Skip to main content

রণেশ রায়ের প্রবন্ধ



কবির উপলব্ধির প্রেক্ষাপটে ভারতের জাতীয় সংকট


বাংলা সাহিত্যের প্রবাদ পুরুষ কবি মধুসূদন দত্ত ইংরেজী ভাষার প্রতি মোহগ্রস্ত হয়ে বিদেশি ভাষায় লিখে কবি হিসেবে বিশ্বজোড়া খ্যাতি অর্জনের লোভে পাড়ি দেন পশ্চিমে। অল্পদিনের মধ্যে উপলব্ধি করেন মাতৃভাষায় সাহিত্যচর্চাই  কারও সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটাতে পারে। বিদেশী ভাষা এর উপযুক্ত ক্ষেত্র হতে পারে না। তিনি মাতৃভাষায় সাহিত্যচর্চা কখন-ও ছাড়েন নি। তাঁর উপলব্ধি তাঁকে ফিরিয়ে আনে দেশে। মাতৃভাষায় কাব্যচর্চা তাঁর প্রতিভার স্ফুরণ ঘটায়। তাঁর অমিতাক্ষর ছন্দ, বাংলায় লেখা মহাকাব্য, সনেট বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছে, অলংকৃত করেছে, বিশ্ব সাহিত্যের দরবারে তাকে মহিমান্বিত করেছে। আজ ইংরেজিতে মোহগ্রস্ত বাঙ্গালী সমাজের কাছে এই সত্যটা আবার নতুন করে তুলে ধরা দরকার। আমাদের  কাছে কবির উপলব্ধির বিষয়টা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এটা যে শুধু সাহিত্য চর্চার জগতে একটা ভাষাকে টিকিয়ে রাখার প্রশ্ন তা নয়, নিজেদের সত্তা বাঁচিয়ে রাখা একই সঙ্গে দেশের স্বার্বভৌমত্ব রক্ষা করার প্রশ্নের সঙ্গে যুক্ত। নিজেদের স্বাধীন শক্তপোক্ত অর্থনীতি গড়ে তোলার স্বার্থেও এটা দরকার।
         
বলে রাখা দরকার যে বিদেশি সাহিত্য চর্চায় আমাদের আপত্তি নেই। বরং আমরা দেখি যে মধুসূদনের বিদেশি সাহিত্য চর্চা বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছে। কবিতার জগতে ছন্দ ও লয়ে বিশেষ মাত্রা যোগ করেছে। কিন্তু মাতৃ ভাষার ওপর দখল রেখেই সেটা করা সম্ভব। মাতৃ ভাষার ওপরে দখল রাখতে পারলেই সাহিত্য চর্চায় বিদেশী ভাষার ওপর দখল  আসে। আজ আমাদের ভাষার জগতে দখলদারদের প্রতিযোগিতা আগ্রাসী ব্যবসার স্বার্থে, সাহিত্য চর্চার জন্য নয়। দৃষ্টিভঙ্গি হ`ল ভাষাকে ব্যবসা জগতের দাস হিসেবে ব্যবহার করা। এখানেই আমাদের আপত্তি। এতে পেটের খোরাক জুটতে পারে কিন্তু মনের খোরাক নয়। আরও বলে রাখা দরকার যে বিষয়টা নেহাৎ বাংলা ভাষা নয়, বাঙ্গালিয়ানা চাষের বিষয় নয়। মানুষের জীবনে মাতৃভাষার অপরিসীম গুরুত্বের বিষয় তা যে  ভাষা-ভাষীর মানুষই হোক না কেন। তার সৃজনশীলতার পথ খুলে রাখার বিষয়। কবি মধুসূদনের উপলব্ধিটা যে কত গভীরে তা বোঝা যায় মৃত্যুকালে তিনি যে সমাধিলিপি তাঁর মাতৃ ভাষায় লিখে লিপিবদ্ধ করে যান তাতে। সেখানে তিনি তার পূর্বপুরুষকে স্মরণ করেন। জন্মভূমিকে মাতৃসম জ্ঞান করে লিখে যান। এখানে যেন তিনি প্রতিটি বঙ্গবাসীকে বলেন তার পরিচয় তিনি বাঙালি:




সমাধি লিপি ( পৃ :১৯৬ )
(কবি মধুসূদন দত্ত)  

দাঁড়াও পথিক-বর, জন্ম যদি তব
বঙ্গে ! তিষ্ঠ ক্ষণকাল ! এ সমাধিস্থলে
( জননীর কোলে শিশু লভয়ে যেমতি
বিরাম ) মহীর পদে মহানিদ্রাবৃত
দত্তকুলোদ্ভব কবি শ্রীমধুসূদন !
যশোরে সাগরদাঁড়ি কবতক্ষম-তীরে
জন্মভূমি, জন্মদাতা দত্ত মহামতি
রাজনারায়ণ নামে, জননী জাহ্নবী।

মৃত্যুর প্রাক্কালে তাঁর এই উপলব্ধিটা আগেই প্রকাশ পেয়েছিল যখন তিনি লিখেছিলেন:

                                             
                      বঙ্গদেশে জন্ম মোর
                      কেউ ভাবে না পর,
                    আমি সেথায় সাত রাজার ধন
                      সবাই যে মোর আপন,
                     তাদের প্রেমে ধন্য আমি
                        অধম আমি লো,
                      তাদের আমি বাসি ভালো
                        নাই যে তাতে গোল,
                        তবু ঝরে অশ্রুধারা
                 দুচোখ ভরা জল;
                       প্রিয়া আমার ওই সুদূরে
                  তার বিরহে পাগল আমি।  
                      ব্যাকুল আমি যার তরে
                  সে জেনো মোর জন্মভূমি।
  
     (সেই যেন মোর জন্মভূমি
রণেশ রায়
      মধুসূদন দত্তের AN ACROSTIC
                   কবিতা অবলম্বনে পৃ:৪১৮)


আজকে শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয় সারা ভারতে দেশপ্রেমিক বিভিন্ন ভাষাভাষীর প্রতিটি মানুষের কাছে কবির এই উপলব্ধিতটা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। ভারতের আর্থ- সমাজিক জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে বিদেশি হানাদারী উত্তরোত্তর চেপে বসেছে। নতুন করে বণিকের মানদন্ড আজ রাজদণ্ডে রূপান্তরিত হতে চলেছে। যে 'স্বাধীনতা' আমরা লাভ করেছিলাম বলে আমরা মোহগ্রস্থ ছিলাম তার চরিত্র উন্মোচিত হচ্ছে। অর্থনীতিকে বিদেশি বণিকের স্বার্থে  বিকিয়ে দিয়ে আমাদের শিল্পসাহিত্যের ওপর নেমে এসেছে ঘাতকের খর্গ। ইংরেজি ছাড়া চলবে না আর তার স্বার্থে মাতৃ ভাষার গঙ্গা প্রাপ্তিতে শোক করার কিছু নেই এমন একটা মনন তৈরি করার চেষ্টা চলছে সরকারি সাহায্যে সব স্তরে। আর এটাকে মদত করা হয় কর্পোরেট দুনিয়ার ব্যবসার স্বার্থে। প্রধানত দুটো কারনে। প্রথমত মানুষের শৈল্পিক মনোনটাকে যদি সম্রাজ্যবাদের দাসে রূপান্তরিত করা যায় তবে শাসন করতে সুবিধা হয়, তাদের গৃহীত নীতির প্রতি অনুগত করে তোলা যায়। তাতে কর্পোরেট পুঁজি অক্লেশে ব্যবসা করতে পারে। দ্বিতীয়ত শিক্ষাকে ব্যবসার জগতে রূপান্তরিত করা যায়। আজ ভারতসহ এশিয়া আফ্রিকার সব দেশে শিক্ষাকে ব্যবসার ক্ষেত্রে পরিণত করা হয়েছে। বিশ্বায়নের কল্যানে তাকে বেসরকারিকরণ করা হয়েছে। শিক্ষা ক্ষেত্রে বিদেশি বিনিয়োগ অবাধে ঢুকছে। পরিবারের বাজেটে শিক্ষার ওপর খরচের বহর কয়েকশতগুন বৃদ্ধি পেয়েছে যা সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। ইংরেজি মাধ্যমকে এমনভাবে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে যাতে একজন গরিব পরিবারের সন্তানকেও বাবা মা ঘটি বাটি  বিক্রি করে সর্বশান্ত হয়ে ইংরেজি মাধ্যমে পড়াতে বাধ্য হয়। সেভাবেই মানুষের মননকে প্রস্তুত করা হচ্ছে। একেই আমরা ঔপনিবেশিক মনন বলি যা গড়ে উঠেছিল ব্রিটিশ আমলে। আজ আমরা তার উত্তরাধিকারী। দীর্ঘ দুশো বছরের ইংরেজ শাসনে ভারতে যে ঔপনিবেশিক মনন গড়ে উঠেছে তার থেকে এখনও আমরা মুক্ত তো হতেই পারিনি বরং ইংরেজদের দাসত্বের সেই মনন আজও আমাদের আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে রেখেছে। যতই ১৫ই আগস্ট মহাসমারোহে পালন করি না কেন এখনও আমাদের জীবনের সর্বক্ষেত্রে সাম্রাজ্যবাদী হানাদারী। আজ মাতৃভাষাকে অস্বীকার করে ইংরেজির মাধ্যমে নিজেদের উপযোগী করে তুলে রুটি রোজগারের সুব্যবস্থা করার যে মনন তা ভারতের সব ভাষাভাষী মানুষকে নিজেদের সত্তাকে বিসর্জন দিতে উদ্যত করেছে। আর এই মনন যত আমাদের ওপর চেপে বসবে তত ব্যবসায়িক জগতের সুবিধা। বিদেশি বহুজাতিকদের রাজত্বের ভীত তত শক্ত পোক্ত হয়। আমরা বেঁচে থাকি মেরুদন্ডহীন এক জীব হয়ে। দাসত্বই যেখানে আমাদের শেষ পরিণতি। তাই আজ আমাদের মাতৃভাষাকে বাঁচিয়ে রাখা তাকে পরিচর্চা করে সামাজিক জীবনে কাজে লাগানোর প্রশ্নটাকে বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে ভাবতে হয়। এটা নেহাৎ বাঙালিপনা চর্চার প্রশ্ন নয়। নিজেদের দেশকে আত্মমর্যাদা বজায় রেখে স্বাধীন ভাবে গড়ে তোলার প্রশ্ন। তবেই দেশ বাচঁবে দেশের আপামর মানুষের সুস্থ জীবনযাপন নিশ্চিত হবে। কবির উপলব্ধিটা এই বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে বিচার করা প্রয়োজন। তাঁর কবিতার ভাষায় এই তাগিদটাই ফুটে ওঠে যখন  তিনি লেখেন:



হে বঙ্গ  ভাণ্ডারে তব  বিবিধ রতন; ---
তা সবে,( অবোধ আমি ! ) অবহেলা করি,
পর-ধন লোভে মত্ত, করিনু ভ্রমণ
পরদেশে, ভিক্ষাবৃত্তি কুক্ষণে আচরি।
কাটাইনু বহু দিন সুখ পরিহরি !
অনিদ্রায়, নিরাহারে সঁপি কায়, মন :,
মজিনু বিফল তপে অবরেণ্যে বরি;---
কেলিনু শৈবালে; ভুলি কমল কানন !
স্বপ্নে তব কুললক্ষ্মী কয়ে দিলা পরে---
`` ওরে বাছা মাতৃ-কোষে রতনের রাজি,
এ ভিখারি-দশা তবে কেন তোর আজি ?
যা ফিরি, অজ্ঞান তুই, যা রে ফিরি ঘরে !``
পালিলাম  আজ্ঞা সুখে; পাইলাম কালে
মাতৃ-ভাষা-রূপে খনি, পূর্ণ মণিজালে।

দ্রষ্টব্য: মধুসূদন রচনাবলী, সাহিত্য সংসদ
ষষ্ঠ মুদ্রণ আগস্ট ২০১২,পৃ:১৫৯

উপরোক্ত কবিতায় কবি স্বীকার করছেন বাংলা ভাষার যে সম্ভাবনা তাকে আশ্রয় করে যে সাহিত্য সৃষ্টির প্রয়োজন সেটা অস্বীকার করে তিনি কি মারাত্বক ভুল করেছেন। তাঁর এই কবিতার মধ্যেই ধ্বনিত হয় কবি রবীন্দ্রনাথের বার্তা:  মাতৃভাষা মাতৃদুগ্ধ। আমাদের আজ ঘরে ফেরার ডাক এসেছে। শুধু বাঙালিদের জন্য এটা সত্যি নয়। এটা সত্যি সব ভাষাভাষী মানুষের জন্য। আজকে আমাদের যে মনন আমাদের শিল্প সংস্কৃতি অর্থনীতি সব কিছুকে গ্রাস করতে চলেছে সেটা কি বলে? সেটা বলে ভারতবাসীর জীবনে ইংরেজি ছাড়া গতি নেই। ইংরেজি ছাড়া জীবনজীবিকা অনিশ্চিত, ইংরেজি ছাড়া প্রযুক্তি উন্নতির পথ বন্ধ তাই অর্থনীতি পঙ্গু, ইংরেজি ছাড়া শিক্ষা হয় না। আমাদের আরও ধারণা তৈরি হয়েছে যে সারা পৃথিবী ইংরেজির বশ। সব দেশেই যেন ইংরেজি অনিবার্য। ইংরেজিকে নিঃশর্তে গ্রহণ করাটা বাধ্যবাধকতা। ইংরেজি বাদ দিয়ে দুনিয়ার বাজারের প্রবেশ পথ বন্ধ। সুতরাং ইংরেজি বর্জন করা মানে নিজেকে বন্দি করে রাখা। ইংরেজির ডানা মেলেই পৃথিবীর আকাশে অবাধ বিচরণ সম্ভব। সুতরাং খাওয়া দাওয়া চাল চলল ব্যবসাবাণিজ্য শাসন কাজ সর্বোপরি শিল্প সাহিত্য শিক্ষার জগতে ইংরেজির কর্তৃত্ব মেনে নেওয়া অনিবার্য। আজকের বিশ্বায়নের যুগে এটাই সত্য। আমরা আজ কম বেশি সবাই সামাজিক জীবনে এই প্রচারের শিকার। এই প্রচারটা যে কত মিথ্যে সেটা আজকের দুনিয়ার দিকে তাকালে জানা যায়। আমরা আমাদের অজ্ঞতার দরুন দুনিয়ার চেহারাটা দেখতে পাই না বা দেখলেও সেদিক থেকে মুখ ঘুরিয়ে থাকি। আসুন সত্যতা একবার পরখ করে নেওয়া যাক।

বলা হয়ে থাকে যে আজ পৃথিবীর সব দেশই  ইংরেজিকে শিক্ষার বাহন হিসেবে মেনে নিয়েছে তাদের উন্নতির স্বার্থে কৃষ্টির স্বার্থে। ব্যাপারটা মোটেই তা নয়। এককালের ঔপনিবেশিক দেশগুলো যারা এখনও সাম্রাজ্যবাদের দখলদারির শিকার সেই সব দেশগুলোতেই মাতৃভাষা ত্যাগ করে ইংরেজিকে আশ্রয় করে টিকে থাকার ব্যর্থ চেষ্টা চোখে পড়ে। অথচ যারা সাম্রাজ্যবাদের বন্ধন থেকে নিজেদের মুক্ত করে উন্নয়নের পথে অগ্রসর হয়েছে তারা নিজের মাতৃভাষাকে আশ্রয় করেই উন্নতি করেছে। যেমন জাপান বা চীন। এমনকি তারা প্রযুক্তিতেও নিজেদের মাতৃভাষায় আত্মনির্ভর হয়েছে। ইংরেজিকে ঢুকতে দেয় নি। চিনে গুগুল ব্যবহৃত হয় না। তাদের ভাষাতেই তারা কম্পিউটার শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে উঠছে। জাপানে তারা তাদের মাতৃভাষাকেই শিক্ষার  বাহন হিসাবে ব্যবহার করে। এইসব দেশে সাধারণ মানুষ ইংরেজি খুব একটা জানে না। এসব দেশে ব্যবসা বাণিজ্যের ভাষাও মাতৃভাষা।এবার আসা যাক ইউরোপে। ইউরোপে বিভিন্ন প্রত্যেক দেশই প্রায় নিজের নিজের মাতৃভাষার মাধ্যমেই দেশ চালায়। ফ্রান্স বা জার্মানের মত দেশে তো ইংরেজি সেভাবে ঢুকতেই দেওয়া হয়নি। শিল্প বিপ্লবের প্রাক্কালে ব্রিটেন যখন মুক্ত বাণিজ্যের ঢক্কানিনাদ বাজিয়ে চলেছে আজকের বিশ্বায়নের মত তাকে ভারতের মত দেশে আমাদের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে তখন জার্মানের মত দেশ মুক্ত বাণিজ্য নয় সংরক্ষণ নীতি অনুসরণ করে উন্নতির শিখরে পৌঁছেছিল। অন্যান্য ইউরোপের দেশগুলো নিজেদের প্রয়োজনে যেখানে দরকার মুক্ত বাণিজ্য যেখানে দরকার সংরক্ষণ নীতি অনুসরণ করেছিল। এমনকি বৃটেনও সম্পূর্ণ মুক্ত অর্থনীতি চালু করে নি। এমনকি নরওয়ের মত এককালের ইংরেজের অধীনে থাকা দেশও তাদের স্বাধীন ভাষানীতি নিয়ে আজ মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে। ফ্রান্স স্পেন দক্ষিণ আমেরিকার মত দেশে ফরাসি, স্প্যানিশ ও  ল্যাটিন ভাষায় সাহিত্য চর্চার গৌরব ইংরেজদের ইংরেজি ভাষায় সাহিত্য চর্চা থেকে কম গৌরবময় নয়। অষ্টাদশ শতাব্দীতে মাতৃ ভাষায় শিল্প সাহিত্য চর্চায় ফ্রান্স শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছিল। ডেনিশ ভাষা ডেনমার্কে তাদের জীবনের সবক্ষেত্রেই উন্নতিতে সাহায্য করেছে। সোভিয়েত বিপ্লবের পর ভাঙাচোরা বিভিন্ন দেশকে একজোট করে সোভিয়েত গঠন করে আঞ্চলিক ভাষাকে যথাযত মূল্য দিয়ে গড়ে তোলা হয়েছিল বৃহত্তর সোভিয়েত রাশিয়া। রাশিয়ান ভাষার সাহায্যেই তাদের শিল্প সাহিত্য বিজ্ঞানে বিপ্লব পরবর্তী পনেরো বছরে যে উন্নতি করেছিল তাকে চোখ ধাঁধানো উন্নতি বলে ব্রিটিশ আমেরিকা সবাইকে স্বীকার করতে হয়েছে। সুতরাং ইতিহাস যা প্রচার করা হচ্ছে তার বিপরীতটারই সাক্ষ্য বহন করে। আরো উল্লেখযোগ্য যে ব্রিটিশরা উপনিবেশ স্থাপন করার আগে ভারত ইউরোপের দেশগুলো থেকে উন্নত ছিল। ভারতে প্রাকৃতিক সম্পদের অভাব ছিল না। শিল্প সাহিত্যে উন্নতি করছিল। সেই অবস্থায় ঔপনিবেশিক দখলদারি ভারতকে উন্নতির লড়াইয়ে পেছনে ফেলে দেয়। ইংরেজদের ঔপনিবেশিক শিক্ষানীতি, ইংরেজি চাপিয়ে দেওয়ার নীতি সাম্রাজ্যবাদের স্বার্থ রক্ষা করে চলে। ইংরেজদের এই নীতির অনুগামী কবি মধুসূদনের ফ্রান্সে গিয়ে চোখ খোলে। উনি প্রত্যক্ষ করেন মাতৃভাষাকে অবলম্বন করে কি ভাবে একটা দেশ শিল্প সাহিত্যে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করতে পারে। তাঁর নিজের প্রতিভার স্ফুরণ ঘটা সম্ভব মাতৃভাষায়, বিদেশি ভাষায় নয়।তাঁর আফসোসের শেষ থাকে না। তিনি পশ্চিমের জগতে প্রতি তাঁর মোহগ্রস্ততার কথা খোলাখুলি স্বীকার করেন। নিজের দেশ সম্পর্কে হীনমন্যতার কথা স্বীকার করে তিনি তাঁর অপরাধবোধটা, তার হতাশাটা  তুলে ধরেন অকপটে নিচের কবিতায় :

ছন্নছাড়া                                     
     কবি মধুসূদন দত্তের AN ACROSTIC থেকে  একটি ইংরেজি কবিতার ভাবানুসারে
       পৃষ্ঠা ৪১৮
      [ ৮ ]
                                                                                                                                                        
আমার আচ্ছন্ন  চেতনা                                                
লালায়িত সমুদ্র বিহারে,
আমারে আপ্লুত রাখে
সুদূরের সাগর মোহনা,
সবুজে সবুজে ভরা
সেই উপত্যকা
যে  থাকে ঘেরা
পাহাড়ে পাহাড়ে
আমি  হয়ে পড়ি  নামগোত্রহীন,
আত্নীয় বর্জিত কে সে অধম ;    
তবু ঢেউয়ে ঢেউয়ে  ভেসে
পাড়ি দিতে চাই সিন্ধু  
দেখি না ঘরের  দাওয়ায
একটি শিশির  বিন্দু`।
তাহার  উন্মাদ ভাবনা  
পীড়া দেয়   তাকে ,
যশের কাঙাল যে সে !
নিশ্চিত সমাধি তরে  
আজ সে ভাসে;
অবোধ সন্তান সে, মা
তারে  তুমি করিও  ক্ষমা।

উপরোক্ত ইতিহাসের প্রেক্ষাপটে প্রায় দুশো বছর পরে ভারতের প্রেক্ষাপটে কবি মধুসূদনের উপলব্ধিটা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। আজ ভারতে বিশ্বায়নের খাড়া নেমে এসেছে। সাম্রাজ্যবাদের জায়গা নিয়েছে নয়া সাম্রাজ্যবাদ। বেসরকারিকরণ ঘটে চলেছে সর্বক্ষেত্রে। এমনকি সামরিক ও প্রতিরক্ষা বিভাগকে উন্মোচিত করে দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষাকে ব্যবসার অন্যতম বৃহত্তম ক্ষেত্রে পরিণত করা হচ্ছে যেখানে বহুজাতিক সংস্থার খবরদারি। ইংরেজি ভাষাকে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে। মানুষের মনন প্রক্রিয়ায় নেমে এসেছে এক দৈন্যতা দাসত্ব। মাতৃভাষায় পরিচালিত স্কুলগুলো উঠে যেতে বসেছে। আনুষ্ঠানিক শিক্ষার মানও নেমে গেছে তলানিতে। শিক্ষা হয়ে দাঁড়িয়েছে পুঁজির মৃগয়া ক্ষেত্র। খরচ সাপেক্ষ এক ব্যবসায়িক শিক্ষা মুষ্টিমেয় মানুষের করে খাওয়ার ক্ষেত্র হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ব্যাপক সাধারণ মানুষের ভবিষ্যৎ তলানিতে পৌঁছেছে। আর মাতৃভাষার ওপর বৈরাগ্য সৃষ্টি করা হচ্ছে। প্রচার চলছে যারা ইংরেজি শিখছে না তাদের ভবিষ্যৎ থাকছে না। এ প্রচারও মিথ্যা প্রচার। দেখা যায় গরিবঘরের মানুষ আজ বাধ্য হচ্ছে বিপুল খরচ করে সন্তানদের ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে ভর্তি করতে। কিন্তু তারা বেশিদূর টানতে পারে না। ইংরেজি মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক পরীক্ষা নির্ভর পড়াশুনোতে ছেলেমেয়েদের বাড়িতে দেখবার কেউ থাকে না। তাদের নির্ভর করতে হয় স্কুল খরচের পর নম্বর পাইয়ে দেবার উপযুক্ত কোচিংয়ের ওপর যেটা প্রচুর খরচ সাপেক্ষ। স্কুলের বিপুল খরচের পর এই বিপুল খরচ তারা বহন করতে পারে না। তাদের তথাকথিত এই শিক্ষা প্রহসনে পরিণত হয়। যারা খরচ করতে পারে তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নেমে তারা পেরে ওঠে না। এদিকে তারা বাংলা মাধ্যম হলে যেটা শিখতে পারত সেটাও পারে না। তবে সরকারি অনুগ্রহে পাশের সার্টিফিকেট পাচ্ছে যা চাকরির জগতেও আজ অকেজো। আমাদের যাদের বয়স হয়েছে তাদের অভিজ্ঞতা বলে সাম্প্রতিক অতীতেও ইংরেজি মাধ্যমে না পড়েও বাংলায় শিখে ছেলেমেয়েরা ব্যাপক হারে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে আসত। তারা দ্বিতীয় বিষয় হিসেবে যা ইংরেজি শিখত তার সাহায্যে উচ্চ শিক্ষায় যেত যা তাদের রুটি রোজগার উপায়ের জন্য যথেষ্ট ছিল। বাংলাটা নিজের মাতৃভাষা ছিল বলে তাদের ভাবনার জগৎটা অনেক প্রসারিত ছিল। পরবর্তী কালে ইংরেজির খামতিটা মিটে যেত। উপরন্তু তাদের শিল্প সাহিত্যে অনুরাগটা বাড়ত। এমন কি বিদেশি সাহিত্য চর্চায় যারা মনোযোগ দিত, তাদের সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়ে উঠত। কিন্তু ইংরেজি মাধ্যমে পড়ে ভালো করলেও বেশি নম্বর পেলেও সাহিত্য জগতের প্রতি বিরাগ বাড়ছে আজকের শিক্ষা ব্যবস্থায় যদিও যে মুষ্টিমেয় নিজেদের চাকরির জন্য প্রস্তুত করতে সক্ষম হচ্ছে তারা প্রচুর টাকা রোজগার করছে। কিন্তু গরিবদের বড় অংশ ছিটকে যাচ্ছে। তাই ব্যবহারিক জীবনের উপার্জনের সুবিধার দিক থেকে দেখলেও পয়সাওয়ালা ঘরের ছেলে মেয়েরাই আজ বেশি সুযোগ পাচ্ছে। আপেক্ষিক বৈষম্য বাড়ছে। বরং সরকার যদি মাতৃভাষায় শিক্ষাকে আরো উন্নত করতে গবেষণার মাধ্যমে ও চর্চার মাধ্যমে বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষাকে আরো সমৃদ্ধ করে তুলত আর পাশাপাশি প্রয়োজনের খাতিরে আগের মত ইংরেজি ভাষাটা দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে আরো ভালোভাবে পড়বার ব্যবস্থা রাখতো তবে শিক্ষার জগৎটার এই দুরবস্থা হতো না। এটাতো গেল আনুষ্ঠানিক দিক দিয়ে মাতৃভাষা চর্চার গুরুত্ব। এবার কবি মধুসূদনের উপলব্ধির প্রেক্ষাপটে বাংলা তথা মাতৃভাষার তাৎপর্য কি সেটা সংক্ষেপে আলোচনা করে নেব।

উল্লেখযোগ্য যে শুধু মধুসূদন নন তখন অনেকেই তাদের যৌবনে ইংরেজ সভ্যতায় মুগ্ধ হন। এমনও মনে করতেন ইংরেজদের সভ্য আইনের শাসনেই ভারত ও ভারতবাসীর কল্যাণ। ইংরেজিই এই শিক্ষা সভ্যতাকে  বহন করে। রবীন্দ্রনাথ ইউরোপীয় সভ্যতার প্রতি অনুরক্ত ছিলেন। তবে এই সভ্যতার বর্বর দিকটাও তাঁর চোখ এড়ায় নি। সভ্যতার সংকট বইতে তিনি সেটা প্রকাশ করন। আর মাতৃভাষা ছিল তাঁর কাছে মাতৃ দুগ্ধ। শুধু কথা বলা নয় মাতৃভাষা মানুষের এক গভীর মনন প্রক্রিয়া সৃষ্টি করে তাকে পুষ্ট করে। মানুষের স্মৃতির উদ্যানে মাতৃভাষা প্রস্ফুটিত সেই ফুল যার বর্ণ গন্ধ আর রূপে স্মৃতির বাগান সেজে ওঠে। মাতৃ ভাষায় মানুষ স্বপ্ন দেখে কল্পনা করে। এই ভাষায় চিন্তা ভাবনা তাকে সম্পূর্ণতা দিতে পারে। এটা মানুষে সহজাত বিকাশে সাহায্য করে। কিন্তু বিদেশি ভাষা আরোপিত। মাতৃভাষায় সহজাত সম্ভাবনার বিকাশ না ঘটলে বিদেশি ভাষা আত্মস্থ করা যায় না। সে বাইরের অতিথি হিসেবেই থেকে যায়। একটা জাতির জাতিসত্তা মাতৃভাষা ছাড়া লালিত হতে পারে না। মাতৃভাষার ওপর দখল থাকলেই বিদেশি ভাষাকে আত্মস্থ করা যায়। ঠিক যেমন নিজের সত্তা থাকলে আত্মসম্মান বোধ থাকলেই অন্যকে যথাযথ মর্যাদা দেওয়া যায় তার ভালো মন্দ বিচার করা যায়। না হলে সবটাই হয়ে দাঁড়ায় মেকি। আর এই উপলব্ধিটাই প্রকাশ পায় মধুসূদনের একটা কবিতায় যার বাংলা অনুবাদটা নিচে দেখে নিতে পারি:

            
বিরহের গান গাহিব না আর
     মধুসূদন দত্তের AN ACROSTIC থেকে একটি কবিতা অনুসরণে
          পৃ ৪১৮
         [ ৭ ]

           দিগন্ত সুন্দরী
            প্রিয়তমা আমার,
             তুমি পশ্চিমের পরী
             আমি পানিগ্রাহী তোমার।
       
             প্রিয়া কি জানে
            শোকে প্রিয় যে ভাসে,
            তার প্রত্যাখানে    
       হৃদয় বিদীর্ণ  দীর্ঘশ্বাসে।

            তুমি কি বোঝো না
           তার প্রেমে নেই বঞ্চনা !
         প্রত্যাখ্যাত সে যে।     
           তার প্রেম, অমর সে             
            যাকে বোঝ না তুমি,  
             কাঁদে সে হতাশে।
  
           তবু সে,
         আজও তোমায় ভালবাসে।
           
         হে প্রিয়ে,
          তুমি তার হতাশে
          তুমি তার দীর্ঘশ্বাসে
           তুমি ফের বাতাসে।

         তবু সে,
          তোমায় ভালবাসে।
           
        হে প্রিয়তমা
      নিঠুর হৃদয়হীনা   
          তুমি কি ভেবেছ যথা  
        কাঙাল এই অভাগার কথা,
        হতাশায় তার,
        কখন-ও বাজে না  
          তোমার হৃদয় বীণা?
         দুর্ভাগ্য এই অভাগার,  
       শোকস্তব্ধ, আজ সে দুখি।
        
        তবু সে,
        তোমায় ভালবাসে।  
              
         মায়াবী ললনা
        তুমি যে হৃদয়হীনা,
         তোমার মায়ায়  
         ছেড়েছে আপন ঘর,  
         তার প্রেম যে অমর,
         তার বিষাদ বেদনায়  
         হৃদয় তোমার   
        ভরে নাকি করুনায়  ?

          হে বিদেশিনী
          তোমায় ,
          সে আজও ভালবাসে।  

        ও ! পুবের পরী
           ক্ষম তারে,
        চেনেনি সে তোমারে গৃহদ্বারে,
       তুমি যে ছিলে মলিন বেশে
         মাতৃ অহংকারে,
         ত্যাজিছে তোমারে,
       ত্যাজিয়া তোমারে  হয়েছে বিবাগী,
     ফিরেছে  তোমারই দ্বারে
         ভিক্ষা মাগিবারে,
         ফিরায়না তারে।

      পুবের পরী,
       মহিয়সী তুমি
        তুমি মহাময়ী,
       হে দয়াময়ী !
     মোরে দিও না মরিবারে,
     চাই আমি বাঁচিবারে
      এ সুন্দর ভুবনে;
      লহ তুলে কোলে,
     আমার এই বাহু বন্ধনে      
      জড়ায়ে লই তব গলে,
     বিষাদের  গান
     গাহিব না  আর
    দীর্ঘশ্বাস পড়িবে না তব বুকে,
    কাঁদিব না আর বিরহ শোকে।

আমরা আগেই বলেছি যে বাংলায় তথা মাতৃভাষার ওপর মধুসূদনের অবাধ দখল ছিল। দেশের ইতিহাস সম্পর্কে তিনি ওয়াকিবহাল ছিলেন। তাই বিদেশি ভাষা তার ওপর আরোপিত ছিল না। সেটাকে তিনি আত্মস্থ করতে পেরেছিলেন। তাতে তিনি যথেষ্ট দক্ষ ছিলেন। তাকে তিনি  ভালো বাসতেন। কিন্তু তিনি উপলব্ধি করেন যে সেটা ছিল বিদেশী। সে ভাষা তার কাছে ছিল পশ্চিমের সুন্দরী উর্বশী, তার প্রেমিকা। কিন্তু মাতৃভাষা তাঁর কাছে নিজের মা যাকে তিনি উপেক্ষা করেছেন সাময়িক মোহে পড়ে। সেই মায়ের কোলে তিনি লালিত হয়েছেন পালিত হয়েছেন। তাকে বাদ দিয়ে কবি ভিখিরি হয়ে যান। তার সত্তা লোপ পায়। তাই তাকে মায়ের কোলেই আশ্রয় নিতে হয়। সেখানেই তিনি আশ্রয় প্রার্থী তার উপরোক্ত  কবিতায়।

===========================================================
রনেশ রায়
১০/০২/২০১৯





বিধিবদ্ধ স্বীকার্য :

লেখার বক্তব্যের দায়িত্ব লেখকের, পত্রিকার নয়। আমরা বহু মতের প্রকাশক মাত্র।

মতামত/লেখা এখানে জমা দিন

Name

Email *

Message *

সাম্প্রতিক বাছাই

গল্প ।। জাতিস্মর ।। আশীষ কুমার বিশ্বাস

    জাতিস্মর   আশীষ  কুমার   বিশ্বাস    গল্পের শুরুটা প্রায় ষাট বছর আগের কথা । যার নাম গৌতম, ডাক নাম ছিল বাবু ।  তার বছর তখন ছয়-সাত হবে । আমরা বা আমি তখন একটু বড় । এক সাথেই চলতো খেলা । গোল্লা ছুট, দাঁড়িয়া বান্দা, চোর-পুলিশ । যে মাঝে মাঝে খেলা থেকে বিরত থাকতো ; সে-ই জাতিস্মর । মাঠের পাশেই ছিল একটা খেঁজুর গাছ । তাতে হাত রেখে দূরের এক গ্রামের দিকে এক মনে তাঁকিয়ে থাকতো "বাবু" । গ্রামটির নাম "বিনয় পল্লী " । মাঝে বড়ো মাঠ । হাঁটা শুরু করলে তিরিশ - চল্লিশ মিনিট লাগবে । মাঝে জলে ভরপুর দেখে কখনো যাওয়া হয়নি । বাবু কে যখন বলতাম, ওপারে কি দেখছিস? ও বলতো, ওখানে আমার ছোট মা থাকে, দিদি থাকে, আমার ভুলু কুকুর থাকে । এ কথা আমাদের বিশ্বাস হতো না । আবার খেলায় ফিরে যেতাম, খেলতাম ।  কিন্তু ও বসে বসে , ওপারের গাছ পালা , বাড়ি ঘর দেখতো । কাছে গেলে বলতো , ওই যে সবুজ ,কচি কলাপাতা রঙের দালান বাড়ি, ওটাই আমাদের বাড়ি !  এই ভাবে মাস ছয়, বছর গড়াতে লাগলো । মনে প্রশ্ন জাগতে লাগলো, এ টা কি মন গড়া , বা বানিয়ে বানিয়ে বলছে? সত্যি প্রকাশ হোল এক দিন ।  সে বাড়িতে কিছু ...

কবিতা ।। ভাষার জন্য লড়াই ।। চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু

ভাষার জন্য লড়াই চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু মুখের ভাষা বাংলা ভাষা মাকে ডাকি মা, সারা বিশ্বে তোমার মাগো নেই তো তুলনা। তোমার মুখের প্রথম ভাষা আমার মনের সকল আশা তোমার ভাষায় বলবো মাগো আমার মনের কথা, এই ভাষাতেই জড়িয়ে আছে সকল স্বাধীনতা।  এই ভাষাকে আনতে গিয়ে তাজা বুকের রক্ত দিয়ে রাজপথে সব লড়াই হলো করলো লড়াই কারা, আমার মায়ের দামাল ছেলে রক্ত পলাশ যারা।  তোমার ছেলে লড়াই করে আনলো ভাষা ঘরে ঘরে সেদিন থেকে শহীদ মিনার সাজাই ফুলে ফুলে, বীর শহীদের ত্যাগের কথা যাইনি আজও ভুলে।    ++++++++++++++++++++++++++++++++    চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু শহীদ আবুল কাশেম সড়ক, বড় বাজার, চুয়াডাঙ্গা, বাংলাদেশ।

কবিতা ।। মনোজকুমার রায়

জল সিঁড়ি চেক বইয়ের পাতা ফুরিয়ে যেতে থাকে -- ঝরে পড়ে বৃদ্ধ গাছটির পত্রমুকুল কাঁচা গন্ধ বেয়ে চলে সময়ের স্রোতে  সারা ভোর জেগে থাকি ঘুমের টলে তাড়া দেয় একগ্রাস অবিশ্বাসী বায়ু দিন ফুরনো লাল সূর্যের টানে নেমে আসে পাড় ছোঁয়া জল সিঁড়ি ================= মনোজকুমার রায় দঃ ঝাড় আলতা ডাউকিমারী, ধূপগুড়ি জলপাইগুড়ি -৭৩৫২১০ মো ৭৭৯৭৯৩৭৫৬৬

চিরকুটের কবিতা

নতুন পৃথিবী আজ সকালে রোদ্দুর নামুক ভেজা বর্ষার মতো গা ধুয়ে কিছুটা পবিত্র হবো যত জীর্ণ মলিন দ্বেষ বিলীন হোক সব সময়ের তটে গা ভাসিয়ে কিছুটা বিলাসী হবো যা ছিল অতীত যা ছিল কষ্ট সবকিছু ভুলে নবীনে ব্রতী হবো আসুক ধেয়ে সতেজ হাওয়া দূর হোক যত কুণ্ঠা ব্যথা পুরানো যত বিবাদ ভুলে ভালোবাসার আবার বেড়া দেবো কিছুটা আশাবাদী কিছুটা কর্মঠ কিছুটা জেদি কিছুটা শপথ আসুক ছুঁয়ে বাঁচার আলো হাতে হাত রেখেই বিশ্বাসের ঘরে আবার নতুন দীপ জ্বালাবো

উন্মুক্ত পাগলামি ।। আশরাফুল মণ্ডল

উন্মুক্ত পাগলামি আশরাফুল মণ্ডল আহা, অপরূপ নিজস্বতার দাহ! কুঁকড়ে যায় আবহমান, সজনে পাতার বোঁটায়! ভাপওঠা ভাতের কাছে মাছি সত্তায় কী নিপুণ! তবুও ঘোর লাগা বসন্তের ডাক, হাঁকে! খেদিয়ে দেয় পা দোলানো প্রস্তাব, ওই ধুনুরি চোখ! রাংতায় মোড়া ডাকের সাজ, দে দোল দোল! হুইসেল বাজিয়ে কে রুখে দ্যায় সেই নাকছাবির রুদালি কাঁপন! খালবিল ছেঁচে পাঁচসিকের  মানত কুড়িয়ে আনে, বাংলা বাজার। ঠ্যাং নাচানো সুরে চোখ মারছে, দ্যাখো ভ্যানতারা! মুখ খোলা মানেই পাঁজরের স্রোত ভাবা যেন উগরানো টালমাটাল! ঢিল মারা প্রশ্নের রোয়াকে বক্রচোখে যেন মেধাবী কবিতা! মুছে দিও তবে লাজুক গুপ্ত রোগ, দিনরাত্রি! ভালো থেকো তোমরা বাছাধন, রং মাস সে আর কতদিন... ================    ASRAFUL MANDAL Chandidas Avenue, B-zone, Durgapur, Paschim Bardhaman, Pin - 713205,  

চন্দন সুরভি নন্দর কবিতা

টাকার মেশিন                      মায়ের ওষুধ নিয়ে শহর থেকে ফিরল রতন সবে সন্ধ্যা নেমেছে  রাস্তায় আলো কম হাসপাতাল অনেক দূরে  অদৃশ্য যম খেলাকরে  মৃত্যুর সীমান্তে শায়িত মা   শেষ রক্ষা হল না  আস্তে আস্তে ভোরের আলো ফোটে রাতের আঁধারে ঘরের দেওয়াল গুলো রাঙিয়ে গেছে কারা  তুলেছে রং বেরং এর তোরন  এসেছে নির্বাচন  শোনাযায় এবার নাকি এ টি এম চিহ্নে দাঁড়িয়েছে একজন! টাকার মেশিন........  জিতলে সবাইকে দেওয়া হবে! সামনে বসে উল্লাসে ফেটে পড়া রোবট গুলো মানুষ কবে হবে?  ====================== Chandansuravi Nanda Revenue Office  BL&LRO,Manbazar-ll Boro Purulia PIN-723131 Phone-9163332432

কবিতা ।। রঙ ।। ইউসুফ মোল্লা

  রঙ  ইউসুফ মোল্লা সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি,  পৃথিবী নানা রঙে সেজে উঠেছে।  ধূসর বাদামী রঙ তোমার দেহ,  মাথায় সবুজ রঙের বাবরি চুল,  তাতে গুঁজে রেখেছো লাল-নীল ফুল।  নববধূর মতো সিঁথিতে দিয়েছো সিঁদুর,  চোখে দিয়েছো কাজল।  দিগন্তভরা আকাশ তোমাকে নীল উপহার দিল,  সূর্যের লাল আলো তোমাকে সুন্দর করেছে।  তুমি তাদের ফিরিয়ে দিলে, বুকভরা ভালোবাসা আর স্নেহ।  মাঝে মাঝে এইভাবে হোলি আসে,  আমার মনকে রাঙিয়ে দিতে। ------------------    ইউসুফ মোল্লা উত্তর অঙ্গদ বেড়িয়া, ট্যাংরাখালী, ক্যানিং,  দক্ষিণ ২৪ পরগনা, ৭৪৩৩২৯

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬

  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠালে  অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে হলে ভালো। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # ...

ছোটগল্প ।। নীলিমার আত্মজাগরণ ।। পরেশ চন্দ্র মাহাত

নীলিমার আত্মজাগরণ পরেশ চন্দ্র মাহাত নীলিমা মাহাত, বয়স পঁচিশ প্লাস —তার বাবা মায়ের পঞ্চম তথা শেষ সন্তান। দুই দাদা —বড়দাদা শঙ্কর ও ছোটদাদা বিজয়। বড় দাদা শঙ্কর আর দুই দিদি তাদের কিন্তু বিয়ে হয়ে গেছে। একমাত্র নীলিমা আপাতত স্বামীর কোমল হাতের স্পর্শ ও সহানুভূতি থেকে বঞ্চিত এবং আদৌ কবে অথবা সেই সৌভাগ্য আসবে সেটা ঈশ্বরের নিকটই একমাত্র জ্ঞাত। সেই সঙ্গে দুবছরের সিনিয়র ছোটদাদা বিজয়েরও নীলিমার মতো অবস্থা। তারও জীবনসঙ্গিনী জুটেনি। মোট সাতজন সদস্য নিয়ে গঠিত সংসার নীলিমাদের পরিবার। মধ্যবিত্ত পরিবার —মধ্যবিত্ত পরিবার না বলে যদি নিম্নবিত্ত বলা হয় তবুও কোনো অত্যুক্তি করা হয় না। বাবার প্রত্যেকদিনের আয়ের উপর ভিত্তি করেই চলে সংসার। এই কঠোর এবং কঠিন পরিস্থিতিতেও নীলিমার মা শ্রীমতী মেনকা‚ সংসার সামলে তার ছেলেমেয়েদের পড়াশুনার প্রতি যথেষ্ট তৎপর ও সহানুভূতিশীল। তাদের পড়াশুনায় কোনো খামতি রাখেননি। যথা সময়ে তাদেরকে বিদ্যালয়ের মুখ দেখিয়েছে – টিউশনের বন্দোবস্ত করেছে। তাদের জীবন যাতে সুখকর হয় সেটাই প্রতিদিন ভগবানের কাছে প্রার্থনা করেছে। পাঁচ-পাঁচটি ছেলেমেয়ের মধ্যে সবাইকে উচ্চশিক্ষিত করে তোলা একপ...

কবিতা ।। সোনালি অতীত ।। প্রবোধ কুমার মৃধা

সোনালি অতীত  প্রবোধ কুমার মৃধা   সুশীতল ছায়াঘেরা স্নেহময়ী মাটি মা।   সে আমার জন্মভূমি সপ্তপুরুষের গাঁ।   প্রকৃতির বুক থেকে প্রাণের রসদ নিয়ে।   ফিরিতাম নদীতীরে হৃদয়ের গান গেয়ে।   সন্ধ্যাতারা উঁকি দিত গোধূলি লগনে।   প্রত্যুষে ভাঙিত ঘুম বিহঙ্গ কূজনে ।   আষাঢ়ের নব মেঘে ঘিরিত গগন।   বাদলের ছায়া ঢাকা কদম্ব কানন।   দলবেঁধে মাঠে-বাটে বেতালা-বেছন্দে।   কেটে যেত সারাদিন ভালো কভু মন্দে।   ডাক দেয় শিশুকাল, বাল্য ও কৈশোর।   অফুরন্ত প্রাণোচ্ছ্বল, আনন্দে বিভোর।   করমের স্রোতে ভেসে সংসারের হাটে।   ভিড়িল জীবনতরী নগরের ঘাটে।   ফিরিবার সাধ্য নাই ফেলে আসা পথে।   বাল্য রোমন্থন করি অতীত স্মৃতিতে।                    __________ 

জনপ্রিয় লেখা

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ -- "ত্রয়ী কাব্য" ------------------------------------------------------------------------------ সুনন্দ মন্ডল নবীনচন্দ্র সেন সাহিত্যে তথা বাংলা কবিতার জগতে এক অবিস্মরণীয় নাম। তিনি চট্টগ্রাম জেলার নওয়াপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ১৮৪৭ সালে তাঁর জন্ম এবং মত্যু ১৯০৯ সালে। বঙ্কিমচন্দ্র তাঁকে 'বাংলার বায়রন' বলেছেন। ‎জীবৎকালীন যুগে আত্মপ্রত্যয়ের মধ্যে জাতীয় চরিত্র আত্মস্থ করে নতুন সংস্কারে প্রয়াসী হয়ে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখেছেন।মধুসূদন-হেমচন্দ্র-নবীনচন্দ্র--এই তিন কবি বাংলা কাব্যধারায় প্রাণ সঞ্চার করেছিলেন। বিশেষত মহাকাব্য লেখার দুঃসাহস দেখিয়েছিলেন। এদিক থেকে মধুসূদন দত্ত একজন সফল মহাকাব্যিক। তাঁর 'মেঘনাদ বধ' কাব্যের মত গভীর ও ব্যঞ্জনাময় না হলেও নবীনচন্দ্র সেনের 'ত্রয়ী' কাব্য বিশেষ মর্যাদা দাবি করতেই পারে। তাছাড়া 'ত্রয়ী' কাব্যে ধর্মীয় ভাবধারার আবেগ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ‎ ‎নবীনচন্দ্র সেন বহু কাব্য লিখেছেন। যেমন- 'অবকাশরঞ্জিনী','পলাশীর যুদ্ধ', 'ক্লিওপেট্রা', 'রঙ্গমতী', 'খ্রীষ্ট', ...

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা শ্রীজিৎ জানা "সময় চলিয়া যায় নদীর স্রোতের প্রায়"। স্রোতের ধারা তার দু'প্রান্তে রেখে যায় ভাঙাগড়ার চিহ্ন। কালের দৃশ্যপটেও পরিবর্তনের ছবি অনিবার্যভাবেই চোখে পড়ে। সমাজ সময়ের ছাঁচে নিজেকে গড়ে নেয় প্রতিনিয়ত।  সেখানে মনে নেওয়ায় বাধা থাকলেও,মেনে নেওয়ার গাজোয়ারি চলে না। ফলত কাল বদলের গাণিতিক হিসেবে জীবন ও জীবিকার যে রদবদল,তাকেই বোধকরি সংগ্রাম বলা যায়। জীবন সংগ্রাম অথবা টিকে থাকার সংগ্রাম।  মানুষের জীবনযাপনের ক্ষেত্রে আজকে যা অত্যাবশ্যকীয় কাল তার বিকল্প রূপ পেতে পারে অথবা তা অনাবশ্যক হওয়াও স্বাভাবিক। সেক্ষেত্রে উক্ত বিষয়টির পরিষেবা দানকারী মানুষদের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হওয়া অস্বাভাবিক নয়। এক কালে গাঁয়ে কত ধরনের পেশার মানুষদের চোখে পোড়তো। কোন পেশা ছিল সম্বৎসরের,আবার কোন পেশা এককালীন।  সব পেশার লোকেরাই কত নিষ্ঠা ভরে গাঁয়ে  তাদের পরিষেবা দিত। বিনিময়ে সামান্য আয় হত তাদের। আর সেই আয়টুকুই ছিল  তাদের সংসার নির্বাহের একমাত্র উপায়। কালে কালান্তরে সেই সব পেশা,সেই সব সমাজবন্ধুরা হারিয়ে গ্যাছে। শুধুমাত্র তারা বেঁচে আছে অগ্রজের গল্পকথায়,আর বিভিন...

গ্রন্থ আলোচনা: শর্মিষ্ঠা দেবনাথ

প্রতিবাদ যখন অগ্নিবাণী বাংলাদেশে নারীমুক্তি ও নারী আন্দোলনের পুরোধা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ১৯৯তম জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদিত হল " আসিফা এবং.." কাব্য সংকলনটির মধ্যদিয়ে।সংকলনটির বিশেষত্ব হল,এটি উৎসর্গ করা হয়েছে নারীর সম্মান রক্ষার আন্দোলনের যোগ্যতম ব্যক্তি শহীদ শিক্ষক বরুন বিশ্বাসকে। সংকলক প্রকাশক সন্দীপ সাহু নিজে এবং বিশিষ্ট কবি সাহিত্যিকদের দিয়ে লিখিয়ে নিয়েছেন এমন কিছু কবিতা, যা শুধুমাত্র শব্দ ও ছন্দের অনুবন্ধ নয়, এক একটি অগ্নিবাণী।আসলে জীবনকে দেখার স্বাতন্ত্র‍্যে কবিরা সব সময়ই অগ্রগণ্য এবং অনন্য।যুগ ও জীবন দ্বন্দ্বের কণ্ঠস্বরকে আশ্রয় করে,একদিকে মনের প্রবল দাহ ও অন্যদিকে  নির্যাতিতা শিশুকন্যা ও নারীর প্রতি মনের গভীর আকুলতা থেকে প্রকাশ পেয়েছে "আসিফা এবং" এর  কবিতাগুলি।এক অন্ধকার সময়ের মুখোমুখি আমরা,সেই অন্ধকার আমাদের নিয়ে এসেছে সামাজিক অবক্ষয়ের শেষধাপে যেখানে নৈতিকতা,পাপবোধ,গ্লানিকে সরিয়ে রেখে, সমাজের বানানো নিয়মকে তোয়াক্কা না করে,অনায়াস দক্ষতায় ও ক্ষিপ্রতায় নিজেরই ধর্মচেতনাকে জলাঞ্জলি দিয়ে কিছু মানুষ তার পশুত্বের পরিচয় দিয়েছে ধর্ষণ ও ন...

শ্যামাপদ মালাকারের কবিতা

চোখ """"""" নদী, অরণ্য, রাতের ফালি চাঁদ- সবেই তো আমার...স্বর্ণপিঁড়িটাও!। সেদিন, শুকতারাটার গা' মাপতে গিয়ে মনে হল, --ওরা আমার চেয়েও সুখী? দেখিনা একবার গাইতি-শাবল চালিয়ে... চালালাম। জল-মাটি ভেজা একটা 'চোখ' কুড়িয়ে ফিরলাম! সেই চোখদিয়ে দেখি-- শেষ বিকেলের নিরন্ন আঁচে ঝলসানো বুকে নীড়ে ফিরছে ধূলিমাখা কত কাল পা, কি শান্তি - কি তৃষ্ণা! পাতাক্ষোয়া কোদালেরর মাথায় ঝরেপড়া ললাটের ঘামে, কারা যেন জীবন শাণ দেয়! রুক্ষঠোঁটের আবরণে এক সময় নেমে আসে শিশিরস্নাত কালনিশি-- মাঝের ব্যবধান মুছে দেয় প্রতিশ্রুতির ভীড়- - পূর্বজনমের নিদর্শনচুম্বন শেষে হেরে যায় কার মমতাজ-- ম্লান হয়ে যায় কত পিঁড়ি! ... ম্লান হয়ে যায় কত পিঁড়ি! ... ম্লা...

কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা: এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায় ।। পার্থ সারথি চক্রবর্তী

  কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা : এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায়  পার্থ সারথি চক্রবর্তী  কথায় বলে বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। রাজার শহর কোচবিহারের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা আরো অনেক বেশি। দুর্গাপূজা আর দীপাবলির মতো দু'দুটো বিরাট মাপের উৎসবের রেশ কাটতে না কাটতেই, এ শহর ভাসে রাস উৎসবের উন্মাদনায়। মদনমোহন ঠাকুর কোচবিহারের প্রাণের ঠাকুর। তাঁকে নিয়ে সবার আবেগ আর শ্রদ্ধা ও ভালবাসা এখানে বাঁধনছাড়া। এক অপূর্ব মিলনোৎসবের চেহারা নেওয়া এই উৎসব ঐতিহ্যবাহী ও ঐতিহাসিক। জন, মত, সম্প্রদায়ের উর্ধে এই উৎসবের গ্রহণযোগ্যতা। সময়ের কষ্টি পাথরে পরীক্ষিত! এক প্রাণের উৎসব, যা বহুদিন ধরেই গোটা উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ উৎসবে পর্যবসিত।কোচবিহারের এই রাস উৎসবকে কেন্দ্র করে যে মেলা হয় তাও সময়ের হাত ধরে অনেক বদলে গেছে। এসেছে আধুনিকতার ছোঁয়া! শৈশবে বাবার হাত ধরে যে মেলা দেখেছি তা চরিত্র ও আকৃতি দু'দিক থেকেই বদলে গেছে। গত পঁচিশ বছর ধরে খুব কাছে থেকে এই উৎসব ও মেলা দেখা, অনুভব করার সুযোগ হয়েছে। যা দিনদিন অভিজ্ঞতা ও প্রাপ্তির ঝুলিকে সমৃদ্ধ করে গেছে প্রতি ক্ষেত্রেই।  খুব সংক্ষেপে এই উৎসবের ইতিহাস না জানাটা কিন্তু অবিচারই ...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো,  তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) য...

মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা 2024 সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি (লেখক ও সম্পাদকীয় দপ্তরের কথোপকথন আকারে) --কী পত্রিকা? --নবপ্রভাত। --মুদ্রিত না অনলাইন? --মুদ্রিত। --কোন সংখ্যা হবে এটা? --বইমেলা 2024। --কোন কোন ধরনের লেখা থাকবে? --প্রবন্ধ-নিবন্ধ, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া। --বিশেষ কোন বিষয় আছে? --না। যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে। --শব্দ বা লাইন সংখ্যার কোন বাঁধন আছে? --না। নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো (যেমন, কবিতা 12-14 লাইনের মধ্যে, অণুগল্প কমবেশি 200/250শব্দে)। তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়। --ক'টি লেখা পাঠাতে হবে? --মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। --ফেসবুক বা অন্য কোন প্লাটফর্মে প্রকাশিত লেখা কি পাঠানো যাবে? --না। সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। --পত্রিকা কোন সময়ে প্রকাশিত হবে? --জানুয়ারি 2024-এর দ্বিতীয় সপ্তাহে। --লেখা পাঠানোর শেষতারিখ কত? -- 17 ডিসেম্বর 2023। --কীভাবে পাঠাতে হবে? --মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। --লেখার সঙ্গে কী কী দিতে হবে? --নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) --বিশেষ সতর্কতা কিছু ? --১)মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন '...

উৎসবের সৌন্দর্য: সেকালে ও একালে।। সৌরভ পুরকাইত

  উৎসবের সৌন্দর্য:  সেকালে ও একালে   সৌরভ পুরকাইত বাংলার উৎসব বাংলার প্রাণ। প্রতিদিনের জীবনযাপনের মধ্যে যখন মন ক্লান্ত হয়ে পড়ে তখন তাকে বেঁচে থাকার রসদ যোগায় এই উৎসব। কথায় বলে 'বারো মাসে তেরো পার্বণ'।মন আনন্দই চায়।তাই তাকে সজীবতা দিতে,পরিবারের,সমাজের ভালো-মন্দের কথা মাথায় রেখে মানুষ নিজেই সৃষ্টি করে নিয়েছে নানাবিধ উৎসবগুলিকে। একেবারে প্রাচীন কাল থেকে আজ পর্যন্ত মানুষ কখনোই উৎসব বিমুখ ছিল না।উৎসবই তাকে ঘর থেকে বাইরে টেনে এনেছে,চিনতে শিখিয়েছে আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার আনন্দকে। উৎসব আসলে প্রাণের সাথে প্রাণের যোগ, হৃদয়ের সাথে হৃদয়ের যোগ।রবীন্দ্রনাথ বলেছেন 'সত্য যেখানেই সুন্দর হয়ে প্রকাশ পায় সেইখানেই উৎসব'।হৃদয়ের সেই সুকোমল বৃত্তির জাগরণ যেন ফুটে ওঠা ফুলেরই মতো সত্য ও সুন্দর।এই জাগরণই উৎসব। তাই নানা কিছুর মধ্য দিয়ে,নানা উপলক্ষ্যে এই উৎসব প্রকাশ পায়। প্রাচীনকালে মানুষের হাতে না ছিল পসার, না ছিল পসরা।ছিল মনের আন্তরিকতা,মানুষকে কাছে টেনে নেবার ক্ষমতা।সেটাই ছিল উৎসবের সৌন্দর্য। তাই সেদিনের উৎসবে ক্ষুদ্র,তুচ্ছ উপকরণও প্রাণের উচ্ছ্বাসে মহৎ হয়ে উঠত।সেকালের উৎসবে লোক দেখানো ব্যাপার কিছু ...

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

বসন্তের কোকিল তুমি   বিচিত্র কুমার                      (০১) তোমার দু-আঁখির গহীন অরণ্যে একটা স্বপ্নের বহমান নদী রয়েছে, তারই রেশ ধরে আমি হেঁটে চলি অজানা বসন্তের পথে নীর উদ্দেশ্যে। সে চলার কোন শেষ সীমা নেই তাই আমার বিষণ্ণ একতারা সন্ন্যাস খুঁজে ফিরে , কবে তুমি বুঝবে অনুশ্রী মনের পর্দা খুলে একুশ বসন্ত তোমার রঙ ছিটিয়ে যাচ্ছে অচিনপুরে। এদিকে আমার দেহের প্রতিটি শিরা ধমনীতে প্রবাহিত হচ্ছে তোমার ভালোবাসার একটু উষ্ণতা পাবার জন্যে, শুধু অনুভবে তাণ্ডব উচ্ছাসিত হচ্ছে--- যেদিকে তাকাই --- ফুলে ফুলে ভ্রমর গুনগুনিয়ে উড়ে উড়ে পরে বসন্তের কোকিল গান গায় নব বসন্তে, তোমার দুই চোখে আমার একই ছায়া রয়ে যায় উতলা ভালোবাসার সীমান্তে।                 (০২)        এক রক্তাক্ত বসন্তের স্মৃতি কোন এক উতলা বসন্তের সকালে পুষ্পবনে ফুটেছিল একটি টকটকে লাল গোলাপ, তার সাথে হয়েছিলো দেখা প্রথম ফাগুনে হয়েছিল দুজনার এ জীবনের আলাপ।  তারপর প্র...

অনুভবে, অনুধ্যানে অনালোকিত কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী ।। সুপ্রিয় গঙ্গোপাধ্যায়

"এ কালে একটু লেখাপড়া জানা থাকাতে, এবং বঙ্গভাষায় অনেক গুলি পাঠ্য পুস্তক হওয়াতে কেবল পরনিন্দা করিয়া সময় কাটাইতে তাঁহাদের আবশ্যকও হয় না, প্রবৃত্তিও হয় না। …নিতান্ত সখ্যতা বা আত্মীয়তা না থাকিলে, সকল পেটের কথা খুলিয়া নিঃশ্বাস ছাড়িয়া তৃপ্তিলাভ করা, এ কালের মেয়েরা পছন্দ করেন না। তাঁহারা বইখানি, কার্পেটটুকু, নিজের স্বামী পুত্র লইয়া দিন যাপন করিতে বা একেলা থাকিতে কষ্ট বোধ করেন না।" —শরৎকুমারী চৌধুরাণীর এই লেখা (ভারতী ও বালক/ আশ্বিন কার্তিক, মাঘ/ ১২৯৮) দেখে বুঝতে অসুবিধা হয় না উনিশ শতকে নারীর লেখাপড়া শেখার উদ্দেশ্য ছিল মূলত আত্মমুক্তির জন্য। শুধু লেখাপড়া শেখা নয়, সাহিত্য সৃষ্টিতেও ছয়'এর দশক (উনিশ শতকের) থেকে নারীরা যে ধারা সূত্রপাত করেছিল তা নারীর আত্মমুক্তির পথকেই প্রসারিত করেছিল। ছয়'এর দশকের পূর্বেই ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে প্রথম ছাপার হরফে নারী রচিত কাব্য 'চিত্তবিলাসিনী' প্রকাশিত হয়। লেখেন কৃষ্ণকামিনী দাসী। ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে কবি ঠাকুরাণী দাসীর নাম উঠে আসতে থাকে, যিনি কবিতার পাশাপাশি গদ্যও লিখতেন। ঠিক সেই বছরই জন্মগ্রহণ করেন কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী, যাঁর কবিতা লেখা আত্মমুক্...

বছরের বাছাই

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৪তম সংখ্যা ।। ফাল্গুন ১৪৩১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

  এই সংখ্যায় একটি গ্রন্থ আলোচনা ও একটি ধারাবাহিক রচনা ছাড়া সব লেখাই ভাষা দিবস, মাতৃভাষা, ভাষাচেতনা ও ভাষা সমস্যা বিষয়ক রচনা। লেখাগুলি এই সংখ্যাকে অনেকটাই সমৃদ্ধ করেছে। পড়ুন। শেয়ার করুন। মতামত জানান। লেখকগণ নিজের নিজের লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন যতখুশি, যে মাধ্যমে খুশি। কিন্তু স্ক্রিনশট শেয়ার নৈব নৈব চ!  অন্য বিষয়ের লেখাগুলি আগামী সংখ্যার জন্য রইল।  সকলকে ধন্যবাদ, অভিনন্দন। ভালো থাকুন।   --সম্পাদক, নবপ্রভাত। ==  সূ  চি  প  ত্র  == প্রবন্ধ-নিবন্ধ অমর ২১শে ফেব্রুয়ারি বাঙ্গালীর বাংলা ভাষা দুর্জয় দিবস।। বটু কৃষ্ণ হালদার ভাষা শহীদদের পঁচাত্তর বছর।। অনিন্দ্য পাল একুশে ফেব্রুয়ারি : বাঙালির শ্রেষ্ঠ অশ্রুবিন্দু।। জীবনকুমার সরকার কবিগানের সাহিত্যিক ও সমাজতাত্ত্বিক মূল্য।। বারিদ বরন গুপ্ত বিপন্ন মাতৃভাষা ও সংস্কৃতি।। শ্যামল হুদাতী মায়ের দুধ আর মাতৃভাষা।। প্রদীপ কুমার দে একুশে ফেব্রুয়ারি : কিছু কথা।। বনশ্রী গোপ বাংলায় কথা বাংলায় কাজ।। চন্দন দাশগুপ্ত বিপন্ন মাতৃভাষা ও তার মুক্তির পথ।। মিঠুন মুখার্জী. হে অমর একুশে, তোমায় ভুলিনি, ভুলব না।। মহম্মদ মফিজুল ইসলা...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৭তম সংখ্যা ।। জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ মে ২০২৫

  প্রচ্ছদ চিত্র: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সূচিপত্র রবীন্দ্রনাথ এবং কয়েকজন নারী ।। অনিন্দ্য পাল পরাবাস্তববাদ ও বাংলায় জীবনানন্দের কাব্যচর্চা ।। রণেশ রায় প্রতীক্ষা ।। চন্দন দাশগুপ্ত আশ্রয় ।। সায়নী সাহা বয়স্ক শিক্ষাকেন্দ্র ।। দেবাংশু সরকার প্রণামের প্রভু ।। সুপ্রভাত মেট্যা দুর্ভাগ্যের সম্মুখ সমরে ।। সমীর কুমার দত্ত আচমকা শরৎ ।। অর্ণব সামন্ত প্রতিধ্বনি ✍️ সুবীর কুমার ঘোষ জীবন যেখানে যেমন ।। আরজু মুন জারিন বছর সীমান্তে হিসেব নিকেশ ।। রানা জামান চারটি কবিতা ।। বিবেকানন্দ নস্কর আমরা আছি ।। লালন চাঁদ চাওয়া ।। মাথুর দাস কাগজ ফুলে ।। সফিউল মল্লিক সময়ের স্রোত ।। দুর্গাদাস মিদ্যা তুমি মানুষ ।। বদরুল বোরহান দিঘার সমুদ্র ।। মাখনলাল প্রধান পুস্তক-আলোচনা ।। অরবিন্দ পুরকাইত সংযম ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত  চেনা প্রতিবেশী (প্রথম পর্ব) ।। দীপক পাল খেলার মাঠ ।। তূয়া নূর বন্ধু শ্যামলকান্তি ।। শংকর ব্রহ্ম তুমি তোমার মতো থাকলে ।। সত্যেন্দ্রনাথ বেরা গ্রীষ্মে খুবই হিংস্র রবি ।। জগবন্ধু হালদার স্বপ্ন দর্শন ✍️ পার্থ প্রতিম দাস মৌন মুখরতা ।। মুসা মন্ডল রুদ্র বৈশাখ ।। দীনেশ সরকার চিহ্নিত পদযুগ পদাঘাত ।। দেবাশীষ...

প্রচ্ছদ।। ৮৩তম সংখ্যা ।। মাঘ ১৪৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ।। প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র

  বিঃ দ্রঃ আগামী ফেব্রুয়ারি সংখ্যার জন্য ভাষা দিবসের কথা মাথায় রেখে লেখা পাঠান। email: nabapravatblog@gmail.com  সূচিপত্র ফিচার।। গোপাল ভাঁড়ের অজানা সত্য ।। লোকনাথ পাল প্রবন্ধ ।। মসুয়ার রায় পরিবার এবং বঙ্গসংস্কৃতি ।... প্রবন্ধ ।। সুধীন্দ্রনাথ দত্ত: কাব্যের দার্শনিক ও ন... কবিতায় সেতুবন্ধন (তৃতীয় অংশ) শিল্পবিপ্লবোত্তর কাল... রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর বিদ্রোহী প্রেমের কবিতা: ... কবিতা ।। এই মন ভালো নেই দিনে ।। সুপ্রভাত মেট্যা কবিতা ।। জোছনা আলোর স্বপ্ন ।। তুষার ভট্টাচাৰ্য কবিতা ।। নিঃস্ব হবো ।। লালন চাঁদ কবিতা ।। ভালোলাগা  ।। আজিজ উন নেসা  গল্প ।। স্বীকারোক্তি ।। চন্দন দাশগুপ্ত কবিতা ।। শীতের দিন ।। প্রশান্ত কুমার মন্ডল কবিতা ।। শীতকাল ।। অঙ্কিতা পাল নাসির ওয়াদেনের দুটি কবিতা ভূতের লেখা ছড়া ।। বদরুল বোরহান কবিতা ।। ব্যস্ত ।। আলাপন রায় চৌধুরী ছোটগল্প ।। লম্বুর স্বপ্নপূরণ ।। পরেশ চন্দ্র মাহাত কবিতা ।। সৎকার ।। সুমিত মোদক কবিতা।। শীত বৈচিত্র্য ।। সুমিতা চৌধুরী পুস্তক-আলোচনা ।। নিউটনের আপেল ও প্রেমিকা ।। অরবিন্... গল্প।। শান্তির পথে …...।। বন্দনা সেনগুপ্ত কবিতা ।। মা...

সূচিপত্র ।। ৮৯তম সংখ্যা ।। শ্রাবণ ১৪৩২ জুলাই ২০২৫

সূচিপত্র   প্রবন্ধ ।। বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় ।। মাখনলাল প্রধান প্রবন্ধ ।। শ্রমিকের অধিকার ।। চন্দন দাশগুপ্ত প্রবন্ধ ।। ভিনগ্রহীদের সন্ধানে ।। শ্যামল হুদাতী প্রবন্ধ ।। নারীমর্যাদা ও অধিকার ।। হিমাদ্রি শেখর দাস কবিতা ।। মশালের রং তুলি ।। তূণীর আচার্য কবিতা ।। জললিপি ।। রূপক চট্টোপাধ্যায় গুচ্ছকবিতা || শিশির আজম নিবন্ধ ।। পূনর্জন্ম ।। শংকর ব্রহ্ম মুক্তভাবনা ।। কোলাহল তো বারণ হলো ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত গল্প ।। গানের হাড় ।। শুভজিৎ দত্তগুপ্ত গল্প ।। শিকড়ের খোঁজে ।। সমীর কুমার দত্ত সুপ্রভাত মেট্যার পাঁচটি কবিতা গ্রন্থ-আলোচনা ।। আবদুস সালামের কাব্যগ্রন্থ 'অলীক রঙের বিশ্বাস'।। তৈমুর খান অণুগল্প ।। হরিবোল বুড়ো ।। সুমিত মোদক রম্যরচনা ।। গোয়েন্দা গোলাপচন্দ আর প্রেমের ভুল ঠিকানা ।। রাজদীপ মজুমদার দুটি গল্প ।। মুহাম্মদ ফজলুল হক দুটি কবিতা ।। তীর্থঙ্কর সুমিত কবিতা ।। মেঘমুক্তি ।। বন্দনা পাত্র কবিতা ।। ব্যবচ্ছিন্ন শরীর ।। কৌশিক চক্রবর্ত্তী কবিতা ।। শমনচিহ্ন ।। দীপঙ্কর সরকার কবিতা ।। ভালোবাসার দাগ ।। জয়শ্রী ব্যানার্জী কবিতা ।। ফণীমনসা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ছড়া ।। আজও যদি ।। বদ্রীন...

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ৮৬তম সংখ্যা ।। বৈশাখ ১৪৩২ এপ্রিল ২০২৫

সম্পাদকীয় এই সংখ্যাটি বাংলা নববর্ষ বিষয়ক সংখ্যা। নৱৰ্ষকেন্দ্রিক বহু তথ্যপূর্ণ লেখা এই সংখ্যাটিকে সমৃদ্ধ করেছে। বাংলা নববর্ষ উদযাপনের ইতিহাস, রীতিনীতি, উৎসব, পার্বন, লোকাচার, রূপান্তর বহুবিধ বিষয় প্রকাশিত হয়েছে এই সংখ্যার লেখাগুলিতে। এই সংখ্যার বাছাই কিছু লেখার সঙ্গে আগামীতে আরও কিছু লেখা সংযুক্ত করে বাংলা নববর্ষ বিষয়ক একটি মুদ্রিত সংখ্যা প্রকাশ করার ইচ্ছে রইল।  সকলকে নববর্ষের আন্তরিক শুভকামনা জানাই। উৎসবে আনন্দে থাকুন, হানাহানিতে নয়। ধর্ম-ব্যবসায়ীদের চক্রান্ত ব্যর্থ করে সহনাগরিকের পাশে থাকুন। মনে রাখুন, ধর্মকে মানুষই সৃষ্টি করেছে। ঈশ্বর আল্লা গড ইত্যাদির জন্মদাতা মানুষই। মানুষকে ভালোবাসুন। মানুষের পাশে থাকুন।  নিরাশাহরণ নস্কর  সম্পাদক, নবপ্রভাত।  সূচিপত্র প্রবন্ধ-নিবন্ধ-স্মৃতিকথা পয়লা বৈশাখ ।। সিদ্ধার্থ সিংহ নববর্ষকেন্দ্রিক মেলা, পার্বন, উত্সব, লোকাচার ।। সবিতা রায় বিশ্বাস নববর্ষ আবাহন ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে এবং বিভিন্ন দেশে ।। তুষার ভট্টাচার্য নববর্ষের সেকাল ও একাল ।। হিমাদ্রি শেখর দাস নববর্ষের হাল-হকিকৎ ।। শংকর ব্রহ্ম বোশেখি বাঙালি নাকি পোশাকি বাঙালি? ।। দিব্যেন্দু...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬

  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠালে  অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে হলে ভালো। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # ...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। নবপ্রভাত ৮৫ ।। চৈত্র ১৪৩১ মার্চ ২০২৫

  সূচিপত্র নিবন্ধ ।। মরিয়ম মির্জাখানি: এক অনন্য গণিতসূর্য ।। ... নিবন্ধ ।। নারী দিবসে যা ভাবা উচিত ।। বিশ্বনাথ পাল প্রবন্ধ ।। প্রাচীনকাল থেকে নারীরা অবহেলিত, বঞ্চিত,... নিবন্ধ ।। আমার চোখে আদর্শ নারী ।। জয়শ্রী বন্দ্... ফিচার।। এই মুহূর্তে বাংলা সাহিত্যে নারীদের লেখালেখ... আফ্রিকার লোককথা ।। করোটিকে বিয়ে করা অবাধ্য মেয়েটি ... ছোটগল্প ।। মানবী ।। ভুবনেশ্বর মন্ডল নিবন্ধ ।। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে অন্যতম নারী মু... নিবন্ধ ।। প্রিয় মহিলা সাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবী ।। ... গল্প ।। উই ওয়ান্ট জাস্টিস ।। রবীন বসু প্রবন্ধ ।। নিপীড়িতা ।। শ্যামল হুদাতী ফিচার ।। রমণী রতন ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত প্রবন্ধ ।। নারী সমাজ : তখন-এখন ।। তপন মাইতি নিবন্ধ ।। বহমান কালের ধারায় নারী ।। দীপক পাল গল্প ।। আমার দুর্গা ।। অঞ্জনা গোড়িয়া (সাউ) গল্প ।। যোগ্য জবাব ।। সমীর কুমার দত্ত ছোটগল্প ।। আমি দুর্গাকে দেখেছি।। চন্দন দাশগুপ্ত গল্প ।। সম্পর্ক ।। গৌতম সমাজদার কবিতা।। নারী মানে ।। গোবিন্দ মোদক কবিতা।। নারী ।। সমর আচার্য্য ছড়া ।। নারী অসামান্যা ।। সৌমিত্র মজুমদার কবিতা ।। নারী দিবসে ।। বিবেকানন্দ নস্কর কবিতা ।। না...

প্রবন্ধ ।। বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় ।। মাখনলাল প্রধান

বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় মাখনলাল প্রধান বাংলার শিল্প-সংস্কৃতির জগতে যাত্রা শিল্প তথা নাট‍্যশিল্পে মড়ক নেমে এসেছে । যাত্রা শিল্পের মড়কে শুধু কোভিড নয় তার বহুপূর্ব থেকেই অর্থনৈতিক বিপর্যয় , শিক্ষাক্ষেত্রে বন্ধ‍্যাত্ব এবং গ্ৰাম বাংলার পটপরিবর্তন শেষ পেরেক ঠুকে দিয়েছে। যাত্রা-শিল্পের লীলাভূমি ছিল গ্ৰাম বাংলা। গ্ৰামে প্রচুর যাত্রাপালা হত নানা উৎসবকে কেন্দ্র করে । জমিদারি ব‍্যবস্থা লুপ্ত হওয়ার পর গ্ৰামীণ মানুষের উদ‍্যোগে শীতলা পূজা,  কালীপূজা, দুর্গাপূজা, কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা, চড়ক ইত‍্যাদিকে উপলক্ষ‍্য করে যাত্রাপালার আয়োজন না হলে কেমন যেন ম‍্যাড়ম‍্যাড়ে লাগতো। সেই সঙ্গে কলকাতার বড়বড় কোম্পানির যাত্রাপালা ঘটা করে, টিকিট সেল করে হত মাঠে। খুব বড় মাপের খেলার মাঠ যেখানে ছিল না সেখানে ধানের মাঠ নেওয়া হত ‌। ত্রিশ-চল্লিশ হাজার মানুষ দেখতে আসত। স্পেশাল বাস পাঠাত  আয়োজক কর্তৃপক্ষ। বিনা ভাড়ায় বাসে যাতায়াত করত যাত্রার দর্শকেরা। কিন্তু বিকল্প ধানচাষ শুরু হলে জমিগুলো সময় মতো ফাঁকা পাওয়া গেল না । প্রথম দিকে ব‍্যাপকহারে ধান শুরু না হওয়ায় খুব একটা অসুবিধা হত না। বহুক্ষেত্রে  ধান কা...

প্রবন্ধ ।। ভিনগ্রহীদের সন্ধানে ।। শ্যামল হুদাতী

ভিনগ্রহীদের সন্ধানে  শ্যামল হুদাতী  ইতিহাসের শুরু থেকে বারবার মানুষকে একটা প্রশ্ন কুঁড়ে কুঁড়ে খায় – এই মহাবিশ্বে আমরা কি একা? পৃথিবীর মতো আরও গ্রহ রয়েছে, যেখানে মানুষের মতো বুদ্ধিমান প্রাণীরা বাস করে – এই সম্ভাবনা বরাবর মানুষকে মুগ্ধ করেছে। আমাদের প্রত্যেকের জীবনের কখনও না কখনও এই ভাবনা এসেছে। দীর্ঘ কয়েক দশকের গবেষণার পরও, এই বিষয়ে কোনও নিশ্চয়তা দিতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। জেমস ওয়েব মহাকাশ টেলিস্কোপ, বহু দূরের এমন কিছু গ্রহের সন্ধান দিয়েছে, যেগুলিতে প্রাণ থাকতেই পারে। তবে, নিশ্চিত কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে, আমেরিকার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাম্প্রতিক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, ভিনগ্রহীদের খুঁজতে বহু দূরে যাওয়ার কোনও দরকার নেই। তারা এই পৃথিবীতেই মানুষের ছদ্মবেশে মানুষের মধ্যেই বসবাস করতে পারে। আমরা ভিনগ্রহীদের যেমন কল্পনা করি, এরা তার থেকে আলাদা। এরা অনেকটাই, দেবদূতদের মতো। মানব জগতের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক প্রযুক্তিগত নয়, বরং জাদুকরি। মহাকাশে সৌরজগতের গ্রহ পৃথিবী ছাড়া অন্য কোথায় প্রাণ রয়েছে কি না তা নিয়ে চলছে বিস্তর গবেষণা। একই সঙ্গে পৃথিবী ছাড়া অন্য কোনো গ্রহে মানুষ বসবাস ক...

প্রবন্ধ ।। নারীমর্যাদা ও অধিকার ।। হিমাদ্রি শেখর দাস

নারীমর্যাদা ও অধিকার হিমাদ্রি শেখর দাস  নারীর মর্যাদা বলতে বোঝায় নারীর সম্মান, অধিকার, এবং তার ব্যক্তিগত স্বাধীনতা। এটি সমাজে নারীর অবস্থান এবং তার প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গিকে নির্দেশ করে। নারীর প্রতি সম্মানজনক আচরণ করা হয় এবং তাদের অধিকার গুলি সুরক্ষিত থাকে। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে এই শ্রেণি সংগ্রাম শুরু হয়েছিল অনেক আগে।  একদিকে শ্রেণী বৈষম্য অপরদিকে নারী পুরুষের বৈষম্য এই দুটি ছিল শ্রেণীবিভক্ত সমাজের অন্যতম দুটি মূল ভিত। নারীর অধিকারহীনতা বা দাসত্ব শুরু হয় পরিবার ও সম্পত্তির উদ্ভাবনের ফলে। বহু যুগ ধরে নারী সমাজকে পারিবারিক ও সামাজিক দাসত্বের বোঝা বহন করতে হয়েছে বিনা প্রতিবাদে। সভ্যতার ক্রম বিকাশের সাথে সাথে নিপীড়ন ও নির্যাতনের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে - দাস সমাজব্যবস্থা এবং সামন্ততান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় নারীরা পুরুষ ও পরিবারের অধীনতা স্বীকার করে নিতে বাধ্য হয়েছে। সামাজিক উৎপাদনের কাজে নারীদের বঞ্চিত রেখেই তাদের পরাধীন জীবন যাপনের মধ্যে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। নারীর অধিকারহীনতার বিরুদ্ধে সংগ্রামের সূচনা হয় ইংল্যান্ডের শিল্প বিপ্লবের পরবর্তী সময়ে। নতুন করে নারীদের সামাজিক উৎপাদনের কাজে ...

মাসের বাছাই

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯৩তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩২ নভেম্বর ২০২৫

সূচিপত্র বস্তু, চেতনা এবং কবি ।। সজল চক্রবর্তী দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত ।। রণেশ রায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট ও সন্নিহিত অঞ্চলের কথ্য শব্দ ।। অরবিন্দ পুরকাইত চাঁদে জীবন ।। শমীক সমাদ্দার অসমাপ্তি ।। মহুয়া হুই গ্যালাক্সির শব্দে ।। জাসমিনা খাতুন তিনটি কবিতা ।। দিবাকর সেন অপূর্ণতার শেষ অধ্যায় ।। সুপ্রিয় সাহা হাফ ডজন ছড়া ।। স্বপনকুমার পাহাড়ী স্বাপ্নিক অমলের ঘুৃম ।। সঞ্জয় দেওয়ান দুটি কবিতা ।। সৌমিত্র উপাধ্যায় পথ চলতি ✍️পার্থ প্রতিম দাস হেমন্তের বিষাদ ছুঁয়ে ।। শক্তিপদ পাঠক রাই আর বাবা ।। অদিতি চ্যাটার্জি স্থিতিশীল ।। রঞ্জিত মুখোপাধ্যায় হৃদয়ের শূন্য কোড ।। লিপিকা পিঙ্কি দে অমানিশা ।। সৌভিক মুখার্জী দৃষ্টিগত ।। শামীম নওরোজ জ্যান্ত ভূতের গপ্পো ।। পার্থ সারথি চট্টোপাধ্যায় ধুতরা ফুলের ঘ্রাণ ।। মজনু মিয়া তারা খসার আলোয় ।। তীর্থঙ্কর সুমিত উত্তরণে অন্তরায় ।। সমীর কুমার দত্ত প্রেম মুদ্রা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ধারা ।। লালন চাঁদ অন্যের ব্যথায় ব্যথি ।। জগদীশ মণ্ডল গর্ভ ।। শাশ্বত বোস ভ্রমণ বিষয়ক স্মৃতিকথা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত শাপে বর ।। সাইফুল ইসলাম রবিবার ।। সঙ্ঘমিত্রা দাস দুটি ...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬

  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠালে  অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে হলে ভালো। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # ...

গল্প ।। জাতিস্মর ।। আশীষ কুমার বিশ্বাস

    জাতিস্মর   আশীষ  কুমার   বিশ্বাস    গল্পের শুরুটা প্রায় ষাট বছর আগের কথা । যার নাম গৌতম, ডাক নাম ছিল বাবু ।  তার বছর তখন ছয়-সাত হবে । আমরা বা আমি তখন একটু বড় । এক সাথেই চলতো খেলা । গোল্লা ছুট, দাঁড়িয়া বান্দা, চোর-পুলিশ । যে মাঝে মাঝে খেলা থেকে বিরত থাকতো ; সে-ই জাতিস্মর । মাঠের পাশেই ছিল একটা খেঁজুর গাছ । তাতে হাত রেখে দূরের এক গ্রামের দিকে এক মনে তাঁকিয়ে থাকতো "বাবু" । গ্রামটির নাম "বিনয় পল্লী " । মাঝে বড়ো মাঠ । হাঁটা শুরু করলে তিরিশ - চল্লিশ মিনিট লাগবে । মাঝে জলে ভরপুর দেখে কখনো যাওয়া হয়নি । বাবু কে যখন বলতাম, ওপারে কি দেখছিস? ও বলতো, ওখানে আমার ছোট মা থাকে, দিদি থাকে, আমার ভুলু কুকুর থাকে । এ কথা আমাদের বিশ্বাস হতো না । আবার খেলায় ফিরে যেতাম, খেলতাম ।  কিন্তু ও বসে বসে , ওপারের গাছ পালা , বাড়ি ঘর দেখতো । কাছে গেলে বলতো , ওই যে সবুজ ,কচি কলাপাতা রঙের দালান বাড়ি, ওটাই আমাদের বাড়ি !  এই ভাবে মাস ছয়, বছর গড়াতে লাগলো । মনে প্রশ্ন জাগতে লাগলো, এ টা কি মন গড়া , বা বানিয়ে বানিয়ে বলছে? সত্যি প্রকাশ হোল এক দিন ।  সে বাড়িতে কিছু ...

কবিতা ।। ভাষার জন্য লড়াই ।। চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু

ভাষার জন্য লড়াই চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু মুখের ভাষা বাংলা ভাষা মাকে ডাকি মা, সারা বিশ্বে তোমার মাগো নেই তো তুলনা। তোমার মুখের প্রথম ভাষা আমার মনের সকল আশা তোমার ভাষায় বলবো মাগো আমার মনের কথা, এই ভাষাতেই জড়িয়ে আছে সকল স্বাধীনতা।  এই ভাষাকে আনতে গিয়ে তাজা বুকের রক্ত দিয়ে রাজপথে সব লড়াই হলো করলো লড়াই কারা, আমার মায়ের দামাল ছেলে রক্ত পলাশ যারা।  তোমার ছেলে লড়াই করে আনলো ভাষা ঘরে ঘরে সেদিন থেকে শহীদ মিনার সাজাই ফুলে ফুলে, বীর শহীদের ত্যাগের কথা যাইনি আজও ভুলে।    ++++++++++++++++++++++++++++++++    চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু শহীদ আবুল কাশেম সড়ক, বড় বাজার, চুয়াডাঙ্গা, বাংলাদেশ।

চিরকুটের কবিতা

নতুন পৃথিবী আজ সকালে রোদ্দুর নামুক ভেজা বর্ষার মতো গা ধুয়ে কিছুটা পবিত্র হবো যত জীর্ণ মলিন দ্বেষ বিলীন হোক সব সময়ের তটে গা ভাসিয়ে কিছুটা বিলাসী হবো যা ছিল অতীত যা ছিল কষ্ট সবকিছু ভুলে নবীনে ব্রতী হবো আসুক ধেয়ে সতেজ হাওয়া দূর হোক যত কুণ্ঠা ব্যথা পুরানো যত বিবাদ ভুলে ভালোবাসার আবার বেড়া দেবো কিছুটা আশাবাদী কিছুটা কর্মঠ কিছুটা জেদি কিছুটা শপথ আসুক ছুঁয়ে বাঁচার আলো হাতে হাত রেখেই বিশ্বাসের ঘরে আবার নতুন দীপ জ্বালাবো

কবিতা ।। অরণ্যকন্যা ।। অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়

  অরণ্যকন্যা অরিন্দম চট্টোপাধ্যায় অরণ্যকন্যার দৃষ্টির ভেতর বিষাদ বিন্দু ফোঁটা ফোঁটা জলের মতো গড়িয়ে যায়, হয়ে যায় কোন নদীপথ দৃষ্টি ভেঙে ভেঙে চলে যায় কোন এক শূন্য পথে অরণ্যকন্যার হৃদয়ের ভেতর ভাঙে যতো বৃক্ষপত্র নতুন পত্র পুষ্পের খোঁজ নেই ঠোঁট জুড়ে সমুদ্রকাঁপন বুদবুদের মতো অস্ফুট হয়ে উচ্চারিত হয় কোন অক্ষর শব্দ আর তাঁর শরীর থেকে ছড়িয়ে যায় হয়ে যায় একটা অদৃশ্য কবিতা...    ================== @ অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়,  বেহালা, কলকাতা -৭০০০৬০,  

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯২তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩২ অক্টোবর ২০২৫

—: সম্পাদকীয় দপ্তর থেকে :— এই সংখ্যার জন্য লেখা এসেছিল প্রায় ১৮০টা। কিন্তু গুণগত মানে দুর্বল লেখার সংখ্যা বহু। আমরা নবপ্রভাতে নতুনদের কথা ভেবে বেশ কিছু দুর্বল লেখাও রাখি। কিন্তু সবসময় একই লোকের দুর্বল লেখা প্রকাশ করা অনুচিত বলে মনে করি। শেষ পর্যন্ত ৯৯ জনের লেখা রাখা গেল। যাদের লেখা প্রকাশিত হল না, তারা লেখাগুলি অন্য যেখানে খুশি পাঠাতে পারেন। বিশেষ কারণে এই সংখ্যার মুদ্রিত সংস্করণ প্রকাশিত হচ্ছে না। আমরা দুঃখিত। তবে মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি শীঘ্রই আসছে। সঙ্গে থাকুন। সকলকে উৎসবমুখর বর্ণময় শুভেচ্ছাসহ— —নিরাশাহরণ নস্কর, সম্পাদক, নবপ্রভাত। অনুরোধ : প্রকাশিত লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন, ছবি/স্ক্রীনশট নয়।  == সূচিপত্র == পড়া-লেখার ইতিহাস অনুসন্ধান।। তপন তরফদার উৎসব : মানুষের চিরন্তন আত্মপ্রকাশ।। কৃশানু ব্যানার্জি বাংলা : সভ্যতা ও সংস্কৃতির জন্মভূমি।। শ্যামল হুদাতী সমুদ্র আর অস্তিত্ব ।। সুব্রত চৌধুরী রাজা ছিলেন জুবিন গর্গ ।। গঙ্গা 'অনু'   আদ্যাশক্তি মহামায়ার বাংলা বারো মাসের বারো রূপ ।। অর্হণ জানা মেধাদাদুর আসর ।। রণেশ রায় বৈজ্ঞানিক মা...

কবিতা ।। মনোজকুমার রায়

জল সিঁড়ি চেক বইয়ের পাতা ফুরিয়ে যেতে থাকে -- ঝরে পড়ে বৃদ্ধ গাছটির পত্রমুকুল কাঁচা গন্ধ বেয়ে চলে সময়ের স্রোতে  সারা ভোর জেগে থাকি ঘুমের টলে তাড়া দেয় একগ্রাস অবিশ্বাসী বায়ু দিন ফুরনো লাল সূর্যের টানে নেমে আসে পাড় ছোঁয়া জল সিঁড়ি ================= মনোজকুমার রায় দঃ ঝাড় আলতা ডাউকিমারী, ধূপগুড়ি জলপাইগুড়ি -৭৩৫২১০ মো ৭৭৯৭৯৩৭৫৬৬

উন্মুক্ত পাগলামি ।। আশরাফুল মণ্ডল

উন্মুক্ত পাগলামি আশরাফুল মণ্ডল আহা, অপরূপ নিজস্বতার দাহ! কুঁকড়ে যায় আবহমান, সজনে পাতার বোঁটায়! ভাপওঠা ভাতের কাছে মাছি সত্তায় কী নিপুণ! তবুও ঘোর লাগা বসন্তের ডাক, হাঁকে! খেদিয়ে দেয় পা দোলানো প্রস্তাব, ওই ধুনুরি চোখ! রাংতায় মোড়া ডাকের সাজ, দে দোল দোল! হুইসেল বাজিয়ে কে রুখে দ্যায় সেই নাকছাবির রুদালি কাঁপন! খালবিল ছেঁচে পাঁচসিকের  মানত কুড়িয়ে আনে, বাংলা বাজার। ঠ্যাং নাচানো সুরে চোখ মারছে, দ্যাখো ভ্যানতারা! মুখ খোলা মানেই পাঁজরের স্রোত ভাবা যেন উগরানো টালমাটাল! ঢিল মারা প্রশ্নের রোয়াকে বক্রচোখে যেন মেধাবী কবিতা! মুছে দিও তবে লাজুক গুপ্ত রোগ, দিনরাত্রি! ভালো থেকো তোমরা বাছাধন, রং মাস সে আর কতদিন... ================    ASRAFUL MANDAL Chandidas Avenue, B-zone, Durgapur, Paschim Bardhaman, Pin - 713205,  

কবিতা ।। সোনালি অতীত ।। প্রবোধ কুমার মৃধা

সোনালি অতীত  প্রবোধ কুমার মৃধা   সুশীতল ছায়াঘেরা স্নেহময়ী মাটি মা।   সে আমার জন্মভূমি সপ্তপুরুষের গাঁ।   প্রকৃতির বুক থেকে প্রাণের রসদ নিয়ে।   ফিরিতাম নদীতীরে হৃদয়ের গান গেয়ে।   সন্ধ্যাতারা উঁকি দিত গোধূলি লগনে।   প্রত্যুষে ভাঙিত ঘুম বিহঙ্গ কূজনে ।   আষাঢ়ের নব মেঘে ঘিরিত গগন।   বাদলের ছায়া ঢাকা কদম্ব কানন।   দলবেঁধে মাঠে-বাটে বেতালা-বেছন্দে।   কেটে যেত সারাদিন ভালো কভু মন্দে।   ডাক দেয় শিশুকাল, বাল্য ও কৈশোর।   অফুরন্ত প্রাণোচ্ছ্বল, আনন্দে বিভোর।   করমের স্রোতে ভেসে সংসারের হাটে।   ভিড়িল জীবনতরী নগরের ঘাটে।   ফিরিবার সাধ্য নাই ফেলে আসা পথে।   বাল্য রোমন্থন করি অতীত স্মৃতিতে।                    __________