Skip to main content

প্রবন্ধ ।। যুদ্ধ এবং তার ফলাফল ।। সোমা চক্রবর্তী



যুদ্ধ এবং তার ফলাফল

সোমা চক্রবর্তী

মাত্র এক বছর আগেই অর্থাৎ ২০২১ সালের ১৫ই আগস্ট আমরা প্রত্যক্ষ করেছিলাম আফগানিস্তানে তালেবানের অভ্যুত্থান, সেই সঙ্গে কাবুলের কার্যকরী সরকারের পতন। কয়েকদিন ধরে সংবাদপত্রের পাতায় পাতায় প্রকাশিত হতে লাগলো একের পর এক শিহরণ জাগানো নানা ধরনের খবর, সাধারণ মানুষের আতঙ্ক আর অসহায়তার গল্প। হ্যাঁ, নিছকই গল্প। গল্প বললাম এই কারণে যে, সেই খবরগুলো আমাদের সাময়িক ভাবান্তর ঘটালেও, আমাদের মননে তার কোনো স্থায়ী প্রভাব পড়েনি। আমরা আবার সবকিছু ভুলে গেলাম। আবার হাসি, গানে মেতে উঠলাম। আফগানিস্তানে এখন কি হচ্ছে, যে সব মানুষ দেশ ছেড়ে অনিশ্চিতের উদ্দেশ্যে পা বাড়ালো, তাদের কি হলো, যারা‌ দেশ ছেড়ে চলে যেতে পারলো না, তাদেরই বা কি হলো, আর জানতে চাইলাম না। অবশ্য জানবার সরাসরি কোনো উপায়ও নেই। কারণ, সংবাদ মাধ্যমগুলি এখন আবার অন্য বিষয় নিয়ে ব্যস্ত। বরাবরই দেখা যায়, সংবাদ মাধ্যমগুলি আমাদের যতদিন, যে বিষয় নিয়ে মাতিয়ে রাখে, আমরা ঠিক ততদিন সেই বিষয়টা নিয়ে ভাবনা চিন্তা করি। এই প্রসঙ্গে প্রচলিত একটা কথা উল্লেখ করা যায় যে, জনতার স্মৃতিশক্তি নাকি বড়ো দুর্বল। খুব বেশীদিন কোনো বিষয় জনগণ মনে রাখে না। তাই তো, সময়ের ব্যবধানে অপরাধী ব্যক্তি রাষ্ট্রের প্রধান হয়ে বসে। দেশের প্রকৃত বীর আর বরেণ্য সন্তানদের ভুলে গিয়ে আমরা তারিখ মেনে মেনে উৎসবে মুখরিত হয়ে উঠি। এটাই বোধহয় পৃথিবীব্যাপী জনগনের চরিত্র।

এখন আবার সংবাদ মাধ্যমগুলি সক্রিয় হয়ে উঠেছে ইউক্রেন আর রাশিয়ার যুদ্ধ নিয়ে। কি নিয়ে যুদ্ধ? কেন যুদ্ধ? এই যুদ্ধের কি আদৌ কোনো প্রয়োজন আছে? এই যুদ্ধ চললে শেষ পর্যন্ত কি হবে? আমরা ভাববো না? আমরা জানবো না? এই যে বিশ্বের বড়ো বড়ো দেশগুলো যুদ্ধের ঘুঁটি সাজিয়ে চলেছে ছোট অথবা অপেক্ষাকৃত দুর্বল‌ দেশগুলোর বিরুদ্ধে, এসব কেন? আমরা বিজ্ঞানের সাহায্যে চাঁদে পা রেখেছি ১৯৬৯ সালে। আর একবিংশ শতাব্দীতে মঙ্গলে শুধু পা রাখা নয়, সেখানে বসতি স্থাপন করার স্বপ্ন দেখাচ্ছেন শিল্পপতি এলন মাস্ক। অজানা মহাবিশ্বের দিকে তাকিয়ে রয়েছে মানব সভ্যতা সেই কবে থেকে! যে কোনো দিন হয়তো আবিষ্কার হয়ে যাবে এলিয়েনের অস্তিত্ব। তারা আমাদের মতো হবে, না আমাদের থেকেও উন্নত হবে অথবা বর্বর হবে, সেকথা আমাদের জানা নেই। তবে তাদের সঙ্গে যদি সম্পর্ক স্থাপন করা যায়, তবে তারা কি দেখবে? ছোট্ট একটা গ্রহের মধ্যে ঝুলন সাজানোর মতো করে ছড়িয়ে থাকা দেশগুলো নিজেদের মধ্যে লড়াই করছে? গোলা বারুদ বন্দুক নিয়ে রক্তগঙ্গা বইয়ে দিচ্ছে একে অপরের বিরুদ্ধে? হাজার হাজার নিরীহ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে, আর বাকি পৃথিবী তাকিয়ে সেসব দেখছে! তারা অবাক হবে না? আর আমরা লজ্জিত হবো না?

এলিয়েনরা আছে কি নেই, তারা আসবে কিনা পৃথিবীতে, সে কথা কেউ জানে না। কিন্তু তর্কের খাতিরে যদি ধরে নিই, হলিউডের ইংরেজী সিনেমাগুলোর মতো একদিন এলিয়েন আক্রমণের মুখে পড়বে আমাদের এই নীল গ্রহ, তখন কি সত্যি সত্যিই ভাববার মতো সময় থাকবে যে, কে কোন ভৌগলিক অঞ্চলে বাস করে, কে কোন ভাষায় কথা বলে, কার সংস্কৃতি কার থেকে আলাদা? হয়তো কিছু কিছু ক্ষমতাবান অথচ অন্ধ শাসক তখনও বেছে বেছে কিছু মানুষকেই কেবল বাঁচাতে চাইবে। হয়তো সেখানে হিসেব কষা হবে এই বলে যে, গরীব মানুষগুলোর বাঁচার প্রয়োজন নেই, কালো চামড়ার মানুষের আর কিসের দরকার? হয়তো সাধারণ মানুষের কথা বিন্দুমাত্র না ভেবে, শুধু অর্থবান আর প্রতিভাবানদের বেছে বেছে বাঁচানো হবে- এইরকম আরো নানানরকম বাছবিচার চলতে থাকবে। হয়তো তখনও, আমরা-ওরা, আমাদের-তোমাদের- এইসব চালাতে চেষ্টা করবে কেউ কেউ। কিন্তু এলিয়েনদের কাছে কিন্তু আমাদের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই! ওদের কাছে আমরা সবাই শুধুমাত্র অন্য গ্রহের প্রাণী, পৃথিবীবাসী। শত্রু হলে শত্রু, মিত্র হলে মিত্র!

এক দেশের সঙ্গে অন্য দেশের যুদ্ধ শুরু হলে, দাবার চালের মতোই কূটনৈতিক চালের শিকার হতে হয় যুদ্ধে জড়িয়ে পড়া দেশগুলোর সাধারণ মানুষকে। সম্প্রতি (২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে) ইউরোপ তথা বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী দেশ রাশিয়া যুদ্ধ ঘোষণা করেছে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে। যুদ্ধ করার মতো সত্যিকারের তেমন কোনো কারণ আছে কি নেই, সেটাও বিশেষ তর্কসাপেক্ষ। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট সহ আরো বিভিন্ন দেশ বারবার শান্তিপূর্ণ আলোচনা করার আহ্বান জানানো সত্ত্বেও যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। অথচ রয়টার্সের একটি প্রতিবেদনে পড়লাম, ইউক্রেনের সীমান্তে রাশিয়ার সেনা আমদানী এবং সাজসজ্জা দেখে, যুদ্ধ শুরু হবার বেশ কিছুদিন আগে থেকেই নাকি বার্লিনের বিখ্যাত ব্র্যানডেনবার্গ গেটটিকে ইউক্রেনের জাতীয় পতাকার রঙের সঙ্গে রঙ মিলিয়ে নীল আর হলুদ রঙের আলোয় আলোকিত করা হচ্ছে প্রতি রাতে, বিশ্বের কাছে মানবতার আর সংহতির বার্তা জানাতে। প্যারিসের সিটি হলকে একই ভাবে আলোকিত করে রাখা চলছে যুদ্ধবিরোধী বার্তা জানাতে। তর্কের খাতিরে মানা যেতে পারে যে, এসব না হয় সরকার বা কর্তৃপক্ষের ইচ্ছেতে হচ্ছে। কারণ, জার্মানি বা ফ্রান্স কোনো দেশই ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার আক্রমণকে সমর্থন করেনি। কিন্তু রাশিয়ার সাধারণ মানুষ? কি বলছেন তারা? "The Guardian" পত্রিকার সমীক্ষা অনুযায়ী মাত্র ৪৫% রাশিয়ান এই যুদ্ধকে সমর্থন করেন, বাকী ৫৫% করেন না। "The Indian Express" এর ২৫শে ফেব্রুয়ারীর একটি প্রতিবেদন বলছে, 
Defying police warnings, people took to central squares and protest against the military campaign. Some risked arrest in order to voice their opposition to the invasion. Over 1000 were later detained.

এর অর্থ হচ্ছে, কোনো দেশের সাধারণ মানুষই যুদ্ধ চায় না। এমনকি, যে দেশ অন্য দেশকে আক্রমণ করছে, সেই দেশের সাধারণ মানুষও যুদ্ধ চায় না। রাশিয়াতেই সাধারণ মানুষের মধ্যে এই যুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হচ্ছে সবচেয়ে বেশী। তাঁরা মিছিল করছেন, গ্রেপ্তার হচ্ছেন, রাশিয়ায় অবস্থিত ইউক্রেনের দূতাবাসের সামনে শিশুদের নিয়ে গিয়ে, তাদের হাত দিয়ে ইউক্রেনের মানুষের উদ্দেশ্যে ফুল রেখে আসছেন ওই দেশের সাধারণ মানুষ। সরকারের পক্ষ থেকে যুদ্ধের খবর প্রচারে বাধা দেওয়ার কারণে একাধিক টিভি চ্যানেল বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। একই কারণে বন্ধ হয়ে গেছে মস্কো রেডিও। রাশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম তেলের কোম্পানি পর্যন্ত পুতিন সরকারের সঙ্গে সবরকমের সম্পর্ক ছিন্ন করে দিয়েছে। আর যেই দেশটি যুদ্ধে আক্রান্ত? যুদ্ধে তাদের ক্ষয়ক্ষতি, আতঙ্কের পরিমাণ যে কতো, পৃথিবী তার কোনো হিসেব চায় না, ইতিহাস তার হিসেব নেয় না।

রাশিয়া যখন ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে, তখন আমেরিকা বলছে তারা ইউক্রেনের পাশে আছে। আবার যখন আমেরিকা ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে, তখন রাশিয়া বলে তারা ইরানের পাশে আছে। আর ছোট ছোট দেশগুলো নিজেদের স্বার্থের দিক বিবেচনা করে, শক্তিধর দেশগুলোর সঙ্গে রাজনৈতিক, কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য তাদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলে। বর্তমান বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী দেশ চীন এই মুহূর্তে রাশিয়ার বিরোধিতা করছে না। কারণ, রাশিয়ার সঙ্গে তাদের রাজনৈতিক সম্পর্ক বর্তমানে বেশ ভালো। আর রাশিয়ার সীমান্তবর্তী আর্মেনিয়া, কাজাখস্তান, কর্গিস্তান, তাজিকিস্তান এবং বেলারুসের মতো ছোট ছোট দেশগুলি রাশিয়ার বিরোধিতা করতে পারবে না। কারণ, ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাবার পর স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করলেও, এখনও এই দেশগুলি সর্বান্তকরণে রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীল। তালেবানপন্থী আফগানিস্তান এই যুদ্ধে রাশিয়াকেই সমর্থন করছে। ওদিকে, ন্যাটো আর ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত দেশগুলি এবং জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া আর আমেরিকা সহ বিশ্বের বেশীরভাগ দেশ- কেউই এই যুদ্ধে রাশিয়াকে সমর্থন করছে না। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনও বারবার বলেছে যে, এই যুদ্ধ তারা সমর্থন করে না। কারণ, এই যুদ্ধের ফলাফল সরাসরি ভাবে তাদের সবার ওপরেই পড়বে। আমেরিকা, পোল্যান্ড‌ আর ক্রোয়েশিয়ার মতো কিছু দেশ ইউক্রেনকে সামরিক সাহায্য পাঠিয়ে সহায়তা করেছে। জার্মানি ফ্রান্স দিয়েছে বিপুল পরিমাণ অর্থ। ইতিমধ্যেই ইউরোপ, আমেরিকায় তেলের দাম বেড়ে আকাশ ছোঁয়া হয়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে একমাত্র ভারতই বিশ্বের একমাত্র দেশ, যে এখনো সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করে চলেছে। তবে, দীর্ঘদিন ধরে যুদ্ধ চলতে থাকলে আমাদের দেশের ওপরও তার প্রভাব অবশ্যম্ভাবী। এমনকি যুদ্ধের ফলাফল ভুগতে হবে রাশিয়াকেও। কারণ এর মধ্যেই পশ্চিমের দেশগুলির তরফ থেকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নানা ধরনের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

হঠাৎ করে রাশিয়া কেন যুদ্ধ ঘোষণা করলো ইউক্রেনের বিরুদ্ধে - এর উত্তর পেতে হলে আমাদের বেশ খানিকটা পিছিয়ে যেতে হবে। ২০১৪ সালে রাশিয়া প্রথমবার ইউক্রেনে প্রবেশ করে। ইউক্রেনের ভেতরে যে রুশ অধ্যুষিত অঞ্চল, সেখানে তখন সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু হয়। অনেক ভাবনা চিন্তা করেই তখন সেই বিদ্রোহকে সমর্থন করেছিলো রাশিয়া। পরে, এই বিদ্রোহীদের সঙ্গে মিলে রুশ সৈন্যরা ইউক্রেনের অন্তর্গত ক্রিমিয়া অঞ্চলটি দখল করে এবং সেটি নিজেদের দেশের অংশ বলে ঘোষণা করে। এরপর থেকেই রুশ সেনারা ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করে আসছে। সেই বছরই অর্থাৎ ২০১৪ সালে যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য দুই দেশের মধ্যে "মিনস্ক চুক্তি" নামে একটি আন্তর্জাতিক শান্তি চুক্তি সাক্ষর করা হয়েছিল। কিন্তু লড়াই তাতে থামেনি। ক্রিমিয়া দখল করার পেছনে রাশিয়ার মূল উদ্দেশ্য অবশ্য ছিল কৃষ্ণ সাগরের বুকে অবস্থিত ক্রিমিয়ার সেভাস্তোপোল শহরের সেভাস্তোপোল বন্দরটির ওপর রুশ অধিকার বজায় রাখা। অতীতে দীর্ঘকাল এই অঞ্চলটি রাশিয়ার অংশ ছিল। ১৯৫৪ সালে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রধান নিকিতা ক্রুশ্চেভ ক্রিমিয়াকে ইউক্রেনের কাছে হস্তান্তরিত করেন। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর এটি স্বাধীন ইউক্রেনের অংশ হয়। ২০১৪ সালে  রাশিয়া আবার এর দখল নেয়। ভৌগলিক অবস্থান এবং নাব্যতার দিক থেকে এই বন্দরটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই কারণে যে, একমাত্র এই বন্দরটিকেই সারা বছর উষ্ণ জলের জন্য সচল রাখা যায়। তাছাড়া, এখানে যে নৌ-ঘাঁটি রয়েছে, সেটিও রাশিয়ার কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রাশিয়ার বাল্টিক সাগরে প্রবেশ করার পথও হচ্ছে এই বন্দর। সাম্প্রতিক যুদ্ধে কৃষ্ণ সাগরের সঙ্গে নৌপথে যুক্ত গুরুত্বপূর্ণ ইউক্রেনীয় শহর খেরসন দখল করে নিয়েছে রাশিয়া। এরপর মারিয়ুপোলে বন্দর শহরটির দখল নিতে পারলেই ক্রিমিয়া পর্যন্ত তাদের পথ একেবারে পরিষ্কার।

আরও একটি বিষয় রয়েছে রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের মূলে। পরমাণু অস্ত্র ছাড়া, রাশিয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র হচ্ছে তার জ্বালানি। ইউরোপের মোট তেল এবং গ্যাস সরবরাহের ২৫ শতাংশই  আসে রাশিয়া থেকে। আর ইউরোপে গ্যাস সরবরাহের ক্ষেত্রে ইউক্রেনই  হচ্ছে রাশিয়ার প্রবেশ দ্বার। রাশিয়া থেকে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে প্রধান গ্যাস পাইপ লাইনগুলো গেছে ইউক্রেনের ভেতর দিয়েই। রাশিয়ার প্রায় ৪০ শতাংশ গ্যাসের সরবরাহ এই পাইপ লাইনের মাধ্যমেই হয়। তাই, ইউক্রেন ন্যাটো এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগ দেবার ফলে যদি আরো শক্তিশালী এবং নিরপেক্ষ হয়ে ওঠে, আর তার ফলে যদি সম্পূর্ণ ভাবে রাশিয়ার প্রভাবমুক্ত হয়ে যায়, সেটাই রাশিয়ার প্রধান আশঙ্কা। অবশ্য, ইউক্রেনকে পাশ কাটিয়ে বাল্টিক সাগরের নীচ দিয়ে জার্মানি পর্যন্ত নতুন একটি গ্যাস পাইপ লাইন বসিয়েছে রাশিয়া। নতুন সেই লাইনের নাম নর্ড স্ট্রিম-২। যদিও, রাশিয়ার ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার পর এর নির্মাণকার্য স্থগিত হয়ে রয়েছে।

পূর্ব ইউরোপের কিছু কমিউনিস্ট দেশ এবং পূর্ব সোভিয়েত ইউনিয়নের মতো, ইউক্রেনের মানুষের মধ্যেও বিপরীত দুটি রাজনৈতিক মত দেখতে পাওয়া যায়। ইউক্রেনের বেশীরভাগ মানুষ চায় পশ্চিম ইউরোপের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে চলতে অর্থাৎ ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগ দিতে এবং নিজেদের প্রতিরক্ষার জন্য ন্যাটো সামরিক জোটের সদস্য হতে। ইউক্রেনের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এবং তার সরকার এই মতের পক্ষে। অন্যদিকে, ইউক্রেনের কিছু সংখ্যক মানুষ নিজেদের এখনো রাশিয়ার অংশ বলেই মনে করেন। কারণ তারা রুশ ভাষাভাষী এবং জাতিগত ভাবেও তারা রুশ। রাশিয়ার সঙ্গে তাদের ঘনিষ্ঠ সাংস্কৃতিক এবং সামাজিক যোগাযোগ রয়েছে। এদের অনেকেরই রাশিয়ার পাসপোর্ট পর্যন্ত রয়েছে। পূর্ব ইউক্রেনের দুটি শহর দোনেৎস্ক আর লুহানস্ক (একত্রে ডনবাস) এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য। ইউক্রেনের সরকারী ভাষা ইউক্রেনীয় ভাষা। ইউক্রেনের মোট সাত কোটি জনসংখ্যার মধ্যে প্রায় পাঁচ কোটি মানুষ অর্থাৎ প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষই এই ভাষায় কথা বলেন। আবার সেখানকার কার্যকরী ভাষা হিসেবে রুশ ভাষারও প্রচলন রয়েছে। প্রায় এক কোটি মানুষ রুশ ভাষাভাষী। তবে, এ দেশের অনেক অধিবাসীই  রুশ ও ইউক্রেনীয়- এই দুই ভাষাতেই কথা বলতে যথেষ্ট স্বচ্ছন্দ। সংখ্যার ভিত্তিতে প্রচুর ইহুদী মানুষ এখানে বসবাস করেন। রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের ফলে, লক্ষ লক্ষ ইউক্রেনীয় সহ বহু ইহুদী মানুষও দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছেন। শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছেন সীমান্তবর্তী অন্যান্য দেশগুলিতে। প্রায় তিন বছর ধরে অতিমারীর ফলে বর্তমানে অর্থনৈতিক ভাবে জেরবার বিশ্বের প্রত্যেকটি দেশ। এরই মধ্যে যুদ্ধের কারণে বেড়ে যাওয়া এইসব শরণার্থীদের জন্য তৈরী করতে হয়েছে অস্থায়ী শিবির। এর ফলে ব্যাহত হতে চলেছে সেইসব দেশের অর্থনৈতিক সন্তুলন। প্রয়োজন হবে আন্তর্জাতিক সাহায্যের। 

কিছু সংবাদ মাধ্যম এবং অনেক বিশেষজ্ঞরা রাশিয়া ও ইউক্রেনের এই যুদ্ধকে 'তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ' বা তার সমতুল্য বলে অভিহিত করছেন। কারণ, cold war এর‌ পর প্রায় চল্লিশ বছর পর সক্রিয় ভূমিকা পালন না করলেও, এই যুদ্ধকে কেন্দ্র করেই নীতিগত ভাবে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে পৃথিবীর যাবতীয় দেশগুলি। যুদ্ধ চলাকালীন রাশিয়ার রাষ্ট্রপ্রধান ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের কিছুটা (ডনবাস) অঞ্চলকে পূর্ব ইউক্রেন নামে 'স্বাধীন দেশ' বলে ঘোষণা করেছেন। যদিও অন্য কোনো দেশ এখনো পর্যন্ত এই বক্তব্যের সমর্থনে কিছু বলেনি। এরমধ্যে চারবার যুদ্ধ থামানোর লক্ষ্যে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু যুদ্ধ থামানোর কোনো পথ বের হয়নি।  ইউরোপীয় ইউনিয়নে আর ন্যাটোতে ইউক্রেনের অংশগ্রহণ করা নিয়ে আপত্তি প্রকাশ করে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে রাশিয়া। এক পক্ষাধিক কাল হয়ে গেছে, ভয়াবহ সেই যুদ্ধ চলছে। রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভয়ঙ্কর এবং নিষিদ্ধ অস্ত্র প্রয়োগের অভিযোগ উঠেছে। উঠেছে স্কুল, হাসপাতাল আর জনবসতির ওপর বোমা বর্ষণের অভিযোগ। 

আজ এই আলোচনা, কাল এর সঙ্গে ওর বৈঠক, এই চুক্তি, ওই জোট- এই সবের মধ্যে সবাই রূদ্ধশ্বাসে অপেক্ষা করে একটা 'মিরাকেল' ঘটার। কিন্তু একথা সেকথায় দিন বয়ে যাচ্ছে। কাতারে কাতারে মানুষ মারা গেছে, মানুষ গৃহহারা হয়েছে, প্রিয়জনকে হারিয়েছে। সাধারণ মানুষের ঘর ভাঙছে, শহর গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। অর্থনৈতিক অস্থিরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে আর দীর্ঘকাল ধরে অজান্তেই তার জের বহন করে চলতে হবে সাধারণ মানুষকে। মাত্র সাত কোটি মানুষের দেশ ইউক্রেনের মাথাপিছু বার্ষিক আয় ছিল অনেক বেশী। সে দেশে উচ্চ শিক্ষিত মানুষের সংখ্যাও যথেষ্ট বেশী। প্রায় সব মানুষ ছিল সাক্ষর এবং প্রাথমিক শিক্ষাপ্রাপ্ত। উন্নত সংস্কৃতিবান দেশটি পর্যটনের জন্য বিশ্বের দরবারে উল্লেখযোগ্য ছিল। ছবির মতো সাজানো সুন্দর দেশটি এখন বিধ্বংসী যুদ্ধের লীলাক্ষেত্র। যুদ্ধ থেমে গেলেও, প্রায় সম্পূর্ণ ভাবে ধ্বংসপ্রাপ্ত এই ইউক্রেনের পুনর্গঠনের জন্য কতদিন লাগবে কে জানে! আর শুধু ইউক্রেন নয়, পৃথিবীর প্রতিটা প্রান্ত আজ গৃহযুদ্ধের অশান্তিতে ক্ষতবিক্ষত। প্রায় সব জায়গাতেই প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক আর কূটনৈতিক সম্পর্ক অত্যন্ত খারাপ। সম্প্রীতি আর সহিষ্ণুতা নেই কিছুমাত্র কোথাও। সাম্প্রদায়িক আগ্রাসনের আগুনে পুড়ছে গোটা পৃথিবী। বাড়ছে উদ্বাস্তুর সংখ্যা। এভাবে চলতে থাকলে কতদিন আর প্রেম, ফুল, সুখ আর সমৃদ্ধি নিয়ে বয়ে চলতে পারবে মানুষের সমাজ? ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে কি রেখে যাবো আমরা? কেমন পৃথিবী?

আজ নয়তো কালো, হয়তো যুদ্ধ থেমে যাবে। যদি আক্রান্ত দেশের রাষ্ট্রপ্রধান বন্দী হয়, অথবা আক্রমণকারী দেশের রাষ্ট্রপ্রধানকে গুপ্তহত্যা করা হয়, সেই ঘটনা সাল তারিখ সহ ইতিহাসের পাতায় স্থান পাবে। কিন্তু যারা আমাদেরই মতো সাধারণ মানুষ? যারা ভয়ঙ্কর আতঙ্কপ্রহর যাপন করে চলেছে অকারণে, যারা হারালো তাদের প্রিয়জনকে অকারণে, যারা দেশ ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হলো- সম্পূর্ণ অকারণে, তাদের নিয়ে কি বলবে আগামী দিনের ইতিহাস? তারা তো শুধু একটা সংখ্যা হয়ে রয়ে যাবে - "পাঁচ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে" কিম্বা "দশ লক্ষ মানুষ দেশ ছেড়ে চলে গেছে"। কিন্তু আমাদের সকলের মতো তাদেরও তো একটা জীবন ছিল! সুখ, দুঃখ, প্রেম, ভালোবাসা, বর্ষা, বসন্ত তো তাদেরও ছিল! সেই মানুষেরা একটা সংখ্যা থেকে একটা মুখ, একটা জীবন, একটা মানুষ কবে হয়ে উঠবে?

পরিসংখ্যান দিয়ে ভরাট করতে চাইলে এই প্রবন্ধটির পরিসর বেড়ে তিনগুণ হলেও তাতে কুলোবে না।  পরিসংখ্যান তো ছড়িয়ে রয়েছে সর্বত্র। তাই পরিসংখ্যান দিয়ে এর পরিসর আর না ভরিয়ে আসুন, আমরা ভেবে দেখি, যুদ্ধ আমাদের কি দেয়! একসময় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিশ্লেষণ করতে গিয়ে হিটলারকে 'মানসিক ভাবে অসুস্থ ছিলেন' বলে দাবী করেছিলেন অনেক ঐতিহাসিক। আজকের দিনেও অনেক বিশেষজ্ঞ ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার হামলাকে সেই একই পর্যায়ে ফেলতে চাইছেন। আশ্চর্য এই যে, সারা বিশ্বের বেশীরভাগ দেশ এই যুদ্ধ সমর্থন করছে না, তা সত্ত্বেও এই বর্বর আক্রমণ থামানোর জন্য কোনো পথ খুঁজে পাচ্ছেন না তাবত কূটনীতিবিদরা। এদিকে বিধ্বংসী যুদ্ধ চলছে, চলছে নিরীহ মানুষের ওপর ভয়ঙ্কর অস্ত্রের প্রয়োগ। নির্বিচারে মানুষ মরছে, শিশু, বৃদ্ধ, অসুস্থ আর অসহায় মানুষেরাও রেহাই পাচ্ছে না। বিপন্ন মানবতার এই ছবি দেখতে দেখতে আর সংবাদ শুনতে শুনতে বোধহয় এখন ক্লান্ত পৃথিবীর প্রত্যেকটি ধূলিকণা। শক্তি আর ক্ষমতা যাদের কবলে, তারা গণিত বইয়ের লাভ-ক্ষতি অধ্যায়ের যাবতীয় অঙ্ক কষে ফেলার পরও নিরীহ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর মতো মানবতার উত্তর মেলাতে পারেনি। তাই দিনের পর দিন মানুষ মরছে। শিশুরা কাঁদছে। তবু যুদ্ধ চলছে। আমরা সবাই নির্বাক হয়ে তাকিয়ে দেখছি। বেদনায় অবশ হয়ে পড়লেও কিছু করার নেই।

বেশীরভাগ সময় মানুষ অমিত শক্তির অধিকারী হতে চায়, 
শুধুমাত্র শক্তির অপপ্রয়োগ করবে বলে। দৈহিক শক্তি, অস্ত্রের শক্তি, রাজনৈতিক কিম্বা রাষ্ট্রিক শক্তির অধিকারী হতে পারলেই সে দুর্বলকে নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। মানুষ ভুলে গেছে, জোর করে কাউকে শেষ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয় না। একদিন না একদিন সে কারাগার থেকে বেরিয়ে আসবেই- তা সে বাস্তবের কারাগার হোক, কিম্বা মনের কারাগার। সভ্যতার সঠিক সংজ্ঞা হলো ক্ষমতা প্রয়োগে সংযম দেখানো। প্রাপ্ত অথবা অর্জিত ক্ষমতাকে কল্যাণকর কাজে ব্যবহার করা। সমাজের সকলের সার্বিক মঙ্গল করা।
তা না হলে, শুধুমাত্র প্রযুক্তিগত বা গবেষণালব্ধ উন্নতিকে
সভ্যতা বলা যায় না। যখন দেখি, মানুষের বিরুদ্ধে মানুষ আঘাত শানাতে চাইছে, তা সে ধর্মের জন্যই হোক, কিম্বা ক্ষমতা দখলের জন্য; যখনই দেখি মানুষের হাতে মানুষেরই বিরুদ্ধে অস্ত্র, তা সে লাঠিই হোক, কিম্বা বন্দুক- আমি তো মানবতার মৃত্যু দেখতে পাই!

-------------------------------------

তথ্যসূত্র:
Wikipedia.org
আনন্দবাজার পত্রিকা
The Guardian
 এবং অন্যান্য


=====================



সোমা চক্রবর্তী

Kalikapur, Taki Toad 
PO. Barasat, Dist: 24 Pgs (N), WB.
Pin: 700124.

Comments

বিধিবদ্ধ স্বীকার্য :

লেখার বক্তব্যের দায়িত্ব লেখকের, পত্রিকার নয়। আমরা বহু মতের প্রকাশক মাত্র।

মতামত/লেখা এখানে জমা দিন

Name

Email *

Message *

সাম্প্রতিক বাছাই

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬

  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠালে  অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে হলে ভালো। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # ...

গল্প ।। জাতিস্মর ।। আশীষ কুমার বিশ্বাস

    জাতিস্মর   আশীষ  কুমার   বিশ্বাস    গল্পের শুরুটা প্রায় ষাট বছর আগের কথা । যার নাম গৌতম, ডাক নাম ছিল বাবু ।  তার বছর তখন ছয়-সাত হবে । আমরা বা আমি তখন একটু বড় । এক সাথেই চলতো খেলা । গোল্লা ছুট, দাঁড়িয়া বান্দা, চোর-পুলিশ । যে মাঝে মাঝে খেলা থেকে বিরত থাকতো ; সে-ই জাতিস্মর । মাঠের পাশেই ছিল একটা খেঁজুর গাছ । তাতে হাত রেখে দূরের এক গ্রামের দিকে এক মনে তাঁকিয়ে থাকতো "বাবু" । গ্রামটির নাম "বিনয় পল্লী " । মাঝে বড়ো মাঠ । হাঁটা শুরু করলে তিরিশ - চল্লিশ মিনিট লাগবে । মাঝে জলে ভরপুর দেখে কখনো যাওয়া হয়নি । বাবু কে যখন বলতাম, ওপারে কি দেখছিস? ও বলতো, ওখানে আমার ছোট মা থাকে, দিদি থাকে, আমার ভুলু কুকুর থাকে । এ কথা আমাদের বিশ্বাস হতো না । আবার খেলায় ফিরে যেতাম, খেলতাম ।  কিন্তু ও বসে বসে , ওপারের গাছ পালা , বাড়ি ঘর দেখতো । কাছে গেলে বলতো , ওই যে সবুজ ,কচি কলাপাতা রঙের দালান বাড়ি, ওটাই আমাদের বাড়ি !  এই ভাবে মাস ছয়, বছর গড়াতে লাগলো । মনে প্রশ্ন জাগতে লাগলো, এ টা কি মন গড়া , বা বানিয়ে বানিয়ে বলছে? সত্যি প্রকাশ হোল এক দিন ।  সে বাড়িতে কিছু ...

কবিতা ।। মনোজকুমার রায়

জল সিঁড়ি চেক বইয়ের পাতা ফুরিয়ে যেতে থাকে -- ঝরে পড়ে বৃদ্ধ গাছটির পত্রমুকুল কাঁচা গন্ধ বেয়ে চলে সময়ের স্রোতে  সারা ভোর জেগে থাকি ঘুমের টলে তাড়া দেয় একগ্রাস অবিশ্বাসী বায়ু দিন ফুরনো লাল সূর্যের টানে নেমে আসে পাড় ছোঁয়া জল সিঁড়ি ================= মনোজকুমার রায় দঃ ঝাড় আলতা ডাউকিমারী, ধূপগুড়ি জলপাইগুড়ি -৭৩৫২১০ মো ৭৭৯৭৯৩৭৫৬৬

কবিতা ।। ভাষার জন্য লড়াই ।। চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু

ভাষার জন্য লড়াই চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু মুখের ভাষা বাংলা ভাষা মাকে ডাকি মা, সারা বিশ্বে তোমার মাগো নেই তো তুলনা। তোমার মুখের প্রথম ভাষা আমার মনের সকল আশা তোমার ভাষায় বলবো মাগো আমার মনের কথা, এই ভাষাতেই জড়িয়ে আছে সকল স্বাধীনতা।  এই ভাষাকে আনতে গিয়ে তাজা বুকের রক্ত দিয়ে রাজপথে সব লড়াই হলো করলো লড়াই কারা, আমার মায়ের দামাল ছেলে রক্ত পলাশ যারা।  তোমার ছেলে লড়াই করে আনলো ভাষা ঘরে ঘরে সেদিন থেকে শহীদ মিনার সাজাই ফুলে ফুলে, বীর শহীদের ত্যাগের কথা যাইনি আজও ভুলে।    ++++++++++++++++++++++++++++++++    চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু শহীদ আবুল কাশেম সড়ক, বড় বাজার, চুয়াডাঙ্গা, বাংলাদেশ।

চিরকুটের কবিতা

নতুন পৃথিবী আজ সকালে রোদ্দুর নামুক ভেজা বর্ষার মতো গা ধুয়ে কিছুটা পবিত্র হবো যত জীর্ণ মলিন দ্বেষ বিলীন হোক সব সময়ের তটে গা ভাসিয়ে কিছুটা বিলাসী হবো যা ছিল অতীত যা ছিল কষ্ট সবকিছু ভুলে নবীনে ব্রতী হবো আসুক ধেয়ে সতেজ হাওয়া দূর হোক যত কুণ্ঠা ব্যথা পুরানো যত বিবাদ ভুলে ভালোবাসার আবার বেড়া দেবো কিছুটা আশাবাদী কিছুটা কর্মঠ কিছুটা জেদি কিছুটা শপথ আসুক ছুঁয়ে বাঁচার আলো হাতে হাত রেখেই বিশ্বাসের ঘরে আবার নতুন দীপ জ্বালাবো

উন্মুক্ত পাগলামি ।। আশরাফুল মণ্ডল

উন্মুক্ত পাগলামি আশরাফুল মণ্ডল আহা, অপরূপ নিজস্বতার দাহ! কুঁকড়ে যায় আবহমান, সজনে পাতার বোঁটায়! ভাপওঠা ভাতের কাছে মাছি সত্তায় কী নিপুণ! তবুও ঘোর লাগা বসন্তের ডাক, হাঁকে! খেদিয়ে দেয় পা দোলানো প্রস্তাব, ওই ধুনুরি চোখ! রাংতায় মোড়া ডাকের সাজ, দে দোল দোল! হুইসেল বাজিয়ে কে রুখে দ্যায় সেই নাকছাবির রুদালি কাঁপন! খালবিল ছেঁচে পাঁচসিকের  মানত কুড়িয়ে আনে, বাংলা বাজার। ঠ্যাং নাচানো সুরে চোখ মারছে, দ্যাখো ভ্যানতারা! মুখ খোলা মানেই পাঁজরের স্রোত ভাবা যেন উগরানো টালমাটাল! ঢিল মারা প্রশ্নের রোয়াকে বক্রচোখে যেন মেধাবী কবিতা! মুছে দিও তবে লাজুক গুপ্ত রোগ, দিনরাত্রি! ভালো থেকো তোমরা বাছাধন, রং মাস সে আর কতদিন... ================    ASRAFUL MANDAL Chandidas Avenue, B-zone, Durgapur, Paschim Bardhaman, Pin - 713205,  

কবিতা ।। রঙ ।। ইউসুফ মোল্লা

  রঙ  ইউসুফ মোল্লা সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি,  পৃথিবী নানা রঙে সেজে উঠেছে।  ধূসর বাদামী রঙ তোমার দেহ,  মাথায় সবুজ রঙের বাবরি চুল,  তাতে গুঁজে রেখেছো লাল-নীল ফুল।  নববধূর মতো সিঁথিতে দিয়েছো সিঁদুর,  চোখে দিয়েছো কাজল।  দিগন্তভরা আকাশ তোমাকে নীল উপহার দিল,  সূর্যের লাল আলো তোমাকে সুন্দর করেছে।  তুমি তাদের ফিরিয়ে দিলে, বুকভরা ভালোবাসা আর স্নেহ।  মাঝে মাঝে এইভাবে হোলি আসে,  আমার মনকে রাঙিয়ে দিতে। ------------------    ইউসুফ মোল্লা উত্তর অঙ্গদ বেড়িয়া, ট্যাংরাখালী, ক্যানিং,  দক্ষিণ ২৪ পরগনা, ৭৪৩৩২৯

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯৩তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩২ নভেম্বর ২০২৫

সূচিপত্র বস্তু, চেতনা এবং কবি ।। সজল চক্রবর্তী দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত ।। রণেশ রায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট ও সন্নিহিত অঞ্চলের কথ্য শব্দ ।। অরবিন্দ পুরকাইত চাঁদে জীবন ।। শমীক সমাদ্দার অসমাপ্তি ।। মহুয়া হুই গ্যালাক্সির শব্দে ।। জাসমিনা খাতুন তিনটি কবিতা ।। দিবাকর সেন অপূর্ণতার শেষ অধ্যায় ।। সুপ্রিয় সাহা হাফ ডজন ছড়া ।। স্বপনকুমার পাহাড়ী স্বাপ্নিক অমলের ঘুৃম ।। সঞ্জয় দেওয়ান দুটি কবিতা ।। সৌমিত্র উপাধ্যায় পথ চলতি ✍️পার্থ প্রতিম দাস হেমন্তের বিষাদ ছুঁয়ে ।। শক্তিপদ পাঠক রাই আর বাবা ।। অদিতি চ্যাটার্জি স্থিতিশীল ।। রঞ্জিত মুখোপাধ্যায় হৃদয়ের শূন্য কোড ।। লিপিকা পিঙ্কি দে অমানিশা ।। সৌভিক মুখার্জী দৃষ্টিগত ।। শামীম নওরোজ জ্যান্ত ভূতের গপ্পো ।। পার্থ সারথি চট্টোপাধ্যায় ধুতরা ফুলের ঘ্রাণ ।। মজনু মিয়া তারা খসার আলোয় ।। তীর্থঙ্কর সুমিত উত্তরণে অন্তরায় ।। সমীর কুমার দত্ত প্রেম মুদ্রা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ধারা ।। লালন চাঁদ অন্যের ব্যথায় ব্যথি ।। জগদীশ মণ্ডল গর্ভ ।। শাশ্বত বোস ভ্রমণ বিষয়ক স্মৃতিকথা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত শাপে বর ।। সাইফুল ইসলাম রবিবার ।। সঙ্ঘমিত্রা দাস দুটি ...

চন্দন সুরভি নন্দর কবিতা

টাকার মেশিন                      মায়ের ওষুধ নিয়ে শহর থেকে ফিরল রতন সবে সন্ধ্যা নেমেছে  রাস্তায় আলো কম হাসপাতাল অনেক দূরে  অদৃশ্য যম খেলাকরে  মৃত্যুর সীমান্তে শায়িত মা   শেষ রক্ষা হল না  আস্তে আস্তে ভোরের আলো ফোটে রাতের আঁধারে ঘরের দেওয়াল গুলো রাঙিয়ে গেছে কারা  তুলেছে রং বেরং এর তোরন  এসেছে নির্বাচন  শোনাযায় এবার নাকি এ টি এম চিহ্নে দাঁড়িয়েছে একজন! টাকার মেশিন........  জিতলে সবাইকে দেওয়া হবে! সামনে বসে উল্লাসে ফেটে পড়া রোবট গুলো মানুষ কবে হবে?  ====================== Chandansuravi Nanda Revenue Office  BL&LRO,Manbazar-ll Boro Purulia PIN-723131 Phone-9163332432

ছোটগল্প ।। নীলিমার আত্মজাগরণ ।। পরেশ চন্দ্র মাহাত

নীলিমার আত্মজাগরণ পরেশ চন্দ্র মাহাত নীলিমা মাহাত, বয়স পঁচিশ প্লাস —তার বাবা মায়ের পঞ্চম তথা শেষ সন্তান। দুই দাদা —বড়দাদা শঙ্কর ও ছোটদাদা বিজয়। বড় দাদা শঙ্কর আর দুই দিদি তাদের কিন্তু বিয়ে হয়ে গেছে। একমাত্র নীলিমা আপাতত স্বামীর কোমল হাতের স্পর্শ ও সহানুভূতি থেকে বঞ্চিত এবং আদৌ কবে অথবা সেই সৌভাগ্য আসবে সেটা ঈশ্বরের নিকটই একমাত্র জ্ঞাত। সেই সঙ্গে দুবছরের সিনিয়র ছোটদাদা বিজয়েরও নীলিমার মতো অবস্থা। তারও জীবনসঙ্গিনী জুটেনি। মোট সাতজন সদস্য নিয়ে গঠিত সংসার নীলিমাদের পরিবার। মধ্যবিত্ত পরিবার —মধ্যবিত্ত পরিবার না বলে যদি নিম্নবিত্ত বলা হয় তবুও কোনো অত্যুক্তি করা হয় না। বাবার প্রত্যেকদিনের আয়ের উপর ভিত্তি করেই চলে সংসার। এই কঠোর এবং কঠিন পরিস্থিতিতেও নীলিমার মা শ্রীমতী মেনকা‚ সংসার সামলে তার ছেলেমেয়েদের পড়াশুনার প্রতি যথেষ্ট তৎপর ও সহানুভূতিশীল। তাদের পড়াশুনায় কোনো খামতি রাখেননি। যথা সময়ে তাদেরকে বিদ্যালয়ের মুখ দেখিয়েছে – টিউশনের বন্দোবস্ত করেছে। তাদের জীবন যাতে সুখকর হয় সেটাই প্রতিদিন ভগবানের কাছে প্রার্থনা করেছে। পাঁচ-পাঁচটি ছেলেমেয়ের মধ্যে সবাইকে উচ্চশিক্ষিত করে তোলা একপ...

জনপ্রিয় লেখা

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ -- "ত্রয়ী কাব্য" ------------------------------------------------------------------------------ সুনন্দ মন্ডল নবীনচন্দ্র সেন সাহিত্যে তথা বাংলা কবিতার জগতে এক অবিস্মরণীয় নাম। তিনি চট্টগ্রাম জেলার নওয়াপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ১৮৪৭ সালে তাঁর জন্ম এবং মত্যু ১৯০৯ সালে। বঙ্কিমচন্দ্র তাঁকে 'বাংলার বায়রন' বলেছেন। ‎জীবৎকালীন যুগে আত্মপ্রত্যয়ের মধ্যে জাতীয় চরিত্র আত্মস্থ করে নতুন সংস্কারে প্রয়াসী হয়ে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখেছেন।মধুসূদন-হেমচন্দ্র-নবীনচন্দ্র--এই তিন কবি বাংলা কাব্যধারায় প্রাণ সঞ্চার করেছিলেন। বিশেষত মহাকাব্য লেখার দুঃসাহস দেখিয়েছিলেন। এদিক থেকে মধুসূদন দত্ত একজন সফল মহাকাব্যিক। তাঁর 'মেঘনাদ বধ' কাব্যের মত গভীর ও ব্যঞ্জনাময় না হলেও নবীনচন্দ্র সেনের 'ত্রয়ী' কাব্য বিশেষ মর্যাদা দাবি করতেই পারে। তাছাড়া 'ত্রয়ী' কাব্যে ধর্মীয় ভাবধারার আবেগ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ‎ ‎নবীনচন্দ্র সেন বহু কাব্য লিখেছেন। যেমন- 'অবকাশরঞ্জিনী','পলাশীর যুদ্ধ', 'ক্লিওপেট্রা', 'রঙ্গমতী', 'খ্রীষ্ট', ...

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা শ্রীজিৎ জানা "সময় চলিয়া যায় নদীর স্রোতের প্রায়"। স্রোতের ধারা তার দু'প্রান্তে রেখে যায় ভাঙাগড়ার চিহ্ন। কালের দৃশ্যপটেও পরিবর্তনের ছবি অনিবার্যভাবেই চোখে পড়ে। সমাজ সময়ের ছাঁচে নিজেকে গড়ে নেয় প্রতিনিয়ত।  সেখানে মনে নেওয়ায় বাধা থাকলেও,মেনে নেওয়ার গাজোয়ারি চলে না। ফলত কাল বদলের গাণিতিক হিসেবে জীবন ও জীবিকার যে রদবদল,তাকেই বোধকরি সংগ্রাম বলা যায়। জীবন সংগ্রাম অথবা টিকে থাকার সংগ্রাম।  মানুষের জীবনযাপনের ক্ষেত্রে আজকে যা অত্যাবশ্যকীয় কাল তার বিকল্প রূপ পেতে পারে অথবা তা অনাবশ্যক হওয়াও স্বাভাবিক। সেক্ষেত্রে উক্ত বিষয়টির পরিষেবা দানকারী মানুষদের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হওয়া অস্বাভাবিক নয়। এক কালে গাঁয়ে কত ধরনের পেশার মানুষদের চোখে পোড়তো। কোন পেশা ছিল সম্বৎসরের,আবার কোন পেশা এককালীন।  সব পেশার লোকেরাই কত নিষ্ঠা ভরে গাঁয়ে  তাদের পরিষেবা দিত। বিনিময়ে সামান্য আয় হত তাদের। আর সেই আয়টুকুই ছিল  তাদের সংসার নির্বাহের একমাত্র উপায়। কালে কালান্তরে সেই সব পেশা,সেই সব সমাজবন্ধুরা হারিয়ে গ্যাছে। শুধুমাত্র তারা বেঁচে আছে অগ্রজের গল্পকথায়,আর বিভিন...

গ্রন্থ আলোচনা: শর্মিষ্ঠা দেবনাথ

প্রতিবাদ যখন অগ্নিবাণী বাংলাদেশে নারীমুক্তি ও নারী আন্দোলনের পুরোধা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ১৯৯তম জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদিত হল " আসিফা এবং.." কাব্য সংকলনটির মধ্যদিয়ে।সংকলনটির বিশেষত্ব হল,এটি উৎসর্গ করা হয়েছে নারীর সম্মান রক্ষার আন্দোলনের যোগ্যতম ব্যক্তি শহীদ শিক্ষক বরুন বিশ্বাসকে। সংকলক প্রকাশক সন্দীপ সাহু নিজে এবং বিশিষ্ট কবি সাহিত্যিকদের দিয়ে লিখিয়ে নিয়েছেন এমন কিছু কবিতা, যা শুধুমাত্র শব্দ ও ছন্দের অনুবন্ধ নয়, এক একটি অগ্নিবাণী।আসলে জীবনকে দেখার স্বাতন্ত্র‍্যে কবিরা সব সময়ই অগ্রগণ্য এবং অনন্য।যুগ ও জীবন দ্বন্দ্বের কণ্ঠস্বরকে আশ্রয় করে,একদিকে মনের প্রবল দাহ ও অন্যদিকে  নির্যাতিতা শিশুকন্যা ও নারীর প্রতি মনের গভীর আকুলতা থেকে প্রকাশ পেয়েছে "আসিফা এবং" এর  কবিতাগুলি।এক অন্ধকার সময়ের মুখোমুখি আমরা,সেই অন্ধকার আমাদের নিয়ে এসেছে সামাজিক অবক্ষয়ের শেষধাপে যেখানে নৈতিকতা,পাপবোধ,গ্লানিকে সরিয়ে রেখে, সমাজের বানানো নিয়মকে তোয়াক্কা না করে,অনায়াস দক্ষতায় ও ক্ষিপ্রতায় নিজেরই ধর্মচেতনাকে জলাঞ্জলি দিয়ে কিছু মানুষ তার পশুত্বের পরিচয় দিয়েছে ধর্ষণ ও ন...

শ্যামাপদ মালাকারের কবিতা

চোখ """"""" নদী, অরণ্য, রাতের ফালি চাঁদ- সবেই তো আমার...স্বর্ণপিঁড়িটাও!। সেদিন, শুকতারাটার গা' মাপতে গিয়ে মনে হল, --ওরা আমার চেয়েও সুখী? দেখিনা একবার গাইতি-শাবল চালিয়ে... চালালাম। জল-মাটি ভেজা একটা 'চোখ' কুড়িয়ে ফিরলাম! সেই চোখদিয়ে দেখি-- শেষ বিকেলের নিরন্ন আঁচে ঝলসানো বুকে নীড়ে ফিরছে ধূলিমাখা কত কাল পা, কি শান্তি - কি তৃষ্ণা! পাতাক্ষোয়া কোদালেরর মাথায় ঝরেপড়া ললাটের ঘামে, কারা যেন জীবন শাণ দেয়! রুক্ষঠোঁটের আবরণে এক সময় নেমে আসে শিশিরস্নাত কালনিশি-- মাঝের ব্যবধান মুছে দেয় প্রতিশ্রুতির ভীড়- - পূর্বজনমের নিদর্শনচুম্বন শেষে হেরে যায় কার মমতাজ-- ম্লান হয়ে যায় কত পিঁড়ি! ... ম্লান হয়ে যায় কত পিঁড়ি! ... ম্লা...

কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা: এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায় ।। পার্থ সারথি চক্রবর্তী

  কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা : এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায়  পার্থ সারথি চক্রবর্তী  কথায় বলে বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। রাজার শহর কোচবিহারের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা আরো অনেক বেশি। দুর্গাপূজা আর দীপাবলির মতো দু'দুটো বিরাট মাপের উৎসবের রেশ কাটতে না কাটতেই, এ শহর ভাসে রাস উৎসবের উন্মাদনায়। মদনমোহন ঠাকুর কোচবিহারের প্রাণের ঠাকুর। তাঁকে নিয়ে সবার আবেগ আর শ্রদ্ধা ও ভালবাসা এখানে বাঁধনছাড়া। এক অপূর্ব মিলনোৎসবের চেহারা নেওয়া এই উৎসব ঐতিহ্যবাহী ও ঐতিহাসিক। জন, মত, সম্প্রদায়ের উর্ধে এই উৎসবের গ্রহণযোগ্যতা। সময়ের কষ্টি পাথরে পরীক্ষিত! এক প্রাণের উৎসব, যা বহুদিন ধরেই গোটা উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ উৎসবে পর্যবসিত।কোচবিহারের এই রাস উৎসবকে কেন্দ্র করে যে মেলা হয় তাও সময়ের হাত ধরে অনেক বদলে গেছে। এসেছে আধুনিকতার ছোঁয়া! শৈশবে বাবার হাত ধরে যে মেলা দেখেছি তা চরিত্র ও আকৃতি দু'দিক থেকেই বদলে গেছে। গত পঁচিশ বছর ধরে খুব কাছে থেকে এই উৎসব ও মেলা দেখা, অনুভব করার সুযোগ হয়েছে। যা দিনদিন অভিজ্ঞতা ও প্রাপ্তির ঝুলিকে সমৃদ্ধ করে গেছে প্রতি ক্ষেত্রেই।  খুব সংক্ষেপে এই উৎসবের ইতিহাস না জানাটা কিন্তু অবিচারই ...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো,  তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) য...

মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা 2024 সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি (লেখক ও সম্পাদকীয় দপ্তরের কথোপকথন আকারে) --কী পত্রিকা? --নবপ্রভাত। --মুদ্রিত না অনলাইন? --মুদ্রিত। --কোন সংখ্যা হবে এটা? --বইমেলা 2024। --কোন কোন ধরনের লেখা থাকবে? --প্রবন্ধ-নিবন্ধ, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া। --বিশেষ কোন বিষয় আছে? --না। যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে। --শব্দ বা লাইন সংখ্যার কোন বাঁধন আছে? --না। নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো (যেমন, কবিতা 12-14 লাইনের মধ্যে, অণুগল্প কমবেশি 200/250শব্দে)। তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়। --ক'টি লেখা পাঠাতে হবে? --মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। --ফেসবুক বা অন্য কোন প্লাটফর্মে প্রকাশিত লেখা কি পাঠানো যাবে? --না। সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। --পত্রিকা কোন সময়ে প্রকাশিত হবে? --জানুয়ারি 2024-এর দ্বিতীয় সপ্তাহে। --লেখা পাঠানোর শেষতারিখ কত? -- 17 ডিসেম্বর 2023। --কীভাবে পাঠাতে হবে? --মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। --লেখার সঙ্গে কী কী দিতে হবে? --নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) --বিশেষ সতর্কতা কিছু ? --১)মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন '...

উৎসবের সৌন্দর্য: সেকালে ও একালে।। সৌরভ পুরকাইত

  উৎসবের সৌন্দর্য:  সেকালে ও একালে   সৌরভ পুরকাইত বাংলার উৎসব বাংলার প্রাণ। প্রতিদিনের জীবনযাপনের মধ্যে যখন মন ক্লান্ত হয়ে পড়ে তখন তাকে বেঁচে থাকার রসদ যোগায় এই উৎসব। কথায় বলে 'বারো মাসে তেরো পার্বণ'।মন আনন্দই চায়।তাই তাকে সজীবতা দিতে,পরিবারের,সমাজের ভালো-মন্দের কথা মাথায় রেখে মানুষ নিজেই সৃষ্টি করে নিয়েছে নানাবিধ উৎসবগুলিকে। একেবারে প্রাচীন কাল থেকে আজ পর্যন্ত মানুষ কখনোই উৎসব বিমুখ ছিল না।উৎসবই তাকে ঘর থেকে বাইরে টেনে এনেছে,চিনতে শিখিয়েছে আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার আনন্দকে। উৎসব আসলে প্রাণের সাথে প্রাণের যোগ, হৃদয়ের সাথে হৃদয়ের যোগ।রবীন্দ্রনাথ বলেছেন 'সত্য যেখানেই সুন্দর হয়ে প্রকাশ পায় সেইখানেই উৎসব'।হৃদয়ের সেই সুকোমল বৃত্তির জাগরণ যেন ফুটে ওঠা ফুলেরই মতো সত্য ও সুন্দর।এই জাগরণই উৎসব। তাই নানা কিছুর মধ্য দিয়ে,নানা উপলক্ষ্যে এই উৎসব প্রকাশ পায়। প্রাচীনকালে মানুষের হাতে না ছিল পসার, না ছিল পসরা।ছিল মনের আন্তরিকতা,মানুষকে কাছে টেনে নেবার ক্ষমতা।সেটাই ছিল উৎসবের সৌন্দর্য। তাই সেদিনের উৎসবে ক্ষুদ্র,তুচ্ছ উপকরণও প্রাণের উচ্ছ্বাসে মহৎ হয়ে উঠত।সেকালের উৎসবে লোক দেখানো ব্যাপার কিছু ...

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

বসন্তের কোকিল তুমি   বিচিত্র কুমার                      (০১) তোমার দু-আঁখির গহীন অরণ্যে একটা স্বপ্নের বহমান নদী রয়েছে, তারই রেশ ধরে আমি হেঁটে চলি অজানা বসন্তের পথে নীর উদ্দেশ্যে। সে চলার কোন শেষ সীমা নেই তাই আমার বিষণ্ণ একতারা সন্ন্যাস খুঁজে ফিরে , কবে তুমি বুঝবে অনুশ্রী মনের পর্দা খুলে একুশ বসন্ত তোমার রঙ ছিটিয়ে যাচ্ছে অচিনপুরে। এদিকে আমার দেহের প্রতিটি শিরা ধমনীতে প্রবাহিত হচ্ছে তোমার ভালোবাসার একটু উষ্ণতা পাবার জন্যে, শুধু অনুভবে তাণ্ডব উচ্ছাসিত হচ্ছে--- যেদিকে তাকাই --- ফুলে ফুলে ভ্রমর গুনগুনিয়ে উড়ে উড়ে পরে বসন্তের কোকিল গান গায় নব বসন্তে, তোমার দুই চোখে আমার একই ছায়া রয়ে যায় উতলা ভালোবাসার সীমান্তে।                 (০২)        এক রক্তাক্ত বসন্তের স্মৃতি কোন এক উতলা বসন্তের সকালে পুষ্পবনে ফুটেছিল একটি টকটকে লাল গোলাপ, তার সাথে হয়েছিলো দেখা প্রথম ফাগুনে হয়েছিল দুজনার এ জীবনের আলাপ।  তারপর প্র...

অনুভবে, অনুধ্যানে অনালোকিত কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী ।। সুপ্রিয় গঙ্গোপাধ্যায়

"এ কালে একটু লেখাপড়া জানা থাকাতে, এবং বঙ্গভাষায় অনেক গুলি পাঠ্য পুস্তক হওয়াতে কেবল পরনিন্দা করিয়া সময় কাটাইতে তাঁহাদের আবশ্যকও হয় না, প্রবৃত্তিও হয় না। …নিতান্ত সখ্যতা বা আত্মীয়তা না থাকিলে, সকল পেটের কথা খুলিয়া নিঃশ্বাস ছাড়িয়া তৃপ্তিলাভ করা, এ কালের মেয়েরা পছন্দ করেন না। তাঁহারা বইখানি, কার্পেটটুকু, নিজের স্বামী পুত্র লইয়া দিন যাপন করিতে বা একেলা থাকিতে কষ্ট বোধ করেন না।" —শরৎকুমারী চৌধুরাণীর এই লেখা (ভারতী ও বালক/ আশ্বিন কার্তিক, মাঘ/ ১২৯৮) দেখে বুঝতে অসুবিধা হয় না উনিশ শতকে নারীর লেখাপড়া শেখার উদ্দেশ্য ছিল মূলত আত্মমুক্তির জন্য। শুধু লেখাপড়া শেখা নয়, সাহিত্য সৃষ্টিতেও ছয়'এর দশক (উনিশ শতকের) থেকে নারীরা যে ধারা সূত্রপাত করেছিল তা নারীর আত্মমুক্তির পথকেই প্রসারিত করেছিল। ছয়'এর দশকের পূর্বেই ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে প্রথম ছাপার হরফে নারী রচিত কাব্য 'চিত্তবিলাসিনী' প্রকাশিত হয়। লেখেন কৃষ্ণকামিনী দাসী। ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে কবি ঠাকুরাণী দাসীর নাম উঠে আসতে থাকে, যিনি কবিতার পাশাপাশি গদ্যও লিখতেন। ঠিক সেই বছরই জন্মগ্রহণ করেন কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী, যাঁর কবিতা লেখা আত্মমুক্...

বছরের বাছাই

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৪তম সংখ্যা ।। ফাল্গুন ১৪৩১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

  এই সংখ্যায় একটি গ্রন্থ আলোচনা ও একটি ধারাবাহিক রচনা ছাড়া সব লেখাই ভাষা দিবস, মাতৃভাষা, ভাষাচেতনা ও ভাষা সমস্যা বিষয়ক রচনা। লেখাগুলি এই সংখ্যাকে অনেকটাই সমৃদ্ধ করেছে। পড়ুন। শেয়ার করুন। মতামত জানান। লেখকগণ নিজের নিজের লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন যতখুশি, যে মাধ্যমে খুশি। কিন্তু স্ক্রিনশট শেয়ার নৈব নৈব চ!  অন্য বিষয়ের লেখাগুলি আগামী সংখ্যার জন্য রইল।  সকলকে ধন্যবাদ, অভিনন্দন। ভালো থাকুন।   --সম্পাদক, নবপ্রভাত। ==  সূ  চি  প  ত্র  == প্রবন্ধ-নিবন্ধ অমর ২১শে ফেব্রুয়ারি বাঙ্গালীর বাংলা ভাষা দুর্জয় দিবস।। বটু কৃষ্ণ হালদার ভাষা শহীদদের পঁচাত্তর বছর।। অনিন্দ্য পাল একুশে ফেব্রুয়ারি : বাঙালির শ্রেষ্ঠ অশ্রুবিন্দু।। জীবনকুমার সরকার কবিগানের সাহিত্যিক ও সমাজতাত্ত্বিক মূল্য।। বারিদ বরন গুপ্ত বিপন্ন মাতৃভাষা ও সংস্কৃতি।। শ্যামল হুদাতী মায়ের দুধ আর মাতৃভাষা।। প্রদীপ কুমার দে একুশে ফেব্রুয়ারি : কিছু কথা।। বনশ্রী গোপ বাংলায় কথা বাংলায় কাজ।। চন্দন দাশগুপ্ত বিপন্ন মাতৃভাষা ও তার মুক্তির পথ।। মিঠুন মুখার্জী. হে অমর একুশে, তোমায় ভুলিনি, ভুলব না।। মহম্মদ মফিজুল ইসলা...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৭তম সংখ্যা ।। জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ মে ২০২৫

  প্রচ্ছদ চিত্র: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সূচিপত্র রবীন্দ্রনাথ এবং কয়েকজন নারী ।। অনিন্দ্য পাল পরাবাস্তববাদ ও বাংলায় জীবনানন্দের কাব্যচর্চা ।। রণেশ রায় প্রতীক্ষা ।। চন্দন দাশগুপ্ত আশ্রয় ।। সায়নী সাহা বয়স্ক শিক্ষাকেন্দ্র ।। দেবাংশু সরকার প্রণামের প্রভু ।। সুপ্রভাত মেট্যা দুর্ভাগ্যের সম্মুখ সমরে ।। সমীর কুমার দত্ত আচমকা শরৎ ।। অর্ণব সামন্ত প্রতিধ্বনি ✍️ সুবীর কুমার ঘোষ জীবন যেখানে যেমন ।। আরজু মুন জারিন বছর সীমান্তে হিসেব নিকেশ ।। রানা জামান চারটি কবিতা ।। বিবেকানন্দ নস্কর আমরা আছি ।। লালন চাঁদ চাওয়া ।। মাথুর দাস কাগজ ফুলে ।। সফিউল মল্লিক সময়ের স্রোত ।। দুর্গাদাস মিদ্যা তুমি মানুষ ।। বদরুল বোরহান দিঘার সমুদ্র ।। মাখনলাল প্রধান পুস্তক-আলোচনা ।। অরবিন্দ পুরকাইত সংযম ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত  চেনা প্রতিবেশী (প্রথম পর্ব) ।। দীপক পাল খেলার মাঠ ।। তূয়া নূর বন্ধু শ্যামলকান্তি ।। শংকর ব্রহ্ম তুমি তোমার মতো থাকলে ।। সত্যেন্দ্রনাথ বেরা গ্রীষ্মে খুবই হিংস্র রবি ।। জগবন্ধু হালদার স্বপ্ন দর্শন ✍️ পার্থ প্রতিম দাস মৌন মুখরতা ।। মুসা মন্ডল রুদ্র বৈশাখ ।। দীনেশ সরকার চিহ্নিত পদযুগ পদাঘাত ।। দেবাশীষ...

প্রচ্ছদ।। ৮৩তম সংখ্যা ।। মাঘ ১৪৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ।। প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র

  বিঃ দ্রঃ আগামী ফেব্রুয়ারি সংখ্যার জন্য ভাষা দিবসের কথা মাথায় রেখে লেখা পাঠান। email: nabapravatblog@gmail.com  সূচিপত্র ফিচার।। গোপাল ভাঁড়ের অজানা সত্য ।। লোকনাথ পাল প্রবন্ধ ।। মসুয়ার রায় পরিবার এবং বঙ্গসংস্কৃতি ।... প্রবন্ধ ।। সুধীন্দ্রনাথ দত্ত: কাব্যের দার্শনিক ও ন... কবিতায় সেতুবন্ধন (তৃতীয় অংশ) শিল্পবিপ্লবোত্তর কাল... রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর বিদ্রোহী প্রেমের কবিতা: ... কবিতা ।। এই মন ভালো নেই দিনে ।। সুপ্রভাত মেট্যা কবিতা ।। জোছনা আলোর স্বপ্ন ।। তুষার ভট্টাচাৰ্য কবিতা ।। নিঃস্ব হবো ।। লালন চাঁদ কবিতা ।। ভালোলাগা  ।। আজিজ উন নেসা  গল্প ।। স্বীকারোক্তি ।। চন্দন দাশগুপ্ত কবিতা ।। শীতের দিন ।। প্রশান্ত কুমার মন্ডল কবিতা ।। শীতকাল ।। অঙ্কিতা পাল নাসির ওয়াদেনের দুটি কবিতা ভূতের লেখা ছড়া ।। বদরুল বোরহান কবিতা ।। ব্যস্ত ।। আলাপন রায় চৌধুরী ছোটগল্প ।। লম্বুর স্বপ্নপূরণ ।। পরেশ চন্দ্র মাহাত কবিতা ।। সৎকার ।। সুমিত মোদক কবিতা।। শীত বৈচিত্র্য ।। সুমিতা চৌধুরী পুস্তক-আলোচনা ।। নিউটনের আপেল ও প্রেমিকা ।। অরবিন্... গল্প।। শান্তির পথে …...।। বন্দনা সেনগুপ্ত কবিতা ।। মা...

সূচিপত্র ।। ৮৯তম সংখ্যা ।। শ্রাবণ ১৪৩২ জুলাই ২০২৫

সূচিপত্র   প্রবন্ধ ।। বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় ।। মাখনলাল প্রধান প্রবন্ধ ।। শ্রমিকের অধিকার ।। চন্দন দাশগুপ্ত প্রবন্ধ ।। ভিনগ্রহীদের সন্ধানে ।। শ্যামল হুদাতী প্রবন্ধ ।। নারীমর্যাদা ও অধিকার ।। হিমাদ্রি শেখর দাস কবিতা ।। মশালের রং তুলি ।। তূণীর আচার্য কবিতা ।। জললিপি ।। রূপক চট্টোপাধ্যায় গুচ্ছকবিতা || শিশির আজম নিবন্ধ ।। পূনর্জন্ম ।। শংকর ব্রহ্ম মুক্তভাবনা ।। কোলাহল তো বারণ হলো ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত গল্প ।। গানের হাড় ।। শুভজিৎ দত্তগুপ্ত গল্প ।। শিকড়ের খোঁজে ।। সমীর কুমার দত্ত সুপ্রভাত মেট্যার পাঁচটি কবিতা গ্রন্থ-আলোচনা ।। আবদুস সালামের কাব্যগ্রন্থ 'অলীক রঙের বিশ্বাস'।। তৈমুর খান অণুগল্প ।। হরিবোল বুড়ো ।। সুমিত মোদক রম্যরচনা ।। গোয়েন্দা গোলাপচন্দ আর প্রেমের ভুল ঠিকানা ।। রাজদীপ মজুমদার দুটি গল্প ।। মুহাম্মদ ফজলুল হক দুটি কবিতা ।। তীর্থঙ্কর সুমিত কবিতা ।। মেঘমুক্তি ।। বন্দনা পাত্র কবিতা ।। ব্যবচ্ছিন্ন শরীর ।। কৌশিক চক্রবর্ত্তী কবিতা ।। শমনচিহ্ন ।। দীপঙ্কর সরকার কবিতা ।। ভালোবাসার দাগ ।। জয়শ্রী ব্যানার্জী কবিতা ।। ফণীমনসা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ছড়া ।। আজও যদি ।। বদ্রীন...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬

  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠালে  অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে হলে ভালো। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # ...

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ৮৬তম সংখ্যা ।। বৈশাখ ১৪৩২ এপ্রিল ২০২৫

সম্পাদকীয় এই সংখ্যাটি বাংলা নববর্ষ বিষয়ক সংখ্যা। নৱৰ্ষকেন্দ্রিক বহু তথ্যপূর্ণ লেখা এই সংখ্যাটিকে সমৃদ্ধ করেছে। বাংলা নববর্ষ উদযাপনের ইতিহাস, রীতিনীতি, উৎসব, পার্বন, লোকাচার, রূপান্তর বহুবিধ বিষয় প্রকাশিত হয়েছে এই সংখ্যার লেখাগুলিতে। এই সংখ্যার বাছাই কিছু লেখার সঙ্গে আগামীতে আরও কিছু লেখা সংযুক্ত করে বাংলা নববর্ষ বিষয়ক একটি মুদ্রিত সংখ্যা প্রকাশ করার ইচ্ছে রইল।  সকলকে নববর্ষের আন্তরিক শুভকামনা জানাই। উৎসবে আনন্দে থাকুন, হানাহানিতে নয়। ধর্ম-ব্যবসায়ীদের চক্রান্ত ব্যর্থ করে সহনাগরিকের পাশে থাকুন। মনে রাখুন, ধর্মকে মানুষই সৃষ্টি করেছে। ঈশ্বর আল্লা গড ইত্যাদির জন্মদাতা মানুষই। মানুষকে ভালোবাসুন। মানুষের পাশে থাকুন।  নিরাশাহরণ নস্কর  সম্পাদক, নবপ্রভাত।  সূচিপত্র প্রবন্ধ-নিবন্ধ-স্মৃতিকথা পয়লা বৈশাখ ।। সিদ্ধার্থ সিংহ নববর্ষকেন্দ্রিক মেলা, পার্বন, উত্সব, লোকাচার ।। সবিতা রায় বিশ্বাস নববর্ষ আবাহন ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে এবং বিভিন্ন দেশে ।। তুষার ভট্টাচার্য নববর্ষের সেকাল ও একাল ।। হিমাদ্রি শেখর দাস নববর্ষের হাল-হকিকৎ ।। শংকর ব্রহ্ম বোশেখি বাঙালি নাকি পোশাকি বাঙালি? ।। দিব্যেন্দু...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। নবপ্রভাত ৮৫ ।। চৈত্র ১৪৩১ মার্চ ২০২৫

  সূচিপত্র নিবন্ধ ।। মরিয়ম মির্জাখানি: এক অনন্য গণিতসূর্য ।। ... নিবন্ধ ।। নারী দিবসে যা ভাবা উচিত ।। বিশ্বনাথ পাল প্রবন্ধ ।। প্রাচীনকাল থেকে নারীরা অবহেলিত, বঞ্চিত,... নিবন্ধ ।। আমার চোখে আদর্শ নারী ।। জয়শ্রী বন্দ্... ফিচার।। এই মুহূর্তে বাংলা সাহিত্যে নারীদের লেখালেখ... আফ্রিকার লোককথা ।। করোটিকে বিয়ে করা অবাধ্য মেয়েটি ... ছোটগল্প ।। মানবী ।। ভুবনেশ্বর মন্ডল নিবন্ধ ।। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে অন্যতম নারী মু... নিবন্ধ ।। প্রিয় মহিলা সাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবী ।। ... গল্প ।। উই ওয়ান্ট জাস্টিস ।। রবীন বসু প্রবন্ধ ।। নিপীড়িতা ।। শ্যামল হুদাতী ফিচার ।। রমণী রতন ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত প্রবন্ধ ।। নারী সমাজ : তখন-এখন ।। তপন মাইতি নিবন্ধ ।। বহমান কালের ধারায় নারী ।। দীপক পাল গল্প ।। আমার দুর্গা ।। অঞ্জনা গোড়িয়া (সাউ) গল্প ।। যোগ্য জবাব ।। সমীর কুমার দত্ত ছোটগল্প ।। আমি দুর্গাকে দেখেছি।। চন্দন দাশগুপ্ত গল্প ।। সম্পর্ক ।। গৌতম সমাজদার কবিতা।। নারী মানে ।। গোবিন্দ মোদক কবিতা।। নারী ।। সমর আচার্য্য ছড়া ।। নারী অসামান্যা ।। সৌমিত্র মজুমদার কবিতা ।। নারী দিবসে ।। বিবেকানন্দ নস্কর কবিতা ।। না...

প্রবন্ধ ।। বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় ।। মাখনলাল প্রধান

বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় মাখনলাল প্রধান বাংলার শিল্প-সংস্কৃতির জগতে যাত্রা শিল্প তথা নাট‍্যশিল্পে মড়ক নেমে এসেছে । যাত্রা শিল্পের মড়কে শুধু কোভিড নয় তার বহুপূর্ব থেকেই অর্থনৈতিক বিপর্যয় , শিক্ষাক্ষেত্রে বন্ধ‍্যাত্ব এবং গ্ৰাম বাংলার পটপরিবর্তন শেষ পেরেক ঠুকে দিয়েছে। যাত্রা-শিল্পের লীলাভূমি ছিল গ্ৰাম বাংলা। গ্ৰামে প্রচুর যাত্রাপালা হত নানা উৎসবকে কেন্দ্র করে । জমিদারি ব‍্যবস্থা লুপ্ত হওয়ার পর গ্ৰামীণ মানুষের উদ‍্যোগে শীতলা পূজা,  কালীপূজা, দুর্গাপূজা, কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা, চড়ক ইত‍্যাদিকে উপলক্ষ‍্য করে যাত্রাপালার আয়োজন না হলে কেমন যেন ম‍্যাড়ম‍্যাড়ে লাগতো। সেই সঙ্গে কলকাতার বড়বড় কোম্পানির যাত্রাপালা ঘটা করে, টিকিট সেল করে হত মাঠে। খুব বড় মাপের খেলার মাঠ যেখানে ছিল না সেখানে ধানের মাঠ নেওয়া হত ‌। ত্রিশ-চল্লিশ হাজার মানুষ দেখতে আসত। স্পেশাল বাস পাঠাত  আয়োজক কর্তৃপক্ষ। বিনা ভাড়ায় বাসে যাতায়াত করত যাত্রার দর্শকেরা। কিন্তু বিকল্প ধানচাষ শুরু হলে জমিগুলো সময় মতো ফাঁকা পাওয়া গেল না । প্রথম দিকে ব‍্যাপকহারে ধান শুরু না হওয়ায় খুব একটা অসুবিধা হত না। বহুক্ষেত্রে  ধান কা...

প্রবন্ধ ।। ভিনগ্রহীদের সন্ধানে ।। শ্যামল হুদাতী

ভিনগ্রহীদের সন্ধানে  শ্যামল হুদাতী  ইতিহাসের শুরু থেকে বারবার মানুষকে একটা প্রশ্ন কুঁড়ে কুঁড়ে খায় – এই মহাবিশ্বে আমরা কি একা? পৃথিবীর মতো আরও গ্রহ রয়েছে, যেখানে মানুষের মতো বুদ্ধিমান প্রাণীরা বাস করে – এই সম্ভাবনা বরাবর মানুষকে মুগ্ধ করেছে। আমাদের প্রত্যেকের জীবনের কখনও না কখনও এই ভাবনা এসেছে। দীর্ঘ কয়েক দশকের গবেষণার পরও, এই বিষয়ে কোনও নিশ্চয়তা দিতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। জেমস ওয়েব মহাকাশ টেলিস্কোপ, বহু দূরের এমন কিছু গ্রহের সন্ধান দিয়েছে, যেগুলিতে প্রাণ থাকতেই পারে। তবে, নিশ্চিত কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে, আমেরিকার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাম্প্রতিক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, ভিনগ্রহীদের খুঁজতে বহু দূরে যাওয়ার কোনও দরকার নেই। তারা এই পৃথিবীতেই মানুষের ছদ্মবেশে মানুষের মধ্যেই বসবাস করতে পারে। আমরা ভিনগ্রহীদের যেমন কল্পনা করি, এরা তার থেকে আলাদা। এরা অনেকটাই, দেবদূতদের মতো। মানব জগতের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক প্রযুক্তিগত নয়, বরং জাদুকরি। মহাকাশে সৌরজগতের গ্রহ পৃথিবী ছাড়া অন্য কোথায় প্রাণ রয়েছে কি না তা নিয়ে চলছে বিস্তর গবেষণা। একই সঙ্গে পৃথিবী ছাড়া অন্য কোনো গ্রহে মানুষ বসবাস ক...

প্রবন্ধ ।। নারীমর্যাদা ও অধিকার ।। হিমাদ্রি শেখর দাস

নারীমর্যাদা ও অধিকার হিমাদ্রি শেখর দাস  নারীর মর্যাদা বলতে বোঝায় নারীর সম্মান, অধিকার, এবং তার ব্যক্তিগত স্বাধীনতা। এটি সমাজে নারীর অবস্থান এবং তার প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গিকে নির্দেশ করে। নারীর প্রতি সম্মানজনক আচরণ করা হয় এবং তাদের অধিকার গুলি সুরক্ষিত থাকে। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে এই শ্রেণি সংগ্রাম শুরু হয়েছিল অনেক আগে।  একদিকে শ্রেণী বৈষম্য অপরদিকে নারী পুরুষের বৈষম্য এই দুটি ছিল শ্রেণীবিভক্ত সমাজের অন্যতম দুটি মূল ভিত। নারীর অধিকারহীনতা বা দাসত্ব শুরু হয় পরিবার ও সম্পত্তির উদ্ভাবনের ফলে। বহু যুগ ধরে নারী সমাজকে পারিবারিক ও সামাজিক দাসত্বের বোঝা বহন করতে হয়েছে বিনা প্রতিবাদে। সভ্যতার ক্রম বিকাশের সাথে সাথে নিপীড়ন ও নির্যাতনের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে - দাস সমাজব্যবস্থা এবং সামন্ততান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় নারীরা পুরুষ ও পরিবারের অধীনতা স্বীকার করে নিতে বাধ্য হয়েছে। সামাজিক উৎপাদনের কাজে নারীদের বঞ্চিত রেখেই তাদের পরাধীন জীবন যাপনের মধ্যে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। নারীর অধিকারহীনতার বিরুদ্ধে সংগ্রামের সূচনা হয় ইংল্যান্ডের শিল্প বিপ্লবের পরবর্তী সময়ে। নতুন করে নারীদের সামাজিক উৎপাদনের কাজে ...

মাসের বাছাই

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯৩তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩২ নভেম্বর ২০২৫

সূচিপত্র বস্তু, চেতনা এবং কবি ।। সজল চক্রবর্তী দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত ।। রণেশ রায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট ও সন্নিহিত অঞ্চলের কথ্য শব্দ ।। অরবিন্দ পুরকাইত চাঁদে জীবন ।। শমীক সমাদ্দার অসমাপ্তি ।। মহুয়া হুই গ্যালাক্সির শব্দে ।। জাসমিনা খাতুন তিনটি কবিতা ।। দিবাকর সেন অপূর্ণতার শেষ অধ্যায় ।। সুপ্রিয় সাহা হাফ ডজন ছড়া ।। স্বপনকুমার পাহাড়ী স্বাপ্নিক অমলের ঘুৃম ।। সঞ্জয় দেওয়ান দুটি কবিতা ।। সৌমিত্র উপাধ্যায় পথ চলতি ✍️পার্থ প্রতিম দাস হেমন্তের বিষাদ ছুঁয়ে ।। শক্তিপদ পাঠক রাই আর বাবা ।। অদিতি চ্যাটার্জি স্থিতিশীল ।। রঞ্জিত মুখোপাধ্যায় হৃদয়ের শূন্য কোড ।। লিপিকা পিঙ্কি দে অমানিশা ।। সৌভিক মুখার্জী দৃষ্টিগত ।। শামীম নওরোজ জ্যান্ত ভূতের গপ্পো ।। পার্থ সারথি চট্টোপাধ্যায় ধুতরা ফুলের ঘ্রাণ ।। মজনু মিয়া তারা খসার আলোয় ।। তীর্থঙ্কর সুমিত উত্তরণে অন্তরায় ।। সমীর কুমার দত্ত প্রেম মুদ্রা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ধারা ।। লালন চাঁদ অন্যের ব্যথায় ব্যথি ।। জগদীশ মণ্ডল গর্ভ ।। শাশ্বত বোস ভ্রমণ বিষয়ক স্মৃতিকথা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত শাপে বর ।। সাইফুল ইসলাম রবিবার ।। সঙ্ঘমিত্রা দাস দুটি ...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬

  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠালে  অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে হলে ভালো। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # ...

গল্প ।। জাতিস্মর ।। আশীষ কুমার বিশ্বাস

    জাতিস্মর   আশীষ  কুমার   বিশ্বাস    গল্পের শুরুটা প্রায় ষাট বছর আগের কথা । যার নাম গৌতম, ডাক নাম ছিল বাবু ।  তার বছর তখন ছয়-সাত হবে । আমরা বা আমি তখন একটু বড় । এক সাথেই চলতো খেলা । গোল্লা ছুট, দাঁড়িয়া বান্দা, চোর-পুলিশ । যে মাঝে মাঝে খেলা থেকে বিরত থাকতো ; সে-ই জাতিস্মর । মাঠের পাশেই ছিল একটা খেঁজুর গাছ । তাতে হাত রেখে দূরের এক গ্রামের দিকে এক মনে তাঁকিয়ে থাকতো "বাবু" । গ্রামটির নাম "বিনয় পল্লী " । মাঝে বড়ো মাঠ । হাঁটা শুরু করলে তিরিশ - চল্লিশ মিনিট লাগবে । মাঝে জলে ভরপুর দেখে কখনো যাওয়া হয়নি । বাবু কে যখন বলতাম, ওপারে কি দেখছিস? ও বলতো, ওখানে আমার ছোট মা থাকে, দিদি থাকে, আমার ভুলু কুকুর থাকে । এ কথা আমাদের বিশ্বাস হতো না । আবার খেলায় ফিরে যেতাম, খেলতাম ।  কিন্তু ও বসে বসে , ওপারের গাছ পালা , বাড়ি ঘর দেখতো । কাছে গেলে বলতো , ওই যে সবুজ ,কচি কলাপাতা রঙের দালান বাড়ি, ওটাই আমাদের বাড়ি !  এই ভাবে মাস ছয়, বছর গড়াতে লাগলো । মনে প্রশ্ন জাগতে লাগলো, এ টা কি মন গড়া , বা বানিয়ে বানিয়ে বলছে? সত্যি প্রকাশ হোল এক দিন ।  সে বাড়িতে কিছু ...

কবিতা ।। ভাষার জন্য লড়াই ।। চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু

ভাষার জন্য লড়াই চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু মুখের ভাষা বাংলা ভাষা মাকে ডাকি মা, সারা বিশ্বে তোমার মাগো নেই তো তুলনা। তোমার মুখের প্রথম ভাষা আমার মনের সকল আশা তোমার ভাষায় বলবো মাগো আমার মনের কথা, এই ভাষাতেই জড়িয়ে আছে সকল স্বাধীনতা।  এই ভাষাকে আনতে গিয়ে তাজা বুকের রক্ত দিয়ে রাজপথে সব লড়াই হলো করলো লড়াই কারা, আমার মায়ের দামাল ছেলে রক্ত পলাশ যারা।  তোমার ছেলে লড়াই করে আনলো ভাষা ঘরে ঘরে সেদিন থেকে শহীদ মিনার সাজাই ফুলে ফুলে, বীর শহীদের ত্যাগের কথা যাইনি আজও ভুলে।    ++++++++++++++++++++++++++++++++    চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু শহীদ আবুল কাশেম সড়ক, বড় বাজার, চুয়াডাঙ্গা, বাংলাদেশ।

চিরকুটের কবিতা

নতুন পৃথিবী আজ সকালে রোদ্দুর নামুক ভেজা বর্ষার মতো গা ধুয়ে কিছুটা পবিত্র হবো যত জীর্ণ মলিন দ্বেষ বিলীন হোক সব সময়ের তটে গা ভাসিয়ে কিছুটা বিলাসী হবো যা ছিল অতীত যা ছিল কষ্ট সবকিছু ভুলে নবীনে ব্রতী হবো আসুক ধেয়ে সতেজ হাওয়া দূর হোক যত কুণ্ঠা ব্যথা পুরানো যত বিবাদ ভুলে ভালোবাসার আবার বেড়া দেবো কিছুটা আশাবাদী কিছুটা কর্মঠ কিছুটা জেদি কিছুটা শপথ আসুক ছুঁয়ে বাঁচার আলো হাতে হাত রেখেই বিশ্বাসের ঘরে আবার নতুন দীপ জ্বালাবো

কবিতা ।। অরণ্যকন্যা ।। অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়

  অরণ্যকন্যা অরিন্দম চট্টোপাধ্যায় অরণ্যকন্যার দৃষ্টির ভেতর বিষাদ বিন্দু ফোঁটা ফোঁটা জলের মতো গড়িয়ে যায়, হয়ে যায় কোন নদীপথ দৃষ্টি ভেঙে ভেঙে চলে যায় কোন এক শূন্য পথে অরণ্যকন্যার হৃদয়ের ভেতর ভাঙে যতো বৃক্ষপত্র নতুন পত্র পুষ্পের খোঁজ নেই ঠোঁট জুড়ে সমুদ্রকাঁপন বুদবুদের মতো অস্ফুট হয়ে উচ্চারিত হয় কোন অক্ষর শব্দ আর তাঁর শরীর থেকে ছড়িয়ে যায় হয়ে যায় একটা অদৃশ্য কবিতা...    ================== @ অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়,  বেহালা, কলকাতা -৭০০০৬০,  

কবিতা ।। মনোজকুমার রায়

জল সিঁড়ি চেক বইয়ের পাতা ফুরিয়ে যেতে থাকে -- ঝরে পড়ে বৃদ্ধ গাছটির পত্রমুকুল কাঁচা গন্ধ বেয়ে চলে সময়ের স্রোতে  সারা ভোর জেগে থাকি ঘুমের টলে তাড়া দেয় একগ্রাস অবিশ্বাসী বায়ু দিন ফুরনো লাল সূর্যের টানে নেমে আসে পাড় ছোঁয়া জল সিঁড়ি ================= মনোজকুমার রায় দঃ ঝাড় আলতা ডাউকিমারী, ধূপগুড়ি জলপাইগুড়ি -৭৩৫২১০ মো ৭৭৯৭৯৩৭৫৬৬

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯২তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩২ অক্টোবর ২০২৫

—: সম্পাদকীয় দপ্তর থেকে :— এই সংখ্যার জন্য লেখা এসেছিল প্রায় ১৮০টা। কিন্তু গুণগত মানে দুর্বল লেখার সংখ্যা বহু। আমরা নবপ্রভাতে নতুনদের কথা ভেবে বেশ কিছু দুর্বল লেখাও রাখি। কিন্তু সবসময় একই লোকের দুর্বল লেখা প্রকাশ করা অনুচিত বলে মনে করি। শেষ পর্যন্ত ৯৯ জনের লেখা রাখা গেল। যাদের লেখা প্রকাশিত হল না, তারা লেখাগুলি অন্য যেখানে খুশি পাঠাতে পারেন। বিশেষ কারণে এই সংখ্যার মুদ্রিত সংস্করণ প্রকাশিত হচ্ছে না। আমরা দুঃখিত। তবে মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি শীঘ্রই আসছে। সঙ্গে থাকুন। সকলকে উৎসবমুখর বর্ণময় শুভেচ্ছাসহ— —নিরাশাহরণ নস্কর, সম্পাদক, নবপ্রভাত। অনুরোধ : প্রকাশিত লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন, ছবি/স্ক্রীনশট নয়।  == সূচিপত্র == পড়া-লেখার ইতিহাস অনুসন্ধান।। তপন তরফদার উৎসব : মানুষের চিরন্তন আত্মপ্রকাশ।। কৃশানু ব্যানার্জি বাংলা : সভ্যতা ও সংস্কৃতির জন্মভূমি।। শ্যামল হুদাতী সমুদ্র আর অস্তিত্ব ।। সুব্রত চৌধুরী রাজা ছিলেন জুবিন গর্গ ।। গঙ্গা 'অনু'   আদ্যাশক্তি মহামায়ার বাংলা বারো মাসের বারো রূপ ।। অর্হণ জানা মেধাদাদুর আসর ।। রণেশ রায় বৈজ্ঞানিক মা...

উন্মুক্ত পাগলামি ।। আশরাফুল মণ্ডল

উন্মুক্ত পাগলামি আশরাফুল মণ্ডল আহা, অপরূপ নিজস্বতার দাহ! কুঁকড়ে যায় আবহমান, সজনে পাতার বোঁটায়! ভাপওঠা ভাতের কাছে মাছি সত্তায় কী নিপুণ! তবুও ঘোর লাগা বসন্তের ডাক, হাঁকে! খেদিয়ে দেয় পা দোলানো প্রস্তাব, ওই ধুনুরি চোখ! রাংতায় মোড়া ডাকের সাজ, দে দোল দোল! হুইসেল বাজিয়ে কে রুখে দ্যায় সেই নাকছাবির রুদালি কাঁপন! খালবিল ছেঁচে পাঁচসিকের  মানত কুড়িয়ে আনে, বাংলা বাজার। ঠ্যাং নাচানো সুরে চোখ মারছে, দ্যাখো ভ্যানতারা! মুখ খোলা মানেই পাঁজরের স্রোত ভাবা যেন উগরানো টালমাটাল! ঢিল মারা প্রশ্নের রোয়াকে বক্রচোখে যেন মেধাবী কবিতা! মুছে দিও তবে লাজুক গুপ্ত রোগ, দিনরাত্রি! ভালো থেকো তোমরা বাছাধন, রং মাস সে আর কতদিন... ================    ASRAFUL MANDAL Chandidas Avenue, B-zone, Durgapur, Paschim Bardhaman, Pin - 713205,  

কবিতা ।। সোনালি অতীত ।। প্রবোধ কুমার মৃধা

সোনালি অতীত  প্রবোধ কুমার মৃধা   সুশীতল ছায়াঘেরা স্নেহময়ী মাটি মা।   সে আমার জন্মভূমি সপ্তপুরুষের গাঁ।   প্রকৃতির বুক থেকে প্রাণের রসদ নিয়ে।   ফিরিতাম নদীতীরে হৃদয়ের গান গেয়ে।   সন্ধ্যাতারা উঁকি দিত গোধূলি লগনে।   প্রত্যুষে ভাঙিত ঘুম বিহঙ্গ কূজনে ।   আষাঢ়ের নব মেঘে ঘিরিত গগন।   বাদলের ছায়া ঢাকা কদম্ব কানন।   দলবেঁধে মাঠে-বাটে বেতালা-বেছন্দে।   কেটে যেত সারাদিন ভালো কভু মন্দে।   ডাক দেয় শিশুকাল, বাল্য ও কৈশোর।   অফুরন্ত প্রাণোচ্ছ্বল, আনন্দে বিভোর।   করমের স্রোতে ভেসে সংসারের হাটে।   ভিড়িল জীবনতরী নগরের ঘাটে।   ফিরিবার সাধ্য নাই ফেলে আসা পথে।   বাল্য রোমন্থন করি অতীত স্মৃতিতে।                    __________