Skip to main content

পুস্তক আলোচনা ।। অরবিন্দ পুরকাইত (পুস্তক : সুন্দরবনের আঞ্চলিক শব্দকোষ ।। সংকলক : নিরঞ্জন মণ্ডল)



'সুন্দরবনের আঞ্চলিক শব্দকোষ' পাঠে যেমন মনে হল

অরবিন্দ পুরকাইত

শব্দকোশ নানা রকম প্রচলিত আছে। তার মধ্যে যে-কোনো ভাষায় প্রচলিত সাধারণ থেকে বিষয়ভিত্তিক শব্দসংগ্রহ, পারিভাষিক শব্দকোশ, বানান অভিধান ইত্যাদি। বাংলা ভাষায় মান্য চলিত বাংলা শব্দকোশের সঙ্গে সঙ্গে— তুলনায় কম হলেও— স্থানীয় বা আঞ্চলিক ভাষায় শব্দকোশ বা বিচ্ছিন্ন সংগ্রহ দুর্লক্ষ্য নয়।
       ভাল মানের শব্দকোশ বা অভিধান রচনা সে বড় অধ্যবসায় ও শ্রমসাপেক্ষ। বিশেষ করে পথিকৃৎদের ক্ষেত্রে তার জন্য হয়তো 'একটি জীবন'ই উৎসর্গ করতে হয়। পরবর্তী অভিধানকারদের তবু একইসঙ্গে বেশ খানিক দিশা ও সংগ্রহ হাতের কাছে মেলে, তাতে কাজটা তুলনায় সহজসাধ্য হয়। কিন্তু তাও কাজটা নেহাত কম সময়, শ্রম, অধ্যবসায় ইত্যাদি দাবি করে না। কেন-না একটি ভাল মানের অভিধান রচনা— আমাদের স্মরণীয় উত্তরাধিকার সত্ত্বেও— আজও খুব সহজ কাজ নয়। একই অভিধানের মাধ্যমে সবরকম পাঠকের দাবি বা সমস্ত ক্ষেত্রের প্রয়োজন মেটানো তো প্রায় অসম্ভবই, কোনও ভাষার একটি অভিধানকে বহুমান্য হয়ে উঠতে গেলে তা নানারকম দিকে আলোকপাত দাবি করে। সে ভাষায় প্রচলিত সমস্ত শব্দের (অন্য ভাষা থেকে আগতও) উৎস, ইতিহাস, উচ্চারণ, অর্থ, প্রয়োগ, এমনকি প্রয়োজনে ছবির মাধ্যমে তুলে ধরা— শব্দ ও শব্দানুষঙ্গের যাবতীয় দিক। এটাও ঠিক যে সে যোগ্যতাও থাকে না সবার, বা সেই সুদীর্ঘ নিবেদিতপ্রাণতাও সম্ভব হয় না সবার পক্ষে। বলতে দ্বিধা নেই যে বর্তমান আলোচকেরও সে যোগ্যতা নেই। এটা নিছক বিনয় নয়, বাস্তব। শব্দ সংগ্রহ এক আর তার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিচার-বিশ্লেষণ আর এক। বিচার-বিশ্লেষণ তথা উৎস বা ব্যাকরণগত দিক ইত্যাদি পুঙ্খানুপুঙ্খ দেখার যোগ্যতা নেই বলেই এ আলোচনাও উপর উপর শব্দের সংকলন বা সংগ্রহ, সজ্জা, অর্থ ইত্যাদির সাধারণ বৃত্তের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে। অর্থাৎ বলা যায় খানিক অগোছালোভাবে ব্যক্তি-পাঠকের ভাল লাগা-মন্দ লাগার গুটিকয়েক কথা।
       অনেক পরিশ্রম ও অধ্যবসায়ে অভিধান না হয় তৈরি হল, কিন্তু তা প্রকাশ করবে কে! তা তো অনেক ব্যয়সাপেক্ষও। আর সেই তুলনায় আজকের দিনে অভিধান ক'জন ব্যবহার করছে— কে কিনবে এখন অভিধান! হাতের কাছে অ্যান্ড্রয়েড ফোনে ক্লিক করলে মুহূর্তে চলে আসছে অর্থ, বিপরীত শব্দ, প্রয়োগ ইত্যাদি অনেককিছুই। অযথা লোকে অভিধান কিনতে যাবে কেন, সবই তো ধরে দিচ্ছে হাতের মুঠোর ফোন! যদিও এখনও তা মূলত মান্য চলিত বাংলার ক্ষেত্রে, স্থানভেদে বিপুল বৈচিত্র্যময় স্থানীয় বা আঞ্চলিক শব্দ তার আয়ত্তে আসেনি সেইভাবে। যাই হোক, প্রতিষ্ঠানগতভাবে প্রকাশ তবু খানিক আসানের, ব্যক্তির ক্ষেত্রে অধ্যবসায়ের সঙ্গে বহুত শ্রম, সময় ইত্যাদি ব্যয় করার পরেও অর্থব্যয়— সে বড় বিড়ম্বনা ও চাপের হয়ে পড়ে। তাও বাজার থাকলে আলাদা কথা। সেখানে আঞ্চলিক শব্দকোশের তো আরওই বাজার মন্দা। 
       মানুষ তো অভিধান অনুসরণ করে কথা বলে না, মানুষের সভ্যতার নিরিখে অর্বাচীন অভিধান বরং মানুষকে অনুসরণ করে। অভিধানে না থেকে থাকলে, দীর্ঘ প্রচল শব্দেরা অভিধানে অন্তর্ভুক্তি দাবি করে। মান্য চলিত বাংলায় সচরাচর যারা কথা বলে, অভিধান অনুসারী না হলে তাদের তবু সংকোচ হতে পারে বা হতে পারে তাদের সমালোচনা, আঞ্চলিক বা স্থানীয় শব্দে যারা কথা বলে তাদের ক্ষেত্রে অভিধান তেমন পাত্তা পায় না। সেই পাত্তা না পাওয়ার মধ্যে, অন্যের বোধগম্য করে তোলার স্বতঃস্ফূর্ততায় এমন কিছু কিছু শব্দ পাত্তা পেয়ে থাকে, প্রচল দীর্ঘ হলে স্বয়ং অভিধান তাদের পাত্তা না দিয়ে পারে না। 'পাতে' স্থান দেয় বা তুলে নেয়।
       আমাদের আজন্মের ভাষা— ছোটবেলা থেকে দীর্ঘদিন যা আমাদের ভাব প্রকাশের মাধ্যম ছিল— আজ নিজেদেরই তা মাঝে মাঝে আবিষ্কার করতে হয়! কোথাও শুনে, কোথাও পড়ে, কোনও কোনও প্রসঙ্গে নিজেদেরই হঠাৎ মনে পড়ে যাওয়ায়। আমাদের নিয়ত শহর-সংশ্রবের ফলে— তা সে শারীরিক উপস্থিতির মাধ্যমে হোক বা বইপত্র থেকে দৃশ্য-শ্রাব্য সমস্ত মাধ্যমের মাধ্যমেই হোক, মান্য চলিত বাংলার নিত্য সান্নিধ্যে আমাদের সেই মায়ের-পেট-থেকে-পড়া ভাষা থেকে আমরা নেহাত কম দূরে সরে আসিনি। নিয়ত চর্চা নেই, বলা নেই, লেখা তো নেই-ই প্রায়— খুবই অল্প পরিমাণে— তাহলে আমাদের মতো যারা একটু লেখাপড়া শিখে, আবার বিশেষ করে শহর বা শহরতলিতে অস্থায়ী বা স্থায়ী বাসা নিয়েছি/বেঁধেছি, তাদের কাছে আদত সেই শৈশব-কৈশোরের ভাষা সেই রূপে, সেই ব্যঞ্জনায়— সেই মহিমায় অধিষ্ঠিত থাকা কতখানি সম্ভব! সপ্তাহ-অন্তে একদিন গ্রামে যাওয়া বা মাসে একদিন, কিংবা ষাণ্মাসিক বা বাৎসরিক দুই-একদিন ফেলে-আসা-গ্রাম-সংশ্রবে সত্যিই কি তার ধাত যথাযথ অনুসরণ বা সবকিছু উদ্ধার সম্ভব— যে গ্রামও প্রতিদিন সচেষ্ট মান্য চলিত বাংলায় নিজেকে প্রকাশ করে মান্য পঙ্্ক্তিতে স্থান লাভ করতে! সত্যি বলতে, অন্তত আজ থেকে মাত্র চার-পাঁচ দশকের ভাষা এখনও পর্যন্ত গ্রামে যতটা প্রচলিত আছে তা তো মূলত ততটা-লেখাপড়া-না-জানা বা একেবারেই না-জানা মানুষদের লবজে, যারা এখনো গ্রামেই রয়ে গেছে। পাঁচজনের সামনে স্থানীয় কথ্য উচ্চারণে কিছু বলে ফেললে আমরা কি আড়ালে শুধরে দিইনি আমাদের সন্তানদের!
       নিরঞ্জন মণ্ডল সুন্দরবনেরই ভূমিপুত্র। কেবল ভূমিপত্র হলেই সব কিছু ভূমিরূপ হবে এমন কথা নয়, ভূমি-সংশ্রব দরকার এবং সেটা কালেভদ্র হলেও চলে না। কারণ আরও অনেক কিছুর মতো ভাষাও তো নিত্য প্রবহমান, তা সে গ্রামীণ ভাষা হলেও। কেউ একজন কোনও এক গ্রামে জন্মাল, তারপর একটা সময়ে আর গ্রামের সঙ্গে কোনো সংযোগ রইল না— তার পক্ষে সেইভাবে গ্রাম-রূপকে তুলে ধরতে পারা কি সম্ভব! দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার গোসাবা-সংলগ্ন কচুখালির জাতক (১৯৫৫) নিরঞ্জনবাবু কেবল সুন্দরবনের ভূমিপুত্র নন দীর্ঘদিনের ভূমিপুত্র এবং পরবর্তীকালে সোনারপুরবাসী হওয়ায় সে ভূমিসংশ্রব নিরন্তর উপস্থিতির সংশ্রব না হলেও, তাঁর চর্চার সংশ্রব বটে। তিনি একাধারে কবি, ছড়াকার, প্রাবন্ধিক— সবচেয়ে বড় কথা, কথাকার। তিনি গল্প-উপন্যাসে তাঁর আজন্মের ভাষা সংস্কৃতি চারিয়ে দেন। 
       গ্রামের পাঠশালার পর বড় মোল্লাখালির তারানগরের স্কুল, তারপর হিঙ্গলগঞ্জ এলাকার গোবিন্দকাটি উচ্চমাধ্যমিক স্কুল হয়ে গোবরডাঙ্গা হিন্দু কলেজ তাঁর পড়াশোনার ক্ষেত্র। কর্মজীবনে সরকারি ব্যাঙ্কের আধিকারিক-তিনি সুন্দরবনের নানান দিক নিয়ে দীর্ঘদিন লিখে চলেছেন বিভিন্ন পত্রপত্রিকা, সংকলন গ্রন্থে। তাঁর নিজের গ্রন্থতালিকার দিকে একটু তাকিয়ে নিতে পারি আমরা। কবিতাগ্রন্থ 'অফুরান নীল', 'বিষণ্ণ ক্যানভাস'। গল্পের বই 'বাদাবনের পদাবলি', 'সুন্দরবনের দলিত গল্প'। উপন্যাস 'উজানভাটির কথকতা', 'ভাটির দেশের উপাখ্যান'। কিশোর উপন্যাস 'ঠাকুর ঠাকুর ডয়রা কলা' (কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক সাহিত্য বিভাগ থেকে প্রকাশিত অনুবাদ 'Oh priest, give me the seeded banana')। লোকসাংস্কৃতিক প্রবন্ধগ্রন্থ 'সুন্দরবনের বালাকি বালাই শ্লোক, বালাগান গাজন'। তাছাড়া 'বাদাবনের কমলেকামিনী', 'কামিনীশাল ধানের গন্ধ'; প্রকাশ পেয়েছে 'হেতালবনের বাঘ', 'ভরতগড়ের গুপ্তধন'। 'কবিকল্প' পত্রিকার সম্পাদনার সঙ্গে যুক্ত তিনি।
       তাঁর মতো একাধারে ভূমিপুত্র এবং নিত্য চর্চাকারী হিসাবে যখন কেউ কোনও শব্দকোশ সংকলনে হাত দেন আমাদের প্রত্যাশা স্বভাবতই থাকে অনেকটা বেশি।
       এই সংকলন গ্রন্থ থেকে আমরা এমন অনেক শব্দ পেয়েছি যাদের আজ আর ততটা চল নেই বা তুলনায় কম প্রচল, তা সেগুলোর সঙ্গে সঙ্গে এখনও রীতিমতো সুন্দরবনে চলিত যে শব্দ সে শব্দভাণ্ডারের বহু শব্দই তিনি এখানে ধরে দিয়েছেন। বর্তমান আলোচকের এমন কিছু কিছু শব্দ মনে পড়ে গেছে এই বইটি থেকে যা হয়তো আপাতভাবে ভুলেই ছিল সে। তার বাইরেও সুন্দরবন সংশ্লিষ্ট এমন কিছু কিছু পরিভাষা এখানে পাওয়া যাবে যা আমরা একদা বৃহত্তর সুন্দরবনের বাসিন্দা তো বটেই, সুন্দরবনের বাইরের মানুষ বিশেষ করে শহর বা শহরতলির মানুষ সেইভাবে ওয়াকিবহাল নয় সেসব শব্দ বা শব্দানুষঙ্গের সঙ্গে। সুন্দরবনের সমাজজীবনে প্রচলিত অনেক পরিভাষা মেলে এই বইয়ে।
       তাঁর সংকলিত বা সংগৃহীত শব্দসমূহ এইরূপ সূচিতে পরিবেশিত হয়েছে : গৃহস্থালি, জীবনযাত্রা ও অন্যান্য; কৃষিজীবী ও কৃষি সরঞ্জাম; মৎস্যজীবী ও মাছ ধরার সরঞ্জাম; বিভিন্ন পেশা ও বৃত্তিমূলক শব্দ; কুম্ভকার; শোলাশিল্প; উৎসব, আমোদপ্রমোদ, পালা-পার্বণ ও লৌকিক দেবতা; গ্রামীণ খেলাধুলো সংক্রান্ত; শিল্প সংক্রান্ত; নৌকা বিষয়ক; জেলে, মৌলে, কাঠুরেদের জঙ্গলে ব্যবহৃত ভাষা; পেশাগত শব্দ। শেষে আছে তথ্যঋণ। ১৯১ পৃষ্ঠার বই। সূচিটি সাজানোর ঠিকঠাক লাগল না। বিভিন্ন পেশা ও বৃত্তিমূলক শব্দের পরে অনুচ্ছেদ করে ছোট অক্ষরে পরপর এল কুম্ভকার ও শোলাশিল্প, একইভাবে তারপরে কীভাবে আসে বাকিগুলো, যার একদম শেষে আবার আলাদা করে পেশাগত শব্দ!

       সুন্দরবন এবং বৃহত্তরভাবে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার কথ্য ভাষা নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে নেহাত কম সংগ্রহ নেই। বিশ্লেষণও। স্বতন্ত্র সংগ্রহ ছাড়াও, আমাদের সাহিত্য এবং বিশ্লেষণের মাধ্যমে যে ভাণ্ডার ইতিমধ্যেই রচিত হয়েছে সেগুলোকে যদি একত্র করা যায় তো কথ্য ভাষা এবং তার নানান দিকদর্শন সমৃদ্ধ একটা জায়গায় পৌঁছাবে। দীর্ঘস্থায়িত্ব লাভ করবে হারিয়ে-যেতে-বসা বহু শব্দ, শব্দানুষঙ্গ, সূক্ষ্ম ও স্বতন্ত্রপ্রকাশ শব্দ-চিত্র। নিজেদের সাহিত্য, সংগ্রহ, বিশ্লেষণ ইত্যাদিতে সাধন চন্দ্র নস্কর, কালীপদ মণি, ধূর্জটি নস্কর, পঞ্চানন দাস, মদনমোহন মাহাতা, অক্ষয় বৈদ্য, পূর্ণেন্দু ঘোষ, প্রদীপ বর্মণ, ঝড়েশ্বর চট্টোপাধ্যায়, বিনোদ বেরা, অমিয় দাস,  অপরেশ মণ্ডল, উত্থানপদ বিজলী, বিমলেন্দু হালদার, সুভাষ মিস্ত্রি, সুব্রত চট্টোপাধ্যায়, পুরঞ্জয় মুখোপাধ্যায়, বলাইচাঁদ হালদার, দিলীপকুমার নাহা, সনৎকুমার নস্কর প্রমুখ এবং আরও বহু লেখক  তাঁদের লেখায় বিপুল শব্দসম্ভার, বিশ্লেষণ ইত্যাদি ধরে রেখেছেন। সেই বড় মাপের কাজের জন্যে বড় রকমের উদ্যোগের প্রয়োজন এবং সেটি সম্মিলিতভাবে হলেই সব দিক থেকে সুবিধা।
       
       বইটিতে ধরা হয়েছে অনেক কিছুই, কিন্তু বইটি দেখতে দেখতে একটা ব্যাপার মনে না হয়ে পারে না যে এমন একটি উদ্যোগের মধ্যে এত অযত্ন কেন, পরিকল্পনাহীনতা কেন! সংক্ষেপে কয়েকটি দিক তুলে ধরি।
       প্রথমত একটা ধন্দ লাগে, বইটি সংকলিত না সংগৃহীত! প্রচ্ছদে যিনি লেখক, ভিতরে তিনি সংকলক! ব্লার্বে বলা হল সংগ্রহের কথা, বলা হল 'সংগৃহীত আকাড়া (?) বিপুল শব্দভাণ্ডার'। ভূমিকাতে বলা হয়েছে, 'সংকলনের শব্দ সংগ্রহে আমার বন্ধু কবি সুশীল মণ্ডল কবি প্রবীর রঞ্জন মণ্ডল সহযোগিতা করেছেন। সুন্দরবনের কথ্যভাষার গবেষক বিমলেন্দু হালদার, প্রাবন্ধিক সুব্রত চট্টোপাধ্যায়, প্রাক্তন অধ্যাপক সুভাষ মিস্ত্রির রচনা থেকে মূল্যবান তথ্য পেয়েছি। এই সব বিদগ্ধ গবেষকদের কাছে আমি ঋণী। সুলেখক সুধাংশু মুখোপাধ্যায়ের আন্তরিক সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা জানাই। সামান্য জ্ঞানে যা সংগ্রহ করতে পেরেছি, তুলে দিলাম তা। জানি, তবু ত্রুটি রয়ে গেল অনেক। পাঠকদের কাছে আগাম ক্ষমাপ্রার্থী।' আসলে নিজস্ব সংগ্রহ কিছু থেকে থাকলেও— অর্থাৎ বইটির চরিত্র মিশ্র হলেও— সংকলনধর্মিতারই প্রাধান্য।
       বইটির ভূমিকা দায়সারা বলতে গেলে, একটি অভিধানের সামগ্রিক পরিকল্পনা দর্শন ইত্যাদি তাতে পরিস্ফুট নয়।
       শব্দকোশের সাধারণ লক্ষণ অনুযায়ী এখানে শব্দগুলো বর্ণানুক্রমিকভাবে পুরোপুরি আসেনি, অনেক জায়গাতেই যচ্ছেতাইভাবে বিঘ্নিত হয়েছে তা। তাঁর শব্দসজ্জায় ক-এ চন্দ্রবিন্দুযুক্ত সব শব্দ এল পরপর!
       একই শব্দজাত একাধিক শব্দ সেই শব্দের অধীনেই তাদের অর্থ তথা প্রয়োগভিন্নতা নিয়ে আসার কথা। তার বদলে পরপর বসে সংখ্যা বাড়িয়েছে। যেমন, কতা-র পরে তা দিয়ে পরপর আরও আঠারোটি শব্দ এসেছে! তারপর কথা দিয়েও পাঁচটি, সে ক'টি কেন কতা-র অধীন আসতে পারল না বোঝা গেল না। গা-র পরে নানারকম আঠারোটি শব্দ পেরিয়ে গার (অর্থ প্রথমটির দেহ ও পরেরটির গায়ের)! একই শব্দ উচ্চারণের ইতরবিশেষে সংখ্যা বাড়িয়েছে। আরও বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে কী চমৎকার স্থানানুগ উচ্চারণবৈচিত্র্য দেখিয়েছেন কামিনীকুমার রায় একই শব্দের অধীনে রেখে! এখানে হুবহু একই শব্দ স্থানভেদে একাধিকবার এসেও বাড়িয়েছে সংখ্যা। যেমন, আড়িয়ে যাওয়া (পৃ. ২৮, ২৯), শাশি (পৃ. ১৩৩, ১৩৫), হানশেল (পৃ. ১২৩, ১২৪), মালেন (পৃ. ১৪২, ১৪৩), তাড়া সন্ন্যাস (পৃ. ৮৪, ১৫৩), জল-সন্ন্যাস (পৃ. ৭৩, ১৫৩)। কোনও কোনও শব্দ একাধিক পরিভাষা সংকলনে এসেছে এখানে অর্থাৎ একাধিকবার। কাঁইমাই সামান্য বানানভেদে তিনবার রয়েছে আলাদা করে! একই অর্থবোধক ভগা-যুক্ত চারটি শব্দ আলাদা আলাদা! এমন তো অনেক হতে পারে তবে। এটা কি অভিধানের ধারা!
       প্রচুর মান্য চলিত বাংলা শব্দ অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। মাচবা শব্দ গৃহীত হতে পারে অন্তত তা যদি সুন্দরবন-সংশ্লিষ্ট হয়, অন্যথায় ঠিক নয়; যেহেতু বইটিকে সেখানকার আঞ্চলিক শব্দকোশ বলা হচ্ছে। বস্তুত, আঞ্চলিক শব্দ সংগ্রহের পর অন্তত একবার দেখে নেওয়া দরকার মান্য চলিত বাংলা অভিধানে তা আগে থেকেই রয়েছে কি না। থাকলে, অর্থভিন্নতা না থাকলে বা তার সঙ্গে আঞ্চলিক অনুষঙ্গ না থাকলে সেগুলো না নেওয়াই শ্রেয়। অক্কা পাওয়া, অতটা, অনামুখো (এখানে অনামুকো হওয়ার কথা), অন্যায্য, অযশ, আইবুড়ো, আকাট, আগবাড়িয়ে (আগবেইড়ে হতে পারত), আঘাটা, আঙটা, আছাড় খাওয়া (আচাড় উচ্চারণই বাস্তবের বেশি কাছাকাছি), আছাড় মারা, আটপৌরে, আকছার, উদোম এমনই দু-একটি এখানে তুলে দেওয়া হল। কোনও কোনও শব্দের সুন্দরবনকেন্দ্রিক অন্য অর্থ বা প্রয়োগ থাকলেও তা দেখানো হয়নি— শব্দ সেখানে সীমায়িত অর্থে এসেছে।
       উচ্চারণ প্রাধান্য পায়নি পরিবেশনে। কাছাখোলা, কাছায় হাগা ইত্যাদিতে কাচা হওয়ার কথা নয় কি? সুন্দরবনের শব্দকোষে এ কাদের উচ্চারণ! এর ফলে অনেক শব্দ মান্য চলিত বাংলা-র দিকে চলে যায়। একটি আঞ্চলিক ভাষার শব্দকোশে বিশেষত দৃষ্টান্ত আঞ্চলিক হওয়ায়ই বাঞ্ছনীয়। নিতান্ত প্রয়োজনবোধে মাচবা। তাঁর অল্প দৃষ্টান্তে পুরোপুরি স্থানীয় উচ্চারণ আরও অল্প, তাও সে উচ্চারণে স্থানীয় ধারা রক্ষিত হয়নি সবসময়। উচ্চারণ কোনও কোনও জায়গায় মিশ্র। হ্যাঁ, এখন নানান কারণে গ্রামীণ জীবনের উচ্চারণও মিশ্র নিশ্চয়ই, কিন্তু একটি অভিধানের শব্দচয়ন ও শব্দার্থের প্রয়োগে উচ্চারণের একটা নির্দিষ্ট ধারাই গ্রহণ করা দরকার বলে মনে করি। তিনি কখনও হয়েছে, কখনও হুয়েছে লিখেছেন দৃষ্টান্ত-বাক্যে, অর্থাৎ মাচবা এবং স্থানীয়। কিন্তু হুয়েচে বা হয়চে-ই কি বেশি কাছাকাছি নয় সুন্দরবনের দেহাতি মানুষজনের? এমনকি হুয়েচ বা হোয়েচ উচ্চারণও বরং চলিত আছে, বিশেষত মুসলমানদের মধ্যে। দৃষ্টান্ত বা খণ্ড সংলাপে এমন মাচবা-র উপস্থিতি কেন? অভিধানকার যখন অর্থ বা বর্ণনা দিচ্ছেন তখন মাচবা ঠিক আছে, কিন্তু যেসব দৃষ্টান্তে বোঝা যাচ্ছে বাদাবনের পাত্র-পাত্রী কথা বলছে সেখানে মাচবা মানায় না, যেহেতু এটা সুন্দরবনের আঞ্চলিক শব্দকোশ। কোথাও কোথাও দৃষ্টান্ত হিসেবে মুখের ভাষায় স্থানীয় উচ্চারণের প্রয়াস আছে, তবে অনেক ক্ষেত্রে শেষরক্ষা হয়নি, অর্থাৎ মাচবা এসে গেছে; আর অনেক স্থানে মাচবা-ই প্রধান হয়ে উঠেছে। ছেদ্দ শব্দের অর্থ ফুটো বলে উল্লেখ করে দৃষ্টান্ত হিসাবে দিয়েছেন তিনি— নৌকাটার ছেদ্দ দিয়ে জল ঢুকছে। ছিদ্র-কে যারা ছেদ্ধ উচ্চারণ করে তারা কি ওইরকম উচ্চারণ করবে? অন্তত দে এবং ঢুকচে বা ঢুকতেচে উচ্চারণ করবে না কি? এমনটি বেশি দেখি বিশেষত মাটির সঙ্গে সম্পর্কহীন শহর বা শহরতলির কথাসাহিত্যিকদের গ্রামীণ চরিত্রদের মুখে বসানো সংলাপে। সামঞ্জস্যহীন কিছু গ্রামীণ উচ্চারণ সংলাপের মধ্যে পুরে দিয়ে বাহবা পেতে কম দেখা যায় না। সুন্দরবনের মানুষের মুখে বসানো অধিকাংশ দৃষ্টান্ত যদি মাচবা-তে হয় তবে আঞ্চলিক অভিধান তুলনায় গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে।
       ঐ-কার দিয়ে যে দশটি শব্দ এসেছে, ও-কারেই আসতে পারত।
       ব্যক্তিবিশেষের ব্যতিক্রমী উচ্চারণ সেই স্থানের সাধারণ উচ্চারণ হিসাবে স্থান পেয়ে যায়নি তো কোনও কোনওটি! ধরুন অ্যাপিরিলি, অ্যাণ্ডাশোন বা অ্যাসিটিরি বললে উদ্দিষ্ট অংশের সাধারণ মানুষজন এপ্রিল মাস, ইনজেকশন বা রেজিস্টারি করা-ই বুঝবে তো? কোনও কোনওটি— মনে হয়েছে— বিচ্ছিন্ন প্রয়োগ থেকে নেওয়া, না বলে দিলে সেখানকার মানুষই অনেকসময় ধরতে পারবে বলে মনে হয় না। 
       অভিধানে বানান যথাযথ হওয়া একান্ত দরকার এবং সে কারণে প্রুফ দেখায় অধিক যত্নশীলতা দাবি করে। এ বইয়ে বানানভুল/ছাপার ভুল নেহাত কম নয়। ছাঁদ বা বাঁধা ছাদ বা বাধা হয়ে গেলে চলে কী করে! ফাড়া/ফালা/ফাঁসা-র বিমলেন্দু হালদারকৃত অর্থ ছিঁড়ে যাওয়া/ছিঁড়ে ফেলা ছাপার ভুলে এখানে ছেঁড়ে যাওয়া/ছুড়ে ফেলা, ফেরেঙ্গা-র বিমলেন্দুকৃত ডাল এখানে ভাল। বিমলেন্দুবাবু ফেরেঙ্গার সুন্দর বর্ণনা দিলেন, নিরঞ্জনবাবু তাতে নিবৃত্ত হলেন। ফলে অর্থ বা ছবিটা স্পষ্ট হল না। অসম্মতি অর্থ করা হল 'আপিও' শব্দের!  
       এক বর্ণ দিয়ে তৈরি শব্দগুলো যেখানে শেষ হয়ে যাচ্ছে, তারপরেই একটু বাড়তি ফাঁক রেখে পরবর্তী বর্ণ দিয়ে তৈরি শব্দ শুরু হয়ে যেতে পারত, খানিক বা অনেকখানি পৃষ্ঠা ফেলে রাখার দরকার ছিল না।
       জলদাভাত শব্দ দিয়ে তিনি অর্থ করেছেন— জল দেওয়া ভাত। পান্তা ভাত। জল-দেওয়া ভাত ও পান্তাভাত একই প্রতিপন্ন হওয়ার ভয় রয়ে যেতে পারে এক্ষেত্রে। যেমন পান্তা আর পষ্টি-র স্পষ্টতই তফাত আমাদের এদিকে। জাউ শব্দের অর্থ করেছেন— খুদের রান্না করা খাবার। চালের ছোট কণাকে 'খুদ' বলে। এখানে খুদ আর মোল্কো-র তফাৎ বোঝানো দরকার ছিল। 'খুদের টানে মোল্কো চোঙে' প্রবাদ রয়েছে। জাউ মোল্কোরও হতে পারে। আদতে জাউ পায়েস জাতীয় খাদ্য। মোল্কো ছিল বিশেষত আতপ চালের সেই অংশ, ঢেঁকিতে চাল গুঁড়ো করে চালতে চালতে (যেমন পৌষ সংক্রান্তিতে চালের গুঁড়ি করার সময়) শেষ যে অংশটি আর গড়ে দেওয়ার মতো পরিমাণে থাকত না।
       ছবিটি পরিষ্কার না করে কেবল সরঞ্জাম বা একপ্রকার বলে অনেক শব্দের অর্থ এড়িয়ে যাওয়া শব্দকোশের ক্ষেত্রে এক দুর্বলতাই, এখানে যেটি ঘটেছে নেহাত কম নয়। ভূমিপুত্ররা যদি যথাসম্ভব স্পষ্ট ছবি তুলে না ধরেন তবে কার কাছে তা আশা করব আমরা! ডাকক্ষৌরি বলতে বিমলেন্দুবাবুর 'এক ধরনের পাখি'কে নিরঞ্জনবাবু করলেন 'এক রকমের পাখি'। 
       কোনও কোনও শব্দের অর্থের এক-একটি পর্যায় যতিচিহ্নের ভিন্নতায় না বুঝিয়ে প্রায় সমস্ত জায়গায় অর্ধবিরতি চিহ্ন (কমা) দিয়ে দেওয়া হয়েছে। শব্দকোষে এটা ঠিক নয় একেবারেই।
       বোঝানো বা অর্থের বাক্য ঠিকঠাক গঠিত নয় সব সময়। যতিচিহ্ন ঠিকঠাক বসেনি সব জায়গায়।
       অর্থভিন্নতার উল্লেখ কোথাও কোথাও প্রয়োজন ছিল। আড়া-র অর্থ করা হয়েছে, খড়ের ঘরে দুই খুঁটির ওপর সমান্তরাল লম্বা বাঁশ। খড়ার বড়কেও আড়া বলা হয়। আর দিত অর্থে অসম্পূর্ণতা রয়েছে। খড়ের ঘর, খুঁটি বা বাঁশ এর অর্থকে সীমায়িত করে। অ্যাক গইলির গরু মানে কি কেবল একদলের সমর্থক! 
       ভুল অর্থও প্রাধান্য পেয়েছে নেহাত কম নয়। সুন্দরবনের ভূমিপুত্র হয়ে তিনি অজ শব্দের অন্যতম অর্থ করলেন 'নিকৃষ্ট, হীন', আড় ভাঙা-র একমাত্র অর্থ করলেন 'কথা বলার মধ্যে আঞ্চলিক ভাষার টান না থাকা'! আড়িমুড়ি খাওয়া কি 'শরীরটা খারাপ হওয়া' (পরে দু-এক পাতার ব্যবধানে আড়মোড়া ভাঙা বা আনমুড়ি ভাঙা-য় অর্থ মোটামুটি ঠিক আছে)! আধসিরে ঘটি কি 'এক সের ধরে এমন ঘটি'! আদুরির অর্থ কি 'মেয়েদের ডাক নাম'! দুটি শব্দকে মাঝে রেখে দু-বার আপাতক শব্দের অর্থ করা হল কেবল 'অন্তত'! আলগোচ মানে কি উঁচুতে রাখা! আলটাগরা বা আলতাবলা কি কেবল যথাক্রমে গলার ভিতর ও অস্পষ্ট বোঝায়! আংরা বা আকাড়া (?) বলতে যথাক্রমে জ্বলন্ত আগুন ও চাষ নয় এমন জমি বললে ঠিকঠাক বলা হয় কি? ছাওন গাবা বলতে বিমলেন্দুবাবুর বয়ান প্রায় হুবহু রেখে তিনি লিখলেন, "গাদাতে ধান বিচালি সাজাবার পর শেষে বিচালি দিয়ে ছেয়ে দেওয়া হয়। একে 'ছাওনগাবা' বলে।" অর্থাৎ যাচাই না করে প্রায় হুবহু নিতে গিয়ে তিনিও ভুল করলেন। কারণ, ধানের গাদায় ছাওনগাবা হল ছাওন বা ছাওয়ার ঠিক আগের পর্যায়— যে পর্যায়ে গাবা গাবা বিচুলি (অর্থাৎ অনেকগুলো করে বিচুলি একসঙ্গে নিয়ে) পরিপাটি করে সাজিয়ে পেতে পেতে অনেকটা উঁচু করে নেওয়া হয় যাতে ছাওন ঢালু হয়। ছাওনগাবা কখনোই ছেয়ে দেওয়া নয়। ধানের গাদা তো পাটা (একটার গায়ে আর একটা— এইভাবে পেতে পেতে) এবং গাবার সংযোগেই পরপর গড়ে ওঠে, অর্থাৎ বেশ কয়েকটি পাটার পর গাবা, তারপর আবার কয়েক পাটা, তারপর গাবা দেওয়া— এইভাবে। এতেই গাদা ঠিকমতো পরস্পর বাঁধনে গড়ে ওঠে। "এমন আশিটির 'তড়পা' বিচালি হলে এক কাহন বিচালি হবে।"— ঠিক বলা হল কি? দৃষ্টান্তে আর এগোচ্ছি না।
       ঐ শব্দকোশে উচ্চারণের সূত্র ধরিয়া দেওয়া হয়নি বেশির ভাগ সময়, উচ্চারণানুগ শব্দসংগ্রহ হলেও কোথাও কোথাও উচ্চারণের দিশা আবশ্যক ছিল।
       পরিভাষা সংগ্রহ পরিবেশনে শিরোনামকে মনে রাখা হয়নি। যেমন 'জেলে, মৌলে কাঠুরেদের জঙ্গলে ব্যবহৃত ভাষা'য় জ দিয়ে— জবান, জো-সো করে, জাড়, জো। পরিভাষার ক্ষেত্রে বিভাগ অনুযায়ী শব্দ বাছাই নিখুঁত নয়। 'পেশাগত শব্দ' পর্যায়ে অধিকাংশ শব্দই মাচবা আভিধানিক এবং কেবল সুন্দরবনকেন্দ্রিকও নয়। ব্লার্বের দাবিমতো এগুলো কি 'আকাড়া'? মৎস্যজীবী ও মাছ ধরার সরঞ্জাম অধ্যায় ঝ বর্ণের অধীন ঝাঁপি শব্দের পর কী হল! ট থেকে হ পর্যন্ত আর কি কোনো শব্দ নেই দেওয়ার মতো এই বিভাগে? এর পর-পরই 'জাল তৈরির উপকরণ', 'মাছধরার বঁড়শির প্রকারভেদ'-এর পর এসে গেল 'নৌকার সরঞ্জাম' এবং আশ্চর্যজনকভাবে তার অধীনে নৌকা মলম-এর পরে-পরেই পোলো, পাটা, পাশ ফেলা, পাই, পোনা ইত্যাদি শব্দ বা শব্দবন্ধ শুরু হয়ে গেল! এমন ফাঁক রয়ে গেল প্রুফ দেখায়!

       তাঁর এ শব্দকোশে, যথার্থ তৃণমূল স্তরে শব্দ সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের মান্য ব্যক্তিত্ব বিমলেন্দু হালদারের প্রলম্বিত ছায়া। এমন শব্দ নেহাত কম নয় যেখানে তিনি সরাসরি শ্রী হালদার-দিত অর্থই নিয়েছেন অথবা একটু-আধটু নিজের মতো করে। শব্দকোশের চরিত্র যখন সংকলনগোত্রীয় তখন সেটা অসম্ভব নয়, কিন্তু সুনির্দিষ্ট ও সঙ্গতভাবে তা হতে গেলে হুবহু নেওয়ার ক্ষেত্রে যথাযথ স্বীকৃতি দরকার। শব্দ কারও নিজস্ব নয় নিশ্চয়ই— যদিও প্রয়োগে স্বাতন্ত্র্য সম্ভব— কিন্তু ভাষা বা ব্যাখ্যা যে-যার নিজস্ব। সেই নিজস্বতার যথাযথ স্বীকৃতি না থাকলে পাঠকের পক্ষে সবসময় বোঝা সম্ভব নয় যে সে ভাষা বা ব্যাখ্যাদি একাধারে সংগ্রাহক-সংকলকের নিজের না অন্য কারও। যেখানে সহায়ক হিসাবে একাধিক গ্রন্থ বা লেখকের নাম রয়েছে। কেবল পুস্তকের শেষে ঋণস্বীকার-রূপ স্বীকৃতি বা ভূমিকায় সশ্রদ্ধ উল্লেখ ইত্যাদিতে সে কর্তব্য শেষ হয়ে যায় না। হুবহু বা প্রায়-হুবহু নেওয়ার ক্ষেত্রে বন্ধনীর মধ্যে বি.হা., সু.চ., সু.ম. ইত্যাদি দেওয়া যেত ভূমিকা বা অন্যত্র এগুলো কাকে বোঝাচ্ছে তা উল্লেখ করে। হ্যাঁ, বিমলেন্দুবাবুর বইয়ের উল্লেখ করেছেন শ্রী মণ্ডল, ভূমিকায় তাঁর প্রতি অগাধ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন— সর্বোপরি বইটি উৎসর্গই করেছেন তাঁকে, তার পরেও বলছি, উক্ত যথাযথ স্বীকৃতির দায় এড়ানোর নয়। প্রশ্নটা যেহেতু নিজস্বতা তথা মৌলিকতার। দু-একটি দৃষ্টান্ত। বিভিন্ন পেশা ও বৃত্তিমূলক শব্দ বিভাগের কুম্ভকার পর্যায়ে বিমলেন্দুবাবু তাঁর 'দক্ষিণ ২৪ পরগনার কথ্য ভাষা ও লোকসংস্কৃতির উপকরণ' (প্রথম খণ্ড) গ্রন্থে ৩৫টি শব্দ চয়ন করেছিলেন নিরঞ্জনবাবু করলেন ৩২টি, যার অধিকাংশই বিমলেন্দুবাবুর বইয়ে রয়েছে। শ্রী মণ্ডলের এখানে বড়জোর একটু আধটু পরিবর্তিত হয়ে এসেছে। নিরঞ্জনবাবু কৃষিজীবী ও কৃষি সরঞ্জাম অধ্যায়ে 'সুন্দরবন এলাকায় চাষ করা আমন ধানের নাম' শিরোনামে ৫৬টি ধানের নাম রাখলেন, বিমলেন্দুবাবু তাঁর বইয়ে রেখেছেন ৫৮টি। নিরঞ্জনবাবুর নামগুলির অধিকাংশই বিমলেন্দুবাবুর তালিকায় রয়েছে, এখানে একটু সাজানো আকারে এই যা।

       ভূমিকায় তিনি লিখেছেন, "১৯৬৮ সালে কামিনীকুমার রায়ের 'বাংলা ভাষার অভিধান' সে সময়ের চাহিদা কিছু পূরণ করেছিল।" উক্ত সালে কামিনীকুমার রায়ের 'লৌকিক শব্দকোষ' নামে অসাধারণ বইটি প্রকাশিত হয়েছে বলেই জানি, 'বাংলা ভাষার অভিধান' বলে তাঁর কোনও গ্রন্থ আছে কি না বর্তমান আলোচকের জানা নেই। নিরঞ্জনবাবু বলেছেন, 'কথ্যভাষা গ্রাম্য ভাষা'; কামিনীকুমার তাঁর ভূমিকায় 'গ্রাম্য' শব্দটি একাধিকবার ব্যবহার করলেও, শব্দটি সম্মানার্থে ব্যবহার করা হয় না বিবেচনা করে তার বদলে 'লৌকিক' শব্দ ব্যবহার করে নিজের বইয়ের নাম দিয়েছেন 'লৌকিক শব্দকোষ'। শ্রী মণ্ডল যেখানে অঞ্চলভেদে ভাষার বা উচ্চারণের রূপভেদের কথা বলেছেন অথচ বইয়ে কোথাও প্রায় তা নির্দেশ করেননি, কামিনীকুমার সেখানে প্রতিটি শব্দের পাশে কোন অঞ্চলে কী উচ্চারণে প্রচলিত তাও নির্দেশ করেছেন এক দীর্ঘ বিস্তৃত অঞ্চলজুড়ে। নিরঞ্জনবাবু যেখানে মান্য চলিত বাংলা শব্দ হামেশাই গ্রহণ করেছেন সেখানে কামিনীকুমার ঘোষিতভাবেই মান্য চলিত বাংলাকে তাঁর শব্দকোশে ঠাঁই দেননি। 

       শ্রী মণ্ডল তাঁর ভূমিকায় স্বচ্ছন্দে একাধিকবার 'নিম্নবর্ণের' শব্দটি বসিয়েছেন, এটি সচেতন প্রয়োগ কি?

       ছেউনি লক্ষীকান্তপুর এলাকার আঞ্চলিক শব্দ বলেছেন তিনি আমাদের মগরাহাট থানাতেও এই শব্দটি সমধিক প্রচলিত, আগে জল সেচের এই সরঞ্জাম ছেউনি ছিল বেতের তৈরি। আদতে ছোট খড়ার গায়ে দড়ি বেঁধে দু-দিকে দুটি করে বাড়তি দড়ি থাকত দু-জন লোক দু-হাতে করে ধরে জল ছেঁচার জন্যে। একে তাই জল ছেঁচার খড়াও বলা হত। পরে অ্যালুমিনিয়ামের গামলা ইত্যাদিতে এইভাবে জল ছেঁচা শুরু হয়।

       পিছনে তথ্যঋণ-এ সুজিত কুমার মণ্ডল সম্পাদিত 'বনবিবির পালা' পুস্তক থেকে একটি উদ্ধৃতি দেখা যাক। ধুয়া শব্দ প্রসঙ্গে সুজিতবাবু লিখেছেন, 'পালা গানে মূল-গায়েনের গাওয়া যে অংশটি দোহারের কণ্ঠে একাধিকবার পুনর্গীত হয় তাকে বলা হয় ধুয়া বা ধুয়ো।' শ্রী মণ্ডল ধুয়া/ধুয়ো শব্দে লিখেছেন, 'পালাগানে মূল গায়েনের গাওয়া যে অংশটি দোহারের কণ্ঠে একাধিকবার গাওয়া হয় তাকে বলা হয় ধুয়ো।' বর্তমান আলোচকের বিশ্বাস, কেবলমাত্র সংকলন গ্রন্থ হিসাবে দেখতে গেলেও, এমন উল্লেখের ক্ষেত্রে কার থেকে সংকলিত তা স্পষ্ট হওয়া উচিত বইয়ে।

       শ্রী মণ্ডলের তোলা আলোকচিত্রে জাল ফেলার মানুষটির ছবি এসেছে অনবদ্যভাবে, কিন্তু একটি সুচারুভাবে-পড়া-জালের ছবি হলে ভাল হত।

       আলোচনায় আর বেশি কিছু বলছি না আমরা। শ্রী মণ্ডল একটি উল্লেখযোগ্য কাজ করেছেন তার জন্যে তিনি অবশ্যই ধন্যবাদার্হ, কিন্তু আরও খানিক সুষ্ঠুভাবে কাজটি হতে পারবে এই আশা করব আমরা। বিশেষত আরও অজস্র শব্দ যেখানে এমন কোষগ্রন্থে আশ্রয়প্রত্যাশী। আমরা আশা রাখি এ বইয়ের দ্রুত সংস্করণ হবে এবং সযত্ন সেই পরবর্তী সংস্করণে তা আরও সমৃদ্ধ এবং গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠবে সকলের কাছে। অনেক শুভেচ্ছা।


পুস্তক : সুন্দরবনের আঞ্চলিক শব্দকোষ

সংকলক : নিরঞ্জন মণ্ডল

প্রকাশনী : গাঙচিল

প্রকাশকাল : ডিসেম্বর ২০২১

মূল্য : তিনশো টাকা 

       



Comments

বিধিবদ্ধ স্বীকার্য :

লেখার বক্তব্যের দায়িত্ব লেখকের, পত্রিকার নয়। আমরা বহু মতের প্রকাশক মাত্র।

মতামত/লেখা এখানে জমা দিন

Name

Email *

Message *

সাম্প্রতিক বাছাই

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯৩তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩২ নভেম্বর ২০২৫

সূচিপত্র বস্তু, চেতনা এবং কবি ।। সজল চক্রবর্তী দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত ।। রণেশ রায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট ও সন্নিহিত অঞ্চলের কথ্য শব্দ ।। অরবিন্দ পুরকাইত চাঁদে জীবন ।। শমীক সমাদ্দার অসমাপ্তি ।। মহুয়া হুই গ্যালাক্সির শব্দে ।। জাসমিনা খাতুন তিনটি কবিতা ।। দিবাকর সেন অপূর্ণতার শেষ অধ্যায় ।। সুপ্রিয় সাহা হাফ ডজন ছড়া ।। স্বপনকুমার পাহাড়ী স্বাপ্নিক অমলের ঘুৃম ।। সঞ্জয় দেওয়ান দুটি কবিতা ।। সৌমিত্র উপাধ্যায় পথ চলতি ✍️পার্থ প্রতিম দাস হেমন্তের বিষাদ ছুঁয়ে ।। শক্তিপদ পাঠক রাই আর বাবা ।। অদিতি চ্যাটার্জি স্থিতিশীল ।। রঞ্জিত মুখোপাধ্যায় হৃদয়ের শূন্য কোড ।। লিপিকা পিঙ্কি দে অমানিশা ।। সৌভিক মুখার্জী দৃষ্টিগত ।। শামীম নওরোজ জ্যান্ত ভূতের গপ্পো ।। পার্থ সারথি চট্টোপাধ্যায় ধুতরা ফুলের ঘ্রাণ ।। মজনু মিয়া তারা খসার আলোয় ।। তীর্থঙ্কর সুমিত উত্তরণে অন্তরায় ।। সমীর কুমার দত্ত প্রেম মুদ্রা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ধারা ।। লালন চাঁদ অন্যের ব্যথায় ব্যথি ।। জগদীশ মণ্ডল গর্ভ ।। শাশ্বত বোস ভ্রমণ বিষয়ক স্মৃতিকথা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত শাপে বর ।। সাইফুল ইসলাম রবিবার ।। সঙ্ঘমিত্রা দাস দুটি ...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬

  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠালে  অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে হলে ভালো। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # ...

রেজাল্ট ।। সৈকত মাজী

রেজাল্ট সৈকত মাজী শুভ্রাংশু বিছানতে শুয়ে শুয়ে বিরক্ত হয়ে উঠল। মনে মনে নিজের শরীরটাকে আচ্ছা করে শুনিয়ে দিলো দু- চারটে কথা, দেবে নাই বা কেন, কয়দিন ধরে এতো কাঠ খড় পুড়িয়ে সব বন্ধুরা মিলে রথটা বানালো, কত কি প্ল্যান করলো, আর এই শরীরটার জন্যই তো সব ভেস্তে গেলো। মনে মনে ভাবলো একটা যা হোক শরীর হয়েছে ওর প্রতি মাসে তিন - চার বার করে জ্বর হচ্ছেই। হবি তো হ আর একটা দিন পরে হলে কি এমন ক্ষতি হতো, এই রথের দিনেই হতে হলো। ওর বিরক্তিটা বেড়ে গেলো আরো কয়েক ঘর।    " মা ও মা...মাআআআআ...." জোরে হাঁক  দিলো শুভ্রাংশু।    " কি হয়েছে বাবু? আবার জ্বরটা বেড়েছে? মাথা ব্যথা করছে?" ব্যস্ত হয়ে উঠলেন মালতিদেবী।     " ওসব কিছু নয়, ও মা বলছি এখন তো খুব কম জ্বর আছে যাই না মা একবার বাইরে, সবাই কতো ফুর্তি করছে বলো"  কাতর ভাবে বলল শুভ্রাংশু।      " না বাবু, এখনই আমরা ডাক্তারের কাছে যাব, বাবা তৈরী হয়ে গেছেন, আমরা বিকেলে তখন মেলা দেখতে যাব কেমন, এখন উঠে জামা কাপড় পরে নাও"  মালতিদেবী জামা কাপড় গুলো এগিয়ে দিলেন।      শুভ্রাংশু...

রাই আর বাবা ।। অদিতি চ্যাটার্জি

রাই আর বাবা অদিতি চ্যাটার্জি রাই-র জীবনে বেশ কিছু ভালো লাগা আছে তার মধ্যে একটা হলো সন্ধ্যার সময় তিন তলার বারান্দায় দাঁড়িয়ে রাস্তা দেখতে দেখতে কফি কাপে চুমুক দেওয়া ।" আজ যশোদা মিষ্টান্ন ভান্ডারের সামনে বেশ ভিড়,নির্ঘাত 'তেলে ভাজা ' প্রেমীরা।" আপন মনেই ভাবে ও, কিন্তু বসার ঘরে সুমন আর আঁখি এতো জোরে 'হল্লা গোল্লা ' করছে তালতলার জমজমাট রাস্তার দিকে আর মন দিতে পারছে না রাই।  পায়ে পায়ে ঘরে এসে দাঁড়ায় রাই, দেখে ক্লাস ফোরের মেয়ে এতোটা ঝগড়া করছে সুমনের সাথে , "বাপ রে, কবে এতোটা কথা শিখলো মেয়ে! কিভাবে কথা বলছে?? কোঁকড়া চুল ঝাঁঝিয়ে,গোলগাল হাত নেড়ে " ...মেয়ে কে দেখে থতমত খেয়ে যায় রাই। এদিকে আঁখি বলছে, "ধুত্ বাপী তুমি কিচ্ছু পারো না, তুতাই-র বাবা, পিসাই, মামু সবাই কত ভালো করে খেলতে পারে , না আমি তোমার সাথে খেলবো না।" কাতর চোখে মেয়ের দিকে একবার তাকিয়ে সুমন বলে ,"আচ্ছা তুই আমাকে শেখা, দ্যাখ আমি কার জন্য আলিপুরদুয়ার থেকে পনেরো দিন পর পর কলকাতায় আসি বল!"  ঐ টুকু মেয়ে কথা প্রায় না শুনেই ঘরে চলে গেল রাই-র চোখের সামনে, সুমন একবার হেসে বাথরুমের দিকে এগো...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯২তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩২ অক্টোবর ২০২৫

—: সম্পাদকীয় দপ্তর থেকে :— এই সংখ্যার জন্য লেখা এসেছিল প্রায় ১৮০টা। কিন্তু গুণগত মানে দুর্বল লেখার সংখ্যা বহু। আমরা নবপ্রভাতে নতুনদের কথা ভেবে বেশ কিছু দুর্বল লেখাও রাখি। কিন্তু সবসময় একই লোকের দুর্বল লেখা প্রকাশ করা অনুচিত বলে মনে করি। শেষ পর্যন্ত ৯৯ জনের লেখা রাখা গেল। যাদের লেখা প্রকাশিত হল না, তারা লেখাগুলি অন্য যেখানে খুশি পাঠাতে পারেন। বিশেষ কারণে এই সংখ্যার মুদ্রিত সংস্করণ প্রকাশিত হচ্ছে না। আমরা দুঃখিত। তবে মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি শীঘ্রই আসছে। সঙ্গে থাকুন। সকলকে উৎসবমুখর বর্ণময় শুভেচ্ছাসহ— —নিরাশাহরণ নস্কর, সম্পাদক, নবপ্রভাত। অনুরোধ : প্রকাশিত লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন, ছবি/স্ক্রীনশট নয়।  == সূচিপত্র == পড়া-লেখার ইতিহাস অনুসন্ধান।। তপন তরফদার উৎসব : মানুষের চিরন্তন আত্মপ্রকাশ।। কৃশানু ব্যানার্জি বাংলা : সভ্যতা ও সংস্কৃতির জন্মভূমি।। শ্যামল হুদাতী সমুদ্র আর অস্তিত্ব ।। সুব্রত চৌধুরী রাজা ছিলেন জুবিন গর্গ ।। গঙ্গা 'অনু'   আদ্যাশক্তি মহামায়ার বাংলা বারো মাসের বারো রূপ ।। অর্হণ জানা মেধাদাদুর আসর ।। রণেশ রায় বৈজ্ঞানিক মা...

বস্তু, চেতনা এবং কবি ।। সজল চক্রবর্তী

বস্তু, চেতনা এবং  কবি সজল চক্রবর্তী  "যেখানে পৌঁছায় না রবি,, সেখানে পৌঁছে যান কবি।" এই ছোট্ট কবিতা টি অনেক পুরনো  এবং বহু পরিচিত, তথাপি এর তাৎপর্য এখনো হারায় নি। তবে, কথা হ'চ্ছে -আমরা তো  রবি-কবিকে একত্রেই পেয়ে যাই আমাদের ঋষি-প্রতিম কবি রবীন্দ্রনাথের মধ্যে। আর তখনই জেনে যাই উপরোক্ত ছোট কবিতার প্রণিধানযোগ্যতা ।  ... এবার শুনে নেয়া যাক, ঋষি-প্রতিম কবির মুখ নিঃসৃত বাণী:- "তোমার অসীমে প্রাণমন লয়ে যত দূরে আমি যাই ...." অর্থাৎ আমাদের প্রিয়তম কবি অনায়াসে পৌঁছে যান সৃষ্টির অসীমে , যা আমাদের পক্ষে আদৌ সম্ভব নয়। এখানে কবির চেতনা সুদূর প্রসারী! ... প্রকৃত প্রস্তাবে কবি অতিন্দ্রীয় জগতের এক নাগরিক। তাঁর কাছে তাই চেতনা বা চৈতন্যেরই প্রাধান্য। ...এখন আসছি, বস্তু এবং চেতনার মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে।  ... আমি একজন অতি সাধারন মানুষ, তাই এই ব্যাপারটাকে কবিদের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার চেষ্টা ক'রছি। তবে আমার সামান্য জ্ঞান থেকে একটা সাধারণ কথা সেরে নি'। আমরা সাধারণত ব'লে থাকি-- সূর্য পূর্বদিকে ওঠে। প্রকৃত অর্থে কি তাই ? আসলে সূর্য যেদিকে ওঠে ,আমরা  সেই দিকটাকে নামাঙ্কিত ক...

দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট ও সন্নিহিত অঞ্চলের কথ্য শব্দ, উচ্চারণ, বাগ্্ধারা ইত্যাদি ।। অরবিন্দ পুরকাইত

স্থানীয় কিছু কথ্যশব্দ, উচ্চারণ, বাগধারা ইত্যাদি  (পর্ব—সাত) অরবিন্দ পুরকাইত স্থানীয় কিছু কথ্যশব্দ, উচ্চারণ, বাগ্্ধারা ইত্যাদির সংগ্রহ প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল রামচন্দ্র নস্কর সম্পাদিত 'চর্যা' পত্রিকায়, ২০১৬ সালে। সে সংগ্রহ যায় নিজের 'গাঁ-ঘরের কথা' পুস্তকে, ১৪২৩ সনে। পরে এই ব্লগজিনেও কিছু সংগ্রহ প্রকাশিত হয় ১৪২৮ সনের আশ্বিন মাসে, পৌষ ১৪২৯-এ, আষাঢ় ১৪৩০, নববর্ষ ১৪৩১ ও কার্তিক ১৪৩১ সংখ্যায়। তার পরেও ধীরে ধীরে আরও কিছু সংগৃহীত হয়েছে, সেগুলিই এখানে রাখা হল। নিজের আগের সংগ্রহে এসে-যাওয়া শব্দ যদি এখানে এসে থাকে, তা বাড়তি বা ভিন্ন কিছু বলার প্রয়োজনেই। নিজের আগের সংগ্রহ খুব ভাল করে যে মিলিয়েছি তা নয়, পুরো সংগ্রহ একত্র করার সময় তা করা যাবে যতটা সম্ভব নিখুঁত করে। আগে আগে সংগ্রহ প্রসঙ্গে কিছু কথা বলা হয়েছে, বিশেষত প্রথম প্রকাশের সময় একটু বিশদভাবে। এখানে আর কিছু বলা নয়, কেবল সংগ্রহটাই তুলে ধরা গেল। অখেজো/অখেজে — অকেজো থেকে। আদরের তিরস্কার হিসাবেই মূলত প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। পাজি। অচিমিতি — (উচ্চারণ ওচিমিতি) আচমকা, হঠাৎ। অদীয় — প্রচুর, অজস্র। অদ্বিতীয় থেকে ক...

কবিতা ।। অরণ্যকন্যা ।। অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়

  অরণ্যকন্যা অরিন্দম চট্টোপাধ্যায় অরণ্যকন্যার দৃষ্টির ভেতর বিষাদ বিন্দু ফোঁটা ফোঁটা জলের মতো গড়িয়ে যায়, হয়ে যায় কোন নদীপথ দৃষ্টি ভেঙে ভেঙে চলে যায় কোন এক শূন্য পথে অরণ্যকন্যার হৃদয়ের ভেতর ভাঙে যতো বৃক্ষপত্র নতুন পত্র পুষ্পের খোঁজ নেই ঠোঁট জুড়ে সমুদ্রকাঁপন বুদবুদের মতো অস্ফুট হয়ে উচ্চারিত হয় কোন অক্ষর শব্দ আর তাঁর শরীর থেকে ছড়িয়ে যায় হয়ে যায় একটা অদৃশ্য কবিতা...    ================== @ অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়,  বেহালা, কলকাতা -৭০০০৬০,  

দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত ।। রণেশ রায়

দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত রণেশ রায় ভূমিকা দর্শনের ইতিহাসে বস্তু ও চেতনার সম্পর্ক মানবচিন্তার গভীরতম প্রশ্ন। অধিবিদ্যা ভাবকে মুখ্য ধরে, বস্তুকে গৌণ বলে মনে করে। বিপরীতে মার্কস ও এঙ্গেলস বলেছেন—বস্তুই মুখ্য এবং চেতনা তার প্রতিবিম্ব। মানুষ যখন প্রথম আলোর মুখ দেখেছিল, তখনই সে বিস্ময়ে প্রশ্ন করেছিল—আমি কে, কোথা থেকে এলাম, আর এই দৃশ্যমান জগতের বাইরে কিছু আছে কি? এই প্রশ্ন থেকেই জন্ম নিয়েছিল দর্শনের দুই বিপরীত স্রোত—ভাববাদ আর বস্তুবাদ। ভাববাদ বলেছিল—"ভাবই প্রথম," আর মার্কস বললেন—"না, বস্তুই প্রথম।" এই দুই প্রান্তের মাঝখানে আমি দেখি এক সেতুবন্ধন, যেখানে বস্তু, স্নায়ু ও চেতনা একে অপরকে গড়ে তোলে, আর তাদের এই ত্রিত্বের নৃত্যেই সৃষ্টি হয় জীবন ও কল্পনার জগৎ। ভাবববাদ এক সর্বশক্তিমান শক্তির কল্পনা করে যা এই বস্তুজগতের স্রষ্টা। আর এখান থেকে ধর্ম ও ধর্মীয় ভাবধারার সৃষ্টি। আমার এই প্রবন্ধে আমি মার্কসীয় দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদকে আধুনিক বৈজ্ঞানিক আলোকে বোঝার চেষ্টা করেছি। আমি দেখাবার চেষ্টা করবো কিভাবে ইন্দ্রিয় এবং স্নায়ুজগৎ বস্তু ও চেতনাকে সংযুক্ত করে এবং কল্পলোকের জন্ম দেয়...

চাঁদে জীবন ।। শমীক সমাদ্দার

চাঁদে জীবন  শমীক সমাদ্দার                           চন্দ্রযান দুরন্ত তৈরি, রকেটের উপর ভর করে চন্দ্রযান চাঁদে অবতরণ করবে। মাধ্যাকর্ষণ শক্তি পেরিয়ে মহাকাশযান চাঁদের কক্ষপথে  স্থাপন করা হয়েছে। চন্দ্রাযান চাঁদের মাটিতে পা রাখবে সময়ের কাউন্ট ডাউন চলছে। সমস্ত নিয়ন্ত্রণ স্পেসস্কাই গাবেষণা কেন্দ্র কতৃক নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে প্রযুক্তি বিজ্ঞান অতল গভীরতায় বাসা বাঁধে। পরিচয়টা দিয়ে দিলাম এই স্পেসসিপে রয়েছে তিনজন নভোচর, একজনের নাম সাইমন আর এক জনের নাম রেমন্ড, আর এদের সঙ্গে একজন মহিলা আছে তার নাম মেরিনা। চন্দ্রযান চন্দ্রপৃষ্ঠে সফলভাবে অবতরণ করেছে। চন্দযান দুরন্ত চাঁদের পূর্ব -পশ্চিম অক্ষরেখা বরাবর অবতরণ করেছে। আলো আঁধারের গভীরতায় বড় বড় পাথরের পিণ্ড, চাঁদের সার্ফেসের উপরে পাথর জল দেখা যায়। জমাট বাঁধা অক্সিজেন আর কার্বনডাই অক্সাইড। ওরা এখানে এসেছে এক রহস্য উদ্ঘাটন করতে। যে স্থানে ওরা অবতরণ করেছে সেখানে ১০ বছর আগে ওরা এসেছিলো। রুশ সরকার ওদের দেশের ছাত্র ছাত্রী কে মহাকাশে চাঁদে পাঠাতে চায়। ওরা কেন এসেছে সেটা এখনো অধরা। সাইমনের বর্...

জনপ্রিয় লেখা

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ -- "ত্রয়ী কাব্য" ------------------------------------------------------------------------------ সুনন্দ মন্ডল নবীনচন্দ্র সেন সাহিত্যে তথা বাংলা কবিতার জগতে এক অবিস্মরণীয় নাম। তিনি চট্টগ্রাম জেলার নওয়াপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ১৮৪৭ সালে তাঁর জন্ম এবং মত্যু ১৯০৯ সালে। বঙ্কিমচন্দ্র তাঁকে 'বাংলার বায়রন' বলেছেন। ‎জীবৎকালীন যুগে আত্মপ্রত্যয়ের মধ্যে জাতীয় চরিত্র আত্মস্থ করে নতুন সংস্কারে প্রয়াসী হয়ে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখেছেন।মধুসূদন-হেমচন্দ্র-নবীনচন্দ্র--এই তিন কবি বাংলা কাব্যধারায় প্রাণ সঞ্চার করেছিলেন। বিশেষত মহাকাব্য লেখার দুঃসাহস দেখিয়েছিলেন। এদিক থেকে মধুসূদন দত্ত একজন সফল মহাকাব্যিক। তাঁর 'মেঘনাদ বধ' কাব্যের মত গভীর ও ব্যঞ্জনাময় না হলেও নবীনচন্দ্র সেনের 'ত্রয়ী' কাব্য বিশেষ মর্যাদা দাবি করতেই পারে। তাছাড়া 'ত্রয়ী' কাব্যে ধর্মীয় ভাবধারার আবেগ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ‎ ‎নবীনচন্দ্র সেন বহু কাব্য লিখেছেন। যেমন- 'অবকাশরঞ্জিনী','পলাশীর যুদ্ধ', 'ক্লিওপেট্রা', 'রঙ্গমতী', 'খ্রীষ্ট', ...

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা শ্রীজিৎ জানা "সময় চলিয়া যায় নদীর স্রোতের প্রায়"। স্রোতের ধারা তার দু'প্রান্তে রেখে যায় ভাঙাগড়ার চিহ্ন। কালের দৃশ্যপটেও পরিবর্তনের ছবি অনিবার্যভাবেই চোখে পড়ে। সমাজ সময়ের ছাঁচে নিজেকে গড়ে নেয় প্রতিনিয়ত।  সেখানে মনে নেওয়ায় বাধা থাকলেও,মেনে নেওয়ার গাজোয়ারি চলে না। ফলত কাল বদলের গাণিতিক হিসেবে জীবন ও জীবিকার যে রদবদল,তাকেই বোধকরি সংগ্রাম বলা যায়। জীবন সংগ্রাম অথবা টিকে থাকার সংগ্রাম।  মানুষের জীবনযাপনের ক্ষেত্রে আজকে যা অত্যাবশ্যকীয় কাল তার বিকল্প রূপ পেতে পারে অথবা তা অনাবশ্যক হওয়াও স্বাভাবিক। সেক্ষেত্রে উক্ত বিষয়টির পরিষেবা দানকারী মানুষদের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হওয়া অস্বাভাবিক নয়। এক কালে গাঁয়ে কত ধরনের পেশার মানুষদের চোখে পোড়তো। কোন পেশা ছিল সম্বৎসরের,আবার কোন পেশা এককালীন।  সব পেশার লোকেরাই কত নিষ্ঠা ভরে গাঁয়ে  তাদের পরিষেবা দিত। বিনিময়ে সামান্য আয় হত তাদের। আর সেই আয়টুকুই ছিল  তাদের সংসার নির্বাহের একমাত্র উপায়। কালে কালান্তরে সেই সব পেশা,সেই সব সমাজবন্ধুরা হারিয়ে গ্যাছে। শুধুমাত্র তারা বেঁচে আছে অগ্রজের গল্পকথায়,আর বিভিন...

গ্রন্থ আলোচনা: শর্মিষ্ঠা দেবনাথ

প্রতিবাদ যখন অগ্নিবাণী বাংলাদেশে নারীমুক্তি ও নারী আন্দোলনের পুরোধা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ১৯৯তম জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদিত হল " আসিফা এবং.." কাব্য সংকলনটির মধ্যদিয়ে।সংকলনটির বিশেষত্ব হল,এটি উৎসর্গ করা হয়েছে নারীর সম্মান রক্ষার আন্দোলনের যোগ্যতম ব্যক্তি শহীদ শিক্ষক বরুন বিশ্বাসকে। সংকলক প্রকাশক সন্দীপ সাহু নিজে এবং বিশিষ্ট কবি সাহিত্যিকদের দিয়ে লিখিয়ে নিয়েছেন এমন কিছু কবিতা, যা শুধুমাত্র শব্দ ও ছন্দের অনুবন্ধ নয়, এক একটি অগ্নিবাণী।আসলে জীবনকে দেখার স্বাতন্ত্র‍্যে কবিরা সব সময়ই অগ্রগণ্য এবং অনন্য।যুগ ও জীবন দ্বন্দ্বের কণ্ঠস্বরকে আশ্রয় করে,একদিকে মনের প্রবল দাহ ও অন্যদিকে  নির্যাতিতা শিশুকন্যা ও নারীর প্রতি মনের গভীর আকুলতা থেকে প্রকাশ পেয়েছে "আসিফা এবং" এর  কবিতাগুলি।এক অন্ধকার সময়ের মুখোমুখি আমরা,সেই অন্ধকার আমাদের নিয়ে এসেছে সামাজিক অবক্ষয়ের শেষধাপে যেখানে নৈতিকতা,পাপবোধ,গ্লানিকে সরিয়ে রেখে, সমাজের বানানো নিয়মকে তোয়াক্কা না করে,অনায়াস দক্ষতায় ও ক্ষিপ্রতায় নিজেরই ধর্মচেতনাকে জলাঞ্জলি দিয়ে কিছু মানুষ তার পশুত্বের পরিচয় দিয়েছে ধর্ষণ ও ন...

শ্যামাপদ মালাকারের কবিতা

চোখ """"""" নদী, অরণ্য, রাতের ফালি চাঁদ- সবেই তো আমার...স্বর্ণপিঁড়িটাও!। সেদিন, শুকতারাটার গা' মাপতে গিয়ে মনে হল, --ওরা আমার চেয়েও সুখী? দেখিনা একবার গাইতি-শাবল চালিয়ে... চালালাম। জল-মাটি ভেজা একটা 'চোখ' কুড়িয়ে ফিরলাম! সেই চোখদিয়ে দেখি-- শেষ বিকেলের নিরন্ন আঁচে ঝলসানো বুকে নীড়ে ফিরছে ধূলিমাখা কত কাল পা, কি শান্তি - কি তৃষ্ণা! পাতাক্ষোয়া কোদালেরর মাথায় ঝরেপড়া ললাটের ঘামে, কারা যেন জীবন শাণ দেয়! রুক্ষঠোঁটের আবরণে এক সময় নেমে আসে শিশিরস্নাত কালনিশি-- মাঝের ব্যবধান মুছে দেয় প্রতিশ্রুতির ভীড়- - পূর্বজনমের নিদর্শনচুম্বন শেষে হেরে যায় কার মমতাজ-- ম্লান হয়ে যায় কত পিঁড়ি! ... ম্লান হয়ে যায় কত পিঁড়ি! ... ম্লা...

কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা: এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায় ।। পার্থ সারথি চক্রবর্তী

  কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা : এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায়  পার্থ সারথি চক্রবর্তী  কথায় বলে বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। রাজার শহর কোচবিহারের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা আরো অনেক বেশি। দুর্গাপূজা আর দীপাবলির মতো দু'দুটো বিরাট মাপের উৎসবের রেশ কাটতে না কাটতেই, এ শহর ভাসে রাস উৎসবের উন্মাদনায়। মদনমোহন ঠাকুর কোচবিহারের প্রাণের ঠাকুর। তাঁকে নিয়ে সবার আবেগ আর শ্রদ্ধা ও ভালবাসা এখানে বাঁধনছাড়া। এক অপূর্ব মিলনোৎসবের চেহারা নেওয়া এই উৎসব ঐতিহ্যবাহী ও ঐতিহাসিক। জন, মত, সম্প্রদায়ের উর্ধে এই উৎসবের গ্রহণযোগ্যতা। সময়ের কষ্টি পাথরে পরীক্ষিত! এক প্রাণের উৎসব, যা বহুদিন ধরেই গোটা উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ উৎসবে পর্যবসিত।কোচবিহারের এই রাস উৎসবকে কেন্দ্র করে যে মেলা হয় তাও সময়ের হাত ধরে অনেক বদলে গেছে। এসেছে আধুনিকতার ছোঁয়া! শৈশবে বাবার হাত ধরে যে মেলা দেখেছি তা চরিত্র ও আকৃতি দু'দিক থেকেই বদলে গেছে। গত পঁচিশ বছর ধরে খুব কাছে থেকে এই উৎসব ও মেলা দেখা, অনুভব করার সুযোগ হয়েছে। যা দিনদিন অভিজ্ঞতা ও প্রাপ্তির ঝুলিকে সমৃদ্ধ করে গেছে প্রতি ক্ষেত্রেই।  খুব সংক্ষেপে এই উৎসবের ইতিহাস না জানাটা কিন্তু অবিচারই ...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো,  তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) য...

মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা 2024 সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি (লেখক ও সম্পাদকীয় দপ্তরের কথোপকথন আকারে) --কী পত্রিকা? --নবপ্রভাত। --মুদ্রিত না অনলাইন? --মুদ্রিত। --কোন সংখ্যা হবে এটা? --বইমেলা 2024। --কোন কোন ধরনের লেখা থাকবে? --প্রবন্ধ-নিবন্ধ, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া। --বিশেষ কোন বিষয় আছে? --না। যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে। --শব্দ বা লাইন সংখ্যার কোন বাঁধন আছে? --না। নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো (যেমন, কবিতা 12-14 লাইনের মধ্যে, অণুগল্প কমবেশি 200/250শব্দে)। তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়। --ক'টি লেখা পাঠাতে হবে? --মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। --ফেসবুক বা অন্য কোন প্লাটফর্মে প্রকাশিত লেখা কি পাঠানো যাবে? --না। সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। --পত্রিকা কোন সময়ে প্রকাশিত হবে? --জানুয়ারি 2024-এর দ্বিতীয় সপ্তাহে। --লেখা পাঠানোর শেষতারিখ কত? -- 17 ডিসেম্বর 2023। --কীভাবে পাঠাতে হবে? --মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। --লেখার সঙ্গে কী কী দিতে হবে? --নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) --বিশেষ সতর্কতা কিছু ? --১)মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন '...

উৎসবের সৌন্দর্য: সেকালে ও একালে।। সৌরভ পুরকাইত

  উৎসবের সৌন্দর্য:  সেকালে ও একালে   সৌরভ পুরকাইত বাংলার উৎসব বাংলার প্রাণ। প্রতিদিনের জীবনযাপনের মধ্যে যখন মন ক্লান্ত হয়ে পড়ে তখন তাকে বেঁচে থাকার রসদ যোগায় এই উৎসব। কথায় বলে 'বারো মাসে তেরো পার্বণ'।মন আনন্দই চায়।তাই তাকে সজীবতা দিতে,পরিবারের,সমাজের ভালো-মন্দের কথা মাথায় রেখে মানুষ নিজেই সৃষ্টি করে নিয়েছে নানাবিধ উৎসবগুলিকে। একেবারে প্রাচীন কাল থেকে আজ পর্যন্ত মানুষ কখনোই উৎসব বিমুখ ছিল না।উৎসবই তাকে ঘর থেকে বাইরে টেনে এনেছে,চিনতে শিখিয়েছে আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার আনন্দকে। উৎসব আসলে প্রাণের সাথে প্রাণের যোগ, হৃদয়ের সাথে হৃদয়ের যোগ।রবীন্দ্রনাথ বলেছেন 'সত্য যেখানেই সুন্দর হয়ে প্রকাশ পায় সেইখানেই উৎসব'।হৃদয়ের সেই সুকোমল বৃত্তির জাগরণ যেন ফুটে ওঠা ফুলেরই মতো সত্য ও সুন্দর।এই জাগরণই উৎসব। তাই নানা কিছুর মধ্য দিয়ে,নানা উপলক্ষ্যে এই উৎসব প্রকাশ পায়। প্রাচীনকালে মানুষের হাতে না ছিল পসার, না ছিল পসরা।ছিল মনের আন্তরিকতা,মানুষকে কাছে টেনে নেবার ক্ষমতা।সেটাই ছিল উৎসবের সৌন্দর্য। তাই সেদিনের উৎসবে ক্ষুদ্র,তুচ্ছ উপকরণও প্রাণের উচ্ছ্বাসে মহৎ হয়ে উঠত।সেকালের উৎসবে লোক দেখানো ব্যাপার কিছু ...

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

বসন্তের কোকিল তুমি   বিচিত্র কুমার                      (০১) তোমার দু-আঁখির গহীন অরণ্যে একটা স্বপ্নের বহমান নদী রয়েছে, তারই রেশ ধরে আমি হেঁটে চলি অজানা বসন্তের পথে নীর উদ্দেশ্যে। সে চলার কোন শেষ সীমা নেই তাই আমার বিষণ্ণ একতারা সন্ন্যাস খুঁজে ফিরে , কবে তুমি বুঝবে অনুশ্রী মনের পর্দা খুলে একুশ বসন্ত তোমার রঙ ছিটিয়ে যাচ্ছে অচিনপুরে। এদিকে আমার দেহের প্রতিটি শিরা ধমনীতে প্রবাহিত হচ্ছে তোমার ভালোবাসার একটু উষ্ণতা পাবার জন্যে, শুধু অনুভবে তাণ্ডব উচ্ছাসিত হচ্ছে--- যেদিকে তাকাই --- ফুলে ফুলে ভ্রমর গুনগুনিয়ে উড়ে উড়ে পরে বসন্তের কোকিল গান গায় নব বসন্তে, তোমার দুই চোখে আমার একই ছায়া রয়ে যায় উতলা ভালোবাসার সীমান্তে।                 (০২)        এক রক্তাক্ত বসন্তের স্মৃতি কোন এক উতলা বসন্তের সকালে পুষ্পবনে ফুটেছিল একটি টকটকে লাল গোলাপ, তার সাথে হয়েছিলো দেখা প্রথম ফাগুনে হয়েছিল দুজনার এ জীবনের আলাপ।  তারপর প্র...

অনুভবে, অনুধ্যানে অনালোকিত কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী ।। সুপ্রিয় গঙ্গোপাধ্যায়

"এ কালে একটু লেখাপড়া জানা থাকাতে, এবং বঙ্গভাষায় অনেক গুলি পাঠ্য পুস্তক হওয়াতে কেবল পরনিন্দা করিয়া সময় কাটাইতে তাঁহাদের আবশ্যকও হয় না, প্রবৃত্তিও হয় না। …নিতান্ত সখ্যতা বা আত্মীয়তা না থাকিলে, সকল পেটের কথা খুলিয়া নিঃশ্বাস ছাড়িয়া তৃপ্তিলাভ করা, এ কালের মেয়েরা পছন্দ করেন না। তাঁহারা বইখানি, কার্পেটটুকু, নিজের স্বামী পুত্র লইয়া দিন যাপন করিতে বা একেলা থাকিতে কষ্ট বোধ করেন না।" —শরৎকুমারী চৌধুরাণীর এই লেখা (ভারতী ও বালক/ আশ্বিন কার্তিক, মাঘ/ ১২৯৮) দেখে বুঝতে অসুবিধা হয় না উনিশ শতকে নারীর লেখাপড়া শেখার উদ্দেশ্য ছিল মূলত আত্মমুক্তির জন্য। শুধু লেখাপড়া শেখা নয়, সাহিত্য সৃষ্টিতেও ছয়'এর দশক (উনিশ শতকের) থেকে নারীরা যে ধারা সূত্রপাত করেছিল তা নারীর আত্মমুক্তির পথকেই প্রসারিত করেছিল। ছয়'এর দশকের পূর্বেই ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে প্রথম ছাপার হরফে নারী রচিত কাব্য 'চিত্তবিলাসিনী' প্রকাশিত হয়। লেখেন কৃষ্ণকামিনী দাসী। ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে কবি ঠাকুরাণী দাসীর নাম উঠে আসতে থাকে, যিনি কবিতার পাশাপাশি গদ্যও লিখতেন। ঠিক সেই বছরই জন্মগ্রহণ করেন কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী, যাঁর কবিতা লেখা আত্মমুক্...

বছরের বাছাই

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৪তম সংখ্যা ।। ফাল্গুন ১৪৩১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

  এই সংখ্যায় একটি গ্রন্থ আলোচনা ও একটি ধারাবাহিক রচনা ছাড়া সব লেখাই ভাষা দিবস, মাতৃভাষা, ভাষাচেতনা ও ভাষা সমস্যা বিষয়ক রচনা। লেখাগুলি এই সংখ্যাকে অনেকটাই সমৃদ্ধ করেছে। পড়ুন। শেয়ার করুন। মতামত জানান। লেখকগণ নিজের নিজের লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন যতখুশি, যে মাধ্যমে খুশি। কিন্তু স্ক্রিনশট শেয়ার নৈব নৈব চ!  অন্য বিষয়ের লেখাগুলি আগামী সংখ্যার জন্য রইল।  সকলকে ধন্যবাদ, অভিনন্দন। ভালো থাকুন।   --সম্পাদক, নবপ্রভাত। ==  সূ  চি  প  ত্র  == প্রবন্ধ-নিবন্ধ অমর ২১শে ফেব্রুয়ারি বাঙ্গালীর বাংলা ভাষা দুর্জয় দিবস।। বটু কৃষ্ণ হালদার ভাষা শহীদদের পঁচাত্তর বছর।। অনিন্দ্য পাল একুশে ফেব্রুয়ারি : বাঙালির শ্রেষ্ঠ অশ্রুবিন্দু।। জীবনকুমার সরকার কবিগানের সাহিত্যিক ও সমাজতাত্ত্বিক মূল্য।। বারিদ বরন গুপ্ত বিপন্ন মাতৃভাষা ও সংস্কৃতি।। শ্যামল হুদাতী মায়ের দুধ আর মাতৃভাষা।। প্রদীপ কুমার দে একুশে ফেব্রুয়ারি : কিছু কথা।। বনশ্রী গোপ বাংলায় কথা বাংলায় কাজ।। চন্দন দাশগুপ্ত বিপন্ন মাতৃভাষা ও তার মুক্তির পথ।। মিঠুন মুখার্জী. হে অমর একুশে, তোমায় ভুলিনি, ভুলব না।। মহম্মদ মফিজুল ইসলা...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৭তম সংখ্যা ।। জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ মে ২০২৫

  প্রচ্ছদ চিত্র: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সূচিপত্র রবীন্দ্রনাথ এবং কয়েকজন নারী ।। অনিন্দ্য পাল পরাবাস্তববাদ ও বাংলায় জীবনানন্দের কাব্যচর্চা ।। রণেশ রায় প্রতীক্ষা ।। চন্দন দাশগুপ্ত আশ্রয় ।। সায়নী সাহা বয়স্ক শিক্ষাকেন্দ্র ।। দেবাংশু সরকার প্রণামের প্রভু ।। সুপ্রভাত মেট্যা দুর্ভাগ্যের সম্মুখ সমরে ।। সমীর কুমার দত্ত আচমকা শরৎ ।। অর্ণব সামন্ত প্রতিধ্বনি ✍️ সুবীর কুমার ঘোষ জীবন যেখানে যেমন ।। আরজু মুন জারিন বছর সীমান্তে হিসেব নিকেশ ।। রানা জামান চারটি কবিতা ।। বিবেকানন্দ নস্কর আমরা আছি ।। লালন চাঁদ চাওয়া ।। মাথুর দাস কাগজ ফুলে ।। সফিউল মল্লিক সময়ের স্রোত ।। দুর্গাদাস মিদ্যা তুমি মানুষ ।। বদরুল বোরহান দিঘার সমুদ্র ।। মাখনলাল প্রধান পুস্তক-আলোচনা ।। অরবিন্দ পুরকাইত সংযম ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত  চেনা প্রতিবেশী (প্রথম পর্ব) ।। দীপক পাল খেলার মাঠ ।। তূয়া নূর বন্ধু শ্যামলকান্তি ।। শংকর ব্রহ্ম তুমি তোমার মতো থাকলে ।। সত্যেন্দ্রনাথ বেরা গ্রীষ্মে খুবই হিংস্র রবি ।। জগবন্ধু হালদার স্বপ্ন দর্শন ✍️ পার্থ প্রতিম দাস মৌন মুখরতা ।। মুসা মন্ডল রুদ্র বৈশাখ ।। দীনেশ সরকার চিহ্নিত পদযুগ পদাঘাত ।। দেবাশীষ...

প্রচ্ছদ।। ৮৩তম সংখ্যা ।। মাঘ ১৪৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ।। প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র

  বিঃ দ্রঃ আগামী ফেব্রুয়ারি সংখ্যার জন্য ভাষা দিবসের কথা মাথায় রেখে লেখা পাঠান। email: nabapravatblog@gmail.com  সূচিপত্র ফিচার।। গোপাল ভাঁড়ের অজানা সত্য ।। লোকনাথ পাল প্রবন্ধ ।। মসুয়ার রায় পরিবার এবং বঙ্গসংস্কৃতি ।... প্রবন্ধ ।। সুধীন্দ্রনাথ দত্ত: কাব্যের দার্শনিক ও ন... কবিতায় সেতুবন্ধন (তৃতীয় অংশ) শিল্পবিপ্লবোত্তর কাল... রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর বিদ্রোহী প্রেমের কবিতা: ... কবিতা ।। এই মন ভালো নেই দিনে ।। সুপ্রভাত মেট্যা কবিতা ।। জোছনা আলোর স্বপ্ন ।। তুষার ভট্টাচাৰ্য কবিতা ।। নিঃস্ব হবো ।। লালন চাঁদ কবিতা ।। ভালোলাগা  ।। আজিজ উন নেসা  গল্প ।। স্বীকারোক্তি ।। চন্দন দাশগুপ্ত কবিতা ।। শীতের দিন ।। প্রশান্ত কুমার মন্ডল কবিতা ।। শীতকাল ।। অঙ্কিতা পাল নাসির ওয়াদেনের দুটি কবিতা ভূতের লেখা ছড়া ।। বদরুল বোরহান কবিতা ।। ব্যস্ত ।। আলাপন রায় চৌধুরী ছোটগল্প ।। লম্বুর স্বপ্নপূরণ ।। পরেশ চন্দ্র মাহাত কবিতা ।। সৎকার ।। সুমিত মোদক কবিতা।। শীত বৈচিত্র্য ।। সুমিতা চৌধুরী পুস্তক-আলোচনা ।। নিউটনের আপেল ও প্রেমিকা ।। অরবিন্... গল্প।। শান্তির পথে …...।। বন্দনা সেনগুপ্ত কবিতা ।। মা...

সূচিপত্র ।। ৮৯তম সংখ্যা ।। শ্রাবণ ১৪৩২ জুলাই ২০২৫

সূচিপত্র   প্রবন্ধ ।। বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় ।। মাখনলাল প্রধান প্রবন্ধ ।। শ্রমিকের অধিকার ।। চন্দন দাশগুপ্ত প্রবন্ধ ।। ভিনগ্রহীদের সন্ধানে ।। শ্যামল হুদাতী প্রবন্ধ ।। নারীমর্যাদা ও অধিকার ।। হিমাদ্রি শেখর দাস কবিতা ।। মশালের রং তুলি ।। তূণীর আচার্য কবিতা ।। জললিপি ।। রূপক চট্টোপাধ্যায় গুচ্ছকবিতা || শিশির আজম নিবন্ধ ।। পূনর্জন্ম ।। শংকর ব্রহ্ম মুক্তভাবনা ।। কোলাহল তো বারণ হলো ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত গল্প ।। গানের হাড় ।। শুভজিৎ দত্তগুপ্ত গল্প ।। শিকড়ের খোঁজে ।। সমীর কুমার দত্ত সুপ্রভাত মেট্যার পাঁচটি কবিতা গ্রন্থ-আলোচনা ।। আবদুস সালামের কাব্যগ্রন্থ 'অলীক রঙের বিশ্বাস'।। তৈমুর খান অণুগল্প ।। হরিবোল বুড়ো ।। সুমিত মোদক রম্যরচনা ।। গোয়েন্দা গোলাপচন্দ আর প্রেমের ভুল ঠিকানা ।। রাজদীপ মজুমদার দুটি গল্প ।। মুহাম্মদ ফজলুল হক দুটি কবিতা ।। তীর্থঙ্কর সুমিত কবিতা ।। মেঘমুক্তি ।। বন্দনা পাত্র কবিতা ।। ব্যবচ্ছিন্ন শরীর ।। কৌশিক চক্রবর্ত্তী কবিতা ।। শমনচিহ্ন ।। দীপঙ্কর সরকার কবিতা ।। ভালোবাসার দাগ ।। জয়শ্রী ব্যানার্জী কবিতা ।। ফণীমনসা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ছড়া ।। আজও যদি ।। বদ্রীন...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো,  তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) য...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮২তম সংখ্যা ।। পৌষ ১৪৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

  সূচিপত্র অন্নদাশঙ্কর রায়ের সাহিত্য: সমাজের আয়না ।। বিচিত্র কুমার প্রবন্ধ ।। বই হাতিয়ার ।। শ্যামল হুদাতী কবিতায় সংস্কৃতায়ন (দ্বিতীয় ভাগ ) ।। রণেশ রায় পুস্তক-আলোচনা ।। অরবিন্দ পুরকাইত কবিতা ।। লেগে থাকা রোদ্দুরের ঘ্রাণের মতো ।। জয়শ্রী ব্যানার্জি কবিতা ।। ভুল ।। সুপ্রভাত মেট্যা কবিতা ।। উন্মেষ ।। বিশ্বজিৎ সেনগুপ্ত কবিতা ।। গার্হস্থ্য ।। বিবেকানন্দ নস্কর একগুচ্ছ বিজয়ের কবিতা ।। বিচিত্র কুমার গল্প ।। পোষ্য ভূত ।। সমীর কুমার দত্ত কবিতা ।। আশপাশ ।। প্রতীক মিত্র কবিতা ।। মেঘ ।। তীর্থঙ্কর সুমিত অণুগল্প ।। বংশীবদনের সুখদুঃখ ।। দীনেশ সরকার কবিতা ।। গভীর রাত ।। সুনন্দ মন্ডল তিনটি কবিতা ।। সুশান্ত সেন ভালোবাসার বাসা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত অণুগল্প ।। শিক্ষকের সম্মান ।। মিঠুন মুখার্জী কবিতা।। প্রশ্ন ।। জীবন সরখেল কবিতা ।।ক্ষরিত সে পথ ।। রহিত ঘোষাল কবিতা ।। রক্ত দিয়ে কেনা ।। মুহাম্মদ মুকুল মিয়া কবিতা ।। কংক্রিট ।। আলাপন রায় চৌধুরী ছড়া ।। শীত নেমেছে ।। রঞ্জন কুমার মণ্ডল কবিতা ।। কিছু শব্দ ।। সমীর কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় কবিতা ।। শীতের নগ্নতা ।। রানা জামান কবিতা ।। পথ চলা ।। পাভেল আমান বেদ পু...

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ৮৬তম সংখ্যা ।। বৈশাখ ১৪৩২ এপ্রিল ২০২৫

সম্পাদকীয় এই সংখ্যাটি বাংলা নববর্ষ বিষয়ক সংখ্যা। নৱৰ্ষকেন্দ্রিক বহু তথ্যপূর্ণ লেখা এই সংখ্যাটিকে সমৃদ্ধ করেছে। বাংলা নববর্ষ উদযাপনের ইতিহাস, রীতিনীতি, উৎসব, পার্বন, লোকাচার, রূপান্তর বহুবিধ বিষয় প্রকাশিত হয়েছে এই সংখ্যার লেখাগুলিতে। এই সংখ্যার বাছাই কিছু লেখার সঙ্গে আগামীতে আরও কিছু লেখা সংযুক্ত করে বাংলা নববর্ষ বিষয়ক একটি মুদ্রিত সংখ্যা প্রকাশ করার ইচ্ছে রইল।  সকলকে নববর্ষের আন্তরিক শুভকামনা জানাই। উৎসবে আনন্দে থাকুন, হানাহানিতে নয়। ধর্ম-ব্যবসায়ীদের চক্রান্ত ব্যর্থ করে সহনাগরিকের পাশে থাকুন। মনে রাখুন, ধর্মকে মানুষই সৃষ্টি করেছে। ঈশ্বর আল্লা গড ইত্যাদির জন্মদাতা মানুষই। মানুষকে ভালোবাসুন। মানুষের পাশে থাকুন।  নিরাশাহরণ নস্কর  সম্পাদক, নবপ্রভাত।  সূচিপত্র প্রবন্ধ-নিবন্ধ-স্মৃতিকথা পয়লা বৈশাখ ।। সিদ্ধার্থ সিংহ নববর্ষকেন্দ্রিক মেলা, পার্বন, উত্সব, লোকাচার ।। সবিতা রায় বিশ্বাস নববর্ষ আবাহন ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে এবং বিভিন্ন দেশে ।। তুষার ভট্টাচার্য নববর্ষের সেকাল ও একাল ।। হিমাদ্রি শেখর দাস নববর্ষের হাল-হকিকৎ ।। শংকর ব্রহ্ম বোশেখি বাঙালি নাকি পোশাকি বাঙালি? ।। দিব্যেন্দু...

প্রবন্ধ ।। বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় ।। মাখনলাল প্রধান

বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় মাখনলাল প্রধান বাংলার শিল্প-সংস্কৃতির জগতে যাত্রা শিল্প তথা নাট‍্যশিল্পে মড়ক নেমে এসেছে । যাত্রা শিল্পের মড়কে শুধু কোভিড নয় তার বহুপূর্ব থেকেই অর্থনৈতিক বিপর্যয় , শিক্ষাক্ষেত্রে বন্ধ‍্যাত্ব এবং গ্ৰাম বাংলার পটপরিবর্তন শেষ পেরেক ঠুকে দিয়েছে। যাত্রা-শিল্পের লীলাভূমি ছিল গ্ৰাম বাংলা। গ্ৰামে প্রচুর যাত্রাপালা হত নানা উৎসবকে কেন্দ্র করে । জমিদারি ব‍্যবস্থা লুপ্ত হওয়ার পর গ্ৰামীণ মানুষের উদ‍্যোগে শীতলা পূজা,  কালীপূজা, দুর্গাপূজা, কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা, চড়ক ইত‍্যাদিকে উপলক্ষ‍্য করে যাত্রাপালার আয়োজন না হলে কেমন যেন ম‍্যাড়ম‍্যাড়ে লাগতো। সেই সঙ্গে কলকাতার বড়বড় কোম্পানির যাত্রাপালা ঘটা করে, টিকিট সেল করে হত মাঠে। খুব বড় মাপের খেলার মাঠ যেখানে ছিল না সেখানে ধানের মাঠ নেওয়া হত ‌। ত্রিশ-চল্লিশ হাজার মানুষ দেখতে আসত। স্পেশাল বাস পাঠাত  আয়োজক কর্তৃপক্ষ। বিনা ভাড়ায় বাসে যাতায়াত করত যাত্রার দর্শকেরা। কিন্তু বিকল্প ধানচাষ শুরু হলে জমিগুলো সময় মতো ফাঁকা পাওয়া গেল না । প্রথম দিকে ব‍্যাপকহারে ধান শুরু না হওয়ায় খুব একটা অসুবিধা হত না। বহুক্ষেত্রে  ধান কা...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। নবপ্রভাত ৮৫ ।। চৈত্র ১৪৩১ মার্চ ২০২৫

  সূচিপত্র নিবন্ধ ।। মরিয়ম মির্জাখানি: এক অনন্য গণিতসূর্য ।। ... নিবন্ধ ।। নারী দিবসে যা ভাবা উচিত ।। বিশ্বনাথ পাল প্রবন্ধ ।। প্রাচীনকাল থেকে নারীরা অবহেলিত, বঞ্চিত,... নিবন্ধ ।। আমার চোখে আদর্শ নারী ।। জয়শ্রী বন্দ্... ফিচার।। এই মুহূর্তে বাংলা সাহিত্যে নারীদের লেখালেখ... আফ্রিকার লোককথা ।। করোটিকে বিয়ে করা অবাধ্য মেয়েটি ... ছোটগল্প ।। মানবী ।। ভুবনেশ্বর মন্ডল নিবন্ধ ।। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে অন্যতম নারী মু... নিবন্ধ ।। প্রিয় মহিলা সাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবী ।। ... গল্প ।। উই ওয়ান্ট জাস্টিস ।। রবীন বসু প্রবন্ধ ।। নিপীড়িতা ।। শ্যামল হুদাতী ফিচার ।। রমণী রতন ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত প্রবন্ধ ।। নারী সমাজ : তখন-এখন ।। তপন মাইতি নিবন্ধ ।। বহমান কালের ধারায় নারী ।। দীপক পাল গল্প ।। আমার দুর্গা ।। অঞ্জনা গোড়িয়া (সাউ) গল্প ।। যোগ্য জবাব ।। সমীর কুমার দত্ত ছোটগল্প ।। আমি দুর্গাকে দেখেছি।। চন্দন দাশগুপ্ত গল্প ।। সম্পর্ক ।। গৌতম সমাজদার কবিতা।। নারী মানে ।। গোবিন্দ মোদক কবিতা।। নারী ।। সমর আচার্য্য ছড়া ।। নারী অসামান্যা ।। সৌমিত্র মজুমদার কবিতা ।। নারী দিবসে ।। বিবেকানন্দ নস্কর কবিতা ।। না...

প্রবন্ধ ।। ভিনগ্রহীদের সন্ধানে ।। শ্যামল হুদাতী

ভিনগ্রহীদের সন্ধানে  শ্যামল হুদাতী  ইতিহাসের শুরু থেকে বারবার মানুষকে একটা প্রশ্ন কুঁড়ে কুঁড়ে খায় – এই মহাবিশ্বে আমরা কি একা? পৃথিবীর মতো আরও গ্রহ রয়েছে, যেখানে মানুষের মতো বুদ্ধিমান প্রাণীরা বাস করে – এই সম্ভাবনা বরাবর মানুষকে মুগ্ধ করেছে। আমাদের প্রত্যেকের জীবনের কখনও না কখনও এই ভাবনা এসেছে। দীর্ঘ কয়েক দশকের গবেষণার পরও, এই বিষয়ে কোনও নিশ্চয়তা দিতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। জেমস ওয়েব মহাকাশ টেলিস্কোপ, বহু দূরের এমন কিছু গ্রহের সন্ধান দিয়েছে, যেগুলিতে প্রাণ থাকতেই পারে। তবে, নিশ্চিত কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে, আমেরিকার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাম্প্রতিক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, ভিনগ্রহীদের খুঁজতে বহু দূরে যাওয়ার কোনও দরকার নেই। তারা এই পৃথিবীতেই মানুষের ছদ্মবেশে মানুষের মধ্যেই বসবাস করতে পারে। আমরা ভিনগ্রহীদের যেমন কল্পনা করি, এরা তার থেকে আলাদা। এরা অনেকটাই, দেবদূতদের মতো। মানব জগতের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক প্রযুক্তিগত নয়, বরং জাদুকরি। মহাকাশে সৌরজগতের গ্রহ পৃথিবী ছাড়া অন্য কোথায় প্রাণ রয়েছে কি না তা নিয়ে চলছে বিস্তর গবেষণা। একই সঙ্গে পৃথিবী ছাড়া অন্য কোনো গ্রহে মানুষ বসবাস ক...

মাসের বাছাই

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬

  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠালে  অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে হলে ভালো। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # ...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯২তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩২ অক্টোবর ২০২৫

—: সম্পাদকীয় দপ্তর থেকে :— এই সংখ্যার জন্য লেখা এসেছিল প্রায় ১৮০টা। কিন্তু গুণগত মানে দুর্বল লেখার সংখ্যা বহু। আমরা নবপ্রভাতে নতুনদের কথা ভেবে বেশ কিছু দুর্বল লেখাও রাখি। কিন্তু সবসময় একই লোকের দুর্বল লেখা প্রকাশ করা অনুচিত বলে মনে করি। শেষ পর্যন্ত ৯৯ জনের লেখা রাখা গেল। যাদের লেখা প্রকাশিত হল না, তারা লেখাগুলি অন্য যেখানে খুশি পাঠাতে পারেন। বিশেষ কারণে এই সংখ্যার মুদ্রিত সংস্করণ প্রকাশিত হচ্ছে না। আমরা দুঃখিত। তবে মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি শীঘ্রই আসছে। সঙ্গে থাকুন। সকলকে উৎসবমুখর বর্ণময় শুভেচ্ছাসহ— —নিরাশাহরণ নস্কর, সম্পাদক, নবপ্রভাত। অনুরোধ : প্রকাশিত লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন, ছবি/স্ক্রীনশট নয়।  == সূচিপত্র == পড়া-লেখার ইতিহাস অনুসন্ধান।। তপন তরফদার উৎসব : মানুষের চিরন্তন আত্মপ্রকাশ।। কৃশানু ব্যানার্জি বাংলা : সভ্যতা ও সংস্কৃতির জন্মভূমি।। শ্যামল হুদাতী সমুদ্র আর অস্তিত্ব ।। সুব্রত চৌধুরী রাজা ছিলেন জুবিন গর্গ ।। গঙ্গা 'অনু'   আদ্যাশক্তি মহামায়ার বাংলা বারো মাসের বারো রূপ ।। অর্হণ জানা মেধাদাদুর আসর ।। রণেশ রায় বৈজ্ঞানিক মা...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯৩তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩২ নভেম্বর ২০২৫

সূচিপত্র বস্তু, চেতনা এবং কবি ।। সজল চক্রবর্তী দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত ।। রণেশ রায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট ও সন্নিহিত অঞ্চলের কথ্য শব্দ ।। অরবিন্দ পুরকাইত চাঁদে জীবন ।। শমীক সমাদ্দার অসমাপ্তি ।। মহুয়া হুই গ্যালাক্সির শব্দে ।। জাসমিনা খাতুন তিনটি কবিতা ।। দিবাকর সেন অপূর্ণতার শেষ অধ্যায় ।। সুপ্রিয় সাহা হাফ ডজন ছড়া ।। স্বপনকুমার পাহাড়ী স্বাপ্নিক অমলের ঘুৃম ।। সঞ্জয় দেওয়ান দুটি কবিতা ।। সৌমিত্র উপাধ্যায় পথ চলতি ✍️পার্থ প্রতিম দাস হেমন্তের বিষাদ ছুঁয়ে ।। শক্তিপদ পাঠক রাই আর বাবা ।। অদিতি চ্যাটার্জি স্থিতিশীল ।। রঞ্জিত মুখোপাধ্যায় হৃদয়ের শূন্য কোড ।। লিপিকা পিঙ্কি দে অমানিশা ।। সৌভিক মুখার্জী দৃষ্টিগত ।। শামীম নওরোজ জ্যান্ত ভূতের গপ্পো ।। পার্থ সারথি চট্টোপাধ্যায় ধুতরা ফুলের ঘ্রাণ ।। মজনু মিয়া তারা খসার আলোয় ।। তীর্থঙ্কর সুমিত উত্তরণে অন্তরায় ।। সমীর কুমার দত্ত প্রেম মুদ্রা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ধারা ।। লালন চাঁদ অন্যের ব্যথায় ব্যথি ।। জগদীশ মণ্ডল গর্ভ ।। শাশ্বত বোস ভ্রমণ বিষয়ক স্মৃতিকথা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত শাপে বর ।। সাইফুল ইসলাম রবিবার ।। সঙ্ঘমিত্রা দাস দুটি ...

দিদৃক্ষা ।। রাজেশ কে. চক্রবর্ত্তী

  দিদৃক্ষা রাজেশ কে. চক্রবর্ত্তী 'কাল একবার দেখা হতে পারে?' দশমীর দুপুরে খাটে আধশোয়া হয়ে নিজের ফোনটা ঘাঁটছিল দেবমাল্য; হোয়াট্‌সঅ্যাপের সার্চ বক্সে  র‍্যান্ডম সিক্যুয়েন্সে ক'খানা ডিজিট ইনপুট করতেই বিস্মৃতির অতল থেকে অপ্রত্যাশিতভাবে যে নামটা স্ক্রিনের সারফেসে ভেসে উঠল, এককালে দেবমাল্যের প্রায়োরিটি লিস্টে সবথেকে ওপরে পিন্‌ করা থাকতো এই অ্যাকাউন্টটা। 'অহনা দাশগুপ্ত'—গ্রেয়েড-আউট ডিপিটার ডানদিকে, নামটার তলায় নিস্প্রভ হরফে ভেসে থাকা ওর এই লাস্ট মেসেজটা বেশ ক'বছরের পুরনো, কিন্তু দেবমাল্যর স্মৃতির প্যান্ডোরা বাক্সটি উলটে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল। আরেকবার আপাদমস্তক শিহরিত হয় সে। প্রোফাইলটা খুলে ওপরে-নীচে স্ক্রল্‌ করে দেখে, ওদের পুরনো চ্যাটগুলো তেমনি আড়ষ্ট হয়ে পড়ে আছে, ওর মেসেজগুলোর পাশে ডাবল টিকগুলো এখনও জাজ্বল্যমান সবুজে ছোপানো, যেন এইমাত্র 'সিন্‌' করে রেখেছে অহনা! যেন এখুনি আবার হাত বোলালেই অহনা এসে খানিকটা রাগত ভঙ্গিতে চ্যাট করতে লেগে যাবে। দেবমাল্যের বুক ছাপিয়ে একটা নীরব দীর্ঘশ্বাস উঠে আসে! ছুটির এই আমেজটা লক্ষ্মীপুজো অব্দি গড়াবে—অফিস খুললেই তো আবার দমফাটা ব্য...

গুচ্ছকবিতা || শিশির আজম

  গুচ্ছকবিতা || শিশির আজম হুইসেল (মুরাকামি থেকে অনুপ্রাণিত) ♦ 'গভীর রাতে একটা হুইসেল কতটা গভীর হতে পারে তুমি কল্পনাও করতে পারো না,' ছেলেটা বললো, 'আশ্চর্য ঐ হুইসেলের মতো আমি ভালবাসি তোমাকে।' কিন্তু গভীর রাতে অন্ধকারে কখনও তো ঘুম ভেঙে যায়নি মেয়েটার, কখনও ও বিচ্ছিন্ন আর একা হয়ে যায়নি। ও কীভাবে অনুভব করবে গভীর রাতে ট্রেনের হুইসেল কতটা গভীর! নিউজ এজেন্সি ♦ একসময় আমরা খবর শুনতাম এখন দেখি স্বীকার করতে হবে খবর শোনার চেয়ে দেখার আনন্দ বেশি আলাদা উত্তেজনা নিউজ এজেন্সিগুলো এব্যাপারে তৎপর আর প্রতিযোগিতাপূর্ণ কোনটা নিউজ সেটা ওরাই ঠিক করে যেটা ওদের দরকার আর সেটাই আমাদের দেখানো হয় ধারাবাহিকভাবে সুচারু জ্যামিতিকতায় বিভিন্ন পদ মিশিয়ে খাওয়ানো হয় নতুন বাস্তবতা নির্মাণে যে বাস্তবতায় জায়গা নেই আমাদের ইতিহাস অন্বেষা স্বাধীনতার সমৃদ্ধি আর স্বাধীনতার কথা বলেই ওরা আমার ক্ষেতখামার পাহাড় আর নদীর দখল নিয়েছে তাহলে টিভিতে যে হাসিখুশি প্রাণবন্ত আমাদেরকে দেখানো হয় ওরা কারা এই প্রশ্ন করো নিজের কাছে আগুন নিয়ে খেলা ♦ আজও পুকুরে ছিপ ফেলে বসবো আমি ধীরে চুপ সূর্য আমার ঘাড়ে শ্বাস ফেলবে সারারাত ঘরের ভেতর ল্যাং...

বিদায়ের স্রোত ।। চয়ন মন্ডল

  বিদায়ের স্রোত চয়ন মন্ডল "বিজয়া দশমী—আনন্দের দিন, কারও কাছে যা হয়ে উঠল চিরন্তন বিদায়।" আজ বিজয়া দশমী। শিউলি ফুলের গন্ধে ভোরটা অন্যরকম। পাড়ার প্যান্ডেলে অদ্ভুত এক কোলাহল—মায়ের বিদায় যে আজ। শঙ্খধ্বনি, ঢাকের বাজনা আর উলুধ্বনিতে গমগম করছে চারদিক। একদিকে মা দুর্গার বিদায়ের বেদনা, অন্যদিকে আনন্দ ও মিলনমেলা। সারা বছরের অপেক্ষা শেষে এই দিনটিতে প্যান্ডেল ভরে উঠেছে মানুষের ভিড়ে। সকালের পূজার্চনা শেষ হতেই শুরু হয়েছে সিঁদুর খেলা। মহিলারা মায়ের প্রতিমাকে সিঁদুর পরিয়ে একে অপরের কপালে, গালে রাঙিয়ে দিচ্ছেন। ঢাকের তালে আর শাঁখ বাজনার আবেশে ভেসে যাচ্ছে পাড়া। শুরু হয়েছে প্রতিমা বিসর্জনের প্রস্তুতি। কিন্তু এসবের মধ্যে নেই অনুরাধা। কেউ তার বা মিনির খোঁজ রাখেনি। মুখার্জিদের দোতলা বাড়ির কোণের ঘরে বসে সে চোখের জল ফেলছে। সবার বাড়িতে আলোর রোশনাই, ভোগের গন্ধ, হাসি—শুধু তাদের ঘরটিতে নিস্তব্ধতা। গতবছর এই দিনেই তো অন্যরকম ছিল সবকিছু। অনুরাধা, সুজয় আর তাদের তিন বছরের মেয়ে মিনি পাড়ার প্যান্ডেলে ঢাকের তালে নেচেছিল, সিঁদুর খেলায় রঙে ভেসেছিল। বিকেলের দিকে প্রতিমা বিসর্জনের মিছিলে শামিল ...

কবিতা ।। অরণ্যকন্যা ।। অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়

  অরণ্যকন্যা অরিন্দম চট্টোপাধ্যায় অরণ্যকন্যার দৃষ্টির ভেতর বিষাদ বিন্দু ফোঁটা ফোঁটা জলের মতো গড়িয়ে যায়, হয়ে যায় কোন নদীপথ দৃষ্টি ভেঙে ভেঙে চলে যায় কোন এক শূন্য পথে অরণ্যকন্যার হৃদয়ের ভেতর ভাঙে যতো বৃক্ষপত্র নতুন পত্র পুষ্পের খোঁজ নেই ঠোঁট জুড়ে সমুদ্রকাঁপন বুদবুদের মতো অস্ফুট হয়ে উচ্চারিত হয় কোন অক্ষর শব্দ আর তাঁর শরীর থেকে ছড়িয়ে যায় হয়ে যায় একটা অদৃশ্য কবিতা...    ================== @ অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়,  বেহালা, কলকাতা -৭০০০৬০,  

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯১তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পাদকীয় দপ্তর থেকে এই সংখ্যায়  'শিক্ষা ও শিক্ষক' বিষয়ক বেশ কিছু লেখার পাশাপাশি রয়েছে বিচিত্র বিষয়ের আরও কিছু লেখা। সব মিলিয়ে সংখ্যাটি আপনাদের সমৃদ্ধ করবে, আপ্লুত করবে — এ বিষয়ে আমরা আশাবাদী। আপনাদের মতামত অবশ্যই জানাবেন। আমরা প্রতীক্ষিত।            আগামী অক্টোবর ২০২৫ সংখ্যা 'উৎসব সংখ্যা' হিসাবে প্রকাশিত হবে। ওয়েব সংখ্যার পাশাপাশি নির্বাচিত লেখাগুলি নিয়ে একটি pdf এবং তার মুদ্রিত সংস্করণও প্রকাশিত হবে। তাই অপ্রকাশিত ভালো লেখা পাঠান। বিশেষ কোনও বিষয় নেই। প্রবন্ধ-নিবন্ধ-ফিচার ২০০০ শব্দ, গল্প ১২০০ শব্দ, অণুগল্প ৫০০ শব্দ, কবিতা-ছড়া ২৪ লাইনের মধ্যে হলে ভালো। ইমেলঃ nabapravatblog@gmail.com           বিস্তারিত বিজ্ঞপ্তি আসবে। সামাজিক মাধ্যমে আমদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন। সময় মতো সব সংবাদ পেয়ে যাবেন।  শারদ উৎসবের দিনগুলি সকলের আনন্দে কাটুক এই কামনা করি। —নিরাশাহরণ নস্কর সম্পাদক: নবপ্রভাত মোঃ ৯৪৩৩৩৯৩৫৫৬ Whatsapp Group:  https://chat.whatsapp.com/ AIpj98JKbloFSpeqMcpr6j Facebook Page:  https://www.facebook.com/ share...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো,  তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) য...

শেষ বিকেলের আলো ।। সৈকত প্রসাদ রায়

  শেষ বিকেলের আলো সৈকত প্রসাদ রায় রানাঘাট শহরের প্রান্তে ছোট্ট এক পাড়া বিশ্বাসপাড়া। সেই পাড়ার পুরোনো ভাঙাচোরা বাড়িটায় থাকেন পুষ্পরাণী ভট্টাচার্য— বয়স পঁয়ষট্টির কোঠায়। সবাই তাকে "পুষ্পদি" বলেই চেনে। একসময় প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতা করতেন, এখন অবসর নিয়েছেন। প্রতিদিন বিকেলে পুষ্পদি বারান্দায় বসে চা খান। ছোট একটা টেবিল, কয়েকটা পুরোনো বই, আর একখানা নীল কাঁচের ফুলদানি — তার নিত্যসঙ্গী। বারান্দার সামনেই একটা গলি, যেখান দিয়ে প্রতিদিনই স্কুল ছুটির পরে বাচ্চারা হইচই করে ছুটে যায়। পুষ্পদির একমাত্র ছেলে অনিরুদ্ধ — কলকাতায় চাকরি করে। ছেলেটা আধুনিক, নিজের সংসার আছে, স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ব্যস্ত। বছরে হয়তো একবার আসে, তাও কিছুক্ষণ বসে আবার চলে যায়। পুষ্পদি মুখে কিছু বলেন না, কিন্তু বুকের ভেতরে একটা কষ্ট জমে থাকে। সেই বিকেলটা অন্যরকম ছিল। আকাশে ধুলো, গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা। হঠাৎ পুষ্পদির চোখে পড়ে — রাস্তায় এক কিশোর বসে আছে। বয়স বারো-তেরোর বেশি নয়। মলিন জামা, পায়ে ছেঁড়া চটি। ছেলেটা একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে পুষ্পদির বাড়ির গেটে ঝুলে থাকা পুরোনো নোটিশবোর্ডটার দিকে, যেখানে একসময় লেখা ছিল — "পুষ্পরাণী ভ...