Skip to main content

রণেশ রায়ের প্রবন্ধ

প্রাচুর্যের অভিশাপ ---- একটা স্ববিরোধিতা

(সম্প্রতি প্রকাশিত বিক্ষুব্ধ এ ভারতের অংশবিশেষ)



প্রকৃতির নীলাভ উদাস আকাশ থেকে বিজন জঙ্গলে সুউচ্চ বৃক্ষের মিনারের
ফাঁক দিয়ে আলোর চ্ছ্বটা বর্ষিত হয়। উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে জঙ্গল আলো আঁধারের
লুকোচুরি খেলায়। বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের কোন এক শিল্পীর তুলির টানে প্রকৃতি
সেজে ওঠে। প্রকৃতির অপ্রতিহত ক্ষমতার নিদর্শন প্রতিফলিত হয় মুক্ত
বাতাসের স্পর্শে, জলের অবিরাম কলকল প্রবাহে, জঙ্গলের আশ্রয়ে, পাহাড়ের
প্রত্যয়ে। প্রকৃতির নিয়ম রক্ষা করে মানুষের সঙ্গে তার এক মেলবন্ধন গড়ে
উঠেছে এই প্রকৃতির জগতে যেখানে আধুনিক 'সভ্যতা'র আলো বর্ষিত হয় না। মানব
গোষ্ঠী গড়ে উঠেছে সমুদ্র তটে পাহাড়ের কোলে জঙ্গলের আশ্রয়ে। নাগরিক সভ্য
সমাজের বন্ধন না মেনে এরা যারা এক বন্ধনহীন জীবন যাপন করে চলেছে তারা হল
আদিবাসী। প্রকৃতির শ্রেষ্ঠ সম্পদ মানব সম্পদ। পৃথিবীতে অসংখ্য এই মানব
গোষ্ঠী নিয়ে গঠিত হয়েছে মানব সমাজ। অসংখ্য মানব গোষ্ঠীর অন্যতম হলো
বিভিন্ন আদিবাসী গোষ্ঠী। তাদের দুর্ভাগ্য তারা জানত না যে প্রকৃতির
অকৃপণ দান বর্ষিত হয়েছে তাদের ওপর। তারা শুয়ে থাকে প্রকৃতির এই দান
সাগরের ওপর। তাদের নিচে লুকিয়ে আছে অফুরন্ত খনিজ সম্পদ যার সন্ধান করে
চলেছে 'সভ্য' শিল্প সমাজ আর তার মালিকরা। সন্ধান পেলেই তারা অস্ত্র হাতে
ঝাঁপিয়ে পরে। উৎখাত হতে হয় আদিবাসী সমাজকে। কৃষি জমি থেকে উৎখাত হয়ে তারা
আশ্রয় পেয়েছে এই প্রত্যন্ত জঙ্গলে। এখন এখান থেকে আবার উৎখাত হয়ে আশ্রয়
হারা হয়ে জীবিকা হারা হয়ে তারা কোথায় যাবে জানে না। বন্দুক হাতে রাষ্ট্র
তাদের উৎখাত করে। সম্পদের প্রাচুর্য তাদের কাছে অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তাদের বাঁচার তাগিদে হাতে তুলে নিতে হয় বন্দুক।

বিক্ষুব্ধ এই ভারতে :


লোভের সন্ত্রাস দূষণ ছড়ায়

রক্তের কোষে কাঁপন ধরায়,

তুফানের ঘূর্ণিবর্তা বাতাসে বাতাসে

সমুদ্রের গর্জন ঢেউয়ে ঢেউয়ে,

পর্বত চোখ রাঙায়

জঙ্গলের ক্রন্দন শোনা যায়,

ভীত সন্ত্রস্ত লুন্ঠিতা মা আমার,

ভয়ে পালায় কন্যা তার

অস্ত্রহাতে বাস্তুহারা রুখে দাঁড়ায় ।




আদিবাসী সমাজের কাছে উপরোক্ত বাস্তবতাটা নির্মম সত্য বলে আজ প্রতিভাত
হচ্ছে। এ যাবৎকাল তারা প্রকৃতির সঙ্গে একাত্ম হয়ে জীবন যাপন করতো।
প্রকৃতি তাদের আশ্রয় দিত। তারা খাদ্য সংগ্রহ করতো প্রকৃতি থেকে। জলের
কলকল শব্দ বাতাসের মর্মর ধ্বনি পাখির গান তাদের জীবনকে মুখর করে রাখতো।
জীবনে অভাব ছিল, অভাব অপুষ্টি নিরক্ষরতা নিত্য সঙ্গী। কিন্তু ছিল না
`সভ্যতা`র ক্রন্দন । দাসত্বের শৃঙ্খল। প্রকৃতি উদার হস্তে তাদের দিয়েছে।
তারাও তার প্রতিদান দিয়ে গেছে। প্রকৃতিকে সভ্যতার গর্ভে বিলীন হতে দেয়নি।
তাকে রক্ষা করে চলেছে। কিন্তু আজ প্রকৃতির সঙ্গে তারাও উচ্ছেদের মুখে,
ধ্বংসের মুখে। তাই নিজেদের জীবন জীবিকার লড়াই একই সঙ্গে প্রকৃতিকে টিকিয়ে
রাখার লড়াই। এই লড়াইয়ের কথা বলার আগে আমরা সেই সব লড়াইয়ের অঞ্চলের সঙ্গে
একটু পরিচিত হয়ে নিতে পারি। দেখে নিতে পারি প্রাচুর্য আর অভাবের
স্ববিরোধিতার ভয়ঙ্কর ধরণটা। আর এর থেকেই উদ্ভব ঘটে আজ এই লড়াইয়ের
বাস্তবতা যা পঞ্চাশ বছর আগের নকশালবাড়ির বহমানতা। সেই স্ফুলিঙ্গ থেকে
উদ্ভূত দাবানল।


এটা ধরে নেওয়া হয় যে কয়লা লোহা বক্সাইট ম্যাঙ্গানিজ-এর মত গুরুত্বপূর্ণ
খনিজ সম্পদ আর তার সঙ্গে দেশের অফুরন্ত মানব সম্পদ একটা দেশের উন্নয়নের
গতিকে ত্বরান্বিত করে। সেদিক থেকে ভারতের খনিজ সমৃদ্ধ দন্ডকারণ্য অঞ্চলকে
উন্নয়নের খনি বলে ভাবা যেতে পারে। কিন্তু দুৰ্ভাগ্যের বিষয় হল এই
প্রাচুর্য্য আজ এখানকার মানুষের কাছে অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এই
অঞ্চলগুলো দখলে রেখে নিজেদের ভাগ্য গড়ে তোলার এক বাধ্যবাধকতা দেখা দিয়েছে
কর্পোরেট দুনিয়ার কাছে। অন্ধ্রপ্রদেশ, উড়িষ্যা, ঝাড়খন্ড, ছত্তিসগড়,
মহারাষ্ট্রের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চল ধরে দন্ডকারণ্যের বিস্তৃত অঞ্চলকে আজ
শাসক সম্প্রদায় লাল অলিন্দ বা রেড করিডোর নাম দিয়েছে কারণ মাওবাদীদের
নেতৃত্বে আদিবাসী মানুষের অভ্যূত্থ্যান ঘটেছে এই অঞ্চলে। কিন্তু কার্যত
এই অঞ্চলগুলো নিয়ে ভারতে এক খনিজ অলিন্দ তৈরী হয়েছে যে পথ ধরে লুঠ হয়ে
চলেছে আমাদের মাতৃভূমি। এখানকার প্রতিটি বিদ্রোহী মানুষই রাষ্ট্রের চোখে
দেশবিরোধী সন্ত্রাসবাদী কারণ কর্পোরেট দুনিয়ার লুঠ আর দখলদারির বিরুদ্ধে
এরা অস্ত্র ধরেছে। অবাধ সম্পদ লুঠের পথে এরা কাঁটা। এই অঞ্চলগুলোর বিশেষ
বৈশিষ্ট্যগুলো ধরে আমরা আমাদের আলোচনায় প্রবেশ করতে পারি। এই আলোচনাই
আমাদের অনুমানের (hypothesis) সত্যতা যাচাই করবে। আর আমাদের সমর্থনে আমরা
প্রধানত সরকারি পরিসংখ্যানই ব্যবহার করব যাতে অনুমানটিকে মনগড়া বলে কেউ
উপেক্ষা করতে না পারে।


জঙ্গলে ঘেরা আদিবাসী অধ্যুষিত বিস্তীর্ন দন্ডকারণ্য অঞ্চলে মানুষ ও
প্রকৃতির মধ্যে এক সহজাত পারস্পরিক নির্ভরশীলতার সম্পর্ক গড়ে উঠেছে।
প্রকৃতি সেখানকার বসবাসকারী মানুষকে যেমন খাদ্য বস্ত্র বাসস্থান চিকিৎসার
উপাদান যোগায় তেমনি সেখানকার মানুষ প্রকৃতি রক্ষার কাজে নিজেদের নিয়োজিত
করে পরম শ্রদ্ধা আর যত্নের সঙ্গে। যেহেতু সেখানকার মানুষের জীবনজীবিকার
সঙ্গে প্রকৃতি গভীর এক বন্ধনে আবদ্ধ তাই প্রকৃতিকে রক্ষা করার শিল্প
তাদের কাছে সহজাত। দেশের জনবন্টনের মানচিত্র থেকে জানা যায় যে ভারতের
কেন্দ্র ও পূর্বাঞ্চলে সাতটি প্রদেশ তথা মধ্য প্রদেশ, অন্ধ্র, ওড়িষ্যা,
ঝাড়খন্ড, ছত্তিশগড়, মহারাষ্ট্রের দক্ষিণপূর্বাঞ্চল, গুজরাট ধারণ করে
দেশের দুইতৃতীয়াংশ আদিবাসী মানুষকে। বিশেষ করে জঙ্গলে ঘেরা এই
প্রদেশগুলির গ্রামাঞ্চলে কেন্দ্রীভবন ঘটে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর। ২০১১ সালের
জনগণনা অনুযায়ী ভারতের মোট ১০.৪ কোটি আদিবাসী উপজাতির মধ্যে ৯.৩ কোটি বাস
করে গ্রামাঞ্চলে। বাকি মাত্র ১.১ কোটি বাস করে শহরে। ২০০১ থেকে ২০১১
সালের মধ্যে গ্রামীণ আদিবাসীর সংখ্যা ১০.৪ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ১১.৩
শতাংশ যেখানে শহরে আদিবাসীর সংখ্যা বেড়েছে মাত্র ২.৪ শতাংশ থেকে ২.৮
শতাংশ। এর থেকে প্রমান হয় গ্রাম থেকে শহরে আদিবাসীদের স্থানান্তর
একেবারেই ন্যূনতম। জনবন্টনের এই বৈশিষ্ট্য ধরে আমরা আমাদের আলোচনা
সীমাবব্ধ রাখবো প্রধানত ছত্তিশগড় ওড়িষ্যা ঝাড়খন্ড মহারাষ্ট্রের
দন্ডকারণ্য অঞ্চলে আজ যেখানে কর্পোরেট দুনিয়ার আক্রমণের মুখে আদিবাসী
জনগন রুখে দাঁড়িয়েছে।


আমাদের আলোচনার অঞ্চলগুলোতে আদিবাসী জনগনের উচ্চমাত্রায় কেন্দ্রীভবন
লক্ষ্য করা যায়। ছত্তিশগড়ের দান্তেওয়ারা প্রদেশে মোট জনসংখ্যার ৮২.৪% হ`ল
আদিবাসী। বস্তার ও যশপুর জেলায় এই সংখ্যা হ`ল যথাক্রমে ৭১.৬০% ও ৬৪.৫০%।
গ্রামাঞ্চলে জঙ্গলে ঢাকা অঞ্চল ৪০%-এর বেশি। ঝাড়গ্রামের গুমলা জেলায়
৬৮.৯% আদিবাসী মানুষের কেন্দ্রীভবন দেখা যায়। লোহারডাঙ্গায় ৫৬.৯%।
উড়িষ্যার মালকানগিরি ও ময়ূরভঞ্জ জেলায এই কেন্দ্রীভবন যথাক্রমে ৬০.৮% ও
৫৯.৫১%। রায়ডাগা কোরাপুট ও নবরংপুরে ৬২.৭৯%,৫৬.৪৬% ও ৫৭.৭৮%। জঙ্গলঘেরা
আদিবাসী এই অঞ্চলগুলিতেই অবস্থিত অফুরন্ত সম্পদশালী খনি---- লোহার খনি
বক্সাইড খনি কয়লা খনি ম্যাঙ্গানিজ আরো কত কি। আর এর ওপরই আজ কর্পোরেট
দুনিয়ার শকুনের দৃষ্টি, উন্নয়নের নামে লুঠ। দেশি বিদেশি কর্পোরেট বিভাগের
বিনিয়োগ বর্ষিত হয় এখানে। আর এই বিনিয়োগের আক্রমনে ঘটে চলেছে আদিবাসী
উৎখাত। জীবন জীবিকা থেকে তাদের উচ্ছেদ। এক ধরন বা অন্য ধরনের
বিচ্ছিন্নকরণ যাকে ইংরেজিতে alienation বলা হয়। প্রকৃতি থেকে মানুষের
বিচ্ছিন্নতা, জীবনজীবিকা থেকে মানুষের বিচ্ছিন্নতা, সৃষ্টি থেকে স্রষ্টার
বিচ্ছিন্নতা। শিল্পায়ন তথা সভ্যায়ন । শহরায়ণ। শহরে জায়গা করে নিচ্ছে অন্য
রাজ্য থেকে আসা সভ্য সম্প্রদায়। প্রান্তিকরণ ঘটে চলেছে আদিবাসী
জনগোষ্ঠীর। শিক্ষা পুষ্টি আশ্রয় সবই তাদের জন্য অনিশ্চিত। প্রাচুর্য বেড়ে
চলেছে শহরে জায়গা পাওয়া তথাকথিত শিক্ষিত উচ্চ বর্গের `সভ্য` সম্প্রদায়ের।
আমরা যদি এই অঞ্চলগুলিকে আবার উপজেলায় ভাগ করে বিশ্লেষণ করি তবে এই ভয়াভয়
বিচ্ছিন্নতার চেহারাটা আরো প্রকটভাবে ফুটে উঠবে। আমরা দেখব এই
বিচ্ছিন্নতাই শর্ত তৈরী করছে নকশালবাড়ির দাবানল ছড়িয়ে পরার। আজ ওরা
এসেছে শিল্পায়ন আর উন্নয়নের নামে লোহার হাতকড়া হাতে। বন্দুক ঘাড়ে।
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ তার `আফ্রিকা` নামক কবিতায় সে কথাই বলে গেছেন :


হায় ছায়াবৃতা,

কালো ঘোমটার নীচে

অপচরিত ছিল তোমার মানবরূপ

উপেক্ষার আবিল দৃষ্টিতে।

এল ওরা হাতকড়া নিয়ে,

নখ যাদের তীক্ষ্ণ তোমার নেকড়ের চেয়ে,

এল ওরা মানুষ ধরার দল

গর্বে যারা অন্ধ তোমার সূর্যহারা অরণ্যের চেয়ে।

সভ্যের বর্বর লোভ

নগ্ন করল আপন নির্লজ্জ অমানুষতা

তোমার ভাষাহীন ক্রন্দনে বাষ্পাকুল অরণ্যপথে

পঙ্কিল হল ধূলি তোমার রক্তে অশ্রুতে মিশে,

দস্যু পায়ের কাঁটা-মারা জুতোর তলায়

বীভৎস কাদার পিন্ড

চিরচিহ্ন দিয়ে গেল তোমার অপমানিত ইতিহাস।


কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ তার রক্তকরবিতে যে বার্তা রেখে গেছেন তার সারবস্তু হল :


আমরা জানি, "ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়"। তাও আমাদের ভাবায় আজ সমরবাদ
ভোগবাদ প্রকৃতি নিধনের এই যুগে কি প্রাচুর্য্যের জগতে দুনিয়া কাব্যময়?
না, তাও তো নয়। ক্ষুধার জগতে প্রাচুর্য্যের দ্বীপ। প্রাচুর্য্যের দ্বীপে
মধ্যগগনের দহন জ্বালা। সকালের সূর্যের নরম স্পর্শ, সন্ধ্যার স্নিগ্ধতা,
রাতের সুখস্বপ্ন কোথায়? সন্ধ্যায় অমাবস্যার অন্ধকার, রাতে বিবরের গহ্বর।
মাতৃগর্ভে আগমনির পদধ্বনি শোনা যায় না। পৌরুষের আকাশে প্রকৃতির রোষ। এই
`সভ্যতা`র মধ্যগগনে প্রাচুর্যের দ্বীপে অতিপুষ্ট সবাই বিচ্ছিন্ন। শৈশব
লুঠ, যৌবন বীর্যহীন, বার্ধক্য কেঁদে ফেরে। প্রেম সঙ্গিহীন। সেখানে ফোটে
না রক্তকরবী। শাসক নিজেও শৃঙ্খলিত। এর মধ্যেই রঞ্জন নতুনের বার্তা বয় ।
নন্দিনী বিদ্রোহিনী। 'সভ্যতা'র রথে রঞ্জন নন্দিনী পিষ্ট। তাদের প্রেমের
সরোবরে রক্তকরবীর প্রস্ফুটন। বেঁচে থাকে সে প্রেম। রক্তের কোষে সে
প্রাণচঞ্চল । আগামীর বার্তা। অপেক্ষা, ক্ষুধার রাজ্য কবে জাগে।


বিক্ষুব্ধ এ ভারত সেদিনও, সেদিন আর এদিনের বিক্ষুব্ধ ভারতের পরিচয় আমরা
পাই বিপ্লবী কবি প্রয়াত সুকান্ত যখন লেখেন


অবাক পৃথিবী ! অবাক করলে তুমি !

জন্মেই দেখি ক্ষুব্ধ এ স্বদেশভূমি !

অবাক পৃথিবী ! আমরা যে পরাধীন

অবাক, কি দ্রুত জমে ক্রোধ দিন দিন ;



জেলা বিভাজন ও প্রাচুর্যের স্ববিরোধিতা :


সারা পৃথিবী ধরেই দেখা যায় প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর অঞ্চলগুলোর ওপর
নিরবিচ্ছিন্নভাবে সাম্রাজ্যবাদের আক্রমন নেমে এসেছে। কর্পোরেট সাম্রাজ্য
লুঠ করে এই সব দেশের সম্পদ। আফ্রিকা এশিয়া লাতিন আমেরিকা ধরে চলেছে এই
ধারাবাহিক লুঠের রাজত্ব। পুঁজিবাদের সর্বোচ্চ স্তর সাম্রাজ্যবাদে পৌঁছবার
কাল থেকেই এই আগ্রাসন পুঁজিবাদী সভ্যতার নগ্নরূপটাকে উদ্ঘাটিত করে চলেছে।
ভারত এর ব্যতিক্রম নয়। সম্পদের প্রাচুর্যের এই অভিশাপ জঙ্গল ঘেরা
বনাঞ্চলগুলিতে কি ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে চলেছে তার বিস্তারিত একটা চিত্র
তুলে ধরেন সঞ্চিতা বক্সী, পূর্বতন পরিকল্পনা কমিশনের এক সদস্যা, অরুণীশ
চাওলা, অর্থমন্ত্রণালয়ের যৌথ সম্পাদক, সমাজ প্রগতি সহগের সম্পাদক ও
পূর্বতন পরিকল্পনা কমিশনের সভ্য মিহির শাহ তাদের একটি সাম্প্রতিক
অনুসন্ধ্যানে। এর জন্য জেলাগুলোকে উপজেলায় ভাগ করে বিশ্লেষণ করেছেন
তাঁরা। এই গবেষণামূলক কাজে স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে আমাদের আলোচিত
অঞ্চলগুলোর জেলাগুলোকে উপজেলায় ভাগ করলে ধরা পরে বিত্তহীন আর
বিত্তবানদের মধ্যে ভয়ঙ্কর মাত্রায় বিভাজনটি বর্তমান। দেশের অভ্যন্তরিন
উৎপাদনে উচ্চমাত্রায় অবদান রাখলেও আদিবাসী অধ্যুষিত বনজ অঞ্চলগুলো
দারিদ্র নিপীড়িত, অপুষ্ট ও নিরক্ষর। এখানকার প্রান্তিক মানুষেরা চিকিৎসার
সুযোগ থেকে বঞ্চিত, আশ্রয়হীন। প্রকৃতিই এদের আশ্রয়। জীবন জীবিকা সম্পূর্ণ
ভাবে প্রকৃতি নির্ভর। সভ্য সমাজ এতদিন এদের খবর রাখত না। আজ সম্পদের খোঁজ
পেয়ে এরা রাষ্ট্রের সমর্থনে এখানে বন্দুক হাতে উপস্থিত। উদ্দেশ্য অঞ্চল
`সাফ` করে সেখান থেকে বসবাসকারী মানুষকে `উচ্ছেদ` করে `উন্নয়ন` ঘটানো।
উন্নয়ন মানে সেখানকার জল জমি খনিজ সম্পদের ওপর দখল নেওয়া। বিদেশী
বহুজাতিক সংস্থা ও তাদের সঙ্গে গাঁটছড়া বাধা দেশীয় বহুজাতিক সংস্থার হাতে
তা তুলে দেওয়া। লুঠের রাজত্ব কায়েম করা। তথাকথিত এই উন্নয়নের অভিযানকে
সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা কলম্বাসের পর সবচেয়ে সবচেয়ে বড় মাত্রায়
জমি দখলের, উচ্ছেদের অভিযান বলে চিহ্নিত করে। একইসঙ্গে অঞ্চলগুলোর
শহরগুলিতে বিত্তশালী একটা সস্প্রদায় গড়ে ওঠে যারা উচ্চবর্গের মানুষ,
দেশের অন্যান্য অঞ্চল থেকে যারা আসে। আমাদের আলোচিত অঞ্চলগুলো খনিজ
সম্পদে ভরপুর হওয়ায় এই অবস্থার উদ্ভব ঘটে। সম্পদ প্রাচুর্য গরিব মানুষের
কাছে অভিশাপ হয়ে দাঁড়ায়। এর মধ্যেই নিহিত আছে লুঠের রাজনীতির বীজ। গরিব
মানুষকে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হয়। আক্রমণকারী আর প্রতিরোধকারীদের মধ্যে এক
যুদ্ধ ঘোষিত হয়।


১৯৯১ সালে নতুন আর্থিক নীতি চালু হওয়ার পর থেকে অঞ্চলগুলির মধ্যে বিভাজন
প্রকট থেকে প্রকটর হতে থাকে। খনিজ সম্পদের স্বর্ণ লঙ্কায় যে প্রবণতা দেখা
যায় তা সরকারি পরিসংখ্যান সমর্থন করে। ৫০-টি প্রধান খনিজ উৎপাদনকারী
জেলাগুলির মধ্যে ৬০% জেলা দেশের সব থেকে পিছিয়ে পড়া জেলাগুলির
অন্তর্ভুক্ত। দেশের ২৫টি সবচেয়ে দুর্দশাগ্রস্থ জেলাগুলোর ২টি ওড়িশায়,
ঝাড়খন্ড ও ছত্তিশগড়ে ১টি করে অবস্থিত। উড়িষ্যার কেওনঝর জেলায় শিশু
মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি। দান্তেওয়ারা লোহা সম্পদে ভরপুর হওয়ায় আজ এই
অন্যতম সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া অঞ্চলে বিনিয়োগের আকর্ষণ সবচেয়ে তীব্র। এই
জেলা ১৫০টি সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া জেলার মধ্যে তলা থেকে সপ্তম। এই সম্পদধনী
অঞ্চলে মাত্র ৫৩% শতাংশ মানুষের পানের উপযুক্ত পানীয় জলের ওপর অধিকার
আছে। কর্ণাটকের বেলারি আর গুলবার্গের মত অঞ্চল এর অন্যতম যেখানে রাজ্যের
৮৪% লোহা পাওয়া যায়। চুনা পাথর উৎপাদনে গুলবার্গ সবচেয়ে অগ্রণী। কিন্তু
গুলবার্গ মানব উন্নয়নসূচকের মাপকাঠিতে সব থেকে পিছিয়ে পড়া কুড়িটি জেলার
মধ্যে উনিশতম আর বেলারি সতেরোতম। বেলারিতে ৪৫% মানুষ দারিদ্র সীমার নিচে
অবস্থান করে। দেশের সমস্ত খনিজ অঞ্চলের অবস্থা একই। ছত্তিশগড়ের লাগোয়া
মহারাষ্ট্রের ইয়াবতমল ও চন্দ্রপুর হল দুটি প্রান্তিক জেলা যেখানে
মহারাষ্ট্রের মধ্যে সবচেয়ে বেশি কয়লা আর চুনাপাথর উৎপাদিত হয়। অথচ এই
অঞ্চলগুলো সবচেয়ে দারিদ্র পীড়িত। মহারাষ্ট্রের অন্যত্র বিশেষ করে উন্নত
জেলাগুলোতে তেমন খনিজ সম্পদ পাওয়া যায় না। এই রাজ্যের ৩৫টি জেলার মধ্যে
এই পিছিয়ে পড়া দুটি জেলার অবস্থান যথাক্রমে চৌত্রিশতম ও ছাব্বিশতম।
চন্দ্রপুরে ৪৭% মানুষ দারিদ্র রেখার নিচে অবস্থান করে। ইয়াবন্তমলে ৪৪%
মানুষ দারিদ্র সীমার নিচে বাস করে।


এবার দেখা যাক পিছিয়ে পড়া জেলাগুলোকে উপজেলায় ভাগ করে আলোচনা করলে
সঞ্চিতা বক্সীদের গবেষণা আমাদের কি জানান দেয়। সাম্প্ৰতিক কালে মোট
অভ্যন্তরীণ উৎপাদনে খনিজ উৎপাদনের অবদান বেড়ে যাওয়ায় সামগ্রিক ভাবে
পিছিয়ে পড়া অঞ্চলগুলোর অবস্থার উন্নতি হয়েছে বলা যায়। কিন্তু একটি
পশ্চাদপদ জেলাকে উপজেলায় ভাগ করলে দেখা যায় জেলার উন্নত অঞ্চলগুলোতে
দ্রুতহারে শহরীকরন ঘটেছে। উন্নত উপজেলায় আদিবাসীদের অংশ কমেছে। সেখানে
অন্য রাজ্য থেকে আসা উচ্চবর্গের বিত্তশালীদের একধরণের কেন্দ্রীভবন
বেড়েছে। পুষ্টি শিক্ষা স্বাস্থ্য সবরকম সুবিধা বেড়েছে। অপরদিকে পিছিয়ে
পড়া জঙ্গলে ঘেরা গ্রামাঞ্চলে আদিবাসীদের কেন্দ্রীভবন কমে নি। তাদের জীবন
জীবিকায় উন্নতি হয়নি। উপরোক্ত গবেষণা অনুযায়ী :


Typically tribal areas are mineral and forest rich and the extraction
of these resources tends to be a one way street with little benefit
flowing to the tribal people.

(Ref: Enclaves of Backwardness, Political and Economic Weekly, 1st Jan 2015)


আলোচনাধীন বিভিন্ন রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত জেলাগুলোর বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই
উন্নয়ন শিল্পায়ন ও শহরীকরণের ফলশ্রুতিতে উচ্ছেদ ও বিচ্ছিন্নতায় ছেদ
পড়েনি, অনাদিবাসী উচ্চবর্গের মানুষের ভিড় বেড়েছে শহরগুলিতে। পশ্চাদপদ
উপজেলাগুলি রয়ে গেছে আদিবাসী অধ্যুষিত। উন্নয়নের ও সম্প্রসারণের
কেন্দ্রগুলি ঘেরাও রয়ে গেছে গরিবি অপুষ্টি ও শিক্ষার অভাবে ভরপুল
গ্রামাঞ্চলের দ্বারা। অভাবের সমুদ্রে গড়ে উঠেছে শহরকেন্দ্রিক প্রাচুর্যের
দ্বীপ। এই গবেষণা পত্রে বলা হয়েছে :


the most advanced sub-districts are flanked by the most underdeveloped
tribal sub-districts in Korba and Raigarh of Chhattisgarh, Valsad of
Gujrat, PaschimSingbhum, PurbiSingbhum of Jharkhand and Keonjhar,
Koraput and Mayurbhanj districts of Odisha


দ্বাদশ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় ভূমি সংক্রান্ত আলোচনায় স্বীকার করা
হয়েছে যে গত ষাট বছরে ছয় কোটি মানুষ উচ্ছেদ ও বিচ্ছিন্নতার শিকার হয়েছে।
পৃথিবীতে সাম্প্রতিক কালের সর্ববৃহৎ উচ্ছেদ হলো এটা যাকে সরকার নিযুক্ত
একটা কমিটি কলম্বাসের পর সর্ববৃহৎ উচ্ছেদ বলে উল্লেখ করেছে। এদের মধ্যে
এক তৃতীযাংশের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা হয়েছে। বাকিদের সম্পর্কে তেমন কিছু
জানা যায় না। উচ্ছেদ হওয়া মানুষের ৪০% আদিবাসী আর ২০% দলিত। উল্লেখযোগ্য
যে ৯০% কয়লা আর ৫০% অন্যান্য খনিজ পদার্থ পাওয়া যায় এই আদিবাসী অধ্যুষিত
জঙ্গল ঘেরা অঞ্চলগুলিতে যেখানে দারিদ্র আর অপুষ্টি মানুষের নিত্যসঙ্গী
(দ্রষ্টব্য : Planning Commission,2013 Vol-1)


উপরোক্ত গবেষণা চালানো হয় ৬৪০টি জেলা ও ৫,৯৫৫টি উপ-জেলাকে কেন্দ্র করে।
সঠিকভাবেই বলা হয় যে গভীর এবং নির্ভুল বিশ্লেষণের স্বার্থে আলোচনাকে
জেলার গন্ডি পেরিয়ে উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তে নিয়ে যেতে হয় কারন একটি
জেলা একাধিক বিভাজিত উপজেলায় আজ বিভক্ত। তথাকথিত উন্নয়নকে কেন্দ্র করে এই
বিভাজন গড়ে উঠেছে। এই বিভাজন হলো শহর গ্রামের মধ্যে বিভাজন ধনী দরিদ্রের
মধ্যে বিভাজন উচ্চ বর্গের সঙ্গে নিম্ন বর্গের বিভাজন। অর্থিনীতি রাজনীতি
সাংস্কৃতিক বিভাজন। এ এক সর্বাত্মক বিভাজন। উপবিভাজনের ভিত্তিতে এই
বিশ্লেষণ দেখিয়ে দেয় যে আদিবাসী অধ্যুষিত জঙ্গল ঘেরা খনিজ অঞ্চলগুলো
আভ্যন্তরীন জাতীয় আয়ে অধিকতর অবদান রেখে চলেছে কিন্তু এইসব অঞ্চলগুলিতেই
আদিবাসীদের কেন্দ্রীভবন বেশি বেশি করে দেখা দিচ্ছে। এখানেই দারিদ্র ও
অপুষ্টি বাসা বাঁধে। শিক্ষার আলো এখানে পৌঁছায় না। চিকিৎসার সুযোগ নেই
বললেই চলে।


পরিসংখ্যানের সাহায্যে এই গবেষণায় কি বলা হয়েছে তা দেখে নেওয়া যাক। এই
গবেষণায় দেখা যায় যে ২৭টি জেলা আছে যার উপজেলার ১০% সর্বোচ্চ ও ১০%
সর্বনিম্ন স্তরে অবস্থান করে। ৯২টি জেলার অন্তর্ভুক্ত উপজেলাগুলোর ২০%
সর্বোচ্চ স্তরে এবং ২০% এর স্থান সর্বনিম্নে। ১০৬টি জেলার ৩০% সর্বোচ্চ ও
৩০% সর্বনিম্ন স্তরের উপজেলা বলে বিবেচিত। এই জেলাগুলি এমনভাবে উপজেলায়
বিভাজিত যে কয়েকটি শহরকেন্দ্রিক উন্নত উপজেলা প্রধানত উচ্চবিত্তদের
বাসস্থান। উন্নয়নের সুবিধা এরা ভোগ করে। কিন্তু এইগুলোকে ঘিরে থাকে
দারিদ্র নিপীড়িত আদিবাসী অধ্যুষিত জঙ্গলঘেরা খনিসম্পদে ভরপুর গ্রামাঞ্চল।
এই বিভাজিত পিছিয়ে পড়া উপজেলাগুলি হলো খনিজ সম্পদ স্বর্গ। আদিবাসী
মানুষের কেন্দ্রীভবন ঘটে এইসব পিছিয়ে পড়া উপজেলায়। জাতীয় উৎপাদনে খনিজ
সম্পদে এই অঞ্চলগুলির অবদান বেশি হলেও দারিদ্র অপুষ্টি অশিক্ষার অন্ধকার
এই অঞ্চলগুলোকেই তমসাচ্ছন্ন করে রাখে। মানব উন্নয়নের যে কোন মাপকাঠিতেই
এই অঞ্চলগুলো সবথেকে পিছিয়ে পড়া। একই সঙ্গে উন্নয়ন ও শহরায়ণের দৌলতে
বিভাজিত শহুরে উপজেলাগুলো দেশের উন্নত অঞ্চলগুলোর সমতুল যেখানে আদিবাসীরা
সংখ্যালঘু হয়ে গেছে। দখলদারি পেয়েছে উচ্চবিত্তরা। এই কেন্দ্রগুলি
কর্পোরেট সংস্থাগুলির ব্যবসা কেন্দ্র। শিক্ষা চিকিৎসা সব কিছুতেই এগিয়ে
থাকা। অন্যভাবে বলা চলে এইসব জেলাগুলো অভাবে ঘিরে থাকা প্রাচুর্যের
দ্বীপ। আর এখানেই নিহিত আছে প্রাচুর্যের অভিশাপের চাবিকাঠি।


উপরের আলোচনা ধরে বলা যায় যে বিশ্বায়নের নমুনায় শিল্পায়নের আশীর্বাদ
বর্ষিত হয় অনাদিবাসী উচ্চবিত্ত জনগনের মাথায়। আমাদের আলোচিত অঞ্চলগুলোতে
উন্নয়নের হার সর্বভারতীয় মানে যথেষ্ট বেশি। শেষ হিসেবে জানা যায় যে
ছত্তিশগড় ঝাড়খন্ড উড়িষ্যায় উন্নয়নের হার যথাক্রমে ৮.৪৪,৭.২৭ ও ৮.২৩ শতাংশ
যা ভারতের উন্নয়নের গড় হার থেকে বেশি। লক্ষণীয় যে গড় উন্নয়নের হার বেশি
হলেও এই অঞ্চলগুলো মানবউন্নয়নের সূচকে সবথেকে পিছিয়ে থাকা যা আমরা আগে
দেখেছি। আরও লক্ষণীয় যে এই জেলাগুলোতে মানব উন্নয়নহার কিছুটা বেড়েছে
শহরগুলোর উন্নয়নের ফলে। কিন্তু গ্রামাঞ্চলগুলো যেই তিমিরে সেই তিমিরেই
আছে। আর আজ গ্রামাঞ্চলগুলোকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছে আদিবাসীদের
অভ্যুথ্যান। কারন তারাই আজ সবথেকে তীব্রভাবে শোষিত। আর সাম্রাজ্যবাদের
আক্রমনের ফল-ই এই শোষণ। সুতরাং শোষিত মানুষের সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে
অস্ত্রধারণ-ই বলে দেয় আজ ভারতীয় সমাজে লড়াইয়ের অভিমুখ কোনদিকে কিভাবে
এগিয়েছে। প্রধান দ্বন্দ্ব কোনটা। নকশালবাড়ির আন্দোলন আমাদের প্রধান
দ্বন্দ্বকে চিনতে শিখিয়েছিলো। আর সাহায্য করেছিল এই দ্বন্দ্বের চরিত্র
বুঝতে। লড়াইয়ের নীতি ও কৌশল নির্ধারণে এই বিষয়টি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
জনযুদ্ধের গতিশীলতার এটাই চরিত্র। বাস্তব অবস্থার বদলের সঙ্গে সঙ্গে নীতি
ও কৌশলে বদল আসে। কিন্তু শত্রুতামূলক দ্বন্দ্বের সমাধান করতে গেলে
সশস্ত্র লড়াইটা অনিবার্য। সংসদীয় পথে এর সমাধান সম্ভব নয় কারন শোষণ বজায়
রাখতে রাষ্ট্র সবসময়-ই অস্ত্রহাতে উপস্থিত। ঘোষিত বা অঘোষিত যুদ্ধ জনগনের
ওপর চেপে বসে থাকে। এমনকি ভোটের রাজনীতিতেও অস্ত্র কথা বলে, পয়সা
ভোটযুদ্ধকে পরিচালিত করে। শান্তির ললিত বাণী শোনায় ব্যর্থ পরিহাস।
===========000=========

(সমস্ত তথ্য ও বক্তব্যের দায় ও কপিরাইট লেখকের। আমরা প্রকাশক মাত্র।)














রণেশ রায়
পি৫৮৭ পর্ণশ্রী পল্লী কলকাতা ৭০০০৬০

Comments

বিধিবদ্ধ স্বীকার্য :

লেখার বক্তব্যের দায়িত্ব লেখকের, পত্রিকার নয়। আমরা বহু মতের প্রকাশক মাত্র।

মতামত/লেখা এখানে জমা দিন

Name

Email *

Message *

সাম্প্রতিক বাছাই

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯৩তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩২ নভেম্বর ২০২৫

সূচিপত্র বস্তু, চেতনা এবং কবি ।। সজল চক্রবর্তী দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত ।। রণেশ রায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট ও সন্নিহিত অঞ্চলের কথ্য শব্দ ।। অরবিন্দ পুরকাইত চাঁদে জীবন ।। শমীক সমাদ্দার অসমাপ্তি ।। মহুয়া হুই গ্যালাক্সির শব্দে ।। জাসমিনা খাতুন তিনটি কবিতা ।। দিবাকর সেন অপূর্ণতার শেষ অধ্যায় ।। সুপ্রিয় সাহা হাফ ডজন ছড়া ।। স্বপনকুমার পাহাড়ী স্বাপ্নিক অমলের ঘুৃম ।। সঞ্জয় দেওয়ান দুটি কবিতা ।। সৌমিত্র উপাধ্যায় পথ চলতি ✍️পার্থ প্রতিম দাস হেমন্তের বিষাদ ছুঁয়ে ।। শক্তিপদ পাঠক রাই আর বাবা ।। অদিতি চ্যাটার্জি স্থিতিশীল ।। রঞ্জিত মুখোপাধ্যায় হৃদয়ের শূন্য কোড ।। লিপিকা পিঙ্কি দে অমানিশা ।। সৌভিক মুখার্জী দৃষ্টিগত ।। শামীম নওরোজ জ্যান্ত ভূতের গপ্পো ।। পার্থ সারথি চট্টোপাধ্যায় ধুতরা ফুলের ঘ্রাণ ।। মজনু মিয়া তারা খসার আলোয় ।। তীর্থঙ্কর সুমিত উত্তরণে অন্তরায় ।। সমীর কুমার দত্ত প্রেম মুদ্রা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ধারা ।। লালন চাঁদ অন্যের ব্যথায় ব্যথি ।। জগদীশ মণ্ডল গর্ভ ।। শাশ্বত বোস ভ্রমণ বিষয়ক স্মৃতিকথা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত শাপে বর ।। সাইফুল ইসলাম রবিবার ।। সঙ্ঘমিত্রা দাস দুটি ...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬

  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠালে  অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে হলে ভালো। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # ...

রেজাল্ট ।। সৈকত মাজী

রেজাল্ট সৈকত মাজী শুভ্রাংশু বিছানতে শুয়ে শুয়ে বিরক্ত হয়ে উঠল। মনে মনে নিজের শরীরটাকে আচ্ছা করে শুনিয়ে দিলো দু- চারটে কথা, দেবে নাই বা কেন, কয়দিন ধরে এতো কাঠ খড় পুড়িয়ে সব বন্ধুরা মিলে রথটা বানালো, কত কি প্ল্যান করলো, আর এই শরীরটার জন্যই তো সব ভেস্তে গেলো। মনে মনে ভাবলো একটা যা হোক শরীর হয়েছে ওর প্রতি মাসে তিন - চার বার করে জ্বর হচ্ছেই। হবি তো হ আর একটা দিন পরে হলে কি এমন ক্ষতি হতো, এই রথের দিনেই হতে হলো। ওর বিরক্তিটা বেড়ে গেলো আরো কয়েক ঘর।    " মা ও মা...মাআআআআ...." জোরে হাঁক  দিলো শুভ্রাংশু।    " কি হয়েছে বাবু? আবার জ্বরটা বেড়েছে? মাথা ব্যথা করছে?" ব্যস্ত হয়ে উঠলেন মালতিদেবী।     " ওসব কিছু নয়, ও মা বলছি এখন তো খুব কম জ্বর আছে যাই না মা একবার বাইরে, সবাই কতো ফুর্তি করছে বলো"  কাতর ভাবে বলল শুভ্রাংশু।      " না বাবু, এখনই আমরা ডাক্তারের কাছে যাব, বাবা তৈরী হয়ে গেছেন, আমরা বিকেলে তখন মেলা দেখতে যাব কেমন, এখন উঠে জামা কাপড় পরে নাও"  মালতিদেবী জামা কাপড় গুলো এগিয়ে দিলেন।      শুভ্রাংশু...

রাই আর বাবা ।। অদিতি চ্যাটার্জি

রাই আর বাবা অদিতি চ্যাটার্জি রাই-র জীবনে বেশ কিছু ভালো লাগা আছে তার মধ্যে একটা হলো সন্ধ্যার সময় তিন তলার বারান্দায় দাঁড়িয়ে রাস্তা দেখতে দেখতে কফি কাপে চুমুক দেওয়া ।" আজ যশোদা মিষ্টান্ন ভান্ডারের সামনে বেশ ভিড়,নির্ঘাত 'তেলে ভাজা ' প্রেমীরা।" আপন মনেই ভাবে ও, কিন্তু বসার ঘরে সুমন আর আঁখি এতো জোরে 'হল্লা গোল্লা ' করছে তালতলার জমজমাট রাস্তার দিকে আর মন দিতে পারছে না রাই।  পায়ে পায়ে ঘরে এসে দাঁড়ায় রাই, দেখে ক্লাস ফোরের মেয়ে এতোটা ঝগড়া করছে সুমনের সাথে , "বাপ রে, কবে এতোটা কথা শিখলো মেয়ে! কিভাবে কথা বলছে?? কোঁকড়া চুল ঝাঁঝিয়ে,গোলগাল হাত নেড়ে " ...মেয়ে কে দেখে থতমত খেয়ে যায় রাই। এদিকে আঁখি বলছে, "ধুত্ বাপী তুমি কিচ্ছু পারো না, তুতাই-র বাবা, পিসাই, মামু সবাই কত ভালো করে খেলতে পারে , না আমি তোমার সাথে খেলবো না।" কাতর চোখে মেয়ের দিকে একবার তাকিয়ে সুমন বলে ,"আচ্ছা তুই আমাকে শেখা, দ্যাখ আমি কার জন্য আলিপুরদুয়ার থেকে পনেরো দিন পর পর কলকাতায় আসি বল!"  ঐ টুকু মেয়ে কথা প্রায় না শুনেই ঘরে চলে গেল রাই-র চোখের সামনে, সুমন একবার হেসে বাথরুমের দিকে এগো...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯২তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩২ অক্টোবর ২০২৫

—: সম্পাদকীয় দপ্তর থেকে :— এই সংখ্যার জন্য লেখা এসেছিল প্রায় ১৮০টা। কিন্তু গুণগত মানে দুর্বল লেখার সংখ্যা বহু। আমরা নবপ্রভাতে নতুনদের কথা ভেবে বেশ কিছু দুর্বল লেখাও রাখি। কিন্তু সবসময় একই লোকের দুর্বল লেখা প্রকাশ করা অনুচিত বলে মনে করি। শেষ পর্যন্ত ৯৯ জনের লেখা রাখা গেল। যাদের লেখা প্রকাশিত হল না, তারা লেখাগুলি অন্য যেখানে খুশি পাঠাতে পারেন। বিশেষ কারণে এই সংখ্যার মুদ্রিত সংস্করণ প্রকাশিত হচ্ছে না। আমরা দুঃখিত। তবে মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি শীঘ্রই আসছে। সঙ্গে থাকুন। সকলকে উৎসবমুখর বর্ণময় শুভেচ্ছাসহ— —নিরাশাহরণ নস্কর, সম্পাদক, নবপ্রভাত। অনুরোধ : প্রকাশিত লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন, ছবি/স্ক্রীনশট নয়।  == সূচিপত্র == পড়া-লেখার ইতিহাস অনুসন্ধান।। তপন তরফদার উৎসব : মানুষের চিরন্তন আত্মপ্রকাশ।। কৃশানু ব্যানার্জি বাংলা : সভ্যতা ও সংস্কৃতির জন্মভূমি।। শ্যামল হুদাতী সমুদ্র আর অস্তিত্ব ।। সুব্রত চৌধুরী রাজা ছিলেন জুবিন গর্গ ।। গঙ্গা 'অনু'   আদ্যাশক্তি মহামায়ার বাংলা বারো মাসের বারো রূপ ।। অর্হণ জানা মেধাদাদুর আসর ।। রণেশ রায় বৈজ্ঞানিক মা...

বস্তু, চেতনা এবং কবি ।। সজল চক্রবর্তী

বস্তু, চেতনা এবং  কবি সজল চক্রবর্তী  "যেখানে পৌঁছায় না রবি,, সেখানে পৌঁছে যান কবি।" এই ছোট্ট কবিতা টি অনেক পুরনো  এবং বহু পরিচিত, তথাপি এর তাৎপর্য এখনো হারায় নি। তবে, কথা হ'চ্ছে -আমরা তো  রবি-কবিকে একত্রেই পেয়ে যাই আমাদের ঋষি-প্রতিম কবি রবীন্দ্রনাথের মধ্যে। আর তখনই জেনে যাই উপরোক্ত ছোট কবিতার প্রণিধানযোগ্যতা ।  ... এবার শুনে নেয়া যাক, ঋষি-প্রতিম কবির মুখ নিঃসৃত বাণী:- "তোমার অসীমে প্রাণমন লয়ে যত দূরে আমি যাই ...." অর্থাৎ আমাদের প্রিয়তম কবি অনায়াসে পৌঁছে যান সৃষ্টির অসীমে , যা আমাদের পক্ষে আদৌ সম্ভব নয়। এখানে কবির চেতনা সুদূর প্রসারী! ... প্রকৃত প্রস্তাবে কবি অতিন্দ্রীয় জগতের এক নাগরিক। তাঁর কাছে তাই চেতনা বা চৈতন্যেরই প্রাধান্য। ...এখন আসছি, বস্তু এবং চেতনার মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে।  ... আমি একজন অতি সাধারন মানুষ, তাই এই ব্যাপারটাকে কবিদের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার চেষ্টা ক'রছি। তবে আমার সামান্য জ্ঞান থেকে একটা সাধারণ কথা সেরে নি'। আমরা সাধারণত ব'লে থাকি-- সূর্য পূর্বদিকে ওঠে। প্রকৃত অর্থে কি তাই ? আসলে সূর্য যেদিকে ওঠে ,আমরা  সেই দিকটাকে নামাঙ্কিত ক...

দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট ও সন্নিহিত অঞ্চলের কথ্য শব্দ, উচ্চারণ, বাগ্্ধারা ইত্যাদি ।। অরবিন্দ পুরকাইত

স্থানীয় কিছু কথ্যশব্দ, উচ্চারণ, বাগধারা ইত্যাদি  (পর্ব—সাত) অরবিন্দ পুরকাইত স্থানীয় কিছু কথ্যশব্দ, উচ্চারণ, বাগ্্ধারা ইত্যাদির সংগ্রহ প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল রামচন্দ্র নস্কর সম্পাদিত 'চর্যা' পত্রিকায়, ২০১৬ সালে। সে সংগ্রহ যায় নিজের 'গাঁ-ঘরের কথা' পুস্তকে, ১৪২৩ সনে। পরে এই ব্লগজিনেও কিছু সংগ্রহ প্রকাশিত হয় ১৪২৮ সনের আশ্বিন মাসে, পৌষ ১৪২৯-এ, আষাঢ় ১৪৩০, নববর্ষ ১৪৩১ ও কার্তিক ১৪৩১ সংখ্যায়। তার পরেও ধীরে ধীরে আরও কিছু সংগৃহীত হয়েছে, সেগুলিই এখানে রাখা হল। নিজের আগের সংগ্রহে এসে-যাওয়া শব্দ যদি এখানে এসে থাকে, তা বাড়তি বা ভিন্ন কিছু বলার প্রয়োজনেই। নিজের আগের সংগ্রহ খুব ভাল করে যে মিলিয়েছি তা নয়, পুরো সংগ্রহ একত্র করার সময় তা করা যাবে যতটা সম্ভব নিখুঁত করে। আগে আগে সংগ্রহ প্রসঙ্গে কিছু কথা বলা হয়েছে, বিশেষত প্রথম প্রকাশের সময় একটু বিশদভাবে। এখানে আর কিছু বলা নয়, কেবল সংগ্রহটাই তুলে ধরা গেল। অখেজো/অখেজে — অকেজো থেকে। আদরের তিরস্কার হিসাবেই মূলত প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। পাজি। অচিমিতি — (উচ্চারণ ওচিমিতি) আচমকা, হঠাৎ। অদীয় — প্রচুর, অজস্র। অদ্বিতীয় থেকে ক...

কবিতা ।। অরণ্যকন্যা ।। অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়

  অরণ্যকন্যা অরিন্দম চট্টোপাধ্যায় অরণ্যকন্যার দৃষ্টির ভেতর বিষাদ বিন্দু ফোঁটা ফোঁটা জলের মতো গড়িয়ে যায়, হয়ে যায় কোন নদীপথ দৃষ্টি ভেঙে ভেঙে চলে যায় কোন এক শূন্য পথে অরণ্যকন্যার হৃদয়ের ভেতর ভাঙে যতো বৃক্ষপত্র নতুন পত্র পুষ্পের খোঁজ নেই ঠোঁট জুড়ে সমুদ্রকাঁপন বুদবুদের মতো অস্ফুট হয়ে উচ্চারিত হয় কোন অক্ষর শব্দ আর তাঁর শরীর থেকে ছড়িয়ে যায় হয়ে যায় একটা অদৃশ্য কবিতা...    ================== @ অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়,  বেহালা, কলকাতা -৭০০০৬০,  

দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত ।। রণেশ রায়

দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত রণেশ রায় ভূমিকা দর্শনের ইতিহাসে বস্তু ও চেতনার সম্পর্ক মানবচিন্তার গভীরতম প্রশ্ন। অধিবিদ্যা ভাবকে মুখ্য ধরে, বস্তুকে গৌণ বলে মনে করে। বিপরীতে মার্কস ও এঙ্গেলস বলেছেন—বস্তুই মুখ্য এবং চেতনা তার প্রতিবিম্ব। মানুষ যখন প্রথম আলোর মুখ দেখেছিল, তখনই সে বিস্ময়ে প্রশ্ন করেছিল—আমি কে, কোথা থেকে এলাম, আর এই দৃশ্যমান জগতের বাইরে কিছু আছে কি? এই প্রশ্ন থেকেই জন্ম নিয়েছিল দর্শনের দুই বিপরীত স্রোত—ভাববাদ আর বস্তুবাদ। ভাববাদ বলেছিল—"ভাবই প্রথম," আর মার্কস বললেন—"না, বস্তুই প্রথম।" এই দুই প্রান্তের মাঝখানে আমি দেখি এক সেতুবন্ধন, যেখানে বস্তু, স্নায়ু ও চেতনা একে অপরকে গড়ে তোলে, আর তাদের এই ত্রিত্বের নৃত্যেই সৃষ্টি হয় জীবন ও কল্পনার জগৎ। ভাবববাদ এক সর্বশক্তিমান শক্তির কল্পনা করে যা এই বস্তুজগতের স্রষ্টা। আর এখান থেকে ধর্ম ও ধর্মীয় ভাবধারার সৃষ্টি। আমার এই প্রবন্ধে আমি মার্কসীয় দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদকে আধুনিক বৈজ্ঞানিক আলোকে বোঝার চেষ্টা করেছি। আমি দেখাবার চেষ্টা করবো কিভাবে ইন্দ্রিয় এবং স্নায়ুজগৎ বস্তু ও চেতনাকে সংযুক্ত করে এবং কল্পলোকের জন্ম দেয়...

চাঁদে জীবন ।। শমীক সমাদ্দার

চাঁদে জীবন  শমীক সমাদ্দার                           চন্দ্রযান দুরন্ত তৈরি, রকেটের উপর ভর করে চন্দ্রযান চাঁদে অবতরণ করবে। মাধ্যাকর্ষণ শক্তি পেরিয়ে মহাকাশযান চাঁদের কক্ষপথে  স্থাপন করা হয়েছে। চন্দ্রাযান চাঁদের মাটিতে পা রাখবে সময়ের কাউন্ট ডাউন চলছে। সমস্ত নিয়ন্ত্রণ স্পেসস্কাই গাবেষণা কেন্দ্র কতৃক নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে প্রযুক্তি বিজ্ঞান অতল গভীরতায় বাসা বাঁধে। পরিচয়টা দিয়ে দিলাম এই স্পেসসিপে রয়েছে তিনজন নভোচর, একজনের নাম সাইমন আর এক জনের নাম রেমন্ড, আর এদের সঙ্গে একজন মহিলা আছে তার নাম মেরিনা। চন্দ্রযান চন্দ্রপৃষ্ঠে সফলভাবে অবতরণ করেছে। চন্দযান দুরন্ত চাঁদের পূর্ব -পশ্চিম অক্ষরেখা বরাবর অবতরণ করেছে। আলো আঁধারের গভীরতায় বড় বড় পাথরের পিণ্ড, চাঁদের সার্ফেসের উপরে পাথর জল দেখা যায়। জমাট বাঁধা অক্সিজেন আর কার্বনডাই অক্সাইড। ওরা এখানে এসেছে এক রহস্য উদ্ঘাটন করতে। যে স্থানে ওরা অবতরণ করেছে সেখানে ১০ বছর আগে ওরা এসেছিলো। রুশ সরকার ওদের দেশের ছাত্র ছাত্রী কে মহাকাশে চাঁদে পাঠাতে চায়। ওরা কেন এসেছে সেটা এখনো অধরা। সাইমনের বর্...

জনপ্রিয় লেখা

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ -- "ত্রয়ী কাব্য" ------------------------------------------------------------------------------ সুনন্দ মন্ডল নবীনচন্দ্র সেন সাহিত্যে তথা বাংলা কবিতার জগতে এক অবিস্মরণীয় নাম। তিনি চট্টগ্রাম জেলার নওয়াপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ১৮৪৭ সালে তাঁর জন্ম এবং মত্যু ১৯০৯ সালে। বঙ্কিমচন্দ্র তাঁকে 'বাংলার বায়রন' বলেছেন। ‎জীবৎকালীন যুগে আত্মপ্রত্যয়ের মধ্যে জাতীয় চরিত্র আত্মস্থ করে নতুন সংস্কারে প্রয়াসী হয়ে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখেছেন।মধুসূদন-হেমচন্দ্র-নবীনচন্দ্র--এই তিন কবি বাংলা কাব্যধারায় প্রাণ সঞ্চার করেছিলেন। বিশেষত মহাকাব্য লেখার দুঃসাহস দেখিয়েছিলেন। এদিক থেকে মধুসূদন দত্ত একজন সফল মহাকাব্যিক। তাঁর 'মেঘনাদ বধ' কাব্যের মত গভীর ও ব্যঞ্জনাময় না হলেও নবীনচন্দ্র সেনের 'ত্রয়ী' কাব্য বিশেষ মর্যাদা দাবি করতেই পারে। তাছাড়া 'ত্রয়ী' কাব্যে ধর্মীয় ভাবধারার আবেগ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ‎ ‎নবীনচন্দ্র সেন বহু কাব্য লিখেছেন। যেমন- 'অবকাশরঞ্জিনী','পলাশীর যুদ্ধ', 'ক্লিওপেট্রা', 'রঙ্গমতী', 'খ্রীষ্ট', ...

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা শ্রীজিৎ জানা "সময় চলিয়া যায় নদীর স্রোতের প্রায়"। স্রোতের ধারা তার দু'প্রান্তে রেখে যায় ভাঙাগড়ার চিহ্ন। কালের দৃশ্যপটেও পরিবর্তনের ছবি অনিবার্যভাবেই চোখে পড়ে। সমাজ সময়ের ছাঁচে নিজেকে গড়ে নেয় প্রতিনিয়ত।  সেখানে মনে নেওয়ায় বাধা থাকলেও,মেনে নেওয়ার গাজোয়ারি চলে না। ফলত কাল বদলের গাণিতিক হিসেবে জীবন ও জীবিকার যে রদবদল,তাকেই বোধকরি সংগ্রাম বলা যায়। জীবন সংগ্রাম অথবা টিকে থাকার সংগ্রাম।  মানুষের জীবনযাপনের ক্ষেত্রে আজকে যা অত্যাবশ্যকীয় কাল তার বিকল্প রূপ পেতে পারে অথবা তা অনাবশ্যক হওয়াও স্বাভাবিক। সেক্ষেত্রে উক্ত বিষয়টির পরিষেবা দানকারী মানুষদের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হওয়া অস্বাভাবিক নয়। এক কালে গাঁয়ে কত ধরনের পেশার মানুষদের চোখে পোড়তো। কোন পেশা ছিল সম্বৎসরের,আবার কোন পেশা এককালীন।  সব পেশার লোকেরাই কত নিষ্ঠা ভরে গাঁয়ে  তাদের পরিষেবা দিত। বিনিময়ে সামান্য আয় হত তাদের। আর সেই আয়টুকুই ছিল  তাদের সংসার নির্বাহের একমাত্র উপায়। কালে কালান্তরে সেই সব পেশা,সেই সব সমাজবন্ধুরা হারিয়ে গ্যাছে। শুধুমাত্র তারা বেঁচে আছে অগ্রজের গল্পকথায়,আর বিভিন...

গ্রন্থ আলোচনা: শর্মিষ্ঠা দেবনাথ

প্রতিবাদ যখন অগ্নিবাণী বাংলাদেশে নারীমুক্তি ও নারী আন্দোলনের পুরোধা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ১৯৯তম জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদিত হল " আসিফা এবং.." কাব্য সংকলনটির মধ্যদিয়ে।সংকলনটির বিশেষত্ব হল,এটি উৎসর্গ করা হয়েছে নারীর সম্মান রক্ষার আন্দোলনের যোগ্যতম ব্যক্তি শহীদ শিক্ষক বরুন বিশ্বাসকে। সংকলক প্রকাশক সন্দীপ সাহু নিজে এবং বিশিষ্ট কবি সাহিত্যিকদের দিয়ে লিখিয়ে নিয়েছেন এমন কিছু কবিতা, যা শুধুমাত্র শব্দ ও ছন্দের অনুবন্ধ নয়, এক একটি অগ্নিবাণী।আসলে জীবনকে দেখার স্বাতন্ত্র‍্যে কবিরা সব সময়ই অগ্রগণ্য এবং অনন্য।যুগ ও জীবন দ্বন্দ্বের কণ্ঠস্বরকে আশ্রয় করে,একদিকে মনের প্রবল দাহ ও অন্যদিকে  নির্যাতিতা শিশুকন্যা ও নারীর প্রতি মনের গভীর আকুলতা থেকে প্রকাশ পেয়েছে "আসিফা এবং" এর  কবিতাগুলি।এক অন্ধকার সময়ের মুখোমুখি আমরা,সেই অন্ধকার আমাদের নিয়ে এসেছে সামাজিক অবক্ষয়ের শেষধাপে যেখানে নৈতিকতা,পাপবোধ,গ্লানিকে সরিয়ে রেখে, সমাজের বানানো নিয়মকে তোয়াক্কা না করে,অনায়াস দক্ষতায় ও ক্ষিপ্রতায় নিজেরই ধর্মচেতনাকে জলাঞ্জলি দিয়ে কিছু মানুষ তার পশুত্বের পরিচয় দিয়েছে ধর্ষণ ও ন...

শ্যামাপদ মালাকারের কবিতা

চোখ """"""" নদী, অরণ্য, রাতের ফালি চাঁদ- সবেই তো আমার...স্বর্ণপিঁড়িটাও!। সেদিন, শুকতারাটার গা' মাপতে গিয়ে মনে হল, --ওরা আমার চেয়েও সুখী? দেখিনা একবার গাইতি-শাবল চালিয়ে... চালালাম। জল-মাটি ভেজা একটা 'চোখ' কুড়িয়ে ফিরলাম! সেই চোখদিয়ে দেখি-- শেষ বিকেলের নিরন্ন আঁচে ঝলসানো বুকে নীড়ে ফিরছে ধূলিমাখা কত কাল পা, কি শান্তি - কি তৃষ্ণা! পাতাক্ষোয়া কোদালেরর মাথায় ঝরেপড়া ললাটের ঘামে, কারা যেন জীবন শাণ দেয়! রুক্ষঠোঁটের আবরণে এক সময় নেমে আসে শিশিরস্নাত কালনিশি-- মাঝের ব্যবধান মুছে দেয় প্রতিশ্রুতির ভীড়- - পূর্বজনমের নিদর্শনচুম্বন শেষে হেরে যায় কার মমতাজ-- ম্লান হয়ে যায় কত পিঁড়ি! ... ম্লান হয়ে যায় কত পিঁড়ি! ... ম্লা...

কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা: এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায় ।। পার্থ সারথি চক্রবর্তী

  কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা : এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায়  পার্থ সারথি চক্রবর্তী  কথায় বলে বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। রাজার শহর কোচবিহারের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা আরো অনেক বেশি। দুর্গাপূজা আর দীপাবলির মতো দু'দুটো বিরাট মাপের উৎসবের রেশ কাটতে না কাটতেই, এ শহর ভাসে রাস উৎসবের উন্মাদনায়। মদনমোহন ঠাকুর কোচবিহারের প্রাণের ঠাকুর। তাঁকে নিয়ে সবার আবেগ আর শ্রদ্ধা ও ভালবাসা এখানে বাঁধনছাড়া। এক অপূর্ব মিলনোৎসবের চেহারা নেওয়া এই উৎসব ঐতিহ্যবাহী ও ঐতিহাসিক। জন, মত, সম্প্রদায়ের উর্ধে এই উৎসবের গ্রহণযোগ্যতা। সময়ের কষ্টি পাথরে পরীক্ষিত! এক প্রাণের উৎসব, যা বহুদিন ধরেই গোটা উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ উৎসবে পর্যবসিত।কোচবিহারের এই রাস উৎসবকে কেন্দ্র করে যে মেলা হয় তাও সময়ের হাত ধরে অনেক বদলে গেছে। এসেছে আধুনিকতার ছোঁয়া! শৈশবে বাবার হাত ধরে যে মেলা দেখেছি তা চরিত্র ও আকৃতি দু'দিক থেকেই বদলে গেছে। গত পঁচিশ বছর ধরে খুব কাছে থেকে এই উৎসব ও মেলা দেখা, অনুভব করার সুযোগ হয়েছে। যা দিনদিন অভিজ্ঞতা ও প্রাপ্তির ঝুলিকে সমৃদ্ধ করে গেছে প্রতি ক্ষেত্রেই।  খুব সংক্ষেপে এই উৎসবের ইতিহাস না জানাটা কিন্তু অবিচারই ...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো,  তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) য...

মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা 2024 সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি (লেখক ও সম্পাদকীয় দপ্তরের কথোপকথন আকারে) --কী পত্রিকা? --নবপ্রভাত। --মুদ্রিত না অনলাইন? --মুদ্রিত। --কোন সংখ্যা হবে এটা? --বইমেলা 2024। --কোন কোন ধরনের লেখা থাকবে? --প্রবন্ধ-নিবন্ধ, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া। --বিশেষ কোন বিষয় আছে? --না। যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে। --শব্দ বা লাইন সংখ্যার কোন বাঁধন আছে? --না। নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো (যেমন, কবিতা 12-14 লাইনের মধ্যে, অণুগল্প কমবেশি 200/250শব্দে)। তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়। --ক'টি লেখা পাঠাতে হবে? --মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। --ফেসবুক বা অন্য কোন প্লাটফর্মে প্রকাশিত লেখা কি পাঠানো যাবে? --না। সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। --পত্রিকা কোন সময়ে প্রকাশিত হবে? --জানুয়ারি 2024-এর দ্বিতীয় সপ্তাহে। --লেখা পাঠানোর শেষতারিখ কত? -- 17 ডিসেম্বর 2023। --কীভাবে পাঠাতে হবে? --মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। --লেখার সঙ্গে কী কী দিতে হবে? --নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) --বিশেষ সতর্কতা কিছু ? --১)মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন '...

উৎসবের সৌন্দর্য: সেকালে ও একালে।। সৌরভ পুরকাইত

  উৎসবের সৌন্দর্য:  সেকালে ও একালে   সৌরভ পুরকাইত বাংলার উৎসব বাংলার প্রাণ। প্রতিদিনের জীবনযাপনের মধ্যে যখন মন ক্লান্ত হয়ে পড়ে তখন তাকে বেঁচে থাকার রসদ যোগায় এই উৎসব। কথায় বলে 'বারো মাসে তেরো পার্বণ'।মন আনন্দই চায়।তাই তাকে সজীবতা দিতে,পরিবারের,সমাজের ভালো-মন্দের কথা মাথায় রেখে মানুষ নিজেই সৃষ্টি করে নিয়েছে নানাবিধ উৎসবগুলিকে। একেবারে প্রাচীন কাল থেকে আজ পর্যন্ত মানুষ কখনোই উৎসব বিমুখ ছিল না।উৎসবই তাকে ঘর থেকে বাইরে টেনে এনেছে,চিনতে শিখিয়েছে আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার আনন্দকে। উৎসব আসলে প্রাণের সাথে প্রাণের যোগ, হৃদয়ের সাথে হৃদয়ের যোগ।রবীন্দ্রনাথ বলেছেন 'সত্য যেখানেই সুন্দর হয়ে প্রকাশ পায় সেইখানেই উৎসব'।হৃদয়ের সেই সুকোমল বৃত্তির জাগরণ যেন ফুটে ওঠা ফুলেরই মতো সত্য ও সুন্দর।এই জাগরণই উৎসব। তাই নানা কিছুর মধ্য দিয়ে,নানা উপলক্ষ্যে এই উৎসব প্রকাশ পায়। প্রাচীনকালে মানুষের হাতে না ছিল পসার, না ছিল পসরা।ছিল মনের আন্তরিকতা,মানুষকে কাছে টেনে নেবার ক্ষমতা।সেটাই ছিল উৎসবের সৌন্দর্য। তাই সেদিনের উৎসবে ক্ষুদ্র,তুচ্ছ উপকরণও প্রাণের উচ্ছ্বাসে মহৎ হয়ে উঠত।সেকালের উৎসবে লোক দেখানো ব্যাপার কিছু ...

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

বসন্তের কোকিল তুমি   বিচিত্র কুমার                      (০১) তোমার দু-আঁখির গহীন অরণ্যে একটা স্বপ্নের বহমান নদী রয়েছে, তারই রেশ ধরে আমি হেঁটে চলি অজানা বসন্তের পথে নীর উদ্দেশ্যে। সে চলার কোন শেষ সীমা নেই তাই আমার বিষণ্ণ একতারা সন্ন্যাস খুঁজে ফিরে , কবে তুমি বুঝবে অনুশ্রী মনের পর্দা খুলে একুশ বসন্ত তোমার রঙ ছিটিয়ে যাচ্ছে অচিনপুরে। এদিকে আমার দেহের প্রতিটি শিরা ধমনীতে প্রবাহিত হচ্ছে তোমার ভালোবাসার একটু উষ্ণতা পাবার জন্যে, শুধু অনুভবে তাণ্ডব উচ্ছাসিত হচ্ছে--- যেদিকে তাকাই --- ফুলে ফুলে ভ্রমর গুনগুনিয়ে উড়ে উড়ে পরে বসন্তের কোকিল গান গায় নব বসন্তে, তোমার দুই চোখে আমার একই ছায়া রয়ে যায় উতলা ভালোবাসার সীমান্তে।                 (০২)        এক রক্তাক্ত বসন্তের স্মৃতি কোন এক উতলা বসন্তের সকালে পুষ্পবনে ফুটেছিল একটি টকটকে লাল গোলাপ, তার সাথে হয়েছিলো দেখা প্রথম ফাগুনে হয়েছিল দুজনার এ জীবনের আলাপ।  তারপর প্র...

অনুভবে, অনুধ্যানে অনালোকিত কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী ।। সুপ্রিয় গঙ্গোপাধ্যায়

"এ কালে একটু লেখাপড়া জানা থাকাতে, এবং বঙ্গভাষায় অনেক গুলি পাঠ্য পুস্তক হওয়াতে কেবল পরনিন্দা করিয়া সময় কাটাইতে তাঁহাদের আবশ্যকও হয় না, প্রবৃত্তিও হয় না। …নিতান্ত সখ্যতা বা আত্মীয়তা না থাকিলে, সকল পেটের কথা খুলিয়া নিঃশ্বাস ছাড়িয়া তৃপ্তিলাভ করা, এ কালের মেয়েরা পছন্দ করেন না। তাঁহারা বইখানি, কার্পেটটুকু, নিজের স্বামী পুত্র লইয়া দিন যাপন করিতে বা একেলা থাকিতে কষ্ট বোধ করেন না।" —শরৎকুমারী চৌধুরাণীর এই লেখা (ভারতী ও বালক/ আশ্বিন কার্তিক, মাঘ/ ১২৯৮) দেখে বুঝতে অসুবিধা হয় না উনিশ শতকে নারীর লেখাপড়া শেখার উদ্দেশ্য ছিল মূলত আত্মমুক্তির জন্য। শুধু লেখাপড়া শেখা নয়, সাহিত্য সৃষ্টিতেও ছয়'এর দশক (উনিশ শতকের) থেকে নারীরা যে ধারা সূত্রপাত করেছিল তা নারীর আত্মমুক্তির পথকেই প্রসারিত করেছিল। ছয়'এর দশকের পূর্বেই ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে প্রথম ছাপার হরফে নারী রচিত কাব্য 'চিত্তবিলাসিনী' প্রকাশিত হয়। লেখেন কৃষ্ণকামিনী দাসী। ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে কবি ঠাকুরাণী দাসীর নাম উঠে আসতে থাকে, যিনি কবিতার পাশাপাশি গদ্যও লিখতেন। ঠিক সেই বছরই জন্মগ্রহণ করেন কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী, যাঁর কবিতা লেখা আত্মমুক্...

বছরের বাছাই

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৪তম সংখ্যা ।। ফাল্গুন ১৪৩১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

  এই সংখ্যায় একটি গ্রন্থ আলোচনা ও একটি ধারাবাহিক রচনা ছাড়া সব লেখাই ভাষা দিবস, মাতৃভাষা, ভাষাচেতনা ও ভাষা সমস্যা বিষয়ক রচনা। লেখাগুলি এই সংখ্যাকে অনেকটাই সমৃদ্ধ করেছে। পড়ুন। শেয়ার করুন। মতামত জানান। লেখকগণ নিজের নিজের লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন যতখুশি, যে মাধ্যমে খুশি। কিন্তু স্ক্রিনশট শেয়ার নৈব নৈব চ!  অন্য বিষয়ের লেখাগুলি আগামী সংখ্যার জন্য রইল।  সকলকে ধন্যবাদ, অভিনন্দন। ভালো থাকুন।   --সম্পাদক, নবপ্রভাত। ==  সূ  চি  প  ত্র  == প্রবন্ধ-নিবন্ধ অমর ২১শে ফেব্রুয়ারি বাঙ্গালীর বাংলা ভাষা দুর্জয় দিবস।। বটু কৃষ্ণ হালদার ভাষা শহীদদের পঁচাত্তর বছর।। অনিন্দ্য পাল একুশে ফেব্রুয়ারি : বাঙালির শ্রেষ্ঠ অশ্রুবিন্দু।। জীবনকুমার সরকার কবিগানের সাহিত্যিক ও সমাজতাত্ত্বিক মূল্য।। বারিদ বরন গুপ্ত বিপন্ন মাতৃভাষা ও সংস্কৃতি।। শ্যামল হুদাতী মায়ের দুধ আর মাতৃভাষা।। প্রদীপ কুমার দে একুশে ফেব্রুয়ারি : কিছু কথা।। বনশ্রী গোপ বাংলায় কথা বাংলায় কাজ।। চন্দন দাশগুপ্ত বিপন্ন মাতৃভাষা ও তার মুক্তির পথ।। মিঠুন মুখার্জী. হে অমর একুশে, তোমায় ভুলিনি, ভুলব না।। মহম্মদ মফিজুল ইসলা...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৭তম সংখ্যা ।। জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ মে ২০২৫

  প্রচ্ছদ চিত্র: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সূচিপত্র রবীন্দ্রনাথ এবং কয়েকজন নারী ।। অনিন্দ্য পাল পরাবাস্তববাদ ও বাংলায় জীবনানন্দের কাব্যচর্চা ।। রণেশ রায় প্রতীক্ষা ।। চন্দন দাশগুপ্ত আশ্রয় ।। সায়নী সাহা বয়স্ক শিক্ষাকেন্দ্র ।। দেবাংশু সরকার প্রণামের প্রভু ।। সুপ্রভাত মেট্যা দুর্ভাগ্যের সম্মুখ সমরে ।। সমীর কুমার দত্ত আচমকা শরৎ ।। অর্ণব সামন্ত প্রতিধ্বনি ✍️ সুবীর কুমার ঘোষ জীবন যেখানে যেমন ।। আরজু মুন জারিন বছর সীমান্তে হিসেব নিকেশ ।। রানা জামান চারটি কবিতা ।। বিবেকানন্দ নস্কর আমরা আছি ।। লালন চাঁদ চাওয়া ।। মাথুর দাস কাগজ ফুলে ।। সফিউল মল্লিক সময়ের স্রোত ।। দুর্গাদাস মিদ্যা তুমি মানুষ ।। বদরুল বোরহান দিঘার সমুদ্র ।। মাখনলাল প্রধান পুস্তক-আলোচনা ।। অরবিন্দ পুরকাইত সংযম ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত  চেনা প্রতিবেশী (প্রথম পর্ব) ।। দীপক পাল খেলার মাঠ ।। তূয়া নূর বন্ধু শ্যামলকান্তি ।। শংকর ব্রহ্ম তুমি তোমার মতো থাকলে ।। সত্যেন্দ্রনাথ বেরা গ্রীষ্মে খুবই হিংস্র রবি ।। জগবন্ধু হালদার স্বপ্ন দর্শন ✍️ পার্থ প্রতিম দাস মৌন মুখরতা ।। মুসা মন্ডল রুদ্র বৈশাখ ।। দীনেশ সরকার চিহ্নিত পদযুগ পদাঘাত ।। দেবাশীষ...

প্রচ্ছদ।। ৮৩তম সংখ্যা ।। মাঘ ১৪৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ।। প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র

  বিঃ দ্রঃ আগামী ফেব্রুয়ারি সংখ্যার জন্য ভাষা দিবসের কথা মাথায় রেখে লেখা পাঠান। email: nabapravatblog@gmail.com  সূচিপত্র ফিচার।। গোপাল ভাঁড়ের অজানা সত্য ।। লোকনাথ পাল প্রবন্ধ ।। মসুয়ার রায় পরিবার এবং বঙ্গসংস্কৃতি ।... প্রবন্ধ ।। সুধীন্দ্রনাথ দত্ত: কাব্যের দার্শনিক ও ন... কবিতায় সেতুবন্ধন (তৃতীয় অংশ) শিল্পবিপ্লবোত্তর কাল... রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর বিদ্রোহী প্রেমের কবিতা: ... কবিতা ।। এই মন ভালো নেই দিনে ।। সুপ্রভাত মেট্যা কবিতা ।। জোছনা আলোর স্বপ্ন ।। তুষার ভট্টাচাৰ্য কবিতা ।। নিঃস্ব হবো ।। লালন চাঁদ কবিতা ।। ভালোলাগা  ।। আজিজ উন নেসা  গল্প ।। স্বীকারোক্তি ।। চন্দন দাশগুপ্ত কবিতা ।। শীতের দিন ।। প্রশান্ত কুমার মন্ডল কবিতা ।। শীতকাল ।। অঙ্কিতা পাল নাসির ওয়াদেনের দুটি কবিতা ভূতের লেখা ছড়া ।। বদরুল বোরহান কবিতা ।। ব্যস্ত ।। আলাপন রায় চৌধুরী ছোটগল্প ।। লম্বুর স্বপ্নপূরণ ।। পরেশ চন্দ্র মাহাত কবিতা ।। সৎকার ।। সুমিত মোদক কবিতা।। শীত বৈচিত্র্য ।। সুমিতা চৌধুরী পুস্তক-আলোচনা ।। নিউটনের আপেল ও প্রেমিকা ।। অরবিন্... গল্প।। শান্তির পথে …...।। বন্দনা সেনগুপ্ত কবিতা ।। মা...

সূচিপত্র ।। ৮৯তম সংখ্যা ।। শ্রাবণ ১৪৩২ জুলাই ২০২৫

সূচিপত্র   প্রবন্ধ ।। বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় ।। মাখনলাল প্রধান প্রবন্ধ ।। শ্রমিকের অধিকার ।। চন্দন দাশগুপ্ত প্রবন্ধ ।। ভিনগ্রহীদের সন্ধানে ।। শ্যামল হুদাতী প্রবন্ধ ।। নারীমর্যাদা ও অধিকার ।। হিমাদ্রি শেখর দাস কবিতা ।। মশালের রং তুলি ।। তূণীর আচার্য কবিতা ।। জললিপি ।। রূপক চট্টোপাধ্যায় গুচ্ছকবিতা || শিশির আজম নিবন্ধ ।। পূনর্জন্ম ।। শংকর ব্রহ্ম মুক্তভাবনা ।। কোলাহল তো বারণ হলো ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত গল্প ।। গানের হাড় ।। শুভজিৎ দত্তগুপ্ত গল্প ।। শিকড়ের খোঁজে ।। সমীর কুমার দত্ত সুপ্রভাত মেট্যার পাঁচটি কবিতা গ্রন্থ-আলোচনা ।। আবদুস সালামের কাব্যগ্রন্থ 'অলীক রঙের বিশ্বাস'।। তৈমুর খান অণুগল্প ।। হরিবোল বুড়ো ।। সুমিত মোদক রম্যরচনা ।। গোয়েন্দা গোলাপচন্দ আর প্রেমের ভুল ঠিকানা ।। রাজদীপ মজুমদার দুটি গল্প ।। মুহাম্মদ ফজলুল হক দুটি কবিতা ।। তীর্থঙ্কর সুমিত কবিতা ।। মেঘমুক্তি ।। বন্দনা পাত্র কবিতা ।। ব্যবচ্ছিন্ন শরীর ।। কৌশিক চক্রবর্ত্তী কবিতা ।। শমনচিহ্ন ।। দীপঙ্কর সরকার কবিতা ।। ভালোবাসার দাগ ।। জয়শ্রী ব্যানার্জী কবিতা ।। ফণীমনসা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ছড়া ।। আজও যদি ।। বদ্রীন...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো,  তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) য...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮২তম সংখ্যা ।। পৌষ ১৪৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

  সূচিপত্র অন্নদাশঙ্কর রায়ের সাহিত্য: সমাজের আয়না ।। বিচিত্র কুমার প্রবন্ধ ।। বই হাতিয়ার ।। শ্যামল হুদাতী কবিতায় সংস্কৃতায়ন (দ্বিতীয় ভাগ ) ।। রণেশ রায় পুস্তক-আলোচনা ।। অরবিন্দ পুরকাইত কবিতা ।। লেগে থাকা রোদ্দুরের ঘ্রাণের মতো ।। জয়শ্রী ব্যানার্জি কবিতা ।। ভুল ।। সুপ্রভাত মেট্যা কবিতা ।। উন্মেষ ।। বিশ্বজিৎ সেনগুপ্ত কবিতা ।। গার্হস্থ্য ।। বিবেকানন্দ নস্কর একগুচ্ছ বিজয়ের কবিতা ।। বিচিত্র কুমার গল্প ।। পোষ্য ভূত ।। সমীর কুমার দত্ত কবিতা ।। আশপাশ ।। প্রতীক মিত্র কবিতা ।। মেঘ ।। তীর্থঙ্কর সুমিত অণুগল্প ।। বংশীবদনের সুখদুঃখ ।। দীনেশ সরকার কবিতা ।। গভীর রাত ।। সুনন্দ মন্ডল তিনটি কবিতা ।। সুশান্ত সেন ভালোবাসার বাসা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত অণুগল্প ।। শিক্ষকের সম্মান ।। মিঠুন মুখার্জী কবিতা।। প্রশ্ন ।। জীবন সরখেল কবিতা ।।ক্ষরিত সে পথ ।। রহিত ঘোষাল কবিতা ।। রক্ত দিয়ে কেনা ।। মুহাম্মদ মুকুল মিয়া কবিতা ।। কংক্রিট ।। আলাপন রায় চৌধুরী ছড়া ।। শীত নেমেছে ।। রঞ্জন কুমার মণ্ডল কবিতা ।। কিছু শব্দ ।। সমীর কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় কবিতা ।। শীতের নগ্নতা ।। রানা জামান কবিতা ।। পথ চলা ।। পাভেল আমান বেদ পু...

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ৮৬তম সংখ্যা ।। বৈশাখ ১৪৩২ এপ্রিল ২০২৫

সম্পাদকীয় এই সংখ্যাটি বাংলা নববর্ষ বিষয়ক সংখ্যা। নৱৰ্ষকেন্দ্রিক বহু তথ্যপূর্ণ লেখা এই সংখ্যাটিকে সমৃদ্ধ করেছে। বাংলা নববর্ষ উদযাপনের ইতিহাস, রীতিনীতি, উৎসব, পার্বন, লোকাচার, রূপান্তর বহুবিধ বিষয় প্রকাশিত হয়েছে এই সংখ্যার লেখাগুলিতে। এই সংখ্যার বাছাই কিছু লেখার সঙ্গে আগামীতে আরও কিছু লেখা সংযুক্ত করে বাংলা নববর্ষ বিষয়ক একটি মুদ্রিত সংখ্যা প্রকাশ করার ইচ্ছে রইল।  সকলকে নববর্ষের আন্তরিক শুভকামনা জানাই। উৎসবে আনন্দে থাকুন, হানাহানিতে নয়। ধর্ম-ব্যবসায়ীদের চক্রান্ত ব্যর্থ করে সহনাগরিকের পাশে থাকুন। মনে রাখুন, ধর্মকে মানুষই সৃষ্টি করেছে। ঈশ্বর আল্লা গড ইত্যাদির জন্মদাতা মানুষই। মানুষকে ভালোবাসুন। মানুষের পাশে থাকুন।  নিরাশাহরণ নস্কর  সম্পাদক, নবপ্রভাত।  সূচিপত্র প্রবন্ধ-নিবন্ধ-স্মৃতিকথা পয়লা বৈশাখ ।। সিদ্ধার্থ সিংহ নববর্ষকেন্দ্রিক মেলা, পার্বন, উত্সব, লোকাচার ।। সবিতা রায় বিশ্বাস নববর্ষ আবাহন ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে এবং বিভিন্ন দেশে ।। তুষার ভট্টাচার্য নববর্ষের সেকাল ও একাল ।। হিমাদ্রি শেখর দাস নববর্ষের হাল-হকিকৎ ।। শংকর ব্রহ্ম বোশেখি বাঙালি নাকি পোশাকি বাঙালি? ।। দিব্যেন্দু...

প্রবন্ধ ।। বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় ।। মাখনলাল প্রধান

বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় মাখনলাল প্রধান বাংলার শিল্প-সংস্কৃতির জগতে যাত্রা শিল্প তথা নাট‍্যশিল্পে মড়ক নেমে এসেছে । যাত্রা শিল্পের মড়কে শুধু কোভিড নয় তার বহুপূর্ব থেকেই অর্থনৈতিক বিপর্যয় , শিক্ষাক্ষেত্রে বন্ধ‍্যাত্ব এবং গ্ৰাম বাংলার পটপরিবর্তন শেষ পেরেক ঠুকে দিয়েছে। যাত্রা-শিল্পের লীলাভূমি ছিল গ্ৰাম বাংলা। গ্ৰামে প্রচুর যাত্রাপালা হত নানা উৎসবকে কেন্দ্র করে । জমিদারি ব‍্যবস্থা লুপ্ত হওয়ার পর গ্ৰামীণ মানুষের উদ‍্যোগে শীতলা পূজা,  কালীপূজা, দুর্গাপূজা, কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা, চড়ক ইত‍্যাদিকে উপলক্ষ‍্য করে যাত্রাপালার আয়োজন না হলে কেমন যেন ম‍্যাড়ম‍্যাড়ে লাগতো। সেই সঙ্গে কলকাতার বড়বড় কোম্পানির যাত্রাপালা ঘটা করে, টিকিট সেল করে হত মাঠে। খুব বড় মাপের খেলার মাঠ যেখানে ছিল না সেখানে ধানের মাঠ নেওয়া হত ‌। ত্রিশ-চল্লিশ হাজার মানুষ দেখতে আসত। স্পেশাল বাস পাঠাত  আয়োজক কর্তৃপক্ষ। বিনা ভাড়ায় বাসে যাতায়াত করত যাত্রার দর্শকেরা। কিন্তু বিকল্প ধানচাষ শুরু হলে জমিগুলো সময় মতো ফাঁকা পাওয়া গেল না । প্রথম দিকে ব‍্যাপকহারে ধান শুরু না হওয়ায় খুব একটা অসুবিধা হত না। বহুক্ষেত্রে  ধান কা...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। নবপ্রভাত ৮৫ ।। চৈত্র ১৪৩১ মার্চ ২০২৫

  সূচিপত্র নিবন্ধ ।। মরিয়ম মির্জাখানি: এক অনন্য গণিতসূর্য ।। ... নিবন্ধ ।। নারী দিবসে যা ভাবা উচিত ।। বিশ্বনাথ পাল প্রবন্ধ ।। প্রাচীনকাল থেকে নারীরা অবহেলিত, বঞ্চিত,... নিবন্ধ ।। আমার চোখে আদর্শ নারী ।। জয়শ্রী বন্দ্... ফিচার।। এই মুহূর্তে বাংলা সাহিত্যে নারীদের লেখালেখ... আফ্রিকার লোককথা ।। করোটিকে বিয়ে করা অবাধ্য মেয়েটি ... ছোটগল্প ।। মানবী ।। ভুবনেশ্বর মন্ডল নিবন্ধ ।। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে অন্যতম নারী মু... নিবন্ধ ।। প্রিয় মহিলা সাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবী ।। ... গল্প ।। উই ওয়ান্ট জাস্টিস ।। রবীন বসু প্রবন্ধ ।। নিপীড়িতা ।। শ্যামল হুদাতী ফিচার ।। রমণী রতন ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত প্রবন্ধ ।। নারী সমাজ : তখন-এখন ।। তপন মাইতি নিবন্ধ ।। বহমান কালের ধারায় নারী ।। দীপক পাল গল্প ।। আমার দুর্গা ।। অঞ্জনা গোড়িয়া (সাউ) গল্প ।। যোগ্য জবাব ।। সমীর কুমার দত্ত ছোটগল্প ।। আমি দুর্গাকে দেখেছি।। চন্দন দাশগুপ্ত গল্প ।। সম্পর্ক ।। গৌতম সমাজদার কবিতা।। নারী মানে ।। গোবিন্দ মোদক কবিতা।। নারী ।। সমর আচার্য্য ছড়া ।। নারী অসামান্যা ।। সৌমিত্র মজুমদার কবিতা ।। নারী দিবসে ।। বিবেকানন্দ নস্কর কবিতা ।। না...

প্রবন্ধ ।। ভিনগ্রহীদের সন্ধানে ।। শ্যামল হুদাতী

ভিনগ্রহীদের সন্ধানে  শ্যামল হুদাতী  ইতিহাসের শুরু থেকে বারবার মানুষকে একটা প্রশ্ন কুঁড়ে কুঁড়ে খায় – এই মহাবিশ্বে আমরা কি একা? পৃথিবীর মতো আরও গ্রহ রয়েছে, যেখানে মানুষের মতো বুদ্ধিমান প্রাণীরা বাস করে – এই সম্ভাবনা বরাবর মানুষকে মুগ্ধ করেছে। আমাদের প্রত্যেকের জীবনের কখনও না কখনও এই ভাবনা এসেছে। দীর্ঘ কয়েক দশকের গবেষণার পরও, এই বিষয়ে কোনও নিশ্চয়তা দিতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। জেমস ওয়েব মহাকাশ টেলিস্কোপ, বহু দূরের এমন কিছু গ্রহের সন্ধান দিয়েছে, যেগুলিতে প্রাণ থাকতেই পারে। তবে, নিশ্চিত কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে, আমেরিকার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাম্প্রতিক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, ভিনগ্রহীদের খুঁজতে বহু দূরে যাওয়ার কোনও দরকার নেই। তারা এই পৃথিবীতেই মানুষের ছদ্মবেশে মানুষের মধ্যেই বসবাস করতে পারে। আমরা ভিনগ্রহীদের যেমন কল্পনা করি, এরা তার থেকে আলাদা। এরা অনেকটাই, দেবদূতদের মতো। মানব জগতের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক প্রযুক্তিগত নয়, বরং জাদুকরি। মহাকাশে সৌরজগতের গ্রহ পৃথিবী ছাড়া অন্য কোথায় প্রাণ রয়েছে কি না তা নিয়ে চলছে বিস্তর গবেষণা। একই সঙ্গে পৃথিবী ছাড়া অন্য কোনো গ্রহে মানুষ বসবাস ক...

মাসের বাছাই

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬

  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠালে  অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে হলে ভালো। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # ...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯২তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩২ অক্টোবর ২০২৫

—: সম্পাদকীয় দপ্তর থেকে :— এই সংখ্যার জন্য লেখা এসেছিল প্রায় ১৮০টা। কিন্তু গুণগত মানে দুর্বল লেখার সংখ্যা বহু। আমরা নবপ্রভাতে নতুনদের কথা ভেবে বেশ কিছু দুর্বল লেখাও রাখি। কিন্তু সবসময় একই লোকের দুর্বল লেখা প্রকাশ করা অনুচিত বলে মনে করি। শেষ পর্যন্ত ৯৯ জনের লেখা রাখা গেল। যাদের লেখা প্রকাশিত হল না, তারা লেখাগুলি অন্য যেখানে খুশি পাঠাতে পারেন। বিশেষ কারণে এই সংখ্যার মুদ্রিত সংস্করণ প্রকাশিত হচ্ছে না। আমরা দুঃখিত। তবে মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি শীঘ্রই আসছে। সঙ্গে থাকুন। সকলকে উৎসবমুখর বর্ণময় শুভেচ্ছাসহ— —নিরাশাহরণ নস্কর, সম্পাদক, নবপ্রভাত। অনুরোধ : প্রকাশিত লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন, ছবি/স্ক্রীনশট নয়।  == সূচিপত্র == পড়া-লেখার ইতিহাস অনুসন্ধান।। তপন তরফদার উৎসব : মানুষের চিরন্তন আত্মপ্রকাশ।। কৃশানু ব্যানার্জি বাংলা : সভ্যতা ও সংস্কৃতির জন্মভূমি।। শ্যামল হুদাতী সমুদ্র আর অস্তিত্ব ।। সুব্রত চৌধুরী রাজা ছিলেন জুবিন গর্গ ।। গঙ্গা 'অনু'   আদ্যাশক্তি মহামায়ার বাংলা বারো মাসের বারো রূপ ।। অর্হণ জানা মেধাদাদুর আসর ।। রণেশ রায় বৈজ্ঞানিক মা...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯৩তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩২ নভেম্বর ২০২৫

সূচিপত্র বস্তু, চেতনা এবং কবি ।। সজল চক্রবর্তী দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত ।। রণেশ রায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট ও সন্নিহিত অঞ্চলের কথ্য শব্দ ।। অরবিন্দ পুরকাইত চাঁদে জীবন ।। শমীক সমাদ্দার অসমাপ্তি ।। মহুয়া হুই গ্যালাক্সির শব্দে ।। জাসমিনা খাতুন তিনটি কবিতা ।। দিবাকর সেন অপূর্ণতার শেষ অধ্যায় ।। সুপ্রিয় সাহা হাফ ডজন ছড়া ।। স্বপনকুমার পাহাড়ী স্বাপ্নিক অমলের ঘুৃম ।। সঞ্জয় দেওয়ান দুটি কবিতা ।। সৌমিত্র উপাধ্যায় পথ চলতি ✍️পার্থ প্রতিম দাস হেমন্তের বিষাদ ছুঁয়ে ।। শক্তিপদ পাঠক রাই আর বাবা ।। অদিতি চ্যাটার্জি স্থিতিশীল ।। রঞ্জিত মুখোপাধ্যায় হৃদয়ের শূন্য কোড ।। লিপিকা পিঙ্কি দে অমানিশা ।। সৌভিক মুখার্জী দৃষ্টিগত ।। শামীম নওরোজ জ্যান্ত ভূতের গপ্পো ।। পার্থ সারথি চট্টোপাধ্যায় ধুতরা ফুলের ঘ্রাণ ।। মজনু মিয়া তারা খসার আলোয় ।। তীর্থঙ্কর সুমিত উত্তরণে অন্তরায় ।। সমীর কুমার দত্ত প্রেম মুদ্রা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ধারা ।। লালন চাঁদ অন্যের ব্যথায় ব্যথি ।। জগদীশ মণ্ডল গর্ভ ।। শাশ্বত বোস ভ্রমণ বিষয়ক স্মৃতিকথা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত শাপে বর ।। সাইফুল ইসলাম রবিবার ।। সঙ্ঘমিত্রা দাস দুটি ...

দিদৃক্ষা ।। রাজেশ কে. চক্রবর্ত্তী

  দিদৃক্ষা রাজেশ কে. চক্রবর্ত্তী 'কাল একবার দেখা হতে পারে?' দশমীর দুপুরে খাটে আধশোয়া হয়ে নিজের ফোনটা ঘাঁটছিল দেবমাল্য; হোয়াট্‌সঅ্যাপের সার্চ বক্সে  র‍্যান্ডম সিক্যুয়েন্সে ক'খানা ডিজিট ইনপুট করতেই বিস্মৃতির অতল থেকে অপ্রত্যাশিতভাবে যে নামটা স্ক্রিনের সারফেসে ভেসে উঠল, এককালে দেবমাল্যের প্রায়োরিটি লিস্টে সবথেকে ওপরে পিন্‌ করা থাকতো এই অ্যাকাউন্টটা। 'অহনা দাশগুপ্ত'—গ্রেয়েড-আউট ডিপিটার ডানদিকে, নামটার তলায় নিস্প্রভ হরফে ভেসে থাকা ওর এই লাস্ট মেসেজটা বেশ ক'বছরের পুরনো, কিন্তু দেবমাল্যর স্মৃতির প্যান্ডোরা বাক্সটি উলটে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল। আরেকবার আপাদমস্তক শিহরিত হয় সে। প্রোফাইলটা খুলে ওপরে-নীচে স্ক্রল্‌ করে দেখে, ওদের পুরনো চ্যাটগুলো তেমনি আড়ষ্ট হয়ে পড়ে আছে, ওর মেসেজগুলোর পাশে ডাবল টিকগুলো এখনও জাজ্বল্যমান সবুজে ছোপানো, যেন এইমাত্র 'সিন্‌' করে রেখেছে অহনা! যেন এখুনি আবার হাত বোলালেই অহনা এসে খানিকটা রাগত ভঙ্গিতে চ্যাট করতে লেগে যাবে। দেবমাল্যের বুক ছাপিয়ে একটা নীরব দীর্ঘশ্বাস উঠে আসে! ছুটির এই আমেজটা লক্ষ্মীপুজো অব্দি গড়াবে—অফিস খুললেই তো আবার দমফাটা ব্য...

গুচ্ছকবিতা || শিশির আজম

  গুচ্ছকবিতা || শিশির আজম হুইসেল (মুরাকামি থেকে অনুপ্রাণিত) ♦ 'গভীর রাতে একটা হুইসেল কতটা গভীর হতে পারে তুমি কল্পনাও করতে পারো না,' ছেলেটা বললো, 'আশ্চর্য ঐ হুইসেলের মতো আমি ভালবাসি তোমাকে।' কিন্তু গভীর রাতে অন্ধকারে কখনও তো ঘুম ভেঙে যায়নি মেয়েটার, কখনও ও বিচ্ছিন্ন আর একা হয়ে যায়নি। ও কীভাবে অনুভব করবে গভীর রাতে ট্রেনের হুইসেল কতটা গভীর! নিউজ এজেন্সি ♦ একসময় আমরা খবর শুনতাম এখন দেখি স্বীকার করতে হবে খবর শোনার চেয়ে দেখার আনন্দ বেশি আলাদা উত্তেজনা নিউজ এজেন্সিগুলো এব্যাপারে তৎপর আর প্রতিযোগিতাপূর্ণ কোনটা নিউজ সেটা ওরাই ঠিক করে যেটা ওদের দরকার আর সেটাই আমাদের দেখানো হয় ধারাবাহিকভাবে সুচারু জ্যামিতিকতায় বিভিন্ন পদ মিশিয়ে খাওয়ানো হয় নতুন বাস্তবতা নির্মাণে যে বাস্তবতায় জায়গা নেই আমাদের ইতিহাস অন্বেষা স্বাধীনতার সমৃদ্ধি আর স্বাধীনতার কথা বলেই ওরা আমার ক্ষেতখামার পাহাড় আর নদীর দখল নিয়েছে তাহলে টিভিতে যে হাসিখুশি প্রাণবন্ত আমাদেরকে দেখানো হয় ওরা কারা এই প্রশ্ন করো নিজের কাছে আগুন নিয়ে খেলা ♦ আজও পুকুরে ছিপ ফেলে বসবো আমি ধীরে চুপ সূর্য আমার ঘাড়ে শ্বাস ফেলবে সারারাত ঘরের ভেতর ল্যাং...

বিদায়ের স্রোত ।। চয়ন মন্ডল

  বিদায়ের স্রোত চয়ন মন্ডল "বিজয়া দশমী—আনন্দের দিন, কারও কাছে যা হয়ে উঠল চিরন্তন বিদায়।" আজ বিজয়া দশমী। শিউলি ফুলের গন্ধে ভোরটা অন্যরকম। পাড়ার প্যান্ডেলে অদ্ভুত এক কোলাহল—মায়ের বিদায় যে আজ। শঙ্খধ্বনি, ঢাকের বাজনা আর উলুধ্বনিতে গমগম করছে চারদিক। একদিকে মা দুর্গার বিদায়ের বেদনা, অন্যদিকে আনন্দ ও মিলনমেলা। সারা বছরের অপেক্ষা শেষে এই দিনটিতে প্যান্ডেল ভরে উঠেছে মানুষের ভিড়ে। সকালের পূজার্চনা শেষ হতেই শুরু হয়েছে সিঁদুর খেলা। মহিলারা মায়ের প্রতিমাকে সিঁদুর পরিয়ে একে অপরের কপালে, গালে রাঙিয়ে দিচ্ছেন। ঢাকের তালে আর শাঁখ বাজনার আবেশে ভেসে যাচ্ছে পাড়া। শুরু হয়েছে প্রতিমা বিসর্জনের প্রস্তুতি। কিন্তু এসবের মধ্যে নেই অনুরাধা। কেউ তার বা মিনির খোঁজ রাখেনি। মুখার্জিদের দোতলা বাড়ির কোণের ঘরে বসে সে চোখের জল ফেলছে। সবার বাড়িতে আলোর রোশনাই, ভোগের গন্ধ, হাসি—শুধু তাদের ঘরটিতে নিস্তব্ধতা। গতবছর এই দিনেই তো অন্যরকম ছিল সবকিছু। অনুরাধা, সুজয় আর তাদের তিন বছরের মেয়ে মিনি পাড়ার প্যান্ডেলে ঢাকের তালে নেচেছিল, সিঁদুর খেলায় রঙে ভেসেছিল। বিকেলের দিকে প্রতিমা বিসর্জনের মিছিলে শামিল ...

কবিতা ।। অরণ্যকন্যা ।। অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়

  অরণ্যকন্যা অরিন্দম চট্টোপাধ্যায় অরণ্যকন্যার দৃষ্টির ভেতর বিষাদ বিন্দু ফোঁটা ফোঁটা জলের মতো গড়িয়ে যায়, হয়ে যায় কোন নদীপথ দৃষ্টি ভেঙে ভেঙে চলে যায় কোন এক শূন্য পথে অরণ্যকন্যার হৃদয়ের ভেতর ভাঙে যতো বৃক্ষপত্র নতুন পত্র পুষ্পের খোঁজ নেই ঠোঁট জুড়ে সমুদ্রকাঁপন বুদবুদের মতো অস্ফুট হয়ে উচ্চারিত হয় কোন অক্ষর শব্দ আর তাঁর শরীর থেকে ছড়িয়ে যায় হয়ে যায় একটা অদৃশ্য কবিতা...    ================== @ অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়,  বেহালা, কলকাতা -৭০০০৬০,  

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯১তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পাদকীয় দপ্তর থেকে এই সংখ্যায়  'শিক্ষা ও শিক্ষক' বিষয়ক বেশ কিছু লেখার পাশাপাশি রয়েছে বিচিত্র বিষয়ের আরও কিছু লেখা। সব মিলিয়ে সংখ্যাটি আপনাদের সমৃদ্ধ করবে, আপ্লুত করবে — এ বিষয়ে আমরা আশাবাদী। আপনাদের মতামত অবশ্যই জানাবেন। আমরা প্রতীক্ষিত।            আগামী অক্টোবর ২০২৫ সংখ্যা 'উৎসব সংখ্যা' হিসাবে প্রকাশিত হবে। ওয়েব সংখ্যার পাশাপাশি নির্বাচিত লেখাগুলি নিয়ে একটি pdf এবং তার মুদ্রিত সংস্করণও প্রকাশিত হবে। তাই অপ্রকাশিত ভালো লেখা পাঠান। বিশেষ কোনও বিষয় নেই। প্রবন্ধ-নিবন্ধ-ফিচার ২০০০ শব্দ, গল্প ১২০০ শব্দ, অণুগল্প ৫০০ শব্দ, কবিতা-ছড়া ২৪ লাইনের মধ্যে হলে ভালো। ইমেলঃ nabapravatblog@gmail.com           বিস্তারিত বিজ্ঞপ্তি আসবে। সামাজিক মাধ্যমে আমদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন। সময় মতো সব সংবাদ পেয়ে যাবেন।  শারদ উৎসবের দিনগুলি সকলের আনন্দে কাটুক এই কামনা করি। —নিরাশাহরণ নস্কর সম্পাদক: নবপ্রভাত মোঃ ৯৪৩৩৩৯৩৫৫৬ Whatsapp Group:  https://chat.whatsapp.com/ AIpj98JKbloFSpeqMcpr6j Facebook Page:  https://www.facebook.com/ share...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো,  তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) য...

শেষ বিকেলের আলো ।। সৈকত প্রসাদ রায়

  শেষ বিকেলের আলো সৈকত প্রসাদ রায় রানাঘাট শহরের প্রান্তে ছোট্ট এক পাড়া বিশ্বাসপাড়া। সেই পাড়ার পুরোনো ভাঙাচোরা বাড়িটায় থাকেন পুষ্পরাণী ভট্টাচার্য— বয়স পঁয়ষট্টির কোঠায়। সবাই তাকে "পুষ্পদি" বলেই চেনে। একসময় প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতা করতেন, এখন অবসর নিয়েছেন। প্রতিদিন বিকেলে পুষ্পদি বারান্দায় বসে চা খান। ছোট একটা টেবিল, কয়েকটা পুরোনো বই, আর একখানা নীল কাঁচের ফুলদানি — তার নিত্যসঙ্গী। বারান্দার সামনেই একটা গলি, যেখান দিয়ে প্রতিদিনই স্কুল ছুটির পরে বাচ্চারা হইচই করে ছুটে যায়। পুষ্পদির একমাত্র ছেলে অনিরুদ্ধ — কলকাতায় চাকরি করে। ছেলেটা আধুনিক, নিজের সংসার আছে, স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ব্যস্ত। বছরে হয়তো একবার আসে, তাও কিছুক্ষণ বসে আবার চলে যায়। পুষ্পদি মুখে কিছু বলেন না, কিন্তু বুকের ভেতরে একটা কষ্ট জমে থাকে। সেই বিকেলটা অন্যরকম ছিল। আকাশে ধুলো, গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা। হঠাৎ পুষ্পদির চোখে পড়ে — রাস্তায় এক কিশোর বসে আছে। বয়স বারো-তেরোর বেশি নয়। মলিন জামা, পায়ে ছেঁড়া চটি। ছেলেটা একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে পুষ্পদির বাড়ির গেটে ঝুলে থাকা পুরোনো নোটিশবোর্ডটার দিকে, যেখানে একসময় লেখা ছিল — "পুষ্পরাণী ভ...