Skip to main content

গল্প ।। মুখোশের আড়ালে ।। মৌসম সামন্ত (অসুর)

মুখোশের আড়ালে 

মৌসম সামন্ত (অসুর)


আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে অনেকক্ষণ ধরে নিজেকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছে অনিমা সেই চোখ, সেই, মুখ, সেই রঙ আগের চাইতে চেহারায় লাবণ্য এসেছে কিছুটা এর কারণ ইদানিং মনটা খুব ভালো তার কিন্তু এই ঔজ্জ্বল্যতার আড়ালে কুৎসিত চেহারাটা বাহ্যত দেখা যায় না অথচ সে দেখতে পাচ্ছে ঠিকই নিজের ভেতরের কদর্যতা যখন নিজের চোখেই ধরা পড়ে, যখন আত্মগ্লানি অনুভব হয় সেই মুহূর্তের কষ্টগুলোর সাথে আর কোনো কষ্টেরই তুলনা হয় না বুকের ভেতর ভারি একটা পাথর চেপে বসে, প্রাণখুলে নিঃশ্বাস নেওয়ার জন্য ফুসফুস অস্থির হয়ে পড়ে কিন্তু নিঃশ্বাস নিতেও ভয় লাগে নিজের চারপাশে যে পাপের বীজ বুনেছে সে সেগুলোই যেন দূষিত কালো ধোঁয়া হয়ে বাতাসের সাথে মিশে আছে প্রতিটি নিঃশ্বাসের সাথে এই দূষিত বাতাস তার ভেতরে প্রবেশ করবে ক্রমশ গ্রাস করে নেবে তাকে আয়নায় নিজের প্রতিবিম্বের দিকে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে হঠাৎ কান্নায় ভেঙে পড়ল অনিমা অনেক বড়ো পাপ করে ফেলেছে সে ভালোবেসে ফেলেছে ভালোবাসা পাপ নয়, কিন্তু অনিমার ভালোবাসা, ভীষণ বড়ো পাপ!
__________________________________
 
এই শুনছো, শোনো না?’
 
হুম বলো
 
আমি টেস্ট করেছি সাইন বলছে পজিটিভ
 
মানে কী?’
 
অনিমা বুঝতে পারে না কী বলবে? সারাজীবন বাংলা সিনেমায় যেমন দেখে এসেছে, ‘তুমি বাবা হচ্ছোএভাবে? নাকি বলবে, ‘বাসায় নতুন অতিথি আসছেকিন্তু কোনোটাই সে বলল না একরাশ জড়তা নিয়ে অনিমা বলল,
আমি প্রেগন্যান্ট
 
আচ্ছা কংগ্রেটসএকেবারেই স্বাভাবিক কণ্ঠে বলল সজীব
 
আমি এখন কী করব?’ ভীত কণ্ঠে জানতে চাইল অনিমা
 
এতো সকালে আর কী করবে? আসো আমার পাশে এসে ঘুমাও
__________________________________
 
বউমাতোমার কয়টা রুটি ছেঁকতে কতোক্ষণ লাগে! সজীব তো রেডি হয়ে বসে আছে ওর অফিসের দেরি হচ্ছে তো
 
শাশুড়ির চিৎকারে অতীত থেকে বাস্তবে ফিরে এলো অনিমা আজকাল কী হচ্ছে কে জানে! ফেলে আসা দিনগুলোর কথা খুব মনে পড়ে আর এভাবেই অতীতে বিচরণ করতে করতে বর্তমানের সব কাজ ---- করে ফেলছে টেবিলে নাশতা দিয়ে চুলায় চা বসাতে গেল অনিমা অমনি সজীবের চিৎকার,
 
এগুলো কী রাঁধো অনিমা? ভাজি খাচ্ছি নাকি ঘাস খাচ্ছি বুঝতেই পারছি না বিয়ের দশ বছরেও রান্নাটা শিখতে পারলে না!’
 
অনিমা দৌড়ে গিয়ে হতবিহ্বল হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে ভাজিতে সমস্যাটা কোথায় বুঝতে পারছে না সজীবের পছন্দ মতোই তো রান্না করেছে পাতাকপিতে চিংড়ি, টমেটো, বেশি করে কাঁচামরিচ আর শেষে ধনেপাতা সজীব চায় পাতাকপি ভাজি সবুজ হবে আর খুব বেশি সেদ্ধ হবে না অনিমা তাই গুড়া মসলা দেয় না ভাজিটাও আধাসেদ্ধ করে সবই তো ঠিক ঠিক করেছে কিন্তু সজীব এভাবে বলছে কেন! বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি সজীব নিজেই বলছে,
 
এতো মোটা করে কেটেছ কেন? ভাজি এতো মোটা করে কাটে? একটা কাজও তুমি পারফেক্টলি করতে পারো না
 
অনিমা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে ওর বলতে ইচ্ছে করে না, পাতাকপির গোড়ার দিকের অংশ একটু মোটা হয় চুপচাপ চলে আসে রান্নাঘরে শুনতে পায় শাশুড়ি বলছে,
তাড়াহুড়ো করে কাটছে মনে হয় সবগুলো তো মোটা হয় নাই
 
আরো অনেক কিছু বলে তিনি ছেলেকে বোঝানোর চেষ্টা করছেন কিন্তু অনিমার সেদিকে খেয়াল নেই, চোখদুটো ঝাপসা হয়ে আসছে ওর এতো অল্পতেই কেন এই পোড়াচোখে পানি আসবে? নিজেকেই ইচ্ছেমতো বকতে থাকে সে
 
শীতকালের সময়গুলো ঠিক শীতের মতোই রুক্ষ ঘন কুয়াশা যেন শুধু প্রকৃতিকেই না মানুষের মনকেও চারপাশ থেকে জাপটে ধরে অনিমার বড্ড মন খারাপ হয় সময়গুলোতে বাচ্চাদের স্কুল, ঘরের কাজ, রান্না-বান্না সবকিছু করেও যেন সময়টা কাটতে চায় না আলমারির ড্রয়ারে যত্ন করে রাখা একাডেমিক সার্টিফিকেটগুলো বের করে, দুফোটা চোখের জল গড়িয়ে পড়ার আগেই মুছে ফেলে তারপর যত্ন করে আবার কাগজগুলোকে বন্দি করে রাখে সেই অন্ধকার কুঠুরিতে জন্মদিনে দেওয়া বন্ধুদের উপহারগুলোরও ঠাঁই হয়েছে পাশের এমন আরেকটা আয়তাকার বক্সে একটা কার্ড বের করে উল্টে দেখে, গোটা গোটা অক্ষরে লেখাতোর টোলপড়া হাসিটা অমলিন থাকুক আজীবন- শুভ জন্মদিন দোস্তমৃদুলের লেখা মৃদুল কি জানে হাসতে ভালোবাসা সেই মেয়েটা আজকাল হাসতে ভুলে গেছে!
 
শীতকালের দিনগুলো ছোটোই হয় অথচ অনিমার যেন দিনটা কাটতেই চায় না ছেলেমেয়েরা স্কুল থেকে ফিরে গোসল, খাওয়া-দাওয়া সেরে বাসার টিচারের পড়া তৈরিতে ব্যস্ত থাকে শাশুড়ি এই সময় ইসলামিক বই পড়েন অনিমা একটু গড়িয়ে নেয় কিন্তু আজ কেন যেন চোখদুটো লেগে আসে মাসের কয়টা দিন দুপুরবেলা না চাইতেও ঘুম আসে, ক্লান্তিতে, অবসাদেমোবাইলের রিংটোনে ঘুম ভাঙে অনিমার কানে মোবাইল ধরে বলে,
হ্যালো
 
কী ঘুমাচ্ছ?’
 
হুম
 
ঘুমাবেই তো ঘুম ছাড়া তোমার আছে কী!’ বলেই লাইনটা কেটে দেয় সজীব অনিমা উঠে পড়ে ঘড়িতে দেখে বিশ মিনিটের মতো চোখবন্ধ ছিল তার এটাকে কি ঘুম বলে! আচ্ছা ঘুমালেই বা! তাতে সমস্যাটা কী! কারো তো কোনো ক্ষতি হচ্ছে না বিয়ের পর থেকেই অনিমা খেয়াল করেছে, সজীব ওর ঘুমঘুম কণ্ঠ শুনলেই রেগে যায় অথচ একজন এই কণ্ঠ শুনে বলেছিল, ‘তোমার ঘুমজড়ানো কণ্ঠটা ভীষণ সুন্দর আরেকটু কথা বলো না প্লিজ
 
সে লোকটা অনিমার কেউ ছিল না ওর বান্ধবী বিথীর প্রেমিক ছিল সে একদিন দুপুরবেলা প্রয়োজনেই ফোন করেছিল অনিমা ঠিক আজকের মতোই ঘুম জড়ানো কণ্ঠে বলেছিল,
হ্যালো ফয়সাল ভাই…’
অহ হো, অনিমা ঘুমাচ্ছ?’
 
হুম বলেন সমস্যা নাই
বিথীকে পাচ্ছি না সকাল থেকে তুমি কি জানো কিছু?’
 
জানি না কিছু জানতে পারলে আপনাকে জানাব
 
ইয়ে, অনিমা তোমার ঘুমজড়ানো কণ্ঠটা ভীষণ সুন্দর আরেকটু কথা বলো না প্লিজ
 
ভাই আপনি আমার সাথে ফ্লার্ট করছেন আপনার প্রেমিকা জানলে কিন্তু কেটে টুকরো টুকরো করে ফেলবে আপনাকে
 
কী বলো! সাংঘাতিক তো ওর ফ্যামিলিতে কেউ কষাই ছিল নাকি! আমি তো জানতাম না
 
অনিমা খিলখিল করে হেসে ফেলেছিল আজ সে ঘটনা মনে পড়াতে আবারো ঠোঁটে একচিলতে হাসি ফুটে উঠল মানুষের মন কী অদ্ভুত! মাত্রই সজীবের কথায় অভিমানে চোখে পানি চলে এসেছিল আর এখন ফয়সাল ভাইয়ের কথা মনে পড়ে মনটা ভালো হয়ে গেছে অনিমা বিছানা ছেড়ে উঠে পড়ে আসরের নামায পড়ে বিকেলের নাশতার আয়োজন করতে রান্নাঘরে যেতে হবে
 
তিহাম আর তিয়ানার টিচার রবিন আসে সন্ধ্যাবেলায় ভার্সিটির স্টুডেন্ট সজীবের বন্ধুর দূর সম্পর্কের ছোটোভাই এমনিতে রবিনের সাথে প্রয়োজন ছাড়া কথাবার্তা হয় না আজ নাশতা দেওয়ার সময় রবিন অনিমাকে দেখে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে অনিমার অস্বস্তি হয় খুব রবিন বলে উঠে,
ভাবি আপনার শরীর খারাপ নাকি! চেহারা কেমন ফ্যাকাসে হয়ে গেছে!’
 
অনিমা মুচকি হাসার চেষ্টা করে বলে,
তাই নাকি! কই আমি তো ভালোই আছি
নিজের ঘরে এসে আয়নার সামনে দাঁড়ায় অনিমা সত্যিই কি চেহারা খারাপ হয়ে গেছে! সজীব তো কিছু বলেনি অবশ্য সজীবের কি সময় হয় অনিমার মুখের দিকে তাকানোর? কার ওপর যেন প্রচণ্ড অভিমান হয় অনিমার বুকের ভেতর তীব্র একটা হাহাকার বয়ে যায় মোবাইল নিয়ে ডায়াল করে সজীবের নাম্বারে,
 
হ্যা অনিমা বলো
কী করছ?'
 
অফিসে মানুষ কী করে? লুডু খেলে না নিশ্চয়ই
এভাবে বলছ কেন? তুমি ফোন করেছিলে তখন আমি শুয়েছিলাম তাই এখন…’
 
দরকারে তোমাকে পাওয়া যায় না কখনো বে-দরকারে ফোন করো কাজের প্রেসারে আছি এখন ফাও আলাপের সময় নাই
 
অনিমা কয়েক মুহূর্ত স্থাণু হয়ে বসে রইল সজীব লাইন কেটে দিয়েছে এতো অবহেলা! অভিমানে বুক ভেঙে আসতে চায় অনিমার বুকের ভেতর প্রচণ্ড ভাঙচুর হচ্ছে চিৎকার করে না কাঁদলে এই ভাঙচুর তাকেই ভেঙে ফেলবে দমবন্ধ হয়ে আসতে চাইছে ওর
আম্মা আমি ছাদে যাচ্ছি কাপড় আনতে ভুলে গেছিলাম'
 
তাই বলে এই সন্ধ্যারাতে ছাদে যাবা? কালকে আনিও
 
অনিমা শাশুড়ির কথা আমলে নেয় না দ্রুতপায়ে ছাদে চলে আসে ছাদে আসলে কোনো কাপড় নেই কিন্তু মাথার ওপর খোলা আকাশ আছে এই আকাশের নিচে বসে একটু মনখুলে কাঁদা দরকার নাহলে ভেতরে অল্প যে তোলপার হচ্ছে তা প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেবে
 
অনিমা শব্দ করেই কাঁদছে প্রতিবার কান্নার দমকে বেরিয়ে আসছে এতোদিনের জমানো দুঃখ, অভিমান, হতাশা একটা সুন্দর জীবনের জন্য মানুষ কত কীই না করে অনিমাও চেয়েছিল গল্পের মতো সুন্দর হবে জীবনটা সিনেমার মতো প্রথম প্রেগন্যান্সির সময় স্বামী কোলে তুলে আনন্দ প্রকাশ না করলেও কপালে অন্তত একটা চুমু খাবে প্রেগন্যান্সির প্রতিটা মুহূর্ত অমূল্য নতুন নতুন অভিজ্ঞতা, নানান রকমের অনুভূতি, রাত-বিরাতে আজগুবি সব জিনিস খাওয়ার ইচ্ছে, কোনো কারণ ছাড়াই কেঁদে বুক ভাসানো, অথবা অকারণেই আনন্দে ঘরময় প্রজাপতির মতো উড়ে বেড়ানো- সব কিছু কারো সাথে শেয়ার করতে খুব ইচ্ছে হয় আর সেই মানুষটা হয় একান্ত আপনজন নিজের স্বামী কিন্তু সজীবকে সে পায়নি সেসময় সেসময় না, পরেও পায়নি আজ এই বোনের মেয়ের বিয়ে, কাল ওই ভাইয়ের ছেলের স্কুলে ভর্তি, গ্রামে জায়গা নিয়ে মামলা-মোকদ্দমা, অফিসের কাজে ঢাকার বাইরে যাওয়া নানাকাজে ব্যস্ত ছিল সজীব ব্যস্ততা এখন আরো বেড়েছে শুধু মাসের কয়েকটা দিন রাতের বেলা নিতান্ত প্রয়োজনে কাছে আসা মিনিট দশেক উদ্দামতার পর সব নীরব-নিস্তব্ধ দেয়াল ঘড়ির টিকটিক শব্দও যেন অনিমার হৃদয়কে তখন এফোঁড়ওফোঁড় করে দিতে চায়
 
কখনো বৃষ্টি দেখে ভেজার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করতে পারে না অনিমা জ্যোৎস্নার প্লাবনে গা ভাসাতে পারে না সজীবের উত্তর, ‘বৃষ্টিতে ভেজার বয়স আছে নাকি!’ ‘চাঁদ দেখার কী আছে! চাঁদ তো প্রতিমাসেই ওঠে
 
মানুষের জীবন গল্প বা সিনেমার মতো রোমান্টিক হয় না এটা অনিমা মানে তাই বলে বাস্তবতা এতোটা কঠিন হতে পারে অনিমা সেটা মানতে নারাজ যদি মেনে নিতে পারতো তাহলে নিশ্চয়ই এখন সবার কাছ থেকে লুকিয়ে ছাদে এসে কাঁদতে হতো না কিন্তু এভাবে আর কতো! অনিমার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটা সময় তো এভাবেই চোখের জলেই কেটে যাচ্ছে
__________________________________
 
শীতের রুক্ষতার পর প্রকৃতিতে যেমন বসন্ত আসে, ঠিক অনিমার জীবনেও হঠাৎ করে ফাগুন হাওয়া এলো সময় কাটাতে কিংবা অতীতের দুঃখময় স্মৃতিগুলো ভুলে থাকতে অনিমা লেখালেখি শুরু করল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে, বিভিন্ন ওয়েব সাইটেচন্দ্রাবতীছদ্মনামে নিজের জীবনের গল্পগুলোকেই তুলে ধরতে লাগল অল্পদিনেই তার একান্ত নিজের গল্পগুলো সবার গল্প হয়ে গেল কমেন্টবক্স থেকে ইনবক্সেও পাঠকরা ক্ষুদে বার্তা দিচ্ছে, তাদের ভালো লাগা জানাচ্ছে, শুভেচ্ছা জানাচ্ছে অনিমার ভালো লাগে আজকাল সজীবের নিত্য গালমন্দ ভুলে থাকে এই লেখালেখির জগতে ডুবে থেকে সজীব বাসায় এলেই আবার কিছু সময়ের জন্য সব ভুলে পুরোনো অনিমা হয়ে যায় যন্ত্রের মতো সংসারের কাজ করে, এমনকি সজীবের সাথে অন্তরঙ্গতাও হয় অনুভূতিহীন, দায়সারাভাবে এরপর সজীব যখন ওপাশ ফিরে ঘুমায় অনিমা নিঃশব্দে কেঁদে বালিশ ভেজায় সংসার সামলানো, বাচ্চা জন্ম দেওয়া তাদের বড়ো করা আর স্বামীর শারীরিক চাহিদা মেটানো এসবের জন্যই যেন অনিমার প্রয়োজন যেদিন এসব প্রয়োজন সে মেটাতে পারবে না সেদিন ওকে ছুঁড়ে ফেলে দেবে এতোদিনের সম্পর্ক, অথচ ভালোবাসা, আন্তরিকতা, শ্রদ্ধাবোধ এসবের ছিঁটেফোটার দেখাও মেলে না অনিমা ভাবে, আমি কি এতোই মূল্যহীন!
 
একদিন বিষণ্ন দুপুর অনিমা মোবাইলে ইনবক্স চেক করছিল অচেনা একজনের মেসেজ দেখল আদারস বক্সে রিজভী আহসান নামের একব্যক্তি একটি ইউটিউব লিংক পাঠিয়েছেন, সাথে লিখেছেন, ‘আপনার কবিতা পড়ে এতোটাই বিমোহিত হয়েছিলাম আবৃত্তি না করে পারলাম না
 
অনিমা আবৃত্তিটা শুনল তার নিজের লেখা কবিতা-
 
কোনো এক রাতজাগা পাখির ডানায় চড়ে
ঘুরে বেড়াই তেপান্তর,
ঘুরে ঘুরে দেখি, খুঁজি-ফিরি,
আপন কি কেউ আছে এতো এতো মানুষের ভীড়ে?
কেউ কি আছে একান্ত আমার নিজের?
 
আমার চোখের গভীরতায়
নিজেকে হারিয়েছিল যে যুবক,
আমি তার প্রেমে পড়িনি
নিষ্পলক চেয়ে থাকার মুহূর্তগুলো
বিশেষ নয় বিভীষিকাময় ছিল
আমি তাই ফিরেও তাকাইনি
 
আমার গালের টোলে ডুবে গিয়েছিল যে বালক
আমি তার প্রেমেও পড়িনি,
নিতান্ত অবহেলায় এড়িয়ে গিয়েছি,
অসমবয়সী প্রেম কী করে হয়!
আমি তাই ওপথ মাড়াইনি
 
আমাকে ঠিক আমার মতোই রাখবে বলে
দিব্যি দিয়েছিল যে পাগল ছেলেটা
আমি তাকে বিশ্বাস করিনি,
তার ছলছল চোখের ভাষাকে অবজ্ঞা করেছি,
তার অভিশাপেই কি ভালোবাসা আর আসেনি!
 
আজকাল প্রচণ্ড তৃষ্ণার্থ হয়ে থাকি
একফোঁটা ভালোবাসার আশায় উন্মুখ আমি,
ভালোবাসা এখানে খুব দামী,
সহজে কি বিলানো যায়?
এখন আমি ভালোবাসাহীন কাঙাল ফকির
তোমাদের রাস্তায়
তোমাদের সুখি সুখি মুখ দেখে আমি
মরে মরে যাই, তৃষ্ণায়, ঈর্ষায়
 
একটা সুপুরুষ ভরাট কণ্ঠে নিজের কবিতা শুনে অনিমার মনে অদ্ভুত শিহরণ বয়ে গেল একবার, দুবার, তিনবার এভাবে অসংখ্যবার শুনল যতো শুনে ততই মুগ্ধ হয় একসময় সে আবিস্কার করল, কানে হেডফোন লাগিয়ে সারাদিন শুধু অচেনা ভদ্রলোকের কণ্ঠই সে শুনে যাচ্ছে
 
অনিমা রিজভীকে আবেগাপ্লুত হয়ে মেসেজ করল ভদ্রলোকও প্রতিউত্তর দিল সাথে সাথে এভাবে মেসেজের আদান-প্রদান হতে হতে অনিমা বুঝতেই পারল না কবে, কখন, কীভাবে সে রিজভীর প্রতি আকর্ষণ অনুভব করতে শুরু করেছে এই আকর্ষণ ধীরে ধীরে তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে ছোটোবড়ো সবকিছুই সে রিজভীর সাথে শেয়ার করে রিজভী কখনো অনিমাকে বলেনি সে অনিমাকে পছন্দ করে বা ভালোবাসে কিন্তু অনিমা কেন যেন ধরেই নিয়েছিল রিজভীর সাথে সে প্রেম করছে প্রেমে পড়লে যেমন মেয়েদের চেহারায় লাবণ্য আসে অনিমারও এসেছে তাছাড়া আজকাল সে নিজের যত্ন নিচ্ছে খুব
 
নিজের সাংসারিক জীবন ভালোভাবেই চলছিল বরং আগের চাইতেও ভালো মন ভালো থাকলে সবকিছুই ভালো থাকে রিজভীতে আচ্ছন্ন অনিমা সজীবের অবহেলা কিংবা গালমন্দকে আর আমলেই নেই না রাতের অন্তরঙ্গতায় অন্ধকার ঘরে সজীবের মুখটা দেখা যায় না অনিমা নিজের অবচেতন মনেই সজীবের জায়গায় রিজভীকে কল্পনা করতে শুরু করে অন্যরকম রোমাঞ্চ কাজ করে তার মধ্যে সেই থেকে মিলনের রাতগুলোকে আর নিছককরতে হয় বলে করামনে হয় না আজকাল অনিমার আগ্রহই বেশি থাকে সজীব স্ত্রীর এমন আচরণে খুশিই হয় তার স্ত্রী হাসিমুখে তার সাথে অভিনয় করে যাচ্ছে এটা সে ঘুণাক্ষরেও টের পায় না অনিমা বাস্তবতা ভুলে বাস করতে শুরু করে তার নিজের রচিত কল্পনার জগতে যেখানে সে রিজভীর সাথে সংসার পেতেছে ওদিকে অনিমার মনের খবর রিজভীও জানে না সে শুধু ভালো বন্ধু হিসেবেই অনিমার সাথে যোগাযোগ রাখছে
_______________________________
 
আচ্ছা তোমার কি মনে হয় আমরা পরকীয়া করছি?’
 
নাহ! তা মনে হবে কেন? আমরা তো রোজ দেখা করছি না কিংবা অন্তরঙ্গ সময় কাটাচ্ছি না আমরা তো একে অপরকে ঠিক ওভাবে দেখি না আমরা ভালো বন্ধু এখানে পরকীয়া মনে হওয়ার তো কারণ নেই
 
রিজভীর সরল সহজ উত্তরে অনিমার মনটা ভেঙে যায় আবার নিজেই নিজের মতো করে জোড়া লাগায় নিজেই নিজেকে বোঝায় রিজভী তাকে ভালোবাসে কিন্তু প্রকাশ করে না
 
আচ্ছা তুমি বিয়ে করছ না কেন? তোমার মনে হয় না তোমার একটা বিয়ে করা দরকার?’
 
চ্যাট করতে করতে অনিমা রিজভীকে প্রশ্নটা করে রিজভী উত্তর দেয়,
ব্যবসাটা আরেকটু গুছিয়ে নিই বছরে দেড়েক পর বিয়ে করব ভাবছি
 
তাহলে তো এখন থেকেই মেয়ে দেখা দরকার তুমি বললে আমি মেয়ে দেখতে পারি কেমন মেয়ে পছন্দ তোমার?’
 
পাত্রী তো রেডিই আছে শুধু বিয়ে করা বাকি
 
অনিমা ভাবে রিজভী অনিমার কথাই ভাবছে সে আগ্রহ নিয়ে জানতে চায়,
তাই নাকি? কে সে? আমার সাথে পরিচয় করিয়ে দেবে না?’
 
রিজভী একটু পর একটা মেয়ের বেশ কয়েকটি ছবি পাঠালো, কয়েকটা রিজভীর সাথে বেশ অন্তরঙ্গভাবেই তোলা অনিমা স্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে রইল মোবাইলের স্ক্রিনের দিকে নিজের চোখকে বিশ্বাস হচ্ছে না তার মনে হচ্ছে তার হৃদয়টা ভেঙে কয়েক সহস্র টুকরো হয়ে গেছে অফলাইন হয়ে সোজা ওয়াশরুমে ঢুকে গেল শাওয়ার ছেড়ে বিমূঢ় হয়ে দাঁড়িয়ে রইল পানির নিচে
 
নাহ! রিজভী প্রতারণা করেনি রিজভী কখনই বলেনি সে অনিমাকে পছন্দ করে তাহলে অনিমার এতো খারাপ লাগছে কেন! কেন মনে হচ্ছে তার পৃথিবীটা উজাড় হয়ে গেছে! আর সে আসলে কী অসম্ভব কল্পনা করছিল এতোদিন! সজীব, তিহাম আর তিয়ানাকে নিয়েই ওর সংসার এরাই তো চরম সত্য এরাই তো অনিমার পৃথিবী তাহলে এতোদিন কোন পৃথিবীতে সে বাস করছিল অনিমা!
 
এরপর শুরু হলো অনিমার নিজের সাথে নিজের বোঝাপড়া শুরু হলো নতুন করে হিসাব নিকাশ
__________________________________
 
ভুলতে চাইলেই কি ভোলা যায়? কাউকে মনপ্রাণ উজাড় করে ভালোবাসার পর কীভাবে তার সাথে দূরত্ব রেখা টানা যায়! অনিমা এখন ভালোভাবেই জানে রিজভী অন্য কাউকে ভালোবাসে তার পৃথিবীটা শূন্য শূন্য লাগে প্রেমে পড়া, ভালোবাসা পৃথিবীর সবচাইতে সুন্দর অনুভূতি বলা হয়, ভালোবাসা পবিত্র কিন্তু স্বামী-সন্তান-সংসার থাকার পরও অন্য কোনো পুরুষকে মন দেওয়া, ভালোবাসা, সে তো ঘোরতর অন্যায় অন্যায়ের ভার সইতে পারছে না অনিমা পারছে না রিজভীকেও ভুলতে
 
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে সে প্রতিদিন একজনকে খোঁজে সেই মেয়েটাকে যে ছিল শুভ্র সাদা মনের, যার হাসিতে পবিত্রতা ছিল, যার কথায় আচরণে স্বচ্ছতা ছিল সে মেয়েটা কোথায় হারিয়ে গেছে! আজকাল আয়নায় যাকে দেখা যায়, সে স্বামী কর্তৃক অবহেলিত, পরপুরুষে আসক্ত, নির্লজ্জ, পাপের ভারে বিদ্ধস্ত এক নারী অনিমা নিজেই নিজের চোখে চোখ রাখতে পারে না আজকাল স্বামীর চোখে চোখ রাখতে পারে না দিনরাত এক অভ্যন্তরীণ অনলে পুড়তে থাকে তবুও অনিমাকে সংসার করে যেতে হয় ভেতরে পাপবিদ্ধ মন লুকিয়ে রেখে বাইরে হাসিমুখে অভিনয় করে যেতে হয়, প্রিয়তমা স্ত্রীর চরিত্রে, আদর্শ পুত্রবধুর চরিত্রে নিজের কাছে নিজেকেই অপরিচিত লাগে আজকাল একটি শরীরে যেন কয়েকটি চরিত্রের বসবাস এদের মধ্যে অনিমা খুঁজতে থাকে শুদ্ধ অনিমাকে, ক্লান্ত-শ্রান্ত হয়ে পড়ে কিন্তু তাকে কোথাও খুঁজে পাওয়া না
 
আঠারো বছর পর
 
অনিমা আজ সকাল থেকেই খুব ব্যস্ত তিয়ানার বাগদান হবে আজ ছেলে তিয়ানার পরিচিত তিয়ানার সাথে নাকি ভালো বোঝাপড়া আছে নিজের জীবন তো যেমন তেমন কেটে গেছে এখন মেয়ের জীবন নিয়েই চিন্তিত অনিমা রাফিদকে যতটুকু দেখেছে ভালোই মনে হয়েছে বাকিটা এখন তিয়ানার ভাগ্য
 
পায়েশের বাটিতে বাদাম কুচি আর কিশমিশ ছিটিয়ে টেবিলে রাখল নিজের মনেই ভাবছে, এই দুধসাদা পায়েশে সবুজ পেস্তা কুচি আর বাদামী কিশমিশের কারণেই আরো সুন্দর আকর্ষণীয় দেখাচ্ছে কাচ্চিতে এলাচ আর লবঙ্গ না হলে কি ঠিকঠাক সুগন্ধ আসতো? মাংস পর্যাপ্ত তাপে জ্বাল দিয়ে সেদ্ধ না করলে কি খাওয়া যেত? জীবনটাই কি তেমন না? শুধু একপেশে রোমান্স আর সুখে ভরপুর হলেই কি জীবনের আসল স্বাদটা পাওয়া যেত? দুঃখ, অভিমান, জরা আছে বলেই তো সুখগুলোকে এতো অমূল্য আর লোভনীয় মনে হয়
 
ব্যস্তভঙ্গীতে মোবাইল কানে সজীবকে নিচে নামতে দেখল অনিমা মেহমানরা চলে এসেছে অনিমার চোখ থেকে এক ফোঁটা স্বচ্ছ তরল গড়িয়ে পড়ল এখন আর কোনো দুঃখ নেই অনিমার সজীব হয়তো বেশি রোমান্টিক ছিল না কখনোই, হয়তো ব্যস্ত ছিল বেশি হয়তো রাগ নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতটা আয়ত্ব করতে পারেনি কিন্তু কোনো দায়িত্বে বিন্দুমাত্র অবহেলা করেনি সমাজের প্রতিটা মানুষ সজীবকে ভালোবাসে, শ্রদ্ধা করে অনিমাকে ঈর্ষা করে এতো চমৎকার একজন মানুষের সহধর্মিণী বলে একসময় কতো বোকাই না ছিল অনিমা! এভাবে কখনো ভাবেনি এখন বয়স বাড়ার সাথে সাথে বোধে পরিণত হচ্ছে যা কিছু আছে তার জীবনে সবকিছুর জন্যই একবার চোখ বন্ধ করে ধন্যবাদ জানাল সৃষ্টিকর্তাকে
 
মেহমানরা চলে এসেছে সবার সাথে পরিচিত হতে গিয়ে একজনের দিকে চোখ আটকে গেল অনিমার মোটামুটি গড়নের, শ্যামলা বরণ, চোখে ভারি ফ্রেমের চশমা চশমার আড়ালের চোখদুটো খুব পরিচিত আর হাসিটা কখনোই মন থেকে মুছে ফেলার মতো নয় রিজভী! এখানে কেন এসেছে?
 
রাফিদ বলল,
আম্মা ইনি আমার ছোটাচ্চু
 
অনিমা হাসার চেষ্টা করল রিজভী কি অনিমাকে চিনতে পেরেছে? হালকা একটু মেদ এসেছে শরীরে কপালের সামনে অনেকগুলো চুল সাদা এগুলো কি অনিমাকে অপরিচিত লাগার জন্য যথেষ্ট?
 
আচ্ছা! তোমার ছোটো চাচা! তোমার চাচী আসেনি?’
 
আম্মু চাচ্চু তো বিয়েই করেননি
কথাটা বলল তিয়ানা রাফিদ তিয়ানাকে কী যেন জিজ্ঞেস করল দুজন কীসব কথা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ল অনিমার কানে কিছুই গেল না এই বাসাভর্তি মেহমান, এতো আয়োজন, এতো হট্টগোল সব ধীরে ধীরে ঝাপসা হতে শুরু করল চোখের সামনে হঠাৎ করেই কালো পর্দা নেমে এলো অনিমার
__________________________________
 
চোখ খুলতেই সজীবের উদ্বিগ্ন মুখটা দেখতে পেল অনিমা মাথার ওপর ফ্যানটা ঘুরছে বেশ শব্দ করেই আগে তো এতো শব্দ করতো না! হাত দিয়ে মাথা চেপে ধরে উঠে বসতে চাইল অনিমা সজীব বাধা দিল,
আরে করছ কী! শুয়ে থাকো কী যে ভয় পাইয়ে দিয়েছিলে!’
 
কী হয়েছিল আমার?’
 
কী হবে আর! ঠিকমতো কিছু করতে তো পারোই না নিজের যত্নও নিতে পারো না প্রেশার কততে নেমেছে জানো? আমি তোমার খাওয়ার জন্য কিছু নিয়ে আসছি তুমি খবরদার উঠবে না
 
সজীব চলে গেল অনিমা চুপচাপ বসে ভাবছে কেন এমন হলো! সব তো ভালোই চলছিল এভাবে রিজভীর এতো বছর কেন সামনে আসতে হলো কী করবে অনিমা! নিজের হৃদস্পন্দন কীভাবে ঠেকাবে! মেয়ের চাচা শ্বশুর তার কোনো আচরণে মেয়ের জীবনে না অন্ধকার নেমে আসে
 
বাগদানের অনুষ্ঠান ভালোভাবেই সম্পন্ন হয়েছে অনিমাকে কিছুই করতে হয়নি সজীব, রাফিদ, তিহাম ওরাই সামলে নিয়েছে সব বেয়াই, বেয়াইন আর অন্যরা অনিমার রুমে এসেই বিদায় নিয়ে গেছে সেসময় সবার অলক্ষ্যে রিজভী অনিমার হাতে একটা টিস্যু ধরিয়ে দিল অনিমা ওয়াশরুমে গিয়ে কাঁপা কাঁপা হাতে টিস্যুর ভাঁজ খুলল সাদা টিস্যু পেপারে কালো জেলপেন দিয়ে লেখা,
 
চন্দ্রাবতী, এভাবে দেখা হয়ে যাবে ভাবিনি রাফিদ একজনকে ভালোবাসে জানতাম সে যে তোমারই মেয়ে সেটা জানতাম না তোমার সংসার যেন না ভাঙে, বাচ্চারা যাতে বাবা-মায়ের সাথে একছাদের নিচেই হেসেখেলে বড়ো হয় এজন্য আমি সেদিন মিথ্যে বলেছিলাম তোমাকে ভীষণ ভালোবাসি বলেই তোমার পথ থেকে সরে গিয়েছিলাম আমাদের ভালোবাসাকে পরিণতি দিতে গেলে আজ কি তিয়ানা আর রাফিদের ভালোবাসা পূর্ণতা পেত? সব ভালোবাসা পূর্ণতা পায় না চন্দ্রাবতী কিছু ভালোবাসা অপূর্ণতাতেই সার্থক হয়
 
চোখের জলের ঝর্ণাধারায় টিস্যুটা অনিমার হাতেই ভিজে গেল তারপর সেটাকে কমোডে ফেলে ফ্লাশ করে চোখমুখ ধুয়ে বেরিয়ে এল অনিমা বারান্দায় গিয়ে দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকল আকাশের বিশালতায় নিজের সব দুঃখ আর অপ্রাপ্তিগুলোকে মিশিয়ে দিতে চাইছে সে একটু পর টের পেল সজীব এসে দাঁড়িয়েছে পাশে কাঠখোট্টা কণ্ঠের বদলে নরম সুরে সজীব বলল,
বারান্দায় বসে চাঁদ দেখে কী হবে? ছাদে যাই চলো
 
অনিমা অবাক চোখে তাকিয়ে থাকল সজীবের দিকে বিস্ময়ের ধাক্কা সামলাতে পারছে না যন্ত্রমানবের মুখে রোমান্টিক কথা! অনিমাকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে সজীব মৃদুস্বরে ধমকে উঠল,
কী হলো? যাবে ছাদে? পূর্ণিমার চাঁদ তো সারারাত তোমার অপেক্ষায় আকাশে বসে থাকবে না
 
চিরচেনা অবতারে সজীবকে ফিরে আসতে দেখেই অনিমা হেসে ফেলল তারপর খুব যত্ন করে সংগোপনে চোখের কোণের জলটুকু মুছে নিয়ে সজীবের বুকে মাথা রেখে বলল,
হুম চলো ছাদে যাই
 
 

সমাপ্ত

Comments

বিধিবদ্ধ স্বীকার্য :

লেখার বক্তব্যের দায়িত্ব লেখকের, পত্রিকার নয়। আমরা বহু মতের প্রকাশক মাত্র।

মতামত/লেখা এখানে জমা দিন

Name

Email *

Message *

সাম্প্রতিক বাছাই

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯৩তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩২ নভেম্বর ২০২৫

সূচিপত্র বস্তু, চেতনা এবং কবি ।। সজল চক্রবর্তী দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত ।। রণেশ রায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট ও সন্নিহিত অঞ্চলের কথ্য শব্দ ।। অরবিন্দ পুরকাইত চাঁদে জীবন ।। শমীক সমাদ্দার অসমাপ্তি ।। মহুয়া হুই গ্যালাক্সির শব্দে ।। জাসমিনা খাতুন তিনটি কবিতা ।। দিবাকর সেন অপূর্ণতার শেষ অধ্যায় ।। সুপ্রিয় সাহা হাফ ডজন ছড়া ।। স্বপনকুমার পাহাড়ী স্বাপ্নিক অমলের ঘুৃম ।। সঞ্জয় দেওয়ান দুটি কবিতা ।। সৌমিত্র উপাধ্যায় পথ চলতি ✍️পার্থ প্রতিম দাস হেমন্তের বিষাদ ছুঁয়ে ।। শক্তিপদ পাঠক রাই আর বাবা ।। অদিতি চ্যাটার্জি স্থিতিশীল ।। রঞ্জিত মুখোপাধ্যায় হৃদয়ের শূন্য কোড ।। লিপিকা পিঙ্কি দে অমানিশা ।। সৌভিক মুখার্জী দৃষ্টিগত ।। শামীম নওরোজ জ্যান্ত ভূতের গপ্পো ।। পার্থ সারথি চট্টোপাধ্যায় ধুতরা ফুলের ঘ্রাণ ।। মজনু মিয়া তারা খসার আলোয় ।। তীর্থঙ্কর সুমিত উত্তরণে অন্তরায় ।। সমীর কুমার দত্ত প্রেম মুদ্রা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ধারা ।। লালন চাঁদ অন্যের ব্যথায় ব্যথি ।। জগদীশ মণ্ডল গর্ভ ।। শাশ্বত বোস ভ্রমণ বিষয়ক স্মৃতিকথা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত শাপে বর ।। সাইফুল ইসলাম রবিবার ।। সঙ্ঘমিত্রা দাস দুটি ...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬

  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠালে  অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে হলে ভালো। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # ...

রেজাল্ট ।। সৈকত মাজী

রেজাল্ট সৈকত মাজী শুভ্রাংশু বিছানতে শুয়ে শুয়ে বিরক্ত হয়ে উঠল। মনে মনে নিজের শরীরটাকে আচ্ছা করে শুনিয়ে দিলো দু- চারটে কথা, দেবে নাই বা কেন, কয়দিন ধরে এতো কাঠ খড় পুড়িয়ে সব বন্ধুরা মিলে রথটা বানালো, কত কি প্ল্যান করলো, আর এই শরীরটার জন্যই তো সব ভেস্তে গেলো। মনে মনে ভাবলো একটা যা হোক শরীর হয়েছে ওর প্রতি মাসে তিন - চার বার করে জ্বর হচ্ছেই। হবি তো হ আর একটা দিন পরে হলে কি এমন ক্ষতি হতো, এই রথের দিনেই হতে হলো। ওর বিরক্তিটা বেড়ে গেলো আরো কয়েক ঘর।    " মা ও মা...মাআআআআ...." জোরে হাঁক  দিলো শুভ্রাংশু।    " কি হয়েছে বাবু? আবার জ্বরটা বেড়েছে? মাথা ব্যথা করছে?" ব্যস্ত হয়ে উঠলেন মালতিদেবী।     " ওসব কিছু নয়, ও মা বলছি এখন তো খুব কম জ্বর আছে যাই না মা একবার বাইরে, সবাই কতো ফুর্তি করছে বলো"  কাতর ভাবে বলল শুভ্রাংশু।      " না বাবু, এখনই আমরা ডাক্তারের কাছে যাব, বাবা তৈরী হয়ে গেছেন, আমরা বিকেলে তখন মেলা দেখতে যাব কেমন, এখন উঠে জামা কাপড় পরে নাও"  মালতিদেবী জামা কাপড় গুলো এগিয়ে দিলেন।      শুভ্রাংশু...

রাই আর বাবা ।। অদিতি চ্যাটার্জি

রাই আর বাবা অদিতি চ্যাটার্জি রাই-র জীবনে বেশ কিছু ভালো লাগা আছে তার মধ্যে একটা হলো সন্ধ্যার সময় তিন তলার বারান্দায় দাঁড়িয়ে রাস্তা দেখতে দেখতে কফি কাপে চুমুক দেওয়া ।" আজ যশোদা মিষ্টান্ন ভান্ডারের সামনে বেশ ভিড়,নির্ঘাত 'তেলে ভাজা ' প্রেমীরা।" আপন মনেই ভাবে ও, কিন্তু বসার ঘরে সুমন আর আঁখি এতো জোরে 'হল্লা গোল্লা ' করছে তালতলার জমজমাট রাস্তার দিকে আর মন দিতে পারছে না রাই।  পায়ে পায়ে ঘরে এসে দাঁড়ায় রাই, দেখে ক্লাস ফোরের মেয়ে এতোটা ঝগড়া করছে সুমনের সাথে , "বাপ রে, কবে এতোটা কথা শিখলো মেয়ে! কিভাবে কথা বলছে?? কোঁকড়া চুল ঝাঁঝিয়ে,গোলগাল হাত নেড়ে " ...মেয়ে কে দেখে থতমত খেয়ে যায় রাই। এদিকে আঁখি বলছে, "ধুত্ বাপী তুমি কিচ্ছু পারো না, তুতাই-র বাবা, পিসাই, মামু সবাই কত ভালো করে খেলতে পারে , না আমি তোমার সাথে খেলবো না।" কাতর চোখে মেয়ের দিকে একবার তাকিয়ে সুমন বলে ,"আচ্ছা তুই আমাকে শেখা, দ্যাখ আমি কার জন্য আলিপুরদুয়ার থেকে পনেরো দিন পর পর কলকাতায় আসি বল!"  ঐ টুকু মেয়ে কথা প্রায় না শুনেই ঘরে চলে গেল রাই-র চোখের সামনে, সুমন একবার হেসে বাথরুমের দিকে এগো...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯২তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩২ অক্টোবর ২০২৫

—: সম্পাদকীয় দপ্তর থেকে :— এই সংখ্যার জন্য লেখা এসেছিল প্রায় ১৮০টা। কিন্তু গুণগত মানে দুর্বল লেখার সংখ্যা বহু। আমরা নবপ্রভাতে নতুনদের কথা ভেবে বেশ কিছু দুর্বল লেখাও রাখি। কিন্তু সবসময় একই লোকের দুর্বল লেখা প্রকাশ করা অনুচিত বলে মনে করি। শেষ পর্যন্ত ৯৯ জনের লেখা রাখা গেল। যাদের লেখা প্রকাশিত হল না, তারা লেখাগুলি অন্য যেখানে খুশি পাঠাতে পারেন। বিশেষ কারণে এই সংখ্যার মুদ্রিত সংস্করণ প্রকাশিত হচ্ছে না। আমরা দুঃখিত। তবে মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি শীঘ্রই আসছে। সঙ্গে থাকুন। সকলকে উৎসবমুখর বর্ণময় শুভেচ্ছাসহ— —নিরাশাহরণ নস্কর, সম্পাদক, নবপ্রভাত। অনুরোধ : প্রকাশিত লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন, ছবি/স্ক্রীনশট নয়।  == সূচিপত্র == পড়া-লেখার ইতিহাস অনুসন্ধান।। তপন তরফদার উৎসব : মানুষের চিরন্তন আত্মপ্রকাশ।। কৃশানু ব্যানার্জি বাংলা : সভ্যতা ও সংস্কৃতির জন্মভূমি।। শ্যামল হুদাতী সমুদ্র আর অস্তিত্ব ।। সুব্রত চৌধুরী রাজা ছিলেন জুবিন গর্গ ।। গঙ্গা 'অনু'   আদ্যাশক্তি মহামায়ার বাংলা বারো মাসের বারো রূপ ।। অর্হণ জানা মেধাদাদুর আসর ।। রণেশ রায় বৈজ্ঞানিক মা...

বস্তু, চেতনা এবং কবি ।। সজল চক্রবর্তী

বস্তু, চেতনা এবং  কবি সজল চক্রবর্তী  "যেখানে পৌঁছায় না রবি,, সেখানে পৌঁছে যান কবি।" এই ছোট্ট কবিতা টি অনেক পুরনো  এবং বহু পরিচিত, তথাপি এর তাৎপর্য এখনো হারায় নি। তবে, কথা হ'চ্ছে -আমরা তো  রবি-কবিকে একত্রেই পেয়ে যাই আমাদের ঋষি-প্রতিম কবি রবীন্দ্রনাথের মধ্যে। আর তখনই জেনে যাই উপরোক্ত ছোট কবিতার প্রণিধানযোগ্যতা ।  ... এবার শুনে নেয়া যাক, ঋষি-প্রতিম কবির মুখ নিঃসৃত বাণী:- "তোমার অসীমে প্রাণমন লয়ে যত দূরে আমি যাই ...." অর্থাৎ আমাদের প্রিয়তম কবি অনায়াসে পৌঁছে যান সৃষ্টির অসীমে , যা আমাদের পক্ষে আদৌ সম্ভব নয়। এখানে কবির চেতনা সুদূর প্রসারী! ... প্রকৃত প্রস্তাবে কবি অতিন্দ্রীয় জগতের এক নাগরিক। তাঁর কাছে তাই চেতনা বা চৈতন্যেরই প্রাধান্য। ...এখন আসছি, বস্তু এবং চেতনার মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে।  ... আমি একজন অতি সাধারন মানুষ, তাই এই ব্যাপারটাকে কবিদের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার চেষ্টা ক'রছি। তবে আমার সামান্য জ্ঞান থেকে একটা সাধারণ কথা সেরে নি'। আমরা সাধারণত ব'লে থাকি-- সূর্য পূর্বদিকে ওঠে। প্রকৃত অর্থে কি তাই ? আসলে সূর্য যেদিকে ওঠে ,আমরা  সেই দিকটাকে নামাঙ্কিত ক...

দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট ও সন্নিহিত অঞ্চলের কথ্য শব্দ, উচ্চারণ, বাগ্্ধারা ইত্যাদি ।। অরবিন্দ পুরকাইত

স্থানীয় কিছু কথ্যশব্দ, উচ্চারণ, বাগধারা ইত্যাদি  (পর্ব—সাত) অরবিন্দ পুরকাইত স্থানীয় কিছু কথ্যশব্দ, উচ্চারণ, বাগ্্ধারা ইত্যাদির সংগ্রহ প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল রামচন্দ্র নস্কর সম্পাদিত 'চর্যা' পত্রিকায়, ২০১৬ সালে। সে সংগ্রহ যায় নিজের 'গাঁ-ঘরের কথা' পুস্তকে, ১৪২৩ সনে। পরে এই ব্লগজিনেও কিছু সংগ্রহ প্রকাশিত হয় ১৪২৮ সনের আশ্বিন মাসে, পৌষ ১৪২৯-এ, আষাঢ় ১৪৩০, নববর্ষ ১৪৩১ ও কার্তিক ১৪৩১ সংখ্যায়। তার পরেও ধীরে ধীরে আরও কিছু সংগৃহীত হয়েছে, সেগুলিই এখানে রাখা হল। নিজের আগের সংগ্রহে এসে-যাওয়া শব্দ যদি এখানে এসে থাকে, তা বাড়তি বা ভিন্ন কিছু বলার প্রয়োজনেই। নিজের আগের সংগ্রহ খুব ভাল করে যে মিলিয়েছি তা নয়, পুরো সংগ্রহ একত্র করার সময় তা করা যাবে যতটা সম্ভব নিখুঁত করে। আগে আগে সংগ্রহ প্রসঙ্গে কিছু কথা বলা হয়েছে, বিশেষত প্রথম প্রকাশের সময় একটু বিশদভাবে। এখানে আর কিছু বলা নয়, কেবল সংগ্রহটাই তুলে ধরা গেল। অখেজো/অখেজে — অকেজো থেকে। আদরের তিরস্কার হিসাবেই মূলত প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। পাজি। অচিমিতি — (উচ্চারণ ওচিমিতি) আচমকা, হঠাৎ। অদীয় — প্রচুর, অজস্র। অদ্বিতীয় থেকে ক...

কবিতা ।। অরণ্যকন্যা ।। অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়

  অরণ্যকন্যা অরিন্দম চট্টোপাধ্যায় অরণ্যকন্যার দৃষ্টির ভেতর বিষাদ বিন্দু ফোঁটা ফোঁটা জলের মতো গড়িয়ে যায়, হয়ে যায় কোন নদীপথ দৃষ্টি ভেঙে ভেঙে চলে যায় কোন এক শূন্য পথে অরণ্যকন্যার হৃদয়ের ভেতর ভাঙে যতো বৃক্ষপত্র নতুন পত্র পুষ্পের খোঁজ নেই ঠোঁট জুড়ে সমুদ্রকাঁপন বুদবুদের মতো অস্ফুট হয়ে উচ্চারিত হয় কোন অক্ষর শব্দ আর তাঁর শরীর থেকে ছড়িয়ে যায় হয়ে যায় একটা অদৃশ্য কবিতা...    ================== @ অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়,  বেহালা, কলকাতা -৭০০০৬০,  

দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত ।। রণেশ রায়

দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত রণেশ রায় ভূমিকা দর্শনের ইতিহাসে বস্তু ও চেতনার সম্পর্ক মানবচিন্তার গভীরতম প্রশ্ন। অধিবিদ্যা ভাবকে মুখ্য ধরে, বস্তুকে গৌণ বলে মনে করে। বিপরীতে মার্কস ও এঙ্গেলস বলেছেন—বস্তুই মুখ্য এবং চেতনা তার প্রতিবিম্ব। মানুষ যখন প্রথম আলোর মুখ দেখেছিল, তখনই সে বিস্ময়ে প্রশ্ন করেছিল—আমি কে, কোথা থেকে এলাম, আর এই দৃশ্যমান জগতের বাইরে কিছু আছে কি? এই প্রশ্ন থেকেই জন্ম নিয়েছিল দর্শনের দুই বিপরীত স্রোত—ভাববাদ আর বস্তুবাদ। ভাববাদ বলেছিল—"ভাবই প্রথম," আর মার্কস বললেন—"না, বস্তুই প্রথম।" এই দুই প্রান্তের মাঝখানে আমি দেখি এক সেতুবন্ধন, যেখানে বস্তু, স্নায়ু ও চেতনা একে অপরকে গড়ে তোলে, আর তাদের এই ত্রিত্বের নৃত্যেই সৃষ্টি হয় জীবন ও কল্পনার জগৎ। ভাবববাদ এক সর্বশক্তিমান শক্তির কল্পনা করে যা এই বস্তুজগতের স্রষ্টা। আর এখান থেকে ধর্ম ও ধর্মীয় ভাবধারার সৃষ্টি। আমার এই প্রবন্ধে আমি মার্কসীয় দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদকে আধুনিক বৈজ্ঞানিক আলোকে বোঝার চেষ্টা করেছি। আমি দেখাবার চেষ্টা করবো কিভাবে ইন্দ্রিয় এবং স্নায়ুজগৎ বস্তু ও চেতনাকে সংযুক্ত করে এবং কল্পলোকের জন্ম দেয়...

চাঁদে জীবন ।। শমীক সমাদ্দার

চাঁদে জীবন  শমীক সমাদ্দার                           চন্দ্রযান দুরন্ত তৈরি, রকেটের উপর ভর করে চন্দ্রযান চাঁদে অবতরণ করবে। মাধ্যাকর্ষণ শক্তি পেরিয়ে মহাকাশযান চাঁদের কক্ষপথে  স্থাপন করা হয়েছে। চন্দ্রাযান চাঁদের মাটিতে পা রাখবে সময়ের কাউন্ট ডাউন চলছে। সমস্ত নিয়ন্ত্রণ স্পেসস্কাই গাবেষণা কেন্দ্র কতৃক নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে প্রযুক্তি বিজ্ঞান অতল গভীরতায় বাসা বাঁধে। পরিচয়টা দিয়ে দিলাম এই স্পেসসিপে রয়েছে তিনজন নভোচর, একজনের নাম সাইমন আর এক জনের নাম রেমন্ড, আর এদের সঙ্গে একজন মহিলা আছে তার নাম মেরিনা। চন্দ্রযান চন্দ্রপৃষ্ঠে সফলভাবে অবতরণ করেছে। চন্দযান দুরন্ত চাঁদের পূর্ব -পশ্চিম অক্ষরেখা বরাবর অবতরণ করেছে। আলো আঁধারের গভীরতায় বড় বড় পাথরের পিণ্ড, চাঁদের সার্ফেসের উপরে পাথর জল দেখা যায়। জমাট বাঁধা অক্সিজেন আর কার্বনডাই অক্সাইড। ওরা এখানে এসেছে এক রহস্য উদ্ঘাটন করতে। যে স্থানে ওরা অবতরণ করেছে সেখানে ১০ বছর আগে ওরা এসেছিলো। রুশ সরকার ওদের দেশের ছাত্র ছাত্রী কে মহাকাশে চাঁদে পাঠাতে চায়। ওরা কেন এসেছে সেটা এখনো অধরা। সাইমনের বর্...

জনপ্রিয় লেখা

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ -- "ত্রয়ী কাব্য" ------------------------------------------------------------------------------ সুনন্দ মন্ডল নবীনচন্দ্র সেন সাহিত্যে তথা বাংলা কবিতার জগতে এক অবিস্মরণীয় নাম। তিনি চট্টগ্রাম জেলার নওয়াপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ১৮৪৭ সালে তাঁর জন্ম এবং মত্যু ১৯০৯ সালে। বঙ্কিমচন্দ্র তাঁকে 'বাংলার বায়রন' বলেছেন। ‎জীবৎকালীন যুগে আত্মপ্রত্যয়ের মধ্যে জাতীয় চরিত্র আত্মস্থ করে নতুন সংস্কারে প্রয়াসী হয়ে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখেছেন।মধুসূদন-হেমচন্দ্র-নবীনচন্দ্র--এই তিন কবি বাংলা কাব্যধারায় প্রাণ সঞ্চার করেছিলেন। বিশেষত মহাকাব্য লেখার দুঃসাহস দেখিয়েছিলেন। এদিক থেকে মধুসূদন দত্ত একজন সফল মহাকাব্যিক। তাঁর 'মেঘনাদ বধ' কাব্যের মত গভীর ও ব্যঞ্জনাময় না হলেও নবীনচন্দ্র সেনের 'ত্রয়ী' কাব্য বিশেষ মর্যাদা দাবি করতেই পারে। তাছাড়া 'ত্রয়ী' কাব্যে ধর্মীয় ভাবধারার আবেগ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ‎ ‎নবীনচন্দ্র সেন বহু কাব্য লিখেছেন। যেমন- 'অবকাশরঞ্জিনী','পলাশীর যুদ্ধ', 'ক্লিওপেট্রা', 'রঙ্গমতী', 'খ্রীষ্ট', ...

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা শ্রীজিৎ জানা "সময় চলিয়া যায় নদীর স্রোতের প্রায়"। স্রোতের ধারা তার দু'প্রান্তে রেখে যায় ভাঙাগড়ার চিহ্ন। কালের দৃশ্যপটেও পরিবর্তনের ছবি অনিবার্যভাবেই চোখে পড়ে। সমাজ সময়ের ছাঁচে নিজেকে গড়ে নেয় প্রতিনিয়ত।  সেখানে মনে নেওয়ায় বাধা থাকলেও,মেনে নেওয়ার গাজোয়ারি চলে না। ফলত কাল বদলের গাণিতিক হিসেবে জীবন ও জীবিকার যে রদবদল,তাকেই বোধকরি সংগ্রাম বলা যায়। জীবন সংগ্রাম অথবা টিকে থাকার সংগ্রাম।  মানুষের জীবনযাপনের ক্ষেত্রে আজকে যা অত্যাবশ্যকীয় কাল তার বিকল্প রূপ পেতে পারে অথবা তা অনাবশ্যক হওয়াও স্বাভাবিক। সেক্ষেত্রে উক্ত বিষয়টির পরিষেবা দানকারী মানুষদের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হওয়া অস্বাভাবিক নয়। এক কালে গাঁয়ে কত ধরনের পেশার মানুষদের চোখে পোড়তো। কোন পেশা ছিল সম্বৎসরের,আবার কোন পেশা এককালীন।  সব পেশার লোকেরাই কত নিষ্ঠা ভরে গাঁয়ে  তাদের পরিষেবা দিত। বিনিময়ে সামান্য আয় হত তাদের। আর সেই আয়টুকুই ছিল  তাদের সংসার নির্বাহের একমাত্র উপায়। কালে কালান্তরে সেই সব পেশা,সেই সব সমাজবন্ধুরা হারিয়ে গ্যাছে। শুধুমাত্র তারা বেঁচে আছে অগ্রজের গল্পকথায়,আর বিভিন...

গ্রন্থ আলোচনা: শর্মিষ্ঠা দেবনাথ

প্রতিবাদ যখন অগ্নিবাণী বাংলাদেশে নারীমুক্তি ও নারী আন্দোলনের পুরোধা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ১৯৯তম জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদিত হল " আসিফা এবং.." কাব্য সংকলনটির মধ্যদিয়ে।সংকলনটির বিশেষত্ব হল,এটি উৎসর্গ করা হয়েছে নারীর সম্মান রক্ষার আন্দোলনের যোগ্যতম ব্যক্তি শহীদ শিক্ষক বরুন বিশ্বাসকে। সংকলক প্রকাশক সন্দীপ সাহু নিজে এবং বিশিষ্ট কবি সাহিত্যিকদের দিয়ে লিখিয়ে নিয়েছেন এমন কিছু কবিতা, যা শুধুমাত্র শব্দ ও ছন্দের অনুবন্ধ নয়, এক একটি অগ্নিবাণী।আসলে জীবনকে দেখার স্বাতন্ত্র‍্যে কবিরা সব সময়ই অগ্রগণ্য এবং অনন্য।যুগ ও জীবন দ্বন্দ্বের কণ্ঠস্বরকে আশ্রয় করে,একদিকে মনের প্রবল দাহ ও অন্যদিকে  নির্যাতিতা শিশুকন্যা ও নারীর প্রতি মনের গভীর আকুলতা থেকে প্রকাশ পেয়েছে "আসিফা এবং" এর  কবিতাগুলি।এক অন্ধকার সময়ের মুখোমুখি আমরা,সেই অন্ধকার আমাদের নিয়ে এসেছে সামাজিক অবক্ষয়ের শেষধাপে যেখানে নৈতিকতা,পাপবোধ,গ্লানিকে সরিয়ে রেখে, সমাজের বানানো নিয়মকে তোয়াক্কা না করে,অনায়াস দক্ষতায় ও ক্ষিপ্রতায় নিজেরই ধর্মচেতনাকে জলাঞ্জলি দিয়ে কিছু মানুষ তার পশুত্বের পরিচয় দিয়েছে ধর্ষণ ও ন...

শ্যামাপদ মালাকারের কবিতা

চোখ """"""" নদী, অরণ্য, রাতের ফালি চাঁদ- সবেই তো আমার...স্বর্ণপিঁড়িটাও!। সেদিন, শুকতারাটার গা' মাপতে গিয়ে মনে হল, --ওরা আমার চেয়েও সুখী? দেখিনা একবার গাইতি-শাবল চালিয়ে... চালালাম। জল-মাটি ভেজা একটা 'চোখ' কুড়িয়ে ফিরলাম! সেই চোখদিয়ে দেখি-- শেষ বিকেলের নিরন্ন আঁচে ঝলসানো বুকে নীড়ে ফিরছে ধূলিমাখা কত কাল পা, কি শান্তি - কি তৃষ্ণা! পাতাক্ষোয়া কোদালেরর মাথায় ঝরেপড়া ললাটের ঘামে, কারা যেন জীবন শাণ দেয়! রুক্ষঠোঁটের আবরণে এক সময় নেমে আসে শিশিরস্নাত কালনিশি-- মাঝের ব্যবধান মুছে দেয় প্রতিশ্রুতির ভীড়- - পূর্বজনমের নিদর্শনচুম্বন শেষে হেরে যায় কার মমতাজ-- ম্লান হয়ে যায় কত পিঁড়ি! ... ম্লান হয়ে যায় কত পিঁড়ি! ... ম্লা...

কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা: এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায় ।। পার্থ সারথি চক্রবর্তী

  কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা : এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায়  পার্থ সারথি চক্রবর্তী  কথায় বলে বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। রাজার শহর কোচবিহারের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা আরো অনেক বেশি। দুর্গাপূজা আর দীপাবলির মতো দু'দুটো বিরাট মাপের উৎসবের রেশ কাটতে না কাটতেই, এ শহর ভাসে রাস উৎসবের উন্মাদনায়। মদনমোহন ঠাকুর কোচবিহারের প্রাণের ঠাকুর। তাঁকে নিয়ে সবার আবেগ আর শ্রদ্ধা ও ভালবাসা এখানে বাঁধনছাড়া। এক অপূর্ব মিলনোৎসবের চেহারা নেওয়া এই উৎসব ঐতিহ্যবাহী ও ঐতিহাসিক। জন, মত, সম্প্রদায়ের উর্ধে এই উৎসবের গ্রহণযোগ্যতা। সময়ের কষ্টি পাথরে পরীক্ষিত! এক প্রাণের উৎসব, যা বহুদিন ধরেই গোটা উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ উৎসবে পর্যবসিত।কোচবিহারের এই রাস উৎসবকে কেন্দ্র করে যে মেলা হয় তাও সময়ের হাত ধরে অনেক বদলে গেছে। এসেছে আধুনিকতার ছোঁয়া! শৈশবে বাবার হাত ধরে যে মেলা দেখেছি তা চরিত্র ও আকৃতি দু'দিক থেকেই বদলে গেছে। গত পঁচিশ বছর ধরে খুব কাছে থেকে এই উৎসব ও মেলা দেখা, অনুভব করার সুযোগ হয়েছে। যা দিনদিন অভিজ্ঞতা ও প্রাপ্তির ঝুলিকে সমৃদ্ধ করে গেছে প্রতি ক্ষেত্রেই।  খুব সংক্ষেপে এই উৎসবের ইতিহাস না জানাটা কিন্তু অবিচারই ...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো,  তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) য...

মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা 2024 সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি (লেখক ও সম্পাদকীয় দপ্তরের কথোপকথন আকারে) --কী পত্রিকা? --নবপ্রভাত। --মুদ্রিত না অনলাইন? --মুদ্রিত। --কোন সংখ্যা হবে এটা? --বইমেলা 2024। --কোন কোন ধরনের লেখা থাকবে? --প্রবন্ধ-নিবন্ধ, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া। --বিশেষ কোন বিষয় আছে? --না। যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে। --শব্দ বা লাইন সংখ্যার কোন বাঁধন আছে? --না। নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো (যেমন, কবিতা 12-14 লাইনের মধ্যে, অণুগল্প কমবেশি 200/250শব্দে)। তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়। --ক'টি লেখা পাঠাতে হবে? --মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। --ফেসবুক বা অন্য কোন প্লাটফর্মে প্রকাশিত লেখা কি পাঠানো যাবে? --না। সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। --পত্রিকা কোন সময়ে প্রকাশিত হবে? --জানুয়ারি 2024-এর দ্বিতীয় সপ্তাহে। --লেখা পাঠানোর শেষতারিখ কত? -- 17 ডিসেম্বর 2023। --কীভাবে পাঠাতে হবে? --মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। --লেখার সঙ্গে কী কী দিতে হবে? --নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) --বিশেষ সতর্কতা কিছু ? --১)মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন '...

উৎসবের সৌন্দর্য: সেকালে ও একালে।। সৌরভ পুরকাইত

  উৎসবের সৌন্দর্য:  সেকালে ও একালে   সৌরভ পুরকাইত বাংলার উৎসব বাংলার প্রাণ। প্রতিদিনের জীবনযাপনের মধ্যে যখন মন ক্লান্ত হয়ে পড়ে তখন তাকে বেঁচে থাকার রসদ যোগায় এই উৎসব। কথায় বলে 'বারো মাসে তেরো পার্বণ'।মন আনন্দই চায়।তাই তাকে সজীবতা দিতে,পরিবারের,সমাজের ভালো-মন্দের কথা মাথায় রেখে মানুষ নিজেই সৃষ্টি করে নিয়েছে নানাবিধ উৎসবগুলিকে। একেবারে প্রাচীন কাল থেকে আজ পর্যন্ত মানুষ কখনোই উৎসব বিমুখ ছিল না।উৎসবই তাকে ঘর থেকে বাইরে টেনে এনেছে,চিনতে শিখিয়েছে আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার আনন্দকে। উৎসব আসলে প্রাণের সাথে প্রাণের যোগ, হৃদয়ের সাথে হৃদয়ের যোগ।রবীন্দ্রনাথ বলেছেন 'সত্য যেখানেই সুন্দর হয়ে প্রকাশ পায় সেইখানেই উৎসব'।হৃদয়ের সেই সুকোমল বৃত্তির জাগরণ যেন ফুটে ওঠা ফুলেরই মতো সত্য ও সুন্দর।এই জাগরণই উৎসব। তাই নানা কিছুর মধ্য দিয়ে,নানা উপলক্ষ্যে এই উৎসব প্রকাশ পায়। প্রাচীনকালে মানুষের হাতে না ছিল পসার, না ছিল পসরা।ছিল মনের আন্তরিকতা,মানুষকে কাছে টেনে নেবার ক্ষমতা।সেটাই ছিল উৎসবের সৌন্দর্য। তাই সেদিনের উৎসবে ক্ষুদ্র,তুচ্ছ উপকরণও প্রাণের উচ্ছ্বাসে মহৎ হয়ে উঠত।সেকালের উৎসবে লোক দেখানো ব্যাপার কিছু ...

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

বসন্তের কোকিল তুমি   বিচিত্র কুমার                      (০১) তোমার দু-আঁখির গহীন অরণ্যে একটা স্বপ্নের বহমান নদী রয়েছে, তারই রেশ ধরে আমি হেঁটে চলি অজানা বসন্তের পথে নীর উদ্দেশ্যে। সে চলার কোন শেষ সীমা নেই তাই আমার বিষণ্ণ একতারা সন্ন্যাস খুঁজে ফিরে , কবে তুমি বুঝবে অনুশ্রী মনের পর্দা খুলে একুশ বসন্ত তোমার রঙ ছিটিয়ে যাচ্ছে অচিনপুরে। এদিকে আমার দেহের প্রতিটি শিরা ধমনীতে প্রবাহিত হচ্ছে তোমার ভালোবাসার একটু উষ্ণতা পাবার জন্যে, শুধু অনুভবে তাণ্ডব উচ্ছাসিত হচ্ছে--- যেদিকে তাকাই --- ফুলে ফুলে ভ্রমর গুনগুনিয়ে উড়ে উড়ে পরে বসন্তের কোকিল গান গায় নব বসন্তে, তোমার দুই চোখে আমার একই ছায়া রয়ে যায় উতলা ভালোবাসার সীমান্তে।                 (০২)        এক রক্তাক্ত বসন্তের স্মৃতি কোন এক উতলা বসন্তের সকালে পুষ্পবনে ফুটেছিল একটি টকটকে লাল গোলাপ, তার সাথে হয়েছিলো দেখা প্রথম ফাগুনে হয়েছিল দুজনার এ জীবনের আলাপ।  তারপর প্র...

অনুভবে, অনুধ্যানে অনালোকিত কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী ।। সুপ্রিয় গঙ্গোপাধ্যায়

"এ কালে একটু লেখাপড়া জানা থাকাতে, এবং বঙ্গভাষায় অনেক গুলি পাঠ্য পুস্তক হওয়াতে কেবল পরনিন্দা করিয়া সময় কাটাইতে তাঁহাদের আবশ্যকও হয় না, প্রবৃত্তিও হয় না। …নিতান্ত সখ্যতা বা আত্মীয়তা না থাকিলে, সকল পেটের কথা খুলিয়া নিঃশ্বাস ছাড়িয়া তৃপ্তিলাভ করা, এ কালের মেয়েরা পছন্দ করেন না। তাঁহারা বইখানি, কার্পেটটুকু, নিজের স্বামী পুত্র লইয়া দিন যাপন করিতে বা একেলা থাকিতে কষ্ট বোধ করেন না।" —শরৎকুমারী চৌধুরাণীর এই লেখা (ভারতী ও বালক/ আশ্বিন কার্তিক, মাঘ/ ১২৯৮) দেখে বুঝতে অসুবিধা হয় না উনিশ শতকে নারীর লেখাপড়া শেখার উদ্দেশ্য ছিল মূলত আত্মমুক্তির জন্য। শুধু লেখাপড়া শেখা নয়, সাহিত্য সৃষ্টিতেও ছয়'এর দশক (উনিশ শতকের) থেকে নারীরা যে ধারা সূত্রপাত করেছিল তা নারীর আত্মমুক্তির পথকেই প্রসারিত করেছিল। ছয়'এর দশকের পূর্বেই ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে প্রথম ছাপার হরফে নারী রচিত কাব্য 'চিত্তবিলাসিনী' প্রকাশিত হয়। লেখেন কৃষ্ণকামিনী দাসী। ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে কবি ঠাকুরাণী দাসীর নাম উঠে আসতে থাকে, যিনি কবিতার পাশাপাশি গদ্যও লিখতেন। ঠিক সেই বছরই জন্মগ্রহণ করেন কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী, যাঁর কবিতা লেখা আত্মমুক্...

বছরের বাছাই

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৪তম সংখ্যা ।। ফাল্গুন ১৪৩১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

  এই সংখ্যায় একটি গ্রন্থ আলোচনা ও একটি ধারাবাহিক রচনা ছাড়া সব লেখাই ভাষা দিবস, মাতৃভাষা, ভাষাচেতনা ও ভাষা সমস্যা বিষয়ক রচনা। লেখাগুলি এই সংখ্যাকে অনেকটাই সমৃদ্ধ করেছে। পড়ুন। শেয়ার করুন। মতামত জানান। লেখকগণ নিজের নিজের লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন যতখুশি, যে মাধ্যমে খুশি। কিন্তু স্ক্রিনশট শেয়ার নৈব নৈব চ!  অন্য বিষয়ের লেখাগুলি আগামী সংখ্যার জন্য রইল।  সকলকে ধন্যবাদ, অভিনন্দন। ভালো থাকুন।   --সম্পাদক, নবপ্রভাত। ==  সূ  চি  প  ত্র  == প্রবন্ধ-নিবন্ধ অমর ২১শে ফেব্রুয়ারি বাঙ্গালীর বাংলা ভাষা দুর্জয় দিবস।। বটু কৃষ্ণ হালদার ভাষা শহীদদের পঁচাত্তর বছর।। অনিন্দ্য পাল একুশে ফেব্রুয়ারি : বাঙালির শ্রেষ্ঠ অশ্রুবিন্দু।। জীবনকুমার সরকার কবিগানের সাহিত্যিক ও সমাজতাত্ত্বিক মূল্য।। বারিদ বরন গুপ্ত বিপন্ন মাতৃভাষা ও সংস্কৃতি।। শ্যামল হুদাতী মায়ের দুধ আর মাতৃভাষা।। প্রদীপ কুমার দে একুশে ফেব্রুয়ারি : কিছু কথা।। বনশ্রী গোপ বাংলায় কথা বাংলায় কাজ।। চন্দন দাশগুপ্ত বিপন্ন মাতৃভাষা ও তার মুক্তির পথ।। মিঠুন মুখার্জী. হে অমর একুশে, তোমায় ভুলিনি, ভুলব না।। মহম্মদ মফিজুল ইসলা...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৭তম সংখ্যা ।। জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ মে ২০২৫

  প্রচ্ছদ চিত্র: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সূচিপত্র রবীন্দ্রনাথ এবং কয়েকজন নারী ।। অনিন্দ্য পাল পরাবাস্তববাদ ও বাংলায় জীবনানন্দের কাব্যচর্চা ।। রণেশ রায় প্রতীক্ষা ।। চন্দন দাশগুপ্ত আশ্রয় ।। সায়নী সাহা বয়স্ক শিক্ষাকেন্দ্র ।। দেবাংশু সরকার প্রণামের প্রভু ।। সুপ্রভাত মেট্যা দুর্ভাগ্যের সম্মুখ সমরে ।। সমীর কুমার দত্ত আচমকা শরৎ ।। অর্ণব সামন্ত প্রতিধ্বনি ✍️ সুবীর কুমার ঘোষ জীবন যেখানে যেমন ।। আরজু মুন জারিন বছর সীমান্তে হিসেব নিকেশ ।। রানা জামান চারটি কবিতা ।। বিবেকানন্দ নস্কর আমরা আছি ।। লালন চাঁদ চাওয়া ।। মাথুর দাস কাগজ ফুলে ।। সফিউল মল্লিক সময়ের স্রোত ।। দুর্গাদাস মিদ্যা তুমি মানুষ ।। বদরুল বোরহান দিঘার সমুদ্র ।। মাখনলাল প্রধান পুস্তক-আলোচনা ।। অরবিন্দ পুরকাইত সংযম ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত  চেনা প্রতিবেশী (প্রথম পর্ব) ।। দীপক পাল খেলার মাঠ ।। তূয়া নূর বন্ধু শ্যামলকান্তি ।। শংকর ব্রহ্ম তুমি তোমার মতো থাকলে ।। সত্যেন্দ্রনাথ বেরা গ্রীষ্মে খুবই হিংস্র রবি ।। জগবন্ধু হালদার স্বপ্ন দর্শন ✍️ পার্থ প্রতিম দাস মৌন মুখরতা ।। মুসা মন্ডল রুদ্র বৈশাখ ।। দীনেশ সরকার চিহ্নিত পদযুগ পদাঘাত ।। দেবাশীষ...

প্রচ্ছদ।। ৮৩তম সংখ্যা ।। মাঘ ১৪৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ।। প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র

  বিঃ দ্রঃ আগামী ফেব্রুয়ারি সংখ্যার জন্য ভাষা দিবসের কথা মাথায় রেখে লেখা পাঠান। email: nabapravatblog@gmail.com  সূচিপত্র ফিচার।। গোপাল ভাঁড়ের অজানা সত্য ।। লোকনাথ পাল প্রবন্ধ ।। মসুয়ার রায় পরিবার এবং বঙ্গসংস্কৃতি ।... প্রবন্ধ ।। সুধীন্দ্রনাথ দত্ত: কাব্যের দার্শনিক ও ন... কবিতায় সেতুবন্ধন (তৃতীয় অংশ) শিল্পবিপ্লবোত্তর কাল... রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর বিদ্রোহী প্রেমের কবিতা: ... কবিতা ।। এই মন ভালো নেই দিনে ।। সুপ্রভাত মেট্যা কবিতা ।। জোছনা আলোর স্বপ্ন ।। তুষার ভট্টাচাৰ্য কবিতা ।। নিঃস্ব হবো ।। লালন চাঁদ কবিতা ।। ভালোলাগা  ।। আজিজ উন নেসা  গল্প ।। স্বীকারোক্তি ।। চন্দন দাশগুপ্ত কবিতা ।। শীতের দিন ।। প্রশান্ত কুমার মন্ডল কবিতা ।। শীতকাল ।। অঙ্কিতা পাল নাসির ওয়াদেনের দুটি কবিতা ভূতের লেখা ছড়া ।। বদরুল বোরহান কবিতা ।। ব্যস্ত ।। আলাপন রায় চৌধুরী ছোটগল্প ।। লম্বুর স্বপ্নপূরণ ।। পরেশ চন্দ্র মাহাত কবিতা ।। সৎকার ।। সুমিত মোদক কবিতা।। শীত বৈচিত্র্য ।। সুমিতা চৌধুরী পুস্তক-আলোচনা ।। নিউটনের আপেল ও প্রেমিকা ।। অরবিন্... গল্প।। শান্তির পথে …...।। বন্দনা সেনগুপ্ত কবিতা ।। মা...

সূচিপত্র ।। ৮৯তম সংখ্যা ।। শ্রাবণ ১৪৩২ জুলাই ২০২৫

সূচিপত্র   প্রবন্ধ ।। বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় ।। মাখনলাল প্রধান প্রবন্ধ ।। শ্রমিকের অধিকার ।। চন্দন দাশগুপ্ত প্রবন্ধ ।। ভিনগ্রহীদের সন্ধানে ।। শ্যামল হুদাতী প্রবন্ধ ।। নারীমর্যাদা ও অধিকার ।। হিমাদ্রি শেখর দাস কবিতা ।। মশালের রং তুলি ।। তূণীর আচার্য কবিতা ।। জললিপি ।। রূপক চট্টোপাধ্যায় গুচ্ছকবিতা || শিশির আজম নিবন্ধ ।। পূনর্জন্ম ।। শংকর ব্রহ্ম মুক্তভাবনা ।। কোলাহল তো বারণ হলো ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত গল্প ।। গানের হাড় ।। শুভজিৎ দত্তগুপ্ত গল্প ।। শিকড়ের খোঁজে ।। সমীর কুমার দত্ত সুপ্রভাত মেট্যার পাঁচটি কবিতা গ্রন্থ-আলোচনা ।। আবদুস সালামের কাব্যগ্রন্থ 'অলীক রঙের বিশ্বাস'।। তৈমুর খান অণুগল্প ।। হরিবোল বুড়ো ।। সুমিত মোদক রম্যরচনা ।। গোয়েন্দা গোলাপচন্দ আর প্রেমের ভুল ঠিকানা ।। রাজদীপ মজুমদার দুটি গল্প ।। মুহাম্মদ ফজলুল হক দুটি কবিতা ।। তীর্থঙ্কর সুমিত কবিতা ।। মেঘমুক্তি ।। বন্দনা পাত্র কবিতা ।। ব্যবচ্ছিন্ন শরীর ।। কৌশিক চক্রবর্ত্তী কবিতা ।। শমনচিহ্ন ।। দীপঙ্কর সরকার কবিতা ।। ভালোবাসার দাগ ।। জয়শ্রী ব্যানার্জী কবিতা ।। ফণীমনসা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ছড়া ।। আজও যদি ।। বদ্রীন...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো,  তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) য...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮২তম সংখ্যা ।। পৌষ ১৪৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

  সূচিপত্র অন্নদাশঙ্কর রায়ের সাহিত্য: সমাজের আয়না ।। বিচিত্র কুমার প্রবন্ধ ।। বই হাতিয়ার ।। শ্যামল হুদাতী কবিতায় সংস্কৃতায়ন (দ্বিতীয় ভাগ ) ।। রণেশ রায় পুস্তক-আলোচনা ।। অরবিন্দ পুরকাইত কবিতা ।। লেগে থাকা রোদ্দুরের ঘ্রাণের মতো ।। জয়শ্রী ব্যানার্জি কবিতা ।। ভুল ।। সুপ্রভাত মেট্যা কবিতা ।। উন্মেষ ।। বিশ্বজিৎ সেনগুপ্ত কবিতা ।। গার্হস্থ্য ।। বিবেকানন্দ নস্কর একগুচ্ছ বিজয়ের কবিতা ।। বিচিত্র কুমার গল্প ।। পোষ্য ভূত ।। সমীর কুমার দত্ত কবিতা ।। আশপাশ ।। প্রতীক মিত্র কবিতা ।। মেঘ ।। তীর্থঙ্কর সুমিত অণুগল্প ।। বংশীবদনের সুখদুঃখ ।। দীনেশ সরকার কবিতা ।। গভীর রাত ।। সুনন্দ মন্ডল তিনটি কবিতা ।। সুশান্ত সেন ভালোবাসার বাসা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত অণুগল্প ।। শিক্ষকের সম্মান ।। মিঠুন মুখার্জী কবিতা।। প্রশ্ন ।। জীবন সরখেল কবিতা ।।ক্ষরিত সে পথ ।। রহিত ঘোষাল কবিতা ।। রক্ত দিয়ে কেনা ।। মুহাম্মদ মুকুল মিয়া কবিতা ।। কংক্রিট ।। আলাপন রায় চৌধুরী ছড়া ।। শীত নেমেছে ।। রঞ্জন কুমার মণ্ডল কবিতা ।। কিছু শব্দ ।। সমীর কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় কবিতা ।। শীতের নগ্নতা ।। রানা জামান কবিতা ।। পথ চলা ।। পাভেল আমান বেদ পু...

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ৮৬তম সংখ্যা ।। বৈশাখ ১৪৩২ এপ্রিল ২০২৫

সম্পাদকীয় এই সংখ্যাটি বাংলা নববর্ষ বিষয়ক সংখ্যা। নৱৰ্ষকেন্দ্রিক বহু তথ্যপূর্ণ লেখা এই সংখ্যাটিকে সমৃদ্ধ করেছে। বাংলা নববর্ষ উদযাপনের ইতিহাস, রীতিনীতি, উৎসব, পার্বন, লোকাচার, রূপান্তর বহুবিধ বিষয় প্রকাশিত হয়েছে এই সংখ্যার লেখাগুলিতে। এই সংখ্যার বাছাই কিছু লেখার সঙ্গে আগামীতে আরও কিছু লেখা সংযুক্ত করে বাংলা নববর্ষ বিষয়ক একটি মুদ্রিত সংখ্যা প্রকাশ করার ইচ্ছে রইল।  সকলকে নববর্ষের আন্তরিক শুভকামনা জানাই। উৎসবে আনন্দে থাকুন, হানাহানিতে নয়। ধর্ম-ব্যবসায়ীদের চক্রান্ত ব্যর্থ করে সহনাগরিকের পাশে থাকুন। মনে রাখুন, ধর্মকে মানুষই সৃষ্টি করেছে। ঈশ্বর আল্লা গড ইত্যাদির জন্মদাতা মানুষই। মানুষকে ভালোবাসুন। মানুষের পাশে থাকুন।  নিরাশাহরণ নস্কর  সম্পাদক, নবপ্রভাত।  সূচিপত্র প্রবন্ধ-নিবন্ধ-স্মৃতিকথা পয়লা বৈশাখ ।। সিদ্ধার্থ সিংহ নববর্ষকেন্দ্রিক মেলা, পার্বন, উত্সব, লোকাচার ।। সবিতা রায় বিশ্বাস নববর্ষ আবাহন ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে এবং বিভিন্ন দেশে ।। তুষার ভট্টাচার্য নববর্ষের সেকাল ও একাল ।। হিমাদ্রি শেখর দাস নববর্ষের হাল-হকিকৎ ।। শংকর ব্রহ্ম বোশেখি বাঙালি নাকি পোশাকি বাঙালি? ।। দিব্যেন্দু...

প্রবন্ধ ।। বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় ।। মাখনলাল প্রধান

বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় মাখনলাল প্রধান বাংলার শিল্প-সংস্কৃতির জগতে যাত্রা শিল্প তথা নাট‍্যশিল্পে মড়ক নেমে এসেছে । যাত্রা শিল্পের মড়কে শুধু কোভিড নয় তার বহুপূর্ব থেকেই অর্থনৈতিক বিপর্যয় , শিক্ষাক্ষেত্রে বন্ধ‍্যাত্ব এবং গ্ৰাম বাংলার পটপরিবর্তন শেষ পেরেক ঠুকে দিয়েছে। যাত্রা-শিল্পের লীলাভূমি ছিল গ্ৰাম বাংলা। গ্ৰামে প্রচুর যাত্রাপালা হত নানা উৎসবকে কেন্দ্র করে । জমিদারি ব‍্যবস্থা লুপ্ত হওয়ার পর গ্ৰামীণ মানুষের উদ‍্যোগে শীতলা পূজা,  কালীপূজা, দুর্গাপূজা, কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা, চড়ক ইত‍্যাদিকে উপলক্ষ‍্য করে যাত্রাপালার আয়োজন না হলে কেমন যেন ম‍্যাড়ম‍্যাড়ে লাগতো। সেই সঙ্গে কলকাতার বড়বড় কোম্পানির যাত্রাপালা ঘটা করে, টিকিট সেল করে হত মাঠে। খুব বড় মাপের খেলার মাঠ যেখানে ছিল না সেখানে ধানের মাঠ নেওয়া হত ‌। ত্রিশ-চল্লিশ হাজার মানুষ দেখতে আসত। স্পেশাল বাস পাঠাত  আয়োজক কর্তৃপক্ষ। বিনা ভাড়ায় বাসে যাতায়াত করত যাত্রার দর্শকেরা। কিন্তু বিকল্প ধানচাষ শুরু হলে জমিগুলো সময় মতো ফাঁকা পাওয়া গেল না । প্রথম দিকে ব‍্যাপকহারে ধান শুরু না হওয়ায় খুব একটা অসুবিধা হত না। বহুক্ষেত্রে  ধান কা...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। নবপ্রভাত ৮৫ ।। চৈত্র ১৪৩১ মার্চ ২০২৫

  সূচিপত্র নিবন্ধ ।। মরিয়ম মির্জাখানি: এক অনন্য গণিতসূর্য ।। ... নিবন্ধ ।। নারী দিবসে যা ভাবা উচিত ।। বিশ্বনাথ পাল প্রবন্ধ ।। প্রাচীনকাল থেকে নারীরা অবহেলিত, বঞ্চিত,... নিবন্ধ ।। আমার চোখে আদর্শ নারী ।। জয়শ্রী বন্দ্... ফিচার।। এই মুহূর্তে বাংলা সাহিত্যে নারীদের লেখালেখ... আফ্রিকার লোককথা ।। করোটিকে বিয়ে করা অবাধ্য মেয়েটি ... ছোটগল্প ।। মানবী ।। ভুবনেশ্বর মন্ডল নিবন্ধ ।। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে অন্যতম নারী মু... নিবন্ধ ।। প্রিয় মহিলা সাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবী ।। ... গল্প ।। উই ওয়ান্ট জাস্টিস ।। রবীন বসু প্রবন্ধ ।। নিপীড়িতা ।। শ্যামল হুদাতী ফিচার ।। রমণী রতন ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত প্রবন্ধ ।। নারী সমাজ : তখন-এখন ।। তপন মাইতি নিবন্ধ ।। বহমান কালের ধারায় নারী ।। দীপক পাল গল্প ।। আমার দুর্গা ।। অঞ্জনা গোড়িয়া (সাউ) গল্প ।। যোগ্য জবাব ।। সমীর কুমার দত্ত ছোটগল্প ।। আমি দুর্গাকে দেখেছি।। চন্দন দাশগুপ্ত গল্প ।। সম্পর্ক ।। গৌতম সমাজদার কবিতা।। নারী মানে ।। গোবিন্দ মোদক কবিতা।। নারী ।। সমর আচার্য্য ছড়া ।। নারী অসামান্যা ।। সৌমিত্র মজুমদার কবিতা ।। নারী দিবসে ।। বিবেকানন্দ নস্কর কবিতা ।। না...

প্রবন্ধ ।। ভিনগ্রহীদের সন্ধানে ।। শ্যামল হুদাতী

ভিনগ্রহীদের সন্ধানে  শ্যামল হুদাতী  ইতিহাসের শুরু থেকে বারবার মানুষকে একটা প্রশ্ন কুঁড়ে কুঁড়ে খায় – এই মহাবিশ্বে আমরা কি একা? পৃথিবীর মতো আরও গ্রহ রয়েছে, যেখানে মানুষের মতো বুদ্ধিমান প্রাণীরা বাস করে – এই সম্ভাবনা বরাবর মানুষকে মুগ্ধ করেছে। আমাদের প্রত্যেকের জীবনের কখনও না কখনও এই ভাবনা এসেছে। দীর্ঘ কয়েক দশকের গবেষণার পরও, এই বিষয়ে কোনও নিশ্চয়তা দিতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। জেমস ওয়েব মহাকাশ টেলিস্কোপ, বহু দূরের এমন কিছু গ্রহের সন্ধান দিয়েছে, যেগুলিতে প্রাণ থাকতেই পারে। তবে, নিশ্চিত কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে, আমেরিকার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাম্প্রতিক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, ভিনগ্রহীদের খুঁজতে বহু দূরে যাওয়ার কোনও দরকার নেই। তারা এই পৃথিবীতেই মানুষের ছদ্মবেশে মানুষের মধ্যেই বসবাস করতে পারে। আমরা ভিনগ্রহীদের যেমন কল্পনা করি, এরা তার থেকে আলাদা। এরা অনেকটাই, দেবদূতদের মতো। মানব জগতের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক প্রযুক্তিগত নয়, বরং জাদুকরি। মহাকাশে সৌরজগতের গ্রহ পৃথিবী ছাড়া অন্য কোথায় প্রাণ রয়েছে কি না তা নিয়ে চলছে বিস্তর গবেষণা। একই সঙ্গে পৃথিবী ছাড়া অন্য কোনো গ্রহে মানুষ বসবাস ক...

মাসের বাছাই

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬

  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠালে  অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে হলে ভালো। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # ...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯২তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩২ অক্টোবর ২০২৫

—: সম্পাদকীয় দপ্তর থেকে :— এই সংখ্যার জন্য লেখা এসেছিল প্রায় ১৮০টা। কিন্তু গুণগত মানে দুর্বল লেখার সংখ্যা বহু। আমরা নবপ্রভাতে নতুনদের কথা ভেবে বেশ কিছু দুর্বল লেখাও রাখি। কিন্তু সবসময় একই লোকের দুর্বল লেখা প্রকাশ করা অনুচিত বলে মনে করি। শেষ পর্যন্ত ৯৯ জনের লেখা রাখা গেল। যাদের লেখা প্রকাশিত হল না, তারা লেখাগুলি অন্য যেখানে খুশি পাঠাতে পারেন। বিশেষ কারণে এই সংখ্যার মুদ্রিত সংস্করণ প্রকাশিত হচ্ছে না। আমরা দুঃখিত। তবে মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি শীঘ্রই আসছে। সঙ্গে থাকুন। সকলকে উৎসবমুখর বর্ণময় শুভেচ্ছাসহ— —নিরাশাহরণ নস্কর, সম্পাদক, নবপ্রভাত। অনুরোধ : প্রকাশিত লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন, ছবি/স্ক্রীনশট নয়।  == সূচিপত্র == পড়া-লেখার ইতিহাস অনুসন্ধান।। তপন তরফদার উৎসব : মানুষের চিরন্তন আত্মপ্রকাশ।। কৃশানু ব্যানার্জি বাংলা : সভ্যতা ও সংস্কৃতির জন্মভূমি।। শ্যামল হুদাতী সমুদ্র আর অস্তিত্ব ।। সুব্রত চৌধুরী রাজা ছিলেন জুবিন গর্গ ।। গঙ্গা 'অনু'   আদ্যাশক্তি মহামায়ার বাংলা বারো মাসের বারো রূপ ।। অর্হণ জানা মেধাদাদুর আসর ।। রণেশ রায় বৈজ্ঞানিক মা...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯৩তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩২ নভেম্বর ২০২৫

সূচিপত্র বস্তু, চেতনা এবং কবি ।। সজল চক্রবর্তী দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত ।। রণেশ রায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট ও সন্নিহিত অঞ্চলের কথ্য শব্দ ।। অরবিন্দ পুরকাইত চাঁদে জীবন ।। শমীক সমাদ্দার অসমাপ্তি ।। মহুয়া হুই গ্যালাক্সির শব্দে ।। জাসমিনা খাতুন তিনটি কবিতা ।। দিবাকর সেন অপূর্ণতার শেষ অধ্যায় ।। সুপ্রিয় সাহা হাফ ডজন ছড়া ।। স্বপনকুমার পাহাড়ী স্বাপ্নিক অমলের ঘুৃম ।। সঞ্জয় দেওয়ান দুটি কবিতা ।। সৌমিত্র উপাধ্যায় পথ চলতি ✍️পার্থ প্রতিম দাস হেমন্তের বিষাদ ছুঁয়ে ।। শক্তিপদ পাঠক রাই আর বাবা ।। অদিতি চ্যাটার্জি স্থিতিশীল ।। রঞ্জিত মুখোপাধ্যায় হৃদয়ের শূন্য কোড ।। লিপিকা পিঙ্কি দে অমানিশা ।। সৌভিক মুখার্জী দৃষ্টিগত ।। শামীম নওরোজ জ্যান্ত ভূতের গপ্পো ।। পার্থ সারথি চট্টোপাধ্যায় ধুতরা ফুলের ঘ্রাণ ।। মজনু মিয়া তারা খসার আলোয় ।। তীর্থঙ্কর সুমিত উত্তরণে অন্তরায় ।। সমীর কুমার দত্ত প্রেম মুদ্রা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ধারা ।। লালন চাঁদ অন্যের ব্যথায় ব্যথি ।। জগদীশ মণ্ডল গর্ভ ।। শাশ্বত বোস ভ্রমণ বিষয়ক স্মৃতিকথা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত শাপে বর ।। সাইফুল ইসলাম রবিবার ।। সঙ্ঘমিত্রা দাস দুটি ...

দিদৃক্ষা ।। রাজেশ কে. চক্রবর্ত্তী

  দিদৃক্ষা রাজেশ কে. চক্রবর্ত্তী 'কাল একবার দেখা হতে পারে?' দশমীর দুপুরে খাটে আধশোয়া হয়ে নিজের ফোনটা ঘাঁটছিল দেবমাল্য; হোয়াট্‌সঅ্যাপের সার্চ বক্সে  র‍্যান্ডম সিক্যুয়েন্সে ক'খানা ডিজিট ইনপুট করতেই বিস্মৃতির অতল থেকে অপ্রত্যাশিতভাবে যে নামটা স্ক্রিনের সারফেসে ভেসে উঠল, এককালে দেবমাল্যের প্রায়োরিটি লিস্টে সবথেকে ওপরে পিন্‌ করা থাকতো এই অ্যাকাউন্টটা। 'অহনা দাশগুপ্ত'—গ্রেয়েড-আউট ডিপিটার ডানদিকে, নামটার তলায় নিস্প্রভ হরফে ভেসে থাকা ওর এই লাস্ট মেসেজটা বেশ ক'বছরের পুরনো, কিন্তু দেবমাল্যর স্মৃতির প্যান্ডোরা বাক্সটি উলটে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল। আরেকবার আপাদমস্তক শিহরিত হয় সে। প্রোফাইলটা খুলে ওপরে-নীচে স্ক্রল্‌ করে দেখে, ওদের পুরনো চ্যাটগুলো তেমনি আড়ষ্ট হয়ে পড়ে আছে, ওর মেসেজগুলোর পাশে ডাবল টিকগুলো এখনও জাজ্বল্যমান সবুজে ছোপানো, যেন এইমাত্র 'সিন্‌' করে রেখেছে অহনা! যেন এখুনি আবার হাত বোলালেই অহনা এসে খানিকটা রাগত ভঙ্গিতে চ্যাট করতে লেগে যাবে। দেবমাল্যের বুক ছাপিয়ে একটা নীরব দীর্ঘশ্বাস উঠে আসে! ছুটির এই আমেজটা লক্ষ্মীপুজো অব্দি গড়াবে—অফিস খুললেই তো আবার দমফাটা ব্য...

গুচ্ছকবিতা || শিশির আজম

  গুচ্ছকবিতা || শিশির আজম হুইসেল (মুরাকামি থেকে অনুপ্রাণিত) ♦ 'গভীর রাতে একটা হুইসেল কতটা গভীর হতে পারে তুমি কল্পনাও করতে পারো না,' ছেলেটা বললো, 'আশ্চর্য ঐ হুইসেলের মতো আমি ভালবাসি তোমাকে।' কিন্তু গভীর রাতে অন্ধকারে কখনও তো ঘুম ভেঙে যায়নি মেয়েটার, কখনও ও বিচ্ছিন্ন আর একা হয়ে যায়নি। ও কীভাবে অনুভব করবে গভীর রাতে ট্রেনের হুইসেল কতটা গভীর! নিউজ এজেন্সি ♦ একসময় আমরা খবর শুনতাম এখন দেখি স্বীকার করতে হবে খবর শোনার চেয়ে দেখার আনন্দ বেশি আলাদা উত্তেজনা নিউজ এজেন্সিগুলো এব্যাপারে তৎপর আর প্রতিযোগিতাপূর্ণ কোনটা নিউজ সেটা ওরাই ঠিক করে যেটা ওদের দরকার আর সেটাই আমাদের দেখানো হয় ধারাবাহিকভাবে সুচারু জ্যামিতিকতায় বিভিন্ন পদ মিশিয়ে খাওয়ানো হয় নতুন বাস্তবতা নির্মাণে যে বাস্তবতায় জায়গা নেই আমাদের ইতিহাস অন্বেষা স্বাধীনতার সমৃদ্ধি আর স্বাধীনতার কথা বলেই ওরা আমার ক্ষেতখামার পাহাড় আর নদীর দখল নিয়েছে তাহলে টিভিতে যে হাসিখুশি প্রাণবন্ত আমাদেরকে দেখানো হয় ওরা কারা এই প্রশ্ন করো নিজের কাছে আগুন নিয়ে খেলা ♦ আজও পুকুরে ছিপ ফেলে বসবো আমি ধীরে চুপ সূর্য আমার ঘাড়ে শ্বাস ফেলবে সারারাত ঘরের ভেতর ল্যাং...

বিদায়ের স্রোত ।। চয়ন মন্ডল

  বিদায়ের স্রোত চয়ন মন্ডল "বিজয়া দশমী—আনন্দের দিন, কারও কাছে যা হয়ে উঠল চিরন্তন বিদায়।" আজ বিজয়া দশমী। শিউলি ফুলের গন্ধে ভোরটা অন্যরকম। পাড়ার প্যান্ডেলে অদ্ভুত এক কোলাহল—মায়ের বিদায় যে আজ। শঙ্খধ্বনি, ঢাকের বাজনা আর উলুধ্বনিতে গমগম করছে চারদিক। একদিকে মা দুর্গার বিদায়ের বেদনা, অন্যদিকে আনন্দ ও মিলনমেলা। সারা বছরের অপেক্ষা শেষে এই দিনটিতে প্যান্ডেল ভরে উঠেছে মানুষের ভিড়ে। সকালের পূজার্চনা শেষ হতেই শুরু হয়েছে সিঁদুর খেলা। মহিলারা মায়ের প্রতিমাকে সিঁদুর পরিয়ে একে অপরের কপালে, গালে রাঙিয়ে দিচ্ছেন। ঢাকের তালে আর শাঁখ বাজনার আবেশে ভেসে যাচ্ছে পাড়া। শুরু হয়েছে প্রতিমা বিসর্জনের প্রস্তুতি। কিন্তু এসবের মধ্যে নেই অনুরাধা। কেউ তার বা মিনির খোঁজ রাখেনি। মুখার্জিদের দোতলা বাড়ির কোণের ঘরে বসে সে চোখের জল ফেলছে। সবার বাড়িতে আলোর রোশনাই, ভোগের গন্ধ, হাসি—শুধু তাদের ঘরটিতে নিস্তব্ধতা। গতবছর এই দিনেই তো অন্যরকম ছিল সবকিছু। অনুরাধা, সুজয় আর তাদের তিন বছরের মেয়ে মিনি পাড়ার প্যান্ডেলে ঢাকের তালে নেচেছিল, সিঁদুর খেলায় রঙে ভেসেছিল। বিকেলের দিকে প্রতিমা বিসর্জনের মিছিলে শামিল ...

কবিতা ।। অরণ্যকন্যা ।। অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়

  অরণ্যকন্যা অরিন্দম চট্টোপাধ্যায় অরণ্যকন্যার দৃষ্টির ভেতর বিষাদ বিন্দু ফোঁটা ফোঁটা জলের মতো গড়িয়ে যায়, হয়ে যায় কোন নদীপথ দৃষ্টি ভেঙে ভেঙে চলে যায় কোন এক শূন্য পথে অরণ্যকন্যার হৃদয়ের ভেতর ভাঙে যতো বৃক্ষপত্র নতুন পত্র পুষ্পের খোঁজ নেই ঠোঁট জুড়ে সমুদ্রকাঁপন বুদবুদের মতো অস্ফুট হয়ে উচ্চারিত হয় কোন অক্ষর শব্দ আর তাঁর শরীর থেকে ছড়িয়ে যায় হয়ে যায় একটা অদৃশ্য কবিতা...    ================== @ অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়,  বেহালা, কলকাতা -৭০০০৬০,  

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯১তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পাদকীয় দপ্তর থেকে এই সংখ্যায়  'শিক্ষা ও শিক্ষক' বিষয়ক বেশ কিছু লেখার পাশাপাশি রয়েছে বিচিত্র বিষয়ের আরও কিছু লেখা। সব মিলিয়ে সংখ্যাটি আপনাদের সমৃদ্ধ করবে, আপ্লুত করবে — এ বিষয়ে আমরা আশাবাদী। আপনাদের মতামত অবশ্যই জানাবেন। আমরা প্রতীক্ষিত।            আগামী অক্টোবর ২০২৫ সংখ্যা 'উৎসব সংখ্যা' হিসাবে প্রকাশিত হবে। ওয়েব সংখ্যার পাশাপাশি নির্বাচিত লেখাগুলি নিয়ে একটি pdf এবং তার মুদ্রিত সংস্করণও প্রকাশিত হবে। তাই অপ্রকাশিত ভালো লেখা পাঠান। বিশেষ কোনও বিষয় নেই। প্রবন্ধ-নিবন্ধ-ফিচার ২০০০ শব্দ, গল্প ১২০০ শব্দ, অণুগল্প ৫০০ শব্দ, কবিতা-ছড়া ২৪ লাইনের মধ্যে হলে ভালো। ইমেলঃ nabapravatblog@gmail.com           বিস্তারিত বিজ্ঞপ্তি আসবে। সামাজিক মাধ্যমে আমদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন। সময় মতো সব সংবাদ পেয়ে যাবেন।  শারদ উৎসবের দিনগুলি সকলের আনন্দে কাটুক এই কামনা করি। —নিরাশাহরণ নস্কর সম্পাদক: নবপ্রভাত মোঃ ৯৪৩৩৩৯৩৫৫৬ Whatsapp Group:  https://chat.whatsapp.com/ AIpj98JKbloFSpeqMcpr6j Facebook Page:  https://www.facebook.com/ share...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো,  তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) য...

শেষ বিকেলের আলো ।। সৈকত প্রসাদ রায়

  শেষ বিকেলের আলো সৈকত প্রসাদ রায় রানাঘাট শহরের প্রান্তে ছোট্ট এক পাড়া বিশ্বাসপাড়া। সেই পাড়ার পুরোনো ভাঙাচোরা বাড়িটায় থাকেন পুষ্পরাণী ভট্টাচার্য— বয়স পঁয়ষট্টির কোঠায়। সবাই তাকে "পুষ্পদি" বলেই চেনে। একসময় প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতা করতেন, এখন অবসর নিয়েছেন। প্রতিদিন বিকেলে পুষ্পদি বারান্দায় বসে চা খান। ছোট একটা টেবিল, কয়েকটা পুরোনো বই, আর একখানা নীল কাঁচের ফুলদানি — তার নিত্যসঙ্গী। বারান্দার সামনেই একটা গলি, যেখান দিয়ে প্রতিদিনই স্কুল ছুটির পরে বাচ্চারা হইচই করে ছুটে যায়। পুষ্পদির একমাত্র ছেলে অনিরুদ্ধ — কলকাতায় চাকরি করে। ছেলেটা আধুনিক, নিজের সংসার আছে, স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ব্যস্ত। বছরে হয়তো একবার আসে, তাও কিছুক্ষণ বসে আবার চলে যায়। পুষ্পদি মুখে কিছু বলেন না, কিন্তু বুকের ভেতরে একটা কষ্ট জমে থাকে। সেই বিকেলটা অন্যরকম ছিল। আকাশে ধুলো, গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা। হঠাৎ পুষ্পদির চোখে পড়ে — রাস্তায় এক কিশোর বসে আছে। বয়স বারো-তেরোর বেশি নয়। মলিন জামা, পায়ে ছেঁড়া চটি। ছেলেটা একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে পুষ্পদির বাড়ির গেটে ঝুলে থাকা পুরোনো নোটিশবোর্ডটার দিকে, যেখানে একসময় লেখা ছিল — "পুষ্পরাণী ভ...