Skip to main content

দেবাশিস কোনার



নারী আন্দোলনের একটি বঙ্গীয় রূপরেখা


দেবাশিস কোনার


ভারতীয় সমাজে বহু আদর্শ ও মহীয়সী নারীর দৃষ্টান্ত রয়েছে। পৃথিবীতে বহু নারীর কথা আমরা জানি। তাঁরা নারীত্বের আদর্শ দেখিয়ে দিয়ে গেছেন। আজও তারা জগতে সকল নমস্য ও চিরস্মরণীয়া। তাঁদের শ্রেষ্ঠত্বের মূলে ছিল জীবন ভর কঠোর পরিশ্রম। সে পরিশ্রম হচ্ছে নারীত্বের জাগরণের সাধনা। কিন্তু বর্তমান যৃগের নারীর মধ্যে সে সাধনার খুবই অভাব দেখা দিয়েছে। সাধনা করে আগে নিজেকে তৈরি করতে হবে, তারপর অপরকে  তৈরি করার শক্তি পাওয়া যাবে। 'আপনি আচরি ধর্ম. জীবেরে শিখায়', এটাই হচ্ছে মূল মন্ত্র। নিজেকে তৈরি না করে অপরকে তৈরি করা যাবে না।
  নারী আন্দোলনকথাটি অনেক বড় অর্থ ধারণ করে। সারা পৃথিবীতেই নারী আন্দোলনের বিষয়ে অনেক কাজ হয়েছে। বাংলাদেশেও নারী আন্দোলনের ইতিহাস বেশ দীর্ঘ। বাংলার সাহিত্যে-শিল্পে-সংস্কৃতিতে নারীর দ্রোহ-আন্দোলন আর সাহসিকতার মূর্ত প্রকাশ ঘটেছে। রাজনীতির ক্ষেত্রেও নারীর ভূমিকা অতুলনীয়। সারা বিশ্বে নারী আন্দোলনের যে ধারা, তার স্রোত সে-ই ব্রিটিশ আমল থেকেই এই অঞ্চলের নারীদের মাঝে সঞ্চারিত হয়। আঠারো থেকে বিশ শতক পর্যন্ত বাঙালি নারীর অধিকার সচেতনতা ও আন্দোলনের ইতিহাস এই অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক উত্থান-পতন ও ভাঙা-গড়ার ইতিহাসের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। জনসংখ্যার অর্ধেক নারী সমাজের জীবন সেসময় কীভাবে আবর্তিত হয়েছে, বিকশিত হয়েছে; তা সে সময়ের রাজনৈতিক সামাজিক ইতিহাসের পাঠ থেকে জানা যায়। তবে নারী আন্দোলনের কোনো সুনির্দিষ্ট দিন তারিখ বা সন উল্লেখ সম্ভব নয় বলেই মনে হয়েছে। এটি সামাজিক বিকাশ পরিস্থিতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ এবং তার কোনো নির্দিষ্ট ধরন নেই। আগেই বলেছি, সারা পৃথিবীর নারী আন্দোলনের বাতাস এ অঞ্চলেও প্রবাহিত হয়েছে। তাই নারী আন্দোলনের একটি বৈশ্বিক সংজ্ঞা নির্ধারিত হয়েছিল প্রাথমিক পর্যায়ে। পৃথিবীর নানা স্থানের মতোই নারী আন্দোলনের পিছনে প্রাথমিক যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য কাজ করেছে, তা হল দাসত্বের শৃঙ্খল থেকে মুক্তি পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা । আবার নারী অর্থনৈতিক স্বাধীনতার বিষয়টিও সারা পৃথিবীর মতোই আলোচিত হয়েছে বাংলায়। বাংলা সাহিত্যের আদি নিদর্শন চর্যাপদেও তার উল্লেখ আমরা পাই। সেখানে যে শ্রেণির নারীর অর্থনৈতিক মুক্তির বিষয়টি এসেছে,তা অন্ত্যজ। ডোম্বী নারী বা শবরী বালিকার পরিচয় মেলে সেখানে। তাঁরা হাটে চাঙাড়ি বিক্রি করে। মধ্যযুগের লৌকিক জীবনে শ্রীকৃষ্ণ ও রাধা বিষয়ক যে কাহিনী প্রচলিত আছে, সেখানেও দেখা যায় রাধা অন্য গোপনারীদের সঙ্গে দুগ্ধ ও দুগ্ধজাত অন্যান্য সামগ্রি বিক্রির জন্যে হাটে যেত। মঙ্গলকাব্যে খেয়া পারাপারের কাজে নিয়োজিত ছিল অন্ত্যজ নারী শ্রেণি। মুকুন্দরাম চক্রবর্তীর চণ্ডীমঙ্গলকাব্যে ব্যাধনারী ফুল্লরার হাটে কিংবা বাড়ি বাড়ি ঘুরে মাংস বিক্রির কাহিনি আমরা পাই। মৈমনসিংহ গীতিকার দেওয়ান মদিনায়আছে কৃষকবধূ মদিনা স্বামীর কৃষিকাজে ঘনিষ্ঠভাবে সংশ্লিষ্ট। এভাবে প্রাচীন ও মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্য, লোকগাঁথা, পুঁথি সাহিত্যে নারীর অর্থনৈতিক মুক্তির বিষয়টি তীব্রভাবে আলোচিত হয়। কিন্তু সমাজব্যবস্থার সার্বিক কাঠামোর বাইরে নারী নয়। এবং অর্থনৈতিক মুক্তির বিষয়টিও শ্রেণিদ্বন্দ্ব থেকে আলাদা কিছু নয়। সুতরাং সমাজ কাঠামোর সার্বিক বদলে নারী নিজেকে নিয়োজিত করে আমাদের আন্দোলন সংগ্রামের ইতিহাসের একেবারে প্রাথমিক পর্যায়েই। নারীর প্রতি সমাজের যে দৃষ্টিভঙ্গি তার একটি রাজনৈতিক ব্যাখ্যা আছে এবং সেটাই মুখ্য। আমরা বলতে পারি, যেদিন থেকে নারী তার মানবসত্তাকে আবিষ্কার করেছে, মানুষ হিসেবে নিজের অর্জন ও ত্যাগের খতিয়ান নিজেই লিখতে শুরু করেছে, সেদিন থেকে নারী আন্দোলন আসলে মানবসমাজের আন্দোলনের সঙ্গে মিলে গেছে। তখন মানুষের জন্য সংগ্রাম আর দ্রোহের মিছিলে নারী সহযোগী শক্তি হিসেবে ভূমিকা পালন করেছে। তাই রাজশাহীর রানী ভবানী, ঝাসীর রানী লক্ষ্মীবাঈ বা চট্টগ্রামের প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার প্রমুখের কথা যখন আমরা বলি, তখন মূলত মানুষের লড়াইয়ে নেতৃত্ব দেয়া জীবন উৎসর্গোকারী একজন মানুষের কথাই বলি। তবে সমাজ যেহেতু এখনও শ্রেণি আর বৈষম্যের চোখে সবকিছু দেখে, তাই নারীর অবদানকে সহযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দিতেও নানা টালবাহানা দেখেছি আমরা। ফলে নারী আন্দোলনের একটি কালে নারীর স্বীকৃতি আদায়ের ক্রমধারাও আমরা লক্ষ্য করেছি।
   আন্দোলনের পিছনে যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বিদ্যমান তা হলো দাসত্বের শৃঙ্খল থেকে মুক্তি পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা। বৈশ্বিক পটভূমিতে যেমন একথা সত্য তেমন ভাবতবর্ষ তথা পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রেও তা প্রযোজ্য। বাংলার নারীরা সুপ্রাচীনকাল থেকেই নিপীড়িত ও নিগৃহীত হয়ে আসছে। ধর্মীয় কুসংস্কার, সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি নারীকে গৃহের অভ্যন্তরে অন্তরীণ করে রেখেছে। অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক সর্বক্ষেত্রেই নারীরা উপেক্ষিত। তবে ব্যক্তিপর্যায় কিছু নারী তাদের কর্মকা-ের স্বীকৃতি পেয়েছিল বটে, যেমন- রাজশাহীর রানী ভবানী ও ঝাসীর রানী লক্ষ্মীবাঈ, চট্টগ্রামের প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার প্রমুখ। তবে সাধারণ নারীর পক্ষে তাদের মতো স্বীকৃতি পাওয়া ছিল দুরূহ ব্যাপার। উনিশ শতকের শুরুতে বাংলায় নারীমুক্তি আন্দোলন শুরু হতে থাকে। বিশেষ করে এ সময় বাংলার রেনেসাঁ বা নবজাগরণের মানবিক আবেদন থেকে নারীর সামাজিক নিপীড়ন বন্ধের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। পরে নারী আন্দোলনের ইতিহাস বাংলার রাজনৈতিক আন্দোলনের সঙ্গে যুগপৎভাবে অগ্রসর হয়। এ সময় বিশেষ করে অসহযোগ আন্দোলন, জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে নারীরা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে। এভাবে বাংলাদেশের নারী আন্দোলনের সূত্রপাত হয়েছে দেশপ্রেমের মধ্যদিয়ে। বিদেশি শাসক ও শোষকদের হাত থেকে দেশকে মুক্ত করার সংগ্রামে এদেশের নারী সমাজ বিশ শতকের শেষ পর্যন্ত এসে যুক্ত হয়েছে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম ও সামরিক শাসন উচ্ছেদের লড়াইয়ে।
বাংলার নারীমুক্তি আন্দোলনকে তিনটি ভাগে ভাগ করে আলোচনা করা যায়। যথা : 

ব্রিটিশ আমল (১৭৫৭-১৯৪৭)
ভারতেের স্বাধীনতা  পরবর্তী কাল ( ১৯৪৭-১৯৭১)
বাংলাদেশের আমল ( ১৯৭১-বর্তমান)
ব্রিটিশ শাসকরা এদেশে শাসনের নামে প্রায় দুশ' বছর শোষণ করেছে। এ সময় নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবাই অধিকার বঞ্চিত ছিল। ফলে জনগণের মধ্যে ক্রমশ ব্রিটিশবিরোধী মনোভাব দানা বাঁধতে থাকে। এভাবে সমাজে সামগ্রিকভাবে এক ধরনের সচেতনতা জাগ্রত হয় ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে। অন্যদিকে, এ সময় ভারতে আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত উদার মনোভাবসম্পন্ন কিছু নেতৃত্বের আবির্ভাব ঘটে। যাদের সহযোগিতায় বাংলার নারী আন্দোলন আরো বেগবান হয়। এসব উদার মনোভাবসম্পন্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণি ভারতীয় সমাজে বিদ্যমান ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক জীবনের ক্ষয়িষ্ণুতার বিরুদ্ধে রেনেসাঁ বা নবজাগরণের ডাক দেয়। এই রেনেসাঁর মানবকল্যাণমুখী জাগরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে নারী জাগরণ। এ উদার মনোভাবসম্পন্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণি রেনেসাঁর মানবিক আবেদন থেকে নারী সমাজের সামাজিক নিপীড়ন বন্ধের জন্য এগিয়ে আসেন, প্রতিবাদ জানান এবং নারী নিপীড়ন বন্ধের জন্য রাষ্ট্রীয় আইন তৈরির পক্ষে আন্দোলন করেন। এই আন্দোলন সমাজ সংস্কারমূলক হলেও বাংলায় নারী আন্দোলনের ইতিহাসে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।
নারীমুক্তি আন্দোলনে সমাজ সংস্কারকদের ভূমিকা :
রাজা রামমোহন রায় (১৭৭২-১৮৩৩), ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮২০-১৮৯১), মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮১৭-১৯০৫) প্রমুখ সামগ্রিকভাবে সমাজ পরিবর্তনের জন্য সংগ্রাম করে গেছেন। নতুন যুগ ও নতুন আদর্শের ভিত্তিতে সমাজ গড়ে তোলার জন্য তারা যে কাজ করে গেছেন তার একটি অংশ ছিল নারীর সামাজিক নিপীড়ন বন্ধ করা ও নারীকে শিক্ষিত করে আত্মনির্ভরশীল হতে সাহায্য করা। উনিশ শতকের বাংলায় নবজাগরণের সঙ্গে নারী জাগরণের সম্পর্ক এভাবেই অবিচ্ছেদ্য হয়ে আছে।
চিন্তায়, চেতনায় ও মননে নিজ যুগের চাইতে অগ্রসরমান রামমোহন রায় একই সংগ্রাম করেছেন জীবনভর। সমাজের চলিত ধ্যান-ধারণা, নারী নিপীড়নের জন্য চলিত সমস্ত রীতি-নীতির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে তিনি হয়েছিলেন নারী সমাজের বন্ধু এবং রক্ষাকর্তা। সামাজিক আচার-আচরণ ও বিধিনিষেধের মধ্যদিয়ে নারী সমাজের প্রতি মর্যাদাহীনতা প্রকাশিত হতে দেখে তিনি সামাজিক সব ধরনের প্রথা যেমন- বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ, কৌলিন্য ও অধিবেদন প্রথা আইন করে বন্ধ করে দিতে চেয়েছিলেন। অসহায় বিধবাদের জন্য অর্থ তহবিল গড়ে তোলার প্রস্তাব দিয়েছিলেন তিনি। এ ছাড়া তার প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত আত্মীয় সভার অধিবেশনে বাল্য বিধবাদের বাধ্যতামূলক বৈধব্য নয়তো সহমরণ, বহুবিবাহ ইত্যাদির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও নিন্দা প্রস্তাব থাকত।
নারী নির্যাতনের মূল কারণ খোঁজ করে তিনি দেখিয়েছেন অর্থনৈতিকভাবে নারী অন্যের ওপর নির্ভরশীল বলেই নারীরা অধিকার থেকে বঞ্চিত থাকছে। নারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য দরকার অর্থনৈতিকভাবে নারীকে স্বাবলম্বী করা।
নারী জাগরণে রামমোহন রায়ের বলিষ্ঠ ভূমিকার একটি অংশ হচ্ছে সতীদাহ প্রথা বন্ধে সাফল্য অর্জন। যদিও ব্যক্তিগত দুঃখবোধ থেকেই সতীদাহ প্রথার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে এগিয়ে এসেছিলেন তবু সমাজ সংস্কারে তার দৃঢ়চেতামন সক্রিয় ছিল বলেই সতীদাহের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় আইন প্রণয়ন করার জন্য তার আন্দোলন সমাজে প্রসারিত হয় এবং তা সাফল্য লাভ করে। ১৮৮৫ সালের শুরুতে তিনি কলকাতায় এসে ইংরেজ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে সতীদাহ প্রথা বন্ধের জন্য চাপ সৃষ্টি করতে থাকেন। ১৮১৩ সালে লর্ড ময়রা সতীদাহ প্রথা আংশিকভাবে নিয়ন্ত্রিত করার জন্য নির্দেশ জারি করেন এবং ১৮১৭ সালে তা চূড়ান্ত রাজবিধি হিসেবে প্রচারিত হয়।
১৮২৫ খ্রিস্টাব্দে কলকাতার কাছে এ সতীদাহের একটি লোমহর্ষক ঘটনা ঘটে। কলেরায় মৃত এক যুবকের বিধবা পত্নী চিতার আগুন দেয়ার পর সবার অলক্ষ্যে চিতা থেকে নেমে জঙ্গলে পালিয়ে যায়। শ্মশান যাত্রীরা চিতার মধ্যে সতীকে না পেয়ে জঙ্গল থেকে টানতে টানতে এনে এক ডিঙি নৌকায় করে মাঝ নদীতে নিয়ে ডুবিয়ে মারে।
এ ঘটনায় দেশের মধ্যে দারুণ উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। রামমোহন রায়ের দল ও কলকাতাবাসী ইংরেজরা প্রতিবাদ করেন। তখন বড়লাট ছিলেন লর্ড আর্মহাস্ট। এতবড় নিষ্ঠুর ঘটনার পরও তিনি সতীদাহ প্রথা বন্ধের আইন জারি করতে সাহস করেননি। তবে আরো কিছু কঠোর নিয়ম জারি করে সতীদাহকে নিয়ন্ত্রিত করলেন তিনি।
নিয়মগুলো ছিল এরকম :
কোনো সহমরণ নারীকে মৃত পতির সঙ্গে ছাড়া অন্যভাবে দাহ করা যাবে না বা অন্য কোনোভাবে হত্যা করা যাবে না।
সহমরণকামী বিধবাকে নিজে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে গিয়ে অনুমতি নিতে হবে, অন্যের মাধ্যমে অনুমতি নিলে হবে না।
বিধবার সহমরণে সহায়ক কোনো ব্যক্তি চাকরি পাবে না।
সহমৃতা বিধবাপতির কোনো সম্পত্তি থাকলে তা সরকার বাজেয়াপ্ত করবে।
সমাজের প্রতিকূল শক্তির বিরুদ্ধে চূড়ান্ত সংগ্রাম করে প্রতিরোধ আন্দোলন ও সংগ্রাম করেই রামমোহন রায় নিশ্চুপ হননি। তিনি হিন্দু শাস্ত্র থেকে সতীদাহ নিবারণের পক্ষে বহু উদ্ধৃতি সংগ্রহ করে এটাই প্রমাণ করলেন যে, বিধবার সহমরণ শাস্ত্র অনুমোদন করেনি এবং বিধবার শুদ্ধাচারের কথাই শাস্ত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। ১৮২৯ সালের ৪ জানুয়ারি লর্ড বেন্টিঙ্ক সতীদাহ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে ডিক্রি জারি করলেন।
বাংলার নারীর বাঁচার অধিকার পেল রামমোহন রায়ের কাছ থেকে। আর শিক্ষা সম্মান, ব্যক্তিগত স্বাধীনতা নিয়ে বাঁচার পথ খুঁজে পেল ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের চেষ্টায়। উনিশ শতকের প্রথমার্ধের প্রধান পুরুষ রামমোহন রায় এবং দ্বিতীয়ার্ধের প্রধান পুরুষ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের 'বাল্যবিবাহের দোষ' 'বিধবার পুনর্বিবাহ' বিষয়ে বহু লেখালেখি, তর্ক উত্থাপন ও কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়ার জন্য আইন প্রণয়নের চেষ্টা করে সফল হয়েছেন। ১৮৫৬ থেকে ১৮৬৭ পর্যন্ত মাত্র ১১ বছর সময়ে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ৬০টি বিধবা বিবাহের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। এসব বিয়ের খরচ বাবদ ৮২ হাজার টাকার দায়িত্ব তিনি নিজে বহন করেছিলেন। এজন্য ৫০ হাজার টাকা ঋণ হয়েছিল। এই ঋণের কথা শুনে তাকে ঋণমুক্ত করার জন্য হিন্দু পেট্রিয়ট ও এডুকেশন গেজেটের সম্পাদকরা এবং কয়েকজন ব্যক্তি বিধবা বিবাহ তহবিল খোলার উদ্যোগ নিলে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর আপত্তি জানান। সেজন্য এ উদ্যোগ বন্ধ হয়ে যায়। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর নিজেই সমস্ত ঋণ শোধ করেন। শুধু বিধবা বিবাহের সমর্থনেই নয়, বাল্যবিবাহ ও বহুবিবাহ বন্ধের জন্য ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর আন্দোলন করেছেন। বাল্যবিবাহ বন্ধের জন্য বহু আন্দোলনের পর ১৮৬০ সালে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের চেষ্টায় সহবাস সম্মতি আইন জারি হয়। সে আইনে মেয়েদের সর্বনিম্ন বিয়ের বয়স ১০ বছর। যেসব বিবাহিত মেয়েদের বয়স ১০ হয়নি তাদের সহবাসকে পাশবিক অত্যাচার হিসেবে গণ্য করা হতো। নারী শিক্ষায় মিশনারিদের উদ্যোগ : সমাজ সংস্কারমূলক উদ্যোগ নিয়ে নারী সমাজের দুর্গতি দূর করার জন্য উনিশ শতকের পুরো সময়জুড়ে বাংলার ইংরেজি শিক্ষিত ব্যক্তিদের উদ্যোগে সৃষ্টি হয়েছে এদেশের মেয়েদের শিক্ষার জন্য তৎপরতা। শ্রীরামপুরের মিশনারিরাই নারী শিক্ষার উদ্যোগে সর্বপ্রথম, যদিও খ্রিস্টধর্মের প্রসারই ছিল মূল লক্ষ্য। ১৮১১ সালে প্রায় ৪০ জন বালিকা নিয়ে উইলিয়াম কেরি মার্শম্যানও ওয়ার্ড ধর্মশিক্ষার জন্য প্রথম একটি বালিকা বিদ্যালয় খোলেন। ১৮১৮ সালে চুঁচড়ায় বালিকাদের জন্য আলাদা স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন লন্ডন মিশনারি সোসাইটির রবার্ট মে। এরপর স্থানীয় ব্যাপটিস্ট মিশনারিদের স্ত্রীদের উদ্যোগে অবিভক্ত বাংলায় প্রথম মেয়েদের শিক্ষা বিস্তারের প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৮৯ সালের মে-জুন মাসে কলকাতায়। প্রতিষ্ঠানটির নাম ছিল 'দি ফিমেল জ্যুভেনাইট সোসাইটি'। এই প্রতিষ্ঠান থেকে বাংলা ভাষায় শিক্ষা দেয়ার জন্য জাতি-ধর্ম-নির্বিশেষে ছাত্রীদের সুযোগ সৃষ্টি করে প্রথমে গৌরিবাড়ীতে একটি, পরে আরো কয়েকটি বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়। এসব স্কুলের ছাত্রীর সংখ্যা প্রথম বছর ছিল ৮, দ্বিতীয় বছর হয়েছিল ৩২। ইংরেজ মিশনারিদের উদ্যোগে পরিচালিত মেয়েদের স্কুলগুলো খ্রিস্টধর্ম প্রচারের বিষয়ে খুবই গুরুত্ব দিত। এ কারণে হিন্দু সম্ভ্রান্ত বংশীয়রা এসব স্কুলে পরিবারের মেয়েদের পড়াতে অনিচ্ছুক ছিলেন। এ সংকট দূর করার জন্য এলিয়ট ডিঙ্কওয়াটার বীটন বা বেথুন উদ্যোগী হয়ে ১৮৪৯ সালে একটি অবৈতনিক বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন করেন, যা বেথুন বালিকা বিদ্যালয় রূপে পরিচালিত হয়ে ওঠে। পরে বেথুন বালিকা বিদ্যালয় অনুসরণে বহু স্কুল খোলা হয়। ১৮৫৭-১৮৫৮ এর মধ্যে বাংলার বিভিন্ন জেলার মেয়েদের জন্য ৩৫টি স্কুল প্রতিষ্ঠা করা হয়। স্কুলগুলোতে আনুমানিক ১ হাজার ৩০০ ছাত্রী পড়ত, ৬ হাজার ১৪৫ টাকা মাসিক খরচ হতো। স্কুলগুলোর খরচ চালানোর জন্য বহু দেশি-বিদেশি শুভানুধ্যায়ীরা চাঁদা দিতেন। সময় পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে মেয়েদের পড়ার জন্য ঘরে ও স্কুলে ব্যবস্থা করার উদ্যোগ বেড়ে যায়। ১৮৫৪ সালে বাংলাদেশে ২৮৮টি স্কুলে ৬ হাজার ৮৬৯ জন্য ছাত্রী পড়াশোনা করেছে। বেথুন বালিকা বিদ্যালয় মেয়েদের উচ্চশিক্ষার পথ প্রশস্ত করে। প্রবেশিকা পরীক্ষায় মেয়েদের সাফল্য লক্ষ্য করে ১৮৭৯ সালে বেথুন কলেজ প্রতিষ্ঠা হয়। উল্লেখ্য, মেয়েদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধির জন্য বেথুন কলেজকে ১৮৮৮ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত করা হয়। চন্দ্রমুখী বসু ও কাদম্বিনী বসু বেথুন কলেজ থেকে মহিলাদের মধ্যে স্নাতক হওয়ার গৌরব অর্জন করেন। নারী শিক্ষার ইতিহাসে ১৮৮৩ সাল স্মরণীয় ও উজ্জ্বল একটি বছর। নারী জাগরণে ব্রাহ্মসমাজের ভূমিকা : রাজা রামমোহন রায় ব্রাহ্মসমাজের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ১৮২৮ সালে। নারীরা সামাজিক নিপীড়নের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করার জন্য তার যেসব পদক্ষেপ আত্মীয় সভার মাধ্যমে সাফল্য লাভ করেছিল তার বিস্তৃতি ঘটেছিল ব্রাহ্মসমাজের মাধ্যমে। সমাজ সংস্কারের সঙ্গে সঙ্গে ব্রাহ্মসমাজের উদ্যোগে মেয়েদের শিক্ষা চালু করা ও অবরোধ প্রথা দূর করার আন্দোলন শুরু হয়েছিল। সমাজে আশ্রয়হীনা, পতিতা, বিধবা, অত্যাচারিত মেয়েরা ব্রাহ্মসমাজে আশ্রয় পেত। পূর্ববঙ্গ ব্রাহ্মসমাজ ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৮৪৬ সালে। পরে পূর্ববঙ্গের সর্বত্র ব্রাহ্মসমাজ গড়ে উঠেছিল। এসব ব্রাহ্মসমাজের মূল উদ্যোক্তারা নারী শিক্ষার প্রসার ও নারী সমাজের উন্নয়নের দিকে দৃষ্টি দিয়েছিলেন। তবে এরা মূলত নীতি শিক্ষার দিকে গুরুত্ব দিয়েছিলেন। ব্রাহ্মসমাজের উদ্যোগে অবিভক্ত বাংলার সর্বত্র নারী জাগরণের সূচনা ঘটে। মেয়েদের জন্য স্কুল প্রতিষ্ঠা, বাড়িতে বাড়িতে আত্মীয় মেয়েদের শিক্ষা দেয়া, বিধবা বিবাহের প্রসার করা, কুলীন বিয়ে বন্ধ করা প্রভৃতি বাস্তব কর্মসূচি গ্রহণ করে বাংলার ব্রাহ্মণরা নারীকে সমাজের দুর্গতি থেকে রক্ষা করেছেন এবং নারী প্রগতির পথ উন্মুক্ত করতে সাহায্য করেছেন। বাংলার নারীদের জাগরণের সূচনাপর্ব এভাবেই শুরু হয়েছিল। গুরুচরণ মহালাবনিশ প্রথম ব্রাহ্মণ যিনি সামাজিক নিপীড়নের হাত থেকে জনৈকা হিন্দু বিধবাকে মুক্তি দেয়ার জন্য বিয়ে করেছিলেন। তার বাড়িতে প্রায় ৩০ জন হিন্দু কুমারী ও বিধবা সামাজিক আশ্রয় নিয়েছিলেন। এজন্য তাকে অনেক বিপদ ও ঝামেলায় পড়তে হয়েছিল। এভাবে ব্রাহ্মসমাজ নিপীড়নের হাত থেকে নারী সমাজকে রক্ষা করেছে। বাংলাদেশে ব্রাহ্মসমাজের মধ্যে বিশেষ করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পরিবার থেকে স্বর্ণকুমারী দেবী, সরলাদেবী চৌধুরাণী, প-িত রমাবাঈ প্রমুখের নাম উল্লেখযোগ্য। ঊনবিংশ শতকের শেষ ভাগে স্যার সৈয়দ আহমেদ ব্রেলভি, মীরনাসির আলী তিতুমীর ভারতে ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘটাতে সচেষ্ট হন। ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহের সময় স্যার সৈয়দ আহমদ খান, নওয়াব আব্দুল লতিফ, আমীর আলী প্রমুখ মুসলিম নর-নারী শিক্ষার প্রসার ঘটাতে সচেষ্ট ছিলেন। এদিকে প-িত রমাবাঈ, রমাবাঈ রানাডে, আনন্দিবাঈ যোশী, ফ্রান্সিসিয়া সোরাবজী, এ্যানি জগন্নাথ, রুমোবাঈ প্রমুখ শিক্ষিত নারী শিক্ষা ছাড়াও নারীদের নার্সিং শিক্ষা ও ডাক্তারি শিক্ষার জন্য আন্দোলন করেন। এভাবে অল্পসংখ্যক সমাজ সংস্কারক এবং কতিপয় শিক্ষিত ব্যক্তি বিশেষ করে ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ভারতে হিন্দু ও মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ে একটি শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণি গড়ে ওঠে। এরই ফলে ১৮৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত সর্বভারতীয় কংগ্রেস এবং ১৯০৬ সালের মুসলিম লীগে নারীরাও অংশ নিতে আগ্রহান্বিত হয়। এ প্রসঙ্গে সালমা খান বলেছেন, দেশের প্রভাবশালী রাজনৈতিক দল কর্তৃক অনুসৃত ও সমর্থিত নীতিমালার ওপরই নির্ভর করে সামাজিক ও রাজনৈতিক আন্দোলনে নারীদের সম্পৃক্ততা। উনিশ শতকের শেষভাগে কংগ্রেস বিভিন্ন সামাজিক সংস্কার সাধনে অংশ নেয়। অন্যদিকে, মুসলিম লীগে কিছু মহিলা সদস্য অন্তর্ভুক্ত করা হয় যদিও তারা গতানুগতিক প্রথা বা ভাবমূর্তি তুলে ধরার ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করতেন। জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে নারী : ঊনবিংশ শতকের শেষার্ধে বিশ শতকের প্রথমার্ধে ভারতের জাতীয়তাবাদী আন্দোলন যখন তুঙ্গে ওঠে তখন বাংলার নারীরাও সে আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে। একদিকে নিজস্ব অধিকারের দাবি প্রতিষ্ঠা, অন্যদিকে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মাতৃভূমিকে মুক্ত করার জন্য বাংলার অকুতোভয় নারীরা অনেক নির্যাতন, অত্যাচার ও জেল-জুলুম সহ্য করেও ভারতীয় জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে সামিল হন। এ সময় নারীমুক্তি আন্দোলন ও ঔপনিবেশিক শাসনবিরোধী আন্দোলন একাত্ম হয়ে যায়। নিম্নে বিভিন্ন আন্দোলনে নারীদের আন্দোলন তুলে ধরা হলো : স্বদেশী আন্দোলনে নারী : স্বদেশী আন্দোলনে নারী সমাজের ভূমিকা ছিল উল্লেখ করার মতো। ভারতীয় জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে বহুসংখ্যক নারী যুক্ত হয়েছিলেন। তখন ব্রিটিশ শাসনবিরোধী আন্দোলন দুই ধারায় চলছিল। জাতীয় গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও সশস্ত্র আন্দোলন

জাতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের এই দুই ধারার মধ্যদিয়ে সৃষ্টি হওয়া নারী আন্দোলনে যুক্ত হয়েছেন সরজিনী নাইড়ু, বাসন্তী দেবী, উর্মিলা দেবী, নেলীসেন গুপ্ত, মোহিনী দেবী, আশালতা সেন, সরযু সেন, প্রফুল্লমুখী বসু, জ্যোতির্ময় গাঙ্গুলী, লাবণ্যপ্রভা প্রমুখের নাম উল্লেখযোগ্য। বিপ্লবী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার, শান্তি ঘোষ, সুনীতি চৌধুরী, কল্পনা দত্ত, বীণা দাস, উজ্জ্বলা মজুমদার প্রমুখের নাম উল্লেখযোগ্য। ভারতীয় জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে মহাত্মা গান্ধী নারী আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ করেন। এতে বহু নারী গান্ধীর শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগদান করেন। নারীরা ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে নানারকম দেশাত্মবোধক গান গেয়ে নিজেদের মধ্যে উত্তাপ ছড়াতেন। জাতীয়তাবাদী চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ব্রিটিশ পণ্য বর্জন, স্বদেশী পণ্য উৎপাদন ও স্বদেশী পণ্য ব্যবহারের নানা ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন। দলে দলে দেশি কাপড়ের জন্য চড়কার সুতা কাটতে শুরু করেছিল। এ পদক্ষেপ শহর থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছিল। এর মধ্যদিয়ে আন্দোলন আরো বেগবান হয়েছিল।
অসহযোগ আন্দোলনে নারী : ১৯২১ ও ৩০-এর অসহযোগ আন্দোলনেও নারীদের সাহসিক কর্মকা- ছিল উল্লেখ করার মতো। এ সময় গান্ধীজি নারী সমাজের মধ্যে তীব্র আবেগ সৃষ্টি করেন। বাসন্তী দেবী ছিলেন দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাসের সহধর্মিণী। দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস অসহযোগ আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন তার পরিবারের সদস্য নিয়ে। ১৯২১ সালের ১৭ নভেম্বর প্রিন্স অব ওয়েলস ভারতে এলে হরতাল কর্মসূচি দেন। এতে সভাস্থল থেকে বাসন্তী দেবী, উর্মিলা দেবী, সুনীতি চৌধুরীসহ ২১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। পরে জনতার প্রতিবাদের পরিপ্রেক্ষিতে বাসন্তী দেবীকে সরকার মুক্তি দিতে বাধ্য হয়েছিল। সারা বাংলায় সে সময় থেকেই নারীরা জাগরিত হতে থাকে রাজনৈতিক সচেতনতা নিয়ে। উর্মিলা দেবী নারীকর্ম মন্দির নামে সংগঠন গড়ে তোলেন। সেখানে বহু নারীকে নেতৃত্বের পর্যায়ে গড়ে তোলা হয়েছিল। এই সংগঠনের কর্মকা-ের প্রভাবে ও অসহযোগ আন্দোলনের ডাকে হেমপ্রভা মজুমদার, সুনীতি দেবী, আশালতা সেন, নেলীসেন গুপ্ত, মোহিনী দেবী, জ্যোতির্ময়ী গাঙ্গুলী, সরলতা গুপ্ত, দৌলতুন্নেছা প্রমুখ প্রত্যক্ষভাবে উদ্বুদ্ধ হন। সমগ্র দেশের বিভিন্ন গ্রামে শহরে নারীর অসহযোগ আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ হয়ে একটি করে মহিলা সমিতি গঠন করে রাজনৈতিক কর্মকা-ে যুক্ত হতে থাকেন। এভাবে মহাত্মা গান্ধীর আহ্বানে ও প্রভাবে সিলেটের সরলাবালা দেবী, দিনাজপুরের বালুরঘাটের প্রভা চট্টোপাধ্যায়, ভোলার সুরবালা সেন, বরিশালের ইন্দুমতী গুহ ঠাকুরতা, নোয়াখালীর সুশীলা মিত্র, খুলনার স্নেহাশীলা চৌধুরী, বর্ধমানের সুরমা মুখোপাধ্যায় প্রমুখ নারী নিজ নিজ অঞ্চলে অসহযোগ আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে যোগ দিয়ে ব্যাপক নারীসমাজকে সংগঠিত ও সচেতন করার লক্ষ্যে বহু কর্মকা- পরিচালনা করেছেন। অসহযোগ আন্দোলনের কর্মসূচি অনুসারে ব্রিটিশ পণ্য বর্জিত হয়। সরকারি উপাধি বা খেতাব বর্জন, সরকারি দরবার পরিহার, সরকারি স্কুল-কলেজ বর্জন, ব্রিটিশ আদালত বর্জন, সৈন্য সংগ্রহে অসম্মতি, কাউন্সিল বর্জন, বিলাতি দ্রব্য পরিহার প্রভৃতি আন্দোলনে নারীদের অংশগ্রহণ ছিল উল্লেখ করার মতো।
খিলাফত আন্দোলনে নারী : ব্রিটিশ শাসন থেকে স্বদেশকে মুক্ত করার জন্য অসহযোগ আন্দোলনের পাশাপাশি চলেছে খিলাফত আন্দোলন। ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে মুসলমানদের দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত ক্ষোভ ও ধর্মীয় আবেগ অনুভূতি একত্রিত হয়ে খিলাফত আন্দোলনের গতি তীব্রতর হয়। খিলাফত আন্দোলনের মধ্যদিয়ে মুসলিম নারী সমাজের অংশগ্রহণ ছিল উল্লেখযোগ্য। অসাম্প্রদায়িক মুসলিম নেতাদের অন্যতম শওকত আলী ও মওলানা মোহাম্মদ আলী সুপরিচিত ছিলেন। তাদের মা বিবি আম্মা (বি-আম্মা) এসব সভায় ভাষণ দিতেন। তার এই ভাষণে শিক্ষাপ্রাপ্ত মুসলিম, অভিজাত নারীরা উদ্বুদ্ধ হয়ে আন্দোলনের জন্য অর্থ সাহায্য সংগ্রহের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ব্যাপক সংখ্যক মুসলিম নারী এই প্রথম রাজনৈতিক আন্দোলনে ও কাজে যুক্ত হয়েছিলেন। হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে নারীরা খিলাফত আন্দোলনের সভাগুলোতে যোগ দেন। সভাস্থলে বন্দেমাতারম ও আল্লাহ আকবর উভয় ধ্বনি উঠেছিল। মহিলারা পুরুষ সমাজকে অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দিতে আহ্বান জানাতেন। সন্তানদের মধ্যে দেশাত্মবোধ জাগ্রত করতেন ও অর্থ তহবিল সংগ্রহ করতেন। কংগ্রেসের এক সভায় বি-আম্মা উর্দুতে দেয়া ভাষণে বলেন, দেশ মাতৃকার মুক্তির জন্য প্রয়োজন হলে স্বামী পুত্রদের পাঠাতে হবে জেলে এবং নিজেদেরও ভয় দ্বিধা পরিহার করে বরণ করে নিতে হবে কারাগার। আমার সন্তানরা স্বদেশের স্বাধীনতার জন্য কারাবরণ করেছে। সেজন্য জননী হিসেবে আমি গৌরববোধ করছি। ১৯২১ সালে কংগ্রেসের অসহযোগ আন্দোলনের প্রচার কাজে বি-আম্মা তার দুই ছেলে মহাত্মা গান্ধীর সঙ্গে বিভিন্ন অঞ্চলে সফর করেছিলেন। বি-আম্মার এই উদ্দীপ্তমূলক ভাষণে বাংলার মুসলিম জনগণের মধ্যে খিলাফত আন্দোলনে যোগ দেয়ার প্রেরণা জাগে। মৃত্যুর তিন বছর আগে এক জনসভায় বি-আম্মা ভাষণ দেয়ার সময় সর্বপ্রথম তার বোরকা ত্যাগ করেন। তিনি বলেছিলেন যে, তারা সবাই তার ভাই ও সন্তানের মতো। তাই তাদের সামনে পর্দা করার কোনো প্রয়োজন তিনি দেখেন না। এভাবে তার এই পদক্ষেপ মুসলিম নারী সমাজকে অবরোধ থেকে মুক্ত করতে সাহায্য করেছে নিঃসন্দেহে। আইন অমান্যকারী আন্দোলনে নারী : কংগ্রেসের আহ্বানে ও উদ্যোগে সারা বাংলায় ১৯২৮ থেকে ৩৫ বছর পর্যন্ত ব্যাপক আন্দোলনের জোয়ার সৃষ্টি হয়েছিল। এসব আন্দোলনের মধ্যে আইন অমান্য আন্দোলন ও লবণ আইন অমান্য আন্দোলন ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। গান্ধীজির নেতৃত্বে এসব আন্দোলন পরিচালিত হয়েছিল। সিলেট কংগ্রেসের উদ্যোগে 'শ্রীহট্ট মহিলা সংঘ' গড়ে উঠেছিল ১৯৩০ সালে। এর সভানেত্রী ছিলেন জোবেদা খাতুন চৌধুরী। লবণ আইন অমান্য আন্দোলনে যোগ দিয়ে সিলেটের শত শত নারী ৪৪ ধারা ভঙ্গ করে পথ নেমেছিলেন। প্রায় ৬০ জনের মতো মহিলাকে কারাবরণ করতে হয়েছিল। লবণ আইন অমান্য আন্দোলনের সময় নারীরাও দলে দলে লবণ সংগ্রহের কাজে যোগ দেন। যে কোনো জেলায়, যে কোনো অঞ্চলে মহিলারা সভায় যেতেন জাতীয় পতাকা হাতে। জাতীয় পতাকা ওড়ানো নিয়ে পুলিশের সঙ্গে মহিলাদের বিরোধ বেধেই থাকত। এর ফলে বহু মহিলা গ্রেপ্তারও হতেন। স্বাধীনতার শপথ নিয়ে হাজার হাজার মহিলা আইন অমান্য আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ হয়ে ওঠেন। নারীরা পাবলিক মিটিং ও মিছিল করার নিষেধাজ্ঞা অমান্য করতেন। তারা প্রভাতফেরি, জাতীয় সংগীত ও দেশাত্মবোধক গান বাঁধতেও কার্পণ্য করেননি। সরকারের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে হেনসা মেহতার নেতৃত্বে প্রায় পাঁচশত নারী তিলকের মৃত্যুবার্ষিকীতে যোগদান করে। এমনকি আইন পরিষদের একজন সদস্য আনাসুয়া বাই তাঁর সদস্যপদ প্রত্যাহার করে আইন অমান্য আন্দোলনে যোগ দেন। বরিশালের মনোরমা বসু (১৮৯৭-১৯৮৬) আইন অমান্য আন্দোলনের জন্য ১৯৩০ সালে কারাবরণ করেন। তেভাগা আন্দোলনে নারী : অবিভক্ত বাংলার ১৩টি জেলার লক্ষ লক্ষ কৃষকের রক্তস্নাত তেভাগা আন্দোলনের প্রথম পর্যায়ে (১৯৪৫) থেকেই জোতদার-জমিদার এর লাঠিয়াল বাহিনী ও পুলিশের সঙ্গে সংগ্রামে কৃষক রমণীরা বীরত্বের পরিচয় দিয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল এলাকায় কৃষক আন্দোলনের নেতা রমেন মিত্র ও ইলা মিত্রের নেতৃত্বে যে তেভাগা আন্দোলন গড়ে উঠেছিল ১৯৪৮-৪৯ সালে সেই আন্দোলনে নারীদের প্রাণপণ লড়াই ও আত্মত্যাগের কাহিনী ইতিহাসে উলি্লখিত হয়েছে। ১৯৪৬ সালে ঠাকুরগাঁও মহকুমার অটোয়ারী থানার রামপুর গ্রামের কৃষকরা বর্গাদারের ধান কেটে আধিয়ারের বাড়িতে তোলা শুরু করলে বহু কৃষক কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়, তা সত্ত্বেও ধান কাটা বন্ধ হয়নি। আবার পুলিশ আক্রমণ করতে এলে ওই গ্রামের রাজবংশী মহিলা দীপেশ্বরী লাঠি হাতে পুলিশকে তাগড়া করলে পুলিশ ভয় পেয়ে পিছু হঠে যায়। দীপেশ্বরীর এই বীরত্বমূলক প্রতিরোধের মুখে পুলিশের পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা সব তেভাগা আন্দোলনকারীদের মধ্যে অণুপ্রেরণা জাগিয়েছিল। দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও এলাকায় বহু মহিলা কৃষককর্মী আন্দোলনের নেতৃত্বে এগিয়ে এসেছিলেন। পুলিশের আক্রমণে পুরুষকর্মীরা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য ধান কাটা ও কৃষকের গোলাতে ধান তোলার কাজে জয়মণির নেতৃত্বে শত শত মেয়ে পুরুষ কৃষকদের আগে থাকত। এজন্য মেয়েদের ওপর অনেক ধরনের নির্যাতন নেমে আসত। চুরি-ডাকাতি, মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করা হয়েছিল। তবে নারীর সাহসিকতার মাধ্যমে এগুলো মোকাবিলা করেছিল। রংপুর, জলপাইগুড়ির দেবীগঞ্জ, যশোরের নড়াইল এলাকার বাকড়ি, দেগোছা, কমলাপুর, ঘেড়োনাচ, হাতিয়ারা, গুয়াখোলা, বেলাহাটি ইত্যাদি গ্রামে তেভাগার আন্দোলন জোরদার হয়ে উঠেছিল। গুয়াখোলা গ্রামের শত শত মহিলাকে নিয়ে ঝাঁটা বাহিনী গড়ে তোলেন। এরা শুধু ভলান্টিয়ার কাজ করতেন তা নয়, এরা দুর্ধর্ষ ও কৌশলী নেত্রী হিসেবে গড়ে উঠেছিলেন। ঢাকা জেলাতেও বিভিন্ন গ্রামে তেভাগা আন্দোলনের প্রথম পর্যায়ে মহিলারা সংগঠিত হয় এবং তারা বীরত্বের সঙ্গে পুরুষকর্মীদের পাশে লড়াই করতে থাকে। তেভাগা আন্দোলনের দ্বিতীয় পর্যায় ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত বাংলার চাষি মেয়েরা বীরত্বের সঙ্গে ব্যাপকহারে সংগ্রাম করেছে। তেভাগা আন্দোলনের মধ্যদিয়ে প্রচারক, সংগঠক ও আন্দোলনকারী হিসেবে অনেক মহিলা তৈরি হয়েছে। রমেন মিত্র ও ইলা মিত্রের নেতৃত্বে তেভাগা আন্দোলনে অনেক সাঁওতাল মহিলা যোগদান করেছিল। তৎকালীন সরকার আন্দোলনকারীদের ওপর দুর্বিষহ নির্যাতন চালায় এবং নেত্রী ইলা মিত্রের ওপর চালায় নির্মম অত্যাচার। এতসব কিছু সহ্য করেও কৃষক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে পরিচালিত তেভাগা আন্দোলনে বাংলার নারীরা প্রাণপণ লড়াই করেছে, যা ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা হয়ে থাকবে। কৃষক বিদ্রোহ ও নারী : ব্রিটিশ যুগে বাংলার কৃষক আন্দোলনে গ্রামীণ নারীদের ব্যাপক অংশগ্রহণ লক্ষ্য করা যায়। শুধু অংশগ্রহণ নয়, আন্দোলন পরিচালনায়, সশস্ত্র সংগ্রামে, ত্যাগ স্বীকারে, শত্রু মোকাবিলায়, সংগঠন গড়ে তোলায় কৃষক রমণীরা যেমন শৃঙ্খলাবোধের পরিচয় দিয়েছেন তেমনি দেখিয়েছেন সাহস ও দৃঢ়তা। শুধু তাই নয় কৃষক পরিবারের মহিলারা একই সময় তাদের সামাজিক, পারিবারিক নিপীড়নের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে নারী সংগঠন ও আন্দোলন গড়ে তুলেছেন। বিশ শতকের তিরিশের দশক থেকে চলি্লশের দশকের মধ্যে ভারত উপমহাদেশের পশ্চিম ও পূর্ব বাংলার বিভিন্ন জেলায় টংক, নানকার আন্দোলন হয়েছে। এসব আন্দোলন একদিকে যেমন ছিল জোতদার জমিদারদের শোষণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ সংগ্রাম, তেমন অন্যদিকে ছিল ব্রিটিশ রাজ্যের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা সংগ্রামের একটি অবিচ্ছিন্ন অংশ। ব্রিটিশ সরকার ১৭৯৩ সালে চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের আইন জারি করে মধ্যযুগের সামন্ত প্রভুর বদলে নতুন সামন্তপ্রভু সৃষ্টি করল, এরা হলো জমিদার। এই জমিদাররা শহরের মানুষ, গ্রামে জমি রাখতেন। খাজনা আদায়ের জন্য তারা যাদের নিয়োগ করতেন বিভিন্ন নামে অভিহিত হয়ে হলেন তালুকদার, জোতদার, হাওলাদার ইত্যাদি মধ্যস্তরভোগী। বংশানুক্রমে চাষ করার যে অধিকার কৃষকের ছিল সে অধিকার চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত আইনে কেড়ে নেয়া হয়েছিল। আর সেই অত্যযাচারে বিরুদ্ধে লড়াই করতে এগিয়ে  আসে নারী শক্তি। একথা ভুলে গেলে ইতিহাসের অবমাননা করা হবে ।

-------------------------------------

দেবাশিস কোনার, মনবিতান, বাদশাহি রোড, রবীন্দ্রকানন, বর্ধমান।



Comments

বিধিবদ্ধ স্বীকার্য :

লেখার বক্তব্যের দায়িত্ব লেখকের, পত্রিকার নয়। আমরা বহু মতের প্রকাশক মাত্র।

মতামত/লেখা এখানে জমা দিন

Name

Email *

Message *

সাম্প্রতিক বাছাই

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯১তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পাদকীয় দপ্তর থেকে এই সংখ্যায়  'শিক্ষা ও শিক্ষক' বিষয়ক বেশ কিছু লেখার পাশাপাশি রয়েছে বিচিত্র বিষয়ের আরও কিছু লেখা। সব মিলিয়ে সংখ্যাটি আপনাদের সমৃদ্ধ করবে, আপ্লুত করবে — এ বিষয়ে আমরা আশাবাদী। আপনাদের মতামত অবশ্যই জানাবেন। আমরা প্রতীক্ষিত।            আগামী অক্টোবর ২০২৫ সংখ্যা 'উৎসব সংখ্যা' হিসাবে প্রকাশিত হবে। ওয়েব সংখ্যার পাশাপাশি নির্বাচিত লেখাগুলি নিয়ে একটি pdf এবং তার মুদ্রিত সংস্করণও প্রকাশিত হবে। তাই অপ্রকাশিত ভালো লেখা পাঠান। বিশেষ কোনও বিষয় নেই। প্রবন্ধ-নিবন্ধ-ফিচার ২০০০ শব্দ, গল্প ১২০০ শব্দ, অণুগল্প ৫০০ শব্দ, কবিতা-ছড়া ২৪ লাইনের মধ্যে হলে ভালো। ইমেলঃ nabapravatblog@gmail.com           বিস্তারিত বিজ্ঞপ্তি আসবে। সামাজিক মাধ্যমে আমদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন। সময় মতো সব সংবাদ পেয়ে যাবেন।  শারদ উৎসবের দিনগুলি সকলের আনন্দে কাটুক এই কামনা করি। —নিরাশাহরণ নস্কর সম্পাদক: নবপ্রভাত মোঃ ৯৪৩৩৩৯৩৫৫৬ Whatsapp Group:  https://chat.whatsapp.com/ AIpj98JKbloFSpeqMcpr6j Facebook Page:  https://www.facebook.com/ share...

শিক্ষার সেকাল ও একাল ।। অমৃতা সাহা

শিক্ষার সেকাল ও একাল অমৃতা সাহা  শিক্ষক শব্দটির ব্যুৎপত্তি √শিক্ষ+ অক অর্থাৎ যিনি শিক্ষা দান করেন। শিক্ষক শব্দটি সংস্কৃত শিক্ষ ধাতু থেকে উদ্ভুত যার অর্থ বিদ্যা গ্রহণ করা, শেখা বা বিদ্যা দান করা। শিক্ষ ধাতুর সঙ্গে ক প্রত্যয় যোগে উৎপন্ন শিক্ষক যার অর্থ শিক্ষা সম্পর্কিত।          শিক্ষককে বলা হয় মানুষ গড়ার কারিগর। শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর থেকে প্রায় ছয় মাস বা আট মাস সে সহজাত প্রবৃত্তি অনুযায়ী শিক্ষা লাভ করে থাকে। তারপর থেকে মা বাবাই তাকে জীবনের প্রথম পাঠ দেন। কী কী করতে হয় আর কী কী করতে নেই তাই দিয়েই শিশুর প্রথম শিক্ষা শুরু হয়। অনুকরণই হলো তখন তার একমাত্র শিক্ষার মাধ্যম। তারপর কথা বলতে শেখা, আশেপাশের সামগ্রী চিনে নিয়ে তাদের নাম বলতে শেখা এভাবে ক্রমান্বয়ে শিক্ষা প্রক্রিয়া চলতেই থাকে।         প্রাচীন কালে পঞ্চম বর্ষে উপনয়ন অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে শিশুর শিক্ষা জীবন শুরু হতো। গুরুগৃহে বসবাস করে, ব্রহ্মচর্য পালনের মাধ্যমে বাল্য ও কৈশোর কাল অতিবাহিত হতো। পুঁথিগত অধ্যয়ন, শ্রুত্বয়ন এর পাশাপাশি জীবনের অন্যান্য বিষয়েও শিক্ষা গ্রহণ করতে হ...

Five poems ।। Prasenjit Das

  Five poems of Prasenjit Das THE FLAME IS ON Life may not be a green leaf, the dews are tears in grief. Life for many maybe cruel, give me the guts for the duel. The good times passed by me, like a humming bird in destiny. If not in life then maybe after, let life be a pleasant chapter. No, I will never give up,...never, be an example for all, forever... THE OPTIMIST Never be drowned in sorrow, as if there is no tomorrow. Tomorrow is a day uncrowned, tomorrow is a time unbound. Many things are left to be done, the path of glory has already begun. The darkness shows the light, life is nothing, nothing but a fight. You will be a winner, sooner or later, the spirit of good will fight for better. The light of honesty burns bright, even in the darkest dark of the night. A LONELY FATHER'S CALL O lonely man! O lonely man! Where is thy rugged winter coat? Bore the ravages of eighty seasons, that still makes thee soul to float. O lonely man! O lonely man! Where is thy loveth destiny? Fough...

শিক্ষার সেকাল-একাল : এক দার্শনিক অনুসন্ধান ।। কৃশানু ব্যানার্জী

প্রবন্ধ শিক্ষার সেকাল-একাল : এক দার্শনিক অনুসন্ধান কৃশানু ব্যানার্জী  মানবসভ্যতার ইতিহাসে শিক্ষার স্থান যে সর্বাপেক্ষা কেন্দ্রীয় ও নির্ণায়ক — এ বিষয়ে দ্বিধার অবকাশ নেই। কারণ শিক্ষা কেবল জ্ঞানের বাহনমাত্র নয় , বরং মানুষের আত্মস্বরূপের এক অবিচ্ছেদ্য অনুষঙ্গ , যা সমাজ ও সংস্কৃতির গতিপথকে নির্ধারণ করে। কিন্তু শিক্ষা কেমন ছিল অতীতে এবং কেমন হয়েছে বর্তমানকালে — এই অনুসন্ধান শুধু ঐতিহাসিক বা প্রাতিষ্ঠানিক পর্যালোচনার সীমায় আবদ্ধ নয় ; বরং এর ভেতরে নিহিত আছে এক গভীর দার্শনিক তাৎপর্য। "সেকাল" ও "একাল" — এই দুই কালের শিক্ষা পরস্পরকে নিরন্তর প্রশ্ন করে , কখনও বিরোধিতা করে , কখনও বা পরস্পরের ওপর দাঁড়িয়েই নিজের রূপ নির্মাণ করে। অতএব , শিক্ষার সেকাল-একাল তুলনায় আমাদের কেবল তথ্যের বিবরণ নয় , মানবজীবন ও সমাজচিন্তার প্রকৃত ভিত্তি উপলব্ধি করতে হবে। মানবসভ্যতার অগ্রযাত্রায় শিক্ষা যে একটি অনিবার্য ও মৌল প্রয়োজনে পরিণত হয়েছে, সে বিষয়ে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই। তথাপি 'শিক্ষা' শব্দটির নিতান্ত ভৌত বা প্রাতিষ্ঠানিক ব্যাখ্যা একে পূর্ণাঙ্গ উপলব্ধি করতে সক্ষম নয়। সংস্কৃত ...

শিক্ষক ।। জীবন সরখেল

শিক্ষক  জীবন সরখেল   শিক্ষা চেতনা প্রসারে যাঁরা নিবেদিতপ্রাণ  প্রকৃতি পরিবেশ প্রাণীর   ধারক বাহক ও মান... যাঁদের স্মরণ উপস্থিতিই  কমে মিথ্যা গ্লানি  সেবায় দ্রোহেও নিরপেক্ষ  ঠেলেন সব হয়রানি। কর্ম আচরণ চিন্তন ত্যাগ  সত্য সপ্রেম নিষ্ঠায় গড়েন চিরন্তন সমাজ ভিত নীতি উদারতায়....  নিঃস্বার্থ ভাব ঠিক ভুল গুণেই  অভিজ্ঞতা দীক্ষক  বাবা মা পরিবেশ গুরুই সবার আপন শিক্ষক। __________________       জীবন সরখেল গ্রাম -বাড়াভগলদিঘী, পোস্ট -ভগলদিঘী, থানা-জয়পুর, জেলা-বাঁকুড়া। পিন-৭২২১৫৪  

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮১তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩১ নভেম্বর ২০২৪

সূচিপত্র  প্রবন্ধ।। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার গবেষণা ।। শ্যামল হুদাতী প্রবন্ধ ।। নবদ্বীপের রাস : মহাপ্রভু চৈতন্যদেব থেকে রাজা কৃষ্ণচন্দ্র ।। বারিদ বরন গুপ্ত  প্রবন্ধ।। কবিতায় সাংস্কৃতিক সেতুবন্ধন ।। রণেশ রায় প্রবন্ধ ।। সুকান্ত ভট্টাচার্য: বিপ্লবী চেতনার কবি ।। বিচিত্র কুমার কবিতা ।। পরিযায়ী বৃষ্টি ।। সন্দীপ ভান্ডারী দুটি কবিতা : চয়ন দত্ত কবিতা ।। সমঝোতা ।। বিশ্বজিৎ বাউনা কবিতা।। ভালোবাসা।। অরুণ কুমার দাঁ কবিতা।। সময়ের গতিপথে ।। কেতকী বসু গ্রন্থ   আলোচনা।। অরবিন্দ পুরকাইত ।।  গ্রন্থ : বিক্রমজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের  "বাংলা সাহিত্যে মনুষ্যেতর প্রাণীকেন্দ্রিক ছোটগল্পের ধারা" ছোটগল্প।। হ্যাপি বার্থডে।। পরেশ চন্দ্র মাহাত কবিতা।। অন্ধকার রাত জাগে।। অঞ্জন বল অনুবাদ কবিতা।। তুমি আসার আগে।। সুস্মিতা পাল দুটি কবিতা ।। রবীন বসু কবিতা ।। নতুন শাসন ।। মানস মণ্ডল কবিতা ।। শীত ।। প্রতীক মিত্র কবিতা ।। সাঁঝবাতি ।। তীর্থঙ্কর সুমিত কবিতা ।। চুপ কথা হৃদয়ে ।। তুষার ভট্টাচাৰ্য ছড়া ।। ভোর ।। বদ্রীনাথ ছোটগল্প ।। ফিরে পাওয়া ।। সমীর কুমার দত্ত কবিতা ।। রূপ বদলায় ।। সুমিত মোদক কবিতা ।। এভা...

স্মৃতিকথা ।। ৺বিজয়ার চিঠি ।। ভাস্কর চৌধুরী

উৎসব শেষের শূন্যতা এখন গ্রাস করে আছে আদিগন্ত। হঠাৎ ভেসে আসা ছাতিম ফুলের গন্ধ যেমন মাতাল করে দেয় ঠিক তেমনই মন আচ্ছন্ন হয়ে থাকে এক না ছুঁতে পাওয়া আলোর পিপাসায়। উৎসব শেষের নিভে যাওয়া সন্ধ্যেবেলার আলোয় ম্লান হয়ে আসে জীবনের টুকরো টুকরো খুশির আমেজ।  বিসর্জনের শেষে ছেলেবেলায় গোটা গোটা অক্ষরে হলদে রঙা পোস্টকার্ড আর নীলচে-সবুজ ইনল্যান্ড লেটারে দূরের সব্বাইকে পাঠাতে হতো ৺বিজয়ার চিঠি! বয়ান মোটামুটি ওই একই ― বড়দের শুভ ৺বিজয়ার প্রনাম আর যেহেতু আমরা তখন ছোট তাই আশীর্বাদ জানানোর কেউ থাকতো না। তবুও কুঁচোকাঁচা ছোট ভাইবোনদের মনের আদর কলমের ডগায় উগড়ে দিতুম সে চিঠিতে!  ৺বিজয়ার চিঠি আসলে পুজোর ছুটির শেষে হাতের লেখা করিয়ে নেবার এক অলৌকিক ষড়যন্ত্র! ইচ্ছে নেই তবুও জোর করে ওই হাতের লেখা শুধু নয়, বানান, বাক্যগঠন সব কিছু সুকৌশলে করিয়ে নেওয়ার ফন্দি। এটা বুঝেছি অনেক পরে। আর যখন বুঝতে পেরেছি তখন কিন্তু সেই চিঠি পাঠানোর মানুষগুলো মনের মধ্যে গেঁথে গেছে। তখন যেন সত্যি সত্যি মন বলতো হোক না ওই পোস্টকার্ড বা ইনল্যান্ড লেটারের একচিলতে জমি, আমার খাস দখল তো থাকবে তাতে! জানেন, এখন আর কেউ ৺বিজয়ার চিঠি পাঠায় না! পুজো ...

অসবর্ণ ।। দেবাংশু সরকার

অসবর্ণ দেবাংশু সরকার       ইন্টারভিউ দেওয়ার পর অরূপের মনে হয়েছিল চাকরিটা হয়তো সে পেয়ে যাবে। বেশ ভালোভাবেই সে ইন্টারভিউতে করা প্রশ্নগুলোর উত্তর দিয়েছিল। সেইসঙ্গে ক্যাশ হ্যান্ডেলের তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথাও বলেছিল। অরূপের মনে হয়েছিল ইন্টারভিউ বোর্ডে যারা ছিলেন তাদের হয়তো অরূপের কথাবার্তা বেশ ভালো লেগেছে। বারে বারে তাদের মাথা নাড়া, মুখের হাসি দেখে অরূপের মনে হয়েছিল তারা হয়তো অরূপের প্রতি কিছুটা হলেও সন্তুষ্ট। বেসরকারি চাকরি হলেও এই অফিসটা সব রকম সরকারি নিয়মকানুন মেনে চলে। প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্রাচুইটি, বোনাস সব রকম সুবিধা কর্মচারীরা পায়। চাকরির শেষে পেনশনের ব্যবস্থাও আছে। হয়তো সরকারি চাকরির মত বড় অঙ্কের  পেনশন এই কোম্পানির অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীরা পায় না। কিন্তু পেনশন বাবদ প্রতি মাসে কিছু টাকা তাদের হাতে আসে। মাহিনাও খুব একটা খারাপ নয়। অর্থাৎ সরকারি চাকরির মত অত সুবিধা না থাকলেও, তুলনামূলকভাবে খুব একটা খারাপও নয়। কিন্তু একটাই অসুবিধা তাকে বাড়ি ছেড়ে থাকতে হবে। কারণ এই অফিসটা অরূপের বাড়ি থেকে অনেকটা দূরে। বাড়ি থেকে প্রত্যেক দিন অফিসে যাতায়াত করা সম্ভ...

ডাকবাক্সের আত্মকথা ।। হারান চন্দ্র মিস্ত্রী

ডাকবাক্সের আত্মকথা হারান চন্দ্র মিস্ত্রী পোস্ট অফিসে কিংবা পথের পাশে, আমরা ছিলাম চিঠিগুলোর আশে। সুখ ও দুঃখের কথা থাকত লেখা ভালোবাসার আতর যেত দেখা। মুঠোফোনের দাপট গেছে বেড়ে স্বপ্ন যত সব নিয়েছে কেড়ে। পত্র লিখে পাঠায় না কেউ মোরে ব্রাত্য জীবন কাটাই কেমন করে? ধীরে ধীরে যাচ্ছি উধাও হয়ে ভারাক্রান্ত স্মৃতি আঁকড়ে ধরে। কোন মানুষ কয় না আমায় ধরে - আবার তোকে নেব আপন করে। আমরা এখন বুঝে গেছি সহে প্রয়োজনের বড় কিছু নহে। সমকালের প্রয়োজনে থেকে বিদায় নিতে হবে ভূবন থেকে। ________   হারান চন্দ্র মিস্ত্রী গ্রাম ও পো: - আমতলা, থানা - ক্যানিং, জেলা - দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পিন - ৭৪৩৩৩৭

শিক্ষক ।। রাফেল ইসলাম

শিক্ষক মানে রাফেল ইসলাম   শিক্ষক মানে বুকে টেনে  দুর্দিনে দুঃখ ভোলান,  শিক্ষক মানে আন্তরিকতায় শিক্ষা করেন দান।  শিক্ষক মানে বিদ্যা দিয়ে  আঁধার দূর করে,  শিক্ষক মানে স্নেহের পরশে ছাত্র জীবন ভরে।  শিক্ষক মানে আদর্শের উৎসাহে  মেলে ভবিষ্যতের দিশা,  শিক্ষক মানে দরদ দিয়ে  বাঁচিয়ে রাখে আশা।  শিক্ষক মানে গ্রীষ্মের দিনে  মস্ত বটের ছায়া,  শিক্ষক মানে নিবিড় ভালবাসার  শান্ত ঊষার মায়া।  শিক্ষক মানে জ্ঞানের আলোয়  সমাজ গড়ে তোলে,  শিক্ষক মানে সঠিক পথের  মূল দুয়ার খোলে।।    =============           নাম-রাফেল ইসলাম।  গ্রাম-বাগান বেড়িয়া (বিড়লাপুর)। পোস্ট-চককাশিপুর।  থানা-নোদাখালি।  জেলা-দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা।  পিন নম্বর-৭৪৩৩১৮.

জনপ্রিয় লেখা

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ -- "ত্রয়ী কাব্য" ------------------------------------------------------------------------------ সুনন্দ মন্ডল নবীনচন্দ্র সেন সাহিত্যে তথা বাংলা কবিতার জগতে এক অবিস্মরণীয় নাম। তিনি চট্টগ্রাম জেলার নওয়াপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ১৮৪৭ সালে তাঁর জন্ম এবং মত্যু ১৯০৯ সালে। বঙ্কিমচন্দ্র তাঁকে 'বাংলার বায়রন' বলেছেন। ‎জীবৎকালীন যুগে আত্মপ্রত্যয়ের মধ্যে জাতীয় চরিত্র আত্মস্থ করে নতুন সংস্কারে প্রয়াসী হয়ে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখেছেন।মধুসূদন-হেমচন্দ্র-নবীনচন্দ্র--এই তিন কবি বাংলা কাব্যধারায় প্রাণ সঞ্চার করেছিলেন। বিশেষত মহাকাব্য লেখার দুঃসাহস দেখিয়েছিলেন। এদিক থেকে মধুসূদন দত্ত একজন সফল মহাকাব্যিক। তাঁর 'মেঘনাদ বধ' কাব্যের মত গভীর ও ব্যঞ্জনাময় না হলেও নবীনচন্দ্র সেনের 'ত্রয়ী' কাব্য বিশেষ মর্যাদা দাবি করতেই পারে। তাছাড়া 'ত্রয়ী' কাব্যে ধর্মীয় ভাবধারার আবেগ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ‎ ‎নবীনচন্দ্র সেন বহু কাব্য লিখেছেন। যেমন- 'অবকাশরঞ্জিনী','পলাশীর যুদ্ধ', 'ক্লিওপেট্রা', 'রঙ্গমতী', 'খ্রীষ্ট', ...

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা শ্রীজিৎ জানা "সময় চলিয়া যায় নদীর স্রোতের প্রায়"। স্রোতের ধারা তার দু'প্রান্তে রেখে যায় ভাঙাগড়ার চিহ্ন। কালের দৃশ্যপটেও পরিবর্তনের ছবি অনিবার্যভাবেই চোখে পড়ে। সমাজ সময়ের ছাঁচে নিজেকে গড়ে নেয় প্রতিনিয়ত।  সেখানে মনে নেওয়ায় বাধা থাকলেও,মেনে নেওয়ার গাজোয়ারি চলে না। ফলত কাল বদলের গাণিতিক হিসেবে জীবন ও জীবিকার যে রদবদল,তাকেই বোধকরি সংগ্রাম বলা যায়। জীবন সংগ্রাম অথবা টিকে থাকার সংগ্রাম।  মানুষের জীবনযাপনের ক্ষেত্রে আজকে যা অত্যাবশ্যকীয় কাল তার বিকল্প রূপ পেতে পারে অথবা তা অনাবশ্যক হওয়াও স্বাভাবিক। সেক্ষেত্রে উক্ত বিষয়টির পরিষেবা দানকারী মানুষদের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হওয়া অস্বাভাবিক নয়। এক কালে গাঁয়ে কত ধরনের পেশার মানুষদের চোখে পোড়তো। কোন পেশা ছিল সম্বৎসরের,আবার কোন পেশা এককালীন।  সব পেশার লোকেরাই কত নিষ্ঠা ভরে গাঁয়ে  তাদের পরিষেবা দিত। বিনিময়ে সামান্য আয় হত তাদের। আর সেই আয়টুকুই ছিল  তাদের সংসার নির্বাহের একমাত্র উপায়। কালে কালান্তরে সেই সব পেশা,সেই সব সমাজবন্ধুরা হারিয়ে গ্যাছে। শুধুমাত্র তারা বেঁচে আছে অগ্রজের গল্পকথায়,আর বিভিন...

গ্রন্থ আলোচনা: শর্মিষ্ঠা দেবনাথ

প্রতিবাদ যখন অগ্নিবাণী বাংলাদেশে নারীমুক্তি ও নারী আন্দোলনের পুরোধা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ১৯৯তম জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদিত হল " আসিফা এবং.." কাব্য সংকলনটির মধ্যদিয়ে।সংকলনটির বিশেষত্ব হল,এটি উৎসর্গ করা হয়েছে নারীর সম্মান রক্ষার আন্দোলনের যোগ্যতম ব্যক্তি শহীদ শিক্ষক বরুন বিশ্বাসকে। সংকলক প্রকাশক সন্দীপ সাহু নিজে এবং বিশিষ্ট কবি সাহিত্যিকদের দিয়ে লিখিয়ে নিয়েছেন এমন কিছু কবিতা, যা শুধুমাত্র শব্দ ও ছন্দের অনুবন্ধ নয়, এক একটি অগ্নিবাণী।আসলে জীবনকে দেখার স্বাতন্ত্র‍্যে কবিরা সব সময়ই অগ্রগণ্য এবং অনন্য।যুগ ও জীবন দ্বন্দ্বের কণ্ঠস্বরকে আশ্রয় করে,একদিকে মনের প্রবল দাহ ও অন্যদিকে  নির্যাতিতা শিশুকন্যা ও নারীর প্রতি মনের গভীর আকুলতা থেকে প্রকাশ পেয়েছে "আসিফা এবং" এর  কবিতাগুলি।এক অন্ধকার সময়ের মুখোমুখি আমরা,সেই অন্ধকার আমাদের নিয়ে এসেছে সামাজিক অবক্ষয়ের শেষধাপে যেখানে নৈতিকতা,পাপবোধ,গ্লানিকে সরিয়ে রেখে, সমাজের বানানো নিয়মকে তোয়াক্কা না করে,অনায়াস দক্ষতায় ও ক্ষিপ্রতায় নিজেরই ধর্মচেতনাকে জলাঞ্জলি দিয়ে কিছু মানুষ তার পশুত্বের পরিচয় দিয়েছে ধর্ষণ ও ন...

শ্যামাপদ মালাকারের কবিতা

চোখ """"""" নদী, অরণ্য, রাতের ফালি চাঁদ- সবেই তো আমার...স্বর্ণপিঁড়িটাও!। সেদিন, শুকতারাটার গা' মাপতে গিয়ে মনে হল, --ওরা আমার চেয়েও সুখী? দেখিনা একবার গাইতি-শাবল চালিয়ে... চালালাম। জল-মাটি ভেজা একটা 'চোখ' কুড়িয়ে ফিরলাম! সেই চোখদিয়ে দেখি-- শেষ বিকেলের নিরন্ন আঁচে ঝলসানো বুকে নীড়ে ফিরছে ধূলিমাখা কত কাল পা, কি শান্তি - কি তৃষ্ণা! পাতাক্ষোয়া কোদালেরর মাথায় ঝরেপড়া ললাটের ঘামে, কারা যেন জীবন শাণ দেয়! রুক্ষঠোঁটের আবরণে এক সময় নেমে আসে শিশিরস্নাত কালনিশি-- মাঝের ব্যবধান মুছে দেয় প্রতিশ্রুতির ভীড়- - পূর্বজনমের নিদর্শনচুম্বন শেষে হেরে যায় কার মমতাজ-- ম্লান হয়ে যায় কত পিঁড়ি! ... ম্লান হয়ে যায় কত পিঁড়ি! ... ম্লা...

কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা: এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায় ।। পার্থ সারথি চক্রবর্তী

  কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা : এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায়  পার্থ সারথি চক্রবর্তী  কথায় বলে বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। রাজার শহর কোচবিহারের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা আরো অনেক বেশি। দুর্গাপূজা আর দীপাবলির মতো দু'দুটো বিরাট মাপের উৎসবের রেশ কাটতে না কাটতেই, এ শহর ভাসে রাস উৎসবের উন্মাদনায়। মদনমোহন ঠাকুর কোচবিহারের প্রাণের ঠাকুর। তাঁকে নিয়ে সবার আবেগ আর শ্রদ্ধা ও ভালবাসা এখানে বাঁধনছাড়া। এক অপূর্ব মিলনোৎসবের চেহারা নেওয়া এই উৎসব ঐতিহ্যবাহী ও ঐতিহাসিক। জন, মত, সম্প্রদায়ের উর্ধে এই উৎসবের গ্রহণযোগ্যতা। সময়ের কষ্টি পাথরে পরীক্ষিত! এক প্রাণের উৎসব, যা বহুদিন ধরেই গোটা উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ উৎসবে পর্যবসিত।কোচবিহারের এই রাস উৎসবকে কেন্দ্র করে যে মেলা হয় তাও সময়ের হাত ধরে অনেক বদলে গেছে। এসেছে আধুনিকতার ছোঁয়া! শৈশবে বাবার হাত ধরে যে মেলা দেখেছি তা চরিত্র ও আকৃতি দু'দিক থেকেই বদলে গেছে। গত পঁচিশ বছর ধরে খুব কাছে থেকে এই উৎসব ও মেলা দেখা, অনুভব করার সুযোগ হয়েছে। যা দিনদিন অভিজ্ঞতা ও প্রাপ্তির ঝুলিকে সমৃদ্ধ করে গেছে প্রতি ক্ষেত্রেই।  খুব সংক্ষেপে এই উৎসবের ইতিহাস না জানাটা কিন্তু অবিচারই ...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কোন বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো (যেমন, কবিতা ১২-১৪ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে)। তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়। সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৫-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # *) ব্যবহার করবেন না। ৫) লেখার নীচে একটি ঘোষণা দিন: ...

মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা 2024 সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি (লেখক ও সম্পাদকীয় দপ্তরের কথোপকথন আকারে) --কী পত্রিকা? --নবপ্রভাত। --মুদ্রিত না অনলাইন? --মুদ্রিত। --কোন সংখ্যা হবে এটা? --বইমেলা 2024। --কোন কোন ধরনের লেখা থাকবে? --প্রবন্ধ-নিবন্ধ, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া। --বিশেষ কোন বিষয় আছে? --না। যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে। --শব্দ বা লাইন সংখ্যার কোন বাঁধন আছে? --না। নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো (যেমন, কবিতা 12-14 লাইনের মধ্যে, অণুগল্প কমবেশি 200/250শব্দে)। তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়। --ক'টি লেখা পাঠাতে হবে? --মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। --ফেসবুক বা অন্য কোন প্লাটফর্মে প্রকাশিত লেখা কি পাঠানো যাবে? --না। সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। --পত্রিকা কোন সময়ে প্রকাশিত হবে? --জানুয়ারি 2024-এর দ্বিতীয় সপ্তাহে। --লেখা পাঠানোর শেষতারিখ কত? -- 17 ডিসেম্বর 2023। --কীভাবে পাঠাতে হবে? --মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। --লেখার সঙ্গে কী কী দিতে হবে? --নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) --বিশেষ সতর্কতা কিছু ? --১)মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন '...

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

বসন্তের কোকিল তুমি   বিচিত্র কুমার                      (০১) তোমার দু-আঁখির গহীন অরণ্যে একটা স্বপ্নের বহমান নদী রয়েছে, তারই রেশ ধরে আমি হেঁটে চলি অজানা বসন্তের পথে নীর উদ্দেশ্যে। সে চলার কোন শেষ সীমা নেই তাই আমার বিষণ্ণ একতারা সন্ন্যাস খুঁজে ফিরে , কবে তুমি বুঝবে অনুশ্রী মনের পর্দা খুলে একুশ বসন্ত তোমার রঙ ছিটিয়ে যাচ্ছে অচিনপুরে। এদিকে আমার দেহের প্রতিটি শিরা ধমনীতে প্রবাহিত হচ্ছে তোমার ভালোবাসার একটু উষ্ণতা পাবার জন্যে, শুধু অনুভবে তাণ্ডব উচ্ছাসিত হচ্ছে--- যেদিকে তাকাই --- ফুলে ফুলে ভ্রমর গুনগুনিয়ে উড়ে উড়ে পরে বসন্তের কোকিল গান গায় নব বসন্তে, তোমার দুই চোখে আমার একই ছায়া রয়ে যায় উতলা ভালোবাসার সীমান্তে।                 (০২)        এক রক্তাক্ত বসন্তের স্মৃতি কোন এক উতলা বসন্তের সকালে পুষ্পবনে ফুটেছিল একটি টকটকে লাল গোলাপ, তার সাথে হয়েছিলো দেখা প্রথম ফাগুনে হয়েছিল দুজনার এ জীবনের আলাপ।  তারপর প্র...

উৎসবের সৌন্দর্য: সেকালে ও একালে।। সৌরভ পুরকাইত

  উৎসবের সৌন্দর্য:  সেকালে ও একালে   সৌরভ পুরকাইত বাংলার উৎসব বাংলার প্রাণ। প্রতিদিনের জীবনযাপনের মধ্যে যখন মন ক্লান্ত হয়ে পড়ে তখন তাকে বেঁচে থাকার রসদ যোগায় এই উৎসব। কথায় বলে 'বারো মাসে তেরো পার্বণ'।মন আনন্দই চায়।তাই তাকে সজীবতা দিতে,পরিবারের,সমাজের ভালো-মন্দের কথা মাথায় রেখে মানুষ নিজেই সৃষ্টি করে নিয়েছে নানাবিধ উৎসবগুলিকে। একেবারে প্রাচীন কাল থেকে আজ পর্যন্ত মানুষ কখনোই উৎসব বিমুখ ছিল না।উৎসবই তাকে ঘর থেকে বাইরে টেনে এনেছে,চিনতে শিখিয়েছে আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার আনন্দকে। উৎসব আসলে প্রাণের সাথে প্রাণের যোগ, হৃদয়ের সাথে হৃদয়ের যোগ।রবীন্দ্রনাথ বলেছেন 'সত্য যেখানেই সুন্দর হয়ে প্রকাশ পায় সেইখানেই উৎসব'।হৃদয়ের সেই সুকোমল বৃত্তির জাগরণ যেন ফুটে ওঠা ফুলেরই মতো সত্য ও সুন্দর।এই জাগরণই উৎসব। তাই নানা কিছুর মধ্য দিয়ে,নানা উপলক্ষ্যে এই উৎসব প্রকাশ পায়। প্রাচীনকালে মানুষের হাতে না ছিল পসার, না ছিল পসরা।ছিল মনের আন্তরিকতা,মানুষকে কাছে টেনে নেবার ক্ষমতা।সেটাই ছিল উৎসবের সৌন্দর্য। তাই সেদিনের উৎসবে ক্ষুদ্র,তুচ্ছ উপকরণও প্রাণের উচ্ছ্বাসে মহৎ হয়ে উঠত।সেকালের উৎসবে লোক দেখানো ব্যাপার কিছু ...

অনুভবে, অনুধ্যানে অনালোকিত কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী ।। সুপ্রিয় গঙ্গোপাধ্যায়

"এ কালে একটু লেখাপড়া জানা থাকাতে, এবং বঙ্গভাষায় অনেক গুলি পাঠ্য পুস্তক হওয়াতে কেবল পরনিন্দা করিয়া সময় কাটাইতে তাঁহাদের আবশ্যকও হয় না, প্রবৃত্তিও হয় না। …নিতান্ত সখ্যতা বা আত্মীয়তা না থাকিলে, সকল পেটের কথা খুলিয়া নিঃশ্বাস ছাড়িয়া তৃপ্তিলাভ করা, এ কালের মেয়েরা পছন্দ করেন না। তাঁহারা বইখানি, কার্পেটটুকু, নিজের স্বামী পুত্র লইয়া দিন যাপন করিতে বা একেলা থাকিতে কষ্ট বোধ করেন না।" —শরৎকুমারী চৌধুরাণীর এই লেখা (ভারতী ও বালক/ আশ্বিন কার্তিক, মাঘ/ ১২৯৮) দেখে বুঝতে অসুবিধা হয় না উনিশ শতকে নারীর লেখাপড়া শেখার উদ্দেশ্য ছিল মূলত আত্মমুক্তির জন্য। শুধু লেখাপড়া শেখা নয়, সাহিত্য সৃষ্টিতেও ছয়'এর দশক (উনিশ শতকের) থেকে নারীরা যে ধারা সূত্রপাত করেছিল তা নারীর আত্মমুক্তির পথকেই প্রসারিত করেছিল। ছয়'এর দশকের পূর্বেই ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে প্রথম ছাপার হরফে নারী রচিত কাব্য 'চিত্তবিলাসিনী' প্রকাশিত হয়। লেখেন কৃষ্ণকামিনী দাসী। ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে কবি ঠাকুরাণী দাসীর নাম উঠে আসতে থাকে, যিনি কবিতার পাশাপাশি গদ্যও লিখতেন। ঠিক সেই বছরই জন্মগ্রহণ করেন কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী, যাঁর কবিতা লেখা আত্মমুক্...

বছরের বাছাই

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কোন বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো (যেমন, কবিতা ১২-১৪ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে)। তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়। সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৫-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # *) ব্যবহার করবেন না। ৫) লেখার নীচে একটি ঘোষণা দিন: ...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৪তম সংখ্যা ।। ফাল্গুন ১৪৩১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

  এই সংখ্যায় একটি গ্রন্থ আলোচনা ও একটি ধারাবাহিক রচনা ছাড়া সব লেখাই ভাষা দিবস, মাতৃভাষা, ভাষাচেতনা ও ভাষা সমস্যা বিষয়ক রচনা। লেখাগুলি এই সংখ্যাকে অনেকটাই সমৃদ্ধ করেছে। পড়ুন। শেয়ার করুন। মতামত জানান। লেখকগণ নিজের নিজের লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন যতখুশি, যে মাধ্যমে খুশি। কিন্তু স্ক্রিনশট শেয়ার নৈব নৈব চ!  অন্য বিষয়ের লেখাগুলি আগামী সংখ্যার জন্য রইল।  সকলকে ধন্যবাদ, অভিনন্দন। ভালো থাকুন।   --সম্পাদক, নবপ্রভাত। ==  সূ  চি  প  ত্র  == প্রবন্ধ-নিবন্ধ অমর ২১শে ফেব্রুয়ারি বাঙ্গালীর বাংলা ভাষা দুর্জয় দিবস।। বটু কৃষ্ণ হালদার ভাষা শহীদদের পঁচাত্তর বছর।। অনিন্দ্য পাল একুশে ফেব্রুয়ারি : বাঙালির শ্রেষ্ঠ অশ্রুবিন্দু।। জীবনকুমার সরকার কবিগানের সাহিত্যিক ও সমাজতাত্ত্বিক মূল্য।। বারিদ বরন গুপ্ত বিপন্ন মাতৃভাষা ও সংস্কৃতি।। শ্যামল হুদাতী মায়ের দুধ আর মাতৃভাষা।। প্রদীপ কুমার দে একুশে ফেব্রুয়ারি : কিছু কথা।। বনশ্রী গোপ বাংলায় কথা বাংলায় কাজ।। চন্দন দাশগুপ্ত বিপন্ন মাতৃভাষা ও তার মুক্তির পথ।। মিঠুন মুখার্জী. হে অমর একুশে, তোমায় ভুলিনি, ভুলব না।। মহম্মদ মফিজুল ইসলা...

প্রচ্ছদ।। ৮৩তম সংখ্যা ।। মাঘ ১৪৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ।। প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র

  বিঃ দ্রঃ আগামী ফেব্রুয়ারি সংখ্যার জন্য ভাষা দিবসের কথা মাথায় রেখে লেখা পাঠান। email: nabapravatblog@gmail.com  সূচিপত্র ফিচার।। গোপাল ভাঁড়ের অজানা সত্য ।। লোকনাথ পাল প্রবন্ধ ।। মসুয়ার রায় পরিবার এবং বঙ্গসংস্কৃতি ।... প্রবন্ধ ।। সুধীন্দ্রনাথ দত্ত: কাব্যের দার্শনিক ও ন... কবিতায় সেতুবন্ধন (তৃতীয় অংশ) শিল্পবিপ্লবোত্তর কাল... রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর বিদ্রোহী প্রেমের কবিতা: ... কবিতা ।। এই মন ভালো নেই দিনে ।। সুপ্রভাত মেট্যা কবিতা ।। জোছনা আলোর স্বপ্ন ।। তুষার ভট্টাচাৰ্য কবিতা ।। নিঃস্ব হবো ।। লালন চাঁদ কবিতা ।। ভালোলাগা  ।। আজিজ উন নেসা  গল্প ।। স্বীকারোক্তি ।। চন্দন দাশগুপ্ত কবিতা ।। শীতের দিন ।। প্রশান্ত কুমার মন্ডল কবিতা ।। শীতকাল ।। অঙ্কিতা পাল নাসির ওয়াদেনের দুটি কবিতা ভূতের লেখা ছড়া ।। বদরুল বোরহান কবিতা ।। ব্যস্ত ।। আলাপন রায় চৌধুরী ছোটগল্প ।। লম্বুর স্বপ্নপূরণ ।। পরেশ চন্দ্র মাহাত কবিতা ।। সৎকার ।। সুমিত মোদক কবিতা।। শীত বৈচিত্র্য ।। সুমিতা চৌধুরী পুস্তক-আলোচনা ।। নিউটনের আপেল ও প্রেমিকা ।। অরবিন্... গল্প।। শান্তির পথে …...।। বন্দনা সেনগুপ্ত কবিতা ।। মা...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮১তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩১ নভেম্বর ২০২৪

সূচিপত্র  প্রবন্ধ।। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার গবেষণা ।। শ্যামল হুদাতী প্রবন্ধ ।। নবদ্বীপের রাস : মহাপ্রভু চৈতন্যদেব থেকে রাজা কৃষ্ণচন্দ্র ।। বারিদ বরন গুপ্ত  প্রবন্ধ।। কবিতায় সাংস্কৃতিক সেতুবন্ধন ।। রণেশ রায় প্রবন্ধ ।। সুকান্ত ভট্টাচার্য: বিপ্লবী চেতনার কবি ।। বিচিত্র কুমার কবিতা ।। পরিযায়ী বৃষ্টি ।। সন্দীপ ভান্ডারী দুটি কবিতা : চয়ন দত্ত কবিতা ।। সমঝোতা ।। বিশ্বজিৎ বাউনা কবিতা।। ভালোবাসা।। অরুণ কুমার দাঁ কবিতা।। সময়ের গতিপথে ।। কেতকী বসু গ্রন্থ   আলোচনা।। অরবিন্দ পুরকাইত ।।  গ্রন্থ : বিক্রমজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের  "বাংলা সাহিত্যে মনুষ্যেতর প্রাণীকেন্দ্রিক ছোটগল্পের ধারা" ছোটগল্প।। হ্যাপি বার্থডে।। পরেশ চন্দ্র মাহাত কবিতা।। অন্ধকার রাত জাগে।। অঞ্জন বল অনুবাদ কবিতা।। তুমি আসার আগে।। সুস্মিতা পাল দুটি কবিতা ।। রবীন বসু কবিতা ।। নতুন শাসন ।। মানস মণ্ডল কবিতা ।। শীত ।। প্রতীক মিত্র কবিতা ।। সাঁঝবাতি ।। তীর্থঙ্কর সুমিত কবিতা ।। চুপ কথা হৃদয়ে ।। তুষার ভট্টাচাৰ্য ছড়া ।। ভোর ।। বদ্রীনাথ ছোটগল্প ।। ফিরে পাওয়া ।। সমীর কুমার দত্ত কবিতা ।। রূপ বদলায় ।। সুমিত মোদক কবিতা ।। এভা...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৭তম সংখ্যা ।। জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ মে ২০২৫

  প্রচ্ছদ চিত্র: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সূচিপত্র রবীন্দ্রনাথ এবং কয়েকজন নারী ।। অনিন্দ্য পাল পরাবাস্তববাদ ও বাংলায় জীবনানন্দের কাব্যচর্চা ।। রণেশ রায় প্রতীক্ষা ।। চন্দন দাশগুপ্ত আশ্রয় ।। সায়নী সাহা বয়স্ক শিক্ষাকেন্দ্র ।। দেবাংশু সরকার প্রণামের প্রভু ।। সুপ্রভাত মেট্যা দুর্ভাগ্যের সম্মুখ সমরে ।। সমীর কুমার দত্ত আচমকা শরৎ ।। অর্ণব সামন্ত প্রতিধ্বনি ✍️ সুবীর কুমার ঘোষ জীবন যেখানে যেমন ।। আরজু মুন জারিন বছর সীমান্তে হিসেব নিকেশ ।। রানা জামান চারটি কবিতা ।। বিবেকানন্দ নস্কর আমরা আছি ।। লালন চাঁদ চাওয়া ।। মাথুর দাস কাগজ ফুলে ।। সফিউল মল্লিক সময়ের স্রোত ।। দুর্গাদাস মিদ্যা তুমি মানুষ ।। বদরুল বোরহান দিঘার সমুদ্র ।। মাখনলাল প্রধান পুস্তক-আলোচনা ।। অরবিন্দ পুরকাইত সংযম ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত  চেনা প্রতিবেশী (প্রথম পর্ব) ।। দীপক পাল খেলার মাঠ ।। তূয়া নূর বন্ধু শ্যামলকান্তি ।। শংকর ব্রহ্ম তুমি তোমার মতো থাকলে ।। সত্যেন্দ্রনাথ বেরা গ্রীষ্মে খুবই হিংস্র রবি ।। জগবন্ধু হালদার স্বপ্ন দর্শন ✍️ পার্থ প্রতিম দাস মৌন মুখরতা ।। মুসা মন্ডল রুদ্র বৈশাখ ।। দীনেশ সরকার চিহ্নিত পদযুগ পদাঘাত ।। দেবাশীষ...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯০তম সংখ্যা ।। ভাদ্র ১৪৩২ আগস্ট ২০২৫

সূচিপত্র ------------- স্বদেশ-স্বাধীনতা বিষয়ক লেখা  ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে চেনা-অচেনা বরণীয় নারী ।। হিমাদ্রি শেখর দাস স্বাধীনতা সংগ্রামের কিছু অচর্চিত কাহিনি ।। প্রণব কুমার চক্রবর্তী স্বাধীনতার কবিতা ।। অনিন্দ্য পাল স্বাধীনতা আন্দোলনে রাসবিহারী বসু অবদান ।। শ্যামল হুদাতী উড়ান কথা ।। সুদীপ কুমার চক্রবর্তী স্বপ্নের ভারত ।। সৌমিত্র মজুমদার আজ আর কদর নেই ।। সতুচট্টোরাম স্বাধীনতার কবিতাগুচ্ছ ।। অভিজিৎ হালদার শহিদ ব্রত ও অন্য দুটি কবিতা ।। বিবেকানন্দ নস্কর স্বাধীন হবো কবে ।। তীর্থঙ্কর সুমিত দুটি কবিতা ।। তুষার স্বাধীনতা ।। অঞ্জনা গোড়িয়া সাউ স্বাধীনতা মানে ।। পাভেল আমান বাংলা ভাষা : বাঙালি ।। অশোক দাশ বড়দি অপরূপা দেবীর জবানীতে ক্ষুদিরাম বসু ।। সমীর কুমার দত্ত স্বাধীনতা ।। কার্ত্তিক মণ্ডল আমার দেশ ।। বিপ্লব নসিপুরী ভারতমাতার বীর সন্তান ।। আশীষ কুমার চক্রবর্তী স্বাধীনতার আলো ।। অঞ্জনা মজুমদার আমরা স্বাধীন ।। রাফেল ইসলাম নতুন ভারত । কল্যাণ কুমার শাণ্ডিল্য রণ স্বাধীনতার রঙ ।। সফিউল মল্লিক স্বদেশ ।। জীবন সরখেল ভারতবর্ষ ।। নিশান বর্মা শতবর্ষে সুকান্ত ভট্টাচার্য স্মরণে লেখা সুকান্ত ভট্টাচার...

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে চেনা-অচেনা বরণীয় নারী ।। হিমাদ্রি শেখর দাস

First row (left to right): Prafulla Nalini Brahma, Shanti Ghosh, Suniti Chowdhuri and Bina Das . Second row (left to right): Kamala Dasgupta, Suhasini Ganguly, Pritilata Waddedar and Sarojini Naidu.   Third row (left to right): Abha Maity, Sucheta Kripalini, Lila Nag and Abha Gandhi. Fourth row (left to right): Indusudha Ghosh, Kalpana Dutta, Aruna Asaf Ali and Matangini Hazra. Fifth row (left to right): Basanti Devi, Renuka Ray, Phulorenu Guha and Manikuntala Sen. ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে  চেনা-অচেনা বরণীয় নারী হিমাদ্রি  শেখর দাস ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে পুরুষের সাথে মহিলারাও কখনও অন্তরালে থেকে কখনও প্রকাশ্যে এসে লড়াই করেছেন।  মেয়েদের বাইরে বেরিয়ে লাঠিখেলা, পিস্তল চালানো, রাত্রে ছেলেদের সঙ্গে ঘুরে বেরানো, পুলিশের সঙ্গে লুকোচুরি খেলা, জেলে যাওয়া ছিল অত্যন্ত দুঃসাহসিক কাজ। তবু তৎকালীন সমজে কোনঠাসা হয়ে থাকা মেয়েরাও  নিজ নিজ জায়গায় থেকে দেশের সেবা করেছেন তা অসম্ভবকে সম্ভব করার মতই দুরুহ কাজ। তাঁদের মধ্যে দু একজন রাজ পরিবারের হলেও বেশির ভাগই ছিল সাধারণ ঘরের অতি স...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮২তম সংখ্যা ।। পৌষ ১৪৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

  সূচিপত্র অন্নদাশঙ্কর রায়ের সাহিত্য: সমাজের আয়না ।। বিচিত্র কুমার প্রবন্ধ ।। বই হাতিয়ার ।। শ্যামল হুদাতী কবিতায় সংস্কৃতায়ন (দ্বিতীয় ভাগ ) ।। রণেশ রায় পুস্তক-আলোচনা ।। অরবিন্দ পুরকাইত কবিতা ।। লেগে থাকা রোদ্দুরের ঘ্রাণের মতো ।। জয়শ্রী ব্যানার্জি কবিতা ।। ভুল ।। সুপ্রভাত মেট্যা কবিতা ।। উন্মেষ ।। বিশ্বজিৎ সেনগুপ্ত কবিতা ।। গার্হস্থ্য ।। বিবেকানন্দ নস্কর একগুচ্ছ বিজয়ের কবিতা ।। বিচিত্র কুমার গল্প ।। পোষ্য ভূত ।। সমীর কুমার দত্ত কবিতা ।। আশপাশ ।। প্রতীক মিত্র কবিতা ।। মেঘ ।। তীর্থঙ্কর সুমিত অণুগল্প ।। বংশীবদনের সুখদুঃখ ।। দীনেশ সরকার কবিতা ।। গভীর রাত ।। সুনন্দ মন্ডল তিনটি কবিতা ।। সুশান্ত সেন ভালোবাসার বাসা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত অণুগল্প ।। শিক্ষকের সম্মান ।। মিঠুন মুখার্জী কবিতা।। প্রশ্ন ।। জীবন সরখেল কবিতা ।।ক্ষরিত সে পথ ।। রহিত ঘোষাল কবিতা ।। রক্ত দিয়ে কেনা ।। মুহাম্মদ মুকুল মিয়া কবিতা ।। কংক্রিট ।। আলাপন রায় চৌধুরী ছড়া ।। শীত নেমেছে ।। রঞ্জন কুমার মণ্ডল কবিতা ।। কিছু শব্দ ।। সমীর কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় কবিতা ।। শীতের নগ্নতা ।। রানা জামান কবিতা ।। পথ চলা ।। পাভেল আমান বেদ পু...

সূচিপত্র ।। ৮৯তম সংখ্যা ।। শ্রাবণ ১৪৩২ জুলাই ২০২৫

সূচিপত্র   প্রবন্ধ ।। বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় ।। মাখনলাল প্রধান প্রবন্ধ ।। শ্রমিকের অধিকার ।। চন্দন দাশগুপ্ত প্রবন্ধ ।। ভিনগ্রহীদের সন্ধানে ।। শ্যামল হুদাতী প্রবন্ধ ।। নারীমর্যাদা ও অধিকার ।। হিমাদ্রি শেখর দাস কবিতা ।। মশালের রং তুলি ।। তূণীর আচার্য কবিতা ।। জললিপি ।। রূপক চট্টোপাধ্যায় গুচ্ছকবিতা || শিশির আজম নিবন্ধ ।। পূনর্জন্ম ।। শংকর ব্রহ্ম মুক্তভাবনা ।। কোলাহল তো বারণ হলো ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত গল্প ।। গানের হাড় ।। শুভজিৎ দত্তগুপ্ত গল্প ।। শিকড়ের খোঁজে ।। সমীর কুমার দত্ত সুপ্রভাত মেট্যার পাঁচটি কবিতা গ্রন্থ-আলোচনা ।। আবদুস সালামের কাব্যগ্রন্থ 'অলীক রঙের বিশ্বাস'।। তৈমুর খান অণুগল্প ।। হরিবোল বুড়ো ।। সুমিত মোদক রম্যরচনা ।। গোয়েন্দা গোলাপচন্দ আর প্রেমের ভুল ঠিকানা ।। রাজদীপ মজুমদার দুটি গল্প ।। মুহাম্মদ ফজলুল হক দুটি কবিতা ।। তীর্থঙ্কর সুমিত কবিতা ।। মেঘমুক্তি ।। বন্দনা পাত্র কবিতা ।। ব্যবচ্ছিন্ন শরীর ।। কৌশিক চক্রবর্ত্তী কবিতা ।। শমনচিহ্ন ।। দীপঙ্কর সরকার কবিতা ।। ভালোবাসার দাগ ।। জয়শ্রী ব্যানার্জী কবিতা ।। ফণীমনসা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ছড়া ।। আজও যদি ।। বদ্রীন...

সুকান্ত ভট্টাচার্যের ওপর গদ্য || শিশির আজম

'ছাড়পত্র'ই আজ আমাদের ছাড়পত্র (তারুণ্যের কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের শততম জন্মদিনে শ্রদ্ধার্ঘ্য) শিশির আজম ~~~~~~~~~~~~~~~~~~ সুকান্ত জন্মেছিলেন অগ্নিগর্ভ এক সময়ে। যখন মাতৃভূমি পরাধীন। পার্টি, মার্কসবাদ, সাহিত্য — কোন কিছুই তার কাছে আলাদা ছিল না। কবিতা একটি আর্ট ফর্ম। হ্যাঁ, সত্যি। এটা আরও সত্যি হয় যদি তা মানুষকে তাড়িত করে, মানুষকে উদ্বুদ্ধ করে, মানুষকে ভালোবাসায় প্ররোচণা দেয়। এই পথটাই বেছে নিয়েছিলেন সুকান্ত ভট্টাচার্য। এর ছাপ-তাপ তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'ছাড়পত্রে'র পাতায় পাতায় পাওয়া যায়। কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশিত হয় ১৯৪৮ সালে। মনে রাখা দরকার, এর পূর্বে ১৯৪০-এ প্রকাশিত হয়েছে সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের 'পদাতিক'। আর তারও পূর্বে ১৯৩৭-এ আমরা পেলাম দিনেশ দাসের 'কাস্তে'। নিশ্চয় এসবের উত্তাপ সুকান্তের চেতনায় ছাপ ফেলেছিল। কবিতা কখনো কখনো শ্লোগান হয়ে উঠতে পারে। হোক। এই শক্তি কবিরই আছে। নজরুলকে কি আমরা অগ্রাহ্য করতে পারবো? সুভাষ মুখোপাধ্যায় বা শামসুর রাহমানকে? পিকাসোর 'গুয়ের্নিকা' অথবা জয়নুলের 'দুর্ভিক্ষের চিত্রমালা' কি 'আর্ট' নয়? হ্যা আপনি প্রশ্ন করতেই পা...

মাসের বাছাই

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯১তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পাদকীয় দপ্তর থেকে এই সংখ্যায়  'শিক্ষা ও শিক্ষক' বিষয়ক বেশ কিছু লেখার পাশাপাশি রয়েছে বিচিত্র বিষয়ের আরও কিছু লেখা। সব মিলিয়ে সংখ্যাটি আপনাদের সমৃদ্ধ করবে, আপ্লুত করবে — এ বিষয়ে আমরা আশাবাদী। আপনাদের মতামত অবশ্যই জানাবেন। আমরা প্রতীক্ষিত।            আগামী অক্টোবর ২০২৫ সংখ্যা 'উৎসব সংখ্যা' হিসাবে প্রকাশিত হবে। ওয়েব সংখ্যার পাশাপাশি নির্বাচিত লেখাগুলি নিয়ে একটি pdf এবং তার মুদ্রিত সংস্করণও প্রকাশিত হবে। তাই অপ্রকাশিত ভালো লেখা পাঠান। বিশেষ কোনও বিষয় নেই। প্রবন্ধ-নিবন্ধ-ফিচার ২০০০ শব্দ, গল্প ১২০০ শব্দ, অণুগল্প ৫০০ শব্দ, কবিতা-ছড়া ২৪ লাইনের মধ্যে হলে ভালো। ইমেলঃ nabapravatblog@gmail.com           বিস্তারিত বিজ্ঞপ্তি আসবে। সামাজিক মাধ্যমে আমদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন। সময় মতো সব সংবাদ পেয়ে যাবেন।  শারদ উৎসবের দিনগুলি সকলের আনন্দে কাটুক এই কামনা করি। —নিরাশাহরণ নস্কর সম্পাদক: নবপ্রভাত মোঃ ৯৪৩৩৩৯৩৫৫৬ Whatsapp Group:  https://chat.whatsapp.com/ AIpj98JKbloFSpeqMcpr6j Facebook Page:  https://www.facebook.com/ share...

শিক্ষার সেকাল-একাল : এক দার্শনিক অনুসন্ধান ।। কৃশানু ব্যানার্জী

প্রবন্ধ শিক্ষার সেকাল-একাল : এক দার্শনিক অনুসন্ধান কৃশানু ব্যানার্জী  মানবসভ্যতার ইতিহাসে শিক্ষার স্থান যে সর্বাপেক্ষা কেন্দ্রীয় ও নির্ণায়ক — এ বিষয়ে দ্বিধার অবকাশ নেই। কারণ শিক্ষা কেবল জ্ঞানের বাহনমাত্র নয় , বরং মানুষের আত্মস্বরূপের এক অবিচ্ছেদ্য অনুষঙ্গ , যা সমাজ ও সংস্কৃতির গতিপথকে নির্ধারণ করে। কিন্তু শিক্ষা কেমন ছিল অতীতে এবং কেমন হয়েছে বর্তমানকালে — এই অনুসন্ধান শুধু ঐতিহাসিক বা প্রাতিষ্ঠানিক পর্যালোচনার সীমায় আবদ্ধ নয় ; বরং এর ভেতরে নিহিত আছে এক গভীর দার্শনিক তাৎপর্য। "সেকাল" ও "একাল" — এই দুই কালের শিক্ষা পরস্পরকে নিরন্তর প্রশ্ন করে , কখনও বিরোধিতা করে , কখনও বা পরস্পরের ওপর দাঁড়িয়েই নিজের রূপ নির্মাণ করে। অতএব , শিক্ষার সেকাল-একাল তুলনায় আমাদের কেবল তথ্যের বিবরণ নয় , মানবজীবন ও সমাজচিন্তার প্রকৃত ভিত্তি উপলব্ধি করতে হবে। মানবসভ্যতার অগ্রযাত্রায় শিক্ষা যে একটি অনিবার্য ও মৌল প্রয়োজনে পরিণত হয়েছে, সে বিষয়ে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই। তথাপি 'শিক্ষা' শব্দটির নিতান্ত ভৌত বা প্রাতিষ্ঠানিক ব্যাখ্যা একে পূর্ণাঙ্গ উপলব্ধি করতে সক্ষম নয়। সংস্কৃত ...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯০তম সংখ্যা ।। ভাদ্র ১৪৩২ আগস্ট ২০২৫

সূচিপত্র ------------- স্বদেশ-স্বাধীনতা বিষয়ক লেখা  ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে চেনা-অচেনা বরণীয় নারী ।। হিমাদ্রি শেখর দাস স্বাধীনতা সংগ্রামের কিছু অচর্চিত কাহিনি ।। প্রণব কুমার চক্রবর্তী স্বাধীনতার কবিতা ।। অনিন্দ্য পাল স্বাধীনতা আন্দোলনে রাসবিহারী বসু অবদান ।। শ্যামল হুদাতী উড়ান কথা ।। সুদীপ কুমার চক্রবর্তী স্বপ্নের ভারত ।। সৌমিত্র মজুমদার আজ আর কদর নেই ।। সতুচট্টোরাম স্বাধীনতার কবিতাগুচ্ছ ।। অভিজিৎ হালদার শহিদ ব্রত ও অন্য দুটি কবিতা ।। বিবেকানন্দ নস্কর স্বাধীন হবো কবে ।। তীর্থঙ্কর সুমিত দুটি কবিতা ।। তুষার স্বাধীনতা ।। অঞ্জনা গোড়িয়া সাউ স্বাধীনতা মানে ।। পাভেল আমান বাংলা ভাষা : বাঙালি ।। অশোক দাশ বড়দি অপরূপা দেবীর জবানীতে ক্ষুদিরাম বসু ।। সমীর কুমার দত্ত স্বাধীনতা ।। কার্ত্তিক মণ্ডল আমার দেশ ।। বিপ্লব নসিপুরী ভারতমাতার বীর সন্তান ।। আশীষ কুমার চক্রবর্তী স্বাধীনতার আলো ।। অঞ্জনা মজুমদার আমরা স্বাধীন ।। রাফেল ইসলাম নতুন ভারত । কল্যাণ কুমার শাণ্ডিল্য রণ স্বাধীনতার রঙ ।। সফিউল মল্লিক স্বদেশ ।। জীবন সরখেল ভারতবর্ষ ।। নিশান বর্মা শতবর্ষে সুকান্ত ভট্টাচার্য স্মরণে লেখা সুকান্ত ভট্টাচার...

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে চেনা-অচেনা বরণীয় নারী ।। হিমাদ্রি শেখর দাস

First row (left to right): Prafulla Nalini Brahma, Shanti Ghosh, Suniti Chowdhuri and Bina Das . Second row (left to right): Kamala Dasgupta, Suhasini Ganguly, Pritilata Waddedar and Sarojini Naidu.   Third row (left to right): Abha Maity, Sucheta Kripalini, Lila Nag and Abha Gandhi. Fourth row (left to right): Indusudha Ghosh, Kalpana Dutta, Aruna Asaf Ali and Matangini Hazra. Fifth row (left to right): Basanti Devi, Renuka Ray, Phulorenu Guha and Manikuntala Sen. ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে  চেনা-অচেনা বরণীয় নারী হিমাদ্রি  শেখর দাস ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে পুরুষের সাথে মহিলারাও কখনও অন্তরালে থেকে কখনও প্রকাশ্যে এসে লড়াই করেছেন।  মেয়েদের বাইরে বেরিয়ে লাঠিখেলা, পিস্তল চালানো, রাত্রে ছেলেদের সঙ্গে ঘুরে বেরানো, পুলিশের সঙ্গে লুকোচুরি খেলা, জেলে যাওয়া ছিল অত্যন্ত দুঃসাহসিক কাজ। তবু তৎকালীন সমজে কোনঠাসা হয়ে থাকা মেয়েরাও  নিজ নিজ জায়গায় থেকে দেশের সেবা করেছেন তা অসম্ভবকে সম্ভব করার মতই দুরুহ কাজ। তাঁদের মধ্যে দু একজন রাজ পরিবারের হলেও বেশির ভাগই ছিল সাধারণ ঘরের অতি স...

বাংলা ভাষা সাহিত্যে জয়গোপাল তর্কালঙ্কার ।। শুভ জিত দত্ত

বাংলা ভাষা-সাহিত্যে জয়গোপাল তর্কালঙ্কার শুভ জিত দত্ত   বাংলা ভাষাসাহিত্যে পরোক্ষভাবে যাঁর অবদান অতুলনীয়, সেই প্রজ্ঞাবান পণ্ডিত জয়গোপাল তর্কালঙ্কার। ব্রিটিশ শাসনামলে ১৮২৪ সালে কলকাতায় সংস্কৃত কলেজ প্রতিষ্ঠিত হলে জয়গোপাল সেখানে সাহিত্যে কাব্যের অধ্যাপক হিসাবে নিযুক্ত হন এবং সুদীর্ঘ বাইশ বছর অধ্যাপনা করেন। সেখানে তাঁর ছাত্রদের মধ্যে পরবর্তীকালে যাঁরা বিখ্যাত হন তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর,মদনমোহন তর্কালঙ্কার। জয়গোপাল তর্কালঙ্কারের জন্ম রেলপথের শিবনিবাস স্টেশন থেকে আট ক্রোশ পূর্বে, নদীয়া বর্তমানে , বাংলাদেশের ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলাতে বজরাপুর গ্রামে এক প্রাচীন বারেন্দ্র বংশের আবাসস্থল ছিল। এই বংশ শুদ্ধাচার ও সিদ্ধশ্রোত্রীয় ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ ছিল এবং পরবর্তী সময়ে বাসস্থান, নামকরণ ও কর্মসূত্রে বিভিন্ন পরিবর্তন ঘটলেও তাদের গৌরবময় পরিচয় অক্ষুণ্ণ থেকেছে। এই বংশে বহু দেশপ্রসিদ্ধ মহামহোপাধ্যায় ও পণ্ডিত জন্মগ্রহণ করেছেন, যাঁদের কীর্তি বাংলার জ্ঞান-সাধনার আঙিনাকে সমৃদ্ধ করেছে। তাঁদের মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য নাটোর মহারাজের দ্বার পণ্ডিত কেবলরাম তর্কপঞ্চানন এবং তাঁর...

স্বাধীনতা সংগ্রামের কিছু অচর্চিত কাহিনি ।। প্রণব কুমার চক্রবর্তী

রানী গাইডিনলিউ স্বাধীনতা সংগ্রামের কিছু অচর্চিত কাহিনি  প্রণব কুমার চক্রবর্তী           ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম শুধু কিছু পরিচিত মুখ আর ঘটনার সমষ্টি নয় । এর গভীরে লুকিয়ে আছে অজস্র গল্প, অগণিত মানুষের আত্মত্যাগ, এবং ছোট বড় অসংখ্য বিদ্রোহের কাহিনী । সংক্ষেপে এই বিশাল সংগ্রামকে তুলে ধরা কঠিন । তবে, চেষ্টা করে কিছু দিক নিয়ে আজ আলোচনা করা যাক ।           আমরা আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস এবং ব্যক্তিত্ব বলতে সাধারণত মঙ্গল পান্ডে, মহাত্মা গান্ধী, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর মতো ব্যক্তিদের কথা এবং তাদের লড়াইয়ের কথা বলে থাকি । কিন্তু, এই সংগ্রামের পটভূমি রচিত হয়েছিল আরো বহু বহু আগে - যেখানে স্থানীয় কৃষক উপজাতি এবং সাধারণ মানুষের বিদ্রোহ ছিল এর প্রথম বীজ । ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহ আন্দোলনকে প্রায়সই আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রামের প্রথম লড়াই হিসাবে বলা হয়ে থাকে । তবে এর আগেও আমাদের দেশে  ফরাসি এবং ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অঞ্চলে প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে উঠেছিল । সাঁওতাল বিদ্রোহ (১৮৫৫ - ৫৬ সাল),  সন্ন্যাসী বিদ্রোহ (১৭৭০ - ১৮...

সুকান্ত ভট্টাচার্যের ওপর গদ্য || শিশির আজম

'ছাড়পত্র'ই আজ আমাদের ছাড়পত্র (তারুণ্যের কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের শততম জন্মদিনে শ্রদ্ধার্ঘ্য) শিশির আজম ~~~~~~~~~~~~~~~~~~ সুকান্ত জন্মেছিলেন অগ্নিগর্ভ এক সময়ে। যখন মাতৃভূমি পরাধীন। পার্টি, মার্কসবাদ, সাহিত্য — কোন কিছুই তার কাছে আলাদা ছিল না। কবিতা একটি আর্ট ফর্ম। হ্যাঁ, সত্যি। এটা আরও সত্যি হয় যদি তা মানুষকে তাড়িত করে, মানুষকে উদ্বুদ্ধ করে, মানুষকে ভালোবাসায় প্ররোচণা দেয়। এই পথটাই বেছে নিয়েছিলেন সুকান্ত ভট্টাচার্য। এর ছাপ-তাপ তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'ছাড়পত্রে'র পাতায় পাতায় পাওয়া যায়। কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশিত হয় ১৯৪৮ সালে। মনে রাখা দরকার, এর পূর্বে ১৯৪০-এ প্রকাশিত হয়েছে সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের 'পদাতিক'। আর তারও পূর্বে ১৯৩৭-এ আমরা পেলাম দিনেশ দাসের 'কাস্তে'। নিশ্চয় এসবের উত্তাপ সুকান্তের চেতনায় ছাপ ফেলেছিল। কবিতা কখনো কখনো শ্লোগান হয়ে উঠতে পারে। হোক। এই শক্তি কবিরই আছে। নজরুলকে কি আমরা অগ্রাহ্য করতে পারবো? সুভাষ মুখোপাধ্যায় বা শামসুর রাহমানকে? পিকাসোর 'গুয়ের্নিকা' অথবা জয়নুলের 'দুর্ভিক্ষের চিত্রমালা' কি 'আর্ট' নয়? হ্যা আপনি প্রশ্ন করতেই পা...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কোন বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো (যেমন, কবিতা ১২-১৪ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে)। তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়। সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৫-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # *) ব্যবহার করবেন না। ৫) লেখার নীচে একটি ঘোষণা দিন: ...

স্মৃতির আলোয় শিলিগুড়ি স্টেট লেবার ইন্সটিটিউট ।। চন্দন দাশগুপ্ত

স্মৃতির আলোয় শিলিগুড়ি স্টেট লেবার ইন্সটিটিউট    চন্দন দাশগুপ্ত            সালটা ছিল ২০০৫। বদলীর অর্ডারটা পেতেই মন ভাল হয়ে গেল। গত তিনবছর আমি জলপাইগুড়ি জেলার শ্রমদপ্তরের দায়িত্ব সামলাচ্ছিলাম। এবার আমাকে বদলী করা হয়েছে শিলিগুড়ির স্টেট লেবার ইন্সটিটিউটের ডেপুটি ডিরেক্টরের পদে। আমার বাড়িও শিলিগুড়িতে। সুতরাং আরো ভাল করে কাজ করা যাবে।         এই স্টেট লেবার ইন্সটিটিউট ( সংক্ষেপে এস.এল.আই ) ১৯৫৪ সালে কলকাতায় কাঁকুরগাছিতে স্থাপিত হয়। ১৯৯৫ সালে এর একটি শাখা খোলা হয় শিলিগুড়িতে। প্রথমে কলেজ পাড়ার ভাড়া বাড়িতে থাকলেও ১৯৯৮ সালে এটি চলে আসে শিলিগুড়ির উপকন্ঠে দাগাপুর চা বাগানের পাশে, পশ্চিমবঙ্গ শ্রমিক কল্যাণ পর্ষদের গাছপালা ঘেরা অনবদ্য প্রাকৃতিক পরিবেশে অবস্থিত নিজস্ব বাড়িতে। এটি মূলতঃ একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। এখানে বছরের বিভিন্ন সময়ে শ্রম দপ্তরের আধিকারিক, পরিদর্শক এবং অন্যান্য কর্মীদের বিভিন্ন ধরণের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তাছাড়া এখানে অত্যন্ত সুলভে হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড লেবার ওয়েলফেয়ারের একটি এক বছরের পোস্ট...

শব্দ ।। সনৎকুমার নস্কর

শব্দ সনৎকুমার নস্কর  কিছু কিছু শব্দ থাকে সুইচের মতো।   হাত দিলেই দপ্ করে জ্বলে ওঠে ব্যঞ্জনার আলো।  তখন দেখে নিই অন্তর-বাহির                  গহন আঁধারে ঢাকা পথ   শব্দ সে পথের সঙ্গী হয়৷     উপনিষদের কবি শব্দকে বলেন 'শব্দব্রহ্ম',  যখন সে দিগন্তবিস্তারী ---                    কথাটার মানে খুঁজে পাই সেসময়   গর্ভের গভীরে উচ্চারিত ধ্বনি জাগিয়ে তোলে                            আমূল  আর্তনাদ৷   শব্দেই কি শব্দের শেষ?   তারও কি নেই আত্মার মতো                       জীবনের অন্তহীন পথ?   এক হৃদয় থেকে আর এক হৃদয়ে                     সে তো করে ক্লান্তিহীন পরিক্রমা  আমাদের বাসনা-বিশ্বে সে তোলে ঝড়  আবেগমায়া দেয় ছড়িয়ে বাক্ স্পন্দের পর  অবশ্য...