Skip to main content

নাটক ।। উদিপুরের ছোটোরানী ।। নৃপেন্দ্রনাথ মহন্ত


        উদিপুরের ছোটোরানী
   
    নৃপেন্দ্রনাথ মহন্ত

 

 





। প্রথম দৃশ্য ।


উদিপুর রাজ্যের রাজা উদিতনারায়ণ রাতে ছদ্মবেশে নগরভ্রমণে বেরিয়ে একসময়ে পথশ্রমে ক্লান্ত হয়ে  একটা ভাঙা মন্দিরের  চাতালে বসে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন।সঙ্গে শুধু তাঁর দেহরক্ষী।সেও ছদ্মবেশে। পূর্ণিমারাত। সহসা রাজার কানে এল সুমধুর নৃত্যগীতের দূরায়ত ধ্বনি।
রাজাঃ রক্ষী, নাচগানের শব্দ  মনে হচ্ছে। দেখো তো কোথায়?
রক্ষীঃ আজ্ঞে মহারাজ,দেখছি।(রক্ষী বেরিয়ে গিয়ে একটু পরেই ফিরে এসে) আজ্ঞে মহারাজ, কুলিক নদীর ধারে ওই বটগাছটার নীচে কয়েকটি মেয়ে......
রাজাঃ চলো তো দেখি।কিন্তু খুব সাবধান।পা টিপে টিপে যেতে হবে যেন কোনো শব্দ না হয়।চুপিচুপি গাছটার আড়ালে গিয়ে দাঁড়াতে হবে।কাছথেকে ওদের নাচ দেখবো,গান শুনবো।
রক্ষীঃ বুঝেছি মহারাজ,চলুন(উভয়ের প্রস্থান)
।।দ্বিতীয় দৃশ্য।।
[পূর্ণিমারাতে জ্যোৎস্নালোকে একদল তরুণী হাতধরাধরি করে নাচগান করছে]
গানঃ আয় তোরা সহচরী /হাতে হাত ধরিধরি...(রবীন্দ্রসংগীত)
নাচ গানের শেষে  তরুণীরা ইতস্ততভাবে বসে পড়ল।একএকজন একএক কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়লো।যেমন আঁচল দিয়ে কপালের ঘাম মোছা,চুল,বেশবাস ঠিককরা ইত্যাদি। সহসা পূর্ণিমা  উঠে দাঁড়ালো।
পূর্ণিমাঃ অ্যাই,আচার খাবি?
কঙ্কনাঃ  আচার! এই রাতের বেলা এই বিজন ঘাটে আচার কোথায় পাবি?
সুরুচিঃ  আছাড় খাওয়ার কথা বলছিস না তো!
ঈশানীঃ তাই হবে মনে হয়। (পূর্ণিমা ছাড়া সকলের খিলখিল হাসি)
পূর্ণিমা না রে,সত্যি বলছি।আমি লুকিয়ে এনেছি পদ্মপাতায়।খাবি তো বল্।
সুরুচিঃ  তাহলে বের কর হতভাগী।জিভে যে জল
 এসে গেলো।
[পূর্ণিমা পদ্মপাতায় মোড়া আচার বের করে সবাইকে বিলোতে থাকে।]
পূর্ণিমা ঃনে,ধর্।হাত পাত সবাই।ও বাবা,তুই যে আগে থেকেই হাত পেতে বসে আছিস রে কঙ্কনা!(সকলের হাসি)ও কী রে ঈশানী, তোর যে হেলদোল নেই।খাবিনে আচার?
ঈশানী ঃ খাবো না আবার!নিশ্চয়ই খাবো।কিন্তু আচারের নাম শুনলেই সুরুচির মতো আমার জিভদিয়ে টসটস করে জল গড়ায় না।[আবার সকলের একপ্রস্থ হাসি।ঈশানী হাত পেতে বলে,ঃদে।(আচার নেয়)]
সুরুচি ঃ সত্যি রে,আচার খেতে আমার খু-উ-ব ভালো লাগে।
পূর্ণিমা ঃ আচ্ছা,তোরা কেউ বলতে পারবি সারা পৃথিবীতে মানুষের কাছে সবচেয়ে মুখরোচক কী?
সুরুচিঃ ঠিক জানি না।তবে ইলা শীলারা বলে মাংসের স্বাদের নাকি তুলনা নেই।
কঙ্কনাঃআমি তো শুনেছি সুরার স্বাদ নাকি অপূর্ব।
পূর্ণিমা ঃভুল, সবই ভুল।এসব তো কেবল জিভের স্বাদ। জীবনের নয়।প্রেমের স্বাদ ধরায় অতুল।
সুরুচিঃ তুই আবার কবি হলি কবে রে?
পূর্ণিমা ঃ কেন?কবিত্বের কী দেখলি?
সুরুচিঃ ওই যে বললি,(সুর করে)ভুল...সবই ভুল/প্রেমের স্বাদ ধরায় অতুল।
(সকলের হাসি)
কঙ্কণাঃ কী রে,ঈশানী। তোর কি স্বাদবোধ নেই? তুই যে কিছুই বলছিস না?
ঈশানী ঃ বলবো?
সবাই( সমস্বরে)ঃহ্যাঁ,বল্।
ঈশানীঃ  সবচেয়ে সুস্বাদু, সব চেয়ে মুখরোচক হল মিথ্যা কথা।মিথ্যার মতো মুখরোচক কিছু হয় না।
[আড়ালে থাকা রাজা ও তার দেহরক্ষী  হো-হো করে হেসে উঠলেন।সেই হাসির শব্দে ত্রস্তা হরিণীর মতো মেয়েরা যে যেদিকে পারে ছুটে পালালো।তাদের পায়ের নূপুরধ্বনি মিলিয়ে যেতে না যেতেই রাজা ও দেহরক্ষী হাসতে হাসতে মঞ্চে প্রবেশ করবেন]
দেহরক্ষী ঃ প্রভু,ওরা যে সব পালিয়ে গেলো!
রাজাঃ  চলো,আমরাও পালাই। না,না।তুমি এক কাজ করো।তুমি ছুটে গিয়ে ওদের পিছু নাও।দেখে এসো ওরা কোথায় থাকে।যাও।
রক্ষীঃ  আর আপনি, প্রভু?
রাজাঃ   আমি রাজপ্রাসাদে ফিরে যাচ্ছি।
রক্ষীঃ   আপনি একা যাবেন,প্রভু?
রাজাঃ   যা বলছি তাই করো।
রক্ষীঃ   যথা আজ্ঞা, প্রভু।কিন্তু খুব সাবধানে যাবেন,প্রভু।আমি চললাম।।[দুজন দুদিক দিয়ে বেরিয়ে যায়।]
 ,।।  তৃতীয় দৃশ্য।।
      ------------------
[রাজা সিংহাসনে আসীন।পাত্রমিত্ররা উপস্থিত। ]
মন্ত্রী ঃরাজামশাইকে খুব চিন্তিত দেখাচ্ছে।কী হয়েছে প্রভু?
বিদূষক ঃ হ্যাঁ,ঠিক।মেঘে ঢাকা তারার মতো দেখাচ্ছে মহারাজকে। এই সময় গানবাজনা খুব কাজে দেয়। ডাকবো মহারাজ? ডাকি?
রাজাঃ না।সে সবের প্রয়োজন নেই।তুমি বরং আমার প্রধান দেহরক্ষীকে ডেকে আনো।(রক্ষীর প্রস্থান)
মন্ত্রী ঃতাই তো!মহারাজের প্রধান দেহরক্ষীকে তো আজ সকাল থেকে দেখছি নে।এমনটা তো হওয়ার কথা নয়!
বিদূষক ঃআমরা এসে গেছি মন্ত্রীমশাই!(রক্ষীসহপ্রবেশ)
রাজা(সাগ্রহে)ঃএসো,রক্ষী,এসো।কোনো খবর পেলে?
রক্ষী  ঃ পেয়েছি মহারাজ।এখানেই বলবো?
রাজা ঃসকলে একটু বাইরে যান।মন্ত্রণাকক্ষের দরজা বন্ধ করে দিন।(রক্ষী ব্যতীত সকলের প্রস্থান)
রাজা ঃবলো।
রক্ষী ঃমহারাজ, আমি প্রথমে যে মেয়েটির পরিচয় পাই সে এক কণ্ঠিধারী বৈষ্ণবের মেয়ে।বড় রাস্তার ধারে যে অাখরাটি আছে সেখানেই সে থাকে। সেই আখরার কাছাকাছি  বাড়ি এক শুদ্ধাচারী ব্রাহ্মণের।দ্বিতীয় মেয়েটি তাঁর একমাত্র সন্তান।
রাজা ঃআর বাকি দুজন?
রক্ষী ঃএকজন বাউলের মেয়ে, অন্যজন এক কৃষক কন্যা।চার জনের খুব ভাব।
রাজা ঃমন্ত্রীকে ডেকে আনো।(রক্ষী বাইরে গিয়ে মন্ত্রীকে ডেকে আনে)
রাজা ঃমন্ত্রীমশাই,আপনাকে খুব গোপনে একটা কাজ করতে হবে।
রাজা ঃআদেশ করুন রাজা।
রাজা ঃরক্ষী আপনাকে চারটি মেয়ের বিবরণ দেবে।আপনি তাদের বাবামাকে বুঝিয়ে মেয়ে চারটিকে রাজবাড়িতে পরশু বিকেলে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করবেন।পারবেন তো।
মন্ত্রী  ঃ আপনি আদেশ করলে পারতেই হবে মহারাজ।
রাজা ঃআপনি চারজনের জন্য চারটি সুসজ্জিত পাল্কির ব্যবস্থা করবেন।
রক্ষী ঃ চারটি পাল্কির দরকার নেই মহারাজ,দুটিই যথেষ্ট। ওদের তো কাছাকাছি বাড়ি।
রাজা ঃ না,ওরা পৃথক পৃথক পাল্কিতে আসবে।সসম্মানে ওদের নিয়ে আসবেন।মনে রাখবেন ওদের ধরে আনতে নয়,বরণ করে আনতে যাচ্ছেন।
মন্ত্রী ঃবুঝেছি মহারাজ।আর বলতে হবে না।আমি সমস্ত ব্যবস্থা করছি।
দৃশ্যান্তর
--------------
।।চতুর্থ দৃশ্য।।
*************
*[পাল্কিবাহকের বিচিত্র  কণ্ঠধ্বনি: হুম্ নারে...হুম্ না..হুমনা.. আ.. প্রথমে অষ্পষ্ট, পরে  তীব্র  থেকে তীব্রতর, পরে ধীরে ধীরে মিলিয়ে যাবে।মঞ্চে প্রবেশ করবেন রাজা।আসনে উপবিষ্ট হলে রক্ষীর প্রবেশ।]
রক্ষী ঃ প্রভু,চারটি পাল্কিতে চার কন্যা  উপস্থিত।
রাজা ঃ ও, ওরা এসে গেছে! কোথায় ওরা?
রক্ষী ঃ মন্ত্রীমশাইয়ের নির্দেশ মতো ওদের বিশ্রামকক্ষে বসানো হয়েছে।
রাজা ঃ ওদের জন্য জলযোগের ব্যবস্থা করো।
রক্ষী ঃ তা-ও করা হয়েছে প্রভু।
রাজা ঃ বেশ! তাহলে ওদের একে একে পাঠিয়ে দাও।একজন ফিরে গেলে তবেই অন্যজনকে পাঠাবে। মনে থাকবে?
রক্ষী ঃ থাকবে প্রভু।বিলক্ষণ থাকবে।
রাজা ঃতাহলে যাও,আর দেরি কোরো না।(রক্ষীর
 প্রস্থান)
[রাজা কিছু একটা চিন্তা করতে করতে পদচারণা করতে থাকবেন।অবশেষে আসনে বসতে না বসতেই
একটি মিষ্টিকণ্ঠ] ঃআসবো?
রাজা ঃএসো মা,এসো।বোসো ওই চেয়ারটায়।
সুরুচি ঃ বসার দরকার নেই,মহারাজ। আপনি কী বলতে চান বলুন।
রাজা ঃভয় পেয়ো না,মা। আমার কিছু জিজ্ঞাস্য আছে তা জানা হয়ে গেলেই তোমাকে সসম্মানে তোমার বাড়ি পাঠিয়ে দেবো।
সুরুচি  ঃ বলুন,কী জানতে চান।
রাজা ঃতোমার নাম কী মা?
সুরুচি  ঃ আমার নাম সুরুচি।
রাজা ঃ বাঃ! সুন্দর নাম।কিন্তু শুধুই সুরুচি?পুরো নাম বলো।
সুরুচি ঃ সুরুচি অধিকারী।
রাজা ঃ তা পরশু রাতে সখীদের সাথে কী বলাবলি করছিলে?
সুরুচি(ভীতকণ্ঠে)ঃকোথায়? কখন?
রাজা ঃ নগরের শেষপ্রান্তে,কুলিক নদীর ধারে,বুড়ো বটতলায়।নাচগানের শেষে আচার খেতে খেতে।মনে পড়ছে?
সুরুচি ঃ আপনার নামে কিছু বলিনি মহারাজ।সত্যি, বিশ্বাস করুন।
রাজা ঃআমার নামে কেন কারে নামেই তুমি কিছু বলো নি--সে আমি জানি।কী বলেছিলে শুধু সেটাই জানতে চাইছি।
সুরুচি ঃ(দ্বিধান্বিত) না---মানে--বলতে লজ্জা করছে।
রাজা ঃ লজ্জা পাওয়ার মতো কিছু বলেছিলে কি? নিশ্চয়ই না।কী বলো?
সুরুচি  ঃ (হেসে)স্বাদের বিষয়ে কথা হচ্ছিলো মহরাজ।আমি বলেছিলাম,..
রাজা ঃ থামলে কেন?বলো....
সুরুচি ঃ মাংসের স্বাদ নাকি সব চেয়ে  ভালো।
রাজা ঃতুমি তো এক পরম বৈষ্ণবের মেয়ে।তোমরা কি মাংস খাও?
সুরুচি  ঃরাধে,রাধে। মাংস খাওয়া তো দূরের কথা,মাংস স্পর্শ করলেও আমাদের স্নান করতে হয়।
রাজা ঃ তাহলে মাংসের স্বাদ তুমি জানলে কী করে? কেনই বা বললে, মাংসের স্বাদ সবচেয়ে ভালো?
সুরুচি ঃআমাদের পাড়ায় এক মাংসের দোকান আছে।সেখানে প্রায় প্রতিদিন  মাংস কেনার জন্য লোকে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে।খুব সুস্বাদু না হলে মাংসের এত চাহিদা হবে কেন মহারাজ? তাছাড়া..
রাজা ঃ তাছাড়া ---তাছাড়া কী?
সুরুচি ঃ মানুষ মাংস খায়।তার হাড়হাড্ডি খায় কুকুরে।মানুষ যে অংশ ফেলে দেয় তা কাক এসে নিয়ে যায়।যা পড়ে থাকে তা নিয়ে যায় পিঁপড়ে।তাই আমার মনে হয়েছে মাংস নিশ্চয়ই খুব সুস্বাদু।
রাজা(হেসে)ঃতোমার কথায় যুক্তি আছে।সত্যি মা,মাংস খুবই সুস্বাদু। (উচ্চকণ্ঠে) রক্ষী-ই-ই।
রক্ষী(প্রবেশ)ঃ আজ্ঞা করুন প্রভু।
রাজা ঃএই মেয়েটিকে মিষ্টান্ন, বস্ত্র, ও একটি স্বর্ণমুদ্রা দিয়ে সসম্মানে গৃহে পৌঁছে দেবার ব্যবস্থা করো। যাও মা তুমি।অন্য একজনকে পাঠিয়ে দাও।
[রাজা পেছন ফিরে কিছু একটা ভাবছিলেন। সহসা নারীকণ্ঠ]
কঙ্কনা  ঃ মহারাজের জয় হোক।
রাজা ঃ কী নাম মা তোমার?
কঙ্কণা ঃ কঙ্কণা ভট্টাচার্য।
রাজা ঃ ও,তুমি সেই পুরুতঠাকুরের মেয়ে?
কঙ্কণা ঃআজ্ঞে  হ্যাঁ।
রাজা ঃপরশু রাতে আচার খেতে খেতে সখীদের কী বলেছিলেে?
কঙ্কণা ঃনা মহারাজ,আমি কিছু বলি নি।
রাজা ঃ তুমি পুরুতঠাকুরের মেয়ে, মিথ্যা বলা তোমাকে মানায় না।সত্যি করে বলো,কী বলেছিলে।
কঙ্কণা ঃঈশ্বরের দিব্যি,আপনার সম্বন্ধে কিছু বলি নি।
রাজা ঃস্বাদের সম্বন্ধে কী বলেছিলে?
কঙ্কণা ঃস্বাদের সম্বন্ধে!ও,সে তো একটা কথার কথা।
রাজা ঃকী কথা?
কঙ্কণা ঃ বলেছিলাম,সুরা খুবই সুস্বাদু।
রাজা ঃ তুমি কি সুরা পান করো?
কঙ্কণা ঃছি,ছি,মহারাজ,এ কী বলছেন? আমি পুরুত ঠাকুরের মেয়ে ; নিম্নবর্ণের মেয়েদের মতো সুরাপান করবো?
রাজা ঃতাহলে বললে কেন যে সুরা খুবই সুস্বাদু?
কঙ্কণা ঃএকটা ভাটিখানার পাশ দিয়ে রোজ আমাদের যাতায়ত করতে হয়।প্রায়ই দেখি,ইতরভদ্র অনেকেই সেখানে বসে মদ্যপান করে।ও পাড়ার সুরেন দত্ত,যার একছেলে কাউন্সিলার, প্রায়ই ওখানে যান,টলতে টলতে ফেরেন। একদিন তো নর্দমায় পড়ে গিয়ে কী অবস্থা!  ভাবলাম,আর হয়তো এমনটি করবেন না।ওমা, পরদিনই আবার....আমাদের পাশের বাড়ির হ্যাবলাকাকু তো মদ খেয়ে রাজা বনে যান। তাঁর মনে কী ফুর্তি! টলতে টলতে গান ধরেন।
রাজা ঃগান! মাতলামির গান! সে কেমন শুনি?
কঙ্কণা ঃগেয়ে শোনাবো?
রাজা ঃ দুকলি গাও তো শুনি।
কঙ্কণা ঃ(গান)
তোরা যে যা বলিস ভাই
আমার বাংলা মালই চাই।
সে যে হাওয়ায় দোলায়,বাক্য জড়ায়
যায় না তারে ছাড়া
সে যে পেটে গেলে উঠবে ঠেলে
দৃষ্টি ছন্নছাড়া
আমি ছুটবো পিছে যেথায় আছে
চোলাই মদের ঠাঁই।
আমি খুশি মনে  সংগোপনে ঢুকুস ঢুকুস খাই
তোরা যে যা বলিস ভাই.......
(গান শেষে রাজা হো হো করে হেসে ওঠেন)
রাজা ঃ রক্ষী!(রক্ষীর প্রবেশ) একেও বস্ত্র, মিষ্টান্ন  ও স্বর্ণমুদ্রা দিয়ে সসম্মানে বাড়ি পাঠাবার ব্যবস্থা করো।
রক্ষী ঃ যথা আজ্ঞা মহারাজ। আসুন মা।(কঙ্কণা সহ প্রস্থান)
রাজা ঃ তাহলে কে, কে বললো  কথাটা?
[সহসা পদশব্দে ফিরে দেখেন,অন্য একটি মেয়ে দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে রয়েছে]
পূর্ণিমা ঃপ্রণাম মহারাজ।
রাজা ঃকী নাম মা তোমার?
পূর্ণিমা ঃ পূর্ণিমা দাস।
রাজা ঃ পরশুরাতে সখীদের সঙ্গে আচার খেতে খেতে কী বলেছিলে?
পূর্ণিমা ঃ আপনার সম্বন্ধে কিছু বলি নি মহারাজ, বিশ্বাস করুন।রাধাগোবিন্দের দিব্যি।
রাজা ঃ সে আমি জানি পূর্ণিমা। কিন্তু স্বাদ সম্পর্কে কিছু একটা বলেছিলে।বলো নি?
পূর্ণিমা ঃ হ্যাঁ,বলেছিলাম।
রাজা ঃকী বলেছিলে?
পূর্ণিমা ঃ উঁ....উঁ...হ্যা মনে পড়েছে।বলেছিলাম,প্রেমের স্বাদ ধরায় অতুল।
রাজা ঃতুমি তো খুব কচি মেয়ে গো,প্রেমের তুমি কী বোঝো?
পূর্ণিমা ঃ আমি বাউলের মেয়ে।মাঝেমাঝে বাবার সঙ্গে গলা মিলিয়ে আমাকেও কৃষ্ণপ্রেমের গান গাইতে হয়।
রাজা ঃ তুমি গান জানো?একটু গাও তো শুনি।
পূর্ণিমা ঃএখানে দোতারা, খমক কিছু নেই।তবু আপনি যখন বলছেন দুকলি গেয়ে শোনাচ্ছি।
।।গান।।প্রেম করো ভাই,পীরিত কোরো না.....
রাজা ঃ বাঃ! তোমার গানের গলা ভারি মিষ্টি। খুব ভালো লাগলো।রক্ষী....
রক্ষী ঃ আজ্ঞা করুন প্রভু।
রাজা ঃএকেও উপঢৌকনাদি দিয়ে গৃহে পাঠাবার ব্যবস্থা করো।
রক্ষী।।এসো গো বাউল মেয়ে।
(পূর্ণিমা সহ প্রস্থান)
[রাজা  শান্তভাবে সিংহাসনে বসে রইলেন।কৃষককন্যা ঈশানীর প্রবেশ।]
ঈশানী ঃআমাকে কেন ধরে এনেছেন রাজামশাই?
রাজা ঃ এ কী বলছো!ধরে আনা হয়নি তো।কেউ কি তোমার অসম্মান করেছে?
ঈশানী ঃ তা করে নি।কিন্তু রাজামশাই,সামান্য কৃষককন্যা আমি।আপনার অনুগ্রহে সুসজ্জিত পাল্কিতে চড়ার সুযোগ পেয়েছি। এখন কি শূলে চড়াবেন?
রাজা ঃতোমার কথায় বিনয়ের ছিটেফোঁটাও নেই।তবে তুমি যে বাকপটু তা স্বীকার করতেই হবে।
ঈশানী ঃধন্যবাদ রাজামশাই।এখন বলুন, আমার উপর আপনার কৃপাদৃষ্টির কারণ?
রাজা ঃ তুমি তো দেখছি আমার উপর রুষ্ট হয়েই আছো।তোমাকে কীকরে বোঝাই যে তোমাদের ডাকার পেছনে আমার কোনো বদমতলব নেই!
ঈশানী ঃ তো?
রাজা ঃ আমি একটা কথা জানার জন্যই তোমাদের ডেকেছি।
ঈশানী ঃ কী কথা?
রাজা ঃপরশু রাতে নদীপারে সখীদের সঙ্গে আচার খেতে খেতে কী বলেছিলে?
ঈশানী  ঃ সখীদের সঙ্গে তো অনেক কথাই বলেছিলাম।আপনি ঠিক কী জানতে চাইছেন বলুন তো?
রাজা ঃস্বাদের বিষয়ে কী বলেছিলে?
ঈশানী ঃ যা সত্যি তাই বলেছিলাম।
রাজা ঃ সত্যিটা কী?
ঈশানী ঃ মিথ্যার মতো মুখরোচক আর কিছু নেই।
রাজা ঃ অর্থাৎ মিথ্যা কথা বলে মানুষ খুবই তৃপ্তি পায়, এই তো?কেন তোমার এমনটা মনে হল বলো তো!
ঈশানী ঃ তৃপ্তি যদি না-ই পাবে তা হলে মানুষ  অহরহ মিথ্যাকথা বলে কেন?
রাজা ঃভুল,ভুল।সবাই মিথ্যা কথা বলে না।আমি তো কখনও মিথ্যে  বলেছি বলে মনে পড়ে না। আসলে আমি কখনই মিথ্যে  বলি না।
ঈশানী ঃ এইমাত্র তো বললেন।
রাজা ঃএইমাত্র  বললাম! কী বললাম?
ঈশানী ঃ আমি মিথ্যা বলি না--এর চেয়ে বড় মিথ্যা আর হয়না রাজামশাই।
রাজা ঃ তোমার স্পর্ধা তো কম নয়! তুমি রাজাকে মিথ্যাবাদী বলো!প্রমাণ করতে পারবে যে সবাই মিথ্যা কথা বলে,রাজাও মিথ্যাবাদী?
ঈশানী ঃ আমাকে দুলাখটাকা আর মাস তিনেক সময় দিন।আমি ঠিক প্রমাণ করে দেবো।
রাজা(সকৌতুকে)ঃঅাচ্ছা! এখনও ভেবে দেখো, পারবে তো প্রমাণ করতে?
ঈশানী ঃ পারবো,অবশ্যই পারবো।
রাজা ঃ রক্ষী!
রক্ষী ঃ আদেশ করুন প্রভু।
রাজা ঃ মহামন্ত্রীকে বলো  এই মেয়েটিকে দুলাখ টাকা দিয়ে সসম্মানে বাড়িতে রেখে আসতে।
রক্ষী ঃ যথা আজ্ঞা প্রভু।
রাজা ঃকিন্তু  মনে রেখো সুভদ্রে..
ঈশানী ঃ আমার নাম ঈশানী  রাজন।ঈশানী রাজবংশী।
রাজা ঃ কিন্তু মনে রেখো ঈশানী, প্রমাণ করতে যদি না পারো তাহলে রাজাকে মিথ্যাবাদী বলার অপরাধে তোমাকে কঠিন শাস্তিভোগ  করতে হবে।
ঈশানী ঃ যদি প্রমাণ করতে না পারি তাহলে আপনার দেওয়া যে কোনো শাস্তি আমি মাথা পেতে নেবো রাজামশাই।
রাজা ঃ তথাস্তু। যাও।
।।পঞ্চম দৃশ্য।।
 +++++++++
[রাজা সিংহাসনে আসীন।পাত্রমিত্ররাও উপস্থিত]
মন্ত্রী ঃ রাজা মশাইকে কেমন বিমর্ষ মনে হচ্ছে।শরীর ঠিক আছে তো,রাজামশাই? নাকি কিছু ভাবছেন?
রাজা ঃশরীর ঠিক আছে,মন্ত্রীমশাই।তবে...
মন্ত্রী ঃ তবে কী রাজামশাই?
বিদূষক ঃ মন খারাপ? নাকি পেট খারাপ?নাকি খিদে পেয়েছে?
রাজা ঃ আহ্ ! বিদূষক!
বিদূষক ঃ না,মহরাজ! খিদে তো অনেক রকম হয়।যেমন  পেটের খিদে,চোখের খিদে, মনের খিদে.....
রাজা ঃ বাজে বোকো না তো বিদূষক। এ তোমার পরিহাসের বিষয় নয়।
বিদূষক ঃ তাহলে আমি আমার মুখে তালা মেরে দিলাম। [রক্ষীর প্রবেশ]
রাজা ঃকী খবর রক্ষী?
রক্ষী ঃ মহারাজ, দূত আপনার সঙ্গে দেখা করতে চায়।
রাজা ঃ ডাকো,ডাকো তাকে।আমি তো তার জন্যই উৎকণ্ঠিত হয়ে বসে আছি।(রক্ষীর প্রস্থান ও দূতের প্রবেশ)
দূত ঃ মহরাজের জয় হোক
রাজা ঃ কী খবর দূত?
দূত ঃ মহারাজ, ঈশানী নামের সেই মেয়েটি তার গ্রামে নেই।
রাজা ঃ নেই!
বিদূষক ঃতার মানে দুলক্ষ টাকা নিয়ে সে গা ঢাকা দিয়েছে।
মন্ত্রী ঃ গ্রামে নেই।তো কোথায় গেছে সে?
বিদূষক ঃ ওই যে বললাম,গা ঢাকা দিয়েছে।হয়তো দেশ ছেড়েই পালিয়েছে।দুলক্ষ টাকা।ভাবা যায়!
রাজা ঃ থামো তো তুমি।বাঁচাল কোথাকার। (দূতকে) তার কোনো খোঁজ পাও নি?
দূত ঃ পেয়েছি মহরাজ।
সমস্বর ঃ পেয়েছো!!
দূত ঃ হ্যা,মহারাজ,অনেক খোঁজাখুঁজি করে তার হদিশ পেয়েছি।
রাজা ঃকোথায়,কোথায় তার দেখা পেলে? কী বললো সে?
বিদূষক ঃ টাকা ফেরৎ দেবে বলেছে?
দূত ঃ না,আমি তার দেখা পাইনি।
সমস্বর ঃ পাও নি!!
দূত ঃ না।দেখা পাই নি।শুধু তার খোঁজ পেয়েছি।
রাজা ঃ কোথায় সে?
দূত ঃ এক নির্জন টিলায়।
সমস্বর ঃ টিলায়!!
রাজা ঃসেখানে সে কী করছে?
বিদূষক ঃ তপস্যা?
দূত ঃ সেখানে সে নাকি এক মন্দির নির্মাণ করছে।
রাজা ঃ মন্দির!?
মন্ত্রী ঃ কোন্ দেবতার মন্দির?
দূত ঃ তা তো জানি না, মন্ত্রীমশাই।
রাজা ঃতুমি সেখানে গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করলে না কেন?
দূত ঃ চেষ্টা করেছিলাম মহারাজ।অনুমতি পাইনি।সে নাকি কারো সঙ্গেই দেখা করে না।
রাজা ঃ আচ্ছা তুমি যাও।তোমাদের দিয়ে হবে না।(দূতের প্রস্থান) মন্ত্রীমশাই,এখন কী করা যায় বলুন তো?
মন্ত্রী ঃ এ কাজ দূতকে দিয়ে হবে না রাজা মশাই।আপনি বরং দায়িত্বশীল  কাউকে পাঠান। যার নাম শুনলে সে আর না বলার সাহস পাবে না।
রাজা ঃ ঠিক বলেছেন। আমি বরং আমার দেহরক্ষীকেই পাঠাই। ঈশানী ওকে চেনেও।সে ঠিক খোঁজ আনতে পারবে।
সমস্বর ঃ তাই করুন মহারাজ।।
++++++++++
।।ষষ্ঠ দৃশ্য।।
+++++++++
[দেহরক্ষীর প্রবেশ।সে বিড় বিড় করে কিছু একটা বলতে বলতে ইতস্তত পায়চারি করছে।বিদূষকের প্রবেশ।]
বিদূষক ঃআরে দেহরক্ষী যে!
রক্ষী ঃ হ্যাঁ,ভাঁড় মশাই আমি।
বিদূষক ঃএ্যাই, খবরদার আমাকে ভাঁড় বলবে না।
রক্ষী ঃতাহলে কী বলবো?
বিদূষক ঃ সবাই যা বলে-- বিদূষক!
রক্ষী ঃসে তো রাজসভায় বলে।আড়ালে সবাই আপনাকে ...যাকগে....
  (মন্ত্রীর প্রবেশ)
মন্ত্রী ঃ ও,দেহরক্ষী !  তুমি এসে গেছো? কখন এলে?
(সহসা রাজাকে দেখে) আসুন,রাজামশাই,...
(রাজা আসন গ্রহণ করেন)
রাজা।কী খবর দেহরক্ষী?  তুমি এত তাড়াতাড়ি ফিরে এলে যে!ঈশানীর দেখা পাওনি?
দেহরক্ষী ঃ না,মহারাজ।
রাজা ঃ তোমার সাথেও দেখা করলো না?
দেহরক্ষী ঃ দেখা করে নি,তবে খবর পাঠিয়েছে।
রাজা ঃ কী খবর?
দেহরক্ষী ঃ চৈত্রসংক্রান্তির দিন তার প্রতিষ্ঠিত মন্দিরের দ্বারোদঘাটন হবে।আর দ্বারোদঘাটন  করবেন আপনি।
বিদূষক ঃ মহারাজ, যদি না হয় ভ্রান্তি।
আগামী পরশুই তো চৈত্রসংক্রান্তি।।
রাজা ঃ আশ্চর্য! আমাকে তো কোনো খবর দেয়নি!তুমি ঠিক শুনেছো তো দেহরক্ষী , আমাকে দিয়েই..
দেহরক্ষীঃহ্যাঁ,মহারাজ, যাকে দিয়ে সে বলে পাঠিয়েছে সে তো স্পষ্টই বললো।
মন্ত্রী ঃকী বললো?
দেহরক্ষী ঃবললো যে মহারাজকে দিয়েই মন্দিরের দ্বারোদঘাটন  হবে।
বিদূষক ঃ তাহলে হয়তো হবে কোনো মঠের মহরাজ ।মেয়েটা কি ধড়িবাজ!
রাজা ঃ মন্ত্রীমশাই।
মন্ত্রী ঃ বলুন রাজা মশাই।
রাজা ঃ এখন কী করা যায় বলুন তো?
মন্ত্রী ঃ সেপাইসান্ত্রি পাঠিয়ে ধরে আনি মেয়েটাকে।
কতো ধানে কতো চাল বুঝিয়ে দেই তাকে।।
[নেপথ্যে ঈশানী ঃ ধরে আনতে হবে না রাজন।
সকলে(বিস্ময়ে)ঃ ঈশানী!!
ঈশানী ঃ হ্যাঁ,রাজন।
রাজা ঃ তিনমাস কি হয়নি পূরণ?
ঈশানী ঃপরশুই পূর্ণ হবে মহারাজ।
তাই তো আপনাকে নিতে এসেছি আজ।
রাজা ঃ কোথায় যেতে হবে?
ঈশানী ঃউদয়ন টিলায়।
রাজা ঃ কী আছে সেখানে?
ঈশানী ঃ ঈশ্বরের এক মন্দির গড়েছি আমি।আগামীকাল শুদ্ধাচারে স্নানধ্যান পূৃজাপাঠ শেষে হবে তার উদ্বোধন।কৃপাকরে চলুন রাজন। আপনার দ্বারাই হবে মন্দিরের দ্বারোদ্ঘাটন।
রাজা ঃকিন্তু তুমি যা প্রমাণ করতে চেয়েছো তার কী হল?
ঈশানী ঃ সেখানেই ঈশ্বরকে সাক্ষী রেখে তার প্রমাণ দেবো রাজন।
রাজা ঃ বেশ।তুমি পথশ্রমে ক্লান্ত।এখন বিশ্রাম নাও।আমি যাত্রার আয়োজন করছি।চলো,অন্তঃপুরে চলো।(সকলের প্রস্থান)
 *******************
।।সপ্তম দৃশ্য।।
++++++++
[ঈশানী  তার কয়েকজন সাথীকে নিয়ে কর্মব্যস্ত।দ্বারোদ্ঘাটনের জন্য ফুল, লতা পাতা দিয়ে প্রবেশদ্বার সাজানো হচ্ছে।একজন দরজায় রিবন ফিতা দিয়ে,একজন কাঁচি নিয়ে,অপর একজন শঙ্খ নিয়ে প্রস্তুত।]
ঈশানী ঃ তাহলে সব ব্যবস্থা হয়ে গেলো।তোরা এদিকটা দ্যাখ্,আমি রাজা মশাইকে ডেকে নিয়ে আসি।[প্রস্থান। সখীরা কর্মব্যস্ত। কিছুক্ষণ পরে রাজাকে নিয়ে ঈশানীর প্রবেশ]
ঈশানী ঃ আসুন,রাজা মশাই।আগে মন্দিরের দ্বার উন্মোচন করুন।[রাজা ফিতে কেটে দ্বারোদ্ঘাটন করেন।শঙ্খধ্বনি ও উলুধ্বনি।]
রাজা ঃ ঈশানী!
ঈশানী ঃ বলুন রাজামশাই।
রাজা ঃ মন্দিরের দ্বার তো উদ্ঘাটন করলাম।কিন্তু  বিগ্রহ  কোথায়?
ঈশানী ঃ বিগ্রহ তো নেই মহারাজ।
রাজা ঃবিগ্রহ  নেই!? তাহলে?[মন্ত্রী, বিদূষকের প্রবেশ]
মন্ত্রী ঃএ কেমন মন্দির,রাজামশাই। কোনো মূর্তি নেই।কোনো দেবতা নেই!
ঈশানী ঃএ তো ঈশ্বরের আবাস।ঈশ্বরের মন্দির।
রাজা ঃ তার মানে এখানে স্বয়ং ভগবান থাকেন।তাই তো?
ঈশানী  ঃঠিক তাই রাজা মশাই।
বিদূষক  ঃতাকে দেখা যাবে না?
ঈশানী ঃকেন যাবেনা?
মন্ত্রী ঃ মন্দিরের ঠিক কোন্ জায়গায় আছেন তিনি?
ঈশানী ঃ গর্ভগৃহে।
রাজা ঃতার মানে ভেতরের ওই ছোট্ট কুঠরিটায়,যেখানে একটা প্রদীপ জ্বলছে?
ঈশানী  ঃঠিক তাই প্রভু।
মন্ত্রী ঃ ওর ভেতরে গেলে স্বচক্ষে ঈশ্বরকে দেখতে পাবো?
ঈশানী ঃ পাবেন,অবশ্যই পাবেন।
বিদূষক ঃ কীভাবে চিনবো তাকে?
ঈশানী ঃ তিনিই চিনিয়ে দেবেন।কাউকে চেনাতে হবে না।
বিদূষক ঃ আসল,না নকল বুঝবো কী করে?
ঈশানী ঃ উনিই বুঝিয়ে দেবেন
মন্ত্রী ঃ অতো কথায় কাজ কী?চলুন রাজামশাই,গর্ভগৃহে প্রবেশ করে চক্ষু- কর্ণের বিবাদ ভঞ্জন করি।
রাজা ঃ চলুন।এসো ঈশানী।
ঈশানী ঃ গর্ভগৃহে প্রবেশের পূর্বে ঈশ্বরের অনুমতি নিতে হয় প্রভু।
রাজা ঃ অনুমতি!কীভাবে অনুমতি চাইবো?কার কাছে চাইবো?
ঈশানী ঃআমি প্রার্থনা সঙ্গীত গাইছি।আপনারা আমার সঙ্গে গলা মেলান।
মন্ত্রী ঃ আমরা গাইবো?এই বুড়ো বয়সে হেঁড়ে গলায় গান ধরলে ভগবান মন্দির ছেড়ে পালাবেন না তো?
বিদূষক ঃভগবানও যদি বুড়ো হয়ে থাকেন তাহলে না-ও পালাতে পারেন।
ঈশানী ঃ আপনাদের গলা ছেড়ে গাইতে হবেনা।মনে মনে গাইলেই হবে। ভগবান তো অন্তর্যামী।
রাজা ঃতুমি কৃষক কন্যা।কিন্তু বোধ ও বুদ্ধিতে তুমি ঋষিকন্যার সমকক্ষ। নাও শুরু করো।
[সকলে হাঁটুগেড়ে প্রার্থনা করার ভঙ্গিতে হাত জোড় করে বসে]
গান(রবীন্দ্রসঙ্গীত)  ঃ
এসো আমার ঘরে এসো......
রাজা ঃবাঃ!ঈশানী, তোমার গায়কী খুব সুন্দর।
মন্ত্রী ঃ তাহলে এখন আমরা গর্ভগৃহে প্রবেশ করি?
ঈশানী ঃ অবশ্যই। তবে একে একে। একজন দর্শন করে বেরিয়ে এলে তবেই আর একজন।
রাজা ঃ কেন?
ঈশানী ঃ রাজামশাই,ঈশ্বর কি এতই সহজলভ্য?  একসঙ্গে অনেককে দেখা দিলে তো তার মাহাত্ম্যই থাকবে না।
রাজা ঃ তাও তো বটে।
ঈশানী ঃ ঈশ্বর  একবার মাত্র একজনকেই দেখা দেন।একাধিক ব্যক্তি গর্ভগৃহে প্রবেশ করলে ঈশ্বর থাকেন অদৃশ্য।বিশ্বাস নাহলে পরীক্ষা করে দেখতে পারেন। তা হলে যান কে কে যাবেন?
বিদূষক ঃনা-দেখার জন্য যাওয়া?
মন্ত্রী ঃনা,না।অমন গিয়ে কাজ নেই। রাজামশাই, সর্বপ্রথম আপনিই যান।
বিদূষক ঃমহারাজ গর্ভগৃহে প্রবেশ করলেই ঈশ্বরকে দেখতে পাবেন তো?
ঈশানী  ঃ নিশ্চয়ই পাবেন।মহারাজ তো আর বেজন্মা নন্।
মন্ত্রী ঃ তার মানে?
রাজা ঃ কী বলতে চাও তুমি?
ঈশানী ঃ মহারাজ,তিন ধরণের লোক ঈশ্বরের দর্শন পাবেন না।
বিদূষক ঃতিন ধরণ! তুমি আমাদের কথা বলছো না তো?
ঈশানী ঃআপনারা  আবার তিন ধরণ হবেন কী করে?
বিদূষক ঃ কেন,একজন রাজা,একজন মন্ত্রী, একজন বিদূষক। হল না তিন ধরণ?
রাজা ঃ থামো তো তুমি।বলো ঈশানী কোন তিন ধরণের লোকের কথা বলছো তুমি।
ঈশানী ঃ  বেজন্মা,পরস্বাপহারী  আর নারী নির্যাতনকারী। আপনি তো এর কোনোটাই নন্। আপনি কেন ঈশ্বরের দর্শন পাবেন না? নিশ্চয় পাবেন। যান মহারাজ, আপনি নিশ্চিন্তে ভেতরে যান।
রাজা ঃনা,না। তা হয়না।মন্ত্রী মশাই বয়োজ্যেষ্ঠ। বয়োজ্যেষ্ঠদের সম্মান করা উচিৎ। যান মন্ত্রীমশাই।দ্বিধা করবেন না।আপনি সদ্বংশজাত পুণ্যাত্মা। ভগবান আপনাকে দর্শন দেবেনই।যান।
বিদূষক ঃ স্বচক্ষে ঈশ্বর দর্শন!মন্ত্রীমশাইর মানবজন্ম ধন্য হয়ে যাবে।
রাজা ঃএরপর তুমি যাবে।তোমার মানবজন্মও সার্থক হবে।
বিদূষক ঃধ্যাৎ,তাই হয় নাকি!  রাজা মশাইয়ের আগে আমি?
রাজা(দৃঢ়কণ্ঠ) ঃ হ্যাঁ,হ্যাঁ।তুমি।আমাকে রাজধর্ম পালন করতে দাও।আমি যাবো সবার শেষে।সব কিছু সবার আগে ভোগ করা রাজধর্ম নয়।
বিদূষক (জনান্তিকে)ঃআসলে রাজা মশাই ভয় পাচ্ছেন।উনিও তো পরস্বাপহরণকারী।কে না জানে,রাজার হস্ত করে সমস্ত কাঙালের ধন চুরি।
রাজা ঃকী বকছো বিড়বিড় করে?
বিদূষক ঃ আমি মন্ত্রীমশাইয়ের সাফল্য কামনা করছি।
ঈশানী ঃ ঈশ্বর দর্শনের জন্য নিবিষ্ট চোখ চাই।শুধু একথাটাই খেয়াল রাখবেন, মন্ত্রী মশাই।
মন্ত্রী (আনমনা)ঃতা...হলে..আমি যাই?
সমস্বরে ঃ হ্যাঁ,যান মন্ত্রীমশাই,যান।(দ্বিধান্বিত মন্ত্রীর প্রস্থান)
ঈশানী ঃ আসুন আমরা মন্ত্রীমশাইয়ের সাফল্য কামনা করে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি।।
রাজা ঃবেশ।তাই হোক।
[তিনজনই প্রার্থনার ভঙ্গিতে বসে প্রার্থনাসঙ্গীত শুরু করে।]
গান।।আগুনের পরশমণি  ছোঁয়াও প্রাণে..... (রবীন্দ্রসঙ্গীত)
।। অষ্টম  দৃশ্য।।
++++++++++
প্রার্থনারত রাজা ও অন্যরা হাত জোর করে বসে আছেন।
ঈশানী ঃ ওই তো মন্ত্রীমশাই ফিরে এসেছেন।
রাজা ঃ(সাগ্রহে) মন্ত্রীমশাই,দেখলেন? ঈশ্বরকে দেখলেন?
মন্ত্রীঃ(দ্বিধাভরে)এ্যাঁ...হ্যাঁ...হ্যাঁ...দেখলাম বৈকি!
ঈশানী ঃ দেখলেন!
রাজা ঃকেমন দেখলেন?ঈশ্বর দেখতে কেমন?
মন্ত্রী ঃভালো।
রাজা ঃ ভালো মানে?
মন্ত্রী ঃ শঙ্খ চক্র গদা পদ্ম নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন।... আমাকে আশীর্বাদ  করলেন।
বিদূষক ঃ কিছু বলেন নি?
মন্ত্রী ঃ অ্যাঁ!
বিদূষকঃ কোন্ ভাষায়? সংস্কৃতে,না বাংলায়,নাকি ইংরেজিতে?
ঈশানী ঃ(হাসি গোপন করে) ছাড়ুন তো।বুড়ো মানুষ, ঈশ্বরকে দেখে হকচকিয়ে গেছেন।ওনাকে ধাতস্থ হওয়ার সময় দিন। এবার কে যাবেন?
রাজা ঃ যাও হে বিদূষক।
মন্ত্রী ঃ এটা কি ঠিক হচ্ছে প্রভু?
রাজা ঃ যাও তো তুমি।
বিদূষক ঃ তা হলে যাই? যাচ্ছি।
ঈশানী ঃ হ্যাঁ, যান।আমরা আপনার জন্য প্রার্থনা করছি।
[বিদূষকের প্রস্থান।সবাইকে নিয়ে ঈশানীর প্রার্থনা সঙ্গীত।
গান(রবীন্দ্রসঙ্গীত)
গান শেষে পূর্ববৎ সবাই বসে থাকবে।বিদূষকের প্রত্যাগমন।]
রাজা ঃ কী হে,বিদূষক, দেখতে পেলে?
বিদূষক ঃ হ্যাঁ।দেখতে পাবো না কেন?
মন্ত্রী ঃ বলি,ঈশ্বরকপ দেখতে পেলে?
বিদূষক ঃ আপনি বুড়ো মানুষ দেখতে পেলেন,আর আমি পাবো না?
রাজা ঃ  কেমন দেখলে?
বিদূষক ঃ স্পষ্ট দেখলাম।এই যেমন আপনাকে দেখছি।
রাজা ঃ হেঁয়ালি কোরো না তো।বলো,ঈশ্বর দেখতে কেমন।
বিদূষক ঃ আমি দেখলাম,নররূপী নারায়ণ কে।অবিকল আমার অন্নদাতা মহারাজের মতো দেখতে।ঈশ্বর বহুরূপী কিনা।
ঈশানী ঃ আপনি ভাগ্যবান।
রাজা ঃভগবানের কাছে কী চাইলে তুমি?
বিদূষক ঃ আমি? আমি আমার অন্নদাতার দীর্ঘায়ু কামনা করলাম।
ঈশানী ঃ নিজের জন্য কিছুই চাইলেন না? আশ্চর্য!
বিদূষক ঃ চাইলাম তো।আমার অন্নদাতা দীর্ঘায়ু হলে আমার কখনো অন্নাভাব হবে না।
ঈশানী ঃ এবার তাহলে.... রাজামশাই.......
রাজা ঃ যেতেই হবে?
সমস্বরে ঃ হ্যাঁ,হ্যাঁ, যান।
রাজা ঃ যাই তাহলে।
ঈশানী ঃ আসুন রাজামশাই।আমরা আপনার জন্য প্রার্থনা করছি।
[পূর্ববৎ সকলের প্রার্থনা--- রবীন্দ্রসংগীত। ]
#াাাাাাাাা###$$$##$
।।নবম দৃশ্য।।
++++++++++
[মন্দিরের গর্ভগৃহের সামনে রাজা উদিত নারায়ণ। ]
রাজা ঃএটাই তো মন্দিরের গর্ভগৃহ। ওই তো সেই প্রদীপটা।টিমটিম করে জ্বলছে। কিন্তু.. গর্ভগৃহের ভেতরে তো কোনো আলো নেই!ঘুটঘুটে অন্ধকার।ঈশ্বর কি অন্ধকারে লুকিয়ে থাকেন!হতেও পারে। আর একটু এগিয়ে দেখি তো।(এগোন)কই,কোথায়?কোথায় হে ঈশ্বর? মন্ত্রী দেখলেন,বিদূষক দেখলো,আমি রাজা।আমি দেখতে পাচ্ছিনা কেন?দেখা দাও,দেখা দাও হে ঈশ্বর! জ্ঞানত আমি পরস্ব অপহরণ করিনি।আমার তো কখনও অভাব ছিলো না।আমি কেন পরের ধন চুরি করবো?আমি কখনও কাউকে খুন-ধর্ষণ করিনি।তাহলে আমি কি বেজন্মা? তাই বা কী করে হবে! মহান শতানীক বংশে আমার জন্ম। বিদূষী পুণ্যবতী কমলাবতী আমার গর্ভধারিনী জননী। আমার পিতা দেবতুল্য রাজরাজেন্দ্র দিনেন্দ্রনারায়ণ দেববর্মন।আমি বেজন্মা হবো কেন? ও-হো-হো-ও(কান্না)আমার প্রতি এত নির্দয় হলে কেন ভগবান!?কেন?কেন?কেন?(কান্না)।এখন আমি কী করি?বাইরে গিয়ে কী বলবো?যদি বলি,আমি ঈশ্বরের দেখা পাই নি,তাহলে কে কী ভাববে!কেউ ভাববে আমি চোর, কেউ ভাববে আমি খুনি,কেউবা ভাববে রাজা তার মায়ের অবৈধ সন্তান।  উঃ,আমি আর ভাবতে পারছি না। (একটু থেমে)না, বাইরে সত্যি কথাটা বলা যাবে না। তাহলে কী বলবো?(একটু চিন্তা করে) বলবো,দেখেছি।আমিও ঈশ্বরকে দেখেছি।তারপর বানিয়ে বানিয়ে যা বলতে হয় বলবো। হায় ঈশ্বর,আমাকে এ কী ফ্যাসাদে ফেললে![ মাথার চুল আঁকড়ে ধরে মাটিতেই বসে পড়ে।আলো নিভে যায়।]
-------------------------------------
।।শেষ(দশম)দৃশ্য।।
০০০০০০০০০০০০
[রাজার ফেরার অপেক্ষায় মন্ত্রী  ও অন্যান্যরা।ঈশানী ছাড়া সকলে উদ্বিগ্ন। ]
মন্ত্রী ঃরাজামশাই এখনও ফিরছেন না কেন?
ঈশানী ঃঠিকই ফিরবেন।চিন্তার কোনো কারণ নেই।
বিদূষক ঃহয়তো ঈশ্বরের সঙ্গে কোনও বিষয়ে পরামর্শ করছেন।
রক্ষী ঃওই তো রাজামশায় এসে গেছেন।
মন্ত্রী ঃ রাজাকে এমন উদ্ভ্রান্ত দেখাচ্ছে কেন?
রক্ষী ঃকেমন পাগল-পাগল  লাগছে। আমি কি ছুটে গিয়ে মহারাজের হাত ধরবো?
ঈশানী ঃ আপনারা চিন্তা করবেন না। যা দেখতে পাওয়া যায় না তার দেখা পেলে অনেকেরই এমন হয়।সব ঠিক হয়ে যাবে।
   [রাজার প্রবেশ]
মন্ত্রী ঃ রাজামশাই! রাজামশাই!
রাজা ঃএ্যাঁ....
মন্ত্রী ঃআপনি ঠিক আছেন তো?
রাজা ঃ এ্যাঁ...হ্যাঁ...
বিদূষক ঃ ঈশ্বরের দেখা পেলেন,মহারাজ?
রাজা,ঃহ্যাঁ,হ্যাঁ..
ঈশানী ঃ দেখলেন?
রাজা ঃ(মাথা ঝারা দিয়ে) কেন দেখবো না?মন্ত্রী দেখলেন,বিদূষক দেখলো আর আমি দেশের রাজা,আমি দেখবো না?
রক্ষী ঃ মহারাজ, আপনাকে খুব ক্লান্ত দেখাচ্ছে। আপনি এই আসনটায় বসুন।
রাজা ঃ সত্যি আমি ক্লান্ত,বড় পরিশ্রান্ত। দাও,দাও।[রক্ষী চেয়ার এগিয়ে দেয়।রাজা বসেন]
  ঈশানী, ঃক্লান্ত তো হওয়ারই কথা।কিন্তু মহারাজ,আপনিও ঈশ্বরকে দেখলেন?
রাজা ঃ দেখলাম তো, স্পষ্ট দেখলাম।
ঈশানী ঃ কীভাবে দেখলেন?
রাজা ঃ এই যেভাবে তোমাকে দেখছি।
ঈশানী ঃ সত্যি দেখেছেন?
মন্ত্রী ঃ অ্যাই মেয়ে,তোমার স্পর্ধা তো কম নয়! রাজার কথায় সন্দেহ প্রকাশ করো।
রাজা ঃ মন্ত্রীমশাই,আপনি থামুন। আমাকে বলতে দিন।তুমি কি আমার কথা বিশ্বাস করছো না, ঈশানী?
ঈশানী ঃ যা বিশ্বাসযোগ্য নয়,তা কেমন করে বিশ্বাস করি, বলুন?
মন্ত্রী ঃ রাজামশাই,এ অসহ্য। এ প্রকারান্তরে আপনাকে মিথ্যাবাদী  বলছে।
রক্ষী ঃ ও বলতে চাচ্ছে, আপনি ঈশ্বরকে দেখেন নি
বিদূষক ঃ কারণ আপনি হয় মিথ্যাবাদী,নয় নরহত্যাকরী, নয়তো......
মন্ত্রী ঃ ও আপনাকে বেজন্মা মনে করে।
রক্ষী ঃ মহারাজের আদেশ পেলে আমি এক্ষুনি.....
রাজা ঃতোমরা থামো।আমি ভগবানকে দেখেছি,আমার এ কথা তুমি বিশ্বাস করছো না কেন,ঈশানী?
ঈশানী ঃবিশ্বাসযোগ্য নয় বলে। রাজামশাই, ভগবানের দেখা পাওয়া কি অতই সহজ?মুনি -ঋষিরা দীর্ঘ তপস্যা করেও যাঁর দর্শন পান না,মানুষের তৈরি একটা মন্দিরে প্রবেশমাত্রই আপনি তাঁর দেখা পাবেন এটা ভাবলেন কীকরে?
রাজা ঃ তবে মন্ত্রীমশাই দেখলেন কী করে?
ঈশানী ঃ মন্ত্রী মশাই মিথ্যাকথা বলেছেন।(রাজা,মন্ত্রী, বিদূষক কেঁপে ওঠে)
রাজা ঃবিদূষকও তো বলেছে!
ঈশানী ঃউনিও মিথ্যে বলেছেন। দেখুন,দুজনই কেমন মাথা হেঁট করে বসে আছেন।
রাজা ঃ কিন্তু তুমিও তো বলেছো -এ মন্দিরের গর্ভগৃহে  ঈশ্বর আছেন।
ঈশানী ঃ আমিও মিথ্যাকথা বলেছিলাম।
রক্ষী ঃ কী দুঃসাহস!
রাজা ঃকেন? মিথ্যাকথা বলে আমাকে ধোকা দিলে কেন?
ঈশানী ঃ(হেসে)সবই ভুলে গেলেন মহরাজ?
রাজা ঃ কী? কী ভুলে গেলাম?
ঈশানী ঃ সবাই মিথ্যাকথা বলে।মহারাজও মিথ্যে বলেন।এবং মিথ্যা বলার যে স্বাদ,যে তৃপ্তি তার জুড়ি নেই।আমি একথা প্রমাণ করেছি রাজন।
রাজা ঃ(চমৎকৃত)ও রে,দুষ্টু মেয়ে!তলে তলে এই মতলব নিয়ে তুমি ঈশ্বরের মন্দির বানিয়েছো?
ঈশানী ঃ মহারাজ,আমরা গরিব প্রজারা ধনপ্রাণ বাঁচাবার জন্য অনেক সময় মিথ্যা বলতে বাধ্য হই।বিত্তবান ও ধনবান ব্যক্তিরা অন্যের ধন অপহরণের জন্য কিংবা মান বাঁচাবার জন্য মিথ্যাকথা বলে থাকেন। কিন্তু আপনি তো রাজা
আপনার তো ধনের অভাব নেই,মান হারাবারও ভয় নেই।আপনি কেন অকারণে মিথ্যা বলেন?(একটু অপেক্ষা করে)ব-লে-ন তার কারণ হোলো মিথ্যার মতো মুখরোচক আর কিছু নেই।
রাজা ঃ চমৎকার!তোমারই জয় হোলো,ঈশানী। আমার গলার এই মোতিহার তোমার গলায় পরিয়ে দিয়ে আমি তোমাকে বিজয়ী ঘোষণা করলাম। জয় কৃষককন্যার জয়(মালা পরিয়ে দেয়)
মন্ত্রী ঃ এ কী করলেন,রাজামশাই!?
রাজা ঃঅন্যায্য কিছু করলাম কি ? এই বুদ্ধিমতী তরুণী  কি পুরস্কারের যোগ্য নয়?
মন্ত্রী ঃ নিশ্চয়ই পুরস্কারের যোগ্য।কিন্তু রাজামশাই, মহান শতানীক বংশে আপনার জন্ম।এই বংশের রীতি হোলো চৈত্রসংক্রান্তির পূর্ণিমা তিথিতে এই বংশের কোনো পুরুষ কোনো নারীর কণ্ঠে মাল্যদান করলে এবং সেই নারী বিনা বাধায় তা গ্রহণ করলে  তিথিমাহাত্ম্যে সেই মাল্যদান পাণিগ্রহণ  রূপে গণ্য হয়।
বিদূষক ঃ তাই তো!তাইতো! আজ তো চৈত্রসংক্রান্তি এবং পূর্ণিমাতিথি।রাজা মশাই নিজের  কণ্ঠহার এই তরুণীর কণ্ঠে পরিয়ে দিয়েছেন আর তরুণীও তা বিনাবাধায় কণ্ঠে ধারণ করেছেন।
রক্ষী ঃ তার মানে ইনি আজ থেকে আমাদের ছোট রানীমা হলেন!
ঈশানী ঃ (দৃঢ়কণ্ঠে) না,না।কিছুতেই না।
 মন্ত্রী ঃ এখন আর আপত্তি করে লাভ নেই মা।নিয়তি কেন বাধ্যতে! এ হোলো বংশের বিধান।অমান্য করার সাধ্য কারো নেই।রাজারও না।
ঈশানী ঃ এ বিধান আমি মানি না। শোষিত উৎপীড়িত কৃষককন্যা আমি।শোষক শাসকের ঘরণী হওয়ার কেনা বাসনা আমার নেই।
বিদূষক ঃ এভাবে বলবেন না ছোটোরানী মা।
ঈশানী ঃ খবরদার! আমাকে রানীমা বলবেন না।
বিদূষক ঃকী বলবো তাহলে?
ঈশানী ঃআমার নাম ঈশানী। যা বলার নাম ধরেই বলবেন।
মন্ত্রী ঃ রাজামশাই সম্পর্কে তোমার ধারণা ভুল মা।উনি শাসক অবশ্য ই,কিন্তু শোষক একদম নন।
ঈশানী ঃনন্? তাহলে তাঁর রাজ্যে কৃষকদের এমন দুরবস্থা কেন? কেন তাদের উৎপন্ন ফসলের দাম নেই?কেন প্রতিবছর সার বীজ আর প্রতিটি ভোগ্যপণ্যের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ে?নিত্যনতুন ট্যাক্স বসিয়ে রাজামশাই প্রজাদের অর্থসম্পদ লুঠ করছেন,অস্বীকার করতে পারেন?
মন্ত্রী ঃ ভুল,ভুল। প্রচণ্ড ভুল করছেন আপনি।প্রজাদের অবস্থা স্বচক্ষে দেখবার জন্য রাজামশাই ছদ্মবেশে নগর ভ্রমণ করেন।প্রজাদের দুঃখকষ্ট দেখলে তার প্রতিকারেরও ব্যবস্থা করেন।ছদ্মবেশে নগর ভ্রমণ কালেই তো রাজামশাই আপনাদের দেখেছিলেন, আপনার কথা শুনেছিলেন।এমন প্রজাদরদী রাজাকে আপনি অযথা দোষারোপ করছেন মা।
ঈশানী ঃপ্রজাদরদী!(বিদ্রূপাত্মক হাসি) প্রজা কি কেবল নগরবাসীরা?গ্রামের কৃষকরা প্রজা নয়? গ্রামের মানুষদের সুখদুঃখের কোনো খোঁজ রাখেন আপনাদের প্রজাদরদী  মহারাজা?খরায়- বন্যায় রোগ-মহামারীতে কৃষকদের পাশে দাঁড়ান কি তিনি?তাঁর যত চিন্তা শহরবাসীদের নিয়ে।গ্রামে ভালো স্কুল নেই,হাসপাতাল নেই,রাস্তাঘাট নেই সে খবর কি রাখেন আপনাদের প্র-জা-বৎ-সল  রাজা?
রাজা ঃবেশ তো, রাজরানী হয়ে তুমিই না হয়  গ্রামের মানুষদের কথা ভাববে।উদিপুরের রাজার পরামর্শদাতার পদ দেওয়া হবে তোমাকে।
ঈশানী ঃ লোভ দেখাচ্ছেন? তা ওই পদে কতো সম্মানদক্ষিণা পাওয়া যাবে?মোটা টাকা হলে ভেবে দেখতেও পারি।
মন্ত্রী ঃআপনি কি বেতনের কথা বলছেন? তা কি রাজরানীর পক্ষে সম্মানজনক হবে?
রাজা ঃ তুমিই বলো তুমি কী চাও!
ঈশানী ঃআমি যা চাই দেবেন?
রাজা ঃচেষ্টা করবো।
ঈশানী ঃ পারবেন না রাজা,পারবেন না।বিলাসবহুল জীবনযাত্রার হ্যালোজেন আলোয় নারীকে আপনারা দেখে এসেছেন চকচকে পেয়ালায় ঝকঝকে পানীয়রূপে।স্বাধিকারপ্রমত্ত পুরুষ কখনই  নারীকে তার প্রাপ্য অধিকার দেয় না।আপনিি দেবেন না।
রাজা ঃ(রাগত)থামো, থামো।অনেক বলেছো তুমি।তোমার রূপযৌবনের প্রতি আমার কোনো লোভ নেই।নেহায়েত ভুল করে একটা কাজ আমি করে ফেলেছি। সে য়ভুলের খেসারত আমাকে দিতেই হবে।মহান শতানীক রাজ বংশের রীতিঐতিহ্য অবমাননা করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।আজই আমি তোমার বাবাকে আনতে লোক পাঠাচ্ছি। তিনি যদি রাজি হন ভালো।নইলে..
ঈশানী ঃ নইলে বলপ্রয়োগ?  তাই তো?
মন্ত্রী ঃ আপনিই বলুন,মা, রাজামশাই কীভাবে তাঁর বংশের রীতি ঐতিহ্য  রক্ষা করবেন।
ঈশানী ঃ আমাকে ভাবার জন্য একটাদিন সময় দিন।
মন্ত্রী ঃ তা কী করে সম্ভব? কাল পর্যন্ত তো পূর্ণিমা থাকবে না,সংক্রান্তিও না।যা করার আজই করতে হবে।
ঈশানী ঃ তাহলে আর আমি কী বলবো?বলির পশুর কাছে সম্মতি চাওয়ার কোনো অর্থ হয়?
রাজা ঃ এভাবে বলছো কেন,ঈশানী?
ঈশানী ঃ বলির পাঁঠার সঙ্গে আমার কী পার্থক্য, মহারাজ?প্রথার যূপকাষ্ঠে যেমন করে পশু বলি দেওয়া হয় তেমনি করেই তো আপনারা আমাকে আপনার বংশের প্রথার হাড়িকাঠে বলি দিতে চাইছেন।সম্মতি দিলে ভালো,নইলে বলপ্রয়োগ। পার্থক্যটা কোথায় বুঝিয়ে বলবেন?
রাজা ঃ(আপন মনে) তাই তো!এভাবে তো কখনও ভেবে দেখি নি।মন্ত্রীমশাই!
মন্ত্রী ঃবলুন রাজামশাই।
রাজা ঃচলুন,আমরা ফিরে যাই।ঈশ্বরহীন এই মন্দিরে আর নয়।আপনি প্রত্যাগমনের ব্যবস্থা করুন।
মন্ত্রী ঃকিন্তু উনি তো এখনও সম্মতি দেন নি।বংশের বিধান তো রক্ষা করতে হবে।তবে কি....
রাজা ঃনা। ওকে ওর মতো থাকতে দিন। যে বিধান, যে রীতি বা প্রথা  কারো ব্যক্তিস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করে,মানুষকে মনুষ্যত্বে উত্তীর্ণ করে না, তা কখনোই শতানীক বংশের বিধিবিধান হতে পারে না।আপনি এক কাজ করুন,এই মন্দিরের জন্ঢ় আরো এক সহস্র স্বর্ণমুদ্রা বরাদ্দ করুন।যাতে উনি ওনার পছন্দমত  যে কোনো বিগ্রহ এই মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করতে পারেন।চলুন...
মন্ত্রী ঃ যথা আজ্ঞা। চলুন তাহলে...(প্রস্থানোদ্যত)
ঈশানী ঃনা,না,যাবেন না।
মন্ত্রী ঃকেন মা?আপনি তো আমাদের রাজামশাইয়ের পাণি গ্রহণে  সম্মতি দিচ্ছেন না।তা হলে যেতে নিষেধ করছেন কেন?
ঈশানী ঃরাজামশাইয়ের দেওয়া বরণমালা  আমি তো গলা থেকে খুলে ফেলিনি।এই দেখুন,এখনো সেই মোতিহার আমার গলায় শোভা পাচ্ছে।
বিদূষক ঃ তা..তা...তার মানে?
মন্ত্রী ঃ তাহলে?
ঈশানী ঃ আমি রাজার এই মানবিক মুখটাই দেখতে চেয়েছিলাম।প্রথার  চেয়ে হৃদয়ধর্মকে যিনি বেশি গুরুত্ব দেন তিনিই তো হৃদয়েশ্বর হওয়ার যোগ্য। দয়া করে আমার বাবামাকে আনার ব্যবস্থা করুন।এই মন্দিরেই হবে বিবাহ অনুষ্ঠান।
বিদূষক ঃ জয়, উদিপুরের ছোটোরানীমার জয়।
[মন্দিরের ভেতর থেকে মহিলাদের শঙ্খধ্বনি ও উলুধ্বনি।]
@@@@@@@সমাপ্ত@#@@@@
বিঃদ্রঃ নাট্যকারের অনুমতি ছাড়া এই নাটক অভিনয় করা বা নাটকটি বা নাটকের কোনো অংশ মুদ্রণ করা চলবে না।
*********************************---***
অন্যতম স্বত্বাধিকারী :পুষ্পিতা নন্দী, দক্ষিণ হাবরা, উত্তর চব্বিশ  পরগণা।০৬/০৭/২০১৮
x

 

 

 

বিধিবদ্ধ স্বীকার্য :

লেখার বক্তব্যের দায়িত্ব লেখকের, পত্রিকার নয়। আমরা বহু মতের প্রকাশক মাত্র।

মতামত/লেখা এখানে জমা দিন

Name

Email *

Message *

সাম্প্রতিক বাছাই

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯৩তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩২ নভেম্বর ২০২৫

সূচিপত্র বস্তু, চেতনা এবং কবি ।। সজল চক্রবর্তী দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত ।। রণেশ রায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট ও সন্নিহিত অঞ্চলের কথ্য শব্দ ।। অরবিন্দ পুরকাইত চাঁদে জীবন ।। শমীক সমাদ্দার অসমাপ্তি ।। মহুয়া হুই গ্যালাক্সির শব্দে ।। জাসমিনা খাতুন তিনটি কবিতা ।। দিবাকর সেন অপূর্ণতার শেষ অধ্যায় ।। সুপ্রিয় সাহা হাফ ডজন ছড়া ।। স্বপনকুমার পাহাড়ী স্বাপ্নিক অমলের ঘুৃম ।। সঞ্জয় দেওয়ান দুটি কবিতা ।। সৌমিত্র উপাধ্যায় পথ চলতি ✍️পার্থ প্রতিম দাস হেমন্তের বিষাদ ছুঁয়ে ।। শক্তিপদ পাঠক রাই আর বাবা ।। অদিতি চ্যাটার্জি স্থিতিশীল ।। রঞ্জিত মুখোপাধ্যায় হৃদয়ের শূন্য কোড ।। লিপিকা পিঙ্কি দে অমানিশা ।। সৌভিক মুখার্জী দৃষ্টিগত ।। শামীম নওরোজ জ্যান্ত ভূতের গপ্পো ।। পার্থ সারথি চট্টোপাধ্যায় ধুতরা ফুলের ঘ্রাণ ।। মজনু মিয়া তারা খসার আলোয় ।। তীর্থঙ্কর সুমিত উত্তরণে অন্তরায় ।। সমীর কুমার দত্ত প্রেম মুদ্রা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ধারা ।। লালন চাঁদ অন্যের ব্যথায় ব্যথি ।। জগদীশ মণ্ডল গর্ভ ।। শাশ্বত বোস ভ্রমণ বিষয়ক স্মৃতিকথা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত শাপে বর ।। সাইফুল ইসলাম রবিবার ।। সঙ্ঘমিত্রা দাস দুটি ...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬

  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠালে  অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে হলে ভালো। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # ...

রেজাল্ট ।। সৈকত মাজী

রেজাল্ট সৈকত মাজী শুভ্রাংশু বিছানতে শুয়ে শুয়ে বিরক্ত হয়ে উঠল। মনে মনে নিজের শরীরটাকে আচ্ছা করে শুনিয়ে দিলো দু- চারটে কথা, দেবে নাই বা কেন, কয়দিন ধরে এতো কাঠ খড় পুড়িয়ে সব বন্ধুরা মিলে রথটা বানালো, কত কি প্ল্যান করলো, আর এই শরীরটার জন্যই তো সব ভেস্তে গেলো। মনে মনে ভাবলো একটা যা হোক শরীর হয়েছে ওর প্রতি মাসে তিন - চার বার করে জ্বর হচ্ছেই। হবি তো হ আর একটা দিন পরে হলে কি এমন ক্ষতি হতো, এই রথের দিনেই হতে হলো। ওর বিরক্তিটা বেড়ে গেলো আরো কয়েক ঘর।    " মা ও মা...মাআআআআ...." জোরে হাঁক  দিলো শুভ্রাংশু।    " কি হয়েছে বাবু? আবার জ্বরটা বেড়েছে? মাথা ব্যথা করছে?" ব্যস্ত হয়ে উঠলেন মালতিদেবী।     " ওসব কিছু নয়, ও মা বলছি এখন তো খুব কম জ্বর আছে যাই না মা একবার বাইরে, সবাই কতো ফুর্তি করছে বলো"  কাতর ভাবে বলল শুভ্রাংশু।      " না বাবু, এখনই আমরা ডাক্তারের কাছে যাব, বাবা তৈরী হয়ে গেছেন, আমরা বিকেলে তখন মেলা দেখতে যাব কেমন, এখন উঠে জামা কাপড় পরে নাও"  মালতিদেবী জামা কাপড় গুলো এগিয়ে দিলেন।      শুভ্রাংশু...

রাই আর বাবা ।। অদিতি চ্যাটার্জি

রাই আর বাবা অদিতি চ্যাটার্জি রাই-র জীবনে বেশ কিছু ভালো লাগা আছে তার মধ্যে একটা হলো সন্ধ্যার সময় তিন তলার বারান্দায় দাঁড়িয়ে রাস্তা দেখতে দেখতে কফি কাপে চুমুক দেওয়া ।" আজ যশোদা মিষ্টান্ন ভান্ডারের সামনে বেশ ভিড়,নির্ঘাত 'তেলে ভাজা ' প্রেমীরা।" আপন মনেই ভাবে ও, কিন্তু বসার ঘরে সুমন আর আঁখি এতো জোরে 'হল্লা গোল্লা ' করছে তালতলার জমজমাট রাস্তার দিকে আর মন দিতে পারছে না রাই।  পায়ে পায়ে ঘরে এসে দাঁড়ায় রাই, দেখে ক্লাস ফোরের মেয়ে এতোটা ঝগড়া করছে সুমনের সাথে , "বাপ রে, কবে এতোটা কথা শিখলো মেয়ে! কিভাবে কথা বলছে?? কোঁকড়া চুল ঝাঁঝিয়ে,গোলগাল হাত নেড়ে " ...মেয়ে কে দেখে থতমত খেয়ে যায় রাই। এদিকে আঁখি বলছে, "ধুত্ বাপী তুমি কিচ্ছু পারো না, তুতাই-র বাবা, পিসাই, মামু সবাই কত ভালো করে খেলতে পারে , না আমি তোমার সাথে খেলবো না।" কাতর চোখে মেয়ের দিকে একবার তাকিয়ে সুমন বলে ,"আচ্ছা তুই আমাকে শেখা, দ্যাখ আমি কার জন্য আলিপুরদুয়ার থেকে পনেরো দিন পর পর কলকাতায় আসি বল!"  ঐ টুকু মেয়ে কথা প্রায় না শুনেই ঘরে চলে গেল রাই-র চোখের সামনে, সুমন একবার হেসে বাথরুমের দিকে এগো...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯২তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩২ অক্টোবর ২০২৫

—: সম্পাদকীয় দপ্তর থেকে :— এই সংখ্যার জন্য লেখা এসেছিল প্রায় ১৮০টা। কিন্তু গুণগত মানে দুর্বল লেখার সংখ্যা বহু। আমরা নবপ্রভাতে নতুনদের কথা ভেবে বেশ কিছু দুর্বল লেখাও রাখি। কিন্তু সবসময় একই লোকের দুর্বল লেখা প্রকাশ করা অনুচিত বলে মনে করি। শেষ পর্যন্ত ৯৯ জনের লেখা রাখা গেল। যাদের লেখা প্রকাশিত হল না, তারা লেখাগুলি অন্য যেখানে খুশি পাঠাতে পারেন। বিশেষ কারণে এই সংখ্যার মুদ্রিত সংস্করণ প্রকাশিত হচ্ছে না। আমরা দুঃখিত। তবে মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি শীঘ্রই আসছে। সঙ্গে থাকুন। সকলকে উৎসবমুখর বর্ণময় শুভেচ্ছাসহ— —নিরাশাহরণ নস্কর, সম্পাদক, নবপ্রভাত। অনুরোধ : প্রকাশিত লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন, ছবি/স্ক্রীনশট নয়।  == সূচিপত্র == পড়া-লেখার ইতিহাস অনুসন্ধান।। তপন তরফদার উৎসব : মানুষের চিরন্তন আত্মপ্রকাশ।। কৃশানু ব্যানার্জি বাংলা : সভ্যতা ও সংস্কৃতির জন্মভূমি।। শ্যামল হুদাতী সমুদ্র আর অস্তিত্ব ।। সুব্রত চৌধুরী রাজা ছিলেন জুবিন গর্গ ।। গঙ্গা 'অনু'   আদ্যাশক্তি মহামায়ার বাংলা বারো মাসের বারো রূপ ।। অর্হণ জানা মেধাদাদুর আসর ।। রণেশ রায় বৈজ্ঞানিক মা...

বস্তু, চেতনা এবং কবি ।। সজল চক্রবর্তী

বস্তু, চেতনা এবং  কবি সজল চক্রবর্তী  "যেখানে পৌঁছায় না রবি,, সেখানে পৌঁছে যান কবি।" এই ছোট্ট কবিতা টি অনেক পুরনো  এবং বহু পরিচিত, তথাপি এর তাৎপর্য এখনো হারায় নি। তবে, কথা হ'চ্ছে -আমরা তো  রবি-কবিকে একত্রেই পেয়ে যাই আমাদের ঋষি-প্রতিম কবি রবীন্দ্রনাথের মধ্যে। আর তখনই জেনে যাই উপরোক্ত ছোট কবিতার প্রণিধানযোগ্যতা ।  ... এবার শুনে নেয়া যাক, ঋষি-প্রতিম কবির মুখ নিঃসৃত বাণী:- "তোমার অসীমে প্রাণমন লয়ে যত দূরে আমি যাই ...." অর্থাৎ আমাদের প্রিয়তম কবি অনায়াসে পৌঁছে যান সৃষ্টির অসীমে , যা আমাদের পক্ষে আদৌ সম্ভব নয়। এখানে কবির চেতনা সুদূর প্রসারী! ... প্রকৃত প্রস্তাবে কবি অতিন্দ্রীয় জগতের এক নাগরিক। তাঁর কাছে তাই চেতনা বা চৈতন্যেরই প্রাধান্য। ...এখন আসছি, বস্তু এবং চেতনার মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে।  ... আমি একজন অতি সাধারন মানুষ, তাই এই ব্যাপারটাকে কবিদের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার চেষ্টা ক'রছি। তবে আমার সামান্য জ্ঞান থেকে একটা সাধারণ কথা সেরে নি'। আমরা সাধারণত ব'লে থাকি-- সূর্য পূর্বদিকে ওঠে। প্রকৃত অর্থে কি তাই ? আসলে সূর্য যেদিকে ওঠে ,আমরা  সেই দিকটাকে নামাঙ্কিত ক...

দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট ও সন্নিহিত অঞ্চলের কথ্য শব্দ, উচ্চারণ, বাগ্্ধারা ইত্যাদি ।। অরবিন্দ পুরকাইত

স্থানীয় কিছু কথ্যশব্দ, উচ্চারণ, বাগধারা ইত্যাদি  (পর্ব—সাত) অরবিন্দ পুরকাইত স্থানীয় কিছু কথ্যশব্দ, উচ্চারণ, বাগ্্ধারা ইত্যাদির সংগ্রহ প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল রামচন্দ্র নস্কর সম্পাদিত 'চর্যা' পত্রিকায়, ২০১৬ সালে। সে সংগ্রহ যায় নিজের 'গাঁ-ঘরের কথা' পুস্তকে, ১৪২৩ সনে। পরে এই ব্লগজিনেও কিছু সংগ্রহ প্রকাশিত হয় ১৪২৮ সনের আশ্বিন মাসে, পৌষ ১৪২৯-এ, আষাঢ় ১৪৩০, নববর্ষ ১৪৩১ ও কার্তিক ১৪৩১ সংখ্যায়। তার পরেও ধীরে ধীরে আরও কিছু সংগৃহীত হয়েছে, সেগুলিই এখানে রাখা হল। নিজের আগের সংগ্রহে এসে-যাওয়া শব্দ যদি এখানে এসে থাকে, তা বাড়তি বা ভিন্ন কিছু বলার প্রয়োজনেই। নিজের আগের সংগ্রহ খুব ভাল করে যে মিলিয়েছি তা নয়, পুরো সংগ্রহ একত্র করার সময় তা করা যাবে যতটা সম্ভব নিখুঁত করে। আগে আগে সংগ্রহ প্রসঙ্গে কিছু কথা বলা হয়েছে, বিশেষত প্রথম প্রকাশের সময় একটু বিশদভাবে। এখানে আর কিছু বলা নয়, কেবল সংগ্রহটাই তুলে ধরা গেল। অখেজো/অখেজে — অকেজো থেকে। আদরের তিরস্কার হিসাবেই মূলত প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। পাজি। অচিমিতি — (উচ্চারণ ওচিমিতি) আচমকা, হঠাৎ। অদীয় — প্রচুর, অজস্র। অদ্বিতীয় থেকে ক...

দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত ।। রণেশ রায়

দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত রণেশ রায় ভূমিকা দর্শনের ইতিহাসে বস্তু ও চেতনার সম্পর্ক মানবচিন্তার গভীরতম প্রশ্ন। অধিবিদ্যা ভাবকে মুখ্য ধরে, বস্তুকে গৌণ বলে মনে করে। বিপরীতে মার্কস ও এঙ্গেলস বলেছেন—বস্তুই মুখ্য এবং চেতনা তার প্রতিবিম্ব। মানুষ যখন প্রথম আলোর মুখ দেখেছিল, তখনই সে বিস্ময়ে প্রশ্ন করেছিল—আমি কে, কোথা থেকে এলাম, আর এই দৃশ্যমান জগতের বাইরে কিছু আছে কি? এই প্রশ্ন থেকেই জন্ম নিয়েছিল দর্শনের দুই বিপরীত স্রোত—ভাববাদ আর বস্তুবাদ। ভাববাদ বলেছিল—"ভাবই প্রথম," আর মার্কস বললেন—"না, বস্তুই প্রথম।" এই দুই প্রান্তের মাঝখানে আমি দেখি এক সেতুবন্ধন, যেখানে বস্তু, স্নায়ু ও চেতনা একে অপরকে গড়ে তোলে, আর তাদের এই ত্রিত্বের নৃত্যেই সৃষ্টি হয় জীবন ও কল্পনার জগৎ। ভাবববাদ এক সর্বশক্তিমান শক্তির কল্পনা করে যা এই বস্তুজগতের স্রষ্টা। আর এখান থেকে ধর্ম ও ধর্মীয় ভাবধারার সৃষ্টি। আমার এই প্রবন্ধে আমি মার্কসীয় দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদকে আধুনিক বৈজ্ঞানিক আলোকে বোঝার চেষ্টা করেছি। আমি দেখাবার চেষ্টা করবো কিভাবে ইন্দ্রিয় এবং স্নায়ুজগৎ বস্তু ও চেতনাকে সংযুক্ত করে এবং কল্পলোকের জন্ম দেয়...

চাঁদে জীবন ।। শমীক সমাদ্দার

চাঁদে জীবন  শমীক সমাদ্দার                           চন্দ্রযান দুরন্ত তৈরি, রকেটের উপর ভর করে চন্দ্রযান চাঁদে অবতরণ করবে। মাধ্যাকর্ষণ শক্তি পেরিয়ে মহাকাশযান চাঁদের কক্ষপথে  স্থাপন করা হয়েছে। চন্দ্রাযান চাঁদের মাটিতে পা রাখবে সময়ের কাউন্ট ডাউন চলছে। সমস্ত নিয়ন্ত্রণ স্পেসস্কাই গাবেষণা কেন্দ্র কতৃক নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে প্রযুক্তি বিজ্ঞান অতল গভীরতায় বাসা বাঁধে। পরিচয়টা দিয়ে দিলাম এই স্পেসসিপে রয়েছে তিনজন নভোচর, একজনের নাম সাইমন আর এক জনের নাম রেমন্ড, আর এদের সঙ্গে একজন মহিলা আছে তার নাম মেরিনা। চন্দ্রযান চন্দ্রপৃষ্ঠে সফলভাবে অবতরণ করেছে। চন্দযান দুরন্ত চাঁদের পূর্ব -পশ্চিম অক্ষরেখা বরাবর অবতরণ করেছে। আলো আঁধারের গভীরতায় বড় বড় পাথরের পিণ্ড, চাঁদের সার্ফেসের উপরে পাথর জল দেখা যায়। জমাট বাঁধা অক্সিজেন আর কার্বনডাই অক্সাইড। ওরা এখানে এসেছে এক রহস্য উদ্ঘাটন করতে। যে স্থানে ওরা অবতরণ করেছে সেখানে ১০ বছর আগে ওরা এসেছিলো। রুশ সরকার ওদের দেশের ছাত্র ছাত্রী কে মহাকাশে চাঁদে পাঠাতে চায়। ওরা কেন এসেছে সেটা এখনো অধরা। সাইমনের বর্...

কবিতা ।। অরণ্যকন্যা ।। অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়

  অরণ্যকন্যা অরিন্দম চট্টোপাধ্যায় অরণ্যকন্যার দৃষ্টির ভেতর বিষাদ বিন্দু ফোঁটা ফোঁটা জলের মতো গড়িয়ে যায়, হয়ে যায় কোন নদীপথ দৃষ্টি ভেঙে ভেঙে চলে যায় কোন এক শূন্য পথে অরণ্যকন্যার হৃদয়ের ভেতর ভাঙে যতো বৃক্ষপত্র নতুন পত্র পুষ্পের খোঁজ নেই ঠোঁট জুড়ে সমুদ্রকাঁপন বুদবুদের মতো অস্ফুট হয়ে উচ্চারিত হয় কোন অক্ষর শব্দ আর তাঁর শরীর থেকে ছড়িয়ে যায় হয়ে যায় একটা অদৃশ্য কবিতা...    ================== @ অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়,  বেহালা, কলকাতা -৭০০০৬০,  

জনপ্রিয় লেখা

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ -- "ত্রয়ী কাব্য" ------------------------------------------------------------------------------ সুনন্দ মন্ডল নবীনচন্দ্র সেন সাহিত্যে তথা বাংলা কবিতার জগতে এক অবিস্মরণীয় নাম। তিনি চট্টগ্রাম জেলার নওয়াপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ১৮৪৭ সালে তাঁর জন্ম এবং মত্যু ১৯০৯ সালে। বঙ্কিমচন্দ্র তাঁকে 'বাংলার বায়রন' বলেছেন। ‎জীবৎকালীন যুগে আত্মপ্রত্যয়ের মধ্যে জাতীয় চরিত্র আত্মস্থ করে নতুন সংস্কারে প্রয়াসী হয়ে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখেছেন।মধুসূদন-হেমচন্দ্র-নবীনচন্দ্র--এই তিন কবি বাংলা কাব্যধারায় প্রাণ সঞ্চার করেছিলেন। বিশেষত মহাকাব্য লেখার দুঃসাহস দেখিয়েছিলেন। এদিক থেকে মধুসূদন দত্ত একজন সফল মহাকাব্যিক। তাঁর 'মেঘনাদ বধ' কাব্যের মত গভীর ও ব্যঞ্জনাময় না হলেও নবীনচন্দ্র সেনের 'ত্রয়ী' কাব্য বিশেষ মর্যাদা দাবি করতেই পারে। তাছাড়া 'ত্রয়ী' কাব্যে ধর্মীয় ভাবধারার আবেগ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ‎ ‎নবীনচন্দ্র সেন বহু কাব্য লিখেছেন। যেমন- 'অবকাশরঞ্জিনী','পলাশীর যুদ্ধ', 'ক্লিওপেট্রা', 'রঙ্গমতী', 'খ্রীষ্ট', ...

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা শ্রীজিৎ জানা "সময় চলিয়া যায় নদীর স্রোতের প্রায়"। স্রোতের ধারা তার দু'প্রান্তে রেখে যায় ভাঙাগড়ার চিহ্ন। কালের দৃশ্যপটেও পরিবর্তনের ছবি অনিবার্যভাবেই চোখে পড়ে। সমাজ সময়ের ছাঁচে নিজেকে গড়ে নেয় প্রতিনিয়ত।  সেখানে মনে নেওয়ায় বাধা থাকলেও,মেনে নেওয়ার গাজোয়ারি চলে না। ফলত কাল বদলের গাণিতিক হিসেবে জীবন ও জীবিকার যে রদবদল,তাকেই বোধকরি সংগ্রাম বলা যায়। জীবন সংগ্রাম অথবা টিকে থাকার সংগ্রাম।  মানুষের জীবনযাপনের ক্ষেত্রে আজকে যা অত্যাবশ্যকীয় কাল তার বিকল্প রূপ পেতে পারে অথবা তা অনাবশ্যক হওয়াও স্বাভাবিক। সেক্ষেত্রে উক্ত বিষয়টির পরিষেবা দানকারী মানুষদের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হওয়া অস্বাভাবিক নয়। এক কালে গাঁয়ে কত ধরনের পেশার মানুষদের চোখে পোড়তো। কোন পেশা ছিল সম্বৎসরের,আবার কোন পেশা এককালীন।  সব পেশার লোকেরাই কত নিষ্ঠা ভরে গাঁয়ে  তাদের পরিষেবা দিত। বিনিময়ে সামান্য আয় হত তাদের। আর সেই আয়টুকুই ছিল  তাদের সংসার নির্বাহের একমাত্র উপায়। কালে কালান্তরে সেই সব পেশা,সেই সব সমাজবন্ধুরা হারিয়ে গ্যাছে। শুধুমাত্র তারা বেঁচে আছে অগ্রজের গল্পকথায়,আর বিভিন...

গ্রন্থ আলোচনা: শর্মিষ্ঠা দেবনাথ

প্রতিবাদ যখন অগ্নিবাণী বাংলাদেশে নারীমুক্তি ও নারী আন্দোলনের পুরোধা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ১৯৯তম জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদিত হল " আসিফা এবং.." কাব্য সংকলনটির মধ্যদিয়ে।সংকলনটির বিশেষত্ব হল,এটি উৎসর্গ করা হয়েছে নারীর সম্মান রক্ষার আন্দোলনের যোগ্যতম ব্যক্তি শহীদ শিক্ষক বরুন বিশ্বাসকে। সংকলক প্রকাশক সন্দীপ সাহু নিজে এবং বিশিষ্ট কবি সাহিত্যিকদের দিয়ে লিখিয়ে নিয়েছেন এমন কিছু কবিতা, যা শুধুমাত্র শব্দ ও ছন্দের অনুবন্ধ নয়, এক একটি অগ্নিবাণী।আসলে জীবনকে দেখার স্বাতন্ত্র‍্যে কবিরা সব সময়ই অগ্রগণ্য এবং অনন্য।যুগ ও জীবন দ্বন্দ্বের কণ্ঠস্বরকে আশ্রয় করে,একদিকে মনের প্রবল দাহ ও অন্যদিকে  নির্যাতিতা শিশুকন্যা ও নারীর প্রতি মনের গভীর আকুলতা থেকে প্রকাশ পেয়েছে "আসিফা এবং" এর  কবিতাগুলি।এক অন্ধকার সময়ের মুখোমুখি আমরা,সেই অন্ধকার আমাদের নিয়ে এসেছে সামাজিক অবক্ষয়ের শেষধাপে যেখানে নৈতিকতা,পাপবোধ,গ্লানিকে সরিয়ে রেখে, সমাজের বানানো নিয়মকে তোয়াক্কা না করে,অনায়াস দক্ষতায় ও ক্ষিপ্রতায় নিজেরই ধর্মচেতনাকে জলাঞ্জলি দিয়ে কিছু মানুষ তার পশুত্বের পরিচয় দিয়েছে ধর্ষণ ও ন...

শ্যামাপদ মালাকারের কবিতা

চোখ """"""" নদী, অরণ্য, রাতের ফালি চাঁদ- সবেই তো আমার...স্বর্ণপিঁড়িটাও!। সেদিন, শুকতারাটার গা' মাপতে গিয়ে মনে হল, --ওরা আমার চেয়েও সুখী? দেখিনা একবার গাইতি-শাবল চালিয়ে... চালালাম। জল-মাটি ভেজা একটা 'চোখ' কুড়িয়ে ফিরলাম! সেই চোখদিয়ে দেখি-- শেষ বিকেলের নিরন্ন আঁচে ঝলসানো বুকে নীড়ে ফিরছে ধূলিমাখা কত কাল পা, কি শান্তি - কি তৃষ্ণা! পাতাক্ষোয়া কোদালেরর মাথায় ঝরেপড়া ললাটের ঘামে, কারা যেন জীবন শাণ দেয়! রুক্ষঠোঁটের আবরণে এক সময় নেমে আসে শিশিরস্নাত কালনিশি-- মাঝের ব্যবধান মুছে দেয় প্রতিশ্রুতির ভীড়- - পূর্বজনমের নিদর্শনচুম্বন শেষে হেরে যায় কার মমতাজ-- ম্লান হয়ে যায় কত পিঁড়ি! ... ম্লান হয়ে যায় কত পিঁড়ি! ... ম্লা...

কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা: এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায় ।। পার্থ সারথি চক্রবর্তী

  কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা : এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায়  পার্থ সারথি চক্রবর্তী  কথায় বলে বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। রাজার শহর কোচবিহারের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা আরো অনেক বেশি। দুর্গাপূজা আর দীপাবলির মতো দু'দুটো বিরাট মাপের উৎসবের রেশ কাটতে না কাটতেই, এ শহর ভাসে রাস উৎসবের উন্মাদনায়। মদনমোহন ঠাকুর কোচবিহারের প্রাণের ঠাকুর। তাঁকে নিয়ে সবার আবেগ আর শ্রদ্ধা ও ভালবাসা এখানে বাঁধনছাড়া। এক অপূর্ব মিলনোৎসবের চেহারা নেওয়া এই উৎসব ঐতিহ্যবাহী ও ঐতিহাসিক। জন, মত, সম্প্রদায়ের উর্ধে এই উৎসবের গ্রহণযোগ্যতা। সময়ের কষ্টি পাথরে পরীক্ষিত! এক প্রাণের উৎসব, যা বহুদিন ধরেই গোটা উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ উৎসবে পর্যবসিত।কোচবিহারের এই রাস উৎসবকে কেন্দ্র করে যে মেলা হয় তাও সময়ের হাত ধরে অনেক বদলে গেছে। এসেছে আধুনিকতার ছোঁয়া! শৈশবে বাবার হাত ধরে যে মেলা দেখেছি তা চরিত্র ও আকৃতি দু'দিক থেকেই বদলে গেছে। গত পঁচিশ বছর ধরে খুব কাছে থেকে এই উৎসব ও মেলা দেখা, অনুভব করার সুযোগ হয়েছে। যা দিনদিন অভিজ্ঞতা ও প্রাপ্তির ঝুলিকে সমৃদ্ধ করে গেছে প্রতি ক্ষেত্রেই।  খুব সংক্ষেপে এই উৎসবের ইতিহাস না জানাটা কিন্তু অবিচারই ...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো,  তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) য...

মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা 2024 সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি (লেখক ও সম্পাদকীয় দপ্তরের কথোপকথন আকারে) --কী পত্রিকা? --নবপ্রভাত। --মুদ্রিত না অনলাইন? --মুদ্রিত। --কোন সংখ্যা হবে এটা? --বইমেলা 2024। --কোন কোন ধরনের লেখা থাকবে? --প্রবন্ধ-নিবন্ধ, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া। --বিশেষ কোন বিষয় আছে? --না। যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে। --শব্দ বা লাইন সংখ্যার কোন বাঁধন আছে? --না। নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো (যেমন, কবিতা 12-14 লাইনের মধ্যে, অণুগল্প কমবেশি 200/250শব্দে)। তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়। --ক'টি লেখা পাঠাতে হবে? --মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। --ফেসবুক বা অন্য কোন প্লাটফর্মে প্রকাশিত লেখা কি পাঠানো যাবে? --না। সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। --পত্রিকা কোন সময়ে প্রকাশিত হবে? --জানুয়ারি 2024-এর দ্বিতীয় সপ্তাহে। --লেখা পাঠানোর শেষতারিখ কত? -- 17 ডিসেম্বর 2023। --কীভাবে পাঠাতে হবে? --মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। --লেখার সঙ্গে কী কী দিতে হবে? --নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) --বিশেষ সতর্কতা কিছু ? --১)মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন '...

উৎসবের সৌন্দর্য: সেকালে ও একালে।। সৌরভ পুরকাইত

  উৎসবের সৌন্দর্য:  সেকালে ও একালে   সৌরভ পুরকাইত বাংলার উৎসব বাংলার প্রাণ। প্রতিদিনের জীবনযাপনের মধ্যে যখন মন ক্লান্ত হয়ে পড়ে তখন তাকে বেঁচে থাকার রসদ যোগায় এই উৎসব। কথায় বলে 'বারো মাসে তেরো পার্বণ'।মন আনন্দই চায়।তাই তাকে সজীবতা দিতে,পরিবারের,সমাজের ভালো-মন্দের কথা মাথায় রেখে মানুষ নিজেই সৃষ্টি করে নিয়েছে নানাবিধ উৎসবগুলিকে। একেবারে প্রাচীন কাল থেকে আজ পর্যন্ত মানুষ কখনোই উৎসব বিমুখ ছিল না।উৎসবই তাকে ঘর থেকে বাইরে টেনে এনেছে,চিনতে শিখিয়েছে আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার আনন্দকে। উৎসব আসলে প্রাণের সাথে প্রাণের যোগ, হৃদয়ের সাথে হৃদয়ের যোগ।রবীন্দ্রনাথ বলেছেন 'সত্য যেখানেই সুন্দর হয়ে প্রকাশ পায় সেইখানেই উৎসব'।হৃদয়ের সেই সুকোমল বৃত্তির জাগরণ যেন ফুটে ওঠা ফুলেরই মতো সত্য ও সুন্দর।এই জাগরণই উৎসব। তাই নানা কিছুর মধ্য দিয়ে,নানা উপলক্ষ্যে এই উৎসব প্রকাশ পায়। প্রাচীনকালে মানুষের হাতে না ছিল পসার, না ছিল পসরা।ছিল মনের আন্তরিকতা,মানুষকে কাছে টেনে নেবার ক্ষমতা।সেটাই ছিল উৎসবের সৌন্দর্য। তাই সেদিনের উৎসবে ক্ষুদ্র,তুচ্ছ উপকরণও প্রাণের উচ্ছ্বাসে মহৎ হয়ে উঠত।সেকালের উৎসবে লোক দেখানো ব্যাপার কিছু ...

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

বসন্তের কোকিল তুমি   বিচিত্র কুমার                      (০১) তোমার দু-আঁখির গহীন অরণ্যে একটা স্বপ্নের বহমান নদী রয়েছে, তারই রেশ ধরে আমি হেঁটে চলি অজানা বসন্তের পথে নীর উদ্দেশ্যে। সে চলার কোন শেষ সীমা নেই তাই আমার বিষণ্ণ একতারা সন্ন্যাস খুঁজে ফিরে , কবে তুমি বুঝবে অনুশ্রী মনের পর্দা খুলে একুশ বসন্ত তোমার রঙ ছিটিয়ে যাচ্ছে অচিনপুরে। এদিকে আমার দেহের প্রতিটি শিরা ধমনীতে প্রবাহিত হচ্ছে তোমার ভালোবাসার একটু উষ্ণতা পাবার জন্যে, শুধু অনুভবে তাণ্ডব উচ্ছাসিত হচ্ছে--- যেদিকে তাকাই --- ফুলে ফুলে ভ্রমর গুনগুনিয়ে উড়ে উড়ে পরে বসন্তের কোকিল গান গায় নব বসন্তে, তোমার দুই চোখে আমার একই ছায়া রয়ে যায় উতলা ভালোবাসার সীমান্তে।                 (০২)        এক রক্তাক্ত বসন্তের স্মৃতি কোন এক উতলা বসন্তের সকালে পুষ্পবনে ফুটেছিল একটি টকটকে লাল গোলাপ, তার সাথে হয়েছিলো দেখা প্রথম ফাগুনে হয়েছিল দুজনার এ জীবনের আলাপ।  তারপর প্র...

অনুভবে, অনুধ্যানে অনালোকিত কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী ।। সুপ্রিয় গঙ্গোপাধ্যায়

"এ কালে একটু লেখাপড়া জানা থাকাতে, এবং বঙ্গভাষায় অনেক গুলি পাঠ্য পুস্তক হওয়াতে কেবল পরনিন্দা করিয়া সময় কাটাইতে তাঁহাদের আবশ্যকও হয় না, প্রবৃত্তিও হয় না। …নিতান্ত সখ্যতা বা আত্মীয়তা না থাকিলে, সকল পেটের কথা খুলিয়া নিঃশ্বাস ছাড়িয়া তৃপ্তিলাভ করা, এ কালের মেয়েরা পছন্দ করেন না। তাঁহারা বইখানি, কার্পেটটুকু, নিজের স্বামী পুত্র লইয়া দিন যাপন করিতে বা একেলা থাকিতে কষ্ট বোধ করেন না।" —শরৎকুমারী চৌধুরাণীর এই লেখা (ভারতী ও বালক/ আশ্বিন কার্তিক, মাঘ/ ১২৯৮) দেখে বুঝতে অসুবিধা হয় না উনিশ শতকে নারীর লেখাপড়া শেখার উদ্দেশ্য ছিল মূলত আত্মমুক্তির জন্য। শুধু লেখাপড়া শেখা নয়, সাহিত্য সৃষ্টিতেও ছয়'এর দশক (উনিশ শতকের) থেকে নারীরা যে ধারা সূত্রপাত করেছিল তা নারীর আত্মমুক্তির পথকেই প্রসারিত করেছিল। ছয়'এর দশকের পূর্বেই ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে প্রথম ছাপার হরফে নারী রচিত কাব্য 'চিত্তবিলাসিনী' প্রকাশিত হয়। লেখেন কৃষ্ণকামিনী দাসী। ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে কবি ঠাকুরাণী দাসীর নাম উঠে আসতে থাকে, যিনি কবিতার পাশাপাশি গদ্যও লিখতেন। ঠিক সেই বছরই জন্মগ্রহণ করেন কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী, যাঁর কবিতা লেখা আত্মমুক্...

বছরের বাছাই

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৪তম সংখ্যা ।। ফাল্গুন ১৪৩১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

  এই সংখ্যায় একটি গ্রন্থ আলোচনা ও একটি ধারাবাহিক রচনা ছাড়া সব লেখাই ভাষা দিবস, মাতৃভাষা, ভাষাচেতনা ও ভাষা সমস্যা বিষয়ক রচনা। লেখাগুলি এই সংখ্যাকে অনেকটাই সমৃদ্ধ করেছে। পড়ুন। শেয়ার করুন। মতামত জানান। লেখকগণ নিজের নিজের লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন যতখুশি, যে মাধ্যমে খুশি। কিন্তু স্ক্রিনশট শেয়ার নৈব নৈব চ!  অন্য বিষয়ের লেখাগুলি আগামী সংখ্যার জন্য রইল।  সকলকে ধন্যবাদ, অভিনন্দন। ভালো থাকুন।   --সম্পাদক, নবপ্রভাত। ==  সূ  চি  প  ত্র  == প্রবন্ধ-নিবন্ধ অমর ২১শে ফেব্রুয়ারি বাঙ্গালীর বাংলা ভাষা দুর্জয় দিবস।। বটু কৃষ্ণ হালদার ভাষা শহীদদের পঁচাত্তর বছর।। অনিন্দ্য পাল একুশে ফেব্রুয়ারি : বাঙালির শ্রেষ্ঠ অশ্রুবিন্দু।। জীবনকুমার সরকার কবিগানের সাহিত্যিক ও সমাজতাত্ত্বিক মূল্য।। বারিদ বরন গুপ্ত বিপন্ন মাতৃভাষা ও সংস্কৃতি।। শ্যামল হুদাতী মায়ের দুধ আর মাতৃভাষা।। প্রদীপ কুমার দে একুশে ফেব্রুয়ারি : কিছু কথা।। বনশ্রী গোপ বাংলায় কথা বাংলায় কাজ।। চন্দন দাশগুপ্ত বিপন্ন মাতৃভাষা ও তার মুক্তির পথ।। মিঠুন মুখার্জী. হে অমর একুশে, তোমায় ভুলিনি, ভুলব না।। মহম্মদ মফিজুল ইসলা...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮৭তম সংখ্যা ।। জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ মে ২০২৫

  প্রচ্ছদ চিত্র: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সূচিপত্র রবীন্দ্রনাথ এবং কয়েকজন নারী ।। অনিন্দ্য পাল পরাবাস্তববাদ ও বাংলায় জীবনানন্দের কাব্যচর্চা ।। রণেশ রায় প্রতীক্ষা ।। চন্দন দাশগুপ্ত আশ্রয় ।। সায়নী সাহা বয়স্ক শিক্ষাকেন্দ্র ।। দেবাংশু সরকার প্রণামের প্রভু ।। সুপ্রভাত মেট্যা দুর্ভাগ্যের সম্মুখ সমরে ।। সমীর কুমার দত্ত আচমকা শরৎ ।। অর্ণব সামন্ত প্রতিধ্বনি ✍️ সুবীর কুমার ঘোষ জীবন যেখানে যেমন ।। আরজু মুন জারিন বছর সীমান্তে হিসেব নিকেশ ।। রানা জামান চারটি কবিতা ।। বিবেকানন্দ নস্কর আমরা আছি ।। লালন চাঁদ চাওয়া ।। মাথুর দাস কাগজ ফুলে ।। সফিউল মল্লিক সময়ের স্রোত ।। দুর্গাদাস মিদ্যা তুমি মানুষ ।। বদরুল বোরহান দিঘার সমুদ্র ।। মাখনলাল প্রধান পুস্তক-আলোচনা ।। অরবিন্দ পুরকাইত সংযম ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত  চেনা প্রতিবেশী (প্রথম পর্ব) ।। দীপক পাল খেলার মাঠ ।। তূয়া নূর বন্ধু শ্যামলকান্তি ।। শংকর ব্রহ্ম তুমি তোমার মতো থাকলে ।। সত্যেন্দ্রনাথ বেরা গ্রীষ্মে খুবই হিংস্র রবি ।। জগবন্ধু হালদার স্বপ্ন দর্শন ✍️ পার্থ প্রতিম দাস মৌন মুখরতা ।। মুসা মন্ডল রুদ্র বৈশাখ ।। দীনেশ সরকার চিহ্নিত পদযুগ পদাঘাত ।। দেবাশীষ...

প্রচ্ছদ।। ৮৩তম সংখ্যা ।। মাঘ ১৪৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ।। প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র

  বিঃ দ্রঃ আগামী ফেব্রুয়ারি সংখ্যার জন্য ভাষা দিবসের কথা মাথায় রেখে লেখা পাঠান। email: nabapravatblog@gmail.com  সূচিপত্র ফিচার।। গোপাল ভাঁড়ের অজানা সত্য ।। লোকনাথ পাল প্রবন্ধ ।। মসুয়ার রায় পরিবার এবং বঙ্গসংস্কৃতি ।... প্রবন্ধ ।। সুধীন্দ্রনাথ দত্ত: কাব্যের দার্শনিক ও ন... কবিতায় সেতুবন্ধন (তৃতীয় অংশ) শিল্পবিপ্লবোত্তর কাল... রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর বিদ্রোহী প্রেমের কবিতা: ... কবিতা ।। এই মন ভালো নেই দিনে ।। সুপ্রভাত মেট্যা কবিতা ।। জোছনা আলোর স্বপ্ন ।। তুষার ভট্টাচাৰ্য কবিতা ।। নিঃস্ব হবো ।। লালন চাঁদ কবিতা ।। ভালোলাগা  ।। আজিজ উন নেসা  গল্প ।। স্বীকারোক্তি ।। চন্দন দাশগুপ্ত কবিতা ।। শীতের দিন ।। প্রশান্ত কুমার মন্ডল কবিতা ।। শীতকাল ।। অঙ্কিতা পাল নাসির ওয়াদেনের দুটি কবিতা ভূতের লেখা ছড়া ।। বদরুল বোরহান কবিতা ।। ব্যস্ত ।। আলাপন রায় চৌধুরী ছোটগল্প ।। লম্বুর স্বপ্নপূরণ ।। পরেশ চন্দ্র মাহাত কবিতা ।। সৎকার ।। সুমিত মোদক কবিতা।। শীত বৈচিত্র্য ।। সুমিতা চৌধুরী পুস্তক-আলোচনা ।। নিউটনের আপেল ও প্রেমিকা ।। অরবিন্... গল্প।। শান্তির পথে …...।। বন্দনা সেনগুপ্ত কবিতা ।। মা...

সূচিপত্র ।। ৮৯তম সংখ্যা ।। শ্রাবণ ১৪৩২ জুলাই ২০২৫

সূচিপত্র   প্রবন্ধ ।। বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় ।। মাখনলাল প্রধান প্রবন্ধ ।। শ্রমিকের অধিকার ।। চন্দন দাশগুপ্ত প্রবন্ধ ।। ভিনগ্রহীদের সন্ধানে ।। শ্যামল হুদাতী প্রবন্ধ ।। নারীমর্যাদা ও অধিকার ।। হিমাদ্রি শেখর দাস কবিতা ।। মশালের রং তুলি ।। তূণীর আচার্য কবিতা ।। জললিপি ।। রূপক চট্টোপাধ্যায় গুচ্ছকবিতা || শিশির আজম নিবন্ধ ।। পূনর্জন্ম ।। শংকর ব্রহ্ম মুক্তভাবনা ।। কোলাহল তো বারণ হলো ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত গল্প ।। গানের হাড় ।। শুভজিৎ দত্তগুপ্ত গল্প ।। শিকড়ের খোঁজে ।। সমীর কুমার দত্ত সুপ্রভাত মেট্যার পাঁচটি কবিতা গ্রন্থ-আলোচনা ।। আবদুস সালামের কাব্যগ্রন্থ 'অলীক রঙের বিশ্বাস'।। তৈমুর খান অণুগল্প ।। হরিবোল বুড়ো ।। সুমিত মোদক রম্যরচনা ।। গোয়েন্দা গোলাপচন্দ আর প্রেমের ভুল ঠিকানা ।। রাজদীপ মজুমদার দুটি গল্প ।। মুহাম্মদ ফজলুল হক দুটি কবিতা ।। তীর্থঙ্কর সুমিত কবিতা ।। মেঘমুক্তি ।। বন্দনা পাত্র কবিতা ।। ব্যবচ্ছিন্ন শরীর ।। কৌশিক চক্রবর্ত্তী কবিতা ।। শমনচিহ্ন ।। দীপঙ্কর সরকার কবিতা ।। ভালোবাসার দাগ ।। জয়শ্রী ব্যানার্জী কবিতা ।। ফণীমনসা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ছড়া ।। আজও যদি ।। বদ্রীন...

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো,  তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) য...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮২তম সংখ্যা ।। পৌষ ১৪৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

  সূচিপত্র অন্নদাশঙ্কর রায়ের সাহিত্য: সমাজের আয়না ।। বিচিত্র কুমার প্রবন্ধ ।। বই হাতিয়ার ।। শ্যামল হুদাতী কবিতায় সংস্কৃতায়ন (দ্বিতীয় ভাগ ) ।। রণেশ রায় পুস্তক-আলোচনা ।। অরবিন্দ পুরকাইত কবিতা ।। লেগে থাকা রোদ্দুরের ঘ্রাণের মতো ।। জয়শ্রী ব্যানার্জি কবিতা ।। ভুল ।। সুপ্রভাত মেট্যা কবিতা ।। উন্মেষ ।। বিশ্বজিৎ সেনগুপ্ত কবিতা ।। গার্হস্থ্য ।। বিবেকানন্দ নস্কর একগুচ্ছ বিজয়ের কবিতা ।। বিচিত্র কুমার গল্প ।। পোষ্য ভূত ।। সমীর কুমার দত্ত কবিতা ।। আশপাশ ।। প্রতীক মিত্র কবিতা ।। মেঘ ।। তীর্থঙ্কর সুমিত অণুগল্প ।। বংশীবদনের সুখদুঃখ ।। দীনেশ সরকার কবিতা ।। গভীর রাত ।। সুনন্দ মন্ডল তিনটি কবিতা ।। সুশান্ত সেন ভালোবাসার বাসা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত অণুগল্প ।। শিক্ষকের সম্মান ।। মিঠুন মুখার্জী কবিতা।। প্রশ্ন ।। জীবন সরখেল কবিতা ।।ক্ষরিত সে পথ ।। রহিত ঘোষাল কবিতা ।। রক্ত দিয়ে কেনা ।। মুহাম্মদ মুকুল মিয়া কবিতা ।। কংক্রিট ।। আলাপন রায় চৌধুরী ছড়া ।। শীত নেমেছে ।। রঞ্জন কুমার মণ্ডল কবিতা ।। কিছু শব্দ ।। সমীর কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় কবিতা ।। শীতের নগ্নতা ।। রানা জামান কবিতা ।। পথ চলা ।। পাভেল আমান বেদ পু...

প্রচ্ছদ, সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র ।। ৮৬তম সংখ্যা ।। বৈশাখ ১৪৩২ এপ্রিল ২০২৫

সম্পাদকীয় এই সংখ্যাটি বাংলা নববর্ষ বিষয়ক সংখ্যা। নৱৰ্ষকেন্দ্রিক বহু তথ্যপূর্ণ লেখা এই সংখ্যাটিকে সমৃদ্ধ করেছে। বাংলা নববর্ষ উদযাপনের ইতিহাস, রীতিনীতি, উৎসব, পার্বন, লোকাচার, রূপান্তর বহুবিধ বিষয় প্রকাশিত হয়েছে এই সংখ্যার লেখাগুলিতে। এই সংখ্যার বাছাই কিছু লেখার সঙ্গে আগামীতে আরও কিছু লেখা সংযুক্ত করে বাংলা নববর্ষ বিষয়ক একটি মুদ্রিত সংখ্যা প্রকাশ করার ইচ্ছে রইল।  সকলকে নববর্ষের আন্তরিক শুভকামনা জানাই। উৎসবে আনন্দে থাকুন, হানাহানিতে নয়। ধর্ম-ব্যবসায়ীদের চক্রান্ত ব্যর্থ করে সহনাগরিকের পাশে থাকুন। মনে রাখুন, ধর্মকে মানুষই সৃষ্টি করেছে। ঈশ্বর আল্লা গড ইত্যাদির জন্মদাতা মানুষই। মানুষকে ভালোবাসুন। মানুষের পাশে থাকুন।  নিরাশাহরণ নস্কর  সম্পাদক, নবপ্রভাত।  সূচিপত্র প্রবন্ধ-নিবন্ধ-স্মৃতিকথা পয়লা বৈশাখ ।। সিদ্ধার্থ সিংহ নববর্ষকেন্দ্রিক মেলা, পার্বন, উত্সব, লোকাচার ।। সবিতা রায় বিশ্বাস নববর্ষ আবাহন ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে এবং বিভিন্ন দেশে ।। তুষার ভট্টাচার্য নববর্ষের সেকাল ও একাল ।। হিমাদ্রি শেখর দাস নববর্ষের হাল-হকিকৎ ।। শংকর ব্রহ্ম বোশেখি বাঙালি নাকি পোশাকি বাঙালি? ।। দিব্যেন্দু...

প্রবন্ধ ।। বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় ।। মাখনলাল প্রধান

বাংলা যাত্রা ও নাট‍্যশিল্পে অবক্ষয় মাখনলাল প্রধান বাংলার শিল্প-সংস্কৃতির জগতে যাত্রা শিল্প তথা নাট‍্যশিল্পে মড়ক নেমে এসেছে । যাত্রা শিল্পের মড়কে শুধু কোভিড নয় তার বহুপূর্ব থেকেই অর্থনৈতিক বিপর্যয় , শিক্ষাক্ষেত্রে বন্ধ‍্যাত্ব এবং গ্ৰাম বাংলার পটপরিবর্তন শেষ পেরেক ঠুকে দিয়েছে। যাত্রা-শিল্পের লীলাভূমি ছিল গ্ৰাম বাংলা। গ্ৰামে প্রচুর যাত্রাপালা হত নানা উৎসবকে কেন্দ্র করে । জমিদারি ব‍্যবস্থা লুপ্ত হওয়ার পর গ্ৰামীণ মানুষের উদ‍্যোগে শীতলা পূজা,  কালীপূজা, দুর্গাপূজা, কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা, চড়ক ইত‍্যাদিকে উপলক্ষ‍্য করে যাত্রাপালার আয়োজন না হলে কেমন যেন ম‍্যাড়ম‍্যাড়ে লাগতো। সেই সঙ্গে কলকাতার বড়বড় কোম্পানির যাত্রাপালা ঘটা করে, টিকিট সেল করে হত মাঠে। খুব বড় মাপের খেলার মাঠ যেখানে ছিল না সেখানে ধানের মাঠ নেওয়া হত ‌। ত্রিশ-চল্লিশ হাজার মানুষ দেখতে আসত। স্পেশাল বাস পাঠাত  আয়োজক কর্তৃপক্ষ। বিনা ভাড়ায় বাসে যাতায়াত করত যাত্রার দর্শকেরা। কিন্তু বিকল্প ধানচাষ শুরু হলে জমিগুলো সময় মতো ফাঁকা পাওয়া গেল না । প্রথম দিকে ব‍্যাপকহারে ধান শুরু না হওয়ায় খুব একটা অসুবিধা হত না। বহুক্ষেত্রে  ধান কা...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। নবপ্রভাত ৮৫ ।। চৈত্র ১৪৩১ মার্চ ২০২৫

  সূচিপত্র নিবন্ধ ।। মরিয়ম মির্জাখানি: এক অনন্য গণিতসূর্য ।। ... নিবন্ধ ।। নারী দিবসে যা ভাবা উচিত ।। বিশ্বনাথ পাল প্রবন্ধ ।। প্রাচীনকাল থেকে নারীরা অবহেলিত, বঞ্চিত,... নিবন্ধ ।। আমার চোখে আদর্শ নারী ।। জয়শ্রী বন্দ্... ফিচার।। এই মুহূর্তে বাংলা সাহিত্যে নারীদের লেখালেখ... আফ্রিকার লোককথা ।। করোটিকে বিয়ে করা অবাধ্য মেয়েটি ... ছোটগল্প ।। মানবী ।। ভুবনেশ্বর মন্ডল নিবন্ধ ।। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে অন্যতম নারী মু... নিবন্ধ ।। প্রিয় মহিলা সাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবী ।। ... গল্প ।। উই ওয়ান্ট জাস্টিস ।। রবীন বসু প্রবন্ধ ।। নিপীড়িতা ।। শ্যামল হুদাতী ফিচার ।। রমণী রতন ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত প্রবন্ধ ।। নারী সমাজ : তখন-এখন ।। তপন মাইতি নিবন্ধ ।। বহমান কালের ধারায় নারী ।। দীপক পাল গল্প ।। আমার দুর্গা ।। অঞ্জনা গোড়িয়া (সাউ) গল্প ।। যোগ্য জবাব ।। সমীর কুমার দত্ত ছোটগল্প ।। আমি দুর্গাকে দেখেছি।। চন্দন দাশগুপ্ত গল্প ।। সম্পর্ক ।। গৌতম সমাজদার কবিতা।। নারী মানে ।। গোবিন্দ মোদক কবিতা।। নারী ।। সমর আচার্য্য ছড়া ।। নারী অসামান্যা ।। সৌমিত্র মজুমদার কবিতা ।। নারী দিবসে ।। বিবেকানন্দ নস্কর কবিতা ।। না...

প্রবন্ধ ।। ভিনগ্রহীদের সন্ধানে ।। শ্যামল হুদাতী

ভিনগ্রহীদের সন্ধানে  শ্যামল হুদাতী  ইতিহাসের শুরু থেকে বারবার মানুষকে একটা প্রশ্ন কুঁড়ে কুঁড়ে খায় – এই মহাবিশ্বে আমরা কি একা? পৃথিবীর মতো আরও গ্রহ রয়েছে, যেখানে মানুষের মতো বুদ্ধিমান প্রাণীরা বাস করে – এই সম্ভাবনা বরাবর মানুষকে মুগ্ধ করেছে। আমাদের প্রত্যেকের জীবনের কখনও না কখনও এই ভাবনা এসেছে। দীর্ঘ কয়েক দশকের গবেষণার পরও, এই বিষয়ে কোনও নিশ্চয়তা দিতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। জেমস ওয়েব মহাকাশ টেলিস্কোপ, বহু দূরের এমন কিছু গ্রহের সন্ধান দিয়েছে, যেগুলিতে প্রাণ থাকতেই পারে। তবে, নিশ্চিত কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে, আমেরিকার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাম্প্রতিক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, ভিনগ্রহীদের খুঁজতে বহু দূরে যাওয়ার কোনও দরকার নেই। তারা এই পৃথিবীতেই মানুষের ছদ্মবেশে মানুষের মধ্যেই বসবাস করতে পারে। আমরা ভিনগ্রহীদের যেমন কল্পনা করি, এরা তার থেকে আলাদা। এরা অনেকটাই, দেবদূতদের মতো। মানব জগতের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক প্রযুক্তিগত নয়, বরং জাদুকরি। মহাকাশে সৌরজগতের গ্রহ পৃথিবী ছাড়া অন্য কোথায় প্রাণ রয়েছে কি না তা নিয়ে চলছে বিস্তর গবেষণা। একই সঙ্গে পৃথিবী ছাড়া অন্য কোনো গ্রহে মানুষ বসবাস ক...

মাসের বাছাই

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬

  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠালে  অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে হলে ভালো। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # ...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯২তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩২ অক্টোবর ২০২৫

—: সম্পাদকীয় দপ্তর থেকে :— এই সংখ্যার জন্য লেখা এসেছিল প্রায় ১৮০টা। কিন্তু গুণগত মানে দুর্বল লেখার সংখ্যা বহু। আমরা নবপ্রভাতে নতুনদের কথা ভেবে বেশ কিছু দুর্বল লেখাও রাখি। কিন্তু সবসময় একই লোকের দুর্বল লেখা প্রকাশ করা অনুচিত বলে মনে করি। শেষ পর্যন্ত ৯৯ জনের লেখা রাখা গেল। যাদের লেখা প্রকাশিত হল না, তারা লেখাগুলি অন্য যেখানে খুশি পাঠাতে পারেন। বিশেষ কারণে এই সংখ্যার মুদ্রিত সংস্করণ প্রকাশিত হচ্ছে না। আমরা দুঃখিত। তবে মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৬ সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি শীঘ্রই আসছে। সঙ্গে থাকুন। সকলকে উৎসবমুখর বর্ণময় শুভেচ্ছাসহ— —নিরাশাহরণ নস্কর, সম্পাদক, নবপ্রভাত। অনুরোধ : প্রকাশিত লেখার লিঙ্ক শেয়ার করুন, ছবি/স্ক্রীনশট নয়।  == সূচিপত্র == পড়া-লেখার ইতিহাস অনুসন্ধান।। তপন তরফদার উৎসব : মানুষের চিরন্তন আত্মপ্রকাশ।। কৃশানু ব্যানার্জি বাংলা : সভ্যতা ও সংস্কৃতির জন্মভূমি।। শ্যামল হুদাতী সমুদ্র আর অস্তিত্ব ।। সুব্রত চৌধুরী রাজা ছিলেন জুবিন গর্গ ।। গঙ্গা 'অনু'   আদ্যাশক্তি মহামায়ার বাংলা বারো মাসের বারো রূপ ।। অর্হণ জানা মেধাদাদুর আসর ।। রণেশ রায় বৈজ্ঞানিক মা...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯৩তম সংখ্যা ।। অগ্রহায়ণ ১৪৩২ নভেম্বর ২০২৫

সূচিপত্র বস্তু, চেতনা এবং কবি ।। সজল চক্রবর্তী দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আলোচনায় নব দিগন্ত ।। রণেশ রায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট ও সন্নিহিত অঞ্চলের কথ্য শব্দ ।। অরবিন্দ পুরকাইত চাঁদে জীবন ।। শমীক সমাদ্দার অসমাপ্তি ।। মহুয়া হুই গ্যালাক্সির শব্দে ।। জাসমিনা খাতুন তিনটি কবিতা ।। দিবাকর সেন অপূর্ণতার শেষ অধ্যায় ।। সুপ্রিয় সাহা হাফ ডজন ছড়া ।। স্বপনকুমার পাহাড়ী স্বাপ্নিক অমলের ঘুৃম ।। সঞ্জয় দেওয়ান দুটি কবিতা ।। সৌমিত্র উপাধ্যায় পথ চলতি ✍️পার্থ প্রতিম দাস হেমন্তের বিষাদ ছুঁয়ে ।। শক্তিপদ পাঠক রাই আর বাবা ।। অদিতি চ্যাটার্জি স্থিতিশীল ।। রঞ্জিত মুখোপাধ্যায় হৃদয়ের শূন্য কোড ।। লিপিকা পিঙ্কি দে অমানিশা ।। সৌভিক মুখার্জী দৃষ্টিগত ।। শামীম নওরোজ জ্যান্ত ভূতের গপ্পো ।। পার্থ সারথি চট্টোপাধ্যায় ধুতরা ফুলের ঘ্রাণ ।। মজনু মিয়া তারা খসার আলোয় ।। তীর্থঙ্কর সুমিত উত্তরণে অন্তরায় ।। সমীর কুমার দত্ত প্রেম মুদ্রা ।। বিবেকানন্দ নস্কর ধারা ।। লালন চাঁদ অন্যের ব্যথায় ব্যথি ।। জগদীশ মণ্ডল গর্ভ ।। শাশ্বত বোস ভ্রমণ বিষয়ক স্মৃতিকথা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত শাপে বর ।। সাইফুল ইসলাম রবিবার ।। সঙ্ঘমিত্রা দাস দুটি ...

দিদৃক্ষা ।। রাজেশ কে. চক্রবর্ত্তী

  দিদৃক্ষা রাজেশ কে. চক্রবর্ত্তী 'কাল একবার দেখা হতে পারে?' দশমীর দুপুরে খাটে আধশোয়া হয়ে নিজের ফোনটা ঘাঁটছিল দেবমাল্য; হোয়াট্‌সঅ্যাপের সার্চ বক্সে  র‍্যান্ডম সিক্যুয়েন্সে ক'খানা ডিজিট ইনপুট করতেই বিস্মৃতির অতল থেকে অপ্রত্যাশিতভাবে যে নামটা স্ক্রিনের সারফেসে ভেসে উঠল, এককালে দেবমাল্যের প্রায়োরিটি লিস্টে সবথেকে ওপরে পিন্‌ করা থাকতো এই অ্যাকাউন্টটা। 'অহনা দাশগুপ্ত'—গ্রেয়েড-আউট ডিপিটার ডানদিকে, নামটার তলায় নিস্প্রভ হরফে ভেসে থাকা ওর এই লাস্ট মেসেজটা বেশ ক'বছরের পুরনো, কিন্তু দেবমাল্যর স্মৃতির প্যান্ডোরা বাক্সটি উলটে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল। আরেকবার আপাদমস্তক শিহরিত হয় সে। প্রোফাইলটা খুলে ওপরে-নীচে স্ক্রল্‌ করে দেখে, ওদের পুরনো চ্যাটগুলো তেমনি আড়ষ্ট হয়ে পড়ে আছে, ওর মেসেজগুলোর পাশে ডাবল টিকগুলো এখনও জাজ্বল্যমান সবুজে ছোপানো, যেন এইমাত্র 'সিন্‌' করে রেখেছে অহনা! যেন এখুনি আবার হাত বোলালেই অহনা এসে খানিকটা রাগত ভঙ্গিতে চ্যাট করতে লেগে যাবে। দেবমাল্যের বুক ছাপিয়ে একটা নীরব দীর্ঘশ্বাস উঠে আসে! ছুটির এই আমেজটা লক্ষ্মীপুজো অব্দি গড়াবে—অফিস খুললেই তো আবার দমফাটা ব্য...

গুচ্ছকবিতা || শিশির আজম

  গুচ্ছকবিতা || শিশির আজম হুইসেল (মুরাকামি থেকে অনুপ্রাণিত) ♦ 'গভীর রাতে একটা হুইসেল কতটা গভীর হতে পারে তুমি কল্পনাও করতে পারো না,' ছেলেটা বললো, 'আশ্চর্য ঐ হুইসেলের মতো আমি ভালবাসি তোমাকে।' কিন্তু গভীর রাতে অন্ধকারে কখনও তো ঘুম ভেঙে যায়নি মেয়েটার, কখনও ও বিচ্ছিন্ন আর একা হয়ে যায়নি। ও কীভাবে অনুভব করবে গভীর রাতে ট্রেনের হুইসেল কতটা গভীর! নিউজ এজেন্সি ♦ একসময় আমরা খবর শুনতাম এখন দেখি স্বীকার করতে হবে খবর শোনার চেয়ে দেখার আনন্দ বেশি আলাদা উত্তেজনা নিউজ এজেন্সিগুলো এব্যাপারে তৎপর আর প্রতিযোগিতাপূর্ণ কোনটা নিউজ সেটা ওরাই ঠিক করে যেটা ওদের দরকার আর সেটাই আমাদের দেখানো হয় ধারাবাহিকভাবে সুচারু জ্যামিতিকতায় বিভিন্ন পদ মিশিয়ে খাওয়ানো হয় নতুন বাস্তবতা নির্মাণে যে বাস্তবতায় জায়গা নেই আমাদের ইতিহাস অন্বেষা স্বাধীনতার সমৃদ্ধি আর স্বাধীনতার কথা বলেই ওরা আমার ক্ষেতখামার পাহাড় আর নদীর দখল নিয়েছে তাহলে টিভিতে যে হাসিখুশি প্রাণবন্ত আমাদেরকে দেখানো হয় ওরা কারা এই প্রশ্ন করো নিজের কাছে আগুন নিয়ে খেলা ♦ আজও পুকুরে ছিপ ফেলে বসবো আমি ধীরে চুপ সূর্য আমার ঘাড়ে শ্বাস ফেলবে সারারাত ঘরের ভেতর ল্যাং...

বিদায়ের স্রোত ।। চয়ন মন্ডল

  বিদায়ের স্রোত চয়ন মন্ডল "বিজয়া দশমী—আনন্দের দিন, কারও কাছে যা হয়ে উঠল চিরন্তন বিদায়।" আজ বিজয়া দশমী। শিউলি ফুলের গন্ধে ভোরটা অন্যরকম। পাড়ার প্যান্ডেলে অদ্ভুত এক কোলাহল—মায়ের বিদায় যে আজ। শঙ্খধ্বনি, ঢাকের বাজনা আর উলুধ্বনিতে গমগম করছে চারদিক। একদিকে মা দুর্গার বিদায়ের বেদনা, অন্যদিকে আনন্দ ও মিলনমেলা। সারা বছরের অপেক্ষা শেষে এই দিনটিতে প্যান্ডেল ভরে উঠেছে মানুষের ভিড়ে। সকালের পূজার্চনা শেষ হতেই শুরু হয়েছে সিঁদুর খেলা। মহিলারা মায়ের প্রতিমাকে সিঁদুর পরিয়ে একে অপরের কপালে, গালে রাঙিয়ে দিচ্ছেন। ঢাকের তালে আর শাঁখ বাজনার আবেশে ভেসে যাচ্ছে পাড়া। শুরু হয়েছে প্রতিমা বিসর্জনের প্রস্তুতি। কিন্তু এসবের মধ্যে নেই অনুরাধা। কেউ তার বা মিনির খোঁজ রাখেনি। মুখার্জিদের দোতলা বাড়ির কোণের ঘরে বসে সে চোখের জল ফেলছে। সবার বাড়িতে আলোর রোশনাই, ভোগের গন্ধ, হাসি—শুধু তাদের ঘরটিতে নিস্তব্ধতা। গতবছর এই দিনেই তো অন্যরকম ছিল সবকিছু। অনুরাধা, সুজয় আর তাদের তিন বছরের মেয়ে মিনি পাড়ার প্যান্ডেলে ঢাকের তালে নেচেছিল, সিঁদুর খেলায় রঙে ভেসেছিল। বিকেলের দিকে প্রতিমা বিসর্জনের মিছিলে শামিল ...

কবিতা ।। অরণ্যকন্যা ।। অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়

  অরণ্যকন্যা অরিন্দম চট্টোপাধ্যায় অরণ্যকন্যার দৃষ্টির ভেতর বিষাদ বিন্দু ফোঁটা ফোঁটা জলের মতো গড়িয়ে যায়, হয়ে যায় কোন নদীপথ দৃষ্টি ভেঙে ভেঙে চলে যায় কোন এক শূন্য পথে অরণ্যকন্যার হৃদয়ের ভেতর ভাঙে যতো বৃক্ষপত্র নতুন পত্র পুষ্পের খোঁজ নেই ঠোঁট জুড়ে সমুদ্রকাঁপন বুদবুদের মতো অস্ফুট হয়ে উচ্চারিত হয় কোন অক্ষর শব্দ আর তাঁর শরীর থেকে ছড়িয়ে যায় হয়ে যায় একটা অদৃশ্য কবিতা...    ================== @ অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়,  বেহালা, কলকাতা -৭০০০৬০,  

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কড়াকড়ি বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো,  তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়।  যেমন, কবিতা/ছড়া ১২-১৬ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প/মুক্তগদ্য কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে, গল্প/রম্যরচনা ৮০০-৯০০ শব্দে, প্রবন্ধ/নিবন্ধ ১৫০০-১৬০০ শব্দে। তবে এ বাঁধন 'অবশ্যমান্য' নয়।  সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৬-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) য...

শেষ বিকেলের আলো ।। সৈকত প্রসাদ রায়

  শেষ বিকেলের আলো সৈকত প্রসাদ রায় রানাঘাট শহরের প্রান্তে ছোট্ট এক পাড়া বিশ্বাসপাড়া। সেই পাড়ার পুরোনো ভাঙাচোরা বাড়িটায় থাকেন পুষ্পরাণী ভট্টাচার্য— বয়স পঁয়ষট্টির কোঠায়। সবাই তাকে "পুষ্পদি" বলেই চেনে। একসময় প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতা করতেন, এখন অবসর নিয়েছেন। প্রতিদিন বিকেলে পুষ্পদি বারান্দায় বসে চা খান। ছোট একটা টেবিল, কয়েকটা পুরোনো বই, আর একখানা নীল কাঁচের ফুলদানি — তার নিত্যসঙ্গী। বারান্দার সামনেই একটা গলি, যেখান দিয়ে প্রতিদিনই স্কুল ছুটির পরে বাচ্চারা হইচই করে ছুটে যায়। পুষ্পদির একমাত্র ছেলে অনিরুদ্ধ — কলকাতায় চাকরি করে। ছেলেটা আধুনিক, নিজের সংসার আছে, স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ব্যস্ত। বছরে হয়তো একবার আসে, তাও কিছুক্ষণ বসে আবার চলে যায়। পুষ্পদি মুখে কিছু বলেন না, কিন্তু বুকের ভেতরে একটা কষ্ট জমে থাকে। সেই বিকেলটা অন্যরকম ছিল। আকাশে ধুলো, গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা। হঠাৎ পুষ্পদির চোখে পড়ে — রাস্তায় এক কিশোর বসে আছে। বয়স বারো-তেরোর বেশি নয়। মলিন জামা, পায়ে ছেঁড়া চটি। ছেলেটা একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে পুষ্পদির বাড়ির গেটে ঝুলে থাকা পুরোনো নোটিশবোর্ডটার দিকে, যেখানে একসময় লেখা ছিল — "পুষ্পরাণী ভ...

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৯১তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পাদকীয় দপ্তর থেকে এই সংখ্যায়  'শিক্ষা ও শিক্ষক' বিষয়ক বেশ কিছু লেখার পাশাপাশি রয়েছে বিচিত্র বিষয়ের আরও কিছু লেখা। সব মিলিয়ে সংখ্যাটি আপনাদের সমৃদ্ধ করবে, আপ্লুত করবে — এ বিষয়ে আমরা আশাবাদী। আপনাদের মতামত অবশ্যই জানাবেন। আমরা প্রতীক্ষিত।            আগামী অক্টোবর ২০২৫ সংখ্যা 'উৎসব সংখ্যা' হিসাবে প্রকাশিত হবে। ওয়েব সংখ্যার পাশাপাশি নির্বাচিত লেখাগুলি নিয়ে একটি pdf এবং তার মুদ্রিত সংস্করণও প্রকাশিত হবে। তাই অপ্রকাশিত ভালো লেখা পাঠান। বিশেষ কোনও বিষয় নেই। প্রবন্ধ-নিবন্ধ-ফিচার ২০০০ শব্দ, গল্প ১২০০ শব্দ, অণুগল্প ৫০০ শব্দ, কবিতা-ছড়া ২৪ লাইনের মধ্যে হলে ভালো। ইমেলঃ nabapravatblog@gmail.com           বিস্তারিত বিজ্ঞপ্তি আসবে। সামাজিক মাধ্যমে আমদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন। সময় মতো সব সংবাদ পেয়ে যাবেন।  শারদ উৎসবের দিনগুলি সকলের আনন্দে কাটুক এই কামনা করি। —নিরাশাহরণ নস্কর সম্পাদক: নবপ্রভাত মোঃ ৯৪৩৩৩৯৩৫৫৬ Whatsapp Group:  https://chat.whatsapp.com/ AIpj98JKbloFSpeqMcpr6j Facebook Page:  https://www.facebook.com/ share...