়ায় কালো স্বামীকে অনায়াসে গ্রহণ করতে বাধেনি। বিবাহের আগে দুলি বিবাহে বাধা দিয়েছিলো। বুলি বলেছিলো, সুন্দরের মধ্যে সুখ থাকবেই এমন না। আর জীবনও সৌন্দর্যসর্বস্ব নয়। চটকে চোখ জুড়িয়ে অনেকেই আখেরে ঠকেছে।

বিবাহ হয়ে গেলো। দুই পরিবারের মাঝে সুন্দর সম্পর্ক হলো। দেবব্রতর সাথে বুলির বোঝাপড়া ভালো। একদিন দেবব্রত বললো, দুলি বড় বেশি সৌন্দর্যপ্রেমী। সুন্দরেরা রূপসাগরের অতলান্ত ছাড়া বোঝেও কম।  সৌন্দর্যই সত্য।
বুলি বললো, সত্যই সুন্দর। সত্য চিরস্থায়ী। সৌন্দর্য চিরস্থায়ী নয়। শারীরিক সৌন্দর্যের একদিন শেষ আছে। সুন্দর ও সাদা চামড়াকে নয়, সুন্দর ও সাদা মনকে ভালোবাসতে হয়। দুলি কি মনে সুন্দর? ওর কত রূপের অহংকার! নেই সবুজ কোমল মন জমিন, নেই মনে সুকুমার বৃত্তি।
বছর যেতেই দেবব্রত আর বুলির কোলজুড়ে কৃষ্ণকালো পুত্রধন এলো। দুলি নাক বাঁকালো। তাচ্ছিল্যের হাসি ছুঁড়ে ছুঁড়ে দিলো। কালোকে দুলি বড় ঘৃণা করে। কালো গরীবের রং এটাই সে বিশ্বাস করে। দ্বীপকে কোলে নিয়ে দুলি বললো, বাবার মত হয়েছো, বাবার মান রেখেছো, বাবা।
বুলি শুনে বললো, ছেলে ছেলেই। ছেলে যে রত্ন হয়েই জন্ম গ্রহণ করে। এটা মনে রাখিস, সোনার আংটি বাঁকাও ভালো।
দুলি প্রতিউত্তরে বললো, বাঁকা সোনার আংটি যত দামিই হোক তুলে রাখতে হয়। ব্যবহার করা যায় না।
বুলি আত্মবিশ্বাসের সাথে বললো, আমার দ্বীপ একদিন মানুষের মত মানুষ হবে। রং নয়, কর্মই আসল। রংকে যারা বড় করে দেখে তাদের মনের রংটা আসলেই বিভৎস। ওকে আমি অনেক বড় করবো।
দুলি বললো, যত বড়ই হোক, যত ডিগ্রিই অর্জন করুক, এ সমাজ তোর ছেলেকে দেখলেই নাক সিটকাবে। 
বুলি বললো, সেটা সমাজের দোষ। 
দুলি রেগে গেলো, হ্যাঁ, তোর ছেলে রত্নই। এখন সিংহাসনে পা তুলে বসে থাক। আর পা নাচা। কোথায় কৃষ্ণ আর কোথায় দ্বীপ! পাহাড় হবে, আকাশ হবে, অবাক কাণ্ড!
বুলির চোখে জল চলে এলো। বললো, ছেলেটাকে নিয়ে এভাবে বলছিস কেন? আমার ছেলে কি তোর ছেলে না? নিজের ছেলেকে কেউ আশীর্বাদ না করে অভিশাপ দেয়?
দুলি বললো, বলেছিলাম কালো ভূতের সাথে বিয়ে করিস না। তোর পরবর্তী প্রজন্ম সব কালোই হবে। কৃষ্ণ আর কালীর পালে ভরবে তোর সংসার স্বর্গ।
বুলি চোখ মুছে বললো, কালোকে কালী বলিস কেন? কালোও একটি রং। সন্তানের চেয়ে যদি রং তোর কাছে গুরুত্ব পায় তবে তুই কালী কিংবা কৃষ্ণের উপাসনা করিস কেন? কৃষ্ণও কালো, কালীও কালো।
দুলি বললো, হ্যাঁ, কালো রং, কিন্তু সকল অশুভর রং। কালো চুলে ছাড়া আর কোন কালোতে মানুষ মজে না। দিদি, সব ফেলে চলে আয়।
বুলি তখনই রেগে যায়, চলে যা তুই। খবরদার আর আমার বাড়ি আসবি না। যা।
দুলি চলে যায়। দুলির সাথে বুলি আর দেখা বা কথাও বলেনি। এমনকি দুলির বিবাহতেও সে যোগ দেয়নি।

ব্যবসায় ক্ষেত্র থেকে দেবব্রত বাড়ি এলো। প্রতিক্ষার প্রহর শেষ হলো বুলির। বুলির প্রশ্ন, গতকাল যে কাজটি ভুল করেছিলে ঠিকঠাক করেছো?
দেবব্রত বললো, মিষ্টি বৌটার কি চিন্তা দেখো। সঠিকতা থেকে যে শিক্ষাটা না হয়, ভুল থেকে তার বেশি শিক্ষা হয়। আত্ম-সচেতনতা বাড়ে। ক্ষুধা লেগেছে। খেতে দাও। ঘুম চেনে না শ্মশানঘাট, ক্ষুধা চেনে না মুচির পাত।
বুলি খেতে দিলো। দেবব্রত বলো, দুলির সাথে কথা না বলাটা অনুচিত। সে আমাকে পছন্দ করে না তাই বলে তুমি তাকে অপছন্দ করবে? তুমি ওর বড় দিদি।
বুলি বললো, ছেঁড়া কাপড় সেলাই করে জোড়া লাগানো যায়, কিন্তু দাগ থেকে যায়। ভাঙা কাঁচ কাস্টিং করে জোড়া লাগানো যায়, কিন্তু দাগ থেকে যায়। আর সে দাগ কখনো মুছে না।
দেবব্রত বললো, ভুল বললে, রক্তের বন্ধনে সাময়িক সময়ের জন্য দূরত্ব সৃষ্টি হলেও সম্পর্কে ফাঁটল ধরে না। দাগ তো পড়া দূরের কথা। ছোটরা ভুল করে, বড়রা বুঝেও মেনে নেয়।

দুলি আর দ্বীপেনের মধ্যে রেষারেষি লেগেই থাকে। দুজন সুন্দর চেহারার মানুষের দু মনে এতটুকুও মিল নেই। দুজন সুন্দর মানুষের দুটো মন দু রকম। দুটো মন দুটোই, একটা আর হলো না। একটু রেষারেষি ভালো, বন্ধনকে সুদৃঢ় করে। দ্বীপেন বললো, পৃথিবীতে সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদটির নাম সুখ। যার ক্রেতা সবাই, বিক্রেতা কেউ নেই। আমি সুখ কিনতে চাই, আমার প্রচুর টাকা দরকার।
দুলির জবাব, সুখ যদি কেনা যেত তবে কোটিপতিরাই সুখী হতো। সুখী মানুষের তালিকায় রাস্তার মানুষ ছাড়া খুব কমই অন্য মানুষদের দেখা যায়। অলস! কর্মচোর! কাজ না করে আমার কাছে টাকা চাও! ব্যক্তিত্বপূর্ণ নির্লোভী মানুষগুলো নিরবে কাজ করে যায়। কাজ পাগল হও, টাকা এমনিতেই আসবে।

দেখতে দেখতে অনেক বছর পার হয়ে গেলো। দ্বীপ বেশ বড় হয়েছে। শরীরের রংটা ময়লা বলে সে কেমন হীনমন্যতায় ভোগে। আত্ম-বিশ্বাস পায় না। কিন্তু বন্ধুর অভাব নেই। বান্ধবীর অভাব নেই। মোটর সাইকেল চড়ে দাদুদের বাড়ি গেলো। দাদু দেখে বললেন, দাদু, বুকে আয়। 
দুলি রয়েছে। মাসীকে ভালো মন্দ জিজ্ঞাসা করলো। দুই দিন থেকে দ্বীপ বাড়ি চলে এলো। বাড়ি এসে মাকে বললো, মা, মাসী কি দাদুদের বাড়িই থাকেন? 
বুলি প্রশ্নের উত্তর না করে বললো, হাত মুখ ধুয়ে আয়। ভাত খাবি।
খেতে বসে দ্বীপ বললো, মা, টাকা আছে, বাইক আছে, তাই বন্ধু আছে। সময়, সুযোগ বা কথাচ্ছলে শ্বেত বন্ধুরা কিছু বলতে পিছপা হয় না। চারিদিকে সাদা চামড়ার বড় বেশি চাহিদা, মা৷ মা, কালো বলে কি অছ্যুৎ?
বুলি বললো, তোর বন্ধুরা তো সত্য বলে। সত্যকে গ্রহণ করতে তোকে শেখাইনি? সুন্দরকে সুন্দর বললে দোষ নেই। সাদাকে সাদা বললে দোষ নেই। কালোকে মানুষ কালো বলবেই। তোকে কালো বললে দোষ কিসের?
দ্বীপ খাওয়া বন্ধ করে বললো, সুন্দরকে সুন্দর বলা হয় প্রশংসার্থে, কিন্তু কালোকে কালো বলা হয় অবজ্ঞার্থে।
বুলি বললো, তোর মাসী কি তোকে কিছু বলেছেন?
দ্বীপ বললো, দাদু দেখেই বুকে টেনে নিলেন। আর মাসীকে প্রশ্ন করেও উত্তর পাই না। মা, সবাই সুন্দরের পূজারি। সৌন্দর্যের কাছে সবাই অবনত। সৌন্দর্য দেখলে মানুষ বিগলিত হয়।
বুলি বললো, তোর মাসীর সাথে কথা বলার দরকার নেই। পড়াশোনা করছিস কর্। মানুষ হ্ আগে। কৃষ্ণচূড়ার ফুল কিন্তু লাল। তোর সফলতা তোর সকল কষ্টকে দূর করবে।
দ্বীপ বললো, লেখাপড়ায় সফল হলেও ফল শূন্য। ভালো জবের পূর্বশর্ত আগে দর্শনধারী, পরে গুণবিচারী। প্রাথমিক দর্শনকে মানুষ খুব প্রাধান্য দেয়।
বুলি ছেলের হতাশায় বিমর্ষ। বললো, বাবা রূপে ভোলে চোখ আর গুণে ভোলে মন। 
দ্বীপ বললো, মা, আমি পথ চলি, আমি জানি বাস্তবতা। হেয় করে কথা বলে মানুষ। 
বুলি বললো, বাবা, তোর জানা ভুল হতে পারে। গুণের কদর সর্বক্ষণে সর্বদা। গুণের মর্ম জানা নেই যাদের তাদের সাথে তুই থাকিস। কদর্য আর কালো এক নয়। তুই নিজেকে মিছে মিছে কদর্য করে ফেলেছিস। কুৎসিত মনের মানুষরাই কালোকে তাচ্ছিল্য করে। 

পরদিন দ্বীপ কলেজে গেলো। তিন বন্ধু তৎক্ষণাৎ জুটে গেলো। দেবু মিটিমিটি হেসে বললো, তোর কি জিম্বাবুয়ের নাগরিকত্ব আছে? না, মানে আমাদের প্রিন্সিপালের মেয়ের তো অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকত্ব আছে!
দাশু বললো, ওরে না, ওর দাদুর বাড়ি জিম্বাবুয়ে। বংশ পরম্পরায় ওরা কালত্বকে বহন করছে গর্বের সাথে।
দবির বললো, আমার কোকিলের স্বর ভালো লাগে। কাকেরও। দেখ্, কালো বলে কিন্তু বললাম না।
দ্বীপ প্রচণ্ড রেগে গেলো।  কিন্তু কিছু বললো না। ও বাড়ি চলে এলো। ওরা তিন বন্ধু হাসাহাসি করতে লাগলো। দাশু বললো, বন্ধুটা আজ বেজেছে ভালো। প্রত্যেক দিন ওকে এভাবে পঁচাবো। 

ব্যবসায় সংক্রান্ত কাজে দেবব্রত ব্যস্ত থাকে। আজ বাবাকে সামনে পেতেই দ্বীপ কিছু একটা বলতে গিয়ে থেমে গেলো। দেবব্রত বললো, কিছু বলবি, বাবা?
দ্বীপ বেশ রাগতস্বরে বললো, বাবা, আমার দ্বীপ নাম রেখেছিলে কেন? দুনিয়াতে কি আর নাম ছিলো না? কাজল, শ্যাম, শ্যামল রাখলে তো পারতে!
দ্বীপ নিজের ঘরে চলে গেলো। বুলি এলো। দেবব্রত বললো, ছেলেটার কি হলো? এমন আচরণ তো করে না।
বুলি বললো, ওর বন্ধুরা ওকে কালো বলে ক্ষেপায়, কটাক্ষ করে। 
দেবব্রত বললো, কই আমাকে তো কেউ কালো বলে না আর! প্রতিষ্ঠিত হতে হবে। হাতে ক্ষমতা থাকলে সবাই স্যার বলবে। কালো বলার সাহস পাবে না। ছেলে যেন পড়ালেখায় গাফিলতি না করে!
বুলি আড়চোখে চেয়ে বললো, তারমানে তোমাকে ভালোবাসি তোমার টাকা আছে, তুমি প্রতিষ্ঠিত তাই?
দেবব্রত বললো, তোমার চোখ আছে, তুমি মানুষ চেনো। ব্যক্তি হলেই হয় না, ব্যক্তিত্ব থাকা চায়। তুমি যে ব্যক্তিত্বকে ভালোবাসো। সত্যিকারের ভালোবাসার মানুষ ভালোবাসা ছাড়া আর কিছুই চায় না।
বুলি বললো, অর্থ কি সুখ দেয়? অঢেল সম্পত্তির মাঝে থেকেও কত জন সুখ পায়? মিল থাকলেই আর কিছু লাগে না। বাঁচার রশদ ভালোবাসা। যা অর্থ-বিত্তে থাকে না।
দেবব্রত বললো, কখনো কাউকে খুব বেশি বিশ্বাস করতে নেই। খুব বেশি ভালোবাসতে নেই। প্রিয়জনের কাছ থেকে খুব বেশি আশা করতে নেই। কারণ পৃথিবী স্বার্থপর নয়। পৃথিবীর মানুষগুলো বড় স্বার্থপর। 
বুলি বললো, তোমার সান্নিধ্য আমার সাধনার ফল৷ তোমার দেয়া কষ্ট হবে আমার উপহার। আমি জানি নিজ আত্মাকে কেউ কষ্ট দিতে পারে না৷ কষ্ট দেয়ার ভাবনাও জাগে না৷ আমি তোমাকে কারণ ছাড়াই ভালোবেসে যাবো। তোমাকে আকাশ থেকে চাঁদ এনে দিতে পারবো না, মিথ্যা কথার পাহাড় বানিয়ে স্বপ্ন দেখাতে পারবো না। পারবো না ছলনা করতে৷ শুধু ভালোবাসতে পারবো জন্ম-জন্মান্তরে।
দেবব্রত আশ্চর্য হয় আর বলে, এই যুগে তোমার মতো সর্বগুণ ধন্যা, সর্বগুণ শ্রেষ্ঠা বৌ না জানি কোন কর্ম গুণে পেয়েছি!

অনেক দিন পর দ্বীপেনকে দুলি ফোন দিলো। দ্বীপেন উচ্চস্বরে বললো, ফোন দিয়েছো কেন্?
দুলি বললো, তুমি আমার বর, আমার বন্ধু, আমার উপর প্রভুত্ব ফলাও কেন্?
দ্বীপেন বিরক্তি প্রকাশ করে বললো, তোমার সাথে আমার কোনো কথা নেই, রাখো।
দুলি বললো, জীবনকে সুখী করার সংলাপই শ্রেষ্ঠ সংলাপ। কথা না বললে থাকতে পারবো?
দ্বীপেন বললো, আমার সংকটে তোমার উদার হস্ত মেলেনি৷ পাশে থাকতে চাও, কিন্তু পাশে থাকার মানুষটাকে সাহায্য করতে চাও না। তুমি রাখো।
দুলি বললো, দুঃখ, কষ্ট, সংকট সব চারাগাছ। এতে সার, জল দিলেই বাড়বে। তুমি তোমার সমস্যা উত্তরণে আমাকে পাশে না রেখে বরং আমার উপর বোঝা চাপিয়ে দিয়েছো।
দ্বীপেন বললো, তুমি টাকার বন্দোবস্ত না করে ফিরবে না।
দুলি বললো, টাকাতে সংকট কাটে না। বুদ্ধিতে সংকট কাটে। পরিশ্রমে সংকট কাটে। ত্যাগে সংকট কাটে। মহব্বতে সংকট কাটে। পরিকল্পনাপূর্ণ জীবনই স্বাচ্ছন্দ্যময়, সাফল্যের দ্বারে সে জীবন নোঙর ফেলতে পারে।
দ্বীপেন বললো, এত মিষ্টি যুক্তিতে জীবন চলে না। নীতি কথা বাস্তবতার কাছে নেহাত অসহায়। 
দুলি বললো, যাদের কল্পনাশক্তিই নেই, শ্রদ্ধাশক্তিই নেই, তারা পৃথিবীকে কিছু দিতে পারে না। তোমার নিজের আর কি হবে?
দ্বীপেন বললো, বিশে বিদ্যা, ত্রিশে ধন, চল্লিশে ঠনঠন। ত্রিশ চলছে, এখন ধনের পিছে দৌড়ানোর সময়। তুমি আমার ব্যবসায়ের টাকার ব্যবস্থাটা দ্রুত করে তারপর ফেরো।
দুলি বললো, সমাজ আলোকিত হয় শুভবুদ্ধিসম্পন্ন, জ্ঞানবান মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায়। বিশে বিদ্যা, সে বিদ্যা অর্জন তোমার হয়নি। পাখির মত পাকা ফসল খাওয়াই তোমার শখ। মানুষ পাখি না, তাকে ফসল ফলাতে শিখতে হয়। আগে ফসল ফলাতে শেখো।
দ্বীপেন বললো, রূপ নিয়েই আমার ঘরে এসেছো, তোমার রূপ দেখার সময় নেই আমার। কথা শিখেই আমার ঘরে এসেছো, কান-মাথা ঝালা-ফালা করে দিয়েছো। রূপের দম্ভে মিষ্টি কথা ভুলে গেছো। সেজে সেজে ঘুরে বেড়াও, পরিবেশকে রঞ্জিত করো। রূপ আছে রূপ বিলাও, সোনা না হোক রূপা পাবেই।
দুলি বললো, তোমার মত হীন মন মানসিকতার মানুষের সাথে ঘৃণা হয় আমার কথা বলতে। টাকার বিনিময়ে যদি সম্পর্ক বাঁচাতে হয়, তবে সে সম্পর্ক আমি রাখবো না। মনে রেখো, আমি ঢোল না যে বাজালেই বাজবো। আমি গ্রামের সংসার বাঁচানো কোন ভীত মেয়ে না যে বলবে আর মুটোমুটো টাকা এনে দেবো। থাকো তুমি তোমাকে নিয়ে।
দুলির কথাগুলো দেবাশীষ বাবু শুনলেন। মেয়ের সংসার বাঁচানোর জন্য তিনি বড় মেয়ে বুলির বাড়ি গেলেন। বাবাকে দেখে বুলির চোখে জল চলে এলো। দেবাশীষ বাবু বললেন, মারে, দুলি চার মাস আমার এখানে এসে পড়ে আছে। এক লক্ষ টাকা না নিয়ে গেলে ওর স্বামী ওকে ঘরে উঠতে দেবে না।
বুলি নাকে হাসলো আর বললো, দুলির স্বামী তো কার্তিক ন্যায়। অসুর হলো কবে থেকে?
দেবাশীষ বাবু বললেন, কোনদিন তোকে জানতে দেয়নি। দ্বীপেনের ঘরে মেয়েটা আমার একদিনও সুখ পায়নি। একা যায়, দুদিন থাকে, আবার একা ফেরে।
বুলি বললো, ওকে না হয় আমাদের বাসায় আসতে বলো। কটা দিন থাকুক। 
দ্বীপ কলেজে গেছে। দেবু বললো, কিরে শেভ করেছিস? মুখে দাড়ি উঠার সুযোগই পায় না। মন মজলো নাকি কোনো নারীর রূপে?
দেবুর কটাক্ষাচ্চারণে দ্বীপের মন ভেঙে গেলো। দাশু বললো, কইরে তুই কাছে আয়। দিনের বেলাতেও তোকে বাতি জ্বালিয়ে দেখতে হবে নাকি?
দবির বললো, ওহ, কাঠ পুড়ে কয়লা, কয়লা পুড়ে ছাই। তারপর থাকবে না অবশিষ্ট।
দাশু বললো, হাড়ির তলার থেকেও তোর মুখটা গাঢ় কালো। 
দেবু আবার একটু কটাক্ষ মিশিয়ে সান্ত্বনা বাক্য শোনালো, ওরে এভাবে বলিস না। সবার উপর মানুষ সত্য তাহার উপর নাই।
দ্বীপ বাড়ি চলে এলো। মাকে বললো, মা, আমার বাঁচতে ইচ্ছে হয় না।
ছেলেকে বুকে জড়িয়ে নিলো বুলি। বললো, কি সব অলুক্ষণে কথা!
দেবব্রত বললো, বন্ধুদের কথা গায়ে মাখিস কেন? যে যা বলবে এক কান দিয়ে শুনবি তো অন্য কান দিয়ে বের করে দিবি। স্বাভাবিক হ্ বাবা। বন্ধুদের কথায় মন খারাপ করবি না। 
দ্বীপ বললো, বাবা, মা, বাইরটা ওদের। জগৎটা ওদের৷ আমাদের প্রতি পদে কটাক্ষ ভোজন।
দ্বীপ ঘরে চলে গেলো। দেবব্রত বললো, তোমার ছেলের মত আজীবন আমিও মনোক্ষুণ্নে ভুগেছি। আমাদের সহসা কেউ গ্রহণ করতে চায় না। বিবাহের আগে আট থেকে দশটা মেয়ে দেখেছিলাম। আমি দুই হাতে রোজগার করি সে কথা কেউ বিবেচনায় নেয়নি। ভগবান কেন আমাকে এত কালো করে সৃষ্টি করলো তাই নিয়েই ছিলো কানাঘুষা।

বিকালে দুলি এলো। দিদিকে বুকে জড়িয়ে নিলো। দুলি বললো, দিদি আমার চোখ আছে, চোখে দৃষ্টি নেই। ঝলমলে সব মাধ্যমেই সৌন্দর্য যেন অক্সিজেনের মত। আমি তাই সৌন্দর্যকে সুন্দর ভেবে খুব গুরুত্ব দিতাম। জন্ম পরিচয় আর রূপের গর্বের উর্ধ্বে আপন কর্ম পরিচয়। আর এই কর্ম পরিচয়ই আসল পরিচয়। আর এটাই মানুষের জীবতব্রত হওয়া উচিত।
বুলি হ্যাঁ-সূচক মাথা ঝাঁকিয়ে বললো, হৃদয়ের রূপে বিকশিত যে জন তার শারীরিক সৌন্দর্যের কি প্রয়োজন?
দেবব্রত এসে শ্যালিকার ভালো-মন্দ খোঁজ নিলো আর বললো, তুমি যদি সত্যাশ্রয়ী সুন্দর আত্মার হও, তবে তুমি স্বর্গের সুখ পাবে।
দুলি জল চোখে বললো, দাদাবাবু, আপনাকে নিয়ে প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে অনেক মন্তব্য করেছি। আপনি আমাকে ক্ষমা করে দেবেন। খুন করেও তো খুনী ক্ষমা চায়, আর আমার ঐ ভুলের কি কোন ক্ষমা নেই?
দেবব্রত বললো, আমার চোখে তো তুমি অন্যায়ই করোনি, আমি আমার পরিবেশের অজস্র চাপ খুব সাধারণ ভাবে নিই। এই যে তোমার চিন্তার পরিবর্তন হলো, এটা অনেক কিছু। এটাই আমাদের প্রাপ্তি। একটি বিশুদ্ধ চিন্তার বিবেক সভ্যতার পতন ঠেকাতে পারে। মনে রেখো, তোমার কিছুই নেই যদি উন্নত হৃদয়ের না হও, হৃদয়ে যে উচ্চ সে সদা সম্মানিত।
দুলি বললো, ভ্রষ্ট পথিক ছিলাম, ভ্রষ্ট পথিকের আর্ত-চিৎকার হারিয়ে গেছে বিশাল মরুভূমিতে। আমি আমার জীবন দিয়ে তার প্রায়শ্চিত্ত করছি।
দেবব্রত বললো, কাজের প্রতি আত্ম-নিবেদন হলো সৌন্দর্য। জয়ের জন্য জেদী হলো সৌন্দর্য। অন্যের হিতার্থে হাত প্রসারিত হলো সৌন্দর্য। অর্থে আভিজাত্য নয়। আমি পারবো এটাই আভিজাত্য। আমি সংসারকে ছায়াতলে রাখবো এ ব্রতই হলো সৌন্দর্য। আমি সবার নিরাপত্তায় বিসর্জিত এটাই আভিজাত্য। আমি সুন্দর দেখতে এটা বলা সৌন্দর্য না, এটা আভিজাত্যও না।
বুলি বললো, মানুষের বদ্ধমূল চিন্তাতে শক্ত করে আঘাত করতে হবে নতুন ধ্যান-ধারণা সৃষ্টির জন্য। সমাজের মগজে, শিরা-উপশিরাতে মোজাইক করা যে গদ-বাঁধা চিন্তা তার অনায়াসে পরিবর্তন হবে না। দুলি বোনটা যে আমার বুকে ফিরেছে, এ যে কত বড় প্রাপ্তি! চল, দূর থেকে এসেছিস, হাত মুখ ধুয়ে নে। বাবা আছেন, মিলেমিশে খাবো।
 
ওরা ঘরে গেলো। দুলি খেতে খেতে জীবন ইতিহাস খুলে বললো। শারীরিক, মানসিক নানা আঘাতের কথা স্বীকার করলো। বুলি সান্ত্বনা দিলো। খাওয়া-দাওয়া শেষে টাকা দিতে গেলে দুলি বললো, কিসের টাকা? বাবা বলেছে? রাখ্। টাকা দিয়ে সংসার টিকানোর মানুষ আমি না। বিশ্বাস আর ভালোবাসা সভ্যতার ভিত্তি। এ দুটোর কোনটাই আমাদের মাঝে নেই।

দুলি দ্বীপের রুমে গেলো। দ্বীপ মাসীকে দেখে হতবাক হলো। দুলি দ্বীপের পড়াশোনার খোঁজ নিলো। দ্বীপ বললো, মাসী আপনাকে পর পর মনে হয়। আপনি কি পর?
দুলি দ্বীপের পাশে বসে বললো, বাবা, তোকে আদর করি না বলে ভাবিস না তোকে ভালোবাসি না। কোলে-পিঠে মানুষ করিনি বলে ভাবিস না তোর ভালো চাই না। মা-মাসীতে কোন তফাৎ নেই। তুই অনেক বড় হবি। 
বুলিও পিছন পিছন এসে বললো, দ্বীপ, আমার কালো মানিক।
দ্বীপ শুনে বললো, মা, এই পৃথিবীতে একমাত্র তুমিই আমাকে কালো বলোনি, তাও আজ বললে? 
বুলি বললো, কোন সন্তানই তার মায়ের কাছে সাদা কালো বিবেচ্য থাকে না, থাকেওনি। 
দুলি বললো, কালো মানুষ অনেক উদার হয়। অনেক দায়িত্বশীল হয়। পিঠকে দেয়াল করে সকল ঝড় রুখে দেয়। আমার আশীর্বাদ জুড়ে তুই থাকবি, বাবা।
বুলি বললো, শেষ পর্যন্ত তোর আশীর্বাদ আমার ছেলে পেলো?
দুলি বললো, কালো মানুষের মন তো আর কালো হয় না। তোরা যে ভালোবাসার মধ্যে বাস করিস, আমি তো তার দেখা আজো পেলাম না। পাবোও না।

কিছুদিন থেকে দেবাশীষ বাবু আর দুলি বাড়ি চলে গেলো। মাকে দ্বীপ বললো, কালো মানুষ অনেক সুন্দর কিছু চাইতে গিয়ে দ্বিধান্বিত হয়, না মা?
বুলি বললো, না। সুন্দর কিছু কি? দেখি এনে দিতে পারি কিনা!
দ্বীপ বলতে গিয়েও বললো না। নিজের ঘরে গিয়ে উপুড় হয়ে ঘুমিয়ে একটি সুন্দর মুখের স্বপ্ন দেখতে লাগলো।
দ্বীপ ঘুমিয়ে গেলো। স্বপ্ন জগতে ভাসতে লাগলো ও। দ্বীপের সামনে একটি অপকাণ্ড দাঁড়িয়ে দ্বীপকে বলছে, এই যুবক, সুন্দর মুখের স্বপ্ন দেখো কেন্? তুমিও তো তবে সৌন্দর্যের পূজারি! তবে অন্যরা তোমাকে কালো বললে রাগো কেন্?

দ্বীপের ঘুম ভেঙে গেলো, প্রচণ্ড শব্দ করে কেঁকিয়ে উঠলো। বুলি আর দেবব্রত দরজায় এসে টোকর দিলো৷ দ্বীপ দরজা খুললো, বুলি বললো, কি হয়েছে বাবা?
দ্বীপ বললো, মা, আমি আর মনোক্ষুণ্ন হবো না। আমি আত্ম-বিশ্বাসী হবো। কেউ কালো বললে কষ্ট পাবো না। 
দেবব্রত বললো, আজে-বাজে চিন্তা বাদ দিয়ে ঘুমা। তোকে কালো যে বলে সে কালো। তোর কালোত্ব নিয়ে যারা মাথা ঘামায় তাদের মাথায় রোগ। কালো কোন বাধা না, কালো কোন রোগ নয়, যে মনে মনে দ্বিধান্বিত থাকবি, মনোরোগে ভুগবি।কালো সফল হওয়ার পথের অন্তরায়ও না। 
বুলি বললো, বাবা, নিশ্চিন্তে ঘুমা। তোর ভবিষ্যৎ নির্মাণে আমাদের দুই জনের ভাবনা আছে। তুই ভুলে থাকবি, দেখবি ভুলে গেছিস। তুই যে কালো তা মনে রাখার দরকার কি! তুই কালো বলে সামনে-পাছে যারা কটাক্ষ করে তুই যেদিন বড় হবি সেদিন তোর সামনে তারা দাঁড়াতেও পারবে না। 
দেবব্রত আর বুলি নিজ ঘরে চলে গেলো। দেবব্রত শঙ্কা প্রকাশ করে বললো, মানসিক ভাবে ছেলেটা হেরে যাচ্ছে। সব সময় ওকে শক্তি জোগাবে। 
বুলি বললো, ওর বন্ধু বলয়টাতেই যত গণ্ডগোল। ওদেরকে বোঝাতে হবে। ওদের অত্যাচারে নিয়মিত কলেজে যাচ্ছে না। 
দেবব্রত আর বুলি মিলে দ্বীপের বন্ধুদের নিমন্ত্রণ করলো। সবাই এলো, খেলো। আর কথা দিলো দ্বীপকে পঁচাবে না। এরপর কটা দিন ভালো গেলো। একদিন দাশু বললো, কালো মানুষের রোগ কম হয়, সুঠাম দেহের হয়, শৌর্য-বীর্যও বেশি। কালোই হতাম!
বলেই সবাই হাসাহাসি করলো। 
দেবু বললো, কালো তাই কি দেখতে কি খুব খারাপ! চুল তো আমাদের মতই, নিগ্রোদের মত তো না, ঠোঁট তো আমাদের মতই, কাঁচকলা তো আর না। তুই আমাদের বন্ধু মাঝে আলাদা যাকে বলে স্বাতন্ত্র্য, নিজ গুণে ব্যতিক্রম। আটকে না পড়লেও নজর তোর দিকেই আগে যায়।
একথা শুনেই আবার সবাই হাসিতে ফেঁটে পড়লো। 
দবির বললো, চুল কালো দোষ নেই, চামড়া কালো হলেই দোষ, না? কেউ দ্বীপকে পঁচাবি না। 
আবার সবাই একচোট হাসলো। দ্বীপ পড়লো বিপদে, যেতে পারলে বাঁচে। দাশু আবারও বললো, দেখেছিস দ্বীপের বাবা কি সৌভাগ্যবান, নিজে আফ্রিকান, বৌ পেয়েছেন ইউরোপিয়ান!
দ্বীপের জন্য কথাটি সুখকর ছিলো না। দৌড়ে যেয়ে দাশুকে মেরে দিলো দুই ঘুসি। তারপর রাগে ফুঁসে বললো, আমাকে নিয়ে অনেক বলেছিস, তাই বলে এবার আমার বাবা-মাকে নিয়ে বলবি?
দাশু বললো, আজ বুঝলাম সিনেমার ভিলেনরা কেন কালো হয়। তুই বাস্তবেরও ভিলেন।
দেবু দাশুর পক্ষ নিয়ে বললো, সিনেমার ভিলেন পর্যন্ত যাচ্ছিস কেন, এলাকার চোর-ডাকাতের দিকে তাকা, কেউ পরিষ্কার না, সব কালো।
দবির বললো, তোর বাবার টাকা আছে, যার তার গায়ে হাত তুলবি এটাই স্বাভাবিক।
দ্বীপ বললো, তোরা কথা দিয়ে কথা রাখিসনি। তোরা ভালো হবি না। কয়লা ধুইলে ময়লা যায় না। 
দাশু বললো, ঠিক বলেছিস, কয়লা ধুইলে ময়লা যায় না। তুই যতই শেভ করে থাকিস আর বিদেশি স্নো, পাউডার মাখিস কোন লাভ নেই।
পাশ থেকে দবির বললো, ওরে দাশু ওভাবে বলিস না, জাতের মেয়ে যেমন জাতের ছেলেও কালো ভালো।
কত কালো ব্যক্তিই তো জগৎ বিখ্যাত। নাম বলবো দ্বীপ?
দ্বীপ জলচোখে ওখান থেকে চলে গেলো। বন্ধুরা যদি ওকে গ্রহণ না করে তবে জগৎটায় তো পর।

বুলি আর দেবব্রত ছেলেকে খুঁজে পাচ্ছে না। যত আত্মীয়-স্বজন সবার কাছে খোঁজ নেয়া হলো। ওর বন্ধুরাও হতাশ। দ্বীপ কোথায় গেলো? বন্ধুরাও খুঁজতে লেগে গেলো। বুলি কাদছে, দেখে দাশু দবিরকে বললো, এত মশকরা করা ঠিক হয়নি।
দবির বললো, ওর বাবা-মা তো বারণ করেছিলেন। আমরা কি কথা রেখেছি?
বুলি সবার উদ্দেশ্যে বললো, দ্বীপকে খুঁজে না পেলে তোমাদের পুলিশে দেবো।
ভয়ে সবাই দ্বীপকে খুঁজতে বের হয়ে গেলো। দিন শেষে তাকে হাসপাতালে খুঁজে পাওয়া গেলো। ধারালো অস্ত্র দিয়ে সে তার মুখ ক্ষত-বিক্ষত-রক্তাক্ত করেছে। দেখে দাশু দেবুরা অঝোরে কাদতে লাগলো।
বুলির চোখ থেকে জল শুকায় না। ছেলেকে বুকে জড়িয়ে থাকলো। পৃথিবীতে নিষ্পাপ হয়ে আসি সবাই, কেন এত অহেতুক ভেদাভেদ সৃষ্টি করে অন্যের স্বাভাবিক জীবন চলনে বাধা সৃষ্টি করি? আতিশয্যে যেমন, তেমন অন্যকে হেয় করার মধ্য দিয়ে কখনো মহত্ত্ব প্রকাশ পায় না। মানুষকে প্রাপ্য মর্যাদা দিলে পৃথিবীটা হয়ে উঠবে স্বর্গের চেয়ে সুন্দর। সবার উদ্দেশ্যে কাদতে কাদতে বুলি দ্বীপের মুখের একটা কথা বারবার বলতে লাগলো, তুই ঠিকই বলেছিলি বাবা, বাইরটা ওদের, জগৎটা ওদের।

===============

সৌমেন দেবনাথ
যশোর

Comments

বিধিবদ্ধ স্বীকার্য :

লেখার বক্তব্যের দায়িত্ব লেখকের, পত্রিকার নয়। আমরা বহু মতের প্রকাশক মাত্র।

মতামত/লেখা এখানে জমা দিন

Name

Email *

Message *

সাম্প্রতিক বাছাই

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯৩তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩২ নভেম্বর ২০২৫

সূচিপত্র বস্তু, চেতনা এবং কবি ।। সজল চক্রবর্তী দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত ।। রণেশ রায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট ও সন্নিহিত অঞ্চলের কথ্য শব্দ ।। অরবিন্দ পুরকাইত চাঁদে জীবন ।। শমীক সমাদ্দার অসমাপ্তি ।। মহুয়া হুই গ্যালাক্সির শব্দে ।। জাসমিনা খাতুন তিনটি কবিতা ।। দিবাকর সেন অপূর্ণতার শেষ অধ্যায় ।। সুপ্রিয় সাহা হাফ ডজন ছড়া ।। স্বপনকুমার পাহাড়ী স্বাপ্নিক অমলের ঘুৃম ।। সঞ্জয় দেওয়ান দুটি কবিতা ।। সৌমিত্র উপাধ্যায় পথ চলতি ✍️পার্থ প্রতিম দাস হেমন্তের বিষাদ ছুঁয়ে ।। শক্তিপদ পাঠক রাই আর বাবা ।। অদিতি চ্যাটার্জি স্থিতিশীল ।। রঞ্জিত মুখোপাধ্যায় হৃদয়ের শূন্য কোড ।। লিপিকা পিঙ্কি দে অমানিশা ।। সৌভিক মুখার্জী দৃষ্টিগত ।। শামীম নওরোজ জ্যান্ত ভূতের গপ্পো ।। পার্থ সারথি চট্টোপাধ্যায় ধুতরা ফুলের ঘ্রাণ ।। মজনু মিয়া তারা খসার আলোয় ।। তীর্থঙ্কর সুমিত উত্তরণে অন্তরায় ।। সমীর কুমার দত্ত প্রেম মুদ্রা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ধারা ।। লালন চাঁদ অন্যের ব্যথায় ব্যথি ।। জগদীশ মণ্ডল গর্ভ ।। শাশ্বত বোস ভ্রমণ বিষয়ক স্মৃতিকথা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত শাপে বর ।। সাইফুল ইসলাম রবিবার ।। সঙ্ঘমিত্রা দাস দুটি ...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬

  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠালে  অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে হলে ভালো। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # ...

রেজাল্ট ।। সৈকত মাজী

রেজাল্ট সৈকত মাজী শুভ্রাংশু বিছানতে শুয়ে শুয়ে বিরক্ত হয়ে উঠল। মনে মনে নিজের শরীরটাকে আচ্ছা করে শুনিয়ে দিলো দু- চারটে কথা, দেবে নাই বা কেন, কয়দিন ধরে এতো কাঠ খড় পুড়িয়ে সব বন্ধুরা মিলে রথটা বানালো, কত কি প্ল্যান করলো, আর এই শরীরটার জন্যই তো সব ভেস্তে গেলো। মনে মনে ভাবলো একটা যা হোক শরীর হয়েছে ওর প্রতি মাসে তিন - চার বার করে জ্বর হচ্ছেই। হবি তো হ আর একটা দিন পরে হলে কি এমন ক্ষতি হতো, এই রথের দিনেই হতে হলো। ওর বিরক্তিটা বেড়ে গেলো আরো কয়েক ঘর।    " মা ও মা...মাআআআআ...." জোরে হাঁক  দিলো শুভ্রাংশু।    " কি হয়েছে বাবু? আবার জ্বরটা বেড়েছে? মাথা ব্যথা করছে?" ব্যস্ত হয়ে উঠলেন মালতিদেবী।     " ওসব কিছু নয়, ও মা বলছি এখন তো খুব কম জ্বর আছে যাই না মা একবার বাইরে, সবাই কতো ফুর্তি করছে বলো"  কাতর ভাবে বলল শুভ্রাংশু।      " না বাবু, এখনই আমরা ডাক্তারের কাছে যাব, বাবা তৈরী হয়ে গেছেন, আমরা বিকেলে তখন মেলা দেখতে যাব কেমন, এখন উঠে জামা কাপড় পরে নাও"  মালতিদেবী জামা কাপড় গুলো এগিয়ে দিলেন।      শুভ্রাংশু...

রাই আর বাবা ।। অদিতি চ্যাটার্জি

রাই আর বাবা অদিতি চ্যাটার্জি রাই-র জীবনে বেশ কিছু ভালো লাগা আছে তার মধ্যে একটা হলো সন্ধ্যার সময় তিন তলার বারান্দায় দাঁড়িয়ে রাস্তা দেখতে দেখতে কফি কাপে চুমুক দেওয়া ।" আজ যশোদা মিষ্টান্ন ভান্ডারের সামনে বেশ ভিড়,নির্ঘাত 'তেলে ভাজা ' প্রেমীরা।" আপন মনেই ভাবে ও, কিন্তু বসার ঘরে সুমন আর আঁখি এতো জোরে 'হল্লা গোল্লা ' করছে তালতলার জমজমাট রাস্তার দিকে আর মন দিতে পারছে না রাই।  পায়ে পায়ে ঘরে এসে দাঁড়ায় রাই, দেখে ক্লাস ফোরের মেয়ে এতোটা ঝগড়া করছে সুমনের সাথে , "বাপ রে, কবে এতোটা কথা শিখলো মেয়ে! কিভাবে কথা বলছে?? কোঁকড়া চুল ঝাঁঝিয়ে,গোলগাল হাত নেড়ে " ...মেয়ে কে দেখে থতমত খেয়ে যায় রাই। এদিকে আঁখি বলছে, "ধুত্ বাপী তুমি কিচ্ছু পারো না, তুতাই-র বাবা, পিসাই, মামু সবাই কত ভালো করে খেলতে পারে , না আমি তোমার সাথে খেলবো না।" কাতর চোখে মেয়ের দিকে একবার তাকিয়ে সুমন বলে ,"আচ্ছা তুই আমাকে শেখা, দ্যাখ আমি কার জন্য আলিপুরদুয়ার থেকে পনেরো দিন পর পর কলকাতায় আসি বল!"  ঐ টুকু মেয়ে কথা প্রায় না শুনেই ঘরে চলে গেল রাই-র চোখের সামনে, সুমন একবার হেসে বাথরুমের দিকে এগো...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯২তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩২ অক্টোবর ২০২৫

—: সম্পাদকীয় দপ্তর থেকে :— এই সংখ্যার জন্য লেখা এসেছিল প্রায় ১৮০টা। কিন্তু গুণগত মানে দুর্বল লেখার সংখ্যা বহু। আমরা নবপ্রভাতে নতুনদের কথা ভেবে বেশ কিছু দুর্বল লেখাও রাখি। কিন্তু সবসময় একই লোকের দুর্বল লেখা প্রকাশ করা অনুচিত বলে মনে করি। শেষ পর্যন্ত ৯৯ জনের লেখা রাখা গেল। যাদের লেখা প্রকাশিত হল না, তারা লেখাগুলি অন্য যেখানে খুশি পাঠাতে পারেন। বিশেষ কারণে এই সংখ্যার মুদ্রিত সংস্করণ প্রকাশিত হচ্ছে না। আমরা দুঃখিত। তবে মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি শীঘ্রই আসছে। সঙ্গে থাকুন। সকলকে উৎসবমুখর বর্ণময় শুভেচ্ছাসহ— —নিরাশাহরণ নস্কর, সম্পাদক, নবপ্রভাত। অনুরোধ : প্রকাশিত লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন, ছবি/স্ক্রীনশট নয়।  == সূচিপত্র == পড়া-লেখার ইতিহাস অনুসন্ধান।। তপন তরফদার উৎসব : মানুষের চিরন্তন আত্মপ্রকাশ।। কৃশানু ব্যানার্জি বাংলা : সভ্যতা ও সংস্কৃতির জন্মভূমি।। শ্যামল হুদাতী সমুদ্র আর অস্তিত্ব ।। সুব্রত চৌধুরী রাজা ছিলেন জুবিন গর্গ ।। গঙ্গা 'অনু'   আদ্যাশক্তি মহামায়ার বাংলা বারো মাসের বারো রূপ ।। অর্হণ জানা মেধাদাদুর আসর ।। রণেশ রায় বৈজ্ঞানিক মা...

বস্তু, চেতনা এবং কবি ।। সজল চক্রবর্তী

বস্তু, চেতনা এবং  কবি সজল চক্রবর্তী  "যেখানে পৌঁছায় না রবি,, সেখানে পৌঁছে যান কবি।" এই ছোট্ট কবিতা টি অনেক পুরনো  এবং বহু পরিচিত, তথাপি এর তাৎপর্য এখনো হারায় নি। তবে, কথা হ'চ্ছে -আমরা তো  রবি-কবিকে একত্রেই পেয়ে যাই আমাদের ঋষি-প্রতিম কবি রবীন্দ্রনাথের মধ্যে। আর তখনই জেনে যাই উপরোক্ত ছোট কবিতার প্রণিধানযোগ্যতা ।  ... এবার শুনে নেয়া যাক, ঋষি-প্রতিম কবির মুখ নিঃসৃত বাণী:- "তোমার অসীমে প্রাণমন লয়ে যত দূরে আমি যাই ...." অর্থাৎ আমাদের প্রিয়তম কবি অনায়াসে পৌঁছে যান সৃষ্টির অসীমে , যা আমাদের পক্ষে আদৌ সম্ভব নয়। এখানে কবির চেতনা সুদূর প্রসারী! ... প্রকৃত প্রস্তাবে কবি অতিন্দ্রীয় জগতের এক নাগরিক। তাঁর কাছে তাই চেতনা বা চৈতন্যেরই প্রাধান্য। ...এখন আসছি, বস্তু এবং চেতনার মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে।  ... আমি একজন অতি সাধারন মানুষ, তাই এই ব্যাপারটাকে কবিদের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার চেষ্টা ক'রছি। তবে আমার সামান্য জ্ঞান থেকে একটা সাধারণ কথা সেরে নি'। আমরা সাধারণত ব'লে থাকি-- সূর্য পূর্বদিকে ওঠে। প্রকৃত অর্থে কি তাই ? আসলে সূর্য যেদিকে ওঠে ,আমরা  সেই দিকটাকে নামাঙ্কিত ক...

দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট ও সন্নিহিত অঞ্চলের কথ্য শব্দ, উচ্চারণ, বাগ্্ধারা ইত্যাদি ।। অরবিন্দ পুরকাইত

স্থানীয় কিছু কথ্যশব্দ, উচ্চারণ, বাগধারা ইত্যাদি  (পর্ব—সাত) অরবিন্দ পুরকাইত স্থানীয় কিছু কথ্যশব্দ, উচ্চারণ, বাগ্্ধারা ইত্যাদির সংগ্রহ প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল রামচন্দ্র নস্কর সম্পাদিত 'চর্যা' পত্রিকায়, ২০১৬ সালে। সে সংগ্রহ যায় নিজের 'গাঁ-ঘরের কথা' পুস্তকে, ১৪২৩ সনে। পরে এই ব্লগজিনেও কিছু সংগ্রহ প্রকাশিত হয় ১৪২৮ সনের আশ্বিন মাসে, পৌষ ১৪২৯-এ, আষাঢ় ১৪৩০, নববর্ষ ১৪৩১ ও কার্তিক ১৪৩১ সংখ্যায়। তার পরেও ধীরে ধীরে আরও কিছু সংগৃহীত হয়েছে, সেগুলিই এখানে রাখা হল। নিজের আগের সংগ্রহে এসে-যাওয়া শব্দ যদি এখানে এসে থাকে, তা বাড়তি বা ভিন্ন কিছু বলার প্রয়োজনেই। নিজের আগের সংগ্রহ খুব ভাল করে যে মিলিয়েছি তা নয়, পুরো সংগ্রহ একত্র করার সময় তা করা যাবে যতটা সম্ভব নিখুঁত করে। আগে আগে সংগ্রহ প্রসঙ্গে কিছু কথা বলা হয়েছে, বিশেষত প্রথম প্রকাশের সময় একটু বিশদভাবে। এখানে আর কিছু বলা নয়, কেবল সংগ্রহটাই তুলে ধরা গেল। অখেজো/অখেজে — অকেজো থেকে। আদরের তিরস্কার হিসাবেই মূলত প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। পাজি। অচিমিতি — (উচ্চারণ ওচিমিতি) আচমকা, হঠাৎ। অদীয় — প্রচুর, অজস্র। অদ্বিতীয় থেকে ক...

কবিতা ।। অরণ্যকন্যা ।। অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়

  অরণ্যকন্যা অরিন্দম চট্টোপাধ্যায় অরণ্যকন্যার দৃষ্টির ভেতর বিষাদ বিন্দু ফোঁটা ফোঁটা জলের মতো গড়িয়ে যায়, হয়ে যায় কোন নদীপথ দৃষ্টি ভেঙে ভেঙে চলে যায় কোন এক শূন্য পথে অরণ্যকন্যার হৃদয়ের ভেতর ভাঙে যতো বৃক্ষপত্র নতুন পত্র পুষ্পের খোঁজ নেই ঠোঁট জুড়ে সমুদ্রকাঁপন বুদবুদের মতো অস্ফুট হয়ে উচ্চারিত হয় কোন অক্ষর শব্দ আর তাঁর শরীর থেকে ছড়িয়ে যায় হয়ে যায় একটা অদৃশ্য কবিতা...    ================== @ অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়,  বেহালা, কলকাতা -৭০০০৬০,  

দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত ।। রণেশ রায়

দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত রণেশ রায় ভূমিকা দর্শনের ইতিহাসে বস্তু ও চেতনার সম্পর্ক মানবচিন্তার গভীরতম প্রশ্ন। অধিবিদ্যা ভাবকে মুখ্য ধরে, বস্তুকে গৌণ বলে মনে করে। বিপরীতে মার্কস ও এঙ্গেলস বলেছেন—বস্তুই মুখ্য এবং চেতনা তার প্রতিবিম্ব। মানুষ যখন প্রথম আলোর মুখ দেখেছিল, তখনই সে বিস্ময়ে প্রশ্ন করেছিল—আমি কে, কোথা থেকে এলাম, আর এই দৃশ্যমান জগতের বাইরে কিছু আছে কি? এই প্রশ্ন থেকেই জন্ম নিয়েছিল দর্শনের দুই বিপরীত স্রোত—ভাববাদ আর বস্তুবাদ। ভাববাদ বলেছিল—"ভাবই প্রথম," আর মার্কস বললেন—"না, বস্তুই প্রথম।" এই দুই প্রান্তের মাঝখানে আমি দেখি এক সেতুবন্ধন, যেখানে বস্তু, স্নায়ু ও চেতনা একে অপরকে গড়ে তোলে, আর তাদের এই ত্রিত্বের নৃত্যেই সৃষ্টি হয় জীবন ও কল্পনার জগৎ। ভাবববাদ এক সর্বশক্তিমান শক্তির কল্পনা করে যা এই বস্তুজগতের স্রষ্টা। আর এখান থেকে ধর্ম ও ধর্মীয় ভাবধারার সৃষ্টি। আমার এই প্রবন্ধে আমি মার্কসীয় দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদকে আধুনিক বৈজ্ঞানিক আলোকে বোঝার চেষ্টা করেছি। আমি দেখাবার চেষ্টা করবো কিভাবে ইন্দ্রিয় এবং স্নায়ুজগৎ বস্তু ও চেতনাকে সংযুক্ত করে এবং কল্পলোকের জন্ম দেয়...

চাঁদে জীবন ।। শমীক সমাদ্দার

চাঁদে জীবন  শমীক সমাদ্দার                           চন্দ্রযান দুরন্ত তৈরি, রকেটের উপর ভর করে চন্দ্রযান চাঁদে অবতরণ করবে। মাধ্যাকর্ষণ শক্তি পেরিয়ে মহাকাশযান চাঁদের কক্ষপথে  স্থাপন করা হয়েছে। চন্দ্রাযান চাঁদের মাটিতে পা রাখবে সময়ের কাউন্ট ডাউন চলছে। সমস্ত নিয়ন্ত্রণ স্পেসস্কাই গাবেষণা কেন্দ্র কতৃক নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে প্রযুক্তি বিজ্ঞান অতল গভীরতায় বাসা বাঁধে। পরিচয়টা দিয়ে দিলাম এই স্পেসসিপে রয়েছে তিনজন নভোচর, একজনের নাম সাইমন আর এক জনের নাম রেমন্ড, আর এদের সঙ্গে একজন মহিলা আছে তার নাম মেরিনা। চন্দ্রযান চন্দ্রপৃষ্ঠে সফলভাবে অবতরণ করেছে। চন্দযান দুরন্ত চাঁদের পূর্ব -পশ্চিম অক্ষরেখা বরাবর অবতরণ করেছে। আলো আঁধারের গভীরতায় বড় বড় পাথরের পিণ্ড, চাঁদের সার্ফেসের উপরে পাথর জল দেখা যায়। জমাট বাঁধা অক্সিজেন আর কার্বনডাই অক্সাইড। ওরা এখানে এসেছে এক রহস্য উদ্ঘাটন করতে। যে স্থানে ওরা অবতরণ করেছে সেখানে ১০ বছর আগে ওরা এসেছিলো। রুশ সরকার ওদের দেশের ছাত্র ছাত্রী কে মহাকাশে চাঁদে পাঠাতে চায়। ওরা কেন এসেছে সেটা এখনো অধরা। সাইমনের বর্...

জনপ্রিয় লেখা

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ -- "ত্রয়ী কাব্য" ------------------------------------------------------------------------------ সুনন্দ মন্ডল নবীনচন্দ্র সেন সাহিত্যে তথা বাংলা কবিতার জগতে এক অবিস্মরণীয় নাম। তিনি চট্টগ্রাম জেলার নওয়াপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ১৮৪৭ সালে তাঁর জন্ম এবং মত্যু ১৯০৯ সালে। বঙ্কিমচন্দ্র তাঁকে 'বাংলার বায়রন' বলেছেন। ‎জীবৎকালীন যুগে আত্মপ্রত্যয়ের মধ্যে জাতীয় চরিত্র আত্মস্থ করে নতুন সংস্কারে প্রয়াসী হয়ে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখেছেন।মধুসূদন-হেমচন্দ্র-নবীনচন্দ্র--এই তিন কবি বাংলা কাব্যধারায় প্রাণ সঞ্চার করেছিলেন। বিশেষত মহাকাব্য লেখার দুঃসাহস দেখিয়েছিলেন। এদিক থেকে মধুসূদন দত্ত একজন সফল মহাকাব্যিক। তাঁর 'মেঘনাদ বধ' কাব্যের মত গভীর ও ব্যঞ্জনাময় না হলেও নবীনচন্দ্র সেনের 'ত্রয়ী' কাব্য বিশেষ মর্যাদা দাবি করতেই পারে। তাছাড়া 'ত্রয়ী' কাব্যে ধর্মীয় ভাবধারার আবেগ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ‎ ‎নবীনচন্দ্র সেন বহু কাব্য লিখেছেন। যেমন- 'অবকাশরঞ্জিনী','পলাশীর যুদ্ধ', 'ক্লিওপেট্রা', 'রঙ্গমতী', 'খ্রীষ্ট', ...

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা শ্রীজিৎ জানা "সময় চলিয়া যায় নদীর স্রোতের প্রায়"। স্রোতের ধারা তার দু'প্রান্তে রেখে যায় ভাঙাগড়ার চিহ্ন। কালের দৃশ্যপটেও পরিবর্তনের ছবি অনিবার্যভাবেই চোখে পড়ে। সমাজ সময়ের ছাঁচে নিজেকে গড়ে নেয় প্রতিনিয়ত।  সেখানে মনে নেওয়ায় বাধা থাকলেও,মেনে নেওয়ার গাজোয়ারি চলে না। ফলত কাল বদলের গাণিতিক হিসেবে জীবন ও জীবিকার যে রদবদল,তাকেই বোধকরি সংগ্রাম বলা যায়। জীবন সংগ্রাম অথবা টিকে থাকার সংগ্রাম।  মানুষের জীবনযাপনের ক্ষেত্রে আজকে যা অত্যাবশ্যকীয় কাল তার বিকল্প রূপ পেতে পারে অথবা তা অনাবশ্যক হওয়াও স্বাভাবিক। সেক্ষেত্রে উক্ত বিষয়টির পরিষেবা দানকারী মানুষদের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হওয়া অস্বাভাবিক নয়। এক কালে গাঁয়ে কত ধরনের পেশার মানুষদের চোখে পোড়তো। কোন পেশা ছিল সম্বৎসরের,আবার কোন পেশা এককালীন।  সব পেশার লোকেরাই কত নিষ্ঠা ভরে গাঁয়ে  তাদের পরিষেবা দিত। বিনিময়ে সামান্য আয় হত তাদের। আর সেই আয়টুকুই ছিল  তাদের সংসার নির্বাহের একমাত্র উপায়। কালে কালান্তরে সেই সব পেশা,সেই সব সমাজবন্ধুরা হারিয়ে গ্যাছে। শুধুমাত্র তারা বেঁচে আছে অগ্রজের গল্পকথায়,আর বিভিন...

গ্রন্থ আলোচনা: শর্মিষ্ঠা দেবনাথ

প্রতিবাদ যখন অগ্নিবাণী বাংলাদেশে নারীমুক্তি ও নারী আন্দোলনের পুরোধা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ১৯৯তম জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদিত হল " আসিফা এবং.." কাব্য সংকলনটির মধ্যদিয়ে।সংকলনটির বিশেষত্ব হল,এটি উৎসর্গ করা হয়েছে নারীর সম্মান রক্ষার আন্দোলনের যোগ্যতম ব্যক্তি শহীদ শিক্ষক বরুন বিশ্বাসকে। সংকলক প্রকাশক সন্দীপ সাহু নিজে এবং বিশিষ্ট কবি সাহিত্যিকদের দিয়ে লিখিয়ে নিয়েছেন এমন কিছু কবিতা, যা শুধুমাত্র শব্দ ও ছন্দের অনুবন্ধ নয়, এক একটি অগ্নিবাণী।আসলে জীবনকে দেখার স্বাতন্ত্র‍্যে কবিরা সব সময়ই অগ্রগণ্য এবং অনন্য।যুগ ও জীবন দ্বন্দ্বের কণ্ঠস্বরকে আশ্রয় করে,একদিকে মনের প্রবল দাহ ও অন্যদিকে  নির্যাতিতা শিশুকন্যা ও নারীর প্রতি মনের গভীর আকুলতা থেকে প্রকাশ পেয়েছে "আসিফা এবং" এর  কবিতাগুলি।এক অন্ধকার সময়ের মুখোমুখি আমরা,সেই অন্ধকার আমাদের নিয়ে এসেছে সামাজিক অবক্ষয়ের শেষধাপে যেখানে নৈতিকতা,পাপবোধ,গ্লানিকে সরিয়ে রেখে, সমাজের বানানো নিয়মকে তোয়াক্কা না করে,অনায়াস দক্ষতায় ও ক্ষিপ্রতায় নিজেরই ধর্মচেতনাকে জলাঞ্জলি দিয়ে কিছু মানুষ তার পশুত্বের পরিচয় দিয়েছে ধর্ষণ ও ন...

শ্যামাপদ মালাকারের কবিতা

চোখ """"""" নদী, অরণ্য, রাতের ফালি চাঁদ- সবেই তো আমার...স্বর্ণপিঁড়িটাও!। সেদিন, শুকতারাটার গা' মাপতে গিয়ে মনে হল, --ওরা আমার চেয়েও সুখী? দেখিনা একবার গাইতি-শাবল চালিয়ে... চালালাম। জল-মাটি ভেজা একটা 'চোখ' কুড়িয়ে ফিরলাম! সেই চোখদিয়ে দেখি-- শেষ বিকেলের নিরন্ন আঁচে ঝলসানো বুকে নীড়ে ফিরছে ধূলিমাখা কত কাল পা, কি শান্তি - কি তৃষ্ণা! পাতাক্ষোয়া কোদালেরর মাথায় ঝরেপড়া ললাটের ঘামে, কারা যেন জীবন শাণ দেয়! রুক্ষঠোঁটের আবরণে এক সময় নেমে আসে শিশিরস্নাত কালনিশি-- মাঝের ব্যবধান মুছে দেয় প্রতিশ্রুতির ভীড়- - পূর্বজনমের নিদর্শনচুম্বন শেষে হেরে যায় কার মমতাজ-- ম্লান হয়ে যায় কত পিঁড়ি! ... ম্লান হয়ে যায় কত পিঁড়ি! ... ম্লা...

কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা: এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায় ।। পার্থ সারথি চক্রবর্তী

  কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা : এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায়  পার্থ সারথি চক্রবর্তী  কথায় বলে বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। রাজার শহর কোচবিহারের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা আরো অনেক বেশি। দুর্গাপূজা আর দীপাবলির মতো দু'দুটো বিরাট মাপের উৎসবের রেশ কাটতে না কাটতেই, এ শহর ভাসে রাস উৎসবের উন্মাদনায়। মদনমোহন ঠাকুর কোচবিহারের প্রাণের ঠাকুর। তাঁকে নিয়ে সবার আবেগ আর শ্রদ্ধা ও ভালবাসা এখানে বাঁধনছাড়া। এক অপূর্ব মিলনোৎসবের চেহারা নেওয়া এই উৎসব ঐতিহ্যবাহী ও ঐতিহাসিক। জন, মত, সম্প্রদায়ের উর্ধে এই উৎসবের গ্রহণযোগ্যতা। সময়ের কষ্টি পাথরে পরীক্ষিত! এক প্রাণের উৎসব, যা বহুদিন ধরেই গোটা উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ উৎসবে পর্যবসিত।কোচবিহারের এই রাস উৎসবকে কেন্দ্র করে যে মেলা হয় তাও সময়ের হাত ধরে অনেক বদলে গেছে। এসেছে আধুনিকতার ছোঁয়া! শৈশবে বাবার হাত ধরে যে মেলা দেখেছি তা চরিত্র ও আকৃতি দু'দিক থেকেই বদলে গেছে। গত পঁচিশ বছর ধরে খুব কাছে থেকে এই উৎসব ও মেলা দেখা, অনুভব করার সুযোগ হয়েছে। যা দিনদিন অভিজ্ঞতা ও প্রাপ্তির ঝুলিকে সমৃদ্ধ করে গেছে প্রতি ক্ষেত্রেই।  খুব সংক্ষেপে এই উৎসবের ইতিহাস না জানাটা কিন্তু অবিচারই ...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো,  তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) য...

মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা 2024 সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি (লেখক ও সম্পাদকীয় দপ্তরের কথোপকথন আকারে) --কী পত্রিকা? --নবপ্রভাত। --মুদ্রিত না অনলাইন? --মুদ্রিত। --কোন সংখ্যা হবে এটা? --বইমেলা 2024। --কোন কোন ধরনের লেখা থাকবে? --প্রবন্ধ-নিবন্ধ, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া। --বিশেষ কোন বিষয় আছে? --না। যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে। --শব্দ বা লাইন সংখ্যার কোন বাঁধন আছে? --না। নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো (যেমন, কবিতা 12-14 লাইনের মধ্যে, অণুগল্প কমবেশি 200/250শব্দে)। তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়। --ক'টি লেখা পাঠাতে হবে? --মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। --ফেসবুক বা অন্য কোন প্লাটফর্মে প্রকাশিত লেখা কি পাঠানো যাবে? --না। সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। --পত্রিকা কোন সময়ে প্রকাশিত হবে? --জানুয়ারি 2024-এর দ্বিতীয় সপ্তাহে। --লেখা পাঠানোর শেষতারিখ কত? -- 17 ডিসেম্বর 2023। --কীভাবে পাঠাতে হবে? --মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। --লেখার সঙ্গে কী কী দিতে হবে? --নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) --বিশেষ সতর্কতা কিছু ? --১)মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন '...

উৎসবের সৌন্দর্য: সেকালে ও একালে।। সৌরভ পুরকাইত

  উৎসবের সৌন্দর্য:  সেকালে ও একালে   সৌরভ পুরকাইত বাংলার উৎসব বাংলার প্রাণ। প্রতিদিনের জীবনযাপনের মধ্যে যখন মন ক্লান্ত হয়ে পড়ে তখন তাকে বেঁচে থাকার রসদ যোগায় এই উৎসব। কথায় বলে 'বারো মাসে তেরো পার্বণ'।মন আনন্দই চায়।তাই তাকে সজীবতা দিতে,পরিবারের,সমাজের ভালো-মন্দের কথা মাথায় রেখে মানুষ নিজেই সৃষ্টি করে নিয়েছে নানাবিধ উৎসবগুলিকে। একেবারে প্রাচীন কাল থেকে আজ পর্যন্ত মানুষ কখনোই উৎসব বিমুখ ছিল না।উৎসবই তাকে ঘর থেকে বাইরে টেনে এনেছে,চিনতে শিখিয়েছে আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার আনন্দকে। উৎসব আসলে প্রাণের সাথে প্রাণের যোগ, হৃদয়ের সাথে হৃদয়ের যোগ।রবীন্দ্রনাথ বলেছেন 'সত্য যেখানেই সুন্দর হয়ে প্রকাশ পায় সেইখানেই উৎসব'।হৃদয়ের সেই সুকোমল বৃত্তির জাগরণ যেন ফুটে ওঠা ফুলেরই মতো সত্য ও সুন্দর।এই জাগরণই উৎসব। তাই নানা কিছুর মধ্য দিয়ে,নানা উপলক্ষ্যে এই উৎসব প্রকাশ পায়। প্রাচীনকালে মানুষের হাতে না ছিল পসার, না ছিল পসরা।ছিল মনের আন্তরিকতা,মানুষকে কাছে টেনে নেবার ক্ষমতা।সেটাই ছিল উৎসবের সৌন্দর্য। তাই সেদিনের উৎসবে ক্ষুদ্র,তুচ্ছ উপকরণও প্রাণের উচ্ছ্বাসে মহৎ হয়ে উঠত।সেকালের উৎসবে লোক দেখানো ব্যাপার কিছু ...

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

বসন্তের কোকিল তুমি   বিচিত্র কুমার                      (০১) তোমার দু-আঁখির গহীন অরণ্যে একটা স্বপ্নের বহমান নদী রয়েছে, তারই রেশ ধরে আমি হেঁটে চলি অজানা বসন্তের পথে নীর উদ্দেশ্যে। সে চলার কোন শেষ সীমা নেই তাই আমার বিষণ্ণ একতারা সন্ন্যাস খুঁজে ফিরে , কবে তুমি বুঝবে অনুশ্রী মনের পর্দা খুলে একুশ বসন্ত তোমার রঙ ছিটিয়ে যাচ্ছে অচিনপুরে। এদিকে আমার দেহের প্রতিটি শিরা ধমনীতে প্রবাহিত হচ্ছে তোমার ভালোবাসার একটু উষ্ণতা পাবার জন্যে, শুধু অনুভবে তাণ্ডব উচ্ছাসিত হচ্ছে--- যেদিকে তাকাই --- ফুলে ফুলে ভ্রমর গুনগুনিয়ে উড়ে উড়ে পরে বসন্তের কোকিল গান গায় নব বসন্তে, তোমার দুই চোখে আমার একই ছায়া রয়ে যায় উতলা ভালোবাসার সীমান্তে।                 (০২)        এক রক্তাক্ত বসন্তের স্মৃতি কোন এক উতলা বসন্তের সকালে পুষ্পবনে ফুটেছিল একটি টকটকে লাল গোলাপ, তার সাথে হয়েছিলো দেখা প্রথম ফাগুনে হয়েছিল দুজনার এ জীবনের আলাপ।  তারপর প্র...

অনুভবে, অনুধ্যানে অনালোকিত কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী ।। সুপ্রিয় গঙ্গোপাধ্যায়

"এ কালে একটু লেখাপড়া জানা থাকাতে, এবং বঙ্গভাষায় অনেক গুলি পাঠ্য পুস্তক হওয়াতে কেবল পরনিন্দা করিয়া সময় কাটাইতে তাঁহাদের আবশ্যকও হয় না, প্রবৃত্তিও হয় না। …নিতান্ত সখ্যতা বা আত্মীয়তা না থাকিলে, সকল পেটের কথা খুলিয়া নিঃশ্বাস ছাড়িয়া তৃপ্তিলাভ করা, এ কালের মেয়েরা পছন্দ করেন না। তাঁহারা বইখানি, কার্পেটটুকু, নিজের স্বামী পুত্র লইয়া দিন যাপন করিতে বা একেলা থাকিতে কষ্ট বোধ করেন না।" —শরৎকুমারী চৌধুরাণীর এই লেখা (ভারতী ও বালক/ আশ্বিন কার্তিক, মাঘ/ ১২৯৮) দেখে বুঝতে অসুবিধা হয় না উনিশ শতকে নারীর লেখাপড়া শেখার উদ্দেশ্য ছিল মূলত আত্মমুক্তির জন্য। শুধু লেখাপড়া শেখা নয়, সাহিত্য সৃষ্টিতেও ছয়'এর দশক (উনিশ শতকের) থেকে নারীরা যে ধারা সূত্রপাত করেছিল তা নারীর আত্মমুক্তির পথকেই প্রসারিত করেছিল। ছয়'এর দশকের পূর্বেই ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে প্রথম ছাপার হরফে নারী রচিত কাব্য 'চিত্তবিলাসিনী' প্রকাশিত হয়। লেখেন কৃষ্ণকামিনী দাসী। ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে কবি ঠাকুরাণী দাসীর নাম উঠে আসতে থাকে, যিনি কবিতার পাশাপাশি গদ্যও লিখতেন। ঠিক সেই বছরই জন্মগ্রহণ করেন কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী, যাঁর কবিতা লেখা আত্মমুক্...

বছরের বাছাই

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৪তম সংখ্যা ।। ফাল্গুন ১৪৩১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

  এই সংখ্যায় একটি গ্রন্থ আলোচনা ও একটি ধারাবাহিক রচনা ছাড়া সব লেখাই ভাষা দিবস, মাতৃভাষা, ভাষাচেতনা ও ভাষা সমস্যা বিষয়ক রচনা। লেখাগুলি এই সংখ্যাকে অনেকটাই সমৃদ্ধ করেছে। পড়ুন। শেয়ার করুন। মতামত জানান। লেখকগণ নিজের নিজের লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন যতখুশি, যে মাধ্যমে খুশি। কিন্তু স্ক্রিনশট শেয়ার নৈব নৈব চ!  অন্য বিষয়ের লেখাগুলি আগামী সংখ্যার জন্য রইল।  সকলকে ধন্যবাদ, অভিনন্দন। ভালো থাকুন।   --সম্পাদক, নবপ্রভাত। ==  সূ  চি  প  ত্র  == প্রবন্ধ-নিবন্ধ অমর ২১শে ফেব্রুয়ারি বাঙ্গালীর বাংলা ভাষা দুর্জয় দিবস।। বটু কৃষ্ণ হালদার ভাষা শহীদদের পঁচাত্তর বছর।। অনিন্দ্য পাল একুশে ফেব্রুয়ারি : বাঙালির শ্রেষ্ঠ অশ্রুবিন্দু।। জীবনকুমার সরকার কবিগানের সাহিত্যিক ও সমাজতাত্ত্বিক মূল্য।। বারিদ বরন গুপ্ত বিপন্ন মাতৃভাষা ও সংস্কৃতি।। শ্যামল হুদাতী মায়ের দুধ আর মাতৃভাষা।। প্রদীপ কুমার দে একুশে ফেব্রুয়ারি : কিছু কথা।। বনশ্রী গোপ বাংলায় কথা বাংলায় কাজ।। চন্দন দাশগুপ্ত বিপন্ন মাতৃভাষা ও তার মুক্তির পথ।। মিঠুন মুখার্জী. হে অমর একুশে, তোমায় ভুলিনি, ভুলব না।। মহম্মদ মফিজুল ইসলা...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৭তম সংখ্যা ।। জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ মে ২০২৫

  প্রচ্ছদ চিত্র: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সূচিপত্র রবীন্দ্রনাথ এবং কয়েকজন নারী ।। অনিন্দ্য পাল পরাবাস্তববাদ ও বাংলায় জীবনানন্দের কাব্যচর্চা ।। রণেশ রায় প্রতীক্ষা ।। চন্দন দাশগুপ্ত আশ্রয় ।। সায়নী সাহা বয়স্ক শিক্ষাকেন্দ্র ।। দেবাংশু সরকার প্রণামের প্রভু ।। সুপ্রভাত মেট্যা দুর্ভাগ্যের সম্মুখ সমরে ।। সমীর কুমার দত্ত আচমকা শরৎ ।। অর্ণব সামন্ত প্রতিধ্বনি ✍️ সুবীর কুমার ঘোষ জীবন যেখানে যেমন ।। আরজু মুন জারিন বছর সীমান্তে হিসেব নিকেশ ।। রানা জামান চারটি কবিতা ।। বিবেকানন্দ নস্কর আমরা আছি ।। লালন চাঁদ চাওয়া ।। মাথুর দাস কাগজ ফুলে ।। সফিউল মল্লিক সময়ের স্রোত ।। দুর্গাদাস মিদ্যা তুমি মানুষ ।। বদরুল বোরহান দিঘার সমুদ্র ।। মাখনলাল প্রধান পুস্তক-আলোচনা ।। অরবিন্দ পুরকাইত সংযম ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত  চেনা প্রতিবেশী (প্রথম পর্ব) ।। দীপক পাল খেলার মাঠ ।। তূয়া নূর বন্ধু শ্যামলকান্তি ।। শংকর ব্রহ্ম তুমি তোমার মতো থাকলে ।। সত্যেন্দ্রনাথ বেরা গ্রীষ্মে খুবই হিংস্র রবি ।। জগবন্ধু হালদার স্বপ্ন দর্শন ✍️ পার্থ প্রতিম দাস মৌন মুখরতা ।। মুসা মন্ডল রুদ্র বৈশাখ ।। দীনেশ সরকার চিহ্নিত পদযুগ পদাঘাত ।। দেবাশীষ...

প্রচ্ছদ।। ৮৩তম সংখ্যা ।। মাঘ ১৪৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ।। প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র

  বিঃ দ্রঃ আগামী ফেব্রুয়ারি সংখ্যার জন্য ভাষা দিবসের কথা মাথায় রেখে লেখা পাঠান। email: nabapravatblog@gmail.com  সূচিপত্র ফিচার।। গোপাল ভাঁড়ের অজানা সত্য ।। লোকনাথ পাল প্রবন্ধ ।। মসুয়ার রায় পরিবার এবং বঙ্গসংস্কৃতি ।... প্রবন্ধ ।। সুধীন্দ্রনাথ দত্ত: কাব্যের দার্শনিক ও ন... কবিতায় সেতুবন্ধন (তৃতীয় অংশ) শিল্পবিপ্লবোত্তর কাল... রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর বিদ্রোহী প্রেমের কবিতা: ... কবিতা ।। এই মন ভালো নেই দিনে ।। সুপ্রভাত মেট্যা কবিতা ।। জোছনা আলোর স্বপ্ন ।। তুষার ভট্টাচাৰ্য কবিতা ।। নিঃস্ব হবো ।। লালন চাঁদ কবিতা ।। ভালোলাগা  ।। আজিজ উন নেসা  গল্প ।। স্বীকারোক্তি ।। চন্দন দাশগুপ্ত কবিতা ।। শীতের দিন ।। প্রশান্ত কুমার মন্ডল কবিতা ।। শীতকাল ।। অঙ্কিতা পাল নাসির ওয়াদেনের দুটি কবিতা ভূতের লেখা ছড়া ।। বদরুল বোরহান কবিতা ।। ব্যস্ত ।। আলাপন রায় চৌধুরী ছোটগল্প ।। লম্বুর স্বপ্নপূরণ ।। পরেশ চন্দ্র মাহাত কবিতা ।। সৎকার ।। সুমিত মোদক কবিতা।। শীত বৈচিত্র্য ।। সুমিতা চৌধুরী পুস্তক-আলোচনা ।। নিউটনের আপেল ও প্রেমিকা ।। অরবিন্... গল্প।। শান্তির পথে …...।। বন্দনা সেনগুপ্ত কবিতা ।। মা...

সূচিপত্র ।। ৮৯তম সংখ্যা ।। শ্রাবণ ১৪৩২ জুলাই ২০২৫

সূচিপত্র   প্রবন্ধ ।। বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় ।। মাখনলাল প্রধান প্রবন্ধ ।। শ্রমিকের অধিকার ।। চন্দন দাশগুপ্ত প্রবন্ধ ।। ভিনগ্রহীদের সন্ধানে ।। শ্যামল হুদাতী প্রবন্ধ ।। নারীমর্যাদা ও অধিকার ।। হিমাদ্রি শেখর দাস কবিতা ।। মশালের রং তুলি ।। তূণীর আচার্য কবিতা ।। জললিপি ।। রূপক চট্টোপাধ্যায় গুচ্ছকবিতা || শিশির আজম নিবন্ধ ।। পূনর্জন্ম ।। শংকর ব্রহ্ম মুক্তভাবনা ।। কোলাহল তো বারণ হলো ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত গল্প ।। গানের হাড় ।। শুভজিৎ দত্তগুপ্ত গল্প ।। শিকড়ের খোঁজে ।। সমীর কুমার দত্ত সুপ্রভাত মেট্যার পাঁচটি কবিতা গ্রন্থ-আলোচনা ।। আবদুস সালামের কাব্যগ্রন্থ 'অলীক রঙের বিশ্বাস'।। তৈমুর খান অণুগল্প ।। হরিবোল বুড়ো ।। সুমিত মোদক রম্যরচনা ।। গোয়েন্দা গোলাপচন্দ আর প্রেমের ভুল ঠিকানা ।। রাজদীপ মজুমদার দুটি গল্প ।। মুহাম্মদ ফজলুল হক দুটি কবিতা ।। তীর্থঙ্কর সুমিত কবিতা ।। মেঘমুক্তি ।। বন্দনা পাত্র কবিতা ।। ব্যবচ্ছিন্ন শরীর ।। কৌশিক চক্রবর্ত্তী কবিতা ।। শমনচিহ্ন ।। দীপঙ্কর সরকার কবিতা ।। ভালোবাসার দাগ ।। জয়শ্রী ব্যানার্জী কবিতা ।। ফণীমনসা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ছড়া ।। আজও যদি ।। বদ্রীন...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো,  তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) য...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮২তম সংখ্যা ।। পৌষ ১৪৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

  সূচিপত্র অন্নদাশঙ্কর রায়ের সাহিত্য: সমাজের আয়না ।। বিচিত্র কুমার প্রবন্ধ ।। বই হাতিয়ার ।। শ্যামল হুদাতী কবিতায় সংস্কৃতায়ন (দ্বিতীয় ভাগ ) ।। রণেশ রায় পুস্তক-আলোচনা ।। অরবিন্দ পুরকাইত কবিতা ।। লেগে থাকা রোদ্দুরের ঘ্রাণের মতো ।। জয়শ্রী ব্যানার্জি কবিতা ।। ভুল ।। সুপ্রভাত মেট্যা কবিতা ।। উন্মেষ ।। বিশ্বজিৎ সেনগুপ্ত কবিতা ।। গার্হস্থ্য ।। বিবেকানন্দ নস্কর একগুচ্ছ বিজয়ের কবিতা ।। বিচিত্র কুমার গল্প ।। পোষ্য ভূত ।। সমীর কুমার দত্ত কবিতা ।। আশপাশ ।। প্রতীক মিত্র কবিতা ।। মেঘ ।। তীর্থঙ্কর সুমিত অণুগল্প ।। বংশীবদনের সুখদুঃখ ।। দীনেশ সরকার কবিতা ।। গভীর রাত ।। সুনন্দ মন্ডল তিনটি কবিতা ।। সুশান্ত সেন ভালোবাসার বাসা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত অণুগল্প ।। শিক্ষকের সম্মান ।। মিঠুন মুখার্জী কবিতা।। প্রশ্ন ।। জীবন সরখেল কবিতা ।।ক্ষরিত সে পথ ।। রহিত ঘোষাল কবিতা ।। রক্ত দিয়ে কেনা ।। মুহাম্মদ মুকুল মিয়া কবিতা ।। কংক্রিট ।। আলাপন রায় চৌধুরী ছড়া ।। শীত নেমেছে ।। রঞ্জন কুমার মণ্ডল কবিতা ।। কিছু শব্দ ।। সমীর কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় কবিতা ।। শীতের নগ্নতা ।। রানা জামান কবিতা ।। পথ চলা ।। পাভেল আমান বেদ পু...

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ৮৬তম সংখ্যা ।। বৈশাখ ১৪৩২ এপ্রিল ২০২৫

সম্পাদকীয় এই সংখ্যাটি বাংলা নববর্ষ বিষয়ক সংখ্যা। নৱৰ্ষকেন্দ্রিক বহু তথ্যপূর্ণ লেখা এই সংখ্যাটিকে সমৃদ্ধ করেছে। বাংলা নববর্ষ উদযাপনের ইতিহাস, রীতিনীতি, উৎসব, পার্বন, লোকাচার, রূপান্তর বহুবিধ বিষয় প্রকাশিত হয়েছে এই সংখ্যার লেখাগুলিতে। এই সংখ্যার বাছাই কিছু লেখার সঙ্গে আগামীতে আরও কিছু লেখা সংযুক্ত করে বাংলা নববর্ষ বিষয়ক একটি মুদ্রিত সংখ্যা প্রকাশ করার ইচ্ছে রইল।  সকলকে নববর্ষের আন্তরিক শুভকামনা জানাই। উৎসবে আনন্দে থাকুন, হানাহানিতে নয়। ধর্ম-ব্যবসায়ীদের চক্রান্ত ব্যর্থ করে সহনাগরিকের পাশে থাকুন। মনে রাখুন, ধর্মকে মানুষই সৃষ্টি করেছে। ঈশ্বর আল্লা গড ইত্যাদির জন্মদাতা মানুষই। মানুষকে ভালোবাসুন। মানুষের পাশে থাকুন।  নিরাশাহরণ নস্কর  সম্পাদক, নবপ্রভাত।  সূচিপত্র প্রবন্ধ-নিবন্ধ-স্মৃতিকথা পয়লা বৈশাখ ।। সিদ্ধার্থ সিংহ নববর্ষকেন্দ্রিক মেলা, পার্বন, উত্সব, লোকাচার ।। সবিতা রায় বিশ্বাস নববর্ষ আবাহন ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে এবং বিভিন্ন দেশে ।। তুষার ভট্টাচার্য নববর্ষের সেকাল ও একাল ।। হিমাদ্রি শেখর দাস নববর্ষের হাল-হকিকৎ ।। শংকর ব্রহ্ম বোশেখি বাঙালি নাকি পোশাকি বাঙালি? ।। দিব্যেন্দু...

প্রবন্ধ ।। বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় ।। মাখনলাল প্রধান

বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় মাখনলাল প্রধান বাংলার শিল্প-সংস্কৃতির জগতে যাত্রা শিল্প তথা নাট‍্যশিল্পে মড়ক নেমে এসেছে । যাত্রা শিল্পের মড়কে শুধু কোভিড নয় তার বহুপূর্ব থেকেই অর্থনৈতিক বিপর্যয় , শিক্ষাক্ষেত্রে বন্ধ‍্যাত্ব এবং গ্ৰাম বাংলার পটপরিবর্তন শেষ পেরেক ঠুকে দিয়েছে। যাত্রা-শিল্পের লীলাভূমি ছিল গ্ৰাম বাংলা। গ্ৰামে প্রচুর যাত্রাপালা হত নানা উৎসবকে কেন্দ্র করে । জমিদারি ব‍্যবস্থা লুপ্ত হওয়ার পর গ্ৰামীণ মানুষের উদ‍্যোগে শীতলা পূজা,  কালীপূজা, দুর্গাপূজা, কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা, চড়ক ইত‍্যাদিকে উপলক্ষ‍্য করে যাত্রাপালার আয়োজন না হলে কেমন যেন ম‍্যাড়ম‍্যাড়ে লাগতো। সেই সঙ্গে কলকাতার বড়বড় কোম্পানির যাত্রাপালা ঘটা করে, টিকিট সেল করে হত মাঠে। খুব বড় মাপের খেলার মাঠ যেখানে ছিল না সেখানে ধানের মাঠ নেওয়া হত ‌। ত্রিশ-চল্লিশ হাজার মানুষ দেখতে আসত। স্পেশাল বাস পাঠাত  আয়োজক কর্তৃপক্ষ। বিনা ভাড়ায় বাসে যাতায়াত করত যাত্রার দর্শকেরা। কিন্তু বিকল্প ধানচাষ শুরু হলে জমিগুলো সময় মতো ফাঁকা পাওয়া গেল না । প্রথম দিকে ব‍্যাপকহারে ধান শুরু না হওয়ায় খুব একটা অসুবিধা হত না। বহুক্ষেত্রে  ধান কা...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। নবপ্রভাত ৮৫ ।। চৈত্র ১৪৩১ মার্চ ২০২৫

  সূচিপত্র নিবন্ধ ।। মরিয়ম মির্জাখানি: এক অনন্য গণিতসূর্য ।। ... নিবন্ধ ।। নারী দিবসে যা ভাবা উচিত ।। বিশ্বনাথ পাল প্রবন্ধ ।। প্রাচীনকাল থেকে নারীরা অবহেলিত, বঞ্চিত,... নিবন্ধ ।। আমার চোখে আদর্শ নারী ।। জয়শ্রী বন্দ্... ফিচার।। এই মুহূর্তে বাংলা সাহিত্যে নারীদের লেখালেখ... আফ্রিকার লোককথা ।। করোটিকে বিয়ে করা অবাধ্য মেয়েটি ... ছোটগল্প ।। মানবী ।। ভুবনেশ্বর মন্ডল নিবন্ধ ।। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে অন্যতম নারী মু... নিবন্ধ ।। প্রিয় মহিলা সাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবী ।। ... গল্প ।। উই ওয়ান্ট জাস্টিস ।। রবীন বসু প্রবন্ধ ।। নিপীড়িতা ।। শ্যামল হুদাতী ফিচার ।। রমণী রতন ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত প্রবন্ধ ।। নারী সমাজ : তখন-এখন ।। তপন মাইতি নিবন্ধ ।। বহমান কালের ধারায় নারী ।। দীপক পাল গল্প ।। আমার দুর্গা ।। অঞ্জনা গোড়িয়া (সাউ) গল্প ।। যোগ্য জবাব ।। সমীর কুমার দত্ত ছোটগল্প ।। আমি দুর্গাকে দেখেছি।। চন্দন দাশগুপ্ত গল্প ।। সম্পর্ক ।। গৌতম সমাজদার কবিতা।। নারী মানে ।। গোবিন্দ মোদক কবিতা।। নারী ।। সমর আচার্য্য ছড়া ।। নারী অসামান্যা ।। সৌমিত্র মজুমদার কবিতা ।। নারী দিবসে ।। বিবেকানন্দ নস্কর কবিতা ।। না...

প্রবন্ধ ।। ভিনগ্রহীদের সন্ধানে ।। শ্যামল হুদাতী

ভিনগ্রহীদের সন্ধানে  শ্যামল হুদাতী  ইতিহাসের শুরু থেকে বারবার মানুষকে একটা প্রশ্ন কুঁড়ে কুঁড়ে খায় – এই মহাবিশ্বে আমরা কি একা? পৃথিবীর মতো আরও গ্রহ রয়েছে, যেখানে মানুষের মতো বুদ্ধিমান প্রাণীরা বাস করে – এই সম্ভাবনা বরাবর মানুষকে মুগ্ধ করেছে। আমাদের প্রত্যেকের জীবনের কখনও না কখনও এই ভাবনা এসেছে। দীর্ঘ কয়েক দশকের গবেষণার পরও, এই বিষয়ে কোনও নিশ্চয়তা দিতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। জেমস ওয়েব মহাকাশ টেলিস্কোপ, বহু দূরের এমন কিছু গ্রহের সন্ধান দিয়েছে, যেগুলিতে প্রাণ থাকতেই পারে। তবে, নিশ্চিত কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে, আমেরিকার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাম্প্রতিক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, ভিনগ্রহীদের খুঁজতে বহু দূরে যাওয়ার কোনও দরকার নেই। তারা এই পৃথিবীতেই মানুষের ছদ্মবেশে মানুষের মধ্যেই বসবাস করতে পারে। আমরা ভিনগ্রহীদের যেমন কল্পনা করি, এরা তার থেকে আলাদা। এরা অনেকটাই, দেবদূতদের মতো। মানব জগতের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক প্রযুক্তিগত নয়, বরং জাদুকরি। মহাকাশে সৌরজগতের গ্রহ পৃথিবী ছাড়া অন্য কোথায় প্রাণ রয়েছে কি না তা নিয়ে চলছে বিস্তর গবেষণা। একই সঙ্গে পৃথিবী ছাড়া অন্য কোনো গ্রহে মানুষ বসবাস ক...

মাসের বাছাই

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬

  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠালে  অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে হলে ভালো। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # ...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯২তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩২ অক্টোবর ২০২৫

—: সম্পাদকীয় দপ্তর থেকে :— এই সংখ্যার জন্য লেখা এসেছিল প্রায় ১৮০টা। কিন্তু গুণগত মানে দুর্বল লেখার সংখ্যা বহু। আমরা নবপ্রভাতে নতুনদের কথা ভেবে বেশ কিছু দুর্বল লেখাও রাখি। কিন্তু সবসময় একই লোকের দুর্বল লেখা প্রকাশ করা অনুচিত বলে মনে করি। শেষ পর্যন্ত ৯৯ জনের লেখা রাখা গেল। যাদের লেখা প্রকাশিত হল না, তারা লেখাগুলি অন্য যেখানে খুশি পাঠাতে পারেন। বিশেষ কারণে এই সংখ্যার মুদ্রিত সংস্করণ প্রকাশিত হচ্ছে না। আমরা দুঃখিত। তবে মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি শীঘ্রই আসছে। সঙ্গে থাকুন। সকলকে উৎসবমুখর বর্ণময় শুভেচ্ছাসহ— —নিরাশাহরণ নস্কর, সম্পাদক, নবপ্রভাত। অনুরোধ : প্রকাশিত লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন, ছবি/স্ক্রীনশট নয়।  == সূচিপত্র == পড়া-লেখার ইতিহাস অনুসন্ধান।। তপন তরফদার উৎসব : মানুষের চিরন্তন আত্মপ্রকাশ।। কৃশানু ব্যানার্জি বাংলা : সভ্যতা ও সংস্কৃতির জন্মভূমি।। শ্যামল হুদাতী সমুদ্র আর অস্তিত্ব ।। সুব্রত চৌধুরী রাজা ছিলেন জুবিন গর্গ ।। গঙ্গা 'অনু'   আদ্যাশক্তি মহামায়ার বাংলা বারো মাসের বারো রূপ ।। অর্হণ জানা মেধাদাদুর আসর ।। রণেশ রায় বৈজ্ঞানিক মা...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯৩তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩২ নভেম্বর ২০২৫

সূচিপত্র বস্তু, চেতনা এবং কবি ।। সজল চক্রবর্তী দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত ।। রণেশ রায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট ও সন্নিহিত অঞ্চলের কথ্য শব্দ ।। অরবিন্দ পুরকাইত চাঁদে জীবন ।। শমীক সমাদ্দার অসমাপ্তি ।। মহুয়া হুই গ্যালাক্সির শব্দে ।। জাসমিনা খাতুন তিনটি কবিতা ।। দিবাকর সেন অপূর্ণতার শেষ অধ্যায় ।। সুপ্রিয় সাহা হাফ ডজন ছড়া ।। স্বপনকুমার পাহাড়ী স্বাপ্নিক অমলের ঘুৃম ।। সঞ্জয় দেওয়ান দুটি কবিতা ।। সৌমিত্র উপাধ্যায় পথ চলতি ✍️পার্থ প্রতিম দাস হেমন্তের বিষাদ ছুঁয়ে ।। শক্তিপদ পাঠক রাই আর বাবা ।। অদিতি চ্যাটার্জি স্থিতিশীল ।। রঞ্জিত মুখোপাধ্যায় হৃদয়ের শূন্য কোড ।। লিপিকা পিঙ্কি দে অমানিশা ।। সৌভিক মুখার্জী দৃষ্টিগত ।। শামীম নওরোজ জ্যান্ত ভূতের গপ্পো ।। পার্থ সারথি চট্টোপাধ্যায় ধুতরা ফুলের ঘ্রাণ ।। মজনু মিয়া তারা খসার আলোয় ।। তীর্থঙ্কর সুমিত উত্তরণে অন্তরায় ।। সমীর কুমার দত্ত প্রেম মুদ্রা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ধারা ।। লালন চাঁদ অন্যের ব্যথায় ব্যথি ।। জগদীশ মণ্ডল গর্ভ ।। শাশ্বত বোস ভ্রমণ বিষয়ক স্মৃতিকথা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত শাপে বর ।। সাইফুল ইসলাম রবিবার ।। সঙ্ঘমিত্রা দাস দুটি ...

দিদৃক্ষা ।। রাজেশ কে. চক্রবর্ত্তী

  দিদৃক্ষা রাজেশ কে. চক্রবর্ত্তী 'কাল একবার দেখা হতে পারে?' দশমীর দুপুরে খাটে আধশোয়া হয়ে নিজের ফোনটা ঘাঁটছিল দেবমাল্য; হোয়াট্‌সঅ্যাপের সার্চ বক্সে  র‍্যান্ডম সিক্যুয়েন্সে ক'খানা ডিজিট ইনপুট করতেই বিস্মৃতির অতল থেকে অপ্রত্যাশিতভাবে যে নামটা স্ক্রিনের সারফেসে ভেসে উঠল, এককালে দেবমাল্যের প্রায়োরিটি লিস্টে সবথেকে ওপরে পিন্‌ করা থাকতো এই অ্যাকাউন্টটা। 'অহনা দাশগুপ্ত'—গ্রেয়েড-আউট ডিপিটার ডানদিকে, নামটার তলায় নিস্প্রভ হরফে ভেসে থাকা ওর এই লাস্ট মেসেজটা বেশ ক'বছরের পুরনো, কিন্তু দেবমাল্যর স্মৃতির প্যান্ডোরা বাক্সটি উলটে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল। আরেকবার আপাদমস্তক শিহরিত হয় সে। প্রোফাইলটা খুলে ওপরে-নীচে স্ক্রল্‌ করে দেখে, ওদের পুরনো চ্যাটগুলো তেমনি আড়ষ্ট হয়ে পড়ে আছে, ওর মেসেজগুলোর পাশে ডাবল টিকগুলো এখনও জাজ্বল্যমান সবুজে ছোপানো, যেন এইমাত্র 'সিন্‌' করে রেখেছে অহনা! যেন এখুনি আবার হাত বোলালেই অহনা এসে খানিকটা রাগত ভঙ্গিতে চ্যাট করতে লেগে যাবে। দেবমাল্যের বুক ছাপিয়ে একটা নীরব দীর্ঘশ্বাস উঠে আসে! ছুটির এই আমেজটা লক্ষ্মীপুজো অব্দি গড়াবে—অফিস খুললেই তো আবার দমফাটা ব্য...

গুচ্ছকবিতা || শিশির আজম

  গুচ্ছকবিতা || শিশির আজম হুইসেল (মুরাকামি থেকে অনুপ্রাণিত) ♦ 'গভীর রাতে একটা হুইসেল কতটা গভীর হতে পারে তুমি কল্পনাও করতে পারো না,' ছেলেটা বললো, 'আশ্চর্য ঐ হুইসেলের মতো আমি ভালবাসি তোমাকে।' কিন্তু গভীর রাতে অন্ধকারে কখনও তো ঘুম ভেঙে যায়নি মেয়েটার, কখনও ও বিচ্ছিন্ন আর একা হয়ে যায়নি। ও কীভাবে অনুভব করবে গভীর রাতে ট্রেনের হুইসেল কতটা গভীর! নিউজ এজেন্সি ♦ একসময় আমরা খবর শুনতাম এখন দেখি স্বীকার করতে হবে খবর শোনার চেয়ে দেখার আনন্দ বেশি আলাদা উত্তেজনা নিউজ এজেন্সিগুলো এব্যাপারে তৎপর আর প্রতিযোগিতাপূর্ণ কোনটা নিউজ সেটা ওরাই ঠিক করে যেটা ওদের দরকার আর সেটাই আমাদের দেখানো হয় ধারাবাহিকভাবে সুচারু জ্যামিতিকতায় বিভিন্ন পদ মিশিয়ে খাওয়ানো হয় নতুন বাস্তবতা নির্মাণে যে বাস্তবতায় জায়গা নেই আমাদের ইতিহাস অন্বেষা স্বাধীনতার সমৃদ্ধি আর স্বাধীনতার কথা বলেই ওরা আমার ক্ষেতখামার পাহাড় আর নদীর দখল নিয়েছে তাহলে টিভিতে যে হাসিখুশি প্রাণবন্ত আমাদেরকে দেখানো হয় ওরা কারা এই প্রশ্ন করো নিজের কাছে আগুন নিয়ে খেলা ♦ আজও পুকুরে ছিপ ফেলে বসবো আমি ধীরে চুপ সূর্য আমার ঘাড়ে শ্বাস ফেলবে সারারাত ঘরের ভেতর ল্যাং...

বিদায়ের স্রোত ।। চয়ন মন্ডল

  বিদায়ের স্রোত চয়ন মন্ডল "বিজয়া দশমী—আনন্দের দিন, কারও কাছে যা হয়ে উঠল চিরন্তন বিদায়।" আজ বিজয়া দশমী। শিউলি ফুলের গন্ধে ভোরটা অন্যরকম। পাড়ার প্যান্ডেলে অদ্ভুত এক কোলাহল—মায়ের বিদায় যে আজ। শঙ্খধ্বনি, ঢাকের বাজনা আর উলুধ্বনিতে গমগম করছে চারদিক। একদিকে মা দুর্গার বিদায়ের বেদনা, অন্যদিকে আনন্দ ও মিলনমেলা। সারা বছরের অপেক্ষা শেষে এই দিনটিতে প্যান্ডেল ভরে উঠেছে মানুষের ভিড়ে। সকালের পূজার্চনা শেষ হতেই শুরু হয়েছে সিঁদুর খেলা। মহিলারা মায়ের প্রতিমাকে সিঁদুর পরিয়ে একে অপরের কপালে, গালে রাঙিয়ে দিচ্ছেন। ঢাকের তালে আর শাঁখ বাজনার আবেশে ভেসে যাচ্ছে পাড়া। শুরু হয়েছে প্রতিমা বিসর্জনের প্রস্তুতি। কিন্তু এসবের মধ্যে নেই অনুরাধা। কেউ তার বা মিনির খোঁজ রাখেনি। মুখার্জিদের দোতলা বাড়ির কোণের ঘরে বসে সে চোখের জল ফেলছে। সবার বাড়িতে আলোর রোশনাই, ভোগের গন্ধ, হাসি—শুধু তাদের ঘরটিতে নিস্তব্ধতা। গতবছর এই দিনেই তো অন্যরকম ছিল সবকিছু। অনুরাধা, সুজয় আর তাদের তিন বছরের মেয়ে মিনি পাড়ার প্যান্ডেলে ঢাকের তালে নেচেছিল, সিঁদুর খেলায় রঙে ভেসেছিল। বিকেলের দিকে প্রতিমা বিসর্জনের মিছিলে শামিল ...

কবিতা ।। অরণ্যকন্যা ।। অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়

  অরণ্যকন্যা অরিন্দম চট্টোপাধ্যায় অরণ্যকন্যার দৃষ্টির ভেতর বিষাদ বিন্দু ফোঁটা ফোঁটা জলের মতো গড়িয়ে যায়, হয়ে যায় কোন নদীপথ দৃষ্টি ভেঙে ভেঙে চলে যায় কোন এক শূন্য পথে অরণ্যকন্যার হৃদয়ের ভেতর ভাঙে যতো বৃক্ষপত্র নতুন পত্র পুষ্পের খোঁজ নেই ঠোঁট জুড়ে সমুদ্রকাঁপন বুদবুদের মতো অস্ফুট হয়ে উচ্চারিত হয় কোন অক্ষর শব্দ আর তাঁর শরীর থেকে ছড়িয়ে যায় হয়ে যায় একটা অদৃশ্য কবিতা...    ================== @ অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়,  বেহালা, কলকাতা -৭০০০৬০,  

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯১তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পাদকীয় দপ্তর থেকে এই সংখ্যায়  'শিক্ষা ও শিক্ষক' বিষয়ক বেশ কিছু লেখার পাশাপাশি রয়েছে বিচিত্র বিষয়ের আরও কিছু লেখা। সব মিলিয়ে সংখ্যাটি আপনাদের সমৃদ্ধ করবে, আপ্লুত করবে — এ বিষয়ে আমরা আশাবাদী। আপনাদের মতামত অবশ্যই জানাবেন। আমরা প্রতীক্ষিত।            আগামী অক্টোবর ২০২৫ সংখ্যা 'উৎসব সংখ্যা' হিসাবে প্রকাশিত হবে। ওয়েব সংখ্যার পাশাপাশি নির্বাচিত লেখাগুলি নিয়ে একটি pdf এবং তার মুদ্রিত সংস্করণও প্রকাশিত হবে। তাই অপ্রকাশিত ভালো লেখা পাঠান। বিশেষ কোনও বিষয় নেই। প্রবন্ধ-নিবন্ধ-ফিচার ২০০০ শব্দ, গল্প ১২০০ শব্দ, অণুগল্প ৫০০ শব্দ, কবিতা-ছড়া ২৪ লাইনের মধ্যে হলে ভালো। ইমেলঃ nabapravatblog@gmail.com           বিস্তারিত বিজ্ঞপ্তি আসবে। সামাজিক মাধ্যমে আমদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন। সময় মতো সব সংবাদ পেয়ে যাবেন।  শারদ উৎসবের দিনগুলি সকলের আনন্দে কাটুক এই কামনা করি। —নিরাশাহরণ নস্কর সম্পাদক: নবপ্রভাত মোঃ ৯৪৩৩৩৯৩৫৫৬ Whatsapp Group:  https://chat.whatsapp.com/ AIpj98JKbloFSpeqMcpr6j Facebook Page:  https://www.facebook.com/ share...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো,  তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) য...

শেষ বিকেলের আলো ।। সৈকত প্রসাদ রায়

  শেষ বিকেলের আলো সৈকত প্রসাদ রায় রানাঘাট শহরের প্রান্তে ছোট্ট এক পাড়া বিশ্বাসপাড়া। সেই পাড়ার পুরোনো ভাঙাচোরা বাড়িটায় থাকেন পুষ্পরাণী ভট্টাচার্য— বয়স পঁয়ষট্টির কোঠায়। সবাই তাকে "পুষ্পদি" বলেই চেনে। একসময় প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতা করতেন, এখন অবসর নিয়েছেন। প্রতিদিন বিকেলে পুষ্পদি বারান্দায় বসে চা খান। ছোট একটা টেবিল, কয়েকটা পুরোনো বই, আর একখানা নীল কাঁচের ফুলদানি — তার নিত্যসঙ্গী। বারান্দার সামনেই একটা গলি, যেখান দিয়ে প্রতিদিনই স্কুল ছুটির পরে বাচ্চারা হইচই করে ছুটে যায়। পুষ্পদির একমাত্র ছেলে অনিরুদ্ধ — কলকাতায় চাকরি করে। ছেলেটা আধুনিক, নিজের সংসার আছে, স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ব্যস্ত। বছরে হয়তো একবার আসে, তাও কিছুক্ষণ বসে আবার চলে যায়। পুষ্পদি মুখে কিছু বলেন না, কিন্তু বুকের ভেতরে একটা কষ্ট জমে থাকে। সেই বিকেলটা অন্যরকম ছিল। আকাশে ধুলো, গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা। হঠাৎ পুষ্পদির চোখে পড়ে — রাস্তায় এক কিশোর বসে আছে। বয়স বারো-তেরোর বেশি নয়। মলিন জামা, পায়ে ছেঁড়া চটি। ছেলেটা একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে পুষ্পদির বাড়ির গেটে ঝুলে থাকা পুরোনো নোটিশবোর্ডটার দিকে, যেখানে একসময় লেখা ছিল — "পুষ্পরাণী ভ...