Skip to main content

রণেশ রায়ের প্রবন্ধ

সমাজতন্ত্র গঠন প্রক্রিয়ায় সাংস্কৃতিক বিপ্লব




রাশিয়ায় নভেম্বর বিপ্লবপূর্ব জার আমলে জারের নেতৃত্বে রাশিয়া বহুধা বিভক্ত
ছিল । বিভিন্ন জনগোষ্ঠীতে বিভক্ত মানুষজনের আত্মনিয়ন্ত্রনের অধিকার খর্ব করে
তাদের ওপর বলপ্রয়োগের মাধ্যমে রাশিয়ার প্রাধান্যবাদের অধীনে তাদের পশুর জীবন
যাপনে বাধ্য করা হয়েছিল। নাগরিকদের ভোটাধিকার স্বীকৃত ছিল না। রাশিয়ায়
পুঁজিবাদের বিকাশ ঘটলেও পশ্চিমি দেশের পুঁজিবাদের তুলনায় রাশিয়া ছিল পশ্চাপদ।
সেকানে গণতন্ত্রের বিকাশ ঘটে নি । সামাজিক জীবনে রেনেসাঁর প্রভাব পড়ে নি।
সাধারণ মানুষ ছিল দারিদ্র নিপীড়িত। মহিলাদের স্বাধিকার খর্ব হত। সেটা ছিল
জারের আমলের বহু নিন্দিত অন্ধকারাচ্ছন্ন যুগ । নভেম্বর বিপ্লব রাশিয়াকে এই
অবস্থা থেকে মুক্ত করে বৃহত্তর সোভিয়েত রাশিয়ার জন্ম দেয় যার অর্থনৈতিক
ভিত্তি সমাজতন্ত্র । এটা নেহাত বিভিন্ন ভৌগলিক অঞ্চলের যোগফল নয় । জন্ম নেয় এক
নতুন মানস যে মানস মানুষের অধিকারকে স্বীকৃতি দেয়, যে সমতার ভিত্তিতে মানুষের
জীবন জীবিকা শিক্ষা চিকিৎসা নিশ্চিত করার কথা বলে । মুষ্টিমেয় পুঁজিবাদীর
ক্ষমতার ও তার ভিত্তিতে গড়ে ওঠা তাদের রাজত্বের অবসান ঘটায় । রাজতন্ত্রের
অবসান ঘটে । রাষ্ট্র দেশের সম্পত্তির মালিক হয় । রাষ্ট্রের মালিকনাকে ও তাকে
কার্যকরী করার স্বার্থে গড়ে তোলা হয় এক সোভিয়েত যার রূপকার সোভিয়েত বিপ্লবের
নেতা ভি আই লেনিন। পশ্চিমি গণতন্ত্রের নামে পুঁজিবাদকে স্বীকৃতি দেওয়া হয় না
। বিপরীতে সর্বহারার একনায়কত্ব প্রতিষ্ঠিত হয় । এক বিকল্প শোষণমুক্ত সমাজ গড়ে
তোলার কাজ শুরু হয় । স্বাভাবিক কারণেই রাশিয়ার ধনিক সম্প্রদায় একে মেনে নেয়
না। পশ্চিমী পুঁজিবাদী সমাজ এর বিরুদ্ধে চক্রান্ত শুরু করে। এই চক্রান্ত
ব্যর্থ করে প্রথমে লেনিন ও পরে তার সুযোগ্য উত্তরাধিকারী স্টালিনের নেতৃত্বে
সমাজতান্ত্রিক রাশিয়ার প্রভূত উন্নতি হয়। সাধারণ মানুষের জীবিকা নিশ্চিত হয়।
যদিও তাদের জীবন বিলাস বহুল প্রাচুর্যময় হয়ে উঠতে পারে নি বরং ধনীদের জীবন
যাপনের মান নেমে আসে। কিন্তু সাধারণ মানুষের জীবিকা শিক্ষা চিকিৎসা নিশ্চিত হয়
। 1925 সালের পরে যখন পশ্চিমি দুনিয়া অথনৈতিক সঙ্কটে জর্জরিত, অর্থনৈতিক
মম্দা সে দেশগুলোকে গ্রাস করে, উন্নয়নের গতি স্তদ্ধ হয়ে যায় তখন সোভিয়েত
রাশিয়া উন্নয়নের গতি বাড়িয়ে রেকর্ড সৃষ্টি করে । সারা পৃথিবী জুড়ে বিকল্প এই
উন্নয়নে সাড়া পরে যায় । মানুষ নতুন দুনিয়ার স্বপ্ন দেখা শুরু করে। এই সময়কালে
সোভিয়েত রাশিয়ায় ধর্ম্ম বর্ণ নিয়ে দাঙ্গা বন্ধ হয় । জনসাধারনের স্বার্থে আইন
রচিত হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানের ফ্যাসিস্ট শাসক হিটলারের পতন ঘটে
স্টালিনের নেতৃত্বে । পশ্চমি দুনিয়াতেও সোভিয়েতের এই জয়ে সাড়া পরে যায়।
চার্চিল বা আইসিনহাওয়াররাও স্টালিনের নেতৃত্বের মৌখিক স্বীকৃতি দেন যদিও তাদের
স্টালিনের তথা সমাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে চক্রান্ত বন্ধ হয় না । মিথ্যার বন্যা
বইয়ে দিয়ে মানুষের পশ্চাদপদ চেতনাকে উস্কে দেওয়ার কাজ চলতে থাকে। পার্টি ও
জনগনের মধ্যে বিশ্বাসঘাতক ঢুকিয়ে দেওয়া হয় । সমাজতন্ত্র গঠনের পাশাপাশি তার
বিরোধী শক্তির প্ররোচনায় সমাজতন্ত্র ধ্বংসের কাজ চলতে থাকে । শেষ পর্যন্ত
চক্রান্তকারীরা জয়ী হয় । ইতিমধ্যে চিনেও মাওসেতুঙের নেতৃত্বে জনগণতান্ত্রিক
বিপ্লব সম্পন্ন হ্য় । সেখানেও সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি স্বার্থকতার সঙ্গে গড়ে
ওঠে । কিন্তু পরে সোভিয়েতের মত চিনও তেঙসিয়াও পিংয়ের নেতৃত্বে পুঁজিবাদের পথ
ধরে। এভাবে সমাজতন্ত্রের পশ্চাদঅপসারণের সঠিক কারণ খুঁজতে গেলে বিপ্লবের পরে
সমাজতান্ত্রিক গঠনের সঙ্গে সঙ্গে সঙ্গে সাংস্কৃতিক বিপ্লবের প্রয়োজন কেন
সেটাও বুঝতে হয়। সেটা লেনিন ষ্টালিন মাও সবাই বুঝেছিলেন। বিপ্লবের আদর্শে
বিশ্বাসী ও সেই কাজে নিয়োজিত মানুষকেও আজ সেটা বুঝতে। নভেম্বর বিপ্লবের
তাৎপর্য বুঝতে গেলে এটাও বোঝা অবশ্য কর্তব্য। নভেম্বর বিপ্লব মানে নেহাত একটা
বিকল্প অর্থনীতি ও তার সঙ্গে রাষ্ট্রিয় ব্যবস্থা গড়ে তোলা নয় তার সঙ্গে উন্নত
মানবমুখী সংস্কৃতি সম্পন্ন মানুষ গড়ে তোলা যে সমাজতন্ত্রকে রক্ষা করবে তার
জীবনযাপনের মধ্যে দিয়ে ।

মাওসেতুঙের নেতৃত্বে সমাজতান্ত্রিক চিনে ষাটের দশকে সমাজতন্ত্র গঠন প্রক্রিয়ায়
সাংস্কৃতিক বিপ্লব কথাটা ব্যাপকতা ও জনপ্রিয়তা লাভ করলেও কথাটা সমাজতান্ত্রিক
সোভিয়েত গঠনতন্ত্রের আমলেও বিশেষ তাৎপর্য বহন করতো। আর মানব সমাজের বিকাশের
বিভিন্ন স্তরে অর্থনৈতিক বিপ্লবের সঙ্গে সঙ্গে রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক জগতে
বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটে। সেদিক থেকে সাংস্কৃতিক বিপ্লব একটি বহমানতা, ধারাবাহিক
বিপ্লবী অগ্রগমন যা ঘটে চলেছে আদিম সমাজকাল থেকে। আজও তা বহমান। অর্থনৈতিক
কাঠামোয় পরিবর্তনের সঙ্গে উপরিকাঠামোয় এই পরিবর্তন অর্থনৈতিক পরিবর্তনকে
অনুসরণ করে। সমাজতন্ত্র আবির্ভাবের আগে বিপ্লবী পরিবর্তনগুলো প্রথমে অর্থনীতির
ভিতে পরিবর্তন আনে। সেখানে বিপ্লব ঘটলেও শোষণ ব্যবস্থা অন্যভাবে টিকে থাকে
একটা স্তরে নতুন অর্থনীতির বিকাশের পর তাকে স্থায়িত্বের তাগিদে রাষ্ট্রক্ষমতা
দখলের মাধ্যমে বিপ্লব সম্পন্ন করা হয়। নতুন অর্থনীতির আধারে যেমন রাষ্ট্র
ক্ষমতা দখলের কাজ সম্পন্ন হয় তেমনি সংস্কৃতির জগতেও এক বিপ্লবী পরিবর্তন
অনিবার্য হয়ে ওঠে। এই প্রেক্ষাপটে আমরা বুর্জোয়া বিপ্লবের প্রক্রিয়াটি আলোচনার
মধ্যে দিয়ে আমাদের আলোচনায় ঢুকতে পারি ।

কম্যুনিষ্ট ইস্তাহারের লেখক কার্ল মার্ক্স ও ফ্রেডরিক এঙ্গেলস লেখেন:

" মানব সভ্যতার ইতিহাসে বুর্জোয়া শ্রেণী খুবই বিপ্লবী ভূমিকা পালন করেছে
-------- উৎপাদনের উপকরণের অবিরাম বিপ্লবী পরিবর্তন না ঘটিয়ে এবং তার সঙ্গে
সঙ্গে উৎপাদন সম্পর্ক ও সমগ্র সমাজ-সম্পর্কে বিপ্লবী বদল না ঘটিয়ে বুর্জোয়া
শ্রেণী বাঁচতে পারে না। "

সমাজ বিবর্তনের একটা স্তরে পুঁজিবাদের ঊষালগ্নে বুর্জোয়াশ্রেণীর প্রগতিশীল
চরিত্র একটা ঐতিহাসিক অনিবার্যতা। এই মূল্যায়ণ ধরে অনেকে পুঁজিবাদকে একটা
শাশ্বত অপরিবর্তনীয় প্রগতিশীল ব্যবস্থা বলে চিহ্নিত করেন। এর কোন বিকল্প থাকতে
পারে বলে ভাবতে পারেন না। এরা সমাজ বিকাশের নিয়মকে অস্বীকার করেন। বিকাশের
নিয়মে বস্তুর অন্তর্নিহিত দ্বন্দ্ব ও ঐক্যের বিষয়টা উপলব্ধি করেন না। বোঝেন
না বা বোঝার চেষ্টা করেন না যে একটা ব্যবস্থা তার ভ্রুণ অবস্থা থেকে পরিণতি
পর্যন্ত বিভিন্ন স্তরের মধ্যে দিয়ে অগ্রসর হয়। সে জন্ম নেয়, বিকাশ লাভ করে এবং
বিকাশের প্রক্রিয়ায় উদ্ভূত দ্বন্দ্বের সঠিক সমাধান না পেলে শেষ পর্যন্ত ধ্বংস
হয়। এরই গর্ভে জন্ম নেয় নতুন ব্যবস্থা। আজ থেকে একশ বছর আগে রাশিয়ায় সর্বহারা
বিপ্লবের নেতা ভি আই লেনিনের নেতৃত্বে সেখানে বলশেভিক বিপ্লবের মাধ্যমে যে
সমাজতান্ত্রিক সমাজের জন্ম হয় তাই পুঁজিবাদের পতনের বাস্তবতা প্রমাণ করে।
পুঁজিবাদী ব্যবস্থার বিভিন্ন স্তর ব্যাখ্যা করে তার চূড়ান্ত স্তরে একচেটিয়ার
বিকাশকে তিনি ব্যাখ্যা করে দেখান যে পুঁজিবাদের এই স্তরটি একটি চূড়ান্ত
প্রতিক্রিশীল স্তর এবং তার অন্তর্নিহিত দ্বন্দ্বের মধ্যেই তার পতনের বীজ নিহিত
থাকে। এই স্তরে পুঁজিবাদের গর্ভেই নিহিত থাকে তার ধ্বংসের বীজ আর একই সঙ্গে এক
নতুন সম্ভাবনা। একচেটিয়া পুঁজিবাদের এই স্তরটি হল সাম্রাজ্যবাদ যা পুঁজিবাদের
সর্বোচ্চ স্তর বলে লেনিন দেখান। আজ ভারতের মত দেশে এই সাম্রাজ্যবাদ কিভাবে
চেপে বসেছে নয়া সাম্রাজ্যবাদের রূপ নিয়ে সেটা বুঝব না যদি পুঁজিবাদের সর্বোচ্চ
স্তরটাকে বুঝতে না পারি। আমরাও পুঁজিবাদকে আজ প্রগতিশীল একটা ব্যবস্থা হিসেবে
দেখে মারাত্বক ভুল করব। আজকের ভারতে বিপ্লবী অনুশীলনে বিষয়টা বিশেষ
গুরুত্বপূর্ণ।

আবির্ভাব লগ্নে পুঁজিবাদের আধারে ক্রিয়াশীল থাকে ছোট ও মাঝারি মাপের অসংখ্য
প্রতিযোগী শিল্প সংগঠন। ব্যক্তিগত একমালিকী বা অংশীদারি কারবারি। এরা গড়ে ওঠে
কৃষি ও ব্যবসায় দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত পুঁজির সাহায্যে। শিল্পপুঁজিবাদের
আবির্ভাবের অনেক আগে থেকেই বাণিজ্য পুঁজিবাদের আবির্ভাব ঘটে কৃষি, ব্যবসা,
ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পকে কেন্দ্র করে। কার্যত সামন্তবাদের গর্ভে পুঁজিবাদের এই
ভ্রুণ জন্ম নেয়। সামন্ত ব্যবস্থার গর্ভে এই ভ্রুণ কয়েকশো বছর ধরে পুষ্ট হয় ও
শেষ পর্যন্ত প্রসবিত হয়। পুঁজিবাদের জন্ম হয় সামন্ততন্ত্রের তিন পাহাড়কে
সরিয়ে। এই তিনটে পাহাড় হলো ১) রাজতন্ত্র ২) পোপতন্ত্র ও ৩) সামন্ততন্ত্র।
কয়েকশো বছরের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ বিবাদের মধ্যে দিয়ে গিয়ে বাণিজ্যবাদের স্তর
পেরিয়ে শেষ পর্যন্ত পুঁজিবাদের আবির্ভাব ঘটে। পুঁজিবাদের প্রাথমিক স্তর-টা
প্রতিযোগিতামূলক পুঁজিবাদের স্তর বলে পরিচিত। প্রাথমিক অবস্থার এই স্তরটা
একটা প্রগতিশীল স্তর যদিও এরই মধ্যে তার আগ্রাসী চেহারাটাও মার্ক্স্ এঙ্গেলস
প্রত্যক্ষ করেন। তারা বলেন :

" কালক্রমে বুর্জোয়াশ্রেণী বিশ্ববাজারকে কাজে লাগাতে গিয়ে প্রতিটি দেশেরই
উৎপাদন ও উপভোগে একটা বিশ্বজনীন চরিত্র দান করেছে। প্রতিক্রিয়াশীলদের ক্ষুব্ধ
করে তারা শিল্পের পায়ের তলা থেকে কেড়ে নিয়েছে সেই জাতীয় ভূমিকা যার ওপর
ভিত্তি করে শিল্প আগে দাঁড়িয়ে ছিল । সমস্ত সাবেকি শিল্প হয় ধ্বংস পেয়েছে নয়
প্রত্যহ পাচ্ছে। তাদের স্থানচ্যূত করছে এমন নতুন নতুন শিল্প যার প্রচলন সকল
সভ্য জাতির পক্ষেই মরাবাঁচা প্রশ্নের সামিল; এমন শিল্প যা শুধু দেশজ কাঁচামাল
নিয়ে নয় দূরতম অঞ্চল থেকে আনা কাঁচামালে কাজ করছে ; এমন শিল্প যার উৎপাদন শুধু
স্বদেশেই নয় ভূলোকের সর্বাঞ্চলেই ব্যবহৃত হচ্ছে। দেশজ উৎপন্ন যা মিটত তেমন সব
পুরানো চাহিদার বদলে দেখছি নতুন চাহিদা, যা মেটাতে দরকার সুদূর বিদেশের নানা
আবহাওয়ায় উৎপন্ন। আগেকার স্থানীয় ও জাতীয় বিচ্ছিন্নতা ও স্বপর্যাপ্তির বদলে
পাচ্ছি সর্বক্ষেত্রেই আদান প্রদান, জাতিসমূহের বিশ্বজোড়া পরস্পর নির্ভরতা।
বৈষয়িক উৎপাদনে যেমন তেমনি মনীষার ক্ষেত্রে। এক একটা জাতির মানসিকতা হয়ে পরে
সকলের সম্পত্তি। জাতিগত একপেশেমি সংকীর্ণচিত্ততা ক্রমেই অসম্ভব হয়ে পড়ে ;
অসংখ্য জাতীয় বা স্থানীয় সাহিত্য থেকে জেগে ওঠে একটা বিশ্ব সাহিত্য" (
কমুনিস্ট ম্যানুফেষ্ট)

উপরের বক্তব্যে এটা স্পষ্ট যে অর্থনীতির পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে অনেকটা
স্বত:স্ফূর্ত ভাবেই সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের সূচনা হয়ে যায়। রাষ্ট্র এই
পরিবর্তনে সহায়ক ভূমিকা পালন করলেও এই প্রক্রিয়া অনেকটা স্বতঃস্ফূর্ত হতে পারে
কারণ শোষণের সস্কৃতিটা থেকে যায় যা মানুষের মনোনে হাজার হাজার বছর ধরে গেড়ে
বসে থাকে। আত্মকেন্দ্রিকতা যার ভিত্তি, আত্মস্বার্থের দর্শন যাকে পুষ্ট করে।
তারই ছত্রছায়ায় শোষণ ব্যবস্থা টিকে থাকে। সনাতনী ভাববাদের ওপর আঘাত এলেও নতুন
রূপে যান্ত্রিক বস্তুবাদের দর্শনকে আঁকড়ে ধরে সে টিকে থাকে। ভাববাদের এক ইতর
বিশেষ রূপ হলো যান্ত্রিক বস্তুবাদ। প্রাধান্য বাদের নতুন এক দর্শন সৃষ্টি হয়
যা শোষক ও শোষিতের মধ্যে বিভাজনকে সনাতনী চিরস্থায়ী অবশ্যম্ভাবী বিভাজন বলে
মনে করে .

পুঁজিবাদের বিকাশের ধরণটা আর তার সঙ্গে আত্মকেন্দ্রিকতার চূড়ান্ত বিকাশটাকে
ধরতে না পারলে তার ভিত্তিতে গড়ে ওঠা সংস্কৃতিটা ধরতে পারব না . এর সঙ্গে যুক্ত
আজকের সাম্রাজ্যবাদের যুগের সংস্কৃতি যা গড়ে তুলেছে ভোগবাদ সমরবাদ ও তারই
পরিপূরক হিসেবে আত্মসমর্পনবাদ . একচেটিয়া পুঁজিবাদের সাংস্কৃতিক বিষয় হলো এই
বিষয় গুলো . এদের উৎখাত না করে পাল্টা সমাজতান্ত্রিক সংস্কৃতি গড়ে তুলতে না
পারলে সমাজতন্ত্র চূড়ান্ত সাফল্য অর্জন করতে পারে না . সোভিয়েত রাশিয়া ও চীনের
অভিজ্ঞতা সেটাই বলে . আজকের যুগে জনগণতান্ত্রিক বিপ্লবের লড়াইয়ের সঙ্গে সঙ্গে
ভিত্তি এলাকায় অস্থায়ী রাষ্ট্রের নেতৃত্বে সে লড়াই শুরু করে দিতে হয় .
বিপ্লবের পর এই লড়াইটার কথা ভাবা যাবে বলে বসে থাকলে চলে না . এই সাংস্কৃতিক
বিপ্লবের লড়াই নতুন মানুষ গড়ার লড়াই . পুঁজিবাদের গর্ভে পুষ্ট যুক্তিবাদী
মানুষের বিরুদ্ধে আত্মত্যাগী মানুষ গড়ার লড়াই . সাংস্কৃতিক বিপ্লবের এই
তাত্ত্বিক দিকটা বুঝতে গেলে আত্মকেন্দ্রিক যুক্তিবাদী মানুষটাকে চিনে নিতে হয়
কারণ এ লড়াই যুক্তিবাদী তথা চূড়ান্ত আত্মকেন্দ্রিক মানুষটাকে উচ্ছেদের লড়াই .
একই সঙ্গে বিপ্লবে বিশ্বাসী মানুষের নিজের বিরুদ্ধে নিজের লড়াই কারণ
যুক্তিবাদী মানুষের আত্মকেন্দ্রিক দর্শন আমাদের সবাইকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে
রেখেছে. এ অতি কঠিন লড়াই .

ধনতন্ত্রের বিকাশ ও আত্মকেন্দ্রিক যুক্তিবাদি মানুষ :

অষ্টাদশ শতকে শিল্পপুঁজিবাদের বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে যে পুঁজিবাদী রাষ্ট্রের
আবির্ভাব ঘটে তার শাসন ব্যবস্থা কি হবে কোন মননের দ্বারা অর্থনীতি পরিচালিত
হবে তা নিয়ে গবেষণা শুরু হয়, পরীক্ষা নিরীক্ষা চলে . মনে করা হয় যে রাজতন্ত্র
নয় গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা পুঁজিবাদী অর্থনীতিকে আরো মসৃণভাবে কাজ করার
সুযোগ করে দেবে. গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচনের মাধ্যমেই কেবল দেশের শাসন
তার গণভিত্তি খুঁজে পায় এমন নয়, দেশের অর্থনীতি পরিচালনার এক উপযুক্ত পরিবেশ
সৃষ্টি হয় যেখানে বাহ্যিক নিয়ন্ত্রণ নয়, ওপর থেকে চাপিয়ে দেওয়া শৃঙ্খলা নয়, এক
স্বয়ংক্রিয় নিয়ন্ত্রণমুক্ত অর্থনৈতিক পরিবেশই পারে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে
সবচেয়ে নিপুণ এক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে. এই নিয়ন্ত্রণমুক্ত অর্থনৈতিক
ব্যবস্থাই হলো বাজার ব্যবস্থা যেখানে ক্রেতা ও বিক্রেতারা সার্বভৌম উৎপাদন
ব্যবস্থা থেকে নি:সারিত বন্টন ব্যবস্থা আপনা থেকেই স্বয়ংক্রিয় বাজার ব্যবস্থার
মাধ্যমে উৎপাদনে

সাংস্কৃতিক বিপ্লব ও সমাজ বিপ্লব

কোন নিদৃষ্ট অর্থনীতির কাঠামোর ওপর গড়ে ওঠে তার সঙ্গে মানানসই একটা
সংস্কৃতি যার মৌলিক উপাদান হলো সমাজ চেতনা শিল্প সাহিত্য চলচিত্র পুজো আচার
আস্তিকতা নাস্তিকতা. এ সবই হল সংস্কৃতির অঙ্গ . এক ধরনের সমাজের অর্থনীতির
আমূল পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে তার উপযুক্ত সংস্কৃতি তৈরী হয় যে সংস্কৃতি
নিদৃষ্ট অর্থনীতিকে মদত করে . আর সমাজবোধ সমাজ চেতনার ওপর নির্ভর করে গড়ে ওঠা
সংষ্কৃতি ব্যবস্থাটাকে টিকিয়ে রাখতে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
রাজনৈতিক উপরিকাঠামো হিসেবে সামরিক রাষ্ট্রশক্তি যতটা শক্তিশালী সাংস্কৃতিক
শক্তি তথা হাতিয়ারটা তার থেকে কম শক্তিশালী নয় . সমাজ চেতনা একটা
প্রতিক্রিয়াশীল সমাজ ভাঙতে যতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে নতুন সমাজ গড়তে
ঠিক ততটাই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আর ঠিক এইজন্যই সাংস্কৃতিক বিপ্লব
ধারণাটা আমাদের কাছে এত গুরুত্বপূর্ণ ।

অষ্টাদশ শতকের দ্বিতীয় ভাগ জুড়ে সামন্ততন্ত্রের সম্পূর্ণ উচ্ছেদ ঘটিয়ে
প্রতিযোগিতামূলক পুঁজিবাদ বুর্জোয়া বিপ্লবের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয় যাকে
শিল্প বিপ্লব বলা হয়। ইংল্যান্ডে এর সূচনা হলেও সারা ইউরোপে তা ছড়িয়ে পড়ে।
শুধু অর্থনীতি নয় এর উপরিকাঠামো রাজনীতি ও সংস্কিতির জগতে এক বিপ্লব সংগঠিত
হয় যার সপ্মর্কে কার্ল মার্কস ও এঙ্গেলস বলে গেছেন বলে আমরা দেখি । মানুষের
চেতনার জগতেও এক মৌলিক পরিবর্তন আসে । অর্থনীতি ও ব্যবসায় যুক্তিবাদী মানুষ ও
তার স্বার্থ সিদ্ধির দর্শনকে রূপ দেওয়ার জন্য গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা যেমন
চালু হয় মানুষের জীবনযাপন আচার ব্যবহার শিল্পসাহিত্যে তেমনি ব্যক্তি
স্বাধীনতার কথা বলা হয় যার ওপর দাঁড়িয়ে এক নতুন সংস্কৃতি গড়ে ওঠে .যুক্তিবাদ
ধর্মীয় ভক্তিবাদের জায়গা দখল করার চেষ্টা করে । কিন্তু নতুন সমাজ যেহেতু নতুন
কায়দায় শোষণকে অব্যাহত রাখে তাই সমাজে শ্রেণীবিভাজন নতুন পদ্ধতিতে টিকে থাকে।
যে সমৃদ্ধি ও স্বাধীনতা দেখা যায় তা ধনি শোকশ্রেণী ভোগ করে । গরিবরা অনুগত
থেকে যেন নতুন শাসন ও শোষণ মেনে নেয় তার জন্য এক আনুগত্যের দর্শন চালু হয়।
আনুগত্য আর ধর্মের নামে ভক্তিবাদ যার মূল কথা । সাধারণ মানুষের জীবনযাপনে
যুক্তিবাদ পিছু হটে । প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য শিল্প জগতে প্রযুক্তির
দরকার হয়। সেইজন্য সেখানে বিজ্ঞান আর প্রযুক্তির খণ্ডিত প্রয়োগ দেখা যায় ।
সামগ্রিক সমাজজীবনকে বিজ্ঞান আর প্রযুক্তি বেষ্টন করতে পারে না । বিজ্ঞান
প্রযুক্তির অবাধ বিকাশ সত্ত্বেও তা মানবতার স্বার্থে কাজে লাগে না । মুনাফার
দর্শনের সে লেজুড় বৃত্তি করে । সমাজ জীবনে ভক্তিবাদ তথা অনুগ্রহবাদ আর তার
সঙ্গে পশ্চাদপদ রীতি নীতি চালু থাকে । সে অর্থে সাংস্কৃতিক বিপ্লব সম্পূর্ণতা
লাভ করে না । এই অসম্পূর্ণতা সত্ত্বেও বুর্জোয়া বিপ্লব ও তার সঙ্গে পুঁজিবাদ
ইতিহাসে প্রগতিশীল ভূমিকা পালন করেছে সন্দেহ নেই ।

শিল্পবিপ্লবের সঙ্গে সঙ্গে ইউরোপে রেনেসাঁ ঘটে চলে যা কার্যত সাংস্কৃতিক
বিপ্লব . এই বিপ্লব শোষণের গোড়া ধরে টানে না .শোষণটা টিকে থাকে . উৎপাদিকা
শক্তি ও উৎপাদন সম্পর্কের বৈরিতামূলক দ্বন্দ্বটা নতুন রূপ পায়. বরং শোষণটা
নতুন ও আরো তীব্র ভাবে অব্যাহত থাকে . তাও কার্ল মার্কস পুঁজিবাদকে তৎকালীন
পরিপ্রেক্ষিতে প্রগতিশীল ব্যবস্থা বলেছেন. মানব সমাজের ইতিহাসের একটা স্তরে
এটা প্রগতিশীল কারণ পুরোনো সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থায় সামন্ত তান্ত্রিক
উৎপাদন সম্পর্ক উৎপাদিকা শক্তি বিকাশে যখন অক্ষম হয়ে উঠেছিল তখন বুর্জোয়া
বিপ্লব সেই বাধা দূর করে, উৎপাদিকা শক্তির বিকাশ ঘটে. কিন্তু পুঁজিবাদের
অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে আবার উৎপাদন সম্পর্ক ও উৎপাদিকা শক্তির মধ্যে দ্বন্দ্ব
এমন এক স্তরে পৌঁছয় যার সমাধানের একমাত্র পথ আবার এক বিপ্লব. সমাজতন্ত্র গঠন .
তার সঙ্গে নতুন এক সাংস্কৃতিক বিপ্লব যা শোষণহীন শ্রেণীহীন সমাজকে মদত করে
.সেটা না হলে আবার পশ্চাদ অপসারণ কারণ আত্মকেন্দ্রিকতাকে কেন্দ্র করে শোষণের
বীজটা টিকে থাকে . এই স্তরে লড়াইটা আরো তীব্র . রাষ্ট্র টিকে থাকে যেটা কাম্য
নয়. এই সংগ্রামে জয়ী হলে সমাজ আমাদের কাঙ্খিত সাম্যবাদের স্তরে পৌঁছতে পারে
যখন রাষ্ট্র নিজেই উবে যায় .রাষ্ট্র নয় সমাজ উপকরণের মালিক হয় . এক নতুন
অর্থনীতি তার সঙ্গে নতুন মানুষকে নিয়ে এক শ্রেণীহীন সমাজ গড়ে ওঠে . পুঁজিবাদের
সংকট একে অনিবার্য করে তোলে .তবে স্বতঃস্ফূর্তভাবে এটা ঘটে না. সচেতন মানুষের
অবিরাম আত্মত্যাগের পথে এই লড়ায়ের মাধ্যমে সেই স্তরে পৌঁছতে হয়. ইতিহাসের
স্তর পরিক্রমার মধ্যে দিয়ে . দাস ব্যবস্থায় অভস্ত হয়ে যাওয়া মানুষ আজকের
স্তরের মানব সভ্যতাকে যেমন কখনো অনুমান করতে পারে নি তেমনি আজকের প্রযুক্তির
স্তরে আত্মকেন্দ্রিক ভোগবাদের স্তরে আগামী এই কাঙ্খিত সমাজকে অনুমান করা
আমাদের মত সাধারণ মানুষের পক্ষে কঠিন.লেনিন বা মাওএর মত দূরদৃষ্টি সম্পন্ন
মানুষরা ই পারেন সেটা করতে.এর জন্য দরকার কঠিন অনুশীলনের. চেতনার জগতে
যুক্তির সঞ্চয় ও বিজ্ঞান চর্চ্চার মাধ্যমে সেটা বুঝতে হয়. চেতনার সেই
মহাস্ত্রের ওপর নির্ভর করতে হয় . সেজন্য সংস্কৃত বিপ্লবকে চেতনার মহাস্ত্র
বলা চলে :

মহাস্ত্র

জমা আছে জেনো

আমাদের ভাণ্ডারে সে অস্ত্র ,

শ্রম যুক্তি মনন অভিজ্ঞতায়

গড়ে তুলেছি সেই মহা মন্ত্র

উজাড় করে দিই যা আছে যার

চিনে নাও তাকে, থেকো না

সময়ের অপেক্ষায় আর,

সে অস্ত্রে সজ্জিত তুমি আমি

ক্রুশে বিদ্ধ হয়েও আমরা বাঁচি

ত্রিশূল আমাদের বিঁধতে পারে না

আণবিক বোমা পরাস্ত সে অস্ত্রে

তলোয়ারের ধার কাটে না

আমরা যে সজ্জিত সৈনিক সে বস্ত্রে

আমি আজ বিদ্রোহী সন্ত্ৰাসবাদী

শত্রুর বুকে ত্রাস আমি

আমি আজ বিবাদী ;

বলি আমি জনে জনে

মহাস্ত্র জমা সবার ভাণ্ডারে,

সে অস্ত্র আমার আলিঙ্গনে

সে নিরব প্রেম আমার

সশস্ত্র লড়াই তার মননে ,

তার প্রেমে বলীয়ান আমি

সে আমার হাতিয়ার

কানে কানে কথা কয়

সে আমার প্রত্যয়,

যুক্তির তলোয়ারে শত্রু ছিন্ন ভিন্ন

ডরি না আর শত্রুরে

আমি শত্রুর বুঁকে এঁকে যাই পদচিহ্ন,

এসো বন্ধু হাতে হাত রাখো

চিনে নাও আমার তোমার সে মহাস্ত্র

আমাদের চেতনা আমাদের মনন

আমাদের জীবন আমাদের চলন

আমাদের বিশ্বাস

সেই মহা মন্ত্র আমার তোমার ,

সেই আমাদের শ্বাস প্রশ্বাস

সে অস্ত্রে বলীয়ান সকলে বন্ধু

শান দাও সে অস্ত্রে সবার

'পাড়ি দিতে হবে সিন্ধু '

চেতনার জগতের অস্ত্রকে শানিত করে শত্রুকে আঘাত করার কাজটা করতে হয় সাংস্কৃতিক
বিপ্লবের মাধ্যমে পূরণ আত্মকেন্দ্রিক ধ্যানধারণার ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা
সংস্কৃতির জায়গায় গড়ে তুলতে হয় সমাজতান্ত্রিক ভাবধারায় গড়ে ওঠা আত্মত্যাগের
সংস্কৃতি যা শোষণহীন অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে স্থায়ী রূপ দিতে পারে। লেনিনের
নেতৃত্বে সোভিয়েত গড়ে তুলে যৌথ স্বার্থের এক মনন গড়ে তোলার সক্রিয় চেষ্টা দেখা
যায়। সোভিয়েত রাশিয়া বলতে বিভিন্ন ভূখণ্ডের যান্ত্রিক ঐক্যকরন বোঝায় না। ধর্ম
বর্ণের উর্দ্ধে উঠে এক সোভিয়েত চেতনার উন্মেষ বোঝায় যা গড়ে ওঠে সম্পত্তির যৌথ
মালিকনা মেহনতের মর্যাদা নারী স্বাধীনতা যুক্তিবাদ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে . যে
সোভিয়েত সংবিধান তৈরী হয়েছিল তা সোভিয়েত চেতনায় পুষ্ট এক সমাজতান্ত্রিক সমাজ
গঠনের কথা বলে। এই প্রক্রিয়ায় সমাজতন্ত্রের উচ্চতর সাম্যবাদের স্তরে সমাজকে
এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালায়। 'যতটা পার দাও আর যতটুকু প্রয়োজন নাও' - এর
এক দর্শন চালু করে যার ওপর নির্ভর করে নতুন এই সাম্যবাদী সংস্কৃতি . অর্থনৈতিক
গঠনের সঙ্গে তার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এক সমাজতান্ত্রিক সংস্কৃতি গড়ে তোলার কথা
বলা হয় যেটা সম্ভব চলতি শোষণভিত্তিক আত্মস্বার্থের সংস্কৃতিকে ধ্বংস করে। এ এক
বিপ্লব, সাংস্কৃতিক বিপ্লব, যেখানেও বলপ্রয়োগ দরকার হয় কারণ বিপ্লবের পর
পরাজিত প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি তাদের আত্মস্বার্থে গড়ে ওঠা সংস্কৃতিকে হাতিয়ার
করে ফিরে আস্তে চায়।

হাজার হাজার বছর ধরে পুষ্ট হওয়া এই সংস্কৃতি পার্টি আমলা নেতা মেহনতি মানুষের
মধ্যে জেঁকে বসে থাকে। তাকে উচ্ছেদ করতে হয়। ক্রুশ্চেভ ব্রেজনেভ চীনের তেঙ
শিয়াও পিঙরা এই চিন্তার ধারক ও বাহক। এদের মাধ্যমেই লেনিন স্তালিন মাওদের
বিরুদ্ধে চক্রান্ত চলে সাম্রাজ্যবাদী পুঁজিবাদী শক্তির মদতে। রাশিয়ায় এরা
জয়লাভ করে। পার্টির অভ্যন্তর থেকেই বিপদ ঘনিয়ে আসে। সাংস্কৃতিক জগতের
দুর্বলতাকে হাতিয়ার করে রাশিয়ায় সোভিয়েতের চীনে তেঙ সিয়াও পিঙের নেতৃত্বে
প্রতিবিপ্লবী অভ্যুথান রুখতে মাও সদর দপ্তরে কামান দাগার ডাক দেন। তাতে ছাত্র
যুবকদের তরফ থেকে অভূতপূর্ব সাড়া পাওয়া যায়। চীনে সাংস্কৃতিক বিপ্লব এগিয়ে
যায়। তেঙ পিছু হটে । কিন্তু সে সময়ের অপেক্ষায় থাকে। উপযুক্ত সময় বেছে নিয়ে সে
আবার প্রতিক্রিয়াশীল শক্তিকে দলের মধ্যে সমাবেশিত করে। মাওয়ের মৃত্যুর পর সে
জয়লাভে সমর্থ হয়। চীন তার বিপ্লবী চরিত্র হারায়। এই তীব্রতম লড়াই চলার কালে
মাও নতুন মানুষ গড়ার ডাক দিয়েছিলেন। মাওয়ের শিক্ষাকে হাতিয়ার করে নকশালবাড়ির
পরবর্তী লড়াইয়ে চারু মজুমদারের নেতৃত্বে ছাত্র যুবকদের গ্রামে গিয়ে গরিব
মানুষের সঙ্গে একাত্ম হওয়ার লড়াইয়ের উদাক্ত আহবান জানানো হয় সিপিআই এম এলের
তরফ থেকে। চলতি শিক্ষা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে ছাত্র সমাজকে উদ্বুদ্ধ করা হয়।
সশস্ত্র অভ্যুত্থানের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক জগতের এই লড়াই সাংস্কৃতিক বিপ্লবের
অঙ্গ যা সম্ভব হয় চেতনার সেই মহাস্ত্রকে আরো ধারালো করে। আজ ভারতে যে সব
অঞ্চলে বিপ্লবী ঘাঁটি গড়ে তোলা হয়েছে, ছত্তিশগড়ে জনাতনা সরকারের মত ভ্রুণাকারে
হলেও বিপ্লবী সরকার গড়ে তোলা সম্ভব হয়েছে সেখানে জনযুদ্ধের অংগ হিসাবে
সাংস্কৃতিক বিপ্লবের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এ নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে।
মনে রাখতে হয় যে সাংস্কৃতিক বিপ্লবের এই লড়াই এক কঠিন লড়াই। শুধু বাইরের শত্রু
নয় ঘরের শত্রু এমন কি নিজের বিরুদ্ধে নিজের এই লড়াই চেতনার জগতের শত্রু অনেক
বেশি শক্তিশালী।
                 ------------------------------------------------------------

Comments

বিধিবদ্ধ স্বীকার্য :

লেখার বক্তব্যের দায়িত্ব লেখকের, পত্রিকার নয়। আমরা বহু মতের প্রকাশক মাত্র।

মতামত/লেখা এখানে জমা দিন

Name

Email *

Message *

সাম্প্রতিক বাছাই

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯৩তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩২ নভেম্বর ২০২৫

সূচিপত্র বস্তু, চেতনা এবং কবি ।। সজল চক্রবর্তী দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত ।। রণেশ রায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট ও সন্নিহিত অঞ্চলের কথ্য শব্দ ।। অরবিন্দ পুরকাইত চাঁদে জীবন ।। শমীক সমাদ্দার অসমাপ্তি ।। মহুয়া হুই গ্যালাক্সির শব্দে ।। জাসমিনা খাতুন তিনটি কবিতা ।। দিবাকর সেন অপূর্ণতার শেষ অধ্যায় ।। সুপ্রিয় সাহা হাফ ডজন ছড়া ।। স্বপনকুমার পাহাড়ী স্বাপ্নিক অমলের ঘুৃম ।। সঞ্জয় দেওয়ান দুটি কবিতা ।। সৌমিত্র উপাধ্যায় পথ চলতি ✍️পার্থ প্রতিম দাস হেমন্তের বিষাদ ছুঁয়ে ।। শক্তিপদ পাঠক রাই আর বাবা ।। অদিতি চ্যাটার্জি স্থিতিশীল ।। রঞ্জিত মুখোপাধ্যায় হৃদয়ের শূন্য কোড ।। লিপিকা পিঙ্কি দে অমানিশা ।। সৌভিক মুখার্জী দৃষ্টিগত ।। শামীম নওরোজ জ্যান্ত ভূতের গপ্পো ।। পার্থ সারথি চট্টোপাধ্যায় ধুতরা ফুলের ঘ্রাণ ।। মজনু মিয়া তারা খসার আলোয় ।। তীর্থঙ্কর সুমিত উত্তরণে অন্তরায় ।। সমীর কুমার দত্ত প্রেম মুদ্রা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ধারা ।। লালন চাঁদ অন্যের ব্যথায় ব্যথি ।। জগদীশ মণ্ডল গর্ভ ।। শাশ্বত বোস ভ্রমণ বিষয়ক স্মৃতিকথা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত শাপে বর ।। সাইফুল ইসলাম রবিবার ।। সঙ্ঘমিত্রা দাস দুটি ...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬

  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠালে  অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে হলে ভালো। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # ...

রেজাল্ট ।। সৈকত মাজী

রেজাল্ট সৈকত মাজী শুভ্রাংশু বিছানতে শুয়ে শুয়ে বিরক্ত হয়ে উঠল। মনে মনে নিজের শরীরটাকে আচ্ছা করে শুনিয়ে দিলো দু- চারটে কথা, দেবে নাই বা কেন, কয়দিন ধরে এতো কাঠ খড় পুড়িয়ে সব বন্ধুরা মিলে রথটা বানালো, কত কি প্ল্যান করলো, আর এই শরীরটার জন্যই তো সব ভেস্তে গেলো। মনে মনে ভাবলো একটা যা হোক শরীর হয়েছে ওর প্রতি মাসে তিন - চার বার করে জ্বর হচ্ছেই। হবি তো হ আর একটা দিন পরে হলে কি এমন ক্ষতি হতো, এই রথের দিনেই হতে হলো। ওর বিরক্তিটা বেড়ে গেলো আরো কয়েক ঘর।    " মা ও মা...মাআআআআ...." জোরে হাঁক  দিলো শুভ্রাংশু।    " কি হয়েছে বাবু? আবার জ্বরটা বেড়েছে? মাথা ব্যথা করছে?" ব্যস্ত হয়ে উঠলেন মালতিদেবী।     " ওসব কিছু নয়, ও মা বলছি এখন তো খুব কম জ্বর আছে যাই না মা একবার বাইরে, সবাই কতো ফুর্তি করছে বলো"  কাতর ভাবে বলল শুভ্রাংশু।      " না বাবু, এখনই আমরা ডাক্তারের কাছে যাব, বাবা তৈরী হয়ে গেছেন, আমরা বিকেলে তখন মেলা দেখতে যাব কেমন, এখন উঠে জামা কাপড় পরে নাও"  মালতিদেবী জামা কাপড় গুলো এগিয়ে দিলেন।      শুভ্রাংশু...

রাই আর বাবা ।। অদিতি চ্যাটার্জি

রাই আর বাবা অদিতি চ্যাটার্জি রাই-র জীবনে বেশ কিছু ভালো লাগা আছে তার মধ্যে একটা হলো সন্ধ্যার সময় তিন তলার বারান্দায় দাঁড়িয়ে রাস্তা দেখতে দেখতে কফি কাপে চুমুক দেওয়া ।" আজ যশোদা মিষ্টান্ন ভান্ডারের সামনে বেশ ভিড়,নির্ঘাত 'তেলে ভাজা ' প্রেমীরা।" আপন মনেই ভাবে ও, কিন্তু বসার ঘরে সুমন আর আঁখি এতো জোরে 'হল্লা গোল্লা ' করছে তালতলার জমজমাট রাস্তার দিকে আর মন দিতে পারছে না রাই।  পায়ে পায়ে ঘরে এসে দাঁড়ায় রাই, দেখে ক্লাস ফোরের মেয়ে এতোটা ঝগড়া করছে সুমনের সাথে , "বাপ রে, কবে এতোটা কথা শিখলো মেয়ে! কিভাবে কথা বলছে?? কোঁকড়া চুল ঝাঁঝিয়ে,গোলগাল হাত নেড়ে " ...মেয়ে কে দেখে থতমত খেয়ে যায় রাই। এদিকে আঁখি বলছে, "ধুত্ বাপী তুমি কিচ্ছু পারো না, তুতাই-র বাবা, পিসাই, মামু সবাই কত ভালো করে খেলতে পারে , না আমি তোমার সাথে খেলবো না।" কাতর চোখে মেয়ের দিকে একবার তাকিয়ে সুমন বলে ,"আচ্ছা তুই আমাকে শেখা, দ্যাখ আমি কার জন্য আলিপুরদুয়ার থেকে পনেরো দিন পর পর কলকাতায় আসি বল!"  ঐ টুকু মেয়ে কথা প্রায় না শুনেই ঘরে চলে গেল রাই-র চোখের সামনে, সুমন একবার হেসে বাথরুমের দিকে এগো...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯২তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩২ অক্টোবর ২০২৫

—: সম্পাদকীয় দপ্তর থেকে :— এই সংখ্যার জন্য লেখা এসেছিল প্রায় ১৮০টা। কিন্তু গুণগত মানে দুর্বল লেখার সংখ্যা বহু। আমরা নবপ্রভাতে নতুনদের কথা ভেবে বেশ কিছু দুর্বল লেখাও রাখি। কিন্তু সবসময় একই লোকের দুর্বল লেখা প্রকাশ করা অনুচিত বলে মনে করি। শেষ পর্যন্ত ৯৯ জনের লেখা রাখা গেল। যাদের লেখা প্রকাশিত হল না, তারা লেখাগুলি অন্য যেখানে খুশি পাঠাতে পারেন। বিশেষ কারণে এই সংখ্যার মুদ্রিত সংস্করণ প্রকাশিত হচ্ছে না। আমরা দুঃখিত। তবে মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি শীঘ্রই আসছে। সঙ্গে থাকুন। সকলকে উৎসবমুখর বর্ণময় শুভেচ্ছাসহ— —নিরাশাহরণ নস্কর, সম্পাদক, নবপ্রভাত। অনুরোধ : প্রকাশিত লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন, ছবি/স্ক্রীনশট নয়।  == সূচিপত্র == পড়া-লেখার ইতিহাস অনুসন্ধান।। তপন তরফদার উৎসব : মানুষের চিরন্তন আত্মপ্রকাশ।। কৃশানু ব্যানার্জি বাংলা : সভ্যতা ও সংস্কৃতির জন্মভূমি।। শ্যামল হুদাতী সমুদ্র আর অস্তিত্ব ।। সুব্রত চৌধুরী রাজা ছিলেন জুবিন গর্গ ।। গঙ্গা 'অনু'   আদ্যাশক্তি মহামায়ার বাংলা বারো মাসের বারো রূপ ।। অর্হণ জানা মেধাদাদুর আসর ।। রণেশ রায় বৈজ্ঞানিক মা...

বস্তু, চেতনা এবং কবি ।। সজল চক্রবর্তী

বস্তু, চেতনা এবং  কবি সজল চক্রবর্তী  "যেখানে পৌঁছায় না রবি,, সেখানে পৌঁছে যান কবি।" এই ছোট্ট কবিতা টি অনেক পুরনো  এবং বহু পরিচিত, তথাপি এর তাৎপর্য এখনো হারায় নি। তবে, কথা হ'চ্ছে -আমরা তো  রবি-কবিকে একত্রেই পেয়ে যাই আমাদের ঋষি-প্রতিম কবি রবীন্দ্রনাথের মধ্যে। আর তখনই জেনে যাই উপরোক্ত ছোট কবিতার প্রণিধানযোগ্যতা ।  ... এবার শুনে নেয়া যাক, ঋষি-প্রতিম কবির মুখ নিঃসৃত বাণী:- "তোমার অসীমে প্রাণমন লয়ে যত দূরে আমি যাই ...." অর্থাৎ আমাদের প্রিয়তম কবি অনায়াসে পৌঁছে যান সৃষ্টির অসীমে , যা আমাদের পক্ষে আদৌ সম্ভব নয়। এখানে কবির চেতনা সুদূর প্রসারী! ... প্রকৃত প্রস্তাবে কবি অতিন্দ্রীয় জগতের এক নাগরিক। তাঁর কাছে তাই চেতনা বা চৈতন্যেরই প্রাধান্য। ...এখন আসছি, বস্তু এবং চেতনার মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে।  ... আমি একজন অতি সাধারন মানুষ, তাই এই ব্যাপারটাকে কবিদের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার চেষ্টা ক'রছি। তবে আমার সামান্য জ্ঞান থেকে একটা সাধারণ কথা সেরে নি'। আমরা সাধারণত ব'লে থাকি-- সূর্য পূর্বদিকে ওঠে। প্রকৃত অর্থে কি তাই ? আসলে সূর্য যেদিকে ওঠে ,আমরা  সেই দিকটাকে নামাঙ্কিত ক...

দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট ও সন্নিহিত অঞ্চলের কথ্য শব্দ, উচ্চারণ, বাগ্্ধারা ইত্যাদি ।। অরবিন্দ পুরকাইত

স্থানীয় কিছু কথ্যশব্দ, উচ্চারণ, বাগধারা ইত্যাদি  (পর্ব—সাত) অরবিন্দ পুরকাইত স্থানীয় কিছু কথ্যশব্দ, উচ্চারণ, বাগ্্ধারা ইত্যাদির সংগ্রহ প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল রামচন্দ্র নস্কর সম্পাদিত 'চর্যা' পত্রিকায়, ২০১৬ সালে। সে সংগ্রহ যায় নিজের 'গাঁ-ঘরের কথা' পুস্তকে, ১৪২৩ সনে। পরে এই ব্লগজিনেও কিছু সংগ্রহ প্রকাশিত হয় ১৪২৮ সনের আশ্বিন মাসে, পৌষ ১৪২৯-এ, আষাঢ় ১৪৩০, নববর্ষ ১৪৩১ ও কার্তিক ১৪৩১ সংখ্যায়। তার পরেও ধীরে ধীরে আরও কিছু সংগৃহীত হয়েছে, সেগুলিই এখানে রাখা হল। নিজের আগের সংগ্রহে এসে-যাওয়া শব্দ যদি এখানে এসে থাকে, তা বাড়তি বা ভিন্ন কিছু বলার প্রয়োজনেই। নিজের আগের সংগ্রহ খুব ভাল করে যে মিলিয়েছি তা নয়, পুরো সংগ্রহ একত্র করার সময় তা করা যাবে যতটা সম্ভব নিখুঁত করে। আগে আগে সংগ্রহ প্রসঙ্গে কিছু কথা বলা হয়েছে, বিশেষত প্রথম প্রকাশের সময় একটু বিশদভাবে। এখানে আর কিছু বলা নয়, কেবল সংগ্রহটাই তুলে ধরা গেল। অখেজো/অখেজে — অকেজো থেকে। আদরের তিরস্কার হিসাবেই মূলত প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। পাজি। অচিমিতি — (উচ্চারণ ওচিমিতি) আচমকা, হঠাৎ। অদীয় — প্রচুর, অজস্র। অদ্বিতীয় থেকে ক...

দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত ।। রণেশ রায়

দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত রণেশ রায় ভূমিকা দর্শনের ইতিহাসে বস্তু ও চেতনার সম্পর্ক মানবচিন্তার গভীরতম প্রশ্ন। অধিবিদ্যা ভাবকে মুখ্য ধরে, বস্তুকে গৌণ বলে মনে করে। বিপরীতে মার্কস ও এঙ্গেলস বলেছেন—বস্তুই মুখ্য এবং চেতনা তার প্রতিবিম্ব। মানুষ যখন প্রথম আলোর মুখ দেখেছিল, তখনই সে বিস্ময়ে প্রশ্ন করেছিল—আমি কে, কোথা থেকে এলাম, আর এই দৃশ্যমান জগতের বাইরে কিছু আছে কি? এই প্রশ্ন থেকেই জন্ম নিয়েছিল দর্শনের দুই বিপরীত স্রোত—ভাববাদ আর বস্তুবাদ। ভাববাদ বলেছিল—"ভাবই প্রথম," আর মার্কস বললেন—"না, বস্তুই প্রথম।" এই দুই প্রান্তের মাঝখানে আমি দেখি এক সেতুবন্ধন, যেখানে বস্তু, স্নায়ু ও চেতনা একে অপরকে গড়ে তোলে, আর তাদের এই ত্রিত্বের নৃত্যেই সৃষ্টি হয় জীবন ও কল্পনার জগৎ। ভাবববাদ এক সর্বশক্তিমান শক্তির কল্পনা করে যা এই বস্তুজগতের স্রষ্টা। আর এখান থেকে ধর্ম ও ধর্মীয় ভাবধারার সৃষ্টি। আমার এই প্রবন্ধে আমি মার্কসীয় দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদকে আধুনিক বৈজ্ঞানিক আলোকে বোঝার চেষ্টা করেছি। আমি দেখাবার চেষ্টা করবো কিভাবে ইন্দ্রিয় এবং স্নায়ুজগৎ বস্তু ও চেতনাকে সংযুক্ত করে এবং কল্পলোকের জন্ম দেয়...

চাঁদে জীবন ।। শমীক সমাদ্দার

চাঁদে জীবন  শমীক সমাদ্দার                           চন্দ্রযান দুরন্ত তৈরি, রকেটের উপর ভর করে চন্দ্রযান চাঁদে অবতরণ করবে। মাধ্যাকর্ষণ শক্তি পেরিয়ে মহাকাশযান চাঁদের কক্ষপথে  স্থাপন করা হয়েছে। চন্দ্রাযান চাঁদের মাটিতে পা রাখবে সময়ের কাউন্ট ডাউন চলছে। সমস্ত নিয়ন্ত্রণ স্পেসস্কাই গাবেষণা কেন্দ্র কতৃক নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে প্রযুক্তি বিজ্ঞান অতল গভীরতায় বাসা বাঁধে। পরিচয়টা দিয়ে দিলাম এই স্পেসসিপে রয়েছে তিনজন নভোচর, একজনের নাম সাইমন আর এক জনের নাম রেমন্ড, আর এদের সঙ্গে একজন মহিলা আছে তার নাম মেরিনা। চন্দ্রযান চন্দ্রপৃষ্ঠে সফলভাবে অবতরণ করেছে। চন্দযান দুরন্ত চাঁদের পূর্ব -পশ্চিম অক্ষরেখা বরাবর অবতরণ করেছে। আলো আঁধারের গভীরতায় বড় বড় পাথরের পিণ্ড, চাঁদের সার্ফেসের উপরে পাথর জল দেখা যায়। জমাট বাঁধা অক্সিজেন আর কার্বনডাই অক্সাইড। ওরা এখানে এসেছে এক রহস্য উদ্ঘাটন করতে। যে স্থানে ওরা অবতরণ করেছে সেখানে ১০ বছর আগে ওরা এসেছিলো। রুশ সরকার ওদের দেশের ছাত্র ছাত্রী কে মহাকাশে চাঁদে পাঠাতে চায়। ওরা কেন এসেছে সেটা এখনো অধরা। সাইমনের বর্...

কবিতা ।। অরণ্যকন্যা ।। অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়

  অরণ্যকন্যা অরিন্দম চট্টোপাধ্যায় অরণ্যকন্যার দৃষ্টির ভেতর বিষাদ বিন্দু ফোঁটা ফোঁটা জলের মতো গড়িয়ে যায়, হয়ে যায় কোন নদীপথ দৃষ্টি ভেঙে ভেঙে চলে যায় কোন এক শূন্য পথে অরণ্যকন্যার হৃদয়ের ভেতর ভাঙে যতো বৃক্ষপত্র নতুন পত্র পুষ্পের খোঁজ নেই ঠোঁট জুড়ে সমুদ্রকাঁপন বুদবুদের মতো অস্ফুট হয়ে উচ্চারিত হয় কোন অক্ষর শব্দ আর তাঁর শরীর থেকে ছড়িয়ে যায় হয়ে যায় একটা অদৃশ্য কবিতা...    ================== @ অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়,  বেহালা, কলকাতা -৭০০০৬০,  

জনপ্রিয় লেখা

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ -- "ত্রয়ী কাব্য" ------------------------------------------------------------------------------ সুনন্দ মন্ডল নবীনচন্দ্র সেন সাহিত্যে তথা বাংলা কবিতার জগতে এক অবিস্মরণীয় নাম। তিনি চট্টগ্রাম জেলার নওয়াপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ১৮৪৭ সালে তাঁর জন্ম এবং মত্যু ১৯০৯ সালে। বঙ্কিমচন্দ্র তাঁকে 'বাংলার বায়রন' বলেছেন। ‎জীবৎকালীন যুগে আত্মপ্রত্যয়ের মধ্যে জাতীয় চরিত্র আত্মস্থ করে নতুন সংস্কারে প্রয়াসী হয়ে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখেছেন।মধুসূদন-হেমচন্দ্র-নবীনচন্দ্র--এই তিন কবি বাংলা কাব্যধারায় প্রাণ সঞ্চার করেছিলেন। বিশেষত মহাকাব্য লেখার দুঃসাহস দেখিয়েছিলেন। এদিক থেকে মধুসূদন দত্ত একজন সফল মহাকাব্যিক। তাঁর 'মেঘনাদ বধ' কাব্যের মত গভীর ও ব্যঞ্জনাময় না হলেও নবীনচন্দ্র সেনের 'ত্রয়ী' কাব্য বিশেষ মর্যাদা দাবি করতেই পারে। তাছাড়া 'ত্রয়ী' কাব্যে ধর্মীয় ভাবধারার আবেগ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ‎ ‎নবীনচন্দ্র সেন বহু কাব্য লিখেছেন। যেমন- 'অবকাশরঞ্জিনী','পলাশীর যুদ্ধ', 'ক্লিওপেট্রা', 'রঙ্গমতী', 'খ্রীষ্ট', ...

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা শ্রীজিৎ জানা "সময় চলিয়া যায় নদীর স্রোতের প্রায়"। স্রোতের ধারা তার দু'প্রান্তে রেখে যায় ভাঙাগড়ার চিহ্ন। কালের দৃশ্যপটেও পরিবর্তনের ছবি অনিবার্যভাবেই চোখে পড়ে। সমাজ সময়ের ছাঁচে নিজেকে গড়ে নেয় প্রতিনিয়ত।  সেখানে মনে নেওয়ায় বাধা থাকলেও,মেনে নেওয়ার গাজোয়ারি চলে না। ফলত কাল বদলের গাণিতিক হিসেবে জীবন ও জীবিকার যে রদবদল,তাকেই বোধকরি সংগ্রাম বলা যায়। জীবন সংগ্রাম অথবা টিকে থাকার সংগ্রাম।  মানুষের জীবনযাপনের ক্ষেত্রে আজকে যা অত্যাবশ্যকীয় কাল তার বিকল্প রূপ পেতে পারে অথবা তা অনাবশ্যক হওয়াও স্বাভাবিক। সেক্ষেত্রে উক্ত বিষয়টির পরিষেবা দানকারী মানুষদের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হওয়া অস্বাভাবিক নয়। এক কালে গাঁয়ে কত ধরনের পেশার মানুষদের চোখে পোড়তো। কোন পেশা ছিল সম্বৎসরের,আবার কোন পেশা এককালীন।  সব পেশার লোকেরাই কত নিষ্ঠা ভরে গাঁয়ে  তাদের পরিষেবা দিত। বিনিময়ে সামান্য আয় হত তাদের। আর সেই আয়টুকুই ছিল  তাদের সংসার নির্বাহের একমাত্র উপায়। কালে কালান্তরে সেই সব পেশা,সেই সব সমাজবন্ধুরা হারিয়ে গ্যাছে। শুধুমাত্র তারা বেঁচে আছে অগ্রজের গল্পকথায়,আর বিভিন...

গ্রন্থ আলোচনা: শর্মিষ্ঠা দেবনাথ

প্রতিবাদ যখন অগ্নিবাণী বাংলাদেশে নারীমুক্তি ও নারী আন্দোলনের পুরোধা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ১৯৯তম জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদিত হল " আসিফা এবং.." কাব্য সংকলনটির মধ্যদিয়ে।সংকলনটির বিশেষত্ব হল,এটি উৎসর্গ করা হয়েছে নারীর সম্মান রক্ষার আন্দোলনের যোগ্যতম ব্যক্তি শহীদ শিক্ষক বরুন বিশ্বাসকে। সংকলক প্রকাশক সন্দীপ সাহু নিজে এবং বিশিষ্ট কবি সাহিত্যিকদের দিয়ে লিখিয়ে নিয়েছেন এমন কিছু কবিতা, যা শুধুমাত্র শব্দ ও ছন্দের অনুবন্ধ নয়, এক একটি অগ্নিবাণী।আসলে জীবনকে দেখার স্বাতন্ত্র‍্যে কবিরা সব সময়ই অগ্রগণ্য এবং অনন্য।যুগ ও জীবন দ্বন্দ্বের কণ্ঠস্বরকে আশ্রয় করে,একদিকে মনের প্রবল দাহ ও অন্যদিকে  নির্যাতিতা শিশুকন্যা ও নারীর প্রতি মনের গভীর আকুলতা থেকে প্রকাশ পেয়েছে "আসিফা এবং" এর  কবিতাগুলি।এক অন্ধকার সময়ের মুখোমুখি আমরা,সেই অন্ধকার আমাদের নিয়ে এসেছে সামাজিক অবক্ষয়ের শেষধাপে যেখানে নৈতিকতা,পাপবোধ,গ্লানিকে সরিয়ে রেখে, সমাজের বানানো নিয়মকে তোয়াক্কা না করে,অনায়াস দক্ষতায় ও ক্ষিপ্রতায় নিজেরই ধর্মচেতনাকে জলাঞ্জলি দিয়ে কিছু মানুষ তার পশুত্বের পরিচয় দিয়েছে ধর্ষণ ও ন...

শ্যামাপদ মালাকারের কবিতা

চোখ """"""" নদী, অরণ্য, রাতের ফালি চাঁদ- সবেই তো আমার...স্বর্ণপিঁড়িটাও!। সেদিন, শুকতারাটার গা' মাপতে গিয়ে মনে হল, --ওরা আমার চেয়েও সুখী? দেখিনা একবার গাইতি-শাবল চালিয়ে... চালালাম। জল-মাটি ভেজা একটা 'চোখ' কুড়িয়ে ফিরলাম! সেই চোখদিয়ে দেখি-- শেষ বিকেলের নিরন্ন আঁচে ঝলসানো বুকে নীড়ে ফিরছে ধূলিমাখা কত কাল পা, কি শান্তি - কি তৃষ্ণা! পাতাক্ষোয়া কোদালেরর মাথায় ঝরেপড়া ললাটের ঘামে, কারা যেন জীবন শাণ দেয়! রুক্ষঠোঁটের আবরণে এক সময় নেমে আসে শিশিরস্নাত কালনিশি-- মাঝের ব্যবধান মুছে দেয় প্রতিশ্রুতির ভীড়- - পূর্বজনমের নিদর্শনচুম্বন শেষে হেরে যায় কার মমতাজ-- ম্লান হয়ে যায় কত পিঁড়ি! ... ম্লান হয়ে যায় কত পিঁড়ি! ... ম্লা...

কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা: এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায় ।। পার্থ সারথি চক্রবর্তী

  কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা : এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায়  পার্থ সারথি চক্রবর্তী  কথায় বলে বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। রাজার শহর কোচবিহারের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা আরো অনেক বেশি। দুর্গাপূজা আর দীপাবলির মতো দু'দুটো বিরাট মাপের উৎসবের রেশ কাটতে না কাটতেই, এ শহর ভাসে রাস উৎসবের উন্মাদনায়। মদনমোহন ঠাকুর কোচবিহারের প্রাণের ঠাকুর। তাঁকে নিয়ে সবার আবেগ আর শ্রদ্ধা ও ভালবাসা এখানে বাঁধনছাড়া। এক অপূর্ব মিলনোৎসবের চেহারা নেওয়া এই উৎসব ঐতিহ্যবাহী ও ঐতিহাসিক। জন, মত, সম্প্রদায়ের উর্ধে এই উৎসবের গ্রহণযোগ্যতা। সময়ের কষ্টি পাথরে পরীক্ষিত! এক প্রাণের উৎসব, যা বহুদিন ধরেই গোটা উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ উৎসবে পর্যবসিত।কোচবিহারের এই রাস উৎসবকে কেন্দ্র করে যে মেলা হয় তাও সময়ের হাত ধরে অনেক বদলে গেছে। এসেছে আধুনিকতার ছোঁয়া! শৈশবে বাবার হাত ধরে যে মেলা দেখেছি তা চরিত্র ও আকৃতি দু'দিক থেকেই বদলে গেছে। গত পঁচিশ বছর ধরে খুব কাছে থেকে এই উৎসব ও মেলা দেখা, অনুভব করার সুযোগ হয়েছে। যা দিনদিন অভিজ্ঞতা ও প্রাপ্তির ঝুলিকে সমৃদ্ধ করে গেছে প্রতি ক্ষেত্রেই।  খুব সংক্ষেপে এই উৎসবের ইতিহাস না জানাটা কিন্তু অবিচারই ...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো,  তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) য...

মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা 2024 সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি (লেখক ও সম্পাদকীয় দপ্তরের কথোপকথন আকারে) --কী পত্রিকা? --নবপ্রভাত। --মুদ্রিত না অনলাইন? --মুদ্রিত। --কোন সংখ্যা হবে এটা? --বইমেলা 2024। --কোন কোন ধরনের লেখা থাকবে? --প্রবন্ধ-নিবন্ধ, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া। --বিশেষ কোন বিষয় আছে? --না। যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে। --শব্দ বা লাইন সংখ্যার কোন বাঁধন আছে? --না। নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো (যেমন, কবিতা 12-14 লাইনের মধ্যে, অণুগল্প কমবেশি 200/250শব্দে)। তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়। --ক'টি লেখা পাঠাতে হবে? --মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। --ফেসবুক বা অন্য কোন প্লাটফর্মে প্রকাশিত লেখা কি পাঠানো যাবে? --না। সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। --পত্রিকা কোন সময়ে প্রকাশিত হবে? --জানুয়ারি 2024-এর দ্বিতীয় সপ্তাহে। --লেখা পাঠানোর শেষতারিখ কত? -- 17 ডিসেম্বর 2023। --কীভাবে পাঠাতে হবে? --মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। --লেখার সঙ্গে কী কী দিতে হবে? --নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) --বিশেষ সতর্কতা কিছু ? --১)মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন '...

উৎসবের সৌন্দর্য: সেকালে ও একালে।। সৌরভ পুরকাইত

  উৎসবের সৌন্দর্য:  সেকালে ও একালে   সৌরভ পুরকাইত বাংলার উৎসব বাংলার প্রাণ। প্রতিদিনের জীবনযাপনের মধ্যে যখন মন ক্লান্ত হয়ে পড়ে তখন তাকে বেঁচে থাকার রসদ যোগায় এই উৎসব। কথায় বলে 'বারো মাসে তেরো পার্বণ'।মন আনন্দই চায়।তাই তাকে সজীবতা দিতে,পরিবারের,সমাজের ভালো-মন্দের কথা মাথায় রেখে মানুষ নিজেই সৃষ্টি করে নিয়েছে নানাবিধ উৎসবগুলিকে। একেবারে প্রাচীন কাল থেকে আজ পর্যন্ত মানুষ কখনোই উৎসব বিমুখ ছিল না।উৎসবই তাকে ঘর থেকে বাইরে টেনে এনেছে,চিনতে শিখিয়েছে আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার আনন্দকে। উৎসব আসলে প্রাণের সাথে প্রাণের যোগ, হৃদয়ের সাথে হৃদয়ের যোগ।রবীন্দ্রনাথ বলেছেন 'সত্য যেখানেই সুন্দর হয়ে প্রকাশ পায় সেইখানেই উৎসব'।হৃদয়ের সেই সুকোমল বৃত্তির জাগরণ যেন ফুটে ওঠা ফুলেরই মতো সত্য ও সুন্দর।এই জাগরণই উৎসব। তাই নানা কিছুর মধ্য দিয়ে,নানা উপলক্ষ্যে এই উৎসব প্রকাশ পায়। প্রাচীনকালে মানুষের হাতে না ছিল পসার, না ছিল পসরা।ছিল মনের আন্তরিকতা,মানুষকে কাছে টেনে নেবার ক্ষমতা।সেটাই ছিল উৎসবের সৌন্দর্য। তাই সেদিনের উৎসবে ক্ষুদ্র,তুচ্ছ উপকরণও প্রাণের উচ্ছ্বাসে মহৎ হয়ে উঠত।সেকালের উৎসবে লোক দেখানো ব্যাপার কিছু ...

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

বসন্তের কোকিল তুমি   বিচিত্র কুমার                      (০১) তোমার দু-আঁখির গহীন অরণ্যে একটা স্বপ্নের বহমান নদী রয়েছে, তারই রেশ ধরে আমি হেঁটে চলি অজানা বসন্তের পথে নীর উদ্দেশ্যে। সে চলার কোন শেষ সীমা নেই তাই আমার বিষণ্ণ একতারা সন্ন্যাস খুঁজে ফিরে , কবে তুমি বুঝবে অনুশ্রী মনের পর্দা খুলে একুশ বসন্ত তোমার রঙ ছিটিয়ে যাচ্ছে অচিনপুরে। এদিকে আমার দেহের প্রতিটি শিরা ধমনীতে প্রবাহিত হচ্ছে তোমার ভালোবাসার একটু উষ্ণতা পাবার জন্যে, শুধু অনুভবে তাণ্ডব উচ্ছাসিত হচ্ছে--- যেদিকে তাকাই --- ফুলে ফুলে ভ্রমর গুনগুনিয়ে উড়ে উড়ে পরে বসন্তের কোকিল গান গায় নব বসন্তে, তোমার দুই চোখে আমার একই ছায়া রয়ে যায় উতলা ভালোবাসার সীমান্তে।                 (০২)        এক রক্তাক্ত বসন্তের স্মৃতি কোন এক উতলা বসন্তের সকালে পুষ্পবনে ফুটেছিল একটি টকটকে লাল গোলাপ, তার সাথে হয়েছিলো দেখা প্রথম ফাগুনে হয়েছিল দুজনার এ জীবনের আলাপ।  তারপর প্র...

অনুভবে, অনুধ্যানে অনালোকিত কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী ।। সুপ্রিয় গঙ্গোপাধ্যায়

"এ কালে একটু লেখাপড়া জানা থাকাতে, এবং বঙ্গভাষায় অনেক গুলি পাঠ্য পুস্তক হওয়াতে কেবল পরনিন্দা করিয়া সময় কাটাইতে তাঁহাদের আবশ্যকও হয় না, প্রবৃত্তিও হয় না। …নিতান্ত সখ্যতা বা আত্মীয়তা না থাকিলে, সকল পেটের কথা খুলিয়া নিঃশ্বাস ছাড়িয়া তৃপ্তিলাভ করা, এ কালের মেয়েরা পছন্দ করেন না। তাঁহারা বইখানি, কার্পেটটুকু, নিজের স্বামী পুত্র লইয়া দিন যাপন করিতে বা একেলা থাকিতে কষ্ট বোধ করেন না।" —শরৎকুমারী চৌধুরাণীর এই লেখা (ভারতী ও বালক/ আশ্বিন কার্তিক, মাঘ/ ১২৯৮) দেখে বুঝতে অসুবিধা হয় না উনিশ শতকে নারীর লেখাপড়া শেখার উদ্দেশ্য ছিল মূলত আত্মমুক্তির জন্য। শুধু লেখাপড়া শেখা নয়, সাহিত্য সৃষ্টিতেও ছয়'এর দশক (উনিশ শতকের) থেকে নারীরা যে ধারা সূত্রপাত করেছিল তা নারীর আত্মমুক্তির পথকেই প্রসারিত করেছিল। ছয়'এর দশকের পূর্বেই ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে প্রথম ছাপার হরফে নারী রচিত কাব্য 'চিত্তবিলাসিনী' প্রকাশিত হয়। লেখেন কৃষ্ণকামিনী দাসী। ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে কবি ঠাকুরাণী দাসীর নাম উঠে আসতে থাকে, যিনি কবিতার পাশাপাশি গদ্যও লিখতেন। ঠিক সেই বছরই জন্মগ্রহণ করেন কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী, যাঁর কবিতা লেখা আত্মমুক্...

বছরের বাছাই

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৪তম সংখ্যা ।। ফাল্গুন ১৪৩১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

  এই সংখ্যায় একটি গ্রন্থ আলোচনা ও একটি ধারাবাহিক রচনা ছাড়া সব লেখাই ভাষা দিবস, মাতৃভাষা, ভাষাচেতনা ও ভাষা সমস্যা বিষয়ক রচনা। লেখাগুলি এই সংখ্যাকে অনেকটাই সমৃদ্ধ করেছে। পড়ুন। শেয়ার করুন। মতামত জানান। লেখকগণ নিজের নিজের লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন যতখুশি, যে মাধ্যমে খুশি। কিন্তু স্ক্রিনশট শেয়ার নৈব নৈব চ!  অন্য বিষয়ের লেখাগুলি আগামী সংখ্যার জন্য রইল।  সকলকে ধন্যবাদ, অভিনন্দন। ভালো থাকুন।   --সম্পাদক, নবপ্রভাত। ==  সূ  চি  প  ত্র  == প্রবন্ধ-নিবন্ধ অমর ২১শে ফেব্রুয়ারি বাঙ্গালীর বাংলা ভাষা দুর্জয় দিবস।। বটু কৃষ্ণ হালদার ভাষা শহীদদের পঁচাত্তর বছর।। অনিন্দ্য পাল একুশে ফেব্রুয়ারি : বাঙালির শ্রেষ্ঠ অশ্রুবিন্দু।। জীবনকুমার সরকার কবিগানের সাহিত্যিক ও সমাজতাত্ত্বিক মূল্য।। বারিদ বরন গুপ্ত বিপন্ন মাতৃভাষা ও সংস্কৃতি।। শ্যামল হুদাতী মায়ের দুধ আর মাতৃভাষা।। প্রদীপ কুমার দে একুশে ফেব্রুয়ারি : কিছু কথা।। বনশ্রী গোপ বাংলায় কথা বাংলায় কাজ।। চন্দন দাশগুপ্ত বিপন্ন মাতৃভাষা ও তার মুক্তির পথ।। মিঠুন মুখার্জী. হে অমর একুশে, তোমায় ভুলিনি, ভুলব না।। মহম্মদ মফিজুল ইসলা...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৭তম সংখ্যা ।। জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ মে ২০২৫

  প্রচ্ছদ চিত্র: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সূচিপত্র রবীন্দ্রনাথ এবং কয়েকজন নারী ।। অনিন্দ্য পাল পরাবাস্তববাদ ও বাংলায় জীবনানন্দের কাব্যচর্চা ।। রণেশ রায় প্রতীক্ষা ।। চন্দন দাশগুপ্ত আশ্রয় ।। সায়নী সাহা বয়স্ক শিক্ষাকেন্দ্র ।। দেবাংশু সরকার প্রণামের প্রভু ।। সুপ্রভাত মেট্যা দুর্ভাগ্যের সম্মুখ সমরে ।। সমীর কুমার দত্ত আচমকা শরৎ ।। অর্ণব সামন্ত প্রতিধ্বনি ✍️ সুবীর কুমার ঘোষ জীবন যেখানে যেমন ।। আরজু মুন জারিন বছর সীমান্তে হিসেব নিকেশ ।। রানা জামান চারটি কবিতা ।। বিবেকানন্দ নস্কর আমরা আছি ।। লালন চাঁদ চাওয়া ।। মাথুর দাস কাগজ ফুলে ।। সফিউল মল্লিক সময়ের স্রোত ।। দুর্গাদাস মিদ্যা তুমি মানুষ ।। বদরুল বোরহান দিঘার সমুদ্র ।। মাখনলাল প্রধান পুস্তক-আলোচনা ।। অরবিন্দ পুরকাইত সংযম ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত  চেনা প্রতিবেশী (প্রথম পর্ব) ।। দীপক পাল খেলার মাঠ ।। তূয়া নূর বন্ধু শ্যামলকান্তি ।। শংকর ব্রহ্ম তুমি তোমার মতো থাকলে ।। সত্যেন্দ্রনাথ বেরা গ্রীষ্মে খুবই হিংস্র রবি ।। জগবন্ধু হালদার স্বপ্ন দর্শন ✍️ পার্থ প্রতিম দাস মৌন মুখরতা ।। মুসা মন্ডল রুদ্র বৈশাখ ।। দীনেশ সরকার চিহ্নিত পদযুগ পদাঘাত ।। দেবাশীষ...

প্রচ্ছদ।। ৮৩তম সংখ্যা ।। মাঘ ১৪৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ।। প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র

  বিঃ দ্রঃ আগামী ফেব্রুয়ারি সংখ্যার জন্য ভাষা দিবসের কথা মাথায় রেখে লেখা পাঠান। email: nabapravatblog@gmail.com  সূচিপত্র ফিচার।। গোপাল ভাঁড়ের অজানা সত্য ।। লোকনাথ পাল প্রবন্ধ ।। মসুয়ার রায় পরিবার এবং বঙ্গসংস্কৃতি ।... প্রবন্ধ ।। সুধীন্দ্রনাথ দত্ত: কাব্যের দার্শনিক ও ন... কবিতায় সেতুবন্ধন (তৃতীয় অংশ) শিল্পবিপ্লবোত্তর কাল... রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর বিদ্রোহী প্রেমের কবিতা: ... কবিতা ।। এই মন ভালো নেই দিনে ।। সুপ্রভাত মেট্যা কবিতা ।। জোছনা আলোর স্বপ্ন ।। তুষার ভট্টাচাৰ্য কবিতা ।। নিঃস্ব হবো ।। লালন চাঁদ কবিতা ।। ভালোলাগা  ।। আজিজ উন নেসা  গল্প ।। স্বীকারোক্তি ।। চন্দন দাশগুপ্ত কবিতা ।। শীতের দিন ।। প্রশান্ত কুমার মন্ডল কবিতা ।। শীতকাল ।। অঙ্কিতা পাল নাসির ওয়াদেনের দুটি কবিতা ভূতের লেখা ছড়া ।। বদরুল বোরহান কবিতা ।। ব্যস্ত ।। আলাপন রায় চৌধুরী ছোটগল্প ।। লম্বুর স্বপ্নপূরণ ।। পরেশ চন্দ্র মাহাত কবিতা ।। সৎকার ।। সুমিত মোদক কবিতা।। শীত বৈচিত্র্য ।। সুমিতা চৌধুরী পুস্তক-আলোচনা ।। নিউটনের আপেল ও প্রেমিকা ।। অরবিন্... গল্প।। শান্তির পথে …...।। বন্দনা সেনগুপ্ত কবিতা ।। মা...

সূচিপত্র ।। ৮৯তম সংখ্যা ।। শ্রাবণ ১৪৩২ জুলাই ২০২৫

সূচিপত্র   প্রবন্ধ ।। বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় ।। মাখনলাল প্রধান প্রবন্ধ ।। শ্রমিকের অধিকার ।। চন্দন দাশগুপ্ত প্রবন্ধ ।। ভিনগ্রহীদের সন্ধানে ।। শ্যামল হুদাতী প্রবন্ধ ।। নারীমর্যাদা ও অধিকার ।। হিমাদ্রি শেখর দাস কবিতা ।। মশালের রং তুলি ।। তূণীর আচার্য কবিতা ।। জললিপি ।। রূপক চট্টোপাধ্যায় গুচ্ছকবিতা || শিশির আজম নিবন্ধ ।। পূনর্জন্ম ।। শংকর ব্রহ্ম মুক্তভাবনা ।। কোলাহল তো বারণ হলো ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত গল্প ।। গানের হাড় ।। শুভজিৎ দত্তগুপ্ত গল্প ।। শিকড়ের খোঁজে ।। সমীর কুমার দত্ত সুপ্রভাত মেট্যার পাঁচটি কবিতা গ্রন্থ-আলোচনা ।। আবদুস সালামের কাব্যগ্রন্থ 'অলীক রঙের বিশ্বাস'।। তৈমুর খান অণুগল্প ।। হরিবোল বুড়ো ।। সুমিত মোদক রম্যরচনা ।। গোয়েন্দা গোলাপচন্দ আর প্রেমের ভুল ঠিকানা ।। রাজদীপ মজুমদার দুটি গল্প ।। মুহাম্মদ ফজলুল হক দুটি কবিতা ।। তীর্থঙ্কর সুমিত কবিতা ।। মেঘমুক্তি ।। বন্দনা পাত্র কবিতা ।। ব্যবচ্ছিন্ন শরীর ।। কৌশিক চক্রবর্ত্তী কবিতা ।। শমনচিহ্ন ।। দীপঙ্কর সরকার কবিতা ।। ভালোবাসার দাগ ।। জয়শ্রী ব্যানার্জী কবিতা ।। ফণীমনসা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ছড়া ।। আজও যদি ।। বদ্রীন...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো,  তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) য...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮২তম সংখ্যা ।। পৌষ ১৪৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

  সূচিপত্র অন্নদাশঙ্কর রায়ের সাহিত্য: সমাজের আয়না ।। বিচিত্র কুমার প্রবন্ধ ।। বই হাতিয়ার ।। শ্যামল হুদাতী কবিতায় সংস্কৃতায়ন (দ্বিতীয় ভাগ ) ।। রণেশ রায় পুস্তক-আলোচনা ।। অরবিন্দ পুরকাইত কবিতা ।। লেগে থাকা রোদ্দুরের ঘ্রাণের মতো ।। জয়শ্রী ব্যানার্জি কবিতা ।। ভুল ।। সুপ্রভাত মেট্যা কবিতা ।। উন্মেষ ।। বিশ্বজিৎ সেনগুপ্ত কবিতা ।। গার্হস্থ্য ।। বিবেকানন্দ নস্কর একগুচ্ছ বিজয়ের কবিতা ।। বিচিত্র কুমার গল্প ।। পোষ্য ভূত ।। সমীর কুমার দত্ত কবিতা ।। আশপাশ ।। প্রতীক মিত্র কবিতা ।। মেঘ ।। তীর্থঙ্কর সুমিত অণুগল্প ।। বংশীবদনের সুখদুঃখ ।। দীনেশ সরকার কবিতা ।। গভীর রাত ।। সুনন্দ মন্ডল তিনটি কবিতা ।। সুশান্ত সেন ভালোবাসার বাসা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত অণুগল্প ।। শিক্ষকের সম্মান ।। মিঠুন মুখার্জী কবিতা।। প্রশ্ন ।। জীবন সরখেল কবিতা ।।ক্ষরিত সে পথ ।। রহিত ঘোষাল কবিতা ।। রক্ত দিয়ে কেনা ।। মুহাম্মদ মুকুল মিয়া কবিতা ।। কংক্রিট ।। আলাপন রায় চৌধুরী ছড়া ।। শীত নেমেছে ।। রঞ্জন কুমার মণ্ডল কবিতা ।। কিছু শব্দ ।। সমীর কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় কবিতা ।। শীতের নগ্নতা ।। রানা জামান কবিতা ।। পথ চলা ।। পাভেল আমান বেদ পু...

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ৮৬তম সংখ্যা ।। বৈশাখ ১৪৩২ এপ্রিল ২০২৫

সম্পাদকীয় এই সংখ্যাটি বাংলা নববর্ষ বিষয়ক সংখ্যা। নৱৰ্ষকেন্দ্রিক বহু তথ্যপূর্ণ লেখা এই সংখ্যাটিকে সমৃদ্ধ করেছে। বাংলা নববর্ষ উদযাপনের ইতিহাস, রীতিনীতি, উৎসব, পার্বন, লোকাচার, রূপান্তর বহুবিধ বিষয় প্রকাশিত হয়েছে এই সংখ্যার লেখাগুলিতে। এই সংখ্যার বাছাই কিছু লেখার সঙ্গে আগামীতে আরও কিছু লেখা সংযুক্ত করে বাংলা নববর্ষ বিষয়ক একটি মুদ্রিত সংখ্যা প্রকাশ করার ইচ্ছে রইল।  সকলকে নববর্ষের আন্তরিক শুভকামনা জানাই। উৎসবে আনন্দে থাকুন, হানাহানিতে নয়। ধর্ম-ব্যবসায়ীদের চক্রান্ত ব্যর্থ করে সহনাগরিকের পাশে থাকুন। মনে রাখুন, ধর্মকে মানুষই সৃষ্টি করেছে। ঈশ্বর আল্লা গড ইত্যাদির জন্মদাতা মানুষই। মানুষকে ভালোবাসুন। মানুষের পাশে থাকুন।  নিরাশাহরণ নস্কর  সম্পাদক, নবপ্রভাত।  সূচিপত্র প্রবন্ধ-নিবন্ধ-স্মৃতিকথা পয়লা বৈশাখ ।। সিদ্ধার্থ সিংহ নববর্ষকেন্দ্রিক মেলা, পার্বন, উত্সব, লোকাচার ।। সবিতা রায় বিশ্বাস নববর্ষ আবাহন ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে এবং বিভিন্ন দেশে ।। তুষার ভট্টাচার্য নববর্ষের সেকাল ও একাল ।। হিমাদ্রি শেখর দাস নববর্ষের হাল-হকিকৎ ।। শংকর ব্রহ্ম বোশেখি বাঙালি নাকি পোশাকি বাঙালি? ।। দিব্যেন্দু...

প্রবন্ধ ।। বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় ।। মাখনলাল প্রধান

বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় মাখনলাল প্রধান বাংলার শিল্প-সংস্কৃতির জগতে যাত্রা শিল্প তথা নাট‍্যশিল্পে মড়ক নেমে এসেছে । যাত্রা শিল্পের মড়কে শুধু কোভিড নয় তার বহুপূর্ব থেকেই অর্থনৈতিক বিপর্যয় , শিক্ষাক্ষেত্রে বন্ধ‍্যাত্ব এবং গ্ৰাম বাংলার পটপরিবর্তন শেষ পেরেক ঠুকে দিয়েছে। যাত্রা-শিল্পের লীলাভূমি ছিল গ্ৰাম বাংলা। গ্ৰামে প্রচুর যাত্রাপালা হত নানা উৎসবকে কেন্দ্র করে । জমিদারি ব‍্যবস্থা লুপ্ত হওয়ার পর গ্ৰামীণ মানুষের উদ‍্যোগে শীতলা পূজা,  কালীপূজা, দুর্গাপূজা, কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা, চড়ক ইত‍্যাদিকে উপলক্ষ‍্য করে যাত্রাপালার আয়োজন না হলে কেমন যেন ম‍্যাড়ম‍্যাড়ে লাগতো। সেই সঙ্গে কলকাতার বড়বড় কোম্পানির যাত্রাপালা ঘটা করে, টিকিট সেল করে হত মাঠে। খুব বড় মাপের খেলার মাঠ যেখানে ছিল না সেখানে ধানের মাঠ নেওয়া হত ‌। ত্রিশ-চল্লিশ হাজার মানুষ দেখতে আসত। স্পেশাল বাস পাঠাত  আয়োজক কর্তৃপক্ষ। বিনা ভাড়ায় বাসে যাতায়াত করত যাত্রার দর্শকেরা। কিন্তু বিকল্প ধানচাষ শুরু হলে জমিগুলো সময় মতো ফাঁকা পাওয়া গেল না । প্রথম দিকে ব‍্যাপকহারে ধান শুরু না হওয়ায় খুব একটা অসুবিধা হত না। বহুক্ষেত্রে  ধান কা...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। নবপ্রভাত ৮৫ ।। চৈত্র ১৪৩১ মার্চ ২০২৫

  সূচিপত্র নিবন্ধ ।। মরিয়ম মির্জাখানি: এক অনন্য গণিতসূর্য ।। ... নিবন্ধ ।। নারী দিবসে যা ভাবা উচিত ।। বিশ্বনাথ পাল প্রবন্ধ ।। প্রাচীনকাল থেকে নারীরা অবহেলিত, বঞ্চিত,... নিবন্ধ ।। আমার চোখে আদর্শ নারী ।। জয়শ্রী বন্দ্... ফিচার।। এই মুহূর্তে বাংলা সাহিত্যে নারীদের লেখালেখ... আফ্রিকার লোককথা ।। করোটিকে বিয়ে করা অবাধ্য মেয়েটি ... ছোটগল্প ।। মানবী ।। ভুবনেশ্বর মন্ডল নিবন্ধ ।। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে অন্যতম নারী মু... নিবন্ধ ।। প্রিয় মহিলা সাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবী ।। ... গল্প ।। উই ওয়ান্ট জাস্টিস ।। রবীন বসু প্রবন্ধ ।। নিপীড়িতা ।। শ্যামল হুদাতী ফিচার ।। রমণী রতন ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত প্রবন্ধ ।। নারী সমাজ : তখন-এখন ।। তপন মাইতি নিবন্ধ ।। বহমান কালের ধারায় নারী ।। দীপক পাল গল্প ।। আমার দুর্গা ।। অঞ্জনা গোড়িয়া (সাউ) গল্প ।। যোগ্য জবাব ।। সমীর কুমার দত্ত ছোটগল্প ।। আমি দুর্গাকে দেখেছি।। চন্দন দাশগুপ্ত গল্প ।। সম্পর্ক ।। গৌতম সমাজদার কবিতা।। নারী মানে ।। গোবিন্দ মোদক কবিতা।। নারী ।। সমর আচার্য্য ছড়া ।। নারী অসামান্যা ।। সৌমিত্র মজুমদার কবিতা ।। নারী দিবসে ।। বিবেকানন্দ নস্কর কবিতা ।। না...

প্রবন্ধ ।। ভিনগ্রহীদের সন্ধানে ।। শ্যামল হুদাতী

ভিনগ্রহীদের সন্ধানে  শ্যামল হুদাতী  ইতিহাসের শুরু থেকে বারবার মানুষকে একটা প্রশ্ন কুঁড়ে কুঁড়ে খায় – এই মহাবিশ্বে আমরা কি একা? পৃথিবীর মতো আরও গ্রহ রয়েছে, যেখানে মানুষের মতো বুদ্ধিমান প্রাণীরা বাস করে – এই সম্ভাবনা বরাবর মানুষকে মুগ্ধ করেছে। আমাদের প্রত্যেকের জীবনের কখনও না কখনও এই ভাবনা এসেছে। দীর্ঘ কয়েক দশকের গবেষণার পরও, এই বিষয়ে কোনও নিশ্চয়তা দিতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। জেমস ওয়েব মহাকাশ টেলিস্কোপ, বহু দূরের এমন কিছু গ্রহের সন্ধান দিয়েছে, যেগুলিতে প্রাণ থাকতেই পারে। তবে, নিশ্চিত কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে, আমেরিকার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাম্প্রতিক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, ভিনগ্রহীদের খুঁজতে বহু দূরে যাওয়ার কোনও দরকার নেই। তারা এই পৃথিবীতেই মানুষের ছদ্মবেশে মানুষের মধ্যেই বসবাস করতে পারে। আমরা ভিনগ্রহীদের যেমন কল্পনা করি, এরা তার থেকে আলাদা। এরা অনেকটাই, দেবদূতদের মতো। মানব জগতের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক প্রযুক্তিগত নয়, বরং জাদুকরি। মহাকাশে সৌরজগতের গ্রহ পৃথিবী ছাড়া অন্য কোথায় প্রাণ রয়েছে কি না তা নিয়ে চলছে বিস্তর গবেষণা। একই সঙ্গে পৃথিবী ছাড়া অন্য কোনো গ্রহে মানুষ বসবাস ক...

মাসের বাছাই

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬

  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠালে  অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে হলে ভালো। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # ...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯২তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩২ অক্টোবর ২০২৫

—: সম্পাদকীয় দপ্তর থেকে :— এই সংখ্যার জন্য লেখা এসেছিল প্রায় ১৮০টা। কিন্তু গুণগত মানে দুর্বল লেখার সংখ্যা বহু। আমরা নবপ্রভাতে নতুনদের কথা ভেবে বেশ কিছু দুর্বল লেখাও রাখি। কিন্তু সবসময় একই লোকের দুর্বল লেখা প্রকাশ করা অনুচিত বলে মনে করি। শেষ পর্যন্ত ৯৯ জনের লেখা রাখা গেল। যাদের লেখা প্রকাশিত হল না, তারা লেখাগুলি অন্য যেখানে খুশি পাঠাতে পারেন। বিশেষ কারণে এই সংখ্যার মুদ্রিত সংস্করণ প্রকাশিত হচ্ছে না। আমরা দুঃখিত। তবে মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি শীঘ্রই আসছে। সঙ্গে থাকুন। সকলকে উৎসবমুখর বর্ণময় শুভেচ্ছাসহ— —নিরাশাহরণ নস্কর, সম্পাদক, নবপ্রভাত। অনুরোধ : প্রকাশিত লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন, ছবি/স্ক্রীনশট নয়।  == সূচিপত্র == পড়া-লেখার ইতিহাস অনুসন্ধান।। তপন তরফদার উৎসব : মানুষের চিরন্তন আত্মপ্রকাশ।। কৃশানু ব্যানার্জি বাংলা : সভ্যতা ও সংস্কৃতির জন্মভূমি।। শ্যামল হুদাতী সমুদ্র আর অস্তিত্ব ।। সুব্রত চৌধুরী রাজা ছিলেন জুবিন গর্গ ।। গঙ্গা 'অনু'   আদ্যাশক্তি মহামায়ার বাংলা বারো মাসের বারো রূপ ।। অর্হণ জানা মেধাদাদুর আসর ।। রণেশ রায় বৈজ্ঞানিক মা...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯৩তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩২ নভেম্বর ২০২৫

সূচিপত্র বস্তু, চেতনা এবং কবি ।। সজল চক্রবর্তী দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত ।। রণেশ রায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট ও সন্নিহিত অঞ্চলের কথ্য শব্দ ।। অরবিন্দ পুরকাইত চাঁদে জীবন ।। শমীক সমাদ্দার অসমাপ্তি ।। মহুয়া হুই গ্যালাক্সির শব্দে ।। জাসমিনা খাতুন তিনটি কবিতা ।। দিবাকর সেন অপূর্ণতার শেষ অধ্যায় ।। সুপ্রিয় সাহা হাফ ডজন ছড়া ।। স্বপনকুমার পাহাড়ী স্বাপ্নিক অমলের ঘুৃম ।। সঞ্জয় দেওয়ান দুটি কবিতা ।। সৌমিত্র উপাধ্যায় পথ চলতি ✍️পার্থ প্রতিম দাস হেমন্তের বিষাদ ছুঁয়ে ।। শক্তিপদ পাঠক রাই আর বাবা ।। অদিতি চ্যাটার্জি স্থিতিশীল ।। রঞ্জিত মুখোপাধ্যায় হৃদয়ের শূন্য কোড ।। লিপিকা পিঙ্কি দে অমানিশা ।। সৌভিক মুখার্জী দৃষ্টিগত ।। শামীম নওরোজ জ্যান্ত ভূতের গপ্পো ।। পার্থ সারথি চট্টোপাধ্যায় ধুতরা ফুলের ঘ্রাণ ।। মজনু মিয়া তারা খসার আলোয় ।। তীর্থঙ্কর সুমিত উত্তরণে অন্তরায় ।। সমীর কুমার দত্ত প্রেম মুদ্রা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ধারা ।। লালন চাঁদ অন্যের ব্যথায় ব্যথি ।। জগদীশ মণ্ডল গর্ভ ।। শাশ্বত বোস ভ্রমণ বিষয়ক স্মৃতিকথা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত শাপে বর ।। সাইফুল ইসলাম রবিবার ।। সঙ্ঘমিত্রা দাস দুটি ...

দিদৃক্ষা ।। রাজেশ কে. চক্রবর্ত্তী

  দিদৃক্ষা রাজেশ কে. চক্রবর্ত্তী 'কাল একবার দেখা হতে পারে?' দশমীর দুপুরে খাটে আধশোয়া হয়ে নিজের ফোনটা ঘাঁটছিল দেবমাল্য; হোয়াট্‌সঅ্যাপের সার্চ বক্সে  র‍্যান্ডম সিক্যুয়েন্সে ক'খানা ডিজিট ইনপুট করতেই বিস্মৃতির অতল থেকে অপ্রত্যাশিতভাবে যে নামটা স্ক্রিনের সারফেসে ভেসে উঠল, এককালে দেবমাল্যের প্রায়োরিটি লিস্টে সবথেকে ওপরে পিন্‌ করা থাকতো এই অ্যাকাউন্টটা। 'অহনা দাশগুপ্ত'—গ্রেয়েড-আউট ডিপিটার ডানদিকে, নামটার তলায় নিস্প্রভ হরফে ভেসে থাকা ওর এই লাস্ট মেসেজটা বেশ ক'বছরের পুরনো, কিন্তু দেবমাল্যর স্মৃতির প্যান্ডোরা বাক্সটি উলটে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল। আরেকবার আপাদমস্তক শিহরিত হয় সে। প্রোফাইলটা খুলে ওপরে-নীচে স্ক্রল্‌ করে দেখে, ওদের পুরনো চ্যাটগুলো তেমনি আড়ষ্ট হয়ে পড়ে আছে, ওর মেসেজগুলোর পাশে ডাবল টিকগুলো এখনও জাজ্বল্যমান সবুজে ছোপানো, যেন এইমাত্র 'সিন্‌' করে রেখেছে অহনা! যেন এখুনি আবার হাত বোলালেই অহনা এসে খানিকটা রাগত ভঙ্গিতে চ্যাট করতে লেগে যাবে। দেবমাল্যের বুক ছাপিয়ে একটা নীরব দীর্ঘশ্বাস উঠে আসে! ছুটির এই আমেজটা লক্ষ্মীপুজো অব্দি গড়াবে—অফিস খুললেই তো আবার দমফাটা ব্য...

গুচ্ছকবিতা || শিশির আজম

  গুচ্ছকবিতা || শিশির আজম হুইসেল (মুরাকামি থেকে অনুপ্রাণিত) ♦ 'গভীর রাতে একটা হুইসেল কতটা গভীর হতে পারে তুমি কল্পনাও করতে পারো না,' ছেলেটা বললো, 'আশ্চর্য ঐ হুইসেলের মতো আমি ভালবাসি তোমাকে।' কিন্তু গভীর রাতে অন্ধকারে কখনও তো ঘুম ভেঙে যায়নি মেয়েটার, কখনও ও বিচ্ছিন্ন আর একা হয়ে যায়নি। ও কীভাবে অনুভব করবে গভীর রাতে ট্রেনের হুইসেল কতটা গভীর! নিউজ এজেন্সি ♦ একসময় আমরা খবর শুনতাম এখন দেখি স্বীকার করতে হবে খবর শোনার চেয়ে দেখার আনন্দ বেশি আলাদা উত্তেজনা নিউজ এজেন্সিগুলো এব্যাপারে তৎপর আর প্রতিযোগিতাপূর্ণ কোনটা নিউজ সেটা ওরাই ঠিক করে যেটা ওদের দরকার আর সেটাই আমাদের দেখানো হয় ধারাবাহিকভাবে সুচারু জ্যামিতিকতায় বিভিন্ন পদ মিশিয়ে খাওয়ানো হয় নতুন বাস্তবতা নির্মাণে যে বাস্তবতায় জায়গা নেই আমাদের ইতিহাস অন্বেষা স্বাধীনতার সমৃদ্ধি আর স্বাধীনতার কথা বলেই ওরা আমার ক্ষেতখামার পাহাড় আর নদীর দখল নিয়েছে তাহলে টিভিতে যে হাসিখুশি প্রাণবন্ত আমাদেরকে দেখানো হয় ওরা কারা এই প্রশ্ন করো নিজের কাছে আগুন নিয়ে খেলা ♦ আজও পুকুরে ছিপ ফেলে বসবো আমি ধীরে চুপ সূর্য আমার ঘাড়ে শ্বাস ফেলবে সারারাত ঘরের ভেতর ল্যাং...

বিদায়ের স্রোত ।। চয়ন মন্ডল

  বিদায়ের স্রোত চয়ন মন্ডল "বিজয়া দশমী—আনন্দের দিন, কারও কাছে যা হয়ে উঠল চিরন্তন বিদায়।" আজ বিজয়া দশমী। শিউলি ফুলের গন্ধে ভোরটা অন্যরকম। পাড়ার প্যান্ডেলে অদ্ভুত এক কোলাহল—মায়ের বিদায় যে আজ। শঙ্খধ্বনি, ঢাকের বাজনা আর উলুধ্বনিতে গমগম করছে চারদিক। একদিকে মা দুর্গার বিদায়ের বেদনা, অন্যদিকে আনন্দ ও মিলনমেলা। সারা বছরের অপেক্ষা শেষে এই দিনটিতে প্যান্ডেল ভরে উঠেছে মানুষের ভিড়ে। সকালের পূজার্চনা শেষ হতেই শুরু হয়েছে সিঁদুর খেলা। মহিলারা মায়ের প্রতিমাকে সিঁদুর পরিয়ে একে অপরের কপালে, গালে রাঙিয়ে দিচ্ছেন। ঢাকের তালে আর শাঁখ বাজনার আবেশে ভেসে যাচ্ছে পাড়া। শুরু হয়েছে প্রতিমা বিসর্জনের প্রস্তুতি। কিন্তু এসবের মধ্যে নেই অনুরাধা। কেউ তার বা মিনির খোঁজ রাখেনি। মুখার্জিদের দোতলা বাড়ির কোণের ঘরে বসে সে চোখের জল ফেলছে। সবার বাড়িতে আলোর রোশনাই, ভোগের গন্ধ, হাসি—শুধু তাদের ঘরটিতে নিস্তব্ধতা। গতবছর এই দিনেই তো অন্যরকম ছিল সবকিছু। অনুরাধা, সুজয় আর তাদের তিন বছরের মেয়ে মিনি পাড়ার প্যান্ডেলে ঢাকের তালে নেচেছিল, সিঁদুর খেলায় রঙে ভেসেছিল। বিকেলের দিকে প্রতিমা বিসর্জনের মিছিলে শামিল ...

কবিতা ।। অরণ্যকন্যা ।। অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়

  অরণ্যকন্যা অরিন্দম চট্টোপাধ্যায় অরণ্যকন্যার দৃষ্টির ভেতর বিষাদ বিন্দু ফোঁটা ফোঁটা জলের মতো গড়িয়ে যায়, হয়ে যায় কোন নদীপথ দৃষ্টি ভেঙে ভেঙে চলে যায় কোন এক শূন্য পথে অরণ্যকন্যার হৃদয়ের ভেতর ভাঙে যতো বৃক্ষপত্র নতুন পত্র পুষ্পের খোঁজ নেই ঠোঁট জুড়ে সমুদ্রকাঁপন বুদবুদের মতো অস্ফুট হয়ে উচ্চারিত হয় কোন অক্ষর শব্দ আর তাঁর শরীর থেকে ছড়িয়ে যায় হয়ে যায় একটা অদৃশ্য কবিতা...    ================== @ অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়,  বেহালা, কলকাতা -৭০০০৬০,  

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো,  তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) য...

শেষ বিকেলের আলো ।। সৈকত প্রসাদ রায়

  শেষ বিকেলের আলো সৈকত প্রসাদ রায় রানাঘাট শহরের প্রান্তে ছোট্ট এক পাড়া বিশ্বাসপাড়া। সেই পাড়ার পুরোনো ভাঙাচোরা বাড়িটায় থাকেন পুষ্পরাণী ভট্টাচার্য— বয়স পঁয়ষট্টির কোঠায়। সবাই তাকে "পুষ্পদি" বলেই চেনে। একসময় প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতা করতেন, এখন অবসর নিয়েছেন। প্রতিদিন বিকেলে পুষ্পদি বারান্দায় বসে চা খান। ছোট একটা টেবিল, কয়েকটা পুরোনো বই, আর একখানা নীল কাঁচের ফুলদানি — তার নিত্যসঙ্গী। বারান্দার সামনেই একটা গলি, যেখান দিয়ে প্রতিদিনই স্কুল ছুটির পরে বাচ্চারা হইচই করে ছুটে যায়। পুষ্পদির একমাত্র ছেলে অনিরুদ্ধ — কলকাতায় চাকরি করে। ছেলেটা আধুনিক, নিজের সংসার আছে, স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ব্যস্ত। বছরে হয়তো একবার আসে, তাও কিছুক্ষণ বসে আবার চলে যায়। পুষ্পদি মুখে কিছু বলেন না, কিন্তু বুকের ভেতরে একটা কষ্ট জমে থাকে। সেই বিকেলটা অন্যরকম ছিল। আকাশে ধুলো, গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা। হঠাৎ পুষ্পদির চোখে পড়ে — রাস্তায় এক কিশোর বসে আছে। বয়স বারো-তেরোর বেশি নয়। মলিন জামা, পায়ে ছেঁড়া চটি। ছেলেটা একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে পুষ্পদির বাড়ির গেটে ঝুলে থাকা পুরোনো নোটিশবোর্ডটার দিকে, যেখানে একসময় লেখা ছিল — "পুষ্পরাণী ভ...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯১তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পাদকীয় দপ্তর থেকে এই সংখ্যায়  'শিক্ষা ও শিক্ষক' বিষয়ক বেশ কিছু লেখার পাশাপাশি রয়েছে বিচিত্র বিষয়ের আরও কিছু লেখা। সব মিলিয়ে সংখ্যাটি আপনাদের সমৃদ্ধ করবে, আপ্লুত করবে — এ বিষয়ে আমরা আশাবাদী। আপনাদের মতামত অবশ্যই জানাবেন। আমরা প্রতীক্ষিত।            আগামী অক্টোবর ২০২৫ সংখ্যা 'উৎসব সংখ্যা' হিসাবে প্রকাশিত হবে। ওয়েব সংখ্যার পাশাপাশি নির্বাচিত লেখাগুলি নিয়ে একটি pdf এবং তার মুদ্রিত সংস্করণও প্রকাশিত হবে। তাই অপ্রকাশিত ভালো লেখা পাঠান। বিশেষ কোনও বিষয় নেই। প্রবন্ধ-নিবন্ধ-ফিচার ২০০০ শব্দ, গল্প ১২০০ শব্দ, অণুগল্প ৫০০ শব্দ, কবিতা-ছড়া ২৪ লাইনের মধ্যে হলে ভালো। ইমেলঃ nabapravatblog@gmail.com           বিস্তারিত বিজ্ঞপ্তি আসবে। সামাজিক মাধ্যমে আমদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন। সময় মতো সব সংবাদ পেয়ে যাবেন।  শারদ উৎসবের দিনগুলি সকলের আনন্দে কাটুক এই কামনা করি। —নিরাশাহরণ নস্কর সম্পাদক: নবপ্রভাত মোঃ ৯৪৩৩৩৯৩৫৫৬ Whatsapp Group:  https://chat.whatsapp.com/ AIpj98JKbloFSpeqMcpr6j Facebook Page:  https://www.facebook.com/ share...